Thread Rating:
  • 90 Vote(s) - 2.98 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic Thriller নন্দনা - NOT OUT (সমাপ্ত)
(01-09-2023, 07:20 PM)Bumba_1 Wrote: বহু বছর আগেকার অতীত। এমন কিছু অদ্ভুত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, যা বুভুক্ষু হায়নার মত ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র। বাতাসে মিশে থাকে অদৃশ্য হয়ে সকলের দৃষ্টির অগোচরে। সেই অতীতেরও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় পুরনো ঘটনাগুলো ঝালিয়ে নিতে, যা সে ফেলে এসেছে দূরে .. বহু দূরে। তারও ইচ্ছে হয় রাত জেগে অতীতের সুখস্মৃতি হাতড়ে বেড়াতে। তারও ইচ্ছে হয় ভেতর ভেতর উত্তেজিত হতে, সেই ঘটনাবহুল দিনগুলি মনে করে। কিছু স্মৃতি তারও পুষতে ইচ্ছে মনের গভীরে। কিছু স্মৃতি এই কোমল হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করে দিলেও, সে কবর রচনা করে তার একান্ত নিজস্ব অন্ধ অতীতের। 

Sexy lines.... Tongue
কিছু স্মৃতি কিংবা কিছু অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়ানোতে আলাদা মজা আছে। যা আর কেউ জানতে পারেনা, শুধু জানে আয়নার সামনে দাঁড়ানো মানুষটা ছাড়া। থাক না সেসব তার মধ্যেই। লোকেদের ওতো জানার দরকার কি? সেসবের দাম তারা কোনোদিন দেবে না। তাই নিজেই গভীর রাতে খোলা জানলা দিকে বাইরের তাকিয়ে কিংবা ঘুড়ন্ত পাখাটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবতে থাকো সে সব। পাশে ঘুমিয়ে থাকা বাকি মানুষ গুলো না হয় গভীর ঘুমে ব্যাস্ত থাকুক। জীবনের সেরা সৃষ্টিও যত বড়ো হবে, সেও অনেক কিছু স্মৃতির অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবে। সেও কাউকে জানাবে না। ওসব জানাতে নেই।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
Waiting dada
[+] 1 user Likes Dushtuchele567's post
Like Reply
(01-09-2023, 08:01 PM)Somnaath Wrote: কিছুই বোঝা গেল না, তবে মনে হচ্ছে এখানে নন্দনার অতীতের কথা বলা হচ্ছে। ১৯ টা বয়ফ্রেন্ড বলে কথা  Tongue

আচ্ছা, তাই?  Smile দেখা যাক, কি হয়। 

(01-09-2023, 08:15 PM)Baban Wrote: Sexy lines.... Tongue
কিছু স্মৃতি কিংবা কিছু অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়ানোতে আলাদা মজা আছে। যা আর কেউ জানতে পারেনা, শুধু জানে আয়নার সামনে দাঁড়ানো মানুষটা ছাড়া। থাক না সেসব তার মধ্যেই। লোকেদের ওতো জানার দরকার কি? সেসবের দাম তারা কোনোদিন দেবে না। তাই নিজেই গভীর রাতে খোলা জানলা দিকে বাইরের তাকিয়ে কিংবা ঘুড়ন্ত পাখাটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবতে থাকো সে সব। পাশে ঘুমিয়ে থাকা বাকি মানুষ গুলো না হয় গভীর ঘুমে ব্যাস্ত থাকুক। জীবনের সেরা সৃষ্টিও যত বড়ো হবে, সেও অনেক কিছু স্মৃতির অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবে। সেও কাউকে জানাবে না। ওসব জানাতে নেই।

না না, আমি কাউকে জানাচ্ছি না। অতীত নিজেই তার স্মৃতি রোমন্থন করছে।  Smile  

(01-09-2023, 08:16 PM)Dushtuchele567 Wrote: Waiting dada

congrats   congrats 
Like Reply
(01-09-2023, 07:20 PM)Bumba_1 Wrote: বহু বছর আগেকার অতীত। এমন কিছু অদ্ভুত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, যা বুভুক্ষু হায়নার মত ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র। বাতাসে মিশে থাকে অদৃশ্য হয়ে সকলের দৃষ্টির অগোচরে। সেই অতীতেরও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় পুরনো ঘটনাগুলো ঝালিয়ে নিতে, যা সে ফেলে এসেছে দূরে .. বহু দূরে। তারও ইচ্ছে হয় রাত জেগে অতীতের সুখস্মৃতি হাতড়ে বেড়াতে। তারও ইচ্ছে হয় ভেতর ভেতর উত্তেজিত হতে, সেই ঘটনাবহুল দিনগুলি মনে করে। কিছু স্মৃতি তারও পুষতে ইচ্ছে মনের গভীরে। কিছু স্মৃতি এই কোমল হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করে দিলেও, সে কবর রচনা করে তার একান্ত নিজস্ব অন্ধ অতীতের। 


[Image: Polish-20230901-191111867.jpg]

বাকিটা জানতে হলে পড়তে হবে অন্ধ অতীত
সিরিজঃ- নন্দনা NOT OUT


৩ তারিখ অর্থাৎ রবিবার রাতে একটা নয়, দু'টো নয়, তিনটেও নয়, একসঙ্গে চার চারটি আপডেট সম্বলিত নতুন অধ্যায়ের প্রথম পর্ব আসছি। সঙ্গে থাকুন এবং অবশ্যই পড়তে থাকুন।

I think new character er entry hobe, let's see
[+] 1 user Likes Chandan's post
Like Reply
(01-09-2023, 07:20 PM)Bumba_1 Wrote:
[Image: Polish-20230901-191111867.jpg]

  আমরা যখন ছোটবেলায় হলে গিয়ে সেই softcore মুভিগুলো দেখতাম, ওই সিনেমাগুলোর মধ্যে একটা হিরোইন ছিল, কি যেন নাম ভুলে গেছি। একে অনেকটা ঐরকম দেখতে।

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
(02-09-2023, 09:58 AM)Chandan Wrote: I think new character er entry hobe, let's see

god knows 

(02-09-2023, 11:21 AM)Sagnojay Sen Wrote:   আমরা যখন ছোটবেলায় হলে গিয়ে সেই softcore মুভিগুলো দেখতাম, ওই সিনেমাগুলোর মধ্যে একটা হিরোইন ছিল, কি যেন নাম ভুলে গেছি। একে অনেকটা ঐরকম দেখতে।

কি জানি, বলতে পারছিনা।
Like Reply
(02-09-2023, 11:21 AM)Sanjay Sen Wrote:   আমরা যখন ছোটবেলায় হলে গিয়ে সেই softcore মুভিগুলো দেখতাম, ওই সিনেমাগুলোর মধ্যে একটা হিরোইন ছিল, কি যেন নাম ভুলে গেছি। একে অনেকটা ঐরকম দেখতে।

Reshma , Sindhu, Babilona or Kumtaz?
[+] 1 user Likes Chandan's post
Like Reply
(02-09-2023, 03:48 PM)Chandan Wrote: Reshma , Sindhu, Babilona or Kumtaz?

ওহ্, নামগুলো শুনে সেই পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল। ‌সাইকেল করে ‌আমাদের এলাকার বা পাশের এলাকার হলগুলোতে দেখতে যেতাম এই ধরনের সিনেমা। সাইকেল রাখার সময় সাইকেলওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করতাম, "কটা সিন আছে?" আর যে ছবির পোস্টারে যত বেশি আলকাতরা লেপা থাকতো, ধরে নিতে হতো সেই ছবিটায় তত বেশি অ্যাডাল্ট সিন রয়েছে। এখন সেই সিঙ্গেল স্ক্রিন হলও নেই, ওই সিনেমাগুলোও নেই। মিস করি সেই সমস্ত দিনগুলোকে।

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
(02-09-2023, 04:54 PM)Sanjay Sen Wrote: ওহ্, নামগুলো শুনে সেই পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল। ‌সাইকেল করে ‌আমাদের এলাকার বা পাশের এলাকার হলগুলোতে দেখতে যেতাম এই ধরনের সিনেমা। সাইকেল রাখার সময় সাইকেলওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করতাম, "কটা সিন আছে?" আর যে ছবির পোস্টারে যত বেশি আলকাতরা লেপা থাকতো, ধরে নিতে হতো সেই ছবিটায় তত বেশি অ্যাডাল্ট সিন রয়েছে। এখন সেই সিঙ্গেল স্ক্রিন হলও নেই, ওই সিনেমাগুলোও নেই। মিস করি সেই সমস্ত দিনগুলোকে।

same here, kanti shah was one of the famous director
[+] 1 user Likes Chandan's post
Like Reply
বৃষ্টি এসে শালাদের বাঁচিয়ে দিল  devil2

