Thread Rating:
  • 186 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )
ঘুম কিন্তু ভেঙে গেছে ভাই। অপেক্ষায় আছি

[+] 1 user Likes rizvy262's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
ভাই সকাল হয়ে গেছে।
[+] 2 users Like _master_'s post
Like Reply
(14-08-2023, 08:00 AM)rizvy262 Wrote: ঘুম কিন্তু ভেঙে গেছে ভাই। অপেক্ষায় আছি


পড়ে বলবেন কেমন হল। বিস্তারিত মন্তব্য চাই কিন্তু  Shy
Like Reply
(14-08-2023, 09:54 AM)_master_ Wrote: ভাই সকাল হয়ে গেছে।

সকাল হইছে তাই আপডেট এসে গেছে। এইবার পড়ে বলবেন কেমন লাগল।
[+] 1 user Likes কাদের's post
Like Reply
আপডেট ২৩



নুসাইবার চোখে ঘুম নেই। গত দুই রাত ধরে নুসাইবা ঘুমাতে পারছে না। শেষ রাতে একটু ঘুম আসে চোখে কিন্তু দুঃস্বপ্নে আবার ভেংগে যায়। নুসাইবার চোখ লেগে আসলেই দেখতে পায় আরশাদ একটা জুয়ার টেবিলে বসে আছে। টেবিলের উপর একটা হলুদ বালব জ্বলছে আর সারা রুমে কোন আলো নেই। নুসাইবা যেন সেই রুমে উপস্থিত কিন্তু আরশাদ বা অন্য কেউ ওকে দেখতে পারছে না। জুয়ারে প্রতি দানে আরশাদ হারছে কিন্তু খেলা থেকে উঠছে না একবারের জন্য। নুসাইবা ওকে আড়াল থেকে ডাকছে ফিরে আসবার জন্য কিন্তু আরশাদের সেদিকে কোন খেয়াল নেই। আরশাদের মনযোগ তখন খালি জুয়ার টেবিলে। প্রতিদানে  হারছে আর আরশাদের মাথার চুল কমছে, পেটে ভুড়ি বাড়ছে, মুখে বয়সের ছাপ পড়ছে। নুসাইবা সারা জীবন ঘুষখোর সরকারী অফিসারদের যে চেহারা কল্পনায় দেখেছে আরশাদ যেন প্রতিটা হারের পর ঠিক সেই চেহারার কাছাকাছি চলে যাচ্ছে। নুসাইবা ডাক, পরের বার পরাজয়ের হাতছানি কিছুই আরশাদ কে থামিয়ে রাখতে পারছে না। এই নেশায় এমন মোহগ্রস্ত হয়ে আরশাদ যে আর কোন কিছু সেখানে মূখ্য না। সেই দুনিয়ায় নুসাইবার কোন অস্তিত্ব নেই। সেখানে নুসাইবা আছে খালে ছায়া হয়ে। এই স্বপ্ন শুরু হলে একটু পরেই নুসাইবা আর ঘুমিয়ে থাকতে পারে না। জেগে উঠে বসে। ঘুমের মাঝে আরশাদ কে এভাবে তিলেতিলে ধবংস হয়ে যেতে দেখতে নুসাইবার কষ্ট হয়। জেগে বসে পাশে তাকালে দেখে আরশাদ ঘুমিয়ে আছে নিশ্চিন্তে। নুসাইবা আরশাদ কে দেখে আর ভাবে কিভাবে এত কিছু গোপন করে দিনের পর দিন শান্তিতে ঘুমিয়ে যাচ্ছে আরশাদ। কিভাবে নুসাইবার সাথে যখন কথা হয় তখন নীতি নৈতিকতার ব্যাপারে সায় দিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। আরশাদের অভিনয় ক্ষমতা আসলে কত শক্তিশালী?


সেদিন আরশাদ কে ঐ ক্লাবে ঢুকতে দেখার পর থেকে কিছু আর তেমন মনে নেই নুসাইবার। স্মৃতিতে সব ঝাপসা হয়ে গেছে। সারাজীবন নুসাইবা ভেবে এসেছে আরশাদ অন্য সবার মত না, ভিন্ন মানুষ। পত্রিকার রিপোর্ট সেখানে একটা ধাক্কা দিয়েছিল। তবে আরশাদের কথা বিশ্বাস করেছিল যে অফিসের শত্রুরা কেউ এই রিপোর্ট করিয়েছে। তবে তারপরেও কিছু হিসাব তো মিলছিল না। সেই হিসাব মিলাতে আরশাদের পিছু নিয়েছিল নুসাইবা এই শুক্রবার। আরশাদ কে জুয়ার ক্লাবে ঢুকতে দেখেই নুসাইবা বুঝে গিয়েছিল আরশাদ ওকে পত্রিকার রিপোর্টের ব্যাপারে যা যা বলেছিল সব মিথ্যা। আর সারা জীবন অন্যদের সামনে গ্যাম্বলিং কত খারাপ এই উপদেস ঝেড়ে নিজেই যখন জুয়ার ক্লাবে ঢুকছে তখন নুসাইবার মনে হতে থাকে সারা জীবন ওকে বলা আরশাদের আর কত গুলো কথা আসলে মিথ্যা। এইটা যখন মাথার ভিতর ঢুকেছে তখন থেকে আর কিছু মনে নেই। এরপর কত সময় গেল, ঘন্টা না মিনিট সেটাও মনে করতে পারে না নুসাইবা। নুসাইবার খালি মনে আছে মাহফুজ ওকে ধরে ঝাকি দিচ্ছে আর বলছে ফুফু, ফুফু। নুসাইবা তখন খেয়াল করে দেখে মাহফুজ কে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কেদেই যাচ্ছে ও। মাহফুজ বলে ফুফু আমরা বাসায় পৌছে গেছি। নুসাইবা দেখে সিএনজি ওদের এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের গ্যারেজের ভিতর। নুসাইবার শরীরে তখন কোন শক্তি নেই। মাহফুজ তখন ওকে হাত ধরে উপরে তুলে নিয়ে এসেছে। উপরে আসার পর নুসাইবা যেন পায়ে শক্তি পাচ্ছিল না। তখন ওকে সোফায় বসিয়ে পানি এনে খাইয়েছে। চোখে মুখে পানির ছিটা দিয়েছে। নুসাইবা এক রকম স্থবির জড় পদার্থের মত বসে ছিল। সব কিছু মনেও নেই। এরপর নুসাইবার কিচেনে গিয়ে নিজে থেকে জিনিস পত্র খুজে বের করে নুসাইবা কে কফি করে খাইয়েছে। এক দেড় ঘন্টা পর নুসাইবা যেন আস্তে আস্তে করে সব আবার ফিল করা শুরু করল। ঠিক তখন যেন আবার বুকের ভিতর একটা মোচড় দেওয়া কষ্ট ফিরে আসল। নুসাইবা সেই দিনের কথা ভাবতে গিয়ে অবাক হয়। মানুষ কি ভাবে আর কি হয়। এই ড্রইংরুমে সাতদিনে মাহফুজ কে ডেকে আনা হয়েছিল যাতে মাহফুজ অযাচিত ভাবে আফসানার প্রেমে পড়ে। সিনথিয়ার জীবন থেকে সরে দাঁড়ায়। সোজা কথায় মাহফুজ কে একটা ফাদে ফেলার জন্য নুসাইবা ডেকে এনেছিল। আর ঠিক তার সাতদিন পর আরেক শুক্রবার মাহফুজ নুসাইবা কে তার জীবনের সবচেয়ে বড় সংকটের সময় সংগ দিচ্ছে। পৃথিবীতে আর কেউ জানে নুসাইবা এখন কি বড় একটা সংকটের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে মাহফুজ ছাড়া। ঠিক এই কারণে মাহফুজের প্রতি নুসাইবার দৃষ্টি ভংগী যেন অনেক বদলে গেছে গত ৪৮ ঘন্টায়। সিনথিয়া যদিও সরাসরি নুসাইবা কে বলে নি ও মাহফুজ কে ভালবাসে কিন্তু কথাবার্তায় বুঝিয়ে দিয়েছিল। তখন একদিন বলেছিল ফুফু তুমি একবার ওর সাথে ভাল করে মিশে দেখ ওর মত ভাল ছেলে তুমি কম পাবে। আর ওর মত যোগ্য ছেলেও কম পাবে তুমি। যে কোন সমস্যা ওকে সমাধান করতে দাও। একটা না একটা সলুশন ওর কাছে আছে। নুসাইবা তখন সিনথিয়ার এই সব কথা কে প্রেমে পড়া মানুষের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। তবে এখন মনে হচ্ছে খুব একটা মিথ্যা বলে নি সিনথিয়া।


নুসাইবা গত ৪৮ ঘন্টা ধরে ভেবে যাচ্ছে ওর কি করা উচিত। গত শুক্রবার নতুন করে আরশাদের গোপন জগত আবিষ্কারের আগে যেমন ছিল ঠিক তেমন করে আচরণ করে যাচ্ছে নুসাইবা। এখনো শীতল আচরণ করছে আরশাদের সাথে তবে ওকে বুঝতে দেয় নি নুসাইবা যে ওর জুয়ার আড্ডা নুসাইবা আবিষ্কার করে ফেলেছে। নুসাইবা সব সময় মাথা গরম বলে বিখ্যাত তবে এইবার অনেক কষ্ট করে হলেও নুসাইবা মাথা ঠান্ডা রাখতে চেষ্টা করছে। আসলে এরকম কোন সংকটে আগে কখনো পড়ে নি। তাই এই অবস্থায় কি করতে হবে সেটাও জানা নেই ওর। এটাও একটা কারণ যে জন্য নুসাইবা রাগে ফেটে পড়ে নি। কিন্তু কার কাছে এই ব্যাপারে বুদ্ধি চাওয়া যায়? নুসাইবা আর আরশাদের সুখের সংসারের যে ইমেজ গত পনের বছর ধরে গড়ে তুলেছে তিলে তিলে সেটার ফাপা অংশটা কাউকে এখনি দেখতে দিতে চায় না নুসাইবা। অন্তত যতক্ষণ না নিজে শিওর হচ্ছে ও কি চায় এই  ব্যাপারে। অবশ্য নুসাইবা নিজেই জানত না ওর সুখের সংসারের ভিতরে ভিতরে একটা অংশ ফাপা হয়ে পড়েছে। জুয়া খেলাটা কে কি দৃষ্টিতে দেখবে ও। খুব বড় কিছু নাকি সিগারেট খাওয়ার মত ক্ষতিকর কিন্তু সহ্য করা যায় এমন কিছু। কড়া পরিবারে বড় হয়েছে নুসাইবা। বাবা সত্তর আর আশির দশকের বড় সরকারী কর্মকর্তা। মা গৃহিনী। ভাল স্কুল, কলেজ আর ভার্সিটিতে পড়েছে। সমাজের হাইক্লাসের সাথে উঠা বসা ছিল সেই শিশুকাল থেকে কিন্তু ওর বাবা মা উচ্চ মধ্যবিত্তের সেই কনজারভেটিভ অংশ যারা হাইক্লাস সোসাইটির সুযোগ টা নিলেও সন্তানদের এর খারাপ প্রাকটিস গুলো থেকে দূরে রেখেছেন সযতনে। তাই ছোটকাল থেকেই মদ জুয়া এইসব কে খারাপ দৃষ্টিতে দেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠার পর বন্ধুদের সাথে ডিপার্টমেন্টের ট্যুরে ইন্ডিয়া গিয়ে প্রথমবারের মত মদ খেয়েছিল। সেটা যতটা না মদের প্রতি আগ্রহে তার থেকে বেশি নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আগ্রহে। কড়া পরিবেশ বড় হওয়া সব মানুষের মত নুসাইবার তখন মনে হয়েছিল পর্দার ঐপাড়ে কি আছে দেখার। ট্যুরের ঐ অংশে তখন ওরা দার্জিলিং। হিলের কাছে একটা হোটেলে উঠেছে ব্যাচের ৪৯ জন। ২০ জন মেয়ে আর ২৯ জন ছেলে। রাতে সাথে আসা তিন জন স্যার ম্যাডাম যখন যার যার রুমে ঘুমিয়ে পড়েছিল তখন সবাই মিলে ছেলেদের এক রুমে জমা হয়েছিল। সেখানেই দুই বা তিন সিপ খেয়েছিল। কি মদ অত নাম মনে নেই। খালি মনে আছে গলার ভিতর দিয়ে যখন নিচে যাচ্ছিল তখন যেন জ্বলে যাচ্ছিল গলার ভিতরটা। কি স্বাদ পায় লোকে এটা খেয়ে। এরপর আর খায় নি অনেক বছর। বিয়ের পর হানিমুনে গিয়েছিল কক্সবাজার। সেখানেই আরশাদের জোরাজুরিতে খেয়েছিল দ্বিতীয়বার। এইবার নাম মনে আছে ভদকা। বিদেশী কোন কোম্পানির। আরশাদের কোন এক বন্ধু করপোরেটে চাকরি করে সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। ওরা উঠেছিল হোটেল সিগালে। এখনকার মত পড়তি অবস্থা ছিল না সেই হোটেলের। তখন কক্সবাজারে সেটাই বেস্ট হোটেল। হোটেলের লবিতে হাটলে প্রচুর সাদা চামড়ার বিদেশী চোখে পড়ে। সেই সময় আরশাদের জোরাজুরিতে জীবনে দ্বিতীয়বার মদ খায় নুসাইবা। তখন আরশাদের প্রেমে মাতাল নুসাইবা। আরশাদ যা বলবে তাই শুনতে যেন বসে আছে। সেই সময় নুসাইবা আরশাদের জোরাজুরিতে মদ খেয়েছিল এক রাতে হোটেলে তবে বেশিক্ষণ পেটে রাখতে পারে নি। হড় হড় করে বমি করে হোটেলের মেঝে ভাসিয়ে দিয়েছিল। সেটাই শেষবার। আরশাদ নুসাইবার অবস্থা দেখে এরপরে আর কোন দিন মদ খাবার কথা বলে নি। তবে নুসাইবা জানত মাঝে মাঝে আরশাদ মদ খায়। তবে নুসাইবার কড়া নির্দেশ ছিল যেদিন মদ খাবে সেদিন যেন নুসাইবা কে স্পর্শ না করে। বড় হওয়ার সময় মদ কে ঘৃণা করতে শিখলেও এটাও বুঝেছে এই জিনিসটা পৃথিবী থেকে চাইলেও সে দূর করতে পারবে না। আর ছেলেদের মাঝে মাঝে কিছু বদ অভ্যাস থাকে। যেমন ওর বাবার ছিল সিগারেটের অভ্যাস। নুসাইবা সারাজীবন দেখে এসেছে তার মা সিগারেট সহ্য করতে পারে না। সিগারেট নিয়ে অনেক কথা বলেছে কিন্তু ওর বাবাকে তেমন কিছু বলে নি সিগারেট খাওয়ার জন্য। মা কে এইসব নিয়ে নুসাইবা একবার জিজ্ঞেস করেছিল বড় হওয়ার পর তখন নুসাইবার মা উত্তর দিয়েছিল এইটা কম ক্ষতিকর অভ্যাস। এই একটা অভ্যাসে ছাড় দিয়ে রাখি বলে তোর বাপ অন্য সব সময় আমার কথা শুনে চলে। সেই পরামর্শটা নুসাইবার মাথায় গেথে ছিল। তাই মদ কে পছন্দ না করলেও আরশাদ কে মাঝে মধ্যে খেতে দিত। কারণ এই কারণে বাকি সময় আরশাদ ওর বাধ্য হয়ে থাকত। দেনা পাওনার এই দুনিয়ায় ভালবাসাতেও দেনা পাওনা আছে এটা নুসাইবা বুঝত। তবে মদ খেতে পারমিশন দিলেও পুরোপুরি মন থেকে মেনে নিতে পারে নি তাই তো যেই রাতে আরশাদ মদ খেয়ে আসত সেই রাতে নুসাইবা কে স্পর্শ করতে পারত না। এমন না যে আরশাদ পাড় মাতাল হয়ে ফিরে আসত। আরশাদের এই গুণটা মনে মনে প্রশংসা করত নুসাইবা। কখনো পাড় মাতাল হতে দেখে নি নুসাইবা আরশাদ কে। কখনো মদ খেয়ে মাতলামি করতে দেখে নি। বরং মদ খেয়ে যখন বাসায় ফেরত আসত তখন কেমন জানি একটা চোর চোর ভাব থাকত চেহারায়। এরপরের দুই তিন দিন একদম সব সময় খুব ভালবাসা দেখায় আরশাদ। তবে এখন নতুন করে যোগ হয়েছে জুয়া। এটাকেও কি মদের মত মাইনর নুইসেন্স বলে মেনে নিবে নাকি আরশাদ কে কিছু বলবে। আর আরশাদ এই জুয়ার ব্যাপারটা কেন লুকিয়েছে ওর কাছে থেকে? হয়ত জুয়া কে নুসাইবা কত টা ঘৃণা করে সেটা আরশাদ কে বিভিন্ন সময় বলেছে দেখে। তবে মনের ভিতর আরেকটা অংশ এতটা সহানুভূতিশীল হতে পারে না। সেই অংশটা জিজ্ঞেস করে কিভাবে এত টাকা পাচ্ছে আরশাদ। কে দিচ্ছে। ওকে বিভিন্ন সময় জমি বা এপার্টমেন্ট কিনা অথবা ইউরোপ ট্যুরের সময় শেয়ার বাজারের যে ব্যাখ্যা দিয়েছে সেটা এখন আর বিশ্বাস হচ্ছে না। মাহফুজ বলেছে এখানে জুয়া খেলতে কত টাকা লাগে। এটা শুধু পাড়ার দুই তিন জুয়াড়ির হাজার পাচশ টাকার জুয়ার ঠেক না। এটা বড়লোকদের জুয়ার আড্ডা। অল্প যে কিছুক্ষণ উত্তরা রেস্টহাউজের সামনে ছিল ততক্ষণ একের থেকে এক দামী গাড়ি ঢুকেছে সেখানে। এইখানে মাসে দুই তিনবার জুয়া খেললে কত টাকা খরচ হবে সেটা আন্দাজ করতে পারছে না নুসাইবা। মাহফুজ কে জিজ্ঞেস করায় বলেছিল দশলাখের কমে মাসে এখানে দুই তিনবার খেলা সম্ভব না। দশ লাঘ? প্রতি মাসে? নুসাইবা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিসার্চ সেকশনে কাজ করে। ওর বাংলাদেশের অর্থনীতি, মানুষের গড় আয়, আরশাদের সরকারি চাকরির বেতন সব সম্পর্কে আইডিয়া আছে। কোন হিসাবে এটা মিলছে না। মাসে দশ লাখ মানে বছরে এক কোটি বিশ লাখ মিনিমাম। কোথা থেকে আসছে এই টাকা। হারাম টাকায় কি গড়ে উঠেছে ওর এই সাজানো সুখের সংসার।


এইসব চিন্তা ওকে গত আটচল্লিশ ঘন্টা ঘুমাতে দিচ্ছে না, স্থির হয়ে কোন কিছুতে মন দিতে দিচ্ছে না। খালি এই চিন্তা না আরেকটা চিন্তাও মনে মনে ঘুরছে। এটা মাহফুজকেও জিজ্ঞেস করতে ভয় পাচ্ছে। যদিও শুরুতে মাহফুজ কে জিজ্ঞেস করেছিল, মাহফুজ নিজেও জানে না। বলেছিল খোজ বের করার চেষ্টা করবে। তবে এই খোজ আসলেই মাহফুজ বের করুক সেটা কি নুসাইবা চায়। একবার মনে হয় মাহফুজ কে মানা করে দিই আবার মনে হয় মাহফুজ কে বলি যে কোন মূল্যে খবরটা বের করুক। বনানীর সেই বাসায় কেন গিয়েছিল আরশাদ। কি করেছে ঐ কয়েক ঘন্টা। মনের ভিতর একটা অশুভ চিন্তা আসছে কিন্তু সেটা মনে ঠাই দিতে ইচ্ছা করছে না। আরশাদ মদ খেতে পারে জুয়া খেলতে পারে কিন্তু এটা করতে পারে সেটা কোন ভাবেই এখনো মন থেকে মেনে নিতে পারছে না। নুসাইবার দাদী সব সময়  বলত পুরুষ মানুষের ধবংস লিখা থাকে তিন জিনিসে। মদ, জুয়া এবং নারী। দাদী বলত যখন এই তিন জিনিসে যখন কোন পুরুষ আসক্ত হয়ে পড়ে তার ধবংস অনিবার্য। নুসাইবা ভাবে, আরশাদ কি আসলেই এই তিন জিনিসে আসক্ত হয়ে পড়েছে ওর অজান্তে। কি আছে বনানীর সেই এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে। এটা না জানতে পারলে শান্ত হতে পারছে না আবার ওর আশংকা যদি সত্য হয় তাহলে কি করবে সেটাও জানে না নুসাইবা। বাংলাদেশের পুরুষরা সব সময় বাচ্চা না হলে মেয়েদের দোষারাপ করে এমনকি যখন ছেলেদের দোষ তখনো। গরীব থেকে বড়লোক সবখানে এটা সমান। আরশাদ সব সময় ওকে এই জায়গায় যেমন করে প্রটেক্ট করেছে সেটা কিভাবে ভুলবে নুসাইবা। ডাক্টার যখন রিপোর্ট দেখে বলল আপনি মা হতে পারবেন না তখন আরশাদ যেভাবে প্রাচীরের মত সব সমালোচনা সামলে নুসাইবা কে রক্ষা করেছে সেটা কি ভুলা সম্ভব না। ওকে যদি এতই ভালবাসে তাহলে কেন ওকে গোপন করে এইসব জুয়া খেলছে। ছেড়ে দিচ্ছে না। আর বনানীর ঐ বাসায় কি করেছে ঐ কয় ঘন্টা? সব ওকে জানতেই হবে। তাহলে হয়ত পরের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ওর ভিতরে যে কষ্ট, রাগ, অভিমান জমা হচ্ছে সেটা হয়ত তখন বের হয়ে আসতে পারবে। নুসাইবা জানে ওর রাগ কত ভয়ংকর। যেদিন বের হবে ও কি করবে সেটা ও নিজেও জানে না। নুসাইবা কি নিজে কে নিজেই ধবংস করে দিবে নাকি আরশাদ কে ধবংস করে দিবে সেই জমে থাকা অনুভূতিগুলোর বিস্ফোরণে?
Like Reply


পত্রিকার রিপোর্ট প্রকাশ হবার পর ঘটনা যেভাবে শেষ পর্যন্ত মোড় নিয়েছে তাতে আরশাদ এবং মাহফুজ দুই জনেই আলাদা আলাদা ভাবে খুশি। আরশাদ খুশি কারণ পত্রিকার রিপোর্টটা শেষ পর্যন্ত যেভাবে বের হবার কথা ছিল সেভাবে বের হয় নি। আরশাদ সাংবাদিক অমিত আজাদের সাথে মিটিং এর সময় টের পেয়ে গিয়েছিল এই রিপোর্টের দ্বিতীয় অংশ যদি হুবুহু যেভাবে লেখা হয়েছে সেভাবে বের হয় তাহলে চাকরি নিয়ে একটা টানাটানির মধ্যে পড়ে যাবে। প্রথম রিপোর্টে সরাসরি তাকে নিয়ে অত কিছু বলা হয় নি। বেশির ভাগ কথা ছিল তার অফিসের অন্যদের দূর্নীতি নিয়ে এবং সেই দূর্নীতি সে কন্ট্রোল করতে পারে নি এটা নিয়ে। যদি তার নিজের কথা গুলো সরাসরি চলে আসত তাহলে বিপদ হত। প্রথম রিপোর্টের পর তাকে  ব্যাকিং দেওয়া লোকজন যেভাবে নিজেদের কে আড়াল করে রাখছিল তাতে এই রিপোর্ট বের হলে তারা সব সম্পর্ক অস্বীকার করে বসত। এখন ক্ষতি হলেও সেটা ম্যানেজেবল। আরশাদ অলরেডি কাজে লেগে পড়েছে। দ্বিতীয় রিপোর্টটা একদম হাওয়ার উপর করে লেখা ওর সাথে মিটিং এর পর। সেই রিপোর্ট এখন সিনিয়রদের দেখিয়ে বলছে আরশাদ দেখেন স্যার এগুলো বানানো রিপোর্ট। আমার নামে কিছু বের করে দেখাতে পেরেছে। খালি বার বার ঘুরিয়ে প্যাচিয়ে লিখেছে আমি দূর্নীতি করেছি তবে কোন প্রমাণ দিতে পারে নি। সিনিয়ররা তার এই ব্যাখ্যা কিছুটা মেনে নিয়েছে। আর কয়েকদিন যেতে দিলে গিফট দিয়ে তেল দিয়ে সব সিনয়রদের এই ব্যাখ্যা মানিয়ে নিবে আরশাদ। নিজের উপর সেই কনফিডেন্স আছে তার। অন্যদিকে মাহফুজ খুশি কারণ মাহফুজ চেয়েছিল একটা কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে যাতে মাহফুজ একটা এক্সেস পায়। পত্রিকার রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর আরশাদ যে মানসিক প্রেসারে ছিল সেটা মিটিং করে কমেছে, পত্রিকার রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর একদম চলে গেছে। আরশাদ মাহফুজের উপর দারুণ খুশি এখন সাংবাদিক অমিত আজাদের সাথে তার মিটিং এর ব্যবস্থা করে দেওয়ায়। আর নুসাইবার ব্যাপারটা ছিল জল না চাইতেই বৃষ্টির মত। মাহফুজের মেইন প্লান ছিল আরশাদ কে প্রথমে খুশি করে তার মাধ্যমে নুসাইবা কে রাজি করানো। নুসাইবা যে আলাদা ভাবে মাহফুজ কে এপ্রোচ করবে সেটা মাহফুজ ভাবে নি। প্রথমে একটু সংকোচে থাকলেও পরে মাহফুজ নুসাইবা কে হেল্প করতে পিছপা হয় নি। কারণ রাজনীতিতে একটা জিনিস শিখেছে সময়ের সুযোগ সময়ে কাজে না লাগালে পরে হাজার চেষ্টা করলেও সফল হওয়া যায় না। নুসাইবা কে রাজি করানোই যেহেতু মেইন টার্গেট ছিল তাই নুসাইবা হেল্প চাওয়ায় সেটাতে না করে নি আর। তবে নুসাইবা কে হেল্প করতে গিয়ে নিজেও চমকে গেছে মাহফুজ। সোলায়মান শেখের থেকে পাওয়া খবরে বেশ আগে থেকেই মাহফুজ জানত আরশাদের জুয়ার অভ্যাসের কথা। তবে বনানীর ঐ বাড়িতে সেদিন কয়েক ঘন্টা কি করেছে আরশাদ সেটা মাহফুজ জানে না। নুসাইবার অবাক হওয়া মুখ দেখে বুঝেছে নুসাইবাও আন্দাজ করতে পারছে না ব্যাপারটা কি। মাহফুজ তাই গত দুই দিন ধরে চিন্তা করছে বনানীর এই এপার্টমেন্টের রহস্য কি। এই রহস্য বের করাটা জরুরী। নুসাইবার আচরণে মনে হয়েছে নুসাইবা এই এপার্টমেন্টের রহস্য না জানা পর্যন্ত শান্ত হবে না আর নুসাইবা কে শান্ত করতে পারলে ওর মেইন উদ্দ্যেশ সহজ হয়। এছাড়া ওর নিজের একটা কৌতুহল তৈরি হয়েছে। আরশাদ সাহেব লোকটা যেন পেয়াজের মত ঝাঝালো আর জটিল। যত স্তর খুলছে তত ভিতর থেকে নতুন ঝাঝালো চমক বের হচ্ছে। এখান থেকে কি বের হয় কে জানে। মাহফুজ তাই আবার নতুন করে সোলায়মান শেখের সরনাপন্ন হয়েছে। পুরো ঘটনা বর্ণনা করে মাহফুজ বলেছে ওকে মেইনলি দুইটা তথ্য দিতে হবে। এক বনানীর ঐ এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে কোন নির্দিষ্ট এপার্টমেন্টে আরশাদ গিয়েছিল। আর দুই, যে এপার্টমেন্টে গিয়েছিল সেইখানে মাঝখানে কয়েক ঘন্টা কি হয়েছিল।


তবে আরশাদ যখন ভাবছে পত্রিকার রিপোর্টিং এর ঘটনা সে ভাল ভাবে সামলে নিয়েছে তখন আড়ালে নতুন খেলা শুরু হয়ে গেছে। প্রথম খেলাটা ওর নিজের অফিসে। আরশাদ কে ঢাকা কর অঞ্চল সাত থেকে সরাতে চাইছে অনেকেই অনেকদিন ধরে। শক্ত ব্যাকিং আর পারফরমেন্স দিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছিল এতদিন। তবে এই পত্রিকার রিপোর্টিং একটা দরজা খুলে দিয়েছে আরশাদের প্রতিদন্দ্বীদের জন্য। আরশাদ যেমন রিপোর্টিং এর দ্বিতীয় ফেজে নিজের সততার ব্যাপারটা অক্ষত রাখতে চেয়েছে সেখানে আরেকটা জিনিস সে ভুলে গেছে। প্রথম রিপোর্টে ছিল অফিসের জুনিয়র কলিগ আর কর্মচারীদের ঘুষের দৌরাত্ম সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছে আরশাদ। এটা আরশাদের অদক্ষতা হিসেবে চিহ্নিত করে ওর প্রতিদ্বন্দ্বীরা লবিং শুরু করেছে গোপনে। আবার পত্রিকায় রিপোর্ট বের হবার কারণে আরশাদ কে যারা ব্যাকিং দেয় তারা একটু ব্যাকফুটে তাই তারাও চুপ করে আছে। সব মিলে আরশাদের অজান্তেই ঢাকা অফিস থেকে তাকে সরানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ঘটনাটা আর গুরুতর। সানরাইজ গ্রুপের মালিকের ছেলে যে সংসদ আসনের জন্য মনোনয়ন চাইছে সেই আসনে এতদিন ধরে মনোনয়ন পেয়ে এসেছে ওশন গ্রুপের মালিক। হিসাবে তারাও অনেক ক্ষমতাশালী। তবে অনেক বছর সংসদ সদস্য থাকায় কিছু অভিযোগ আছে, স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়তাও হারিয়েছে। তাই দল নতুন মুখ খুজছে। সেই সুযোগটা সানরাজ গ্রুপের মালিকের ছেলে নিতে চাইছে এবং এই ব্যাপারটা ওশন গ্রুপের মালিক জানে। এও জানে যারা মনোনয়ন চাইছে তাদের মধ্যে রিয়েল থ্রেট আসলে সানরাইজ গ্রুপ। কারণ তাদের টাকা এবং প্রভাব দুই আছে অতএব মনোনয়ন পেলে এদের পাওয়ার চান্স বেশি। এবং সেই ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাড়ালেও সুযোগ কম কারণ সানরাইজ গ্রুপের টাকা এবং প্রভাবের সাথে দলের ব্যাকিং যোগ হলে ওশন গ্রুপ একা পারবে না। অমিত আজাদের আরশাদের রিপোর্টটাতে ইংগিত দেওয়া ছিল একটা প্রভাবশালী শিল্প গ্রপের সাথে আরশাদের লিয়াজোর কথা। যদিও গ্রুপের নাম লেখা ছিল না। তবে এই রিপোর্টটা ঠিক ওশন গ্রুপের মালিক পক্ষের চোখে পড়েছিল। তারা আগেই জানত ট্যাক্স অফিস থেকে সহায়তা পায় সানরাইজ গ্রুপ। তাই দুইয়ে দুইয়ে চার হয় এই হিসাবে তারা আরশাদ কে সন্দেহ করে আর খোজ খবর করা শুরু করে দিয়েছে। এর পরিণতি কি হতে পারে সেটা আরশাদ আর পরে টের পাবে।


আরশাদের মত মাহফুজ একটা নতুন জালে জড়িয়ে পড়ছে। এটা মাহফুজের কোন পরিকল্পনার অংশ ছিল না। খানিকটা সিনথিয়ার সেক্স টক আর কিছুটা নুসাইবার সৌন্দর্য এই দুই দায়ী এর জন্য। মাহফুজ স্বীকার করে কখনোই ধোয়া তুলসী পাতা ও ছিল না। তবে সিনথিয়ার সাথে রিলেশনের পর থেকে অন্য কার সাথে সে কিছুতে জড়ায় নি এক্সেপ্ট সাবরিনা। সাবরিনার ব্যাপারটা ঠিক কিভাবে হল সেটা নিজেও শিওউর না মাহফুজ। লোহা যেমন চুম্বক কে আকর্ষণ করে সাবরিনা যেন ঠিক সেভাবে আকর্ষণ করেছে ওকে। সোয়ারিঘাটের সেই রাত, লালমাটিয়ার সন্ধ্যা, কনসার্ট এগুলো কোন কিছুই প্লান করা না তবে এই প্রত্যেকটা ঘটনা এক পা এক পা করে ওকে আর বেশি করে সাবরিনার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সাবরিনা আর সিনথিয়া দুই বোন। ওদের মধ্যে যেমন প্রচুর মিল তেমন অমিল অনেক। এই মিল এবং অমিল দুইটাই যেন বেশি করে সাবরিনার দিকে মাহফুজ কে ঠেলে দিয়েছে। এখন নুসাইবার দিকেও যেন ভিতরে ভিতরে তেমন একটা আকর্ষণ বোধ করছে। মাহফুজ জানে ব্যাপারটা ঠিক না কিন্তু মন অনেক সময় নিয়ম নীতির  বালাই মানে না। এখন যেন নুসাইবার ক্ষেত্রেও তেমনটা হচ্ছে। নুসাইবা সিনথিয়ার ফুফু এই নিষিদ্ধ আকর্ষণ যেন নুসাইবার প্রতি মাহফুজের আকর্ষণ আর বাড়িয়ে দিচ্ছে। নুসাইবার হটনেস প্রথমবার ফেসবুকে ছবি চেক করতে গিয়েই টের পেয়েছিল। এরপর যেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামের জন্য দাওয়াত দিতে গেল সেদিন যখন বসা থেকে উঠার পর পাছার খাজে সালোয়ার আটকে ছিল তখন মনে পড়ে গিয়েছিল সিনথিয়া একদিন বলেছিল নিজের পাছা বেশি বড় কিনা সেটা নিয়ে চিন্তিত ছিল নুসাইবা। আরেকটা জিনিস মাহফুজের ভিতর ভিতর নুসাইবার প্রতি একটা আকর্ষণ তৈরি করেছে। নুসাইবা যত মাহফুজ কে দমিয়ে দিতে চেয়েছে তত মাহফুজের মনে হয়েছে নুসাইবা কে দেখিয়ে দেওয়া দরকার কেমন খেলোয়াড় সে। তবে এই সব কিছু ছিল ওর মনের ভিতর। অনেকটা ফ্যান্টাসি। তবে সেদিন আরশাদ কে ফলো করতে গিয়ে প্রথমবারের মত যেন মাহফুজের মনে ফ্যান্টাসি আর রিয়েলিটি দুইটা মিক্স হওয়া শুরু হল।


