Thread Rating:
  • 37 Vote(s) - 3.3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL বিজয়ের বিসিএস জয়
#61
(12-02-2023, 08:13 AM)ddey333 Wrote: কাল হইতে তিন দিন বিদেশ ভ্রমণ নির্দিষ্ট তাই আজই আপডেট পাইলে বাধিত হইবো। 
সুদূর কোরিয়া দেশে ভ্রমণ করিতে হইবে

হে মিত্র! আসিয়াই তোমার বার্ত্তাখানি পাইলাম। বিজয়কে তুমি বিস্মৃত হও নাই ইহা জানিয়া আমি বড়ই আহ্লাদিত! তোমার কথা ভাবিয়াই এইবার উত্তরণে নয়া হালনাগাদ করিবার ব্যাপারে অগ্রণী হইয়াছিলাম কিন্তু এই রবিবার আমার ব্যস্ততা প্রবল হওয়ায় দিতে পারিলাম না তাহার কারণে আমি লজ্জ্বিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। তুমি বিদেশ হইতে ফিরিয়া আইস কুশল মঙ্গলে তাহার পর আমি তোমার মন ভরাইয়া দিব। 

ইত্যবসরে, যদি কিম জঙ্গের দেশে না যাইয়া দক্ষিণের পূর্ব্বতন গোরীয়া অধুনা কোরীয়াতে যাও তবে উক্ত দেশ সম্পর্কে তোমাকে কিঞ্চিৎ জ্ঞান দিতেছি আশা করিতেছি উহা ঐদেশে তোমাকে কিঞ্চিৎ আয়াস দিবে। 
প্রথমতঃ, উহাদের আর আমাদের কারেন্সি বা মুদ্রার বিনিময়ে তারতম্য থাকার কারণে প্রাথমিকে সন্তুষ্ট হইও না, যাহার দাম এই বাঙ্গালা বা ভারতে ২৫টাকাও হইবে না তাহা উহাদের ওন -এ পাঁচশত হইবে সুতরাং গ্যাঁট কখন হালকা হইয়া গিয়াছে টের পাইবে না।
দ্বিতীয়তঃ যতক্ষণ অবধি না আঁচইয়া লইতেছ ততক্ষণ অবধি কোন পুরুষ কোরীয়কে আহযুসি সম্বোধন ভুল করিয়াও করিবে না, হিঊঙ্গ নিম বলিবার আগেও ভাবিয়া লইবে ওপ্পা বলিবার ক্ষেত্রেও! একইভাবে নিজ বয়স হইতে বড় কোন কোরীয় নারীকে উন্নী বা নুনা বলিবার ক্ষেত্রেও সাবধান। আর ভুল করিয়াও কোন পুরুষকে ওরাবরী কহিবে না!

তৃতীয়তঃ, জাপান সম্পর্কে কোনরূপ ভাল কথা কহিবে না, জাপানী তেল সম্পর্কে আমাদের যাহা কিছু ধারণা কোরীয়দের ক্ষেত্রে তাহা খাটে না। সিওল সন্নিহিত অঞ্চলে চীন সম্পর্কে বদনাম না করাই সমীচীন আর নামগুঙ বলিয়া কোন পরিবার সম্পর্কে আলোচনা হইলে মৌন রহিবে।

চতুর্থতঃ আশির দশকেই সম্ভবতঃ কোরীয়দিগের অর্থব্যবস্থা মুখ থুবড়াইয়া পড়িবার কারণে, বিস্তর লোক কর্ম্মহীন হইয়া ফ্রায়েড চিকেনের ঠেলা লাগায়। বর্তমানে, ফ্রায়েড চিকেন লহিয়া কোরীয়দিগের মধ্যে বড় গভীর আবেগ। স্বাদ চমৎকার, রাস্তার খাবার বলিতে যাহা বুঝি তাহা অপেক্ষা বহু হাইজিন। খাইয়া দেখিও। জাপানের রমেনকে উহারা রাময়ূন কহে, রামায়ণ কহে নাই উহাই সৌভাগ্য! যাহা হউক রামায়ুনের স্বাদ কিন্তু দারুণ হয়, কিমিচি বলিয়া একটী খাদ্য আছে উহাও ট্রাই করিও। 

তোমার সুরাপ্রেম সম্পর্কে আমি সম্যক অবহিত। পারিলে কোরীয় বিয়ার খাইও তবে খাবার খাইবার আগে খাইও পরে খাইলে অম্বলের দোষ হইবার সম্ভাবনা। আরও বিস্তর খাদ্য আছে কিন্তু নামগুলি আজ আর স্মরণে নাই কিছু একটা জাজামগাঙ এরূপ ছিল দারুণ খাইতে। ওহো আরেকটি কথা উহাদের স্পাইসি মানে বেশী মশলা নহে, বেশী লঙ্কা তাই খেয়াল রাখিও। আর বরাহখাদ্যে রুচি থাকিলে পর্ক বেলির দ্বারা নির্ম্মিত খাদ্য সকল চাখিয়া দেখিও। কাঁচা ডিমও খায় উহারা তাই একটু দেখিয়া লইও আর সম্ভব হইলে উহাদের কেক (বিবিধ আছে) খাইও দারুণ স্বাদ হয়। 

ব্যস! যতটুকু সিধু জ্যাঠা হইতে পারিলাম বলিলাম! ফিরিয়া আইস তাহার পর তোমার নিকট হইতে কোরীয় দেশের গপ্পো শুনিব।
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#62
আমার জানা নাই এই কাহিনীর কথা কাহারও মনে আছে কি না! এই লেখনীর সূত্রপাত ঘটিয়াছিল বহুদিন পূর্ব্বে তাহার পর গঙ্গা দিয়া বিস্তর জল বহিয়া গেলেও আমি আর এইপথ মাড়াই নাই, কেন তাহা জানিনা! কামসর্ব্বস্ব একটী ফোরামে আমি কামবর্জ্জিত কাহিনী লিখিবার প্রয়াস করিয়াছিলাম, জানিয়াই করিয়াছিলাম যে মুখ থুবড়াইয়া পড়িবে! তবুও লিখিয়াছিলাম, আমার উপর এমনিতেই আঙ্গুল উঠিয়া থাকে আমি সেইভাবে কামকাহিনী লিখি না, যৎসামান্য যাহা থাকে তাহা কেবল ফোরামের মান রাখিবার নিমিত্তে থাকে! আর এই কাহিনীতে তো প্রথম রিপুকে সেই স্থানও দিই নাই। সুতরাং, স্বাভাবিক নিয়মেই পাঠককুল নিরাশ হইয়াছেন! এই কাহিনী ভবিষ্যতে কখনও কামাগ্নির কবলে পড়িবে কীনা উহা স্বয়ং ভবিষ্যৎ কহিতে পারিবে! তবুও এইটুকু কহিতে পারি, এই ফোরামের মান রাখিবা হেতু এই কাহিনীতে শরীরী প্রেম রাখিবার প্রয়াস থাকিবে তবে তাহা কবে হইবে কহিতে পারিতেছি না, কামের কাহিনী আর কাহিনীতে কাম এই দুইয়ে একটিই মৌলিক পার্থক্য আছে, প্রথমটিতে কামের কথা বলিবার স্বার্থে কাহিনীর নির্ম্মাণ ঘটিয়া থাকে আর দ্বিতীয়টিতে কাহিনীর ঘনঘটায় কামের আগমণ ঘটে। আমার এই কাহিনী দূর্ভাগ্যবশতঃ দ্বিতীয় শ্রেণীভুক্ত! যাহা হউক বিস্তর কথা বলিলাম, শেষে এইটুকু বলিতেছি, একশত সত্তর রেপুমানের এই দীর্ঘ যাত্রাকালে আমি গুটিকয়েক স্থায়ী পাঠক যোগাড় করিতে সমর্থ হইয়াছি। আমি যাহাই লিখি তাহা যতই দুষ্পাঠ্য হউক তাহারা পড়িবেই, কিন্তু ইঁহাদের মধ্যেই একজন আছেন যিনি এই গল্পটির প্রতি তীব্র আকৃষ্ট হইয়াছিলেন, কখনও উদগ্রীব চিত্তে তিনি 'অপেখ্যায়' থাকেন তো কখনও এই কাহিনীর কী নূতন হালনাগাদ হইবে না বলিয়া শঙ্কিতচিত্তে প্রশ্ন করেন আবার কখনও কাহিনীটির অকালমৃত্যু ঘটিয়া গিয়াছে বলিয়া অভিমানী হন। বলা যাইতে পারে শুধু এবং শুধুমাত্র তাঁহার কথা ভাবিয়াই এই কাহিনীকে মৃতবৎ না ফেলিয়া রাখিয়া আজ পুনরায় সঞ্জীবন করিবার প্রয়াস করিলাম! আর আপনি মহাশয় যদি নূতন পদার্পণ করেন তবে পূর্ব্বের তিনটি ক্ষুদ্র পর্ব্ব পড়িতে পারেন!