[Image: Images-2-2-1.jpg]

Like Reply
(02-09-2023, 10:06 PM)Somnaath Wrote:
বৃষ্টি এসে শালাদের বাঁচিয়ে দিল  devil2

Over reduce হলে কি হতো বলা খুব মুশকিল ভাই। তবে পুরো ৫০ ওভার খেলা হলে ওই রান পাকিস্তানের পক্ষে তোলা সম্ভব হতো না। বাবর আজম ছাড়া তো ওদের টিমে আর ব্যাটসম্যান নেই।

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

Like Reply
(02-09-2023, 05:25 PM)Chandan Wrote: same here, kanti shah was one of the famous director

ওর সিনেমার ফেভারিট হিরোইন ছিল Sapna Sappu  Big Grin

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
(01-09-2023, 07:20 PM)Bumba_1 Wrote: বহু বছর আগেকার অতীত। এমন কিছু অদ্ভুত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, যা বুভুক্ষু হায়নার মত ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র। বাতাসে মিশে থাকে অদৃশ্য হয়ে সকলের দৃষ্টির অগোচরে। সেই অতীতেরও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় পুরনো ঘটনাগুলো ঝালিয়ে নিতে, যা সে ফেলে এসেছে দূরে .. বহু দূরে। তারও ইচ্ছে হয় রাত জেগে অতীতের সুখস্মৃতি হাতড়ে বেড়াতে। তারও ইচ্ছে হয় ভেতর ভেতর উত্তেজিত হতে, সেই ঘটনাবহুল দিনগুলি মনে করে। কিছু স্মৃতি তারও পুষতে ইচ্ছে মনের গভীরে। কিছু স্মৃতি এই কোমল হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করে দিলেও, সে কবর রচনা করে তার একান্ত নিজস্ব অন্ধ অতীতের। 


[Image: Polish-20230901-191111867.jpg]

বাকিটা জানতে হলে পড়তে হবে অন্ধ অতীত
সিরিজঃ- নন্দনা NOT OUT


৩ তারিখ অর্থাৎ রবিবার রাতে একটা নয়, দু'টো নয়, তিনটেও নয়, একসঙ্গে চার চারটি আপডেট সম্বলিত নতুন অধ্যায়ের প্রথম পর্ব আসছি। সঙ্গে থাকুন এবং অবশ্যই পড়তে থাকুন।
ছবি দেখে তো মনে হচ্ছে ইন্টারফেথ আসতে চলেছে। যাইহোক দেখা যাক।
[+] 1 user Likes Rohan raj's post
Like Reply
(02-09-2023, 10:32 PM)Sanjay Sen Wrote: ওর সিনেমার ফেভারিট হিরোইন ছিল Sapna Sappu  Big Grin

still now oi heroine adult web series guoo te  Lotpot
Like Reply
(03-09-2023, 08:18 AM)Chandan Wrote: still now oi heroine adult web series guoo te  Lotpot

guoo আবার কি? ওটা সম্ভবত গুলো বোঝাতে চাইছো তুমি  Big Grin

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply
(03-09-2023, 05:40 PM)Somnaath Wrote: guoo আবার কি? ওটা সম্ভবত গুলো বোঝাতে চাইছো তুমি  Big Grin

লেখার পর ও আর দেখেনা, কি লিখেছে  Tongue

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

Like Reply
(03-09-2023, 05:40 PM)Somnaath Wrote: guoo আবার কি? ওটা সম্ভবত গুলো বোঝাতে চাইছো তুমি  Big Grin

(03-09-2023, 06:29 PM)Sanjay Sen Wrote:
লেখার পর ও আর দেখেনা, কি লিখেছে  Tongue

koppo
Like Reply
(03-09-2023, 06:47 PM)Chandan Wrote: koppo

[Image: happy-dance.gif]

পাগল টাগল হয়ে গেছে বোধহয়

[Image: Images-2-2-1.jpg]

Like Reply
মেসেজ করে কিংবা কমেন্ট করে বেশ কিছুদিন ধরে পাঠকবন্ধুরা এই সিরিজে একটি অল্পবয়সী নারী চরিত্র আনার জন্য একনাগাড়ে অনুরোধ করে যাচ্ছিলো আমাকে। আমি পূর্বেই বলেছি, আমি যখন কোনো উপন্যাস লেখা শুরু করি, তখনই আমার উপন্যাসের শেষ লাইনটা পর্যন্ত ভাবা হয়ে যায়। মাঝে হয়তো দু-একটা ছোটখাটো চরিত্র এদিক ওদিক হয়। তাই নতুন কোনো বড় চরিত্রর অন্তর্ভুক্তিতে ভীষণ বেগ পেতে হয়। যারা লেখালেখি করে, এটা একমাত্র তারাই বুঝবে। তবুও আমি এমন একজন লেখক, যে কখনো তার পাঠকদের নিরাশ করেনি/করেনা (পাঠকেরা অবশ্য আমাকে অনেকবার নিরাশ করেছে)। যাইহোক, ওনাদের অনুরোধ মাথায় রেখে একটি নারীচরিত্র নিয়ে এলাম এই সিরিজে। যে চরিত্রটির উল্লেখ ভবিষ্যতে আর পাওয়া না গেলেও, এই পর্ব অবশ্যই পরবর্তী পর্বগুলির জন্য একটি যোগসূত্র স্থাপন করবে।




[Image: Polish-20230903-165735174.jpg]


(১)

শূন্য দৃষ্টি দিয়ে ঘটমান অতীতের সাথে কথা বলা। যেখানে বিরাজ করছে স্তব্ধতা, যেখানে নশ্বর জীবনের পাতায় পাতায় কতই না নিষিদ্ধ কারুকাজ। যুগ যুগান্ত মিশে যায় ক্ষণে বীক্ষণে। থেমে থাকা পদচিহ্ন খুঁজে বেড়ায় হৃদয়ের সাগর তলে। চেতনার ধারা নীরবে এসে অপেক্ষা করে মননের গভীরে। হয়তো তরঙ্গহীন এবং ধূসর, তবুও কেন জানি দোলে জীবনতরী। হে অন্ধ অতীত, তুমি কথা কও .. সেই চেনা সুর ধরে।

'এইট বি বাই টু' চিরন্তন আর নন্দনার কোয়ার্টারের একটা অতীত আছে। বহু বছর আগেকার অতীত। এমন কিছু অদ্ভুত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, যা বুভুক্ষু হায়নার মতো ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র। বাতাসে মিশে থাকে অদৃশ্য হয়ে সকলের দৃষ্টির অগোচরে। সেই অতীতেরও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় পুরনো ঘটনাগুলো ঝালিয়ে নিতে, যা সে ফেলে এসেছে দূরে .. বহু দূরে। তারও ইচ্ছে হয় রাত জেগে অতীতের সুখস্মৃতি হাতড়ে বেড়াতে। তারও ইচ্ছে হয় ভেতর ভেতর উত্তেজিত হতে, সেই ঘটনাবহুল দিনগুলি মনে করে। কিছু স্মৃতি তারও পুষতে ইচ্ছে মনের গভীরে। কিছু স্মৃতি এই কোমল হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করে দিলেও, সে কবর রচনা করে তার একান্ত নিজস্ব অন্ধ অতীতের।

নন্দনার সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই চিরন্তন বেশ কয়েক বছর ধরে রয়েছে এই কোয়ার্টারে। তবে চিরন্তন আসার আগে বেশ কিছু বছর (সংখ্যাটা স্পষ্ট করে বলা যায় না) বন্ধ ছিলো কোয়ার্টারটা। নাহ্ , কোনো ভুতুড়ে ব্যাপার বা নৃশংস কোনো ঘটনার জন্য নয়। দক্ষিণ-পূর্ব খোলা হলেও সম্পূর্ণ একটি অন্য কারণে নিজেদের ফ্যামিলি নিয়ে কেউ থাকতে চাইতো না এই কোয়ার্টারে।

অমিত কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থে পুষ্ট একটি পাট গবেষণা সংস্থায় চাকরি করতো। নিজের গবেষণার কাজে মাঝে মাঝেই তাকে বিভিন্ন জুটমিলে যেতে হতো থিওরিটিক্যাল প্রোজেক্টগুলোর বাস্তব প্রয়োগের ফল কিরকম হবে, তারই  পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য। এসব ব্যাপারে অবশ্য জুটমিলের সুপারভাইসার থেকে শুরু করে ম্যানেজার এবং অন্যান্য কর্মচারীদের সাহায্য সে পেতো। এই ধরনের কেন্দ্রীয় সংস্থা থেকে যারা আসে, অফিসের গাড়ি তাদের বাড়ি থেকে ফ্যাক্টরিতে দেওয়া-নেওয়া করে। তবে সেটা বড়জোর পাঁচ থেকে দশ কিলোমিটারের মধ্যে বাড়ি হলে।

