19-04-2023, 04:39 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
WRITER'S SPECIAL "ধূসর পৃথিবী"
|
19-04-2023, 04:39 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
20-04-2023, 12:49 AM
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
20-04-2023, 08:04 AM
(20-04-2023, 12:49 AM)Patrick bateman_69 Wrote: Aro chai dada xd ei aktu te mon vore ni লেখা চলছে, হোক অবশ্যই দেবো। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
21-04-2023, 07:57 AM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
22-04-2023, 01:35 AM
Dada update kobe pabo?
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
22-04-2023, 07:48 AM
(22-04-2023, 01:35 AM)Patrick bateman_69 Wrote: Dada update kobe pabo? লিখছি দাদা, কাজের চাপের মাঝে লিখতে হয়, লেখা হলেই দেবো I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
23-04-2023, 09:37 AM
দুর্দান্ত আপডেট প্রীতম to Cha gaya ji .. চলতে থাকুক সঙ্গে আছি।
23-04-2023, 10:47 AM
(23-04-2023, 09:37 AM)Bumba_1 Wrote: দুর্দান্ত আপডেট প্রীতম to Cha gaya ji .. চলতে থাকুক সঙ্গে আছি। ধন্যবাদ দাদা I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
23-04-2023, 11:58 PM
দ্বিতীয় পার্ট ৩য় পর্ব "আচ্ছা আঙ্কেল এই যে উকিল এই কেসটা লড়তে চাইছে সে কে? কিছু জানতে পেরেছেন?" হটাৎ মনোজ প্রশ্ন করে "পেরেছি, একজন নতুন কেউ লড়বে" "নতুন?" "হ্যাঁ, বেশি কিছু জানতে পারিনি এটুকু জেনেছি যে লড়বে সে আগে অন্য উকিলের অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করতো ইদানিং ইন্ডিপেন্ডেন্টলি করছে, তবে এখনো খুব একটা নামডাক হয়নি"। "আর কিছু জানতে পারেননি? কি নাম কোথায় থাকে এইসব?" "তুমি কি ওকেও শেষ করতে চাইছো নাকি?" "ইচ্ছা তো সেরকমই আছে, আমার পিছনে লাগার পরিণাম টের পাইয়ে দিতে হবে তো" "সেসব দরকার নেই, বললাম তো সবে নিজে প্র্যাকটিস শুরু করেছে, আগে অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিল, কয়েকটা কেস হারলে এমনিতেই ঠান্ডা হয়ে যাবে" "তবুও, কোথায় থাকে জেনেছেন?" "লোক লাগিয়েছি কোথায় থাকে সেটা কয়েকদিনের মধ্যে জানতে পারবো" "কি নাম?" "ঠিক মনে পরছে না তবে খুব তাড়াতাড়ি ডিটেইলস পেয়ে যাবো আশা করছি"। পরদিন সকালে ব্রেকফাস্টের আগে মোবাইলে প্রীতমবাবুর পাঠানো লিংক থেকে খবরটা দেখতে দেখতে মুচকি হাসছিল অরুণাভ, "গতকাল রাতে শহরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, উত্তর কলকাতায় এক কলোনি সংলগ্ন পুলিশ কোয়ার্টারে গতকাল রাতে আগুন লাগে, দমকল বাহিনী গিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও ততক্ষণে কলোনির একাধিক বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায় সাথে পুলিশ কোয়ার্টারটি একদম কাছেই অবস্থান করায় আগুন সেখানেও ছড়িয়ে পরে। মৃত এবং আহতের সংখ্যা একাধিক যার মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীর থাকার সম্ভাবনা। পুলিশের অনুমান শর্ট সার্কিট বা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন লেগে থাকতে পারে হ স্থানীয় থানার ইনচার্জ বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছেন.. "। ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই একসাথে খেতে বসে এটাই ব্যানার্জী পরিবারের নিয়ম শুধু বাচ্চাদুজন কলেজে বেরিয়ে গেছে তাই তারা নেই বাকিরা সবাই উপস্থিত। খেতে বসে প্রীতমবাবু এবং অরুণাভর মধ্যে বেশ কয়েকবার চোখাচোখি হয় কিন্তু বাড়ির কর্তা অভিরূপ বাবুর গম্ভীর মুখের জন্য কেউ কথা বলতে সাহস করছে না। "অরুণাভ এরমধ্যে তুমি কোনোদিন যাদবপুরের ওইদিকে গিয়েছিলে?" অভিরূপ বাবুর আচমকা প্রশ্নে কিছুটা হকচকিয়ে যায় অরুণাভ, খেতে গিয়ে হটাৎই বিষম লাগে তার সঙ্গে সঙ্গে শ্রীতমাদেবী ব্যাস্ত হয়ে উঠলেন তাড়াতাড়ি ছেলেকে জলের গ্লাস এগিয়ে দিলেন, জল খেয়ে কিছুটা ধাতস্থ হলো অরুণাভ এবং অভিরূপবাবুর তার বাবার গলার স্বর কথা বলার ভঙ্গি থেকে তার বুঝতে বাকি রইলো না যে তার বাবা সত্যিটা জানেন আর রেগে আছেন এখন মিথ্যা বলে লাভ নেই, "হ্যাঁ ওই একদিন গিয়েছিলাম"। "কেন গিয়েছিলে জানতে পারি?" "আসলে.. আমি.... মানে.." "বাবা আমি বলছিলাম কি.." মৌমিতা কথাটা শেষ করতে পারে না এটুকু বলেই মৌমিতা কে থামতে হয় কারণ অভিরূপবাবু হাত দিয়ে তাকে থামতে বলেন আর অভিরূপ ব্যানার্জীর ব্যাক্তিত্বই এমন যে মৌমিতাও থেমে যায়, "আমি আমার ছেলের সাথে কথা বলছি তোমাকে মাঝে কথা না বললেও চলবে, অরুণাভ কেন গিয়েছিলে?"