নুসাইবা নরমাল সালোয়ার কামিজ পড়ে ছিল সেদিন। এমন নয় যে খুব ফ্যান্সি বা সেক্সি কোন ভাবে সালোয়ার কামিজ পড়া ছিল। রেগুলার সেলোয়ার কামিজ তবে কামিজটা দেখতে সুন্দর। বাইরের কাপড়ের ব্যপারে যথেষ্ট ফ্যাশেনেবল নুসাইবা দেশাল নামক ফ্যাশন হাউজ থেকে এই সালোয়ার কামিজ কিনেছিল গত ঈদের সময়। কলাপাতা সবুজ কালারের। তবে অনেক সময় খুব সাধারণ জিনস প্রেক্ষাপটের জন্য অনন্য হয়ে ধরা দিতে পারে। নুসাইবা যখন নিজেদের বাসা থেকে বের হয়ে মাহফুজের সাথে দেখা করল একটু দূরে অপেক্ষমান সিএনজিতে তখন জিজ্ঞেস করেছিল মাহফুজ কে ফলো করার সময় কি স্পেশাল কিছু করা উচিত। মাহফুজ জিজ্ঞেস করেছিল কি বুঝাতে চাইছে নুসাইবা। আসলে নুসাইবার কাছে এ জিনিসটা একদম নতুন। স্পাই থ্রিলারে পড়েছে অথবা নাটক সিনেমায় দেখেছে কাউ কে ফলো করার সময় ছদ্মবেশ ধরে বা একটা নির্দিষ্ট দূরুত্ব বজায় রাখতে হয় যাতে সহজে বুঝতে না পারে। মাহফুজ নুসাইবার প্রশ্ন বুঝতে পেরে বলেছিল অত কিছু করতে হবে না ফুফু। আংকেল তো আর সন্দেহ করবে না আপনি ফলো করবেন তাই অত কিছু করার দরকার নেই। আর সিনেমা নাটকে যেমন হয় বাস্তবে লোকেরা অত সাবধান না। আর আমারা ফলো করবো সিএনজিতে করে। ঢাকা শহরে এমন সবুজ সিএনজি লাখে লাখে আছে। যেখানেই যান এক ডজন আপনার পিছে পিছে থাকবে। তাই বুঝতে পারেবে না আংকেল। তাও আপনি ওড়না দিয়ে মাথাটা একটু ঢেকে রাখতে পারেন যাতে কোন ভাবে যদি চোখেও যায় যাতে কিছু বুঝে উঠতে না পারে। মাহফুজ নিজেও আজকে মাথায় একটা ক্যাপ পড়ে আছে। ক্যাপ ভাল একটা আড়াল দেয় দরকার হলে। দুপুর এই সময়টা ভাল গরম পড়ে। এইটা নুসাইবাদের বাসার এলাকা। আশেপাশে অনেকেই নুসাইবা কে চিনে। তাই নুসাইবা সিএনজিএর ভিতরে মাথায় ওড়না প্যাচিয়ে বসেছিল। মাহফুজও ভিতরে বসেছিল। আজকাল ছিনতাইকারীদের আটকাতে সিএনজিগুলো তার দরজাগুলো লোহার শিকের একরকম খাচার মত বসিয়েছে। সিএনজিএর এই খাচার ভিতর বসে নিজেদের চিড়িয়া চিড়িয়া মনে হয় মাহফুজের। ঘড়ি দেখে দশ মিনিট গেছে তবে এখনো আরশাদ নামে নি। টের পায় সিএনজিএর বদ্ধ জায়গায় কপাল থেকে ঘাম পড়ছে। পাশে নুসাইবা ওড়নার এক অংশ কে পাখার মত  বানিয়ে নিজের মুখে নিজে বাতাস করছে। মাহফুজ একদম একপাশে সরে নুসাইবার দিকে তাকায়। ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে রাখায় এমনিতেই ওড়না যথেষ্ঠ উপরে উঠে ছিল। এখন বাকি অংশ দিয়ে মুখে বাতাস করতে যাওয়ায় সাইড থেকে দুধ উন্মক্ত হয়ে পড়েছে। সাইড বুবস যাকে বলে। স্কুল কলেজে যখনো নারী সংগ এত ইজি হয় নি মাহফুজের জন্য তখন সুযোগ পেলেই ওড়না সরে যাওয়া বুকের দর্শর্নের জন্য চোখ সব সময় ব্যস্ত থাকত। একবার এমন ওড়না সরে যাওয়া বুকের দেখা পেলেই অল্প যেটুকু সময় পাওয়া যায় তাতেই সেই বুবসের সাইজ, শেপ সব মাথায় গেথে রাখতে চেষ্টা করত। যাতে পরে বন্ধুদের সাথে দেখা হলে নিখুত ভাবে সেই বুবসের বর্ণনা দিতে পারে। এখন মেয়েদের দুধের গড়ন নিয়ে আলোচনা করার মত বয়স নেই কার সাথে। তবে মাহফুজ গোগ্রাসে নুসাইবার দুধের সাইজ মাথায় গেথে নিতে থাকে। গরমে ঘামতে থাকা নুসাইবা ওড়না কে পাখার মত ধরে বাতাস করছে আর সামনে তাকিয়ে খেয়াল রাখছে আরশাদ বের হয় কিনা। মাহফুজের নজর তখন নুসাইবার দুধের উপর। বাতাস করবার জন্য যে হাত নাড়াতে  হচ্ছে তাতে দুধ গুলো দুলে দুলে উঠছে। একদিকে নুসাইবা নিজের গরম দূর করার জন্য বাতাস করছে আর সেই সাথে দুলে উঠছে ওর দুধ গুলো। আর ঠিক সেই সাথে দুধের দুলনি মাহফুজের শরীরে যেন আর গরম বাড়িয়ে দিচ্ছে। মাহফুজের মনে হচ্ছিল এত কাছে এত সুন্দর শেপের দুধ। ধরে দেখতে পারলে খুব ভাল হত তবে সেটা সম্ভব না। মাহফুজ এক রকম হিপনটাইজড মানুষের মত নুসাইবার দুধের দুলনি দেখছিল। যদিও মেয়েরা এইসব ব্যাপারে খুব সচেতন। কেউ আড় চোখেও তাদের শরীরে খারাপ নজর দিলে একটু পরেই বুঝতে পারে তবে সেদিন নুসাইবা আরশাদের চিন্তায় এত মগ্ন ছিল আর এত গভীর মনযোগের সাথে আরশাদ কখন বাসা থেকে বের হয় সেটা খেয়াল রাখছিল যে মাহফুজ যে গোগ্রাসে ওর সুন্দর শেপের দুধ গুলো কে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে সেটাই খেয়াল করে নি।


এরপর আরশাদ যখন উবারে করে চলা শুরু করল তার একটু পর উত্তেজনায় নুসাইবা মাহফুজের হাটু খামচে ধরছিল। নুসাইবার খেয়াল ছিল না উত্তেজনার বশে কি করছে ও। মাহফুজের মনে হচ্ছিল যেভাবে বার বার হাটু থেকে নুসাইবার হাত একটু করে উপরে উঠছে তাতে না একটু পর দুই উরুর মাঝখানে পৌছে যায় নুসাইবার হাত। এরমাঝে আরশাদ কয়েক ঘন্টার জন্য বনানীর সেই এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে ঢুকল। তখন সেই আবার সেইম রুটিন। নুসাইবা কোন ভাবেই সিএনজি থেকে বের হবে না। যদি হঠাত করে আরশাদ বের হয়ে এসে দেখে ফেলে। মাহফুজ অবাক হয় কি কঠিন ব্যক্তিত্বের অধিকারী এক মহিলা কিন্তু স্বামী কে সরাসরি কিছু বলতে পারছে না। স্বামী কি আসলেই অন্যায় কিছু করে কিনা সেটা দেখার জন্য গোপনে গোপনে ফলো করতে হচ্ছে। সিএনজির ভিতর আবার গরমে ঘামতে থাকা নুসাইবা ওড়না কে পাখার মত করে নিজেকে নিজে বাতাস করতে থাকে। মাহফুজ বাইরে বের হয়ে দাড়াতে চাইলে বলে বাইরে দাঁডিয়ে থেক না, তোমার আংকেল হঠাত বের হয়ে আসলে সামনে পড়ে যাবে। মাহফুজ তাই একসাইডে সরে বসে মোবাইল চেক করতে থাকে। আবার আড় চোখে ওড়না দিয়ে বাতাস করতে থাকা হাতের দুলনিতে দুলতে থাকা নুসাইবার দুই দুধ দেখতে থাকে আর ভাবতে থাকে কাপড় ছাড়া কেমন লাগবে দেখতে। এই সময়টা বড় বেশি কষ্টের ছিল মাহফুজের জন্য। বাইরে বের হতে গেলে নুসাইবা জোর করে বসিয়ে রাখে ভিতরে ধরা পড়ার ভয়ে। আর ভিতরে বসলে নুসাইবার দুধের দুলনি দেখে। একটু পর টের পায় দুইজনেই প্রচন্ড ঘামছে সিএনজির বদ্ধ প্রকোষ্ঠে। নুসাইবা ঠিক সাবরিনা বা সিনথিয়ার মত অত কড়া করে পারফিউম মাখে না। বয়সের সাথে সাথে নুসাইবা পারফিউম ইউজ করার ব্যাপারে একটু সাবধান হয়েছে। পারফিউম ছেলেদের উপর কেমন প্রভাব ফেলে সেটা নুসাইবা এতদিনে বুঝে ফেলেছে। তাই মিষ্টি কিন্তু অত কড়া না এমন পারফিউম ইউজ করে আজকাল সাধারণত। শুধু শুধু অফিসে ভুলভাল গসিপ তৈরি হোক সেটা চায় না। আজকেও তেমন একটা খুব হালকা ঘ্রাণের পারফিউম ইউজ করেছিল। তবে আজকে তো আর  অন্যদিনের মত এসি অফিস বা এসি গাড়িতে বসে নেই। তাই এই কয়েক ঘন্টায় ঘাম, শরীরের নিজস্ব গন্ধ এই দুইটা নুসাইবার পারফিউমের ঘ্রাণ কে দখল করে নেয়। মাহফুজ টের পায় একটা মেয়েলী গন্ধ যেন সিএনজির ভিতর মৌ মৌ করছে। মাহফুজের মনে হয় এভাবে আর বেশিক্ষণ বসে থাকলে বুঝি সামনে এগিয়ে দুলতে থাকা সুন্দর দুই গোলকে চুমু খেয়ে ফেলবে। তাই মাহফুজ বলে আমারে একটা জরুরী ফোন করতে হবে এই বলে সিএনজির ভিতর থেকে বাইরে বের হয়ে দাঁড়ায়। এই সময় টা কয়েকটা ফোন কলে কথা বলে। একবার এপার্টমেন্ট কম্পেক্সের গেটে গিয়ে দারোয়ানের সাথে কথা বলে বুঝার চেষ্টা করে আরশাদ ভিতরে কই গেছে। কিন্তু দারোয়ান ঠিক করে বলতে পারে না কার কথা বলছে। ব্যর্থ হয় তাই মাহফুজ। এর একটু পর অবশ্য বের হয়ে আসে আরশাদ।
Like Reply
বনানী থেকে উত্তরা গেস্ট হাউজ পর্যন্ত ফলো করার সময় আবার নুসাইবা বার বার মাহফুজের হাটু খামচে ধরছিল। আর মাহফুজ ভিতরে ভিতরে শিউরে উঠছিল নুসাইবার স্পর্শে। আরশাদের উবার যত গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল উত্তেজনায় নুসাইবা তত জোরে মাহফুজের পা খামচে ধরছিল। নুসাইবার চোখেমুখে তখন উত্তেজনা। কোথায় যাচ্ছে শেষ পর্যন্ত আরশাদ? আসলেই কি বড়লোকদের এই গোপন ক্যাসিনোতে যাবে? অন্যদিকে মাহফুজের চোখেমুখেও তখন অন্য উত্তেজনা। সিএনজিএর বদ্ধ খাচায় এত কাছে নুসাইবা। একটু আগে দেখা দুধের দুলনি আর পায়ের উপর খামচে ধরা নরম হাত। সব যেন মাহফুজের উপর এক ধরনের প্রভাব ফেলল। নুসাইবা যখন আরশাদ কি করে সেই চিন্তায় ব্যস্ত মাহফুজ তাই তখন নুসাইবার চিন্তায় ব্যস্ত। অবশেষে আরশাদের উবার যখন উত্তরা গেস্টহাউজের সামনে যায় তখন নুসাইবা এটাই কি সেই জায়গা কিনা জানা জন্য মাহফুজের দিকে তাকায়। মাহফুজ কিছু বলে না। খালি সম্মতিসূচক মাথা নাড়ায়। সংগে সংগে নুসাইবার পৃথিবী যেন ভেংগে পড়ে চোখের সামনে। এতদিনের সন্দেহ, আশংকা সব সত্য হয়ে ধরা দেয়। মদ খাওয়াটা পছন্দ না করলেও ছেলেদের সিগারেট মদ এইরকম দুই একটা বদ অভ্যাস থাকতে পারে সেটা নুসাইবা মেনে নিয়েছিল। আর যেহেতু আরশাদ ঠিক পাড় মাতাল না, মাঝে মধ্যে একটু আধটু খায় তাই এটা নিয়ে বেশি খুব উচ্চবাচ্চ্য করে নি। তবে এই পত্রিকার রিপোর্টের পর নুসাইবার সব বিশ্বাস টলে গেছে। আজকে এই জুয়ার আড্ডায় ঢুকা মানে খালি জুয়া খেলা না, এত টাকা খালি সরকারি বেতন দিয়ে হবে না। এক্সট্রা ইনকাম লাগবে। আর সেটার উৎস যে ঘুষ সেটাও নুসাইবা বুঝে ফেলে। এতদিন এত মানুষের সামনে করা এত গর্ব। চারিদিকে সরকারি অফিসাররা যখন ঘুষ খেয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছে তখন ওর স্বামীর সততা নিয়ে বন্ধু, আত্মীয় স্বজন, কলিগ সবার কাছে বুক ফুলিয়ে গর্ব করেছে। আরশাদ নিজেও ওর সেই ইমেজটা সব খানে প্রচার করেছে। তবে নুসাইবা বুঝে আসলে সব ফাপা। ওর গর্ব, আরশাদের ইমেজ সব আসলে মিথ্যা কথার উপর দাঁড়িয়ে আছে। নিজের আর আরশাদের সততার উপর এতদিন ধরে যে আস্থা ছিল সব ভেংগেচুড়ে চুরমার হয়ে গেছে। সিএনজিওয়ালা পিছন ফিরে জিজ্ঞেস করে, মামা আর কি অপেক্ষা করব এইখানে আগের মত নাকি অন্য কোথাও যাবেন। নুসাইবা কোন কথা বলতে পারে না। সারা শরীর যেন পাথর হয়ে গেছে। মাহফুজ নুসাইবার মুখের দিকে তাকায়। অবস্থা টের পায়। সিএনজিওয়ালা কে বলে মামা শুরুতে যেখান থেকে তুলছিলেন সেখানে ফিরে চলেন। নামায়ে দিবেন। সিএনজি উলটো ঘুরে। গলির ভিতর দিয়ে মেইন রাস্তার দিকে চলতে থাকে। নুসাইবার কোন হুশ নেই। এইভাবে এত বছরের আস্থা ভেংগে যাওয়ায় নুসাইবা যেন আর কথা বলতে পারে না। আটকে থাকা সব আবেগ চোখের পানি হয়ে অঝোরে নামতে থাকে। সিএনজি মেইন রাস্তায় উঠে আসে। নুসাইবার কান্নার গতি আর বৃদ্ধি পায় যেন। কান্নারত মানুষ কে কিভাবে সান্তনা দিবে বুঝে উঠতে পারছে না। মাহফুজ বলে সব ঠিক হয়ে যাবে ফুফু। মাহফুজের কথায় নুসাইবার কান্না যেন আর বৃদ্ধি পায়। কিভাবে ঠিক হবে সব? এতদিন ধরে কি তাহলে ভুল মানুষের সাথে সংসার করছে নুসাইবা। মাহফুজ পিঠের পিছন দিয়ে হাত নিয়ে ঘাড়ে রাখে সান্তনা দেবার জন্য। মাহফুজ দেখেছে মন খারাপ বা কান্নার সময় এভাবে মানুষ কে ধরলে মানুষ ঠান্ডা হয়। মানুষের সহানুভূতির স্পর্শ যেন নুসাইবার ভিতরের আবেগ আর বাড়িয়ে দেয়। কি করবে এখন ও? কিভাবে সামলাবে সব? কার সাথে শেয়ার করবে এইসব। সবার কাছে আরশাদের ভাল মানুষ ইমেজ। সবার কাছে ওদের সুখের সংসারের ইমেজ। সবাই জানতে কতটা ছোট হতে হবে মানুষের কাছে। এই সময় মাহফুজের সহানুভূতির স্পর্শ নুসাইবার বড় দরকার ছিল। মাহফুজে ঘাড়ে নিজের মাথাটা হেলিয়ে দেয়।  কান্না থামে না তবু নুসাইবার। মাহফুজ নুসাইবার পিঠের পিছ দিয়ে এক হাত নিয়ে কাধ থেকে হাতের বাহু বরারবর হাত বুলিয়ে সান্তনা দেয়। অন্য হাত মাথায় বুলাতে থাকে। শক্ত ব্যক্তিত্বের অধিকারী নুসাইবা যেন এখন এই মূহুর্তে এই সিএনজিএর ভিতর সব শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। মাহফুজ তাই মাথায় আর হাতের বাহু বরাবর হাত বুলিয়ে নুসাইবা কে শান্ত করার চেষ্টা করে। শুক্রবার বিকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় জ্যাম বাড়ে। সন্ধায় সেটা বেশ ভাল জ্যাম হয়। সিএনজি তাই আস্তে আস্তে সিগন্যাল গুলোর জ্যাম ঠেলে এগুচ্ছে। নুসাইবার কান্নার বেগ কমে এসেছে। তবে কান্নার সাথে চলতে থাকা হেচকি কমে নি। মাহফুজ হেচকি থামানোর জন্য বাহুতে বুলানো হাতটা পিঠের দিকে নিয়ে যায়। বলে, ফুফু কান্না করবেন না। সব ঠিক হয়ে যাবে একটা উপায় বের হবে। পিঠের উপর হাত বুলাতে থাকে। নুসাইবার মাথা মাহফুজের কাধ থেকে ওর বুকে চলে আসে। মাহফুজ নুসাইবার মাথা ওর বুকে চেপে ধরে শান্ত করতে থাকে নুসাইবা কে। এদিকে মাহফুজের ভিতরে অন্য স্বত্তাটা এবার পুরোদমে জেগে উঠে। একটু আগে দেখা দুধের ঝাকুনি যে অশান্তি তৈরি করছিল ওর বুকের ভিতর সেটা যেন এখন পুরোদমে আগুন হয়ে জ্বলছে। নুসাইবার মাথা কাধ থেকে ওর বুকে আসা মাত্র নুসাইবার বুবসের এক সাইডে মাহফুজের বুকে ঘষা খায়। কি নরম স্পর্শ। না চাইতেই  মাহফুজের মাথায় সব দুষ্ট চিন্তা ঘুরতে থাকে। হাতে নিতে কেমন হবে নুসাইবার এই নরম দুই গোলক। সিনথিয়া সাবরিনা দুই জন থেকেই বেশ বড় এই দুধ। বাচ্চা না হতেই এমন বড় দুধ। হাতের ভিতর নিয়ে দলাই মলাই করতে মন চাচ্ছে। এদিকে অন্য হাত পিঠের উপর  বুলাতে বুলাতে টের পায় ব্রায়ের স্ট্রাপ। মাঝে মাঝে সিনথিয়ার সাথে একটা দুষ্টমি করে। জামার উপর দিয়ে ব্রায়ের স্ট্রাপ টেনে আবার ছেড়ে দেয়। ঠাস করে একটা শব্দ হয়। সিনথিয়া উফ করে। খুব মজা লাগে এই ব্যাপারটায় মাহফুজের। অনেক কষ্টে নুসাইবার ব্রায়ের স্ট্রাপ টেনে ছেড়ে দেওয়া থেকে নিজে কে বিরত রাখে। প্যান্টের ভিতর জেগে উঠা দানবটাকে বসিয়ে রাখতে পারে না। প্যান্টের ভিতর ফুলে উঠে। একদিকে ওর বুকে ঘষা নুসাইবার দুধ। নরম শরীর। আর পিঠে হাত বুলানোর সময় ভিতরে ব্রায়ের স্ট্রাপের স্পর্শ। এইসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে সিএনজি এক সময় আরশাদ আর নুসাইবাদের এপার্টমেন্টের সামনে এসে দাঁড়ায়। নুসাইবার কান্না তখন কমে এসেছে তবে চোখের পানি একদম বন্ধ হয় নি। মাহফুজ বলে ফুফু বাসা এসে গেছে। চোখটা মুছে নিন। অন্য কেউ দেখলে কি ভাববে। এই কথাটা যেন নুসাইবার কানে ম্যাজিকের মত কাজ করে। অলওয়েজ ইমেজ সচেতন নুসাইবা অন্য কেউ কি ভাববে সেই চিন্তায় সব সময় সচেতন। তাই মাহফুজের বুক থেকে মাথা তুলে শাড়ির আচল দিয়ে ভাল করে চোখ মুছে। চুলটা ঠিক করে। মাহফুজের দেখে মনে হয় এযেন সেই শক্ত ব্যক্তিত্বের নুসাইবা। সিএনজি থেকে দুইজন বের হয়। মাহফুজ ভাবে চলে যাবে কিনা। তবে নুসাইবা বলে একটু বাসায় আস কথা আছে।


নুসাইবা যদিও সিএনজি থেকে নামার সময় কেউ যাতে ওর কান্না দেখতে না পারে বা মনের ভিতরের অবস্থা না বুঝতে পারে তাই চোখ মুখ মুছে নরমাল মুখে লিফটে উঠে কিন্তু ওর ভিতরে সেই ঝড় এখনো বয়ে চলছে। কার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলার উপায় নেই। কার সাথে কথা বলতে গেলে তাকে পুরো ব্যাপারটা খুলে বলতে হবে। আরশাদের ঘুষ খাওয়া, জুয়া খেলা এইসব কিভাবে অন্যদের সাথে শেয়ার করবে। কোথায় যাবে এত দিনের ওদের সম্মান, প্রেস্টিজ। এই সময় খালি মাহফুজের সাথে কথা বলা যায় কারণ মাহফুজ কে নতুন কর কিছু বলবার দরকার নেই। ও সব কিছু জানে। আর জেবার সাথে ওর ছেলে কে স্কুলে ভর্তি করারনোর সময় কথাটা ওর মাথায় মাঝখানে কিছুদিন ঘুরছিল। জেবা বলেছিল, মাহফুজ ভাই সব পারে। আরশাদও একদিন বলেছিল, যেভাবে অল্প কয়েকদিনে পিকনিক আয়োজন করেছে মাহফুজ তাতে মনে হয় এই ছেলে কে দিয়ে অসাধ্য সাধন হবে। এই সব কারণেই নুসাইবার মনে হয় মাহফুজ হচ্ছে এই মূহুর্তে পরামর্শ করার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি। নুসাইবা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে। পিছে পিছে মাহফুজ এসে ঢুকে। ঘরের দরজা লাগানোর পর নুসাইবা ওর মুখোশ খুলে ফেলে। সিএনজি থেকে বের হবার সময় যে হাসিখুশি নরমাল মানুষের মুখোশ পড়ে বের হয়েছিল ঘরের ভিতর সেই মুখোশ খুলে ফেলে নুসাইবা। নুসাইবার চোখ আবার ছলছল করে উঠে। আরশাদের যে কোন ভুলে নুসাইবা অন্য সময় প্রচন্ড রেগে যায়, বকাঝকা করে আরশাদ কে। কিন্তু আজকে এটা দেখার পর নুসাইবা যেন রাগ করা ভুলে গেছে। ওর মনে হচ্ছে ওর পুরো জীবনটা বুঝি মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে আছে। এতদিন চোরাবালির উপর দাঁড়িয়ে ছিল তবে বুঝতে পারে নি। ধীরে ধীরে একটু একটু করে ডুবেছে। আজকে এত বছর পর যেন বুঝতে পারছে চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছে তবে বড় বেশি দেরি হয়ে গেছে। চোরাবালি থেকে বের হবার আর কোন উপায় বুঝি নেই। এই যে ওর নামে আরশাদ ঢাকার আশেপাশে অনেক জমি কিনেছে। যেগুলো জিজ্ঞেস করলেই বলছে শেয়ার বাজারের টাকা বা কার সাহায্য কম টাকায় পাওয়া ভাল জমি সেসব কি সত্যি। এইসব জমি ওর নামে কিনে কি আরশাদ ওকে পাপের ভাগীদার করল। আর চিন্তা করতে পারে না নুসাইবা। মাথাটা ঘুরে উঠে। পা টলে উঠে। হঠাত চোখ অন্ধকার হয়ে আসে।


মাহফুজ সিএনজির ভিতর অবাক হয়ে লক্ষ্য করে কিভাবে অন্য কেউ কি ভাববে এই কথা বলার পর নুসাইবা ম্যাজিকের মত চেঞ্জ করে এটিচুড। সিনথিয়া একবার বলেছিল নুসাইবা ফুফুর সব কাজের উদ্দ্যেশ হল যাতে সমাজের চোখে, আশেপাশে মানুষের চোখে উনার ইমেজ ঠিক থাকে। প্রচন্ড ইমেজ সচেতন মানুষ নুসাইবা ফুফু। আজকে নুসাইবার কয়েক সেকেন্ডে এই পরিবর্তন যেন সেই কথাটার মানে ভালভাবে মাহফুজ কে  বুঝতে সাহায্য করে। লিফটে উঠার সময় আরকেজন ভদ্রলোক লিফটে উঠে। নুসাইবা তার সাথে এমন ভাবে হেসে হেসে কথা বলে যে একটু আগে এই নুসাইবা যে কান্নায় ভেসে যাচ্ছিল সেটা মাহফুজের বিশ্বাস হয় না। মাহফুজ কে সেই ভদ্রলোকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় ভাতিজির ফ্রেন্ড হিসেবে। মাহফুজ মনে মনে হিসাব করে এক সাপ্তাহ আগেও অন্য কাও কে ও যে সিনথিয়ার ফ্রেন্ড এইটুকু নুসাইবা বলত না। তাই ওর মনে হয় আজকের এই অভিযানে আরশাদের বারটা বাজলেও ওর লাভ কম হয় নি। তবে ও যে আজকে নুসাইবা কে হেল্প করেছে এই খবরটুকু গোপন রাখার জন্য নুসাইবা কে বলতে হবে। নাহলে অন্য সমস্যা বাধবে আরশাদের তরফ থেকে। এর মধ্যে ওরা নুসাইবাদের ফ্লোরে আসে। নুসাইবা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ওকে ভিতরে আসতে বলে। মাহফুজ ভিতরে ঢুকে মাহফুজ দরজা লাগায়। দরজা লাগানোর পর উলটা ঘুরে দেখে নুসাইবা হেটে সোফার দিকে যাচ্ছে। যাওয়ার পথে হঠাত থমকে দাঁড়ায় নুসাইবা, এরপর কয়েক সেকেন্ড বিরতি। নুসাইবার শরীর যেন টলে উঠে। মাহফুজ দেখে নুসাইবা যেন স্লো মোশনে পড়ে যাচ্ছে। রিফ্লেক্স বশত মাহফুজ কিছু চিন্তা না করেই লাফ দেয় নুসাইবা মাটিতে পড়ার আগে ধরে ফেলে নুসাইবা কে। ফুফু, ফুফু বলে দুইবার ঝাকি দেয়। কোন সাড়া নেই নুসাইবার। মাহফুজ বুঝে অজ্ঞান হয়ে গেছে নুসাইবা। এতবড় একটা শকের পর ভিতরে চেপে রাখা অনুভূতি যতই ইমেজ ঠিক রাখার ভয়ে চেপে থাকুক, ঘরে ঢুকার পর সেটা সর্বশক্তি দিয়ে নুসাইবা কে আঘাত করেছে। অজ্ঞান হয়ে গেছে নুসাইবা। মৃত বা জীবিত যে কোন মানুষ যদি তার শরীরের সব ওজন ছেড়ে দেয় তখন তাকে বহন করা কষ্টকর। অজ্ঞান নুসাইবার কোন হুশ নেই তাই মাহফুজ তাকে পাজকোলা করে সোফায় শুইয়ে দেয়। আরেকবার ঝাকি দেয় ফুফু, ফুফু বলে। কোন শব্দ নেই। মাহফুজ সোফায় নুসাইবা কে শুইয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। কি এক বিপদে পড়া গেল। কি করবে এখন? আরশাদ কে ফোন দিবে? তাহলে কি ব্যাখ্যা করবে মাহফুজ। কেন এই বাসায়, কি কারণে নুসাইবা অজ্ঞান হল। পাশের বাসার কাউকে ডাকবে? তাহলেও তো সেইম প্রশ্ন। অজ্ঞান হওয়া মানুষের মুখে সবাই পানির ছিটা দেয় এটা এতদিন দেখে এসেছে মাহফুজ তাই সেটাই করে। ড্রইং রুমের সাথে থাকা গেস্ট বাথরুমে ঢুকে মগ করে পানি আনে। চোখে মুখে পানির ছিটা দেয়। কোন সাড়া নেই নুসাইবার। মাহফুজ নুসাইবা কে দেখে। শরীরে কাপড় অবিন্যস্ত হয়ে আছে। ওড়না অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবার সময় মাটিতে পড়ে গেছে। মাহফুজ যখন অজ্ঞান হয়ে যাওয়া নুসাইবা কে মাটি থেকে উপরে তুলেছে তখন এতকিছু খেয়াল করে নি। এখন দেখছে কামিজের কোমড় থেকে নিচের দিকের পিছনের অংশ এমন ভাবে শরীরের নিচে চাপা পড়েছে যাতে সাইড থেকে নুসাইবার পাছার শেপ বুঝা যাচ্ছে। সামনের দিকের কাপড় কোমড় পর্যন্ত উঠে আছে। তাই ভালভাবে দুই পায়ের সংযোগ স্থল আর রানের শেপ বুঝা যাচ্ছে। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া নুসাইবার অবিনস্ত্য কাপড়ের কারণে মাহফুজ ভালভাবে নুসাইবার শরীর আরেকবার দেখার সুযোগ পায়। উচু বুক। দারুণ শেপের পাছা। পায়ের রানে জড়িয়ে থাকা সালোয়ার। সব মিলিয়ে মাহফুজের ভিতরের উত্তাপটা যেন আবার বেড়ে যায়। তবে মনের মধ্যে অন্য একটা অংশ বলে ছি, এইভাবে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া একজন মহিলা কে নিয়ে এইভাবে ভাবা ঠিক না। মাহফুজের মনের ভিতর ভাল অংশটা তখন আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ে নুসাইবার জ্ঞান ফিরানোর জন্য। মুখে পানির ছিটা দেয়। শরীর ধরে ঝাকায় কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। পাচ মিনিট  হয়ে গেল নুসাইবার জ্ঞান ফেরার নাম নেই। মাহফুজ একটু চিন্তিত হয়ে পড়ে। তাই ডাক্তার এক বন্ধু কে ফোন দেয় মাহফুজ।
Like Reply
মাহফুজের এই ডাক্তার বন্ধুর নাম আদিল। সলিমুল্লাহ মেডিকেলের ছাত্র ছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশি দূরে না। একবার আরেক ছেলের সাথে এক ঝামেলায় হেল্প করেছিল মাহফুজ। এরপর থেকে ভাল খাতির।  নানা ডাক্তারি পরামর্শের জন্য মাঝেমধ্যে ফোন দেয়। আদিল ফোন ধরতেই মাহফুজ বলে দোস্ত একটা উপকার করতে হবে। আদিল বলে খালি ডাক্তারি পরামর্শের জন্য ফোন দিস। মাঝে মধ্যে তো একটু বন্ধুর খবর নিতে পারিস। মাহফুজ বলে এখন এত কথা বলিস না, একটা বিপদে আছি হেল্প কর। মাহফুজের গলায় আদিল বুঝে মাহফুজ আসলেই কোন সমস্যায় আছে।  আদিল বলে বল, মাহফুজ বলে একজন আমার সামনে অজ্ঞান হয়ে আছে জ্ঞান ফেরাতে হবে। আদিল বলে কি মাইর দিছিস নাকি কাউকে, যে মেরে অজ্ঞান করে দিছিস। মাহফুজ বলে না, একটা শক পাইছে এতে অজ্ঞান হয়ে গেছে। আদিল বলে হসপিটালে নিয়ে যা অথবা ফ্যামিলির কাউকে ডাক। মাহফুজ বলে পসিবল না আপাতত। আদিল জিজ্ঞেস করে ছেলে না মেয়ে। মাহফুজ বলে জেনে কি করবি। আদিল বলে শুনিস নি ডাক্টার আর উকিল এর কাছে কখনো মিথ্যা বলতে নেই। মাহফুজ বলে মেয়ে। আদিল বলে বয়স কত হবে। মাহফুজ বলে চল্লিশের মত। আদিল এইবার ফোনের ঐপাশ থেকে বলে ও মেরি শের। তু তো কামাল কর দিয়া। মাহফুজ বলে কি বলিস। আদিল বলে এতদিন জানতাম তুই আমাদের বয়সী মেয়েদের পিছনে ঘুরিস এখন দেখি মিলফ ধরেছিস। সিনথিয়া ভাবী জানে। মাহফুজ বলে বাজে কথা বলিস না। আদিল ফিস ফিস করে ফোনে বলে কি করছিস যে ঐ মহিলা অজ্ঞান হয়ে গেল। মাহফুজ বলে আমি কিছু করি নাই। ভদ্রমহিলা একটা ঘটনা দেখে অজ্ঞান হয়ে গেছে। আদিল বলে কি দেখল এই মহিলা। তোর প্যান্টের ভিতর সাপ দেখেছে নাকি। এই বলে ফোনে নিজেই হো হো করে হাসতে থাকে। মাহফুজ বলে এইসব না বলে ডাক্তারি জ্ঞান দে। আদিল বলে যদি তুই যা বলিস তা হয় তাহলে মানসিক শক থেকে এমন হইছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর। চোখে  মুখে পানির ছিটা দে আর হাত পা মালিশ কর। মাহফুজ পানির ছিটা অলরেডি দিছি তাহলে হাত পা মালিশ করতে হবে। আদিল বলে দেখিস আবার হাত পায়ের জায়গায় অন্য কিছু মালিশ করিস না। মাহফুজ কিছু বলে না। আদিলের মুখের লাগাম সব সময় লাগাম ছাড়া। আদিল বলে এই বল না, মহিলা দেখতে কেমন। মাহফুজ জানে উত্তর না দিলে আদিল আবার ফোন করবে। তাই মাহফুজ একবার নুসাইবার দিকে তাকায় এরপর উত্তর দেয় ভাল। আদিল বলে, ওরে আমার মিলফ হান্টার। লেগে থাক। মাহফুজ বাই বলে রেখে দেয়।


