18-05-2023, 01:41 AM
মানুষ কে ভালো উপদেশ দিলেও রাগ হয় কেন বুঝি না। পর্যাপ্ত সময় ননা পেলে আপনি কেন লিখবেন বলুন? এখানে লেখা তো আর আপনার পেশা নাহ।
WRITER'S SPECIAL "ধূসর পৃথিবী"
|
18-05-2023, 01:41 AM
মানুষ কে ভালো উপদেশ দিলেও রাগ হয় কেন বুঝি না। পর্যাপ্ত সময় ননা পেলে আপনি কেন লিখবেন বলুন? এখানে লেখা তো আর আপনার পেশা নাহ।
18-05-2023, 01:50 AM
18-05-2023, 03:04 AM
(18-05-2023, 01:50 AM)Thumbnails Wrote: কারণ উপদেশগুলো উপদেশের মতো দেওয়া উচিত, খোঁচা মারা নয়। লেখকের সময় হলে উনি লিখবে আমরা এসে পপড়বো।Bhai thik bolsen ngl My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
18-05-2023, 09:50 AM
(This post was last modified: 18-05-2023, 09:51 AM by Monen2000. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(17-05-2023, 06:21 PM)টিক্সি Wrote: Khub sundor golpo. Really beautiful.ধন্যবাদ (18-05-2023, 01:41 AM)Arpon Saha Wrote: মানুষ কে ভালো উপদেশ দিলেও রাগ হয় কেন বুঝি না। পর্যাপ্ত সময় ননা পেলে আপনি কেন লিখবেন বলুন? এখানে লেখা তো আর আপনার পেশা নাহ।না লেখা আমার পেশা নয় হয়তো এরপর বন্ধই করে দেবো, কিন্তু যেটা শুরু করেছি চেষ্টা করবো সেটা শেষ করার সময় একটু লাগছে কারণ এক যদি হয় সময় তো দ্বিতীয় এটা মুখস্থ বা কপি নয় ভেবে লিখতে হয় সবসময় তো আইডিয়া থাকে না সেটাও তো পাঠকদের বুঝতে হবে (18-05-2023, 01:50 AM)Thumbnails Wrote: কারণ উপদেশগুলো উপদেশের মতো দেওয়া উচিত, খোঁচা মারা নয়। লেখকের সময় হলে উনি লিখবে আমরা এসে পপড়বো।ধন্যবাদ। তবে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না এখানে আমরা সবাই বন্ধু (18-05-2023, 03:04 AM)Patrick bateman_69 Wrote: Bhai thik bolsen ngl ধন্যবাদ। আর লেখা চলছে আশা করছি অন্তত একটা আপডেট তাড়াতাড়ি দিতে পারবো। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
18-05-2023, 12:29 PM
(18-05-2023, 09:50 AM)Monen2000 Wrote: ধন্যবাদ। Thanks a lot bhai, kisu manus ace tader khotha mone nien na bhai unader hoye ami sorry boltesi but plz likha chaliye jaben :"( My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
18-05-2023, 12:30 PM
(18-05-2023, 12:29 PM)Patrick bateman_69 Wrote: Thanks a lot bhai, kisu manus ace tader khotha mone nien na bhai unader hoye ami sorry boltesi but plz likha chaliye jaben :"( ধন্যবাদ এই গল্পটা অন্তত শেষ করবো, তারপর দেখা যাক। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
19-05-2023, 01:32 AM
(18-05-2023, 01:50 AM)Thumbnails Wrote: কারণ উপদেশগুলো উপদেশের মতো দেওয়া উচিত, খোঁচা মারা নয়। লেখকের সময় হলে উনি লিখবে আমরা এসে পপড়বো।আপনাকে তো বলা হয় নি ভায়া? আপনি কেন ওনার কথা আপনার নিজের গায়ে টানছেন বলুন তো? এই মনেন ভাইয়ের গল্প আপনার থেকে আগেই পড়ে আসছি, বিশ্বাস না হয় ওনার আগের গল্প প্রতিশোধ দা রিভেঞ্জ গল্পে আমার কমেন্ট দেখে আসুন। আর এসব কথা বলে একজন আরেকজনের উপর খেপিয়ে দেবেন না। ওনাকে আপনার ভাষায় কোনো খোচা মারা কথা বলা হয় নি যেটা বাস্তব এবং যুক্তিসংগত সেটাই বলা হয়েছে।
19-05-2023, 01:38 AM
এটা কোন মুখস্থ বিষয় না আমরাও ভাই লেখালেখির সাথে জড়িত।তাই এটা ভালো করেই বুঝি যে এসব কোনো মুখস্থ বা কপি নয় অনেক ভেবে চিনতে প্লট সাজাতে হয়, আর যেটা অনেক টাই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার তাই শত শত ব্যস্ততা কাটিয়ে এসব কন্টিনিউ না করতে পারলে আর এই বাস্তব কথাটা বলা নেতিবাচকতা নাহ।
এই গল্পের জগতে অবেক নামি দামি লেখকগণ আছেন যারা ব্যস্ততার কারণে ছেড়ে দিয়েছেন। আর এই গল্প শুরু করেছেন কোনো কারণে শেষ না হলে কি কিছু হবেই। তাই সবসময় নেতিবাচকতা ও টক্সিক মেন্টালিটি থেকে আমাদের সকলের পরিষ্কার থাকা উচিত।
19-05-2023, 12:01 PM
(19-05-2023, 01:32 AM)Arpon Saha Wrote: আপনাকে তো বলা হয় নি ভায়া? আপনি কেন ওনার কথা আপনার নিজের গায়ে টানছেন বলুন তো? এই মনেন ভাইয়ের গল্প আপনার থেকে আগেই পড়ে আসছি, বিশ্বাস না হয় ওনার আগের গল্প প্রতিশোধ দা রিভেঞ্জ গল্পে আমার কমেন্ট দেখে আসুন। আর এসব কথা বলে একজন আরেকজনের উপর খেপিয়ে দেবেন না। ওনাকে আপনার ভাষায় কোনো খোচা মারা কথা বলা হয় নি যেটা বাস্তব এবং যুক্তিসংগত সেটাই বলা হয়েছে। (19-05-2023, 01:38 AM)Arpon Saha Wrote: এটা কোন মুখস্থ বিষয় না আমরাও ভাই লেখালেখির সাথে জড়িত।তাই এটা ভালো করেই বুঝি যে এসব কোনো মুখস্থ বা কপি নয় অনেক ভেবে চিনতে প্লট সাজাতে হয়, আর যেটা অনেক টাই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার তাই শত শত ব্যস্ততা কাটিয়ে এসব কন্টিনিউ না করতে পারলে আর এই বাস্তব কথাটা বলা নেতিবাচকতা নাহ।নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করছেন কেন?? ঝামেলা করে লাভ নেই এখানে সবাই বন্ধু। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
19-05-2023, 01:44 PM
এখানে যত দোষ সব এই লেখক ব্যাটা মনেন এর এত দেরি করে আপডেট দিলে এমনই হবে। আরে ভায়া জলদি একখানা আপডেট দিয়ে দাও না হলে এই লেখার জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়ে যাবে। আর এর জন্য দায়ী কিন্তু তুমি থাকবে।
আমার কিন্তু বেশ মজা লাগছে এই মিষ্টি কথা কাটাকাটি পাঠকরা তোমার লেখার জন্য ঝগড়া করছে একজন লেখকের এর থেকে বেশি কিছু পাওয়ার নেই চাওয়ার নেই পাঠকদের কাছে।।।। নিজের লেখার আরো উৎকৃষ্ট পর্যায়ে নিয়ে যাও । এমন সব ঝগড়া আরো হোক তোমার লেখার জন্য এই আশাই রাখবো। ভালো থেকো সব সময়।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
19-05-2023, 09:55 PM
(19-05-2023, 01:44 PM)Boti babu Wrote: এখানে যত দোষ সব এই লেখক ব্যাটা মনেন এর এত দেরি করে আপডেট দিলে এমনই হবে। আরে ভায়া জলদি একখানা আপডেট দিয়ে দাও না হলে এই লেখার জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়ে যাবে। আর এর জন্য দায়ী কিন্তু তুমি থাকবে। ভাই সত্যিই তাড়াতাড়ি দিতে চাই কিন্তু কাজের চাপ বলো আর গরম বলো এর জন্য সারাদিন খেটে বাড়ি এসে আর এই নিয়ে মাথা ঘামাতে ইচ্ছা করে না, আর দ্বিতীয় মাঝে মাঝে আইডিয়া আসে না তাই আটকে যাই তারপর আবার এলে লেখা শুরু করি, তবে আশা করছি তাড়াতাড়ি একটা হলেও আপডেট দেবো। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
19-05-2023, 11:06 PM
Dada somoy naw but aktu boro update dio
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
20-05-2023, 08:02 AM
(19-05-2023, 11:06 PM)Patrick bateman_69 Wrote: Dada somoy naw but aktu boro update dio লেখা চলছে দেখা যাক কতটা হয়। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
20-05-2023, 02:03 PM
(20-05-2023, 08:02 AM)Monen2000 Wrote: লেখা চলছে দেখা যাক কতটা হয়। লেখা জিনিস টা মস্তিষ্ক আর মননের বিষয়। চাইলেই তো আর গড়গড় করে লেখা হয়ে যায় না৷ আবার তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে লেখার ছন্দও নষ্ট হয়৷ ধীরে সুস্থে সময় নিলে লেখো, ভালো কিছুর জন্য অপেক্ষা করাই যায়। হুম এমন লেখায় মনের আকর্ষণ বাড়ে ইচ্ছে জাগে সবটা যদি এক রাতেই পড়ে শেষ করে ফেলতাম, তবে অপেক্ষা করে থাকাটাও কিন্তু মধুর হয়। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
20-05-2023, 05:52 PM
(20-05-2023, 02:03 PM)nextpage Wrote: লেখা জিনিস টা মস্তিষ্ক আর মননের বিষয়। চাইলেই তো আর গড়গড় করে লেখা হয়ে যায় না৷ আবার তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে লেখার ছন্দও নষ্ট হয়৷ ধীরে সুস্থে সময় নিলে লেখো, ভালো কিছুর জন্য অপেক্ষা করাই যায়। ধন্যবাদ শেষের টা দারুণ বললে I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
21-05-2023, 01:37 AM
(This post was last modified: 21-05-2023, 01:40 AM by Arpon Saha. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
হা হা হা.. একজন একটা কথা কে নেগেটিভলি নিলে সেটাকে তো তাকে বুঝাতে হবে। নিজের ব্যক্তিগত কাজ,সাংসারিক কাজ, শত ব্যস্ততাকে উপেক্ষা করে লেখালেখি করাতা ভিষণ জটিল, তাই শত ব্যস্ততা উপেক্ষা করে গল্প না লিখকে পাঠকমহল হতাশ।
কিন্তু আমাদের সবসময় তীতা হলেও সত্য কথা কে মেনে নিতে হয়। যারা এই তিতাটাকে মিষ্টি হিসেবে গ্রহণ করে তারাই সবসময় cool থাকে।
21-05-2023, 10:45 PM
O dada update diben na?
