Posts: 535
Threads: 0
Likes Received: 368 in 304 posts
Likes Given: 382
Joined: Aug 2022
Reputation:
8
O dada update koi? :"(
"The greatest trick the devil ever pulled was convincing the world he didn't exist."
KaderSaimon's Official Fan Club Link: http://tiny.cc/FanClubLink
•
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
দ্বিতীয় পার্ট
১৩তম পর্ব
অত্যাধিক আলো অনেকসময় চোখে অন্ধকার নামিয়ে আনে ঠিক তেমনই অত্যাধিক ক্ষমতা বা ক্ষমতার লোভ মানুষের চোখে অন্যায়ের অন্ধকার নামিয়ে আনে তখন কোনটা উচিত আর কোনটা অনুচিত সেটা মানুষ দেখতে পায় না।
ঠিক এটাই হয়েছে চার বাপ-ব্যাটার ক্ষেত্রে অর্থাৎ প্রীতম বাবু সুশান্ত, মনোজিত বাবু এবং মনোজ। এতদিন তারা যে কত লোকের ক্ষতি করেছে কত লোকের সর্বনাশ করেছে সে বিষয়ে নিজেরাই বোধহয় ঠিক জানে না কিন্তু প্রতিবারই ব্যানার্জী পরিবারের নাম ব্যবহার করে বেঁচে গেছে কিন্তু কখনো তারা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করেনি যে তাদের এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে কেউ একদিন মাথা তুলে দাঁড়াবে।
নিজেদের বাবার ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে তাদের মতোই একই পথে পা বাড়িয়েছিল মনোজ এবং সুশান্ত, তারা ভেবেছিল যা খুশী করে বেড়াবে কিন্তু কেউ বাধা দেবে না আর আজ তারা সেই বাধাটা পেয়েছে, শুধু যে বাধা পেয়েছে তাই নয় একেবারে উচিত শিক্ষা পেয়েছে তাদের ঘরে ঢুকে তাদের গেস্টদের সামনে তাদের ঠেঙিয়ে গেছে একটা বাইরের ছেলে।
ছেলেরা মার খাওয়ায় তাদের যত না লেগেছে তার থেকেও বেশি লেগেছে দুই বাপের, তাদের এতদিনের ইগো ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এরফলে তারা চাইলে ভুল পথ ছেড়ে ঠিক পথে আসতেই পারতো কিন্তু প্রীতমবাবু আর মনোজিতবাবু সেই ধাতের লোক নয় যে তারা ঠিক পথে আসবে।
তাদের মাথায় এখন প্রতিশোধের ভাবনা ঘুরছে, প্রতিশোধ চাই তাদের শুধু তাদের ছেলেদের গায়ে হাত তোলা সেই ছেলেটা আর তার স্ত্রীর প্রতি নয় তার সাথে অভিরূপ ব্যানার্জীর বিরুদ্ধেও প্রতিশোধ চাই তাদের।
ঘটনার পরে চারজন ব্যানার্জী ভিলা ছেড়ে বেরিয়ে যায় মনোজিত বাবুর বাড়িতে যেখানে বেশীরভাগ সময়েই তাদের অনৈতিক কাজকর্মের পরিকল্পনা হয়। প্রীতমবাবু তখনও রাগে ফুঁসছেন আর ক্রমাগত বলে চলেছেন, "হুমকি দিয়েছে আমাকে হুমকি দিয়েছে, শেষ করে দেবো সবকটাকে শেষ করে দেবো, সবার আগে অভিরূপ ব্যানার্জীকে শেষ করবো"।
এই কথায় অবশ্য বাকি তিনজনেই সায় দেয়, শুধু আদিত্যর মার নয় অভিরূপ বাবুর কথাগুলোও তাদের ইগোকে তাদের অহংকে আঘাত করেছে যেটা তাদের কাছে অপমান বলে মনে হয়েছে আর অপমান হজম করার লোক এরা নয়।
মনোজিত বাবু কিছুটা শান্ত হয়ে বাকিদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আমার মাথায় একটা প্ল্যান এসেছে অভিরূপ ব্যানার্জী কে পৃথিবী থেকে সরানোর"
প্রীতমবাবু এবার তার দিকে তাকান মনোজিত বাবু বলে চলেন "একটা প্ল্যান যেটা ঠিকভাবে এক্জিকিউট করতে পারলে অভিরূপ ব্যানার্জীকেও সরানো যাবে আর আমাদের কেউ সন্দেহও করবে না"।
"কি প্ল্যান সেটা বলুন?"প্রীতমবাবু জিজ্ঞেস করেন।
"হাবড়া, অশোকনগর, বনগাঁ এইসব এলাকায় কয়েকজনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে যারা এইকাজে রীতিমতো এক্সপার্ট কিন্তু তাদের দামটা একটু বেশি"।
"দাম নিয়ে চিন্তা করবেন না কিন্তু এতে প্ল্যানের কি আছে? আর অভিরূপ ব্যানার্জীর কিছু হলে পুলিশ ছেড়ে দেবে ভেবেছেন? তারা পুরো রাজ্য, দরকার পরলে অন্য রাজ্যেও তদন্ত চালাবে"।
"সেটাই তো দরকার"।
"মানে?
"পুলিশ তদন্ত করছে, খুনিদের বা খুনিকে খুঁজছে কিন্তু কেসটা যদি খুন না হয়ে অন্য কিছুতে ডাইভার্ট হয়"।
"কি বলতে চাইছেন খুলে বলুন"
"তাহলে বলছি শুনুন"
মনোজিত বাবু বলতে শুরু করেন আর শুনতে শুনতে এই প্রথম অনেকক্ষণ পরে প্রীতমবাবুর ঠোঁটের কোণায় হাসি দেখা যায়, নিজের কথা শেষ করে মনোজিত বাবু জিজ্ঞেস করেন "কেমন মনে হয়?"
"ভালো তবে কয়েকটা জায়গায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে"
"যেমন?"
প্রীতমবাবু এবার বলতে শুরু করেন বাকিরা শুনতে থাকে।
"চমৎকার, ওয়াণ্ডারফুল" প্রীতমবাবুর কথা শেষ হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন মনোজিত বাবু, তাহলে এটাই ঠিক রইলো আমি আজ থেকেই অভিরূপ ব্যানার্জীর উপরে নজর রাখার জন্য লোক ঠিক করছি যে ওনার উপরে নজর রাখবে আর ডেইলি শিডিউল আমাদের জানাবে, ততদিন আমাদের প্রাথমিক কাজটা সেরে রাখি"।
"হুমম, তাই করুন এবারে অভিরূপ ব্যানার্জীকে মারতেই হবে নাহলে আজকের অপমানের আগুন আমার বুক থেকে নিভবে না"।
"শুধু আপনার নয়,আমাদের বলুন, আমাদের সবার বুকের ভিতর আগুন জ্বলছে, আগে অভিরূপ ব্যানার্জী তারপর ওই ছেলেটা আর ওর উকিল বউ, সবাইকে শেষ করবো"।
রাতে ডিনারের পরে বিছানায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের একটা বই পড়ছিল আদিত্য, এমনিতে শৈলেশবাবুর বাড়িতে নিজেদের সংসার শুরু করার পরে এখানেই রান্না হয়, পিয়ালীই করে, কিন্তু আজ প্রথমে মেস তারপর নিউ আলিপুরে ব্যানার্জী ভিলায় যা হলো তারপর সেখান থেকে বেরোতে দুপুর প্রায় পার হয়ে গেছে তাই তখন বাইরে একটা রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার নিয়ে খেয়ে দুজনে সোজা বাবুঘাটে যায় সেখানে অনেকক্ষণ গঙ্গার ধারে বসে তাই ফিরতে সন্ধ্যা পার হয়ে যায় তাই আর ঘরে রান্না না করে রিসর্ট থেকেই আনিয়ে নিয়েছে।
তিনজনে একসাথেই খেতে বসে তিনজন অর্থাৎ আদিত্য পিয়ালী এবং বাদশা, খাবার পরে টুকটাক যে দুতিনটে এঁটো বাসন হয়েছিল সেটা পিয়ালী ধুয়ে ফেলছিল আর আদিত্য তখন বাদশার জন্য বিছানা ঠিক করে বিছানায় এসে বইটা খুলে পড়তে আরম্ভ করে, ঘুমানোর আগে মাঝে মাঝে বই পড়ার অভ্যাস আছে তার। আজও তাই করছিল ভেবছিল পিয়ালী হাতের কাজটা শেষ করে এলেই শুয়ে পরবে কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে গেলেও পিয়ালী না আসায় একটু অবাকই হয় আদিত্য।
হাতের ঘড়ি দেখলো প্রায় পৌনে এগারোটা বাজে শহরের হিসেবে খুব একটা রাত হয়তো না কিন্তু নারায়ণতলার মতো একটা পাঁড়াগাঁয়ের হিসেবে ভালোই রাত তার উপরে খানিকক্ষণ আগে থেকে বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, এই সময় পিয়ালীর তো কোথাও যাওয়ার কথা নয়, আর হাতের কাজও বেশি নেই।
অগত্যা হাতের বইটা বন্ধ করে ঘর থেকে বেরোলো, শৈলেশবাবুর বাড়িটা ছোট্ট একটা বাগান ঘেরা দোতলা কটেজ টাইপের নীচ তলায় ড্রয়িংরুম, কিচেন, ডাইনিং রুম আছে আর উপরতলায় একটা রুমে বেডরুম, রুমের বাইরে একটা লম্বা বারান্দা টাইপের আছে যেখানে দাঁড়িয়ে বাইরেটা দেখা যায়, এই বারান্দার এক কোণে একটা ছোট্ট রুমের মতো করা আছে যেটা বাদশার রুম।
আদিত্য রুম থেকে বেরিয়েই পিয়ালীকে দেখতে পেলো, রুমের দরজা থেকে কিছুটা সরে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে, চোখেমুখে বৃষ্টির জলের ঝাপটায় ভিজে গেছে, আদিত্য ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো,
"পিয়ালী, এখানে কি করছো?"
আদিত্যর ডাক শুনে পিয়ালী ওর দিকে তাকালো আর বৃষ্টির জলে মুখ ভেজা থাকলেও আদিত্যর বুঝতে অসুবিধা হলো না যে পিয়ালী কাঁদছিল আর সঙ্গে সঙ্গে নিজের ভুলটা বুঝতে পারলো আদিত্য।
ব্যানার্জী ভিলা থেকে বেরিয়ে এতটাই ডিস্টার্বড্ ছিল যে কারো সাথে ঠিক করে কথা বলেনি এমনকি খাওয়ার সময়েও চুপচাপ খেয়ে নিয়েছে যেটা সে কখনো করেনা আর আদিত্যর এই আচরণটাই পিয়ালীকে কষ্ট দিয়েছে।
"কি হয়েছে পিয়ালী?"
"আয়্যাম সরি, আজ আমার জন্য তোমাকে আবার কষ্ট পেতে হলো, তোমার পুরনো আঘাতের জায়গায় আমি আবার আঘাত করলাম, আয়্যাম সরি....কিন্তু প্লিজ তুমি আমার উপরে রেগে থেকো না"।
আদিত্য ঘরে থাকলে মূলত পিওর বাঙালি পোশাক অর্থাৎ পাঞ্জাবি, পাজামা পরে থাকে আজও একটা সাদা রঙের পাঞ্জাবি পরেছিল। এবার সেটা কিছুটা উপরে তুলে পিয়ালীর মুখটা ভালো করে মুছিয়ে দিয়ে, ওর দুটো গাল আলতোভাবে ধরে বললো,
"পিয়ালী আমার কথা ভালো করে শোনো আর মাথায় গেঁথে নাও, আমার সাথে যা হয়েছিল তারজন্য তুমি দায়ী নও উল্টে তুমি আমাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছো। অতীন্দ্র স্যার এবং শৈলেশবাবু দুজনেই আমার প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন কিন্তু আমি জীবনটাকে বাঁচতে শিখেছি তোমাকে পাওয়ার পরে। আজ আমি একটু ডিস্টার্বড ছিলাম তাই হয়তো আমার ব্যবহার একটু রুড হয়ে গেছে তার জন্য আমি সরি বলছি, কিন্তু আমি তোমার উপর রেগে নেই ইনফ্যাক্ট তুমি ওই মেয়েটির জন্য যা করতে চেষ্টা করেছিলে সেটার জন্য আয়্যাম রিয়েলি প্রাউড অফ ইউ।
ওদের এগেইস্টে কলকাতা শহরে কজন উকিল দাঁড়াতে সাহস করবে আমি জানিনা সেখানে তুমি একজন নিউকামার হয়ে এই সাহসটা দেখিয়েছো"
"কিন্তু আমার ওই কাজটার জন্যই তোমাকে আবার কষ্ট পেতে হলো"
"পিয়ালী আজ আমার একটু কষ্ট হয়েছে এটা ঠিক কিন্তু তার জন্য তুমি দায়ী নও, হয়তো একটু স্বার্থপরের মতো শোনাবে কিন্তু আমি ভেবেছিলাম আমার জীবনের এই অতীতটা পূর্বজন্মের মতো আমি কাটিয়ে এসেছি যেটা আর কখনো আমার সামনে আসবে না তাই আজ হটাৎ সামনে চলে আসায় একটু কষ্ট হয়েছে কিন্তু তার জন্য তুমি দায়ী নও"
"কিন্তু ওরা যদি আমাকে খুঁজতে এখানে চলে আসে?"
