15-07-2023, 10:37 PM
কালকে দেন তাহলে
—͟͟͞͞?⁀➷ᏁᎪᎥm_Ꮓ ᭄✭✭
"The End Is The Beginning And The Beginning Is The End."
WRITER'S SPECIAL "ধূসর পৃথিবী"
|
15-07-2023, 10:37 PM
কালকে দেন তাহলে
—͟͟͞͞?⁀➷ᏁᎪᎥm_Ꮓ ᭄✭✭
"The End Is The Beginning And The Beginning Is The End."
16-07-2023, 11:09 AM
(15-07-2023, 10:37 PM)Naim_Z Wrote: কালকে দেন তাহলেআজকে দেওয়ার চেষ্টা করছি আজ না হলে কাল দেবো। (16-07-2023, 08:33 AM)Jaguar the king Wrote: Aj ki update pabo আজ দেওয়ার চেষ্টা করছি আজ না হলে কাল দেবো। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
16-07-2023, 07:51 PM
16-07-2023, 08:06 PM
(16-07-2023, 07:51 PM)InciBinsy Wrote: কাজের মাঝে লিখতে সমস্যা হয়, বুঝি। কিন্তু পাঠক হিসাবে তর সয় না। ? আছো কেমন? আর থাকা, অনেক সমস্যার মাঝে আছি বন্ধু। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
16-07-2023, 09:00 PM
16-07-2023, 09:11 PM
(16-07-2023, 09:00 PM)InciBinsy Wrote: সমস্যা না থাকলে জিবন পানশে লাগবে। লড়াই করার তাগিদটাই তো মুল জীবনীশক্তি। তুমি লক্ষ মানুষকে আনন্দ দিচ্ছ, তাদের সবার ভালোবাসা তোমার চলার পথকে সহজ করে তুলুক॥ ধন্যবাদ I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
17-07-2023, 11:50 AM
Update kobe dibe dada?
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
17-07-2023, 12:36 PM
(16-07-2023, 10:03 PM)Jaguar the king Wrote: Aj ki update pabo dadaআজকে দেওয়ার চেষ্টা করছি (17-07-2023, 11:50 AM)Patrick bateman_69 Wrote: Update kobe dibe dada? আজকে দেওয়ার চেষ্টা করছি I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
17-07-2023, 08:28 PM
ব্রাদার আজকে কি বাপ ছেলের মিলন হবে? আর হাল্কা এ্যাকশন? ?
17-07-2023, 08:55 PM
Vai update kokhon pabo
17-07-2023, 10:23 PM
Aj o update pelam na
17-07-2023, 10:48 PM
দ্বিতীয় খণ্ড ২৩তম পর্ব শুধু শ্রীতমাদেবীই নন অভিরূপবাবু এবং আদিত্য ওরফে অনিকেত বা অনিও পরস্পরের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে দুজনেরই মনের ভাব একই এক ছুটে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরা কিন্তু কোনো অজ্ঞাত কারণে সংযমের বাঁধনে নিজেদের বেঁধে রেখেছে অনেকক্ষণ মৌণ থাকার পর আদিত্যই প্রথম কথা বলে, "পিউর মুখে শুনলাম আপনারা এখানে এসেছেন, এখন শরীর কেমন আছে?" "তুমি তো আর গেলে না দেখতে?" অভিরূপবাবুও শান্তস্বরে জবাব দেন। "ওখানে সবাই আপনাদের নিজেদের লোক ছিল ওখানে আমার কি কাজ? গেলেও ঢুকতে দিত না হয়তো তাই যাইনি আর খবরে জেনেছি আপনার সুস্থতা সম্বন্ধে" "গিয়েই দেখতে ঢুকতে দিত কি না?" "আসুন ভিতরে আসুন" "আসুন না ভিতরে" পিয়ালীও আহ্বান করে অভিরূপবাবু ও শ্রীতমাদেবীকে। অভিরূপবাবু এবং শ্রীতমাদেবীকে যে ছেলেটা নিয়ে এসেছিল সে এবার আদিত্যকে বলে, "দাদা ওনারা তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন তাই অখিল জ্যেঠু পাঠিয়ে দিলেন" "ঠিক আছে, তুমি এক কাজ করো ওনাদের জন্য যে ইভিনিং স্ন্যাকস্ টা হয়েছে সেটা এখানে পাঠিয়ে দাও কেউ কিছু বললে আমার কথা বলবে" "ঠিক আছে দাদা" বলে ছেলেটা চলে গেল, অভিরূপবাবু এবং শ্রীতমাদেবী ঘরের ভিতরে ঢুকলেন আদিত্য ওনাদের সোফা দেখিয়ে বসতে বললেন আর পিয়ালী কিচেনে গেল একটু পরেই লেবুর শরবত এনে ওনাদের দিল। "কত মাস চলছে?" শ্রীতমাদেবীর আকস্মিক করা এই প্রশ্নে পিয়ালী একটু অবাক হয়েই তাকিয়ে থাকে তার দিকে, শ্রীতমাদেবী একটু হেসে বলেন "রিসর্টে শুনছিলাম যে তুমি." "চার মাসের মতো চলছে" "তোমাকে তুমি করেই বলছি কিছু মনে কোরো না" "না না মনে করার কিছু নেই, তুমি করেই বলুন" "এখানে আর কেউ থাকে না? মানে তোমাদের থেকে বড়ো এমন কেউ?" "গ্ৰামের কেউ না কেউ সবসময়ই খবর নিয়ে যায় আর অখিল জ্যেঠু তো আছেনই" "আর তোমার বাবা মা? মানে একটা পুরনো রীতি আছে যে মেয়ের প্রথম বাচ্চা হবার সময় সে বাপের বাড়ি যায় এখন অনেকে এটা মানে না যদিও আবার অনেকে মানে। কোনো কারণ নেই এমনিই" "ওর বাবা মা কেউ নেই, মারা গেছেন" পিয়ালীর হয়ে আদিত্যই উত্তরটা দেয় কিন্তু জবাবে শ্রীতমাদেবী আরেকটা প্রশ্ন করেন যেটার জন্য সে তৈরী ছিল না, "আর তোমার বাবা মা?" আদিত্য একটু চমকে ওঠে তারপর দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে বলে "সবাই আছেন" "কোথায় তারা?" "আমি ওনাদের সাথে থাকি না" "কেন জানতে পারি?" "একটা অ্যাক্সিডেন্টে আমি সবার থেকে আলাদা হয়ে যাই ওনারা জানেন আমি মৃত" "ফিরে যাচ্ছো না কেন? গিয়ে সত্যিটা বলো" "এখন ফিরে গেলে হয়তো ওনাদের স্বাভাবিক জীবনে ব্যাঘাতের কারণ হবো তার থেকে এই ভালো, ওনারা আমাকে ছাড়াই ভালো আছেন" "সেটা হয়তো তোমার মনে হচ্ছে কিন্তু এটা তো ভুল ধারনাও হতে পারে?" "এক কাজ করলে কেমন হয়?" এতক্ষণে অভিরূপবাবু কথা বলেন, "তুমি তোমার পরিবারের অ্যাড্রেসটা দাও, আমি যোগাযোগ করছি"। উত্তরে আদিত্য কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগে বাইরে থেকে আবার ওর নাম ধরে কেউ ডাকতে থাকে "আদিত্য দা ও আদিত্য দা"। আদিত্য বাইরে বেরিয়ে এসে দেখে একটু আগের ছেলেটা আবার এসেছে আর এবার ওর সাথে স্বর্ণেন্দু বাবু, সুদেষ্ণা দেবী আর সুনন্দা এসেছেন। ছেলেটা আদিত্যকে বলে " এই এনারা ওনাদের খুঁজছিলেন আমি এখানে আসার কথা বলতে ওনারাও আসতে চাইলেন তাই" "ঠিক আছে তোমাকে যে বললাম স্ন্যাকস্টা পাঠিয়ে দিতে?" "ওটা আসছে" "এক কাজ করো, এনাদেরটাও পাঠিয়ে দিও" "ঠিক আছে দাদা" ছেলেটা চলে গেল আদিত্য এবার বাকিদের ডাকলো "আসুন, ওনারা ভিতরে আছেন" সবাই ভিতরে ঢুকলে পিয়ালী আবার উঠে শরবত করে নিয়ে এলো। "তোমরা এখানে?" অভিরূপবাবু বোধহয় বাকীদের এখানে আসাটা প্রত্যাশা করেননি তাই একটু অবাক হয়েছেন, তার প্রশ্নের উত্তরটা স্বর্ণেন্দু বাবু দিলেন, "হ্যাঁ, তোমাদের রুমে না দেখে আন্দাজ করেছিলাম যে এখানে এসেছো তাই একজনকে বলতেই ও বাড়িটা দেখিয়ে দিল" "পিউ কোথায়?" এই প্রশ্নটা অবশ্য পিয়ালীর, উদ্দেশ্য সুনন্দা। "ও ঘুমাচ্ছে ওর বাবার সাথে"সুনন্দার ছোট্ট জবাব। "খুব মিষ্টি মেয়ে" "কিন্তু এখন তোমাদের ন্যাওটা হয়েছে বিশেষ করে সুপারম্যান আঙ্কেলের" শেষ কথাটা অবশ্য স্বর্ণেন্দু বাবুই বলেন, কিন্তু পিয়ালী ঠিক বুঝতে পারে না সে অবাক স্বরে জিজ্ঞেস করে, "ন্যাওটা মানে?" "ঘনিষ্ঠ, কাছে যা বলতে চাও" আদিত্য