Posts: 25,098
Threads: 9
Likes Received: 12,403 in 6,253 posts
Likes Given: 8,651
Joined: Jun 2019
Reputation:
161
বাটীর ভিতরে প্রবেশ করিয়াই সরলবাবুর কানে তাঁহার পত্নীর আর্তনাদ শুনাইয়া দিল। তাঁহার পত্নী যেন যাতনায় কাহিল হইয়া "আরও জোরে! আরো জোরে!" কহিয়া চিৎকার করিতেছে! তবে কী কেহ তাঁহার ধর্মপত্নীকে নিপীড়ন করিতেছে! আশঙ্কায় চিত্ত শঙ্কুল হইল সরলবাবুর। তিনি তীব্র গতিতে "রমা! ভয় নাই! ভয় নাই! আমি আসিতেছি! আমি আসিতেছি!" কহিতে কহিতে তিনতলার চিলেকোঠার পানে ধাবিত হইলেন। তিনতলায় পৌঁছাইয়া, চিলেকোঠার দরজার নিকট ক্ষণিক থামিলেন সরলবাবু। যে পাপিষ্ঠ দুরাত্মা তাঁহার পত্নীকে এমন যন্ত্রণা দিয়াছে তাহার মুখামুখি হইবার জন্যই বোধকরি একটু দম লইলেন। তাহার পর কপাটখানির উপর সজোরে ধাক্কা দিলেন।
অর্গলহীন কপাট মুহূর্তেই খুলিয়া গেল কিন্তু ভিতরের দৃশ্য দর্শন করিয়া তাঁহার বিবরের অবস্থা বিসদৃশ হইল। তাঁহার প্রাণপ্রিয়া, তাঁহার ভার্যা, তাঁহার আপন পত্নী রমাদেবী পালঙ্কের উপর সম্পূর্ণ উলঙ্গ হইয়া বসিয়া আছে। তাহার মুখ কিংকর্তব্যবিমূঢ়! স্বামীকে দেখিয়া কোনক্রমে সামনের চাদরখানি টানিয়া আপন লজ্জা নিবারণ করিল। সরলবাবু হাঁফাইতে হাঁফাইতে গৃহে প্রবেশিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, "তোমারে কোন মহাপাষণ্ড নির্যাতন করিতেছিল?" শুষ্কমুখে ভীত হরিণীর ন্যয় রমা নিরুত্তর রহিল। তাহার মুখে ভয়ের আভাষ! সরলবাবু পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, "তোমার কপালে ঘাম কেন, তুমি হাঁফাইতেছই বা কেন এবং তোমার শরীরে সামান্যতম বস্ত্রখণ্ডও বা নাই কেন?" এতগুলি প্রশ্ন করিয়া সরলবাবু ভাবিলেন হয়ত রমা এত সকল প্রশ্নের একসাথে জবাব দিতে পারিবে না। কিন্তু রমাদেবীর ওষ্ঠ সামান্য নড়িল, "আমার বুকে বিস্তর ব্যাথা হইতেছিল এবং ঘামিতেছিলাম তাই নির্বস্ত্র হইয়া তিনতলায় শুইয়াছিলাম। আমার মনে হইতেছে আমার বোধকরি হার্টফেল করিবে!" ইহা শুনিয়া সরলবাবু ঘামিয়া গেলেন। বড় সাধের উর্ব্বশী পত্নী তাঁহার রমা, উহাকে হারাইয়া তিনি কিরূপেই বা বাঁচিবেন; এই ভাবনায় সরলবাবু কাতর হইলেন! এখনি রমাকে বৈদ্যবাটী লহিয়া যাইতে হইবে, উহার আশু চিকিৎসার প্রয়োজন রহিয়াছে। এইসব ভাবনায় ভাবিত হইতে হইতে সরলবাবুর নজর নিম্নের ভূতলে পড়িল, দেখিলেন পালঙ্কের নীচ হইতে দুইখানি পা বাহির হইয়া রহিয়াছে। সরলবাবু নিম্নে ঝুঁকিয়া দেখিলেন খাটের নীচে তাঁহার পড়শী শ্যামলবাবু বস্ত্রহীন হইয়া মেঝেতে শুইয়া আছেন! ইহা দেখিয়া সরলবাবু ক্রোধান্বিত হইয়া কহিলেন, "ছিঃ! শ্যামলবাবু! ছিঃ! আমার ধর্মপত্নীর হার্টফেল হইবার দশা আর আপনি কিনা ল্যাংটো হইয়া লুকোচুরি খেলিতেছেন। পাষণ্ডতারও সীমা থাকে!"
•