অমিতের বাড়ি ছিলো বাঁকুড়া জেলায়, কলকাতায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে সে থাকতো। সেখান থেকেই অফিসে যাতায়াত করতো। বছর তিনেক হলো বিয়ে হয়েছিলো তার। স্ত্রী পম্পা বাঁকুড়ায় শ্বশুরবাড়িতেই থাকতো। তাদের সন্তান হয়নি তখনও, হওয়ার কোনো আশাও ছিলো না। ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা গিয়েছিল, দোষটা পম্পার। যদিও সে রিপোর্ট পম্পা চোখে দেখেনি। শনি-রবি এই দুই দিন তার অফিস ছুটি থাকতো, তাই উইকেন্ডে অমিত বাড়ি যেতো। কিন্তু হুগলি ডিস্ট্রিক্টের এই জুটমিলে ছ'মাসের প্রজেক্টে আসার পর, কলকাতা থেকে রোজ রোজ গাড়ি করে তাকে নিয়ে আসা আর পৌঁছে দেওয়া সম্ভব ছিলো না। তাই, ফ্যাক্টরি সংলগ্ন ক্যাম্পাসে কোয়ার্টার নম্বর 'এইট বি বাই টু' বরাদ্দ হলো অমিতের জন্য। জুটমিলে কোনো নির্দিষ্ট দিনে ছুটি হয় না। এখানে ডে অফ সিস্টেম। তাই উইকেন্ডে অমিতের বাড়ি যাওয়ার বিষয়টাও বন্ধ হয়ে গেলো ধীরে ধীরে।

অমিতের বাবা-মা, এক অবিবাহিত ভাই, এক দূর সম্পর্কের পিসিমা .. অনেকেই ছিলো বাঁকুড়ায় তার বাড়িতে। তাই ঠিক হলো এবার কাজের জায়গায় তার স্ত্রী পম্পাকে নিয়ে আসবে অমিত। যেমন কথা, তেমন কাজ .. দু'দিনের ছুটি নিয়ে তার দেশের বাড়ি বাঁকুড়ায় গিয়ে সেখান থেকে তার স্ত্রীকে নিয়ে অমিত এলো নিজের কর্মক্ষেত্রে।

"চ-ট-ক-ল .. কোথাও কোনো আকার নেই। যার আকার নেই সে তো নিরাকার! তার তো কোনও পরিবর্তন হয় না। তাই চটকলেরও কোনো পরিবর্তন নেই। একশো বছর আগেও যা ছিলো, আজও তাই আছে। তবে হ্যাঁ ভায়া, চোখ-কান খোলা রাখবে সর্বদা। চটকল কিন্তু ভয়ঙ্কর জায়গা।" কথাগুলো অমিতকে বলেছিলেন ফ্যাক্টরির কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইনচার্জ মিস্টার শেখর অধিকারী। বয়স্ক লোক, রিটায়ারমেন্টের দোরগোড়ায় চলে এসেছিলেন। বেশ মজার মানুষ ছিলেন উনি।

আসলে জুটমিলের কর্মরত মানুষজন বা সেই এলাকার লোকজন 'চটকল' বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। চটকলের মধ্যশ্রেণী থেকে উচ্চশ্রেণীর কর্মীরা এক জায়গায় বেশিদিন থাকেন না। বিভিন্ন চটকলে ঘুরে ফিরে বেড়ান। এইজন্য কোথাও একজনের সাথে আরেকজনের দেখা হলে প্রথমে ‘'কেমন আছেন?’'  না বলে ‘'এখন কোথায় আছেন?'’ জিজ্ঞাসা করেন।

যদি কোনোদিন মিলের গেটে পৌঁছতে অমিতের বেলা এগারোটা বেরিয়ে যেত, তাহলে আর দুর্ভোগের শেষ থাকতো না। হাজারের ওপর শ্রমিক গেট দিয়ে বেরোনোর পর রাস্তা পুরোপুরি ক্লিয়ার হতে অন্তত মিনিট পনেরো। বাধ্য হয়ে অমিতকে গাড়ি নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো গেটের বাইরে। তবে এই ব্যাপারগুলোতে ইউজ টু হয়ে গেছিলো সে। সাধারণত তিন শিফটে কাজ হয় জুটমিলে। সকাল ছ’টায় ‘এ’ শিফটে যারা কাজে আসে, মাঝে কিছুক্ষণের সাময়িক বিরতি দিয়ে তাদের ডিউটি চলে দুপুর দু'টো পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় ‘বি’ শিফট। যেটা চলে দুপুর দু'টো থেকে পাঁচটা। আবার কিছুক্ষণের বিরতি দিয়ে একেবারে রাত্রি দশ'টা পর্যন্ত। ‘সি’ শিফট অথবা নাইট শিফট শুরু হয় রাত দশটা থেকে ভোর ছ’টা পর্যন্ত। কলের চাকা বন্ধ হয় না।

বছর চারেক হলো চাকরিতে ঢুকেছে ঊনত্রিশ বছরের অমিত। এর আগে হাওড়ার দুটো জুটমিলে প্র্যাকটিক্যাল প্রোজেক্টের কাজ সে করেছিলো। সে ক্ষেত্রে কম্পাউন্ডে থাকতে হয়নি তাকে, বাড়ি থেকেই গাড়িতে করে যাতায়াত করতো সে। কিন্তু এবারে যে রিসার্চ প্রোজেক্টটা সে হাতে পেয়েছে, তাতে ল্যাবরেটরির নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আর কারখানার বাস্তব পরিবেশে পরীক্ষানিরীক্ষার কতটা তফাত হয়, সেটা জানতে এমনিতেই তাকে অনেকটা বেশি সময় কাটাতে হতো ফ্যাক্টরিতে। এমতাবস্থায় কোয়ার্টার পেয়ে এবং তার সঙ্গে নিজের স্ত্রীকে একান্তভাবে কাছে পেয়ে বেজায় খুশি অমিত।

★★★★

কথায় বলে .. অল্প বয়সে পাকলে বাল, তার দুঃখ চিরকাল। অমিতেরও হয়েছিলো সেই অবস্থা। ছোটবেলা থেকে বাবা-মার কথার অবাধ্য হয়ে অত্যাধিক পরিমাণে মিষ্টি এবং ফাস্টফুড খাবার ফলস্বরূপ যুবক বয়সেই সুগারের পেশেন্ট হয়ে গিয়েছিলো সে। তার উপর ছাত্রাবস্থায় অকালপক্ব কিছু বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে প্রায় নিয়মিত হস্তমৈথুন করতে করতে বর্তমানে বাঁড়ার রগগুলো তো ঢিলা হয়ে গেছেই, তার সঙ্গে স্নায়ুজনিত সমস্যারও সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অমিতের যৌবনের যাবতীয় উদ্দাম উদ্দীপনা সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে তিরিশ বছরে পৌঁছানোর আগেই।

বছর ছাব্বিশের গৌরবর্ণা, মাঝারি উচ্চতার, ছিপছিপে চেহারার পম্পার স্থুলতা যদি কোথাও থাকে, তবে তা কেবল তার স্তনে, জঙ্ঘায় এবং নিতম্বে। মাথার কিছুটা লালচে পাতলা চুল কাঁধের নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত। মুখমন্ডলে কটা চোখ, তীক্ষ্ণ সাদা ঝকঝকে দাঁত এবং টিকালো নাক দেখলে মনে হতো যেনো চাঁদের কিরণ জমাট বেঁধেছে পাম্পার নারী শরীরের আনাচে-কানাচে।

এহেন পাশ্চাত্য দেশের সিনেমার নায়িকাদের মতো দেখতে পম্পা যখন রাতে বিছানাতে কেবলমাত্র কাঁধের কাছে সরু সুতো দিয়ে বাঁধা একটা অন্তর্বাসবিহীন বেবিডল নাইটি পরে স্বামীর সাথে আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে আহ্লাদীপনা করতে যেত, "উফফ আবার শুরু করলে তুমি? সবসময় এতো উত্তেজনা তোমার কোথা থেকে আসে, বুঝি না। তাও যদি একটা সন্তান দিতে পারতে! ছাড়ো তো, বিরক্ত করো না আমাকে। তাছাড়া কাজের যা চাপ যাচ্ছে, কাল আবার মিস্টার দীক্ষিতের সঙ্গে মিটিং রয়েছে। এখন আমার ঘুম দরকার, তুমি সরে শোও।" এই বলে এক ঝটকাতে অমিত তার কামুকী সহধর্মিনীর ওই কামজাগানো রূপ অগ্রাহ্য করে তার বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতো।