"আসলে আসবে, তখন দেখা যাবে একটা কথা মনে রাখবে আমি সবসময় সব পরিস্থিতিতে তোমার পাশে থাকবো। তবে ওরা এতটা সাহস দেখাবে বলে মনে হয় না কারণ অভিরূপ ব্যানার্জী এবং স্বর্ণেন্দু ব্যানার্জী ওদের থেকেও ক্ষমতাধর তারা দুজনেই সত্যিই ভালো মানুষ এবং এদের ছাড়াও আরও একজন আছেন যিনি একবার যদি জানতে পারেন যে আমি বেঁচে আছি এবং কয়েকজন আমাকে আর আমার বউকে বিরক্ত করছে তাহলে আর তাদের নিস্তার নেই"
"কে? কার কথা বলছো?" পিয়ালী একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,উত্তরে আদিত্য একটু হেসে বলে,
"আছেন একজন কিন্তু সমস্যা হলো তিনি যখনই জানতে পারবেন যে আমি বেঁচে আছি এবং এতবছর তাকে জানাইনি তাহলে সবার আগে আমাকে ঠ্যাঙাবেন এবং তারপর সেই রাতের ঘটনার কথা পুরো ডিটেইলসে ওনাকে বলতে হবে তারপর উনি যেটা করবেন সেটা আমি চাইছি না কিন্তু যদি এই মনোজ আর সুশান্ত আবার আমাদের লাইফে কোনোপ্রকার ডিস্টার্বেন্স ক্রিয়েট করে তখন বাধ্য হয়েই আমাকে তাকে সব জানাতে হবে"।
পিয়ালী কোনো কথা না বলে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মুখ রাখলো। আদিত্যও দুহাতে পিয়ালীকে জড়িয়ে ধরে বলে,
"আজ কিন্তু ওয়েদার ভালো আমি কখন থেকে বিছানায় আমার সুন্দরী বউএর জন্য অপেক্ষা করছি যাতে তার সাথে একটু প্রেমালাপ করতে পারি, আর এদিকে আমার বউ এখানে দাঁড়িয়ে কাঁদছে"।
এতক্ষণে পিয়ালী মুখ তুলে আদিত্যর দিকে তাকায় তার ঠোঁটের কোণে একটু সলজ্জ হাসি, সে বলে
"প্রেমালাপ? নাকি সেক্স?"
"উমমম দুটোর জন্যই আজকের এইরকম ওয়েদার পারফেক্ট, তোমার কি সেটা মনে হয় না?"
উত্তরে পিয়ালী আদিত্যর মাথার পিছনে ধরে একটু চেপে নীচে এনে ওর দুটো ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁটদ্বয় চেপে ধরলো যেন দুটো চুম্বক পরস্পরের দিকে আকর্ষিত হয়ে একে অপরের সাথে আটকে গেল, আদিত্যও দুহাতে পিয়ালীর পাতলা কোমর ধরে ওকে একটু উপরে তুলে ধরে। বেশকিছুক্ষণ দুজনে একে অপরের ঠোঁটে নিজেদের ঠোঁট লাগিয়ে প্রেমরস পান করতে থাকে, দুজনেই দুজনের ওষ্ঠ এবং অধর চুষতে থাকে।
কিছুক্ষণ পরে যেন অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাদের ঠোঁটজোড়া আলাদা হয়ে যায় আদিত্য এবার দুহাতে নিজের প্রিয়তমা স্ত্রীকে কোলে তুলে রুমের ভিতরে ঢোকে, ভিতরে ঢুকে সোজা বিছানায় নিয়ে গিয়ে পিয়ালীকে শুইয়ে দেয় এবং তখনই পিয়ালী আবার আদিত্যর মাথাটা ধরে নিজের দিকে টেনে আনে এবং দুজনেই আবার ফরাসি প্রেমচুম্বনে লিপ্ত হয়।
চুম্বনের সঙ্গে সঙ্গে পিয়ালী দুহাতে আদিত্যর পিঠের কাছ থেকে ওর পরনের পাঞ্জাবীটা টেনে তুলে মাথা গলিয়ে খুলে ফেলে তারপর একইভাবে পাঞ্জাবির ভিতরে পরা স্যান্ডো গেঞ্জিটাও খুলে ফেলে দেয়, এইসময়ে তাদের ঠোঁটজোড়া আলাদা হলেও আদিত্যর পাঞ্জাবি আর গেঞ্জি খোলার সাথে সাথেই আবার তারা চুম্বনে লিপ্ত হয়।
তবে এবার শুধু ঠোঁট নয় আদিত্য তার সঙ্গিনীর ঘাড়ে গলায় ক্রমাগত চুম্বনে ভরিয়ে দিতে থাকে, পিয়ালী দুচোখ বুজে তার প্রিয়তম পুরুষটির এই আদর উপভোগ করতে থাকে, একসময় আদিত্য পিয়ালীর কাঁধের কাছ থেকে শাড়ির আঁচলটা টেনে নেয় এবং সাথে পিয়ালীর বুকের উপর থেকেও শাড়ির আবরণ সরে যায়, তার পরনের এই স্লিভলেস ব্লাউজ এবং ব্লাউজ আবৃত উন্নত দুটি স্তন এবং তাদের মাঝের বক্ষবিভাজিকা যেটার কিছুটা অংশ ব্লাউজের উপর দিয়ে দৃশ্যমান তার উন্মুক্ত পেট এবং সেখানে একটি সুগভীর নাভি পিয়ালীকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
আদিত্য পিয়ালীর গলায় চুম্বন দিতে দিতে নীচে নামতে থাকে ধীরে ধীরে প্রথমে বক্ষবিভাজিকা যেটাকে ক্লিভেজও বলে সেখানে একটা চুম্বন দেয় তারপর ব্লাউজের উপর দিয়ে নীচে নেমে পেট এবং তারপর নাভি, নাভিতে আদিত্যর জিভের স্পর্শ পাওয়া মাত্র পিয়ালীর শরীরটা ধনুকের মতো বেঁকে পেটটা বিছানা থেকে কিছুটা উপরে উঠে যায়।
খুব বেশি সময় লাগে না পিয়ালীর শরীর থেকে শাড়িটা পুরোপুরি আলাদা হয়ে যায়, আদিত্য এবার পিয়ালীকে ঘুরিয়ে উবুড় করে শুইয়ে পিয়ালীর পিঠে প্রথমে ব্লাউজের দড়ির গিঁটটা খোলে তারপর তিনটে হুক খুলে ফেলে, বাড়িতে থাকলে ব্লাউজের ভিতরে সচরাচর ব্রা পরে না ফলস্বরূপ ব্লাউজের হুক খোলামাত্র পিয়ালীর ফর্সা পিঠ পুরো উন্মুক্ত হয়ে যায় এবার সে নিজেই ব্লাউজটা খুলে ফেলে, আদিত্য পিয়ালীর পুরো পিঠ জুড়ে চুমুতে ভরিয়ে দিতে শুরু করে।
একটু পর পিয়ালী আবার সোজা হয়ে শোয় এবং আদিত্য এবার ক্রমান্বয়ে পিয়ালীর প্রস্ফুটিত স্তনদ্বয়ের স্তনবৃন্ত মুখে পুরে চুষতে থাকে কখনো জিভ দিয়ে বৃন্তটিতে বোলাতে থাকে এতে পিয়ালী যেন সুখে পাগল হয়ে যায়, চোষার সাথে টেপা তো আছেই।
পিয়ালীও কম যায় না এতক্ষণ সে আদিত্যর মাথার চুলের ভিতরে হাত দিয়ে বিলি কাটছিল এবার হটাৎ আদিত্যকে টেনে বিছানায় শুইয়ে নিজে ওর উপরে উঠে বসে, তারপর আদিত্যর পাজামার দড়িটা খুলে সেটা নীচে নামিয়ে দেয় এবং নিজের স্বামীর পুরুষাঙ্গটি ধরে উপরনীচে নাড়াতে থাকে, এরপর একসময় নিজেই পুরুষাঙ্গটির মুখটা নিজের যোনীছিদ্রের মুখে ধরে আসতে আসতে তার উপরে বসে ফলে ধীরে ধীরে পুরো পুরুষাঙ্গটি পিয়ালীর যোনিগহ্বরে প্রবেশ করে হারিয়ে যায়।
এরপর ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন প্রকার আসনে দুজনের রতিক্রিয়া চলতে থাকে সাথে পুরো ঘরময় শীৎকারের শব্দে ভরে যায় অবশেষে রতিক্রিয়া সম্পন্ন করে পিয়ালীর যোনির ভিতরে নিজের বীর্য ত্যাগ করে আদিত্য যখন পিয়লীর পাশে শোয় তখন দুজনেই হাফাচ্ছে এবং সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় বিরাজমান, বাইরে বৃষ্টির কারণে ঠাণ্ডা আবহাওয়া সত্বেও দুজনেই ঘামে ভিজে গেছে।
কিছুক্ষণ পর দুজনের শরীর শান্ত এবং ঠাণ্ডা হলে একটা চাদর টেনে নিজেদের ঢেকে নেয় পিয়ালী নিজের স্বামীর নগ্ন বুকের উপর মাথা রেখে একহাতে জড়িয়ে ধরে, আদিত্যও চাদরের তলায় নিজের স্ত্রীর নগ্ন শরীরে হাত বোলাতে থাকে।
"একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?" একসময় পিয়ালী জিজ্ঞেস করে,
"বলো"
"তুমি সত্যিই নিজের ফ্যামিলির কাছে ফিরে যেতে চাও না?"
"এখন এই গ্ৰাম, গ্রামের লোকজন, তুমি এবং বাদশা এরাই আমার ফ্যামিলি"
"সেটা মানছি কিন্তু আমি আসলে.."
"তুমি যে ফ্যামিলির কথা বলছো সেখানে আমার জায়গা নেই আর তার থেকেও বড়ো কথা আমি ফিরে গেলে শুধু যে কিছু লোকের ভালো মানুষের মুখোশ খুলে যাবে তাই নয় অনেক নির্দোষ নিরপরাধ অকারণে শাস্তি পাবে তাদের মধ্যে দুটো বাচ্চাও রয়েছে"
"বাচ্চা?"
"ব্যানার্জী ভিলাতে একজনকে হুইলচেয়ারে বসা দেখেছিলে মনে আছে?"
"হ্যা, কে উনি?"
"উনি আমার সেই দাদা এবং তার পিছনে যিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনিই আমার সেই এক্স, সাথে যে দুটো বাচ্চা ছিল সেদুটো খুব সম্ভবত ওদের"
"কিন্তু ওদের তো শাস্তি পাওয়া উচিত"
"ওরা শাস্তি পেলে সবথেকে বেশি যাদের কষ্ট হবে তারা হলেন আমার বাবা-মা, ছেলে হয়ে আমি তাদের কষ্ট দিই কিভাবে বলো? আর ওই দুটো বাচ্চার তো কোনো দোষ নেই ওরা কেন বাবা-মার থেকে দূরে থাকবে? ওরা কেন ওদের বাবা-মায়ের জন্য কষ্ট পাবে?"