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
21-05-2023, 11:50 PM
দ্বিতীয় পার্ট ৯বম পর্ব কথায় আছে সকাল দেখেই বোঝা যায় যে পুরো দিনটা কেমন যাবে কিন্তু কথাটা সবসময় বোধহয় সত্যি নয় যদি সত্যি হতো তাহলে ব্যানার্জী পরিবার তাদের উপর আসন্ন বিপদের আগমন বার্তা বুঝতে পারতো কিন্তু সেটা তারা পারেনি। প্রতিদিনের মতোই ব্যানার্জী পরিবারের সবাই সকালে উঠে নিজের নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে গেছে। বাড়ির দুই সিনিয়র মহিলা বাড়ির কর্ত্রী শ্রীতমাদেবী কিচেনে সবার খাবারের ব্যবস্থা করছেন তার সঙ্গে তাকে সাহায্য করছেন মণিমালা দেবী,বাড়ির বউ মৌমিতা ছেলে মেয়েকে কলেজে যাবার জন্য তৈরী করছে। বাড়ির কর্তা অভিরূপবাবু ড্রয়িংরুমে একটা সোফায় বসে পেপার পড়ছেন, অরুণাভও কাজে যাবার জন্য তৈরী হচ্ছে, প্রীতমবাবুরও অবশ্য ব্যাস্ততা আছে তবে সেটা অন্য কারণে, তার ছেলে সুশান্তর বিয়ে ঠিক হয়েছে প্রীতমবাবুর বন্ধু এলাকার বিধায়কের এক আত্মীয়ের মেয়ের সাথে, কিছুদিনের মধ্যেই আশীর্বাদ তাই কেনাকাটার একটা ধুম লেগে আছে, তিনি অফিস থেকে কদিনের জন্য ছুটি নিয়েছেন কিন্তু অভিরূপবাবু আর অরুণাভকে অফিসে যেতেই হবে। খাবার তৈরী হয়ে গেলে যে যার মতো বেরিয়ে গেলেন, অভিরূপবাবুর একটা ক্লায়েন্টের সাথে মিটিং আছে তাই তিনি প্রথমে অফিসে যাবেন তারপর অফিসে যাবেন, কিন্তু অরুণাভর সেরকম কোনো ব্যাপার নেই সে সোজা অফিসেই যাবে। দুই বাপ-ব্যাটা একসাথেই বাড়ি থেকে বেরোলো যদিও আলাদা আলাদা গাড়িতে, অভিরূপবাবু নিজে ড্রাইভ করেন না তার জন্য ড্রাইভার আছে অরুণাভবাবুর জন্যও ড্রাইভার আছে কিন্তু সে কদিনের জন্য ছুটি নিয়েছে তাই এইকদিনের জন্য নতুন ড্রাইভার না রেখে নিজেই ড্রাইভ করছে আজও তাই নিজেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল কেউ লক্ষ্যই করলো না ওরা বেরিয়ে যেতেই পিছনে একদম আলাদাভাবে প্রীতমবাবু কাউকে ফোন করলেন আর বললেন "এইমাত্র বেরোলো,সবাই রেডি তো?" উত্তরে তার মুখে একটা ক্রুর হাসি ফুটে উঠলো। নিউ আলিপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাদের রাজারহাটের অফিসটার উদ্দেশ্যে যায় অরুণাভ, এমনিতে পুরো শহর জুড়েই বিভিন্ন জায়গায় অনেক গুলো ছোটো ব্রাঞ্চ আছে বড়ো অফিস তুলনায় কম তারই একটা রাজারহাটে। অরুণাভ পাকা ড্রাইভার বেশ স্মুথলিই গাড়ি চালাচ্ছিল কিন্তু একটা সিগন্যালে এসে গাড়ি থামানোর জন্য ব্রেক চাপতেই সে বিপদের ঘন্টা শুনতে পেলো গাড়ির ব্রেক কাজ করছে না, বাড়ি থেকে খুব একটা দূরে এখনো আসেনি তাই সে ভাবলো কোনোমতে যদি থামে তাহলে মেকানিক ডেকে ঠিক করিয়ে নেবে, এমনিতে তার ড্রাইভারই সব চেক করে নেয় বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে কিন্তু এইকদিন সে না থাকায় সেটা হয়ে ওঠেনি আর এটা যে মস্ত বড়ো ভুল সেটা এখন বুঝতে পারছে। অরুণাভ বারংবার চেষ্টা করতে থাকে গাড়ি থামানোর কিন্তু পারে না, কোনোমতে এদিক ওদিকে গাড়ি ঘুরিয়ে অ্যাক্সিডেন্টগুলো এড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু কিছুতেই থামতে পারে না ইতিমধ্যে সে আগের সিগন্যাল ব্রেক করে এগিয়ে এসেছে তারপর আবার থামতে হবে কারণ সামনে আরেকটা সিগন্যাল সে প্রাণপণ চেষ্টা করে গাড়ি থামানোর কিন্তু পারে না সে সিগন্যাল ব্রেক করে সোজা এগিয়ে যায় ক্রসিং পার করতেই আরেকটা ট্যাক্সি এসে অরুণাভর গাড়ির সাইডে আঘাত করে আর তৎক্ষণাৎ অরুণাভ গাড়িসহ উল্টে গিয়ে একটা পাক খেয়ে রাস্তার উপরে পরে আর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের একটা ফুটপাতের উপরে থাকা ল্যাম্পপোস্টে গিয়ে ধাক্কা মারে এবং গাড়িতে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন জ্বলে ওঠে আর অরুণাভ গাড়ির ভিতরেই রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে আটকে যায়। "আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি তোমার সাথে বসে আছি আর আমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে" নারায়ণতলা গ্ৰামে আনন্দ নিকেতন রিসর্টের ভিতরের নিজস্ব জলাশয় ছাড়াও বাইরে গ্ৰামের লোকেদের জন্য একটা পুকুর আছে যেখানে গ্ৰামের লোকজন স্নান, কাপড় কাঁচা আরও টুকটাক কাজে ব্যবহার করেন, পুকুরটার চারপাশে চারটে বাধানো ঘাট আছে যেগুলো থেকে সিঁড়ি নীচে জলে নেমে গেছে তারই একটা ঘাটের একটা সিঁড়িতে পাশাপাশি বসে আছে অনিকেত ওরফে আদিত্য আর পিয়ালী। সেদিন একে অপরকে প্রেম নিবেদন করার পরে আদিত্য প্রথমে যায় বৃদ্ধ অখিল বাবুর কাছে, সেখানে প্রথমে তাকে ধন্যবাদ জানায় তাকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য তারপর তার আর পিয়ালীর কথা বলে। বৃদ্ধ শুনে তো খুব খুশি পারলে তক্ষুনি দুজনকে ধরে বিয়ে দিয়ে দেন, কিন্তু তারপর নিজেই একটু শান্ত হয়ে ঠিক করেন এভাবে নয় রীতিমতো পুরোহিত ডেকে দিনক্ষণ ঠিক করে তারপর বিয়ে হবে। আদিত্য বা পিয়ালী কারোরই অবশ্য এতে আপত্তি ছিল না পিয়ালীর পরিবারে কেউ নেই তাই পার্মিশন চাওয়ার কোনো দরকার নেই আর আদিত্যর থেকেও নেই বরং এই আনন্দ নিকেতন এবং এই নারায়ণতলা গ্ৰামের লোকজনকেই সে নিজের পরিবারের লোক বলে কাছে টেনে নিয়েছে। অখিলবাবু গ্ৰামের পুরোহিত ডেকে ওদের বিয়ের দিন ঠিক করেন এবং যখন শুনলেন যে এক সপ্তাহ পরেই একটা ভালো দিন আছে তখন ঠিক করলেন যে ওই দিনেই দুজনের বিয়ে দেবেন আদিত্য আর পিয়ালী আপত্তি করেনি। অবশ্য খুব বড়ো অনুষ্ঠান হোক এটা দুজনের কেউই চায়না বরং আদিত্য প্রস্তাব দেয় যে বিয়ে সাধারণভাবে করে আনন্দ নিকেতন এবং গ্ৰামের সবাইকে খাওয়ানো হোক পিয়ালীও এতে সম্মতি দেয়, গ্ৰামটা এমনিতেই ছোটো তাই খুব বেশি লোক এখানে থাকে না ফলে অসুবিধা হবার প্রশ্নই আসে না। কয়েকদিন কেটে গেল দুজনে এখন মাঝে মাঝেই বিকেলের দিকে গ্ৰামে হেঁটে হেঁটে ঘুরতে বেরোয় আজও সেরকমই বেরিয়েছিল, আর তারপর পুকুরের ঘাটে বসে গল্প করছে। "আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি তোমার সাথে বসে আছি আর আমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে" পিয়ালী বললো। "কেন, বিশ্বাস হচ্ছে না কেন?" "কোনোদিন ভাবিনি যে তোমাকে কাছে পাবো, প্রথমদিন যখন তোমাকে দেখি তখন তোমার সাথে আমার বাবার শত্রুতা ছিল, ভয়ানক শত্রুতা। জানতাম বাবা কোনোদিন মেনে নেবেন না আর তুমিও আমাকে মেনে নেবে কি না জানতাম না" "তবুও তো কোর্টে এসেছিলে" "হ্যা,তোমাকে দেখে আর থাকতে পারিনি একটু কথা বলতে ইচ্ছে করছিল" "বুঝলাম, কিন্তু এখন তো আমরা একসাথে আছি তাহলে বিশ্বাস হচ্ছে না কেন?" "মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি" "তাহলে বিশ্বাস করানোর জন্য কি করতে হবে? একটা কাজ করতে পারি" "কি কাজ?" "বাদশা" হঠাৎই আদিত্য নিজের পোষ্যটিকে ডাক দিল যে ওদের পিছনেই বসে ছিল কিন্তু পিয়ালী বাদশার নাম শুনে ভয়ি আঁতকে উঠলো, "আবার ওকে ডাকছো কেন?" "ও তোমাকে বিশ্বাস করাবে যে যা হচ্ছে সেটা সত্যি" "না... ওকে ডেকো না" "তুমি ওকে ভয় পাচ্ছো কেন, ও কিচ্ছু করবে না" "আ...