Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
শিলাবতী
TamalGhosh
ভূমিকা ১
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে বালক সত্যজিৎ রায়কে তার মা সুপ্রভা দেবী একবার নিয়ে গিয়েছিলেন । বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ পরম স্নেহের সাথে পিতৃহারা-বালক সত্যজিৎকে নিজের বুকে টেনে নিয়ে, তার কুশল শুধালেন । তখন বালক সত্যজিৎ কবিগুরুর সান্নিধ্যে এসে, তার খোলা ডায়রিতে কবিকে দুই-চার ছত্র কবিতার কলি লিখে দিতে বারবার অনুরোধ করে । বিশ্বকবি সত্যজিতের হাত থেকে তার ডায়রিটা পরম মমতা ভরে নিয়ে, আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে লেখনীমুখে সৃষ্টি করলেন :
“বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু ।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশির বিন্দু ।।”
আমাদের ঘরের অঙ্গনে, মুক্ত প্রকৃতির মধ্যে যে অনাবিল সৌন্দর্য রয়েছে, তার অপরূপ রূপ-ঐশ্বর্য আস্বাদনের কথা বিশ্বকবি বালক সত্যজিৎকে বলেছিলেন । ভবিষ্যতে কবির এই মহত্তম বাণীর কি সুফল ফলেছিল তা আমরা সকলেই জানি । পথের পাঁচালি থেকে মহাপথিক সত্যজিতের জয়যাত্রার শুভারম্ভ, আগন্তুকে তার লক্ষ্যস্থলে পৌঁছানো – এক স্বর্ণোজ্জ্বল, বর্ণময় ইতিহাস ।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
ভূমিকা ২
একটি গল্পের ঘটনা এবং চরিত্রগুলি কল্পনা করা যায় । কিন্তু স্থান কল্পনা করা দুরহ ব্যপার । সেটা করতে গেলে গল্পটা ঠিক মতো হয় না । তাই বাস্তব থেকে কয়েকটি জায়গার নাম এই গল্পে ব্যবহৃত হবে । যদিও সেই জায়গাগুলির সাথে এই গল্পের ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই । কোলকাতা এবং তার আশেপাশের কয়েকটি জায়গার নাম এই গল্পে ব্যবহৃত হবে । গল্পের সাথে সাথে এই জায়গাগুলির ইতিহাস কিছুটা উঠে আসবে । এবং তার সাথে সেই সমস্ত জায়গার কিছু বর্ণনা থাকবে । আশা করি পাঠকদের সেটা ভালোই লাগবে । এবং আমাদের ঘরের সামনেই যে এরকম জায়গা আছে তা জেনে নিশ্চয়ই খুশী হবেন ।
কাঁচা হাতে লিখতে গিয়ে কিছু ভুলভ্রান্তি আসবে । আশা করি পাঠকরা নিজ গুনে ক্ষমা করবেন । এই প্রসঙ্গে একটা একটা ছোট্ট ঘটনার কথা মনে আসছে –
একটি বাড়িতে নতুন বউ এসেছে । বউ লেখাপড়া জানা, সুন্দরী । শশুর-শাশুড়ী অনেক দেখেশুনে বাড়িতে বউমা এনেছেন । গর্ব করে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বউমার গুনাগুণ করেছেন । বিয়ের দু-চারদিন পর এক দুপুরে নিকট আত্মীয়দের খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে । বাড়ির নতুন বউ ডিমের ঝোল রান্না করেছে । বেশ গন্ধ উঠেছে । শশুর-শাশুড়ী খুব খুশী । খাবার পঙ্গতে সকলে খেতে বসেছে । একে একে ভাত, ডাল, চচ্চড়ি পরিবেশন করা হচ্ছে । শশুরমশাই বড় মুখ করে বললেন – “বউমা এবার আসল জিনিসটা দাও ।” বউমা তার সুন্দর মুখে, পাতলা পাতলা ঠোঁটে হাঁসি ফুটিয়ে – “হ্যাঁ বাবা আনছি” -বলে নধর পাছা দোলাতে দোলাতে ডিমের ঝোল পরিবেশন শুরু করল । প্রথমেই তার বড় ননদ বসে ছিল । তার স্টিলের প্লেটে ডিম পড়তেই ‘ঠক’ করে একটা আওয়াজ হ’ল । সবাই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল – “কি হ’ল, কি হ’ল” ভাব । ননদ তার কালো মুখে তাচ্ছিলের হাঁসি হেঁসে বলল – “মা তোমার শিক্ষিতা, সুন্দরী বউমা রান্নাটা খুবই সুন্দর করেছে, শুধু ডিমের খোসা ছাড়াতে ভুলে গেছে ।”
