08-06-2023, 07:44 PM
[img]<a href=[/img]" />
প্রথম পর্ব
শিমুলপুর স্টেশনে শুভ যখন নামলো তখন সূর্যদেব মাথার ওপরে বিরাজমান। সেই সকাল ছটায় হাওড়া থেকে প্যাসেঞ্জার ট্রেন ধরে এই দুপুর 12 টা নাগাদ নামলো। সকালে ট্রেনে তুলে দিতে এসেছিল শুভর বাবা। শুভর এটাই প্রথম একা একা ট্রেন যাত্রা। তাও আবার এতটা রাস্তা। মা বাবার একটু চিন্তা হয়েছিল বইকি। তাও শুভ এবার বড় হয়েছে। একা একা বাইরে তো যেতেই হবে এবার থেকে। তাই অনেক অনুরোধের পর বাড়ি থেকে ওকে ছাড়তে রাজি হয়েছে। তাও গন্তব্য মাসির বাড়ি সেই জন্যেই। নাহলে শুভর বাবা সুবীর বাবু ওর সাথেই আসতো।
শুভর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা এক সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে। কথা ছিলো পরীক্ষা হলেই এবার অনু মাসির বাড়ি শিমুলপুর বেড়াতে যাবে। আজ পর্যন্ত একবারও মাসির বাড়ি যাওয়া হয়নি। তার কারন পড়াশোনার চাপ। এবার মাসীও বার বার করে বলেছে শুভকে যাওয়ার জন্যে। অনু মাসী ওর নিজের মাসী না। শুভর মা পাপিয়া দেবীর খুড়তুত বোন। নিজের কোনো মাসি না থাকায় অনু মাসিকেই ছোট থেকে নিজের মাসির মত জেনে এসেছে শুভ। তবে অনুর বিয়ের পর থেকে ও খুব বেশি আর আসতে পারেনি শুভ দের বাড়িতে। এত গুলো বছরে হাতে গোনা কয়েকবার ই নানা অনুষ্ঠানে শুভর দেখা হয়েছে অনু মাসির সঙ্গে। তবে ফোনে যোগাযোগ বরাবরই আছে।
শুভকে একা না ছাড়তে চাওয়ার একটা কারণও অবশ্য আছে। তা হলো, ছোট থেকেই শুভর বোর্ডিং থেকে পড়াশোনা। এর কারণ, সুবীর বাবু আর পাপিয়া দেবীর একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা। ছেলে এমনি কলেজে পড়লে কুসঙ্গে পড়ে খারাপ হয়ে যাবে। তাছাড়া সুবীর বাবু আর পাপিয়া দেবী দুজনেই চাকরি করেন। বাড়িতে শশুর শাশুড়ির ভরসায় রাখলে ছেলে মানুষ হবে না। তাই এই ব্যবস্থা। ক্লাস ফাইভ থেকে এই টুয়েলভ অব্দি শুভ বোর্ডিং এই কাটিয়েছে। এত গুলো বছর বোর্ডিং এর কড়া শাসনে কাটানোর ফলে শুভর আর পাঁচটা ছেলের মত সামাজিক দক্ষতা গড়ে ওঠেনি। একদম শান্ত শিষ্ট গোবেচারাটি হয়েই রয়ে গেছে। এই বোর্ডিং কলেজের চাপেই কথাও বেড়াতে যেতে পারেনি শুভ। যদিও এতদিনে সুবীর বাবু আর পাপিয়া দেবী বোর্ডিং এ পড়ার এই খারাপ দিকটি সম্বন্ধে অবগত হয়েছেন। এবং নিজেদের ভুল কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পেরেছেন। তাই শুভ যখন একা মাসির বাড়ি যাবার জন্যে এবার জেদ ধরলো তখন তারা প্রথমে কিছু আপত্তি করলেও এর গুরুত্ব উপলদ্ধি করে শেষে মত দিলেন।