আমার ভয় করছে" "আমি আছি তো, ও শুধু তাদেরই ক্ষতি করে বা ভয় দেখায় যাদের আমি ওকে দেখাতে বলি বা যারা আমার ক্ষতি করতে চায়" "কিন্তু.." "কোনো কিন্তু নয় তুমি ওর মাথায় হাত বোলাও" পিয়ালীর ভয় তবুও যায় না তার হাত কাঁপতে শুরু করেছে, কিন্তু আদিত্য তার একটা হাত ধরে বাদশার মুখের দিকে এগিয়ে নিতে থাকে দেখে পিয়ালী চোখ বন্ধ করে নেয় কিন্তু আদিত্য পিয়ালীর হাতটা ধরে বাদশার মাথায় বোলাতে শুরু করে, ধীরে ধীরে পিয়ালী চোখ খোলে এবার আদিত্য আস্তে আস্তে পিয়ালীর হাতটা ছেড়ে দেয় আর বাদশা আস্তে আস্তে এগিয়ে এসে দুজনের কোলের উপরে বসে। পিয়ালীর যে বাদশার প্রতি ভয়টা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে সেটা ওর মুখে ফুটতে থাকা হাসির রেখা দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে এবার নিজে নিজেই বাদশার মাথায় হাত বোলাতে থাকে, আদিত্য বলে "ও না থাকলে আমিও থাকতাম না। ওর জন্যই আমি প্রাণে বেঁচেছি এবং এখানে আসতে পেরেছি" পিয়ালী উত্তরে বাদশাকে আদর করতে করতে বলে "থ্যাংক ইউ বাদশা" বাদশা একবার মুখ তুলে তার মনিবের হবু স্ত্রীকে দেখে তারপর আবার মাথা নামিয়ে চোখ বন্ধ করে আদর খেতে থাকে। "আমার ছেলে বাঁচবে তো ডক্টর?" আকুলভাবে প্রশ্ন করেন অভিরূপবাবু, অ্যাক্সিডেন্টের পরে আশেপাশের উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা কোনোমতে অজ্ঞান অরুণাভকে গাড়ি থেকে বার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায় সেখানে তৎক্ষণাৎ তার চিকিৎসা শুরু হয়। অরুণাভকে প্রায় পুরো শহর চেনে আর এই হাসপাতাল তার বাড়ি থেকে খুব একটা দূরে নয় তাই বাড়িতে খবর যেতে দেরী হয়নি বাড়ির সবাই সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান হাসপাতালে, অভিরূপবাবুও খবর পেয়ে মিটিং ক্যানসেল করে চলে আসেন। ডাক্তার জানায় অরুণাভর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক একাধিক বড়ো ইঞ্জুরি হয়েছে, একটা পায়ের হাড় কয়েক টুকরো হয়ে গেছে একই অবস্থা একটা হাতের, একটা কাঁধের হাড় সরে গেছে, মাথা তো ফেটে গেছে কিন্তু ইন্টারনাল কোনো আঘাত হয়েছে কি না সেটা জানার জন্য মাথায় সিটি স্ক্র্যান করা হয়েছিল তবে সৌভাগ্যের বিষয় মাথার বাইরে ফেটে গেলেও খুলি বা মস্তিষ্কে কোনো বড়ো আঘাত লাগেনি, কিন্তু তারপরেও বাকি শরীরের যা অবস্থা তাতে বাঁচবে কি না বলা মুশকিল, ডাক্তাররা অবশ্য অপারেশন শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে শ্রীতমাদেবী, মৌমিতা কান্নাকাটি শুরু করেছে মণিমালা দেবী তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন একে একে স্বর্ণেন্দু বাবু, সুনন্দা, মৈনাক, মনোজিত বাবু, মনোজ এবং আরো অন্যান্য আত্মীয় পরিজনরা আসতে শুরু করেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে অপারেশন চলার পরে একটা সময় ডাক্তার ওটি থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন আর তখনই অভিরূপবাবু তাকে ধরেন, "আমার ছেলে বাঁচবে তো ডক্টর?" প্রায় কেঁদে ফেলেন তিনি নিজেকে কোনোভাবে সামলে নিয়ে আবার বলেন "ডক্টর আমার ছেলেকে বাঁচান এক ছেলেকে অনেকদিন আগে হারিয়েছি আরেক ছেলেকে হারাতে পারবো না"। ডক্টর অভিরূপবাবুর কাঁধে হাত রেখে বলেন, "মিস্টার ব্যানার্জী আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি এবং এখনো করে চলেছি, তবে মাঝে মাঝে কিছু সময় আসে যখন সবকিছু আমাদের হাতে থাকে না। অরুণাভ বাবুর মাথায় খুলি বা মস্তিষ্কে কোনো আঘাত হয়নি যেটা আমাদের কাছে কিছুটা স্বস্তির ওটা থাকলে ভয়ের কারণ ছিল, এখন দেখা যাক আমাদের অপারেশন সাকসেসফুল, আমরা এখন ওনাকে অবজার্ভেশনে রাখবো.. লেটস্ হোপ ফর দ্যি বেস্ট"। মানুষের জীবনে কখন কি হয় সেটা কে বলতে পারে? অনেকেই দাবি করে যে সে ভবিষ্যৎবক্তা কিন্তু তারাও কি সত্যিই ভবিষ্যৎ বলতে পারে? সন্দেহ আছে। কারণ জীবন কখনো সোজা রাস্তায় চলে যায় সে কিছুটা সোজা যায় তারপর বাঁক নেয়, কখনো কখনো এই বাঁকগুলো এতটাই অপ্রত্যাশিত হয় যে চেয়ে চেয়ে দেখা এবং সেটা সাথে নিয়ে এগিয়ে চলা ছাড়া আর উপায় থাকে না। আদিত্য আর পিয়ালীর জীবনও সেরকমই একজন নিজের পরিবারকে হারিয়ে অন্য একটা পরিবারে গিয়েছিল তারপর সেটাও হারিয়ে আজ এই জায়গায় এসেছে আর অপরজনও একই এক ঝটকায় তার পুরো পরিবারকে হারিয়ে এই পৃথিবীতে একা হয়ে গেছে। দুজনের নিয়তিই একই তাই হয়তো তাদের ভাগ্যদেবী চাননি যে তারা একে অপরের থেকে দূরে থাকুক তাই হয়তো দুই সর্বহারা মানুষ আজ একে অপরের সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলছে, হ্যাঁ আজ অনিকেত ওরফে আদিত্য আর পিয়ালীর বিয়ে। ধুমধাম করে নয় বরঞ্চ খুবই সাধারণভাবে যে বিয়ে করবে এটা দুজনে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেইমতো গ্ৰামের এক মন্দিরে অল্প কয়েকজন মানুষের উপস্থিতিতে বিয়ে সারলো দুজন। সাধারণভাবে বিয়ে করলেও পরেরদিন পুরো গ্ৰাম ভোজের জন্য নিমন্ত্রিত ছিল, অবশ্য শুধু ভোজ নয় একটা পারিবারিক অনুষ্ঠানে যেরকম পরিবারের সবাই একসাথে সব আয়োন করে তেমনই সবাই একত্রিত হয়ে আনন্দ হইহট্টগোল করতে করতে সব কাজ করছিল তারপর রাতে ভোজ সেরে ফিরে যায় গ্ৰামের লোকদের সাথে এইদুদিন রিসর্টে যেসকল গেস্ট উপস্থিত ছিল তারাও আমণ্ত্রিত ছিল। রাতে আদিত্য নিজের তাঁবুতে ঢুকে দেখে সেখানে নীচে ফুল দিয়ে সাজিয়ে শয্যা তৈরি করা হয়েছে যেখানে এখন তার নববিবাহিত বধূ অপেক্ষা করছে। এখনো তাঁবুটা ব্যবহার করার কারণ অখিলবাবু তাঁর এবং রিসর্টের