09-03-2023, 09:37 PM
অপূর্ব
Non-erotic সৌরভ
|
09-03-2023, 09:47 PM
দুপুরের খাওয়ার সময় দেখা হলো মতিনের চাচার সাথে , যার মেয়ের নাম নিলুফার । জীবনে এই প্রথম নিজেকে চোর চোর লাগছিলো । লোকটার বয়স বেশি না ৫০ ও হবে না মনে হয় । আমার সাথে হয়ত খুব বেশি হলে ১৫ বছরের তফাৎ । অথচ এই লোকের মেয়ে কে বিয়ে করার জন্য আমাকে নিয়ে আসা হয়েছে । এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে?
নিলুফারের বাবার নাম নাইম শেখ , শক্ত পোক্ত শরীর । বেশ কালো দেখতে গোঁফ আছে , তাতে মনে হয় কলপ করা , কারন মানুষের গোঁফ এতো কালো হয় না । লোকটা আমাকে সুইয়ের মত দৃষ্টতে দেখছে । এমন দৃষ্টির সামনে খাওয়া যায় না । আমি খেতেও পারলাম না । যদিও নাইম শেখ বার বার আমাকে খাওয়ার জন্য জোড় করেছেন । “ আপনে করেন কি বাবাজী” খাওয়া শেষে পান খেতে খেতে প্রশ্ন করলেন নাইম শেখ , এই বাবাজী শব্দটা আমার একদম পছন্দ হলো না । উত্তরে কি বলবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না , আমি তো কিছুই করি না । অবশ্য আমার হয়ে মতিন জবাবা দিলো , “চাচাজি ওর তো বিশাল সহায় সম্পত্তি , সেইগুলা দেখা শুনা করে” চট করে একবার মতিনের দিকে চাইলাম , মতিন এর চোখে আবেদন , আমি যেন উল্টো পাল্টা কিছু না বলি । মতিন কে কি বলবো , আমার নিজের উপরেই আমি বিরক্ত । আমি যে কিছুই করি না ভাড়া তুলে খাই সেটা বলতে আমার বাধলো কেন আমি বুঝতে পারছি না । মনে একটা আশংকা এলো , আমি কি সাবকনশাস ভাবে বিয়ে করতে চাচ্ছি? যদি নাই চাইতাম , তাহলে তখন সফিকুল সাহেবের কাছে নিলুফারের কথা জানতে চাইলাম কেনো ? আমি ছোট বাচ্চা নই , চাইলেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে একটা ভ্যান নিয়ে বাস স্টেশন গিয়ে একটা বাস ধরে চলে যেতে পারি । অথবা চাইলেই নাইম শেখের কাছে নিজের সত্যি কথা বলে বিয়ে ভেস্তে দিতে পারি । কিন্তু কিছুই আমি করছি না । মতিনের দোষ দিয়ে বসে আছি । “ব্যাবসা বাণিজ্য কিছু করেন না?” নাইম শেখের কণ্ঠে একটা অদৃশ্য আশ্চর্য বোধক চিহ্ন আছে , “ সময় নাই চাচা জান , সব দেখা শুনা করতে করতে সময় শেষ , আর করবো কার জন্য , বাড়িতে তো কেউ নাই , বাবা মা মারা গেসে অনেক আগে , তিন বোন আছে সবার বিয়া হইয়া আলাদা আলাদা “ এবারো মতিনের চট জলদি উত্তর , আমি এখনো আমার মনে লুকিয়ে থাকা সেই সৌরভ কে খুঁজে যাচ্ছি , তার মুখোমুখি হওয়া খুব দরকার আমার । সে কেনো সব জেনে বুঝে চুপ করে আছে , সেটা জানা অতিব জরুরি আমার জন্য । “আহারে” একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেললেন নাইম শেখ , তারপর বললেন “ আমিও একলা আসিলাম বাবাজী , তেমন কিছুই আসিলো না আমার , একলা থাকোনের কষ্ট আমি বুঝি , কম বয়সে বিয়া করসি , উপরওয়ালার কৃপায় , আপনের চাচির উসিলায় এই সব হইসে , ঘর ভর্তি মানুষ হইসে” লোকটা আর আমার দিকে সুচালো দৃষ্টিতে তাকিয়ে নেই , এনার মেয়ের জামাই পছন্দ হয়েছে । ওনার দৃষ্টিতে এখন দরদ , একা আমির প্রতি উনি এখন সহানুভূতি দেখাচ্ছেন । গলা শুকিয়ে এলো আমার , কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছি না , লুকিয়ে থাকা সৌরভ আমাকে বার বার টেনে ধরছে । ওই সৌরভের আশা যে নাইম শেখের মতন একদিন আমার ও সব কিছু হবে । বাড়ি ভর্তি মানুষ হবে , আমিও একদিন এমন দুপুরের খাবার খেতে বসে মেয়ে জামাই কে আমার অতিতের কথা বলবো । <><><> “ভাই সাহেব , গ্রাম কেমন লাগলো” সামনে সফিকুল সাহেব দাড়িয়ে , সন্ধার পর আমি বাহির ঘরের দাওয়ায় বসে আছি , সারাদিন গ্রামে উপভোগ করার মত অনেক জিনিস থাকলেও সন্ধার পর সময় কাটতে চায় না । মতিন অ সাথে নেই , ভেতর বাড়ি গেছে , হয়ত আমাকে নিয়েই আলোচনা হচ্ছে । আমি দাওয়ায় বসে আমার করনিয় নিয়ে ভাবছিলাম , না বলে চলে যাবো স্থির করেও রয়ে গেছি । দোষ চাপিয়েছি মতিনের ঘাড়ে । মন কে বলেছি এখন না বলে চলে গেলে মতিনের অসম্মান হবে । “ সন্ধার পর বোরিং লাগে , তবে দিনের বেলা ভালো , আপনাকে সারাদিন দেখলাম যে?” কথা বলার একজন সঙ্গী