মাহফুজ নুসাইবার হাত পা মালিশ করতে লেগে পড়ে। নুসাইবার হাত একদম নরম বাচ্চাদের মত। আগেও সাবলাইম রেস্টুরেন্টে যখন ওর হাত ধরেছিল তখন টের পেয়েছিল। পায়ের আঙ্গুল টেনে দেয়, পায়ের পাতা মালিশ করে দেয়। নুসাইবার কোন সাড়া নেই। মাহফুজের মনে হয় তাড়াতাড়ি কিছু করা দরকার। কেননা আদিল বলেছে আধা ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে ডাক্তার ডাকতে। আর একবার ডাক্তার ডাকলে ব্যাপারটা আর কোন ভাবেই গোপন রাখা যাবে না। মাহফুজ তাই দ্বিগুণ উৎসাহে হাত পা মালিশ করে। পায়ের পাতা থেকে হাটু পর্যন্ত মালিশ করতে থাকে।  এক সাথে মাহফুজের মনের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা শয়তান যেন ভিতরের আগুন উসকে দেয়। পায়ের গোছা যেটাকে বলে, গোড়ালির উপরে আর হাটুর নিচে সেই জায়গাটা মালিশ করার সময় মাহফুজের মনে হয় কি মোলায়েম। একটু পর মনের দুষ্ট অংশ যেন টেনে টেনে মাহফুজে হাত আরেকটু উপরে নেয়। হাটু ছাড়িয়ে মাহফুজের হাত নুসাইবার রানের দিকে যেতে থাকে। পুরুষ্ট মাংসল থাই। কিন্তু অস্বাভাবিক মোটা নয় বরং শরীরের সাথে মানান সই। আর কি নরম থাই একেক টা। মাহফুজ দুই হাতে শক্ত করে ধরে নুসাইবার থাই। মুখ নামিয়ে সালোয়ার উপর দিয়ে নরম মাংসল থাইয়ে একটা চুমু দেয়। কেপে উঠে নুসাইবা। মাহফুজ ভয় পেয়ে নুসাইবার পা ছেড়ে দেয়। এক মিনিট দেখে কিন্তু নুসাইবার কোন সাড়া নেই আবার। তাই আবার শুরু করে মালিশ। আবার হাত অবাধ্য হয়ে নুসাইবার রানে উঠে আসে আর মুখ নেমে আসে এক জায়গায়। মাহফুজ সাহস করে আর কিছু করে উঠতে পারে না। নুসাইবা আবার নড়ে উঠে। এইবার মাহফুজ পানির মগ থেকে আরেকটু পানি নিয়ে আবার ছিটা দেয় মাহফুজ। এইবার চোখ মেলে তাকায় নুসাইবা। চোখে বিস্ময়।


নুসাইবার মনে হয় সে যেন এক দুঃস্বপ্নের রাজ্যে আটকা পড়েছে। এটা যে স্বপ্ন সেটা নুসাইবা বুঝছে কিন্তু এর থেকে বুঝি ওর মুক্তি নেই। স্বপ্নে নুসাইবা দেখছে পত্রিকার পাতায় বড় বড় করে হেডিং এসেছে, জুয়াড়ি ঘুষখোর সরকারি কর্মকর্তা। সাথে মাহফুজের একটা ছবি। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, কলিগ, প্রতিবেশি সবাই যেন নুসাইবা কে দেখছে আর ছি ছি করছে। বলেছে, তুমিও ঘুষখোর। ঘুষের টাকায় কেনা জমি তোমার নামে। তুমি জুয়াড়ির বউ। নুসাইবা যেন সবার থেকে পালাতে চাইছে কিন্তু পারছে না। সবাই কে চুপ করতে বলছে কিন্তু চুপ করছে না কেউ। এর থেকে পালানোর কোন উপায় নেই যেন। কে যেন ওকে ডাকছে। নুসাইবা সেই ডাক লক্ষ্য করে ছুটছে আর ওর পিছন পিছন যেন পরিচিত সবাই ছুটছে আর বলছে ঘুষখোর, জুয়াড়ি। ছুটতে ছুটতে যেন এক লোকের সামনে এসে পড়ল। লোকটার পিছন থেকে সূর্যের আলো এসে লোকটার মুখ কে ঝাপসা করে দিয়েছে। নুসাইবা মুখ দেখতে পারছে না কিন্তু লোকটা যেন নুসাইবা কে বলছে ভয় পেও না। আমি আছি। নুসাইবা পিছন ফিরে তাকায়। শত শত পরিচিত মুখে ছুটে আসছে। সবার মুখে এক বুলি। ঘুষখোর, জুয়াড়ি। নুসাইবা বাচার জন্য সামনে তাকায়। আলোতে মুখ অদৃশ্য হয়ে থাকা লোকটা নুসাইবা কে জড়িয়ে ধরে। নুসাইবার মনে হয় শক্ত একটা হাত যেন ওকে জড়িয়ে ধরেছে, নির্ভার করতে চাইছে। লোকটা যেন হাত সামনে বাড়িয়ে ছুটে আসা জনস্রোত থামিয়ে দিল এক মুহূর্তে। নুসাইবার সারা শরীরে একটা শিহরণ বয়ে যায়। সারাজীবন খুজতে থাকা আস্থাশীল নির্ভরতার প্রতীক যেন লোকটা। কিন্তু চেহারাটা কেন দেখা যাচ্ছে না লোকটার। ঠিক সে সময় কে যেন আবার ডাকে ওকে। চোখ খুলে যায় নুসাইবার। দেখে ওর মুখের উপর মাহফুজ ঝুকে আছে। জিজ্ঞেস করছে কেমন লাগছে এখন। নুসাইবা বুঝতে পারে না কি হচ্ছে। ওর মনে পড়ে হঠাত করে মাথা ঘুরে উঠেছিল, অন্ধকার দেখছিল চোখে। এরপর আর কিছু মনে নেই। তারপর দুঃস্বপ্নে পরিচিত মুখরা ওকে তাড়া করছিল আর ওকে বাচিয়েছে অদৃশ্য মুখের কোন লোক। নুসাইবা উঠে বসার চেষ্টা করে। মাহফুজ বলে শুয়ে থাকুন। আপনি প্রায় আধা ঘন্টার মত অজ্ঞান হয়ে ছিলেন। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ডাক্তার ডাকব ভাবছিলাম।


নুসাইবা মিনিট দশেক শুয়ে একটু সুস্থির হয়। এরপর মাহফুজের হাত ধরে উঠে বসে। এরকম ঘটনা আর একবার ঘটেছিল। যেবার ডাক্তার ওকে বলেছিল শারীরিক সমস্যার কারণে নুসাইবা কখনো কনসিভ করতে পারবে না। আর আজকে আরশাদের ঘটনার পর এই দ্বিতীয়বার। দুইটা ঘটনাই ওর জন্য সমান শকিং। মাহফুজের দিকে তাকিয়ে নুসাইবা বলে আমি কি করব মাহফুজ। কাউকে মুখ দেখাব কি করে। আমার সব ধবংস হয়ে গেল। মাহফুজ বলে আপনি ব্যাপারটা কে এভাবে ভাবছেন কেন। আমাদের আরেকটু ঘেটে দেখতে হবে কি হচ্ছে ব্যাপারটা। অনেকে জুয়ার নেশায় পড়ে যায়। আংকেল কি এমন কিছুতে পড়ল নাকি সেটা দেখতে হবে। দরকার হলে সাইকোলজিস্ট দেখিয়ে রিহ্যাবে ভর্তি করিয়ে দিতে হবে। জুয়াও কিন্তু এক ধরনের এডিকশন। আর অন্যদের কথা ভাবছেন কেন। কে কি বলল সেটা দিয়ে কি আসে যায়। নুসাইবা বলে মাহফুজ তুমি বুঝছ না। গত পনের বছর ধরে সবাই জানে আমারা কেমন সৎ, কত নিয়ম মেনে চলি। পত্রিকার রিপোর্ট এর পর অনেকেই হালকা হালকা সন্দেহ করা শুরু করেছে। এখন যদি জুয়ার কথা জানে তাহলে আর মুখ দেখানোর উপায় থাকবে না। আর বনানীর ঐ বাসায় কি করছিল আরশাদ? এই প্রশ্নটা অবশ্য মাহফুজের মনেও। মাহফুজ বলে সেইটা খবর বের করতে হবে। একটু সময় লাগবে। আপনি বললে আমার পরিচিত লোকজন আছে যারা এইসব খবর বের করার ব্যপারে দক্ষ। তাদের কাজে লাগাতে পারি। নুসাইবা বলে যত টাকা লাগে আমি দিব। তুমি আমাকে খবরটা বের করে দাও। কি করে আরশাদ ঐ এপার্টমেন্টে। এরপর প্রায় এক ঘন্টা ধরে নুসাইবা হা হুতাশ করে আর মাহফুজ শান্তনা দেয়। এর মাঝে মাহফুজ আর নুসাইবা কথা বলে সামনে কি করা যায়। নুসাইবার মনে হয় সে এক যুদ্ধে এসে পড়েছে যেই যুদ্ধে সে একা। আরশাদের পুরো বৃত্তান্ত ওর জানা দরকার কিন্তু আরশাদ সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর দিবে বলে মনে হয় না কারণ উত্তর দিতে চাইলে এত বছর এত কিছু ওর থেকে লুকাত না। আর যুদ্ধে একা জেতা যায় না। মিত্র দরকার হয়। মাহফুজ হতে পারে তার সেই মিত্র। ছেলেটা পলিটিক্স করে, অনেক জায়গায় চেনাশোনা আছে। আর কাজে দক্ষ। তাই ওর মনে হয় মাহফুজ এই কাজের জন্য পারফেক্ট।


তাই নুসাইবা এর পর আধা ঘন্টা ধরে মাহফুজের সাথে কথা বলে এখন কি করতে পারে ওরা। ওদের পরবর্তী স্টেপ কি হতে পারে। নুসাইবা একবার বলে আমার কি আরশাদ কে সরাসরি চার্জ করা উচিত? জুয়া, ঘুষ আর বনানীর ঐবাড়িতে কি করে সেই ব্যাপারে। মাহফুজ দেখে নুসাইবার বিখ্যাত রাত আবার সব কিছু ভজঘট পাকিয়ে তুলতে পারে। কারণ সরাসরি চার্জ করলে মাহফুজ যে নুসাইবা কে হেল্প করেছে সেটা বের হয়ে আসবে। এই অবস্থা কখনো ওর জন্য ভাল না। তাই মাহফুজ নুসাইবা কে শান্ত করে। বলে, আংকেল কে সরাসরি চার্জ করা আপনার উচিত হবে না। আগে আপনার সব ইনফরমেশন দরকার। নুসাইবা বলে কিভাবে পাব এই ইনফরমেশন। তুমি কি আমাকে দুই তিন দিনের ভিতর এই ইনফরমেশন দিতে পারবে? মাহফুজ বলে এত তাড়াতাড়ি তো আসলে সম্ভব না। আমার পরিচিত লোক আছে এটা ঠিক কিন্তু তারাও এত তাড়াতাড়ি করতে পারবে না। অন্তত দুই তিন সাপ্তাহ লাগবে সব খবর ঠিক করে বের করতে। নুসাইবা যেন একটু হতাশ হয়। বলে এতদিন কিছু না করে কি আমরা বসে থাকব তাহলে। মাহফুজ বুঝে নুসাইবা হতাশ হয়ে পড়ছে। আর হতাশ হলে মানুষ অনেক উলটা পালটা কাজ করে। এই মুহূর্তে নুসাইবা কে ওর শান্ত রাখা দরকার। তাই বলে, ফুফু আমরা চুপচাপ থাকব না। আমরাও আমাদের মত করে তথ্য বের করার চেষ্টা করব। আংকেল যদি ঘুষ খায়, জুয়া খেলে তার কোন না কোন প্রমাণ বাসায় থাকবে। আপনি উনার কাগজ পত্র ঘাটেন। ফোন ঘাটেন। তবে সাবধান। নুসাইবা আর আরশাদ প্রাইভেসির ব্যাপারে খুব সচেতন। দুই জন কখনো একে অন্যের জিনিস ঘাটে না। দরকার হলে পারমিশন নিয়ে ফোন খুলে অন্যজনের। নুসাবার তাই কেমন যেন লাগে। মাহফুজ বুঝে, বলে এখন কিছু করার নেই ফুফু। আমি বুঝছি না বলে এইভাবে আংকেলের কাগজ, ফোন, ল্যাপটপ ঘাটতে আপনার অস্বস্তি লাগছে, ভদ্রতায় বাধছে কিন্তু চিন্তা করে দেখেন উনি আপনার কাছ থেকে কিছু জিনিস বছরের পর বছর লুকিয়েছে। আর আপনি বললেন আপনাদের কেনে বেশির ভাগ জমি আপনার নামে। আপনি তো জানেন এখন দূর্নীতি দমন কমিশন কতটা কড়া। তারা ঘুষের টাকায় যদি আত্মীয় স্বজনের নামে জমি বা ফ্ল্যাট বা অন্য কোন সম্পত্তি কেনা হয় তাহলে সেই আত্মীয়র বিরুদ্ধেও মামলা দেয়। নুসাইবার গা বেয়ে শীতল স্রোত বেয়ে যায়। কয়েক দিন আগে এক বড় সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে হওয়া দুর্নীতির মামলার রায় পড়ছিল পেপারে। সেই অফিসারের বউ কে সাজা ভোগ করতে হয়েছিল তার নামে ব্যাংকে টাকা রাখায়। এতক্ষণ যেটা মনে হচ্ছিল পাবলিক হিউমিলেশন এখন যেন সেটা আর বড় হয়ে দেখা দিল ওর মনে। জেল। জেল খাটতে হতে পারে ওকে। কিভাবে সম্ভব। কোন অপরাধ না করে খালি আরশাদের লোভের কারণে ওকে জেল খাটতে হবে। মেনে নিতে পারে না। এতক্ষণ ওর ভিতরে শকের কারণে সব অনুভূতি ভোতা হয়ে ছিল। জেলের কথা যত ভাবে তত ওর মনে রাগ যেন জেগে উঠতে থাকে। এরকম কিছু হলে আরশাদ কে ও ছাড়বে না। ভালবাসার মানুষ যখন বিট্রে করে তখন এর থেকে খারাপ কিছু হয় না। মাহফুজ ওর মুখের ভাষা পড়তে পারে। বলে আন্টি সিউর হওয়ার আগে আপনি আংকেল কে কিছু বলবেনা না। আপনার সেফটির জন্য। কারণ আসলে কি ঘটছে না জানলে আপনি আপনাকে রক্ষা করতে পারবেন না। নুসাইবা মেনে নেয়। মনে মনে ভাবে জেবা ঠিক বলেছিল। বয়সের তুলনায় মাহফুজের মাথা অনেক বেশি ঠান্ডা। অনেক বেশি বুদ্ধি ধরে মাহফুজ। তবে সেই সাথে ওর মনে হয় আরশাদ যদি সত্যি সত্যি ওর কাছে এত কিছু লুকায় তবে শাস্তি পেতে হবে আরশাদ কে। তবে মাহফুজের কথা মত কিছুদিন চুপ করে থাকবে ও। তবে সেটা সব সময়ের জন্য না।
Like Reply


বিপদ যখন আসে তখন সব দিক থেকে আসে আরশাদ যেন কথাটার মানে এখন বুঝতে পারছে। আরশাদ ওর বদলির সরকারি অফিস আদেশ হাতে নিয়ে হতবাক হয়ে বসে আছে। আরশাদ ভাবছিল পত্রিকার রিপোর্টের ঘটনাটা ও সামলে উঠেছে কিন্তু এই আদেশ দেখে বুঝেছে সেটা ভুল ধারণা ছিল। আরশাদের সব জায়গায় এত পরিচিত লোক ছিল সরকারি মহলের ভিতরে যে ওর ধারণা ছিল ওর বদলির  ব্যাপারে কথা হলে অন্তত কিছুদিন আগেই সেটা টের পাবে। তবে পত্রিকার রিপোর্টিং এর পর থেকে সবাই ওকে কিছুটা এড়িয়ে চলছে সেটা ও নিজেও টের পাচ্ছিল। তবে এতদিন ধরে যে সিনিয়র অফিসারদের তেল দিয়ে এসেছে। তাদের জন্মদিনে দামী গিফট নিয়ে হাজির হয়েছে তারা এইভাবে তাকে বেমালুম ভুলে যাবে এতটা আশা করে নি। আরশাদের নতুন পোস্টিং হয়েছে রাজশাহী। ঢাকা থেকে এতদূরে আর কখনো চাকরি করে নি ও। চাকরির শুরু থেকে লবিং এর জোরে ঢাকা না হলেও ঢাকার আশেপাশের দুই তিনটা জেলার মাঝেই পোস্টিং বাগিয়েছে সব সময়। এইবার এত চুপচাপ ওর বদলির আদেশ হয়েছে যে সেটা ঠেকানোর জন্য কোন লবিং করা বা অন্য কোন জায়গায় পোস্টিং করারনোর সুযোগ পায় নি। বদলি আদেশ পাওয়ার পর সিনয়র কয়েকজন কে ফোন দিয়েছিল বদলিটা রাজশাহী থেকে আর কাছে কোথাও করা যায় কিনা। সবাই এক কথাই বলেছে। ছয়মাস গিয়ে থেকে আস ঐখানে। সব শান্ত হোক। আবার নাহয় ঢাকায় ফিরিয়ে আনব তোমাকে। সব নিমক হারাম। ওর কাছ থেকে গাদা গাদা গিফট নিতে কার হাত কাপে নি। এখন যখন প্রতিদান দেবার কথা  উঠেছে তখন সবাই হাত ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। এই বদলি নিয়ে যতটা আপসেট হবার কথা ছিল ততটা আপসেট হতে পারছে না কারণ এর থেকে বড় মাথা ব্যাথা যেন গতকাল বিকাল থেকে ওর মাথায় চেপে আছে।


গতকাল বিকালে অফিস থেকে বের হবার ঠিক কিছুক্ষণ আগে একটা মেইল আসে ওর পার্সনাল ইমেইলে। এই ইমেইলটা ও অফিসিয়াল্ভাবে ইউজ করে না। একদম পার্সনাল ইমেইল এটা। এমনকি নুসাইবাও জানে না এই ইমেইল এড্রেস। কিছু জরুরি আর গোপন কাজের জন্য ইউজ করে এই আইডি। সেখানে মেইলটা দেখে প্রথমে অবাক হয়েছিল কার মেইল। স্পাম মেইল কিনা। তবে মেইলের সাবজেক্ট এর লেখা দেখে না খুলে পারে নি মেইলটা। সাবজেক্টে লেখা ছিল ইউর ওয়াইফ। ভিতরে কোন সম্ভোধন না, কোন ভূমিকা না। শুধু লেখা। ডু ইউ নো হোয়াট ইউর ওয়াইফ ডু। আরশাদ ভাবল কোন স্প্যাম হবে নিশ্চিত। তাই কিছু না ভেবে ডিলিট করে দিল। এই প্রেশারের সময় এইসব স্প্যাম মেইল এর প্যাড়া নেবার কোন ইচ্ছাও নেই। তাই ডিলিট ফোল্ডার থেকেও ডিলিট করে দিল যাতে কোন নিশানা না থাকে এই মেইলের। তবে এরপর থেকেই যেন মাথার ভিতর ঘুরতে থাকলে মেইলের কথাটা। ডু ইউ নো হোয়াট ইউর ওয়াইফ ডু। বাসায় আসার পর গত এক সাপ্তাহের মত পুরাতন রুটিন। নুসাইবা সব কথার খুব শীতল শীতল উত্তর দিচ্ছে। আরশাদ টের পেয়েছে পত্রিকার রিপোর্টের কিছু অংশ নুসাইবার মনে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। আরশাদ বার বার নানা যুক্তি দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করছে এইসব ভুয়া। ওর শত্রুরা রিপোর্ট করিয়েছে। নুসাইবা প্রতিবার ও যখন যুক্তি দিচ্ছে তখন কোন তর্ক করছে না। মনযোগ দিয়ে শুনছে প্রতিবার। এটাই আরশাদ কে ভাবিয়ে তুলছে সবচেয়ে বেশি। নুসাইবার মেজাজ খুব গরম। প্রেমের কিছুদিনের মাঝেই এটা টের পেয়েছিল আরশাদ। ভাইদের আদরের একমাত্র বোন। পরিবারের ছোট সন্তান এইসব কারণে খুব আদর পেয়েছে সব সময়। আল্লাদী মেয়ে। তাই একটুতেই মেজাজ করে। আরশাদ এটা জেনেই বিয়ে করেছে নুসাইবা কে। বিয়ের এই পনের বছর দুই জনের ঝগড়ার সময় নুসাইবাই বেশি রাগ করে সব সময়। রেগে গেলে অনেক কথা শুনিয়ে দেয়। তবে আরশাদ জানে রাগ বেশি হলেও মনটা খুব ভাল নুসাইবার তাই কিছু মনে করে না। নুসাইবা রাগলে বরং একটু মানিয়ে নেয়। এছাড়া ওদের বাচ্চা না হওয়া নিয়ে আরশাদের মনের মাঝেও একটা অপরাধবোধ কাজ করে। তাই আর বেশি মানিয়ে নেয় নুসাইবার রাগের সাথে। তবে এইবার নুসাইবা কেন কোন রাগ করছে না এটাই ভাবিয়ে তুলছে আরশাদ কে। নুসাইবা যে ওর উপর রাগ সেটা শীতল ব্যবহারে বুঝা যাচ্ছে। তবে নুসাইবা এইভাবে শীতল ব্যবহারের লোক না। নুসাইবা ক্ষেপে উঠে দুইটা কথা শুনাবে সেটাই ওর স্বভাব। তাই এই চুপচাপ থাকাটা আরশাদের জন্য আর বিপদজনক মনে হচ্ছে। নুসাইবা কি রাগ চেপে রাখতে রাখতে শেষে কোন ভয়ংকর বিস্ফোরণ ঘটাবে। তবে এই ইমেইল পাওয়ার পর থেকে আরশাদের মনে হতে থাকে এই চুপচাপ থাকার সাথে কি এই ইমেইলের কোন সম্পর্ক আছে। আরশাদ নিজের কথা ভাবে। নিজের অনেক দোষ আছে জেনেই অনেক সময় নুসাইবার অনেক ব্যবহারে ও কিছু মনে করে না। তবে নুসাইবা কি এমন কিছু করেছে যার কারণে নুসাইবা মনে মনে অপরাধবোধ ভুগছে। তাই রাগ করলেও সেটা প্রকাশ করছে না আবার ফেলেও দিতে পারছে না রাগটা। তাই এই শীতল ব্যবহার। নুসাইবা কোথায় যাচ্ছে? কি করছে? সেই রাতে শুয়ে শুয়ে অনেকক্ষণ ধরে ভাবল আরশাদ। তবে কোন কিছু ভেবে বের করতে পারল না। কি হতে পারে। সেই ইমেইলে কিসের দিকে ইংগিত করেছে। এটা কি ওর কোন শত্রুর কাজ। ওর এই গোপন ইমেইলের সন্ধান কিভাবে পেল। ইমেইলটা কেন ডিলিট করল। এখন কিভাবে কোন ইমেইল এড্রেস থেকে মেইলটা এসেছিল সেটা জানবে। নুসাইবা কি কোন প্রেম করছে? না না এটা কিভাবে হতে পারে। নুসাইবার মত মেয়ে অবৈধ কোন সম্পর্কে জড়াবে না। তবে সেই ইমেইলে আর কিসের দিকে ইংগিত দিতে পারে। আরশাদের মনে হয় সেই রাতে এক ফোটাও ঘুম আসে নি। অফিসে প্রেসার, পত্রিকার রিপোর্ট পরবর্তী ইমেজ সংকট সব ছাপিয়ে সেই রাতে যেন সব চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠল ডিলিট করা সেই ইমেইল। কি করছে আসলে নুসাইবা।



প্রত্যেক মানুষের একটা ব্রেকিং পয়েন্ট থাকে। কোনভাবে মানুষ কে সেই ব্রেকিং পয়েন্টের দিকে ঠেলে দিতে পারলে সেই মানুষটা আনপ্রেডিক্টেবল ব্যবহার করে। স্বভাবজাত আচার আচরণের বাইরে এসে সেই মানুষটা এমন কিছু করে যেটা দেখে পরিচিত মানুষরা অবাক হয়ে যায় যে এটা এই মানুষটার পক্ষে কিভাবে করা সম্ভব। নুসাইবা ঠিক তেমন একটা ব্রেকিং পয়েন্টের দিকে পৌছে গেছে। নুসাইবা নিজেই নিজের দিকে তাকিয়ে ভাবে কিভাবে সম্ভব ওর পক্ষে এইসব করা। নিজেই বুঝতে পারে না। সাধারণত একটু রাগী হলেও নুসাইবার সম্পর্কে সবাই জানে ওর মনটা ভাল। খুব বেশিদিন নুসাইবা রাগ ধরে রাখে না বা প্রতিশোধ নেওয়া টাইপ কিছু করে না। রেগে কিছুক্ষণ চেচামেচি করা ওর স্বভাব। কিন্তু এখন আরশাদের সাথে যে সাইকোলজিক্যাল গেমটা সে খেলছে সেটা চেচামেচি করা সব সময়ের নুসাইবা না। এটা ঠান্ডা মাথায় চাল দেওয়া অন্য নুসাইবা। নুসাইবা ভাবে কিভাবে এটা হল গত এক সাপ্তাহের ভিতর। দুইটা ঘটনা ওর মনে হয় ওকে ওভার দ্যা এজ করেছে। ওকে এমন একটা পয়েন্টে ঠেলে দিয়েছে যেখানে নিজের নিজের আচরণ চিনতে পারছে না।