পিয়ালী কিছু বলছে না দেখে আদিত্য ওর দিকে তাকিয়ে দেখে পিয়ালী মাথাটা তুলে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,
"কি দেখছো?" আদিত্য জিজ্ঞেস করে,
"দেখছি একজন মানুষ কিভাবে নিজের ভিতরে এত কষ্ট নিয়েও সবার কষ্টের কথা ভাবতে পারে"
"একটা সময় সত্যিই কষ্ট হতো তারপর অভ্যাস হয়ে যায় আর এখন তোমরাই আমার জীবন, ওই নিয়ে আর ভাবতে চাই না আমি এই ভালো আছি"
"উঁহু 'আমি' না 'আমরা' এই ভালো আছি"
পিয়ালী স্বামীর বুকে আবার মাথা রাখে আদিত্যও চাদরের তলায় স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে।
নিউ আলিপুরের ব্যানার্জী বাড়িতে উৎসবের রেশ এখনো কাটেনি সকালে যা হয়েছিল তারপর কিছুক্ষণের জন্য প্রীতমবাবু এবং সুশান্ত বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও ঘন্টা তিনেক পরেই ফিরে আসে, তারপর থেকেই মোটামুটি নাচানাচি চলছে আর এখন প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত চলছে যদিও আইনের জন্য উচ্চ আওয়াজে শব্দ হচ্ছে না তার বদলে আলাদা রুমে নিজেদের মধ্যে গল্প, গান এইসব হচ্ছে যেটা মনে হয় সারারাত চলবে কয়েকজন গেস্ট অবশ্য নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন যারা থেকে গেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন ঘুমাতে গেছেন।
এসবই অবশ্য হচ্ছিল বাড়ির পিছনের আলাদা একটা অংশে যেটা অনুষ্ঠানের জন্যেই বরাদ্দ হয়েছিল। সাউণ্ড বক্সগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মূলবাড়িতে আওয়াজ প্রায় আসছেই না তবুও বাড়ির কর্তা এবং কর্ত্রী দুজনেই জেগে আছেন। অভিরূপবাবু বিছানায় শুয়ে ডানহাতটা চোখের উপরে রেখে চোখদুটোকে ঢেকে রেখেছেন আর তার পাশে শুয়ে থাকা তার স্ত্রী শ্রীতমাদেবীও একদিকে কাত হয়ে শুয়ে আছেন।
শ্রীতমাদেবীর চোখে এখনও দুপুরে দেখা হওয়া ছেলেটার মুখটা ভাসছে ভাই আর স্বামীর কাছে শুনেছেন ছেলেটা নাকি বাড়িতে এসে সুশান্ত আর মনোজকে মেরেছে কারণ ওরা ওর বউএর সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিল কিন্তু সেসব তিনি গ্ৰাহ্য করেননি। ছেলেটাকে দেখে তার এক অদ্ভুত অনুভূতি হয় যেটা তার ছোটো ছেলে থাকাকালীন হতো অবশ্য সে তখন ঘরে খুব কমই থাকতো তবুও তার মধ্যে যেটুকু সময় সে থাকতো, তার উপরে ছেলেটি যখন তার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো তখন...
"শ্রী, ঘুমোওনি এখনো?"
অভিরূপবাবু স্ত্রীকে ডাকেন শ্রীতমাদেবী এবার উঠে বসেন দেখাদেখি অভিরূপবাবুও উঠে স্ত্রীর পাশে বসেন, বলেন "কি হয়েছে? শরীর ঠিক আছে?"
"ওই ছেলেটা ওকে দেখে কি মনে হলো?"
"কোন ছেলেটা?"
"যে দুপুরে এসেছিল"।
"আবার ওর কথা কেন?"
"তোমার কি ওকে দেখে কিচ্ছু মনে হয়নি?"
স্ত্রীর কথা শুনে একটু চমকে উঠলেন অভিরূপবাবু, মনে যে হয়নি এটা ঠিক নয় কিন্তু সেটা তিনি কাউকে বলেননি কিন্তু এখন যদি তার মনের কথা স্ত্রীকে বলেন তাহলে না জানি তার রিয়েকশন কেমন হবে তাই মনের ভাব গোপন রেখে জিজ্ঞেস করলেন, "কি মনে হবে? আমাদের বাড়ির ছেলে আর মৌমিতার ভাই ওর ওয়াইফের সাথে মিসবিহেভ করে তাই ও এসেছিল অবশ্য ওর পুলিশে যাওয়া উচিত ছিল"।
"আমি ওসবের কথা বলছি না"
"তাহলে?"
"ছেলেটার চোখদুটো ভীষণ চেনা মনে হলো, মনে হলো যেন.."
"যেন?"
"যেন অনি তাকিয়ে আছে আমার দিকে তার উপরে যখন আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো তখনও ওর স্পর্শটা অনির মতোই লাগলো"
এবার দ্বিতীয়বার চমকে উঠলেন অভিরূপবাবু কারণ তারও ঠিক এটাই মনে হয়েছিল যখন ছেলেটি তার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিল।
কিন্তু সেকথা স্ত্রীকে বলা যাবে না তাহলে হয়তো অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে পরবে আর অতিরিক্ত উত্তেজনা ওর শরীরের পক্ষে ভালো না তাছাড়া তাদের যেটা মনে হচ্ছে সেটাই যে সত্যি তার তো কোনো প্রমাণ নেই, তাই আপাতত নিজের মনের ভাবটা গোপন রাখাই ভালো। অভিরূপবাবু একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলেন স্ত্রীর ডাকে আবার সচেতন হয়ে উঠলেন,
"শোনোনা বলছি আমাকে একবার ওর কাছে নিয়ে যাবে?"
"কিন্তু শ্রী ও কোথায় থাকে আমি জানিনা"
"তাহলে খোঁজ নাও না, এই শহরেই কোথাও না কোথাও তো থাকে। তোমার তো এই শহরে কত চেনাশোনা, ওকে খুঁজে বের করো না তোমার দুটি পায়ে পরছি"
"শ্রী এসব কি করছো?" অভিরূপবাবু ব্যাস্ত হয়ে পরলেন "শ্রী ও অনি তার প্রমাণ কোথায়?"
"প্রমাণ আছে"
"আচ্ছা বলো কি প্রমাণ?"
"প্রমাণ টোবো, তুমি দেখলে না টোবো ওর পিছনে পিছনে কিরকম দৌড় লাগালো?"
অভিরূপবাবুর চোখের সামনে আবার টোবোর আজকের কাণ্ডকারখানাগুলো ভেসে উঠলো সত্যিই টোবো এর আগে এরকম কখনো করেনি তাহলে আজ কেন করলো?
"কুকুর প্রভুভক্ত প্রাণী হয়, আর আমরা যতই টোবোকে সঙ্গে রাখি ওর আসল মালিক ছিল অনি, অনিই ওকে ওই লাল বলটা কিনে দিয়েছিল অনি ওর সাথে ওই বলটা নিয়ে খেলতো যেটা অনি চলে যাবার পর ও কাউকে হাত দিতে দেয়নি আর আজ হটাৎই ওই ছেলেটাকে দিল? এরপরেও তুমি বলবে যে ও অনি ছিল না?"
শ্রীতমাদেবীর কথায় যুক্তি আছে যেটা অভিরূপবাবু খণ্ডাতে পারলেন না, তিনি বলেন "কিন্তু শ্রী ওর চেহারা?"
"আজকাল চেহারা পাল্টানোর ডাক্তারি উপায় আছে"
"প্লাস্টিক সার্জারি? কিন্তু কেন?"
"সেটাই তো জানতে হবে যে কেন? সেদিন নিশ্চয়ই এমন কিছু হয়েছিল যার জন্য ও চেহারা পাল্টে ফেলেছে আমার মন বলছে ওই আমাদের অনি ওকে যেকরেই হোক খুঁজে বের করো"
"আচ্ছা আচ্ছা কেঁদোনা আমি দেখছি কি করা যায়, রাত হয়েছে এখন শুয়ে পরো যা করার কাল করবো"
অভিরূপবাবু স্ত্রীকে শুইয়ে দেন তারপর নিজেও শুয়ে পরেন কিন্তু ভালো করেই জানেন আজ তার ঘুম হবে না, তিনি চিন্তা করতে থাকেন কি করবেন? কিভাবে খু্ঁজবেন ওকে? সাথে স্ত্রীর কথাটাও তার মাথায় পাক খেতে থাকে 'সেটাই তো জানতে হবে যে কেন? সেদিন নিশ্চয়ই এমন কিছু হয়েছিল যার জন্য ও চেহারা পাল্টে ফেলেছে', কিন্তু কি কারণ? কাউকে ভয়? না অন্য কোনো কারণ?
অভিরূপবাবু ঘরের দেওয়ালে যেখানে তার ছোটোছেলের ছবি টাঙানো আছে সেখানে তাকিয়ে থাকেন। তার এই ছোটোছেলেটি বরাবরই অরুণাভর থেকে আলাদা। কথায় আছে বংশের বড়ো ছেলেরা একটু বেশীই আদর প্রশ্রয় পেয়ে থাকে অবশ্য এর ব্যাতিক্রমও আছে, কিন্তু তার বড়োছেলে অরুণাভকে তারা বাস্তবিকই একটু বেশি প্রশ্রয় দিতেন বা বলা ভালো অরুণাভ তার স্বভাব ব্যবহার দ্বারা সেটা আদায় করে নিত, তার সব আবদারই পূরণ করা হতো তুলনায় ছোটো ছেলের অনিকেতের আবদার কম ছিল।
অনিকেত ছোটো থেকেই একটু চুপচাপ থাকতো কিন্তু দরকারে মুখের উপরে সত্যি বলতে পিছপা হতো না, যেগুণটা অরুণাভর মধ্যে দেখেননি তিনি অরুণাভ সবসময় সবার মন জুগিয়ে চলতে চেষ্টা করতো যেটা অনি কোনোদিনও করতো না ফলস্বরূপ বকা খেতো বেশি এমনকি মায়ের কাছে মারও খেতো।
একটু বড়ো হবার পরেও অরুণাভকে নিয়েই ব্যাস্ত থাকতেন উল্টোদিকে অনিকেতের স্বাধীনতা বেশি ছিল সে কি করছে, কোথায় যাচ্ছে সে সম্পর্কে অতটা খোঁজখবর রাখতেন না। মাঝেমধ্যে সে নিজে টাকা চেয়ে নিত বেশীরভাগ সময় মায়ের থেকেই নিয়ে নিত কিন্তু কখনো সেই টাকায় খারাপ কিছু করেনি।
ওরমধ্যে যে দুটো গুণ সবথেকে বেশি পছন্দ করতেন তিনি সেদুটো হলো পশুপাখির প্রতি তার ভালোবাসা এবং অসহায় মানুষদের সাহায্য করা যেগুণটা অরুণাভর মধ্যে কোনোদিন দেখেননি। কত মানুষের দরকারে যে সাহায্য করেছে অনিকেত তার ইয়ত্তা নেই,আগে ঢাকুরিয়ার যেখানে থাকতেন সেখানে গেলে এখনও যারা অনিকে চিনতো তারা তার প্রশংসা করে তাদের কথা শুনতে শুনতে এখনো অনির জন্য একটা গর্ব অনুভব করেন তিনি।
তার বড়ো ছেলে বরাবরই নিজের জন্য ভাবতে ভালোবাসে যেটা এখন আরও বেড়েছে, নিজের স্বার্থের জন্য কত লোককে কষ্ট দিয়েছে তার ঠিক নেই অথচ অনি কোনোদিনও নিজের কথা ভাবেনি নিজের ছাড়া সবার কথা ভাবতো ওর কাছে দরকারে সাহায্য চেয়ে পায়নি এরকম লোক কমই আছে, যারা সাহায্য পায়নি তারা কোনো না কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে চেয়েছিল তাই পায়নি।
এমনিতে বাবার কাছে খুব বেশি কিছু চাইতো না বা চাওয়ার সুযোগ পেত না অরুণাভর জন্য কিন্তু একদিন চেয়েছিল একটা মৌমিতা নামের একটা মেয়ের ব্যাপারে বলেছিল, অভিরূপবাবু আপত্তি করেননি কিন্তু কে জানতো যে ছেলেটা এভাবে অকালে চলে যাবে।
যেদিন অরুণাভ গ্যাংটক থেকে ফোন করে জানায় যে নেশার ঘোরে অনিকেত খাদ থেকে পরে গেছে সেদিন তার ভিতরে কি হয়েছিল সেটা কেউ বোঝেনি, কাউকে বোঝানোর চেষ্টাও করেননি।