একদিকে সন্তান দিতে না পারায় স্বামীর অবহেলার পাত্রী হয়ে থাকার জন্য দুঃখ, অন্যদিকে যৌন হতাশার এক অসহ্য বেদনায় কখনো নীরবে বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে কাঁদতে একসময় ঘুমিয়ে পড়তো পম্পা, আবার কখনো উত্তেজনা চরমে পৌছলে বাথরুমে গিয়ে নিজের দুই পায়ের ফাঁকে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে শান্ত করতো নিজেকে।

শুধুমাত্র ভালো চাকরি করে, মোটা টাকা মাইনে পেয়ে নিজের স্ত্রীর ম্যাটারিয়ালিস্টিক চাহিদা পূরণ করাটাই যে শুধুমাত্র সুখী দাম্পত্য জীবনের চাবিকাঠি হতে পারে না, এই ধারণাটাই ছিলো না তার। অর্থের থেকে অনেক সময় রিপুর টান বড় হয়ে দাঁড়ায়, সেটা বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলেছিলো অমিত। ওদিকে এই অল্প বয়সে স্বামীর এই অকর্মণ্যতায়, কামক্ষুধায় ভরপুর ছাব্বিশ বছরের পম্পা নিজের অজান্তেই ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিলো নিজের উপর থেকে।

★★★★

ছয় মাসের মধ্যে রিসার্চ প্রোজেক্টটা শেষ করতে হবে, এটা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছিলো সে। ছ'মাস অতিক্রান্ত হলেও কিছু যেতো আসতো না, কিন্তু তার মধ্যে প্রোজেক্টটা শেষ করতে পারলে অফিসে তার নাম হবে, হয়তো পদোন্নতিও হতে পারে .. এই ভেবে রাতদিন এক করে ফেলেছিলো অমিত। ডে অফের দিনগুলোতেও তাই অফিসেই কাটাতো সে। তবে অমিত বাড়িতে না থাকলেও বা কম থাকলেও বাজার দোকান করার লোকের অভাব ছিলো না। শিফটিং ডিউটির শিফট চেঞ্জের সময় কারখানার কোনো না কোনো ওয়ার্কার বাড়িতে এসে মুদিখানার জিনিসপত্র এবং প্রতিদিনের কাঁচাবাজার পৌঁছে দিয়ে যেতো।

কিন্তু চাল, ডাল, তেল, মশলাপাতি, সব্জি, মাছ, মাংস .. এগুলোই তো শুধুমাত্র জীবনের প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে পড়ে না। আরও এমন বেশ কিছু দরকার থাকে, যার জন্য মানুষকে বাইরে বেরোতে হয়। সেটা পোশাক-আশাক, প্রসাধনী, ওষুধপত্র .. এরকম অনেক কিছুই হতে পারে। তাই সেই দরকারটা পূর্ণ করতে পম্পাকেই বেরোতে হতো।

বাঁকুড়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকাকালীন শাড়ি আর তার সঙ্গে হাফস্লিভ ব্লাউজ ছাড়া আর কিছু না পড়লেও, এখানে আসার পর পাখনা গজিয়েছে অমিতের স্ত্রীর। শাড়ি ছেড়ে জিন্স আর টি-শার্ট ধরেছে পম্পা। কিছু আড়াল করতে গেলে তো, কিছু ছাড়তে হয়। সামনে স্বীকার না করলেও, অমিত তার যৌন অক্ষমতার কথা ভালো করেই জানতো। তাই বউয়ের এই পোশাকর ট্রান্সফর্মেশনে তাকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্রচ্ছন্ন সম্মতি দিতে হয়েছিলো। তবে বাজার-দোকানে বের হলে আজকাল একটু বেশিমাত্রায় শরীর দেখিয়ে পোশাক পড়ে পম্পা। বাড়িতে না থাকার জন্য স্বভাবতই সেইদিকে নজর যায়নি অমিতের।

জিন্স আর টি-শার্ট তো আছেই, তবে বাড়ির বাইরে বের হলে আজকাল প্রায়শই স্কিনটাইট লেগিংস আর বগলের কাছে অনেকটা কাটা স্লিভলেস টপ করে বেরোয় পম্পা। এখন যদিও বন্ধ হয়ে গেছে, তবে সেইসময় এই এলাকায় দু'নম্বর বাস চলতো। সেদিন লেগিংস আর আর হাতকাটা একটা সুতির কুর্তি পড়ে বাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটা দু'নম্বর বাসে উঠে পড়েছিলো পম্পা। বাসটাতে বেশ ভিড় ছিলো। ক্যাম্পাস থেকে বাজারের বেশি দূরত্ব নয়, খুব বেশি হলে দুই কিলোমিটার হবে। কিন্তু এই পাঁচ মিনিটের বাস জার্নিতে অন্তত জ'না দুয়েক পার্ভার্ট বয়স্ক ব্যক্তি এবং কমবয়সি ছেলে অমিতের যুবতী স্ত্রীর লেগিংসের পাতলা গেঞ্জির কাপড়ের আবরণে ঢাকা মাংসল পাছাতে ভীড়ের সুযোগে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো। আবার কখনো সুযোগ বুঝে খামচে ধরছিলো। পম্পা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো একটা অল্পবয়সী ষন্ডামার্কা ছেলে নিজের মধ্যমাটা তার পাছার ফুটোর কাছে নিয়ে এসে লেগিংসের পাতলা গেঞ্জির কাপড়ের আবরণ ভেদ করে আঙুলটা পোঁদের গর্তের ভেতরে ঢোকাতে চেষ্টা করছিলো। অ্যাডভেঞ্চার করতে গিয়ে ভয়ে গলা শুকিয়ে গিয়েছিলো পম্পার। ঠিক সেই মুহূর্তে "গঞ্জ বাজার এসে গেছে" এই বলে কন্ডাক্টর হাঁক দেওয়ায়, ধরে প্রাণ ফিরে পেয়ে তাড়াতাড়ি বাস থেকে নেমে গিয়েছিলো সে।

বাঁকুড়া থেকে এখানে আসার সময় এক ডজন ব্রা সঙ্গে করে এনেছিলো সে। যদিও সেগুলো একটাও নতুন নয়, সবগুলোই তার ব্যবহার করা হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তার মধ্যে দু-তিনটে ছাড়া বেশিরভাগই হয় ঢিলা হয়ে গিয়েছিল, না হয় স্ট্র্যাপের কাছটা ছিঁড়ে গিয়েছিল, কিংবা হুক ভেঙে গিয়েছিল। এবার যদি নতুন ব্রা না কেনা হয়, তাহলে এরপর বাকিগুলোর কন্ডিশন খারাপ হয়ে গেলে তাকে ঊর্ধ্বাঙ্গের অন্তর্বাস ছাড়াই থাকতে হবে। টুকটাক কয়েকটা জিনিস কিনে বাজারের শেষ প্রান্তে একটা অন্তর্বাসের দোকানে ঢুকলো পম্পা।

"আন্ডার গার্মেন্টস দেখাবেন তো ভাই .." ফাঁকা দোকানটার একমাত্র বিক্রেতা তারই বয়সী একজন পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের যুবককে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো পম্পা।

"আন্ডার গার্মেন্টসের মধ্যে কি দেখাবো ম্যাডাম?" জিজ্ঞাসা করলো যুবকটি।

- "ওই যে, শার্ট বা কামিজের নিচে পড়ে না! ওইগুলো দেখান।"

- "গেঞ্জি? স্যান্ডো দেখাবো, না হাফস্লিভ দেখাবো ম্যাডাম?"

- "আরে না না, গেঞ্জি কেন হতে যাবে? আরে ভেতরে পড়ে না! ওই দুটোর উপর .. সেইগুলো দেখান।"

- "কোন দুটোর উপর? আরে ম্যাডাম যা বলবেন পরিষ্কার করে বলুন। আপনার কি গলায় সমস্যা রয়েছে? গলার খিঁচখিঁচ দূর করার জন্য ভিক্সের ট্যাবলেট দেবো নাকি?"

- "উফ, এ যে দেখছি কিছুই বোঝেনা। মেয়েদের আন্ডার গার্মেন্টস চাই, উপরে পড়ার। ব্রেসিয়ার .. এবার বুঝতে পেরেছেন? নাকি আরো বুঝিয়ে বলতে হবে?"