প্রথম ঘটনাটা ছিল খায়রুল সাহেব কে নিয়ে। খায়রুল সাহেব আরশাদের সার্ভিসের সিনিয়র। প্রায় তিন ব্যাচ আগে চাকরিতে ঢুকেছেন। লোকটার মধ্যে একটা পিছলা পিছলা ভাব আছে। মোটা ভুড়িয়াল আর টাক। কথায় একটা তেল তেলে ভাব সব সময়। মুখে বিগলিত হাসি। নুসাইবা কখনোই লোকটাকে পছন্দ করতে পারে না। যতটা না চেহারার জন্য তার থেকে বেশি লোকটার দৃষ্টির জন্য। আরশাদদের কোন অফিসিয়াল প্রোগ্রাম বা কোন দাওয়াতে যেখানেই লোকটার সাথে দেখা হোক না কেন এক ধরনের নোংরা দৃষ্টি দিয়ে দেখতে থাকে নুসাইবা কে। নুসাইবা খেয়াল করেছে যখন কেউ খেয়াল করছে না তখন এই দৃষ্টিটা দেয় খায়রুল সাহেব। কয়েকবার আরশাদ কে বলেছে। আরশাদ বলেছে লোকটা হার্মলেস। অফিসেও মেয়ে কলিগদের দিকে তাকায় তবে কখনো কিছু করেছে এমন শোনা যায় নি। আরশাদের উত্তর পছন্দ না হলেও নুসাইবা এটা নিয়ে বেশি উচ্চবাচ্চ্য করে নি। শুধু শুধু আরশাদের জন্য অফিসে কোন ঝামেলা বাড়াতে চায় নি বলে। তবে এইবার যা হল সেটা অবিশ্বাস্য। পত্রিকার রিপোর্ট বেরিয়েছে তখন এক সাপ্তাহের বেশি। নুসাইবা অলরেডি জেনে গেছে আরশাদের জুয়ার কাহিনী আর সেই সাথে সন্দেহ করছে ঘুষের কথা। মনে মনে রেগে থাকলেও কিছু বলছে না আর প্রমাণ যোগাড়ের অপেক্ষায়। আরশাদ ভাল প্রেসারে আছে ওর কথায় বুঝা যায়। প্রতিদিন অফিস শেষ বাসায় এসে নুসাইবা কে বুঝানোর চেষ্টা করে কিভাবে অফিসে সবাই ওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কিভাবে অফিসের এন্টি গ্রুপ ওর নামে এই রিপোর্ট করিয়েছে। একবার নুসাইবার মনে হয় আরশাদ বুঝি সত্যি বলছে। আবার মনে হয় এই দামী ক্লাবে প্রতি সাপ্তাহে জুয়া খেলার টাকাটা কই থেকে পায় আরশাদ। ঘুষ ছাড়া এর আর ব্যাখ্যা কি। আরশাদ ওকে বলে অফিসে একটা তদন্ত কমিটি বসানো হয়েছে। খায়রুল সাহেব এই কমিটির চিফ। পত্রিকার রিপোর্টিং এর উপর ভিত্তি করে এই কমিটি দেখবে ঢাকা কর অঞ্চল সাতে আসলে দুর্নীতির প্রভাব কতটুকু। আরশাদ বলে সব করা হচ্ছে ওকে চাপে রাখার জন্য। নুসাইবার একবার মায়া হয়। মানুষটা জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মনে হয় একবার জড়িয়ে ধরে বলে সব ঠিক হয়ে যাবে। আবার মনে হয় এত সব কথা কিভাবে এত বছর গোপন রাখল। ঘুষ, জুয়া এইসব কিভাবে গোপন রেখে নুসাইবার সাথে এত বছর ঘর করছে। বনানীর ঐ ফ্ল্যাট বাড়িতে কি কাজ আরশাদের। তাই আবার নিজেকে সংযত করে। সব কিছু জানতে হবে ওর। তারপর আরশাদ যদি সব ছেড়ে দিয়ে ক্ষমা চায় তবে ভেবে দেখতে পারে। এই সময় একদিন সন্ধ্যার সময় বাসায় কলিংবেল বাজতেই দরজা খুলে দেখে খায়রুল সাহেব। নুসাইবা অবাক হয়। খায়রুল সাহেব কোন দিন ওদের বাসায় আসে নি, ঠিকানা পেল কোথায়। ভদ্রতা করে ভিতরে বসতে দেয়। খায়রুল সাহেব এই কথা সেইকথার পর আসল কথায় আসেন।  বলে, ভাবী জানেন তো আরশাদের এগেইনস্টে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পত্রিকার রিপোর্টের পর আমাকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিষয়টা একটু খতিয়ে দেখতে। নুসাইবা কোন কথা বলে না কি বলতে চাইছে খায়রুল সাহেব সেটা শুনতে চায় আগে। খায়রুল সাহেব বলেন বুঝেন তো ভাবী আরশাদ হচ্ছে আমাদের ট্যাক্স ক্যাডারের স্টার পারফর্মার। তাই ওর উপর অনেকেই জেলাস। কিছু শত্রুও আছে। সবাই চায় আরশাদ কে এই রিপোর্টের সূত্র ধরে বসিয়ে দিতে। আমার উপর অনেক প্রেসার। নুসাইবা বুঝতে পারে না কথা কোন দিকে এগুচ্ছে। এগুলো আরশাদ ওকে আগেও বলেছে। খায়রুল সাহেব এইবার তাই নিজে থেকে পরের অংশের দিকে যান। বলেন, আপনি যদি আমাকে সাহায্য করতেন তাহলে আমিও আরশাদ কে সাহায্য করতে পারতাম। নুসাইবা বলে মানে? খায়রুল সাহেব বলে ভাবী বুঝেন তো আমার মিসেস কানাডা থাকে। ছেলে মেয়ে দুইটাই পড়াশুনার জন্য কানাডা পাঠিয়ে দিয়েছি। তাই মিসেস বাচ্চাদের সাথে কানাডায় থাকে। ছয়মাসে একবার আসে। বড় একা একা লাগে। আপনি যদি মাঝে মধ্যে আমার সাথে একটু ঘুরতে যেতেন। তা তেমন দূরে কোথাও না। ঢাকার আশেপাশে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু রিসোর্ট হয়েছে। সেখানে গেলাম আমরা। বেশিক্ষণ থাকব না। রাত হওয়ার আগেই নাহয় ফিরে আসব।  নুসাইবা খায়রুল সাহেবের কথার মর্ম বুঝতে পারে। নুসাইবার মাথায় সেই পরিচিত রাগ উঠতে থাকে। চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। নুসাইবা জিজ্ঞেস করে আপনি যে বাসায় এসেছেন সেটা আরশাদ কে বলেছেন। খায়রুল সাহেব টের পান নুসাইবা রেগে যাচ্ছে। উনি বলেন দেখেন আমি তো আপনার স্বামী কে সাহায্য করতে আসছি। আর আরশাদ এখন এমনিতে অনেক প্রেসারে আছে। ওকে নতুন করে আর কিছু বলতে চায় নি। আপনি আরশাদ কে কতটা ভালবাসেন সবাই জানে। তাই ভাবলাম আপনিও বুজি আমার মত আরশাদ কে সাহায্য করতে চাইবেন। নুসাইবা রেগে উঠে। বলে আপনি কি বলতে চাইছেন। আপনার সাথে আমি কেন ঘুরতে যাব রিসোর্টে। খায়রুল সাহেব নিজের পাওয়ার বুঝানোর চেষ্টা করেন। বলেন, আরশাদের নামে যদি বাজে রিপোর্ট আসে তদন্ত কমিটি থেকে ওর প্রমোশন আটকে যাবে। এত ব্রাইট একটা ছেলে। তারপর ধরেন ওএসডি করে দিতে পারে। চাকরি থাকল কিন্তু পোস্টিং নাই। কি ফ্রাস্টেটিং একটা অবস্থা দেখেন। অথবা আর খারাপ কিছু সাসপেন্ডও করে দিতে পারে। নুসাইবা বুঝে খায়রুল সাহেব থ্রেট দিচ্ছে। নুসাইবা কিছু বলার আগে খায়রুল সাহেব বলেন, আপনি আমাকে সংগ দিলেন। আমি একা বুঝেন তো। তাই আমিও দেখব আরশাদের ব্যাপারটা। কত প্রেসার আমার উপর এই কমিটি নিয়ে আপনি বুঝতে পারবেন না। সবাই আমাকে দিয়ে আরশাদের নামে যা তা লিখিয়ে নিতে চায়। আমি এইসব কিছু লিখব না। তবে এইসব কারণে আমার উপর যে প্রেসার যাচ্ছে সেটা আপনার সাথে কিছুটা সময় কাটাতে পারলে কমত আরকি। খুব সুক্ষ ভাবে কথা গুলো বলেন খায়রুল সাহেব। বিপদে পড়ে থাকা মেয়েদের এইসব ছলাকলায় নানা সময় ফেলেছেন খায়রুল সাহেব। জানেন কিভাবে কথা বলতে হয় যাতে যদি কেউ এইসব রিপোর্ট করে তাতে বলা যায় তার কথার ভিন্ন মিনিং বুঝেছে অভিযোগকারী, উনি সেটা বুজান নি। বেশির ভাগ সময় প্রথমবারে কাজ হয় না তবে মেয়েরা ভয় পেয়ে যায়। আস্তে আস্তে পরে রাজি হয়। নুসাইবা আর দশটা মেয়ের মত না। তাই প্রথমবারের একদম জ্বলে উঠে। বলে অসভ্য, ইতর ছোটলোক। বউ থাকতে অন্যে মেয়ের দিকে হাত দিতে লজ্জা করে না। নুসাইবার এমন আক্রমণে একদম থিতিয়ে যান খায়রুল সাহেব। নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে মেয়েদের কাছে নানা রকম সুবিধা আদায় করা খায়রুল সাহেবের অভ্যাস। এত বছরে কেউ এভাবে জ্বলে উঠে নি। বেশির ভাগ মেয়ে বিপদের সময় মাথা নুইয়ে মেনে নিয়েছে তাকে। আর যারা মানে নি তারাও খুব বেশি উচ্চবাচ্চ্য করে নি। সরে গেছে চুপচাপ। তাই নুসাইবার এই আক্রমণ তার জন্য নতুন। নুসাইবার ব্যক্তিত্ব, সৌন্দর্য সব তাকে অনেকদিন ধরে ভাবিয়েছে। তার রাতের বেলা অনেক ফ্যান্টাসির নায়িকা নুসাইবা। তাই আরশাদের এই বিপদে পড়ায় বেশ খুশি হয়েছিলেন। নিজেই তদবির করে এই তদন্ত কমিটির প্রধান হয়েছিলেন নুসাইবা কে কাছে পাবার আশায়। নুসাইবার আরশাদের প্রতি ভালবাসা সবাই জানে। নুসাইবা নিজেও অনেকখানে বলেছে আরশাদের জন্য সব করতে পারে। এই জন্য খায়রুল সাহেব এসেছিলেন তবে এইভাবে নুসাইবা আক্রমণ করবে সেটা ভাবতেই পারেন নি। নুসাইবা বলে শুয়ের বাচ্চা বাসা থেকে বের হয়ে যা। এখনি বের হ, নাইলে কুকুরের মত পিটিয়ে বাসা থেকে বের করব। খায়রুল সাহেব তাড়াতাড়ি উঠে পড়েন। আর বেশি বসলে নুসাইবা আসলেই তাকে মেরে বসবে সেটা তার মনে হয়। তবে বের হবার সময় বলেন, ভাবী আরশাদ কে এইসব বলার দরকার নেই। আর বললেও এখন অবশ্য ক্ষতি নেই। আমি বলব তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিজের পক্ষে নেওয়ার জন্য আপনি এইসব বলছেন। তাই সাবধানে যা বলবেন। রিপোর্ট কিন্তু আমার হাতে।


সেই রাতে আরশাদ ফেরত আসলে নুসাইবা সব খুলে বলে আরশাদ কে। আরশাদ শুনে রেগে যায় কিছুক্ষণ গালাগালি করে খায়রুল সাহেব কে। তারপর অফিসের জামা কাপড় খুলে টিভি ছেড়ে বসে। নুসাইবা বলে তুমি কিছু করবে না। আরশাদ বলে শালার পুত কে কত কিছু বললাম দেখলা না। নুসাইবা বলে আর কিছু করবা না। এই লোকের বিরুদ্ধে কমপ্লেইন করবা না, বা বাসায় গিয়ে শাসায়ে আসবা না। তোমার বউ কে নোংরা প্রস্তাব দিল দেখে। আরশাদ বলে দেখ, এখন আমি ভার্নারেবল পজিশনে আছি। এই সময় তদন্ত কমিটির প্রধানের বিরুদ্ধে কিছু করা ঠিক হবে না। পরে সময় আসলে এই লুইচ্চা লোকটাকে আমি দেখে নিব। নুসাবাইবা অবাক হয়ে যায়। আরশাদ সব সময় হিসেবী সব কাজে এটা নুসাইবা জানে। তাই বলে নিজের বউয়ের সাথে কেউ বাজে প্রস্তাব দিলে সেখানেও চুপ করে থাকবে লাভের আশায় সেটা আশা করে নি।
Like Reply
আর দ্বিতীয় ঘটনাটা, নুসাইবা নিজেও বিশ্বাস করতে পারছে না। মাহফুজের পরামর্শ অনুযায়ী নানা জিনিস ঘাটছিল। বাসায় নানা দরকারী কাগজ একটা আলাদা আলমারীতে রাখে সেখানে কাগজ পত্র ঘেটেছে নুসাইবা যখন আরশাদ বাসায় নেই তখন। বেশ কিছু জমির দলিল আছে ওর নামে। মাহফুজের কথাটা মনে পড়ে। এখন দুর্নীতির মামলায় স্ত্রী বা আত্মীয়স্বজনের নামেও মামলা হয় যদি ঘুষের টাকা তাদের নাম ট্রান্সফার করা হয় ব্যাংকে বা কোন প্রপার্টি কেনা হয় তাদের নামে ঘুষের টাকায়। নুসাইবার মনে হয় কিভাবে ওকে এত বড় একটা বিপদের দিকে ঠেলে দিল আরশাদ। এত ভালবাসার কথা বলে তাহলে কি সেটা মিথ্যা কিন্তু ওর বাচ্চা না হবার পর সমাজের সব সমালোচনা যেভাবে সামলেছে আরশাদ সেটাও ভুলে কিভাবে। নিজের মনের ভিতর দোলাচাল তাই কমে না। এরমাঝে মাহফুজের সাথে প্রতিদিন ফোন কথা হয়। একদিন মাহফুজ লাঞ্চ টাইমে মতিঝিলে গেলে ওর অফিসে দেখা করে আসে। মাহফুজ বলে লোক লাগিয়েছে তবে খবর বের করতে আর সময় লাগবে। কারণ ঐ এপার্টমেন্ট বিল্ডিং এ ৮০টার  উপর ফ্ল্যাট আছে। কোন ফ্ল্যাটে গেছে ওরা জানে না। তার উপর নুসাইবা চায় না আরশাদ জানুক ওর পিছনে খোজ নেওয়া হচ্ছে। তাই মাহফুজের লোক আর ধীরে কাজ করছে। আসলে আরশাদের ব্যাপারটা শেয়ার করার মত কেউ নেই এক মাহফুজ ছাড়া। ছেলেটার সাথে কথা বলে নুসাইবার মনে হয় ছেলেটা অনেক ম্যাচিউর বয়সের তুলনায়। নুসাইবা ভাবে সে নিজেও এত পরিণত ছিল না এই বয়সে। মাহফুজ বলে ফুফু কাগজপত্রের চেয়ে বেশি খবর আপনি পাবেন আংকেলের ফোনে বা ল্যাপটপে। তাই ফোন খুজে কিন্তু কিছু পায় না। কোন সন্দেহজনক ফোন কল নেই, মেসেজ নেই। এরপর একদিন আরশাদ ল্যাপটপ বাসায় ফেলে যায় ভুলে। সেদিন আরশাদ বাসা থেকে বের হয়ে গেলে নুসাইবা ল্যাপটপ চেক করেতে থাকে। ল্যাপটপের পার্সওয়ার্ড খুব ইজি। ওদের  বিয়ের তারিখ। তাই সহজেই খুলে ফেলে। ভিতরে ঢুকে দেখে কিছু আছে কিনা। তেমন কিছুই পায় না। তাই ল্যাপটপ বন্ধ করে অফিস চলে যায়। ফ্রাস্টেটিং সময় যাচ্ছে নুসাইবার। ও জানে আরশাদ ওর থেকে অনেক জিনিস গোপন করছে কিন্তু কোন কিছুর প্রমাণ নেই ওর কাছে। তাই আরেকদিন রাতে আরশাদ যখন ঘুমিয়ে আছে তখন নুসাইবা আরশাদের ল্যাপটপ আবার খুলে। এইবার ব্রাউজারে ঢুকে দেখে চেক করে। মাহফুজ কে এর আগের দিনের ল্যাপটপ চেক করার কথা বলার পর মাহফুজ এই আইডিয়া দিয়েছে। মানুষ অনেক সময় পাসোয়ার্ড মনে রাখার কষ্ট করতে চায় না। তাই ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড সেভ করে রাখে। সেটা দেখার ব্যবস্থা আছে। এই ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড চেক করতে গিয়ে নুসাইবা আবিষ্কার করে একটা নতুন ইমেইল আইডি। যেটার কথা ওর জানা ছিল না। ভিতরে ঢুকতেই আবিষ্কার করে এই ইমেইলের ইনবক্স যেন এক খনি। এতদিন যা খুজতে চাইছিল অনেক কিছুই যেন এর ভিতরে আছে। উত্তরা গেস্ট হাউজের থেকে প্রতিবার গেস্ট হাউজে এন্ট্রি করলে যে টাকাটা দিতে হয় তার রিসিট আছে। একটা পর্ন সাইটের সাবস্ক্রিপশন করা আছে সেটা থেকে নিয়মিত নানা মেইল আসে। নুসাইবা অবাক হয়ে যায়। এতদিন যা খুজছিল সেই প্রমাণ এখানেই আছে এত কাছে। তবে পর্ন সাইট দেখে অবাক হয়। আরশাদ ওর সামনে সব সময় এই ব্যাপারে এমন মনোভাব দেখিয়েছে যাতে মনে হয় পর্ন দেখে পাভার্টরা। আর এখন ইমেইলে দেখে টাকা দিয়ে বিদেশী এক পর্ন সাইতের সাবস্ক্রিপশন কিনে রেখেছে। আরশাদের আর কত দিক ওর অজানা? স্ক্রল করে ইনবক্সে আর  নিচে নামতে থাকে। একটা মেইলের সাবজেক্ট লাইন থেকে আটকে যায়। সাবজেক্টে লেখা লাস্ট নাইট। ভিতরে লেখা লাস্ট নাইট ওয়াজ ফেবুলাস। সি ইউ। এরপর কিস চিহ্ন। অবাক হয়। মেইল সেন্ডারের ইমেইল আইডি ক্লাউড নাইন এট জিমেইল ডট কম। আইডি ধরে সার্চ দিতে বের হয় আর বেশ কিছু মেইল। কোনটাতেই খুব বেশি কথা লেখা নেই। ক্লাউড নাইন কয়েকবার মেইল করেছে যে লাস্ট মিটিং টা দারুন ছিল। পরের মিটিং এর জন্য অপেক্ষা করবে। আর আরশাদ পাঠিয়েছে কবে দেখা করতে যাবে। আরশাদের সময় কতটা ভাল কেটেছে অজানা সেই মেইল সেন্ডারের সাথে। ভয়ংকর একটা দুঃস্বপ্ন যেন সত্যি হতে যাচ্ছে। দাদী বলত মদ্, জুয়া, নারী। এই তিন হলে পুরুষের ধবংসের কারণ। মদ, জুয়ার অভ্যাস আছে আরশাদের। এই মেইল গুলো কি তাহলে সেই তিন নাম্বার জিনসটার ইংগিত।  নারী? আর কিছু মেইল পড়তেই ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয়ে যায় নুসাইবার। গোপন কোন প্রেমিক আরশাদের। একটা ইমেইলে আরশাদ লিখেছে, আই হ্যাভ নেভার টাচ এনি বুবস লাইকস ইউরস। নুসাইবার পৃথিবী যেন আবার অন্ধকার হয়ে আসে। শুক্রবার বিকেলে উত্তরা গেস্ট হাউজে আরশাদ কে ঢুকতে দেখে নুসাইবার যেমন মনে হয়েছিল ওর চেনা পৃথিবী ধবংস হয়ে গেল। এর থেকে বেশি কষ্ট পাওয়া সম্ভব না। ঠিক তেমন ভাবে নুসাইবার মনে  হয় ওর পৃথিবী আবার বদলে গেল কয়েকদিনের মাঝে। তবে এবার নুসাইবার অনুভূতি হয় ভিন্ন। আগেরবার যেমন সিএনজির ভিতর ফ্রিজ হয়ে গিয়েছিল। একটু পর অঝোর ধারায় কাদছিল এবার তা হয় না। এইবার মনে হয় আরশাদ কে এইভাবে ছেড়ে দেওয়া যায় না। হি নিডস সাম টাফ লেসন।




আরশাদ কে কি শাস্তি দেওয়া যায় এটা ভাবতে ভাবতে নুসাইবার ওর বান্ধবী জেনিফারের কথা মনে পড়ে। ওর স্কুল, কলেজের বেস্ট ফ্রেন্ড। ভার্সিটি উঠে দুইজন দুইখানে ভর্তি হল। নুসাইবা ঢাকা ইউনিভার্সিটি আর জেনিফার মেডিক্যালে। এরপর যোগাযোগ একটু কমলেও একদম বন্ধ হয়ে যায় নি। কয়েক মাস পর পর দেখা হত কথা হত। দুই জনেই প্রেম করল যার যার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র কে। দুইজনের সুখের বিয়ে। এর মাঝে বছর দশেক আগে ইংল্যান্ড চলে গেল জেনিফার জামাই  বাচ্চা সহ। উন্নত বিশ্বে থাকার লোভে। এরপর কথা হত খালি ফেসবুক বা হোয়াটসএপে। বছর পাচ ছয় আগে জেনিফার একদিন মনের দুঃখের কথা ওকে খুলে বলেছিল। ওর জামাই ঐখানে এক সাদা মেয়ের সাথে এক্সট্রা মেরেটিয়াল এফেয়ার করে। জামাই জানে না যে জেনিফার জানে এই রিলেশনের কথা। এমনিতে জামাই বাসায় আসলে খুব নরমাল বিহেব করে। খুব ভালবাসা দেখায় কিন্তু বাইরে এই রিলেশন করে। জেনিফার ঘটনাক্রমে জামাই এর মোবাইল চেক করতে গিয়ে এইটা আবিষ্কার করেছে। বেশ কয়েক মাস তখন নিয়মিত নুসাইবার সাথে জেনিফারের কথা হত। নুসাইবা বলেছিল জেনিফার কে সরাসরি ওর জামাই কে কনফ্রন্ট করতে কিন্তু জেনিফার রাজি হয় নি। বলেছিল এখন ব্যাপারটা গোপন আছে যদি আমি সরাসরি চার্জ করি তাহলে আর গোপন থাকবে না। যদি জামাই তখন প্রকাশ্যে রিলেশন চালিয়ে যায় তাহলে সেটা আর অপমানজনক হবে। এখন যেমন আমার সাথে সব সময় খুব ভালবাসা দেখায় সেটা নাও দেখাতে পারে। নুসাইবা বলেছিল তাহলে ডিভোর্স দিয়ে দে। জেনিফার বলেছিল ওদের একটা বাচ্চা আছে তাই সংসার ভাংগতে চায় না। আর তাছাড়া জেনিফারের মনে হচ্ছে ওর জামাই ওকে ভালবাসে। খালি মাঝখানে এই একটা ঝামেলায় আকড়ে গেছে। তখন নুসাইবার মনে হয়েছিল জেনিফারের মত শিক্ষিত স্ট্রং মেয়ে কিভাবে এই ফাদে ধরা পড়ল। তবে কিছুদিন পর জেনিফার জামাই নিয়ে কমপ্লেন করা বন্ধ করে দিয়েছিল। নুসাইবা যখন পরে জিজ্ঞেস করেছিল সব ঠিক হয়ে গেছে নাকি। জেনিফার বলেছিল হ্যা। কিভাবে জিজ্ঞেস করায় জেনিফার বলেছিল একটু চালাকি করতে হয়েছে। নুসাইবা বলে পুরো ব্যাপারটা খুলে বলতে। তখন জেনিফার বলে বাংগালী পুরুষ যতই বাইরে প্রেম করুক তাদের কাছে ঘরের বউ হল আসল সম্পদ। অন্য কেউ এই বউয়ের সাথে প্রেম করবে এটা তারা মেনে নিতে পারবে না নিজে যত প্রেম করুক না কেন বাইরে। তাই যখন তারা দেখবে বউ বাইরে কিছু করছে তখন তারা হয় আগুন হয়ে ফেটে পড়বে না হয় কাকুতি মিনতি করবে। আমি তাই এই রিস্ক টা নিয়েছি। নিজে আরেকটা সিম কিনে সেই সিম দিয়ে মেসেজ দিয়েছি জামাই কে যে দেখ তোমার বউ অন্যখানে প্রেম করছে। আমি অফিসে যাবার সময় অন্য সময় থেকে বেশি সাজগোজ করা শুরু করেছি। তখন জামাই এর মাথা পাগল অবস্থা। সে আমকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞেস করে আমি উত্তর দিই কিন্তু তার মনে সন্দেহ যায় না। আমি সেই কেনা সিম দিয়ে নানা রকম উস্কানি দিই। আজকে দেখলাম তোমার  বউ অমুক খানে এক ছেলের সাথে ঘুরতেছে। এরপর সেদিন যে জামা কাপড় পড়ছি সেগুলোর বর্ণনা দেই। জামাই তো পুরা মাথা খারাপ। আমাকে সরাসরি চার্জ করল। আমি বললাম তুমি যদি আমাকে সন্দেহ কর তাহলে আমার ফোন চেক কর তবে আমিও তোমার ফোন চেক করব। জামাই ফাদে পড়ে গেল। আমি জানি আমার ফোনে কিছু নাই কারণ আমি সত্যি সত্যি কোন প্রেম করি না। তবে জামাই এর ফোনে যে সেই সাদা মেয়ের সাথে চ্যাটিং আছে সেটা আমি জানি। তর্কা তর্কির এক পর্যায়ে জামাই আমার ফোন নিল আমি জামাই এর ফোন নিলাম। নুসাইবা বলল তারপর? জেনিফার বলল যা হবার তাই হল। আমার ফোনে কিছু পেল না। তবে আমি জামাই এর ফোনে ঠিক সেই সাদা মেয়ের সাথে প্রেমালাপ পেলাম। জামাই তখন আমার পায়ে ধরে পারলে। আমি হুমকি দিলাম ছেড়ে যাব নাহলে একটা প্রেম করব। জামাই কেদে কেটে মাফ চাইল। কয়েক দিন ঘুরানোর পর মাফ করলাম। এখন একদম সোজা হয়ে গেছে। কোন উচ্চবাচ্চ্য করে না।


নুসাইবা যত আরশাদ কে কি করা যায় সেটা ভাবে তত জেনিফারের কথা ওর মনে পড়ে। আরশাদ ওকে এত বছর ভালবেসে এসেছে। এখন কি আরশাদ কে হুট করে ডিভোর্স করা ঠিক হবে? নাকি আরশাদ কে একটা চান্স দিবে। তবে এমনি এমনি কি আরশাদ কে মাফ করে দিবে। সেটা কিভাবে হয়। নুসাইবা সারাজীবন যা ভাবে নি তাই করেছে আরশাদ। অন্য একটা মেয়ের সাথে একটা সম্পর্কে আছে এটা নিশ্চিত ও। কে এই ক্লাউড নাইন জানে না নুসাইবা। দেখতে কেমন? বয়স কত? ওর থেকে কম বয়েসী কেউ? আর বেশি সুন্দর। নুসাইবা ভিতরে ভিতরে জেলাসিতে পুড়ে মরে। কে এই মেয়ে। কে আছে ক্লাউড নাইন নামে এই জিমেইল একাউন্টের পিছনে। নুসাইবা যত ভাবে তত যেন রাগতে থাকে। আরশাদের আর সব অপরাধ যেন এখন ওর কাছে তুচ্ছ। ওর সবচেয়ে বড় মাথাব্যাথা এই ক্লাউড নাইন। কে এই মেয়ে জানতেই হবে। একবার ভেবেছিল জেনিফার কে ফোন দিবে। শেয়ার করবে এই ক্লাউড নাইনের ঘটনা টা। তখন ওর মনে পড়ে জেনিফার যখন ওর জামাই এর পরকীয়ার কথা বলছিল তখন নুসাইবা অনেকবার বলেছে আরশাদ কখনো এমন করতে পারে না। ভাগ্যিস আরশাদ কে ও বিয়ে করেছে এইসব। এখন মনে হয় জেনিফার কে সব শেয়ার করতে গেলে যেন নিজের থুতু মাটি থেকে নিজেকেই চেটে খেতে হবে। ছি। পারবে না ও। জেনিফার যখন ওর সাথে ঘটনা শেয়ার করেছিল তখন নুসাইবার মনে হয়েছিল জেনিফারের জামাই গ্রাম থেকে আসা আর জেনিফার ঢাকা শহরের উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। মেডিক্যালে পড়তে গিয়ে সিনিয়রের সাথে প্রেম। নুসাইবা কিছু না বললেও ঠিক মেনে নিতে পারে নি ভিতরে ভিতরে। তাই জেনিফারের জামাই এর ঘটনা শুনে মনে মনে ভেবেছিল ফ্যামিলি স্ট্যাটাস দেখে বিয়ে না করলে এমন ঝামেলায় পড়তে হয়। এখন নিজেকে দেখে মনে হয় ওর ঐ ভাবনাটা কতটা ভুল ছিল। আরশাদ কে তো ফ্যামিলি স্ট্যাটাস দেখে বিয়ে করেছিল। কিন্তু আরশাদ মদ,জুয়া, নারী সব কিছুতেই আছে। নুসাইবা ইমোশনাল রোলার কোস্টারে মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। শেয়ার করতে পারছে না কার সাথে। এমন কি মাহফুজকেও বলতে ইচ্ছা করছে না। কিভাবে বলবে সে মাহফুজ কে। মাহফুজের কাছেও তো কত গর্ব করেছে আরশাদ কে  নিয়ে। তবে দুই তিন দিন নানা কিছু ভাবার পর নুসাইবার মনে হয় মাহফুজ ছাড়া ওর আর কোন উপায় নেই। কারণ ক্লাউড নাইনের পরিচয় বের করতে গেলে আরশাদের পিছনে লোক লাগাতে হবে। ওর পরিচিতদের মধ্যে একমাত্র মাহফুজের সেই ক্ষমতা আছে।


নুসাইবা আরশাদ সবাই যখন যার যার সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত সেই সময়টাতে মাহফুজ নতুন এক সমস্যায় ব্যস্ত। নুসাইবা। মাহফুজ বুঝতে পারে না ওর ঠিক কি হয়েছে। মেয়েরা ওকে পছন্দ করে এবং সেও মেয়ে সংগ পছন্দ করে। সিনথিয়া আসার আগে অনেক মেয়ের সাথে ওর রিলেশন ছিল। কিন্তু এখন এই কয়েক মাসে সাবরিনার প্রতি ওর এট্রাকশন ওকে অবাক করেছিল। ওর মনে হয়েছিল হয়ত সিনথিয়া আর সাবরিনার মাঝে এত মিল থাকায় সিনথিয়ার অভাব ওকে সাবরিনার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তবে নুসাইবা? নুসাইবা সুন্দর তবে অন্য রকম ভাবে সুন্দর। বডি স্ট্রাকচার, গায়ের কালার, ব্যবহার সব মিলিয়ে। তার উপর বয়সটাও একটা ফ্যাক্ট। মাহফুজ এখন পর্যন্ত ওর থেকে বেশি বয়সি কোন মেয়ের প্রতি সেভাবে আকৃষ্ট হয় নি যেভাবে নুসাইবা ওকে টানছে। রাস্তায় হয়ত সুন্দরী কোন মাঝ বয়সী মহিলা কে দেখে তাকিয়েছে, ফিগার মেপেছে চোখে তবে নুসাইবা যেভাবে ওকে টানছে এভাবে টানে নি কেউ। নুসাইবা যে ওকে বিভিন্ন ভাবে অপমান করা বা ফাদে ফেলতে চেয়েছে সেটা যেন ওর জন্য আর একটা বড় এট্রাকশন হিসেবে কাজ করেছে। যেন এই মেয়েকে ওর টেক্কা দিতে হবে। দেখাতে হবে হি নোজ দ্যা গেম। এরপর আরশাদের পত্রিকার রিপোর্টিং এরপর যেন অন্য এক  নুসাইবা কে দেখল মাহফুজ অনেক বেশি ভংগুর। আরশাদ ছিল নুসাইবার সব আশা ভরসার প্রতীক তাই আরশাদ যখন এক এক করে বিশ্বাসের পিলার গুলো ভাংগছে নুসাইবা যেন আর বেশি ভংগুর হয়ে পড়ছে। ইমেজ সচেতনতা আর ইগোর কারণে আর কার কাছে এই ঘটনা শেয়ার করতে পারছে না সেটা মাহফুজ টের পেয়েছে। আর যেহেতু মাহফুজ ঘটনাক্রমে এইসবের সাথে জড়িত তাই একমাত্র মাহফুজের কাছেই যেন মন খুলে কথা বলছে। নুসাইবার এই মন খুলে কথা বলা যেন অন্য আরেকটা দিক মাহফুজ কে দেখাচ্ছে। সিনথিয়া সব সময় বলে ফুফু রাগী হলেও ভাল মানুষ। সেই ভাল মানুষটা যেন এইসব কথোপকথনে আর সামনে আসছে মাহফুজের। মাহফুজ জানে না আসলে নুসাইবার প্রতি ওর এট্রাকশনটা আসলে কেমন। কতটা শারীরিক এই আকর্ষণ, কতটা মানসিক? আর কত নুসাইবার অদম্য ইগো কে জয় করার নেশা? মাহফুজ নিজেও শিওর না।
Like Reply

নুসাইবা মাহফুজ কে দেখা করতে বলেছে। মাহফুজ তাই মতিঝিলে শাপলা চত্বরের উলটো দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মেইন গেটের সামনে অপেক্ষা করছে। বিকাল পাচটা বেজে গেছে। ব্যাংক থেকে লোকজন  নামছে। রাস্তার ধারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকটা স্টাফ বাস দাঁড়ানো। অনেকে সেই বাসে উঠছে। মাহফুজ নিজের দিকে তাকায়। বেশ সচেতন ভাবেই আজকে বেশ সাজগোজ করে এসেছে। ক্লিন সেভড, গায়ে পারফিউম। ভাল একটা পাঞ্জাবি আর স্যান্ডেল পড়েছে। মাহফুজ জানে নুসাইবা ওকে এখানে আরশাদ কে নিয়ে আলোচনা করতে ডেকেছে কিন্তু ওর মনে হয় তাও ভাল কিছু পড়ে আসা দরকার। কেন? সেই প্রশ্নটা নিজেকে আর করছে না মাহফুজ কারণটা সে জানে। নুসাইবা পাচটা দশের দিকে গেট দিয়ে বাইরে আসে। মাহফুজ কে দেখে হাত নাড়ে। নুসাইবা আজকে সালোয়ার কামিজ পড়ে আছে। সারাদিন অফিস শেষে যদিও চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ তাও মাহফুজের মনে হয় এই ক্লান্তির ভিতর যেন এক কমনীয় সৌন্দর্য আছে। তবে মুখে কিছু বলে না। সামনে আসলে সালাম দেয়। নুসাইবা বলে চল কোথাও গিয়ে বসি। মাহফুজ বলে কোথায় যাবেন। মতিরঝিল এলাকায় বিকালের দিকে ভাল বসার মত দোকান বা পার্ক নেই। কিছুক্ষণ ভেবে নুসাইবা বলে বসার তো ঠিক ভাল জায়গা নেই। একটু নিরিবিলি জায়গা দরকার যেখানে বসে একটু শান্তিতে কথা বলা যাবে। মাহফুজ বলে একটু দূরে ফকিরাপুলে পানির ট্যাংকের কাছে একটা চাইনিজ রেস্টুর‍্যান্ট আছে। চ্যাংপাই। ভিতরের পরিবেশ ভাল। সেখানে বসে নিরিবিলি কথা বলা যাবে।