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Update - 1
রুদ্রনাথ এই সবে ২৬ বছরে পা দেওয়া যুবক । ঝকঝকে, স্মার্ট চেহারা । ৫’১০” হাইট । লম্বাটে, ধারালো নাকমুখ, চোখে হালকা ফ্রেমের ফ্যাশেনবল চশমা । গায়ের রং বাদামি । কথাবার্তা বেশ গুছিয়ে বলতে পারে । তার CA ফাইনাল ইয়ার চলছে । ‘রায় এন্ড রায়’ চাটার্ড ফার্ম-এর সাথে যুক্ত হয়েছে । এখানে আর্টিকেলশিপ করছে । ছাত্র হিসাবে বেশ ভালো । সিনিয়ররা তাকে পছন্দ করে । অনেক বড় বড় কম্পানিতে সে তাদের সঙ্গে যায় অডিটের কাজে ।
‘রায় এন্ড রায়’ চাটার্ড ফার্মটির গড়িয়াহাটে এক বিশাল অফিস আছে । এর M.D. মন্দিরা রায় । বয়স ৫৫ বছর । আগে তাঁর স্বামী সুদর্শন রায় M.D. ছিলেন । বছর পাঁচ আগে তাঁর হার্ট এটার্ক হয় । তারপর থেকে মন্দিরা দেবীই চালাছেন । মন্দিরা রায়ও একজন C.A. । তাঁদের একমাত্র ছেলে আমেরিকায় থাকে । সেখানেই সেটেল্ড । বছরে একবার মায়ের কাছে আসে ।
মন্দিরা দেবী রোজ সকালে জিমে যান । সেজন্য এখনো নিজের যৌবনকে চলে যেতে দেননি । তাঁকে দেখলে ৪৫-৪৬ বছরের বেশি বয়স বলে মনে হয় না । জিম করার ফলে ফিগারটিও সেরকম । শরীরে একফোঁটা মেদ জমতে দেননি । তিনি সবসময় আধুনিক পোশাক পড়ে অফিসে আসেন । তবে যেদিন তিনি শাড়ি পড়ে আসেন, সেদিন সব পুরুষ গুলির অবস্থা খারাপ । পিঠের অনেকটা অংশ খোলা, ডিপ কাট ব্লাউজের মধ্যে থেকে মাই জোড়া যেন ফেটে বেড়িয়ে আসতে চায় । আর শাড়ি নাভির কয়েক ইঞ্চি নিচে পড়ার ফলে মসৃণ নাভিদেশ অনেকটা দেখা যায় । সে চিতল মাছের পেটি দেখে সিনিয়রদের অবস্থাও খারাপ হয়ে পড়ে ।
মন্দিরা দেবী সম্বন্ধে অনেক কিছু শোনা যায় । তাঁর অনেক পুরুষ বন্ধু আছে । তিনি ডিঙ্কস করতে পছন্দ করেন । নাইট ক্লাবে প্রায়ই যান । এইসব কিছু তাঁর পোশাক-আশাক দেখলেও বিশ্বাস হয় । তবে কাজে তাঁর কোনরকম ফাঁকি নেই । ঠিক টাইমে অফিসে আসেন এবং ঠিক টাইমেই যান । অতবড় ফার্ম, কিন্তু তার সমস্ত কাজের গতিবিধি তাঁর নখদর্পণে । সেজন্য এই ফার্মের যথেষ্ট সুনাম আছে ।
এহেন মন্দিরা দেবীর প্রিয়পাত্র রুদ্রনাথ । প্রথম থেকেই কেন যেন সে ম্যাডামের সুনজরে পড়ে গেছে । এজন্য অবশ্য অন্যদের কাছে থেকে তাকে মাঝে মাঝেই টিটকারি শুনতে হয় । তাকে আর ম্যাডামকে নিয়ে তার সমবয়স্করা নানা রসালো মন্তব্য করে । সে সব শোনে, বিশেষ প্রতিবাদ করে না । কারন সে জানে এক্ষেত্রে প্রতিবাদ নিষ্ফল ।
একদিন ম্যাডামের অফিসে তার ডাক পড়ল । সে যেতে ম্যডাম বললেন, “এস রুদ্র । আচ্ছা, পরশু তো আমাদের অফিস বন্ধ, ঐ দিন তোমার কোন কাজ আছে ?”
