24-04-2023, 11:48 PM
অসাধারণ
WRITER'S SPECIAL "ধূসর পৃথিবী"
|
24-04-2023, 11:57 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
25-04-2023, 05:08 AM
O dada update kobe pabo?
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
25-04-2023, 07:50 AM
(25-04-2023, 05:08 AM)Patrick bateman_69 Wrote: O dada update kobe pabo? এই তো দিলাম, লেখা হলেই দেবো I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
26-04-2023, 10:52 AM
Update kobe pabo go dada?
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
26-04-2023, 12:20 PM
(26-04-2023, 10:52 AM)Patrick bateman_69 Wrote: Update kobe pabo go dada? লেখার সময়তো দিন লেখা হলেই পাবেন I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
26-04-2023, 09:00 PM
1-2din er modhe update pabo ki dada?
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
26-04-2023, 10:23 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
27-04-2023, 08:12 PM
দারুণ পর্ব ভাই প্রতি পর্বে এমন সব ঘটনার ঘণঘটা নিয়েই হাজির হবে এই আশাই রাখলাম, কিছু কারণ বসত দেরি করে লাইক রেপু কমেন্ট করলাম। চালিয়ে যাও এ ভাবেই।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
27-04-2023, 09:32 PM
(27-04-2023, 08:12 PM)Boti babu Wrote: দারুণ পর্ব ভাই প্রতি পর্বে এমন সব ঘটনার ঘণঘটা নিয়েই হাজির হবে এই আশাই রাখলাম, কিছু কারণ বসত দেরি করে লাইক রেপু কমেন্ট করলাম। চালিয়ে যাও এ ভাবেই। ধন্যবাদ এভাবেই পাশে থাকো সঙ্গে থাকো। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
27-04-2023, 11:10 PM
Dada etttu khani besi boro update diyen dada plz
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
27-04-2023, 11:27 PM
(27-04-2023, 11:10 PM)Patrick bateman_69 Wrote: Dada etttu khani besi boro update diyen dada plz শব্দলিমিট মানতে হয়, আর একাধিক আপডেট দিতে গেলে দেরী হবে। রাজী? I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
28-04-2023, 02:24 AM
samne Robibar tahole 2ta update diben dada, Hehehehehe raji?
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
28-04-2023, 07:59 AM
(28-04-2023, 02:24 AM)Patrick bateman_69 Wrote: samne Robibar tahole 2ta update diben dada, Hehehehehe raji? লেখা হলেই দেবো। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
28-04-2023, 11:39 PM
Koi dada update koi?
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
29-04-2023, 07:51 AM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
30-04-2023, 11:28 PM
দ্বিতীয় পার্ট ৪র্থ পর্ব বান্ধবীর কথা শুনে প্রথম যুবতীর ঠোঁটে হাল্কা হাসির রেশ দেখা যায় কিন্তু সে কোনো কথা বলে না দ্বিতীয় যুবতী বলে চলে, "ঠিক কথাই বলছি তুই জানিস আমাদের কাজের জায়গায় কত ছেলে তোকে ফলো করে? এমনকি কদিন আগে যে একজন সিনিয়র উকিলের ছেলে এলেন মনে আছে ওনার সাথে দেখা করতে? তাকেও দেখি তোর দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে কিন্তু দেখ তুই এখানে কাউকে পাত্তা দিস না, কেন রে কেউ সেট করা আছে নাকি?" প্রথম যুবতীর মুখে লেগে থাকা অল্প হাসিটুকু মিলিয়ে গেল পরিবর্তে একটা চাপা কষ্টের রেখা ফুটে উঠলো সেটা দ্বিতীয় যুবতীর দৃষ্টি এড়ালো না সে বোধহয় বুঝতে পারলো তার বান্ধবীর জীবনে কিছু একটা আছে যেটা সে কাউকে বলেনি, তাই সে আবার জিজ্ঞেস করে, "কি রে কেউ আছে নাকি?" "না" প্রথম যুবতীর ছোট্ট উত্তর। "সত্যি বলছিস? তাহলে কাউকে পাত্তা দিতে চাস না, ব্যাপার কি?" "ওদের আমার পছন্দ হয় না তাই" "কেমন ছেলে পছন্দ তোর, শুনি?" "ওসব থাক" "ধুর.. বল না" "আমার যেরকম ছেলে পছন্দ সেরকম আর কেউ হবে না" "আর?... মানে কেউ ছিল, কে শুনি একটু?" "ছিল একজন" "ছিল? কেন ব্রেকআপ?" "না" "তাহলে?" "কখনো প্যাচআপই হয়নি তো ব্রেকআপ কিভাবে হবে?" "মানে?" "কখনো তাকে বলতে পারিনি, বলার সুযোগ বা সময় কোনোটাই পাইনি" "কেন সে কি অন্য কাউকে?.." "জানিনা আমি তার থেকে অনেকটাই দূরে" "তাহলে একবার খোঁজ নে, হয়তো সেও এখনো তোর মতো কাউকে খুঁজছে" "তুই আমার লাইফ সম্পর্কে কিছু জানিস না তাই একথা বলছিস কিন্তু সে জানে আর তাই সে কখনোই আমাকে মেনে নেবে না" "কেন? কি হয়েছে?" "বাদ দে ওসব কথা, আমি শুধু এটুকুই চাই সে যেখানেই থাকুক যার সঙ্গেই থাকুক ভালো থাকুক সুখে থাকুক"। "কেমন ছিল সে?" "সবার থেকে আলাদা" "সেটা তো সবাই বলে, এ আর নতুন কি?" "কিন্তু আমার কাছে ও সবার থেকে আলাদা" "বাব্বা ও? কতদিনের রিলেশন ছিল তোদের?" "বললাম না কোনোদিন ওকে বলারই সুযোগ হয়নি, সবমিলিয়ে হয়তো দুবার সামনাসামনি কথা হয়েছে" "কি বলছিস মাত্র দুবার? তাতেই এই?" "হ্যাঁ, ওর মধ্যে এমন একটা কিছু ছিল যেটা প্রথমবারেই আমার মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নেয়, এখন আমি ওর সাথে থাকি কি না থাকি আমার মনে ও ছাড়া আর কারো জায়গা নেই কোনোদিন হবেও না।" "আমি প্রার্থনা করি একদিন সে ঠিক তোর কাছে আসবে, তুই খুব ভালো তোর সাথে খারাপ কিছু হতে পারে না" "আমার সাথে যা খারাপ হবার সেটা হয়ে গেছে তাই আর ওসব নিয়ে ভাবি না কারণ ভেবে কোনো লাভ নেই কিছুই বদলাবে না... এবার চল রিসর্টে ফেরা যাক ক্ষিদে পেয়েছে"। রিসর্টে ফিরে প্রত্যেকে স্নান সেরে ব্রেকফাস্টের জায়গায় এলো ইচ্ছা করলে নিজেদের রুমেও ডেকে নেওয়া যায় কিন্তু যুবতীরা সবার সাথেই খেতে গেল। ব্রেকফাস্টের জায়গায় আরও অনেক ট্যুরিস্টর আছে প্রত্যেকে নিজেদের মতো গল্প করতে করতে খাচ্ছে। খাওয়া শেষে বাকী যুবতীরা নিজেদের রুমে রেস্ট নিতে গেলেও একজন গেলো না তার মন এখনো খচখচ করছে কেসটা নিয়ে সে বাকিদের থেকে একটু আলাদা হয়ে রিসর্টের বাগানে গেল, সেখানে ট্যুরিস্টদের নিরিবিলিতে বসার জন্য অনেক জায়গা করা আছে, তারই একটাতে গিয়ে বসলো সে। তার মাথায় এখন শুধু কেস নয় একটু আগে বান্ধবীর বলা কথাগুলোও ঘুরপাক খাচ্ছে সাথে চোখে একজনের মুখ ভেসে ওঠে, যুবতী মোবাইল খুলে একটা ছবি ওপেন করে দেখতে থাকে একজন তরণের ছবি সেইজন যাকে সে প্রথম দেখাতেই মনপ্রাণ সব সঁপেছে কিন্তু কখনো বলা হয়নি হয়তো কোনোদিন বলাও হবে না, একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো যুবতীর ভিতর থেকে নিজের মনেই বললো "না জানি এখন কেমন আছে সে, কার সাথে আছে? তবে যেখানেই থেকো যার সাথেই থাকো চাইবো সারাজীবন সুখে থাকো... আমার জীবনে আমি সবকিছু হারিয়েছি তোমাকেও আমি হয়তো পাবো না, কিন্তু তুমি যারই হও সে যেন তোমাকে খুশি রাখে, সুখী রাখে"। এভাবে কতক্ষণ কেটে গেছে তা খেয়াল নেই যুবতীর সে বসার জায়গাটা থেকে উঠে আশেপাশে পায়চারী করতে থাকে এইভাবে আনমনে হাঁটতে হাঁটতে রিসর্টের বাগানের ভিতর দিয়ে অনেকটা চলে যায়, এদিকটায় একদম খালি কেউ নেই, হটাৎই তার চোখে পরে একটা তাঁবু, একটু অবাক হয় যুবতী কারণ রিসর্টের সামনের দিকেই সব তাঁবুগুলো আছে যেখানে ট্যুরিস্টরা তাদের ইচ্ছামতো বুকিং করে থাকতে পারে এমনকি নাইটস্টে পর্যন্ত করতে পারে, কিন্তু এই জায়গাটা রিসর্ট থেকে একটু দূরে এখানে তাঁবু খাটানো আছে দেখে স্বভাবতই তার মনে কৌতুহল জেগে ওঠে, আরও একটু ভালো করে দেখার জন্য সে তাঁবুটার কাছে এগিয়ে যায়। কিন্তু কাউকে দেখতে পায় না আশেপাশে দেখতে গিয়েই সে থমকে দাঁড়িয়ে পরে সেখানে একজন যুবক দাঁড়িয়ে সামনে দাঁড় করানো সাদা ক্যানভাসে ছবি আঁকছে। ছবি আঁকিয়ে যুবকটির গায়ে একটা কালো কাপড়ের পাতলা ট্রাউজারস্ আর গায়ে একটা কালো স্যাণ্ডো গেঞ্জি যেটাতে লাল পাইপিং করা, তবে যুবতীর দৃষ্টি তার কাপড়ে নয় তার মুখের দিকে, একটা সাইডই দেখতে পাচ্ছে