স্টেশনে নেমেই কথা মত মেসোমশাই কে ফোন করলো শুভ। মেসো বিভাস পাল স্টেশনের বাইরে অপেক্ষা করছিল। খুব তাড়াতাড়িই শুভর সাথে তার দেখা হয়ে গেলো। বিভাস শুভকে নিয়ে বাইকে করে যখন বাড়িতে এসে পৌঁছল তখন ঘড়িতে সাড়ে বারোটা। শিমুলপুর জঙ্গলে ঘেরা একটা ছোট ব্লক টাউন। যদিও সবই এখন পাকা বাড়ি, তবুও যেহেতু পঞ্চায়েত এর অধীনে আছে তাই এটাকে গ্রাম বলা চলে। আসার পথে শুভ রাস্তার দুদিকে শাল, সেগুনের সারি আর কৃষ্ণচূড়া গাছের আগুন রাঙা রূপ দেখে মোহিত হয়ে যাচ্ছিল বার বার। আজ রবিবার বলে রাস্তা ঘাটও বেশ ফাঁকা। তাই বেশি সময় লাগলো না মাসির বাড়ি পৌঁছতে।
অনুপমা শুভর পথ চেয়েই বসেছিল। প্রায় পাঁচ বছর পর বোনপো কে দেখবে সে। এটা সেই সময়কার কথা যখন ইন্টারনেট এর এত রমরমা থাকেনি। সোশ্যাল মিডিয়া সবে গজাতে শুরু করেছে। তবে বেশিরভাগ মানুষই তার খবর জানতো না। যোগাযোগ যা ছিল টা শুধু ভয়েস কলের মাধ্যমেই। ফোন গুলোও এত স্মার্ট হয়নি। শুভ এসে পৌঁছতেই খুশিতে সীমা দেবীর মনটা ভরে উঠলো। শুভ এসেই মাসীকে একটা প্রণাম ঠুকে দিলো। মেসো কে প্রণাম টা সে স্টেশনেই সেরে নিয়েছে। অনু খুশির আবেগে শুভকে জড়িয়ে ধরল। বলল -
- -কতো বড় হয়েছিস রে বাবু। একেবারে লোক হয়ে গেছিস তো। গোঁফের রেখা দেখা দিয়েছে দেখছি। লম্বায় তো আমার সমান হয়ে গেছিস।
শুভ লজ্জা পেয়ে বললো - কই আর বড় হলাম মাসী, তোমার কাছে তো সেই ছোটটাই আছি।
- -তা বটে। এই বলে অনু হেসে শুভর কপালে একটা চুমু খেয়ে নিল।
এরপর কুশল বিনিময় আর নানা খবরাখবর আদান প্রদানের পালা চলতে লাগলো বেশ কিছুক্ষন। বিভাস বলল - আরে ওকে এবার একটু ফ্রেশ হতে দাও। গল্প করার জন্যে তো অনেক দিন পড়ে আছে। সব গল্প কি এখনই শেষ করে ফেলবে নাকি। ও সেই সকালে কখন বেরিয়েছে। খিদেও তো পেয়েছে।
অনু জিভ কাটল। - ইস, দেখেছিস আমার কেমন আক্কেল। তুই যা স্নান করে নে। আমি ততক্ষন খাবার গুলো রেডি করি। তেল সাবান গামছা সব বাথরুমেই আছে।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া বেশ ভালই হলো। খাসির মাংস, সাথে রকমারি পদ। সব অনু নিজে হাতে রান্না করেছে। তার সাথে চাটনি মিষ্টি দই। শুভ পেট ভরে খেলো। খাওয়া দাওয়া হলে অনু বলল - এবার একটু ঘুমিয়ে নে। এতটা জার্নি করে এলি। ক্লান্ত লাগছে নিশ্চই।
ক্লান্ত অবশ্য লাগছিল শুভর। জার্নি তো বটেই, তার সাথে পেট ভর্তি করে খেয়ে নিয়েছে। বেশ ঘুম ঘুম পেলো শুভর। নিজের রুমে গিয়ে ও বিছানায় টান টান হয়ে শুয়ে পড়ল। নিদ্রা দেবীর আগমন ঘটতেও বেশি বিলম্ব হলনা।