আজও একটা চাপা কষ্ট তাকে কুড়ে কুড়ে খায় তার খালি মনে হয় তার অনি তার উপরে অভিমান করেই চলে গেছে, এমনকি তার শরীরটাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অভিরূপবাবু জেগে এইসব ভাবছিলেন হটাৎ আবার তার দুপুরের ছেলেটার মুখটা মনে পরলো তার স্ত্রীর ধারণা ওই ছেলেটাই অনি, অবশ্য একই কথা তার নিজেরও মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল কিন্তু বেশিকিছু জানার আগেই ছেলেটি চলে যায়।
একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন অভিরূপবাবু তার স্ত্রী চাইছেন যাতে তিনি ওই ছেলেটাকে খুঁজে বার করেন কিন্তু কিভাবে করবেন তিনি? অনেক ভেবেও কোনো উপায় পেলেন না, শেষে ঠিক করলেন সকালে শ্যালক অর্থাৎ স্বর্ণেন্দুর সাথে পরামর্শ করে দেখবেন যদি সে কোনো উপায় বার করতে পারে।
শুধু অভিরূপবাবু এবং শ্রীতমাদেবীই নন ব্যানার্জী ভিলায় আরও কয়েকজন জেগে ছিল তিনি অরুণাভ ব্যানার্জী, কাজিন সুশান্তর বিয়ে উপলক্ষ্যে যে আড্ডা চলছে সেখান থেকে চলে এসেছেন অনেক আগেই, ভেবেছিলেন ঘুমিয়ে পরবেন স্ত্রী মৌমিতা পাশে বাচ্চাদের রুমে গেছে ওদের ঘুম পাড়ানোর জন্য কিন্তু আজ তারও ঘুম আসছে না চোখ বন্ধ করলেই ছোটোভাই অনিকেতের মুখটা ভেসে উঠছে শেষবার খাদে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেছিলেন তাকে তারপরেই ক্রমাগত লাথির চোটে নীচে পরে অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, পরার আগে একবার শেষবারের মতো চোখাচোখি হয়েছিল দুই ভাইয়ের যেটা কোনোদিন দেখেননি সেটাই তখন দেখেছিলেন ভাইয়ের চোখে একাধারে অবিশ্বাস, চরম বিতৃষ্ণা আর ঘৃণা মিশে ছিল সেই দৃষ্টিতে।
ছোটো থেকেই কেন যেন অনিকে সহ্য করতে পারতেন না অরুণাভ যেনতেন প্রকারে অনির থেকে এগিয়ে থাকাই লক্ষ্য ছিল, পরিচিত সবাই তাকে একেবারে সোনার টুকরো ছেলে মনে করলেও তিনি নিজে তো জানতেন আসলে কি ছিলেন আর জানতো অনি কম অত্যাচার তো করেননি, নিজের পছন্দমতো জামা কাপড় জুতো আরও অন্যান্য কিছু চাইলেই পেতেন বাবা হোক বা মা কেউই বারণ করতো না তারপরেও অনির কোনো জিনিস যদি পছন্দ হতো সেটাও নিয়ে নিতেন যদি দিতে না চাইতো বা বাধা দিত তাহলে মারতেন পর্যন্ত এমনকি মাকে বাবাকে বলে বকা পর্যন্ত খাওয়াতেন, বাড়ির সবাই তার কথা চোখ বুজে বিশ্বাস করতো তার উপরে অনিও মুখ ফুটে কিছু বলতো না আর এই সুযোগটাই সে নিত কতবার অনি ওকে মেরেছে এই মিথ্যা বলে মার হাতে মার খাইয়েছেন সাথে বাবার কাছে বকা খাইয়েছে তার হিসাব নেই, বাবা কোনোদিন তাদের দুই ভাইয়ের গায়ে হাত তোলেননি কিন্তু অরুণাভ সেই চেষ্টাই করে গেছেন যাতে বাবা ওকে মারে।
অনিকেত মার খেলে বা শাস্তি পেলে এক অদ্ভুত আনন্দ হতো তার, একটা সময় পরে তো অনি তেমন ঘরেই থাকতো না বাইরে বাইরেই ঘুরতো তবুও যেন মনে শান্তি পেতেন না আর তারপরে তো মৌমিতাকে অনির সাথে দেখে অনির প্রতি তার ঘৃণা চরমে পৌঁছালো।
নিজের রুমের ব্যালকনিতে হুইলচেয়ারে বসে ছোটোবেলার কথাই ভাবছিলেন অরুণাভ, অল্প বৃষ্টি হয়েছে কিন্তু কোথাও হয়তো ভালোই বৃষ্টি হয়েছে কারণ একটা ঠান্ডা হাওয়া বইছে যদিও এই ঠান্ডা হাওয়াও অরুণাভর ভিতরের জ্বালাটা শান্ত করতে ব্যার্থ।
আজকের এই জ্বালাটা ছোটোভাই অনিকে নিয়ে নয় নিজের কৃতকর্মের জন্য, ভাইয়ের সাথে মৌমিতাকে দেখে আর ঠিক থাকতে পারেননি ঠিক করেন যেভাবেই হোক মৌমিতাকে অনির থেকে কেড়ে নেবেন এখন যেটা বুঝতে পেরেছেন সেটা তখন পারেননি যে মৌমিতা কোনোদিনই অনিকে ভালোবাসেনি সে ভালোবেসেছে তাদের পরিবারের নাম, যশ, খ্যাতি এবং অর্থকে ফলে যখন সে দেখলো অনির টাকা পয়সার প্রতি লোভ নেই বরং অরুণাভই ব্যানার্জী ক্রিয়েশনস্ এর হবু মালিক তখন অনিকে চিট করে তার কাছে আসতে দুবার ভাবেনি।
তখন অনির প্রতি অরুণাভর ঘৃণা এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে যখন মনোজিত বাবু বললেন অনি থাকলে হয়তো তার সম্পত্তির ভাগ দিতে হতে পারে তাই ওকে সরিয়ে দেওয়াই ভালো তখন সেই প্রস্তাবে সানন্দেই রাজী হয়ে গেলেন একবারো এটা ভাবেননি যে যতই হোক এই অনি তার নিজের ছোটো ভাই।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
The following 15 users Like Monen2000's post:15 users Like Monen2000's post
• Arpon Saha, bad_boy, bismal, Boti babu, Bumba_1, Dodoroy, kublai, Matir_Pipre, Mofiz, Naim_Z, nextpage, Patrick bateman_69, ppbhattadt, SOSHANTO SARKAR, অভিমানী হিংস্র প্রেমিক।
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
দ্বিতীয় পার্ট
১৪তম পর্ব
কথায় বলে মানুষকে তার পাপের শাস্তি এই জীবনেই ভোগ করতে হয় হুইলচেয়ারের দুসাইডের দুটো চাকায় হাত বোলাতে বোলাতে একথাই মনে হয় অরুণাভর, আজ তার যা অবস্থা সেটা নিশ্চয়ই তার পাপের ফল।
লোকের চোখে তার এই অবস্থার জন্য দায়ী একটা অ্যাক্সিডেন্ট কিন্তু অরুণাভ নিজে জানে অ্যাক্সিডেন্টটা ঘটানো হয়েছে উদ্দেশ্য যদিও তাকে মেরে ফেলাই ছিল কিন্তু সে বেঁচে গেছে। প্রাণে বেঁচে গেলেও তার পাদুটো বোধহয় অকেজো হয়ে গেছে ডাক্তার যদিও বলেছে আপাতত কিছুদিন রেস্টের পরে থেরাপি শুরু হবে তারপর অরুণাভ আবার নিজের পায়ে চলাফেরা করতে পারবে।
কিন্তু অরুণাভ ভালো করেই জানে যারা তার এই অ্যাক্সিডেন্টের পিছনে দায়ী তারা এক প্রচেষ্টায় থামবে না তারা আবার চেষ্টা করবে হয়তো তার বাবাকেও মারতে চাইবে, তাদের সাথে মিলে সে নিজেও তো কম কুকীর্তি তো করেনি একবার তো তার সামনেই সেইকথা বলেছিল কিন্তু কি করবে সে? তার হাতে কোনো প্রমাণ নেই ওদের বিরুদ্ধে, শহরের সবথেকে ক্ষমতাধর পরিবারের ছেলে হয়েও ভীষণরকম অসহায়ত্ব অনুভব করে অরুণাভ।
ওদের আটকাতে না পারলে ওরা যে তাকে এবং বাবাকে শেষ করে দিতে দ্বিধাবোধ করবে না প্রথমে সে তারপর বাবা তারপর.. তারপর কি তার ছোট্ট ছেলেমেয়ে দুটোকেও.. ভাবতেই শিউরে উঠলো অরুণাভ।
এইসময় হটাৎই তার দুপুরের ঘটনাটা মনে পরলো একটা ছেলে তাদের বাড়িতে ঢুকে সুশান্ত আর মনোজকে আরোং ধোলাই দিল। কে ছিল ছেলেটা? অরুণাভ লক্ষ্য করেছে ছেলেটা কয়েকমুহূর্তের জন্য তার আর মৌমিতার দিকে তাকিয়ে ছিল, অরুণাভর কেন যেন সেই দৃষ্টিটা অত্যন্ত চেনা মনে হয়েছিল, কোথায় যেন দেখেছিল কিন্তু কিছুতেই তখন মনে পরেনি এখন পরেছে সেই একই দৃষ্টি সেই চরম বিতৃষ্ণা ঘৃণা ছিল সেই দৃষ্টিতে যেটা সে আরো একজনের চোখে দেখেছিল, প্রায় ৯ বছর আগে গ্যাংটকের রুমটেক মনাস্ট্রির পিছনের দিকের খাদে নীচের অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়ার আগে শেষবারের মতো তার ছোটোভাই অনিকেতের চোখে দেখেছিল অরুণাভ।
সকালে মর্ণিং ওয়াকের অভ্যাস না থাকলেও যখনই শ্যালক-ভগ্নিপতি অর্থাৎ স্বর্ণেন্দু বাবু এবং অভিরূপবাবু পরস্পরের বাড়িতে থাকেন তখন সকালে উঠে দুজনেই হাঁটতে বেড়োন, এমনই গল্প করতে করতে হাঁটা তারপর কোনো একটা রাস্তার কোনো একটা চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে আবার হাঁটতে হাঁটতে ফিরে আসেন।
অনেকেই হয়তো ভ্রু কোঁচকাবেন যে এতবড়ো মানুষ হয়েও রাস্তার দোকান থেকে চা খান? হ্যাঁ খান আর এখানেই ওনাদের পরিচয়, যত বড়োই হয়ে যান যতো টাকাই উপার্জন করুন না কেন দুজনেই সর্বদা মাটির মানুষ হয়ে থাকেন।
আজও নিউ আলিপুরের বাড়ি থেকে দুজনেই ভোর ভোর উঠে বেরোলেন, কিন্তু আজ স্বর্ণেন্দু বাবু লক্ষ্য করলেন অভিরূপবাবুকে কেমন যেন লাগছে,
"কিছু হয়েছে জামাইবাবু? তোমার মুখটা কেমন যেন লাগছে?" দুজনের সম্পর্ক বন্ধুর মতোই তাই পরস্পরকে তুমি করেই সম্বোধন করেন তারা।
"একটা কথা বলবো ভাবছি কিন্তু সেটা ঠিক হবে কি না বুঝতে পারছি না"
"তুমি আমাকে কথা বলতে হেজিটেট করছো কবে থেকে? আর জানোই তো ডাক্তার এবং উকিলের কাছে কিছু লুকোতে নেই, আমি তো শুধু তোমার শালা নই তোমার পরিবারের উকিলও, বলো কি হয়েছে?"
অভিরূপবাবু তবুও কিছুক্ষণ চুপ থাকেন বোধহয় মনের দ্বিধাটা দূর করে নেন তারপর বললেন,
"গতকালের ছেলেটাকে মনে আছে?"
"যে ছেলে একা ব্যানার্জী ভিলায় ঢুকে বাড়ির ছেলে আর তার বন্ধুকে ঠেঙিয়ে যায় তাকে ভোলা যায়? কিন্তু কি হয়েছে ওর?"
"তোমার দিদির মনে হচ্ছে ও আসলে অনি"
একটু যেন অবাক হলেন স্বর্ণেন্দু বাবু বলেন, "কিন্তু দিদির এরকম মনে হচ্ছে কেন? অনি তো.."
"জানি, তবুও শ্রীতমার মনে হয় ওটা অনি ছিল"
"আর তোমার কি মনে হয়?"
"সত্যি বলতে ও যখন আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো তখন একমুহূর্তের জন্য আমারও মনে হলো যেন ওটা অনির হাত"
"কিন্তু জামাইবাবু ও যদি অনি হয় তাহলে এতবছর কোথায় ছিল, ফিরে এলোনা কেন? বা এখনো ফিরে আসছে না কেন? ইনফ্যাক্ট চেহারা পাল্টালো কেন আর কিভাবে?"