★  চতুর্থ পর্ব্ব প্রথমাংশ আজ আসিতেছে ★


Namaskar
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#63
(14-02-2023, 10:45 PM)মহাবীর্য্য দেবশর্ম্মা Wrote: হে মিত্র! আসিয়াই তোমার বার্ত্তাখানি পাইলাম। বিজয়কে তুমি বিস্মৃত হও নাই ইহা জানিয়া আমি বড়ই আহ্লাদিত! তোমার কথা ভাবিয়াই এইবার উত্তরণে নয়া হালনাগাদ করিবার ব্যাপারে অগ্রণী হইয়াছিলাম কিন্তু এই রবিবার আমার ব্যস্ততা প্রবল হওয়ায় দিতে পারিলাম না তাহার কারণে আমি লজ্জ্বিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। তুমি বিদেশ হইতে ফিরিয়া আইস কুশল মঙ্গলে তাহার পর আমি তোমার মন ভরাইয়া দিব। 

ইত্যবসরে, যদি কিম জঙ্গের দেশে না যাইয়া দক্ষিণের পূর্ব্বতন গোরীয়া অধুনা কোরীয়াতে যাও তবে উক্ত দেশ সম্পর্কে তোমাকে কিঞ্চিৎ জ্ঞান দিতেছি আশা করিতেছি উহা ঐদেশে তোমাকে কিঞ্চিৎ আয়াস দিবে। 
প্রথমতঃ, উহাদের আর আমাদের কারেন্সি বা মুদ্রার বিনিময়ে তারতম্য থাকার কারণে প্রাথমিকে সন্তুষ্ট হইও না, যাহার দাম এই বাঙ্গালা বা ভারতে ২৫টাকাও হইবে না তাহা উহাদের ওন -এ পাঁচশত হইবে সুতরাং গ্যাঁট কখন হালকা হইয়া গিয়াছে টের পাইবে না।
দ্বিতীয়তঃ যতক্ষণ অবধি না আঁচইয়া লইতেছ ততক্ষণ অবধি কোন পুরুষ কোরীয়কে আহযুসি সম্বোধন ভুল করিয়াও করিবে না, হিঊঙ্গ নিম বলিবার আগেও ভাবিয়া লইবে ওপ্পা বলিবার ক্ষেত্রেও! একইভাবে নিজ বয়স হইতে বড় কোন কোরীয় নারীকে উন্নী বা নুনা বলিবার ক্ষেত্রেও সাবধান। আর ভুল করিয়াও কোন পুরুষকে ওরাবরী কহিবে না!

তৃতীয়তঃ, জাপান সম্পর্কে কোনরূপ ভাল কথা কহিবে না, জাপানী তেল সম্পর্কে আমাদের যাহা কিছু ধারণা কোরীয়দের ক্ষেত্রে তাহা খাটে না। সিওল সন্নিহিত অঞ্চলে চীন সম্পর্কে বদনাম না করাই সমীচীন আর নামগুঙ বলিয়া কোন পরিবার সম্পর্কে আলোচনা হইলে মৌন রহিবে।

চতুর্থতঃ আশির দশকেই সম্ভবতঃ কোরীয়দিগের অর্থব্যবস্থা মুখ থুবড়াইয়া পড়িবার কারণে, বিস্তর লোক কর্ম্মহীন হইয়া ফ্রায়েড চিকেনের ঠেলা লাগায়। বর্তমানে, ফ্রায়েড চিকেন লহিয়া কোরীয়দিগের মধ্যে বড় গভীর আবেগ। স্বাদ চমৎকার, রাস্তার খাবার বলিতে যাহা বুঝি তাহা অপেক্ষা বহু হাইজিন। খাইয়া দেখিও। জাপানের রমেনকে উহারা রাময়ূন কহে, রামায়ণ কহে নাই উহাই সৌভাগ্য! যাহা হউক রামায়ুনের স্বাদ কিন্তু দারুণ হয়, কিমিচি বলিয়া একটী খাদ্য আছে উহাও ট্রাই করিও। 

তোমার সুরাপ্রেম সম্পর্কে আমি সম্যক অবহিত। পারিলে কোরীয় বিয়ার খাইও তবে খাবার খাইবার আগে খাইও পরে খাইলে অম্বলের দোষ হইবার সম্ভাবনা। আরও বিস্তর খাদ্য আছে কিন্তু নামগুলি আজ আর স্মরণে নাই কিছু একটা জাজামগাঙ এরূপ ছিল দারুণ খাইতে। ওহো আরেকটি কথা উহাদের স্পাইসি মানে বেশী মশলা নহে, বেশী লঙ্কা তাই খেয়াল রাখিও। আর বরাহখাদ্যে রুচি থাকিলে পর্ক বেলির দ্বারা নির্ম্মিত খাদ্য সকল চাখিয়া দেখিও। কাঁচা ডিমও খায় উহারা তাই একটু দেখিয়া লইও আর সম্ভব হইলে উহাদের কেক (বিবিধ আছে) খাইও দারুণ স্বাদ হয়। 

ব্যস! যতটুকু সিধু জ্যাঠা হইতে পারিলাম বলিলাম! ফিরিয়া আইস তাহার পর তোমার নিকট হইতে কোরীয় দেশের গপ্পো শুনিব।

এখন হংকং এয়ারপোর্টে আছি দিল্লির ফ্লাইট দুই ঘন্টা পরে।   
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#64
বিজয়ের বিসিএস জয়
শ্রী মহাবীর্য্য দেবশর্ম্মা


[Image: 20230217-110210.jpg]


পর্ব্বঃ ৪ । প্রথমাংশ



১৬ই পৌষ বৃহস্পতিবার,




অ্যাকম্প্লীশমেণ্ট! এই ইংরাজী শব্দখানির সহিত এই প্রথম সম্ভবতঃ পরিচয় হইল! জীবনে আমার ইতিপূর্ব্বে এই শব্দখানি দৈবাৎ কখনও ভ্রমেও পদার্পণ করিয়াছে বলিয়া মনে পড়ে না। 