সে, এইসময় যুবকটি পাশে রাখা একটা ছোট্ট চেয়ার থেকে রঙের টিউব নেওয়ার জন্য ফিরতেই পুরো মুখটা দেখতে পেলো যুবতী, যদিও যুবকটি যুবতীকে দেখেওনি সে রং নিয়ে আবার ছবি আঁকায় মনোনিবেশ করেছে। আঁকিয়ে যুবকটির মাথায় লম্বা লম্বা চুল কাঁধ পর্যন্ত নেমে এসেছে মুখ লম্বা দাঁড়ি-গোঁফে পুরো ঢেকে গেছে, সে মুখে একটা জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে একমনে ছবি এঁকে চলেছে একবার সামনে দেখছে আবার ছবিতে তুলি বোলাচ্ছে। মুখ ভর্তি দাঁড়ি-গোঁফের জন্য ছবি আঁকিয়েটিকে চেনা একপ্রকার দুঃসাধ্য হলেও যুবতী ঠিক চিনতে পেরেছে কিন্তু সে বিশ্বাস করতে পারছে না এও কি সম্ভব? যুবতী বুঝতে পারছে তার বুকে যেন কেউ দামামা বাজাতে শুরু করেছে যাকে সে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসেছে কিন্তু কখনো বলতে পারেনি পরিস্থিতির চাপে যাকে ছেড়ে আসতে হয়েছে, নিজের মনকে একপ্রকার জোর করে বুঝিয়েছে যে তার সাথে আর কখনো দেখা হবে না সে এখানে? কেন? একবার নিজেই নিজেকে চিমটি কাটে যুবতী আর কেটেই বোঝে সে সম্পূর্ণ জেগে আছে এবং সজ্ঞানে আছে, তার বুকের ভিতরে বাজতে থাকা দামামা আরও জোরে বাজতে শুরু করেছে এবার সে আরেকটু এগিয়ে যায় আর তখনই আরেকজনকে দেখতে পায় সে, ক্যানভাসের পিছনে কিছুটা দূরে চার পা ছড়িয়ে বসে জিভ বের করে আছে সে একটা বিরাট কালো কুকুর, এবার আর কোনো সন্দেহ থাকে না, প্রথম যেদিন ওকে দেখেছিল যুবতী তখনও এই কুকুরটা তার সঙ্গে ছিল ওর সর্বক্ষণের সঙ্গী, বিশ্বস্ত বডিগার্ড সব। যুবতীর মনে হলো সে আর নিজেকে আটকাতে পারছে না তার পাদুটো যেন আপনা থেকেই তাকে নিয়ে যাচ্ছে তার কাছে, ছবি যুবকটির মুখের সিগারেটটা শেষ হয়ে গেছে সে ওটা একটা ছাইদানিতে ফেলে চেয়ারের উপরছ রাখা প্যাকেট থেকে আরেকটা বার করে মুখে দেয় তারপর চেয়ারের উপরেই রাখা লাইটার দিয়ে ধরিয়ে একটা লম্বা টান দিয়ে কিছুটা ধোঁয়া ছাড়ে যুবতী আর থাকতে পারে না সটান তার কাছে গিয়ে বলে, "স্মোকিং ইজ ইঞ্জুরিয়াস টু হেলথ, শোনেননি?" ক্যানভাসে বোলাতে থাকা তুলি ধরা হাত থেমে গেল যুবকের এবং চকিতে যুবতীর দিকে তাকালো যুবকটি এবং অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলো, যুবতী এবার যেটা করলো সেটার জন্য বোধহয় প্রস্তুত ছিল না সে, যুবতী দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে সিগারেটটা তার ঠোঁট থেকে নিয়ে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে মাড়িয়ে ফেলে, বলে "আপনি কেন বুঝতে পারছেন না এসব খাওয়া ভালো না.. কতবার বলবো আপনাকে?"। যুবতীর কথা শুনেও কিছু বলতে পারে না যুবকটি সে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে যেন এমন কিছু দেখছে যেটা সে বিশ্বাস করতে চাইছে কিন্তু বিশ্বাস করতে পারছে না বা বিশ্বাস হচ্ছে না,অবশেষে একসময় সে একটা নিঃশ্বাস ছাড়ে যেটা অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস। "আপনি হয়তো আমাকে চিনতে পারছেন না আমি." যুবতী কথা বলে কিন্ত যুবতীকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে যুবকটি বলে, "পিয়ালী সরকার, ডটার অফ লেট প্রতাপ সরকার", তারপর একটু থেমে বলে "সরি ফর ইওর ফাদার"। কথাটা বলে যুবকটি আবার একটা সিগারেট বার করে ঠোঁটে ধরে জ্বালাতে যায় কিন্তু একটা টান দেওয়ার আগেই পিয়ালী আবার সিগারেটটা যুবকের ঠোঁট থেকে নিয়ে মাটিতে ফেলে এটাও পা দিয়ে মাড়িয়ে ফেলে, বলে "বলেছিলাম না যে আপনাকে যেখানেই সিগারেট খেতে দেখবো সেখানেই আবার একই কাজ করবো"। কিছুক্ষণ দুজনেই চুপচাপ থাকে তারপর পিয়ালীই প্রথম কথা বলে "নর্থবেঙ্গলের কিং মিস্টার আদিত্য সিংহ রায় হটাৎ এখানে এই অবস্থায় কেন জানতে খুব কৌতূহল হচ্ছে" "এই অবস্থায় মানে?" "এই যে সন্ন্যাসীর মতো বেশ" "আমার অবস্থা সন্ন্যাসীর থেকেও নীচে তাই" "নর্থবেঙ্গল ছেড়ে এখানে?" "এই প্রশ্ন তো আমিও করতে পারি আপনাকে?" "আগে প্রশ্ন আমি করেছি মিস্টার আদিত্য তাই আগে আমি" "আপনাকে বলেছিলাম মনে আছে যে আমি মৃত একজন ওয়াকিং ডেড?" "হ্যাঁ, মনে আছে" "ওয়াকিং ডেডরা কোনো জায়গায় ততদিন পর্যন্তই থাকতে পারে যতদিন না তাদের আসল পরিচয় প্রকাশ পাচ্ছে, পরিচয় প্রকাশ পেলেই তাদের সে জায়গা ছাড়তে হয় যেমন আমাকে নর্থবেঙ্গল ছাড়তে হয়েছে" "মানে? আপনার কথা কিছুই বুঝতে পারছি না" "আমার কথা ছাড়ুন আপনার কথা বলুন আপনি এখানে কিভাবে এলেন?" "রিসর্টে ঘুরতে এসেছি বান্ধবীদের সাথে" "রিসর্টে নয় আপনি নর্থবেঙ্গল ছেড়ে কিভাবে এলেন? এখন যেখানে থাকেন সেখানের কথা বলছি, আর আমিতো ভেবেছিলাম যে আপনি.." "মারা গেছি?" "হুমম" "সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য জানিনা তবে ওই ভাগ্যের জন্যই বেঁচে গেছি" "কিভাবে? আর এখন কোথায় থাকেন?" "কেন বলবো বলুনতো? নিজের ব্যাপারে তো কিছুই বলছেন না" "আমার ব্যাপারে জেনে কারো কোনো লাভ নেই তাই" "আমার ব্যাপারে জেনেই আপনার কি লাভ?" "এমনি কৌতূহল" "আমারও কৌতূহল" "এইজন্যই বলে উকিলের সঙ্গে কথায় পারা যাবে না" "একদমই তাই.... ঠিক আছে আমিও বলবো তবে আপনাকেও বলতে হবে" "আমারটা শুনেই ছাড়বেন তাহলে?" "আমারটা জানতে চাইলে বলতে হবে" "বেশ আসুন" "কোথায়?" "আমার টেন্টে" সামনের তাঁবুটা দেখিয়ে উত্তর দেয় আদিত্য, "আপনি তো খুব সুন্দর ছবি আঁকেন" পিয়ালীর কথা শুনে দাঁড়িয়ে পরে আদিত্য সে তাঁবুর দিকে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিল ফিরে কিছুটা পিছিয়ে এসে হাল্কা স্বরে বলে "থ্যাংকস, শিখেছিলাম কোনো এক অতীত জীবনে, এখানে এসে আবার প্র্যাকটিস করছি টাইম কাটানোর জন্য আসুন"। "আপনার কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না" পিয়ালী মন্তব্য করে, দুজনে তাঁবুর ভিতরে যায় তাঁবুর ভিতরে একটা চৌকি রাখা আছে তার উপরে একটা পরিষ্কার বালিশ, চৌকির একপাশে একটা স্ট্যান্ড ফ্যান অপর পাশে একটা ছোট্ট টেবিল যাতে একটা ছোট্ট ইলেকট্রিক কেট্ল আর একটা ট্রে তে চা ও কফি তৈরির উপাদান মজুত আছে আর একটা জলের জগ, টেবিলের নীচে একটা মাঝারি সাইজের মাটির কুঁজো যেটা একটা গেলাস দিয়ে ঢাকা আছে, এছাড়া এক কোণে একটা কাঠের স্ট্যাণ্ডে গুটিকয়েক জামা ও প্যান্ট ঝুলছে, পাশে দুটো বেতের চেয়ার, একটা সুইচবোর্ডও লাগানো আছে। একদিকে আরেকটা দরজার মতো তবে বাথরুমের, পুরো সেটআপটাই যেন একটা ছোটোখাটো রুম। "চা না কফি?" পিয়ালী চারিদিকে দেখছিল হটাৎ আদিত্যর প্রশ্নে চমক ভাঙলো "হুঁ?" "চা না কফি? "আপনি যেটা দেবেন" "বসুন" আদিত্য বেতের চেয়ারদুটো দেখিয়ে কথাটা বললো তারপর ফ্যানটা পিয়ালীর দিকে ঘুরিয়ে চালিয়ে দিয়ে ইলেকট্রিক কেট্লে জল গরম করে কফি তৈরি করতে লাগলো। "সুগার কিউব?" "হুঁ?" পিয়ালী একদৃষ্টিতে আদিত্যকে দেখছিল হটাৎ আদিত্যর প্রশ্নটায় হকচকিয়ে গেল। "কটা সুগার কিউব?" আদিত্য আবার প্রশ্ন করে। "দুটো" আদিত্য দুটো সুগার কিউব পিয়ালীর কফিতে দিয়ে চামচ দিয়ে ঘেঁটে সেটা পিয়ালীর দিকে বাড়িয়ে দিল পিয়ালী সেটা নিলে আদিত্য নিজের জন্য এক কাপ তৈরী করে অপর চেয়ারে বসলো বললো "এবার বলুন"। পিয়ালী কফিতে চুমুক দিতে দিতে বলতে শুরু করে, "আমার বাবার নামে পুলিশ ওয়ারেন্ট বার করার পরেই উনি পালিয়ে যান এবং পুলিশ ওনাকে না পেয়ে আমাকে, মাকে আর দাদাকে একপ্রকার ঘরেই নজরবন্দি করে রাখলো এটা তো আপনি জানেন?" "হ্যাঁ" "আমাদের কোথাও বেরোনোর উপায় ছিল না এইভাবেই দিন কাটছিল একদিন এক কনস্টেবল একটা চিরকুট এনে দেয় বাবার চিরকুট ওতে লেখা 'আমাদের খুব বিপদ পালাতে হবে'। কিন্তু পালাবো কেন কোথায় সেটা জানিনা আর বুঝলামও না কিন্তু ওই কনস্টেবলই পালাতে সাহায্য করলেন, উনিই গাড়ি ও ড্রাইভার ঠিক করলেন। মাঝে রাস্তায় এক জায়গায় কনস্টেবলটির ঠিক করে দেওয়া ড্রাইভার গাড়িটা থামাতে আমি একটু জল কিনতে গেছি, মায়ের শরীরটা