বুঝিয়ে দেয়। এইসময় দরজায় আবার নক হয় রিসর্ট থেকে অভিরূপবাবুদের জন্য ইভিনিং স্ন্যাকস্ এসে গেছে সাথে একটা বড়ো ফ্লাস্কে গরম কফি। সুনন্দা কিছু বলবে বলে উসখুস করছিল এবার বলেই ফেললো, "আদিত্য থ্যাংকস" "কিসের জন্য?" "তুমি আমার মেয়েকে বাঁচিয়েছিলে তারজন্যও তারপরে পিসুকেও বাঁচিয়েছিলে তারজন্য। তুমি করে বলছি বলে কিছু মনে কোরো না তুমিই বলেছিলে যে আমি তোমার দিদির মতো তাই" "ইটস্ ওকে, থ্যাংকস বলার কিছু নেই" "তুমি কিন্তু এখনো তোমার বাড়ির অ্যাড্রেসটা দিলে না, দাও?" অন্য কথা হলেও অভিরূপবাবু যে ঠিকানার প্রসঙ্গটা ভোলেননি সেটা বেশ বোঝা যায়, আদিত্য এবার একটু বেকায়দায় পরে আসলে সেই সময়ে স্বর্ণেন্দু বাবুরা চলে আসায় সে ভেবেছিল এই প্রসঙ্গটা চাপা পরে যাবে কিন্তু এখন দেখছে যে সে ভুল ছিল। "কি হলো দাও, আর যদি কলকাতায় না থেকে অন্য কোনো শহরে থাকে তাহলেও দিতে পারো" আদিত্য একটু শুকনো হাসি হেসে কথা কথাটা এড়ানোর জন্য বললো "থাক না, আমার জীবনের ইতিহাস ঘাঁটার দরকার নেই ওটা ভুলে যাওয়াই ভালো, তারা তাদের মতো ভালো থাক সুখে থাক আমি এখানেই ভালো আছি" "তুমি বাড়ি ফিরতে চাও না?" "ওটা আর আমার বাড়ি নেই আর তাছাড়া মৃতরা বাড়ি ফেরে না" সবাই বেশ অবাক হয়ে আদিত্যর দিকে তাকিয়ে থাকে এমনকি অভিরূপবাবুও, একটু পর তিনি বলেন, "তোমার অভিমান হয়েছে বুঝতে পারছি হয়তো সেটাই স্বাভাবিক কিন্তু অভিমানটা একটু সরিয়ে রেখে নিজের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেই দেখো, হয়তো দেখবে তারাও তোমাকে হারিয়ে কষ্টে আছে" "হয়তো আছে হয়তো নেই কিন্তু আমি ফিরে গেলে তারা আরও বেশি কষ্ট পাবে বা হয়তো আমি এমন কিছু দেখবো বা জানবো যেটা আমার জন্য সহ্য করা কঠিন হয়ে যাবে তার থেকে এই ভালো আছি"। "আমি একটু ইন্টারাপ্ট করছি" স্বর্ণেন্দু বাবু মাঝখানে বলে ওঠেন " আদিত্য হতেও তো পারে যে তোমার পুরো ধারণাটাই ভুল, আফটার অল পরিবার বলে কথা" "একদমই ঠিক কথা" এবার শ্রীতমাদেবী কথা বলেন "হয়তো তোমার মাও তোমাকে হারিয়ে কষ্টের মধ্যে আছেন, তোমার বাবাও কষ্ট পাচ্ছেন..আচ্ছা তুমি এইভাবে তাদের থেকে দূরে সরে না গিয়ে তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে তো পারো,অ্যাক্সিডেন্টের পরে ফিরে যাওনি কেন? বাবা মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে দেখতে পেতে তারাও কষ্টে আছেন" আদিত্যর ইচ্ছা করছিল চেঁচিয়ে সব সত্যি বলে দিতে কিন্তু কোনোমতে নিজেকে সামলায় তবে তার ভিতরে এত বছরের জমানো অভিমানটাকে আটকাতে পারে না সেটা বেরিয়ে আসে। "গিয়েছিলাম" "গিয়েছিলে? কি হয়েছিল?" শ্রীতমাদেবীর গলায় বিস্ময় আদিত্য বলতে থাকে, "অ্যাক্সিডেন্টের একমাস পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সবার আগে বাড়িতে গিয়েছিলাম গিয়ে কি দেখলাম জানেন?" "কি?" "আমার ফ্যামিলি আমার মৃত্যুকে ভুলে, আমাকে ভুলে আমার দাদার বিয়ের অনুষ্ঠানের আনন্দে মেতে উঠেছে। আমার পুরো পরিবার আমাকে নিজেদের লাইফ থেকে জাস্ট ডিলিট করে দিয়েছে" আদিত্যর কথা শুনে অভিরূপবাবু, শ্রীতমাদেবী সহ বাকীদের মুখ শুকিয়ে গেল আদিত্য বলতে থাকে, "এমনকি যখন আমার বাবার সামনে দাঁড়ালাম তখন উনি আমাকে লক্ষ্যই করলেন না বা বলা ভালো ওনার কাছে আমাকে চেনার সময় ছিল না উনি ওনার বড়ো ছেলের বিয়ে নিয়ে ব্যাস্ত" আদিত্যর দৃষ্টি সোজা অভিরূপবাবুর দিকে অভিরূপবাবুও সোজা আদিত্যর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন, আদিত্যর ভিতরের চাপা অভিমান আর রাগটা তিনি বুঝতে পারছেন কিন্তু কোনো কথা বলতে পারছেন না, আদিত্য আবার বলতে শুরু করে, "শুধু উনি নন যাদের আমি নিজের লোক ভাবতাম যারা আমার পরিবার ছিল তাদের কেউই তখন আমাকে চেনার মতো অবস্থায় ছিলেন না সবাই তখন বিয়ের আনন্দে ব্যাস্ত তাই আর তাদের আনন্দে ডিস্টার্ব না করে চলে আসি অবশ্য আসার আগে আরো একটা কথা জানতে পারি ওখানে বিয়েতে উপস্থিত কয়েকজন আলোচনা করছিল যে আমি নাকি ওনাদের নিজের ছেলে না এখন এটা সত্যি না মিথ্যা জানি না তবে এটা সত্যি আমি আমার বাবা মায়ের নিজের ছেলে হই বা না হই আমি ওনাদের খুব ভালোবাসি হয়তো ওনাদের কাছে আর ফিরবো না কিন্তু ওনাদের খুব ভালোবাসি"। শেষের কথাটা আবার সোজা অভিরূপবাবুর দিকে তাকিয়ে বললো আদিত্য। এইসব কথায় পরিবেশ পরিস্থিতি যথেষ্ট গম্ভীর হয়ে উঠেছিল সেটাকে স্বাভাবিক করার জন্যই বোধহয় আদিত্য আবার একটু হেসে বললো, "ওই দেখুন কথায় কথায় আপনাদের খাওয়াই হলো না নিন এগুলো খেয়ে নিন"। বাকী যেটুকু সময় অভিরূপবাবুরা আদিত্যর বাড়িতে ছিলেন বেশ কথা বললেন না কেউই যদিও আদিত্য আর পিয়ালী পিউর কথা জিজ্ঞেস করছিল। রিসর্টে ফিরে অভিরূপবাবু একদম চুপ মেরে গেলেন, রিসর্টের ভিতরে পুকুরের পাশে একটা বসার জায়গায় সবাই বসে আছে সবার মুখই গম্ভীর, শেষপর্যন্ত স্বর্ণেন্দু বাবুই মৌনতা ভঙ্গ করলেন, "এতদিন আমার সন্দেহ থাকলেও আজ নেই, ওই আমাদের অনি। যে কথাগুলো ও বললো সেটা সব পরিবারে হয় না কিন্তু আমরা করেছিলাম তাই ও যদি সত্যিই সেইসময় ফিরে এসে থাকে তাহলে ওর মনে একটা বিরূপ ধারণা তৈরী হওয়া অসম্ভব নয়" "কিন্তু অত তাড়াতাড়ি অরুর বিয়ে দেওয়ার একটা কারণ ছিল তুমি জানো সেটা" সুদেষ্ণা দেবী স্বামীর কথার উত্তরে বললেন, স্বর্ণেন্দু বাবুও অবশ্য তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলেন, "কিন্তু অনি সেটা জানে না তাই ও যেটা দেখবে সেটার উপরেই ওর মনে ধারণা তৈরী হবে কিন্তু একটা জিনিস আমার মাথায় আসছে না ও যদি সত্যিই বিয়েতে এসেছিল তাহলে আমরা কেউ ওকে চিনতে পারলাম না এটা হতে পারে?" "কারণ ওর মুখ ঢাকা ছিল আর ও একজন ভদ্রলোকের সাথে ছিল" এতক্ষণে মুখ খুললেন অভিরূপবাবু এতক্ষণ তিনি চুপ করে চেয়ারের পিছনে মাথা হেলিয়ে চোখ বন্ধ করে বসেছিলেন শুধু বসেছিলেন না প্রায় দশ বছর আগের সেই দিনটার কথা মনে করছিলেন যেদিন তার বড়ো ছেলে অরুণাভর বিয়ে ছিল। অনেকবছর আগেকার কথা অনেক কিছুই ভুলে গিয়েছিলেন এখন চুপচাপ বসে সেগুলোর স্মৃতি পুনরুদ্ধার করতে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন আর শেষপর্যন্ত স্মৃতিতে যেটা খুঁজছিলেন সেটা বোধহয় খুঁজে পেয়েছেন তাই স্বর্ণেন্দু বাবুর প্রশ্নের জবাবটা দেন তিনি, "কারণ ওর মুখ ঢাকা ছিল আর ও একজন ভদ্রলোকের সাথে ছিল" তাঁর কথা শুনে উপস্থিত সবাই চমকে উঠে তার দিকে তাকিয়ে থাকেন অভিরূপবাবু এবার চেয়ারে সোজা হয়ে বসে একবার সবার দিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেখে নিয়ে বলেন, "এতক্ষণ সেটাই মনে করতে চেষ্টা করছিলাম অনি যে মিথ্যা বলছে না সেটা তো জলের মতো পরিষ্কার, তাহলে এখন কথা হলো ও কখন এসেছিল?" সবাই চুপ করে শুনতে থাকে অভিরূপবাবু বলে চলেন "বিয়েতে আমাদের কারো ইচ্ছা থাকুক বা না থাকুক মনে আনন্দ নাই থাকুক বাড়িতে অতিথি এলে তাকে হাসিমুখে বরণ করাই নিয়ম আমরাও তখন সেটাই করছিলাম ওইসময় অনি যদি সেটা দেখে তাহলে ওর মনে এই ভুল ধারণা জন্মাতেই পারে যে আমরা ওকে ভুলে আনন্দে মেতে উঠেছি" "কিন্তু তুমি বললে অনি এসেছিল তাহলে তুমি ওকে চিনতে পারলে না?" শ্রীতমাদেবী একটু ক্ষুন্ন স্বরে জিজ্ঞেস করেন, অভিরূপবাবুর স্বরে এবার অনুশোচনা, "ওখানেই তো ভুলটা হয়ে গেছে শ্রীতমা, মন থেকে না মানলেও কিছু নিয়মকানুন ছিল যেগুলো পালন করতে হয়েছিল আর আমি চাইছিলাম সেগুলো কোনোমতে শেষ করে একটু একা থাকতে অন্য কারো দিকে মন দেবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ছিল না" তারপর নিজের কপালে হাত দিয়ে বললেন "কেন দিলাম না আমার ছেলে আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল আর আমি ওর দিকে ভালো করে তাকাইনি পর্যন্ত" "এ তুমি কি বলছো?" শ্রীতমাদেবী বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান, অভিরূপবাবু আবার বলতে শুরু করেন, "কিন্তু আমিই বা কিভাবে জানবো? আমরা তো ধরেই নিয়েছিলাম যে ও... অনি আর বেঁচে নেই" "তাই বলে তুমি নিজের ছেলেকে দেখেও চিনতে পারবে না?" শ্রীতমাদেবীর স্বরে এখন রাগ। "ওর মাথায় টুপি, চোখে চশমা ছিল মুখও ঢাকা ছিল কিভাবে চিনবো? ওর সাথে একজন ছিলেন উনিই ওকে নিয়ে এসেছিলেন ও তার পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল, আমি ভেবেছিলাম কোনো গেস্ট হবে ভালো করে দেখার আগে ঠাকুরমশাই ডেকে পাঠিয়েছিলেন তাই চলে যাই." "আর আমার ছেলেটা চুপচাপ নিজের বাড়িতে এসেও কাউকে কিছু না বলে চলে যায়" শ্রীতমাদেবীর স্বরে রাগ এখন আগের থেকে বেশী। অভিরূপবাবু দুহাতে মাথা চেপে ধরে বসে থাকেন আর শ্রীতমাদেবী কাঁদতে শুরু করেন স্বর্ণেন্দু বাবু আর সুদেষ্ণা দেবী কোনোমতে দুজনকে শান্ত করেন, তিনি বলেন, "যা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে ভেবে এখন লাভ নেই অনির মনে আমাদের সবার জন্য রাগ আর অভিমান জমে আছে এখন কিভাবে ওর রাগ ভাঙানো যাবে সেটা ভাবতে হবে" "তুই জানিস না? অনি কিরকম?" শ্রীতমাদেবী ভাইকে বলেন "ছোটো থেকেই রাগী আর অভিমানী কাউকে মুখে কিছু বলবে না কিন্তু নিজে দূরে সরে যাবে আর এখন তো নিজের পরিবারের থেকে আঘাত পেয়েছে ও" "আমার একটা কথা মাঝে মাঝেই সন্দেহজনক লাগতো" স্বর্ণেন্দু বাবু বললেন, তার বলার ধরনে সবাই তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন স্বর্ণেন্দু বাবু বলে চললেন "অনির সাথে মৌমিতার বিয়ে হবার কথা ছিল এবং সেটা মৌমিতার তরফ থেকেই প্রস্তাব এসেছিল তাহলে ওর মৃত্যুর পরে এত তাড়াতাড়ি অন্য একজনকে.." "আমার ছেলে বেঁচে আছে স্বর্ণ" শ্রীতমাদেবী ঝংকার দিয়ে ওঠেন, স্বর্ণেন্দু বাবু নিজেকে শুধরে নেন ""মানে তখন তো সবাই জানতো অনি বেঁচে নেই তাহলে এত তাড়াতাড়ি ও অন্য একজনকে বিয়ে করতে রাজী হয়ে গেল? তাও যার সাথে বিয়ে হবার কথা ছিল তারই দাদার সাথে এটা একটু কেমন লাগছে না?" "তুমি তো মৌমিতার অবস্থা দেখেছিলে?" সুদেষ্ণা দেবী স্বামীকে বলেন। "না ব্যাপারটা অত সোজা নয়" স্বর্ণেন্দু বাবু উত্তর দেন "তোমার কি মনে হয় বাপি" সুনন্দা জিজ্ঞেস করে, স্বর্ণেন্দু বাবু বলতে থাকেন "এটা অ্যাক্চুয়ালি তোর সুপ্রতিম আঙ্কেল বলেছিল আমাকে আমি প্রথমে অতটা গুরুত্ব দিইনি কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ওই ঠিক" "কি?" "অনির সাথে যেটা হয়েছিল সেটা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছিল আর তার পিছনে অরু আর মৌমিতা আছে এবং খুব সম্ভবত মনোজিৎ বাবুও" "হোয়াট.. এসব কি বলছো বাপি?" "এটা পুরোটাই ধারনা অনুমান সত্যি না মিথ্যা সেটা জানা নেই" "আমারও সেটাই মনে হচ্ছে" অভিরূপবাবুর কথায় সবাই চমকে উঠলো, "অনি সেদিন পার্কে বলেছিল যে ও ফিরলে নাকি অনেকের মুখোশ খুলে যাবে আর তাতে আমরা কষ্ট পাবো তারমানে সে নিশ্চয়ই এমন কেউ যে আমাদের খুব কাছের একজন" "অরু?" হতভম্ব শ্রীতমাদেবীর মুখ থেকে বড়ো ছেলের নামটা বেরিয়ে আসে অভিরূপবাবু বলতে থাকেন "আমিও বিশ্বাস করিনি কিন্তু সেদিন সুপ্রতিম বাবু আর পরে অনির সাথে কথা বলার পরে অনেক ভেবেছি। গ্যাংটকে কি হয়েছিল সেটা আমরা কেউ জানিনা শুধুমাত্র অরুর উপরে বিশ্বাস করে পুলিশের তদন্ত বন্ধ করিয়ে দিই" "তুমি কি বলতে চাইছো যে অরু ওর ভাই অনিকে" শ্রীতমাদেবীর হতভম্ব ভাবটা অনেকটাই বেড়ে গেছে, অভিরূপবাবু স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলতে থাকেন, "শুনতে অবাস্তব মনে হলেও সত্যি হতেও পারে ছোটো থেকেই অরু অনিকে একটু হলেও হিংসে করতো সেটা যে বড়ো হবার সাথে বাড়েনি এটা কে বলতে পারে?" "কিন্তু তাই বলে নিজের ভাইকে" "অরু আর কি কি করেছে সে সম্বন্ধে তোমার কোনো ধারণা নেই শ্রীতমা, অরু আর সেই অরু নেই অনেকটাই পাল্টে গেছে, ভেবেছিলাম ও আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে কিন্তু আসলে ও আমাদের মাথা হেঁট করে দিয়েছে আর অন্যদিকে অনি ও জানে অরুকে আমরা কতটা ভালোবাসি ওর কিছু হলে আমরা কষ্ট পাবো তাই সবকিছু ছেড়ে এমনকি নিজের নাম, নিজের পরিচয় সবকিছু ছেড়ে ছেলেটা আমার স্বেচ্ছানির্বাসন নিয়ে নিয়েছে"। "কিন্তু এটাতো তোমাদের ধারণা সেটা ভুলও তো হতে পারে?" শ্রীতমাদেবী এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না যে তার বড়ো ছেলে কোনো খারাপ কাজ করতে পারে, অভিরূপবাবু বললেন "ভুল হলে সবথেকে বেশী খুশী আমি হতাম কিন্তু সেটা নয়। অনির সাথে কি হয়েছিল সেটা হয়তো আমরা জানিনা কিন্তু মৌমিতার সাথে বিয়ের পরে আজ পর্যন্ত অরুণাভ এমন অনেক খারাপ কাজ করেছে যেগুলো আমরা কল্পনাও করতে পারি না, আমার কথা বিশ্বাস না হলে স্বর্ণেন্দুকে জিজ্ঞেস করে দেখো" শ্রীতমাদেবী হতভম্ব ভাবে নিজের ভাইয়ের দিকে তাকালেন স্বর্ণেন্দু বাবু সম্মতিসূচক মাথা নাড়েন তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, "একটা জিনিস পরিষ্কার যদি আমরা যেটা অনুমান করছি সেটা সত্যি হয় তাহলে এই দুই ভাই আর কখনো একসাথে থাকতে পারবে না, তাই অনিকে ফেরানোর চেষ্টা করার আগে ভালো করে ভেবে দেখা উচিত"। "এটা তুই কি বলছিস