- "আচ্ছা এই ব্যাপার? এটা প্রথমে বললেই মিটে যেতো .. এতে এত লজ্জা পাওয়ার কি আছে?"

- "আসলে কি জানেন তো ভাই, আমি ফার্স্টটাইম একা একা কোনো আন্ডার গার্মেন্টসের দোকানে এলাম। আমি তো আগে বাঁকুড়ায় থাকতাম। এখানে কয়েক মাস হলো এসেছি। ওখানে আমার শাশুড়ির সঙ্গে এইসব জিনিস কিনতে যেতাম, উনিই সবকিছু দেখে শুনে কিনতেন, আমি পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতাম। তাই বলতে কিছুটা লজ্জা পাচ্ছিলাম।"

- "বুঝলাম .. তা কিরকম ব্রা দেখাবো বলুন আপনাকে .. প্যাডেড? স্ট্র্যাপলেস? পুশআপ?"

- "নরম্যাল .. নরম্যাল .."

- "ঠিক আছে, আপনার সাইজটা বলুন। সেই অনুযায়ী বের করছি .."

- "সাইজ? এইরে, সেটা তো বলতে পারবো না ভাই। আমার শাশুড়ি জানেন।"

- "ব্রায়ের স্ট্র্যাপের উপর তো সাইজ লেখা থাকে! আবার কোনো কোনো ব্রায়ের দুটো কাপের মাঝখানে যে কানেক্টরটা থাকে, সেখানে লেখা থাকে সাইজ। লক্ষ্য করেন নি কোনোদিন?"

- "না, আমি ওসব লক্ষ্য করিনি। আচ্ছা ভাই আপনার কি মনে হয় না, এইসব কাজের জন্য আপনার দোকানে একাধিক না হোক, অন্তত একজন মহিলা কর্মচারী রেখে দেওয়া উচিত! তাহলে তো মহিলা কাস্টমারেরা একটু কমফোর্টেবল ফিল করবে!"

পম্পার কথাগুলো শুনে দোকানে থাকা যুবকটির মনে হলো, এই মেয়েটা সত্যিই একজন সরল সাদাসিধে ভালো মনের মানুষ। তাই মিষ্টি হেসে বললো, "আমি আপনার কথাটা বুঝতে পারছি এবং আপনার কথাগুলোকে সম্মান করেই বলছি, পুরুষদের থেকে এইসব জিনিস কিনতে আপত্তিটা কোথায়? আমরা যে জিন্স টি-শার্ট এগুলো পড়ি, আপনি যে এই লেগিংস আর কুর্তি পরে এসেছেন, এগুলোর মতোই অন্তর্বাস হলো এক ধরনের পোশাক। এবং এগুলোর মতোই ভীষণ প্রয়োজনীয়। আপনি অন্তর্বাস ছাড়া কোথাও বেরোতে পারবেন কি? পারবেন না। আপনি কি জানেন ম্যাডাম, যে ফ্যাক্টরিতে এগুলো তৈরি হয় সেখানে আশি শতাংশ পুরুষ কারিগর! আপনার কথা অনুযায়ী তাহলে তো তাদেরও সরিয়ে দিয়ে সেখানে শুধুমাত্র মহিলা কারিগর নিযুক্ত করা উচিত। কিন্তু সেটা কি কোনোদিনও সম্ভব হবে? তাই বলছি, এটা যখন আমাদের এতটাই প্রয়োজনীয়, তখন এগুলো কিনতে এসে লজ্জা পাওয়ার কোনো মানেই হয় না।"

~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 10 users Like Bumba_1's post
Like Reply
- "আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাই। আসলে এই সমাজ ব্যবস্থাটাই আমাদের মানসিকতাটা এরকম বানিয়ে ফেলেছে। মহিলাদের অন্তর্বাস নিয়ে মহিলারাই স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারেনা, সহজ হতে পারে না পরস্পরের কাছে। আমার স্বামীর জাঙিয়া সবার সামনে মেলা থাকতে পারে, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু আমার ব্রা প্যান্টি যদি দড়িতে মেলতে যেতাম তাহলে শাশুড়ি বলতেন, 'ভেতরে মেলো, ঘরের ভেতরে মেলো। না হলে ওইগুলোর উপর নিজের কোনো কাপড় চাপা দিয়ে দাও'। কথাগুলো এমন ভাবে বলতেন যেন ওগুলো আমার ব্রা প্যান্টি নয়, সোনার অলঙ্কার। তাই এবার থেকে আর লজ্জা নয়, স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে হবে এগুলোকে নিয়ে।"


- "খুব ভালো, আপনি যে ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন, তাতেই আমি খুশি। আচ্ছা আপনি তো নরম্যাল ব্রা দেখতে চাইলেন! ঠিক আছে নরম্যালই দেখাচ্ছি। আপনি এক পা পিছিয়ে গিয়ে একটু দাঁড়াবেন ম্যাডাম? তাহলে আমি নিজের আইডিয়া থেকে আপনার সাইজটা ডিটেক্ট করে নেবো।"

"কেন আপনার চোখে এক্সরে মেশিন বসানো রয়েছে নাকি? হিহিহি .." হাসতে হাসতে কথাগুলো বলে এক পা পিছিয়ে দাঁড়ালো পম্পা।

- "না ম্যাডাম, আমার চোখে কোনো মেশিন বসানো নেই। আসলে ছোটবেলা থেকে দোকানে বাবার সঙ্গে বসছি তো, তাই একটা আইডিয়া হয়ে গেছে। তবে আমার বাবার অ্যকিউরেসির কাছে আমারটা কিছুই নয়। আমার বাবা তো বাইরে থেকে দেখে আন্টিদের বা বৌদিদের ব্রায়ের কাপ সাইজ পর্যন্ত বলে দিতো। আপনি শুনলে অবাক হবেন ম্যাডাম, কোনো পরিচিত ব্যক্তি যখন তার স্ত্রীর জন্য ব্রা কিনতে আসতো আমাদের এই দোকানে, তখন বাবার কাছ থেকে তার স্ত্রীর সাইজ জিজ্ঞেস করে, ব্রা আর প্যান্টি কিনে নিয়ে যেত এখান থেকে।"

- "হিহিহি .. আচ্ছা তাই? তা আপনার বাবা এখন কোথায়? ওনাকে দোকানে দেখছি না তো! বাই দ্য ওয়ে, তখন থেকে আমাকে 'ম্যাডাম' 'ম্যাডাম' করছেন কেনো? আমি আপনাকে 'ভাই' করে বলছি আর আপনি আমাকে ম্যাডাম বলে যাচ্ছেন! আমি এ বছর ছাব্বিশে পড়লাম, আপনাকে দেখে মনে হয় আমার থেকে ছোটোই হবেন .."

- "আমার চব্বিশ, ঠিক আছে তাহলে আপনাকে দিদিভাই বলবো। আপত্তি নেই তো? হি ইজ নো মোর, মানে আমার বাবা আর বেঁচে নেই। বছরখানেক হলো গত হয়েছেন। তাই এখন আমি একাই বসি দোকানে।"

- "না আপত্তি নেই। তবে তোমার বাবার ব্যাপারটা শুনে খারাপ লাগলো, এই বয়সেই পিতৃহারা হতে হয়েছে তোমাকে।! যাই হোক, তাড়াতাড়ি দেখে বলো আমার ব্রায়ের সাইজটা, আমাকে বাড়ি ফিরতে হবে তাড়াতাড়ি। এই দ্যাখো 'তুমি' বলে ফেললাম .."

"না না ঠিক আছে, তুমি করেই তো বলবে! আমি তো ছোট তোমার থেকে বয়সে দিদিভাই। দাঁড়াও, ভালো করে দেখতে দাও, দেখে বলছি। দেখে তো মনে হচ্ছে ৩৬, কিন্তু কাপ সাইজটা সম্ভবত ৯৭ সেন্টিমিটার হবে। ওই ধরো সব মিলিয়ে ৩৬ সি সাইজের ব্রা লাগবে তোমার।" কথাগুলো বলে পেছনে রাখা সুসজ্জিত শোকেসের মধ্যে থেকে অন্তর্বাসের প্যাকেট বের করতে লাগলো যুবকটি।

- "আরে দাঁড়াও দাঁড়াও, এত তাড়াহুড়ো কোরো না। তুমি আমাকে প্যাডেড ব্রা দেখাও তো!"