। "আসলে বাবা.." "শোনো যেটা করতে গিয়েছিলে সে ব্যাপারে আর ভেবোনা, মনোজিত বাবুকেও বারণ করে দিও, ঠিক আছে?" কথাটা বলে টেবিল ছেড়ে উঠে পরলেন অভিরূপবাবু, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে শ্রীতমাদেবী বাধা দিলেন "ও কি খাবারটা পুরো খেয়ে নাও"। "আমার হয়ে গেছে" বলে হনহন করে উপরে নিজের ঘরের দিকে চলে যান অভিরূপবাবু, পিছনে শ্রীতমাদেবীও উঠে স্বামীর পিছনে চলে যান কিন্তু টেবিলে তখনও গুম হয়ে বসে আছেন অরুণাভ অবশ্য শুধু অরুণাভ নয় মৌমিতার মুখও রাগে থম হয়ে আছে। "আমি তোমাকে সাবধান করেছিলাম অরু" প্রীতম বাবু অবশেষে কথাটা বলেন যদিও মৌমিতা বা অরুণাভ কেউই কোনো উত্তর দেননা, উত্তরটা দেন মণিমালা দেবী, "যাদবপুরে কি হয়েছে?" "তোমার জেনে কাজ নেই মণি কিন্তু তোমার দাদাযে এখনও ছেলের সব বিষয়ে শুধু হস্তক্ষেপ করছেন তাই নয়, ছেলের শ্বশুরের বিষয়েও নাক গলাচ্ছেন যেটা ঠিক নয়"। "তুমি তো দাদাকে চেনো দাদা এরকমই যেটা নিজে ঠিক মনে করেন সেটাই করেন আর অন্যদের উপরেও চাপিয়ে দেন"। "কিন্তু জিনিসটা ঠিক নয় মামা সবার লাইফে এভাবে ইন্টারফেয়ার করতে পারেন না" সুশান্ত অর্থাৎ মণিমালা দেবী আর প্রীতমবাবুর ছেলে কথাটা বলে, এই কথোপকথন আরো কিছুক্ষণ হয়তো চলতো কিন্তু চললো না কারণ অরুণাভ হটাৎই টেবিল ছেলে উঠে হনহন করে চলে গেল বলাইবাহুল্য মৌমিতাও গেল, মণিমালা দেবী কিছু বলার বা আটকানোর কোনো সুযোগই পেলেন না খালি অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইলো আর প্রীতমবাবু ছেলের দিকে তাকিয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিলেন, ছেলে এবং বাপ দুজনের মুখেই মুচকি হাসি। ব্রেকফাস্ট টেবিল ছেড়ে সোজা নিজের রুমে যায় অরুণাভ রাগে তার সারা শরীর উত্তপ্ত, ফোঁস ফোঁস করে বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস ফেলছে আর ঘরময় পায়চারি করছে। অবশ্য শুধু রাগ নয় সাথে ভয়ও আছে তার বুঝতে বাকি নেই যে, যে ভয়টা সে পাচ্ছিল সেটাই হয়েছে তার আর মনোজিত বাবুর প্ল্যানের ব্যাপারে তার বাবা সব জেনে গেছেন এখন তিনি কি করবেন বলা মুশকিল একে তো অত সুন্দর প্লটগুলো হাতছাড়া হবে সেখানে আর কোনোমতেই কাজ করা যাবে না তার উপরে আরও কি কি করবেন তার ঠিক নেই। এইসময় মৌমিতা এসে তার সামনে দাঁড়াতে পায়চারি থামিয়ে নিজের স্ত্রীর দিকে তাকালো, মৌমিতার মুখও গম্ভীর সে বললো, "উনি কিভাবে জানলেন আন্দাজ করতে পারছো?" "না, হতে পারে পিসেমশাই বলেছে বা হয়তো অন্য কেউ। ওই এলাকায় যে বাবার পরিচিত লোক আছে এটা মিথ্যা নয়"। "এবার কি হবে?" "কাজ বন্ধ করতে হবে"। "কি বলছো তুমি? মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি?" "আমার মাথা একদম ঠিক আছে তাই এইকথা বলছি" "কিন্তু.." "এরমধ্যে কোনো কিন্তু নেই, ওখানে কাজ করলে আমাদেরই বিপদ" "বিপদ?" "হ্যাঁ, বাবার ক্ষমতা সম্বন্ধে তোমার কোনো ধারণা নেই, কাজ শুরু করলেও উনি শেষ করতে দেবেন না বা দিলেও ওই প্লট আমরা নিজেদের কাছে রাখতে পারবো না, আর আমাকে ব্যাবসা থেকেও বার করে দিতে পারেন ভুলো না আমি এখনো ব্যানার্জী ক্রিয়েশনস্ এর বসের চেয়ারে বসিনি এখনও বাবাই কোম্পানির মালিক"। "তাইবলে ওরকম প্লট হাতছাড়া হয়ে যাবে?" "এছাড়া আর কোনো উপায় আছে?" "আছে" হটাৎ তৃতীয় কণ্ঠস্বরে দুজনেই চমকে ওঠে তাকিয়ে দেখে দরজায় সুশান্ত দাঁড়িয়ে আছে। "তুই এখানে?" অরুণাভ প্রশ্ন করে। "তোমার সাথে একটু দরকার ছিল দাদা" "কি দরকার?" "তার আগে বলো কি উপায়ের কথা বলছিলে? শেষের প্রশ্নটা মৌমিতা করে। "আমার নিজের দরকারটাই আগে বলি?" "কি দরকার?" "আসলে আজ রাতে আমার বন্ধুদের সাথে একটা পার্টি আছে তাই কিছু টাকা দরকার"। "টাকা দরকার তো পিসেমশাইএর কাছে গিয়ে চেয়ে নে, আমার কাছে কেন?" "তোমার কাছে চাইলেই ক্ষতি কোথায়? তুমি তো দাদা" "আমার কাছে টাকা নেই" "এরকম করছো কেন? ছোটোভাই চাইছে তুমি দেবেনা?" "না দেবোনা" "শোনো দাদা টাকা তো তোমাকে দিতেই হবে" "দেবোনা কি করবি?" "করতে তো অনেক কিছুই পারি যদি ইচ্ছা করি" "যা খুশি কর" "তোমাকে একটা কথা বলি দাদা, তোমার তো নিশ্চয়ই মনে আছে কি করেছিলে তুমি? সেই আট বছর আগে গ্যাংটকে রুমটেক মনাস্ট্রি.." সুশান্তর কথা শেষ হবার আগেই অরুণাভ হিংস্র জানোয়ারের মতো এক লাফে সুশান্তর কাছে গিয়ে ওর শার্টের কলারদুটো চেপে ধরলো, "আরে দাদা করছোটা কি আগে পুরো কথাটা তো শোনো" সুশান্ত একটুও না ঘাবড়িয়ে বললো। "তোকে