Thread Rating:
  • 65 Vote(s) - 3.08 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic - অতিথি



মন কি জানে, মনের কথা?
ভাবছে কি আজ মন
মন জানে না মনের খবর

আনমনা এখন।












গল্পের পরবর্তী আপডেট তৈরী, আজ রাতেই আসবে গল্পের নতুন পর্ব, সঙ্গেই থাকুন...
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
পর্ব- ষোলো 






সেদিন শুভ টিফিনের সময়টা মাধুরীর সাথেই ছিল,ওর বলা প্রতিটি শব্দে কিছুটা আক্ষেপ কিছুটা অপ্রাপ্তির আর সবচেয়ে বেশি হৃদয় ভাঙার বেদনার আভাস ছিল। মাধুরী ওর জায়গা থেকে সবটাই আচ করতে পারছিল হয়তো মনের কোনে কোথাও খানিক অনুশোচনাও জেগে উঠছিল। তবে সে তো কখনো শুভ কে ওমন করে দেখে নি ভাবে নি। তবে সেসবের বাইরেও ওদের মাঝে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সেটা তো সত্যি। তবে সেই সম্পর্কের নাম কি শুধুই কি বন্ধুত্ব নাকি দেয়া নেয়া কিংবা লাভজনিত বন্ধুত্ব। যেটাকে আধুনিক ভাষায় বলা হয় "friends with benefit".


মাধুরী হয়তো তার জায়গায় সঠিক আবার শুভও তার জায়গায়। দুজনের পয়েন্ট অব ভিউ দুইরকম তবে সেটা তো কোন এক জায়গায় গিয়ে একবিন্দুতেই মিলছে আর সেটা হলো হৃদয়ের ডাক। সেখানেই বেঁধেছে বিপত্তি কারণ একেক জনের হৃদয় যে একেক রকম করে ভাবে একেক ধরণের সুর বাঁধে আর সেই সুরেই গান গায়৷ শুভর হৃদয় যেখানে মাধুরীর সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক টাকে এগিয়ে নিতে ভাবছে সেখানে মাধুরীর হৃদয় সুর বেঁধেছে অন্যকারও নামে যেখানে শুভর কোন অস্তিত্ব নেই থাকার কথাও নয়।


তবে সেদিনের পর মাধুরী সেটা নিয়ে খানিক ভেবেছে, হয়তো কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে। নাহ ওর মনের কোনে শুভ কে নিয়ে কোন সংশয় নেই, না পেয়েছে ওর কোন দোষ। দোষ থাকবেই বা কেন শুভ কখনো কোন কিছুতে মাধুরীর উপর জোর খাটায় নি। যা হয়েছে যতটুকু হয়েছে সেটা ওর নিজের সম্মতিতেই হয়েছে। কিন্তু আজকাল মাধুরী মনে শুভর জন্য কোন সফট জোন খোঁজে পায় না, তবে আছে কিছু আছে তবে সেটা ঐ বন্ধুত্ব পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। চোখবন্ধ করে মাধুরী ওদের একসাথে কাটানো আগের মূহুর্ত গুলো ভাবার চেষ্টা করে, ওদের একান্ত মূহুর্ত আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে শারীরিক সম্পর্কে সময় টুকু ভাবতে গেলে শরীরে আর আগের মত শিরশিরানি অনুভব করে না। কিন্তু একটা সময় শুভ সাথে কাম খেলা সেই মুহূর্ত গুলো ভাবতে গেলেই ওর শরীরে একটা টান অনুভব করতো, ঘন ঘন পড়তে থাকা শ্বাসের গতি বাড়তো। উত্তেজনার প্রভাবে গুদ খানা ভিজে উঠতো। আজকাল সেসব আর হয় না ওর মন সেই স্মৃতিচারণে ধরা দেয় না।
আজকাল তো মন পড়ে থাকে নতুন ঠিকানায়, মাঝে মাঝে মনে হয় ও নিজেই অতিথি হয়ে গিয়েছে মনের কাছে। হৃদয় আজও ধুকপুক করে গতি বাড়ায় একঘেয়ে চলতে থাকা হৃৎপিণ্ড টা। তবে সেটা যে সুর পাল্টেছে, পাল্টেছে ভাষা। আজানা এক সুখের পেছনে তীব্র টান অনুভব করে, মন জানে না সেটার ফল কি তবুও পরখ করে দেখতে চায়। মনের আকর্ষণ বাঁধ ভেঙেছে, প্রবল হয়ে উঠেছে সেই মানুষটাকে পাবার আশা। একবার জড়িয়ে ধরতে চায় অনুভব করতে চায় নিজের হাতের কাছে। কানপেতে শুনতে চায় সেই মানুষটার হৃদয়ের শব্দ। মাধুরীর শরীর অস্থির হয়ে উঠে মানুষটাকে একটাবার দেখার আশায়। হৃদয় হাসফাস করে কিছু কথা বলার অভিলাষে। বারবার মন চায় ছুটে চলে যেতে তার কাছে। এই অদ্ভুত ক্রিয়াকলাপ আগে কখনো নিজের সাথে হতে উপলব্ধি করে নি মাধুরী।

তবে মাঝে মাঝে মন ভার হয়ে আশে, হৃদয় কেঁদে উঠে অজানা আশংকায়। সে যেই মানুষটাকে এতো করে চাইছে সেই মানুষটাও কি তাকে এমন করে চাইবে? ওকে গ্রহন করে নিবে নিজের মত করে। জড়িয়ে নিবে নিজের বাহুমূলে যেখানে সবসুখের ঠিকানা খুঁজে নিতে চায় মাধুরী। তাই তো মন কে প্রশ্ন করে সে আমার হবে তো নাকি....

মন কি জানে, মনের কথা?
ভাবছে কি আজ মন
মন জানে না মনের খবর
আনমনা এখন।
অনেক খবর রাখতে গিয়ে
নিজেকে গেল ভুলে
মনের কথা মনের মাঝে
নিলাম আমি তুলে।
মন যে আমার আনমনা আজ
বোঝে না কিছু বুঝতে
ব্যস্ত বেজায় মনটা আমার
মনের মানুষ খুঁজতে।
কোথা যে পাই, সেই ভাবনায়
মনটা হল ভার
মনের মানুষ পাব না কি
তবে আমি আর।
হটাৎ যেন মনের মাঝে
নামে যে সংশয়
মনের মানুষ পাব না খুঁজে
এটাই মনে হয়।




আজ অনির্বাণের শেষ পরীক্ষা ছিল, অবশেষে একটা কঠিন পরীক্ষার প্রথম ধাপের সমাপ্তি ঘটলো। এখন অপেক্ষা পরের ধাপের, আগের পরীক্ষায় পাশ করলেই এই পরীক্ষার সূচনা হবে৷ মনের কোনে একটু আধটু ভয় যে নেই তা নয় তবে পূর্ণ বিশ্বাস আছে এবারের মত পাশ করে যাবে। পাশ যে তাকে করতেই হবে নইলে যে ডাহা ফেল হয়ে যাবে জীবনের লড়াই ক্ষেত্রে। তাই মনে বল বাড়িয়েছে জুগিয়েছে আত্মবিশ্বাস আর সেটার নেপথ্যের কারিগর তারই প্রেয়সী রুমা।

পরীক্ষার হল থেকে বেড়িয়ে চোখ রাখে গেটের কাছে রুমার আসার কথা ছিল। তেমনটাই কথা হয়েছিল গতকাল রাতে। আজ অনির্বাণ রুমাকে লাঞ্চ করাবে সাথে ঘুরাঘুরি তো আছেই। বাকিদের সাথে কথা বলতে বলতে সিঁড়ি ধরে তিনতলা থেকে নামতে থাকে অনির্বাণ। ভেতরে ভেতরে খুব এক্সাইটেড হয়ে আছে, গতরাতের কথা গুলো মনে পড়তেই হাসি খেলে যায় ঠোঁটে।