"চেহারা প্লাস্টিক সার্জারি করে পাল্টানো যায়, স্বর্ণেন্দু"
"আমি জানি সেটা কিন্তু কেন? আর কিভাবে? মানে ও সার্জারির টাকা পেলো কোথায়? প্লাস্টিক সার্জারি করতে কম টাকা লাগে না, ওর তো কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টও ছিল না অরুণাভর মতো যেখানে তুমি মাসে মাসে অরুকে হাতখরচা দিয়ে দিতে, অনির যখন দরকার হতো তখন তোমার বা দিদির থেকে চেয়ে নিত, তাহলে ও এত টাকা পেলো কোত্থেকে? না জামাইবাবু দিদি যাই বলুক ও অনি নয়"।
"কিন্তু টোবো? ও ওরকম আচরণ করলো কেন? মানুষ একজন মানুষকে চিনতে ভুল করতে পারে কারণ তারা চেহারা দেখে বিচার করে কুকুর সেটা নয়, যতই মেকআপ করুক বা চেহারা পাল্টাক কুকুর ঠিক তার পরিচিত মানুষকে চিনতে পারে আর কাল টোবোর আচরণ দেখে মনে হলো ও ওই ছেলেটাকে চিনতে পেরেছে, যে লাল বলটা দিয়ে ও ছেলেটার সাথে খেলতে চাইলো সেটা অনি খেলতো ওর সাথে, বলটাও অনির দেওয়া"
স্বর্ণেন্দু বাবুর মুখ দেখে মনে হলো তিনিও এবার একটু কনফিউজড হয়ে গেছেন এবং সেটা তার কথাতেই বোঝা গেল, " তুমি তো আমাকেও ফাঁপড়ে ফেলে দিলে, এই কথাটাতো মাথায় আসেনি"
"এটা তোমার দিদির মাথায় এসেছে আমিও ওর এই কথার পাল্টা দিতে পারিনি"।
কথা বলতে বলতে হেঁটে বাড়ি থেকে অনেকটাই চলে এসেছেন দুজনে এবার একটা চায়ের দোকানে ঢুকে দুটো চা অর্ডার করলেন একটু পরেই দুটো কাঁচের গ্লাসে গরম চা দোকান থেকে একটু সরে এলেন তারপর ধোঁয়া ওঠাগরম চায়ে একটা চুমুক দিয়ে তৃপ্তিসূচক শব্দ বার করে স্বর্ণেন্দুবাবু জিজ্ঞেস করলেন, "তাহলে এখন কি চাইছো?"
অভিরূপ বাবুও চায়ে একটা চুমুক দিয়ে বললেন "তোমার দিদি চাইছেন আমি যেন ওকে খুঁজে বের করি"।
"কিন্তু জামাইবাবু এটা আমাদের অনুমান যে ও অনি আর এটা সত্যি নাও হতে পারে"
"আবার হতেও পারে, দেখো স্বর্ণেন্দু শহরে আমার পরিচিত অনেক আছে এটা ঠিক তাদের বললে তারা হয়তো খুঁজে বের করবে কিন্তু কোনোভাবে যদি প্রীতম আর মনোজিত বাবু ওর খোঁজ পেয়ে যান তাহলে ওর ক্ষতি করার চেষ্টা করবে তাই আমি চাইছিলাম যাতে পুলিশের কেউ করে, তোমার তো লালবাজারের অনেক উঁচু পোস্টের পুলিশের সাথে যোগাযোগ আছে তাদের কেউ যদি কাজটা করে"।
"জামাইবাবু ওইদুজন ব্যানার্জী পরিবারের নাম ভাঙিয়ে অনেক কিছু করেছে পুলিশেও ওদের খোঁচর আছে, সেখান থেকেও খবর পেয়ে যাবে"
"তাহলে? বিশ্বস্ত কি কেউ নেই?"
একটু ভেবে স্বর্ণেন্দু বাবু বলেন, "আছে, একজন আছে সে নিশ্চয়ই বার করতে পারবে,আমার পরিচিত, বন্ধুও বলতে পারো"
"কে তিনি? তাকেই বলে দেখো, বলোতো আমিও যাবো তোমার সাথে"
"সেটা যাওয়া যায় কিন্তু একটা প্রবলেম আছে"
"কি প্রবলেম?"
"তিনি আমাদের উপরে রেগে আছেন, আমার উপরে তো বটেই এমনকি তোমার উপরেও"
"কেন? আমি কি করেছি?"
"আসলে কথাটা হলো লোকটা অনিকে চিনতো, শুধু চিনতো বলা ভুল দুজনের রীতিমতো ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল এবং অনিকে যথেষ্ট স্নেহ করতো। ওর বিশ্বাস অনি নিজে থেকে খাদে পরেনি ওকে কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছে"
"মানে খুন? কিন্তু অনিকে খুন করবে কে? আর কেন?"
"সেটাই ও তদন্ত করতে চেয়েছিল ওর সন্দেহ অরু এবং মৌমিতার উপরে, এবং ওর যা সোর্স তাতে সিকিম পুলিশকে দিয়েও তদন্ত করাতে পারতো নিজেও অরু আর মৌমিতাকে জেরা করতে চেয়েছিল, আমাকে বেশ কয়েকবার সেকথা বলেছিল অথচ আমরা রাজী হইনি, উপরন্তু কেসটা বন্ধ করে দিয়েছি তাই ক্ষেপে আছে"
"তাহলে ওনার কাছেই চলো, আজই চলো আমি কথা বলবো"
"আজ হবে না"
"কেন?"
"আসলে আগে আমি যখন খুশি দেখা করতে পারতাম কিন্তু অনির এই ঘটনার পরে আমার উপরে এতটাই রেগে আছে যে দেখা করতে চায় না বাইচান্স কোনো কেসের ব্যাপারে বা কোর্টে দেখা হলেও চেষ্টা করে এড়িয়ে যেতে তাই আগে ওর থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে সহজে দেখা করবে না তবে চেষ্টা করে দেখি"
"চেষ্টা নয় ওনার সাথে দেখা করতেই হবে, বলো তো ওনার বাড়িতে বা লালবাজারেও দেখা করতে যাবো"
"ঠিক আছে জামাইবাবু আমি দেখছি"
চা শেষ হয়ে গিয়েছিল এবার গ্লাস দুটো ফেরত দিয়ে দাম মিটিয়ে দুজনে উল্টোপথ ধরলেন বাড়িতে ফেরার।
মনোজিত বাবুর বাড়িতে আজ আবার মিটিং বসেছে চারমূর্তি তো উপস্থিত আছেনই সাথে আরও ৫-৬ জন আছে, খুবই সাধারণ চেহারা তবে দুজনের রীতিমতো জিম করা চেহারা, কিন্তু প্রত্যেকের চোখ একেবারে জাত খুনির দেখেই বোঝা যায় অবলীলায় যে কারো গলা কাটতে পারে।
"ভেবে দেখো কাজটা করতে পারবে কি না?"
মনোজিত বাবু লোকগুলোর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, লোকগুলোর মধ্যে একজন কর্কশ গলায় জবাব দেয়, "কাজটা তো এতদিনে হয়েই যেত আপনারাই বললেন কিসব প্ল্যান আছে, তারপর এইকদিন আমাদের পুরো এরিয়া ঘোরালেন"
"ওটার দরকার ছিল"
"অত ঝামেলার দরকার কি সেটাই তো বুঝতে পারছি না, লোকটাকে অনেকবার রাস্তায় একা দেখেছি নেহাত আপনারা বারণ করেছেন তাই কাজ করিনি"
"তোমাদের কোনো ধারণা আছে লোকটা কে? ওর গায়ে একটা আঁচড় পরলে পুরো লালবাজার ঝেঁকে আসবে"
"এত ভয় পেলে কাজ হয় নাকি? পুলিশ তো এখনও তদন্ত করবে"
"করবে, তবে খুনের নয় ডাকাতির"
"মানে আপনাদের প্ল্যানটা খুলে বলুন"
"লোকটাকে মারার আগে পুরো সাউথ কলকাতা জুড়ে তোমাদের আরও কয়েকটা কাজ করতে হবে, তারপর মেইন কাজ। এমনভাবে করতে হবে যাতে পুরো ব্যাপারটা ডাকাতির মনে হয় খুনের নয়, যেটা বললাম পুলিশ তদন্ত করবে তবে ডাকাতির কাজটা করে তোমরা ফিরে যাবে এইসব কেসে পুলিশ আরও একটা ঘটনার ওয়েট করে ফাঁদ পেতে, কিন্তু আর কোনো ঘটনা হবে না"
"এতে কিন্তু বেশি টাকা লাগবে"
"দেবো" এতক্ষণে মুখ খুললেন প্রীতমবাবু "কিন্তু কাজটা হওয়া চাই লোকটা যেন বাঁচতে না পারে"
"বাঁচবে না, গ্যারান্টি"।
লালবাজারের পুলিশ হেডকোয়ার্টারে নিজের কেবিনে বসে চিন্তা করছিলেন নগরপাল সুপ্রতিম দাশগুপ্ত, বয়স ৫২ এর আশেপাশে, কিন্তু শক্তপোক্ত পেটানো চেহারা মাথায় কানের উপরে দুই জুলফিতে পাক ধরেছে এছাড়া বাকি মাথায় পাকা চুল প্রায় নেই বললেই চলে, নাকের নীচে মোটা গোঁফ, এছাড়া দাঁড়ি পরিষ্কারভাবে কামানো, গায়ের রঙ শ্যামলা।
সুপ্রতিম বাবুর চিন্তার কারণ সম্প্রতি কলকাতার দক্ষিণ অংশে ঘটে যাওয়া কয়েকটা ছিনতাইয়ের কেস। ছিনতাইকারীরা বাইকে করে আসছে কোনো মহিলা বা বৃদ্ধকে জখম করে তাদের কাছে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে চম্পট দিচ্ছে আবার কখনো কখনো কোনো দোকানে ঢুকে টাকা লুট করে চলে যাচ্ছে।
বিগত তিনমাসের মধ্যে এখনও পর্যন্ত পাঁচ-পাঁচটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে অথচ পুলিশ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে, সবথেকে বেস্ট অফিসারদের এই তদন্তের ভার দিয়েছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ক্লু নেই কাউকে গ্ৰেপ্তার করা যায়নি, এই নিয়ে শহরে বেশ হইচই পরে গেছে। মিডিয়া রীতিমতো ছিঁড়ে খাচ্ছে পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে।
কিভাবে এই ছিনতাইকারীদের ধরা যায় সেবিষয়েই ভাবছিলেন সুপ্রতিমবাবু হটাৎ দরজায় টোকার আওয়াজে চিন্তায় ছেদ পরে তাকিয়ে দেখেন দরজায় এক যুবতী দাঁড়িয়ে আছে পরনে সাদা শার্ট আর কালো ট্রাউজারস্, পায়ে বুট মাথায় চুল খোঁপা করে রাখা।
"মে আই কাম ইন স্যার?" যুবতী ভিতরে আসার পার্মিশন চায়,
"ইয়েস কাম ইন" যুবতী ভিতরে এলে সুপ্রতিমবাবু আবার জিজ্ঞেস করেন "এনি আপডেট?"
"নো স্যার"
"সিসিটিভি ফুটেজ চেক করেছো? বাইকের নাম্বারগুলো ট্রেস করা গেছে?"
"স্যার কয়েক জায়গার ফুটেজে ওদের দেখা গিয়েছে কিন্তু সবসময়ই মুখ হেলমেটে ঢাকা ছিল তাই মুখ বোঝার উপায় নেই"
"বাইকের নম্বর গুলো?"
"ফেক নম্বর, তবে একটা জিনিস বোঝা যাচ্ছে"
"কি সেটা?"
"এলাকার রাস্তাঘাট ওদের খুবই চেনাজানা, যারা এই ঘটনার পিছনে দায়ী তারা হয় এলাকার লোক আর নাহয় অনেকদিন থেকেই প্ল্যান করেছে, আগে রাস্তাঘাট সব চিনে জেনে নিয়ে তারপর অ্যাকশনে নেমেছে"
"সেটা বললে তো হবে না ওদের ধরতে হবে সেটা কিভাবে করা যায় কিছু ভেবেছো?"
যুবতী মাথা নীচু করে মাথা নেড়ে না জানায় এতে সুপ্রতিমবাবু যেন তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন,
"সবকটা অকর্মার ঢেঁকি, একটাও কাজের নয় সবকটাকে সাসপেণ্ড করবো"
"স্যার, আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করছি"
"তার নমুনা তো দেখতেই পারছি, একটাও কাজের না, হোপলেস.... এইসময় যদি ও আমার পাশে থাকতো তাহলে আর চিন্তা ছিল না" একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কারো না থাকায় আফশোষ প্রকাশ করেন নগরপাল।
যুবতী এবারে মুখ তুলে তাকায় এটা নতুন নয় সে জানে কার কথা হচ্ছে সামনের মানুষটা তো শুধু তার সিনিয়র অফিসার নন তার বাবাও, যুবতী বলে,
"আমাদের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বেস্ট অফিসাররা এই কাজে লেগে আছে"
"তারপরেও রেজাল্ট জিরো, এইসময় সত্যিই ওকে খুব দরকার ছিল" আবার আফশোষ ঝরে পরে সুপ্রতিমবাবুর স্বরে।
"যে নেই তার কথা ভেবে কি হবে ড্যাড" এমনিতে অফিসে স্যার বলেই ডাকে যুবতী কখনো সখনো দুজনে একা থাকলে তখন ড্যাড বলে সম্বোধন করে।
"ও থাকলে এতদিনে ঠিক কেস সলভ্ হয়ে যেত ঠিক কোনো না কোনো প্ল্যান বার করতো"
এইসময় আবার দরজায় নক হয় দুজনে তাকিয়ে দেখেন একজন কনস্টেবল দাঁড়িয়ে আছে সে একটা স্যালুট ঠুকে বলে "স্যার অ্যাডভোকেট স্যার আপনার সাথে দেখা করতে চাইছেন"
"কে?" একটু বিরক্ত হয়েই জিজ্ঞেস করেন সুপ্রতিমবাবু।
"অ্যাডভোকেট স্বর্ণেন্দু মুখার্জি, বলছেন খুব দরকারি বিষয়"
"বলে দিন ব্যাস্ত আছি দেখা হবে না"
কিন্তু পরক্ষনেই কনস্টেবলের পিছনে স্বর্ণেন্দু বাবুর মুখ দেখতে পান সুপ্রতিমবাবুপরক্ষনেই রাগে ফেটে পরেন,
"কে ঢুকতে দিয়েছে আপনাকে? বেরিয়ে যান আমি এখন ব্যাস্ত আছি"
"এতদিনের পুরনো বন্ধুর সাথে এরকম ব্যবহার?" ভিতরে ঢুকে কথাটা বলেন স্বর্ণেন্দু বাবু
"আপনাকে ঢুকতে কে দিয়েছে?"