আজ শেষ করে দেবো, তুই জানিস না আমি কি করতে পারি" "জানি তো, নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নিজের ভাইকে খুন পর্যন্ত করতে পারো তুমি" "তাহলেই ভেবে দেখ তোর কি করবো, তুই তো আমার নিজের ভাইও নোস" "সেইজন্যই তো নিজের সেফটির বন্দোবস্ত করেই রেখেছি" "তোকে আর তোর বাপকে আমি এই বাড়ি ছাড়া করবো" "তার আগে তুমি আর তোমার বউ কি কি ছাড়া হবে সেটা ভেবেছো,যদি আমি ভিডিওটা মামাকে দেখিয়ে দিই" "ভিডিও? কিসের ভিডিও?" "বলছি আগে কলারটা তো ছাড়ো" অরুণাভ কলার ছেড়ে দেয় সুশান্ত শার্টের কলারটা ঠিক করে বলে "ওই যে, যেটা তোমরা করেছিলে আট বছর আগে, তার ভিডিও আছে এইচডি কোয়ালিটি তে, সেদিন বেশ কুয়াশা ছিল একথা ঠিক কিন্তু আমি যেখান থেকে ভিডিওটা রেকর্ড করি সেখান থেকে পুরো ঘটনাটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তোমাদের প্রত্যেকের মুখও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে"। অরুণাভ আর মৌমিতা পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে ওরা যে ভয় পেয়েছে এটা সুশান্তর বুঝতে বাকি থাকে না সে একটু হেসে বলতে থাকে, "তোমরা যেদিন গ্যাংটকে ঘুরতে গেলে মনে আছে? মানে তুমি বৌদি আর অনি? আমাকে নিলে না কিন্তু আমিও আমার কয়েকজন বন্ধুর সাথে গেলাম। অনিকে তো জানোই সরলসোজা ছেলে ছিল সবাইকে বিশ্বাস করতো একদম যাকে বলে বোকার হদ্দ ছিল একটা, তো ওর থেকে তোমাদের ঘোরার প্ল্যান জানতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি তোমাদের ফলো করতে থাকি ফলো করে সেদিন রুমটেক মনাস্ট্রিতে গেলাম আমি সেদিনের অনুষ্ঠান না তোমাদের দেখছিলাম তারপর দেখলাম তুমি একসময় অনিকে নিয়ে উঠে বেরিয়ে গেলে তার একটু পরে মৌমিতা.. উপস্ সরি বৌদিও গেল পিছনে পিছনে আমিও গেলাম। খাদের ধারে তোমরা ছিলে তার থেকে একটু দূরে আমি লুকিয়ে ছিলাম, আর তোমরা কি প্ল্যান করেছো মানে তোমরা যে অনিকে মারতে ওখানে নিয়ে যাচ্ছো সেটা আমি জানতাম তাই সেখানে লুকিয়েই ভিডিও করতে থাকি তুমি তো জানোই আমি কোথাও ঘুরতে গেলে আমার সাথে ক্যামেরা থাকে, ব্যাস আর কি পুরো ঘটনা শুধু যে আমি দেখলাম তাই নয় রেকর্ডও করলাম, আর যেটা বললাম কুয়াশা সত্ত্বেও খারাপ হয়নি ভিডিওটা তোমরা চাইলে দেখাতে পারি, এক কাজ করো তোমরা দেখেই নাও"। কথাটা বলে সুশান্ত নিজের মোবাইল বার করে একটা ভিডিও সেন্ড করে অরুণাভর মোবাইলে সেটা চালিয়ে অরুণাভ আর মৌমিতা দুজনের মুখই ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে যায়। "একবার ভাবো এই ভিডিও যদি আমি মামাকে দেখাই তাহলে কি হবে?" হাসতে হাসতে সুশান্ত প্রশ্ন করে আর সুশান্তর কথা শুনে অরুণাভ আর মৌমিতার মুখ থেকে কথা বেরোচ্ছে না তারা বুঝে উঠতে পারছে না যে কি বলবে বা কি করবে, ওদের এই অবস্থা দেখে সুশান্ত যে বেশ মজা পেয়েছে সেটা ওর হাসি আর পরের কথা থেকেই বোঝা যায়, "আরে ঘাবড়াচ্ছো কেন? অত ঘাবড়াবার কিছু হয়নি আমি তো ভিডিওটা কাউকে দেখাচ্ছি না কারণ আমি জানি তোমরা আমার কথা শুনবে আফটারঅল ড্যাড আর তোমরা যে বিজনেস পার্টনার সেটা আমি জানি তাই চিন্তার কিছু নেই দেখো সবাইকে দেখানোর হলে তো আট বছর আগেই দেখাতে পারতাম দেখাইনি তো? অবশ্য ড্যাডও বারণ করেছিলেন তখন ভিডিওটা কাউকে দেখাতে" "যাতে আমাকে পরে ব্ল্যাকমেল করতে পারিস?" দাঁতে দাঁত কিড়মিড় করে কথাটা বলে অরুণাভ। "বাহঃ এই তো মাথা খুলেছে দেখছি, যাইহোক তখন যখন দেখাইনি তখন এখনও দেখাবো না কিন্তু যদি তোমরা আমাদের সাথে শত্রুতা করো তাহলে অবশ্য আলাদা কথা..আমি জানি তোমরা শত্রুতা করবে না, আমরাও করবো না আমরা তো বিজনেস পার্টনার" "বিজনেসই আর হবে না তো পার্টনার কিভাবে হবে?" সুশান্তর কথা শেষ হতেই মৌমিতা কথাটা বলে, কিন্তু তাতে যেন বিন্দুমাত্র চিন্তিত মনে হয় না সুশান্তকে সে বলে, "বিজনেস বন্ধ হবে না তার জন্য উপায় আছে" "কি উপায়?" "সেটা এখানে আলোচনা না করাই ভালো" "কেন?" "দেওয়ালেরও কান থাকে কথাটা শোনোনি? এক কাজ করো দাদা তুমি আর মৌমিতা.. ধুত্তেরি... বৌদি... খালি নামটা মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়.. তোমরা দুজন দেখা করো, বৌদির বাপের বাড়িতেই কথা হোক? মনোজিত আঙ্কেলও থাকবেন ওনাকেও দরকার হতে পারে আমাদের" "ঠিক আছে, কাল সন্ধ্যায়" "ওকে বৌদি, তাহলে এবার টাকাটা দাও আমার আবার কিছু কেনাকাটা করতে হবে"। "কত লাগবে?" "আপাতত হাজার বিশেক দাও" অরুণাভ বাধ্য ছেলের মতো মোবাইল থেকে টাকাটা ট্রান্সফার করে দিল, সুশান্ত "থ্যাংকস" বলে একটু