- "বলছিলাম দিদিভাই, প্যাডেড ব্রা তো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টিনেজারেরা পড়ে, অথবা যাদের কাপ সাইজ ৩৪ এর নিচে, তারা ব্যবহার করে। তোমার ঈশ্বরপ্রদত্ত যা আছে, সে ক্ষেত্রে প্যাডেড ব্রা ব্যবহার করতে হবে বলে মনে হয় না।"

- "কি ব্যবহার করতে হবে আর হবেনা সেটা আমি বুঝবো। তোমাকে যেটা বলছি, সেটাই করো।"

- "ঠিক আছে, তোমার যা ইচ্ছে! কালার ডিমান্ড কিছু আছে?"

- "হ্যাঁ আছে .. একটা ব্ল্যাক দাও, একটা পিঙ্ক দাও। আর একটা, আর একটা, আর একটা, দাড়াও বলছি .. ঠিক আছে একটা রেড কালারের দিয়ে দাও। তবে সাইজ যদি ছোট বড় হয়, তাহলে কিন্তু ফেরত নিতে হবে! তখন 'আপনি পড়ে ফেলেছেন' এসব বললে চলবে না।

- "একদম দিদিভাই, অবশ্যই ফেরত নেবো। তবে ছোট বড় একটাও হবে না। সব কটা পারফেক্ট হবে। আমার চোখের জরিপটা যে কত ভালো, সেটা তখন তুমি নিজেই বুঝতে পারবে। ঠিক আছে, এই নাও তোমার পছন্দের তিনটি কালারের ব্রা দিয়ে দিলাম। তাহলে প্যাক করে দিচ্ছি?"

- "হ্যাঁ করতেই তো বললাম। কত দেবো?"

- "ওই তো আড়াইশো টাকা করে, তিনটে সাড়ে সাতশো টাকা হয়। তুমি সাতশো পঁচিশ দাও।"

- "ইয়ার্কি মারার জায়গা পাওনি! এগুলোর আড়াইশো টাকা করে দাম? আরে এর থেকে তো বাঁকুড়াতে অনেক সস্তা গো! আমি আমার শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে গিয়ে যেগুলো কিনতাম, সেগুলো তো ৮৫ টাকা, কোনোটা ৯৫ টাকা, কোনোটা খুব বেশি হলে ১১০ টাকা দাম নিতো। মানছি ওগুলো নরম্যাল ব্রা, কিন্তু তাই বলে এত দাম তোমাদের এখানে? তিনটে মিলিয়ে ৬০০ টাকার এক পয়সা বেশি দেবো না।"

- "মরে যাবো দিদিভাই, মরে যাবো। আমাদের কেনা দামটাও উঠবে না এতে। আরে তুমি যেগুলো কিনতে, সেগুলো আন্টি টাইপ ব্রা। ওগুলো তো আমাদের এখানে আরও কমে পাওয়া যায়। ওসব পড়ার বয়স হয়েছে নাকি তোমার? তোমার জন্য এগুলোই পারফেক্ট। ঠিক আছে, না তোমার না আমার, সাতশো টাকা দাও।"

- "একদমই না, গ্রাম থেকে এসেছি বলে তুমি কি আমাকে বোকা ভেবেছো? এত কম লাভ রেখে তোমরা বিক্রি করো না এইসব জিনিস, সেটা আমি জানি। ঠিক আছে তোমাকে 'ভাই' বলে ডেকেছি, তাই যা বলেছিলাম তার থেকে পঞ্চাশ টাকা আরো বেশি দিচ্ছি। তাহলে টোটাল ৬৫০, ওকে? আরে বাবা, আজতো শুধু ব্রা কিনলাম। এরপরে একদিন এসে প্যান্টি কিনে নিয়ে যাবো তোমার দোকান থেকে, চিন্তা নেই। মান্ধাতার আমলের স্টাইলের নয়, মডার্ন স্টাইলের কিছু দেখিও। তাছাড়া আমি যে ক্যাম্পাসে থাকি, সেখানে আমার বয়সী বা আমার থেকে বড় আরও অনেক লেডিস থাকে। তাদেরকে বলবো তোমার দোকানের কথা, তারাও আসবে তোমার দোকানে। ওদের থেকে যত পারো লাভ করে নিও।"

- "পড়েছি যবনের হাতে .. থাক, বাকিটা আর বললাম না। তাহলে বলো তোমার ওখানকার মহিলাদের আমার দোকানের কথা, আর তুমিও এসো আবার। এই নাও, তিনটে প্যাক করে দিলাম, ৬৫০ টাকাই দাও।" 

ব্রায়ের প্যাকেটটা নিয়ে, হাসিমুখে বিক্রেতা যুবকটিকে বিদায় জানিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে এলো পম্পা।

★★★★

"মহারানীর এতক্ষণে ফেরার সময় হলো?" বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই অমিতের এইরূপ টিপ্পনীতে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে তার স্বামীর দিকে তাকিয়ে, তারপর সোজা নিজের বেডরুমে ঢুকে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো পম্পা।

অমিত ভেবেছিলো তার কথায় হয়তো চমকে যাবে তার স্ত্রী, হয়তো থতমতো খেয়ে গিয়ে কৈফিয়ৎ দেওয়ার চেষ্টা করবে তার স্বামীর কাছে। কিন্তু এগুলোর কোনটাই না করে, কোনো রিয়্যাকশন না দিয়ে তার স্ত্রীর ভেতরে ঢুকে যাওয়ায়, যারপরনাই রেগে গেলো অমিত।

 ওইরকম মারকাটারি, উত্তেজক ফিগারে নিচে শুধু প্যান্টি পড়ে ঊর্ধাঙ্গের অন্তর্বাস ছাড়াই উপরে একটা হাতকাটা সুতির পাতলা ফিনফিনে নাইটি চাপিয়ে পম্পা ঘর থেকে বেরোনোর পর, তার বউয়ের দিকে তাকিয়ে ফেটে পড়লো অমিত, "আজকাল তোমার বাড়ির বাইরে বেরোবার পোশাক দেখলে লজ্জায় মাথা কাটা যায় আমার। আর বাড়ির ভেতরে তো কথাই নেই, ঠিক যেন মনে হয় কোনো প্রস্টিটিউটদের এলাকায় এসেছি আমি! ঠিক যেমন এখন পড়ে রয়েছো। পাঁচজনে পাঁচ কথা বলে বেড়াচ্ছে চারিদিকে, সে খবর রাখো?"

"খেতে দেবো তো? তাহলে গিয়ে বসে পড়ো ডাইনিং টেবিলে। আমি সার্ভ করে দিচ্ছি।" এতক্ষণ ধরে তার স্বামীর বলা সবকটা কথা ইগনোর করে এইরূপ উক্তি করলো পম্পা।

এতে যেন মেজাজের পারদ আরও চড়লো অমিতের। চিৎকার করে বলে উঠলো, "কি হলো, কথা ঘোরাচ্ছো যে? আমার কথাগুলো কানে যায় নি তোমার? পাঁচজনে পাঁচ কথা বলে বেড়াচ্ছে চারিদিকে। আমার তো একটা মান সম্মান বলে ব্যাপার আছে, নাকি? আর এমন ভাবে বলছো যেন আমার জন্য কোর্মা, কালিয়া, পোলাও এসব রান্না করে রেখেছো!"

"কোর্মা, কালিয়া, পোলাও এই প্রিপারেশন গুলোর ইনগ্ৰেডিয়েন্টস দোকান থেকে কিনে এনে দিলেই বানিয়ে দিতাম। তোমার ফ্যাক্টরির লোকজন যা বাজার দোকান করে দেয়, সেই হিসেবেই রান্না হয়। সেটা তুমি নিজে ভালো করেই জানো। আর আমি কোনো কথা ঘোরাইনি, তোমার বলা সবকটা কথাই শুনেছি আমি। তুমি যে কথাগুলো নিজের ফ্রাস্টেশন থেকে বলছো, সেটাও বুঝতে পেরেছি। তাই তোমার মনোকষ্ট যাতে আর না বাড়ে, সেজন্য চুপ করে রয়েছি। তুমি যখন বারবার খোঁচাচ্ছ, তাহলে বলছি শোনো .. পাঁচজনে তো অনেক কথাই বলে। সেগুলোও তো আমার কানে আসে। পাঁচজনে তো এটাও বলে যে, তুমি হলে ধ্বজভঙ্গ! আমি অবশ্য জনে জনে কথাটা বলতে যাইনি, আমি শুধু আমাদের কাজের মাসি গীতা দি'কে কথাটা বলেছিলাম। তাও বলতাম না, একদিন দুপুরে তুমি আমাকে স্যাটিসফাই না করেই বেরিয়ে গেলে, মনে আছে? আমি বসে বসে কাঁদছিলাম। তখন গীতা দি কাজ করতে এসেছিলো। ও আমার চোখ-মুখের অবস্থা দেখে বারবার প্রশ্ন করতে থাকায়, ওকে বলেছিলাম। ও সেটা বাইরে গিয়ে রটিয়ে দিলে আমি আর কি করতে পারি? এখন তো বাইরের সবাই, এমনকি তোমার সহকর্মীরাও এটা নিয়ে হাসাহাসি করে।" খুব স্বাভাবিকভাবে কথাগুলো বললো পম্পা।