অসুস্থ থাকায় ও মায়ের কাছে থাকে হটাৎ পিছনে একটা আর্তনাদ শুনে দেখি কয়েকজন লোক ওদের জোর করে আমাদের গাড়িতে ঢুকিয়ে দিল, আমি চিৎকার করতে গেলে একটা শক্ত হাত আমার মুখ চেপে একদিকে টেনে নিয়ে যায় আর ওই লোকগুলো মাকে আর দাদাকে ধরে নিয়ে চলে যায়। আমি হাতটা ছাড়িয়ে দেখি বাবা" এতটা বলে পিয়ালী একটু থামলো আদিত্য কোনো কথা না বলে অপেক্ষা করতে থাকে একটু পর পিয়ালী নিজেই আবার শুরু করলো, "আমি অবাক হয়ে গেলাম বাবাকে ওখানে দেখে কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই উনি আমাকে টানতে টানতে অন্য একটা গাড়িতে তুলে নিলেন, তিনি নিয়ে গেলেন স্যার এর বাড়ি" "স্যার?" "আমি যার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ওখানে প্র্যাকটিস করতাম" "আচ্ছা, কিন্তু ওখানে কেন?" "সেটাই আমি করেছিলাম তখন বাবা বললেন যে বিপদটা মূলত আমার তাই আমাকে সরিয়ে এনেছেন আর যারা মা আর দাদাকে নিয়ে গেছে তারাও বাবার লোক ওরা ওদের একটা সেফ জায়গায় নিয়ে যাবে আর আমাকে নর্থবেঙ্গল ছেড়ে চলে যেতে হবে কিন্তু কিছুক্ষণ পর খবর আসে যে একটা লরি মা আর দাদার গাড়িটাকে ধাক্কা মেরে খাদে ফেলে দিয়েছে, এটা শুনে বাবা আর স্যার যেন আরও ব্যাস্ত হয়ে উঠলেন কান্নার সময়ও পেলাম না তাড়াতাড়ি আমাকে নিয়ে এনজেপি তে আসার জন্য রওনা দেয় কিন্তু সেখানেও দুর্ভাগ্য" আবার একটু থামে পিয়ালী এবারেও আদিত্য কথা বলে না অপেক্ষা করে পিয়ালী আবার শুরু করে, "এনজেপি তে পৌঁছাতে না পৌঁছাতে কয়েকজন আমাদের উপরে অ্যাটাক করে আমাদের সাথেও বাবার কয়েকজন অনুচর ছিল কিন্তু বিপক্ষে যারা ছিল তারা সংখ্যায় বেশী আমাদের লোকগুলো একে একে মারা পরতে থাকে তবুও বাবা আমাকে আর স্যারকে কোনোমতে ট্রেনের দিকে যাওয়ার রাস্তা করে দিয়ে নিজে লড়তে থাকে তবে বেশিক্ষণ না শেষবার তাকিয়ে দেখি উনি রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পরছেন আর আমাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে নিজে উঠতে গিয়ে পিঠে গুলি খেয়ে পরে যান, আশ্চর্যের বিষয় ওরা আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালালো না ওরা আমাকে ধরার জন্য আসতে থাকে কিন্তু স্যার ওদের বাধা দিতে থাকেন কিন্তু ওরা..." পিয়ালী আবার থামে সে আর বলতে পারে না তার দুচোখ দিয়ে জল পরছে, আদিত্যকে আর বলতে হয় না সে বুঝতে পারে বাকি কথাটা, সেটা সে নিজেই শেষ করে, "তারপর ওরা ওনাকে পুরোপুরি শেষ করে কিন্তু আপনাকে ধরতে পারে না তাইতো?" "হ্যাঁ, ট্রেনটা ছেড়ে দেয় কিন্তু স্যার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ওদের আটকে রাখেন না অন্য কিছু হয় জানিনা" "আয়্যাম সরি" "ইটস্ ওকে এবার আপনার টা বলুন" "আগে কয়েকটা কথা যেটা আপনার জানা দরকার এরমধ্যে কয়েকটা আমার অনুমান তবে মনে হয় না যে ভুল করছি" "কি?" "সেদিন আপনার স্যার নয় আপনার বাবাই বোধহয় ওদের আটকায়" "কি...কিন্তু?" "আপনার বাবা স্টেশনের বাইরে কেন সেদিন মারাই যাননি" "এ কি বলছেন আপনি? কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? আমি তো নিজের চোখে দেখলাম." পিয়ালী যথেষ্ট উত্তেজিত। "আপনি কি দেখেছেন আমি জানিনা, পরেরদিন এনজেপি তে একটা ঝামেলার খবর কানে এসেছিল কিন্তু তখন আমার মাথায় আপনার কথা ( আদিত্যর কথা শুনে পিয়ালী ক্ষণিকের জন্য চমকে উঠেছিল).. মানে অন্য একটা কথা ঘুরছিল তাই অতটা মাথা ঘামাইনি"। আদিত্য একটু থেমে আবার শুরু করে "খুব সম্ভবত আপনার বাবাই ওদের আটকে আপনাকে পালাতে সাহায্য করে তারপর নিজেও ওদের হাত থেকে পালাতে সফল হয়"। "আপনি এত শিওর কিভাবে হচ্ছেন?" "বললাম যে ওটা আমার অনুমান তবে আবার বাবা যে স্টেশনে মারা যাননি এটা আমি জানি" "কিভাবে?" আদিত্য একটু চুপ করে বোধহয় কথাটা কিভাবে বলবে সেটা নিজের মনে একবার গুছিয়ে নেয় তারপর বলে, "আপনার বাবা যখন মারা যান তখন আমি ওখানে ছিলাম" চমকে ওঠে পিয়ালী, "মানে? আমার বাবা.. আপনি? আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না, আমার বাবাকে কি তবে আপনি?.." "না.. আপনার বাবাকে আমি মারিনি" "তবে কি পুলিশ এনকাউন্টার করেছে?" "না" "তবে?" "আপনার বাবা তাদেরই হাতে খুন হয়েছিলেন যাদের হয়ে তিনি কাজ করতেন" "হোয়াট?" পিয়ালীর মুখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় যে এটা তার কাছে মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়, "এটা আপনি কি বলছেন? আমার বাবা? " "ঠিক বলছি, আপনার বাবাকে নর্থবেঙ্গলের অপরাধ জগতের একজন রাজার মতো দেখলেও আসলে তিনি একজন ছোটো বোড়ে ছাড়া আর কিছুই ছিলেন না, আর তারাই আপনার বাবাকে মেরেছে, আমার এই দুটো হাতের উপরেই আপনার বাবা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন" আদিত্য নিজের হাতদুটো দেখায়। "আপনার হাতে?" "হ্যাঁ, বিশ্বাস করুন আমার কিচ্ছু করার ছিল না আমি যদি আর মিনিটখানেক আগেও পৌঁছাতে পারতাম তাহলে ওনাকে মরতে দিতাম না কিন্তু আমি যখন ওনার কাছে পৌঁছালাম তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে, আয়্যাম সরি" পিয়ালী চোখের জল মোছে আদিত্য উঠে একটা ল্যামিনেশন করা ডকুমেন্ট এনে পিয়ালীর দিকে এগিয়ে দেয়। "এটা কি?" পিয়ালী জিজ্ঞেস করে। "আপনার বাবার ডেথ সার্টিফিকেট আমার কাছে ছিল কারণ আমি তো জানতাম যে আপনি আর.... এবার এটা আপনার" "কিন্তু এটা.." "শুধু নর্থবেঙ্গলে নয় সবজায়গাতেই এমন অনেক ছোটোখাটো হসপিটাল আছে যেখানে পুলিশের দৃষ্টি বেশি নেই অথচ ওখানে প্রায় সবরকম কাজই হয়, সেরকমই একটা জায়গা থেকে বার করা" "থ্যাংকস...আচ্ছা যারা আমার বাবাকে মেরেছে তারা কোথায়?" "তারা পুলিশের এনকাউন্টারে মারা গেছে" "আপনি শিওর?" এবারে পিয়ালীর গলায় ছক অদ্ভুত বদল আসে যেটা একজন প্রতিশোধ স্পৃহা থেকেই জন্মায়, আদিত্য বুঝতে পারে সেটা সে বলে, "আজ আপনাকে বলা প্রতিটা কথা সত্যি" "একটা কথা বলুন তো আমার বাবা যদি ওদের হয়ে কাজ করতো তাহলে ওরা বাবাকে মারলো কেন?" "অনুমান করতে পারি তবে কোনো প্রমাণ নেই" "অনুমানটাই বলুন" "ঠিক আছে বলছি, খুব সম্ভবত সেদিন স্টেশনে যারা আপনাদের উপর অ্যাটাক করেছিল তারাও ওদের লোক এবং.. এবং যে লরিটা আপনার মা এবং দাদাকে মারে সেটাও ওদের লোক চালাচ্ছিল এবং ইচ্ছা করেই ওদের ধাক্কা দিয়ে খাদে ফেলে দেওয়া হয়" "কিন্তু কেন? আমার মা আর দাদা ওদের কি ক্ষতি করেছিল?" "খুব সম্ভবত আপনার বাবা করছিল" "কি ক্ষতি?" "তিনি ওদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন হয়তো ওদের হুমকি দিচ্ছিলেন যে ওদের সবকথা যেগুলো আপনার বাবা জানতেন সেগুলো ফাঁস করে দেবেন" "আমার বাবার জন্য আমাদের পুরো পরিবারকে শেষ হয়ে যেতে হলো" পিয়ালীর দুচোখ থেকে আবার জলের ধারা বেরোতে থাকে। আদিত্য সান্ত্বনা দেওয়া স্বরে বলে,"আপনার বাবা কিন্তু আপনার জন্যই ওদের সাথে শত্রুতা করেছিলেন" "মানে?" "আপনি জানেন কি না জানিনা কিন্তু আপনার বাবা মেয়ে পাচারের সাথে যুক্ত ছিলেন কিন্তু তিনি যাদের হয়ে কাজ করতেন তাদের কাছে নিজেদের লোক বলে কিছু হয় না এবার কোনোভাবে হয়তো তাদের চোখ.... তাদের চোখ আপনার উপরে পরেছিল (পিয়ালী আবার চমকে উঠলো আদিত্যর কথা শুনে), এবার সেটা আপনার বাবা জানতে পারেন হাজার হোক বাবা তো নিজের মেয়েকে কিভাবে?... ফলস্বরূপ ওদের সাথে শত্রুতা এবং...... সেইজন্যেই উনি আপনাকে নিয়ে বেশী চিন্তিত ছিলেন এবং আপনকে নর্থবেঙ্গল থেকে বার করে দিয়েছিলেন"। "এতকথা আপনি কিভাবে জানলেন?" "ওদেরই একজন লোক বলেছে" "ওদের সাথে আপনারও যোগাযোগ ছিল?" "না, যারা আপনাদের গাড়িটা খাদে ফেলেছিল তাদের যখন মারছিলাম তখন ওদের একজন বলেছিল" "আপনি ওদের মেরেছেন?" "শাস্তি দিয়েছি, মৃত্যুদণ্ড" "কিন্তু আমাদের সাথে তো আইমিন আমার বাবার সাথে তো আপনার শত্রুতা ছিল তাহলে?" আদিত্য চকিতে