হেসে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল। ঘরের ভিতরে মৌমিতা এবং অরুণাভ দুজনেই গুম হয়ে বসে রইলো তারা জানে এখন তাদের কিছু করার নেই একসময় মৌমিতা মুখ খুললো, "চিন্তা কোরো না অরু এখন ওদের সময় চলছে কিন্তু সময় আমাদেরও আসবে তখন এই বাপ ব্যাটাকে দেখে নেবো"। শ্রীতমাদেবী ঘরে গিয়ে দেখলেন তার স্বামী দেওয়ালে টাঙানো একটা ছবির দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন ছবিটা একটা ১৯-২০ বছরের সদ্য কৈশোর পার করা একটা ছেলের, মুখে হাসি নিয়ে একটা চেয়ারে রাজকীয় ভঙ্গিমায় বসে আছে তবে তার মুখে যে হাসিটা আছে সেটা অহংকারের নয় বরং নিখাদ খুশির হাসি কিন্তু ছবিটায় মালা পরানো আছে অর্থাৎ ছবির ছেলেটি মৃত। শ্রীতমাদেবী আস্তে করে স্বামীর পিছনে গিয়ে তার একটা কাঁধে হাত রাখলেন অভিরূপবাবু না দেখেই বুঝতে পারলেন যে তার স্ত্রী, শ্রীতমাদেবী শান্তকণ্ঠে বললেন "অরু হয়তো একটা ভুল করে ফেলেছে কিন্তু ও কোনো অন্যায় করতে পারে না, তুমি চিন্তা কোরো না"। "অরু অন্যায়ই করছে আর শুধু এবার নয় আগেও করেছে" ছবিটির থেকে দৃষ্টি না সরিয়েই উত্তর দেন অভিরূপবাবু। "ও তোমার ছেলে তুমি একবার কথা বলো ওকে বোঝাও" "ও এখন আর ছোটো নেই নিজেই দুই সন্তানের বাবা হয়েছে" "চিন্তা কোরো না, আমার দৃঢ় বিশ্বাস অরু নিজের ভুল বুঝতে পারবে" "তোমার কথা সত্যি হলে আমার থেকে খুশী কেউ হবে না কিন্তু আমি জানি সেটা হবার নয় ওর মনে এখন লোভ বাসা বেঁধেছে টাকার লোভ, ক্ষমতার লোভ যার জন্য ও গরীব অসহায় মানুষদের কষ্ট দিতেও দুবার ভাবছে না"। শ্রীতমাদেবী বুঝতে পারলেন তার ছেলে অরুণাভ এমন কিছু করেছে যাতে তার স্বামী আজ অনেক বড়ো আঘাত পেয়েছেন তিনি কি বলবেন ভেবে পেলেন না তাই চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন একটু পর অভিরূপবাবু আবার কথা বলতে শুরু করেন, "সবাই বলে অভিরূপ ব্যানার্জী কখনো অন্যায় করেনি, কখনো অন্যায়ের সাথে আপস করেনি কিন্তু সেটা যে মিথ্যা সেটা আমার থেকে ভালো আর কে জানে?" "তুমি কোনো অন্যায় করোনি, কোনোদিনও না" "করেছি, যেদিন অরু প্রথম মৌমিতা আর মনোজিত দত্তের সাথে মিলে একজন অসহায় বৃদ্ধের শেষ সম্বল জমিটা জোর করে কিনে সেখানে বিল্ডিং তুললো সেদিন সব জেনেও চুপ করে ছিলাম" "সেটা তুমি অনেক পরে জেনেছিলে, তারপরে তো তুমি সেই বৃদ্ধ মানুষটার উপযুক্ত ভরণপোষণের ব্যবস্থা করেছো" "কিন্তু তাতে আমার অপরাধ কম হয় না, এখন ও যাদবপুরে একজনের পুকুর জোর করে দখল করতে চাইছে এছাড়া ওখানের একটা মাঠও দখল করে রেখেছে, এলাকার কয়েকজন বিরোধিতা করেছে বলে ওদের নাকি শাসিয়েছে"। "এসব কি বলছো তুমি? আমাদের অরু এসব করতেই পারে না সে তো ভালো করেই জানে যে তার বাবার এই ধরনের কাজ অপছন্দ" "অরুই করেছে অবশ্য ও একা নয় সাথে মনোজিত বাবু আর ওনার ছেলেও আছে" "ওনারাই আমার ছেলের মাথা নষ্ট করেছে" "তোমার ছেলে এখনো কচি খোকা নয় শ্রী যথেষ্ট বড়ো হয়েছে, বারবার কেন ভুলে যাও যে সে নিজেই এখন দুই সন্তানের বাবা" "কিন্তু ও এই কাজ করবে কেন? ওর তো কোনোকিছুর অভাব নেই" "বললাম যে লোভ.. তার মনে এখন লোভ বাসা বেঁধেছে সেই লোভই তাকে দিয়ে এসব করাচ্ছে....জানো বরাবরই আমার মনে হতো অরু এই ব্যানার্জী বংশের নাম আরও উজ্জ্বল করবে কিন্তু ও যা শুরু করেছে তাতে নাম ডুবতে আর বেশি দেরী নেই" "ওকথা বোলো না এসব কিচ্ছু হবে না" "আজ যদি অনি আমার পাশে থাকতো তাহলেও ভরসা পেতাম তাহলে আজ নিজেকে এতটা একা মনে হতো না, অনির মধ্যে অরুর মতো লোভ ছিল না কিরকম সবকিছুতে কিরকম নিস্পৃহ ছিল নিজের মতো থাকতো, টাকা-পয়সার প্রতি কোনো লোভ দেখিনি ওর মধ্যে, ও ঠিক আমার পাশে থাকতো" শ্রীতমাদেবী স্বামীর কথা শুনে চুপ করে রইলেন কিন্তু অভিরূপবাবু বলে চলেন, "সবাই ওকে ব্যানার্জী পরিবারের ব্ল্যাকশিপ বলতো, ওকে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই আনতো না কিন্তু অনির মধ্যে সেইসব গুণ ছিল যা অরুর মধ্যে নেই, কোনোদিনও ছিল না তবুও আমি কোনোদিন অনির গুণগুলো দেখার চেষ্টাই করিনি, আসলে অরুকে নিয়ে এত ব্যাস্ত ছিলাম যে ওর দিকে নজর দেওয়ার কথা মনেই হয়নি.. সেইজন্যই...