রুমার আজ কলেজে অফ ডে তাই বাসা থেকে সোজা অনির্বাণের কেন্দ্রের কাছে চলে এসেছিল। রুমা একটা কফিশপে ধোঁয়া উঠা কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে অপেক্ষা করছে। মাঝে সাঝে ঠোঁটের কোনে মিষ্টি লাজুক হাসি উঁকি দিয়ে যাচ্ছে৷ সকাল থেকেই তার মনটাও আজ উড়ো উড়ো। কিছু ভাবনা ওর মনের ভেতরে আনচান সৃষ্টি করে চলেছে৷ আজকাল অনির্বাণ একটু একটু করে আগের সেই পুরনো ভাবটা ধরতে শুরু করেছে। সেই আগের মতই হঠাৎ দুষ্টু দুষ্টু আবদার করে বসে। আর এমন কিছু কথা বলে বসে যে আবদার না রেখেও পারে না। যেমন গতকাল রাতে অনির্বাণ ওকে দেখার আবদার করে বসে। এই দেখা সেই দেখা না সেটা রুমা ঠিকই বুঝতে পারে। আগেও একদিন সেটার অভিজ্ঞতা হয়েছিল কিন্তু তারপর অনির্বাণ আর সেসবের দিকে এগোয় নি। কাল হঠাৎ করেই আবার সেই পুরনো আবদার মাথাচাড়া দিয়ে উঠে অনির্বাণের।


মাঝে মাঝে প্রেমের কথার ফাঁকে শরীরে সুড়সুড়ি জাগানো কথাবার্তা গুলো রুমার চোখে মুখে লাজ আর রাগের ভাব ছড়ালেও দেহে অন্যরকম দোলা দিয়ে যায়৷ শরীর জুড়ে বইতে থাকে উত্তেজনার প্রবল স্রোত, শিরায় শিরায় বাড়ে রক্তের উত্তাপ। হরমোনের ব্যাপক নিঃসরন জাগিয়ে তুলে সুপ্ত ইন্দ্রীয় গুলোকে, দেহের স্পর্শকাতর সংবেদনশীল অংশ গুলোতে প্রভাব বিস্তার করে৷ কামভাবনায় জাগিয়ে তুলা মস্তিষ্কের স্নায়ু গুলো বের করে আনে ভেতরের আরেক সত্তা কে। রুমার শরীর জুড়ে অনির্বাণের অবাধ্য হাত ওর ইচ্ছা অনিচ্ছায় অনেক চড়ে বেড়িয়েছে। তবে ও নিজের শরীরের ডাকটা উপলব্ধি করেছে সেদিন যেদিন অনির্বাণের ঘরে নিজেকে অর্ধনগ্ন করেছিল। সেদিনের অনির্বাণের প্রতিটা ছোঁয়া ওর রক্তে আগুন ধরিয়েছে, কামের তাড়না ছড়িয়ে দিয়েছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে। মূলত সেদিনের পর রুমা নিজের নারী সত্তার আরেকটা দিকের দেখা পেয়েছে চরম ভাবে। তারপর কেটে গেছে কতগুলো দিন কিন্তু একটু একটু করে রুমার ভেতরের কামের আগুন টা ধিকিধিকি বেড়েই চলেছে। তবে সেটার পেছনের অবদান তো অনির্বাণেরই, সেই তো  একটু একটু করে যৌনতার শিক্ষা দিয়ে গিয়েছে রুমা কে। ধীরে ধীরে তপ্ত করে তুলেছে ওর ভেতরের সুপ্ত সত্তাটাকে।

গতকাল রাতে অনির্বাণ আর্জি জানায় রুমাকে একটু দেখার জন্য। নিজের পুরুষ সত্তাকে তৃপ্ত করাতে চায় নারীর সৌন্দর্য অবলোকন করিয়ে। রুমার কন্ঠে রাগী ভাব থাকলেও ওর ভেতরে কামাগ্নি দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে৷ নিজেকে অনির্বাণের সামনে নগ্ন কল্পনা করতেই শরীরের টান অনুভব করে৷ শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে যাওয়া শীতল স্রোত টাকে অনুভব করে নিজের গুদের ভেতর। কামরসে সিক্ত হয়ে থাকা গুদের নরম চামড়ার দেয়াল জুড়ে শুঁড় শুঁড়ি টা ওকে সোজা হয়ে বসতে দেয় না। হাত পা গুলো কেমন যেন অস্থির হয়ে উঠে, উত্তেজনায় নাকে পাটা ফুলে উঠে। গরম নিঃশ্বাসের উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত শরীর জুড়ে৷ কামের তাড়নায় দেহ ফুসতে থাকে বাড়তে থাকে শ্বাসের গতি নজর কাড়ে বুকের উঠানামা।
কিছুক্ষণ টালবাহানা চলে দুজনার মাঝে কিছুটা দরকষাকষি, প্রেমিকের মনের খোরাক মেটাতে প্রেমিকা হয় না রাজি। তবে শেষমেশ সবকিছু ছাড়িয়ে দুটো নরনারীর শরীরের খিদে সামনে প্রকট হয় তবে ঢাল হিসেবে আড়াল করে সেই ভালোবাসা। রুমা রাজি হয় নিজেকে দেখাতে, শরীর তো রাজি হয়ে আছে আরও কত আগে। তারপরও কিছুটা বিলম্বিত করার প্রক্রিয়া অবদান রাখে দিতে সুখের ঠিকানা।

রুমা চারপাশটা দেখে নেয় ভালো করে, শত হোক ধরা পড়ে যাবার ভয় তো থাকে মনে। ঘরের দরজা লক করে রুমা ফিরে আসে মোবাইলের কাছে যেখানে অনির্বাণ অপেক্ষা করতে তৃষ্ণার্ত চাতক পাখির মত। এবার অনির্বাণ নির্বাক দর্শক মাত্র যা করার সেটা তো রুমার করার পালা। রুমা তার দেহ পল্লব থেকে একটা একটা করে খোসা ছাড়াচ্ছে আর ওদিকে বসা অনির্বাণের শুষ্ক ঠোঁট গুলো যেন আরও বেশি করে শুকিয়ে যেতে থাকে। হাত গুলো নিসপিস করতে থাকে প্রেমিকার শরীর চড়ে বেড়াবার জন্য৷ হঠাৎ করেই যেন শুষ্ক জিভ খানা ভিজে উঠে প্রেয়সীর নরম ত্বকে উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে দেবার আশায়। রুমা নিজের জামা টা খুলে নিতেই ফর্সা নরম মোলায়েম ত্বক অনির্বাণের চোখে ধরা দেয়। চকচক করতে থাকা অনির্বাণের চোখের খিদে দেখে মনে হচ্ছে এ যেন কোন লোভনীয় খাবার পরিবেশন করা হয়েছে তার সামনে। রুমার জামাটা গা থেকে খসে যেতেই একটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। শরীরে অনাবৃত অংশ থেকে আবৃত অংশের উজ্জ্বলতা বেশি ছড়াচ্ছে। ভারী দুধ জোড়া বুকের কাছে লেগে আছে কালো ব্রায়ের খাপে। ফর্সা দুধ জোড়া ব্রায়ের চাপে রক্ত জমে হালকা লালচে হয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে দুধ জোড়া মুক্তি চাইছে বক্ষবন্ধনীর শক্ত আগল থেকে। একটু নিচে নামতেই মোলায়েম হালকা মেদের মাংসল পেট আর তার নিচেই লোভনীয় নাভীমূলের অস্তিত্ব। অনির্বাণের জিভখানা বারদুয়েক ঠোঁট গুলো ভিজিয়ে দেয়। সেটা চোখে পড়তেই রুমার শরীরটা যেন মুচড়ে উঠে, অদ্ভুত একটা অনুভূতির খেলা শুরু হয় শরীরের ভেতরে। পূর্ব শর্তমতে অনির্বাণ কে তার পড়নের গেঞ্জি টা খুলে নিতে হয় তবেই সামনে এগোবে এই একান্তই গোপন অভিসার।