"ঘর জ্বালানি পর ভোলানি মেয়েমানুষ কোথাকার। আমার লাইফটাকেই নরক বানিয়ে দিলে তুমি! ভেবেছিলাম বাড়িতে এসে খেয়েদেয়ে একটু বিশ্রাম করে, তারপর সেকেন্ড হাফে অফিসে যাবো। কিন্তু এখানে তোমার সাথে আর এক মুহূর্ত থাকতে আমার ঘেন্না করছে।" এই বলে হনহন নিজের ঘরে ঢুকে দড়াম করে দরজা আটকে দিলো অমিত। 

এর কিছুক্ষণ পর ফরমাল ড্রেস পড়ে দরজা খুলে বেরিয়ে এসে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো সে। অমিত চলে যাওয়ার পর ছলছলে দৃষ্টিতে সেই দিকে তাকিয়ে থেকে ধরা গলায় পম্পা বললো, "কে কার জীবনটাকে নরক বানিয়ে দিয়েছে, এটা একমাত্র ঈশ্বর জানেন।"

★★★★

পরের দিন সকালে একটু দেরিতে ঘুম ভাঙলো পম্পার। আগেরদিন তার স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়াতে মেজাজটা খিঁচড়ে ছিলো তার। কোনো কালেই বেশিক্ষণ রাগ পুষে রাখতে পারে না সে। তারপর এক বাড়িতে দু'জন মানুষ থাকবে, সর্বোপরি তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী হয়েও পরস্পরের সঙ্গে কথা বলবে না! এটা ভাবতেই মন কেমন করে উঠলো পম্পার। সবকিছু ভুলে অমিতের কাছে গিয়ে তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আধো আধো ভঙ্গিতে বললো, "এই শুনছো, আজ ছুটি নাও না! কাল ফেরার সময় দেখলাম গঞ্জ বাজারের সিনেমা হলটাতে সালমানের একটা দারুন সিনেমা এসেছে। চলো না, দেখে আসি দু'জনে! এখান থেকে সাড়ে এগারোটা বারোটার মধ্যে বেরিয়ে যাব তারপরে বাইরে কোথাও লাঞ্চ করে ম্যাটিনি শোয়ে দেখবো সিনেমাটা!"

"ছাড়ো .. তোমার সঙ্গে সিনেমায় যাওয়া তো অনেক দূরের ব্যাপার, একসঙ্গে এক বাড়িতে থাকতেও আমার ঘেন্না হয়। নেহাত আমার বাবা-মা আমাকেই দোষ দেবে, তাই বাধ্য হয়ে তোমার সঙ্গে থাকতে হচ্ছে। দেখলে না, কাল রাতে আমি আলাদা গিয়ে শুলাম পাশের ঘরে। এবার থেকে আলাদাই ঘুমাবো। তাছাড়া ওইসব সিনেমা দেখে বাজে সময় নষ্ট করার মতো সময় আমার হাতে নেই। তিন মাস হয়ে গেলো, এখনো অর্ধেক কাজ হলো না। ছ'মাসের মধ্যে প্রজেক্টটা শেষ করতে না পারলে সান্যাল প্রমোশনটা নিয়ে নেবে। তোমাকে এসব বলে অবশ্য কোনো লাভ নেই, তোমার মোটা মাথায় কথাগুলো ঢুকবে না। যাইহোক, আমি বেরোলাম। একজন আসবে, ওর হাতে আমার লাঞ্চটা পাঠিয়ে দিও ফ্যাক্টরিতে।" কথাগুলো বলে এক ঝটকায় পম্পার বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে বেরিয়ে গেলো অমিত।

"ও কি বলে গেলো, শুনলে গীতা দি? আমার সঙ্গে এক বাড়িতে থাকতে ওর নাকি ঘেন্না হয়! কেন বলো তো? কি করেছি আমি? আমি কি রাতের পর রাত বাইরে কাটিয়েছি? নাকি মদের ফোয়ারা উড়িয়ে বাড়িতে অন্য পুরুষের সাথে বেলেল্লাপনা করেছি? আমি তো এখানে আসতেই চাইনি। আমি তো শ্বশুরবাড়িতেই থাকতে চেয়েছিলাম, ওই তো আমাকে জোর করে নিয়ে এলো এখানে। তাহলে কেনো সবসময় এই কথা বলবে যে, ও আমাকে ঘেন্না করে? কেনো, কেনো?" পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কাজের মাসি গীতাকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে কথাগুলো বললো পম্পা।

"তার কারণ তুমি এগুলোর কিছুই করোনি। এগুলোর একটাও যদি তুমি করতে, তাহলে তোমার স্বামী ইঁদুরের মতো ল্যাজ গুটিয়ে গর্তে ঢুকে যেতো। কাল রাতে তোমার বর আলাদা কেন শুয়েছিল জানো? তোমার উপর রাগ করে নয়। নিজের অকর্মণ্যতা ঢাকার জন্য। রাতে তোমার যদি হঠাৎ প্রেম জেগে ওঠে? যদি তোমার বরের সঙ্গে সোহাগ করতে চাও? তখন তো তোমার বরের মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি হয়ে যাবে। কারণ ওর তো লিঙ্গই দাঁড়ায় না। সেই জন্যেই একটা অজুহাত খাড়া করে আগেভাগেই আলাদা ঘরে শুতে চলে গেলো এবং আজকে ঘোষণা করে দিলো চিরকাল এইভাবে ও আলাদাই শোবে। ওই ধ্বজভঙ্গ লোকটাকে বিয়ে করে তোমার কপাল পুড়েছে গো বৌদিমণি, তোমার কপাল পুড়েছে। সে তুমি যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করো না কেনো! একজন শিক্ষিত মেয়ে হয়ে এই ভাবেই চিরকাল স্বামীর গঞ্জনা সহ্য করে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেবে, নাকি নতুন ভাবে বাঁচার চেষ্টা করবে .. সেটা তোমাকে ঠিক করতে হবে। আমি চললাম গো, আমার এখনো দুই বাড়ি কাজ পড়ে রয়েছে।" পম্পার গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে বেশ কিছুক্ষণ সান্তনা দিয়ে কথাগুলো বলে গীতাও বেরিয়ে গেলো।

স্নান করতে যাওয়ার আগে ছোট কাঠের আলমারিটা খুলে জামাকাপড় বের করতে গিয়ে পম্পা দেখলো, গত সপ্তাহ থেকে অপরিষ্কার জামাকাপড় গুলো দলা পাকানো অবস্থায় আলমারির মধ্যেই ঢোকানো রয়েছে। দৃশ্যটা দেখেই ভীষণ রাগ হলো পম্পার। তাদের ক্যাম্পাসের পার্মানেন্ট ধোপা মুনিলাল মারা যাওয়ার পর থেকে, ওর যে ছেলেটা এখানে এসেছে, সেটা একদম কামচোর। 'কি যেন নাম ওর, সেটাই তো জিজ্ঞাসা করা হয়নি! মুনিলালের ছেলে যখন, চুনিলাল ছাড়া আর কিই বা নাম হবে! ধোপার কাজ করে, অথচ স্টাইল দেখলে মাথা খারাপ হয়ে যায়। ফর্সা, লম্বা-চওড়া চেহারা, একমুখ দাড়ি, ব্যাকব্রাশ করা চুল .. দেখলে মনে হয় যেন সিনেমার হিরো। সেদিনকে বাইকে করে যাচ্ছিল, আমি একজন অফিসারের বউ হয়ে ওকে ডাকলাম! আমার দিকে একবার তাকিয়ে বাইকটা নিয়ে হুশ করে বেরিয়ে চলে গেলো? এত বড় সাহস! একদিন পাই চোখের সামনে ওকে দেখতে, তারপর বোঝাবো আমি কি জিনিস!' কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ড্রয়িংরুমের জানলাটার কাছে এসে দাঁড়ালো পম্পা। ঠিক সেই মুহূর্তে দেখলো ওই লম্বা-চওড়া, ফর্সা, দাড়িওয়ালা ছেলেটা তারই কোয়ার্টারের সামনে দিয়ে যাচ্ছে। তবে বাইকে করে নয়, পায়ে হেঁটে।