রুদ্র – “না ম্যাম, সেরকম কিছু নেই । একরকম ফ্রি আছি ।”
মন্দিরা – “ঐদিন গোলপার্কের নজরুল মঞ্চে এখানকার একটা কলেজের Program আছে । ওরা একটা বক্তৃতা প্রতিযোগিতা করছে । তাতে আমাকে জাজ করেছে । তুমি আমার সাথে যেতে পারবে ?”
রুদ্র – “ঠিক আছে ম্যাম । কখন আসতে হবে ?”
মন্দিরা – “ঐদিন সকাল দশটায় তুমি আমার ফ্ল্যাটে চলে এস । তারপর আমরা একসাথে যাব ।”
রুদ্র – “ইয়েস ম্যাম ।”
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
নির্দিষ্ট দিনে প্রতিযোগিতা চলছে । একে একে ছাত্রছাত্রীরা আসছে এবং যে যার বক্তব্য রাখছে । একসময় একটি মেয়ে উঠে এল । পরনে জিন্স আর টপ । মেয়েটি ঝকঝকে, স্মার্ট, মাথায় বয়কাট চুল, নাখ মুখ বেশ সুন্দর । গায়ের রং টকটকে ফরসা । মেয়েটি তুখোড় বলল । অনেক হাততালি পড়ল । রুদ্র মেয়েটির চাল চলন ইত্যাদি লক্ষ্য করছিল । মেয়েটির চাল-চলনে একটা আভিজাত্য আছে । নিশ্চয়ই কোন বড় বাড়ির মেয়ে হবে । নামটাও বেশ সুন্দর – ঋতুপর্ণা চ্যাটার্জি । মেয়েটি 3rd year এ পড়ে Philosophy নিয়ে । এসবই ঘোষণা থেকেই জানতে পারল । রুদ্রর বেশ লাগল মেয়েটিকে । বলার ভঙ্গিতে সে মুগ্ধ ।
যখন ফলাফল ঘোষণা করা হ’ল, দেখা গেল যে ঋতুপর্ণা নামের মেয়েটি ফার্স্ট হয়েছে । মেয়েটির ব্যক্তব্য এবং বলার ঢং, রুদ্রর ভালো লেগেছিল । সে ওখান থেকে বেড়িয়ে রামকৃষ্ণ মিশন পেরিয়ে গোলপার্কের মোড় থেকে একটা সুন্দর গোলাপের bouquet নিয়ে এল । ঐ জায়গাটায় বেশ সুন্দর সুন্দর Flower Bouquet পাওয়া যায় । নিয়ে আসার পর সে সমস্যায় পড়ল । কিভাবে সে মেয়েটিকে এটি দেবে । এদিক ওদিক দেখছে কারো সাহায্য পাওয়া যায় কিনা । তখনই দেখল যে তার ম্যাডাম প্রিন্সিপ্যালের সাথে বেড়িয়ে আসছে । বুঝল অনেকটা সময় চলে গেছে ফুল কিনতে । তাদের যাবার সময় চলে এল ।
ম্যাডাম কাছে এসে প্রিন্সিপ্যালের সাথে রুদ্রর পরিচয় করিয়ে দিলেন । তারপর জিজ্ঞাসা করলেন bouquet কার জন্য । সে একটু লজ্জা পেয়ে বলল যে ঋতুপর্ণা নামের মেয়েটি অভিনন্দন জানানোর জন্য সে এনেছে । প্রিন্সিপ্যাল ভদ্রলোক বললেন, “এখন তো ওকে পাওয়া মুস্কিল । এক কাজ কর একটা কাগজে তোমার নাম লিখে bouquet-এর সাথে দিয়ে দাও । আমি পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করছি ।” রুদ্র লিখে দিতে ভদ্রলোক কলেজের এক স্টাফ কে ডেকে সব বুঝিয়ে দিলেন ।
ঋতুপর্ণা বন্ধুদের মাঝে ছিল । অনেকেই তাকে অভিনন্দন জানাছিল । এই সময় কলেজের পিয়ন গোপাল এসে ঋতুপর্ণার হাতে ঐ bouquet-টা দিল । ঋতুপর্ণা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কে পাঠিয়েছে, গোপালদা ?”