এবার রুমার পালা, শরীরে উপরিভাগের একমাত্র বস্ত্রখানা এবার নিজের স্থানচ্যুত হবার অপেক্ষায়। রুমা হাত বাড়িয়ে কাঁধের স্ট্র্যাপ গুলো নামিয়ে দিতে থাকে, স্ট্র্যাপের সাদাটে দাগ বসে গেছে দুটো কাঁধেই। বুকের চওড়া অংশটা উন্মুক্ত হয়ে পড়ে অনির্বাণের লোভতুর চোখের সামনে। ধবধবে সাদা চামড়ায় ঢাকা বুকখানা ঠিক মাঝখানে গভীর গিরিখাতের দেখা মিলেছে। দুপাশের দুই সুউচ্চ বিশাল পবর্ত গুলো এখনো ঢেকে আছে কালো কাপড়ের চাদরে। রুমার সচল হাত নিজের গর্বের ভারী দুধ দু খানা অনাবৃত করতে অগ্রসর হয়। মূহুর্তের মাঝেই সামনে প্রকট হয় বিশাল দুটো নরম মাংসের দলা। বয়স আর শরীরের তুলনায় একটু বেশিই বড় আর ভারী দুধ দুটি হালকা ঝুলে গিয়েছে নিজেদের ভারে। তাতেই যেন ও দুটির সৌন্দর্য আর আকর্ষণ উভয়ই বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে৷ সাদা চামড়ায় আবৃত লাউয়ের মত মাংসপিণ্ডদ্বয়ের বাইরের প্রান্তে বাদামি রঙের গোল চাকতি মাঝখানে লালচে বোটা গুলো যেন হীরার মতই জ্বল জ্বল করছে। বোটার মুখটা খানিক এবড়োখেবড়ো হয়ে আছে তবে রুমার হালকা নড়াচড়ায় দুধ গুলো যেমন করে নেচে উঠে তাতে অনির্বাণের সোজা হয়ে বসে থাকা মুশকিল হয়ে গিয়েছে৷

অনির্বাণের ইচ্ছায় রুমা দু হাতে বুকের উপরের নরম মাংসগুলোকে নিয়ে খেলতে শুরু করে। ইচ্ছা টা অনির্বাণের হলেও এতে ভিতরে ভিতরে রুমারও সায় যে ছিল সেটা ওর শরীরের অস্থিরতাই বলে দিচ্ছে। গত কিছুদিন ধরে রুমা নিজের শরীরের ভেতর জেগে উঠা অজানা অদ্ভুত উত্তেজনার প্রশমন ঘটাতে নিজেই নিজের শরীরটাকে নিয়ে খেলায় মেতে উঠে। তখন ও নিজেই হাতের মর্দনে পিষতে থাকে বুকের গর্ব দুটিকে৷ অদ্ভুত রকমের একটা সুখের দেখা পেয়েছে তাতে, দেহের আনাচে কানাচে অনুভূতির খেলা শুরু হয়। আজও রুমা খেলা শুরু করেছে নিজেই নিজের সাথে আর ওদিকের দর্শক অনির্বাণ সেটা উপভোগ করে চলেছে। আঙুলের ডগা দিয়ে নিজের দুধের বোটায় শুঁড় শুঁড়ি দিতেই শরীরে কামাগ্নি জ্বলে উঠে। শিরশিরানি শুরু হয় দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, কুটকুট করতে শুরু করে গুদের কাম পোকা গুলো।


হাতের মর্দনে লালচে হয়ে উঠেছে ফর্সা চামড়া, উত্তেজনায় হিসিয়ে উঠতে থাকে রুমা। মাঝে মাঝে মৃদু সীৎকার বেড়িয়ে আসতে থাকে মুখ দিয়ে। রুমার একটা হাত চলে যায় গুদের কাছে, পায়জামার উপর দিয়ে হালকা ঘসে দেয় গুদের মুখটা। হালকা ছোঁয়া পেতেই তেতে উঠে শরীর। এবার বাকি বস্ত্রটুকু খসিয়ে নেবার পালা, রুমার হাত ব্যস্ত হয় পায়জামার গিট খুলতে। অনির্বাণ আর স্থির বসে থাকতে পারে না, এর মাঝেই একটা হাত ঢুকে গিয়েছে প্যান্টের ভিতরে। গরম হয়ে ফুসতে থাকা নিজের বাড়াটা হাতের মাঝে রেখে আস্তে আস্তে মৈথুন করতে থাকে। মনে মনে কল্পনা করতে থাকে নিজের আর রুমার পূর্ণ মিলনের। চোখের সামনে ভেসে উঠে নিজের দন্ডায়মান তপ্ত বাড়াটা রুমার রসালো গুদের ভেতরে আসা যাওয়া করছে। এ যেন সুখের সাগরে ভাসছে অনির্বাণ।
রুমা নিজের পায়জামাটা গলাতে যাবে তখনি লোডশেডিং। গুটগুটে অন্ধকার ঢেকে গেছে পুরো ঘরটা, শুধু মোবাইলের মৃদু আলো টা অন্ধকারটাকেই বেশি করে প্রকট করছে। অন্যদিকে অনির্বাণ কে হা-হুতাশ করতে দেখে খিল খিল করে হাসতে থাকে। ওদিকে বেচারা অনির্বাণ আশাহত হয়ে বসে আছে আর একহাতে নিজের খাড়া হয়ে থাকা বাড়াটাকে কচলাতে থাকে।


নিচতলায় নেমে অনির্বাণ ফোন করে রুমাকে,
কোথায় তুমি?

এই তো উল্টো দিকে কফি শপে বসে আছি, তুমি বেড়িয়ে পড়েছো?

হুম, তুমি ওখানেই বসো আমি আসছি।

ওকে।




লক্ষ্মী ওর কাজে ব্যস্ত হঠাৎ খেয়াল করলো পচুই কে আশে পাশে কোথাও দেখতে পাচ্ছে। ছেলেটা হয়েছে আজকাল সারাক্ষণ শুধু দৌড়াদৌড়ি করতেই থাকে। একদন্ড কোথাও শান্তি মত বসেই না, এই এটা ধরছে ওটা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। মালিকের বাড়ির মানুষেরা পচুই কে কিছু বলে না ঠিকই কিন্তু লক্ষ্মী সবসময় ওকে চোখে চোখেই রাখে। হাতের কাজ ঠিকই করছে কিন্তু পচুই কে দেখতে না পেয়ে মনটা বড্ড উশখুশ করছে। বার কয়েক ওর নাম ধরে হাঁক দিলেও পচুইয়ের কোন সাড়াশব্দ নেই। মায়ের মনে কু ডাক ডাকতে শুরু করে, হাতের কাজটা কোনমতে শেষ করেই বেড়িয়ে পড়ে ছেলের খোঁজ করতে।
বাড়ির আঙিনায় ওর দেখা না পেয়ে লক্ষ্মীর মন অশান্ত হয়ে উঠে, দুশ্চিন্তা গ্রাস করে ওর মাতৃ চেতনা। ছেলের নাম ধরে ডাকতে ডাকতে রোডের কাছে চলে এসেছে লক্ষ্মী।হঠাৎ করেই একটা গাছের আড়াল থেকে বেড়িয়ে আসে পচুই, ওর দু'হাত ভর্তি কিছু জিনিস। লক্ষ্মী ছুটে যায়,
কই গেসিলি?

কাকুর লগে!

কোন কাকু?

ঐ যে (পেছন ফেরে হাতে ইশারা করতেই দেখে সেখানে তো কেউ নেই)

দেখি হাতে কি তর?

পচুই মায়ের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। ওর একহাতে কতগুলো লজেন্স আর আচারের প্যাকেট অন্যহাতে কালো কাগজে মোড়ানো কিছু একটা বাইরে থেকে বুঝা যাচ্ছে না। সেটা হাতে নিয়ে খোলতেই দেখে কাগজের ভেতরে একটা লাল রঙের লিপস্টিক, এক পাতা টিপ আর একটা আইব্রু। লক্ষ্মীর এবার বুঝতে অসুবিধা হয় না কে এসব দিয়েছে। তবুও পচুই কে হালকা শাসন করে কান ধরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়।

আর যদি আমারে না কইয়া দূরে যাস তহন কিন্তু এক্কেরে মাইরাই ফালামু কইয়া দিলাম।
পচুই আপনা মনে লজেন্স মুখে পুড়ে মায়ের আগে আগে চলতে থাকে।





মাধুরী হাতে বই খাতা নিয়ে নাচতে নাচতে সিঁড়ি ধরে নামছিল সেই সাথে ঠোঁটের কোনে গুনগুন করে গান গাওয়ার ক্ষীণ আওয়াজ। এই সময়টাতে মাধুরীর মন পাখি বড্ড উড়ুউড়ু করে আর করবেই না কেন! এখন যে সে অথিতি তে যাচ্ছে। যতই সেটা পড়ার বাহানায় হোক তার পিছনে উদ্দেশ্য টা যে অন্য তা বলাই বাহুল্য। তবে মাধুরীর এই খুশির ছটা বেশিক্ষণ থাকে যখন দেখে ওর ছোট বোন লিলি ফিরে আসছে বাসায়।
কিরে তুই চলে এলি যে!