সেইজন্যই বোধহয় ও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে তাই না শ্রী?" শ্রীতমাদেবী জানেন একথার কোনো উত্তর হয় না কারণ কথাটা খুব একটা মিথ্যা নয়, ছোটো থেকেই সবাই অরুণাভকে নিয়ে বেশী ব্যাস্ত থাকতো এমনকি শ্রীতমাদেবী নিজেও, একটু হলেও ছোটো ছেলের দিকে কম নজর দিতেন তারা ওই যা হয় আরকি পরিবারেরর বড়ো ছেলেই সবার মনোযোগ পেয়ে থাকে তার উপরে সেই ছেলে যদি অরুণাভর মতো হয়,পড়াশোনা থেকে কথাবার্তা আচার-ব্যবহার সবেতেই কেতাদুরস্ত ছিল অরুণাভ যার জন্য সহজেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতো সবার কাছের একজন হয়ে উঠতো আর অনি ওর ছায়ায় ঢাকা পরে যেতো। "আচ্ছা সেদিন তুমি বলছিলে অনি নাকি আমাদের উপর অভিমান করে আছে, আমার কি মনে হয় জানো ও আমাকে ঘেন্না করে আমাদের ঘেন্না করে" অভিরূপবাবুর কথায় শ্রীতমাদেবীর তন্ময়তা ভেঙে যায় তিনি বলেন "এ তুমি কি বলছো তুমি ভুলে গেছো অনি তোমাকে কত ভালোবাসতো? বাবা বলতে পাগল ছিল ও"। "তাহলে আমাকে কেন ছেড়ে চলে গেল ও? না গো শ্রী ও ঘেন্নাই করে আমাদের, আর সেটাই তো স্বাভাবিক ওর প্রতি তো কম অন্যায় করিনি কম অবহেলা করিনি ওকে, সেইজন্যই তো দেখো না ওকে শেষ দেখাটাও দেখতে পারলাম না, আমার ছেলের শরীরটা কোথায় হারিয়ে গেল ভগবান জানেন" অভিরূপবাবুর দুচোখ জলে ভরে ওঠে। শ্রীতমাদেবী নিজেকে সামলাতে চেষ্টা করলেও পারেন না তিনিও তো মা তিনিও তো ছেলেকে শেষ দেখা দেখতে পারেননি, খাদের অনেকটা নীচ পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করা হয়েছিল কিন্তু অনির শার্টের রক্তমাখা কিছুটা ছেঁড়া অংশ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি, এমনকি ওর শরীরটাও নয়। "জানো শ্রী আমি জ্ঞানত কখনো কারো ক্ষতি করিনি, আমার অনিও করেনি ওর দিকে অরুর মতো অত দৃষ্টি হয়তো দিতাম না কিন্তু তবুও আমি দেখেছি ও সবাইকে ভালোবাসতো, সবার উপকার করতো ওর কাছে কখনো অভুক্ত কেউ এলে সে খালি পেটে ফিরতো না তাদের ও খাওয়াতো, কত অসুস্থকে সাহায্য করেছে তার হিসাব নেই, এমনকি রাস্তার কুকুর বিড়ালদেরও খাওয়াতো। আমার অনি তো সত্যিই খারাপ ছেলে ছিল না তাহলে ওর সাথে এমন খারাপ কেন হলো? অনির সাথে অবহেলা তো আমি করেছিলাম সেইজন্যই কি ভগবান ওকে আমাদের থেকে দূরে সরিয়ে দিলেন?" অভিরূপবাবু ডুকরে কেঁদে ওঠেন। শ্রীতমাদেবী স্বামীকে কি সান্ত্বনা দেবেন তার নিজেরই তো বুক ফেটে কান্না আসছে, কিন্তু এখন তার স্বামী ভেঙে পরেছেন তাই তাকে শক্ত থাকতে হবে। কাঁদতে কাঁদতেই অভিরূপবাবু বলেন "আমি আমার অনিকে খুব মিস করছি শ্রী, আমার ছেলেকে খুব মিস করছি, আমি ওকে কোনোদিন বলতে পারবো না যে আমি ওকেও প্রচণ্ড ভালোবাসি"। শ্রীতমাদেবী স্বামীকে সান্ত্বনা দিতে দিতে তার চোখের জল মুছিয়ে দিতে থাকেন। মনোজিত দত্তের বাড়িতে আসর বসেছে আসরে উপস্থিত আছেন মনোজিত দত্ত স্বয়ং তার ছেলে মনোজ এবং মেয়ে মৌমিতা সাথে অবশ্যই জামাই অরুণাভ এছাড়া আছেন প্রীতমবাবু ও তার ছেলে সুশান্ত। বলাইবাহুল্য আগের দিনের কথামতো সবাই এখানে চলে এসেছে, সুশান্তই কথা শুরু করে, "অভিরূপ ব্যানার্জী তোমাদের সবকাজে বাঁধা দিচ্ছে, তিনি নতুন জমি দখল করতে দিচ্ছেন না, নতুন বিল্ডিং বানাতে দিচ্ছেন না, এছাড়া যাদবপুরে যে পুকুর ভরাট বা মাঠ দখল করতে দিচ্ছেন না তাইতো?" "হ্যাঁ, কিন্তু এর উপায় কি? এগুলো আমাদের ব্যাবসা অভিরূপ ব্যানার্জী এই ব্যাবসা বন্ধ করতে চাইছেন, কি করলে আমরা ওনার অজান্তে আমাদের ব্যাবসা চালাতে পারবো?" জিজ্ঞেস করলেন মনোজিত দত্ত, "ওনার অজান্তে কিছু করা সম্ভব নয় অভিরূপ ব্যানার্জী যতদিন থাকবেন ততদিন এই ব্যাবসা চালানো যাবে না কিন্তু যদি তিনিই না থাকেন?" এবার প্রীতমবাবু কথা বলেন আর সেটা শুনে অরুণাভ আর মৌমিতা দুজনেই চমকে ওঠেন, "মানে?" মৌমিতা প্রশ্ন করে। "রাস্তায় ছোটো পাথর পরে থাকলে তোমরা নিশ্চয়ই রাস্তা চেঞ্জ করো না? উল্টে পাথরটাকেই রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলো" এবার আবার সুশান্ত কথা বলে। "সুশান্ত.." এতক্ষণে বোধহয় কথাটা বোধগম্য হয় অরুণাভর আর তাই বেশ ধমকের সুরে কথাগুলো বলে, "ভুলে যাস না যার সম্বন্ধে কথা বলছিস তিনি আমার বাবা"। "আর তিনি থাকলে বিজনেসে লাভ তো দূরের কথা বিজনেসই হবে না"। "সুশান্ত কথাটা খারাপ বলেনি" মৌমিতা সুশান্তকে সমর্থন করে। "মৌ তুমি কি বলছো?"অরুণাভ এখনো প্রতিবাদ করে। "ঠিক বলছি, কাল খোলাখুলি তোমাকে একপ্রকার ঘুরিয়ে থ্রেট করে গেলেন, কতদিন ওনার ভয়ে চুপচাপ থাকবো? কতদিন আমাদের নিজস্ব শখ আহ্লাদ ছাড়তে থাকবো? আর পারছি না" "কিন্তু.." "কোনো কিন্তু নয় অরু, প্রীতমবাবু আর সুশান্ত ঠিকই বলেছে এইকাজ করতেই হবে উনি থাকলে আমরা কোনোদিন উন্নতি করতে পারবো না আর তাছাড়া আর কতদিন তুমি ব্যানার্জী ক্রিয়েশনস্ এর বসের চেয়ার থেকে দূরে থাকবে বলোতো? আর কতদিন নিজের স্বপ্ন থেকে দূরে থাকবে?" "ব্যাস....