একবার পিয়ালীর মুখের দিকে তাকালো তারপর দৃষ্টি নামিয়ে বললো "আপনি বোধহয় ভুলে যাচ্ছেন যে আপনার মা একবার আমাকে নিজের হাতের তৈরী লুচি-তরকারি খাইয়েছিলেন ওনার খুনিকে কিভাবে ছেড়ে দেবো?" পিয়ালীর মনে হলো আদিত্য অন্য একটা কিছু বলতে গিয়ে কথাটা ঘুরিয়ে নিল অবশ্য এটা তার মনের ভুলও হতে পারে, সে যবু জিজ্ঞেস করে, "শুধু আমার মায়ের লুচি-তরকারির ঋণ শোধের জন্য ওদের মারলেন?" প্রশ্নটা শুনে আদিত্য কোনো উত্তর দিল না চুপ করে পিয়ালীর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো বেশ কিছুক্ষণ দুজনে পরস্পরের চোখের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো যেন নীরবতাই অনেক কথা বলে যাচ্ছে যেগুলো তাদের মূখ হয়তো কোনোদিন বলতে পারবে না, একটু পরে আদিত্যই মুখ খোলে, "তারপর কি হলো? ওখান থেকে এখানে এলেন তারপর?" "স্যারের এক পরিচিত ছিল এখানে তার খোঁজেই একটা মেসে উঠলাম টাকার অভাব ছিল না তাই অসুবিধা হয়নি তারপর একটা কাজও জুটিয়ে ফেললাম" "কাজ? কি কাজ?" "যেটা করতাম? একজন বড়ো উকিলের অ্যাসিস্ট্যান্ট" "নিজে কবে থেকে ইন্ডিপেন্ডেন্টলি শুরু করবেন?" "শুরু করেছি, দু-একটা ছোটোখাটো কেস লড়েছি জিতেওছি.. কিন্তু" "কনগ্ৰাচুলেসনস্। কিন্তু কি? বড়ো কেস পাচ্ছেন না? পেশেন্স রাখুন ঠিক পাবেন" "পেয়েছিলাম কিন্তু সে কেস কোর্টে ওঠার আগেই একটা অ্যাক্সিডেন্টে মেইন ভিক্টিম মারা যায়" "ব্যাড লাক। কিন্তু লেগে থাকুন ঠিক সাকসেস পাবেন কোথায় প্র্যাকটিস করছেন?" "হাইকোর্টে" "হাইকোর্টে?" আদিত্য বিস্ময় প্রকাশ করে, "হ্যাঁ, অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করতে করতে বেশ কিছু পরিচিতি হয়ে গেছে তাই অসুবিধা হয়নি" "আমার তরফ থেকে গুডলাক" "থ্যাংক ইউ এবার আপনারটা বলুন" "আমারটা জেনেও কোনো লাভ নেই তাই ছাড়ুন" "এটা কিন্তু চিটিং হচ্ছে, কথা ছিল দুজনেই সব বলবো আমি বলেছি এবার আপনার পালা"। আদিত্য কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই তাঁবুর বাইরে কিছু পদশব্দ সাথে বাদশার ডাক আর কয়েকটা মেয়ের ভয়ার্ত স্বর শুনে দুজনেই চমকে উঠলো,পিয়ালী অবশ্য বাইরের মেয়েদের আওয়াজ চিনতে পারলো বললো, "এই রে আমার ফ্রেণ্ডস রা বোধহয় খুঁজতে খুঁজতে চলে এসেছে" "হ্যা, অনেকক্ষণ হলো প্রায় সন্ধ্যা হতে চললো" "আপনারটা কিন্তু শোনা হলো না, আমরা কাল সকালেই চলে যাবো দিস ইস নট ফেয়ার" "বেশ তো আমি তো এখানেই থাকি এখন, আবার যখন আসবেন তখন নাহয় বলবো" "প্রমিস?" "প্রমিস" দুজনে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় কিন্তু বাইরে আসার আগে পিয়ালী যেকাজটা করলো সেটার জন্য আদিত্য ঠিক তৈরী ছিল না, আদিত্য একটু এগিয়ে গিয়েছিল হঠাৎ পিয়ালীর "আদিত্য" ডাকটা শুনে পিছনে ফিরলো আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পিয়ালী দুহাতে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা গুঁজে দিল। "থ্যাংকস, আমার বাবা আমার মা আর দাদার জন্য যেটা করেছো তার জন্য। থ্যাংকস আ লট"। ব্যাপারটা এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেল যে আদিত্য ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল সে কি করবে বা কি বলবে বুঝতে না পেরে দুহাত স্যারেণ্ডার করার ভঙ্গিতে উপরদিকে তুলে দাঁড়িয়ে রইলো। আবার বাদশার ডাক শুনে পিয়ালীর চমক ভাঙলো সে তৎক্ষণাৎ আদিত্যকে নিজের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করে আরক্ত মুখে দাঁড়িয়ে রইলো, আদিত্য একটু চুপ থেকে বললো, "ইটস্ ওকে থ্যাংকস বলার কিছু নেই আসুন"। দুজনে বাইরে গিয়ে দেখে সেখানে তিন-চারটি মেয়ে ভয়ে গুটিসুটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে তারা না পারছে ভিতরে আসতে আর না পারছে দৌড়ে পালিয়ে যেতে আর তাঁবুর গেটের বাইরে বাদশা প্রহরা দিচ্ছে। আদিত্য মেয়েগুলোর অবস্থা দেখে ওদের ভয় কাটানোর জন্য বললো, "রিল্যাক্স, ভয় পাবেন না ও কিছু করবে না কিন্তু আপনারা?" মেয়েগুলোর হয়ে উত্তরটা আরেকটা অল্পবয়সী ছেলে দিল যে এই রিসর্টে কাজ করে, "দাদা ওনারা ওনার এক ফ্রেণ্ডকে খুঁজে পাচ্ছেন না, উনি ফোনও ঘরে ফেলে গেছেন" এবারে পিয়ালী আদিত্যর পিছন থেকে বেরিয়ে আসে "আমি এখানেই ছিলাম" তারপর আদিত্যর দিকে ফিরে বলে "আমি কিন্তু আপনার কথা শুনতে আবার আসবো আর আপনিও কিন্তু কথা দিয়েছেন যে বলবেন" "বেশ তবে এখন আপনি ফিরে যান আর রিসর্টে এইসময় ছোট্ট করে ক্যাম্পফায়ারিং এর ব্যবস্থা করা হয় ওটা মিস করবেন না।" "আপনি আসছেন?" "আমি গেলেও ওখানে হয়তো থাকতে পারবো না কিছু কাজ আছে সেগুলো সারতে হবে" "ওকে গুড বাই" "গুড বাই" পিয়ালী ওর বান্ধবীদের সাথে চলে গেল সে আর পিছনে ফিরে তাকালো না হয়তো নিজেকে সামলাতে পারবে না বলেই বা যেটা একটু আগে করেছে সেটার লজ্জার জন্য কিন্তু যদি তাকাতো তাহলে দেখতে পেতো পিছনে দাঁড়ানো মূর্তিটি একদৃষ্টে অপলক চোখে তার চলে যাওয়া দেখছে। "কোন শালা ফোন করেছিস বে?" বিছানায় পাশ থেকে হাতরে ফোনটা খুঁজে কানে দিয়ে নেশা আর ঘুমজড়ানো গলায় জিজ্ঞেস করে মনোজ,ঘুমের মাঝে কেউ ফোন করে ঘুম ভাঙালে প্রচণ্ড রেগে যায় সে তখন তার আর হিতাহিত, শিষ্টাচার জ্ঞান থাকে না, কাল অনেক রাতে বাড়ি ফিরে সবে বিছানায় শুয়েছে আর সকাল হতে না হতেই ফোন। "বাব্বা এই তো জেগে আছো দেখছি" "কোন শালা বে, ফোন রাখ বাঞ্চোদ" "ভদ্রভাবে কথা বলো মনোজ কারণ দরকারটা তোমারই, আমি প্রীতম আঙ্কেল বলছি" "কি দরকার?" "ওই উকিলটার খোঁজ পাওয়া গেছে" চকিতে নেশা ছুটে গেল মনোজের এমনিতেও কাল খুব একটা রঙিন জল পেটে পরেনি তার তাও যেটুকু নেশা ছিল সেটুকুও কেটে গেল প্রতিশোধের নেশা বোধহয় এমনই যার সামনে অ্যালকোহলের নেশাও টিকতে পারে না। "মেসে ফিরেছে?" সটান সোজা হয়ে বসে প্রশ্নটা করে মনোজ। "হ্যাঁ, কাল রাতে" "রাতে জানাননি কেন?" "রাতে শোনার মতো অবস্থায় ছিলে?" "সে বাদ দিন এখন মেসেই আছে তো? "আপাতত, তবে বোধহয় আজ থেকে আবার কোর্টে যাবে" "আপনার কাছে ছবি আছে?" "আছে, তোমাকে পাঠিয়েছি" টুং করে নোটিফিকেশন আসতেই হোয়াটস্অ্যাপে গিয়ে ছবিটা দেখলো মনোজ আর সঙ্গে সঙ্গে ওর মুখে ক্রুর হাসি খেলে যায়, লালসায় তার চোখ চকচক করে ওঠে "এর নাম কি আঙ্কেল?" "তুমি কি করবে ভেবেছো?" "দেখি, এখনো ঠিক ভাবিনি" "এমন কিছু কোরে বসো না যাতে পরে পস্তাতে হয়" "উপদেশের জন্য থ্যাংকস" "মনে রেখো এই মেয়েটি কিন্তু উকিল আর তুমি অলরেডি একটা কেসে ফেঁসে আছো" "আমার মনে আছে, আপাতত এর মেসের অ্যাড্রেসটা পাঠান" "ঠিক আছে, তবে শুধু মেসের অ্যাড্রেস নয়, ওল্ড পোস্ট অফিস স্ট্রিটের ওখানে একটা ছোট্ট চেম্বার আছে ওর সেটার অ্যাড্রেসও পাঠাচ্ছি" "গুড আর নামটা?" "পিয়ালী... পিয়ালী সরকার"। "ড্যাড, তুমি কিন্তু মনোজকে চেনো ও কিন্তু তোমার উপদেশ মানবে না, সেটাই করবে যেটা ও নিজে ঠিক মনে করবে" ফোনটা রাখতেই সুশান্ত তার বাবা প্রীতমবাবুকে প্রশ্নটা করে এতক্ষণ সে বাবার পাশে বসে মনোজের সাথে প্রীতমবাবুর কথোপকথন শুনছিল। ছেলের কথা শুনে একটু হেসে প্রীতমবাবু উত্তর দেন, "আমি তো সেটাই চাই যে ও উল্টোপাল্টা কিছু করুক" "মানে? তাহলে তুমি ওকে সামলে চলার উপদেশ দিলে কেন?" "উপদেশ কে দিল? আমি তো ওকে একটু খুঁচিয়ে দিলাম"। "তাতে আমাদের কি লাভ হবে?" "উফফফ এই মনোজের সাথে মিশে মিশে তোর মাথাতেও মরচে ধরেছে দেখছি" বিরক্তির সাথে বললেন প্রীতমবাবু, আর সুশান্ত একটু কাঁচুমাচু হয়ে বললো, "আসলে ড্যাড তোমার বুদ্ধির সাথে পাল্লা দেওয়া তো সবার কম্ম নয় তাই.." প্রীতমবাবুর মুখ দেখে মনে হলো ছেলের প্রশস্তিবাক্যে তিনি মনে মনে একটু খুশীই হয়েছেন, একটু মোলায়েম স্বরে বললেন "মনোজ একটা মাথামোটা ও যদি ওই উকিল মেয়েটাকে মেরে দেয় তাতে আমাদের কোনো ক্ষতি নেই কিন্তু ধর মেয়েটা বেঁচে গেল তখন কি ও মনোজকে ছাড়বে? মনে হয় না। যতটুকু খবর পেয়েছি মেয়েটা খুব সাহসী সহজে কাউকে ডরায় না ও মনোজকে ছাড়বে না অন্তত জেলের ঘানি টানিয়ে ছাড়বে"। "আর যদি মনোজ মেয়েটাকে মেরে দেয় আর ওর কিছু না হয় তাহলে?" "সেটা হবে না, মনোজের উপর নজর রাখার জন্য আমার লোক আছে, মনোজের বিরুদ্ধে প্রমাণ আমার হাতে তুলে দেয়" "কিন্তু তাতে কি হবে? ধরে নিলাম তুমি ওকে ফাঁসিয়ে দিলে তারপর?" "তুই এখনো বুঝিসনি, মনোজ জেলে গেলে বা কোনোভাবে মারা গেলে মনোজিত বাবুর মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে সেক্ষেত্রে ওর পুরো বিজনেসটা আমাদের হাতের মুঠোয় চলে আসবে"। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