পেয়ে ভালো লাগলো । সফিকুল সাহেব নিজে তেমন কথা না বললেও কথার উত্তর দেয় । “ হ্যাঁ ভাই সাহবে গ্রামের এই দোষ আছে , তবে আমার সময় কাটানোর চিন্তা করতে হয় না , সন্ধার পর ছেলে পেলে পড়তে আসে , তারপর এসার নামাজ পরা তারপর খাওয়া দাওয়া ঘুম হে হে হে হে” আমি চমকে একবার সফিকুল সাহেবের দিকে তাকালাম , এই প্রথম লোকটা নিজের ইচ্ছায় এতো কথা বলল , আমি ওনাকে প্রশ্ন করিনি , উনি নিজে থেকেই বলেছে , আবার উচ্চ শব্দে হেসেছেন । “ আমাদের জীবন এই গ্রামের মতন ই বোরিং বুঝলেন ভাই সাহবে” আমাকে আরও আশ্চর্য করে দিয়ে বললেন সফিকুল সাহেব । উনি এখন আমার পাশে দাওয়ায় বসেছেন , আতরের গন্ধ ভরে গেছে চারপাশ , বেশ মিষ্টি আতরের গন্ধ । আমি ভাবলাম হয়ত লোকটাকে চিনতে আমার ভুল হয়েছিলো উনি স্বল্প ভাষী নন , তবে একটু সময় লাগে নিজেকে খুলতে । “ আপনি জনাব নামাজ পড়েন না?” প্রশ্নটা করে আমার উত্তরের অপেক্ষায় রইলেন না নিজের আবার বললেন “নামাজ পড়বেন , নামজ পড়লে মন ফুরফুরা থাকে , অনেকে বলে বিপদ আপদ থাকে না , তবে আমি এইসব বলি না , বিপদ আপদ মানুষ নিজে তৈরি করে , তাই নামাজের সাথে এর যোগাযোগ নাই , পারথনা সাথে মনের সম্পর্ক” লোকটা কথা আমার খুব ভালো লাগলো । “ আপনি কি বিবাহের জন্য আসছেন? নিলুফার মেয়ে ভালো , এই বাড়ির সবাই ভালো লোক” আমি চুপ করে রইলাম , লুকিয়ে থাকা সৌরভ লুকানো থেকেই কিভাবে যেন আমাকে বলে দিয়েছে বিয়ের কথা উঠলেই চুপ থাকতে হবে । “ তবে আপনার বন্ধু বেশি ভালো মানুষ না , উনাকে আমি পছন্দ করি না , বেগানা মেয়ে ছেলে নিয়া থাকে স্বামী ইস্তির মতন, চাইলেই বিবাহ করে ফেলতে পারে কিন্তু করে না এইট হলো ওনার ধৃষ্টতা এটা ভালো মানুষের কাজ না ” “ গিবত করলাম , মাফ করে দিবেন , কাজটা ঠিক হয় নাই , ভাই সাহেব আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে তাই একটু সাবধান করলাম” “ না না ঠিক আছে” যদিও মুখে বললাম ঠিক আছে কিন্তু সফিকুল সাহেবের দিকে নতুন করে তাকালাম , লোকটার মুখে এখনো হাসি , কিন্তু সেই হাসি এখন আর মন কে শান্ত করছে না । মনে হচ্ছে এই হাসি আসল হাসি নয় , এর পেছনে অন্য কোন কথা লুকানো আছে । “ ভাই সাহেব আপনাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে , এরা আপনাকে জামাই হিসেবে পেলে অনেক ভাগ্যবান হবে” সফিকুল সাহেবের কথার মাঝে এমন কিছু ছিলো যে মনে হচ্ছে সে আমার ভেতর বাহির সব দেখতে পাচ্ছে । ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে উনি বলতে চাইছে , নিজের একটা কালো অধ্যায় লুকিয়ে রেখে আমি সুন্দর মলাট করা বই সবার সামনে দেখিয়ে যে পাপ করছি সেটা উনি ধরে ফেলেছেন । “ আপনাকে পছন্দ করি বলেই আরও একটা কথা বলবো , যদিও এরা আমাকে আশ্রয় দিয়েছে , আর এইটা গিবত না , এক মাত্র বিয়া শাদির ক্ষেত্রে মানুসে দোষ গুন বলা যায়, এই মেয়ে কিন্তু কুমারি না ভাই সাহেব” “ সফিকুল সাহেব আর বলবেন না প্লীজ” হঠাত আমার রাগ হলো এই সফিকুল সাহেবের উপরে । আমি উঠে চলে গেলাম ঘরের ভেতরে । রাতের খাবার আমি আর মতিন করলাম , নাইম শেখ থাক্লেন না আমাদের মাঝে । তবে একজন চল্লিশ এর কাছা কাছি বয়স্ক মহিলা , যার বয়স আমার বড় আপার সমান হবে , পর্দার আড়ালে বসে আমাদের খাওয়া তদারকি করতে লাগলেন । মহিলা আমাদের সামনে বসা কিশোর ছেলেটিকে ডিরেকশন দিচ্ছেন আমাকে কি কি বেড়ে দিতে হবে । এমন কি মহিলা এও জানেন আমি সকালে আর দুপুরে কিছুই খেতে পারিনি । উনি যদিও আমার সামনে আসেন নি তবুও ওনার আচরন আমার কাছে খুব আন্তরিক মনে হয়েছে । এই প্রথম সুধু আমার মনের ভেতরে লুকানো সৌরভ ছাড়াও আমার মনে হতে লাগলো হলে মন্দ কি? <><><>
09-03-2023, 10:24 PM
সারা রাত নিজের সাথে এক প্রকার যুদ্ধ করেই কেটেছে , এই যুদ্ধে কখনো মতিন আমার সঙ্গী , কখনো সফিকুল সাহেব , কখনো নাইম শেখ , কখনো পর্দার আড়ালে সেই মমতাময়ী । একবার একদিকের পাল্লা ভারী হয়ত অন্যবার ওদিকের পাল্লা । সারা রাত্র তেমন ঘুম হয় নাই । যখনি ঘুম ভেঙ্গে উথেছি , সফিকুল সাহেবের ঘর থেকে গুন গুন শব্দ শুনতে পেয়েছি ।