মালিক শৈলেশবাবুর থাকার বাড়িটা আদিত্য আর পিয়ালীর থাকার জন্য দিয়েছেন কিন্তু ওটা শৈলেশবাবুর পরে বেশকিছুদিন ব্যবহার করা হয়নি তাই ওটা পরিষ্কার করে মেরামত করে নতুন রঙ করতে দিয়েছেন এইকাজে একটু সময় লাগবে তাছাড়া একটা দম্পতি তাদের সংসার শুরু করতে চলেছেন তাদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে দেওয়া হয়েছে এইহবের জন্য আপাতত আদিত্যর তাঁবুটাতেই দুজনে থাকবেন, এবং যেহেতু আদিত্য এতকাল একা থাকতো তাই নিজের জন্য একটা সিঙ্গেল চৌকি ব্যবহার করতো যেটায় দুজন আঁটবে না অতএব চৌকি সরিয়ে নীচেই দুজনের ফুলশয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আদিত্য পিয়ালীর পাশে বসে আস্তে করে তার ঘোমটা তুলে ফেললো প্রথমে পিয়ালী একটু লজ্জায় চোখ বন্ধ করে নিলেও বেশীক্ষণ নয় এবার সে সোজা আদিত্যর দিকে তাকিয়ে থাকে, বলাইবাহুল্য পিয়ালীর শর্ত অনুযায়ী আদিত্য তার চুল ছোটো করে কেটেছে সাথে পরিষ্কার করে দাঁড়িগোঁফ কেটেছে, এতে যেন তাঁর রূপ আরও বেড়ে গেছে তাকে আরো সুন্দর লাগছে দেখতে, পিয়ালী দৃষ্টি ফেরাতে পারে না একই অবস্থা আদিত্যরও, সেও একদৃষ্টিতে পিয়ালীর দিকে তাকিয়ে থাকে। এভাবে কিছুক্ষণ দুজনে পরস্পরের দিকে তাকিয়ে দেখার পর আদিত্যই প্রথম মুখ খোলে, "থ্যাংক ইউ আমাকে এক্সেপ্ট করার জন্য আমি কোনোদিন ভাবিনি যে আবার কারো ভালোবাসা আমার জীবনে আসবে আমি তো ভেবেছিলাম.." এতটা বলেই আদিত্যকে থামতে হয় কারণ পিয়ালী তার মুখ চেপে ধরেছে, পিয়ালী বলে, "আজ ওসব কথা নয়.. আজ তুমি শুধু আমাকে ভালোবাসবে, আজ আমি পুরোপুরি তোমার হতে চাই... তোমাকে নিজের করে পেতে চাই"। আদিত্য আর কোনো কথা না বলে আস্তে করে নিজের মুখটা পিয়ালীর মুখের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়, উল্টোদিকে পিয়ালীও এগিয়ে আসে, একসময় উভয়ের ঠোঁটজোড়া পরস্পরের স্পর্শ পায়। বেশকিছুক্ষণ দুজন প্রেমচুম্বনে লিপ্ত থেকে ক্ষান্ত হয় তবে থামে না। প্রচণ্ড আবেগে ভালোবাসায় পিয়ালী হঠাৎই আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে তার গালে চুমু দিতে থাকে তারপর একে একে আদিত্যর ঘাড়ে, গলায় তারপর তার কুর্তার ফাঁকে বুকে মুখ ঘষতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য এক অনুভূতি শুরু হল আদিত্যর শরীরে। যুগ যুগ ধরে মানুষের শরীরে ঘুমিয়ে থাকা আদিম অনুভূতিও জেগে উঠতে শুরু করল তার ভিতরে। সে অনুভূতি মিশে থাকে প্রত্যেক নর-নারীর রক্তে, প্রত্যেক প্রাণীর রক্তে। আদিত্যর মনে হল তার নববিবাহিতা স্ত্রীর দেহেও যেন জেগে উঠেছে সেই আদিম সত্তা, নইলে সে ওভাবে একটানা আদিত্যর বুকে মুখ ঘসে চলেছে কেন? আলিঙ্গনরত পিয়ালীর নখগুলো যেন প্রচণ্ড উত্তেজনায় আদিত্যর পিঠে বসে যাচ্ছে! আদিত্য যেন নিজের অজান্তেই পিয়ালীকে টেনে সাজানো শয্যায় শুইয়ে দিল। বাধা দিল না পিয়ালী বরং আদিত্যর মুখটা আরও চেপে ধরল নিজের মুখের ওপর। ধীরে-ধীরে শরীর থেকে পোশাক খসিয়ে চুড়ান্ত মিলনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করল পিয়ালী। এই প্রথম নিজেকে একজন পুরুষের কাছে সত্যি সমর্পণ করল পিয়ালী, যার জন্য সে এতদিন অপেক্ষা করে ছিল যাকে প্রথম দেখা থেকেই নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোবেসেছিল। শরীর ও মনের এক আশ্চর্য তৃপ্তি অনুভব করতে পারছে পিয়ালী, তার শরীর উন্মোচিত হল আদিত্যর সামনে সে শরীরে শুধু কামবাসনা নয় বরং ভালোবাসা জড়িয়ে আছে, পিয়ালীর শরীরের প্রতিটা রোমকূপ, প্রতিটা রন্ধ্র যেন আদিত্যর স্পর্শ পাবার জন্য উন্মুখ। নিজের পরিহিত কুর্তা খসিয়ে ফেলল আদিত্য তার ঠোঁট পিয়ালীর ঠোঁট ছুঁয়ে নামতে শুরু করল তার গলায়, বুকের মাঝে, দু-পাশে পদ্মের মতো প্রস্ফুটিত দুই স্তনে, তারপর আরও নীচে গভীর নাভিকূপে। সেখানে কিছুক্ষণ থেমে তারপর আরও নীচে। তাঁবুর একপাশে একটা ছোট্ট জানালার মতো ব্যবস্থা করা ছিল সেই খোলা জানলা দিয়ে সেই চাঁদের আলো এসে ছড়িয়ে পড়ল শয্যায়, আলিঙ্গনরত আদিত্য ওরফে অনিকেত আর পিয়ালীর নগ্ন শরীরে, দুজন যেন মিথুনরত পৃথিবীর প্রথম নারী-পুরুষ তারা। বাইরে পাহাড়ায় অবিচল সারমেয় ভিতরে অনেকরাত পর্যন্ত তাঁবু জুড়ে দুজন নরনারীর আদিম ক্রীড়ার শিৎকারে মুখরিত হয়ে থাকলো তারপর একসময় দুজনেই ক্লান্ত অথচ পরিতৃপ্ত হয়ে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে পাশাপাশি শুয়ে থাকে। সকালবেলা নিজে থেকেই ঘুমভেঙে গেল পিয়ালীর প্রথমে গতরাতের ঘটনাটা স্বপ্ন বলে মনে হলো তার কিন্তু পরক্ষনেই পাশে চোখ যেতেই বুঝলো স্বপ্ন নয় গতরাতে যা ঘটেছে সেটা সত্যি। পিয়ালী নিজে সোজা হয়ে শুয়েছিল পুরো নগ্ন শরীরের উপরে বুক পর্যন্ত ঢাকা দেওয়া একটা চাদর, পাশে তাকাতেই সে দেখে তার পাশে একই চাদরের তলায় আদিত্য উবু হয়ে ঘুমিয়ে আছে তার মুখ পিয়ালীর কাঁধের কাছে এবং এটাও বুঝতে পারলো যে আদিত্য নিজেও সম্পূর্ণ নগ্ন এবং তার একটা হাত পিয়ালীর স্তনদ্বয়ের ঠিক নীচে ছড়িয়ে রাখা আছে, রাখা আছে বলা ভুল পিয়ালীকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। পিয়ালী কিছুক্ষণ ওইভাবেই ঘুমন্ত আদিত্যর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখতে থাকে, তারপর আস্তে করে আদিত্যর হাতটা নিজের উপর থেকে নামিয়ে উঠে পরে, উঠতে গিয়ে প্রথমে একটু থেমে যায় তার দুপায়ের মাঝে যোনিতে একটু ব্যাথা আছে, প্রথমবার কোনো পুরুষের লিঙ্গ সেখানে ঢুকেছিল গতরাতে, কিন্তু ব্যাথার থেকেও যেটা অনুভব করছে সেটা খুশী কারণ সেই পুরুষটা আর কেউ নয় তার স্বামী তার ভালোবাসার মানুষ আর গতরাতে পিয়ালী ওকে নিজের করে পেয়েছে নিজেকেও ওর কাছে পুরোপুরি সমর্পণ করেছে ভাবতে ভাবতেই তার সারা শরীরে এক অদ্ভুত অনুভূতি খেলে গেল। আস্তে আস্তে উঠে পরলো সে প্রথমে একটু যোগব্যায়াম করলো যেটা তার অনেকদিনের অভ্যেস, তারপর তাঁবুর ভিতরের বাথরুমে গিয়ে স্নান করলো, স্নান করে বেরিয়ে এসে নতুন শাড়ি বার করে পরলো লাল-সাদা শিফন শাড়ি ও লাল রঙের স্লিভলেস ব্লাউজ যেটা একটু বেশীই ডিপ ব্যাক সাথে সামনেও একটু ডিপ সাথে বোধহয় সাইজে একটু ছোটো ফলে স্তনের কিছুটা অংশ ব্লাউজের উপরে উঠে এসেছে এবং ক্লিভেজটা একটু বেশীই গভীর মনে হচ্ছে, দুই হাতে শাখা-পলার সাথে লাল কাঁচের চুড়ি, দুই কানে অক্সিডাইজড জাঙ্ক