30-04-2023, 11:28 PM
দ্বিতীয় পার্ট ৫ম পর্ব "আর যদি মনোজ মেয়েটাকে মেরে দেয় আর ওর কিছু না হয় তাহলে?" "সেটা হবে না, মনোজের উপর নজর রাখার জন্য আমার লোক আছে, মনোজের বিরুদ্ধে প্রমাণ আমার হাতে তুলে দেয়" "কিন্তু তাতে কি হবে? ধরে নিলাম তুমি ওকে ফাঁসিয়ে দিলে তারপর?" "তুই এখনো বুঝিসনি, মনোজ জেলে গেলে বা কোনোভাবে মারা গেলে মনোজিত বাবুর মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে সেক্ষেত্রে ওর পুরো বিজনেসটা আমাদের হাতের মুঠোয় চলে আসবে"। "ড্যাড তুমি হয়তো অরুণাভ আর মৌমিতার কথা ভুলে যাচ্ছো" "মোটেই না, মৌমিতাকে নিয়ে আমার ভাবনা নেই ও খুন করতে পারে কিন্তু সেটা রাগে, প্ল্যান করে কিছু করার বুদ্ধি ওর নেই মনে নেই অনিকে মারার প্ল্যানটাও মনোজিত বাবুর বানানো। আমার মেইন চিন্তা অরুণাভকে নিয়ে, এমনিতেও সেদিন ওর সামনে ওর বাবাকে মারার কথা বলায় ও কিছুটা আমাদের এগেনস্টে চলে গেছে, এখন বারবার ওকে ওই ভিডিওর কথা বলে আটকে রাখা যাবে না, ওরও একটা ব্যবস্থা তাড়াতাড়ি করতে হবে" "আর অভিরূপ মামা?" "ধাপে ধাপে এগোতে হয় সুশান্ত, তাড়াহুড়ো করলে পুরো প্ল্যানটা ব্যাকফায়ার করতে পারে, এতবছর অপেক্ষা করেছি এবার আমার পালা একদিকে মনোজিত বাবুর সব বিজনেস নিজের হাতে আনবো আর অপরদিকে 'ব্যানার্জী ক্রিয়েশনস্' এর পুরো মালিকানা হস্তগত করবো" প্রীতমবাবুর দুচোখ লোভে চকচক করতে থাকে সাথে সুশান্তরও চোখ বাবার দেখানো সোনালী ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর। পিয়ালী: আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো? আদিত্য: সারপ্রাইজের কাছে। পিয়ালী: কিন্তু চোখ বন্ধ করে রেখেছো কেন? চোখ খোলো। আদিত্য: উঁহু এখন নয়। পিয়ালী: কিন্তু না দেখে আমি হাঁটবো কিভাবে? আদিত্য: হাঁটতে হবে না আমি কোলে তুলে নিচ্ছি। আদিত্য পিয়ালীকে কোলে তুলে নেয়, সঙ্গে সঙ্গে পিয়ালী ভয়ার্ত গলায় বলে ওঠে "আরে পরে যাবো তো"। আদিত্য: কেন আমার উপর বিশ্বাস নেই? পিয়ালী: নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করি তোমাকে। কিছুক্ষণ চলার পর পিয়ালীকে কোল থেকে নামায় আদিত্য বলে: আমি তোমার চোখের পট্টিটা খুলছি কিন্তু চোখ খুলবে না যতক্ষণ না আমি বলবো। এবার আস্তে আস্তে আদিত্য পিয়ালীর চোখের পট্টিটা খুলে দেয়। পিয়ালী: এবার খুলবো? আদিত্য: খোলো। পিয়ালী আস্তে আস্তে চোখ খুললো আর তারসঙ্গেই তার মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তার চোখের সামনে একটা ছোট্ট একতলা বাড়ি কিন্তু বাড়িটার চারপাশে নানা রঙের ও নানা প্রজাতির ফুলগাছ দিয়ে সাজানো সে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সেদিকে। আদিত্য: এটা আমাদের বাড়ি। পিয়ালী: সত্যি বলছো? আদিত্য: সত্যি বলছি। পিয়ালী: তাহলে চলো বাড়ির ভিতরে যাই আদিত্য: চলো। দুজনে বাড়ির দিকে পা বাড়ালো কিন্তু কোথা থেকে যেন একটা আওয়াজ আসছে, পিয়ালী বুঝতে পারছে না কিন্তু আওয়াজটা খুব কাছ থেকেই আসছে 'ট্রিইংট্রিইং ট্রিইংট্রিইং ট্রিইংট্রিইং ট্রিইংট্রিইং' একনাগাড়ে বাজছে। পিয়ালী: আদিত্য এটা কিসের আওয়াজ? কিন্তু কোথায় আদিত্য? পিয়ালী আশেপাশে কাউকে দেখতে পায় না সে ডাকতে থাকে "আদিত্য.... আদিত্য", ডাকের সাথে যেন আবার আওয়াজটা শুরু হয় আর পিয়ালীর সামনে থেকে সবকিছু কোথায় যেন মিলিয়ে যায় বাড়ি, ফুলগাছ আদিত্য সব কোথায় চলে যায় "আদিত্য" একটা ডাক দিয়ে ঘুম ভেঙে জেগে ওঠে পিয়ালী। বালিশের পাশে তাকিয়ে দেখে তার মোবাইলে অ্যালার্ম বাজছে হাত বাড়িয়ে সেটা বন্ধ করে কপালের ঘাম মোছে। একটা অদ্ভুত অনূভুতি তাকে ঘিরে ধরে একাধারে খুশির আবার অপরদিকে হতাশার, খুশী হচ্ছে সে যা স্বপ্ন দেখেছে সেটার এটুকুই তো সে চায় একটা ছোট্ট বাড়ি যেখানে সে তার ভালোবাসার মানুষ আদিত্যর সাথে থাকতে পারবে আবার হতাশার এই কারণে যে ঘুম ভাঙার সাথে সাথেই সে বুঝতে পারে ওটা শুধুই স্বপ্ন ছিল কোনোদিন সত্যি হবে না সে কোনোদিনও আদিত্যকে পাবে না, আদিত্য কোনোদিনও তার হবে না। বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে একটু চা আর টোস্ট খেল পিয়ালী তারপর একটা ক্যাব বুক করলো সেটা এলে কোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হলো সে বুঝতেও পারলো না যে তার পিছনে আরেকটা গাড়ি তাকে ফলো করে চলেছে। প্রায় একঘন্টা পরে ওল্ড পোস্ট অফিস স্ট্রিটে নিজের ছোট্ট চেম্বারে ঢুকলো পিয়ালী, সেখানে আধঘন্টার মতো কিছু ফাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করে তারপর কোর্ট চত্বরের দিকে গেল। কোর্টে ঢোকার আগে সেখানে তার কিছু কলিগ বা বান্ধবীর সাথে দেখা হলো তাদের সাথেই একটা কেস নিয়ে কথা বলছে এটা যদিও তাদের কেস নয়, অন্য একটা কেস আজ হাইকোর্টে যেটার রায় বেরোনোর কথা সেটা নিয়েই কথা বলছিল। "হ্যাপি বার্থডে...... মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দ্যা ডে" বান্ধবীদের সাথে কথা বলতে বলতে হটাৎ পরিচিত কিন্তু অপ্রত্যাশিত কণ্ঠে চমকে উঠলো পিয়ালী, তাকিয়ে দেখে কালো সুতির পাঞ্জাবি, কালো জিনস্, কালো গগলস্ পরিহিত অবস্থায় হাতে একটা ফুলের বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে.. আদিত্য। পিয়ালী যেন বিশ্বাস করতে পারছে না যে আদিত্য এসেছে, শুধু এসেছে তাই নয় তাকে বার্থডে উইশ করছে যেটা এইমুহূর্তে তার তো জানার কথা নয়ই এমনকি তার কলিগরাও জানে কি না সন্দেহ প্রথমে ভাবলো সে স্বপ্ন দেখছে কিন্তু পরক্ষণেই তার চোখ গেল আদিত্যর পায়ের কাছে একটু পিছনে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে আদিত্যর সদাসঙ্গী শ্রীমান বাদশা, পিয়ালী হাঁ করে তাকিয়ে আছে আদিত্য এগিয়ে এসে পিয়ালীর মুখের সামনে একটু তুড়ি মেরে আবার বললো, "হ্যাপি বার্থডে"। এবারে পিয়ালীর চমক ভাঙলো কিন্তু তার মুখ দেখে মনে হচ্ছে সে এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না যে তার সামনে আদিত্য দাঁড়িয়ে আছে। এবারে আদিত্য একটু অপ্রস্তুত বোধ করতে লাগলো সেও চুপ করে থাকে একটু পরে পিয়ালীই মুখ খোলে, "থ্যাংক ইউ, আপনি এখানে?" "কেন আসতে নেই?" আদিত্য সহাস্যে উত্তর দেয়। "না না তা কেন? কিন্তু আপনি জানলেন কিভাবে যে আজ আমার.." এইসময় পিয়ালীর পাশে থাকা তার বান্ধবীদের উসখুস ভাব দেখে বোঝা যাচ্ছে যে এ বিষয়টা তাদেরও জানা ছিল না। তারাও এবার পিয়ালীকে বার্থডে উইশ করে চলে যায়, ওরা যেতেই আদিত্য আবার একটু হেসে একটা পার্স পিয়ালীর দিকে এগিয়ে দেয় বলে, "এটা আপনি ফেলে এসেছিলেন" "ওহ মাই গড.. থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ, কোথায় হারিয়েছি কিছুতেই মনে পরছিল না আমি ভাবছিলাম আজ আমার ফ্রেণ্ডের থেকে রিসর্টের নাম্বারটা নিয়ে একবার খোঁজ করবো তারপর থানায় একটা ডায়রী করে রাখবো কিন্তু তার আর দরকার হবে না" "এটা কার আইডেন্টিফাই করার জন্য ভিতরটা একটু খুলেছিলাম সেখানে আপনার কার্ডে আপনার অফিসের অ্যাড্রেসটা পাই, একটু চেক করে নিন ভিতরটা" "এমা ছিঃ ছিঃ তার দরকার নেই" "দরকার আছে, একটু দেখে নিন প্লিজ" পিয়ালী যেন অনিচ্ছাসত্ত্বেও একবার পার্সটা