আজ প্রায় একমাস অতীত হইবার পর পুনরায় আমার এই ডায়েরীর খালি পাতায় কলমের কালির আঁচড় বসাইয়া শূণ্য কলসখানি পূর্ণ করিবার চেষ্টা করিতেছি! অদ্য হইতে মাসাদিকাল পূর্ব্বে আমি একটি পণ লইয়া ছিলাম, আমার পিতার অপূর্ণ স্বপ্নকে পূরণ করিবার, বিসিএস হইবার স্বপ্ন! যদি কোন ঈশ্বরচন্দ্র এই প্রতিজ্ঞা লইতেন তবে ইহা কোন বিস্ময়কর বিষয় হইত না কিন্তু একজন মহামূর্খ সহসা সরস্বতীর বন্দনায় ব্রতী হইলে খোদ বীণাপানিও বোধকরি বিচলিত হন, ওই সিদ্ধিদাতা গণেশের সিংহাসনও বোধকরি টলিয়া যায়! কেন এমন কহিতেছি? আমি মাধ্যমিকে থার্ড ডিভিশনে পাশ করি, উচ্চমাধ্যমিকে কোনমতে সেকেণ্ড ডিভিশন পাই আর কালেজে সাধারণ স্নাতক হইয়াও সেকেণ্ড ক্লাস পাই নাই। তাহার পর লেখাপড়ায় ক্ষান্ত দিয়া আজ সাতটি বৎসর বাপের হোটেলে খাইয়া মহানন্দে কালাতিপাত করিতেছি। বাসায় বছর আটচল্লিশের বুড়ি মা আর বছর একষট্টির বৃদ্ধ পিতা যে গত একবৎসর হইল চাকুরী হইতে অবসর লহিয়াছে! সুতরাং, বলা চলে, আমি একজন পূর্ণ বয়স্ক বছর আঠাশের যুবক নিজের বৃদ্ধ পিতার পেনশনের পয়সায় বাঁচিয়া আছি। যাহারা নিরক্ষর তাহারা অবধি যখন মাটি কাটার কার্য্য করিয়াও দুপয়সা কামাইয়া বিয়াশাদী করিয়া আপন বাপমায়ের নিশ্চিন্তচিত্তে বাণপ্রস্থকাল কাটাইবার পথ প্রশস্ত করিতেছে তখন এই নরাধম কুলশ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণসন্তান হইয়াও আপন বাপমায়ের দুঃখের কারণের শিরোমণি হইয়া বসিয়াছে। আমার উপর শনি চড়িয়াছে নাকি আমি স্বয়ং শনি হইয়া আপন বাপমায়ের উপর চড়িয়া বসিয়াছি বিষয়খানি তর্কসাপেক্ষ! আমার বাবা শেষ কবে দিলখোলা হাসি দিয়াছিল? আমার মনে নাই! আমার মা শেষ কবে আমার সম্পর্কে কাহাকেও কোন কথা গর্ব্ব করিয়া বলিয়াছিল? আমার জানা নাই! তবে একটি বিষয় আমি জানি তাহারা দুইজনেই প্রথমে নিজেদের ভাগ্যকে আর এখন নিজেদের দোষ দেয়, তাহারা এক অপদার্থের জন্ম দিয়াছে! এক অপদার্থ যে কোন কম্মের নহে! রান্না খারাপ হইলে রাগ করিয়া ভাতের থালা ছুঁড়িয়া ফেলে অথচ ভাত যোগাড় করিবার মুরোদ নাই! মাছ না হইলে মুখে ভাত উঠে না অথচ মাছ কিনিবার যোগ্যতা নাই! বাপের পেনশনের পয়সায় আজও তাহার দূর্গাপূজার নববস্ত্রের খরিদ্দারী হয় কারণ আপন বস্ত্র কিনিবার সামর্থ্য তাহার নাই! এমনকী নেশার বিড়ি অবধি ওই বাপের পয়সায় খাইয়া ধুঁয়ার সহিত বিসর্জ্জন দেয়! যাহার একজন সার্থক উত্তরাধিকারী হইবার কথা ছিল সে আজ পরজীবী প্যারসাইটস্ হইয়া বাঁচিয়া আছে!

এমন জীবন যাহার সে সহসা এমন সিদ্ধান্ত লইল কেন? রত্নাকরের বাল্মীকি হইবার সাধ বা স্পর্ধা উভয়ের কোনটাই আমার নাই, কিন্তু একদিন আমার বাবার পুরাতন একটি ডায়েরী আমি খুঁজিয়া পাই যাহা আমার বাবা যখন যুবক ছিল তখন লিখিয়াছিল এবং সেই ডায়েরীতে উল্লেখ করিয়াছিল তাহার স্বপ্নের কথা! বিসিএস হইবার স্বপ্নের কথা! ইহা দূর্ভাগ্য আমার বাবা তাহা হইতে পারে নাই, অর্থ নামক বস্তুটির অভাব তাহাকে নিজ স্বপ্ন পূরণ করিবার সামর্থ্য প্রদান করে নাই! নিজের গ্লানির কথা লিখিতে লিখিতে বাবা একটি লাইন লিখিয়াছিল, "আমি হইতে পারিলাম না কিন্তু আমার যে সন্তান হইবে সে পুত্র বা কন্যা যেই হউক যদি সে বিসিএস হইতে পারে তবে হয়তো আমার অদ্যের এই দুঃখের নিবারণ ঘটিবে!" এই একটি লাইন, শেষের এই একটি লাইন আমার মস্তকে গভীর রেখাপাত করিয়াছিল। যে পিতাকে আমি কোনদিন সম্মান করি নাই কেন জানি তাহার ঐ ইচ্ছার কথা জানিয়া আমি চুপ থাকিতে পারি নাই। কিন্তু ঠিক কোনপথে যাইব কী করিয়া এই অসাধ্য সাধন করিব তাহা ভাবিয়া চিন্তিয়াও বুঝিতে পারি নাই। লেখাপড়ার প্রশ্ন উঠিলে কহিতে হয় আমি কোনদিনই সরস্বতীর বরপুত্র ছিলাম না, বরং তেত্রিশ কোটি দেবদিগের মধ্যে  অলসতার, নিষ্কর্মা হইবার, মহাপাষণ্ড আর দুরাত্মা হইবার যদি কোন দেবতা থাকেন তো আমি তাঁহার স্নেহধন্য হইয়াছি! এহেন আমি যদি সহসা বিদ্যাদায়িনী সম্মুখে গিয়া,

ঔঁ সরস্বতী নমস্তুভ্যম্ বরদে কামরূপীণি।
বিদ্যারম্ভম্ করিষ্যামি সিদ্ধির্ভবন্তু মে সদা।।

বলিয়া জপ করি তো মা সরস্বতী ক্ষুব্ধ হইয়া আমার মস্তকেই নিজ বীণা দ্বারা প্রহার করিয়া না দেন সেই ভয় ষোলআনা ছিল। তবুও, আমি সেই অসাধ্য সাধনে ব্রতী হইলাম। দীর্ঘ একমাস! সুদীর্ঘ এই একমাসের অন্তে আজ আমি নিজেকে বিসিএস নামক পরীক্ষায় বসিবার যোগ্যতা অর্জ্জন করাইতে সমর্থ হইলাম। যেহেতু এই একমাস যাবৎ ডায়েরীতে কোন হালনাগাদ ঘটে নাই তাই ইহা লিখিবার প্রয়োজন আছে যে কেন তাহা ঘটে নাই এবং এই মাসব্যাপী সময়কালে কী কী ঘটিয়াছে!

(ক্রমশঃ)
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#65
☝️☝️☝️

প্রথমাংশ উপরে

[Image: 20230217-110210.jpg]