অনু আর বিভাস এর পাঁচিল দিয়ে ঘেরা দুই কামরার একতলা ছোট্ট বাড়ি। সামনে বাগান। তাতে নানা রকম ফুল আর সবজি চাষও করেছে। পাঁচিলের ভেতরে দুটো বড় বড় আম গাছ পুরো জায়গাটাকে ছায়ায় ঢেকে রেখেছে। চারপাশে একটু দূরে দূরে বাড়ি ঘর। বাড়ির এসে পাশেও সোনাঝুরি আর ইউক্যালিপটাস গেছে ভরা। মনোরম পরিবেশ। দুটো রুমের একটা তে অনু আর বিভাস থাকে। আর একটা তে শুভ কে থাকতে দিয়েছে। বড় বাড়ির অবশ্য দরকার পড়েনি ওদের। কারণ বিয়ের এত বছর পরেও ওদের কোনো সন্তান হয়নি। যে ঘরটায় এখন শুভ আছে সেটায় থাকে মিনতি মাসী। এখন সে নেই। মিনতি মাসী অনুর সারা সপ্তাহের সঙ্গী। ঠিক কাজের লোক বলতে যা বোঝায় তেমন নয়। অনেকটা হেল্পিং হ্যান্ড এর মত। তাছাড়া বাড়িতে অনুর একা থাকাটা ঠিক না। যদিও গ্রামের কোনো বদনাম আজ পর্যন্ত কেউ শোনেনি। তবে কখন কি দরকার পড়ে, বা হটাৎ যদি শরীর খারাপ হয়, এইসব কারণেই মিনতি মাসীকে রাখা। মিনতি মাসী এই গ্রামেতেই থাকে। সারা সপ্তাহ এখানে থেকে শনিবার বাড়ি যায়। আবার সোম বার ফিরে আসে। হাতে হাতে অনুকে সাহায্য করে। শুভ আসবে বলেই এই কদিন মিনতি মাসির ছুটি। মিনতি মাসিও বেশ কদিনের ছুটি পেয়ে মেয়ের বাড়ি বেড়াতে চলে গেছে।
বিভাস সদর শহরে একটা বেসরকারি অফিসে চাকরি করে। রোজ যাতায়াত করা সম্ভব হয়না বলে ওখানেই একটা মেসে ভাড়া থাকে। শনি বার অফিস করে রাতে বাড়ি ফেরে, রবিবার থেকে সোমবার ভোরে বেরিয়ে যায়। বিভাস বাবুর যা মাইনে তাতে দুজনে শহরে বাড়ি ভাড়া করে থাকা সম্ভব। তবে সমস্যা হলো অনু এখানে একটা ছোটদের নার্সারি কলেজে পড়ায়। তাই অনু ওখানে চলে গেলে এই চাকরিটা ছাড়তে হবে। এই নিঃসন্তান নিঃশঙ্গ জীবনে এই কলেজটা অনুর কাছে অনেক কিছু। বিভাসও কোনোদিন সেভাবে বলেননি অনুকে ওখানে যাওয়ার জন্য।
শুভ যখন ঘুম থেকে উঠলো তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বিছানা ছেড়ে উঠে বাইরে বেরিয়ে এলো ও। দেখলো বারান্দায় মাসী আর মেসো বসে চা খাচ্ছে। শুভকে দেখেই অনুর মুখে হাসি ফুটে উঠলো। বললো -
- -আয় বাবু । বোস।
শুভ মাসির পাশের চেয়ারটায় বসে পড়ে বললো -
- -আমাকে ডাকোনি কেনো মাসী। সন্ধ্যা হয়ে গেলো। এতক্ষণ ঘুমাইনা আমি বাড়িতে।
অনু হেসে বললো -
- -এখানে আর বাড়ির নিয়ম চলবে না। এই কদিন একদম নিয়ম ছাড়া মজা করে নে। তাছাড়া তুই গভীর ভাবে ঘুমাচ্ছিস দেখে আর ডাকলাম না।-না গো। দুপুরে তো ঘুমোতেই পেতাম না। আর সকালেও বেশি ঘুমোলে মনে হয় এই বুঝি ওয়ার্ডেন এসে মাথায় গাট্টা দিলো। আজ অনেকদিন পর দুপুরে ঘুমোলাম। - ঘুম জড়ানো গলায় শুভ বললো।
অনু মুখটা একটু করুন করে বললো -
- -সে তো জানি বাবু। ওই বোর্ডিং জিনিসটা আমার একদম পছন্দ না। অত আবার কি রে বাবু। বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়ে গুলোর ওপর অত অত্যাচার করার কি আছে। আমি তোর মা বাবা কে বারন করেছিলাম। কিন্তু তারা তো……. যাকগে সেসব। এবার তো তুই ফ্রি। এবার কলেজে পড়বি। বাইরে ঘুরবি। আর এরকম গোবেচারা হয়ে থাকবি না।