ইয়ারিং কপালে, ছোট্ট টিপ দুই পায়ে রয়েছে তাঁর নুপূর। চুল খোলা, সেক্সি কোমরে আঁচল গুঁজে তারপর ভেজা চুলটা মুছে আঁচড়িয়ে সিঁথিতে সিঁদুর পরলো, আয়নায় সে খেয়াল করলো যে তার গলায়, ঘাড়ে কয়েকটা দাগ বুঝতে অসুবিধা হলোনা ওগুলো কিসের দাগ সে জানে ওগুলো গতরাতের আদিত্যর ভালোবাসার চিহ্ন। আদিত্যর কথা মনে পরতেই সে ঘুরে দেখে সে তখনও ঘুমাচ্ছে, আবার সে আদিত্যর কাছে এসে আবার একদৃষ্টিতে দেখতে থাকে যেন যতই দেখে তার আশ মেটে না। "দূর থেকে এভাবে না দেখে কাছেও তো আসতে পারো,এখন তো আমি তোমার হাজবেন্ড" পিয়ালী চমকে উঠলো আদিত্যর কথা শুনে, আদিত্যর চোখ বন্ধ থাকায় সে ভেবেছিল সে ঘুমাচ্ছে। "তুমি জেগে গেছো?" পিয়ালী আস্তে করে জিজ্ঞেস করলো,আদিত্য চোখ খুলে উবু থেকে সোজা হয়ে শুয়ে বললো, "যার নতুন বিয়ে করা বউ পরদিন সকালেই তার কাছ থেকে উঠে যায় তার আর ঘুম কিভাবে আসে বলো?" "আসলে আমার এক্সারসাইজের অভ্যাস, সেটাই করছিলাম" "এখনো এক্সারসাইজ করে কি হবে?" "দরকার আছে যদি মোটা হয়ে যাই আর আমার বর আমাকে পছন্দ না করে তখন?" উত্তরে আদিত্য কোনো কথা বললো না শুধু পিয়ালীর দিকে তাকিয়ে রইলো এবং তার ঠোঁটে একটা দুষ্টুমির হাসি দেখা গেল, পিয়ালী প্রথমে বুঝতে পারলো না তারপর আদিত্যর দৃষ্টি বলো করে নিজের বুকের দিকে তাকাতেই ব্যাপারটা বুঝতে পারলো আর সঙ্গে সঙ্গে তার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেল, তার ভেজা চুল থেকে একটু জল চুঁইয়ে পরে ঘাড় বেয়ে নীচে নেমে তার স্তনগহ্বরে প্রবেশ করে হারিয়ে গেছে আদিত্য সেটাই দেখছিল, "একদম দুষ্টুমি করবে না" আদিত্য কি দেখছে সেটা বুঝতে পেরে কপট রাগ আর লজ্জা মেশানো কণ্ঠে বললো পিয়ালী। "এটা কোনো কথার কথা হলো? আমার বউ আর আমি কিছু করবো না?" "কাল রাতে অনেক হয়েছে" "তাতে কি হয়েছে? নতুন বিয়ে করা বউ একরাতে শখ মেটে নাকি? "আবার আজ রাতে হবে, কিন্তু নর্থবেঙ্গলের সদারাগী,সদাগম্ভীর থাকা আদিত্য মশাই যে এত রোমান্টিক সেটা কে বিশ্বাস করবে?" "আমার বউ করলেই হলো আর এসব তোমার জন্য আমি তো আর কোনো কিছুর আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম শুধু নিজেকে শেষ করলে একটা অবলা জীব একা হয়ে যাবে তাই.." "একদম ওসব খারাপ কথা বলবে না, এখন কিন্তু শুধু বাদশা নয় আমিও আছি তোমার সাথে"। পিয়ালীর কথা শুনে আদিত্য কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু হটাৎ আবার কিছু একটা দেখে তার মুখ গম্ভীর হয়ে গেল, সে বললো "আমি তোমাকে হার্ট করেছি, আয়্যাম সরি আমি বুঝতে পারিনি" পিয়ালী বুঝতে পারলো যে আদিত্য তার শরীরের দাগগুলোর কথা বলছে সে বললো, "এটা তুমি কি বলছো? এগুলো তোমার ভালোবাসার চিহ্ন" "আমি তোমাকে ব্যাথা দিয়েছি" "আমার কোনো ব্যাথা লাগেনি, তুমি বুঝতে পারছো না আমি কতটা খুশি, তুমি আমার চোখে খুশী দেখতে পারছো না?" আদিত্য তবুও মুখ শুকনো করে আছে দেখে পিয়ালী এবার আদিত্যর উপর ঝুঁকে ওর দুগালে দুটো চুম্বন দিয়ে বলে, "আমার কোথাও ব্যাথা লাগেনি আমি খুব খুশি যেটা কোনোদিন সত্যি হবে বলে কল্পনাও করিনি আজ সেটা সত্যি আজ তুমি আমার সাথে, আমি তো এরকমই চেয়েছিলাম একটা ছোট্ট ঘর যেখানে তোমার সাথে থাকতে পারবো সাথে শ্বশুর শাশুড়ির আশীর্বাদ আর গাইডেন্স থাকবে কিন্তু এখন নাহয় আমরা দুজনই থাকবো" "ভৌ" কথা বলতে বলতে দুজনেই চমকে উঠলো পিয়ালীর কথা শেষ হতে না হতেই তাঁবুর গেটের কাছ থেকে বাদশা ডেকে উঠলো এখন তার স্বরে হুমকি বা ভয় দেখানো ভাব নেই, কিন্তু আদিত্য বুঝতে পারলো তার মনের ভাব তাই সে হো হো করে হেসে উঠলো পিয়ালী কিন্তু বুঝতে পারেনি সে আদিত্যর দিকে চেয়ে থাকে বলে, "কি হলো তুমি হটাৎ হাসছো কেন?" আদিত্য হাতের ইশারায় বাদশাকে কাছে ডাকে বাদশা তৎক্ষণাৎ এগিয়ে এসে একেবারে মনিবের গা ঘেঁষে দাঁড়ায়, আদিত্য হাসি থামিয়ে বলে, "তুমি এক্ষুনি বললে না যে একটা ঘর যেখানে শুধু আমরা দুজন থাকবো তাতে ও ভেবেছে আমরা বোধোহয় ওকে তাড়িয়ে দেবো তাই আওয়াজ করে নিজের অস্তিত্ব বোঝাতে চাইছে" "এ বাবা আমি কিন্তু ওভাবে বলিনি" "জানি" আদিত্য পিয়ালীকে আশ্বস্ত করে তারপর উঠে বসে বাদশার মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলে, "তোকে আমি কোথাও যেতে দেবো না তুই সারাজীবন আমার সাথে থাকবি বুঝলি?" বাদশা মনিবের কথা শুনে বোধহয় কিছুটা আশ্বস্ত হয় সে আলিঙ্গন করার ভঙ্গিতে আদিত্যর দুকাঁধে দুটো পা তুলে জড়িয়ে ধরে, পিয়ালী বলে "শুধু তোমার সাথে নয় ও আমাদের সাথে থাকবে। আর বাদশা চিন্তা নেই নতুন বাড়িটা হলে তোকেও বিয়ে দিয়ে দেবো" "হ্যাঁ, এবার একটা মেয়ে কুকুর দেখতেই হবে" আদিত্যর কথায় পিয়ালী হেসে ওঠে। "আচ্ছা এবার কিন্তু মেস থেকে আমার জিনিসগুলো আনতে হবে" হাসি থামিয়ে পিয়ালী বলে। "হ্যাঁ, মনে আছে ঘরটা ঠিক হয়ে যাক তারপর একদিন গিয়ে নিয়ে আসবো" "আচ্ছা, তুমি সবসময় শৈলেশবাবুর নাম বলো, কিন্তু ওনাকে দেখি না উনি এখানে থাকেন না?" "তোমাকে বলিনি?" "কি?" "উনি মারা গেছেন, পরিবারে কেউ ছিল না, বিপত্নীক এবং নিঃসন্তান ছিলেন আনন্দ নিকেতন এবং নারায়ণতলা গ্ৰামের লোকজনই ওনার আপনজন ছিল এছাড়া মাঝে মাঝে অন্য অনেক গ্ৰামে যেতেন চিকিৎসা ক্যাম্পে এরকমই একটা জায়গা থেকে আমাকেও নিয়ে আসেন এটা তো বলেছি" "ওহ, সরি" "ইটস্ ওকে, উনি থাকলে বুঝতে খুব ভালো মানুষ ছিলেন যাওয়ার আগে আমাকে এই আনন্দ নিকেতনের দায়িত্ব দিয়ে যান আমি এখনো বুঝতে পারিনি যে আমার মধ্যে কি দেখেছিলেন" "তুমি যে ওনার দায়িত্ব পালন করবে এই বিশ্বাস ওনার ছিল হয়তো উনি মানুষ চিনতেন" আদিত্য একটু শুকনো হেসে একহাতে পিয়ালীকে বুকে টেনে নেয়। অ্যাক্সিডেন্টে বেঁচে গেলেও অরুণাভর মধ্যে একটা পরিবর্তন আসে যেটা সবাই বুঝতে পারলেও এখনই ওটা নিয়ে মাথা ঘামায় না, পরিবর্তনটা শুধু শারীরিক নয় মানসিক। শারীরিক অবস্থা সময়ের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যাবে তবে আপাতত কমপ্লিট রেস্ট। অবশ্য সেটা ছাড়া উপায়ও নেই মাথায় ব্যাণ্ডেজ, হাতে প্লাস্টার, পায়ে প্লাস্টার এসব নিয়ে আর যাই হোক কোনো কাজ করা যায় না। অপারেশনের পর বেশকিছুদিন অবজার্ভেশনে রেখে তারপর ডাক্তাররা ডিসচার্জ করে দেয় তাকে সাথে এটাও বলে দেয় যে আপাতত নিয়মিত চেকআপে থাকতে হবে, ব্যানার্জী পরিবারের সবাই অবশ্য সেটা মেনেই নেয়। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এসে অরুণাভর মনে হলো যেন সে নতুন জন্মলাভ করেছে। হুইলচেয়ারে বসে যখন সে ভিতরে ঢুকছে তখন অবাকভাবে চারিদিকে দেখতে থাকে কিন্তু মুখে কিছু বলে না চুপ করে থাকে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে দায়সারাভাবে উত্তর দেয়। ছেলেমেয়েদুটো অবশ্য বাবাকে পেয়ে কাছে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে কিন্তু মৌমিতা বেশিক্ষণ থাকতে দেয় না পাছে ওদের হুড়োহুড়ির জন্য কোনো অঘটন ঘটে যায়। "তোমার কি হয়েছে, কথা বলছো না কেন?" অবশেষে আর থাকতে না পেরে জিজ্ঞেস করে মৌমিতা কিন্তু অরুণাভ উত্তর দেয় না চুপ করে থাকে। মৌমিতা আর কথা বাড়ায় না সে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পিছনে ফিরতেই অরুণাভ কথা বলে, "এসব পাপের ফল যা পাপ আমি করেছি তার ফল তো আমাকেই ভোগ করতে হবে" চকিতে স্বামীর দিকে ফেরে মৌমিতা জিজ্ঞেস করে, "কিসের কথা বলছো তুমি?" "কেন তুমি জানোনা? একটা তো নয় অনেকগুলো আর আমার সব কাজেই তো তুমি আমার পার্টনার ছিলে"। "তুমি কি বলতে চাইছো?" "তোমার কি মনে হয় এটা শুধুই অ্যাক্সিডেন্ট?" "না, আমি নিশ্চিত এটা প্ল্যান করে ঘটানো হয়েছে আর কে করেছে সেটাও জানি" "জেনে কি করবে?" "তুমি কি চাও?" "আমি জানিনা, আমি এই পাঁকে আটকে গেছি এখান থেকে বেরোনোর উপায় নেই" "যদি ওনাদের শেষ করে দিই" "কজনকে করবে?" "মানে, একজনই তো মেইন কালপ্রিট" "তার সঙ্গে আরও অনেকে আছে" "তুমি কি আমার বাবা আর ভাইকে সন্দেহ করছো?" "সন্দেহ নয়, আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওনারাও যুক্ত আছেন" "কিন্তু আমার বাবা তোমাকে মারতে চাইবেন কেন? উনি তো জানেন যে তুমি আমার স্বামী কোনো বাবা কি তার মেয়েকে বিধবা দেখতে চান?" "হয়তো তুমিও ওদের সাথে যুক্ত আছো" "অরুণাভ.. এই কথাটা বলতে পারলে তুমি?" মৌমিতার স্বরে অবিশ্বাস এবং হতাশা। "ভুল কোথায় বললাম, অর্থ আর প্রতিপত্তির জন্য তুমি কি কি করেছো ভুলে গেছো?" "শুধু আমি? তুমি করোনি?" "করেছি, সেই পাপেই তো আজ আমার এই অবস্থা" "এখন সবকিছুর জন্য আমি দায়ী হয়ে গেলাম অরু?" শেষের কথাটা বলতে গিয়ে মৌমিতা কেঁদে ফেলে, আর এই কান্না দেখেই বোধহয় অরুণাভ কিছুটা নরম হয়, বলে "সরি মৌ... তোমাকে কথাগুলো বলা উচিত হয়নি, কিন্তু এটা সত্যি তোমার বাবা হয়তো পিসেমশাইয়ের এই প্ল্যানে আছেন" এই কথায় মৌমিতার কান্না থেমে যায় তার চোখে রাগের ঝিলিক দেখা যায় সে বলে "যদি এটা সত্যি হয় তবে আমার বাবাকেও এর জবাব দিতে হবে তবে আগে প্রমাণ জোগাড় করতে হবে পিসেমশাইয়ের বিরুদ্ধেও" "কিন্তু কিভাবে?" "আগে যেভাবেই হোক সুশান্তর ভিডিওটা পেতে হবে তারপর ওনার যেসব বন্ধুরা এই শহরে ছড়িয়ে আছেন তাদের খুঁজে বার করতে হবে" "আমার মাথায় কিচ্ছু আসছে না এগুলো কিভাবে হবে?" "সব হবে দুজনে একসাথে মিলে প্ল্যান করবো, আপাতত তোমার রেস্টের দরকার.. তুমি রেস্ট নাও"। "তোমার জিনিসগুলো কবে আনতে যাবে? মেসের যে মালিক তার সাথে কথা বলেছো?" আদিত্য প্রশ্ন করে পিয়ালীকে, দেখতে দেখতে তাদের বিয়ের বেশ কিছুদিন পেরিয়ে গেছে ইতিমধ্যে শৈলেশবাবুর বাড়িটাও নতুন করে সাজানো হয়ে গেছে এখন আদিত্য, পিয়ালী আর বাদশা ওখানেই থাকে, বাড়িটা রিসর্টের বাইরে হলেও খুব দূরে নয়, ওখানে ওদের নিজের সংসার যদিও দুজনের বেশীরভাগ সময়টাই কেটে যায় হয় রিসর্টে আর না হয় গ্ৰামের বাচ্চাদের সাথে, নারায়ণতলা একটা ছোট্ট গ্ৰাম এখানে সবাই সবাইকেই ভালোবাসে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয় আবার নিজেরাই মিটিয়ে নেয়। প্রতিদিন রিসর্টে আসার দরকার না থাকলেও আদিত্য অবশ্য প্রায়ই একবার হলেও এসে খানিকক্ষণ থেকে যায় তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে পিয়ালী আর বাদশাকে নিয়ে গ্ৰামে ঘুরে বেড়ায় বা কোনো পুকুরের ধারে গিয়ে বসে বা নিজের বাড়ির বাগানে বসে গল্প করে, একরকমই একদিন রিসর্ট থেকে ফিরে বাড়ির সামনে একটা ছোট্ট বাগানে বসে আড্ডা দেওয়ার জায়গা করেছে সেখানেই চা খেতে খেতে কথা বলছিল নবদম্পতি তখনই আদিত্য প্রশ্নটা করে। "সে বলে দেবো কিন্তু জিনিসগুলো আনবে কিভাবে?" পিয়ালী পাল্টা প্রশ্ন করে। "এখানে একজন আছে যাদের ছোটা হাতি আছে, তাকে বললে সেই যাবে সাথে আরও কয়েকজনকে নিতে হবে জিনিসগুলো লোডিং করার জন্য, আচ্ছা ওগুলো এনে কি করবে? মানে এখানে তো খুব একটা দরকার হবে না বিছানা, আলমারি, ড্রেসিং টেবিল সবই মোটামুটি আছে" "ওখানে আলমারি নেই বাকি যা ফার্ণিচার আছে সেগুলো এখানে এনে না হয় রিসর্টের কাজে ব্যবহার করা হবে আর কিছু বই আছে ওগুলো আমি রাখবো" "ঠিক আছে, তাহলে আমি ওদের বলে রাখছি দেখি ওদের কবে সময় হয়?" "ঠিক আছে"। দিনকতক পরে কসবার যে মেসে পিয়ালী থাকতো সেখান থেকে নিজের ফেলে আসা বাকি জিনিসগুলো বার করে নিচ্ছে গ্ৰাম থেকেই কয়েকজনকে নিয়ে গিয়েছিল আদিত্য ওরাই জিনিসগুলো ধরাধরি করে গাড়িতে লোডিং করছে। এখানে আসার পর মেসের বাকি মেয়েরা অবশ্য পিয়ালীকে ঘিরে ধরেছে 'ও কেন চলে গেল, কোথায় থাকে বিয়ে কবে করলো' ইত্যাদি প্রশ্নে ব্যাতিব্যস্ত করে তুললো পিয়ালী অবশ্য বুঝে শুনেই উত্তর দিচ্ছে আদিত্য পাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে এসে পিয়ালী জানতে পারলো ও চলে যাওয়ার কয়েকদিন পর থেকে কয়েকজন লোক একাধিকবার ওর ব্যাপারে খোঁজ করে গেছে যদিও কাউকে কিছু বলে যায়নি বলে কেউ কিছু বলতে পারেনি শুনে পিয়ালী একবার আদিত্যর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে আদিত্য নির্বিকার মুখে দাঁড়িয়ে আছে। লোকগুলো কারা ছিল সে বিষয়ে জানতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না একটু পরেই চার পাঁচটা বাইকে দশজনের মতো লোক এসে মেসের সামনে দাঁড়ালো। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
21-05-2023, 11:50 PM