পর্ব্বঃ ৪ । দ্বিতীয়াংশ




শেষ হালনাগাদে ইহা লিখিয়াছিলাম যে বিসিএস সম্পর্কিত বিষয়ে অবহিত হইতে আমি চন্দ্রাকে বিদায় দিয়া নিখিলদার বাটি অভিমুখে গিয়াছিলাম। নিখিলদা আমাদের এলাকায় পড়াশুনায় সেরা ছাত্র বলিয়া গণ্য হয়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল, মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকে চোখ ধাঁধানো রেজাল্ট! কীসব পিএইচডি করিতেছিল শুনিয়াছিলাম। এখন সরকারী চাকুরীর চেষ্টা করিতেছে। আমার হইতে বৎসরখানেকের বড় হইবে বয়সে। তবে নিখিলদার আর আমার বিশ্ব সম্পূর্ণ পৃথক তাই মুখচেনা থাকিলেও বা দেখা হইলে পরে শুভেচ্ছা বিনিময় করিলেও সেইভাবে কোনদিন বসিয়া মনের গপ্পো করা হয় নাই, আরেকটি কারণ ছিল, আমার পিতার সহিত নিখিলদার বিশেষ হৃদ্যতা রহিয়াছে, আমার পিতা নিখিলদাকে ভীষণ স্নেহ করে এমনকি বহুবার আমাকে নিখিলদার সহিত তুলনা করিয়া বাছাবাছা শব্দবাণ শুনাইয়াছে। ফলে নিখিলদার সহিত তেমন সুসম্পর্ক আমার কোনকালেই হয় নাই! এহেন নিখিলদা কিন্তু আমাকে তাহার বাসায় দেখিবা মাত্র সাদরেই অভ্যর্থনা করিয়াছিল। টুকটাক কথাবার্ত্তার পরে আমি ভয়ে ভয়ে নিখিলদার নিকট বিসিএস হইবার রাস্তা শুধাইয়াছিলাম। প্রথমে অবশ্য ইহা বলি নাই যে আমি নিজেই বিসিএস হইতে চাহি, বলিয়াছিলাম যে আমার এক বন্ধু বিসিএস হইতে চাহে কিন্তু সে জানে নাই কীরূপে কী করিতে হয়, যেহেতু তুমি সরকারী চাকুরীর চেষ্টা করিতেছ তাই যদি পথখানি সম্পর্কে আলোকপাত কর তো বড় ভাল হয়। নিখিলদা পাত্তা না দিয়া কহিয়াছিল, এই পথ সম্পর্কে যদি কিছু বলি তবে তোর যা বিদ্যা তাহাতে বুঝিতে পারিবি না তাহার চাইতে তোর বন্ধুকে আমার নিকট আসিতে বল আমি তাহাকে বুঝাইয়া দিব। বহুবার অনুনয় বিনয় করিবার পরও নিখিলদার ওই এক গোঁ! "আমি বলিলেও তুই বুঝিতে পারিবি না!" শেষে যখন কোন অস্ত্রেই নিখিলদাকে পরাস্ত করিতে পারিলাম না তখন সকল আত্মসম্মান বিসর্জ্জন দিয়া কহিলাম, "আমি কোন বন্ধুর নিমিত্ত নহে, নিজের জন্যই জিজ্ঞাসা করিতেছি নিখিলদা, যে হর বিসিএস হইতে চাহে সে এই হরি মাঝেই লুকাইয়া আছে। আমিই সেই হরিহর বিজয়! এইবার নিশ্চয় বলিতে পারিবে?" নিখিলদা বেশ কিছুক্ষণ আমার দিকে চাহিয়া রহিল, তাহার পর ঠোঁটের গোড়ায় একটি গোল্ডফ্লেক ধরিয়া তাহাতে অগ্নিসংযোগ করিতে করিতে বলিল, "সহসা এমন মতিভ্রমের কারণ! দিবালোকে জনসমক্ষে মদ্যপান, মাতাল হইয়া গালিগালাজ, মেয়েবাজি ইত্যাদি সকল দুর্ধর্ষ কার্য্যকলাপ যে করিয়া থাকে তাহার এমন সহসা রামের সুমতি হওয়া চিন্তার বিষয়! সুতরাং যদি এই অধম মূর্খ ব্যক্তিকে তোমার বিসিএস জয় করিবার অভিপ্রায়ের পিছনের হেতুটি জ্ঞাত কর তো বাধিত হই!" শেষের কথাটি শ্লেষ ও ব্যঙ্গ সহযোগে কহিল নিখিলদা। অন্য সময় হইলে চটিয়া যাইতাম কিন্তু এক্ষণে রাগ করা মূর্খামি হইবে। অগত্যা ঢোঁক গিলিয়া আলমারী হইতে বাবার ডায়েরী খুঁজিয়া পাওয়া ইস্তক সকল ঘটনা বলিলাম। নিখিলদা চুপ করিয়া সব শুনিল। শুনিতে শুনিতে তাহার মুখমণ্ডলে পরিবর্ত্তন আসিতে লাগিল। চক্ষু দুইখানি সজল হইয়া গেল। আমার বক্তব্য শেষ হইলে পরে সহসা আসিয়া আমাকে বক্ষমাঝে জড়াইয়া বলিল, "আমি বিনয়কাকুকে বলিয়াছিলাম, আমের গাছে আমড়ার ফলন কদাপি হইবে না। তুমি দেখিয়া লও একদিন না একদিন বিজয় ঠিক শুধরাইবে শুধু সময় আর জগদীশে ভরসা রাখ। ভাই, সত্ত্য বলিতে যত দিবস অতিবাহিত হইতেছিল আমার নিজের এই কথাখানি আমার নিজের কাছেই হাস্যকর শুনাইতেছিল। আজ বুঝিলাম ঈশ্বর সত্য সত্যই আছেন আর তিনিই তোকে এই ডায়েরী পাঠ করাইয়াছেন!" আমি বিহ্বল হইয়া কী বলিব বুঝিতে পারিলাম না। একটু পরে নিখিলদা আমাকে ছাড়িয়া কেদারায় পুনরায় উপবেশন করিয়া বলিল, "তোর বাবা বিনয়কাকু আমাদের এলাকার প্রথম ব্যক্তি যিনি মাধ্যমিকে না শুধু ফার্স্ট ডিভিশন বরঞ্চ তাহার সহিত তিনটি বিষয়ে লেটার মার্কস্ পায়। অঙ্কের মাথা খুব ভাল ছিল কিন্তু তোর দাদুর ক্ষমতা ছিল না ছেলেকে সায়েন্স পড়াইবার তাই আর্টস লইয়া উচ্চমাধ্যমিকে ভর্ত্তী হয়, স্কলারশিপ যোগাড় করিয়া সাম্মানিকে প্রথম শ্রেণীতে নিজের স্নাতক সম্পূর্ণ করে। তাহার পর বিসিএসে বসে, প্রথমবারের চেষ্টাতেই প্রাথমিক চরণ পার করিয়া দেয় কিন্তু যখন মূল পরীক্ষা দিবে তাহার প্রাক্কালেই তোর দাদু হঠাৎ করিয়া পরলোকগত হন ফলে পুরা সংসারের জোয়ালখানা তোর বাবার স্কন্ধে আসিয়া পড়ে। দুই দুইটি বিবাহযোগ্যা কন্যা রাখিয়া গিয়াছিলেন তোর পিতামহ, বড় দাদা হিসাবে উহাদের সুপাত্রস্থ করিবার পাশাপাশি সংসারখানি চালাইবার জন্য অর্থ যোগাড় করা এইসব তোর পিতার বিসিএস হইবার ইচ্ছায় জল ঢালিয়া দিয়াছিল। শেষে কোনমতে মিউনিসিপ্যালিটিতে একখানি করণিকের চাকুরী জুটাইয়া নিজের সকল সাধের জলাঞ্জলি দিয়াছিল, তবুও দেখ নিজ কর্ম্ম যোগ্যতায় সচিব পদে উন্নতি ঘটাইয়া কর্ম্ম হইতে অবসর লইল। আমার পিতার মুখ হইতে শুনিয়াছিলাম যখন তুই জন্ম লইলি তোর পিতা প্রচণ্ড খুশী হইয়াছিল, তাহার স্বপ্ন ছিল তুই একদিন তাহার অপূর্ণ অধরা ইচ্ছা পূর্ণ করিবি আর একদিন বিসিএস জয় করিবি তাই তোর নাম রাখিয়াছিল বিজয়! কিন্তু যতদিন যাইতে লাগিল তত তোর বাবা সহ সকলেই বুঝিতে পারিতেছিল তুই সেই গরু নহে যে জমি চাষ করিবার ক্ষমতা রাখে! শেষে তোর বাবা ভাবিল যদি কোনক্রমে বাঁচিয়া থাকিস তাহা হইলেও হইবে। একটাই আক্ষেপ তাহার, বিসিএস না হউক এমন কোন গুণও নাই তোর যাহাতে এই সংসার জীবনখানা ঠেলিতে পারিস। সত্য কহিতে ভাই শুধু তোর পিতা নহে আমরা সকলেই তোর ভবিষ্যৎ লইয়া বড্ড চিন্তিত ভাই! কিন্তু আজ যখন সকলে তোর প্রতি সকল আশার মোহমুক্তি ঘটাইয়া দিয়াছে ঠিক সেই সময় জগদীশ তোকে তোর গন্তব্যে ঠেলিবার নিমিত্তেই বোধকরি তোর পিতার ডায়েরীখানি তোরে দিয়া পাঠ করাইল নইলে জন্মাবধি এত বৎসর যে বাড়িতে আছিস সেইখানে কোনদিন ডায়েরী খুঁজিয়া পাস নাই, সহসা আলমারী ঘাঁটিবার মতিই কেন হইল আর কেনই বা ডায়েরীখানি পাবি!"