শুভ মিথ্যে রাগ দেখিয়ে বললো - আমি মোটেই গোবেচারা নই। আমি অনেক স্মার্ট।
অনু হেসে উঠলো। আলতো করে শুভর গাল টিপে দিয়ে বললো -
- -ওমা তাই? বেশ দেখবো কেমন স্মার্ট হয়েছিস।
এবার তিনজনেই হেসে উঠলো। অনু উঠে পড়ে বললো -
- -তুই বোস। আমি তোর চা টা গরম করে আনি।
অনু চলে যেতেই বিভাস বললো -
- -তা শুভ বাবু, আমি তো কাল ভোরেই চলে যাবো। তোমার মাসির সাথেই এদিক ওদিক ঘুরে দেখো। তোমার মাসির আবার সকালেই কলেজ। যদিও ১০ টা তেই ওর ছুটি হয়ে যায়। তাই সকালে এই সময়টা তোমাকে একটু একাই কাটাতে হবে।
শুভ বললো -
- -তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি পারবো একা থাকতে।
রান্না ঘর থেকে অনু বিভাস এর উদ্দেশ্যে বললো -
- -তোমাকে বললাম যে আমি এক সপ্তাহ ছুটি নিয়েছি। প্রথম থেকেই ওকে বাড়িতে একা রেখে যাই কি করে। কটা দিন একটু বুঝে শুনে নিক। তারপর নাহয় একা থাকবে।-বাঃ। তাহলে তো ভালই হলো। মাসী বোনপো তে কটা দিন গল্প করে, ঘুরে বেড়িয়ে কাটাও। চারপাশটা ঘুরে দেখো। বেশ মনোরম জায়গা কিন্তু। একটু গেলেই শাল গাছের জঙ্গল। তোমার বেশ ভালো লাগবে।
ঝিঁঝি পোকার ডাক বেশ কিছুক্ষন হলো শুরু হয়েছে। পরিবেশটাও এখন বেশ মনোরম। সুন্দর হাওয়া বইছে। বারান্দায় বাল্ব এর আলো। বাইরে অন্ধকারে বাগান টা খুব ভালো দেখা যাচ্ছে না। তবুও সেই অন্ধকারের দিকেই শুভ বিভোর হয়ে তাকিয়ে থাকলো।
অনু শুভর চা নিয়ে ফিরে এলো। সাথে নিজেদের জন্যেও আরেক কাপ করে। চা খেতে খেতে তিনজনের কথা বার্তা চলতে লাগলো। সন্ধ্যে টা এভাবেই গড়িয়ে গেল। ধিরে ধিরে ধরণীর বুকে রাত নেমে এলো।
যথা সময়ে রাতের খাবার খেয়ে নিল তিনজনে। গ্রামের দিকে মানুষ রাতে একটু তাড়াতাড়িই খেয়ে নেয়। শুভর অবশ্য তাতে সমস্যা হলো না। কারণ বোর্ডিং-এও রাতে তাড়াতাড়ি খেয়ে নিতে হতো। কাল ভোরে বিভাস বেরিয়ে যাবে। তাই সবাই তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বে। শুভ শুয়ে পড়লে অনু এলো ওর রুমে। বিছানার ধারে বসে বললো -
- -রাতে কিছু দরকার পড়লে বা অসুবিধা হলে ডাকবি কিন্তু। দরজা খোলাই থাকবে। জল দিয়ে গেলাম। আর বাথরুম গেলে সব লাইট জ্বলে যাবি।
শুভ আলতো হাসলো, তারপর মাসির একটা হাত নিজের দুহাতের মধ্যে নিয়ে বললো। -
- -চিন্তা করোনা মাসী। আমি এখন বড়ো হয়ে গেছি।
অনু বললো -
- -শরীরেই বড়ো হয়েছিস। মনের দিক থেকে এখনও ছোটই রয়ে গেছিস। নাহলে এখনও দিদি জামাইবাবু তোকে একা ছাড়তে ভয় পায়।
শুভ আর কিছু বললো না। অনুর দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো। অনুও উঠে পড়ল। দরজার কাছে গিয়ে বলল -
- -বিছানার পাশে বেড সুইচ আছে দেখ। লাইট অফ করে দে। ভালো করে ঘুমা। কাল সকালে কথা হবে।
