17-05-2023, 08:25 PM
(This post was last modified: 17-05-2023, 09:38 PM by মুক্তমন. Edited 5 times in total. Edited 5 times in total.)
নমস্কার সবাইকে এটা আমার প্রথম গল্প, তাই ভুল তো হবেই, তবে ক্ষমার দৃস্টিতে দেখবেন, এই গল্পটা ইন্সেন্ট মা ছেলের মাঝে প্রেমের গল্প, ভালো লাগলে লাইক রেটিং কমেন্ট দিয়ে উৎসাহ দিবেন, চলুন শুরু করি ***************************************** কাহিনি,জীবনে প্রথম তুমি শেষ ভালোবাসা,by,মুক্তমন *****************************************পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা আধা শহর কোচবিহার তাড়ি এক গ্রাম অঞ্চল নাটাবাড়ি। এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ হতোদরিদ্র,এবং তাদের প্রধান জীবিকা চাষবাস। কয়েক বছর হলো বিদ্যুৎ এসেছে এই গ্রামে, লো পাওয়ারের ভালভ গুলো টিম টিম করে জলে উঠে সন্ধাঁ নামলে এক এক করে টিঁনের চৌরি ঘরগুলোয়। এরি একটা চৌরি ঘরের জানালার গরাদ ধরে দাড়িয়ে ছিল রানী। ১৪ বছর আগে বিয়ে হয়ে আসে কিশোরি রানী এই গ্রামে স্বামী মৈনাক দেবনাথের ঘরে। রানীর বাপের বাড়ি তুফানগঞ্জের নেতাজিপাড়া, রানীরা তিন ভাই বোন" বড়ো দাদা রাখাঁল মেজো দিদি নমিতা আর সবার ছোটো সে রানী। রানীর মা অনিতাদেবী গৃহবধূ বাবা শিবেন মন্ডল বড়ো সবজি আরতের মালিক, মোটামুটি সচ্ছল পরিবার।রানী ক্লাসট্রেনে পড়ার সময় ওদের এক আত্মিয়ের মাধ্যমে রানীর জন্য সমন্ধ আসে তার বাবা মার কাছে, রানীর মা বাবা প্রথমে গাইগুই করলেও আত্মিওসজন পাড়াপ্রতিবেশি সবার কাছে একি কথা শুনে শুনে, মা বাবার এক মাত্র ছেলে সরকারি চাকরি ভালো রোজগার ছোটো ঝামেলাবিহীন পরিবার, শেষে রাজি হয়ে যায় রানীর বাবা মা এবং পুরো পরিবার, তারপর পাকা কথা বিয়ে। দু চোখে স্বপ্ন বুকে শত শত আশা নিয়ে পাড়ি জমিয়ে ছিলো নতুন জীবনে শ্বশুরবাড়িতে। এই অঞ্চলের একটি প্রাথমিক হাইকলেজে কেরানীর চাকরী করতো স্বামী মৈনাক, মোটামুটি চলে যাওয়ার মতো মাইনে পেতো মাসে আট নয় হাজার টাকা, আর বিঘা দুয়েক চাষের জমি তার থেকেই যুগিয়ে যেত ঘরে চাল ডাল। বিয়ের এক বছরপর রানীর কোল আলো করে আসে একমাএ সন্তান তার দু নয়নের মণি রনক, স্বামী সন্তান শ্বশুর শাশুরি নিয়ে ভরা সংসার রানীর।কিন্তু এই সুখ বেশিদিন লেখা ছিলো না বুঝি তার কপালে,, সুখের সংসারে নেমে আসে অন্ধঁকারের কালো ছায়া। মৈনাক জড়িয়ে যায় রাজনীতিতে ওখান থেকেই শুরু হয় তার অধঃপতন। যে ছিলো স্বীর কাছে আদর্শ স্বামী সন্তানের আদর্শ পিতা, সে হয়ে উঠে পাড় মাতাল জুয়ারি খিটখিটে মেজাজের মাদক আসক্ত এলাকার যুব নেতা। বৌউ ছেলে সংসারের তোয়াক্কা না করে, বকাটে বন্ধু নেতাদের সাথে পরে থাকতো পাটিঅফিসের পিছনে জুয়ার ঠেকে,মাইনের পুরো টাকাগুলো চলে যেতো মদ জুয়ার পিছনে,বাড়িতে বৌও ছেলে আছে সংসার যে কি করে চলবে সে হুস তার ছিল না। রানী স্বামীকে অনেক বোঝাতো সুপথে ফিরিয়ে আনার, উলটে তার বিপরিত হত, মৈনাক বিরক্ত হয়ে রেগে গিয়ে নোংরা গালাগাল দিতো তারপর একটা সময় গায়ে হাত, ১৪ বছরের তিলতিল করে সাজানো সংসারে শুরু হয় নিত্তদিনের কলহ। সংসারে এসে ভীর করে অভাব অনটন, ছেলেকে নিয়ে অথই জলে পড়ে রানী। ছেলে আর নিজের দুবেলা ভাতের দায়ে লোকের জমিতে জোন দেওয়া শুরু করে রানী। সন্ধাঁবাতি দিয়ে এসে জানালার