"পুলিশের হয়ে এতগুলো কেস লড়ে জেতার পরেও যদি আমাকে কেউ তোমার রুমে আসা থেকে আটকায় তাহলে তো খুবই দুঃখের কথা ভায়া"
স্বর্ণেন্দু বাবুর এইরকম কথায় সুপ্রতিমবাবুর রাগের পারদ চড়তে থাকে তবুও তিনি যথাসম্ভব নিজেকে সামলিয়ে বলেন, "দেখো তোমার সাথে ফালতু কথা বলে নষ্ট করার মতো সময় আমার নেই, তুমি এখন যাও"
"ডাকাতির কেসগুলো নিয়ে ব্যাস্ত নাকি?" চেয়ারে বসে মন্তব্য করলেন স্বর্ণেন্দু বাবু।
"হ্যাঁ, আংকেল" যুবতী কথা বলে,
"আরে তানিয়া মা, তোমাকে খেয়ালই করিনি কেমন আছো?"
"আপাতত খুবই খারাপ যতদিন না এই ক্রিমিনালগুলোকে ধরতে পারছি ততদিন ভালো হবো না"
"হাল ছেড়ো না, ঠিকই পারবে"
"একটা হেল্প করবেন আংকেল?"
"বলো"
"ঘটনাগুলো মূলত শুধুমাত্র সাউথের কয়েকটা জায়গা জুড়েই হচ্ছে এইসব এলাকায় নতুন কেউ এসেছে নাকি বা কারো লাইফস্টাইল হটাৎ করেই চেঞ্জ হয়েছে নাকি একটু খোঁজ নেবেন?"
"এসব তো পুলিশের ইনফর্মারদের কাজ,আমি কেন?"
"ইনফর্মারদের বলা আছে তবুও আপনি ওখানকার লোকাল লোক তার উপরে আমাদের আত্মীয়ই, বিশ্বস্তও তাই বলছিলাম"
"তোমার বাবা আমাকে আত্মীয় মনে করেন না, সে যাই হোক আমি আমার কিছু বিশ্বস্ত লোককে বলে রেখেছি খবর পেলেই জানাবো"
"থ্যাংক ইউ আংকেল" যুবতী বেরিয়ে গেল, আর তারপরেই সুপ্রতিম বাবু গম্ভীরমুখে জিজ্ঞেস করলেন, "এখানে এখন কি দরকার?"
"তোমার সাথে আলাদা একটু দরকার ছিল, বাড়িতে তো আমাকে ঢুকতে দেবে না তাই আগে এখানে দেখা করতে এলাম"
"কি দরকার সেটা বলবে?"
"আমার জামাইবাবু মানে অভিরূপ ব্যানার্জী তোমার সাথে একটু দেখা করতে চান"
"অভিরূপ ব্যানার্জী আমার সাথে দেখা করতে চান কারনটা জানতে পারি?" একটু যেন অবাক হন সুপ্রতিমবাবু।
"সেটা উনিই বলবেন তবে শুনলে তুমিও ইন্টারেস্ট পাবে আজ রাতে তোমার বাড়িতে আনবো?"
সুপ্রতিমবাবুকে চুপ থাকতে দেখে স্বর্ণেন্দু বাবু আবার বলেন "প্লিজ না কোরো না"
"বেশ, তবে আজ রাতে না তোমরা বরং কাল সকালে আসো"
"থ্যাংক ইউ ভাই, থ্যাংক ইউ"।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
The following 17 users Like Monen2000's post:17 users Like Monen2000's post
• Abarif, bad_boy, bismal, Boti babu, Bumba_1, Dodoroy, kublai, Matir_Pipre, MNHabib, Mofiz, Naim_Z, nextpage, Patrick bateman_69, ppbhattadt, Ptol456, SOSHANTO SARKAR, অভিমানী হিংস্র প্রেমিক।
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,374 in 2,851 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
tooooooo good clp); অসাধারণ বললেও কম বলা হয়। এইভাবেই চলতে থাকুক, সঙ্গে আছি।
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(05-06-2023, 10:26 PM)Bumba_1 Wrote: tooooooo good clp); অসাধারণ বললেও কম বলা হয়। এইভাবেই চলতে থাকুক, সঙ্গে আছি।
ধন্যবাদ দাদা
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 74
Threads: 0
Likes Received: 49 in 46 posts
Likes Given: 11
Joined: Dec 2022
Reputation:
0
Story te new thril asche boss,khub sundor update
Posts: 1,270
Threads: 3
Likes Received: 1,446 in 962 posts
Likes Given: 3,888
Joined: Apr 2022
Reputation:
152
Mind blowing update. কিন্তু একটা খটকা দুটো পর্ব দ্বিতীয় পর্ব তা হলে প্রথম পর্ব গেল কোথায়!!!!!
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 32
Threads: 0
Likes Received: 15 in 13 posts
Likes Given: 210
Joined: Dec 2021
Reputation:
0
Keep it up brother. take love
Posts: 1
Threads: 0
Likes Received: 2 in 1 posts
Likes Given: 226
Joined: May 2023
Reputation:
1
(05-06-2023, 10:13 PM)Monen2000 Wrote: ![[Image: Picsart-22-12-06-20-20-08-119.jpg]](https://i.ibb.co/WnCgBMM/Picsart-22-12-06-20-20-08-119.jpg)
দ্বিতীয় পার্ট
১৪তম পর্ব
কথায় বলে মানুষকে তার পাপের শাস্তি এই জীবনেই ভোগ করতে হয় হুইলচেয়ারের দুসাইডের দুটো চাকায় হাত বোলাতে বোলাতে একথাই মনে হয় অরুণাভর, আজ তার যা অবস্থা সেটা নিশ্চয়ই তার পাপের ফল।
লোকের চোখে তার এই অবস্থার জন্য দায়ী একটা অ্যাক্সিডেন্ট কিন্তু অরুণাভ নিজে জানে অ্যাক্সিডেন্টটা ঘটানো হয়েছে উদ্দেশ্য যদিও তাকে মেরে ফেলাই ছিল কিন্তু সে বেঁচে গেছে। প্রাণে বেঁচে গেলেও তার পাদুটো বোধহয় অকেজো হয়ে গেছে ডাক্তার যদিও বলেছে আপাতত কিছুদিন রেস্টের পরে থেরাপি শুরু হবে তারপর অরুণাভ আবার নিজের পায়ে চলাফেরা করতে পারবে।
কিন্তু অরুণাভ ভালো করেই জানে যারা তার এই অ্যাক্সিডেন্টের পিছনে দায়ী তারা এক প্রচেষ্টায় থামবে না তারা আবার চেষ্টা করবে হয়তো তার বাবাকেও মারতে চাইবে, তাদের সাথে মিলে সে নিজেও তো কম কুকীর্তি তো করেনি একবার তো তার সামনেই সেইকথা বলেছিল কিন্তু কি করবে সে? তার হাতে কোনো প্রমাণ নেই ওদের বিরুদ্ধে, শহরের সবথেকে ক্ষমতাধর পরিবারের ছেলে হয়েও ভীষণরকম অসহায়ত্ব অনুভব করে অরুণাভ।
ওদের আটকাতে না পারলে ওরা যে তাকে এবং বাবাকে শেষ করে দিতে দ্বিধাবোধ করবে না প্রথমে সে তারপর বাবা তারপর.. তারপর কি তার ছোট্ট ছেলেমেয়ে দুটোকেও.. ভাবতেই শিউরে উঠলো অরুণাভ।
এইসময় হটাৎই তার দুপুরের ঘটনাটা মনে পরলো একটা ছেলে তাদের বাড়িতে ঢুকে সুশান্ত আর মনোজকে আরোং ধোলাই দিল। কে ছিল ছেলেটা? অরুণাভ লক্ষ্য করেছে ছেলেটা কয়েকমুহূর্তের জন্য তার আর মৌমিতার দিকে তাকিয়ে ছিল, অরুণাভর কেন যেন সেই দৃষ্টিটা অত্যন্ত চেনা মনে হয়েছিল, কোথায় যেন দেখেছিল কিন্তু কিছুতেই তখন মনে পরেনি এখন পরেছে সেই একই দৃষ্টি সেই চরম বিতৃষ্ণা ঘৃণা ছিল সেই দৃষ্টিতে যেটা সে আরো একজনের চোখে দেখেছিল, প্রায় ৯ বছর আগে গ্যাংটকের রুমটেক মনাস্ট্রির পিছনের দিকের খাদে নীচের অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়ার আগে শেষবারের মতো তার ছোটোভাই অনিকেতের চোখে দেখেছিল অরুণাভ।
সকালে মর্ণিং ওয়াকের অভ্যাস না থাকলেও যখনই শ্যালক-ভগ্নিপতি অর্থাৎ স্বর্ণেন্দু বাবু এবং অভিরূপবাবু পরস্পরের বাড়িতে থাকেন তখন সকালে উঠে দুজনেই হাঁটতে বেড়োন, এমনই গল্প করতে করতে হাঁটা তারপর কোনো একটা রাস্তার কোনো একটা চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে আবার হাঁটতে হাঁটতে ফিরে আসেন।
অনেকেই হয়তো ভ্রু কোঁচকাবেন যে এতবড়ো মানুষ হয়েও রাস্তার দোকান থেকে চা খান? হ্যাঁ খান আর এখানেই ওনাদের পরিচয়, যত বড়োই হয়ে যান যতো টাকাই উপার্জন করুন না কেন দুজনেই সর্বদা মাটির মানুষ হয়ে থাকেন।
আজও নিউ আলিপুরের বাড়ি থেকে দুজনেই ভোর ভোর উঠে বেরোলেন, কিন্তু আজ স্বর্ণেন্দু বাবু লক্ষ্য করলেন অভিরূপবাবুকে কেমন যেন লাগছে,
"কিছু হয়েছে জামাইবাবু? তোমার মুখটা কেমন যেন লাগছে?" দুজনের সম্পর্ক বন্ধুর মতোই তাই পরস্পরকে তুমি করেই সম্বোধন করেন তারা।
"একটা কথা বলবো ভাবছি কিন্তু সেটা ঠিক হবে কি না বুঝতে পারছি না"
"তুমি আমাকে কথা বলতে হেজিটেট করছো কবে থেকে? আর জানোই তো ডাক্তার এবং উকিলের কাছে কিছু লুকোতে নেই, আমি তো শুধু তোমার শালা নই তোমার পরিবারের উকিলও, বলো কি হয়েছে?"
অভিরূপবাবু তবুও কিছুক্ষণ চুপ থাকেন বোধহয় মনের দ্বিধাটা দূর করে নেন তারপর বললেন,
"গতকালের ছেলেটাকে মনে আছে?"
"যে ছেলে একা ব্যানার্জী ভিলায় ঢুকে বাড়ির ছেলে আর তার বন্ধুকে ঠেঙিয়ে যায় তাকে ভোলা যায়? কিন্তু কি হয়েছে ওর?"
"তোমার দিদির মনে হচ্ছে ও আসলে অনি"
একটু যেন অবাক হলেন স্বর্ণেন্দু বাবু বলেন, "কিন্তু দিদির এরকম মনে হচ্ছে কেন? অনি তো.."
"জানি, তবুও শ্রীতমার মনে হয় ওটা অনি ছিল"
"আর তোমার কি মনে হয়?"
"সত্যি বলতে ও যখন আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো তখন একমুহূর্তের জন্য আমারও মনে হলো যেন ওটা অনির হাত"
"কিন্তু জামাইবাবু ও যদি অনি হয় তাহলে এতবছর কোথায় ছিল, ফিরে এলোনা কেন? বা এখনো ফিরে আসছে না কেন? ইনফ্যাক্ট চেহারা পাল্টালো কেন আর কিভাবে?"