(গোমড়া মুখ করে) স্যার আজ পড়াবেন না শরীরটা নাকি ভালো না।

কেন কি হয়েছে? ( উৎসুক হয়ে উঠে মাধুরীর মন)

জানি না শুধু বললো শরীরটা ভালো লাগছে না তাই আজ পড়াবে না।

এহেন সংবাদ শুনে মাধুরীর মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে, ইচ্ছে জাগে ছুটে গিয়ে মানুষটার খবর নিতে। কিন্তু কোথাও যেন বাঁধা পায়, প্রশ্ন জাগে এতোটা অধিকার কি সে পেয়েছে? যদি প্রশ্ন উঠে তার এতো কিসের আগ্রহ ঐ মানুষটার প্রতি তখন কি উত্তর দিবে। মাধুরী মন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পা গুলো পিছিয়ে আসে। ভগ্ন মন নিয়ে সোফায় বসে ভাবতে থাকে কি করে জানবে কি হয়েছে তার।

হঠাৎ শুনতে পায় ওর মা লিলির নাম ধরে ডাকছে কিন্তু লিলি কোন উত্তর দিচ্ছে না। হয়তো ওয়াশরুমে ঢুকেছে কিংবা ছাদে গিয়েছে। মাধুরী এগিয়ে গিয়ে মাকে জিজ্ঞেস করে,
কি হয়েছে লিলি কে ডাকছো কেন? ও মনে হয় এখানে নেই।

একটু কাজ ছিল...

কি কাজ বলো আমাকে।

তুই করবি (খানিক অবাক হয়) না মানে... ঐ সামনের বাসায় যেতে হতো আরকি। দিদির ছেলেটার নাকি শরীরটা ভালো না ওর জন্য জুস বানাতে বলেছিল। আমার বানানো জুস নাকি ওর ভালো লাগে।

(সৃষ্টিকর্তা বুঝি মাধুরীর মনের ব্যাথা বুঝতে পেরেছে তাই ওকে একটা পথ তৈরী করে দিলো)
মাধুরী তো মনে মনে এটাই চাচ্ছিলো, একটা অজুহাতে তো মানুষটার সাথে দেখা তো হবে। তাই মাধুরী অতি উৎসাহে বলে উঠলো,
এটার জন্য আবার লিলিকে ডাকতে হবে কেন, আমাকে দাও আমি নিয়ে যাচ্ছি (ওর মা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে) এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? আমি কি বাসার কোন কাজ করি না নাকি।

না না আমি আবার সেটা কখন বললাম, একটু দাঁড়া আমি রেডি করে দিচ্ছি।

মাধুরীর মনটা আবার উৎফুল্ল হয়ে উঠে, মনের আকাশে উড়ে চলা কালো মেঘ সড়ে গিয়ে উজ্জ্বল নীলে ফিরে এসেছে। একটু খানি সময় এখন অনেক বেশি মনে হচ্ছে, কখন ওর মা জুস টা এনে দিবে আর কখন ছুট দিবে সেই ভাবনায় অস্থির জয়ে উঠেছে। এর আগে মা কোন কাজের কথা বললে ওর মেজাজ বিগড়ে যেত, কিন্তু আজ তো খুশিতে মাকে জড়িয়ে ধরতে মন চাইছে মাধুরীর।
খানিক বাদেই মাধুরীর মা জুস ভর্তি বোতল নিয়ে এসে মাধুরীর হাতে দেয়। মেয়ের চোখে মুখে ফুটে উঠা খুশির ছটা মায়ের চোখে ধরা দেয়। তবে আজ এত উৎফুল্ল কেন দেখাচ্ছে সেটাই বুঝতে পারছে না। মাধুরী হাসি মুখে বেড়িয়ে যায় অতিথির উদ্দেশ্যে....
Like Reply
কবি বলেছেন ..

অধরা মাধুরী ধরেছি ছন্দোবন্ধনে
ও যে সুদূর প্রাতের পাখি,
গাহে সুদূর রাতের গান
বিগত বসন্তের অশোকরক্তরাগে ওর রঙিন পাখা,
তারি ঝরা ফুলের গন্ধ ওর অন্তরে ঢাকা

আজকের মাধুরীময় পর্বে রুমা আর অনির্বাণের রতিক্রিয়া ভীষণভাবে নজর কেড়েছে। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটি পর্ব উপহার পেলাম আমরা।  yourock
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
Darun update boss
[+] 1 user Likes Dushtuchele567's post
Like Reply
Durdanto hoise
[+] 1 user Likes Mustaq's post
Like Reply
Mind blowing keep it going
[+] 1 user Likes D Rits's post
Like Reply
Jompesh update
[+] 1 user Likes Maphesto's post
Like Reply
Darun story
[+] 1 user Likes Papiya. S's post
Like Reply
(31-05-2023, 08:24 PM)Bumba_1 Wrote: কবি বলেছেন ..

অধরা মাধুরী ধরেছি ছন্দোবন্ধনে
ও যে সুদূর প্রাতের পাখি,
গাহে সুদূর রাতের গান
বিগত বসন্তের অশোকরক্তরাগে ওর রঙিন পাখা,
তারি ঝরা ফুলের গন্ধ ওর অন্তরে ঢাকা

আজকের মাধুরীময় পর্বে রুমা আর অনির্বাণের রতিক্রিয়া ভীষণভাবে নজর কেড়েছে। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটি পর্ব উপহার পেলাম আমরা।  yourock

আহা দাদা প্রাণ মন সব যে ভরে গেল।
Heart Heart
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(31-05-2023, 09:30 PM)Dushtuchele567 Wrote: Darun update boss

thank you  Heart
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(01-06-2023, 09:42 AM)Mustaq Wrote: Durdanto hoise

আপনাদের ভালো লাগলেই আমার ভালোলাগা
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(01-06-2023, 09:50 AM)D Rits Wrote: Mind blowing keep it going

Heart Heart ধন্যবাদ
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(01-06-2023, 10:51 AM)Maphesto Wrote: Jompesh update

পাঠকের খুশিতেই আমাদের প্রেরণা
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(01-06-2023, 10:54 AM)Papiya. S Wrote: Darun story

thanks
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply


যাদের এখনো নতুন পর্বটি পড়া হয়নি তারা চট জলদি পড়ে নিতে পারেন "অতিথি'র" বিগত আপডেট টি।


গল্পের পরবর্তী আপডেটের জন্য কাজ চলছে, আশা করি খুব শীঘ্রই দেখা হবে নতুন পর্ব নিয়ে...


[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply


কাম ভাবে আবিষ্ট দুটো শরীর যেন নিজেদের নিয়ে মেতে উঠেছে খোলা আকাশের নিচে৷ না না মাথার উপর নাম না জানা বিশাল গাছ ছাতির মত নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছে বুঝি ওদের মতো কপোত-কপোতীদের আড়াল দিতে। একে অন্যের ঠোঁটের দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে চুম্বনের প্রগাঢ় স্বাদ আস্বাদনে। 








পরবর্তী আপডেট সম্পূর্ণ প্রস্তুত, অপেক্ষা অবসানের পালা। আগামীকাল রাতেই আসছে গল্পের নতুন পর্ব, ততক্ষণ পর্যন্ত সঙ্গেই থাকুন....
Like Reply
পর্ব- সতেরো






কফি শপে মুখোমুখি দুজনে বসে আছে, সামনে থাকা সিরামিকের প্রিন্টেড কফি কাপ থেকে ধোঁয়া উঠছে কুন্ডলী পাকিয়ে। একজন আরেকজনের দিকে তাকাচ্ছে আর চোখে চোখ পড়তেই দুরন্ত গতিতে নজর সড়িয়ে নিচ্ছে৷ মুখমন্ডলে ভেসে উঠছে লাজের রক্তিম আভাস আর সেই সাথে মুগ্ধতার বর্ণিল ছটা। কেউ কোন কথা বলছে না কারও মুখে আওয়াজ নেই তবুও কতো কথা হয়ে যাচ্ছে চোখের ভাষায়। দুজন চেনা মানুষও সামনাসামনি বসে আছে তবুও তাদের মাঝে কেন এতো লুকোচুরি কিসের জন্য মনের কোনে খানিক অস্বস্তির লাজ।
কফি টা কি ঠান্ডা করে খাবে নাকি?
(রুমার কথাতেই নীরবতা ভাঙে দুজনার মাঝে)

না না, তা পরে কোথায় যাবে বলো..