দুইজন রিক্সাতে উঠে। রিক্সা আরামবাগ হয়ে নটরডেম কলেজ কে হাতের বামে রেখে সামনে এগিয়ে যায়। মাহফুজ টের পায় রিক্সার ছোট স্পেসে নুসাইবার হিপের একটা অংশ ওর হিপের সাথে লেগে আছে। সেখান থেকে যেন একটা উষ্ণতা পায় মাহফুজ। পাজামার ভিতর শক্ত হয়ে উঠে কিছু। অফিস ছুটির সময় রাস্তায় ভীড় আছে তবে ঠিক জ্যাম নেই। তাই রিক্সা স্লো এগুচ্ছে। নটরডেম কলেজের একটু সামনে পাচ ছয়টা ছেলে জটলা করে আছে। ল্যাব ক্লাস শেষ করে কলেজের ছেলেরা দিন শেষে বাড়ি যাবে। ওদের পাশ দিয়ে রিক্সা এগুচ্ছে। ছেলে গুলো একটা চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দুই একজন সিগারেট খাচ্ছে। রিক্সা সামনের ভীড়ের জন্য ওদের সামনে এসে একটু দাড়িয়েছে। এই সময় ছেলে গুলোর একজন অন্যজন নুসাইবা কে দেখায়। নুসাইবা ফুটপাতের সাইডে বসা তাই ছেলে গুলো ভাল করে ওকে দেখছে। ওড়না সরে গিয়ে নুসাইবার সাইড বুবস ভাল করে বুঝা যাচ্ছে। তাই ছেলে গুলো একজন অন্যজন কে ইশারা দিয়ে দেখাচ্ছে। দেখ দেখ মাল। নুসাইবা কে এমনিতেও কম বয়সী মনে হয়। চল্লিশ হলেও মনে হয় বয়স সবে ত্রিশ। তার উপর ভাল সুন্দর। এর মধ্যে কাপড়ে ভাল ফ্যাশনেবল। সব মিলিয়ে চোখ আটকে যাবে। তার উপর নুসাইবার উন্নত বক্ষের এক সাইড ওড়না সরে যাওয়ায় ছেলে গুলোর কাছে দৃশ্যমান উচু পর্বতের এক অংশ। এই বয়সে ছেলেরা এমনিতেই সারাদিন হর্নি থাকে। তার উপর সারাদিন নটরডেম কলেজে স্যারদের ক্লাস, ফাদারের তাড়া খাওয়া, বিকালের ক্লান্ত ল্যাব। এর মাঝে চায়ের দোকানে হালকা আড্ডা দেবার সময় নুসাইবার সাইড বুবস এদের কাছে বড় বিনোদন। তাই একজন অন্যজন কে দেখাচ্ছে। এর মধ্যে এক ছেলে নিজেকে সালমান খান ভাবে। সে বেসুরো গলায় গেয়ে উঠল, ওহ জানে জানা, ঢুনে তুনে দিওয়ানা, স্বপনে মে রোজ আয়ে, আ জিন্দেগি মে আনা। অন্য ছেলে গুলো নুসাইবার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে আহহাআআ, আ জিন্দেগি মে আনা। মেয়েদের কখনো  বুঝতে অসুবিধা হয় না কখন তাদের দিকে ছেলেদের দৃষ্টি পড়ছে। তার উপর এই কলেজের ছোকড়ারা এমন ভাবে গান গাচ্ছে যাতে  বুঝাই যাচ্ছে ওকে উদ্দ্যেশ করে গান গাচ্ছে। লাল হয়ে যায় লজ্জায় নুসাইবা। শেষ পর্যন্ত একদল কলেজের ছেলে ওকে টিজ করছে। এই বয়সে? বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিডি নুসাইবা করিম এর দাপটে যেখানে সবাই টটস্থ থাকে সেখানে এই ছেলে গুলো তাকে টিজ করছে। নুসাইবার একবার মনে হয় রিক্সা থেকে নেমে ছেলে গুলো কে থাপ্পড় মেরে আসি। তবে পর মূহুর্তে ভাবে এমনিতেই আরশাদের ঝামেলা নিয়ে জীবন ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছে সেখানে এইসব কলেজের ছোকড়ার সালমান খান সাজার ব্যর্থ প্রয়াস কে বেশি সিরিয়াস ভাবে নেওয়ার কিছু নাই। তবে যতই মন থেকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করুক ছেলে গুলো তখনো সালমান খান হবার চেষ্টায় রত। নুসাইবা খানিকটা বিরক্ত, খানিকটা বিব্রত। মাহফুজ ছেলে গুলোর কাজকর্ম শুরু থেকে দেখছিল। নটেরডেম ঢাকায় ছেলেদের জন্য বেস্ট কলেজ। নরমালি খুব ভাল ছাত্র না হলে এখানে চান্স পায় না কেউ। ছেলেরাও ভাল ডিসিপ্লিনড। তবে সতের আঠার বছর বয়সের ছেলেরা যেমন হয় তেমন এই ছেলেগুলো। এই বয়সে মেয়ে দেখলে একটু মন উতালা হবে। আর যদি নুসাইবার মত সুন্দরী হয় তাহলে আর বেশি উতলা হবে। মাহফুজ ঐ বয়সে বন্ধুদের সাথে থাকলে ঠিক হয়ত সেইম জিনিসটাই করত। তবে এই মুহূর্তে নুসাইবার চোখ মুখ লাল হয়ে যাওয়া দেখে খারাপ লাগে। এমনিতেই এই কয়দিন বেশ খারাপ অবস্থার মাঝে আছে মানসিক ভাবে নুসাইবা। মাহফুজের মনের ভিতর খানিকটা গিল্ট ফিলিংস কাজ করে কারণ এর শুরুটা পত্রিকার রিপোর্টিং দিয়ে আর রিপোর্টিংটা মাহফুজ করিয়েছে। মাহফুজ ভেবেছিল ছেলেটা দুই একবার গান গেয়ে চুপ করে যাবে অথবা সামনের হালকা জ্যাম ছুটে গিয়ে রিক্সা সামনে এগিয়ে যাবে। তবে দুইটার কোন কিছুই হল না। সামনের জ্যাম ছুটল না আর ছেলে গুলোও গান থামাচ্ছে না। মাহফুজের এবার বিরক্ত লাগে। নুসাইবার চেহারায় এক সাথে বিরক্তির ছাপ আর গাল লাল হয়ে আছে। মাহফুজ হঠাত করে ইন্সটিংকট বসে রিক্সা থেকে নেমে দাড়াল। নুসাইবা বা ছেলে গুলো কিছু বুঝার আগে তিন চার পা হেটে ছেলে গুলোর সামনে দাঁড়ায়। যে ছেলেটা গান গাচ্ছিল সেই ছেলেটাকে শক্ত গলায় বলে শোন ছেলে, গান থামাও। ছেলে গুলো একটু থমকে যায়। এরকম করে হঠাত করে কেউ এসে চার্জ করবে বুঝে উঠতে পারে নি। তবে সতের আঠার বছর বয়সী ছেলেদের মাঝে অনেক সময় এক ধরনের সাহসিকতা কাজ করে যেখানে তারা আশে পাশের পরিস্থিতি ঠিক মত না বুঝে সাহস দেখায়। এই ছেলে গুলোও ঠিক সেই কাজটাই করল ঠিক সেই সময়। মাহফুজের প্রথম কথায় চুপ করে গেলেও কয়েক সেকেন্ড বিরতি দিয়ে নিজেরা নিজেদের দিকে তাকিয়ে হাসাহাসি শুরু করল। আর জোরে জোরে বলা শুরু করল হিরো, হিরো। মাহফুজ রিক্সায় ফিরে যাবার জন্য উলটা ঘুরেছিল। তবে এই হিরো, হিরো হল্লা শুনে মেজাজ এইবার চরম খারাপ হল। ছেলে গুলো কিছু বুঝার আগেই উলটা ঘুরেই মূল যে ছেলেটা গান গাচ্ছিল সেই ছেলেটাকে এক রাম থাপ্পড় মারল। ছেলেটা একটা টুলে বসা ছিল থাপ্পড় খেয়ে সেই ছেলেটা মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে গেল। মাহফুজ জানে এইসব ক্ষেত্রে বেশি সময় দিতে হয় না। তাই সংগে সংগে পাশ ফিরে আরেকটা ছেলে কে মাথার চুল ধরে কষে দুইটা থাপ্পড় মারল। মাহফুজ এমনিতেই অনেক লম্বা চওড়া, তাই ওর কাছে দুইটা পরপর থাপ্পড় খেয়ে দাঁড়ানো ছেলেটা মাটিতে বসে পড়ল গাল ধরে। বাকি ছেলে গুলো ওকে কিছু বলার জায়গায় দুই পা পিছিয়ে গেল। এরা নটরডেম কলেজের ভাল ছাত্র টাইপ ছেলে। রাস্তায় মেয়েদের দেখে গান গাওয়া বা দুই একটা কমেন্ট ছুড়ে দেবার সাহস থাকলেও মারামারি করা টাইপ এরা না। তাই মাহফুজের এই আক্রমণাত্মক অগ্নিমূর্তি এদের ভড়কে দিয়েছে। মাহফুজ হয়ত বাকি ছেলে গুলো কেও দুই একটা চড় দিত। তবে এর মাঝে নুসাইবা তাড়াতাড়ি রিক্সা থেকে নেমে ওর হাত ধরে রিক্সার দিকে টেনে নিয়ে গেল। রিক্সায় উঠতে উঠতে সামনে জ্যাম ছুটে গেছে। দুইজনে রিক্সায় বসে পড়ল। কোন কথা ছাড়াই চ্যাংপাই চাইনিজ রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত পৌছে গেল দুইজন।


চাইনিজ রেস্টুরেন্ট গুলো যেমন হয় এটার ভিতরটাও তেমন। এসির বাতাস, আলো আধারি খানিকটা। কাউন্টারের পাশে একটা একুরিয়ামে কিছু মাছ খেলা করছে। ভিতরে বসে অর্ডার দিল ওরা। অংথং আর থাই সুপ। অর্ডারের অপেক্ষা করতে করতে নুসাইবা বলল ছেলে গুলো কে এইভাবে মার না দিলেও পারতে। মাহফুজ জানে কথাটা সত্য। তবে নিজেকে ডিফেন্ড করে বলল, মানা করার পরেও এইভাবে গান গাওয়া ওদের ঠিক হয় নি। মেয়েদের কিভাবে সম্মান করতে হয় সেটা এই বয়সে না শিখলে পরে সব লুচ্চা বদমাশ হবে। নুসাইবার খায়রুল সাহেবের কথা মনে পড়ে। আরশাদ কিভাবে অফিসের সুবিধার জন্য চুপ করে ছিল এত বড় ঘটনার পর। আর মাহফুজ এই অল্প জিনিসে যে রিএকশন দেখিয়েছে সেটা একদিক দিয়ে ভাল লাগছে। ছেলেটা জানে মেয়েদের কিভাবে রেসপেক্ট দিতে হয়। অংথং সুপ আসতে আসতে নুসাইবা কথা শুরু করল। নুয়াইবা জানে এই ব্যাপারে কথা বলা কতটা কঠিন কিন্তু বলতে হবে তাই যতটা নরমালি বলা যায় ততটা নরমালি বলা শুরু করল। ল্যাপটপ সার্চ করে কিভাবে গোপন ইমেইল এড্রেস পেল। সেই এড্রেসে কিভাবে জুয়ার রিসিট পেল সেইসব বলল। পর্ন সাইট পাওয়ার কথা চেপে গেল। ঘুষ, জুয়ার মত বড় জিনিস বলতে পারলেও নিজের জামাই যে পর্ন দেখা পাভার্ট সেটা যেন স্বীকার করতে কষ্ট হচ্ছে ওর। মাহফুজ অবাক হল না। কারণ এইসব জিনিস আগে থেকে জানা ছিল মাহফুজের। এখন এই রিসিট দেখে শতভাগ নিশ্চিত হল নুসাইবা। তবে এর পরের ব্যাপারটা কিভাবে বলবে বুঝে পাচ্ছিল না নুসাইবা। মাহফুজ বুজে নি এরপরেও কিছু আছে। নুসাইবা উসখুস করতে থাকে। মাহফুজ ভাবে হয়ত নুসাইবা ওর কাছে বনানীর আপডেট জানতে চাচ্ছে। মাহফুজ সোলায়মান শেখ কে আর দুইবার নক দিয়েছে। সোলায়মান শেখ একটা হাই প্রোফাইল কেসে এখন ব্যস্ত। বলেছে চার পাচ দিন পর আবার চেক করবে কি খোজ বের করতে পারে। তবে এত বড় এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে কোন স্পেসিফিক এপার্টমেন্ট এই ইনফরমেশন না দিলে খুজে বের করা একটু কঠিন। যখন তার উপর এমন ভাবে খোজ বের করতে হবে যাতে কেউ টের না পায় তার পিছনে খোজ করা হচ্ছে। মাহফুজ তাই নিজ থেকে উদ্যোগ নিয়ে বলতে থাকে যে মাহফুজ খোজের চেষ্টা করছে। তবে যে লোক খোজ বের করে দেয় সেই লোক অন্য একটা কাজে ব্যস্ত। তাই আর সাত আটদিনের আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। মাহফুজ অংথং এ কামড় দিয়ে সুপে চুমুক দেয়। নুসাইবা চামচ দিয়ে সুপ নাড়াচাড়া করে তবে খায় না। মাহফুজ খেয়াল করে। মাহফুজ বলে ফুফু চিন্তা করবেন না। আমার এই লোক দারূন কাজের। ঠিক খোজ বের করবে। নুসাইবা আসলে মাহফুজ কে কিভাবে বলবে ক্লাউড নাইনের কথা সেটা ভাবছে। মাহফুজ কে না বলে আর কাউকে বলার নাই। তাই অন্তত মাহফুজের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছে। ওর মনের ভিতর আরশাদ কে নিয়ে যে প্ল্যানটা ঘুরছে সেটাও মাহফুজ কে দিয়ে যাচাই করিয়ে নিতে চাচ্ছে। মাহফুজ তাই কি বলছে সেদিকে নুসাইবার তেমন খেয়াল নেই। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে ফুফু শরীর ঠিক আছে আপনার। নুসাইবা মাথা নারে। তাহলে কিছু কি হয়েছে। নুসাইবা মাথা নাড়ে। মাহফুজ বুঝে কিছু একটা হয়েছে। মাহফুজ মনে মনে ভাবে আরশাদ যে ভিতরে ভিতরে এত বড় চাল্লু মাল সেটা শুরুর দিকে সে নিজেও বুঝে নি। তাই নুসাইবা যে আর বড় শকে থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। মাহফুজ সুপ শেষ করে ফেলে। নুসাইবা তখনো সুপ নাড়াচাড়া করে যাচ্ছে। চুপচাপ বসে থাকে দুইজন। মাহফুজ কি বলবে ভেবে পায় না। চাইনিজ রেস্টুরেন্টের আলোতে নুসাইবা কে আর সুন্দর লাগছে। মাহফুজ বার বার আড় চোখে তাকাচ্ছে। নিজের কাছে নিজের উদ্ভুত লাগে। ফুফু বলে ডাকছে আবার নুসাইবার সৌন্দর্য দেখছে চুরি করে।


নুসাইবা সব সাহস এক করে বলে, মাহফুজ ওই ইমেইল এড্রেসে আর একটা জিনিস পেয়েছি। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে কি ফুফু। নুসাইবা সুপ নাড়তে থাকে। মাহফুজের দিকে তাকাতে পারে না। যে আরশাদের এত সুনাম করে বেড়িয়েছে সারাজীবন কেমন করে অন্য কাউকে বলবে আরশাদ সম্পর্কে এই কথা। মাহফুজ হবে প্রথম ব্যক্তি যার সাথে ও এই কথা শেয়ার করছে। মাহফুজ কিছু বলে না কারণ জানে নুসাইবা এমনিতে চাপে আছে। নিজে থেকেই বলুক। বলবে বলেই তো ওকে ডেকে এনেছে এখানে। নুসাইবা বলে ঐ ইমেইলে কিছু মেইল আছে। কার একজনের সাথে মেইল চালাচালি করে নিয়মিত আরশাদ। কোন নাম নেই। ইমেইল এড্রেসটার নাম ক্লাউড নাইন জিমেইল ডট কম। মাহফুজ বলে কি আছে সেইসব মেইলে? নুসাইবা কিভাবে বলবে বুঝে না। বলতে চায় কিন্তু মনের ভিতর এতদিনের ইগো যেন আটকে দিচ্ছে সব। মাহফুজ আবার জিজ্ঞেস করে কি আছে সেই সব ইমেইলে? নুসাইবা বলে এই ক্লাউড নাইন সম্ভবত কোন মেয়ে। মাহফুজ কয়েক সেকেন্ড বিরতি নেয়। এতো নতুন টুইস্ট। মাহফুজ নিজেও ভাবে নি। অবশ্য বনানীর সেই বাসা নিয়ে একটু সন্দেহ মাথায় ছিল। তবে এতো নতুন টুইস্ট। জিজ্ঞেস করে, ফুফু আপনি শিওর? নুসাইবা মাথা তুলে তাকায়। কথা বলে না তবে হ্যা সূচক মাথা নাড়ায়। মাহফুজ বলে কিভাবে শিওর হলেন। নুসাইবা ভাবে কিভাবে বলবে সেই কথাটা। আরশাদ যে ক্লাউড নাইন কে লিখেছিল, আই নেভার টাচ এনি বুবস লাইকস ইউরস। কিভাবে বলা সম্ভব সিনথিয়ার বন্ধু কে এই কথা। নুসাইবা তাই বলে আমি তোমাকে বলতে পারব না কিন্তু আমাকে ট্রাস্ট কর আই সি সাম থিং দেট আই কেন নট টেল ইউ। তুমি সিনথিয়ার বন্ধু। মাহফুজ বুঝে তাই আর জোর করে না।


নুসাইবার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। এরকম হিউমিলেশন হওয়া লাগবে কখনো ভাবে নি আগে। ভাতিজির বন্ধুর কাছে নিজের কষ্টের কথা বলতে হচ্ছে। যে স্বামী কে নিয়ে এত গর্ব করে সেই স্বামীর পিছনে স্পাই থ্রিলারের মত সিএনজি করে ঘুরতে হয়। যে স্বামী কে এত ভালবাসে সেই স্বামীর পরকীয়ার কথা মাহফুজের সাথে শেয়ার করতে হচ্ছে। নুসাইবার চোখের পানি পড়ছে। মাহফুজ বুঝে নুসাইবার মনের সংগীন অবস্থা। নুসাইবার মত প্রাউড, ইগোইস্টিক মানুষ যখন ওর সামনে নিজের স্বামীর পরকীয়ার কথা স্বীকার করছে সেটা কঠিন হবার কথা। আরশাদ আসলেই একের পর এক শক দিয়ে চলছে সবাই কে। মাহফুজ হাত বাড়িয়ে নুসাইবার হাত ধরে। দুই হাতের মুঠোয় নুসাইবার হাত নিয়ে বলে ফুফু আমি আছি। সব ঠিক হয়ে যাবে। যদিও বলছে সব ঠিক হয়ে যাবে তবে মাহফুজের মাথায় কোন আইডিয়া নাই কিভাবে আরশাদের এই পরকীয়া কে ডিল করা যায়। তবে মাহফুজের হাতের ভিতর থাকা নুসাইবার নরম হাত যেন আরশাদ কে একটা ধন্যবাদ দেয় গোপনে গোপনে। আরশাদ এত কীর্তি না করলে কি এই নরম হাতের এত কাছে আসতে পারত। মাহফুজ বলে আমাদের এখন কোন একটা প্ল্যান বের করতে হবে। আমি শিউর খুজলে বের হবে বনানীর সেই এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে থাকে আমাদের ক্লাউড নাইন। মাহফুজের কথাটাই এই কয়দিন ভাবছে নুসাইবা। ক্লাউড নাইনের সাথেই কি দেখা করতে যায় আরশাদ বনানীতে। এই কয়দিনে তাই ভেবে ভেবে বের করা প্ল্যানটা আরশাদের সাথে। জেনিফারের কাহিনী প্রথমে শেয়ার করে অবশ্য জেনাফেরে নাম বলে না। বলে আমার এক বান্ধবীর আর তার হাজব্যান্ডের কাহিনী। মাহফুজ মনযোগ দিয়ে কাহিনী শুনে বুঝার চেষ্টা করে নুসাইবা কি প্ল্যানের কথা বলে। নুসাইবা মাহফুজের মুখ দেখে বুঝতে পারে ওর প্ল্যানটা ঠিক করে বুঝে উঠতে পারছে না মাহফুজ। নুসাইবা বলে আমার বান্ধবীর হাজব্যান্ড কেন ফেরত এসেছিল? মাহফুজ একটু ভাবে। তারপর বলে জেলাসি? নুসাইবা বলে হ্যা আমার বান্ধবীও সেটাই ভাবে। তবে আমি এই কয়দিনে অনেকবার ভেবেছি। আমার বান্ধবীর জামাই আর  বান্ধবী কে আমি অনেক  বছর ধরে চিনি। ঠিক সেই ভাবে আরশাদ কে চিনি অনেক বছর। আমাদের মাঝে মিল কি জান? মাহফুজ মাথা নাড়ায়। নুসাইবা বলে আমার বান্ধবীর জামাই বা আরশাদ এরা দুই জন খালি বাইরের মেয়েদের সাথে রিলেশনে জড়ায় নি। এরা দুই জনেই ভিতরে ভিতরে বউ কে অনেক ভালবাসে। মাহফুজ  বুঝে নুসাইবা এখনো আরশাদ কে আকড়ে ধরে থাকতে চাইছে। খালি জেলাসির জন্য কোন জামাই ফিরে আসবে না। সেখানে ভালবাসা থাকতে হবে। আমার বিশ্বাস আরশাদের মধ্যে সেই ভালবাসা আছে। তাই আমি যদি বান্ধবীর মত কিছু করি তাহলে ঠিক আরশাদ আমার কাছে ফিরে আসবে। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে তারপরেও যদি ফিরে না আসে? নুসাইবা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, বলে তাহলে বুঝতে হবে এত দিনের সব ভালবাসা কোথায় মরে পড়ে আছে। আর এইভাবেই সেই চাইনিজ রেস্টুরেন্টে জন্ম নিল আরশাদ কে অজানা ফোন নাম্বার দিয়ে কিভাবে নুসাইবার কাল্পনিক রিলেশনের কথা বলে জেলাস করা যাবে সেই প্ল্যান। নুসাইবার মনে হল এটাই একমাত্র উপায় আরশাদের ভিতরে ওর জন্য থাকা ভালবাসা আর শক্ত করার। আর মাহফুজের সন্দেহ হয় ঠিক কতটা কাজ করবে এই প্ল্যান তবে আর বাধা দেয় না কারণ অন্তত এই প্ল্যান বাস্তবায়ন করার জন্য হলেও নুসাইবার কাছাকাছি থাকার আর সুযোগ পাবে মাহফুজ।
Like Reply

আরশাদের পুরো মাথা খারাপ অবস্থা। একদিনে পত্রিকার রিপোর্টের পর সবাই যেন কেমন কেমন করে তাকায় মনে হয় যেন আরশাদ ঘুষের পাহাড়ের উপর বসে আছে। আরশাদ একটু আকটু সুবিধা নিয়েছে কাজের বিনিময়ে লোকের কাছ থেকে। তাও খুব কম লোকের কাছ থেকে। যাদের কাছ থেকে নিয়েছে এরা বেশির ভাগ  বিগ শট। তাই একবার তারা সাহায্য করলে সেটার পরিমাণ কম হয় না। আর আরশাদ সত্যি সত্যি তার টাকা বেশ ভালভাবে শেয়ার মার্কেটে খাটিয়েছে। এই বিগশটেরা অনেক সময় সরাসরি টাকা দেয় না, দেয় ইনফরমেশন। কোন শেয়ারের দাম পড়বে কারটা বাড়বে। ইনসাইডার ট্রেডিং। কিন্তু নুসাইবা কে কোন ভাবেই বিশ্বাস করাতে পারছে বলে মনে হয় না। অন্যদিকে এই বদলির আদেশ। অনেক চেষ্টা করেও আটকাতে পারে নি। গত সাপ্তাহে দ্বায়িত্ব হ্যান্ডওভার করে রাজশাহীতে এসে নতুন দ্বায়িত্ব নিতে হয়েছে। একটাই ভাল খবর যে তদন্ত কমিটি হয়েছিল ডিপার্টমেন্ট থেকে সেটায় তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ পায় নি। তবে পত্রিকার রিপোর্টের কারণে ডিপার্টমেন্ট ওকে এখন ঢাকা থেকে দূরে রাখতে চাচ্ছে। রাজশাহীতেও সমস্যা। আরশাদ আসলে ঢাকায় বড় হওয়া ছেলে। চাকরির শুরুর এক বছর ঢাকার বাইরে কিছুদিন ছিল। এছাড়া স্কুল, কলেজ ভার্সিটি চাকরি সব মিলিয়ে ঢাকা বা ঢাকার পাশের এক দুইটা জেলাতেই থেকেছে। রাজশাহীতে তাই মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে। ডিপার্টমেন্টের এক রেস্টহাউজ আছে। আপাতত সেখানে উঠেছে। খাওয়াদাওয়াতে সমস্যা। সারাজীবন বাসায় খেয়ে এসেছে। এমন কি ভার্সিটিতে থাকার সময় হলেও থাকে নি। তাই বাইরের এইসব খাবার নিয়মিত খাওয়া ঠিক শরীরে সয় না। নতুন জায়গায় এসে দেখে তার আগে যে ছিল সেই লোক কোন কাজ গুছিয়ে যায় নি। আরশাদ যত ফেভার আদান প্রদান করুক, অফিসের সব কাজ তার সব সময় গুছানো। সেখানে এরকম অগোছালো অফিসে এসে সব ঠিকঠাক করতে কষ্ট হচ্ছে। আবার খেয়াল রাখতে হচ্ছে আগের অফিসারের কোন ভুল যেন ওর ঘাড়ে না চাপে, জানে অনেকে এখনো বসে আছে ওর আর ভুল বের করতে। এর মধ্যে শুরু হয়েছে নতুন এই ইমেইলের উতপাত।  কি ভাবে ওর এই ইমেইল এড্রেস জানল এটা একটা রহস্য। সাধারণত ওর ল্যাপটপ দিয়ে লগিন করে। সাবধানতার জন্য মোবাইল দিয়েও লগিন করে না। মাঝে মধ্যে অফিসের কম্পিউটারে কয়েক দিন লগিন করেছিল এই ইমেইল এড্রেসে। পরে অফিসের কেউ ব্রাউজার থেকে এই ইমেইল এড্রেস বের করেছে কিনা কে জানে। কাউ কে বিশ্বাস নেই। যেভাবে সেই পত্রিকার সাংবাদিক তার খোজ বের করেছে অবিশ্বাস্য। যদিও সেকেন্ড পার্ট ঠিক করে লিখে নাই বাট আলোচনার সময় ওকে যে যে তথ্য দিয়েছে সেগুলা শুনে হা হয়ে গেছে। কিভাবে জানল এই রিপোর্টার। কে এই সোর্স। আরশাদ বিশ লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিল সোর্সের জন্য। সেই সাংবাদিক না করে দিয়েছে। বলেছে, টাকা খেয়ে রিপোর্ট না করতে পারি বা কমিয়ে লিখতে পারি কিন্তু সোর্স কে ধরিয়ে দিব এত খারাপ সাংবাদিক এখনো হই নি। আরশাদের বিশ্বাস যে গ্রুপ বা লোক সেই সাংবাদিকের সোর্স তারাই নিশ্চয় ওর ইমেইল বের করেছে। এই গ্রুপটাই এখন মনে হয় ওর পিছনে লেগেছে। প্রতিদিন এক লাইন বা দুই লাইনের একটা করে মেইল করে। আর কোন কথা না। একদিন আরশাদ মেইলের রিপ্লাই দিয়েছিল, হু আর ইউ। কোন উত্তর আসে নি। ওর শত্রুদের সবাই কে সন্দেহ হচ্ছে আবার মনে হচ্ছে অফিসের ভিতর ওর কাছের কেউ ওর সাথে বিট্রে করছে না তো। এক ধরনের প্যারানয়ার মধ্যে পড়ে গেছে আজকাল। আসলে লাস্ট কয়েক সাপ্তাহের পর আর কাউকে সেভাবে বিশ্বাস করতে পারছে না।


এইসব এক লাইনের প্রতিটা মেইলের সাবজেক্ট লাইন এক। এবাউট ইউর ওয়াইফ। কোন দিন থাকে আজকে তোমার ওয়াইফ দারুণ হলুদ রঙের শাড়ি পড়েছিল। কোন দিন বলা থাকে আজকে তোমার ওয়াইফের সাথে গল্প করে খুব ভাল লাগল। কোন দিন থাকে তোমার ওয়াইফ কিন্তু আজকে তোমার উপর ক্ষেপে আছে। প্রতিদিন এই মেইল গুলো আসে একলাইনে। আর প্রতিটা মেইল শুদ্ধ ইংরেজিতে লেখা। আরকেটা ব্যাপার হল প্রতিটা মেইল আসলে সত্য। মানে যেদিন বলেছে হলুদ শাড়ির কথা নুসাইবা আসলেই হলুদ শাড়ি পড়েছে। যেদিন বলছে ওয়াইফ তোমার উপর ক্ষেপে আছে সেদিন নুসাইবা এর আগের রাতে ওর সাথে ঝগড় করেছে। তাই এইটা আর কনফিজ করে দিচ্ছে ওকে। আবার নুসাইবার আচরণ খুব ভাল ভাবে খেয়াল করছে আরশাদ। কোন অস্বাভাবিক কিছু নেই একটা জিনিস ছাড়া। সেটা হল নুসাইবা কেন এখনো ওর উপর রেগে ফেটে পড়ছে না। সব সময় যেভাবে রেগে গেলে উলটা পালটা বলে বা উলটা পালটা কিছু করে সেরকম কিছু করছে না কেন। একবার মনে হচ্ছে নুসাইবা কি আসলেই এই দোষে দোষী তাই ওকে কিছু বলছে না গিল্ট ফিলিংস থেকে।  নাকি  আসলেই নুসাইবা ওকে বিপদে সংগ দিচ্ছে।  হয়ত সব কিছু শান্ত হলে তখন ওকে ধরবে। এখন এত ঝামেলার মাঝে আর ঝামেলা বাড়াতে চায় না। আরশাদ জানে না সঠিক উত্তর কি। আরশাদ খালি জানে যে ও কনফিউজড। ফ্লোরার সাথে এই ব্যাপারে কথা হয়েছে একদিন। ফ্লোরা বলেছে তুমি তোমার বউকে কেমন ভালবাস? আরশাদ বলেছে এটা তুমি জান। ফ্লোরা বলেছে তাহলে প্রথম ব্যাপার হল যে তোমাকে ইমেইল দিচ্ছে তার উদ্দ্যেশ কি সেটা বের করা। তোমার অফিসের কলিগ বা অন্য কোন শত্রু হলে তাদের উদ্দ্যেশ তোমাকে রাগিয়ে দেওয়া। নুসাইবা আর তোমার মাঝে ভাংগন ধরানো। আর যদি নুসাইবার একটা রিলেশন থাকে তাহলে সেই ছেলে কেন তোমাকে এমন মেইল দিবে? কি লাভ হবে ওর? আরশাদ বলে তাহলে এইসব খবর কিভাবে জানে। ফ্লোরা বলে এগুলা খুব কঠিন কিছু না মাই লাভ। কি শাড়ি পড়ে বেরিয়েছে সেটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলে দেখা যায়। তোমরা ঝগড়া করেছ সেটা হয়ত তোমার বউ কাউকে বলেছে বা লিফটে উঠার সময় ফোনে কার সাথে কথা বলার সময় বলেছে। কেউ যদি তোমার বউ কে ফলো করে তাহলে সহজে সেখান থেকে শুনতে পারে। অথবা একটা চাপা মারছে আন্দাজ করে আর লেগে গেছে। অনেক কিছুই হতে পারে। তাই এইটাতে এত মনযোগ দিও না। আরশাদ বলে আমি এটা না জানতে পারলে শান্ত হতে পারছি না। নুসাইবা কে চার্জ করতে পারছি না কারণ যদি মিথ্যা হয় তাহলে নুসাইবা অবিশ্বাসের জন্য ভয়ংকর ক্ষেপে যাবে। আর যদি সত্যি হয় তাহলে আমি কি করব আমি জানি না। আমি যাই করি না কেন নুসাইবা কে আমি পাগলের মত ভালবাসি। ফ্লোরা তুমি সব জান। ফ্লোরা বলে তা তো জানি। ফ্লোরা বলে তুমি এক কাজ করত পার। আরশাদ বলে কি? ফ্লোরা বলে যে তোমাকে মেইল করছে সে তোমাকে তার সব কার্ড দেখাচ্ছে না। এক লাইনের মেইল করছে। এমন সব র‍্যান্ডম তথ্য দিচ্ছে যেগুলো সহজে যোগা করা যায়। তুমি তাই প্রেস কর। বল যদি সত্যি সত্যি তোমার ওয়াইফের সম্পর্কে এত কথা জানে তাহলে তোমার ওয়াইফের কথিত প্রেমিকের সাথে ওর ছবি দিতে। অথবা যদি নিজেই সেই প্রেমিক হয় তাহলে তোমার ওয়াইফের কিছু ইন্টিমেট ছবি দিতে। আরশাদ আতকে উঠে। বলে ইন্টিমেট ছবি? ফ্লোরা বলে চমকানোর কিছু নেই। আমার বিশ্বাস এ ফালতু লোক। এর কাছে কিছু নেই। ইন্টিমেট ছবি দিতে বলা তার সব কার্ড শো করার জন্য। যদি সত্যি সত্যি প্রেমিক হয় তাহলে দুই একটা ছবি থাকবেই। এইটা অস্বীকার করতে পারবে না যে আজকাল কেউ প্রেমের সময় প্রেমিক কে দুই একটা ইন্টিমেট ছবি দেয় নি। তাই যদি ছবি দিতে না পারে তাহলে ধরে নিতে হবে এটা ভুয়া কোন ব্লাকমেইলার। আরশাদ ভাবে বুদ্ধিটা খারাপ দেয় নি ফ্লোরা। দুধ কা দুধ, পানি কা পানি বের হয়ে যাবে এবার।
Like Reply