খুলে একটু উঁকিঝুঁকি মেরে বন্ধ করে দিল সেটা দেখে আদিত্য বললো, "একটু ভালো করে দেখে নিন" "এর থেকে বেশি দেখার প্রয়োজন নেই আপনার প্রতি বিশ্বাস আছে আমার"। "থ্যাংক ইউ... এই নিন" কথাটা বলে আদিত্য ফুলের বুকেটা এগিয়ে দিল, সেটা নিয়ে পিয়ালীর মুখে একটা খুশীর ভাব ফুটে উঠলো কিন্তু তারপর একটু কপট গাম্ভীর্য ধারণ করে বললো, "শুধু বুকে? আদিত্য বাবু আপনি যে এত কঞ্জুস জানতাম না তো"। আদিত্য একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল বললো, "সরি আমি বুঝতে পারিনি" "শুধু সরি বললে তো হবে না" "বেশ তো তাহলে কি গিফ্ট চান বলুন" "যা চাইবো দেবেন?" "যদি আমার দ্বারা সম্ভব হয় তাহলে অবশ্যই দেবো বলুন" "আপনার প্রমিসটা বাকি আছে সেটা পূরণ করতে হবে" পিয়ালীর কথা শুনে আদিত্য ক্ষণিকের জন্য ভ্রুদুটো কুঁচকে গেল তারপর মনে পরতে আবার ভ্রুদুটো ঠিক হয়ে গেল, একটু হেসে বললো "ওটা শুনতেই হবে?" "হ্যাঁ শুনতেই হবে, আপনি আমারটা শুনেছেন কথা ছিল আপনিও বলবেন" "বেশ, তবে আজ তো আপনার কাজ আছে মনে হচ্ছে" "উঁহু আজ কোনো এক্সকিউজ চলবে না" "কিন্তু." "কোনো কিন্তু নয়, আপনি কিন্তু বলেছেন যে আমাকে আমার পছন্দমতো গিফ্ট দেবেন"। "এটা কোনো গিফ্ট হলো?" "আমার বার্থডে তাই গিফ্টও আমার পছন্দের হবে"। "আচ্ছা ঠিক আছে" "ঠিক আছে নয়, আজ আপনি সারাদিন আমার সাথে থাকবেন একসাথে লাঞ্চ তারপর ডিনার করে ফিরবেন" "ওরে বাব্বা এতো.." "আজ আমার বার্থডে এটুকু দিতে পারবেন না?" "কিন্তু আপনার কাজ?" "কাজ বেশী নেই, একঘন্টার মতো লাগবে" "আচ্ছা ঠিক আছে আপনি কাজটা সেরে আসুন আমি অপেক্ষা করছি" "আপনি পালিয়ে যাবেন না তো?" "না, বলেছি যখন থাকবো তখন থাকবো" "ঠিক আছে আপনার ফোন নাম্বারটা দিন,আমি বেরিয়ে কল করে নেবো" ফোন নাম্বার এক্সচেঞ্জ করে পিয়ালী ভিতরে চলে গেল, আর আদিত্য একটা দোকানে গিয়ে প্রথমে দুটো জলের বোতল কিনলো একটা খুলে বাদশাকে জল খাওয়ালো আর অপরটা থেকে নিজে খেলো তারপর একটা সিগারেট কিনে ধরালো। একঘন্টা লাগলো না ঠিক পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে কাজ শেষ করে বেরিয়ে এল পিয়ালী বাইরে এসে আদিত্যকে দেখতে না পেয়ে ফোন করলো কিন্তু আদিত্যর ধরার প্রয়োজন হলো না সে ততক্ষণে পিয়ালীর পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে। "চলুন" শুনে চমকে ফিরে তাকালো পিয়ালী আর সঙ্গে সঙ্গে আবার তার মুখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো, বললো "কোথায় যাবেন?" "আপনার জন্মদিন আপনি বলুন" "কফি হাউজে যাবেন?" "কফি হাউজে? ওখানের আড্ডাটাতো আজ আর নেই" "মানে?" "গান শোনেননি? কফিহাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই"। "তাহলে কোথায় যাবেন?" "কফিহাউজে যাওয়া যেত কিন্তু ওখানে বোধহয় বাদশাকে নিয়ে ঢুকতে দেবে না আর ওকে একা রেখে আমি কোথাও যাই না" "তাহলে কোথায় যাবেন?" "ময়দানে গেলে আপত্তি আছে? ওখানে বসার জায়গাও আছে" "ঠিক আছে দাঁড়ান ক্যাব বুক করি আমার কিন্তু বেশি হাঁটার অভ্যাস নেই" "তার দরকার নেই, আমার বাইক আছে আসুন" পার্কস্ট্রিট পার করে একটা দোকান থেকে কিছু খাবার কিনলো দুজনে (অবশ্য বাদশার জন্যও নিল) নিয়ে ময়দানের কয়েকটা ক্লাবের পাশ দিয়ে গিয়ে একটা বড়ো গাছের তলায় ফাঁকা জায়গা দেখতে পেয়ে সেখানে বসলো দুজনে, পিয়ালী বললো "এবার বলুন শুনি" "কি শুনতে চান বলুন?" "আপনি নর্থবেঙ্গল ছেড়ে এখানে কেন?" "সেদিন বললাম তো আসল পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে তাই নর্থবেঙ্গল ছাড়তে হয়েছে" "মানে? এভাবে নয় সবটুকু বলুন আমি কিন্তু কিচ্ছু লুকোইনি তাই আপনিও লুকোবেন না" "কিছুই লুকোচ্ছি না, আচ্ছা আপনি নর্থবেঙ্গল ছেড়ে চলে আসার পর ওখানের কারো সাথে যোগাযোগ রাখেননি?" "আপনি কিন্তু কথা ঘোরাচ্ছেন আবার আমার কথা কেন?" "কথা ঘোরাচ্ছি না, বলুন না কারো সাথে যোগাযোগ নেই?" "না, যোগাযোগ রাখার মতো কেউ নেই আর তাছাড়া ওই শহরে আমি মা-বাবা-দাদা এমনকি স্যারকেও হারিয়েছি আর কেউ ছিল না ওখানে যোগাযোগ রাখার জন্য, আপনি ছিলেন কিন্তু আপনিও এখন এখানে তাই আর যোগাযোগ রাখার দরকার বা ইচ্ছা কোনোটাই হয়নি, এবার আপনি বলুন" "যোগাযোগ রাখলে জানতে পারতেন আমি এখানে কেন" "কিরকম?" " জানতে পারতেন যে আমি আদিত্য সিংহ রায় নই,আমি নকল আদিত্য সিংহ রায়" পিয়ালী ঠিক ধরতে পারলো না কথাটা সে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো আদিত্য বুঝলো সেটা বললো, "আসল আদিত্য সিংহ রায় অনেক বছর আগেই খুন হয়েছিলেন, অতীন্দ্র স্যার আমাকে ওনার ছেলে সাজিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন যাতে মা মানে ওনার অসুস্থ স্ত্রীকে ছেলের মৃত্যুশোক না পেতে হয়" পিয়ালীর মুখ গম্ভীর চুপ করে আছে দেখে সে আবার বললো "আপনিও আমাকে ফ্রড ভাবছেন তাই না? এটাই অবশ্য স্বাভাবিক" "আমি আপনাকে বিশ্বাস করি, আমি বিশ্বাস করি আপনি কাউকে ঠকাতে পারেন না কিন্তু হটাৎ আপনার পরিচয় বেরিয়ে এলো কিভাবে? আর আপনি যদি আদিত্য না হন তাহলে আপনার আসল পরিচয় কি?" "আমার আসল পরিচয়টা থাক ওটা সবাই ভুলে গেছে এমনকি আমিও ভুলে যেতে চাই আদিত্য নামটাই এখনো ব্যবহার করি, আর পরিচয় প্রকাশ পেলো কিভাবে? সেটা নীলাদ্রি বাবুর জন্য" "তিনি কে?" "আসল আদিত্যর বন্ধু, তিনি ওখানের থানার ইনচার্জ হয়ে এসেছিলেন সেই ধরে ফেললো আর সেই সবাইকে বললো" "আর অমনি সবাই আপনাকে ভুল বুঝলো?" পিয়ালীর স্বরে উষ্মা। "সেটাই কি স্বাভাবিক নয় কি?" "মানে এতবছরের কথা বেমালুম ভুলে গেল সবাই?" "আমি ওনাদের নিজের ছেলে নয়, এতবছর আদিত্য সেজে ওর অধিকার ভোগ করেছি একজন মাকে, একজন বোনকে ঠকিয়েছি এটা কি অন্যায় নয়?" "অতীন্দ্রবাবুই তো আপনাকে এনেছিলেন বললেন" "তাতে তো এই সত্যিটা বদলায় না যে আমি আদিত্য নয়, এই সত্যিটা কোনোদিন বদলাবে না। আমি ওখানে থাকলে মা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পরবে আমি সেটা চাইনা আর তাছাড়া ওনারা সবাই সব জেনে গেছেন তাই ওখানে আমার প্রয়োজন শেষ তাই আমিও ওই শহর ছেড়ে বেরিয়ে পরলাম"। দুজনেরই খাওয়া হয়ে গিয়েছিল আদিত্য বললো, "এবার তাহলে আমি আসছি"। "কেন? আপনি কিন্তু আজ পুরো দিন আমার সাথে থাকবেন বলেছিলেন" "যাকে সবাই ফ্রড, ঠগ জোচ্চোর ভাবছে তার সাথে এখনো টাইম কাটাবেন?" "সবাই কি ভাবছে না ভাবছে সেটা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই" "থাকা তো দরকার" "না একদমই না। সবার ভাবনার সাথে আমার ভাবনা মিলবে তার তো কোনো কথা নেই আমার ভাবনা আলাদা হতেই পারে" "তাহলে আপনি আমাকে কি ভাবছেন?" "আমি আপনাকে বিশ্বাস করি, আমি বিশ্বাস করি আপনি ফ্রড বা ঠগ জোচ্চোর নন" "আর এই বিশ্বাস করার কারণটা জানতে পারি?" কথাটা শুনে পিয়ালী আদিত্যর দিকে তাকালো দুজনে কিছুক্ষণ পরস্পরের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো যেন কিছু কথা যেগুলো মন বলতে চাইছে কিন্তু মুখ বলছে না। খানিকক্ষণ পরে পিয়ালী শুধু একটা কথাই বললো, "আপনাকে আমি বিশ্বাস করি" "থ্যাংকস" "তাহলে এবার আপনি আমার সাথে থাকছেন তো? আইমিন আজকের দিনটা?" "আজ আপনার বার্থডে আমি থাকলে যদি আপনি খুশী হন তাহলে ঠিক আছে আমি থাকবো" পিয়ালীর মুখে আবার হাসি ফুটে উঠলো সে বললো, "এবার বাকিটা বলুন" "বাকিটা?" "আপনি আনন্দ নিকেতনে কিভাবে পৌঁছোলেন? পুরোটা বলুন... বলুন" পিয়ালী একটা বাচ্চা মেয়ের মতো কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো। আদিত্য বুঝলো পিয়ালী না শুনে ছাড়বে না, সে আবার শুরু করলো, "ওটা বাদশার জন্য" "বাদশা?" "হ্যাঁ, নর্থবেঙ্গল থেকে চলে আসি তারপর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকি, ঠিকমতো কোথাও আশ্রয় জোটে না, খাওয়া জোটে না কিন্তু তাতে আমার কোনো ভাবনা ছিল না শুধু একটাই চিন্তা ওই বাদশার। ওই অবলা