কোথায় আবার....! বাসায় যাবো (ঠোঁটের কোণে জেগে উঠা হাসিটা লুকায়)

মানে? তুমি না বলেছিলে...

কি বলেছিলাম আমি আবার?

আজ আমরা ঘুরতে যাবো।

এটা কথা হয়েছিল নাকি, কি জানি...

তেমনটাই তো কথা হয়েছিল, তুমি ভুলে গেলে নাকি?

খিলখিল করে হাসতে থাকে রুমা, রুমার ওমন পাগল করা হাসিতে অনির্বাণ খানিক হতবাক হয়ে যায়। কিছুক্ষণ বাদেই ও বুঝতে পারে রুমা এতোক্ষণ ধরে ওর সাথে দুষ্টামি করছিলো। নিজেকে এমন করে বোকা হতে দেখে নিজেও হেসে উঠে রুমার সাথে। দুজনার খুনসুটির মাঝেই কফির কাপে চুমুক পড়ে, ক্যাফেইনের প্রভাবে চাঙা হয়ে উঠে শরীর সাথে মনটাও। মনের উৎফুল্লতা ছড়িয়ে পড়ে শরীর জুড়ে, ঢেউ খেলায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে।

কফি শপ থেকে বেড়িয়ে অনির্বাণ রা রিক্সা নেয় ঘুরতে যাবার উদ্দেশ্যে, এবার ওদের গন্তব্য বোটানিক্যাল গার্ডেন। হুড তোলা রিক্সায় উঠেই অনির্বাণ একহাত বাড়িয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয় রুমাকে। ওদের মাঝের ফাঁক গলে মাছি তো দূরেই থাক কোন পিঁপড়ে যাবারও কোন সম্ভাবনা নেই। প্যাডেল দেয়া রিক্সাটা একটু ধীর গতিতেই চলছে সেই সাথে অনির্বাণও ধীরে ধীরে নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসছে। ওর হাত খেলতে শুরু করেছে রুমার নরম বাহু জুড়ে৷ আঙুলের খেলায় তালুর মর্দনে গা গরম করে তুলছে। সুড়সুড়ি জাগাচ্ছে অনুভূতি প্রবন দেহে। অনির্বাণের হাতের স্পর্শ সোজা হয়ে বসতে দিচ্ছে না রুমাকে, দেহের ভেতরের অবস্থার পরিবর্তনে উসখুস করছে তখন থেকেই। আগে থেকেই কল্পনায় ভেসে যাওয়া মেঘের নরম ছোঁয়াতে গরম হয়ে থাকা শরীরটা প্রেমিকের উষ্ণ স্পর্শে আরও তাতিয়ে উঠছে। সমস্ত শরীর থেকে রক্ত দ্রুত বেগে ছুটছে মস্তিষ্কের দিকে। রক্তের গরমে নাকের ডগায় ঘামের মুক্তার মত বিন্দু জমতে শুরু করেছে। শ্বাসের দীর্ঘসূত্রতায় নাকে পাটা গুলো ফুলে উঠছে। 

অনির্বাণের সুযোগ সন্ধানী মন কেবলি পায়তারা করছে শরীর খুঁজে নেবার। ওর সচল হাত ফাঁক খুঁজছে প্রেয়সীর  নরম বুকে চড়ে বেড়াবার। তবে মনে হালকা ভয়, যদি রুমা রিয়্যাক্ট এ পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়। রাস্তাঘাটে বিব্রত হতে চায় না সে তবুও মনের খুচখুচ কমছে না। মনের মাঝে দু-টানা চলার মাঝেই আঙুল গুলো রুমার হাতের নিচ দিয়ে রাস্তা করে নেবার চেষ্টা করছে। লক্ষ একটাই প্রেয়সীর বুকের উপর জেগে উঠা এভারেস্ট জয় করা। তবে রুমাও সহজে রণে ভঙ্গ দেবার মেয়ে নয়। সেও হাত চেপে অনির্বাণ কে বাঁধা দেয়, তবে সেই বাঁধা টা কতক্ষণ টিকে থাকে সেটা সময় বলে দিবে। অনির্বাণের আঙুল খেলতে শুরু করে রুমার তুলতুলে শরীর নিয়ে। রুমার গায়ে কাতুকুতু লাগতেই নড়েচড়ে বসে। হাসি খেলতে থাকে ঠোঁটের কিনারায়। এবার খানিক ধৈর্য হারা অনির্বাণ জোর খাটাতে চায়, তবে তার প্রেয়সী আর পরীক্ষা নিতে নারাজ। নিজের শরীরটা হালকা নরম করতেই রুমার বগলের নিচ দিয়ে অনির্বাণ হাত এগিয়ে যায় নরম পর্বত চূড়ার দিকে৷ পুরোটা হাতের মুঠোর আয়ত্তে আসে না, তবুও হাতের তালুতে পিষে দেয় নরম মাংসেরঢিপি টাকে৷ শক্ত মর্দনে হিসিয়ে উঠে রুমা তবু দাঁতে ঠোঁট চেপে ধরে গোঙানির শব্দটাকে আটকে রাখতে চায়।  নিজের হাত দিয়ে চেপে ধরে অনির্বাণ কে আটকাতে চায় তবে তাতে সুবিধা হয় না তেমন কোন। আজ বুঝি অনির্বাণ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে নিজেকে ছুটাচ্ছে দুরন্ত ঘোড়ার মত যে নাকি অশ্বমেধ যজ্ঞের সেই ঘোড়া যার পথ অবরোধ করলেই যুদ্ধ অনিবার্য৷ রুমাও হয়তো সেটা বুঝতে পেরে ওড়না টা টেনে বুকটা ভালো করে ঢেকে দেয়। যেন ওদের ক্রিয়াকলাপ বাকিদের চক্ষুগোচর না হয়। 
প্যাডেল দেয়া রিক্সা টা এগিয়ে চলছে ঢিমেতালে চালক মহাশয় ডানে বায়ে হেলেদুলে পায়ের চাপে প্যাডেল ঘুরাচ্ছে।



আলেয়ার হৃদয়ে হাওয়া লেগেছে সদা বসন্তের হাওয়া। এ হাওয়ায় ফাগুনের মিষ্টি সুবাস ছড়িয়ে থাকে, মন পল্লবে নতুন কচি পাতার আবির্ভাব ঘটতে থাকে। নতুন কুড়িতে ফুলের পাপড়ি ধরছে তাতেই ভ্রমরের আনাগোনা বাড়ছে।  হৃদয় আকাশে রঙধনুর সাতরঙা ছটায় উজ্জল হয়ে উঠে মুখমণ্ডল। শরীর জুড়ে খেলা করে অনুভূতির অদ্ভুত সব নতুন নতুন খেলা। মন যেন নতুন উড়তে শেখা পাখি, বারবার ডানা ঝাপটায় উড়ে যেতে। শূণ্যে ভেসে বেড়াতে আর নতুনত্বের স্বাদ নিতে। 
সুমনের উপস্থিতির প্রভাব আলেয়ার আমুল বদলে যাওয়ার পেছনের সবচেয়ে বড় কারিগর। আজকাল বড্ড উড়ু উড়ু করা মনের নাগাল পায় না সে। কোন এক মায়াবী জগতে তার বাস, যেখানে কল্পনার ছলেও পাওয়া যায় স্বর্গ সুখের আভাস। ভাবতে ভালো লাগে ভালো লাগে গুনগুনিয়ে গান গাইতে। ভালো লাগে দুষ্টুমির ছলে মান অভিমানের খেলা খেলতে। নিজেকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে, ভালো লাগে কল্পনার অলীক সাগরে সাঁতরে বেড়াতে। ভাগ্যিস সেখানে ডুবে যাবার কোন ভয় নেই, ভয় নেই বেদনার নীলে তলিয়ে যাবার।

আজ কৌশিক স্যারের শরীরটা ভালো নেই তাই পড়ানোর ঝামেলা নেই। তবে কয়েকটা কাজ আছে সেই সাথে নিজের পড়ার একটা বিষয় সামান্য বাকি ছিল তাই সেটাই স্যারের বাসাতেই করে নিচ্ছিলো৷ তবে আজ কেন জানি কাজে গতি নেই, মন বারে বারে খেই হারাচ্ছে। এই জন্যই বলে "অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাস"। সেই কারণেই বারংবার সুমনের খেয়াল খেলা করছে মনের উঠোন জুড়ে।
সুমনের অদ্ভুত অদ্ভুত সব আবদার আর ইঙ্গিত বহ কথা গুলো কানের কাছে বাজছে। যখন সুমন কথাগুলো বলে তখন রাগ হলেও অন্যসময় সেগুলো ভাবতে গেলেই কেমন একটা শিরশির ভাব অনুভব হয় সমস্ত শরীর জুড়ে। মাথায় ঘুরপাক খায় নানান খেয়াল, ঠোঁটের কোনে জেগে উঠে মিষ্টি হাসি। উচাটন মন আজও তেমন ভাবনার সাগর মন্থনে নেমেছে আলেয়া, ওর নিজের সাথেই নিজের কথোপকথন। সেখানে কল্পনায় সুমনের সাথে চলছে আলেয়ার প্রেম আলাপন....