দ্বিতীয় পার্ট ১০ম পর্ব লোকগুলো কারা ছিল সে বিষয়ে জানতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না একটু পরেই চার পাঁচটা বাইকে দশজনের মতো লোক এসে মেসের সামনে দাঁড়ালো। পিয়ালীর বুঝতে বাকি রইলো না এরাই তার বিষয়ে খোঁজখবর করছিল কিন্তু এখন কিভাবে জানলো যে ও এখানে এসেছে? পিয়ালীর মনের প্রশ্নটা আন্দাজ করেই বোধহয় আদিত্য উত্তর দিল, "মেসেরই কারো সাথে ওদের যোগাযোগ ছিল সেই ওদের জানিয়েছে যে তুমি ফিরে এসেছো সাথে এটাও বলেছে তে তুমি একা নয় তাই হকিস্টিক নিয়ে এসেছে" "আমার ভয় লাগছে আদিত্য" "যখন একা ছিলে তখন ভয় লাগেনি আর এখন ভয় লাগছে?" "এখন একা নই এটাই ভয়ের, তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি তো..." "রিল্যাক্স... আমার কিচ্ছু হবে না"। লোকগুলো সোজা পিয়ালী আর আদিত্যর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে, আদিত্য পিয়ালীর জিনিস নিয়ে যাবার জন্য গ্ৰাম থেকে যাদের নিয়ে এসেছে তারা ব্যাপারটা খেয়াল করলো বলাইবাহুল্য এই গ্ৰামের সবাই আদিত্যকে নিজেদের লোক মনে করে তাই ঝামেলা আঁচ করে এগিয়ে আসছিল কিন্তু আদিত্য তাদের ইশারায় বারণ করে। লোকগুলো সোজা ওদের সামনে এসে আদিত্য আর পিয়ালীকে কিছুক্ষণ নিরীক্ষণ করলো তারপর তাদের একজন বোধহয় এদের নেতা সে একটু শয়তানী হাসি হেসে নিজের সঙ্গীদের বললো, "এতদিন ওয়েট করে শেষপর্যন্ত পাখি ধরা পরলো" "ঠিক বলেছো, দাদা খুব খুশি হবে" অপর একজন সায় দিল। "আপনারা কারা? আর আমাদের কাছে কি চান?" আদিত্য প্রশ্ন করে পিয়ালী আদিত্যর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। আদিত্যর কথার উত্তর না দিয়ে নেতা গোছের লোকটি নিজের সঙ্গীদের বললো, "এই মালটাই বোধহয় ওদের মেরেছিল বলেই তো মনে হচ্ছে তাই না?" "মনে তো তাই হচ্ছে দাদা" "অবশ্য এরকম একটা আইটেম সঙ্গে থাকলে সব ছেলেদেরই একটু গরম বেড়ে যায়" নেতার কথা শুনে বাকি লোকগুলো হাসতে থাকে, আদিত্য একবার পিয়ালীর দিকে তাকিয়ে দেখে ওর মুখ ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে গেছে চোখের ইশারায় ওকে আশ্ব, এবার বাদশার দিকে তাকাতেই দেখলো বাদশা নিজের শরীরটাকে তৈরি করছে যেকোনো সময় লাফ মারবে কিন্তু আদিত্য ওকেও নিরস্ত করলো। "কি রে আজ এত শান্ত? তুইই তো আমাদের কয়েকজন লোককে মেরে হাত পা ভেঙে দিয়েছিলি, আজ কি হলো?" নেতা গোছের লোকটি আদিত্যকে প্রশ্ন করে। "দেখুন সেদিন ওরা ওকে তুলে নিয়ে যেতে এসেছিল আমার কিছু করার ছিল না" আদিত্য শান্তভাবে উত্তর দেয়। "আমরাও সেটাই করবো, দেখি তুই কি করিস?" "কিন্তু কেন? আপনারা আমাদের পিছনে পরেছেন কেন?" "এই মেয়েটা আমাদের বসের বিরুদ্ধে কোর্টে গেছে আর যারা বসের বিরুদ্ধে যায় তাদের শাস্তি পেতে হয়" "আপনারা তো ফিল্মের ডায়লগ দিচ্ছেন.. ঠিক আছে ও ভুল করেছে আমি ওর হয়ে ক্ষমা চাইছি"। "কেনো রে দম শেষ? কিন্তু এখন ক্ষমা চেয়ে কিছু হবে না দাদার হুকুম ওকে তুলে নিয়ে যেতে হবে আর তোকে মেরে ফেলে দিতে হবে" লোকগুলো এগিয়ে আসতে যেতেই আদিত্য যেন প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে এমনভাবে বলে, "আচ্ছা আমি আপনাদের বসের কাছেও ক্ষমা চাইতে রাজী উনি যদি আমাদের ক্ষমা করে দেন তাহলে তো আমাদের ছেড়ে দেবেন?" লোকগুলো একবার পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো তারপর নেতা লোকটি বললো, "তোর কি মনে হয় দাদা তোকে ছেড়ে দেবেন?" "দেখাই যাক না, ওনার সাথে কথা বলিয়ে দিন আমি ক্ষমা চেয়ে নেবো ওনার কাছে"। নেতা গোছের লোকটা একটু হেসে ফোনে একটা নম্বর ডায়াল করলো একটু পরেই ওপাশ থেকে আওয়াজ এলো, "হ্যাঁ, বল কি হয়েছে?" "বস, ওই উকিল মেয়েটাকে ধরে ফেলেছি" "কি বলছিস... শাবাশ শাবাশ নিয়ে আয় আর ওই ছেলেটাকে কি করেছিস?" "ওই ছেলেটা আপনার সাথে কথা বলতে চাইছে" "আমার সাথে কি কথা?" এরমধ্যে আদিত্য ফোনটা নিয়ে নিয়েছে তারপর স্পিকার চালু করে ভয়ার্ত গলায় বলে, "হ্যা..হ্যালো স্যার" "কি হয়েছে?" "স্যার আমি ক্ষমা চাইছি আমার ওয়াইফের হয়ে, ওকে আর আমাকে ক্ষমা করে দিন প্লিজ"। ফোনের ওপাশ থেকে প্রথমে অট্টহাসির আওয়াজ আসে তারপর ওপাশে থাকা লোকটি বিদ্রুপের স্বরে বলে, "কেনো রে ভয় পেয়ে গেলি?" "ভয় না পেয়ে উপায় আছে? আপনি কত বড়ো মানুষ?" "তাহলে আমার লোকদের মেরেছিলি কেন?" "ভুল হয়ে গেছে, আর তখন তো আমি জানতাম না যে ওরা আপনার লোক" আবার হাসির আওয়াজ আদিত্য বলে চলে, "প্লিজ স্যার আমাদের ক্ষমা করে দিন" "ঠিক আছে যা তোকে ছেড়ে দিলাম" "থ্যাংক ইউ স্যার থ্যাংক ইউ" "আমার লোকজন তোকে ছেড়ে দেবে কিন্তু.." "কিন্তু?" "তোর ওই উকিলটাকে আমার পছন্দ হয়ে গেছে, ওকে আমার লোকেদের হাতে তুলে দে" "স্যার.. এ কি বলছেন, প্লিজ স্যার এরকম করবেন না" "অ্যাই... তোকে রিকোয়েস্ট করছি না এটা অর্ডার" "প্লিজ স্যার" "চোপ.. তোকে ছেড়ে দিচ্ছি এটাই অনেক, এবার চুপচাপ কেটে পর" "স্যার" "অ্যাই.. এবার আর কোনো কথা বললে তোকে মেরে ওকে তুলে নিয়ে আসবে আমার লোকেরা" "না.. স্যার আমাকে কিছু করবেন না" "তাহলে চুপচাপ কেটে পর, আচ্ছা যা শুধু একটা রাত তোর বউকে নিয়ে আমি মজা করবো তারপর আবার তোর কাছে ফিরিয়ে দেবো" "ঠিক আছে স্যার.... কোথায় আসতে হবে?" "তোকে আসতে হবে না.. আচ্ছা তুইও আয় তোর বউএর সাথে যখন আমরা মস্তি করবো তখন তুই সেটা দেখে হ্যাণ্ডেল মারবি" কথার শেষে আবার অট্টহাসি তবে এবার একজন নয় দুজন আদিত্যর সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না সে বলে, "আমরা?" "হ্যাঁ, ওর সাথে আমিও আছি" এবার আরেকটা গলা শোনা যায়, সেই গলার অধিকারী বলতে থাকে "আমার আর সহ্য হচ্ছে না বুঝলি ভাই মনোজ" "অপেক্ষা তো আমারও হচ্ছে না সুশান্ত, কিন্তু রাত পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতেই হবে, আজ রাতে ফুল মস্তি হবে" আদিত্য চুপচাপ ফোনের ওপাশের দুজনের কথোপকথন শুনে যাচ্ছে, ফোনের ওপাশের দুজন নিজেদের মধ্যে কথা বলেই যাচ্ছে তাদের হুঁশ নেই যে ফোনে একজন তাদের কথা শুনছে, "কিন্তু সুশান্ত তোর তো বিয়ে হয়ে গেছে এখন তো শুধু নিজের বউএর সাথে মস্তি করবি" "বউকে তো রোজই পাবো কিন্তু এই উকিলটাকে তো রোজ রোজ পাবো না" "ভাবছিস কেন যদি ভালো লাগে তাহলে আবার নিয়ে এসে মস্তি করবো যখনই ইচ্ছা হবে তুলে নিয়ে এসে লাগাবো" আবার দুজনের অট্টহাসি শোনা যায় কিন্তু পরক্ষণেই হাসি থেমে যায় বোধহয় তাদের হুঁশ ফিরেছে যে ফোনটা তখনও চালু আছে প্রথম কণ্ঠ অর্থাৎ মনোজ নামের লোকটা বলে, "শোন আমার লোকদের বলা আছে কোথায় আনতে হবে, তুই চাইলে আয় নাহলে চলে যা" "ঠিক আছে, আসছি" ফোনটা কেটে গেল আদিত্য পিছন ফিরে পিয়ালীর দিকে তাকালো পিয়ালী এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আদিত্য আবার সামনে ফেরে নেতা গোছের লোকটা হাত বাড়িয়ে নিজের ফোনটা নিতে চাইলো কিন্তু দেখে অবাক হয়ে গেল যে আদিত্য ফোনটা না দিয়ে নিজের পকেটে ঢোকালো। পিয়ালীও অবাক হয়ে আদিত্যকে দেখছিল আর ওর হাবভাব লক্ষ্য করছিল এটা ওর কাছে পরিষ্কার যে আদিত্যর মাথায় কিছু একটা চলছে কিন্তু সেটা কি সেটাই সে বুঝতে পারছে না সেটাই বুঝতে চেষ্টা করছে কিন্তু এরপর যেটা হলো সেটাতে তার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিল। "কি রে ফোনটা ফেরত দে পকেটে ঢোকালি যে?" নেতা গোছের লোকটা আদিত্যকে জিজ্ঞেস করে। "ফোনটার দরকার তোদের আপাতত নেই" আদিত্যর এই কথায় লোকটা অত্যন্ত অবাক হয় শুধু কথা নয় কথা বলার ধরনও বদলে গেছে, লোকটা আদিত্যর কথা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করে "মানে কি বলছিস তুই?" উত্তরে আদিত্য যেটা করলো সেটার জন্য সেটার জন্য লোকগুলো তো নয়ই এমনকি পিয়ালীও প্রস্তুত ছিল না। আদিত্য হঠাৎই নিজের মাথা দিয়ে সজোরে নেতা গোছের লোকটার নাকে আঘাত করলো আর সঙ্গে সঙ্গে তার নাক ফেটে গলগল করে রক্ত বেরোতে আরম্ভ করে, অকস্মাৎ এই আক্রমণে বাকীলোকগুলো ক্ষণিকের জন্য ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেও দ্রুত নিজেদের সামলে নিয়ে আদিত্যকে আক্রমণ করলো কিন্তু আদিত্যর সাথে হ্যাণ্ড টু হ্যাণ্ড কমব্যাটে পেরে ওঠা যার তার কম্ম নয় আর এই কজন গুণ্ডা প্রকৃতির লোকের তো নয়ই তার উপরে আদিত্যর সাথে থাকা ছেলেগুলো এগিয়ে এসেছে বাদশা তো অপেক্ষায় ছিল ফলে শীঘ্রই গুণ্ডা প্রকৃতির লোকগুলো ধরাশায়ী হলো তাদের কারো মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে তো কেউ পা ভেঙে যাওয়ায় আর্তনাদ করছে, আর নেতা গোছের লোকটাও ছিটকে মাটিতে পরেছিল তার নাক দিয়ে তখনও রক্ত পরে চলেছে, সে ভয় আর অবিশ্বাস মেশানো চোখে চারিদিকে দেখছে। এবার আদিত্য তার সামনে গেল আদিত্য জানে নাকে আঘাতের পরে আবার যে লাথিটা সে এই লোকটার বাম হাঁটুতে মেরেছে তাতে ওর হাঁটুর জয়েন্ট ভেঙে যাওয়া অসম্ভব নয় খুব সম্ভবত সেটাই হয়েছে কারণ লোকটা উঠে দাঁড়াতে পারছে না মাটিতে ঘষটে ঘষটে পিছিয়ে যাচ্ছে। আদিত্য লোকটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো পাশে বাদশা লোকটা এবার ভয়ার্ত চোখে আদিত্যকে দেখতে থাকে, আদিত্য বেশ শান্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, "তোদের এই বস কি নাম.. হ্যাঁ মনোজ ও এখন কোথায়?" "জানিনা" "দেখ, আমি জানি তুই জানিস তাই সোজাসুজি বলে দে কেন আমাকে আবার খারাপ হতে বাধ্য করছিস?" "তুই জানিস না তুই কার সাথে দুশমনি করছিস?" "সেটা জানতেই তো যেতে চাইছি, বল কোথায় এখন?" "বলবো না যা পারিস করে নে" আদিত্য কিছু না বলে লোকটার বাম হাঁটুতে নিজের একটা পা তুলে চাপ দিল আর সঙ্গে সঙ্গে লোকটা ব্যাথায় আর্তনাদ করে উঠলো, আদিত্য চাপ আরও বাড়ালো লোকটার আর্তনাদ আরও বাড়লো। আশেপাশের কয়েকজন লোক এই পুরো ঘটনাটা দেখেছে এবার তারাও এগিয়ে এসে বাকি গুণ্ডাগুলোকে চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করেছে, আদিত্য একবার ওইদিকে তাকিয়ে আবার নেতা গোছের লোকটাকে বলে, "দেখ তুই না বললে কষ্টটা তোরই হবে" "তুই যা পারিস কর" "আমি কিছু করবো না যা করার আমার এই কুকুরটা করবে ও এমনিচে খুবই শান্ত এবং আমার বাধ্য কিন্তু ওর মানুষের মাংসের প্রতি খুবই লোভ আসলে শিকারী কুকুর তো তাই, তো তুই যদি না বলিস তাহলে আমি তোকে ওর সামনে ছেড়ে দেবো আর ও তোকে ছিঁড়ে খাবে এবং এটা আশা করি না বললেও চলবে যে তোকে আমি মারবো না জ্যান্তই ও তোকে খাবে" এবার আদিত্যর মনে হলো ওষুধে কাজ ধরেছে লোকটার চোখে এবার সত্যিই আতঙ্ক দেখা গেল অবশ্য বাদশার যা চেহারা যে কেউ ভয় পাবে, আদিত্য বলতে থাকে, "ঠিক আছে তুই যখন আমার কোনো কাজে লাগবি না তখন আমার কুকুরের কাজে লাগ" বলে লোকটার হাঁটু থেকে পা সরিয়ে পিছনে ফিরতেই লোকটা তাড়াতাড়ি ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে ওঠে "দাদা এখন নিউ আলিপুরের ব্যানার্জী নিবাসে আছেন" তারপর আরও কিছু খবর জেনে নিল আদিত্য তারপর লোকটাকে ছেড়ে পিয়ালীর কাছে এল ওর চোখেমুখেও তখনও বিষ্ময়ভাব। আশেপাশের লোকগুলোর থেকে কয়েকজন ওদের কাছে এগিয়ে এল বললো, "বাবা তোমরা এখান থেকে চলে যাও ওদের আমরা দেখে নেবো" "আপনারা?" "আমরা এই পাড়াতেই থাকি, এরা মাঝে মাঝেই এখানে আসে আমাদের বাড়ির মেয়েদের উত্যক্ত করে,হাত ধরে টানাটানি করে" "আপনারা পুলিশকে জানাননি?" "জানিয়েছিলাম কিন্তু কোনো লাভ হয়নি, আজ ওদের ছাড়বো না পিটিয়ে তক্তা করে দেবো" আদিত্য দেখলো কথাটা নেহাত খারাপ নয় ও বলে, "ঠিক আছে তবে দেখবেন যেন ওরা কারো সাথে কন্ট্যাক্ট না করতে পারে" "ওদের এমন অবস্থা করবো আজকে আমরা যে আর কোনোদিন কোনো মেয়ের সাথেই খারাপ ব্যবহার করতে পারবে না"। লোকগুলো গুণ্ডাগুলোকে টানতে টানতে নিয়ে গেল তারপর আদিত্য নিজের সঙ্গে থাকা লোকগুলোকে বললো "তোমরা মালগুলো নিয়ে চলে যাও ওখানে অখিল জ্যেঠুকে বলা আছে কি করতে হবে আমি আর পিয়ালী একটা কাজ সেরে ফিরবো" তাতে একজন বললো, "দাদা বলো তো আমরাও যাচ্ছি তোমার সাথে?" "দরকার নেই তোমরা জিনিসগুলো নিয়ে যাও" লোকগুলো চলে গেলে আদিত্য পিয়ালীর কাছে গেলক পিয়ালী জিজ্ঞেস করলো "এখন কোথায় যাবো আমরা?" "নিউ আলিপুরে" "কেন?" "ঝামেলা মেটাতে, চলো দেখা করে আসি" "কিন্তু.." "ভয় নেই আমি বেঁচে থাকতে কেউ তোমার গায়ে হাত দিতে পারবে না" "পিয়ালী নামের প্রপার্টি তোমার নামে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে এখন সেখানে অন্য কেউ হাত দেবে নাকি তুমি নিজের প্রপার্টি প্রোটেক্ট করবে সে ভাবনা তোমার আমি কেন ভয় পাবো?" "তখন নিশ্চয়ই তোমার মনে হয়েছিল যে আমি তোমাকে ওদের হাতে." "একদমই না, আমি তো তোমার প্ল্যানটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম" "তাই নাকি?" "অবশ্যই তাই" পিয়ালী বাইকে আদিত্যর পিছনে বসে হেলমেট পরলো আদিত্য বাইকে স্টার্ট দিতে দিতে বললো, "মনোজ আর সুশান্ত এই দুই নামের দুজনকে আমি চিনতাম অনেক আগেকার কথা আশা করছি ওরা নয়, দেখা যাক" বলে বাইক স্টার্ট দিল। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
|
« Next Oldest | Next Newest »
|