নুসাইবা ভাবতে পারে নি ওর প্ল্যান যে এভাবে ব্যাকফায়ার করবে। প্রতিদিন আরশাদ কে একের পর এক মেইল পাঠাচ্ছে। কিন্তু প্রথমে কয়দিন কোন উত্তর পায় নি। জেনিফার বলেছিল কয়েকদিন সময় লাগবে। মাহফুজেরও তাই মতামত। তাই অপেক্ষা করছিল। এরপর একদিন জিজ্ঞেস করেছে সরাসরি কে আপনি। উত্তর দেয় নি নুসাইবা। ভেবেছে জালে ধরা পড়ছে আরশাদ। ওকে বুঝিয়ে দিতে হবে এ কেমন জ্বালা। অন্য কার সাথে প্রিয়তমা থাকলে কেমন করে জ্বলতে থাকে ভিতরটা। তবে এরপর আবার কয়েকদিন চুপচাপ। গতকাল রাতে ওর মেইলের উত্তরে আরশাদ লিখে পাঠিয়েছে। ইফ ইউ নো মাই ওয়াইফ রিয়েলি ক্লোজলি, দেন শো মি প্রুফ। নুসাইবা উত্তর দিয়েছে এই আমি প্রতিদিন তোমার ওয়াইফের সাথে দেখা হলে কি পড়ে আছে, কি করেছে আজকে সেইসব বলি। আরশাদ আবার উত্তর দেয় এটা যে কেউ ফলো করে করতে পারে। নুসাইবা ভাবে আরশাদের কথায় যুক্তি আছে। এভাবে ভেবে দেখে নি আগে। নুসাইবা র‍্যান্ডম কিছু ইনফো দেয় মেইলে। এইসব ইনফো বেশিরভাগ সময় কেউ ওকে ভালভাবে ফলো করলে এমনিতেও পাবে। তাই জিজ্ঞেস করে কি প্রুফ। আরশাদ উত্তর দেয়, শো মি ইউ হ্যাভ সাম ক্লোজ এন্ড ইন্টিমেট পিকচার অফ হার। এইবার যেন নিজেই আটকা পড়ে নুসাইবা। ক্লোজ এন্ড ইন্টিমেট ছবি বলতে কি বুঝাচ্ছে আরশাদ। এই প্রুফ না দিলে সম্ভবত ওকে ভুয়া কোন ব্লাকমেইলার বলে উড়িয়ে দিবে। নিজের জামাই কে কি নিজেই নিজের ইরোটিক ছবি দিতে হবে। নাকি আরশাদ চাইছে নুসাইবা কোন ছেলের সাথে ইন্টিমেট ছবি তুলবে। আরশাদের উপর রাগ হয়। কিভাবে আরশাদ ভাবছে সে এরকম ছবি তুলতে পারে। আবার ওর মনে হয় আরশাদ তো জানে না এই মেইলের পিছনে কে লুকিয়ে আছে। যেমন ও জানে না ক্লাউড নাইনের পরিচয়। আরশাদ হয়ত তাই ভেরিফাই করতে চাইছে। এইবার একটু উত্তেজিত হয়। ঠিকভাবে এটা ডিল করতে পারলে হয়ত অবশেষে আরশাদের দেয়াল ভাংগা যাবে। সরাসরি জানা যাবে আরশাদ কতটা ভালবাসে ওকে। এই কাজে ওর হেল্প দরকার। পরামর্শ দরকার। তাই ওর আজকাল সব সিক্রেট কথার সাথী মাহফুজ কে ফোন দেয়।


মাহফুজ নুসাইবা আজকে একটা কফিশপে বসেছে। নুসাইবা মাহফুজ কে আরশাদের উত্তর টা দেখায়। মাহফুজ বলে আংকেল চালাক আছে। ভাল চাল দিছে। নুসাইবা বলে এখন বল কি করতে হবে। ইন্টিমেট ছবি বলতে আরশাদ কি বুঝাচ্ছে। মাহফুজ বলে ফুফু সবাই যা বুঝায় তাই বুঝিয়েছে আংকেল। নুসাইবাও ব্যাপারটা বুঝে। কিন্তু নিজের স্বামী কে নিজেই কি নুড ছবি পাঠাতে হবে। নাকি ওর এক বান্ধবী আছে যে একের পর এক প্রেম করে বেড়ায়। একদিন বলেছিল প্রেমিকদের কে নাকি মাঝে মাঝে সেজুগুজে ছবি পাঠায়। সেখানে এমন ভাব করে যে কিছু দেখা যায় আর কিছু দেখা যায় না। ছেলেরা নাকি এইসব ছবির জন্য পাগল থাকে। মাহফুজ বলে ফুফু, আংকেল আসলে দেখতে চাচ্ছে কে উনাকে এই মেইল গুলা পাঠাচ্ছে। যে পাঠাচ্ছে সে আসলে আপনার কত ক্লোজ। আসলেই কি জানে আপনাকে নাকি বিভিন্ন সোর্স থেকে খবর বের করে সেগুলো ইউজ করছে। তাই যদি আপনি কোন এমন ছবি প্রডিউস করতে না পারেন যেগুলো দেখে মনে হয় যে এই মেইল গুলো করছে তার সাথে আপনার কোন সম্পর্ক আছে তাহলে এই প্ল্যান খুব একটা কাজ করবে না। নুসাইবাও এটা ভাবছিল। এখন প্রশ্ন হল কিভাবে এই কাজটা করা যায়? কফি খেতে খেতে অনেক গুলো অপশন নিয়ে কথা হল। আজকে যে কফিশপে আছে এখানে ছবি তুলা যায়। সেগুলো পাঠিয়ে প্রমাণ দেওয়া যায় যে নুসাইবা নিয়মিত এই ইমেলের মালিকের সাথে ডেট করে। কিন্তু সেটাও কি আসল প্রমাণ বলা যায়। মাহফুজ এর মাঝে বলে একটা ফটোশুট করা যায়। ধরেন কোন একটা বাসায় গিয়ে। এমন ভাবে ফটোশুট যাতে মনে হয় আপনি আপনার এই ইমাজেনরি প্রেমিকের জন্যই ছবি তুলছেন বা তার সাথে ছবি তুলছেন। নুসাইবা বলে মানে? মাহফুজ বলে ধরেন আপনি কার সাথে রুম ডেটিং এ গেলেন। সেখানে গিয়ে নিজেদের কিছু অন্তরংগ ছবি তুললেন। বেশির ভাগ জিএফ বিএফ আজকাল এইসব করে। নুসাইবা চোখ বড় বড় করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। মাহফুজ বুঝে নুসাইবা অবাক হয়েছে। একে নুসাইবা বেশ ভদ্র শালীন। তার উপর ওদের থেকে বেশ বড়। সেই সময়ে এরকম রুম ডেটের চল ছিল না। মাহফুজ তাই বলে আমি এইসব করি না, তবে সবাই আশেপাশে করে তাই শুনি আরকি।  নুসাইবা কথা বাড়ায় না। কি বলবে বুঝে না। তবে মাহফুজের কথায় যুক্তি আছে। আরশাদের সন্দেহ পুরো দূর করতে গেলে এমন কিছু করা জরুরী। তাই ঠিক হয় প্রথমে কফি হাউসে কিছু ছবি তুলা হবে আজকে। সেগুলো পাঠানো হবে। আরশাদ যদি এতে বিশ্বাস না করে তাহলে পরের স্টেপ হবে। মাহফুজের ফ্ল্যাটে গিয়ে ফটোশুট হবে।


তবে নুসাইবা যেমন আশা করেছিল আরশাদ তাতে পটল না। আরশাদের কাছে কফিশপে তোলা কিছু ছবি পাঠানো হল। এইখানে অবশ্য মাহফুজের একটা কেরামতি ছিল। মাহফুজ এমন ভাবে ছবি গুলো তুলেছে যাতে মনে হচ্ছে দূর থেকে তোলা হয়েছে। নুসাইবা তখন জিজ্ঞেস করায় বলেছিল দূর থেকে তুললে ভাল আসছে ছবি গুলো। আর আপনি তো ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে পোজ দিচ্ছেন তাহলে মনে হবে না যে আড়াল থেকে তোলা ছবি। মাহফুজ আশা করে ছিল আরশাদ দূর থেকে তোলা ব্যাপারটায় আপত্তি দিবে। হল সেটাই। আরশাদ মেইল পাঠাল আপনি যেই হোন আমার মনে হয় আসল কেউ না। আমার সাথে চালবাজি করার চেষ্টা করছেন। আপনি যেমন বলেছিলেন তেমন হলে এর থেকে ভাল কিছু আপনার কাছে থাকার কথা। আসলে আরশাদ এই ছবি গুলো দেখে একটু চমকে গেছে। বুঝাই যাচ্ছে নুসাইবা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। তার মানে লুকিয়ে তুলা ছবি না। আরশাদের তাই মনে হল ব্যাপারটা কত সিরিয়াস সেটা বের করা দরকার। আর একবার যখন বলেছে বিশ্বাস করি না তখন এই ছবি পাঠিয়েছে। তারপর বিশ্বাস করি না বললে হয়ত এই সম্পর্কের গভীরতা পুরো বুঝা যাবে। তবে আরশাদের তখন বুকের ভিতর প্রচন্ড জ্বলন। গত এক মাসের সব ধকলের পর এটাই যেন সবচেয়ে বড় ধাক্কা। নুসাইয়াব কি আসলেই এমন করতে পারে। তাই সেই রাতে রাজশাহী থেকে আরশাদ নুসাইবা কে ফোন দিয়ে অনেক কথা বলে। মিষ্টি ব্যবহার করে। বারবার জানতে চায় আজকে কোথাও ঘুরতে গেছে কিনা। নুসাইবা বুঝে আরশাদের মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। ওর প্ল্যান কাজ করতে শুরু করেছে কিন্তু আবার মেইলে ওকে বলছে বিশ্বাস করি না। তার মানে এখনো কিছু অবিশ্বাস আছে। এটার জন্য তাহলে পরের ধাপে যেতে হবে। মন কে শক্ত করে নুসাইবা। আরশাদ কে জয় করবার জন্য অনেক কিছুই করতে পারে ও।


মাহফুজের সাথে ফোনে কথা হয়। সেদিনের প্ল্যান মত মাহফুজের ফ্ল্যাটে একটা ফটোশুট হবে। এমন ভাবে ছবি শুট করা হবে যাতে মনে হয় এই বাসায় নুসাইবা নিয়মিত যায়। আর এই ইমাজেনেরি প্রেমিকের সাথে বেশ ফ্রি। ছবি গুলো তুলবে মাহফুজ। অর্থাৎ এই ইমাজেনিরি প্রেমিক হয়ে ক্যামেরা চালাবে মাহফুজ। প্ল্যান ঠিক করার সময় উত্তেজনায় খেয়াল না করলেও নুসাইবার মনে হতে থাকে ঠিক করল কি ও এই ব্যাপারটা? যদি কখনো এটা ফাস হয়? আর মাহফুজ সিনথিয়ার প্রেমিক। সেই ছেলে কে কিনা ওর ইমাজেনেরি প্রেমিকের রোলে অভিনয় করতে হবে। অবশ্য আর কার কাছেই বা সাহায্য চাওয়া যেত। কিন্তু এই কম বয়েসি ছেলের সাথে এই অভিনয় অভিনয় খেলতে অস্বস্তি হচ্ছে নুসাইবার। একদিকে মাহফুজ সিনথিয়ার প্রেমিক। আরেকদিকে ওর থেকে প্রায় বছর দশকের ছোট। সারাজীবনে কখনো নুসাইবা ভাবেনি এমন কিছু করতে হবে ওকে। তাই যত সময় ঘনিয়ে আসতে থাকল তত এক ধরনের উত্তেজনা, অস্বস্তি সব মিলিয়ে একটা অজানা অনুভূতি। খানিকটা নার্ভাসনেস। আরশাদ সব সময় ওর যদি কোন বড় প্রেজেন্টেশন বা মিটিং থাকে বা কাজ থাকে যেটা ওকে নার্ভাস করছে সেটাতে যাবার আগে দুই ঢোক ব্রান্ডি খায়। বিদেশ থেকে আনা। আরশাদ সব সময় বলে এগুলো আসলে মদ না। আমার নার্ভাসনেসে ঔষুধ। যদিও মদ কে ঘৃণা করে নুসাইবা কিন্তু ওর মনে হয় এই মূহুর্তে ওর বুঝি এই নার্ভাসনেসের ঔষুধ দরকার। নুসাইবা জানে আরশাদ ওদের স্টাডি রুমের টেবিলের নিচের ড্রয়ারে ব্রান্ডির বোতল রাখে। সেখান থেকে নুসাইবা একটা বের করে। আজকে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে। মাহফুজের বাসায় যাবে একটু পর। তাই দুই ঢোক ব্রান্ডি গলায় ঢালে। ব্রান্ডি ওর খাওয়া অন্য মদ গুলোর মত না। এত কড়া না। নিচে যাবার সময় গলা জ্বলার সেই অনুভূতিটা নেই। তবে খুব মিষ্টি কিছুও না। তবে গলা দিয়ে নামার পাচ মিনিট পর শরীরে একটা উষ্ণতা টের পায়। মনে হয় একটু আগে  নার্ভাসনেসের কারণে হাত পা কাপাকাপি বন্ধ হয়েছে। তাই ব্যাগের ভিতর ব্রান্ডির বোতলটা ভরে নেয়। যদি ফটোশ্যুটের সময় আজকে লাগে।


মাহফুজ কলিংবেল বাজতেই দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়। আজকে সকাল থেকে বাসাটা একদম গোছগাছ করে রেখেছে। বুয়াকে সকাল সকাল ফোন দিয়ে এনে পুরো বাসা পরিষ্কার করিয়েছে। তার পর ঘর মুছিয়েছে। বুয়া জিজ্ঞেস করেছে সিনথিয়া আপা কি আইব নাকি আজকে? মাহফুজ বলে না। এমনি পার্টির কিছু বড় ভাই আসবে তাই রুম গুছিয়ে রাখছি। শুধু শুধু বুয়া কে বেশি ইনফরমেশন দিতে চায় না। দরজা খুলতেই দেখে নুসাইবা দাঁড়িয়ে আছে। একটা সবুজ কালারের শাড়ি আর লাল ব্লাউজ পড়া। চুল খোলা। একটু আগে গোসল করে এসেছে বুঝা যাচ্ছে। চমৎকার লাগছে। অবশ্য কথা ছিল নুসাইবা যেন সুন্দর লাগে সেভাবেই সেজে আসবে যাতে ছবি গুলো ভাল হয়। ব্রান্ডির বদৌলতে নুসাইবা এখন চাংগা। লিকুইড কারেজ। মাহফুজ কে বলে কি খবর? মাহফুজ বলে আমি রেডি। নুসাইবা মাহফুজের চোখের দিকে তাকায় না, বলে ওকে।  আগে থেকে ঠিক করা ছিল প্রথমে লাঞ্চ করা হবে। মাহফুজ তাই বাইরে থেকে আগেই তেহারি আনিয়ে রেখেছিল। স্বাদ তেহারি ঘরের তেহারি দারুণ। নুসাইবা ঘরে ঢুকে হেটে দেখে। ব্যাচেলর ঘর হিসেবে অনেক সাজানো গুছানো। দুইটা বেড, একটা ড্রয়িং আর কিচেন। মেইন বেডরুমে একটা খাট। অন্য রুমে কোন খাট নেই। মাটিতে একটা তোষক পাতা আছে। মাহফুজ বলল মাঝে মধ্যে বন্ধুরা রাতে থাকলে এখানে থাকে। ওদের জন্য এটা। আমি মেইন বেডরুমে থাকি। নুসাইবার মনে হয় মাহফুজ বুঝি একটু  নার্ভাস। ওকেও ব্যাগ থেকে বের করে দিয়ে ব্রান্ডি সাধবে কিনা ভাবে। তবে মাহফুজ ওর ব্যাগ থেকে মদের বোতল বের করলে কি ভাববে সেটা ভেবে আর কিছু বলে না। লাঞ্চ খেতে বসে ডাইনিং টেবিলে। দুই জনে তেমন কোন কথা বলে না। চুপচাপ খায়। বাতাসে একটা টেনশনের গন্ধ। মাহফুজ ভাবছে এত কাছে নুসাইবা। ওর ফটোসেশন করবে ও। কি হবে সেখানে। রুম ডেটের আবহাওয়া আনার জন্য কি খোলামেলা হবে নুসাইবা। আর নুসাইবা ভাবছে এই ছেলেটার সামনে একটু পর পোজ দিতে হবে এমন যাতে মনে হয় প্রেমিকের  উদ্দ্যেশে পোজ দিচ্ছে। কিভাবে সম্ভব। ছবি শুট করার আগে বাথরুমে ঢুকে আর দুই ঢোক ব্রান্ডি খেতে হবে।  


খাওয়া শেষ হয়। দুইজনেই নার্ভাস। কিভাবে শুরু করবে সব। নুসাইবার মনে হয় এভাবে চললে মাহফুজ বুজি লজ্জায় কিছু বলতে পারবে না। আসলে মাহফুজ ভাবছে ও কিছু বললে নুসাইবা না আবার মাইন্ড করে। নুসাইবা তাই আবার একটু লিকুইড কারেজের সাহায্য নেয়। বাথরুমে ঢুকে দুই ঢোক খায় আবার। একটু অপেক্ষা করে। শরীরে আবার নতুন করে উষ্ণ অনুভূতি। আবার যেন সাহস ফিরে পায়। বাথরুম থেকে বের হয়ে মাহফুজ কে বলে কোথায় শুট করব। মাহফুজ দেখে নুসাইবা চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে এসেছে। নার্ভাস বুঝা যাচ্ছে। মাহফুজ বলে আসলে আমাদের এমন ভাবে শুট করতে হবে যাতে মনে হয় আপনি এই ইমাজেনেরি প্রেমিকের বাসায় নিয়মিত আসেন। তাই ড্রয়িংরুম, ডাইনিং রুম, বেডরুম সব জায়গায় ছবি তুলতে হবে। নুসাইবা বলে  হ্যা ঠিক। মাহফুজ ওর ডিএসএলার ক্যামেরা  বের করে। নুসাইবা বলে তুমি প্রফেশনাল ছবি তুল নাকি। মাহফুজ ঠিক প্রফেশনাল ছবি তুলি না কিন্তু ছবি নিয়ে আগ্রহ আছে। তাই মাঝে মধ্যে সুযোগ পেলে ছবি তুলি আরকি। নুসাইবা ভাবে ছেলেটার অনেক গুণ। অনেক কিছুই জানা বাকি। সিনথিয়া ঠিক বলেছিল, মাহফুজের সাথে ভাল করে মিশলে দেখবে একের পর এক চমক। মাহফুজ ক্যামেরার শাটার স্পিড, লাইট সেগুলো ঠিক করার জন্য কয়েকটা শট তুলে এমনি এমনি। আবার চেক করে কেমন হচ্ছে ছবি গুলো। সেই অনুযায়ী ক্যামেরার সেটিং ঠিক করে। এরপর বলে আমি রেডি। নুসাইবা জোরে নিশ্বাস ফেলে।


প্রথম কয়েকটা শট নেওয়া হয় ড্রইং রুমের সোফায়। নুসাইবা শাড়ি পড়ে বসে আছে। কোনটাতে জানালার দিকে তাকানো। কোনটায় ক্যামেরার দিকে তাকানো। খুব নরমাল ছবি। তবে একটা ছবিতে নুসাইবা পত্রিকা হাতে নিয়ে ক্যামেরার দিকে ফ্রন্ট পেজ ঘুরিয়ে রেখেছে। যাতে ছবি জুম ইন করলে বুঝা যায় পত্রিকার তারিখ। এই  বুদ্ধিটা নুসাইবার। সিনেমায় দেখেছে কিডনাপ করলে কিডনাপাররা যাকে কিডনাপ করেছে তার হাতে একটা পত্রিকার রিসেন্ট কপি দিয়ে ছবি তুলায় প্রমাণ করার জন্য যে যাকে কিডনাপ করেছে সে জীবিত। আরশাদ যাতে এই ছবি কখন তুলা এইটা নিয়ে প্রশ্ন করতে না পারে সে জন্য এই ছবি তুলা হল। মাহফুজ মনে মনে বলল গুড আইডিয়া। এরপরের দৃশ্য কি হবে সেটা নিয়ে দুইজন কিছুক্ষণ আলোচনা করল। ঠিক হল নুসাইবা ডাইনিং টেবিলে বসবে। সামনে খাবার থাকবে। এটার কারণ হল  নুসাইবা এই বাসায় নিয়মিত আসে, খাওয়া দাওয়া করে সেটা বুঝানো। যদিও লাঞ্চ হয়ে গেছে তাও ছবি তুলার জন্য নুসাইবা খাবার টেবিলে বসল। সামনে বেচে যাওয়া তেহারির প্যাকেট থেকে কিছুটা তেহারি প্লেটে রাখা হল। কয়েকটা ছবি তুলা হল নুসাইবা আর খাওয়ার প্লেটের। কোন ছবিতে নুসাইবা খাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে, কোনটায় খাবার মুখে তুলছে। দশ মিনিট সময় লাগিয়ে এই ছবি গুলোও তুলা হল। তবে নুসাইবা নার্ভাস। এই ছবি তুলার সিদ্ধান্ত কি ঠিক হল সেটা নিয়ে ওর মনে ডাউট তৈরি হচ্ছে। এইভাবে মাহফুজের ক্যামেরায় ছবি তুলতে অস্বস্তি হচ্ছে। যদিও খুব নরমাল ছবি, খারাপ কিছু নেই কিন্তু এই ছবি গুলোর ইনার মিনিং টা ওকে অস্বস্তিতে ফেলছে। একজন প্রেমিকের ক্যামেরায় ওর ছবি তোলা হচ্ছে। যদিও সেটা সত্যি না, মাহফুজ ওর ইমাজেনেরি প্রেমিকের ভূমিকা নিয়ে ছবি তুলছে। কিন্তু তারপরেও। এইভাবে দশ বছর ছোট একটা ছেলের ক্যামেরায় যে কিনা আবার ওর ভাতিজির প্রেমিকা কাছে এইভাবে ছবি তুলতে নার্ভাস লাগছে। মাহফুজ টের পাচ্ছে নুসাইবা ইজি হতে পারছে না। নুসাইবা এমনিতে খুব ফটোজেনিক। ছবিতে সব সময় সুন্দর লাগে। প্রথম যখন সিনথিয়ার ফেসবুকে নুসাইবার ছবি দেখেছিল এই কথা টা মাথায় এসেছিল। সিনথিয়ার ফুফু দারুণ ফটোজেনিক। তবে আজকে চোখ মুখ শক্ত হয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে জোর করে ছবি তুলানো হচ্ছে। এভাবে ছবি তুললে ছবির আসল উদ্দ্যেশ ব্যহত হবে। মাহফুজ তাই নুসাইবা কে বলে ফুফু আপনি  কি ইজি ফিল করছেন না? এইভাবে ছবি তুললে আংকেল এইবার মেইলে বলবে আপনাকে জোর করে ছবি তুলানো হয়েছে। আপনি আংকেল কে জেলাস করতে চাচ্ছেন। সেখানে দেখাতে হবে আপনি স্বেচ্ছায় খুশিতে আপনার ইমাজেনরি প্রেমিকের সাথে আছেন। আর সেই প্রেমিক ছবি তুলছে আপনাদের বিভিন্ন মুহূর্তের। আপনি যদি ইজি না হন তাহলে এই ছবি তুলে কোন লাভ হবে না। আপনি যদি ইজি ফিল না করেন তাহলে বাদ দেই আমরা আজকে। পরে আরেকদিন কখনো করব যখন আপনি ইজি ফিল করবেন। নুসাইবা ইজি ফিল করছে না এইটা সত্য তবে আরেকদিন আসলে যে ইজি ফিল করবে সেই গ্যারান্টি নেই। তার উপর আজকে অনেক কষ্ট করে সাহস যোগাড় করে এসেছে। নিজ ইচ্ছায় ব্রান্ডি খেয়ে নার্ভাসনেস কাটিয়েছে। আবার আরেকদিন ব্রান্ডি খাওয়ার বা সাহস যোগাড় করার জন্য মন কে তাড়া দেবার ক্ষমতা আর নেই। তাই নুসাইবা বলে নাহ, আজকেই করি। দেরি হয়ে যাচ্ছে। মাহফুজ বলে দেটস রাইট। বেশি দেরি করলে আংকেল ভাববে মেইল যে করছে সে ভুয়া।
Like Reply
মাহফুজ নুসাইবা কে ইজি করার জন্য বলে ফুফু আপনি এটাকে একটা শুটিং ভাবেন। নাটক বা সিনেমার শুটিং। আপনি কখনো অভিনয় করছেন স্কুল বা কলেজে। নুসাইবা একটু হাসে। স্কুল কলেজে বার্ষিক কালচারাল প্রোগ্রামের সময় যেসব ছোট ছোট নাটিকা হয় সেগুলোতে সব সময় নিয়মিত অভিনেত্রী ছিল। অল গার্লস স্কুলে পড়েছে। সেখানে ছেলে নেই। তাই মেয়েরাই ছেলে সাজত। নুসাইবা সুন্দর দেখে নায়িকার পার্ট পেত তবে তার বিপরীতে নায়ক হত স্কুলের অন্য কোন মেয়ে। ছেলে সেজে অভিনয় করত। নুসাইবা পুরাতন কথা মনে করে একটু হেসে উঠে। মাহফুজ বলল ফুফু ঠিক এইভাবে হাসেন। এই হাসিতে ছবি তুললে একদম পারফেক্ট হবে। আংকেল এর পর রেসপন্স না করে পারবে না। আপনি সব ভুলে যান। ভাবেন আপনি অভিনয় করছেন কলেজের কোন ফাংশনে। নুসাইবা ইজি হওয়ার জন্য জোকস করে। বল, আমাদের কিন্তু মেয়েদের কলেজ ছিল। কোন ছেলে ছিল না, মেয়েরাই ছেলে সাজত। মাহফুজ পালটা জোকস করে ধরে নেন আমি একজন মেয়ে। আপনার ক্লাসে পড়ি। আমার নাম মাহফুজা। আমি ছেলে সেজে আপনার সাথে নাটকে অভিনয় করছি। নুসাইবা বলে, ওকে মাহফুজা। মাহফুজ শুনে হেসে উঠে। নুসাইবাও হেসে উঠে। মাহফুজ বলে আমাদের ক্যারেক্টারের একটা নাম থাকা উচিত। যেহেতু অভিনয় করছি। নুসাইবা বলে তাইলে আমার নাম তাহলে নাজনীন। মাহফুজ বলে আমার নাম কি হবে মাহফুজ? নুসাইবা বলে নাহ, রিয়েল নাম নেওয়া যাবে না। তোমার নামের অদ্যাক্ষর দিয়ে কিছু একটা ঠিক কর। মাহফুজ বলে আপনি একটা বলেন। নুসাইবা একটু ভেবে বলে মাহমুদ। আজকের নাটকে আমরা নাজনীন আর মাহমুদ ক্যারেক্টারে অভিনয় করব ঠিকাছে মাহফুজা। মাহফুজ বলে ওকে নাজনীন। নুসাইবা চোখ পাকিয়ে তাকায়। মাহফুজ অবাক হবার ভংগি করে বলে ক্যারেক্টারে থাকতে হবে আমাদের। নুসাইবা মাহফুজের কথার স্টাইলে হেসে দেয়।


এবার আবার শুটিং শুরু হয়। একটু আগে তোলা ছবি গুলো আবার তোলা হচ্ছে। তবে এইবার নুসাইবা বেশ সাবলীল। কারণ নুসাইবার মনে ও এখন অভিনয় করছে। ও এখন নাজনীন, আর মাহফুজ হচ্ছে মাহফুজা যে মাহমুদের চরিত্রে অভিনয় করছে। প্রতিটা ছবি তোলার আগে নুসাইবা বলছে মাহফুজা কি পোজ দিব। মাহফুজ বলে দিচ্ছে এই পোজ দাও নাজনীন। দুইজনেই হেসে গড়িয়ে পড়ছে এইসব কথায়। মাহফুজ সব রিয়েলেস্টিক করার জন্য মেয়েদের ভয়েজে কথা বলছে যখন ও মাহফুজা। হাটছে মেয়েদের মত করে। নুসাইবা বেশ মজা পাচ্ছে এইসবে। অবশ্য নুসাইবা এখন নাজনীন। ড্রইং রুমের শুটিং শেষ হল। এইবার আবার ডাইনিং টেবিলের শুটিং। নুসাইবার মনে হল আবার সে কলেজের দিন গুলোতে ফিরে গেছে। নাটকের রিহার্সেরলের জন্য কলেজের গ্রীন রুমে বান্ধবীদের সেই হাসি ঠাট্টার সময়টা যেন ফিরে এসেছে। কারণ মাহফুজ, মাহফুজা সেজে মেয়েদের অভিনয় করছে। একটা টাওয়েল মাথায় দিয়েছে ওড়নার মত করে। কথা বলছে গলার স্বর চিকন করে মেয়েদের মত করে। একটু দুলে দুলে হাটছে। হেসে গড়িয়ে পড়ছে নুসাইবা। এই এক মাসে এই প্রথম এমন প্রাণখোলা হাসি হাসছে নুসাইবা। হাসতে হাসতে বলল তা মাহফুজা আমদের নাটকের স্ক্রিপ্ট কি। মাহফুজ মেয়েদের গলায় বলল আমাদের স্ক্রিপ্ট হল নাজনীন তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে রুম ডেটে এসেছে। নাজনীন বলল আজকাল কলেজের কালচারাল ফাংশনে রুমডেট নাটক দেখানো হয় নাকি। মাহফুজ বলে এইটা কলেজের মেয়েদের জন প্রাইভেট শো। স্যার ম্যাডামরা থাকবে না। আমরা মেয়েদের দেখিয়ে দিব রুম ডেটে গেলে কি কি এক্সপেক্ট করতে পারে। নুসাইবা হাসে। নুসাইবা এখন নাটকে মজে আছে। এর মাঝে আরেকবার বাথরুমে গিয়ে দুই ঢোক ব্রান্ডি খেয়ে  নিয়েছে। ব্রান্ডির পুরো আছর এখন নুসাইবার উপর। হালকা হাই হয়ে আছে তাই। মাহফুজের যে কোন জোকে  হেসে গড়িয়ে পড়ছে, সাথে পালটা জোক করছে। নুসাইবা তাই মাহফুজের কথার উত্তরে বলে, ইউ ডার্টি গার্ল। মাহফুজ বলে, আই লার্ন ফর্ম দ্যা বেস্ট। এই বলে নুসাইবা কে একটা চোখ টিপ দেয়। আবার হেসে উঠে নাজনীন ওরফে নুসাইবা। ঠিক যেন কলেজের কালচারাল প্রোগ্রামের প্রাকটিসের সময় সবার সাথের সেই আড্ডা।


মাহফুজ মেয়েদের ভয়েসে বলে এখন তাহলে কই ছবি তুলব আমরা নাজনীন। নুসাইবা বলে তুমি বল। মাহফুজ বলে তাহলে এইবার কিছু কিচেনে ছবি তুলা হোক। যেন মনে হয় এই কিচেনে নিয়মিত আস তুমি। নাজনী বলে ওকে ওকে। একটা খালি পাতিলে পানি বসিয়ে আগুন জ্বালানো হয়। নাজনীন ওরফে নুসাইবা সেই পাতিলে পানি নাড়ে আর চুলার আগুনে পানি থেকে ধোয়া উঠে। ছবি এমন ভাবে তুলা হয় যাতে মনে হয় রান্না করছে নুসাইবা আর ধোয়া উঠছে পাতিল থেকে। কয়েকটা ছবি সাইড থেকে। কয়েকটা পিছন থেকে। ছবি তোলার সময় একবার নুসাইবার পাছার উপর জুম ইন করে মাহফুজ। আসলেই বেশ ভাল সাইজের পাছা। তবে কোন মন্তব্য করে না। ক্লিক ক্লিক করে কয়েকটা ছবি তুলে রাখে। পরে রাতের সেশনে কল্পনা করার সময় ভাল কাজে দিবে। এরপর সাইড এংগেল থেকে ছবি তোলার সময় খেয়াল করে নুসাইবার সাইড বুবস দেখা যাচ্ছে। রান্নার পোজ নেবার জন্য শাড়ির আচল কোমড়ে গুজে রাখা। তাই আচল একসাইডে সরে আছে। জুম করলে নাভিটা দেখা যাচ্ছে। নুসাইবার পেটে হালকা একটা চর্বির স্তর। নুসাইবা ঠিক স্লিম না। আবার মোটা না। চল্লিশ বছর বয়সে শরীরে একটু ভারিক্কি আসে সেটা এসেছে। আবার  বাচ্চা হয় নি তাই মোটা হয়ে যায় নি শরীর। হালকা হালকা চর্বি আর মাংস জমেছে শরীরের বিভিন্নখানে। পেটের নাভির কাছের জায়গাটা যেন বেস্ট। জগন্নাথ ভার্সিটির ক্যারিয়ার ক্লাবে নুসাইবা যখন বক্তব্য দিচ্ছিল তখন একটু পিছন থেকে কোনাকুনি নুসাইবার পেট দেখেছিল। অডটরিয়ামের সেই আলো আধারি থেকে এখন দিনের আলোয় আর ভাল করে দেখা যাচ্ছে। তার উপর ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে চোখ রেখে জুম করে যেন আর স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে নুসাইবার নাভী। জুমে যেন নুসাইবার নাভীর পাশে শরীরের রোম গুলোও দেখতে পাচ্ছে। নুসাইবা বলে ছবি ভাল হচ্ছে তো। মাহফুজ বলে হ্যা। তবে মাহফুজ তখন ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে নুসাইবার নাভি দেখতে ব্যস্ত। ক্লিক করে কয়েকটা। এই ছবি গুলো রাতের সেশনে খুব কাজে দিবে। মাহফুজ বলে এমন একটা ভাব কর নাজনীন যাতে মনে হয় তুমি তোমার বিএফের সাথে রান্না করতে করতে হাসছ অথবা সে কোন দুষ্ট কথা বলেছে যাতে তুমি তাকে হাতের নাড়ুনি দিয়ে মারতে যাচ্ছ বাট মুখে লজ্জার হাসি। নুসাইবা সেই ভংগি করে কিন্তু ঠিক হাসিটা আসে না। মাহফুজ বলে নাজনীন ক্যারেক্টারে ফোকাস। লাজুক হাসি, হাত উপরে, হাতের নাড়ুনি আমার দিকে। নুসাইবা সেই ভংগি করে। মাহফুজ দেখে নুসাইবার উচু করা হাতে  নাড়ুনি তবে ক্যামেরায় ওর নজর যায় নুসাইবার বাহুমূলে, ওর বগলে। আজকে একটু গরম পড়েছে। মাহফুজের বাসায় এসি নেই ফ্যান আছে। তবে এই রান্না ঘরে কিছু নেই। তার উপর আজকে নুসাইবা নার্ভাসনেসে বের হবার সময় বগলে ডিউড্রেন্ট লাগাতে ভুলে গেছে। সব মিলিয়ে ওর বগল ঘামছে অনেক। ব্লাউজের বগলের কাছের অংশটা গোল হয়ে ভিজে আছে। লাল ব্লাউজে একটা গোল ভেজা বৃত্ত। মাহফুজের জিহবা শুকিয়ে আসে। মনে হয় বগলের কাছের ভিজা জায়গাটায় একটা চুমু খেতে পারলে ভাল হত। মাহফুজ জুম করে বগলের কয়েকটা ছবি তুলে রাখে। নুসাইবা আরেক হাত তুলে কপালের ঘাম মুছে। সেই বগলেও এক রকম ভিজে আছে। ক্লিক করতে ভুলে না মাহফুজ। তবে নুসাইবার হাসিটা ঠিক মত হচ্ছে না একবারো। মাহফুজ বলে হাসিটা আরেকটু নটি হতে হবে। নুসাইবা বলে তাহলে নটি কোন জোকস বলা লাগবে। নুসাইবা এখন ব্রান্ডির লিকুইড কারেজে ফুল ফর্মে। তাই দুষ্টমি করে। মাহফুজ বুঝে এটাই সুযোগ বলে, নাজনীন তোমার গভীর নাভিতে হারিয়ে যাবে মন। এইবার সত্যি সত্যি মারার জন্য হাত তুলে নুসাইবা, মুখে সেই লাজুক হাসি। পারফেক্ট শট। ক্লিক করে মাহফুজ। নুসাইবা হাতের নাড়ুনি দিয়ে মাহফুজ কে একটা আস্তে করে মার দেয়, বলে মাহফুফুফুফুজ!!!!!!!! মাহফুজ বলে ক্যারেক্টারে থাকবে হবে নাজনীন। দেখ না আমি ক্যারেক্টারে, এই বলে আবার বলে নাজনীন তোমার এই গভীর নাভীতে ঝাপ দিতে মন চাচ্ছে। নুসাইবা এইবার বলে মাহফুজা!!!!!  মাহফুজ বলে হল না, ক্যারেকটারে থাকতে হবে, আমি এখন মাহমুদ। তোমার প্রেমিক। মাহফুজের কথায় লজ্জায় একদম লাল হয়ে যায় নুসাইবা। সত্যি সত্যি হাতের নাড়ুনি দিয়ে দুই ঘা দেয় মাহফুজের পিঠে। মুখে লাজুক হাসি। মাহফুজ মুখে বলে পারফেক্ট পারফেক্ট। এই বলে ক্লিক করে কয়েকবার। এরপর পিঠে হাত ঘষে। অনেক জোরে দিলে তো। নুসাইবা বলে ক্যারেক্টারে আছি তাই জোরে দিয়েছি। এই বলে হাসি দেয় আবার।