মৌমিতা আমি আর একটা কথাও শুনতে চাই না" বেশ কড়া সুরে কথাটা বলে অরুণাভ। "কিন্তু অরু" "বললাম তো না" অরুণাভ ধমকে ওঠে মৌমিতাকে এরফলে মৌমিতা তো বটেই এমনকি উপস্থিত বাকিরাও হকচকিয়ে গেল। "আর পিসেমশাই উনি শুধু আমার বাবাই নন,আপনার আশ্রয় এবং অন্নদাতা, একটু তো কৃতজ্ঞতা রাখুন, নেক্সট টাইম যদি আমি এরকম কিছু শুনি তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না"। "অরুণাভর এই কথাগুলো যে আদতে হুমকি সেটা বুঝতে কারো বাকি রইলো না। "ঠিক আছে তুমি যেমন বলবে তেমনি হবে" প্রীতমবাবু কথাটা শান্তভাবে বললেন বটে কিন্তু তার মনের ভিতরে কি চলছে সেটা বাইরে থেকে আন্দাজ করা শক্ত। "আমি আসছি, মৌ চলো" অরুণাভ সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় মৌমিতা আর কোনো কথা না বলে উঠল দাঁড়ায়, দুজনে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়, বাকিরা সেদিকে তাকিয়ে থাকে। ওরা চলে যাওয়ার পরে সুশান্ত কথা বলে, "এবার কি করবে ড্যাড অরুণাভ যতদিন থাকবে ততদিন ওর বাবাকে কিচ্ছু করা যাবে না ও করতে দেবে না আর যতদিন অভিরূপ ব্যানার্জী বেঁচে থাকবেন ততদিন আমরা শান্তিতে থাকতে পারবো না"। "সেটাই তো ভাবছি, অরুণাভ যে এইভাবে হটাৎ বেঁকে বসবে সেটা ভাবতে পারিনি"। "তাহলে কি আমাদের এভাবেই থাকতে হবে আঙ্কেল?" প্রশ্নটা করে মনোজ, কিন্তু প্রীতমবাবুর আগে মনোজিত বাবু কথা বলেন, "ইম্পসিবল, এভাবে আর থাকা যাবে না, অভিরূপ ব্যানার্জীকে সরাতেই হবে" "কিন্তু মনোজিত বাবু অরুণাভ মানবে না, আর ও আমাদের বিরুদ্ধে চলে গেলে আমাদের বিপদ" প্রীতমবাবু কথা বলেন। "ওকে একমাত্র মৌমিতা হ্যাণ্ডেল করতে পারে, ওকেই দায়িত্ব দিতে হবে অরুণাভকে সামলানোর"। "আপনি শিওর ও পারবে?" "পারবে, ওর কথাতেই তো নিজের ভাইকে পর্যন্ত মেরে ফেলতে রাজী হয়েছিল" "তাহলে মৌমিতার সাথে কথা বলুন, অরুণাভ যেন আমাদের বিরুদ্ধে না যায়" "আপনি কাজটা করুন, অরুণাভ সঙ্গে থাকুক বা না থাকুক কাজটা করা চাই, তারপর অরুণাভকে বোঝানো যাবে যতই তেজ দেখাক মাথায় অত বুদ্ধি নেই ওর, কিন্তু প্রীতমবাবু কাজটা কিন্তু বাচ্চাদের খেলা নয়, সহজ হবে না"। "কাজটা বাচ্চাদের খেলা নয় সেটা আমিও জানি তাই আমাদের ভেবেচিন্তে এগোতে হবে একটা ভুল আর সব শেষ" প্রীতমবাবু উত্তর দেন। "তাহলে?" "তাহলে কিছুই না, কাজটা হবে তবে সময় লাগবে, সময় নিয়ে প্ল্যান করে করতে হবে"। "কেন? শুভকাজে দেরী কেন?" মনোজ অবাক হয়। "অভিরূপ ব্যানার্জী এই শহরের নামকরা একজন লোক, যদি এতটুকুও কোথাও সন্দেহের সুযোগ থাকে তাহলে পুলিশ তদন্ত করবেই আর সেটা যারা করবে তাদের উপর আমাদের জোর চলবে না, তাই কাজটা এমনভাবে করতে হবে যাতে কারো সন্দেহ না হয় আর যদি হয়ও তাহলে যেন অন্তত আমাদের উপরে সন্দেহ না আসে"। "কিন্তু সেটা সম্ভব করবে কিভাবে?" "অভিরূপ ব্যানার্জীর বন্ধুর সংখ্যা যেমন অনেক তেমনই শত্রুর সংখ্যাও কম নয়, তাদের প্রত্যকেই ওনাকে মারতে চায় তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে"। "বেশ, তবে তাড়াতাড়ি করুন" "জানোই তো কথায় আছে সবুড়ে মেওয়া ফলে, একটু সবুড় করে থাকো, অভিরূপ ব্যানার্জীর জীবনের বেশীদিন বাকি নেই"। কথা শেষে সবার মুখেই হাসি দেখা গেল, কিছু লোক যাদের কয়েকজন যার আশ্রয়ে থাকে যার দেওয়া অন্নে ক্ষুধা নিবৃত্ত করে তাকেই খুন করার পরিকল্পনা করছে অপরদিকে তাদের সাথ দিচ্ছে যারা তারাও একসময় সেই মানুষটার দ্বারা উপকৃত হয়েছিলেন। এটাই বোধহয় কলিযুগ যেখানে মানুষের মধ্যে উপকারীর প্রতি বিন্দুমাত্র কৃতজ্ঞতা নেই আছে শুধু লোভ, স্বার্থ, হিংসা। সময়ও বোধহয় এই দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে আর বিধাতার কাছে প্রার্থনা করে যাতে তাড়াতাড়ি এই যুগ শেষ হয় কিন্তু সময় এবং বিধাতা দুজনেই জানেন সেটা হবার নয়। "আঙ্কেল আপনাকে ওই উকিলটার ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলেছিলাম, নিয়েছিলেন?" হটাৎ মনোজ প্রশ্ন করে প্রীতমবাবুকে, "উকিল?... ও হ্যাঁ, একজন সদ্য প্র্যাকটিস শুরু করা মেয়ে কেসটা লড়ছিল" প্রীতমবাবুর প্রথমে মনে না পরলেও পরে মনে পরে। "মেয়ে?" "হ্যাঁ, পুরো ডিটেইলস এখনো পাইনি তবে শুনলাম কসবার ওদিকে একটা মেয়েদের মেসে থাকে"। "চেনেন মেসটা?" "চিনি, তবে গতকাল থেকে মেসে নেই সে, কোথায় গেছে সেটা কেউ বলতে পারছে না"। "তবে বোধহয় পালিয়েছে"। "হতে পারে" "তবুও আরও কিছুদিন মেসের উপরে নজর রাখুন, যদি ফেরে জানাবেন" "ঠিক আছে" "একবার হাতে পাই তারপর দেখাবো মনোজ দত্তের পিছনে লাগার মজা দেখাবো মেয়েটাক" মনোজের চোখ হিংস্র জানোয়ারের মতো জ্বলতে থাকে শিকারের