স্বর্ণ? দুজনেই তোর ভাগ্নে" শ্রীতমাদেবী ঝাঁঝিয়ে ওঠেন কিন্তু স্বর্ণেন্দু বাবু শান্ত স্বরেই বলেন, "আর আমি দুজনকেই ভালোবাসি আমার দুই ভাগ্নে একসাথে থাকলে আমিও কম খুশী হবো না কিন্তু যেটা বললাম সেটা ফ্যাক্ট" "আমি আমার দুই ছেলেকেই চাই" "সেটা হলে তো খুবই ভালো আমরা সবাই তাই চাই"। "কোনোমতে সম্ভব নয়" অভিরূপবাবুর সকথায় সবাই আশ্চর্য এবং অবাক হন, "এতদিন ওর সব অপরাধ আমি ক্ষমা করে এসেছি, ব্যানার্জী পরিবারের নামের জন্য পুলিশ ওর গায়ে হাত দেয়নি কিন্তু যদি এটা জানতে পারি যে অনির সাথে যা হয়েছিল সেটার পিছনে অরু ছিল তাহলে ওকে শাস্তি পেতে হবে" "এ তুমি কি বলছো ও আমাদের ছেলে" "ভুলো না অনিও আমাদের ছেলে, অলরেডি ওর সাথে অনেক অন্যায় করেছি আমরা কিন্তু যদি আমাদের অনুমান সত্যি হয় তাহলে অরু পার পাবে না"। "ওটা মিথ্যাও তো হতে পারে, তুমি এখনই খারাপটা ভাবছো কেন?" "মিথ্যাই যেন হয় শ্রীতমা মিথ্যাই যেন হয়"। আনন্দ নিকেতন রিসর্টে মূলত বিশ্রাম নিতে এসেছিলেন অভিরূপবাবু কিন্তু এখন চাইলেও বিশ্রাম নিতে পারছেন না খালি একটা কথাই মনে হচ্ছে তার ছেলের কথা যে কাছে থেকেও কাছে নেই দূরে চলে গেছে চেষ্টা করেও না তাকে কাছে আনতে পারছেন আর না তার কাছে যেতে পারছেন। ঈশ্বরের কাছে এখন দুটো প্রার্থনা তার, এক যে করেই হোক অনিকেতের অভিমান ভাঙানো আর দুই দুই ভাই যেন আবার একসাথে মিলে মিশে থাকে। ভাবতে ভাবতেই একসময় চোখ ঘুমে বন্ধ হয়ে যায় বোধহয় ডাক্তারের দেওয়া ঘুমের ওষুধের এফেক্ট। একটু বেলাতেই ঘুম ভাঙলো তার এখানে কোনো তাড়া নেই তাই শ্রীতমা দেবী ডাকেননি, ঘুম ভাঙতেই আবার একই চিন্তা একই ভাবনা, শ্রীতমাদেবী ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলেন তার দিকে চোখ পরতেই অভিরূপবাবু বুঝতে পারলেন তার স্ত্রী কাঁদছিলেন কিন্তু এক্ষেত্রে তার সত্যিই কিছু করার নেই তিনি অপারগ মুখে যাই বলুন যাই প্রার্থনা করুন তিনি ভালো ভাবেই বুঝতে পারছেন যে তারা তাদের দুই ছেলের সাথে একসঙ্গে থাকতে পারবেন না এক ছেলেকে কাছে পেতে গেলে আরেকজনকে হারাতে হবে এটাই সত্যি, তেঁতো হলেও সত্যি। বাকিরা এখনও কেউ ঘুম থেকে ওঠেনি দেখে অভিরূপবাবু ও শ্রীতমাদেবী এক কাপ করে চা অর্ডার করে সেটা খেয়ে একটু পায়চারী করতে বেরোলেন তবে রিসর্টের বাইরে নয় ভিতরের এরিয়াতেই। সকালের হাওয়া বেশ লাগছিল দুজনের হঠাৎই দুজনেই থমকে দাঁড়িয়ে পরলেন তাদের সামনে কিছুটা দূরে আদিত্য বা অনিকেত দাঁড়িয়ে আছে আসলে ওর সঙ্গে আরেকজন আছে তাকে কিছু একটা বলছে। এবার আদিত্যও অভিরূপবাবু ও শ্রীতমাদেবীকে দেখতে পেল এবং লোকটাকে ছেড়ে তাদের কাছে এলো, "ভালোই হলো দেখা হয়ে আমি আপনাদের কাছেই যাবো ভাবছিলাম" "কেন, কিছু বলবে?" অভিরূপবাবু জিজ্ঞেস করেন। "আসলে আমি ক্ষমা চাইতে চাই" "ক্ষমা কিসের জন্য?" "কাল আমি এমন কিছু কথা বলে ফেলেছি যেগুলো আমার বলা উচিত হয়নি আমাকে ক্ষমা করে দিন" আদিত্য হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলো। "তুমি ক্ষমা চাওয়ার মতো কিছু বলোনি, তবে এখন একটা সত্যি কথা বলবে?" "কি?" "তোমার বাড়ি থেকে দূরে চলে আসার পিছনে কি নিজের কারো হাত রয়েছে বা বলা ভালো বিশেষ কারো জন্যই কি তুমি তোমার বাড়ি ফিরে যাচ্ছো না?" অভিরূপবাবুর প্রশ্ন শুনে আদিত্য ক্ষণিকের জন্য চমকে উঠলেও দ্রুত নিজেকে সামলে নিল একটু কাষ্ঠ হাসি হেসে বললো, "পুরনো কথা মনে করে কি লাভ? তার থেকে বর্তমানেই বাঁচা ভালো আমি সেটাই করছি পুরনো কথা আর মনে করতে চাই না" "তার মানে বলবে না?" "জেনেও কোনো লাভ নেই, ওসব কথা থাক আপনার এখন রেস্টের দরকার অন্য কোনো চিন্তা মাথায় জায়গা দেবেন না ,চলুন আপনাদের জায়গাটা ঘুরিয়ে দেখাচ্ছি" আদিত্য অভিরূপবাবু আর শ্রীতমাদেবীকে নিয়ে রিসর্টের চারিপাশ ঘুরে দেখাতে লাগলো রিসর্টের ভিতরের অনেকটা জায়গা জুড়ে বিভিন্ন রকম ফুলগাছ লাগানো আছে ফুলের বাগান বলা চলে সেগুলো ঘুরিয়ে দেখালো তারপর ফলের বাগান। ফলের বাগানের একটা পেয়ারা গাছ থেকে দুটো বড়ো পেয়ারা নিয়ে দুজনকে খেতে দিল কথাবার্তা হাসি ঠাট্টা চললো যেন সত্যিই এক পরিবারের তিনজন একসাথে ঘুরছে দেখতে দেখতে অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়ে গেল চোখের নিমেষে। রিসর্টের মেইন এরিয়ায় ফিরে অভিরূপবাবুরা দেখলেন বাকীরা উঠে পরেছেন তাদের জন্য অপেক্ষা করছেন ব্রেকফাস্ট টেবিলে, আদিত্য সবার থেকে বিদায় নিয়ে নিজের কাজে চলে গেল। ব্রেকফাস্টের পরে অভিরূপবাবুরা আবার বেরোলেন অভিরূপবাবুরা মানে অভিরূপবাবু শ্রীতমাদেবী স্বর্ণেন্দু বাবু বাকীরা রিসর্টেই রয়ে গেলেন। অভিরূপবাবুরা বেরোলেন ঠিকই তবে এবার ঘুরতে নয় মোড়লের বাড়িতে, "আরে আসুন আসুন নমস্কার" মোড়ল তাদের দেখে ব্যাস্ত হয়ে পরলো তিনি তখন তার বাড়ির উঠোনে অন্য কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন অভিরূপবাবুরা প্রতি নমস্কার করে বললেন "আপনার সঙ্গে একটু কথা ছিল, আপনি আপনার কাজটা সেরে নিন আমরা অপেক্ষা করছি"। কিন্তু মোড়ল তৎক্ষণাৎ সঙ্গের লোকগুলোকে বিদায় করে অভিরূপবাবুদের নিয়ে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেলেন, একটু পরে মোড়ল গিন্নী প্রথমে চা তার একটু পরে গরম গরম পরোটা ও তরকারী নিয়ে এলো, যদিও অভিরূপবাবুরা বারণ করলেন যে রিসর্ট থেকে খেয়েই বেরিয়েছেন কিন্তু কে শোনে কার কথা? বোঝাই যায় এই গ্ৰামের লোকেরা আতিথেয়তায় ত্রুটি রাখে না। "বলুন আমার সঙ্গে কি কথা" মোড়ল প্রশ্ন করলেন, অভিরূপবাবু একটু গলাটা পরিষ্কার করে বললেন, "অখিল বাবু কি আপনাকে কিছু বলেছে?" "কি ব্যাপারে বলুন তো? আপনারা মাছ ধরতে চান সেই ব্যাপারে?" "না, ওটা ঠিক নয়" "তাহলে?" "আসলে আমাদের এই গ্ৰামটা খুব পছন্দ হয়েছে, এখানে যদি কোনো জমি পাওয়া যায়, অল্প হলেও চলে যাবে তাহলে একটা ছোট্ট বাড়ি বানিয়ে আমরা থাকতাম" "আপনারা শহুরে মানুষ এই গণ্ডগ্ৰামে থাকতে পারবেন?" "কেন অসুবিধার কি আছে? "অসুবিধা কি একটা যে মুখে মুখে বলবো? অবশ্য আমাদের এতেই চলে যায় কিন্তু আপনারা?" "আমাদের তো ভালোই লাগছে" "সে আপনারা ঘুরতে এসেছেন তাই, দুদিন থাকলেই হয়তো হাঁফিয়ে উঠবেন। একটা কথা অবশ্য না বললেই নয় আস্তে আস্তে গ্ৰামের উন্নতি হচ্ছে কিছুটা ডাক্তারবাবু করে গিয়েছিলেন আর এখন আদিত্য বাবা চেষ্টা করছে" "আদিত্য?" "হ্যাঁ, ওই তো যার কাছে আপনার নাতনি চলে গিয়েছিল" "হ্যাঁ, সেটা জানি কিন্তু ও উন্নতি করছে মানে?" "সে অনেক ব্যাপার