সকালে বেশ বেলা করে ঘুম থেকে উঠলাম , মতিনের দেখা নেই । বাথরুমে যাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়লাম , কি করবো ভাবছি তখন গতকালের দেখা দুই কিশোরের একজন এসে হাজির হলো । আমাকে জিজ্ঞাস করলো বাথরুমে যাবো কিনা । বাথরুমে যেতে যেতে পর্দার আরেলে কয়েক জোড়া চোখের উপস্থিতি টের পেলাম । মনের মাঝে একটা প্রশ্ন এলো , এই চোখ জোড়ার মাঝে কি একটা জোড়া নিলুফারের ? আচ্ছা এতো কিছু হচ্ছে কিন্তু এখনো তো এই জানা হলো না যাকে আমার সাথে জুড়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে সে কি ভাবছে । মুহূর্তে গত রাতের সব যুদ্ধ আমার কাছে মূল্যহীন মনে হলো । “তোমার নাম কি “ পাশে চলতে থাকা ছেলেটাকে জিজ্ঞাস করলাম , আসলে পর্দার আড়ালের চোখ গুলো থেকে মন অন্যদিকে নেয়ার জন্যই কথা বলছি । “ আমার নাম নিলয় , আমি নিলুফারের ছোট ভাই” আপনাতেই ঠোঁটে মুচকি হাসি চলে এলো আমার , ছেলেটি নিজেকে নিলুফারের ছোট ভাই হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে আমার কাছে । ব্যাপারটা বড় অধভুত , একটা মেয়ের মাধ্যমে একটা বাড়ির সব লোকের সংগে বাইরের আরও একটা লোকের সম্পর্ক তৈরি হয় । কেউ নিলুফারের ভাই , কেউ বাবা , কেউ মা । গতরাতের সফিকুল সাহেবের কথা মনে পরে গেলো , লোকটাকে সকালে দেখলাম না । উনি কি সত্যি কথা বলেছেন ? মেয়েটার কি আরও বিয়ে হয়েছিলো ? এই ধরনের কথা বলে সফিকুলের কি লাভ ? বাথরুমে বসেও সফিকুলের বলা কথা গুলই ভাবতে লাগলাম । সকালের নাস্তা মতিন কে ছাড়াই হলো , আবার সেই মমতাময়ীয় নারী পর্দার আড়ালে থেক আমার খাওয়া পরিচালনা করলেন । হ্যাঁ পরিচালনাই বলতে হয় । উনার কথা ফেলতে পারলাম না একটাও । না উনাকে দেখে আমার মায়ের কথা মনে হয়নি । এটা অন্য কিছু , অন্য ধরনের মমতা । গলায় একটা ভারী বস্তু আটকে যায় এই মমতায় , মায়ের মমতায় এই সাইড ইফেক্ট নাই । <><><> মতিনের জন্য অপেক্ষা করছি বসে বসে , কিন্তু ওর দেখা নেই । বসে বসে বোর হচ্ছি , এমন কি সফিকুল লকটাকেও দেখলাম না । এই সফিকুলের প্রতি আমার মিশ্র অনুভুতি । লোকটা এমন কেন কে জানে । গত সন্ধায় এমন সব কথা বলল যে কিছুতেই লোকটার চরিত্রের সাথে মিল খাওয়াতে পারছি না । আমার মোবাইল বেজে উঠলো , মেঝ আপা কল করেছে , “ হ্যালো , সৌরভ … তুই নাকি বিয়ে করছিস!!!!!!!!!” মেজো আপার কথায় প্রস্ন বোধক চিহ্ন নেই , অনেক গুলো আশ্চর্য বোধক চিহ্ন কথার শেষে । আমি দ্রুত একবার আশপাশ তাকিয়ে দেখলাম , কেউ আছে কিনা । আমার মনে হচ্ছে মেঝ আপার কথা মোবাইল সেটের বাইরে থেকেও শোনা যাবে । “ কে বলল?” আমি জিজ্ঞাস করলাম “ তুই আমাদের এতো পর ভাবিস!!!!!! কোথাকার কোন মেয়ে গছিয়ে দিচ্ছে , তোর দুলাভাই কে নিয়ে গেলে পারতিনা!!!! তুই বিয়ে করবি এটা আমরা সবাই চাই , আমরা কি তোর পর!!!!!” মেঝ আপা কাঁদছে , হ্যাঁ কাঁদছে । কি বলবো বুঝতে পারছি না , সবচেয়ে আশ্চর্য লাগছে কে বলল ওকে এই কথা । “ঠিকানা দে আমি আসছি , তুই একলা কেনো বিয়ে করবি তোর কি কেউ নাই নাকি? আমাদের ভাইয়ের বিয়ে আর আমরা থাকবো না , তুই আমাদের পর ভাব্লেও আমরা ভাবি না, তুই ঠিকানা দে , এক্ষুনি দে” “ না আপা আমার বিয়ে না , আমি আজকেই ঢাকা চলে আসছি , বিশ্বাস কর” নিজের কাছে নিজেকে চোর মনে হচ্ছিলো । কথাটা যে ১০০ ভাগ সত্যি না সেটা আমি জানি । আমার বিয়ের কথা হচ্ছে , এবং আমি মোটামুটি রাজি । <><><>
10-03-2023, 09:54 AM
সুন্দর এবং লম্বা আপডেট বহুদিন পর। লেখা নিয়ে আর কি বলবো , জাদু আছে তোমার কলমে।
10-03-2023, 03:01 PM
15-03-2023, 07:00 AM
15-03-2023, 04:42 PM
(This post was last modified: 15-03-2023, 04:47 PM by cuck son. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(15-03-2023, 07:00 AM)ddey333 Wrote: চলুক , আমিও দেখিনাই , নাম ই শুনলাম এই মাত্র কেউ পড়ুক বা না পড়ুক , গল্প শেষ হবেই ...... যদি বেঁচে থাকি ওহ একটা কথা । একটা ঘটনা ঘটে গেছে , ব্যাপারটা বেশ আনন্দের । কিছুদিন আগ পর্যন্ত আমার মনে একটা দুঃখ ছিলো। সবার গল্প অন্য সাইটে কপি হয় । কিন্তু আমার কোন গল্প কেউ কপি করে পোস্ট করে না । এটা আমাকে খুব মর্ম পিড়া দিতো । তবে এই দুঃখ ঘুচেছে ।