জানো আমার মনের খোলা আকাশ জুড়ে, তোমার অপেক্ষায় অনেক কত শত মেঘ বয়ে যায়। অপেক্ষায় থাকি আবার কখন আসবে তুমি আবার আমার মনের বারান্দায়, তোমার ভাবসাতেই আমার সময় কেটে যায়।  আবার কি আসবে তুমি, আমার ভালো লাগার অনেক ইচ্ছেঘুড়ি তোমায় নিয়ে আমি আকাশ পাঠাবো। তোমার মনের আকাশে যেখানে গাইবে তুমি আনমনে। আমি চিঠি  লিখে তোমার আকাশে পাঠাবো। তোমার মনের আকাশের বিস্তৃত খোলা মাঠে গান গাইবো, বসন্তের বাতাসে কোকিলের সুরে।
আমার মনের কোনের রঙ্গিন বাতাস তোমার অপেক্ষায়।অনেক সৃষ্টি বয়ে যাবে তোমার বুক জুড়ে, তখন কি আসবে তুমি আবার আমার মনের বারান্দায়। তোমার আলো বয়ে যায় আমার দৃষ্টি জুড়ে পথের দিশারী হয়ে। আবার আসবে তুমি নাকি, আমার ভালো লাগার রঙিন ইচ্ছেঘুড়ি হয়ে।

কারো শুকনো কাশির শব্দে ভ্রম ভাঙে আলেয়ার, পাশ ফিরে মাথা উঁচু করে তাকাতেই দেখে কৌশিক দাঁড়িয়ে আছে ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি। আলেয়া থতমত করে উঠে দাঁড়ায়, কি বলবে সেটা ভাবতে গিয়ে ইতস্তত বোধ করে।
স্যা...আআর আপনে ক..কঅখন এলেন

হাতের ইশারায় আলেয়া কে বসতে বলে
বসো বসো বারবার উঠে দাঁড়াতে হবে না। তা কি ব্যাপার ওমন মনোযোগ দিয়ে কি ভাবছিলে তখন থেকে।

আলেয়ার মুখ লাজে রাঙা হয়ে উঠে, স্যার না জানি কখন থেকে এখানে দাড়িয়ে আছে। ইশশ! স্যার কি কিছু বুঝতে পারলো,
না মানে স্যার ঐ একটা বিষয় আর কি...

হুমম বুঝতে পেরেছি হয়তো ব্যাপারটা (মুখটা বিস্তৃত করে হাসি ফুটে উঠে)




অনির্বাণ রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের গেটের পাশেই টিকিট কাউন্টারের দিকে যেতে লাগলো পেছন পেছন রুমাও চলছে। রিক্সা থেকে নামার আগেই রুমা ওড়নাটা ঘুমটার মত করে টেনে দিয়েছে মুখের উপর। জায়গাটা কপোত-কপোতীদের বিশেষ করে যারা একটু একান্তে সময় কাটাতে চায় কিন্তু হোটেল রুম নেবার ঝক্কি  পোহাতে চায় না তাদের জন্য বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছের আড়াল সবচেয়ে উত্তম জায়গা। কপোত-কপোতীদের প্রেমলীলার হালকার উপর ঝাপসা খেলা গুলো ঝুপের আড়ালে বেশ ভালোই চলে। প্রকৃতির নিরিবিলি পরিবেশে তাদের বিরক্ত করার কেউ নেই, আশপাশেরর সবাই ব্যস্ত নিজেদের স্ব স্ব কর্মে। তবে আরও ভালো ও নির্ভার পরিবেশ চাইলে গার্ডদের কিছু চা নাস্তার মূল্য ধরিয়ে দিলেই ব্যাস। পাঁচ তারকা হোটেলেও বোধহয় এমন পরিবেশ পাওয়া যাবে না।

সারি সারি গাছেে মাঝ দিয়ে চলাচলের চিকন রাস্তাটা ধরে অনির্বাণ আর রুমা এগিয়ে যাচ্ছে। যাওয়ার পথে মন না চাইলেও দুষ্টু চোখ জোড়া এদিক ওদিকে নজর ফেলে। আর তাতে যা হবার তাই হয় আলিঙ্গনে বাঁধা যুগলের লীলাখেলা দৃষ্টিগোচর হয়েই পড়ে৷ আর সঙ্গে সঙ্গে মন আর শরীর দুটোই মুচড় দিয়ে উঠে। হৃদপিণ্ডের হঠাৎ বাড়তি লাফালাফি জানান দেয় কামোত্তেজনার জোয়ার আসতে শুরু করেছে। সঠিক একটা জায়গা খোঁজার জন্য অনির্বাণ শকুন দৃষ্টি এদিক ওদিক চোখ বুলায়। আজ যেন গার্ডেনের মানুষের পদচারণা একটু বেশিই। উহু! সাধারণ মানুষ নয় কিন্তু এরা সবাই খেলোয়াড় খেলতে এসেছে, মনের খেলা নাকি শরীর খেলা সেটা জানতে হলে নজর রাখতে হবে।

অবশেষে একটা পরিষ্কার জায়গা দেখে রুমাকে নিয়ে ঐদিকে এগিয়ে যায় অনির্বাণ। সবুজ ঘাসের গালিচায় বসে পড়ে দুজনে, উঁচু গাছের ঝোপটা আড়াল করে দেয় ওদের। অনির্বাণ যেন আজ একটু বেশিই গা ঘেসে বসেছে রুমার। দুটো উতপ্ত শরীরের ক্রিয়াশীল ইলেকট্রনের ছোটাছুটি আরও বেড়ে যায় দেহ দুটির ঘর্ষণে। ইলেক্ট্রনের স্থানান্তরে শক্তির উৎপন্ন মানবদেহের ক্ষেত্রে যেটা উত্তেজনার সৃষ্টি। প্রতিটা কোষ অত্যাধিক সচলতায় নিজেদের সংবেদন বাড়ায়। দ্রুত চলতে থাকা নিঃশ্বাসে আসা অক্সিজের পুড়িয়ে এনার্জি তৈরী করতে থাকে। বাড়তি এনার্জি মন আর দেহের উদ্দীপনা বৃদ্ধি করতে থাকে৷ হাত পায়ের শিরায় টান ধরে, মস্তিষ্কের স্নায়ুর হরমোন নিঃসরণে প্রভূত পরিবর্তনে কামনার জাগরন ঘটে। কামচারী দেহ আকর্ষণ অনুভব করে বিপরীতের প্রতি, ভোগের নেশা চড়তে থাকে মস্তিষ্কের স্নায়ুতে।
অনির্বাণের বাহু জোড়া আঁকড়ে ধরে নিজের প্রেয়সীকে নিজের বুকের সাথে। ওর বুকের ধুকপুকানির আওয়াজটা রুমার কানে পৌঁছে গেছে এতোক্ষণে। সে নিজেকে এলিয়ে দেয় প্রেমিকের হৃদয় বালিশে। হাতের টানে রুমাকে নিজের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে, যেন নিজের সাথে মিশিয়ে নেবার ইচ্ছা জেগেছে মনে। অনির্বাণের মাথা নেমে এসেছো রুমার কাঁধের কাছে, উষ্ণ নিঃশ্বাসে পুড়িয়ে দিচ্ছে প্রেয়সীর কোমল ত্বক। অনির্বাণের নিঃশ্বাসের শব্দে রুমার শরীর জুড়ে রক্তের স্রোত বেগ বাড়ায়। মাথার মাঝে কামনার পোকা গুলো কিলবিল করতে থাকে। শিরদাঁড়া কেমন অবশের মত লাগে, হাত পায়ে তালু ঘামতে শুরু করে৷ অনির্বাণের ঠোঁটের স্পর্শে কোমল চামড়ায় আগুন ধরায় তবে তার মাঝে অদ্ভুত এক সুখের আভাস। পুড়ে যাবার মাঝেও যেন অসীম সুখ লুকিয়ে আছে। ঘাড়ে কাঁধে পাগলের মত চুমো খেতে থাকা অনির্বাণের মাথা নিজের সাথে চেপে ধরে রুমা। পাল্টা আক্রমণে ও নিজেও সিক্ত করতে থাকে প্রেমিকের বুক। প্রতিটা চুমোতে উত্তেজনার পারদ বাড়ায় শরীরে। অনির্বাণের হাত পাগলের মত ছুটতে থাকে প্রেমিকার শরীরে, শক্ত মর্দনে রক্তিম করে তুলে নরম চামড়া।