গ্ৰামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটাকে আরও উন্নত করা, সবাই মিলে চাঁদা তুলে চাপকল বসানো, রাস্তাঘাট ঠিক করা, কলেজটা আরও বড়ো করা আরও অনেক, ভারী ভালো ছেলে ডাক্তারবাবু যখন চলে গেলেন আমরা তো ভেবেছিলাম এবার ভেসেই যাবো কিন্তু তখন কি জানতাম যে উনি আমাদের জন্য আগেই আদিত্যকে এনে রেখেছেন"। ছেলের সুখ্যাতি শুনে গর্বে অভিরূপবাবুর বুক ফুলে উঠতে থাকে মোড়লমশাই আরো কিছুক্ষণ আদিত্যর সুখ্যাতি করে তারপর আসল কথায় এলেন, "এখানে জমি আছে একটা, জমির যে বর্তমান মালিক সে এখানে থাকে না বাইরে থাকে আমাকে বলেছে বকে যে খদ্দের পেলে বিক্রি করে দেবে" "বেশ তো তাহলে আমিই কিনবো, আপনি কথা বলুন" "আপনারা আগে দেখে নিন জমিটা, এখন যেতে পারবেন?" "কেন নয়? আমাদের তো এখন শুধু সময় আর সময়" "তাহলে চলুন বেশী দূরে নয় আদিত্যর বাড়ির পাশেই ওকেও ডেকে নেওয়া যাবে" মোড়লমশাই এর কথা শুনে অভিরূপবাবুর মুখে হাসি ফুটে উঠলো তিনি মনে মনে ঠিক করলেন ওই জমিটাই কিনবেন হাজার হোক ছেলের কাছে থাকতে পারবেন। মোড়লমশাই জমিটা দেখালে সেটা অভিরূপবাবুদের পছন্দ হলো অবশ্য তিনি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছেন যে এটা কিনবেন কারণ এতে আদিত্যর কাছে থাকা যাবে, জমিটা একেবারে আদিত্যর বাড়ির পাশে না হলেও কাছেই। "আপনি এখানে থাকবেন আপনার ফ্যামিলির বাকীরা এখানে আসবে?" আদিত্য প্রশ্ন করে অভিরূপবাবুকে মোড়লমশাই ফোন করে ডেকে নিয়েছিলেন ওকে, আদিত্যও ঘুরে ঘুরে দেখছিল এবং একসময় প্রশ্নটা করলো তাতে অভিরূপবাবু শান্ত স্বরে বলেন "এটা শুধুমাত্র আমরা বুড়ো বুড়ির জন্য, আর এই স্বর্ণেন্দু আর সুদেষ্ণা মানে চার বুড়ো বুড়ির জন্য আর কারো জন্য নয়" "কেন? যতদূর আমি জানি আপনার অনেক বড়ো পরিবার তাহলে সবাইকে ছেড়ে এই গ্ৰামে কেন?" "তোমার কোনো আপত্তি আছে? তাহলে বলো" "আমার আপত্তি থাকবে কেন? এই গ্ৰামে কারো আসায় বা থাকায় কারো কোনো আপত্তি থাকে না। কিন্তু কলকাতায় আমার যাতায়াত আছে সেই সূত্রে কিছু কথা জানতে পেরেছি আপনাদের সম্পর্কে এটা জানি যে আপনি এবং আপনার ছেলে পরস্পরের খুব ঘনিষ্ঠ তাই জিজ্ঞেস করলাম যে ওনাকে ছাড়া এখানে থাকবেন" "ছেলে এখন বড়ো হয়েছে ওর নিজের সংসার হয়েছে ওকে ওর নিজের মতো থাকতে দেওয়াই ভালো" "তাই বলে এখানে একা একা থাকবেন?" "কি করবো বলো? সবই ভাগ্য এইসময় আমার ছোটো ছেলেটা যদি সাথে থাকতো" "আপনার ছোটো ছেলে? ও হ্যাঁ মনে পরেছে আপনি বলেছিলেন বটে যে সে একটা অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে" "কে বলতে পারে হয়তো বেঁচে আছে কিন্তু আমাদের উপর কোনো কারনে রেগে আছে তাই বাবা মায়ের কাছে আসছে না" অভিরূপবাবুর কথা শুনে আদিত্য থমকে গেল তার দৃষ্টি সোজা অভিরূপবাবুর দিকে, অভিরূপবাবুও সোজা তার দিকে তাকিয়ে আছেন কিছুক্ষণ কারো মুখে কোনো কথা নেই কিন্তু দুজনেই যেন নিঃশব্দে অনেক কথা বলে নিল। জমি দেখা শেষে অভিরূপবাবু মোড়লমশাইকে জানিয়ে দিলেন যে এই জমি তার পছন্দ তিনি কিনতে চান, রিসর্টে ফিরে যেতে যেতে আদিত্য অভিরূপবাবুদের নিজের বাড়িতে লাঞ্চে নিমন্ত্রণ করলো, "যদি অসুবিধা না থাকে তাহলে আপনারা সবাই আজ দুপুরের খাওয়াটা আমার বাড়িতে আমার আর পিয়ালীর সাথে খাবেন?খাবারটা অবশ্য রিসর্ট থেকেই আসবে কারণ এখানকার সবাই পিয়ালীকে এখন রান্না করতে বারণ করেছে আর আমি রান্না পারি না তাই আমাদের খাবারও রিসর্ট থেকেই আসে" "তুমি কি রিসর্টের সব গেস্টকেই নিজের বাড়িতে ইনভাইট করো?" অভিরূপবাবু জিজ্ঞেস করলেন, "না সেটা করি না সবাই তো আর আমার বাড়িতে এসে পরিচয় করে যায় না, তাদের সঙ্গে আমার সরাসরি কোনো যোগাযোগ থাকেও না"। "বেশ তাই হবে" "থ্যাংকস, আসুন"। এরপর যেকটা দিন অভিরূপবাবুরা রিসর্টে ছিলেন আদিত্যদের সঙ্গে বেশিরভাগ সময় কাটাতেন, শ্রীতমাদেবী পিয়ালীকে তার বর্তমান অবস্থায় উপযোগী অনেক পরামর্শ দিলেন দেখে মনে হচ্ছি যেন একটা সুখী পরিবার। তবে ঝামেলা হচ্ছিল পিউ আর টোবোকে নিয়ে পিউ এখন তার সুপারম্যান আঙ্কেল আর আন্টিকে ছেড়ে যেতে চায় না আর অপরদিকে টোবোও আদিত্যর পায়ে পায়ে ঘোরে তার সাথে খেলতে চায় এটা দেখে বাদশা আবার রেগে গর্জন করতে থাকে সে তার মালিকের আশেপাশে অন্য কোনো স্বজাতিকে ঘেঁষতে দিতে নারাজ শেষপর্যন্ত আদিত্যই কোনোমতে বুঝিয়ে ঠাণ্ডা করে। কদিন পরে অভিরূপবাবুরা চলে গেলে আদিত্য আর পিয়ালী আবার আগের নিস্তরঙ্গ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যায় এতে পিয়ালীর কিছুটা মনখারাপ হয়ে গেল আদিত্য ওকে কোনোমতে বুঝিয়ে খুশী রাখার চেষ্টা করে যদিও তার নিজেরও কম কষ্ট হচ্ছে না। অভিরূপবাবু যাবার আগে মোড়লকে বারবার বলে গেছেন জমিটা তিনি কিনবেন নেহাত যদি এটা না বিক্রি হয় তাহলে গ্ৰামের অন্য জমি দেখে দিতে মোটকথা তিনি এখানে বাড়ি বানিয়ে থাকবেন। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
17-07-2023, 10:49 PM
দ্বিতীয় খণ্ড ২৪তম পর্ব বেশকিছুদিন আনন্দ নিকেতনে শান্ত জীবন কাটানোর পরে শহরে এসে অভিরূপবাবুর আর মন লাগে না ইতিমধ্যে তিনি অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন কিন্তু এখন তার খালি মনে হয় এই শহর ছেড়ে গ্ৰামে ফিরে যান সেখানে প্রকৃতির কোলে নিশ্চিন্তে বসে, ঘুরে বা মাছ ধরে সময় কাটান। এবারে যেকদিন ছিলেন তার মধ্যে দুদিন ছিপ নিয়ে সত্যিই বসেছিলেন মাছ ধরতে একদিন একটা মাঝারি সাইজের রুইমাছ ধরে ছিলেন যদিও নিয়ম অনুযায়ী আবার ছেড়ে দিতে হয়েছে এতে অবশ্য তার কোনো আক্ষেপ নেই কারণ তিনি তো নিছক মনোরঞ্জনের জন্যই ধরেছিলেন, আরেকদিন অবশ্য শ্রীতমাদেবী বেশিক্ষন বসতে দেননি। শহরে ব্যানার্জী ভিলায় এসে তার এই কদিনের কথাই খালি মনে পরে আর মনে পরে ওখানে থাকা নিজের ছেলে আর বৌমার কথা ছেলের সঙ্গে তার এবং তার পরিবারের মান অভিমানের জন্য মেয়েটাকে একা থাকতে হচ্ছে তাও সেইসময় যখন তাদের মেয়েটির পাশে থাকার সবথেকে বেশি দরকার। তিনি ভেবেছিলেন যে অনি তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করবে এমনকি নিজের সন্তানের মুখও দেখতে দেবে না তাকে কিন্তু এইকদিন তার সঙ্গে কাটিয়ে তিনি এটা বুঝেছেন যে সেটা তার ছেলে করবে না, রাগ অভিমানের জন্য হয়তো নিজের পরিচয় দেবে না কিন্তু আর কোনো কিছু করবে না,তাই তিনি ঠিক করেই রেখেছেন তার বৌমার ডেলিভারীর সময় নিজে উপস্থিত থাকবেন এবং নাতি বা নাতনী যাই হোক কি দিয়ে মুখ দেখবেন সেটাও মনে মনে ঠিক করে রেখেছেন। এতদিন কলকাতা শহর