লাইট অফ করে শুভ বালিশে মাথা রাখলো। দুপুরে ঘুমানোর ফলে রাতে আর তাড়াতাড়ি ঘুম এলো না। শুয়ে শুয়ে শুভ মাসির কথা ভাবতে লাগলো। মনে নিশ্চই কত কষ্ট মাসির। কিন্তু মুখ দেখলে বোঝা যায় না। একটা ভাই বা বোন যদি থাকতো তাহলে নিশ্চই মাসির মনে কোনো কষ্ট থাকতো না। এই নিয়ে শুভ মাকেও অনেকবার দুঃখ করতে শুনেছে। কিন্তু কেনো যে মাসী মেসোর বাচ্চা হয়নি, আর সেটা কিভাবে যে হয় সেই ব্যাপারে শুভর কোনো ধারণাই নেই। বায়োলজি ক্লাসে প্রজনন এর চ্যাপ্টার ছিলো ঠিকই। কিন্তু যৌনতা বস্তু টি যে ঠিক কি, ঠিক কি করলে শুক্রাণু আর ডিম্বাণুর মিলন ঘটে সেটা শুভর কল্পনার অতীত। এত গুলো বছর ছেলেদের বোর্ডিং এ থেকে, টিচার আর ওয়ার্ডেন এর কড়া নজরদারির মধ্যে কাটিয়ে, শুভর যৌণ চেতনা বিন্দু মাত্র বিকশিত হয়নি। বোর্ডিং এ থাকার সময় এক উচু ক্লাসের ছেলের বিছানার তলা থেকে কি যেনো বই খুঁজে পেয়েছিল ওয়ার্ডেন। শুভ ঠিক জানেনা। কিন্তু সেই বই এর জন্যেই ছেলেটিকে বোর্ডিং থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরকম পরিস্থিতিতে একটা ছেলের যেমন তৈরি হওয়ার কথা, শুভ ঠিক তেমন তৈরি হয়েছে।
শুভ ভাবলো, মাসির বয়স কতই বা হবে। ছত্রিশ। ছত্রিশেও কি মা হওয়া যায়? শুভ জানেনা। মা কে এসব ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে ভয় পায় শুভ। এসব নাকি বড়দের কথা। তবে অনু মাসী মায়ের মত রাশভারী নয়। বেশ হাসি খুশি। মাসি বোর্ডিং এ যখন ফোন করতো তখন কত কথা হতো। এত বুছর দেখা না হলে কি হবে, মনের সব কথা অনু মাসীকে খুলে বলতে না পারলে পেটের ভাত হজম হত না শুভর। মাসির কাছে কোনো ভয় নেই। মাসীকে এই ব্যাপারে সময় মত জিজ্ঞাসা করে নেবে। এই ভেবে শুভ ঘুমানোর চেষ্টা করলো।
সকালে যখন ঘুম ভাঙলো তখন ঘড়িতে সাতটা বাজে। মেসো অনেক আগেই বেরিয়ে গেছে। শুভ বাইরে এসে দেখলো মাসী বাগানে ফুল তুলছে। শুভকে দেখেই অনু বললো -
- -তুই উঠে গেছিস। দাঁড়া আমি এই পুজোর ফুল কটা তুলেই আসছি।
শুভ বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাগানের শোভা দেখতে লাগলো। অনু সদ্য স্নান করে লাল পেড়ে সাদা কাপড় পরে ডালি হাতে ফুল তুলছিলো। সদ্য স্নাত মাসীকে এই রূপে দেখে কোনো দেবীর মত মনে হলো শুভর। একটু পরে অনু ফুলের ডালি হাতে নিয়ে ফিরে এলো। বারান্দায় উঠেই একটা দৃশ্য দেখে একটু থমকে গেলো অনু। শুভ খালি গায়ে একটা গেঞ্জির হাফ প্যান্ট পরে দাঁড়িয়ে আছে। প্যান্ট এর সামনের কাপড় উচু হয়ে তাবুর সৃষ্টি করেছে। এই ব্যাপার টা শুভর কাছে একদম সাভাবিক। বাড়িতেও তো এভাবেই থাকে ও। অনু শুভর অগোচরে একটু মুচকি হাসলো। বললো -
- -এই বাবু, তুই বাথরুমে যাসনি?