রান্না ঘরের ছবি তুলা শেষ হয়। এরপর ঠিক হয় কয়েকটা মডেল ফটোগ্রাফি করা হবে। দেয়ালের সাথে বিভিন্ন পোজে ছবি তুলা হবে। নাজনীন ওরফে নুসাইবা বলে ঈদের সময় যেমন শাড়ির মডেলরা পত্রিকার ফ্যাশন পাতার জন্য দেয়ালে ঠেস দিয়ে আকাশে তাকিয়ে ছবি তুলে তেমন কিছু? মাহফুজ বলে হ্যা তেমন খানিকটা। ঠিক হয় মাস্টার বেডরুমে এই ছবি গুলা তোলা হবে। খাটের উলটো দিকের দেয়াল আকাশী কালারের রঙ করা। সবুজ শাড়ির জন্য ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড। একটা ড্রেসিং টেবিল আছে সেটার সামনেও কিছু ছবি তুলা হবে। নুসাইবা বলে তাহলে ঠোটে একটু লিপস্টিক দিতে হবে। মডেল সাজতে হবে না। মাহফুজ বলে ওকে। নুসাইবার হ্যান্ডব্যাগ তখন ডাইনিং টেবিলে। মাহফুজ বলে আপনি ড্রেসিং টেবিল থেকে চিরুণি দিয়ে চুল আচরান আমি হ্যান্ডব্যাগটা নিয়ে আসছি। নুসাইবা আয়নায় দেখে আর চুল আচড়ায়। নিজেকে নিজের সুন্দর লাগছে। আসলেই কি ও এত সুন্দর? নাকি ব্রান্ডির জন্য। আরশাদ বলে এটা খেলে নাকি মন ফুরাফুরা থাকে, সাহস বাড়ে, সব কিছু সুন্দর লাগে। যদি ও সত্যি সত্যি এত সুন্দর হয় তাহলে আরশাদ কিভাবে সেই ক্লাউড নাইনের পিছনে ঘুরে। মাহফুজ হ্যান্ডব্যাগ  নিয়ে এসেছে। নুসাইবা বলে একটু দাড়াও আমি লিপস্টিক লাগিয়ে নেই। মাহফুজ অনেকটা ইন্সটিংকট বশে নুসাইবার হ্যান্ডব্যাগে হাত দেয়। লাস্ট এমন ব্যাগ হাতে নিয়েছে সিনথিয়ার। ওর ব্যাগে সব সময় মাহফুজ হাত দিত। এতে সিনথিয়া কিছু মনে করত না। তাই অনেকটা অভ্যাস বসে কিছু না ভেবে নুসাইবার হ্যান্ডব্যাগে হাত দেয়। নুসাইবা মাহফুজ কে ওর হ্যান্ডব্যাগে হাত দিতে দেখে ভড়কে যায়। না করে উঠে। কিন্তু তার আগেই মাহফুজের হাত ব্যাগের ভিতরে পৌছে গেছে। ভিতরে সবচেয়ে বড় জিনিস ব্রান্ডির বোতল আপনা আপনি হাতে এসে লেগেছে। এইটা কিসের বোতল এই কৌতুহলে মাহফুজ বোতলটা ব্যাগ থেকে বের করল। নুসাইবা আতংকে দেখতে থাকে মাহফুজের হাতে ব্রান্ডির বোতল। কি ভাববে ছেলেটা ওকে? আরশাদের মত ওকে কি মাতাল জুয়াড়ি ভাববে? লজ্জায় মুখ নিচু করে ফেলে। এইসব ঘটে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভিতর।


মাহফুজ বোতলটা বের করে অবাক হয়ে ভাবে কি এটা। কয়েক সেকেন্ড লাগে। বোতলে লেখা নাম পড়ে। কনিয়াক। দুই একবার এক ব্যবসায়ী পলিটিশিয়ান বড় ভাই খাইয়েছে। দারুণ জিনিস। দারুণ স্মুথ। পেটে পড়লে আলাদা একটা অনুভূতি হয়। দেশে পাওয়া যায় না এইটা। বাইরে থেকে আনাতে হয়। নুসাইবার ব্যাগে এই জিনিস কেন তাই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে নুসাইবার দিকে তাকায়। নুসাইবা তখন লজ্জা, আতংকে মুখ নিচু করে আছে। এই কয়দিনে ওর সম্মান বার বার নামছে আজকে মাহফুজের কাছে মদের বোতল নিয়ে ধরা খাবে বুজে নি। মাহফুজ দেখে নুসাইবার গাল বেয়ে চোখের পানি নামছে। বুঝে ওর  হাতে কনিয়াকের বোতল দেখে বিব্রত হচ্ছে। মাহফুজ তাই পরিস্থিতি হালকা করার জন্য বলে নাজনীন তুমি তো ভাল নটি গার্ল। এত ভাল মেয়ের ভাব ধর আর ভিতরে ভিতরে এই। কথা গুলো যেন নুসাইবার বুকে লাগে। যেন নাজনীন কে না বরং নুসাইবা কে বলছে মাহফুজ। নুসাইবা ছল ছল চোখে মুখ তুলে বলে বিশ্বাস কর মাহফুজ আমি এইসব খাই না। কিন্তু এই এক মাসের প্রেসারের পর আজকের এই ফটোশুট আমি কোনভাবেই নার্ভ শক্ত রাখতে পারছিলাম না। আরশাদ সব সময়  নার্ভাসনেস কাটাতে এটা অল্প একটু খায়। তাই সাথে এনেছি। মাহফুজ বুঝে এখন পরিস্থিতি ঠিক করতে না পারলে সব বিগড়ে যাবে। তাই বলে নাজনীন আমরা এখানে নাটক করছি। আমাদের নাটকের ক্যারেক্টার যা ইচ্ছা করতে পারে। বাস্তবের নাজনীন ভদ্র হতে পারে কিন্তু আমাদের নাটকের নাজনীন নটি। দেখ না বয়ফ্রেন্ডের সাথে ফ্ল্যাটে চলে এসেছে। নুসাইবার চোখে পানি তবে মাহফুজ কি বলছে মনযোগ দিয়ে শুনে। মাহফুজ দেখে নাজনীন কে হালকা করতে হলে আর কিছু করতে হবে। তাই মেয়েদের ভয়েসে বলে দেখ, নাজনীন আমার স্টেজে উঠতে ভয় লাগে। তাই কিছু খেতে হবে যাতে স্টেজে ভয়ে অজ্ঞান না হয়ে যাই। এই বলে কনিয়াকের বোতল খুলে এক সিপ মুখে দেয়। আহ, স্মুথ। তারপর মাতাল হয়ে টলার ভংগি করে বলে, নাজনীন আমি এখন মাতাল, পাড় মাতাল। মাহফুজের আনাড়ি অভিনয়ে হেসে উঠে নুসাইবা। চোখের পানি মুছতে মুছতে ভাবে ছেলেটা ভাল আছে। আর বল, এক সিপে কেউ কখনো মাতাল হয় না মাহফুজা। মাহফুজ আবার মাতালের অভিনয় করে টলতে টলতে নুসাইবার সামনে হাটু গেড়ে বসে। তারপর বলে, তুমি কিভাবে জান নাজনীন? নাজনীন বলে কারণ আজকে আমি এখন পর্যন্ত পাচ সিপ খেয়েছি, আমাকে কি মাতাল মনে হয়। মাহফুজ নুসাইবার থুতনিতে হাত দিয়ে বলে, ওরে আমার নটি গার্ল। আমাকেও টেক্কা দিয়ে দিচ্ছ দেখি। হেসে উঠে দুইজনে। মাহফুজ নুসাইবা হাত ধরে দাড় করায়। বলে এখন আমরা শুটিং এর আগে একটু নেচে নিব। মন ভাল করে নিব, নো কান্না। এই বলে নুসাইবার চোখের কোনার পানি মুছিয়ে দেয় হাত দিয়ে।


মাহফুজ নুসাইবার সাথে ইংরেজি বলরুম ড্যান্স স্টাইলে স্লো ড্যান্স নাচতে থাকে। নুসাইবা বলে গান ছাড়া নাচব আমরা। মাহফুজ বলে মাতালরা গান ছাড়া নাচে আর আমরা আজকে মাতাল। এই বলে কনিয়াকের বোতল থেকে বড় দুইটা সিপ দেয়। নুসাইবার দিকে এগিয়ে দেয়।  নুসাইবা বলে আমি পানি ছাড়া খেতে পারব না। ড্রেসিং টেবিলে থাকা গ্লাস মাহফুজ একটু কনিয়াক আর একটু পানি মিশায়। নুসাইবা বলে খাব? মাহফুজ বলে এখন আমরা মাতাল। খাও, খাও। নুসাইবার মনে হয় এই মূহুর্তে ওর আসলেই লিকুইড কারেজ দরকার, আর মাহফুজের ব্যক্তিত্বে একটা প্রভাব আছে। মানুষ সহজে না করতে পারে না। নুসাইবাও পাড়ল না। কয়েক সিপে গ্লাসের পুরোটুকু শেষ করল। সারা শরীরে যেন গরম একটা অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ছে। মাহফুজ বলল এখন আমরা অফিসিয়ালি মাতাল। আমাদের কোন গানের দরকার নেই নাচবার জন্য। এই বলে নুসাইবার কোমড়ে হাত রাখে। নুসাইবার এক হাত ওর কোমড়ে বসায়। আর অন্য হাতে নুসাইবার হাত ধরে স্লো ড্যান্স স্টাইলে নাচতে থাকে। মাহফুজ সময়টা এনজয় করছে আর নুসাইবার মাথায় তখন ব্রান্ডির প্রভাব তাই কেউ কিছু বলে না। স্লো নাচতে থাকে। পাচ ফুট এগার মাহফুজের সাথে পাচ ফুট দুই নুসাইবা। নুসাইবার মাথা তাই মাহফুজের বুকের উপর। মাহফুজ ওর থুতনি নামিয়ে আনে নুসাইবার মাথার উপর। নুসাইবার মনে হয়ে এমন আন্তরিক ভাবে কতকাল  বুঝি কেউ ওকে জড়িয়ে ধরে না। এই স্পর্শ যেন সকল সম্পর্কের উপরে। এই এক মাস আরশাদের সাথে শীতল যুদ্ধ যে ওর ভিতরে হাহাকার তৈরি করেছে সেটা মাহফুজের বুকে মাথা দিয়ে ভুলতে চায়। আর মাহফুজের থুতনি ওর মাথায় যেন এক অন্য এক বন্ধন স্থাপন করেছে। নুসাইবার মাথার চুলের ঘ্রাণ নেয় মাহফুজ। শ্যাম্পু করা ফ্রেস চুল। মাহফুজের ভিতরেও কনিয়াক একটু একটু কাজ করছে। তাই আবার নাক ভরে ঘ্রাণ নেয়। নুসাইবা টের পায় না বা পেলেও কিছু বলে না কারণ ওর ভিতরেও কনিয়াক কাজ করছে। মাহফুজ মাথা আর নিচে নামায়। উচ্চতার তফাতের জন্য মাহফুজ একটু বডি নিচু করে মাথা নামায়। নুসাইবার ঘাড়ে মাথা গুজে দেয়। ঘাড়ের কাছে নাক ঢলে। কনিয়াক মাহফুজের ভিতরে সাহস বাড়িয়ে দিয়েছে। নুসাইবা টের পায় মাহফুজ ওর ঘাড়ে নাক ঢলছে। নুসাইবা নিজেকে নিজে প্রবোধ দেয় মাহফুজ অভিনয় করছে। মাহমুদের ক্যারেক্টারে অভিনয় করছে আর ও নাজনীনের ক্যারেক্টারে। কনিয়াক নুসাইবার বাস্তব আর কল্পনার ভেদাভেদ ঝাপসা করে দিয়েছে।
Like Reply
এইভাবে কতক্ষণ ওর নাচছে ওদের হিসাব নেই। এক সময় মাহফুজ থামে। বলে চল ফটোশুট করি। মাহফুজ এখন পুরো ক্যারেক্টারে। নুসাইবাও যেন তাই। নুসাইবা ঘোর ঘোর চোখে মাহফুজের দিকে তাকায়। মাহফুজ বুঝে নুসাইবার উপর কনিয়াক ভাল প্রভাব বিস্তার করেছে। নুসাইবার অভ্যাস  নেই এসেবে। মাহফুজ তাই ওর হাত ধরে দেয়ালের সামনে দাড় করায়। ক্যামেরা তুলে নিয়ে ভিউ ফাইন্ডারে তাকায়। নুসাইবা একদম জড়সড়ো হয়ে তাকিয়ে আছে। ব্যক্তিত্ববান, দাপুটে নুসাইবা যেন হাওয়া। মাহফুজ বলে এইভাবে হলে তো হবে না। আমাদের রেগুলার মানুষটা চাই। আমাদের সেই হাসিখুশি, দাপুটে নাজনীন কে চাই। যার প্রেমে হাজার ছেলে পাগল। যার প্রেমে দিওয়ানারা কলেজ ছুটির সময় গেটে দাঁড়িয়ে থাকে। যেই নাজনীন এক চুটকিতে এইসব দিওয়ানাদের উড়িয়ে দেয়। নুসাইবার ঠোটে মুচকি হাসি আসে। কলেজ জীবনে এমন হলে ভাল হত। বাবা মায়ের ভয়ে কলেজ আর বাসা ছাড়া কিছু করা হয় নি। তাই যেন কলেজের সেই অপূর্নতা পূরণ করবার জন্য হাসি দেয়। একটু হালকা হয়ে দাঁড়ায়। মাহফুজ বলে হ্যা, ঠিক এইভাবে কনফিডেন্টলি তাকাও। আমার দিকে। হ্যা এইবার ডান তাকাও। এবার বামে। কোমড়ে হাত দাও তারপর থুতনি উচু করে আকাশের দিকে তাকাও। না, না এইভাবে একদম পুরো আকাশের দিকে না হালকা ৪৫ ডিগ্রি এংগেলে আকাশের দিকে তাকাও। হ্যা হাত কোমড়ে। নাইস, পারফেক্ট। এইবার ছবি আরেকটু রেসি হবে, আরকেটু স্পাইসি। নুসাইবা মাহফুজের দিকে তাকায়। মাহফুজ কি বলছে জানে বাট কিভাবে করবে বুঝে উঠতে পারছে না। এইসব কখনো করে নি নুসাইবা। নুসাইবা বলে কিভাবে করব? মাহফুজ সামনে এগিয়ে যায় বলে। স্টিল হও। এই বলে শাড়ির আচল সরু করে দেয়। এইভাবে কোন ছেলে ওর কাছে এসে কাপড়ে হাত দেয় নি কোনভাবে। নুসাইবা তাই একটু চমকে যায়। তবে মাহফুজের গলায় একটা কর্তৃত্বের ভাব, যেন কি করছে তা জানে। তাই নুসাইবা কিছু বলে না। খুব নরমালি দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ানো এইভাবে কয়টি ছবি তুলে। তারপর বলে পোজ দিতে। নুসাইবা বলে কিভাব বুঝতে পারছে না। মাহফুজ বলে আপনাদের সময় টপ মডেল ছিল কে। নুসাইবা বলে আমাদের সময় তো ঐভাবে ইন্টারনেট, ইন্সটাগ্রাম ছিল না। আমাদের সময় পত্রিকার ফ্যাশন পাতায় ছবি আসত। সেই সময় টপ মডেল ছিল মৌ। সাদিয়া ইসলাম মৌ। অভিনেতা জাহিদ হাসানের বউ। মাহফুজ বলে আমি অত শিশু না চিনি উনাদের। নুসাইবা হাসে। মাহফুজ চিন্তা করে মৌ এর সাথে নুসাইবার খানিকটা মিল আছে। মৌ কখনো রানওয়ে মডেলদের অত শুকনো পাটকাঠি ছিল না। সব সময় শরীরে হালকা মাংস ছিল। কিছুদিন আগে একটা ছবি দেখেছে সেটার সাথে এখনকার নুসাইবার ভাল মিল। শরীরে মৌ এর হালকা মেদ জমেছে। যদিও বয়স পঞ্চাসের কাছাকাছি দেখে বুঝা যায় না। শরীর বাকিয়ে মৌ যে ছবি গুলো কয়েকদিন আগে তার ইন্সটাগ্রামে দিয়েছে সেগুলোতে দুধ আর পাছার শেপ ভাল মত বুঝা যাচ্ছে। নাভীটা গভীর। একদম নুসাইবার মত। ছবি তুলতে তুলতে মাহফুজ বলে আপনার সাথে মৌ এর অনেক মিল আছে, বিশেষ করে এখনকার মৌ এর। নুসাইবা বলে কই দেশের এক সময়ের টপ মডেল মৌ আর কই আমি। কোন এংগেল থেকে তুমি আমাকে মৌ এর দেখলে। মাহফুজ সরাসরি উত্তর দিতে পারে না। কিভাবে মৌ এর মত গভীর নাভি, ভারী দুধ আর ভারী পাছা দেখছে নুসাইবার মধ্যে। নুসাইবা বলে মডেল মৌ মিনিমাম পাচ ফুট সাত ইঞ্চি হবে আর আমি পাচ ফুট দুই ইঞ্চি হব। মাহফুজ বলে হাইট এক না হয়ত তবে তোমাদের বডি স্ট্রাকচার এক রকম। আমার চোখে আমার সামনের নাজনীন আর মডেল মৌ এর ফিগার এক স্ট্রাকচারের। নুসাইবা লজ্জা পায়। প্রসংসা সব মেয়ে পছন্দ করে। তার উপর আরশাদের গোপন প্রেমে আবিষ্কার করার পর থেকে এই কয়দিন সেলফ ডাউটের মাঝ দিয়ে যাচ্ছে নুসাইবা। আসলেই কি ও সুন্দর? ওর ফিগার কি ভাল? আরশাদ কে কি ধরে রাখতে পারবে এই রূপ যৌবন দিয়ে? এই সময় ফিগারের এই প্রসংসা অনেকটা মানসিক বুস্টাপ। ইগোর জন্য ভাল। নুসাইবার তাই আরকটু শুনতে ইচ্ছা করে প্রসংসা। তাই বলে ঠিক করে বল কেমন করে আমি মৌ এর মতন। মাহফুজ  বলে এক শর্তে বলতে পারি। নুসাইবা বলে, কি? মাহফুজ বলে কয়েকদিন আগে মৌ ইন্সটাগ্রামে কিছু ছবি আপলোড দিয়েছে। সেগুলোর মত করে ছবি তুলতে হবে। তার পর সেই ছবি আর মৌ এর ছবি তুলনা করে দেখিয়ে দিব তুমি কিভাবে আমার চোখে মৌ এর মতন। নুসাইবা ভাবে ফেয়ার রিকোয়েস্ট। দেশ সেরা মডেলের সাথে তুলনার জন্য দুই তিনটা ছবি তোলা এমন কোন কঠিন কাজ  না।


মাহফুজ ওর ইন্সটাগ্রাম খুলে। মৌ এর পেজে স্ক্রল করে একটু নিচে নামতেই ছবি গুলো আসে। দেশের একটা ফ্যাশন ম্যাগজিন পুরাতন তারকাদের নিয়ে একটা সংখ্যা করেছে। তাদের কে গ্লামারাস ভাবে দেখাতে চেয়েছে। মৌ সেই ফটোশুটের কিছু ছবি তুলে দিয়েছে। মৌ যেন তার পূর্ণ যৌবনের সেই লাস্যময়ী রূপ নিয়ে হাজির হয়েছে। তবে মাহফুজের মতে এই রূপ পচিশ ত্রিশ বছর আগের সেই মৌ থেকে আর ভাল। কারণ এই মৌ এর শরীর অনেক ভারী। সেই ভার যথা স্থানে উপচে পড়ছে। ঠিক নুসাইবার যেমন হচ্ছে। মাহফুজ তবে এখনো কিছু বলে না। নুসাইবা কে প্রথম ছবি দেখায়। গ্ল্যামারাস মৌ দেয়ালে হেলান দিয়ে এক হাটু হাটু ভাজ করে দুই হাত কোমড়ে দিয়ে একটা দারুণ স্লাটি লুক দিয়েছে। সাধারণ সময়ে হয়ত নুসাইবা কে দিয়ে এই পোজ কখনো দেওয়ানো যেত না। কিন্তু নুসাইবার ভিতরে পড়া কিছুটা কনিয়াক আর কিছুটা আরশাদের কারণে হারানো সেলফ কনফিডেন্স সব মিলিয়ে নুসাইবা রাজি হয়ে যায়। পোজ দেয় সেভাবে মাহফুজ ক্লিক করে। ক্যামেরায় ছবিটা দেখে বলে হল না। নুসাইবা বলে কেন। মাহফুজ ফোনে আবার ছবিটা দেখায় তারপর বলে দাড়াও আমি ঠিক করে দিচ্ছি। এই ছবিতে মৌ শাড়ির আচল সরু করে বুকের মাঝখান দিয়ে নিয়ে গিয়ে কাধে রেখেছে। আচলের দুই সাইড দিয়ে সাইড বুবস দেখা যাচ্ছে। মাহফুজ ওকে দাড় করিয়ে আচল কাধ থেকে নিজ হাতে নিল। আচল তুলে নিতেই সামনে ব্লাউজে আবদ্ধ উদ্ধত বুক যেন উচু হয়ে দাঁড়ায়। কয়েক সেকেন্ড ফ্রিজ হয়ে যায় নুসাইবা মাহফুজের কাজে। এরপর তাড়াতাড়ি দুই হাত ক্রস করে ব্লাউজের সামনে রাখে। মাহফুজ বুঝে এখনি পরিস্থির নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে। তাই বলে নাজনীন তুমি এখন নাটকের শুটিং এ আছ। আমি তোমার নাটকের বয়ফ্রেন্ড। মেয়েদের গলায় বলে মাহফুজ। যেন মাহফুজ নয় ও, বরং মাহফুজা। নুসাইবা একটু ইজি হয়। মাহফুজ নুসাইবার চোখের দিকে তাকিয়ে শাড়ির আচল ঠিক করতে থাকে। নুসাইবা দুই হাতে বুক ঢেকে জিজ্ঞেস করে শাড়ির আচল ঠিক করতে পার তুমি। মাহফুজ বলে আর অনেক কিছু পারি সময় হলে দেখবে নাজনীন। আচল সরু করে দিয়ে ছবির মত করে নুসাইবার কাধে দেয়। ঠিক সেইম ভাবে আচল কাধে নিয়ে বুকের দুই সাইড থেকে কিছুটা উন্মুক্ত করে দাঁড়িয়ে থাকে নুসাইবা। মাহফুজ বলে এইবার এক পা ভাজ করে দেয়ালে রাখ আর দুই হাত কোমড়ে। পা ভাজ করে দেয়াল দিয়ে অন্য পায়ে ভর দিলে পাছাটা সব সময় দেয়ালে গায়ে ভর দেয়, আর বুক শরীরের ভারসাম্য রাখার জন্য সামনে ঝুকে আসে। নুসাইবার বুক সেই কারণে সামনে ঝুকে আসে। নুসাইবা টের পায় না তবে মাহফুজ ক্যামেরায় ঠিক দেখতে পায়। ক্যামেরা দিয়ে তাকাতে তাকাতে মাহফুজ বলে মৌ এর মতন করে লাস্যময়ী হাসি দাও। হ্যা এত হাসি না আরেকটু অল্প। যেন সারা পৃথিবী তোমার পায়ের তলায় আর তুমি বাকি সবাই কে দেখে হাসছ। খানিকটা বিদ্রুপের হাসি। সবাই তোমার রূপ যৌবনের আহবানে তোমার পায়ের তলায় পড়ে আছে। নুসাইবার মনে হয় এভাবে যদি আরশাদ কে পায়ের তলায় আনতে পারত তাহলে ভাল হত। যেন আরশাদের ওর রূপ যৌবনের কামনায় পায়ে পড়েছে আর আরশাদের দিকে ছুড়ে দিচ্ছে বিদ্রুপের হাসি। নুসাইবার এই রূপ যেন ফুটে বের হয়। মাহফুজ ভাবে মৌ এর থেকে অনেক বেশি লাস্যময়ী, অনেক বেশি সেক্সি এই লুক। ড্যাম কেয়ার নুসাইবা। মাহফুজ প্রসংসা করে বলে উঠে দারুণ দারুণ। মৌ ফেল তোমার কাছে। তোমার হাসি, তোমার পোজ যেন বলছে অল দ্যা ওয়ার্ল্ড ইজ এত ইউর ফিট। মাহফুজের প্রসংসাবাণী নুসাইবা কে আর সাহসী করে তুলে। সামনে ঝুকে যেন বুক আর উদ্ধত করে দেখায়। ওর মনে তখন যেন আরশাদ কে দেখাচ্ছে সব। ক্লাউড নাইনের থেকে কত উদ্ধত ওর এই বুক। মাহফুজ যেন মাহফুজের বুকের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে। বিশাল নয় কিন্তু অনেক ভারী দেখেই বুঝা যাচ্ছে। এই বুকের মাঝে মুখ গুজে দিতে পারলে কেমন হত।


এরপরের পোজ ঠিক হল মৌ এর ইন্সটাগ্রাম থেকে। মৌ এই ছবিতে উলটা ঘুরে দাঁড়িয়ে ঘাড় বাকিয়ে পিছন দিকে তাকিয়েছে। ব্লাকলেস ব্লাউজ তাই দারুণ সেক্সি পোজ। কিন্তু নুসাইবার ব্লাউজ রেগুলার ব্লাউজ। নুসাইবা বলে আমার তো ব্লাকলেস ব্লাউজ না মাহফুজ বলে সমস্যা না। আমাদের উদ্দ্যেশ নাজনীনের লাস্যময়ী ছবি তুলা। আমরা আমদের মত করে এই ছবি কে লাস্যময়ী করব। নুসাইবা ইন্সটাগ্রামে দেখা মৌ এর ছবির মত করে পোজ দিয়ে দাঁড়ায়। মৌ এর তুলনায় নুসাইবার চুল অনেক লম্বা। প্রায় কোমড় অবধি আসে। মৌ ছবিতে খোপা বাধা ছিল। মেইনলি ব্লাকলেইস কে ফোকাস করার জন্য। এখানে ব্লাকলেইস ব্লাউজ নেই তাই মাহফুজ একটু ইনভেটিভ হয়। বাম ঘাড়ের পাশে দিয়ে নুসাইবার চুল গুলো কে নামিয়ে আনে। আবার মাহফুজ এত কাছে এসে ওর চুল ধরছে তাতে অস্বস্তি হয় কিন্তু নুসাইবা কিছু বলে না। ওর মাথা তখন একটু ঝিম ঝিম করছে। কনিয়াকের প্রাথমিক উত্তেজনার পর একটা ঝিম ঝিম ভাব আসে সেটা। মাতাল হবার মত অত খায় নি আবার খুব কম না তাই হালকা ঝিম ঝিম মাথায়। মাহফুজ ওর চুল গুলো কোমড় অবধি আনে। কোমড়ের কাছে পেটে হাত রেখে চুল গুলো সোজা করে দিতে থাকে। মাহফুজের হাত কোমড়ে পড়তেই কেপে উঠে নুসাইবা। কি শক্ত হাত। এই পেটে আরশাদ ছাড়া আর কোন পুরুষের হাত পড়ে নি এখনো। আরশাদের তুলনায় অনেক শক্ত একটা হাত, পুরুষালী। নুসাইবা অস্বস্তিতে নড়ে উঠতে থাকে তবে মাহফুজ যেন শক্ত করে পেট ধরে রাখে হাত দিয়ে। নড়তে দেয় না। পেটের উপর এমন শক্ত পরুষালী হাত যেন এক ধরনের সুরসুরি অনুভূতি তৈরি করে পেটে। মাহফুজ শক্ত গলায় বলে নড়ে না নাজনীন ঠিক করে দিচ্ছি চুল। চুল ঠিক করে দিয়ে এখনো পেটে হাত দিয়ে রাখে। নুসাইবার ঘাড় আর কাধের সংযোগ স্থল দেখে। এই জায়গাটায় একটা চুমু খেতে ইচ্ছা করছে মাহফুজের তবে কষ্ট করে নিজে কে আটকায়। পেটে এক হাত রেখে অন্য হাতে ঘাড় আর গলার সংযোগ স্থলে আংগুল বুলায়। নুসাইবার শরীর যেন শির শির করে উঠে। কেমন জানি একটা অনুভূতি। ঘাড়ের লোম গুলো খাড়া হয়ে যায়। নুসাইবা আবার নড়ে উঠতে চায়। মাহফুজ পেটে রাখা হাত দিয়ে নুসাইবা কে স্থির করে। আর অন্য হাতের আংগুল দিয়ে ঘাড়, গলা, আর পিঠে আকিবুকি করতে থাকে। আবেশে চোখ বন্ধ হয়ে আসে নুসাইবার। কত দিন এমন ভাবে আদর করে নি আরশাদ। ওর মনে হয় আরশাদ বুঝি ওর কাধে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মাহফুজ নুসাইবার পেটে রাখা হাতের আংগুল গুলো দিয়ে বিলি কাটতে থাকে পেটে। কাধে এক হাতের আংগুলের আকিবুকি আর পেটে অন্য হাতের আংগুলের বিলি কাটা। সহ্য করতে পারে না নুসাইবা। উফফফফফ। কেপে উঠে সারা শরীর। সারা শরীর জুড়ে এক ধরনের শিরশিরে অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ছে। মাহফুজ পিঠের উপর দিয়ে হাত দিয়ে খেলা করে। ব্লাউজের উপর দিয়ে ব্রায়ের স্ট্রাপ টের পায়। মাহফুজের পুরাতন অভ্যাস মনে পড়ে। ব্রায়ের স্ট্রাপ ধরে একটা টান দিয়ে সামনে আনে ব্লাউজের ভিতর দিয়ে, এরপর ছেড়ে দেয়। ঠাস। চমকে উঠে নুসাইবা। উফফফ। এরকম কেউ আগে কখনো করে নি ওর সাথে। একদম স্থির হয়ে যায় নুসাইবা, কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। নুসাইবা যেন পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চায়। তাই বলে ছবি তুলবে না? মাহফুজ আবার ব্রায়ের স্ট্রাপ টান দিয়ে ছেড়ে দেয়। ঠাস। উফফফফ। মাহফুজ যেন পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রন নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে। মাহফুজ ভারিক্কি গলায় বলে এই তো পাফফেক্ট পোজ। এই বলে আবার ব্রায়ের স্ট্রাপ ধরে টান দেয়। ঠাস। উফফফফ। নুসাইবা যেন ভাষা হারিয়ে ফেলছে। পিঠের চামড়ার উপর একটা সুক্ষ জ্বলুনি কিন্তু তার থেকে বেশি অস্বস্তি আর এর থেকে বেশি বিব্রত নুসাইবা।