থেকে দূরে থাকায় শহরের গতিময় জীবনের ছোঁয়া পাননি অভিরূপবাবু কিন্তু এখন ফিরে এসে মনে হচ্ছে শহরের জীবনের গতি বেশ কিছুটা বেড়ে গেছে পুরো শহর জুড়ে হইচই পরে গেছে তার কারণ শহরের উপরে ঘটে চলা দুঃসাহসিক ডাকাতির পাণ্ডারা ধরা পরেছে, অবশ্য ধরা পরেছে বলাটা একটু ভুল হবে কারণ ধরা দুজন পরেছে তাও গুরুতর আহত হয়ে বাকীরা পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। এই ঘটনায় পুরো শহরে আবার হুলস্থুল পরে গেছে যে মিডিয়া কদিন আগে পর্যন্ত উঠতে বসতে পুলিশের মুণ্ডুপাত করছিল তারাই এখন পুলিশের সুখ্যাতি করছে। নিজের বাড়িতে বসে টিভিতে খবর দেখছিলেন আর নিজের মনে হাসছিলেন সুপ্রতিমবাবু। মিডিয়ার এই হটাৎ পাল্টি খাওয়ায় হাসছিলেন ঠিকই কিন্তু সাথে তার মাথায় একটা চিন্তাও ঘুরছিল সেটা হলো লোকগুলো কোথায় লুকিয়ে ছিল সে খবর তিনি পেয়ে তাদের ধরার জন্য টীম নিয়ে গিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু কেউ তাদের আগাম সতর্ক করে দিয়েছিল ফলে লোকগুলো সেখান থেকে প্রায় পালিয়ে গিয়েছিল, সুপ্রতিমবাবুর মাথায় এখন এই বিশ্বাসঘাতকটাকে নিয়েই চিন্তা কারণ সেদিনের অপারেশনের খবর তার টীমের বাইরে কারো কাছে ছিল না সুতরাং বিশ্বাসঘাতকটা তার টীমের মধ্যেই আছে। আগাম খবর পেয়ে লোকগুলো পালাচ্ছিল ঠিকই কিন্তু ভাগ্য ভালো থাকায় ওদের গাড়িটার অনুসরণ করতে পারেন এবং ওদের দুর্ভাগ্য যে গাড়িটায় পালাচ্ছিল সেটার টায়ার গুলি লেগে ফেটে যায় ফলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় আর এতেই লোকগুলো জখম হয় কিন্তু তবুও ওরা ওই অবস্থাতেই কোনোমতে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলোপাতাড়ি ফায়ারিং করতে থাকে ফলে সুপ্রতিমবাবু ও তার টিমকে পাল্টা ফায়ারিং করতে হয় তিনজন অন দ্যা স্পট ডেড উপায় ছিল না সুপ্রতিমবাবু এবং তার টীমের যেভাবে ওরা গুলি চালাচ্ছিল তাতে তার টিমের তো বটেই এমনকি পবলিকেরও লাগতে পারতো। বাকীদের জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে সেখানে দুজনের মৃত্যু হয় বাকি দুজন এখনও চিকিৎসাধীন। "আপনাকে আগেই বলেছিলাম ওদের শেষ করে দিন শুনলেন না এবার দেখলেন তো কি হলো?" মনোজিৎ বাবুর উপরে রাগে ফেটে পরলেন প্রীতমবাবু, তাদের ঠিক করা লোকগুলো ধরা পরতেই আবার মিটিং বসেছে সেখানেই প্রীতমবাবুর এই গর্জন যেটা শুনে মনোজিৎ বাবু মিনমিনে স্বরে বললেন "কিন্তু পুলিশ ওদের খবর পেলো কিভাবে?" "সেটা ভাবার আগে এটা ভাবুন যে দুজন এখনও বেঁচে আছে ওরা যদি পুলিশের কাছে মুখ খোলে তখন কি হবে?" "কিন্তু ওরা তো এখনো আইসিইউ তে আছে" "ওটা যে সত্যি সেটা কিভাবে বুঝছেন? ওটা পুলিশের চালও তো হতে পারে আর সুপ্রতিম দাশগুপ্তকে যতটা চিনেছি ও ওদের দুজনকে বাঁচানোর সবরকম চেষ্টা করবে এমনকি যাতে বাইরে থেকে কেউ ওদের ক্ষতি না করতে পারে তার ব্যাবস্থাও করবে" "তাহলে এখন উপায়?" "সবসময় উপায় আমি বলবো কেন? আপনিও কিছু ভাবুন" "আসলে প্ল্যান তো সবসময় আপনার মাথা থেকেই বেরোয়" মনোজিৎ বাবু কথা দিয়ে তৈলমর্দন করতে থাকেন প্রীতমবাবুকে খুশী করার অভিপ্রায়ে "সেই কবে থেকে আমাদের পরিচয় কত কাজ একসাথে করেছি সবসময় প্ল্যান আপনিই করেছেন এমনকি..." "এমনকি?" "অনিকেতকে মারার প্ল্যানটাও যে আপনারই করা এটা আর কেউ না জানুক আমি তো জানি, অবশ্য কাজটা নিজে করেননি করিয়েছেন আমার মেয়ে আর অরুণাভকে দিয়ে" "অনিকেতকে সরানোর দরকার হয়ে পরেছিল" "সেটা তো জানি ছেলেটা আপনার অনেক গোপন কথা জেনে ফেলেছিল তাই ওকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দিলেন তবে পরে মৌমিতা আর অরুণাভকে ব্ল্যাকমেইল করছেন কেন বলুনতো অন্তত আমার মেয়েটাকে ছাড় দিন" "অরুণাভ আর আপনার মেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছিল তাই ওটার দরকার ছিল কিন্তু এখন ওসব কথা ছাড়ুন যেটা দরকার সেটা কি করবেন ভাবুন" "আপনিই বলুন না" "আমার কথা শুনলে আজ এই দিনটা দেখতে হতো না" "আহা পুরনো কথা ছাড়ুন না আর বলেছিলাম তো ওদের তখন মারলে ওদের লোকজন আমাদের ছাড়তো না" "কিন্তু এখন ওদের শেষ করতেই হবে নাহলে আমরা ফেঁসে যাবো" "কিন্তু করবেন কিভাবে?" "ঠিক আছে আমি ভাবছি আগে হাসপাতালের পরিস্থিতিটা দেখতে হবে" "আর অভিরূপ ব্যানার্জী?" "অভিরূপ ব্যানার্জীর কি?" "তিনি তো এখনো বেঁচে আছেন" "জানি বারবার বেঁচে যাচ্ছে ভাগ্য আছে বলতে হবে মাঝখানে কিছুদিন কোথায় গায়ের হয়ে গেল কেউ বলতেই পারলো না" "মানে? কাউকে বলে যায়নি?" "না, বাড়ির কেউ জানতো না" "কিন্তু এবার তো ফিরে এসেছে" "হ্যাঁ, এবার আর বাঁচবে না তবে আগে নিজেদের গলা বাঁচাতে হবে লোকদুটো যদি মুখ খোলে তাহলে সুপ্রতিম দাশগুপ্ত আমাদের ছাড়বে না তখন কেউ আমাদের বাঁচাতে পারবে না" "আপনিই প্ল্যান করুন আমি সাথে আছি"। রাগে হাতের খবরের কাগজটা ছুঁড়ে ফেললেন সুপ্রতিম দাশগুপ্ত রাগের কারণ আবার মিডিয়ার পাল্টি খেয়ে পুলিশকে গালমন্দ করা না বরং নিজেদের ব্যার্থতায়। অনেক চেষ্টা করেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই ধৃত ডাকাতদলের সদস্যকে বাঁচানো সম্ভব হয় নি গতকাল রাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে আর সেই সঙ্গে এদের পিছনে থাকা অপরাধের মেইন ষড়যন্ত্রী আবার পুলিশের হাত থেকে বেঁচে গেছে এবং এটা নিয়েই মিডিয়া পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে বিঁধেছে, এবং যদি সুপ্রতিমবাবুর অনুমান সত্যি হয় এবং সেই খবর মিডিয়ার কাছে পৌঁছায় তাহলে তারা পুলিশের অবস্থা আরও খারাপ করে দেবে। সুপ্রতিমবাবুর অনুমান এই দুজনকে হত্যা করা হয়েছে যাতে তারা পুলিশের কাছে মুখ খুলতে না পারে সেইজন্য দুটো বডির পোস্টমর্টেম করতে পাঠিয়েছেন রিপোর্ট চলে এলে বোঝা যাবে তার অনুমান সঠিক না ভুল। যদি সঠিক হয় তাহলে শুধু মিডিয়া নয় চিন্তার আরও কারণ রয়ে যাবে কারণ সেক্ষেত্রে বলতে হয় শুধু পুলিশ ডিপার্টমেন্টেই নয় হাসপাতালের যে সকল ডাক্তার এবং স্টাফদের ওই দুজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যেই কেউ এই কাজটি করেছে অর্থাৎ বিশ্বাসঘাতক সেখানেও রয়েছে, কিন্তু কথা হলো তাদের চিহ্নিত করবেন কিভাবে?। "কি ব্যাপার কমিশনার এত চিন্তা কিসের?" হটাৎ এই প্রশ্নে সুপ্রতিমবাবুর ভাবনায় ছেদ পরে তিনি তাকিয়ে দেখেন স্বর্ণেন্দু বাবু প্রশ্নটা করেছেন এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন অভিরূপবাবু। দুজনেই এখন এই বাড়ির পরিচিত মুখ তাই কারোরই