15-03-2023, 05:23 PM
26-03-2023, 05:43 AM
(This post was last modified: 26-03-2023, 05:43 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
সম্পর্কেরা হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চাইলে
বহুদিন না ফোটা ফুল গাছে ফুল আসে, বন্ধু কেউ ভালোবেসে কাঁধে হাত রাখলে 'অন্তর্দহন' শূন্যতা আঁকতে আঁকতে ছুটি নেয়! যে মেয়েটাকে দীর্ঘ দশ বছর ধরে ভালোলাগে, পরকীয়ায় মাখামাখি মেনে নিতে পারিনি বলে কফিসপে ম্যাচুওরড প্রেমের হাত রাখতে পারিনি তার হাতে । এখন ভোর বেলা উঠি, গাছে জল দিই পাখিদের দানা দিই, কাঠবিড়ালীদের বাদাম, এখন ওরাই আমার সুখ দুঃখের জিয়নকাঠি। অফিসের ব্যাগ বইতে বইতে গাছের পাতা ঝরে যায়, বসন্তের ফেলে আসা ফুলও বিবর্ণ হয় পাতাঝরা হৈমন্তিক সন্ধ্যার মতো কঙ্কাল সার ভাবনারা দাঁড়িয়ে থাকে জানালার ক্যানভাস জুড়ে।
30-03-2023, 09:09 PM
আজকে মুক্তি পেলাম , পরাধীন ঘরকে আবার স্বাধীন সার্বভৌম হিসেবে পেলাম । ফিরে আসছি জলদি জলদি করে । আর আমাকে দাবিয়ে রাখা যাবে না ।
30-03-2023, 09:22 PM
(30-03-2023, 09:09 PM)cuck son Wrote: আজকে মুক্তি পেলাম , পরাধীন ঘরকে আবার স্বাধীন সার্বভৌম হিসেবে পেলাম । ফিরে আসছি জলদি জলদি করে । আর আমাকে দাবিয়ে রাখা যাবে না । ফিরে এসেই সৌরভের বিয়েটা লাগিয়ে দাও তো দেখি। তবে তবে তার আগে একটু নিলোফার কে দেখিও আমাদের। দেখি কেমন মেয়ের সাখে ব্যাটা সৌরভের হাঙ্গা টা হচ্ছে। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
30-03-2023, 09:26 PM
30-03-2023, 09:53 PM
30-03-2023, 10:46 PM
সন্ধার সময় আবারো চারিদিক নিস্তব্দ , ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের শব্দ অবশ্য আছে । কিন্তু গত দুই দিনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি । এই শব্দটাকে আর আলাদা কিছু মনে হয় না । মনে হয় এটা গ্রাম্য সন্ধার নিস্তব্দতার একটা অংশ । এতো দ্রুত এই ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দের সাথে মানিয়ে নেয়া কি কোন কিছু ইংগিত করছে ? আমার কাছে কিন্তু তাই মনে হচ্ছে । মনে হচ্ছে আমার মন শরীর আপোষ করতে চায় । যেই আপোষ আমি লীলার জন্য করতে পারিনি সেই আপোষ এখন বিনা সর্তে কবুল করতে রাজি আছে আমার মন ।
বার বার “আমার মন” “আমার মন” বলছি , আমার মন কি আমি নই ? এসবের মুলেই কি আমি নই । মতিন সুধু ট্রিগার টিপে দিয়েছে । বাকি সবটাই তো আমি করছি । ধরি মাছ না ছুই পানি টাইপ একটা স্ট্রাটেজি আমি ফলো করছি । দোষ চাপাচ্ছি মতিনের ঘাড়ে । আচ্ছা সফিকুল লোকটা কই ? আজকে সকাল থেকেই লোকটাকে দেখলাম না । মতিন ও নেই , হচ্ছে টা কি আমার চারপাশে । আর আমিও সারাদিন কি সুন্দর কাটিয়ে দিলাম ! এসব নিয়ে চিন্তাই করলাম না । মতিন আমাকে এভাবে একা ফেলে কোথায় যাবে । ওর কি চিন্তা হচ্ছে না যে আমি পালিয়ে যেতে পারি !! নাকি ও বুঝে গেছে আমি পালাবো না । এতটাই কি প্রকাশ পাচ্ছে আমার ইচ্ছা !!! আর সফিকুল উনিও আর এলেন না আমার সামনে । হয়ত লোকটা লজ্জা পাচ্ছে । গত রাতে উনিও ঘুমান নি , সারারাত গুন গুন করেছনে । যতবার ঘুম থেকে উঠেছি ততবার আমি ওনার শব্দ পেয়েছি । আমি নিশ্চিত ধর্ম গ্রন্থ আওড়াচ্ছিলেন । লোকটা কি লজ্জিত , পাপ করেছে ভেবে সারা রাত ঘুম হয়নি ওনার? তাহলে আমার কেন ঘুম হয়নি ? আমিও পাপ করছি এই ভেবে কি? কিন্তু কি পাপা করছি আমি ? আমার শরীরে অধভুত এক রোগ আছে , সেটা কাউকে বলছি না এটাই আমার পাপ । আমার এখন কি করা উচিৎ ? চলে যাওয়া ? সেটাও কি ভালো কাজ হবে? না মনে হয় ? ইচ্ছা হচ্ছে মেয়েটার সাথে একবার দেখা করি , দেখা করে বলি , জানো আমার একটা কঠিন রোগ আছে , কিন্তু এই রোগ প্রাণঘাতী নয় । মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যাই । মতিনের বিশ্বাস তোমার সাথে বিয়ে হলে আমার রোগ সেরে