"চেহারা প্লাস্টিক সার্জারি করে পাল্টানো যায়, স্বর্ণেন্দু"
"আমি জানি সেটা কিন্তু কেন? আর কিভাবে? মানে ও সার্জারির টাকা পেলো কোথায়? প্লাস্টিক সার্জারি করতে কম টাকা লাগে না, ওর তো কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টও ছিল না অরুণাভর মতো যেখানে তুমি মাসে মাসে অরুকে হাতখরচা দিয়ে দিতে, অনির যখন দরকার হতো তখন তোমার বা দিদির থেকে চেয়ে নিত, তাহলে ও এত টাকা পেলো কোত্থেকে? না জামাইবাবু দিদি যাই বলুক ও অনি নয়"।
"কিন্তু টোবো? ও ওরকম আচরণ করলো কেন? মানুষ একজন মানুষকে চিনতে ভুল করতে পারে কারণ তারা চেহারা দেখে বিচার করে কুকুর সেটা নয়, যতই মেকআপ করুক বা চেহারা পাল্টাক কুকুর ঠিক তার পরিচিত মানুষকে চিনতে পারে আর কাল টোবোর আচরণ দেখে মনে হলো ও ওই ছেলেটাকে চিনতে পেরেছে, যে লাল বলটা দিয়ে ও ছেলেটার সাথে খেলতে চাইলো সেটা অনি খেলতো ওর সাথে, বলটাও অনির দেওয়া"
স্বর্ণেন্দু বাবুর মুখ দেখে মনে হলো তিনিও এবার একটু কনফিউজড হয়ে গেছেন এবং সেটা তার কথাতেই বোঝা গেল, " তুমি তো আমাকেও ফাঁপড়ে ফেলে দিলে, এই কথাটাতো মাথায় আসেনি"
"এটা তোমার দিদির মাথায় এসেছে আমিও ওর এই কথার পাল্টা দিতে পারিনি"।
কথা বলতে বলতে হেঁটে বাড়ি থেকে অনেকটাই চলে এসেছেন দুজনে এবার একটা চায়ের দোকানে ঢুকে দুটো চা অর্ডার করলেন একটু পরেই দুটো কাঁচের গ্লাসে গরম চা দোকান থেকে একটু সরে এলেন তারপর ধোঁয়া ওঠাগরম চায়ে একটা চুমুক দিয়ে তৃপ্তিসূচক শব্দ বার করে স্বর্ণেন্দুবাবু জিজ্ঞেস করলেন, "তাহলে এখন কি চাইছো?"
অভিরূপ বাবুও চায়ে একটা চুমুক দিয়ে বললেন "তোমার দিদি চাইছেন আমি যেন ওকে খুঁজে বের করি"।
"কিন্তু জামাইবাবু এটা আমাদের অনুমান যে ও অনি আর এটা সত্যি নাও হতে পারে"
"আবার হতেও পারে, দেখো স্বর্ণেন্দু শহরে আমার পরিচিত অনেক আছে এটা ঠিক তাদের বললে তারা হয়তো খুঁজে বের করবে কিন্তু কোনোভাবে যদি প্রীতম আর মনোজিত বাবু ওর খোঁজ পেয়ে যান তাহলে ওর ক্ষতি করার চেষ্টা করবে তাই আমি চাইছিলাম যাতে পুলিশের কেউ করে, তোমার তো লালবাজারের অনেক উঁচু পোস্টের পুলিশের সাথে যোগাযোগ আছে তাদের কেউ যদি কাজটা করে"।
"জামাইবাবু ওইদুজন ব্যানার্জী পরিবারের নাম ভাঙিয়ে অনেক কিছু করেছে পুলিশেও ওদের খোঁচর আছে, সেখান থেকেও খবর পেয়ে যাবে"
"তাহলে? বিশ্বস্ত কি কেউ নেই?"
একটু ভেবে স্বর্ণেন্দু বাবু বলেন, "আছে, একজন আছে সে নিশ্চয়ই বার করতে পারবে,আমার পরিচিত, বন্ধুও বলতে পারো"
"কে তিনি? তাকেই বলে দেখো, বলোতো আমিও যাবো তোমার সাথে"
"সেটা যাওয়া যায় কিন্তু একটা প্রবলেম আছে"
"কি প্রবলেম?"
"তিনি আমাদের উপরে রেগে আছেন, আমার উপরে তো বটেই এমনকি তোমার উপরেও"
"কেন? আমি কি করেছি?"
"আসলে কথাটা হলো লোকটা অনিকে চিনতো, শুধু চিনতো বলা ভুল দুজনের রীতিমতো ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল এবং অনিকে যথেষ্ট স্নেহ করতো। ওর বিশ্বাস অনি নিজে থেকে খাদে পরেনি ওকে কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছে"
"মানে খুন? কিন্তু অনিকে খুন করবে কে? আর কেন?"
"সেটাই ও তদন্ত করতে চেয়েছিল ওর সন্দেহ অরু এবং মৌমিতার উপরে, এবং ওর যা সোর্স তাতে সিকিম পুলিশকে দিয়েও তদন্ত করাতে পারতো নিজেও অরু আর মৌমিতাকে জেরা করতে চেয়েছিল, আমাকে বেশ কয়েকবার সেকথা বলেছিল অথচ আমরা রাজী হইনি, উপরন্তু কেসটা বন্ধ করে দিয়েছি তাই ক্ষেপে আছে"
"তাহলে ওনার কাছেই চলো, আজই চলো আমি কথা বলবো"
"আজ হবে না"
"কেন?"
"আসলে আগে আমি যখন খুশি দেখা করতে পারতাম কিন্তু অনির এই ঘটনার পরে আমার উপরে এতটাই রেগে আছে যে দেখা করতে চায় না বাইচান্স কোনো কেসের ব্যাপারে বা কোর্টে দেখা হলেও চেষ্টা করে এড়িয়ে যেতে তাই আগে ওর থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে সহজে দেখা করবে না তবে চেষ্টা করে দেখি"
"চেষ্টা নয় ওনার সাথে দেখা করতেই হবে, বলো তো ওনার বাড়িতে বা লালবাজারেও দেখা করতে যাবো"
"ঠিক আছে জামাইবাবু আমি দেখছি"
চা শেষ হয়ে গিয়েছিল এবার গ্লাস দুটো ফেরত দিয়ে দাম মিটিয়ে দুজনে উল্টোপথ ধরলেন বাড়িতে ফেরার।
মনোজিত বাবুর বাড়িতে আজ আবার মিটিং বসেছে চারমূর্তি তো উপস্থিত আছেনই সাথে আরও ৫-৬ জন আছে, খুবই সাধারণ চেহারা তবে দুজনের রীতিমতো জিম করা চেহারা, কিন্তু প্রত্যেকের চোখ একেবারে জাত খুনির দেখেই বোঝা যায় অবলীলায় যে কারো গলা কাটতে পারে।
"ভেবে দেখো কাজটা করতে পারবে কি না?"
মনোজিত বাবু লোকগুলোর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, লোকগুলোর মধ্যে একজন কর্কশ গলায় জবাব দেয়, "কাজটা তো এতদিনে হয়েই যেত আপনারাই বললেন কিসব প্ল্যান আছে, তারপর এইকদিন আমাদের পুরো এরিয়া ঘোরালেন"
"ওটার দরকার ছিল"
"অত ঝামেলার দরকার কি সেটাই তো বুঝতে পারছি না, লোকটাকে অনেকবার রাস্তায় একা দেখেছি নেহাত আপনারা বারণ করেছেন তাই কাজ করিনি"
"তোমাদের কোনো ধারণা আছে লোকটা কে? ওর গায়ে একটা আঁচড় পরলে পুরো লালবাজার ঝেঁকে আসবে"
"এত ভয় পেলে কাজ হয় নাকি? পুলিশ তো এখনও তদন্ত করবে"
"করবে, তবে খুনের নয় ডাকাতির"
"মানে আপনাদের প্ল্যানটা খুলে বলুন"
"লোকটাকে মারার আগে পুরো সাউথ কলকাতা জুড়ে তোমাদের আরও কয়েকটা কাজ করতে হবে, তারপর মেইন কাজ। এমনভাবে করতে হবে যাতে পুরো ব্যাপারটা ডাকাতির মনে হয় খুনের নয়, যেটা বললাম পুলিশ তদন্ত করবে তবে ডাকাতির কাজটা করে তোমরা ফিরে যাবে এইসব কেসে পুলিশ আরও একটা ঘটনার ওয়েট করে ফাঁদ পেতে, কিন্তু আর কোনো ঘটনা হবে না"
"এতে কিন্তু বেশি টাকা লাগবে"
"দেবো" এতক্ষণে মুখ খুললেন প্রীতমবাবু "কিন্তু কাজটা হওয়া চাই লোকটা যেন বাঁচতে না পারে"
"বাঁচবে না, গ্যারান্টি"।
লালবাজারের পুলিশ হেডকোয়ার্টারে নিজের কেবিনে বসে চিন্তা করছিলেন নগরপাল সুপ্রতিম দাশগুপ্ত, বয়স ৫২ এর আশেপাশে, কিন্তু শক্তপোক্ত পেটানো চেহারা মাথায় কানের উপরে দুই জুলফিতে পাক ধরেছে এছাড়া বাকি মাথায় পাকা চুল প্রায় নেই বললেই চলে, নাকের নীচে মোটা গোঁফ, এছাড়া দাঁড়ি পরিষ্কারভাবে কামানো, গায়ের রঙ শ্যামলা।
সুপ্রতিম বাবুর চিন্তার কারণ সম্প্রতি কলকাতার দক্ষিণ অংশে ঘটে যাওয়া কয়েকটা ছিনতাইয়ের কেস। ছিনতাইকারীরা বাইকে করে আসছে কোনো মহিলা বা বৃদ্ধকে জখম করে তাদের কাছে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে চম্পট দিচ্ছে আবার কখনো কখনো কোনো দোকানে ঢুকে টাকা লুট করে চলে যাচ্ছে।
বিগত তিনমাসের মধ্যে এখনও পর্যন্ত পাঁচ-পাঁচটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে অথচ পুলিশ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে, সবথেকে বেস্ট অফিসারদের এই তদন্তের ভার দিয়েছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ক্লু নেই কাউকে গ্ৰেপ্তার করা যায়নি, এই নিয়ে শহরে বেশ হইচই পরে গেছে। মিডিয়া রীতিমতো ছিঁড়ে খাচ্ছে পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে।
কিভাবে এই ছিনতাইকারীদের ধরা যায় সেবিষয়েই ভাবছিলেন সুপ্রতিমবাবু হটাৎ দরজায় টোকার আওয়াজে চিন্তায় ছেদ পরে তাকিয়ে দেখেন দরজায় এক যুবতী দাঁড়িয়ে আছে পরনে সাদা শার্ট আর কালো ট্রাউজারস্, পায়ে বুট মাথায় চুল খোঁপা করে রাখা।
"মে আই কাম ইন স্যার?" যুবতী ভিতরে আসার পার্মিশন চায়,
"ইয়েস কাম ইন" যুবতী ভিতরে এলে সুপ্রতিমবাবু আবার জিজ্ঞেস করেন "এনি আপডেট?"
"নো স্যার"
"সিসিটিভি ফুটেজ চেক করেছো? বাইকের নাম্বারগুলো ট্রেস করা গেছে?"
"স্যার কয়েক জায়গার ফুটেজে ওদের দেখা গিয়েছে কিন্তু সবসময়ই মুখ হেলমেটে ঢাকা ছিল তাই মুখ বোঝার উপায় নেই"
"বাইকের নম্বর গুলো?"
"ফেক নম্বর, তবে একটা জিনিস বোঝা যাচ্ছে"
"কি সেটা?"
"এলাকার রাস্তাঘাট ওদের খুবই চেনাজানা, যারা এই ঘটনার পিছনে দায়ী তারা হয় এলাকার লোক আর নাহয় অনেকদিন থেকেই প্ল্যান করেছে, আগে রাস্তাঘাট সব চিনে জেনে নিয়ে তারপর অ্যাকশনে নেমেছে"
"সেটা বললে তো হবে না ওদের ধরতে হবে সেটা কিভাবে করা যায় কিছু ভেবেছো?"