ভিতরে আসতে বাধা নেই সেই কারনেই যে দারোয়ান এদের আটকায়নি এটা সুপ্রতিমবাবুর বুঝতে বাকী রইলো না অবশ্য তিনিও তো বলে দেননি যে পরিচিত কেউ এলেও তাকে আটকাতে, সুপ্রতিমবাবু হালকা স্বরেই দুজনকে আহ্বান জানালেন, "আসুন মিস্টার ব্যানার্জী, আসো স্বর্ণেন্দু বসো তারপর বলুন আপনার শরীর এখন কেমন মিস্টার ব্যানার্জী?" "এখন আগের থেকে অনেক বেটার, আপনি ভালো আছেন? আপনার মেয়ে কেমন আছে?" "আমাদের পুলিশদের আর ভালো থাকার জো কোথায় বলুন প্রতিদিনই মিডিয়া ছিঁড়ে খাচ্ছে আমাদের" "মিডিয়ার তো কাজই ওটা ওতে মাইণ্ড করলে চলে?" "ওতে নয় মিস্টার ব্যানার্জী নিজের ব্যার্থতায় খারাপ লাগছে" "কেন আপনি তো ডাকাতগুলোকে ধরেছেন" "ওরা ডাকাত ছিল না মিস্টার ব্যানার্জী ওদের মেইন উদ্দেশ্য ছিল আপনি আপনাকে মেরে ফেলা, সেটাই ওদের উদ্দেশ্য ছিল আপনার ভাগ্য ভালো সেখানে সেই ছেলেটা ছিল যে ঠিক সময়ে আপনাকে বাঁচায়" "যাইহোক ওদের তো আপনি ধরেছিলেন" "কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হলো না ওদের পিছনের মেইন মাথা অধরাই থেকে গেল... আমি সত্যিই খুবই লজ্জিত মিস্টার ব্যানার্জী" "আপনার লজ্জিত হবার কিছু হয়নি" "ব্যার্থতা আমার সহ্য হয় না আর এখন বারবার ব্যার্থতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে" "যে চেষ্টা করে সেই ব্যার্থ হয় আবার সফলও হয়, আপনি নিশ্চয়ই সফল হবেন তবে শুধু আমাকে মারতে চেয়েছে বলে ধরতে চাইবেন না ও আরও অনেক অপরাধ করেছে সেগুলোর সূত্রে ধরার চেষ্টা করুন" "এবার বুঝলাম অনির মধ্যে এই গুণটা কোথা থেকে এসেছে" সুপ্রতিমবাবু একটু হেসে বললেন, অভিরূপবাবু একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, "মানে কোন গুণ?" "এই যে নিজের আগে অন্যের কথা ভাবা, তারপর সবসময় বিকল্প রাস্তার চিন্তা করা। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রবলেম হলো অন্য কোনো রাস্তায় ধরলে উপর থেকে অর্ডার চলে আসবে ছেড়ে দেওয়ার জন্য" "তুমি কবে থেকে উপরের লোকেদের অর্ডার মানতে শুরু করলে সুপ্রতিম?" স্বর্ণেন্দু বাবু প্রশ্ন করেন। "কি করবো বলো মাঝে মাঝে মানতে হয়" "সেইজন্যই বললাম অন্য রাস্তা দেখতে" অভিরূপবাবুর কথায় সুপ্রতিম বাবু একটু অবাক হন অভিরূপবাবু বলতে থাকেন "আমার উপরে হামলা এই কেসে ধরলে বোন এসে হাতে পায়ে ধরবে কান্নাকাটি করবে সেক্ষেত্রে হয়তো আমি ক্ষমা করে দিলেও দিতে পারি কিন্তু যদি অন্য কেসে ধরেন তাহলে তো আমার ক্ষমা করার প্রশ্নই আসছে না" "তার মানে আপনি বলছেন যদি অন্য কোনো ক্রাইমের সূত্রে ধরি তাহলে আপনি নিজের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ছাড়িয়ে নেবেন না?" "আমি আর বেশিদিন কলকাতা শহরে থাকবো না সুপ্রতিমবাবু" "থাকবেন না মানে? কোথাও যাচ্ছেন?" "হ্যাঁ তবে তার আগে একটা সত্যি জানতে চাই" "কি?" "আমার অনির সাথে হওয়া দুর্ঘটনায় আমার বড়ো ছেলে অর্থাৎ অরুণাভর হাত আছে কি না?" "মিস্টার ব্যানার্জী সেটা এখন জানা অসম্ভব এক যদি না সেই ঘটনার সাথে জড়িত কেউ সেকথা স্বীকার করে আর অরুণাভ বা তার স্ত্রী কেউই একথা স্বীকার করবে বলে মনে হয় না" "কিন্তু অনি তো বলতেই পারে" "মিস্টার ব্যানার্জী যদি আপনার ধারণা সত্যি হয় যে ওই ছেলেটা আদিত্য তাইতো? ওই অনিকেত তাহলে ও কি বলবে? আপনার কি মনে হয়? যে ছেলে এতবছর সত্যি লুকিয়ে দূরে থাকলো, বেঁচে থাকা সত্ত্বেও নিজেকে সবার কাছে মৃত করে রাখলো সে সব কথা এখন প্রকাশ করবে?" "ছেলেটার মনে অনেক রাগ আর অভিমান জমে আছে কিন্তু সেটা আমাদের বিরুদ্ধে আপনার বিরুদ্ধে নয় আপনি কথা বললে হয়তো সব বলতেও পারে" "আপনি জানেন ও কোথায় আছে?" "হ্যাঁ ও নারায়ণতলা গ্ৰামে থাকে" "কোথায় থাকে?" "নারায়ণতলা গ্ৰামে, ঘটকপুকুর মালঞ্চ ছাড়িয়ে ওদিকে একটা গ্ৰাম আছে ওখানে থাকে" "আপনি দেখেছেন ওকে?" "হ্যাঁ, ওখানে আনন্দ নিকেতন নামে একটা রিসর্ট আছে সেখানেই গিয়েছিলাম রেস্টে এবং ওখানেই ওর সাথে দেখা হয়" "স্বীকার করেছে যে ও অনিকেত?" সুপ্রতিমবাবুর স্বরে উত্তেজনা স্পষ্ট। "না, সেইজন্যই তো বলছি আপনি একবার গিয়ে কথা বলে দেখুন না" "যদি আপনার অনুমান সত্যি হয় তাহলে তো যেতেই হবে একবার ওহ ভালো কথা আপনার ছেলে অরুণাভ লোক লাগিয়েছিল আপনার উপরে হামলাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য" "কি বলছো সুপ্রতিম?" "ঠিকই বলছি স্বর্ণেন্দু" "তুমি জানলে কিভাবে?" "যাদের লাগিয়েছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের ইনফর্মার হয়েও কাজ করে তারাই বলেছে" "কিন্তু ও ওদের খোঁজ করছিল কেন?" "সেটা তো উনিই বলতে পারবেন প্রতিশোধ হতে পারে আবার অন্য কারনও হতে পারে তবে প্রতিশোধ বলেই মনে হচ্ছে"। অভিরূপবাবু চুপ করে শুনছিলেন সুপ্রতিমবাবু বলতে থাকেন "কিছু মনে করবেন না হয়তো অরুণাভর মধ্যে বাবার জন্য ভালোবাসা এখনো রয়ে গেছে কিন্তু ক্রাইম উনিও কম করেননি নেহাত ব্যানার্জী পরিবারের ছেলে তাই পুলিশ ওর গায়ে হাত দেয়নি" "জানি সুপ্রতিম বাবু কিন্তু তাই বলে নিজের ভাইকে মারার চেষ্টা করবে? এটা আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না" "আমি তো একবারও বলিনি এটা সত্যি, আমি বলেছিলাম ওটা আমার অনুমান সেটা সত্যি নাও হতে পারে সেইজন্যেই আমি তখন তদন্ত করতে চেয়েছিলাম" "ভুল হয়ে গেছে সুপ্রতিমবাবু,বড্ড ভুল হয়ে গেছে আর তার শাস্তি এখন পাচ্ছি যতই আদিত্য সেজে থাকুক অনির চোখের দিকে যখন তাকালাম তখন যেন স্পষ্ট শুনতে পেলাম ও বলছে 'বাবা তুমি দাদাকে বেশী ভালোবেসেছো তাই তুমি ওকে নিয়েই থাকো আমি দূরে সরে গেলাম' বিশ্বাস করুন আমি বলতে চেয়েছি যে আমি তোদের দুজনকেই ভালোবাসি কিন্তু বলতে পারিনি" অভিরূপবাবু মাথা নীচু করে রইলেন স্বর্ণেন্দু বাবু কাঁধে হাত দিয়ে এবং সুপ্রতিমবাবু অভিরূপবাবুর হাত ধরে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করলেন। মনোজিৎ বাবুর বাড়িতে আজ রাতে পার্টি হচ্ছে সাফল্যের পার্টি। পুলিশ ডিপার্টমেন্টে থাকা নিজেদের লোক এবং হাসপাতালের স্টাফকে টাকা দিয়ে দুজনকে শেষ করে দিয়েছেন সেইজন্যই পার্টি কিন্তু সেখানেও নিজের দীর্ঘদিনের ক্রাইম পার্টনার প্রীতমবাবুকে একটু গম্ভীর ও চুপচাপ দেখে মনোজিৎবাবু একটু অবাক হন, "আপনার কি হয়েছে বলুন তো? এখনও চুপচাপ কেন? কাজ তো হয়ে গেছে পুলিশ বা আপনার ওই সুপ্রতিম দাশগুপ্ত আর আমাদের টিকিও ছুঁতে পারবে না" "আপনি সুপ্রতিম দাশগুপ্তকে এখনো চেনেননি আপনি কি ভেবেছেন ও বুঝতে পারবে না যে এটা ইচ্ছাকৃত খুন? ও ঠিক তদন্ত চালিয়ে যাবে" "আপনার মনে এত ভয় সেটা তো জানা ছিল না?" "ভয় নয়" প্রীতমবাবু গর্জে উঠলেন "ভয় নয়, সতর্কতা" "তাহলে এবার কি করবেন?" "দেখছি কি করা যায়" "ওহ ভালো কথা খবর শুনেছেন?" "কিসের?"