যাবে । আজকাল আমার ও তাই মনে হচ্ছে । মেয়েটা কি করবে ? বাড়িতে গিয়ে সবাইকে বলে দেবে নিশ্চয়ই? গ্রামের মেয়ে বয়স কম , এর চেয়ে বেশি আর কি বা আশা করা যায় । আচ্ছা এতটা ডেস্পারেট কেনো হচ্ছি আমি ? লীলার সময় তো এমন মনে হয়নি ? লীলা তো চলে এসেছিলো , আমিই ওকে দূরে ঠেলে দিয়েছিলাম । ভেবেছিলাম মেয়টা কেন সারা জীবন দুঃখ করবে । তাহলে নিলুফারের জন্য আমার সেই ধরনের সহানুভূতি কাজ করছে না কেনো? আমার এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে কি সফিকুলের কাছ থেকে শোনা ওই কথাটার কোন প্রভাব আছে? ওই কথা শোনার পর কি আমি মন স্থির করেছি যে আমি বিয়ে করবো, খুঁতে খুঁতে কাটাকাটি । আচ্ছা মেয়েটি কুমারি নয় এটা কি কোন খুঁত? কুমারিত্ব যদি খুঁত হয় তাহলে তো আমার ও সেই খুঁত আছে । আমার খুঁত দুইটা হলো তাহলে । খুঁতে খুঁতে কাটাকাটি হয়েও একটা অবশিষ্ট রয়ে গেলো । তাহলে কি আমার এই বিয়ে করা ঠিক হবে ? হঠাত পেছন থেকে ডাক শুনলাম “এই যে শুনছেন” । পেছন দিকে তাকিয়ে দেখলাম কিশোর ছেলেটি দাড়িয়ে যে নিজেকে নিলুফারের ভাই হিশেবে পরিচয় দিয়েছিলো । ছেলেটি একটু দুরে আবছা আলোতে দাড়িয়ে , আমি নিজেকে দেখিয়ে ইশারা করলাম । আমাকেই ডাকছে কিনা শিওর হয়ে নিলাম । নিলুফারের ভাই ও ইশারাতেই উত্তর দিলো , হ্যাঁ আমাকেই ডাকছে। বুঝলাম উঠে যেতে হবে আমাকে , ছেলেটা আমার কাছে আসবে না । ছেলেটার আচরণে একটা লুকুচুরি ভাব আছে , মনে হচ্ছে সে কোন এডভেঞ্চারে নেমেছে । এবং সেই এডভেঞ্চারের আমিও একটা অংশ । উঠে গেলাম ছেলেটির কাছে , বসে বসে এসব ভাবার চেয়ে এডভেঞ্চারে অংশগ্রহণ করা ভালো । “আপনি একটু আমার সাথে আসেন” এর বেশি আরও কোন কথা বলল না কিশোর ছেলেটি । আশেপাশে একবার তাকিয়ে নিলো কেউ দেখছে কিনা দেখে নিলো । ছেলেটির এমন সতর্কতা আমাকেও আক্রান্ত করলো ছোঁয়াচে রোগের মতন । আমিও একবার চারপাশ দেখে নিলাম , নাহ কেউ দেখছে না আমাদের । আমি ছেলেটির পেছন পেছন হাঁটছি , আমার মনে প্রশ্ন থাকলেও করতে সাহস পাচ্ছি না । মনে হচ্ছে এখন কথা বলার মুডে নেই নিলুফারের ভাই , কথা বললেই এডভেঞ্চার শেষ । শেষে ছেলেটি আমাকে একটি নিরব জংলা জায়গায় নিয়ে এলো । সেখানে আগে থেকেই একজন উপস্থিত আছেন । মাঝারি গড়নের মাথায় ওড়নার ঘোমটা দেয়া একজন নারী । কিশোর ছেলেটি আমাকে সেখানে পৌঁছে দিয়ে একটু দুরে চলে গেলো । আমি দাড়িয়ে রইলাম সেই নারী মূর্তির সামনে । “ আমার নাম নিলুফার , আপনার সাথে আমার বিয়ের কথা চলছে” প্রথমে কথা বলল সেই নারী । নাহ মতিনের কাছ থেকে নিলুফারের কথা শোনার পর যেমন কল্পনা করেছিলাম তার সাথে এই নিলুফারের কোন মিল নেই । নত মুখি গ্রামের লজ্জা রাঙ্গা মেয়ে এই নিলুফার নয় । বরং বিপরীত মনে হচ্ছে । এমন হঠাত করে এগিয়ে এসে এমন করে নিজের পরিচয় দেয়ায় আমি একটু ভরকেও গেলাম । মানুষ যেমন আশা করে তার বিপরীত কিছু দেখলে যেমন কিছুক্ষণের জন্য ভড়কে যায় তেমনি হলো । তাই কিছুক্ষন কিছু বলতে পারলাম না , কিছু একটা বলা উচিৎ সেটা বুঝতে পারছি , কারন নিলুফারের আয়ত চোখ দুটো আমার দিকে কোন কিছু শোনার প্রত্যাশা নিয়েই তাকিয়ে আছে। “আমি সৌরভ আহমেদ” সুধু এটুকুই বলতে পারলাম , “ জী আপনার নাম শুনেছি আমি , এবং আপনাকে চিনিও । এই দুই দিন আপনাকে দেখেছি আড়াল থেকে । আসলে আমি ভেবেছিলাম আপনি আমাকে দেখতে চাইবেন , অথবা কথা বলতে চাইবেন , কিন্তু আপনি এর কিছুই করলেন না , তাই দুটো কথা বলার জন্য আপনাকে এই কষ্ট দিলাম” বেশ লজ্জা পেলাম নিলুফারের কথায় । মেয়েটি কি আমাকে হাভাতে ভাবছে , একবার দেখতে চাওয়া কি উচিৎ ছিলো আমার? ছিঃ ছিঃ কি ভাবছে মেয়েটা , নিশ্চয়ই ভাবছে বিয়ে করার জন্য এতই উতলা হয়ে আছি যে , যাকে বিয়ে করার কথা হচ্ছে তাকে একটিবার দেখতে পর্যন্ত চাইলাম না , দুটো কথা বলে জানাশোনার ব্যাপার তো দুরের কথা । উল্টো উপায় না দেখে মেয়েটিই আমার সাথে দুটো কথা বলার জন্য ডেকে পাঠালো । উত্তরে কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না , এমন লজ্জায় মনে হয় কোনদিন