গরাদ ধরে বাইরের শুন্নঅন্ধকারের দিকে উদাস নয়নে তাকিয়ে এইসবি ভাবছিলো রানী। দীর্ঘ একটা নিঃস্বাস ফেলে জানালার গরাদ ছেড়ে দিয়ে, সেখান থেকে চলে যায় রাতের খাবার তৈরি করতে রান্না ঘরের দিকে। রনক নিজের ঘরে বসে একেরপর এক বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছে, হাত পা ধুয়ে এসে পড়তে বসেছে ঠিকি,কিন্ত বইয়ে তার মন নেই মনটা তার সকাল থেকেই খারাব,আজকে কলেজেও যায়নি সে, তার মা রানী কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর, সে বুকে চাপা কস্ট নিয়ে উদাসিন ভাবে এদিক সেদিক ঘুরে বেরিয়েছে। সকালে তার দুস্টু মাতাল বাবা ওর প্রান প্রিয় মায়ের গায়ে হাত তুলেছে, মাকে খুব মেরেছে। মা সারাদিন মাঠে রোঁদে পুড়ে লোকের জমিতে, জন দিয়ে টাকা নিয়ে আসে সংসার চালানোর জন্য, সেই টাকার থেকে তার বাবা কিছু টাকা চেয়েছিল মদ খাওয়ার জন্য, কিন্ত তার মা দিতে রাজি হয়নি বলে রাগে তেড়ে গিয়ে নোংরা গালাগালির সাথে মারধোর। সে মাকে খুব ভালোবাসে মা বলতে তার সবকিছু,,মা তার দু চোখের দৃস্টি মা তার দেহের প্রাণ, মা ওর নিঃস্বাস, মা তার পথ চলার সাথি, মাযে তার আদর্শ, মা যে ওর প্রিয় বন্ধু, মাকে ঘিরেই তার পৃথিবী। মায়ের প্রতি বাবার এই অন্যায় অত্মাচার,তার এই ছোট্টো হৃদয়ে ধেয়ে ধেয়ে উঠতে চায় প্রতিবাদের ঝড়, হৃদয়ের গভির নালি থেকে আসে সীমাহিন ক্রোধ। কিন্ত তার প্রান প্রিয় মায়ের শীতল চাওনিতে মিলিয়ে যায়, তার মনের সব ধেয়ে আসা সকল সম্ভবনা। মাঝে মাঝে মায়ের প্রতি তার খুব অভিমান হয়, কেন মা তাকে এসব থেকে দুরে দুরে রাখতে চায়। বাবা বাড়িতে এলে মা ওকে ঘরে চলে যেতে বলে, ঘর থেকে বেরুতে নিষেধ করে মায়ের দিব্বি দিয়ে। মা তাকে বাচ্ছা ভাবে, কেন মা তাকে দুরে সরিয়ে রেখে কেন মা সম্মস্ত দুখকস্ট নিজে একা মাতা পেতে নেয়।অভিমানে চোখের কোণ থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল গড়িয়ে পরে খোলা বইয়ের পৃষ্টাতে। দুষ্ঠু শয়তান বাপের প্রতি রাগে কোধে থর থর করে কাপছে সে,, বিড় বিড় করে কিছু একটা বলছে সে আপন মনে, কিছুক্ষন বিড় বিড় করে তারপর চুপ করে হাতের পাতার উল্টো দিক দিয়ে চোখের কোণ মোছে, আর মনে মনে ভাবে মাতো তার ভালোর জন্যই এইসব থেকে দুরে রাখে,যাতে তার পড়াশুনো আর তার কোন ক্ষতি না হয়, তাকে এসব থেকে নিরাপদে আগলে রাখতে চায় মা,যেন তার পড়াশুনায় ভাটা না পড়ে সে সুরক্ষিত থাকে, ওকে নিয়ে যে মায়ের অনেক সপ্ন অনেক আশা অনেক না পাওয়ার চাওয়া। রনয়ের মনে মায়ের প্রতি সব অভিমান মিলিয়ে যায়,তার বদলে আসে মায়ের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা সম্মান। রণয় মনে মনে প্রতিজ্ঞা নেয়, নিজেকে নিজেই কথা দেয় সে,ওর প্রান প্রিয় মায়ের কস্ট ত্যাগ বিফলে যেতে দেবেনা, তাকে নিয়ে মায়ের যত সপ্ন সব পুরন করবে ত্যাগের প্রতিদান দেবে। মন দিয়ে পড়াশুনো করবে, বড়ো হয়ে একটি ভালো চাকরি নিয়ে মায়ের কস্ট লাঘব করবে। এই দুষ্ঠু লোকটার থেকে মাকে ছিনিয়ে নিয়ে মুক্ত আজাদ করবে, তার প্রাণ প্রিয় মাকে সুখের সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সে। পৃথিবীর সমস্ত সুখ ঢেলে দেবে তার মায়ের পায়ে,, হঠাত তার ঠোটের কোণে একটা মিস্টি হাসি ফুটে উঠলো, ছিনিয়ে নেওয়ার কথাটা মনে হতে।