"এই চুনিলাল, ইধার তাকাও। আরে ইধার ইধার, জানালার দিকে তাকাও। তোমাকে সেদিনকে যখন আমি ডাকলাম, তখন আমাকে দেখেও কিঁউ চলা গিয়া হুশ করকে বাইক চালাকে? তুমি জানতা হ্যায়, হাম কৌন হ্যায়? তুমহারা সাহস বড্ড বাড় গিয়া, তাই না? রিপোর্ট কর দেগা তুমহারা নামে। তখন সামঝেগা কত ধানে কত চাল হোতা হ্যায়! ইধার আও, আউর এসে কাপড় নিয়ে যাও।" পম্পার মুখে এই জ্ঞানপিঠ পুরস্কারপ্রাপ্ত হিন্দি শুনে থমকে দাঁড়ালো যুবকটি। তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে 'আমাকে কিছু বলছেন?' এরকম একটা ইশারা করে সদর দরজার পাশে লাগানো কলিংবেলটা টিপলো।

"হ্যাঁ বাবা হ্যাঁ, তোমাকেই তো বলছি। তুমি ছাড়া কি এখানে চুনিলাল নামের আর কেউ আছে? এখানে দাড়াও, আমি কাপড় জামাগুলো নিয়ে আসছি। আর হ্যাঁ, দু'দিনের মধ্যে একদম কেচে আয়রন করে দিয়ে যাবে কিন্তু। তোমার বাবা তো প্রতিটা জামাকাপড় পিছু ৩ টাকা করে নিতো। তুমি কি রেট বাড়িয়েছো, না একই রেখেছো?" কথাগুলো বলে জামাকাপড় নিতে ভেতরে যেতে উদ্যত হলে পম্পাকে থামালো যুবকটি।

"দেখুন ম্যাডাম আমার মনে হয় আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আপনি আর কিছু বলার আগে, দয়া করে যদি এক মিনিট মন দিয়ে আমার কথাগুলো শোনেন, তাহলে মনে হয় আপনার ভুল ধারণাটা কেটে যাবে।" যুবকটির এই কথায় পম্পা বলে উঠলো, "বুঝেছি বুঝেছি, তোমার নাম চুনিলাল নয়, তাইতো? আমি ভেবেছিলাম, মুনিলালের ছেলে চুনিলাল হবে। তাহলে কি তোমার নাম মিছরিলাল?"

"আজ্ঞে না ম্যাডাম, প্রথমতঃ আমার নাম চুনিলাল বা মিছরিলাল কোনোটাই নয়। দ্বিতীয়তঃ আমার বাবার নাম মুনিলাল নয়। তৃতীয়তঃ আমার বাবা এখনো বেঁচে আছেন এবং চতুর্থতঃ আমার বাবা ধোপার কাজ করেন না। উনি এই ফ্যাক্টরির একজন সাপ্লায়ার। এবার বলুন, আর কিছু বলার আছে আপনার?" খুব স্বাভাবিকভাবে কথাগুলো বললো যুবকটি।

"কিন্তু আমি যে তোমাকে সরি আপনাকে সেদিন, মানে মুনিলাল মারা যাওয়ার আগে ওর সাথে দেখেছিলাম ওর বাড়ি থেকে বেরোতে? তার আগে তো কোনোদিন আপনাকে এই ক্যাম্পাসে দেখিনি! তাই ভেবেছিলাম আপনি ওর ছেলে, দেশ থেকে এখানে এসেছেন বোধহয় বাবার কাজে সাহায্য করতে।" আমতা আমতা করে বললো পম্পা।

"আচ্ছা, কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কাউকে দেখলে আপনি তাকে তার ছেলে ভেবে নেন বা আত্মীয় ভেবে নেন? আমি জানিনা আপনি আমাকে কোন দিন দেখেছিলেন! হতে পারে সেদিন হয়তো আমি নিজে হাতে করে আমার জামাকাপড় দিতে এসেছিলাম চাচাকে। উনার শরীরটাতো বেশ কিছুদিন ধরে খারাপ যাচ্ছিল, তাই হয়তো যেতে পারেনি আমাদের বাড়িতে। তবে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন, আমি ধোপা নই। আমি একজন আই স্পেশালিস্ট। আমার বাবা-মা এখানে থাকলেও, আমি কলকাতাতেই থাকি। ওখানে আমার একটা চশমার দোকান আছে এবং ওই দোকানে আমি বসি, মানে চক্ষু পরীক্ষা করি। এখানে আসি মাঝে মধ্যে। আপনারা মনে হয় খুব বেশিদিন হলো এখানে আসেন নি। তাই হয়তো দেখেননি আমাকে।" মুচকি হেসে শান্তভাবে কথাগুলো বললো যুবকটি।

"আই স্পেশালিস্ট, মানে ডাক্তার? আর আপনার বাবা এই ফ্যাক্টরির সাপ্লায়ার? আরিব্বাস, তার মানে তো বিশাল ব্যাপার আপনাদের! সরি সরি আই এম এক্সট্রিমলি সরি। না বুঝে অনেক কটু কথা বলে ফেলেছি আপনাকে। আমাকে ক্ষমা করে দিন, আর এই কথাগুলো বাইরে কাউকে বলার দরকার নেই। আপনি আসুন না, ভেতরে আসুন।" কথাগুলো বলে দরজার সামনে থেকে সরে গিয়ে যুবকটিকে ভেতরে আসতে ইঙ্গিত করলো পম্পা।

এদিক ওদিক তাকিয়ে ভিতরে ঢুকে ড্রয়িংরুমে রাখা সোফার উপর বসে যুবকটি পম্পার দিকে তাকিয়ে বললো, "আমাকে চা বা জল অফার করার আগে একটা কথা বোধহয় আপনার জেনে রাখা প্রয়োজন। আমি বাঙালি, কিন্তু * নয়। আমরা ., আমাদের আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদে। আমার নাম হুমায়ূন কবির।"

 "তো? তার জন্য আমি কি করবো? নাচবো?" অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো পম্পা। 

"না, তাই বলছিলাম আর কি। পরে জানতে পারলে আমার এঁটো করা গ্লাসটা বা চায়ের কাপটাই হয়তো ফেলে দিতেন। তাই ওগুলো যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্যই ইনফরমেশনটা দিয়ে রাখলাম আপনাকে।" হাসতে হাসতে উত্তর দিলো হুমায়ুন।

"আমার কি মনে হচ্ছে বলুন তো এখন? আপনার চায়ে বিষ মিশিয়ে দিয়ে আপনাকে সেটা খাওয়াই।" কপট রাগ দেখিয়ে বললো পম্পা।

- "বাড়িতে বিষ আছে নাকি?"

- "অবশ্যই আছে, ইঁদুর মারার বিষ। ভাবছি ওটাই চায়ের মধ্যে গুলিয়ে খাইয়ে দেবো আপনাকে।"

- "হাহাহা .. কোনো লাভ হবে না ম্যাডাম। ইঁদুরের বিষে  মানুষ মরে না। কয়েকবার বমি করলেই ঠিক হয়ে যাবে। আর তাতেও যদি না হয়, হসপিটালে গিয়ে একবার ওয়াশ করে নিলেই হয়ে যাবে, জোকস এপার্ট। তবে হ্যাঁ, এত বেলায় আমি কিন্তু সত্যি সত্যি কিছু খাবো না। আজকে ছুটির দিন, তাই রিল্যাক্স করার জন্য একটু বেরোচ্ছিলাম। তার মাঝে তো আপনি আমাকে ডেকে নিয়ে এসে ধোপা বানিয়ে দিলেন।"

- "আমি তো আগেই ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি সেই ব্যাপারে। ওই কথা বলে আমাকে আর লজ্জা দেবেন না। কিচ্ছু খাবেন না?"

- "অন্যদিন হলে অবশ্যই খেতাম, কিন্তু আজ নয়। আজ বাইরে লাঞ্চ করার প্ল্যান আছে আমার। গঞ্জের মোড়ে যে বিরিয়ানির নতুন দোকানটা হয়েছে, সেখানে মটন বিরিয়ানি আর চিকেন চাপ দিয়ে লাঞ্চ সেরে সিনেমা দেখতে যাবো। রেস্টুরেন্টটার পাশেই তো সিনেমা হল! সালমান খানের নতুন একটা সিনেমা এসেছে, ওটা দেখবো।"

~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 8 users Like Bumba_1's post
Like Reply




Users browsing this thread: 8 Guest(s)