গোপাল – “এই নাও, এই কাগজে তেনার নাম-ধাম লেখা আছে ।”
Bouquet-টা পেয়ে ঋতুপর্ণার ভালো লাগল । বেশ সুন্দর bouquet । যে কিনেছে তার পছন্দের তারিফ করতে হয় । সে তিন-চারবার বিভিন্ন competition-এ ফার্স্ট হয়েছে কিন্তু এরকম অভিনন্দন কখনো পায়নি । সে চিরকুটটা দু-তিনবার ভালোভাবে পড়ল । রুদ্রনাথ নামের কেউ একজন পাঠিয়েছে ।
অন্য বন্ধুরা হুমড়ি খেয়ে পড়ল – “কি নাম রে, তোর নতুন আশিকের ?”
ঋতুপর্ণা মুচকি হেঁসে – “রুদ্রনাথ ।”
প্রিয়া – “হায়, মরি মরি ।”
অপর্ণা – “কিউট নেম – রুদ্র ।”
শালিনী – “কেমন দেখতে রে ?”
ঋতুপর্ণা – “আমি দেখেছি নাকি, যে বলব ?”
প্রিয়া – “বিনা পরিচয়ে এত দামি বুকে, বিশ্বাস হয় না ।”
ঋতুপর্ণা – “মাইরি বলছি, আমি এই নামের কাউকে চিনি না ।”
পরেরদিন প্রিন্সিপ্যাল স্যার তাকে নিজের অফিসে ডেকে ফার্স্ট হবার জন্য অভিনন্দন জানালেন । এরপর কথায় কথায় রুদ্রনাথের কথা এল । স্যার যা জানতেন সেটা ঋতুপর্ণাকে বললেন ।
তিনদিন পর কলেজের শেষে বিকালবেলা সে ‘রায় এন্ড রায়’ -এর অফিসে হাজির হ’ল । তার মনে কৌতূহল, কে এই রুদ্রনাথ একবার দেখতে হবে আর সুন্দর বুকেটার জন্য Thanks জানাতে হবে । অফিসটা বিশাল বড় । পুরোটা এয়ার-কন্ডিশনড । এখানে অনেক লোক কাজ করে । অনেকটা ঝোঁকের মাথায় চলে এসেছে । এখন ভাবছে যে এসে ঠিক করল কিনা । রিসেপশনে একটি তরুণী বসেছিল । তার কাছে গিয়ে বলতে সে একটা ছাপানো স্লিপ দিয়ে ফিল-আপ করে দিতে বলল । সেটা ফিল-আপ করে দিতে রিসেপশনিষ্ট মেয়েটি তাকে একটু ওয়েট করতে বলল ।
নিজের নাম-ঠিকানা লিখে দিয়ে সে পুরু গদিওলা সোফায় বসে ভাবতে লাগল, এভাবে আসাটা বোধহয় ঠিক হয়নি । ভদ্রলোক কি মনে করবে । নিশ্চয়ই তাকে একটা বাজে গায়েপড়া মেয়ে ভাববে । কিছুক্ষণ পর সে ভাবল, দেখা না করেই চলে যাবে । কিন্তু যাওয়া হ’ল না । সে উঠে দাঁড়িয়েছে, ঠিক এই সময় কাঁচের দরজা ঠেলে এক যুবক প্রবেশ করল । ঋতুপর্ণা লক্ষ্য করল তাকে দেখা মাত্র যুবকটির চোখে মুখে বিদ্যুৎ খেলে গেল । সেই সঙ্গে অপার বিস্ময় । এগিয়ে এসে বলল, “হাই, আমি রুদ্রনাথ ।”
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
poka64
চিকেন ফ্রাই গরম গরম
শুরুটা দাদা হয়েছে চরম
প্রথম দেখাতেই রুদ্রনাথ
ঋতুর চেকে কিস্তি মাত
Posts: 1,154
Threads: 0
Likes Received: 1,382 in 927 posts
Likes Given: 3,566
Joined: Apr 2022
Reputation:
146
দুর্দান্ত লেখা কিন্তু ইনকম্লিট কেন ।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(06-01-2023, 02:49 PM)Boti babu Wrote: দুর্দান্ত লেখা কিন্তু ইনকম্লিট কেন ।
তমাল ঘোষ আরো একটি গল্প শুরু করেছিলেন কিন্তু শেষ করার আগেই XOSSIP বন্ধ হয়ে যায়।
নতুন একটা থ্রেড খুলে যেটুকু লিখেছিলেন দিয়ে দিচ্ছি।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Update – 2
ঋতুপর্ণার একটা অস্বস্তিভাব ভেতরে ভেতরে চলছিল । এখন রুদ্রনাথ সামনে আসতে সেটা আরো বেড়ে গেল । মনে মনে এখানে আসার যুক্তিটাকে ঝালাই করতে লাগল । সে হাত বাড়িয়ে দিল – “হ্যালো” ।
ঋতুপর্ণার হাতটা ছুঁয়ে রুদ্র বলল, “প্লিজ, বি সিটেড । আপনি এখানে আসবেন, এটা আমি ভাবতে পারিনি । ইট’স বিয়ন্ড মাই ইমাজিনেশন ।”
তারা মুখোমুখি বসল । কিন্তু রুদ্র সঙ্গে সঙ্গেই উঠে দাঁড়াল আর “জাস্ট আ মিনিট” – বলে কাঁচের দরজার ভেতর চলে গেল । কিছুক্ষণ পর দু মগ কফি আর কিছু স্ন্যাক্স নিয়ে হাজির হ’ল । ঋতুপর্ণা বিব্রত বোধ করল । বলল, “এসব আবার কেন ?”