একনাগাড়ে নিখিলদা এতগুলি কথা বলিয়া থামিল। আমি নিশ্চুপ হইয়া শুনিতেছিলাম। আমার পিতাকে কী পরিমাণ ঝড়ের সহিত সঙ্ঘাত করিতে হইয়াছিল, আমাকে লইয়া তাহার মনোমধ্যে কত কী বাসনা ছিল এবং আমি কেমন করিয়া এমনধারা ঢেঁড়স হইলাম ইত্যাদি আমার বুকের ভিতরে তোলপাড় করিতেছিল। সত্য আমি বাবা মা কাহাকেও কোনদিন তাহাদের প্রাপ্য সম্মানটুকুও দিই নাই, তাহাদের আশাপূরণ তো দূর অস্ত! নিখিলদা আর আমি দুজনেই অনেকক্ষণ চুপচাপ বসিয়া রইলাম। শেষে আমি বলিলাম, "আমি কী ছিলাম আমি জানি নাই, আমি আদৌ বদলাইয়াছি কি না তাহাও আমার ধারণায় নাই কিন্তু আমি এইটুকু জানি নিখিলদা আমি বিসিএসে বসিব এবং ঐ পরীক্ষায় আমার যতটুকু সামর্থ্য আমি তাহার সবটা দিয়া জয় করিবার চেষ্টা করিব। আদৌ এই পরীক্ষার দরিয়া সাঁতার দিয়া পার করিতে পারিব কি না জানি নাই কিন্তু সাঁতার অবশ্যই দিব। তুমি সাহায্য করিবে কি না বল?" নিখিলদা আমার দিকে একটা গোল্ডফ্লেক বাড়াইয়া দিয়া বলিল, "ভাই আমি আজ অবধি যাহা জানি যতটুকু বিদ্যা অর্জ্জন করিয়াছি তাহার সবটুকু দিয়াই সাহায্য করিব। আমার দরজা তোর জন্য সদাই খোলা থাকিবে কিন্তু যে গরু গু খায় সে যতই শিবমন্দির যাউক তাহার শুদ্ধতা লইয়া ধন্দ থাকিয়াই যায়। তাই আমি বলিতেছি না যে, আমার, তোর এই মুহূর্তে যে আবেগ রহিয়াছে তাহাতে কোন সন্দেহ আছে কিন্তু আমি বহু কিছু দেখিয়াছি, দুইদিন সকলেই প্রাণান্ত দেয় তাহার পর যেমন যেমন সময় যায় উহাদের চেষ্টা কমিতে থাকে এবং একসময় এই পথ হইতে সরিয়া যায়! বিসিএস একটি ম্যারাথন! প্রবল চেষ্টা ধৈর্য্য ও অধ্যাবসায় সকলকে একসাথে বাঁধিলে তবেই এই পরীক্ষায় সফল হওয়া যায়। প্রতি বৎসর লাখ পাঁচেকেরও বেশি পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় বসে তাহাদের মধ্যে বড়জোর দুইশত এই পরীক্ষায় কৃতকার্য্য হইতে পারে। রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনে যাইবার পথখানি খুব সরল নহে। তাই তোকে সর্বাগ্রে এইটুকু প্রমাণ করিতে হইবে তোর মধ্যে সেই ধৈর্য্য আর অধ্যাবসায়ের ক্ষমতা আছে।" আমি কহিলাম, "নিজেকে প্রমাণ করিবার জন্য আমাকে কী করিতে হইবে?" নিখিলদা আমার দিকে একমুহূর্ত চাহিয়া বলিল, "দুই মিনিট বসিয়া থাক আমি আসিতেছি।" কহিয়া বাসার অন্দরে গেল। কিছুক্ষণ পর হাতে একখানি মোটা কেতাব লইয়া ঢুকিল। আমার দিকে বইখানি বাড়াইয়া কহিল, "এই বইটি অগ্রবাল সাহেব লিখিয়াছেন নাম কোয়াণ্টিটেটিভ অ্যাপ্টিটিউড। নাম শুনিয়া ঘাবড়াইবার প্রয়োজন নাই ইহা গণিতের বই এবং বাঙ্গালাতেই অনুবাদিত। এই বইয়ে ঊনচল্লিশটি অধ্যায় আছে যাহার চৌত্রিশটিতে আমি দাগ দিয়া দিয়াছি, তোর কার্য্য হইল আগামী একমাস ধরিয়া প্রতিদিন এই চৌত্রিশটি অধ্যায়ের প্রতিটি অধ্যায় হইতে তিনটি করিয়া অঙ্ক কষা। যদি একমাস পর তুই প্রমাণ করিতে পারিস যে তুই প্রতিদিন এই কার্য্য করিয়াছিস তবে এবং তবেই বিসিএস পাস করিতে গেলে কী কী করিতে হইবে আমি তোকে জানাইব নইলে খামোখা নিজের আর তোর সময় নষ্ট করিবার কারণ দেখিতেছি না।" আমি কিছু না বলিয়া ঘাড় হেলাইয়া বইটি লহিয়া বাসায় আসি। আসিবার পথে গজেনের দোকান হইতে মাল তুলিবার সময় এক রিম সাদা খাতা আর গোটা দশেক কলম কিনিয়া বাসায় ফিরি।

ইহার পর এই গত একমাস ধরিয়া শুধু খাতার পর খাতা ধরিয়া অঙ্ক কষিয়া গিয়াছি। আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হইতে পারে মাত্র তিনখানি অঙ্ক প্রত্যহ কষা কী এমন কঠিন ব্যাপার! কিন্তু নিখিলদা নিশ্চয় আমি বিসিএসে বসার নিমিত্ত তাহার ছাত্র হইবার আদৌ যোগ্য কীনা তাহা বিচার করিবার জন্য দৈনিক তিনটি অঙ্ক বরাদ্দ করিবার মত শিশুসুলভ কার্য্য দিবে না, আঁচাইয়া দেখিলাম নিখিলদা বলিয়াছিল, চৌত্রিশটি অধ্যায়ের প্রতিটি হইতে তিনটি অঙ্ক তাহার অর্থ দৈনিক ৩৪×৩= ১০২টি অঙ্ক বরাদ্দ হইয়াছে। আমি ষোল বৎসর বয়েসে মাধ্যমিক দিবার কালে শেষবার গণিতের মুখদর্শন করিয়াছি, আজ আমি আঠাশ! অর্থাৎ সুদীর্ঘ বারো বৎসর অঙ্ক নামক বিভীষিকার সহিত কোনরূপ সাক্ষাৎ হয় নাই! আর মাধ্যমিকেও অঙ্কে আমি আহামরি কিছু ছিলাম তাহা নহে সুতরাং এই শতখানেক দৈনিক অঙ্কের চাপ আমার পক্ষে কার্য্যতঃ প্রাণঘাতী হইয়াছিল বলিলেও কম বলা হয়। ইদানীং প্রভাতে নিদ্রাভঙ্গ হইবার ধারা অব্যাহত আছে। দিনকয়েক বড্ড যাতনা হইতেছিল কিন্তু ধীরে ধীরে দিন পনের যাইতে না যাইতে অভ্যস্ত হইয়া গিয়াছি। এক্ষণে আর অ্যালার্ম ঘড়িখানির সেইরূপ আবশ্যিকতা পড়ে না, উহা বাজিয়া উঠিবার আগেই ব্রাহ্মমুহূর্তে বিছানা ত্যাগ করি, হাত মুখ ধুইয়া প্রাতঃক্রিয়াদি সারিয়া সূর্য্যবন্দনা করিবার পর পরই চা আর বিস্কুট খাইয়া অঙ্ক কষিতে বসিয়া যাই। কিন্তু খান চল্লিশেক অঙ্ক কষিতেই ঘণ্টা পাঁচেক চলিয়া যায়। নয়টা নাগাদ উঠিয়া স্নান সারিয়া কিঞ্চিৎ জলখাবার খাইয়া বাড়ির কোন কাজ করিতে হইবে কিনা দেখি কাজ থাকিলে এগারোটা নইলে দশটা নাগাদ ফের বসিয়া যাই অঙ্ক কষিতে। উঠি একেবারে দেড়টায়। দুপুরের ভাত খাইয়া ফের বসি শরীরে ক্লান্তি বাসা বাঁধে তাও কোনমতে টানিয়া টুনিয়া বরাদ্দের তিরিশটি অঙ্ক শেষ করিয়া একটু বিছানায় গা এলাইয়া দিই। বৈকাল হইলে একটু ঘুরিতে যাই, মাঠে গিয়া একটু দৌড়ঝাঁপ হইয়া যায় তাহার পর সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ বাসায় ফিরিয়া হাত পা মুখ ধুইয়া চা খাই আর তারপর আবার অঙ্কের খাতা টানিয়া লই। কোনমতে অন্তিমের বত্রিশখানা অঙ্ক কষিতে কষিতেই রাত্তিরের খাবারের ডাক পড়ে। আর মুখে কিছু দিবার বাসনা থাকে না তবুও কোনমতে মুখে কিছু গুঁজিয়া দশটার মধ্যে পরিশ্রান্ত শরীরকে শয্যার স্পর্শ দিই। শুইতে না শুইতেই জাঁকাইয়া ঘুম আসে। স্বপ্নহীন সুনিদ্রা। পরদিবসে আবার ওই একই কার্য্যের সূচনা ঘটে। বহুবার ভাবিয়াছি কী দরকার খামোখা এত কষ্ট করিবার! কিন্তু, পরমুহূর্তেই নিজেকে বুঝাইয়াছি জীবনে অন্ততঃ এই একবার অলসতা করিব না তাই মন হাঁফাইতে চাহিলেও তাহাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধিয়া রাখিয়া দিয়াছি।