পরিনি । একবার ভাবলাম বলি যে আমি এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেই নি , যদিও কথাটা আংশিক সত্য । কিন্তু এতটুকু বুদ্ধি আমার আছে যে এমন কথা সরাসরি বলা ঠিক হবে না । তাই দোষ কাটানোর জন্য বললাম “ আসলে আমি ভেবেছিলাম মতিন এলে একবার এই কথা বলবো” কথা শুনে নিলুফার একটু হাসল , মেয়েটির চেহারায় একি সাথে মায়া আর কাঠিন্য খেলা করে । হাসির কারনে কাঠিন্য কিছুটা কমজোর পরে গেলো । উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণনের মুখটা বেশ মায়াবতী মনে হলো । “ ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে যাবে , মতিন ভাই শহরে গিয়েছেন শপিং করার জন্য, আগামিকাল বাদ যোহর আমাদের বিয়ে” এবার একটু শব্দ করে হাসল নিলুফার । তবে এই হাঁসিতে মায়া নেই , বরং এই হাসির সময় ওর কঠিন অংশটা মায়ার উপর চড়াও হলো । “ তাই নাকি আমি তো এসবের কিছুই জানি না” বেশ অবাক হয়ে বললাম আমি । “ সেটা আমি কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম , মতিন ভাই এমনি , উনি আমার আব্বা আম্মা কে এমন ভাবে বুঝিয়েছেন যে আপনার অনেক লজ্জা , তাই আপনি দেখা দেখির মাঝ দিয়ে যাবেন না। তবে আমার লজ্জা একটু কম তাই আমার কিছু বলার আছে” “ আমিও কিছু বলতে চাই?” আমিও পিছিয়ে থাকতে চাই না , এমন ভাব ধরেই কথা গুলো বললাম । “ ঠিক আছে তাহলে বলুন” “ না না আপনি ই আগে বলুন” একবার ভাবলাম তুমি করে বলি , পরে সেই চিন্তা বাদ দিলাম “ ওকে ঠিক আছে , আমিই বলছি” এই বলে নিলুফার নিজের শরীরের ভার ডান পা থেকে সরিয়ে বাম পায়ের উপর দিলো , তারপর আবার বলতে শুরু করলো “ দেখুন মতিন ভাই অনেক মিথ্যা বলে , তবে আপনি যে সহজ সরল সেটা মিথ্যা বলেনি , সহজ সরল না হলে আপনি এই ঘটনা আগেই জেনে যেতেন , আমার একটা অতীত ইতিহাস আছে , ইতিহাস বলছি এ কারনে যে গ্রামের সবাই এটা জানে , এবং নতুন কেউ এলে তাদের কাছে বলে দেয় , আপনি কি করে বাদ গেলেন সেটাই অবাক করা ব্যাপার, আমি যখন উচ্চমাদ্ধমিকে পড়ি তখন একটা ছেলের সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো , এবং আমরা বাড়ির অমতে শহরে চলে গিয়েছিলাম , ছেলেটির সাথে আমার বিয়ে হয়েছিলো , এবং ছয় দিনের মত সেই বিয়ে স্থায়ী হয়েছিলো । সাত নাম্বার দিনের শুরুতে ছেলেটি সকালের নাস্তা আনার কথা বলে সেই বেরিয়েছিলো আর ফিরে আসেনি” নিলুফার কথা গুলো বলে বেশ অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে , অবাক হওয়ার কারন আমি কোন প্রতিক্রিয়া দেখাইনি। সফিকুল সাহেবের কাছে কিছুটা আগেই আমি শুনেছি । তাই ডিটেইল শুনে আমার তেমন কোন প্রতিক্রিয়া হলো না । “ আপনার ইতিহাস শুনলাম , তবে আমি যেটা বলবো সেটা ইতিহাস নয় , আমার বর্তমান , আমার একটা অসুখ আছে , অসুখটার নাম বলতে পারবো না , আমার মনে থাকে না । আমি মাঝে মাঝেই অজ্ঞান হয়ে যাই । মাঝে মাঝে দীর্ঘ সময় অজ্ঞান থাকি, মতিন নিশ্চয়ই এসব কথা আপনাকে বা আপনাদের বলেনি?” “ না বলেনি , আব্বা আম্মা কে বলেছে কিনা জানি না , আর বলে থাকলেও ওনারা হয়ত কিছু মনে করবে না” এইটুকু বলে থামল নিলুফার , তারপর আবারো বলতে শুরু করলো “ দেখুন আপনি অসুস্থ এটা জানার পর ও হয়ত আমার বাবা মা আপনার সাথে আমার বিয়ে দেবে , কিন্তু আমি এই বিয়ে করতে চাই না , দুই বছরে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে বিয়ে করার ইচ্ছা চলে গেছে , মেয়ে মানুষ হচ্ছে দুধের মতন , আর বদনাম হচ্ছে লেবুর রস । দুধের সাথে লেবুর রস মিশলে সেটা আর দুধ থাকে না , এমন নয় যে সেই দুধ ব্যাবহার করা যায় না , ব্যবহার করা যায় , তবে সেটা দুধ হিসেবে নয় ছানা , রসগল্লা , দই এসব নামে। ঠিক তেমনি মেয়ে মানুষের জীবনে একবার কলঙ্ক লাগলে তাকে বৌ করা যায় না , তবে অন্য আরও অনেক নামে তাকে ব্যাবহার করা যায়” গ্রামের মেয়ে নিলুফারের মুখে এমন কথা শুনে আমি একটু ভড়কে গেলাম দ্বিতীয়বারের মতন । আমি কি বলবো ভেবে নিচ্ছিলাম , এসব জানার পর ও তোমাকে বিয়ে করতে চাই । এই ধরনের কথা বলতে গিয়েও