অপেক্ষায়। কলকাতার সায়েন্সসিটি থেকে যে রাস্তাটা লেদার কমপ্লেক্সের দিকে গেছে সেই রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে ঘটকপুকুর পার হয়ে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে গেলে অনেকগুলো রিসর্ট আছে, সেগুলো পার হয়ে আরও কিছুটা গেলে নারায়ণতলা নামে একটা গ্ৰাম টাইপের এলাকা আছে সেখানে "আনন্দ নিকেতন" নামে আরও একটা রিসর্ট এণ্ড হোমস্টে আছে, এলাকার যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে। এর আগের রিসর্টগুলোর তুলনায় খুব একটা ফেমাস না হলেও জায়গাটা সৌন্দর্যের দিক থেকে কোনো অংশে কম নয়, অনেকখানি জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে এই রিসর্ট এণ্ড হোমস্টে টা, চারিদিকে অনেকগুলো ছোটো ছোটো কটেজের মতো রুম এছাড়া টেন্টও আছেহ পুরো জায়গাটা বাগান দিয়ে ঘেরা বাগানে বিভিন্ন ফুলগাছ যেমন রয়েছে তেমনি আম, জামহ কলা, কাঁঠাল বিভিন্ন ফলের গাছও রয়েছে হ এছাড়া রয়েছে এক বড়ো পুকুর। ট্যুরিস্টরা মাঝে মাঝে আসেন একদিন কি দুদিন থেকে প্রকৃতির বিশুদ্ধতা অনুভব করে আবার ফিরে যান, আবার কখনো কখনো কলকাতায় আসা নতুন লোকজন হোটেলে না থেকে এখানে থাকেন, দু ধরনের ব্যাবস্থাই এখানে করা আছে, গরমকালে পুকুরে স্নান করে ট্যুরিস্টরা যেমন শরীর ঠাণ্ডা করতে পারেন তেমনি বোটিংএর ব্যাবস্থাও রয়েছে এরসাথে নিরিবিলিতে একা কিংবা সঙ্গী বা সঙ্গীনির সাথে একান্তে সময় কাটানোর জন্য জায়গাও আছে সব মিলিয়ে বন্দোবস্ত খারাপ নয় যারা একবার এখানে এসেছে তাদের আবার আসতে মন চাইবেই। আনন্দ নিকেতনে ৪-৫ জন যুবতী এসেছে আজ এদের প্রত্যেকের বয়স ২৭-২৮ এর মধ্যে। চেকইন করে নিজেদের রুমে লাগেজ রেখে ব্রেকফাস্টের জায়গায় যায়, ব্রেকফাস্ট সারার পরে সাইট ভিজিটের উদ্দেশ্যে বেরোয়। দেখার মধ্যে রিসর্টের নিজস্ব বাগান আছে, এছাড়া বাইরে নারায়ণতলা গ্ৰামটা আছে যেখানে এখনো কিছুটা পল্লীগ্ৰামের ছাপ দেখা যায় পুরনো মন্দির, খোলা মাঠে বাচ্চাদের খেলা, গরু চরা এইসবই। যুবতীরা বাইরে বেরিয়ে গ্ৰাম দেখতে বেরোলো তাদের চোখেমুখে যে উত্তেজনা আর আনন্দ সেটা দেখলে যেকেউ বলে দেবে যে এই যুবতীদের এটাই প্রথম গ্ৰাম দর্শন। যুবতীদের মধ্যে সবাই নিজেদের মধ্যে হাসি ঠাট্টা করছে, কথা বলছে শুধু একজন ছাড়া তার মুখে যে হাসিটা সেটা যে কৃত্তিম সেটা আর বলে দিতে হয় না, সে কথাও বলছে কম। "তোর কি হয়েছে বলতো?" অন্য একজন যুবতী জিজ্ঞেস করলো, উত্তরে আগের জন "কিছুনা" বলে এড়িয়ে যেতে চায় কিন্তু সেই যুবতী নাছোড়বান্দা, "এভাবে মনখারাপ করছিস কেন? ওটা একটা অ্যাক্সিডেন্ট ছিল ,ব্যাড লাক এতে তোর কিছু করার নেই, চিন্তা করিস না আবার নতুন কেস নিশ্চয়ই পাবি" "ওটা অ্যাক্সিডেন্ট নয় ওটা ইচ্ছাকৃত করা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে প্ল্যান করে মেয়েটাকে মেরে ফেলা হয়েছে" "তুই কিসের ভিত্তিতে একথা বলছিস, তোর কাছে কোনো প্রমাণ আছে?" "তুই ভালো করেই জানিস আমি যেটা বলছি সেটাই সত্যি, তুই জানিস যে মেয়েটা কাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিল" "জানি, আর এটাই তোকে বলতে চাইছি তুই যাদের বিরুদ্ধে লড়তে চাইছিস তারা অত্যন্ত পাওয়ারফুল, কলকাতার নামীদামী উকিলরা তাদের হাতের মুঠোয় সেখানে আমাদের মতো চুনোপুঁটি উকিলরা তাদের কিছুই করতে পারবো না" "কিন্তু তাই বলে তারা এরকম একটা অপরাধ করেও পার পেয়ে বেরিয়ে যাবে?" "এর আগেও বেরিয়েছে, আলিপুর কোর্টে ওদের বেকসুর খালাস করেছিল" "সেটা তো মিথ্যা সাক্ষীর জন্য" "তোকে বললাম যে ওদের অনেক ক্ষমতা" প্রথম যুবতী চুপ করে করাটার সত্যতা স্বীকার করলেও তার মুখ দেখে বোঝা যায় যে সে মন থেকে এটা মানতে পারছে না। দ্বিতীয় যুবতী বোধহয় সেটা বুঝতে পারলো সে বললো, "আপাতত ওসব ছাড় এখানে ঘুরতে এসেছি, তাই ওসব নিয়ে মনখারাপ করিস না নাহলে এখানে আসাটা মাটি হয়ে যাবে"। প্রথম যুবতী আর কোনো কথা না বললেও তার মুখে হাসি ফুটলো না সে চুপচাপ চলতে থাকে, বান্ধবীর মুখ তখনও গম্ভীর দেখে দ্বিতীয় যুবতী বললো, "তোকে সত্যিই আর বুঝিয়ে পারা যাবে না, এখনো গম্ভীরমুখে আছিস" "ওটা মাথা দিয়ে বেরোচ্ছেই না" "কারণ তোর মাথায় আর কিছু থাকে না, কতদিন বলেছি একটা প্রেম কর শুনবি না তাহলে অন্তত বয়ফ্রেন্ডের কথা মাথায় ঘুরলে এই কেসের কথা ভুলে যেতি"। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
24-04-2023, 12:51 AM
Ei aktu te to mon vorlo na dada
My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone.