কাম ভাবে আবিষ্ট দুটো শরীর যেন নিজেদের নিয়ে মেতে উঠেছে খোলা আকাশের নিচে৷ না না মাথার উপর নাম না জানা বিশাল গাছ ছাতির মত নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছে বুঝি ওদের মতো কপোত-কপোতীদের আড়াল দিতে। একে অন্যের ঠোঁটের দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে চুম্বনের প্রগাঢ় স্বাদ আস্বাদনে। চোখ বন্ধ করে চুমোতে লিপ্ত অনির্বাণ রুমার কাছে হয়তো এই ধরনী জনমানবহীন কোন এক সবুজ উপত্যকা৷ যেখানে ওদের উপস্থিতিটাই একমাত্র কাম্য দুটো উত্তেজিত দেহকে শান্ত করার মহান উদ্দেশ্যে। এর মাঝেই অনির্বাণের চঞ্চল হাত খানা নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নিয়েছে রুমার বুকের নরম মাংসেরঢিপি গুলোকে। জামার নিচ দিয়ে চালনা করে হাতে উষ্ণ স্পর্শ নিজের বুকের মোলায়েম ত্বকে অনুভব করতেই কাটা মাছের মত তড়পাতে রুমা৷ শরীরে ভেতরে বুঝি ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে ততোক্ষণে। অনির্বাণের প্রতিটা ছোঁয়াতে যেন কামনার  আগুনের ফুলকি হয়ে রুমাকে পুড়াচ্ছে। অনির্বাণের ভেজা ঠোঁট আস্তে আস্তে নেমে আসে রুমার বুকের কাছে। হালকা করে জিভের ডগা বুলাতে থাকে মসৃণ চামড়ার উপর। ওমন আলতো উষ্ণ ছোঁয়াতে পুরো শরীর কেঁপে অদ্ভুত এক শিরশিরে অনুভবে। ভালোলাগার আবেশে প্রেমিকের মাথা চেঁপে ধরে নিজের বুকের সাথে।
হঠাৎ করেই শুকনো পাতা পায়ে মাড়ানো মচমচে শব্দে কানখাড়া হয় দুজনার। এদিকেই হয়তো কেউ আসছে, সাবধানতার জন্য একে অন্যকে ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে বসে। খানিক তফাতে বসা দুজনেই নিজেদের পোশাক ঠিক করতে ব্যস্ত, তবে তাদের এলোমেলো নিঃশ্বাস আর হাঁপাতে থাকার দৃশ্য ইশারা করে কিছু ঘটার।



অতি উচ্ছাসে উদ্বেলিত মাধুরী মন আজ যেন উড়তে জানা পাখির মতই, সদা ডানা ঝাপটায় বিশাল আকাশের নীলে ডানা মেলে নিজেকে ভাসাতে। আজ এই প্রথম মায়ের কোন কাজের অনুরোধে এতটা শান্তি আর আনন্দ অনুভব করছে সে। ছোট্ট একটা কাজ তবুও সেটা গুরুত্ব আজ যেন ওর কাছে বিশাল কয়ে ধরা দিয়েছে৷ এর মূল্য হয়তো জাগতিক হিসেবে পরিমাপ করা যাবে না। 
মাধুরী যতই নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করুক না কেন ওর মুখমন্ডলে ভেতরের উত্তেজনার রেশ টা ফুটে উঠছিলো। জুসের বোতল খানা নিয়ে মাধুরী এগিয়ে যায় অতিথির দিকে, আর মনে মনে সাজিয়ে নেয় কি বলবে সে। এর আগেও যতবার ভেবে নিয়েছে কি বলবে কিন্তু মুখোমুখি দাঁড়াতেই সব কেমন এলোমেলো হয়ে যায়। কি বলবে কি করবে সেটাই তো তখন মাথায় আসে না কি এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় সেটা এক মাধুরীই জানে। 

গেটের কাছেই নিখিলের সাথে দেখা হয় মাধুরীর, আগের দারোয়ানের সাথে ভালো বুঝাপড়া ছিল মাধুরীর। তখন অবশ্য এই পরিত্যক্ত বাড়িতে ঘনঘন যাতায়াত ছিল। তবে  নিখিল কে ওর তেমন একটা সুবিধার মনে হয় না, আগে প্রায়ই পানির লাইনের এখানে ওকে বাদানুবাদ করতে দেখেছে৷ নিখিল মিষ্টি হেসে ছোট গেটটা খুলে দেয় মাধুরী কে ভেতরে যাবার রাস্তা করে দিতে। মাধুরী আপন মনে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে, আর মাত্র কয়েক পা তারপরই লক্ষ্যে পৌঁছানোর হাতছানি। গুটি গুটি পায়ে এগোতে থাকে মাধুরী, তবে সদর দরজার কাছেই ওর পা থমকে দাঁড়ায় মস্তিষ্কের সতর্কবার্তায়। বসার ঘরে দুজন মানুষের কথোপকথন ওর কানে বাজে, উঁকি দিতেই চোখে পড়ে কৌশিক আর আলেয়ার হাসতে হাসতে কিছু বলার দৃশ্য। মাধুরী সেখানেই স্থির জয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে, মূহুর্তেই মনের কোনে বিষাদের রাগ বাজতে থাকে। হৃদয়ে ভয় উঠে হারিয়ে ফেলার যে মানুষটা যে নাকি কখনো তার হয়েই উঠেনি। তবুও কেন মন হয় তাকে কেউ ছিনিয়ে নিচ্ছে ওর কাছ থেকে। একজন মানুষ আরেক জনের সাথে কথা বলতেই পারে সেটা স্বাভাবিক বিষয় কিন্তু মাধুরীর কেন মনে হিংসে হয় সেটাই বুঝতে পারে না। মনে কেন সংশয় জাগে সেটার ভিত্তি কি তাও অজানা রয়ে যায়। মাধুরীর মন আঙিনায় রাগ জমা হয়, ও মনে মনে ভাবে দিব্যি তো হাসি খুশিতেই মেতে আছে, তাহলে আর কিসের শরীর খারাপ তার। আর অসুস্থই যদি না হয় তাহলে আর জুস দিয়ে কি করবে? দিবে না সেটা ওকে কোন দরকার নেই এটার কেনই বা দেবো...। মাধুরী সেখান থেকে চলে আসার জন্য পেছন ঘুরতেই আবার থমকে দাঁড়ায়, ভেতরের কিছু কথা আবারও কানে আসছে...

তোমাকে না বারণ করেছি আমাকে বারবার স্যার বলে ডাকবে না আমার অস্বস্তি হয় (কৌশিকের কথা টা শুনে মাধুরীর গায়ে জ্বালা ধরে,
ইশশ! ভাব দেখো তাকে নাকি স্যার বলে ডাকলে অস্বস্তি হয় তাহলে কি বলে ডাকলে খুশি হবে?? সেটাও বলে দিক..
বিড়বিড় করতে থাকে মাধুরী)

তাহলে কি বলে ডাকবো আপনাকে??

আগে আপনে আজ্ঞে টা বন্ধ করো নিজেকে কেমন বুড়ো বুড়ো লাগে।
(মাধুরী আবারও বিড়বিড় করে উঠে
এহহ! উনি যেন ২০ বছরের যুবক..)

মাথা চুলকায় আলেয়া,
তাহলে!!