থেমে গেলাম । কেনো বলবো এমন কথা , এই মেয়েকে আমি চিনও না তার প্রতি এই ধরনের সহানুভূতি দেখানর কি মানে , অবশ্য যদি একে সহানুভূতি বলা যায় । একটা মেয়েকে চিনি না জানি না তার একটা অতীত ইতিহাস মেনে নিয়ে তাকে গ্রহন করা আমার কাছে বেশ বেখাপ্পা মনে হচ্ছে । কেন করব ? এই প্রশ্নটা বার বার মনে আসছে । আর যদি করিও , নিলুফার কি ভাবাবে ? ও কি আমাকে এটা করতে দেবে ? উত্তর টা নিলুফার নিজেই দিয়ে দিলো অবশ্য আমাকে আর চিন্তা করতে হলো না “ দেখুন , আপনি অনেক ভালো মানুষ বলে মনে হচ্ছে , হয়ত আপনি আমার অতীত জেনেও এই বিয়েতে রাজি হবেন , কিন্তু আমি নিজে রাজি না , আমি এই বিয়ে করবো না , বিয়ে আমি করবো না এমন নয় , হয়ত করবো , যদি এমন কারো সাথে কোনদিন দেখা হয় যার সাথে এমন সম্পর্ক তৈরি হয় ঠিক যেমন সমর্পক আমার ওই ছেলেটির সাথে ছিলো তাহলেই আমি বিয়ে করবো , তখন আমি আমার অতীত নিয়ে ভাব্বো না , আসলে ওটা ভাবার বিষয় ও না, কিন্তু সে জন্য সঠিক মানুষ দরকার , আপনি সেই সঠিক মানুষ নন” এই বলে নিলুফার আর দাঁড়ালো না , চলে গেলো । একটি বার ও পেছন ফিরে তাকালো না …… আমার বা হাত কাঁপছে , মাথা ঝিম ঝিম করছে , হ্যাঁ আমি সেই মানুষ নই …………
31-03-2023, 02:05 AM
আমি সে মানুষ নই
যে তোমাকে ভালবাসবে তোমাকে আগলে রাখবে। আমি সে মানুষ নই যে তোমার সুখে হাসবে দুঃখে চোখের জল মুছাবে। আমি সে মানুষ নই যে তোমার পথ চলার সাথী হবে হোচট খেলে শক্ত করে হাত ধরবে। আমি সে মানুষ নই। এমন আপডেট পেলে মন এমনিতেই জুরিয়ে যায়। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
31-03-2023, 02:11 PM
31-03-2023, 02:25 PM
01-04-2023, 07:20 PM
(30-03-2023, 11:02 PM)ddey333 Wrote: অসাধারণ , মাথা খারাপ করে দেয়া এসব আপডেট। (31-03-2023, 02:05 AM)nextpage Wrote: আমি সে মানুষ নই আপনাদের কমেন্ট পড়ে মাঝে মাঝে মনে হয় যারা এই গল্প পড়ছে না তারা বিরাট কিছু মিস করছে
01-04-2023, 08:23 PM
যখন জ্ঞান ফিরলো তখন আমি বিছানায় শোয়া , অপরিচিত বিছানা, কোথায় আছি বুঝতে কিছুক্ষন সময় লাগলো । প্রথম যে কথা মনে এলো সেটি হচ্ছে “আমি সে মানুষ নই” । কথাটা বেশ অধভুত তাই না ? একজন অপরিচিত মানুষের মুখে শুনেও ঠিক হজম করতে পারছি না ।
মতিন প্রথম আমার জ্ঞান ফেরা টের পেল । অমনি দ্রুত উঠে এলো আমার কাছে ঝুকে জিজ্ঞাস করলো “এখন কেমন আছিস?” উত্তরে কিছু বললাম না , সুধু মুচকি হাসলাম একটু । এই হাসির অর্থ ঠিক আছে সব কিছু । অবশ্য ঠিক না থাকার কিছু নেই । এই ঘটনার পর এই বাড়িতে আমার ঠিক বেঠিক বলে কিছু নেই । আশেপাশে একবার তাকালাম , মতিন ছাড়াও সফিকুল সাহেব কে দেখলাম । প্রথম দিন লোকটার চোখে মুখে যে কোমল সারল্য দেখেছিলাম সেটা আবার ফিরে এসেছে । আমাকে তাকাতে দেখে হাসিমুখে জিজ্ঞাস করলো “ ভাই সাহবে এখন কেমন বোধ করছেন?” আমি সফিকুল সাহেব কেও একি ধরনের হাসি দিয়ে উত্তর দিলাম । উনি উঠে এলেন , উনার একটা হাত আমার কপালে রাখলেন। তারপর বিড়বিড় করে কিছু আওড়ালেন , শেষে আমার শরীরে ফু দিয়ে দিলেন । সফিকুল সাহবের হাত বেশ শীতল। ওনার স্পর্শ বেশ ভালো লাগলো । মনে হচ্ছে আমার শরীর থেকে কিছুটা তাপ শুষে নিচ্ছে ওনার হাতের তালু । বুঝতে পারলাম জ্বর এসেছে । বেশ কিছুক্ষন পর সফিকুল সাহবে আমার কপাল থেকে হাত তুলে নিলেন । এমন সময় বাহিরে হট্ট গোল শুনতে পেলাম । একটা নারী কণ্ঠ বেশ উচ্চ স্বরে চেচাচ্ছে । কণ্ঠটা আমার পরিচিত , কণ্ঠটা মেজো আপার । “ আমারাও জানি সব কিছু , কি জিনিস আমার ভাইয়ের গলায় ঝুলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন সেটা আমরা জানি” এর পর নাইম শেখের গলা শুনতে পেলাম “ কথা বার্তা সাবধানে বলবেন কইয়া দিলাম , আমার মাইয়া যাই হোক মৃগী রুগির লগে বিয়া দেওনের আগে কাইট্টা নদীত ভাসাইয়া দিমু” বুঝলাম এই হট্টগোল অনেক্ষন যাবত হচ্ছে , আমি মতিনের দিকে তাকালাম , বেচারার মুখ পাংশু হয়ে আছে । আমি তাকাতেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো ওর বুক থেকে । বুঝলাম মতিন