জীবটা তখনও আমার পায়ে পায়ে ঘুরছে ওকে কি খাওয়াবো কিভাবে খাওয়াবো সেটাই আমার একমাত্র চিন্তা আপনি হয়তো বলবেন ওকে কেন রেখে আসিনি? কারণ ও আমাকে এতটাই ভালোবাসে যে আমাকে ছাড়া বাঁচবে না এটা আমি জানতাম কিন্তু কে ভেবেছিল যে ওই আমার প্রাণ বাঁচাবে" "কি হয়েছিল আপনার?" পিয়ালী যেন আঁতকে ওঠে। "বাদশাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছি, বিশেষ করে এই বাংলায় এখনো অনেক অফবিট জায়গা আছে, অনেক অফবিট গ্ৰাম আছে সেরকমই একটা গ্ৰামে গিয়েছিলাম ওখানে একটা পুরনো মন্দির আছে সেটার চাতালে রাতে থেকেছিলাম ইচ্ছা ছিল সকাল হলেই আবার বেরোবো কিন্তু সেটা আর হলো না। একে বেশ কয়েকদিন পেটে খাবার জোটেনি আমারও না আর বাদশারও না ও তবুও আমাকে ছেড়ে যায়নি, যাইহোক যেটা বলছিলাম মনের জোর যতই থাক কিন্তু শরীরটা তো মানুষের একে অভুক্ত পেট তার উপর গ্ৰামের ঠাণ্ডা সকাল হতেই আর উঠতে পারলাম না প্রায় জ্ঞানশূন্য হয়ে পরে রইলাম কিছু হুঁশ রইলো না তারমধ্যে আবছা ভাবে শুনতে পেলাম বাদশা আমাকে ডাকছে কিন্তু আমার সারা না পেয়ে ও যেন কোথায় চলে গেল"। "তারপর?" "তারপর কতক্ষণ কেটে গেছে টের পাইনি কিন্তু যখন জ্ঞান ফিরে পেয়ে চোখ খুললাম তখন আমি একটা চৌকিতে শুয়ে আছি সামনে একজন বয়স্ক মানুষ আমার মুখের উপর ঝুঁকে রয়েছেন, আমার জ্ঞান ফিরেছে এটা বুঝতে পেরেই বোধহয় বাদশা ডেকে উঠলো, তখন ওই বয়স্ক মানুষটা বললেন, 'অদ্ভুত সঙ্গী পেয়েছো তুমি, এর জন্যই আজ তুমি বেঁচে গেলে তোমাকে তুমি করেই বলছি তুমি আমার থেকে বয়সে অনেক ছোটো' 'তাই বলুন' আমি উঠতে চেষ্টা করতে উনি ধরে আমাকে তুলে বসিয়ে দিলেন শরীর তখনও প্রচণ্ড দুর্বল। তারপর ওনার পরিচয় পেলাম উনি ডাক্তার শৈলেশ রায়, ওই গ্ৰামের মোড়লের সাথে ওনার ঘনিষ্ঠ পরিচয় আছে তাই মাঝে মাঝে ওই গ্ৰামে যান বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এবং নিখরচায় ওখানকার গরীব লোকেদের চিকিৎসা করেন এরকমই সময়ে নাকি বাদশা ঘুরতে ঘুরতে ওখানে যায় আর খুব সম্ভবত ওনার সামনে ওষুধের শিশি আর গলায় স্টেথোস্কোপ দেখে বুঝতে পারে যে উনি ডাক্তার তারপর ওনাকে ডাকতে থাকে প্রথমে স্বভাবতই সবাই ভয় পেয়ে যায় কিন্তু ভাগ্য ভালো ওকে গ্ৰামের কয়েকজন মন্দিরে আমার সাথে দেখেছিল আর তাছাড়া ওর হাবভাব দেখে ওদের সন্দেহ হয় যে ও ওনাদের কিছু বলতে বা দেখাতে চাইছে তাই ওনারা ওর পিছু পিছু মন্দিরে এসে আমাকে একেবারে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান তারপর তাঁরাই আমাকে মোড়লের বাড়িতে নিয়ে যান, সেখানেই শৈলেশ বাবু আমাকে সুস্থ করে তোলেন।" "কিন্তু আপনি রিসর্টে..." "সব বলছি ওয়েট.. আনন্দ নিকেতন টা আসলে শৈলেশ বাবুদেরই ওনার ঠাকুমার নাম ছিল আনন্দময়ী তার নামেই ওটা, ওই রিসর্টা আসলে একপ্রকার এনজিও বলতে পারেন" "কিরকম?" "ওখান থেকে যা আয় হয় সেটার অনেকটাই বিভিন্ন অনাথ আশ্রম,বা গরীব দুঃখীদের চিকিৎসা, বাচ্চাদের পড়াশোনা এই জন্য দান করা হয়। আমার অবস্থা দেখে আর আমার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই শুনে উনি আমাকে এখানে নিয়ে আসেন, আমি ওখানে থাকতে শুরু করি আর কিছু না হোক অন্তত আমার আর বাদশার একটা আশ্রয় খাবারটা তো জুটবে। ধীরে ধীরে রিসর্টের বিভিন্ন কাজও করতে থাকি নর্থবেঙ্গলে অতীন্দ্র স্যারের রিসর্টগুলোর কাজ আমিই দেখতাম তাই একটা আইডিয়া ছিল ফলে অসুবিধা হয়নি। ওখানে একজন ম্যানেজার আছে কিন্তু আমাকে শৈলেশ বাবু সবার ইনক্লুডিং ম্যানেজারের দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেন জানিনা উনি আমার মধ্যে কি দেখেছিলেন, এইভাবেই দিন কাটছে আর এখন তো ওখানে আটকা পরে গেছি যদিও বেরোনোর খুব যে ইচ্ছা আছে তা নয়" "তার মানে আপনি এখন ওখানেই থাকবেন?" "হ্যাঁ, শৈলেশ বাবু আমাকে বিশ্বাস করে একটা দায়িত্ব দিয়ে গেছেন আর আমি ওনার বিশ্বাসের অমর্যাদা করতে পারবো না"। "দায়িত্ব?" "হ্যাঁ, ওই রিসর্টটার দেখাশোনা করা আর রিসর্টের যে মেইন উদ্দেশ্য মানে ওই সোশ্যাল ওয়ার্ক গুলো ওগুলো যাতে বন্ধ না হয় সেগুলো দেখার পুরো দায়িত্ব আমার উপরেই" "বুঝলাম" "এই হচ্ছে আমার কথা, তাহলে এবার যাওয়া যাক?" "কোথায় যাবেন বলুন?" "বাড়ি" "এখনই কি? ডিনার করবেন বলেছিলেন মনে আছে তো?" "আচ্ছা ঠিক আছে" "তাহলে এখন কোথায় যাবেন বলুন?" "আপনি বলুন" "এক কাজ করলে হয় না?" "কি? "ভিক্টোরিয়া চলুন" "ভিক্টোরিয়া?" "হ্যাঁ যাবেন?" "বেশ, তাই চলুন"। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের ভিতরে ঢুকলো না ওরা কারণ সাথে বাদশা ছিল তাই আদিত্য আর পিয়ালী দুজনে বাইরে আস্তে আস্তে হেঁটে বেড়াতে লাগলো পিয়ালীর মন আজ অত্যন্ত খুশী সে মাঝে মাঝেই আদিত্যকে দেখছে, একটা জিনিস খেয়াল করলো যে মাঝে মাঝে আদিত্য চারপাশে বা পিছনে কিছু একটা দেখছে আর কপালে ভ্রুকুটি দেখা যাচ্ছে শেষে আর থাকতে না পেরে জিজ্ঞেস করেই ফেললো, "কি হয়েছে বলুন তো? এভাবে কি দেখছেন" প্রশ্ন শুনে আদিত্য নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, "কিছুনা, এমনি চারিদিকে দেখছি"। পিয়ালী আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না কিন্তু সে বুঝতে পারলো আদিত্য কিছু একটা লুকোচ্ছে, ভিক্টোরিয়া থেকে আবার বাবুঘাটে এসে অনেকক্ষণ গঙ্গার ধারে বসে থাকলো দুজনে তারপর একটা রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার নিয়ে বাইকের উপরেই ডিনার করলো আদিত্য আর পিয়ালী এবং অবশ্যই বাদশা। ডিনার শেষে যখন কসবায় পিয়ালীর মেসের সামনে এসে বাইক থামালো আদিত্য তখনও পিয়ালী লক্ষ্য করলো তার মুখে কিছু একটা চিন্তার ছাপ, বোধহয় লিমিট ক্রস করা হবে ভেবে কোনো প্রশ্ন করলো না শুধু তার সাথে পুরো দিনটা কাটানোর জন্য থ্যাংক ইউ জানিয়ে ভিতরে চলে গেল। ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়েও পিয়ালীর চোখে ঘুম এলো না অদ্ভুত এক ভালো লাগা আর ঘোরের মধ্যে রয়েছে সে যেটা সে কোনোদিন ভাবতে পারেনি সেটাই আজ সে পেয়েছে যে মানুষটাকে সে ভালোবাসে কিন্তু ভাবতো যাকে কোনোদিন কাছে পাবে না সে আজ প্রায় গোটা দিনটা তার সঙ্গে কাটিয়েছে তার সঙ্গে ঘুরেছে তার সঙ্গে খাবার খেয়েছে এসব ভাবতে ভাবতে তার সারা শরীর পুলকিত হয়ে ওঠে সে মোবাইলে তোলা আদিত্যর ছবিটা যেটা সে নর্থবেঙ্গলে থাকতে একদিন কোর্টে তুলেছিল সেটা মুখের সামনে ধরে দেখতে থাকে, দেখতে দেখতে সে যেন স্বপ্নের মধ্যে ডুবে যায়। হটাৎ একটা কুকুরের শব্দে সজাগ হয়ে ওঠে পিয়ালী ঘড়ি দেখে বুঝলো মাঝরাত পেরিয়ে গেছে, প্রথমে কিছুটা আমল দিল না কারণ তার মেসটা যে পাড়ায় সেখানে অনেক নেড়িকুত্তা আছে যারা রাতবিরেতে নানা কারনে ডেকে ওঠে, খানিক পরে আবার একটা ডাক আর সাথে একটা মানুষের আর্তনাদ, একটু আশ্চর্য হলো সে কারণ আর্তনাদটা কেউ যেন চাপা দিয়ে দিল মনে হলো পিয়ালীর আর আরেকটা কথা কুকুরের ডাকটা রোজকার নেড়িকুত্তার ডাক নয় তার থেকেও বড়ো কথা এই কুকুরের ডাকটা তার চেনা গতকাল প্রায় সারাদিন সে এই কুকুরটার সাথেই ছিল। তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে উঠে জানালার কাছে গেল সে মেসে তার রুমটা দোতলায় যেদিকে মেসের মেইন গেট সেদিকেই একেবারে রাস্তার ধারেই, জানালা দিয়ে রাস্তার অনেকটা দেখা যায়, জানালা দিয়ে রাস্তার দিকে চাইতেই চমকে গেল সে। রাস্তার উপরে একেবারে মেসের সামনে মেসের গেটটাকে প্রায় ব্লক করে বাইকের উপরে বসে আছে একজন পিছন থেকে পিয়ালী মুখটা দেখতে না পারলেও তার বুঝতে অসুবিধা হয় না ওটা কে? ওই লম্বা চুল ওই কালো পাঞ্জাবী সে কাল সারাদিন দেখেছে, আদিত্য.... কিন্তু এখনো এতরাতে এখানে কি করছে ও? আরেকটু ভালো করে চাইতেই আরেকটা জিনিস চোখে পরে পিয়ালীর আদিত্যর সামনে একটু তফাতে একটা লোক চিত হয়ে শুয়ে আছে আর ওর বুকের উপরে দুটো পা তুলে দাঁড়িয়ে