24-04-2023, 01:18 AM
লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু। তবে এখনো হয়তো পাপের ঘড়া ভর্তি হবার বাকি আছে।
তাদের বধিবে যে আড়ালে বাড়িছে সে। তবে ভীলেন তো অনেক একা একা পারবে তো?? নতুন মেয়ে উকিল টকই বা কে? জানতে হবে। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
24-04-2023, 08:03 AM
(24-04-2023, 12:51 AM)Patrick bateman_69 Wrote: Ei aktu te to mon vorlo na dadaশব্দ লিমিট অতটুকুই আর দুটো আপডেট দেওয়ার মতো লেখা হয়নি (24-04-2023, 01:18 AM)nextpage Wrote: লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু। তবে এখনো হয়তো পাপের ঘড়া ভর্তি হবার বাকি আছে। সময় না হলে নিয়তি কারো সামনে এসে দাঁড়ায় না আর সময় হলে তাকে আটকানো যায় না। নতুন মেয়েটা কে সেটা দেখা যাক। তবে লাইক আর রেপু এত কম যে মাঝে মাঝে সত্যিই আর লিখতে ইচ্ছা করে না। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
24-04-2023, 09:02 AM
চমৎকার আপডেট ৷ মহিলা উকিল মনে হয় পিয়ালী সরকার৷ রেপু শেষ পরে দিয়ে দেব,দয়া করে এত সুন্দর গল্প বন্ধ করবেন না ৷
24-04-2023, 09:46 AM
(24-04-2023, 09:02 AM)bad_boy Wrote: চমৎকার আপডেট ৷ মহিলা উকিল মনে হয় পিয়ালী সরকার৷ রেপু শেষ পরে দিয়ে দেব,দয়া করে এত সুন্দর গল্প বন্ধ করবেন না ৷ ধন্যবাদ চেষ্টা করি লেখা বন্ধ না করতে কিন্তু ক্রমাগত এভাবে রেপু আর লাইক না পেলে একটা সময় আর ইচ্ছা করে না। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
24-04-2023, 03:07 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
24-04-2023, 09:21 PM
पिक्चर अभी बाकी है मेरे दोस्त .. খেলা জমে গেছে .. চলতে থাকুক সঙ্গে আছি।
24-04-2023, 09:43 PM
আপনার এই ধূসর পৃথিবী আমার চোখে এতদিন পড়েনি কেন কে জানে! বহুদিন পর এমন একজনকে পেলাম যে এই ঘরানার লেখা লিখতে জানে। যদিও আজ পার্ট ওয়ানের অংশের কিছুটা পড়লাম কিন্তু তাতেই বুঝতে পারছি এই কলমে যাদু আছে। হয়তো পরের পার্টগুলোতে পৌঁছতে বেশ দেরী হবে কিন্তু অতীতের সিঁড়ি বেয়ে বর্তমানকে ধরবই। তবে তার আগে যেটা না বললেই নয় সেটা হচ্ছে আপনার কলমে বর্ণনা দেওয়ার মুন্সীয়ানা! খুব কম লেখক পারেন স্রেফ কথার উপর কথা চাপিয়ে মূর্ত ছবি তুলে ধরতে আর সেটাই একটা খাঁটি লেখকের জাত চেনায়। এই অধম আপনার কলমকে কুর্ণিশ জানাচ্ছে মহাশয়। চলুন আপনার ধূসর পৃথিবীর আনাচে কানাচে একটু ইতিউতি উঁকি মারি।
24-04-2023, 09:48 PM
(24-04-2023, 09:21 PM)Bumba_1 Wrote: पिक्चर अभी बाकी है मेरे दोस्त .. খেলা জমে গেছে .. চলতে থাকুক সঙ্গে আছি।অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা (24-04-2023, 09:43 PM)মহাবীর্য দেবশর্মা Wrote: আপনার এই ধূসর পৃথিবী আমার চোখে এতদিন পড়েনি কেন কে জানে! বহুদিন পর এমন একজনকে পেলাম যে এই ঘরানার লেখা লিখতে জানে। যদিও আজ পার্ট ওয়ানের অংশের কিছুটা পড়লাম কিন্তু তাতেই বুঝতে পারছি এই কলমে যাদু আছে। হয়তো পরের পার্টগুলোতে পৌঁছতে বেশ দেরী হবে কিন্তু অতীতের সিঁড়ি বেয়ে বর্তমানকে ধরবই। তবে তার আগে যেটা না বললেই নয় সেটা হচ্ছে আপনার কলমে বর্ণনা দেওয়ার মুন্সীয়ানা! খুব কম লেখক পারেন স্রেফ কথার উপর কথা চাপিয়ে মূর্ত ছবি তুলে ধরতে আর সেটাই একটা খাঁটি লেখকের জাত চেনায়। এই অধম আপনার কলমকে কুর্ণিশ জানাচ্ছে মহাশয়। চলুন আপনার ধূসর পৃথিবীর আনাচে কানাচে একটু ইতিউতি উঁকি মারি। প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই অধমের এই প্রচেষ্টায় সঙ্গে থাকার জন্য । আর অপেক্ষায় থাকবো কবে শেষ করে ফাইনাল রিভিউ দেবেন সেটার I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
|
« Next Oldest | Next Newest »
|