প্রীতমবাবু একটু অবাক হন। "সেকি মশাই আপনি ওই বাড়িতে থাকেন আর খবর শোনেননি?" "কি খবর সেটা তো বলবেন?" "আপনার শালাবাবু অর্থাৎ অভিরূপ ব্যানার্জী জমি কিনে সেখানে বাড়ি বানাচ্ছে, বউকে নিয়ে ওখানে চলে যাবে" "হোয়াট! একথা আপনাকে কে বললো?" "আমার মেয়ে মৌমিতা বলেছে" "ও কিভাবে জানলো? অভিরূপ ব্যানার্জী বলেছে?" "অভিরূপ ব্যানার্জী ছেলেকে বলেছে তাও বলতে চায়নি অরুণাভ কোর্টে দেখে ফেলে তা বাড়িতে এসে জিজ্ঞেস করলে তখন বলেন মৌমিতা লুকিয়ে শুনেছে" "কোথায় যাচ্ছে কিছু জানতে পেরেছে?" "না সেটা এখনও জানতে পারেনি। আপনি কিছুই জানেন না এ ব্যাপারে?" "না, লোকটা যে তলে তলে আরো কি কি করছে কে জানে?" "তাহলে এবার ওকে শেষ করার প্ল্যান করুন" "এখনই না, এখন পরিস্থিতি একটু শান্ত হতে দিন তারপর" "কিন্তু তখন তো পাখি হাওয়া হয়ে যাবে" "যাবে আর কোথায়? আশেপাশেই কোথাও থাকবে নিশ্চয়ই কিন্তু একটা জিনিস আমি খেয়াল করেছি" "কি জিনিস?" "মাঝখানে কোথায় একটা ঘুরতে গিয়েছিল জানেন তো?" "হ্যাঁ ওই স্বর্ণেন্দুরাও গিয়েছিল কিন্তু কোথায় সেটা বলেনি" "হ্যাঁ, ওখান থেকে আসার পরে একটু বদলে গেছে" "কিরকম?" "সেটা বলে বোঝানো যাবে না কথাবার্তা হাবভাব ব্যবহার পাল্টে গেছে এমনকি অরুণাভর সঙ্গেও ব্যবহার পাল্টে গেছে" "কি কারন আন্দাজ করতে পারেন?" "না তবে আমাদের সাবধানে থাকতে হবে ইদানিং সুপ্রতিম দাশগুপ্তর সাথে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে, কি কথা হচ্ছে জানা নেই তাই সাবধানে থাকাই ভালো। সময় কারো জন্য থেমে থাকে না সে নিজের মতো নিজের গতিতে এগিয়েই চলে। অভিরূপবাবুরা আনন্দ নিকেতন ছেড়ে চলে যাবার পরে বেশ কিছুদিন কেটে গেছে, প্রথম প্রথম পিয়ালী কিছুটা মনমরা হয়ে থাকতো এখন আবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। আদিত্য তার মনমরা থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে কিছু বলতে চায় না সে নিজেও তো বোঝে যে আদিত্যরও কম কষ্ট হচ্ছে না কিন্তু এখন এই সংসার শুধু তাদের দুজনের আর তাদের আগত সন্তানের, সবকিছু থেকেও তাদের কেউ নেই শ্বশুর শাশুড়ি থেকেও তারা নেই, অবশ্য তারা বলেছেন যে খুব তাড়াতাড়ি এখানে ফিরে আসবেন জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে থাকবেন, কিন্তু তবুও তার স্বামী হয়তো কোনোদিন নিজের পরিচয় দেবে না এ নিয়ে তার কোনো অভিযোগ নেই কারণ আদিত্যর এই সিদ্ধান্তের পিছনের কারনটা সে জানে। পিয়ালীর প্রেগনেন্সির যত দিন যাচ্ছে আদিত্য তত বেশী সময় কাটাচ্ছে পিয়ালীর সঙ্গে, রিসর্ট থেকে কোনো মতে কাজ সেরে যত তাড়াতাড়ি পারে বাড়িতে ফিরে আসছে আর তারপর পুরো সময়টা নিজের স্ত্রীর সাথে কাটাচ্ছে তাকে হাসিখুশি রাখতে চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষের জীবন সবসময় সোজা সরল পথে চলে না অনেক সময় হটাৎ করেই বাঁক নেয় ঠিক যেমন অনেক সময় আচমকাই বিপদ চলে আসে ঠিক তেমনই অনেক সময় অনেক মানুষও চলে আসে তাদের কেউ আমাদের শত্রু আবার কেউ পরম মিত্র। ঠিক এমনই একজন হটাৎ করেই চলে এল আদিত্যর জীবনে বা বলা ভালো ফিরে এলো। সেদিনও রিসর্টের কাজ সেরে দুপুরের একটু পরেই বাড়িতে ফিরে এসেছে, এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়েদেয়ে দুজনেই ভাতঘুম দিয়েছে তারপর বিকেলে নিজেদের বাড়ির চারিপাশে তৈরী বাগানের মাঝে একটা বসার জায়গায় বসে গল্প করছে এই সময়েই আদিত্যর কাছে ফোনটা এলো, "হ্যালো" "দাদা আমি থানা থেকে বলছি" "থানা থেকে? তা হটাৎ থানা থেকে আমাকে কেন?" "দাদা কলকাতা থেকে একজন এসেছেন তিনি তোমার খোঁজ করছেন" কথাটা শুনে একটু অবাক হয় আদিত্য কলকাতা থেকে এখানকার থানায় এসে তার খোঁজ কে করবে? সে জিজ্ঞেস করে "তুমি ঠিক বলছো আমাকেই খুঁজছে তো? নাকি অন্য কাউকে?" "না দাদা তোমাকেই খুঁজছে তোমার ছবি দেখালো?" "আচ্ছা? আর কি বললো?" "কিছু না বড়োবাবুকে বললো তোমার কাছে নিয়ে যেতে" "উনি জানলেন কিভাবে আমি এখানে থাকি?" "উনি খবর নিয়েই এসেছেন, কলকাতার লালবাজার থেকে এসেছেন অনেক উঁচু পোস্টের অফিসার তাইতো বড়োবাবু কিছু বলতে পারলেন না তবে আমাকে ইশারা করে তোমাকে জানাতে বললেন" "লালবাজারের অফিসার, নামটা কি জানো?" "হ্যাঁ দাদা সুপ্রতিম দাশগুপ্ত" I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
17-07-2023, 11:48 PM
Next update kobe pabo dada ? Taratari dio
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
18-07-2023, 12:07 AM
প্রতিবারের মতো অসাধারন হয়েছে । আমার একটা প্রশ্ন আছে সিংহ রায়ের পরিবারের সাথে কি আর আদিত্যর দেখা হবেনা এই দুটি পর্ব পড়তে পড়তে আমার মাথায় এই প্রশ্নটা আসে তাই জিজ্ঞেস করলাম।
আরেকটা কথা যে জমিটা অভিরুপ বাবু কিনবেন ঐটা কি অতিন্দ্র সিংহ রায়ের মানে গ্রামের মোড়ল যেটা বললো জমির মালিক এখানে থাকে না আমি তখন ভাবলাম এটা সিংহ রায় পরিবারের হতে পারে এটা আমার just ধারণা। যাইহোক like & Repu done —͟͟͞͞?⁀➷ᏁᎪᎥm_Ꮓ ᭄✭✭
"The End Is The Beginning And The Beginning Is The End."
18-07-2023, 12:17 AM
খুব সুন্দর দুটো আপডেট ৷ পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় রইলাম ৷ like & repu added.
18-07-2023, 12:48 AM
(17-07-2023, 11:27 PM)InciBinsy Wrote: বরাবরের মতই চমৎকার। চালিয়ে যাও।ধন্যবাদ (17-07-2023, 11:48 PM)Patrick bateman_69 Wrote: Next update kobe pabo dada ? Taratari dioসব তো আজকে দিলাম এবার লেখা হলে দেবো। (18-07-2023, 12:07 AM)Naim_Z Wrote: প্রতিবারের মতো অসাধারন হয়েছে । আমার একটা প্রশ্ন আছে সিংহ রায়ের পরিবারের সাথে কি আর আদিত্যর দেখা হবেনা এই দুটি পর্ব পড়তে পড়তে আমার মাথায় এই প্রশ্নটা আসে তাই জিজ্ঞেস করলাম।প্রথম ও দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর: ভবিষ্যতে কি হবে সেটা কে বলতে পারে? দেখা যাক কি হয়। (18-07-2023, 12:17 AM)bad_boy Wrote: খুব সুন্দর দুটো আপডেট ৷ পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় রইলাম ৷ like & repu added. ধন্যবাদ I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
|
« Next Oldest | Next Newest »
|