মাহফুজ কয়েক পা পিছিয়ে আসে। ছবি তুলে এই পোজে। নুসাইবা ভাবে এখনি কি থামা উচিত। মাহফুজ যেন নুসাইবার মনের কথা টের পায়। তাই নুসাইবা কে কিছু বলতে না দিয়ে বলে নাজনীন আমাদের পরের পোজে যেতে হবে। নুসাইবা কিছু বলার আগে মাহফুজ ইন্সটাগ্রামে মৌ এর পেজ খুলে। তৃতীয় পোজ দিয়েছে মৌ, এক চেয়ারের সাথে। এক পা চেয়ারে দেওয়া। সেই পা চেয়ারের  উপর “দ” আকৃতির হয়ে আছে আর অন্য পা সোজা হয়ে মাটিতে। যে পা “দ” আকৃতির হয়ে চেয়ারে আছে সেই পায়ের হাটুর উপর এক কনুই রাখা, আর সেই হাতের তালুর উপর রাখা থুতনি। অন্য হাত কোমড়ের কাছে রাখা। দারুণ একটা পোজ। পা এইভাবে বাংলা দ এর মত করে চেয়ারে রাখায় পিছনের পাছার শেপ একদম স্পষ্ট হয়ে বুঝা যাচ্ছে। পাছা পিছন দিকে উচু হয়ে আছে। সামনে হাটুতে কনুই রেখে তালুতে থুতনি রাখায় বুক ঝুকে আছে সামনে। মৌ শাড়ি পিন আপ করে রেখেছে তাই আচল পড়ে যায় নি নিচে তবে বুকের শেপ বুঝা যাচ্ছে। তবে সব চেয়ে বেশি বুঝা যাচ্ছে পেট আর পেটের কাছে থাকা হালকা চর্বি। মাহফুজ ছবিটা নুসাইবা কে দেখায়। বলে কাউকে জেলাস করতে চাইলে এর থেকে ভাল ছবি আর হয় না। নুসাইবা মাথা নাড়ে। এই ছবি তুলতে পারলে আর আরশাদ কে দেখালে জেলাস হয়ে জ্বলে পুড়ে যাবে। যাক আরশাদ জেলাস হয়ে জ্বলে পুড়ে যাক। ক্লাউড নাইন তখন ওকে বাচায় কিনা দেখা যাবে। নুসাইবা চারপাশে তাকায়। বেডরুমে কোন চেয়ার নেই। মাহফুজ কে বলে পোজ দিতে গেলে তো চেয়ার লাগবে। মাহফুজ বলে না। ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসার জন্য একটা টুল আছে। মাহফুজ ব্যাচেলর হলেও মাঝে মধ্যে সিনথিয়া আসত তাই ওর জন্য এই ড্রেসিং টেবিল আর টুল কেনা। মাহফুজ টুলটা ড্রেসিং টেবিল এর সামনে সেট করে। বলে এর উপর পা রাখ মৌ এর মতন করে। আর আয়নায় তোমার প্রতিবিম্ব পড়বে। তাই একসাথে দুই নাজনীন কে দেখা যাবে ক্যামেরায়। এটা আর বেশি সেক্সি হবে। এই প্রথম মাহফুজ নুসাইবার সামনে সেক্সি শব্দটা ইউজ করল। নুসাইবার মত ব্যক্তিতবান মহিলার সামনে ভুলেও কেউ এই শব্দ ব্যবহার করতে পারে না। একবার ভার্সিটিতে এক ছেলে বন্ধু নুসাইবা কে বলেছিল তোকে খুব সেক্সি লাগছে আজকে। এরপর যে পরিমাণ কথা শুনতে হয়েছিল সেই ছেলে কে। একমাত্র আরশাদ মাঝে মধ্যে তাদের একান্ত গোপনীয় মূহুর্তে বলে নুসাইবা কে এই কথা। নুসাইবার কনজারভেটিভ পরিবেশে বড় হওয়া মন সেক্সি শব্দটা শুনে চমকে যায়। বলে কি বললে? মাহফুজ বলে বললাম আমাদের নাজনীন মডেল মৌ এর থেকে কোন অংশে কম সেক্সি না। নুসাইবা তোতলাতে থাকে, বলে সেক্সিইইইই???? মাহফুজ জানে নুসাইবা ভাল কনজারভেটিভ। মুখ ফসকে বলে ফেলেছে তবে এখন পিছু হটবার ইচ্ছা নেই মাহফুজের। অনেকবার নুসাইবার কারণে পিছু হটতে হয়েছে। খেলার মাঠের বকা, আফসানার সাথে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। আজকে আর পিছু হটবে না। মাহফুজের পেটেও কিছুটা কনিয়াক গেছে তাই মাহফুজও অনেক বেশি সাহসী এখন। বলে, হ্যা কোন অংশে কম  এই নাজনীন। এই বলে নাজনীনের থুতনিতে হাত দেয়। চোখে চোখ রেখে বলে এমন বড় সুন্দর চোখ কি মৌ এর আছে? মৌ এর সুন্দর অংশ নাক, তোমার নাকটাও মৌ এর সাথে পাল্লা দেবার মত। তোমার চেহারা দেখ, কোন মেকাপ ছাড়াই পত্রিকার ফ্যাশন পেইজের জন্য শুটিং করা মৌ এর চেহারার সাথে পাল্লা দিতে পারবে। কোন মেকাপ নেই, গালে কোন ব্লাশার নেই, কোন মেকাপ আর্টিস্ট এসে গালের দাগ গুলো কে ফাউন্ডেশন দিয়ে মসৃণ করে দিয়ে যায় নি। এই বলে গালে হাত বুলায়। দেখ এর পরেও কেমন মসৃণ এই গাল। মাহফুজের আংগুলের পরশ পেয়ে গালে নুসাইবার চোখ বন্ধ হয়ে আসে। কি আরাম। এমন ভালবেসে কতকাল আরশাদ ওর গালে আদর করে না। মাহফুজ গাল থেকে আংগুলের পরশ বুলাতে বুলাতে গলায় নামে। তোমার গলাটা দেখেছ। কি মসৃণ। আর কাধ আর গলার জয়েন্ট দেখছ। এমন লাস্যময়ী জয়েন্ট কয়টা আছে। গলা আর কাধের জয়েন্টে আংগুল বুলাতে থাকে। শরীরে কাপুনি লাগে নুসাইবার। যেন জ্বর আসছে। শরীরের তাপমাত্রা বাড়ছে যেন। তবে এটা যে অন্য জ্বর সেটা নুসাইবা টের পায়। শরীরের  উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চায় নুসাইবা। তবে মাহফুজ যেন শিকারের গন্ধ পেয়েছে। তাই গলার কাছ থেকে আংগুল নিচে নামাতে থাকে গলা আর বুকের হাড়ের মাঝখানে একটা গর্তের মত থাকে মানুষের। মাহফুজ আংগুল সেখানে নিয়ে আলতো করে খেলতে থাকে। আর বলে যে কেউ তোমাকে দেখলে চোখ প্রথমে কই যাবে জান? নুসাইবা যেন মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছে। উত্তর দিল না নুসাইবা। মাহফুজ আংগুল গলার নিচের সেই গর্ত থেকে আর নিচে নামায়। পিপড়া হাটানোর মত করে আংগুল  নিচে নামতে থাকে। ব্লাউজ যেখানে শুরু ঠিক সেখানে আংগুল নিয়ে থেমে যায় মাহফুজ। শালীন ব্লাউজ। তাই ক্লিভেজ দেখার উপায় নেই। তবে বুকের ঠিক উপরে আংগুল দিয়ে পিপড়া হাটাতে থাকে তবে ব্লাউজের উপর আর আংগুল উঠে না। মাহফুজ বলে মানুষের চোখ আমার আংগুলের মত ঠিক এই জায়গায় এসে আটকে যায়। গলার শ্বাস আটকে যায় নুসাইবার। মাহফুজের কথা গুলো যেন ম্যাজিকের মত কাজ করে নুসাইবার মনে। ক্লাউড নাইনের ঘটনা নিজের উপর, নিজের সৌন্দর্যের উপর একটা ডাউট তৈরি করেছে। আর এখন মাহফুজের কথা গুলো যেন ওকে বলছে দেখ নুসাইবা দেখ, তুমি শেষ হয়ে যাও নি। এখনো বছর দশকের একটা ছেলের মাথা ঘুরিয়ে দিতে পার তুমি। মাহফুজ বলে এইবার তাহলে শটের জন্য রেডি হও।


নুসাইবা মাহফুজের কথায় নতুন মোটিভেশন নিয়ে  পোজ দিয়ে দাঁড়ায়। এক পা টুলের উপর, আরেক পা মাটিতে। টুলের উপর পা বাংলা দ এর মত। আর সেই পায়ের হাটুর উপর কনুই রেখে হাতের তালুতে রেখেছে থুতনি। আর অন্য হাত কোমড়ের কাছে। আয়নায় নুসাইবার প্রতিবিম্ব পড়েছে। দেখে মনে হচ্ছে পাশা পাশি দুই নুসাইবা তাকিয়ে আছে মাহফুজে দিকে। সবুজ শাড়ি, লাল ব্লাউজ। মৌ এর মত শাড়ি পিন আপ করা না  থাকায় আচল শরীরের সাথে সেটে নেই বরং একটু বুক থেকে আলগা হয়ে নিচে ঝুকে আছে। তাই ভাল ভাবে লাল ব্লাউজ আর তাতে আটকানো দুই গোলক বুঝা যাচ্ছে। কোমড়ের কাছে হালকা চর্বি আর নাভী সব মাহফুজের ক্যামেরায় ধরা পড়ছে। মাহফুজ একের পর এক ক্লিক করছে। জোড়া নাজনীন ওরফে নুসাইবা ধরা পড়ছে ক্যামেরায়। বাস্তবের আর আয়নার নাজনীন। জুম করে নুসাইবার লাল ব্লাউজের ছবি তুলল কিছু। দ ভংগিতে কোমড় বাকানোয় নুসাইবার পাছা বাইরে বের হয়ে আছে সেটাকেও জুম করে ছবি তুলল কিছু। এর মাঝে একের পর এক প্রসংসা বাণী ছুড়ে যাচ্ছে। মারভেলাস। ফ্যান্টাসটিক। দারুণ। চমৎকার। কেয়ামত একদম কেয়ামত লাগছে। নুসাইবা একের পর এক প্রসংসা বাণীতে ফুলছে যেন। আর পেটের ভিতর থাকা কনিয়াক যেন মাথার ঝিম ঝিমটা আর বাড়াচ্ছে। নুসাইবার মনে হয় এই ছবি গুলো দেখলে আরশাদ টের পাবে কি জিনিস হেলায় মাটিতে ঠেলছে সে। ক্লাউড নাইন কি আসলেই অনেক সুন্দর? নাহলে ওকে ফেলে আরশাদ কেন ক্লাউড নাইনের কাছে যায়? ক্লাউড নাইন এর কি আছে যা আমার নেই? কি দেয় ক্লাউড নাইন আরশাদ কে? এইসব ছবি দেখলে কি ক্লাউড নাইন হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরবে?
Like Reply
নুসাইবার এই অদম্য পোজ দেখে যেন মাহফুজ ঘোরে চলে যায়। মাহফুজ বলে আরেকটু পোজটা ঠিক করতে  হবে। একদম সেক্সি পোজ হতে হবে। যাতে যাকে পাঠাব এই ছবি সে যেন একদম জ্বলে উঠে বারুদের মত। ছবি থেকে যেন আগুন লেগে যায়। নুসাইবা দেখে মাহফুজ হাটু গেড়ে ছবি তুলছিল সেখান থেকে উঠে হেটে হেটে ওর কাছে আসে। নুসাইবা সোজা হতে যায়। মাহফুজ বলে উহু, এইভাবে থাক নাজনীন। একদম ক্যারেক্টারের মাঝে থাক। এই বলে ঘাড়ে হাত বুলায়। যেন বন্য কোন ঘোড়া কে পোষ মানাচ্ছে মাহফুজ। এইভাবে ঘাড় থেকে পিঠ বরাবর হাত বুলায়। হাতের ক্যামেরাটা নামিয়ে ড্রেসিং টেবিলের উপর রাখে। এক হাত দিয়ে তখনো ঘাড় থেকে পিঠ বরাবর হাত বুলিয়ে যাচ্ছে মাহফুজ। অনেক দিন পর অদম্য বন্য ঘোড়া কে যেন প্রথমবারের মত পোষ মানানোর কাছাকাছি এনেছে। নুসাইবা বলে এইভাবে কি হবে মাহফুজ? মাহফুজ যেন চমকে যায়। অনেক ক্ষণ পর ওর আসল নাম বলল নুসাইবা। তবে মাহফুজ জানে কিভাবে পরিস্থিতি কন্ট্রোলে রাখতে হয়। নুসাইবা কিছু বুঝার আগেই ওর শাড়িতে আবৃত পাছার উপর একটা হাত সজোরে নামায় মাহফুজ। ঠাস। সিলি গার্ল। উফফফফ করে উঠে নুসাইবা। এটা কি হল? বুঝে উঠতে পারে না। পোজ দেওয়া অবস্থা থেকে ঘাড় ঘুরিয়ে উপরে তাকায়। পেটের ভিতর থাকা কনিয়াক যেন বাস্তব আর কল্পনার তফাত কমিয়ে দিয়েছে। এটা কি আসলেই ঘটছে নাকি স্বপ্ন দেখছে নুসাইবা? মাহফুজ ওর কন্ট্রোল আর দৃড় করতে চায় যেন। আবার সপাটে নেমে আসে হাত নুসাইবার পাছার উপর। শাড়ি, পেটিকোট, প্যান্টি সব কিছুর স্তর ভেদ করে মাহফুজের শক্ত হাতের ছাপ যেন নুসাইবার পাছার নরম চামড়ায় পরে। আউউউউউউ। উফফফ। মাহফুজ বলে এই তো গুড গার্ল। ঠিক এইভাবে। এই বলে পোজ ঠিক করতে থাকে। এক হাত পেটে। নাভীর উপর। আরেক হাত ঠিক পাছার উপর। মাহফুজের শক্তিশালী হাত পেটে আর পাছার উপর ঘুরছে। পজিশন ঠিক করার জন্য মাহফুজের শক্তিশালী হাত দিয়ে পেটের নিচ থেকে উপরে চাপ দিয়ে বডির পজিশন ঠিক করতে থাকে। আর পাছার উপর থাকা হাতটা যেন নৌকার মাস্তুলের মত করে পাছার পজিশন ঠিক করে বডির মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রন করে। নুসাইবা ঘোর ঘোর চোখে আয়নায় তাকায়। দেখে ওর পিছনে মাহফুজ নাকি মাহমুদ? এটা কি নাটক নাকি বাস্তব? ওর এসের উপর হাত বুলাচ্ছে। আরশাদ ছাড়া আর কেউ এমন করে এই এসে হাত বুলায় নি। এটা কি আরশাদ? নুসাইবার চিন্তা গুলিয়ে যায়। পেটের কনিয়াক কি এখন মাথায় চড়ে বসেছে?

নুসাইবা ভাবে এত গরম লাগছে কেন? মনে হচ্ছে গা থেকে সব কাপড় খুলে ফেলি। বুকের শ্বাস প্রশ্বাস এত বেড়ে গেছে কেন? গলা শুকিয়ে গেছে। কতক্ষণ পানি খাই না। মাহফুজ তখন ঘোরে। ওর ভিতর তখন কেউ যেন কানে কানে বলছে খেলার মাঠের সেই অপমানের প্রতিশোধ নেবার এই তো সময়। মাহফুজ জানে এটা সঠিক সময় নয়। একটু বেশি কিছু করলে গড়বড় হয়ে যেতে পারে। নিয়ন্ত্রণ করতে চায় নিজেকে। কিন্তু কানের ভিতর ফিস ফিস করা কণ্ঠস্বর যেন একটু একটু করে জয়ী হচ্ছে। মাহফুজ হাত বুলিয়ে যাচ্ছে নুসাইবার পাছায় আর পেটে। শরীর নামিয়ে নুসাইবার পিঠে একটা চুমু খায়। ব্লাউজ আর পেটিকোটের মাঝে শরীরের যে খালি জায়গা সেখানে মাহফুজ একের পর এক চুমু খায়। কাপছে নুসাইবা। অনেক দিন আরশাদ ওকে আদর করে না। আরশাদ কি ভুলে গেছে নুসাইবার শরীরের একটা দাবি আছে। মাহফুজের প্রতিটা চুমু নুসাইবার শরীরে ইলেক্ট্রিক শকের মত লাগে। কাপছে শরীর। জাগছে শরীর। নুসাইবার যেন মনে হয় ওর আর নিয়ন্ত্রণ নেই শরীরের উপর। নিজের ইচ্ছায় জেগে উঠছে শরীরের ভিতরের দৈত্য। মাহফুজ পিঠের দিক থেকে চুমু খেতে খেতে ঘাড়ের কাছে যায়। ঘাড়ের কাছে প্রথম চুমু খেতেই প্রচন্ড কেপে উঠে নুসাইবা। সরে যেতে চায়। পেটের কাছে আর পাছার উপর থাকা হাত দিয়ে স্থির করে রাখে নুসাইবা কে। ঘাড় আর গলার সংযোগস্থল নুসাইবার খুব সেনসেটিভ জায়গা। মাহফুজ সেখানেই চুমু খায়। অসহ্য লাগে নুসাইবার। আর পারে না। কাপছে শরীর রীতিমত। আয়নায় দেখে নিজেকে। টুলের উপর ঝুকে আছে এখন। এক পা টুলে আরেক পা মাটিতে তবে দুই হাত ড্রেসিং টেবিলের উপর। কখন হাত ঐখানে গেছে বলতে পারবে না। ভারসাম্য রক্ষা করছে। চুল গুলো চারদিকে ছড়িয়ে গেছে পাগলীর মত। চোখ ঘোলাটে। মুখ অল্প হা। জোরে জোরে শ্বাস ফেলছে। কে এটা আয়নায়? অবাক হয়ে যায় নুসাইবা। এটা কি ও? নাকি নাজনীন? ওর মাথার ভিতর কেউ যেন বলে এটা ক্লাউড নাইনের প্রতিদ্বন্দ্বী। ক্লাউড নাইন জানে না কি ঘুমন্ত দৈত্য কে জাগিয়ে তুলছে সে। আরশাদ তুমি জান না কি মিস করছ তুমি। মাহফুজ জিহবা দিয়ে ঘাড় আর গলার সংযোগস্থল চেটে দেয়। আহহহহহহহ। কিভাবে জানে ছেলেটা ঠিক কি করতে হবে। ও কি এখন নাজনীন নাকি নুসাইবা? মাথা এমন ঝিম ঝিম লাগছে কেন। এত গরম কেন চারপাশে।


মাহফুজের ভিতর একজন বলছে খেয়ে ফেল একে। শোধ নাও সব কিছুর। আবার আরেকজন বলছে এভাবে কিছু করা বিপদজনক। মাহফুজের মনে হয় ও অটো পাইলটে চলে গেছে। ঘাড় থেকে কান পর্যন্ত লম্বা করে চেটে দেয়। আউউউউউ। নুসাইবার শব্দ যেন মাহফুজ কে আর আগ্রাসী করে তুলে। মাহফুজ পাছার উপর থাকা হাতটা তুলে আনে। আস্তে করে ঘাড় থেকে আচল ফেলে দেয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আচল। মাহফুজ আয়নায় তাকায়। নুসাইবার চোখ হাফ বন্ধ। মুখ হাফ খোলা। আচল মাটিতে পড়ায় ব্লাউজে আবদ্ধ দুধ এখন একদম সামনে। হাত দিয়ে ড্রেসিং টেবিলে ভর দিয়ে আছে তাই বুক ঢাকতে পারবে না এইবার। কেউ নেই আর। পেটের কাছে থাকা হাত ইঞ্চি ইঞ্চি করে উপরে আগাতে থাকে। ঘাড়ের কাছে চেটেই যাচ্ছে। নুসাইবার মনে হয় শরীরে নিয়ন্ত্রণ বুঝি কবেই হারিয়েছে। মাঝে মাঝে চোখ খুলে দেখছে আয়নায়। নাজনীন না নুসাইবা এটা? পিছনে কে? মাহমুদ না মাহফুজ? আস্তে আস্তে সামনে এগুতে থাকা হাতটা একসময় লক্ষ্যে পৌছে যায়। লাল ব্লাউজের উপর দিয়ে চেপে ধরে একটা গোলক। হালকা চাপ দেয়। নুসাইবার তখন চোখ বন্ধ, মাথা ঝিম ঝিম করছে। হঠাত নুসাইবার মনে হয় ওর বুকের উপর হালকা একটা চাপ। কি অসহ্য লাগছে। এমন সুখ কতদিন পায় না। মাহফুজের মনে হয় এমন নরম দুধ আর কখনো স্পর্শ করে নি। সিনথিয়ার বা সাবরিনার দুধ এর থেকে ছোট। এর থেকে শক্ত। নুসাইবার টা যেন একদম নরম ময়দার বল। ধরতেই হাতের ভিতর মিশে যাচ্ছে। মাহফুজ আস্তে আস্তে চাপছে ডান দুধটা। নুসাইবা তখন চোখ বন্ধ করে আছে। ওর মনে হচ্ছে ওর কল্পনায় বুঝি এত সুখ পাচ্ছে। উফফফ। এত আরাম। কতদিন এই দুধটা এইভাবে আদর করে না আরশাদ। কই আরশাদ তুমি? উফফফ কি সুখ। এইবার গোলক বদল করে হাত। বাম দুধে হাত দেয়। আবার চাপতে থাকে। নুসাইবার মনে হয় সুখ যেন ডান দুধ থেকে বাম দুধে ছড়িয়ে পড়ছে। আরশাদ কবে এমন আরাম দিবে আমাকে। মাহফুজ এইবার হঠাত করে একটা কাজ করে, কেন করে জানে না। নুসাইবার ডান কানের লতি মুখে পুরে জোরে জোরে চুষতে থাকে। নুসাইবা ড্রেসিং টেবিলের উপর বেন্ড হয়ে আছে এখন। পা টুল থেকে নেমে গেছে। চোখ বন্ধ। মুখ হাফ খোলা। আহহহহ। মাহফুজ জোরে কানের লতি চুষতে থাকে। কানের ছিদ্রে জিহবা চালান দেয়। আর বাম দুধটা ধরে এইবার জোরে একটা চাপ দেয়। যেন পিষে ফেলতে চায়। নুসাইবার সারা শরীরে যেন এইবার আগুন ধরে গেছে। চোখ একদম খুলে যায়। মুখ পুরা খোলা। আর দুই পায়ের মাঝে যেন হঠাট করে আগুন লেগেছে। সারা শরীর কাপছে। মাহফুজের শরীর নুসাইবার শরীরের উপর ঝুকে আছে। আহহহহহহ। কানের ছিদ্রে সাপের মত জিহবার খেলা করছে। বাম দুধটা ধরে জোরে শক্ত করে পিষে ফেলছে। নুসাইবার মনে হয় ওর দুই পায়ের মাঝখানে যেন আগুন লেগে গেছে। কোমড় দুলাতে থাকে নুসাইবা। আর পারছে না।


নুসাইবার কোমড় দুলানোর কারণে ওর পাছা মাহফুজের প্যান্টের উপর ঘষা খেতে থাকে। এমনিতেই ক্ষেপে থাকা মাহফুজের বাড়া যেন এইবার এই নরম স্পর্শ পেয়ে আর ক্ষেপে উঠে। মাহফুজ ওর দুই হাত দিয়ে এইবার নুসাইবার দুই দুধ চেপে ধরে। সব শক্তি দিয়ে দুই হাতে দুই দুধ ব্লাউজের উপর দিয়েই যেন পিষে ফেলতে চায়। আর কানের কাছে চুমু খেতে থাকে। দুধে এত জোড়ে আর কখনো চাপ খায় নি  নুসাইবা। আরশাদের পাচ ফুট চার ইঞ্চি নাদুস নুদুস শরীরে এত জোর নেই। ব্লাউজ ব্রা সব ভেদ করে ওর দুধ কে যেন পিষে ফেলতে চাইছে মাহফুজের হাত গুলো। ভিতরে থাকা বোটা গুলো যেন একদম সটান হয়ে দাঁড়িয়ে ব্রা ছিদ্র করে বাইরে বের হয়ে আসতে চাইছে। নুসাইবার মনে হয় পায়ের মাঝে যেন আগুন জ্বলছে। আরশাদ কই তুমি? আয়নায় দেখে একবার। মাহফুজ কেন ওর পিছনে সব গুলিয়ে আসে। ওর আগুন নিভানো দরকার। ওর পাছা যেন নিজে থেকেই নড়তে থাকে। পিছনে কি শক্ত এটা। নুসাইবা টের পায় ওর পাছা সর্বশক্তিতে পিছনে কিছু একটার উপর আছড়ে পড়ছে। মাহফুজ টের পায় নুসাইবা ওকে পাছা দিয়ে ড্রাই হাম্প করছে। মাহফুজ এইবার তাই সব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে। দুই হাতে দুই দুধ শক্ত করে ধরে পিছন থেকে জোরে ড্রাই হাম্প শুরু করে। কাপড়ের উপর কাপড় পড়ছে। আর কাপড়ের আড়ালে আছে শরীর। মাহফুজ টের পায় ব্লাউজ ব্রা দুইটার উপর দিয়ে নুসাইবার বোটা শক্ত হয়ে আছে। এইবার তাই দুই হাতে দুই বোটা ধরে মুচড়ে দেয়। আউউউউউউউ। ঘাড় উচু করে চাঁদ দেখা শেয়ালের মত করে চিৎকার দিয়ে উঠে নুসাইবা। আউউউউউউউউ। নুসাইবার মনে হয় আর পারবে না ও। পা কাপছে। পেট থেকে ওর পুসির দিকে গরম একটা স্রোত যাচ্ছে। আর অল্প কিছুক্ষণ। তারপরেই মনে হয় বন্যা  নামবে। মাহফুজ একের পর এক বার মুচড়াতে থাকে বোটা। চাটতে থাকে ঘাড়। আর পিছন থেকে সর্ব শক্তিতে ড্রাই হাম্প করতে থাকে। প্রতিবার যখন মাহফুজের সামনের দিকে নুসাইবার পাছার উপর সর্ব শক্তিতে পড়তে থাকে ততবার নুসাইবার মনে হয় আর বুঝি পারবে না। যতবার মাহফুজ দুই বোটা মুচড়ে দেয় ততবার সর্ব শক্তিতে চিৎকার করে উঠে নুসাইবা। সব সময় সেক্সের সময় নুসাইবা মুখ বন্ধ রাখে। কথা বলে না। ওর কাছে লজ্জা লাগে। আরশাদ মাঝে মাঝে জোকস করে বলে ডেড ফিশের সাথে সেক্স করছি মনে হয়। কারণ নুসাইবা ওর ভিতরের সব আবেগ চেপে রাখে। সেক্সর সময় মুখ দিয়ে শব্দ করা ওর কাছে খুব অশ্লীল মনে হয়। কিন্তু আজকে যতবার মাহফুজ ওর বোটা মুচড়ে দিচ্ছে নুসাইবা ততবার নিজের নিয়ম নিজেই ভাংগছে। আউউউউউউউ। বন্য পশুর মত উত্তেজনায় চেচিয়ে উঠছে। আয়নায় দেখে মাহফুজ ঠিক একটা পশুর মত ওর ঘাড়, গলা চাটছে। আর ও মুখ খুলে উত্তেজনায় চেচাচ্ছে। উফফফফ। পায়ের মাঝে বন্যা নামছে বুঝি।



মাহফুজের শরীরে তখন বন্য আগুন। সর্ব শক্তিতে থাপিয়ে যাচ্ছে মাহফুজ। দুই জনেই কাপড় পড়া। চামড়ার সাথে চামড়ার স্পর্শ নেই। তাতে যেন উত্তেজনা কমছে একটুও। নরম ময়দার দুইটা বল কে একবার পিষছে আরেকবার বোটা দুইটা কে মুচড়াচ্ছে। নুসাইবা ঠিক ভূতে ধরা মানুষের মত জান্তব শব্দ করছে। চুল গুলো এলোমেলো হয়ে চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। আয়নায় দেখছে দুই জনের কপাল থেকেই ঘাম পড়ছে। মাহফুজ এক হাত নিচে নামিয়ে আনে। কোমড়ের কাছে গুজে থাকা শাড়ি টান দিয়ে খুলতে থাকে। এক টান, দুই টান। তিন টান। শাড়ির কুচি খুলে আসে কোমড় থেকে। ধপ করে নিচে পড়তে থাকে। নুসাইবা যেন চোখ খুলে দেখে। এই প্রথমবারের মত বলে উঠে, নাআআআআ। নুসাইবা হঠাত টের পায় ওর কোমড়ের কাছে কিছু একটা  হচ্ছে। চোখ খুলে আয়নায় দেখে মাহফুজ শাড়ির কুচি খুলে নিচ্ছে কোমড় থেকে। নুসাইবা মনের সব জোর এক করে বলে উঠে, নাআআআআ। ঠিক তখন মাহফুজ ওর বোটা ধরে চরম একটা মোচড় দেয়। সারা শরীরে যেন একটা নাচন উঠে। নাআআআ থেকে শব্দ যেন আহহহহহ হয়ে উঠে। মাহফুজ ওর পিছনে ড্রাই হাম্প করে যাচ্ছে আর ওর নিজের পাছা যেন পালটা বেগে মাহফুজের সামনে আছড়ে পড়ছে। আয়নায় নুসাইবা দেখে ওর গায়ে ব্লাউজ আর পেটিকোট ছাড়া কিছু নেই। শাড়ি খুলে মাটিতে লুটাচ্ছে। অবাক হয়ে দেখে মাহফুজের একটা হাট ব্লাউজের উপর দিয়ে ওর দুধ পিষে ফেলছে। আরেকটা হাত কিছু বুঝার সুযোগ না দিয়ে পেটিকোটের উপর দিয়ে ওর পুসি কে মুঠ করে ধরল। মাহফুজ পেটিকোটের উপর দিয়ে নুসাইবার গুদ মুঠ করে ধরতেই ওর মনে হল নরম একতাল এটেল মাটি যেন। যেভাবে গড়তে চায় সেভাবেই যেন গড়ে নিতে পারবে। হাতের মুঠোর শক্ত করে ধরে একবার চাপতে থাকে আরেকবার ছাড়তে থাকে নুসাইবার গুদ। নুসাইবা আর পারে না। ওর পুসিতে এইবার আগুন লেগে গেছে। বন্যা নামতে থাকে। আহহহহহহহ। উউউউউফফফফফফ। সারা শরীর কাপিয়ে ঘর চিতকারে ভরিয়ে নুসাইবার গুদে বন্যা নামতে থাকে। সারা জীবন সেক্সের সময় শব্দ করা কে অশ্লীল প্রস্টিটিউট আর পর্নস্টারদের কাজ ভেবে আসা বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা নুসাইবা করিম চিৎকার করে যেন জানিয়ে দিতে চায় ওর গুদে বন্যা নেমেছে। সারা জীবন আর কখনো এত জোরে বন্যা নামে নি ওর। আহহহহ, আহহহহ, উউউউ, ইইইইইই, আহহহহহহ। শরীর দূর্বল হয়ে যায়। আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। মাটিতে হাটু গেড়ে বসে পড়ে। মাহফুজ টের পায় নুসাইবার শরীর অস্বাভাবিক কাপছে। ওর চিতকারে ঘর ভরে গেছে। জান্তব সব শব্দ। আহহহ, উউউ, ইইইইই, আইইইইই, আহহহহহ। মাহফুজও আর পারে না। টের পায় ওর আন্ডারওয়ারের ভিতরটায় একের পর এক কামান দাগছে ওর বাড়া। ক্লান্তিতে নুসাইবার সাথে মাটিতে বসে পড়ে মাহফুজ।


কিছুক্ষণ কেউ কোন কথা বলে না। নুসাইবার মাথায় ব্রান্ডির যে নেশা চড়েছিল সেটা যেন দুই পায়ের মাঝে বন্যা হয়ে নেমে গেছে। শরীর ক্লান্ত তবে মাথা এখন অনেক  হালকা। কি হল এটা? পাশে তাকায়। হ্যা এটা মাহফুজ। নিজের দিকে তাকায়। শাড়ি মাটিতে পড়ে আছে। সব লজ্জা ভয় যেন একসাথে ফিরে আসে। কি করেছে ও? কিভাবে পারল এটা করতে?
Like Reply
আপডেট ২৩ আপনাদের জন্য উপস্থাপন করা হল। এই পর্ব লিখতে কষ্ট হয়েছে। নুসাইবার মত পাওয়ারফুল ক্যারেক্টার কে বাগ মানাতে কষ্ট হয়েছে। তাই শেষ অংশ কয়েকবার রিরাইট করার জন্য বেশি সময় লেগেছে।

পড়ে লাইক রেপু অবশ্যই দিবেন। আশা করি আপডেটের দৈর্ঘ্য আর তীব্রতা আপনাদের লাইক রেপুর সমানুপাতিক হবে। শুধু একটা লাইক বা রেপু দিয়েই থেমে যাবেন না। আর অবশ্যই জানাবেন কেমন লাগল এই আপডেট। আপনাদের বিস্তারিত মতামত শুনতে আমি আগ্রহী।

সব শেষে এই উপন্যাস ভাল লাগলে অন্য পাঠকদের মাঝে ছড়িয়ে দিন। ফেসবুক, টেলিগ্রাম যেখানে আপনাদের জানা পাঠক আছে যারা এই গল্পের সন্ধান পায় নি তাদের পড়তে রেকমেন্ড করুন।

হ্যাপি রিডিং।
Like Reply
ঘুম থেকে উঠে ৫ ঘন্টা অপেক্ষা অবশেষে সফল হল।ধন্যবাদ ভাই

[+] 2 users Like rizvy262's post
Like Reply
Ufff dada fatiya deyacho akdom Sara sara
[+] 2 users Like _master_'s post
Like Reply
প্রতিবার এমন একটা জায়গায় শেষ করেন যেন পাঠক পরের পর্ব পড়ার জন্য উম্মুক হয়ে থাকে । প্রশংসা করার ভাষা নাই সব অলংকার শেষ
[+] 3 users Like Monika Rani Monika's post
Like Reply




Users browsing this thread: 12 Guest(s)