যুবতী মাথা নীচু করে মাথা নেড়ে না জানায় এতে সুপ্রতিমবাবু যেন তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন,
"সবকটা অকর্মার ঢেঁকি, একটাও কাজের নয় সবকটাকে সাসপেণ্ড করবো"
"স্যার, আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করছি"
"তার নমুনা তো দেখতেই পারছি, একটাও কাজের না, হোপলেস.... এইসময় যদি ও আমার পাশে থাকতো তাহলে আর চিন্তা ছিল না" একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কারো না থাকায় আফশোষ প্রকাশ করেন নগরপাল।
যুবতী এবারে মুখ তুলে তাকায় এটা নতুন নয় সে জানে কার কথা হচ্ছে সামনের মানুষটা তো শুধু তার সিনিয়র অফিসার নন তার বাবাও, যুবতী বলে,
"আমাদের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বেস্ট অফিসাররা এই কাজে লেগে আছে"
"তারপরেও রেজাল্ট জিরো, এইসময় সত্যিই ওকে খুব দরকার ছিল" আবার আফশোষ ঝরে পরে সুপ্রতিমবাবুর স্বরে।
"যে নেই তার কথা ভেবে কি হবে ড্যাড" এমনিতে অফিসে স্যার বলেই ডাকে যুবতী কখনো সখনো দুজনে একা থাকলে তখন ড্যাড বলে সম্বোধন করে।
"ও থাকলে এতদিনে ঠিক কেস সলভ্ হয়ে যেত ঠিক কোনো না কোনো প্ল্যান বার করতো"
এইসময় আবার দরজায় নক হয় দুজনে তাকিয়ে দেখেন একজন কনস্টেবল দাঁড়িয়ে আছে সে একটা স্যালুট ঠুকে বলে "স্যার অ্যাডভোকেট স্যার আপনার সাথে দেখা করতে চাইছেন"
"কে?" একটু বিরক্ত হয়েই জিজ্ঞেস করেন সুপ্রতিমবাবু।
"অ্যাডভোকেট স্বর্ণেন্দু মুখার্জি, বলছেন খুব দরকারি বিষয়"
"বলে দিন ব্যাস্ত আছি দেখা হবে না"
কিন্তু পরক্ষনেই কনস্টেবলের পিছনে স্বর্ণেন্দু বাবুর মুখ দেখতে পান সুপ্রতিমবাবুপরক্ষনেই রাগে ফেটে পরেন,
"কে ঢুকতে দিয়েছে আপনাকে? বেরিয়ে যান আমি এখন ব্যাস্ত আছি"
"এতদিনের পুরনো বন্ধুর সাথে এরকম ব্যবহার?" ভিতরে ঢুকে কথাটা বলেন স্বর্ণেন্দু বাবু
"আপনাকে ঢুকতে কে দিয়েছে?"
"পুলিশের হয়ে এতগুলো কেস লড়ে জেতার পরেও যদি আমাকে কেউ তোমার রুমে আসা থেকে আটকায় তাহলে তো খুবই দুঃখের কথা ভায়া"
স্বর্ণেন্দু বাবুর এইরকম কথায় সুপ্রতিমবাবুর রাগের পারদ চড়তে থাকে তবুও তিনি যথাসম্ভব নিজেকে সামলিয়ে বলেন, "দেখো তোমার সাথে ফালতু কথা বলে নষ্ট করার মতো সময় আমার নেই, তুমি এখন যাও"
"ডাকাতির কেসগুলো নিয়ে ব্যাস্ত নাকি?" চেয়ারে বসে মন্তব্য করলেন স্বর্ণেন্দু বাবু।
"হ্যাঁ, আংকেল" যুবতী কথা বলে,
"আরে তানিয়া মা, তোমাকে খেয়ালই করিনি কেমন আছো?"
"আপাতত খুবই খারাপ যতদিন না এই ক্রিমিনালগুলোকে ধরতে পারছি ততদিন ভালো হবো না"
"হাল ছেড়ো না, ঠিকই পারবে"
"একটা হেল্প করবেন আংকেল?"
"বলো"
"ঘটনাগুলো মূলত শুধুমাত্র সাউথের কয়েকটা জায়গা জুড়েই হচ্ছে এইসব এলাকায় নতুন কেউ এসেছে নাকি বা কারো লাইফস্টাইল হটাৎ করেই চেঞ্জ হয়েছে নাকি একটু খোঁজ নেবেন?"
"এসব তো পুলিশের ইনফর্মারদের কাজ,আমি কেন?"
"ইনফর্মারদের বলা আছে তবুও আপনি ওখানকার লোকাল লোক তার উপরে আমাদের আত্মীয়ই, বিশ্বস্তও তাই বলছিলাম"
"তোমার বাবা আমাকে আত্মীয় মনে করেন না, সে যাই হোক আমি আমার কিছু বিশ্বস্ত লোককে বলে রেখেছি খবর পেলেই জানাবো"
"থ্যাংক ইউ আংকেল" যুবতী বেরিয়ে গেল, আর তারপরেই সুপ্রতিম বাবু গম্ভীরমুখে জিজ্ঞেস করলেন, "এখানে এখন কি দরকার?"
"তোমার সাথে আলাদা একটু দরকার ছিল, বাড়িতে তো আমাকে ঢুকতে দেবে না তাই আগে এখানে দেখা করতে এলাম"
"কি দরকার সেটা বলবে?"
"আমার জামাইবাবু মানে অভিরূপ ব্যানার্জী তোমার সাথে একটু দেখা করতে চান"
"অভিরূপ ব্যানার্জী আমার সাথে দেখা করতে চান কারনটা জানতে পারি?" একটু যেন অবাক হন সুপ্রতিমবাবু।
"সেটা উনিই বলবেন তবে শুনলে তুমিও ইন্টারেস্ট পাবে আজ রাতে তোমার বাড়িতে আনবো?"
সুপ্রতিমবাবুকে চুপ থাকতে দেখে স্বর্ণেন্দু বাবু আবার বলেন "প্লিজ না কোরো না"
"বেশ, তবে আজ রাতে না তোমরা বরং কাল সকালে আসো"
"থ্যাংক ইউ ভাই, থ্যাংক ইউ"।
Posts: 535
Threads: 0
Likes Received: 368 in 304 posts
Likes Given: 382
Joined: Aug 2022
Reputation:
8
Boro update dile aro valo hoto dada aktu fast update dio, I literally can't wait for upcoming update fr. Ar aro akta bepar,dada akjon kintu opeekha kore ace adir jonne. Ami to vebhe silam trikon prem dekte pabo "_"
"The greatest trick the devil ever pulled was convincing the world he didn't exist."
KaderSaimon's Official Fan Club Link: http://tiny.cc/FanClubLink
Posts: 27
Threads: 0
Likes Received: 25 in 22 posts
Likes Given: 10
Joined: Jun 2019
Reputation:
0
Update darun jachhe kintu.......
Darun interesting.......
As soon as possible update deor chestha koro......
In future ai doroner golpo debe asha rakchi.....
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(06-06-2023, 12:06 AM)Jaguar the king Wrote: Story te new thril asche boss,khub sundor update ধন্যবাদ
(06-06-2023, 12:08 AM)Boti babu Wrote: Mind blowing update. কিন্তু একটা খটকা দুটো পর্ব দ্বিতীয় পর্ব তা হলে প্রথম পর্ব গেল কোথায়!!!!! নর্থবেঙ্গলের পার্টটা প্রথম ওখানে শেষে লেখাও আছে যে প্রথম পার্টটা এখানেই শেষ। কলকাতার পার্টটা দ্বিতীয় পার্ট।
(06-06-2023, 12:13 AM)Matir_Pipre Wrote: Keep it up brother. take love ধন্যবাদ
(06-06-2023, 03:00 AM)Patrick bateman_69 Wrote: Boro update dile aro valo hoto dada aktu fast update dio, I literally can't wait for upcoming update fr. Ar aro akta bepar,dada akjon kintu opeekha kore ace adir jonne. Ami to vebhe silam trikon prem dekte pabo "_" সময় করে যতটা লেখা হয় সবটাই দিয়ে দিই, ফলে আবার লেখা হলেই দেবো চিন্তা নেই।
ভবিষ্যতে কি হবে কে বলতে পারে?
(06-06-2023, 03:30 AM)Rampu007 Wrote: Update darun jachhe kintu.......
Darun interesting.......
As soon as possible update deor chestha koro......
In future ai doroner golpo debe asha rakchi.....
ধন্যবাদ
আগে এটা শেষ করি তারপর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববো।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 22
Threads: 0
Likes Received: 19 in 19 posts
Likes Given: 1,206
Joined: May 2019
Reputation:
0
প্রতিবারের মতোই দুরন্ত আপডেট ৷ পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় রইলাম ৷ Like & Repu added.
Posts: 181
Threads: 2
Likes Received: 189 in 112 posts
Likes Given: 202
Joined: Mar 2023
Reputation:
1
দারুন হয়েছে আপডেট টা ...অনেকদিন পর আপডেট দিলেন....আবার এমন মুহূর্তে শেষ করে দিলেন পরের পরের পার্ট এর জন্য অপেক্ষায় থাকতে পারছিনা।
Like & repu added
—͟͟͞͞?⁀➷ᏁᎪᎥm_Ꮓ ᭄✭✭
"The End Is The Beginning And The Beginning Is The End."
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(06-06-2023, 09:07 AM)bad_boy Wrote: প্রতিবারের মতোই দুরন্ত আপডেট ৷ পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় রইলাম ৷ Like & Repu added. ধন্যবাদ
(06-06-2023, 11:49 AM)Naim_Z Wrote: দারুন হয়েছে আপডেট টা ...অনেকদিন পর আপডেট দিলেন....আবার এমন মুহূর্তে শেষ করে দিলেন পরের পরের পার্ট এর জন্য অপেক্ষায় থাকতে পারছিনা।
Like & repu added ধন্যবাদ
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 1,270
Threads: 3
Likes Received: 1,446 in 962 posts
Likes Given: 3,888
Joined: Apr 2022
Reputation:
152
07-06-2023, 12:07 AM
(This post was last modified: 07-06-2023, 12:16 AM by Boti babu. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(06-06-2023, 08:04 AM)Monen2000 Wrote: নর্থবেঙ্গলের পার্টটা প্রথম ওখানে শেষে লেখাও আছে যে প্রথম পার্টটা এখানেই শেষ। কলকাতার পার্টটা দ্বিতীয় পার্ট।
দেখো আমরা সাধারণত পার্ট মানে পর্ব ধরি । তাই একটু কনফিউশন হয়েছি। সচরাচর বাংলা লেখাতে বাংলিশ লেখা হয় না, আর হলেও এমন করে হয় না। তাই হয়তো আমার মত অনেকের এমন ভূল হতে পারে। তাই বলছি কি এই পার্ট (বাংলিশ ইংরেজী শব্দ বাংলাতে লেখা) লেখাটা ব্যবহার না করে নর্থবেঙ্গল প্রথম খন্ড, কোলকাতা দ্বিতীয় খন্ড এমন লেখলে মনে হয় আরো ভালো হবে। এই গল্প হয়তো দ্বিতীয় খন্ডে সমাপ্ত হবে কিন্তু কে বলতে পারে ভবিষ্যতে তৃতীয় খন্ড চতুর্থ খন্ড আসবে না হয়তো এই গল্পের আসবে না হয়তো দেখা গেল তোমার অন্য কোনও লেখার খন্ডের পর খন্ড বই আকারে আসবে ভবিষ্যতে কি হবে কে বলতে পারে । তাই কথাটা বললাম। বাকি তোমার ইচ্ছা।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 199
Threads: 0
Likes Received: 105 in 98 posts
Likes Given: 1,106
Joined: Mar 2023
Reputation:
2
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(07-06-2023, 12:07 AM)Boti babu Wrote:
দেখো আমরা সাধারণত পার্ট মানে পর্ব ধরি । তাই একটু কনফিউশন হয়েছি। সচরাচর বাংলা লেখাতে বাংলিশ লেখা হয় না, আর হলেও এমন করে হয় না। তাই হয়তো আমার মত অনেকের এমন ভূল হতে পারে। তাই বলছি কি এই পার্ট (বাংলিশ ইংরেজী শব্দ বাংলাতে লেখা) লেখাটা ব্যবহার না করে নর্থবেঙ্গল প্রথম খন্ড, কোলকাতা দ্বিতীয় খন্ড এমন লেখলে মনে হয় আরো ভালো হবে। এই গল্প হয়তো দ্বিতীয় খন্ডে সমাপ্ত হবে কিন্তু কে বলতে পারে ভবিষ্যতে তৃতীয় খন্ড চতুর্থ খন্ড আসবে না হয়তো এই গল্পের আসবে না হয়তো দেখা গেল তোমার অন্য কোনও লেখার খন্ডের পর খন্ড বই আকারে আসবে ভবিষ্যতে কি হবে কে বলতে পারে । তাই কথাটা বললাম। বাকি তোমার ইচ্ছা।
ঠিক আছে মনে থাকলে পরের আপডেটে শুধরে দেবো
(07-06-2023, 06:34 AM)Dodoroy Wrote: Darun
ধন্যবাদ
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 18
Threads: 0
Likes Received: 17 in 17 posts
Likes Given: 2
Joined: May 2019
Reputation:
0
very nice. keep me totally concentrate in the story. Hope will found same adventures in future.
All the best.
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(07-06-2023, 08:33 AM)skx1965 Wrote: very nice. keep me totally concentrate in the story. Hope will found same adventures in future.
All the best.
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
|