আমি যেমন যেমন এই রাস্তায় হাঁটিতেছি তেমন তেমন আমার আশেপাশের মানুষদিগের মধ্যে আচরণের পার্থক্য ঈষৎ চোখে পড়িতেছে। হঠাৎ করিয়া আমার মা ঘ্যানঘ্যান করা বন্ধ করিয়া দিয়াছে, বরং মাঝেমাঝেই দেখি ঠাকুর ঘরে গিয়া বারম্বার কোন এক দৈবকে প্রণাম করিতেছে! আমাকে গঞ্জনা শুনানো দূর অতীত রীতিমতো বাবা বাছা বলিয়া আচরণ করিতেছে! সহসা বুড়ির এমন সুমতি কীসের কারণে হইল বুঝিতেছি না। আবার বুড়ি একা নহে যোগ্য সঙ্গত বুড়াও তাহাকে দিতেছে! সেদিন দেখি আমার বাবা, সরকার মিষ্টান্ন ভাণ্ডার হইতে কলাকাদঁ কিনিয়া আনিয়াছে তাহার পর রাত্তিরে মাকে বলিতেছে, "বিজয়কে দুইটা কলাকাদঁ দাও ও খাইতে ভালবাসে!" অথচ মা মাস দুয়েক আগে একবার যখন বলিয়াছিল, "স্টেশনরোড ধারে যখন যাইতেছ তখন সরকার মিষ্টান্ন ভাণ্ডার হইতে গোটা দশেক কলাকাদঁ কিনিও বিজয় বড্ড ভালবাসে তখন চিল্লাইয়া কহিয়াছিল, "আর কদ্দিন বাপের পয়সায় কলাকাদঁ খাইবে! এইবার নিজে কিছু করুক! আর সেই পয়সায় যতখুশী কলাকাদঁ কিনিয়া খাউক! ওর বয়েসী সক্কলের বিয়া শাদী হইয়া বাচ্চা অবধি হইয়া গেল আর নবাব সাহেব বাপের পেনশনের পয়সার শ্রাদ্ধ করিয়া কলাকাদঁ খাইবেন! এমন পুত্র হওয়ার চাইতে যদি নিঃসন্তান হইতাম তাও ভাল ছিল!" 
বড্ড কষ্ট হইয়াছিল শুনিয়া সেইদিন। বাবা তুমি এমন বলিতে পারিলে! আমার অস্তিত্ব তুমি বাবা হইয়া সহ্য করিতে পারিতেছ না! আমি কী সত্যই এতটা খারাপ! কী কষ্ট পাইয়াছিলাম বলিয়া বুঝানো যাইবে না! জীবনে প্রথমবার মনে হইয়াছিল ঘর ছাড়িয়া চলিয়া যাইব কিন্তু কাপুরুষ আমি সে সাহস আর করিতে পারিলাম না। সামান্য রাঁধিবার ক্ষমতা নাই, মামাবাড়ি ছাড়া বাহির সেইভাবে কখনও দেখি নাই বিদেশ বিভুঁইয়ে চরম বিপদে পড়িতে পারি বিবেচনা করিয়া তিনখানা বিড়ি খাইয়া মনের দুঃখ মনে চাপিয়া দিলাম। সেই বাবা কীনা নিজের ইচ্ছায় আমাকে খাওয়াইবার নিমিত্ত কলাকাদঁ কিনিয়া আনিয়াছে! ইহার পরেও বুড়াকে হিপোক্রিট কহিব না!

চন্দ্রা মাঝখানে একদিন আসিয়াছিল, ব্যস্ত আছি কহিয়া আর দেখা সাক্ষাৎ করি নাই। বুঁচির কোন কাজকম্মো নাই আমাকে জ্বালানো ব্যতিরেকে। বাসায় আসে মায়ের সাথে কীসব গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর করে দেবা ন জানন্তি! সেদিন আবার মা কহিতেছিল, "চন্দ্রার মত মেয়ে দুইটি নাই। আমার বড় ইচ্ছা তোর একটা কিছু গতি হইলে চন্দ্রাকে আমাদের বাসার বউ করিয়া আনিব! ওর হাতে তোর ভার সঁপিয়া আমরা বুড়া বুড়ি নিশ্চিন্তে থাকিব!" চিন্তা কর! বুড়ির ভীমরতি দেখিয়া আমি হাসিব না কাঁদিব বুঝিতে পারিলাম না! গম্ভীর কণ্ঠে বলিলাম, "তিনটি কারণে উহা সম্ভব নহে প্রথমতঃ টেকোচাঁদ দরকার হইলে নিজ কন্যাকে আমৃত্যু অবিবাহিতা রাখিবে তবু আমার হস্তে দিবে না! দ্বিতীয়তঃ বুঁচি যেরকম ধরণের মেয়ে তাহাতে আমাদের বাসায় সে ভাল থাকিবে না আর তৃতীয়তঃ বুঁচিকে আমার সহিত মানাইবে না!" মা খচিয়া গিয়া বলিল, "হ্যাঁ তোমার সাথে তো কেবল ঐশ্বর্য্য রাই ছাড়া আর এই জগতে কাহাকেও মানাইবে না!" আমি প্রত্যুত্তর করিলাম, "ঐশ্বর্য্য রাইয়ের বিবাহ হইয়া গিয়াছে বহুদিন আগে! আর প্রশ্ন ইহা নহে যে বুঁচিকে আমার সহিত মানাইবে কি না! প্রশ্ন হইল বুঁচি যে ধরণের মেয়ে তাহাতে আমি কোনভাবেই তাহার যোগ্য নহি, আমার হইতে ঢেরগুণে ভাল পাত্র তাহার জন্য অপেক্ষা করিতেছে। খামোখা বামন হইয়া চাঁদ ধরিবার স্বপ্ন নাহয় নাইবা দেখিলে।" শেষের কথাখানি বলিবার পর মা কেন জানি চুপ করিয়া গিয়াছিল আর কিছু বলে নাই।

এতসকল একনাগাড়ে লিখিয়া যাওয়া চাট্টিখানি বিষয় নহে তবুও আপাততঃ বিগত একমাসের উল্লেখযোগ্য ঘটনা সকল এইসবই ছিল। আজ নিখিলদার বরাদ্দ একমাস শেষ হইল। আমার সম্মুখে বিস্তর খাতা স্তূপীকৃত হইয়া থরে থরে সাজানো আছে গত একমাসের আমার সকল সাধনার প্রমাণ স্বরূপ। প্রত্যেকদিনের তারিখ সহ ১০২টি করিয়া অঙ্ক চৌত্রিশটি অধ্যায় ধরিয়া ধরিয়া উহাতে কষা আছে। এক রিম অর্থাৎ বিশ দিস্তা খাতা কিনিয়াছিলাম তাহার সতের দিস্তা খাতা আর সাতটি কলম শেষ হইয়াছে। ইহার সাথে সাথে শেষ হইয়াছে অগ্রবাল সাহেবের বইয়ের তিনহাজারেরও বেশী অঙ্ক সমেত চৌত্রিশটি অধ্যায়ই! ইহাই আমার অ্যাকম্প্লীশমেণ্ট! আমার বিগত একমাসের প্রতিটি দিবসে চৌদ্দ ঘণ্টা ধরিয়া খাটিয়া যাইবার প্রমাণ! আমি জানি নাই আমি বিসিএস জয় করিতে পারিব কি না! কিন্তু আমি ইহা জানি, এই পরীক্ষায় বসিবার জন্য নিখিলদার সহায়তা পাইবার যে যোগ্যতামান নির্ধারিত ছিল আমি তাহা পূর্ণ করিয়াছি। শেষ রায় অবশ্যই নিখিলদা দিবে তাই আগামীকালের অপেক্ষায় রইলাম।

আজ আর লিখিতে পারিতেছি না, ঘড়ির কাঁটা সবে রাত্রি আটটার ঘরে, কিন্তু এই শ্রান্ত শরীর জুড়িয়া ঘুম নামিয়া আসিতেছে। একটু শুইয়া লই। চন্দ্রাদের বাসা হইতে গানের কলি ভাসিয়া আসিতেছে, কে গান গাহিতেছে? বড্ড সুরেলা গলা তো? চন্দ্রা বুঝি? কী গাইছে সে,