আছে বাদশা এছাড়া আরও কয়েকজন লোক রাস্তার এদিকে সেদিকে ছিটকে পরে রয়েছে, এবার পকেট থেকে একটা সিগারেট বার করে ধরায়আদিত্য তারপর একগাল ধোঁয়া ছেড়ে সামনে বাদশার পায়ের তলায় পরে থাকা লোকটাকে কিছু বলে যেটা উপর থেকে শোনা গেল না পিয়ালীর মনে হলো কিছু জিজ্ঞেস করলো কারণ সামনের লোকটা অন্য দিকে চাইতেই বাদশা ওর গলার কাছে ঝুঁকতেই লোকটা আবার আতঙ্কিত হয়ে হাতজোড় করে কিছু একটা বলতে শুরু করে। আর থাকতে পারে না পিয়ালী সে মোবাইলটা নিয়ে ফোন করে আদিত্যকে দেখে পকেট থেকেই ফোনটা বার করে না দেখেই কানে দেয় সে, "আপনাকে কতবার বলতে হবে যে সিগারেট খাবেন না, ওটা ভালো নয় আর আপনি এখনো এখানে কি করছেন?" আদিত্য এবার ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে উপরের দিকে চাইতেই জানালায় পিয়ালীকে দেখতে পায়, পিয়ালী দেখে আদিত্য আবার ঘাড় ঘুরিয়ে বাদশাকে নিজের কাছে ডাকে আর লোকটা ছাড়া পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে কোনোমতে উঠে দৌড় লাগায় সাথে আশেপাশে পরে থাকা লোকগুলোও পালিয়ে যায়, পিয়ালী আবার জিজ্ঞেস করে "বলুন এত রাতে এখানে কি করছেন? তখন বললেন একবার শরীর খারাপ বাঁধিয়েছিলেন তাহলে? আবার শরীর খারাপ, হলে কি হবে?" উত্তরে একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করে আদিত্য, "আপনি এখন এখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন?" "মানে?" "কাল থেকে আপনার পিন একটা কথাতেই আটকে গেছে 'মানে', আসতে পারবেন?" "না এখন সম্ভব নয় ভোরে পারবো, খুব ভোরে মেসের গেট খুলে দেওয়া হয়" "তাহলে এখনই নিজের সব জিনিস প্যাক করে নিন ভোর হওয়া মাত্র আপনাকে এই মেস ছাড়তে হবে" "কিন্তু কেন?" "যা বললাম করুন, আমি নীচেই আছি যখন গেট খোলে তখন নেমে আসবেন কাউকে কিছু বলার প্রয়োজন নেই" "কিন্তু কেন সেটা তো বলবেন?" "পরে বলবো আপাতত যা বললাম করুন আর এটা বিশ্বাস করতে পারেন যে আমি চরিত্রহীন বা লম্পট নই আর আপনার ক্ষতি করারও কোনো ইচ্ছা আমার নেই" "আমি কিন্তু একবারও সেকথা বলিনি" "তাহলে যান যেটা বললাম করুন" "লোকগুলো কারা ছিল?" "বললাম তো পরে বলবো, এখন নিজের জিনিসগুলো প্যাক করে নিন" পিয়ালী আর কোনো কথা না বলে জানালা দিয়ে সরে এলো আর নিজের জিনিসপত্র একটা স্যুটকেসে প্যাক করতে থাকে। ভোরে সূর্যোদয়ের একটু পরেই মেসের গেট খুলে যায় এবং একসাথে দুজন মেয়ে বেরিয়ে আসে একজন নিজের মতো মেইনরোডের দিকে চলে যায় আর তার পিছনে পিয়ালী হাতে একটা স্যুটকেস যেটা টানতে টানতে আনছে। গেটের বাইরে এসে কাউকে দেখতে না পেয়ে একটু অবাক হয় কিন্তু বেশিক্ষণ না, একটু পরেই আদিত্য বাইকটা তার সামনে থামায়। "রাতে কোথায় ঘুমিয়েছিলেন?" আদিত্য সামনে দাঁড়াতেই প্রশ্ন করে পিয়ালী, "রাতে আমার খুব একটা ঘুম হয় না" "কোথায় ছিলেন?" "ওই..ওইদিকে বাইকের উপরেই" "আপনি সারা রাত বাইকের উপরে ছিলেন?" "এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলার জন্য এত ভোরে ডাকিনি? তাড়াতাড়ি উঠুন আর হেলমেটটা পরে নিন" "আমরা কোথায় যাচ্ছি? আর কেন যাচ্ছি?" "আপনাকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছি এখন নিজে থেকে চলুন নাহলে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাবো" "কিডন্যাপ করার দরকার কি? আপনি বললে আমি এমনিই আপনার সাথে চলে যাবো" বাইকে আদিত্যর পিছনে বসে বললো পিয়ালী স্যুটকেসটা মাঝে রাখলো, খুব একটা বড়ো নয় তাই অসুবিধা হলো না। "আমার উপরে এত বিশ্বাস?" আদিত্য হাল্কা স্বরে প্রশ্ন করে, "হ্যাঁ, সম্পূর্ণ বিশ্বাস করি আপনাকে"। আদিত্য একবার ঘাড় ঘুরিয়ে পিয়ালীকে দেখলো তারপর বাইক স্টার্ট করলো। "এত ছোটো স্যুটকেসে আপনার সব জিনিস ধরেছে?" যেতে যেতে প্রশ্ন করলো আদিত্য। "আপনি তো বলেননি যে কদিনের জন্য যাচ্ছি তাই সব জিনিস কেন নেবো?" কথাটা শুনে আদিত্য হটাৎই বাইক থামিয়ে দিল বললো "আপনার মাথায় কি গোবর পোড়া আছে নাকি? আপনাকে বললাম না যে মেস ছাড়তে হবে আপনাকে?" "না মানে আসলে" "কি মানে মানে করছেন? আপনাকে বললাম তো এই মেস ছাড়তে হবে তাহলে সব জিনিস নেননি কেন?"আদিত্য ধমক লাগায়, পিয়ালী চুপ করে থাকে কিন্তু আদিত্য গজরাতে থাকে "আপনার মাথায় একটুও বুদ্ধি নেই নাকি?" "সব জিনিস নিলে এইভাবে বাইকে যেতে পারতেন?" পিয়ালী মিনমিন করে জবাব দেয় তাতে যেন আদিত্য আরো রেগে যায় বলে "সেটা আমি বুঝতাম সেটাতো আপনাকে ভাবতে বলিনি" "ভোরবেলা এত বকছেন কেন? পরে একসময় এসে নাহয় নিয়ে যাবো" "আপনাকে এখানে আসতে দিতে চাইছি না বলেই তো সব জিনিস নিতে বলেছিলাম" "ওইভাবে সবজিনিষ নিয়ে গেলে সবাই ভুল ভাববে সন্দেহ করবে পরে একসময় এসে নিয়ে যাবো" পিয়ালীর কথা শুনে আদিত্য কিছুটা শান্ত হয় বলে "ঠিক আছে তবে একা আসবেন না, আমাকে বলবেন আমিও আসবো" "ঠিক আছে" "মনে থাকে যেন" আবার বাইক স্টার্ট করে আদিত্য সায়েন্স সিটি থেকে বানতলার রাস্তাটা ধরে সে, পিয়ালী জিজ্ঞেস করে "আমরা কি আনন্দ নিকেতনে যাচ্ছি?" "হ্যাঁ" "ওই লোকগুলো কারা ছিল? আর আপনি ওদের মেরেছিলেন?" "আপনি রিসেন্টলি কোনো ক্ষমতাশালী লোকের বিরুদ্ধে কেসে লড়েছিলেন?" "ক্ষমতাশালী?" "হ্যাঁ" "একটা কেস লড়ার কথা ছিল কিন্তু.." "কিন্তু?" "কিন্তু কোর্টে ওঠার আগেই একটা অ্যাক্সিডেন্টে ভিক্টিম মারা যায় আর ওর বাড়ির লোক আর কেসটা নিয়ে এগোয়নি, কেন বলুনতো?" "যাদের বিরুদ্ধে কেস ছিল তারাই আপনার পিছনে লোক লাগিয়েছে?" "তারমানে ওই লোকগুলো.." "ওদের পিছনে যে আছে খুব সম্ভবত তাদের বিরুদ্ধে কেসটা ছিল" "কিন্তু ওরা এসেছিল কি করতে?" "আপনাকে তুলে নিয়ে যেতে আপনাকে ফলো করছিল কাল সারাদিন আমি ওদের দেখেছি আমাদের পিছনে, সন্দেহ তখনই হয়েছিল খুব সম্ভবত আপনাকে একা পায়নি বলে তখন কাজটা করেনি আমি ওদের ওখানেই ধরতে পারতাম কিন্তু আপনার দিনটা খারাপ করতে চাইনি তাই তখন কিছু বলিনি, আপনার মেসে ছেড়ে ফেরার পথে যখন ওদের দেখলাম তখন ফিরে আসতেই হলো" "কেন?" "আপনাকে বিপদে ফেলে যাবো? এতটাও খারাপ লোক নই আমি" "আপনার কিছু হয়ে গেলে কি হতো?" "কি আর হতো আমি মারা গেলে বেচারা বাদশা অনাথ হয়ে যেত" "আদিত্য... আর কখনো মরার কথা বলবেন না" "আপনার আবার কি হলো?" "বলবেন না ব্যাস.. আচ্ছা আপনি ওদের পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দিলেন কেন?" "পুলিশে দিলে লাভ হতো না ওদের পিছনে যে আছে সে নিশ্চয়ই অত্যন্ত ক্ষমতাশালী, পুলিশে তার প্রভাব থাকাটা অস্বাভাবিক নয় তিনি হয় ওদের ছাড়িয়ে নিতেন আর নাহয় ওদের মেরে সরিয়ে দিতেন এইধরনের লোকেরা সাধারণত এটাই করে আর তাছাড়া প্রমাণ কোথায়?" "তারমানে আমাকে এবার পালিয়ে বেড়াতে হবে তাইতো?" "ভয় পাচ্ছেন? ভয় পাবেন না আমি আর বাদশা থাকতে আপনার কোনো ক্ষতি হবে না আমরা হতে দেবো না। আমরা সবসময় আপনার পাশে থাকবো তাই না রে বাদশা?" "ভৌ" বাদশাও একবার ডেকে মনিবকে সমর্থন জানায় সে বাইকে সামনে আদিত্যর কোলের কাছে বসে আছে। "প্রমিস করছেন?" পিয়ালী প্রশ্ন করে। "করছি" ছোট্ট উত্তর দেয় আদিত্য। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
01-05-2023, 01:38 AM
Congratulations brother খুব কম লেখকরা পারে এমন করে গুছিয়ে গল্প লিখতে এই ভাবেই চালিয়ে যাও পাশে সব সময়ই আছি।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
01-05-2023, 01:58 AM
ঊফফ... এতো তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল কেন
দুটো আপডেট পেয়ে মন এমনিতেই খুশি। সাথে পুরনো চরিত্রদেরও খুঁজে পাচ্ছি। পিয়ালী মনে নকল আদিত্য মানে অনি আছে কিন্তু অনির মন?? আরও একজন যে অপেক্ষা করে আছে। পিয়ালী কি আদিত্য কে খুঁজে পেল নাকি আদিত্য ধরা দিল সামনে থেকে প্রটেকশন করবে বলে। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
|
« Next Oldest | Next Newest »
|