তুমি আমার বয়সে ছোট আর আমার যদি একটা বোন থাকতো তবে তোমার বয়সীই হতো। তবে তো মিটেই গেল তুমি আমাকে দাদা বলে ডেকো, কেমন!
(ওদিকে মাধুরীর আনন্দ দেখে কে!৷ পারলে একটু নেচেই নিতো এখানে। সে যেন হাতে আকাশের চাঁদ পেয়েছে। যাক বাবা একটা ব্যাপার তো ক্লিয়ার হলো। ওনাকে নিজের বোনের মত দেখে মানে তারা ভাই বোন তাহলে যত খুশি কথা বলুক নো সমস্যা)

আচ্ছা চেষ্টা করবো।

ফিরে যেতে উদ্যত মাধুরী নিজের সিদ্ধান্ত পাল্টায়, না এবার নিজের লক্ষ্যে এগোতে হবে গন্তব্যে সামনে থাকা কালো মেঘের আস্তরণ সড়ে গিয়েছে৷ মাধুরী আবার এগিয়ে যায় ঘরের ভেতরে যাবার উদ্দেশ্যে।
গুটি গুটি পায়ে এগোচ্ছে মাধুরী কৌশিক আলেয়াদের দিকে। ওরা পিছন ফিরে বসে আছে তাই ওকে দেখতে পায় নি। মাধুরী ওদের পেছনের টি টেবিলে হালকা শব্দ করে জুসের বোতল টা রেখে বলে উঠে,
স্যার মা আপনার জুস টা পাঠালো আপনার নাকি শরীরটা ভালো না তাই। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন...

হঠাৎ মাধুরী কন্ঠ শুনে ওরা দুজনেই আতকে উঠে পিছন ফিরে, মাধুরীকে দেখেই কৌশিকের মুখের হাসিটা আরো বিস্তৃত হয়
হুমম শরীরটা আজ ভালো লাগছে না, আন্টিকে আমার পক্ষ থেকে একটা থ্যাংকস দিও।

শরীর যে কেমন খারাপ সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি, দিব্যি তো হা হা হি হি করছিলো এতোক্ষণ
(মাধুরীকে বিড়বিড় করতে দেখে কৌশিক হালকা এগিয়ে আসে ওর দিকে)

কি ব্যাপার কিছু কি বললে?

থতমত খায় মাধুরী
ন..না না কি কিইই বলবো আবার। ঐ তো জুসটা খেয়ে নিন।

এখনি খেতে হবে?
(আহ্লাদী ভঙ্গিতে বলে উঠে কৌশিক)

ওমন ভাব দেখে রাগ হয় মাধুরীর, চোখ দুটো বড় বড় করে বলে
হুমম এক্ষুনি, এটা খেলে তবেই না শরীর টা ভালো লাগবে।

মাধুরী কে রাগতে দেখে কৌশিক মিষ্টি করে একটা হাসি দেয়,
তাহলে এখনি খেয়ে নিচ্ছি, কি বল..

হুম

পাশেই বসে থাকা আলেয়া মুচকি মুচকি হাসছে।
মাধুরী একটা গ্লাস এনে তাতে জুস ঢেলে দিয়ে কৌশিকের দিকে এগিয়ে দেয়। মাধুরীর হাত থেকে গ্লাস টা নেবার সময় ওর আঙুল গুলো ছুঁয়ে যায় ছোট্ট চাঁপা কলির মত নরম মাধুরীর আঙুল গুলোকে। ঘটনা টা কি ইচ্ছাকৃত নাকি অনভিপ্রেত সেটা জানার দরকার নেই আমাদের আমরা শুধু উপভোগ করে চলেছি। কৌশিক হালকে স্পর্শেই মাধুরীর সারা দেহে বিদ্যুৎ খেলে যায়। মন জুড়ে অসময়ে বসন্তের হাওয়া বইতে শুরু করে৷ অদ্ভুত এক অনুভূতিতে গ্রাস করে নেয় ওকে, নিজের নজর লুকিয়ে রাখে কৌশিকের কাছে হয়তো ধরা পড়ে যাবার ভয়। মনে হয় ওর চোখের দিকে তাকালেই যেন বলে দিতে পারবে ও কি বলতে চাইছে, কি ঘটে চলেছে অন্তরের গুপ্ত প্রকোষ্ঠে। মাধুরীর মন অস্থির হয়ে উঠে কেন জানি নিজেতে আটকে রাখতে পারে না, ওখানে দাড়িয়ে থাকলে হয়তো কিছু একটা ঘটেই যাবে তাই ও পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়।
আপনি সবটা জুস শেষ করবেন কিন্তু, আমি পরে এসে বোতল টা নিয়ে যাবো।
কথাটা বলেই ও দৌড়ে বেড়িয়ে আসে ওখান থেকে। এক দৌড়ে নিজেদের বাসার সামনের বাগনটার কাছে এসে হাঁপাতে থাকে। একটু ধাতস্থ হতেই বোকার মত হাসতে থাকে...
মাধুরীর মন কিছু বলতে চাইছে তবে সেটা কেনজানি মুখ ফুটে আসছে তাই সেটা ভেতরে ভেতরেই আওড়াতে থাকে

আমার মন কেমনের বারান্দায় তুমি এসো তবে সেখানে তুমি হেসে দাঁড়িওনা প্লিজ। এতে যে আমার দুটো ক্ষতি এক, আমার মন কেমন টা হারিয়ে যাবে 
দুই, আমি হয়তো আমাকে ভুলে যাবো! 
দুটোই বেশুমার ক্ষতি! 
তাই এসোনা প্লিজ তুমি এসো না, যদিও বা তুমি এসে দাঁড়াও তবে প্লিজ হেসো না! তুমি এসে যদি সত্যিই আবার চলে যাও গতবারের মতো, তবে আমি তোমার সাথে সাথে এই মন কেমনটিও হারাবো। শুধু কি তাই আমার এই বারান্দার বন্ধু বাতাসটিকেও যে হারাবো।
তাই তুমি এসোনা, ওখানে এসোনা আর। আমার মন কেমনের বারান্দায় এসো না,প্লিজ!!



আজ অনেকদিন পর আবার রুগ্ন টেবিলটার উপর রাখা ছোট্ট আয়নাটার সামনে দাঁড়িয়েছে লক্ষ্মী। খানিক আগেই বাড়ি ফিরে গা ধুয়ে পড়নের শাড়িটা পাল্টে সন্ধ্যা বাতি দিয়ে ঘরে এসেছে। আজ আর অন্যদিনের মত আটপৌরে শাড়ি নয়, ট্রাঙ্ক থেকে একটা ভালো শাড়ি বের করে সেটাই পড়েছে। 
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল গুলো আঁচড়িয়ে বেনী করে নিয়েছে। মাঝখানের সিঁথি ভর্তি সিঁদুর টা জ্বলজল করছে। এবার টেবিলে রাখা টিপের পাতা থেকে একটা লাল রঙের টিপ পড়ে নিল কপালে৷ চোখের নিচে কাজল টেনেছে আর শুকনো ঠোঁটে লিপস্টিকের আবরণ। আজ অনেকদিন পর মুখে হালকা স্নো পাউডার দিয়েছিল লক্ষ্মী। তাতেই যেন ওর সৌন্দর্যে প্লাবন এসেছে। নিজেকেই নিজের কাছে কেমন নতুন লাগছে। বারবার আয়নার সামনে এদিক ওদিক ঘুড়ে নিজের পরিপাটি রুপ লাবণ্য টাকে উপভোগ করছে৷ নিজেকে নিয়ে আজ যেন সে বিভোর।

হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে আতকে উঠে লক্ষ্মী, বুকের ভেতরটা ধুকপুক করতে থাকে৷ ওর মন হয়তো জানে কে আসতে পারে এই মূহুর্তে, তবুও আড়ষ্ট গলায় জিজ্ঞেস করে,
কেডা?

বিপরীত থেকে উত্তর আসে,
আমি...
পরিচিত কন্ঠস্বর শুনেও আজানা কারণে লক্ষ্মীর শরীরটা হালকা কেঁপে উঠে।
Like Reply
Edited 
Like Reply
Osadharon dada.. Kintu emon ek jaigai end korlen ki bolbo
[+] 1 user Likes Dushtuchele567's post
Like Reply
বরাবরের মতোই অপূর্ব  clps লেখা নিয়ে কিছু বলার নাই। তবে বানানের জায়গায় একটু নজর দিও। যেমন, আতেলের বদলে আঁতেল, পায়তারার বদলে পাঁয়তারা .. ইত্যাদি ইত্যাদি।
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply




Users browsing this thread: 14 Guest(s)