এবার আমায় ডাকলে দূরে সাগর-পারের গোপন পুরে ॥

বোঝা আমার নামিয়েছি যে,   
সঙ্গে আমায় নাও গো নিজে,
স্তব্ধ রাতের স্নিগ্ধ সুধা পান করাবে তৃষ্ণাতুরে ॥

আমার সন্ধ্যাফুলের মধু
এবার যে ভোগ করবে বঁধু।

তারার আলোর প্রদীপখানি, 
প্রাণে আমার জ্বালবে আনি,
আমার যত কথা ছিল ভেসে যাবে তোমার সুরে॥


(ক্রমশঃ)



★★★
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#66
যাক, অবশেষে যখন বিজয় বিসিএস পরীক্ষায় বসার যোগ্যতা অর্জন করলো, তখন জয় তার নিশ্চিত। 

তবে মাসখানেক পর আপডেট .. তাও আবার শিশুর হিসুর মতো .. এই একটুখানি .. মন ভরলো না ভাই। এতদিন যখন সময় নিলে আরও সময় নিতে পারতে। কিন্তু আপডেট যখনই দেবে, বেশ বড়সড়ো আপডেট দেবে। একসঙ্গে দুটো বা তিনটে মিলিয়ে সম্ভব না হলেও একটা আপডেট দিলেও বেশ বড় করেই দেওয়া উচিৎ। এতে পাঠকদের পড়তে সুবিধা হয়। কৈশোর কালে কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি জীবনে আমরা একটা খেলা খেলতাম .. সেটার নাম হলো মেমোরি গেম। ধরো ছ'জনে বসে খেলা হচ্ছে। প্রথমজন যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলে। দ্বিতীয় জনকে প্রথমজন যেটা বলেছে সেই নামটা উল্লেখ করে অন্য একজন ব্যক্তি বা স্থানের বা যেকোনো কিছুর নাম বলতে হয়/হতো। তারপরের জনকে আবার প্রথম এবং দ্বিতীয় জন যেটা বলেছে সেটা বলে নিজের বলা নামটা বলতে হতো। এভাবে খেলাটা চলতে থাকতো। যার স্মৃতি দুর্বল, সে এই গেম থেকে আউট হয়ে যেতো। যে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতো, সেই বিজয়ী হতো। তোমার থ্রেডে ঢোকার পর আমার সেই খেলার কথা মনে পড়ে গেলো। এতদিন আগে লেখা যে .. সত্যি কথা বলছি, আগের পর্বের সমস্ত ঘটনা ভুলে গিয়েছিলাম। তাই আগের পর্বটা পড়ে নিয়ে এই পর্বে আসতে হয়েছে, না হলে কিছুই বুঝতে পারতাম না। অর্থাৎ আমার বক্তব্য হলো যদি এত দেরিতে আপডেট আসতে থাকে, তাহলে আগের পর্বগুলো পড়ে নিয়ে তবে নতুন পর্ব পড়তে হবে। যেটা পাঠকদের কাছে ভীষণ কষ্টকর এবং চাপের বলে আমি মনে করি।

এইসব বললাম বলে মুখে যাই বলো না কেনো, মনে মনে তোমার নিশ্চয়ই খারাপ লাগবে এবং আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হবে। কিন্তু কিছু করার নেই, আমি এইরকমই। একটা জিনিস লক্ষ্য করলে দেখা যাবে আমি খুব বেশি থ্রেডে মন্তব্য করি না বা বলা ভালো গল্পগুলো পড়িই না। তার দুটো কারণ আছে। প্রথম কারণ হলো লেখকেরা পাঠকদের সঙ্গে কমিউনিকেট করতে জানেইনা/শেখেইনি। তাই সেইসব লেখকদের থ্রেডে গিয়ে কিছু বলা বা অনুরোধ করা বা সাজেশন দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। আর দ্বিতীয় কারণ হলো বেশিরভাগ গল্প এখানে এতটা নিম্নমানের এবং বেশিরভাগ লিখক এখানে গল্প শুরু করে শেষ করতে পারেন না। তাই শুধু শুধু তাদের থ্রেডে গিয়ে অরণ্যরোদন করি না। কিন্তু তোমাকে এতগুলো কথা বললাম তার কারণ, আমার বিশ্বাস খুব দেরিতে হলেও তুমি গল্পগুলো শেষ করবে এবং পাঠকদের সঙ্গে ভালো রকম কমিউনিকেট করতে পারো, এছাড়া তোমার প্রত্যেকটি গল্প খুবই ভালো এবং উচ্চমানের।  ভালো থাকো সুস্থ থাকো এবং লিখতে থাকো।

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 4 users Like Bumba_1's post
Like Reply
#67
(16-02-2023, 04:35 PM)ddey333 Wrote: এখন হংকং এয়ারপোর্টে আছি দিল্লির ফ্লাইট দুই ঘন্টা পরে।   

ভাবিয়া  ''কোরিয়া'' কাজ  ।  ''কোরিয়া'' ভাবিও না ।   -  একটি নির্ভেজাল দেশি প্রবাদ ।  - সালাম ।
[+] 2 users Like sairaali111's post
Like Reply
#68
(16-02-2023, 05:54 PM)Bumba_1 Wrote: যাক, অবশেষে যখন বিজয় বিসিএস পরীক্ষায় বসার যোগ্যতা অর্জন করলো, তখন জয় তার নিশ্চিত। 

তবে মাসখানেক পর আপডেট .. তাও আবার শিশুর হিসুর মতো .. এই একটুখানি .. মন ভরলো না ভাই। এতদিন যখন সময় নিলে আরও সময় নিতে পারতে। কিন্তু আপডেট যখনই দেবে, বেশ বড়সড়ো আপডেট দেবে। একসঙ্গে দুটো বা তিনটে মিলিয়ে সম্ভব না হলেও একটা আপডেট দিলেও বেশ বড় করেই দেওয়া উচিৎ। এতে পাঠকদের পড়তে সুবিধা হয়। কৈশোর কালে কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি জীবনে আমরা একটা খেলা খেলতাম .. সেটার নাম হলো মেমোরি গেম। ধরো ছ'জনে বসে খেলা হচ্ছে। প্রথমজন যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলে। দ্বিতীয় জনকে প্রথমজন যেটা বলেছে সেই নামটা উল্লেখ করে অন্য একজন ব্যক্তি বা স্থানের বা যেকোনো কিছুর নাম বলতে হয়/হতো। তারপরের জনকে আবার প্রথম এবং দ্বিতীয় জন যেটা বলেছে সেটা বলে নিজের বলা নামটা বলতে হতো। এভাবে খেলাটা চলতে থাকতো। যার স্মৃতি দুর্বল, সে এই গেম থেকে আউট হয়ে যেতো। যে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতো, সেই বিজয়ী হতো। তোমার থ্রেডে ঢোকার পর আমার সেই খেলার কথা মনে পড়ে গেলো। এতদিন আগে লেখা যে .. সত্যি কথা বলছি, আগের পর্বের সমস্ত ঘটনা ভুলে গিয়েছিলাম। তাই আগের পর্বটা পড়ে নিয়ে এই পর্বে আসতে হয়েছে, না হলে কিছুই বুঝতে পারতাম না। অর্থাৎ আমার বক্তব্য হলো যদি এত দেরিতে আপডেট আসতে থাকে, তাহলে আগের পর্বগুলো পড়ে নিয়ে তবে নতুন পর্ব পড়তে হবে। যেটা পাঠকদের কাছে ভীষণ কষ্টকর এবং চাপের বলে আমি মনে করি।