সব কিছুই গোপন করেছে , বেচারার জন্য কষ্ট হচ্ছে খুব । হয়ত মতিন ভালো মনে করেই এসব করছিলো । আমি মতিন কে কাছে ডাকলাম , বললাম “ চল , বের হই” মতিন কোন দ্বিরুক্তি করলো না , বলল “ঠিক আছে” এই রাতেই ভ্যান ডাকা হলো , বেশ দুর্বল লাগছিলো তাই আমি একটা ভ্যানে শুয়ে রইলাম , আমার পাশে বসে মেজো আপা । অন্য ভ্যানে মেজো দুলাভাই, সাদিক আর মতিন । ভ্যানে উঠতে সাহায্য করেছে সফিকুল সাহেব । যখন ভ্যান ছেড়ে দেবে তখন আমার হাত ধরে বলল “ ভাই সাহেব আপনি খুব ভালো মানুষ , আপনার সাথে অন্যায় করেছি , পারলে মাফ করে দিয়েন” আমার সাথে করা সফিকুল সাহেবের কোন অন্যায়ের কথা মনে করতে পারিনি তখন । তাই উত্তর ও দেয়া হয়নি , তবে চলে আসার সময় নিলুফারের মায়ের সাথে একবার দেখা করতে খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো । ওই মহিলা দুবার পর্দার আড়ালে বসে আমাকে খাইয়েছেন । কিন্তু আমার প্রতি ওনার যে দরদ ছিলো সেটা পর্দা আড়াল করতে পারেনি । একবার দেখার ইচ্ছা হয়েছিলো সেই দরদ কি এখনো আছে ? অবশ্য না দেখা হয়েই ভালো হয়েছে , যদি ওই দরদ এখন না থেকে থাকে তাহলে খুব মন কষ্ট পেতাম। ভ্যান ছাড়তেই মেজো আপা ঘ্যানর ঘ্যানর করতে শুরু করলো , কেন আমি ওদের না জানিয়ে এখানে এসেছি ? ওদের জানালে কি ওরা ব্যবস্থা করতো না ? এই সব প্রশ্ন সেই সাথে মতিনের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করছে ফাকে ফাকে । আমার প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছিলো , তাই বললাম “আপা একটু চুপ কর আমাকে ঘুমাতে দে” মেজো আপা আমাকে অবাক করে দিয়ে সত্যি সত্যি চুপ করে গেলো। আর আমিও সাথে সাথে ঘুমে তলিয়ে গালাম । আমাকে যখন ঘুম থেকে তোলা হলো তখন একটি বাস এসে দাঁড়িয়েছে । বুঝলাম যতক্ষণ বাস না পাওয়া গেছে আমাকে ঘুম থেকে জাগানো হয় নি ভ্যান ও রেখে দিয়েছে । মেজো দুলাভাই আর সাদিক মিলে আমাকে ভ্যান থেকে তুলে দার করালেন। আমি আসে পাশে মতিন কে দেখতে পেলাম না । তাই মেজো দুলাভাইয়ের কাছে মতিনের কথা জিজ্ঞাস করতেই । উনি দুরে দাড়িয়ে থাকা মতিন কে দেখিয়ে দিলেন । বুঝালাম আমাকে এই ঝামেলায় ফেলার কারনে এতক্ষন মতিন কে বেশ কথা শুনতে হয়েছে । আমি মেজদুলাভাইয়ের কাছে বললাম মতিন কে ডেকে দিতে , মতিনের সাথে আমার কিছু জরুরি কথা আছে , বিশেষ জরুরি। এতক্ষন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে আমি একটা রহস্যের সমাধান পেয়েছি । আমি এমন একজন মানুষ কে খুঁজে পেয়েছি যে হয়ত সেই মানুষ হয়ে উঠতে পারে যে মানুষ আমি হতে পারলাম না । মতিন আমার কাছে আসতেই আমি একা কথা বলার জন্য বাকিদের চলে যেতে বললাম । এদিকে বাসের হেল্পার খুব তাড়া দিচ্ছে। “ মতিন তুই আমাদের সাথে যেতে পারবি না” আমার কথা শুনেই মতিনের মুখ আরও পাংশু হয়ে গেলো । বেচারাকে দেখে খুবি লজ্জিত মনে হচ্ছে । কিন্তু কোন উত্তর দিলো না । আমি আবারো বললাম “ তুই নিলুফারদের বাড়ি যাবি” । এবার মতিনের চোখ দুটো বিস্ময়ে বড় বড় হয়ে উঠলো বলল “ তুই কি পাগল , ওই বাড়িতে যাওয়ার আর মুখ নাই আমার” “ মুখ না থাকলে মুখ ঢেকে যা , গিয়ে সফিকুল সাহবে কে আমার কথা বলবি , বলবি আমি ওনাকে ক্ষমা করে দিতে পারি এক সর্তে , যদি সে নিলুফারের কাছে গিয়ে নিজের মনের কথা বলে” “ মানে?” মতিন আরও অবাক হয়ে বলল , তারপর রাগে গজ গজ করতে করতে করতে বলল “ ওই ব্যাটা কত বড় ফাজিল তুই জানিস , ওই সবচেয়ে বেশি চিল্লাইয়া চল্লাইয়া বলসে তোর নাকি মৃগী রোগ আছে” আমি একটু হাসলাম , তারপর বললাম “ বলেছে ভালো করেছে , তুই যদি নিজের অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করতে চাস তাহলে যা , নাইলে আর কোনদিন আমার সামনে আসবি না, আমি যে মানুষ হতে পারবো না , সফিকুল সাহেবের সেই মানুষ হয়ে ওঠার চান্স আছে “ কথা গুলো বলে আমি বাসে উঠে গেলাম , বাকিরা আগেই উঠে গিয়েছিলো , সাদিক আমাকে বাসের দরজা থেকে ধরে ভেতরে নিয়ে গেলো । মতিনের কথা জিজ্ঞাস করলে আমি বললাম “ ও আসবে না” |
« Next Oldest | Next Newest »
|