শুভ দুদিকে ঘাড় নাড়ল।
- -এখনি যা। আমি পুজোটা সেরে নিই। তারপর দুজনে চা খাবো।
শুভ চলে গেলো। অনু প্রথমে হাসলেও পরে একটু চিন্তায় পড়ল। যে ছেলে এই ঘটনার গুরুত্ব এখনও বোঝে না, সে ছেলে কলেজে পড়তে চলছে। বন্ধু দের খিল্লির পাত্র হতে বেশি সময় লাগবে না এই ছেলের। কথাটা ভাবতেই আবার দিদি জামাইবাবু ওপর রাগ হলো অনুর। এত সাদাসিধা হয়ে বাঁচবে কি করে? যে কেউ খুব সহজে ওকে ব্যবহার করতে পারবে। মনের কোণে দুশ্চিন্তার মেঘ জমলো অনুর।
পুজো শেষ করে এসে অনু দেখলো শুভ ডাইনিং টেবিলে বসে খবরের কাগজ পড়ছে। অনু বললো -
- -কি রে, ঘুম ঠিক মত হয়েছে তো?
শুভ হাসি মুখ করে বললো -
- -হ্যা গো। বেশ ভালো ঘুমিয়েছি। এক ঘুম সকাল একদম।
অনু নিজের রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো -
- -আমি কাপড়টা বদলে নিই দাঁড়া।
শুভ সম্মতি সূচক ঘাড় নেড়ে আবার খবরের কাগজে মনোনিবেশ করলো। অনু দরজাটা ভেজিয়ে দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলো।
কাগজে চোখ বোলাতে বোলাতে একটা খবরে শুভর চোখ আটকে গেলো। কলকাতায় ওদের পাড়ায় কাল নাকি দিন দুপুরে এক মহিলার গলার হার ছিনতাই হয়েছে। খবরটা দেখে শুভ বেশ উত্তেজিত হয়ে উঠলো। এরকম ঘটনা কলকাতায় ইদানিং প্রায় হচ্ছে। তবে ওদের পাড়ায় এই প্রথম। খবরটা মাসীকে জানাতেই হবে। শুভ তাড়াতাড়ি উঠে কাগজ হাতেই অনুর রুমের দরজা ঠিলে ঢুকে পড়ল। তারপর উত্তেজিত গলায় বললো -
অনুর মায়া হলো শুভ কে দেখে। বোকা ছেলে টা বোঝেই না ও কি করেছে। অনু বুকের নাইটি টা বিছানায় রেখে আবার হাত দুটো পেছনে করে ব্রা এর হুক লাগিয়ে নিল। তারপর নাইটিটা তুলে মাথায় ওপর দিয়ে গলিয়ে পরে নিল। শুভ ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। অনু ওর কাছে এগিয়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো। শুভ বুঝলো না হঠাৎ কি হলো। শুভও অনুকে জড়িয়ে ধরলো। অনু বললো -
চা নিয়ে এসে ডাইনিং টেবিলে বসলো দুজনে। অনু বলল -
- -মাসী জানো আমাদের পাড়ায় কাল ছিনতাই হয়েছে।
- -উফফ বাবু তুই না। একটু বলে আসবি তো।
অনুর মায়া হলো শুভ কে দেখে। বোকা ছেলে টা বোঝেই না ও কি করেছে। অনু বুকের নাইটি টা বিছানায় রেখে আবার হাত দুটো পেছনে করে ব্রা এর হুক লাগিয়ে নিল। তারপর নাইটিটা তুলে মাথায় ওপর দিয়ে গলিয়ে পরে নিল। শুভ ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। অনু ওর কাছে এগিয়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো। শুভ বুঝলো না হঠাৎ কি হলো। শুভও অনুকে জড়িয়ে ধরলো। অনু বললো -
- -তুই কি করে কলেজে পড়বি রে শুভ।
- -কেনো, কলেজে তো ভর্তি হলেই হলো। না পড়ার কি আছে।
- -চল চা খাই।
চা নিয়ে এসে ডাইনিং টেবিলে বসলো দুজনে। অনু বলল -
- -আজ বিকালে তোকে নিয়ে একটু আশপাশ টা ঘুরে আসব।
- -আজ কি জঙ্গলে যাবে?-না। আজ আর জঙ্গলে যাব না। বাজারে আমার কিছু কেনার আছে। তুইও যাবি আমার সাথে।
ক্রমশ...