এইসব বললাম বলে মুখে যাই বলো না কেনো, মনে মনে তোমার নিশ্চয়ই খারাপ লাগবে এবং আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হবে। কিন্তু কিছু করার নেই, আমি এইরকমই। একটা জিনিস লক্ষ্য করলে দেখা যাবে আমি খুব বেশি থ্রেডে মন্তব্য করি না বা বলা ভালো গল্পগুলো পড়িই না। তার দুটো কারণ আছে। প্রথম কারণ হলো লেখকেরা পাঠকদের সঙ্গে কমিউনিকেট করতে জানেইনা/শেখেইনি। তাই সেইসব লেখকদের থ্রেডে গিয়ে কিছু বলা বা অনুরোধ করা বা সাজেশন দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। আর দ্বিতীয় কারণ হলো বেশিরভাগ গল্প এখানে এতটা নিম্নমানের এবং বেশিরভাগ লিখক এখানে গল্প শুরু করে শেষ করতে পারেন না। তাই শুধু শুধু তাদের থ্রেডে গিয়ে অরণ্যরোদন করি না। কিন্তু তোমাকে এতগুলো কথা বললাম তার কারণ, আমার বিশ্বাস খুব দেরিতে হলেও তুমি গল্পগুলো শেষ করবে এবং পাঠকদের সঙ্গে ভালো রকম কমিউনিকেট করতে পারো, এছাড়া তোমার প্রত্যেকটি গল্প খুবই ভালো এবং উচ্চমানের।  ভালো থাকো সুস্থ থাকো এবং লিখতে থাকো।

এত বকাবকি করার কিছু হয়নি, যথেষ্টই বড় আপডেট দিয়েছে।

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
#69
খুব ভালো লাগলো আজকের পর্ব @মহাবীর্য্য

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
#70
(16-02-2023, 07:07 PM)Sanjay Sen Wrote: এত বকাবকি করার কিছু হয়নি, যথেষ্টই বড় আপডেট দিয়েছে।

[Image: baby-what.gif]

বকাবকি কোথায় করলাম সেন মহাশয়? আমি তো পক্ষান্তরে উনার প্রশংসাই করলাম। এমনিতেই ভালো লেখক, যাতে আরো ভালো হয় সেই জন্যই কথাগুলো বললাম।
[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
#71
সত্য বলিতে তুমি বাস্তবিক উত্তম কহিয়াছ। উত্তরণ কাহিনীর চতুর্থ পর্ব্ব আসিবার কাল বাস্তবিক সুদীর্ঘ হইয়াছে। ভুলিয়া যাওয়া খুব স্বাভাবিক! আমি স্বয়ং এই কাহিনীর কথা ভুলিয়া যাইবার চেষ্টায় খামতি রাখি নাই কিন্তু এক মহাপাজি লোক যতবার আমি ভুলিয়া যাইবার চেষ্টা করিয়াছি ততবার উদগ্রীব চিত্তে আসিয়া আমাকে এই কাহিনীর কী সমাপন হইবে না বলিয়া খোঁচা দিয়াছে! এমন নাছোড়বান্দা পাঠক জুটিলে না লিখিয়া পরিত্রাণ আছে! অগত্যা লিখিতেই হইল! আনিতেই হইল চতুর্থ পর্ব্ব! ধরিয়া বাঁধিয়া আনাইয়া লইল বলিলেও অত্যুক্তি হইবে না!

যাহা হউক বিলম্বহেতু তোমাকে যে পূর্ব্বকাহিনী ফের পড়িতে হইয়াছে জানিয়া কিন্তু খুশীই হইলাম, ইহাকে একটু ঘুরাইয়া যদি কহি আমার কাহিনী জ্যেষ্ঠর এত ভাল লাগিয়াছিল যে দুই দুইবার পড়িয়াছে! দোষ দিতে পারিবে না!

তোমার মেমোরি গেম কনসেপ্ট ভাল লাগিল, যদি কপিরাইট না মারিবার আজ্ঞা দাও তো কোন কাহিনীতে গুঁজিয়া দিব! সে যাহা হউক, আমি চেষ্টা করিব যত সত্ত্বর সম্ভব পরবর্ত্তী পর্ব্ব আনিতে বারম্বার খোদ বুম্বা মহাবীর্য্যের কাহিনী দুই-দুইবার পড়িতেছে ইহা ভাল দেখায় না লোকেও বদনাম করিবে যে অনুজ হইয়া জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাকে কীরূপ নাজেহাল করিতেছে! মহাবীর্য্য এখন মহাপাষণ্ড হইয়া গিয়াছে বলিয়া দিবে! তাই ওই ভুল না করিবার চেষ্টা করিব।
তোমার কাহিনী ভাল লাগিয়াছে ইহা জানিয়া ভাল লাগিল। আর লেখক পাঠক সম্পর্ক তো চিরকাল মধুর। সে আমি তোমার পাঠক হই বা তুমি আমার কীই বা যায় আসে। জ্যেষ্ঠ তুমি আমার, আমাকে উপদেশ না দিলে ঠোঁট ফুলাইব! উপদেশ পাইলে মন খারাপ করিব কেন!

সত্য বলিতে  ক্ষণকালের যাত্রী আমরা, কিছুটা সময় যখন কাটাইব তখন নাহয় একটু গপ্পো করিয়া, আমোদ করিয়া কাটুক!
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#72
(16-02-2023, 06:21 PM)sairaali111 Wrote:
ভাবিয়া  ''কোরিয়া'' কাজ  ।  ''কোরিয়া'' ভাবিও না ।   -  একটি নির্ভেজাল দেশি প্রবাদ ।  - সালাম ।

বাঃ! দেবী বাঃ! খাটিল একজনে পয়সা পাইল আরেকজনা! banghead ইহাকেই বলে রামের বাসায় খাইয়া শ্যামের গুণগান গাওয়া ইহাও একটি নির্ভেজাল দিশি প্রবাদই বটে! Dodgy

সালাম
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#73
(17-02-2023, 08:10 AM)মহাবীর্য্য দেবশর্ম্মা Wrote: বাঃ! দেবী বাঃ! খাটিল একজনে পয়সা পাইল আরেকজনা! banghead ইহাকেই বলে রামের বাসায় খাইয়া শ্যামের গুণগান গাওয়া ইহাও একটি নির্ভেজাল দিশি প্রবাদই বটে! Dodgy

সালাম

দিশি লইয়া অ্যাতো মাতামাতি চমক ধমক খেয়োখেয়ি ...... সেক্ষেত্রে সংশয়ের কণিকামাত্রও অবশিষ্ট থাকে না যে জনাবজীগণ , অন্তত গরিষ্ঠাংশই , দিশি মা কালী  এবং সংশ্লিষ্ট ''কালী মার্কা''-র নিপাট ভক্ত । .... কাকের বাসায় ... ''ডিম'' অথবা  শ্যাম - ''রাম''  - উটকো সায়রার  এতদ্বিষয়ে বিন্দুমাত্র অভিজ্ঞতা বা আলোচনার অধিকার নাই , জী ।  - সালাম ।
[+] 1 user Likes sairaali111's post
Like Reply
#74
(16-02-2023, 07:07 PM)Sanjay Sen Wrote: এত বকাবকি করার কিছু হয়নি, যথেষ্টই বড় আপডেট দিয়েছে।

এই কথাটাই আমি তখন হইতে বলিতে চাইতেছি কিন্তু দেখুন দিকিনি আমারে কেমন বকাবকি করিতেছে! Dodgy
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#75
অপূর্ব !!
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#76
আমাকে হয়তো আবার ব্যান করিয়ে দেবে ওই বিশেষ লোকেরা।

এবার আর ফিরে আসতে চাই না , তাই শুধু লাইক আর রেপু দিয়ে আমার অভিব্যক্তি জানাবো।


Namaskar Heart
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#77
(17-02-2023, 11:10 AM)ddey333 Wrote: অপূর্ব !!

thanks
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#78
(18-02-2023, 08:07 AM)ddey333 Wrote: আমাকে হয়তো আবার ব্যান করিয়ে দেবে ওই বিশেষ লোকেরা।

এবার আর ফিরে আসতে চাই না , তাই শুধু লাইক আর রেপু দিয়ে আমার অভিব্যক্তি জানাবো।


Namaskar Heart

check pm

Namaskar
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#79
(16-02-2023, 07:09 PM)Sanjay Sen Wrote:
খুব ভালো লাগলো আজকের পর্ব @মহাবীর্য্য

thanks Namaskar
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#80
(16-02-2023, 07:27 PM)Bumba_1 Wrote:
[Image: baby-what.gif]

বকাবকি কোথায় করলাম সেন মহাশয়? আমি তো পক্ষান্তরে উনার প্রশংসাই করলাম। এমনিতেই ভালো লেখক, যাতে আরো ভালো হয় সেই জন্যই কথাগুলো বললাম।

Big Grin Big Grin Big Grin
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply




Users browsing this thread: 2 Guest(s)