রুদ্র – “প্রথমদিন আমাদের অফিসে এলেন । একটু কিছু না দিয়ে একেবারে খালিমুখে আলাপ ঠিক জমবে না । নিন শুরু করুন ।”
ঋতুপর্ণা নিঃশ্বব্দে কফি পান করছে আর মনে মনে ভাবছে এখন কি বলা যায় । কোন পাগল ছাড়া কেউ এইভাবে কারো সাথে দেখা করতে আসে ? রুদ্রনাথ ভাবছে মেয়েটার কি কোন স্কু ঢিলে আছে নাকি । তার সাথে কথা বলতে এসে চুপচাপ কফি খাচ্ছে । শেষে সেই শুরু করল – “এবার বলুন, এখানে কি জন্য আসা ?”
ঋতুপর্ণা, “সে দিনের বুকেটার জন্য ধন্যবাদ জানাতে এসেছি । অবশ্য ফোন করেও ধন্যবাদ জানানো যেত । কিন্তু ভাবলাম, সামনাসামনি গিয়ে জানানোই ভালো । আমাদের কলেজ থেকে আপনাদের অফিস তো খুব দূরে না । হেঁটেই আসা যায় । মেনি মেনি থ্যাংকস ফর দা বুকে ।”
রুদ্র – “এতে ধন্যবাদ দেবার কি আছে ? আপনার পারফর্মেন্স সত্যই অতুলনীয় ছিল । বাই দ্যা ওয়ে, আপনার পারফর্মেন্স দেখে মনে হয় এটা আপনার প্রথমবার নয় ।”
ঋতুপর্ণা – “হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন । আমি এর আগেও কয়েকবার পারফর্ম করেছি ।”
রুদ্র – “সেদিন আপনি যা বলেছিলেন – সিম্পলই সুপার্ব । যদিও আপনার বক্তব্য বিষয় সম্বন্ধে আমি বিশেষ কিছু বুঝি না, কিন্তু আপনি যেভাবে ইন্টারপ্রেট করেছিলেন আমার মতো আনাড়ির কাছে তা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে । আমাদের ম্যাম তো গাড়িতে আসতে আসতে আপনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছিলেন ।”
ঋতুপর্ণা মনে মনে বলল, “আপনার ম্যামের থেকে আপনার উচ্ছ্বাসটা শতগুণ বেশি মনে হচ্ছে ।” তার মুখটা একটু লাল হয়ে উঠল । সবেমাত্র আলাপ হয়েছে কিন্তু এমন একজন সুদর্শন যুবকের এত প্রশংসায় তার মতো সপ্রতিভ মেয়েরও একটু সঙ্কোচ হ’ল । সে ব্যাপারটা উড়িয়ে দেবার ভঙ্গিতে হাত নেড়ে বলল, “ও কিছু না, ও কিছু না ।” তারপর কলেজের দু-এক জন প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম করে বলল, “ওরাও খুব ভালো বলেছে ।”
রুদ্র – “তা বলেছে, আমি অস্বীকার করছি না । কিন্তু বিচারকরা অনেক কন্সিডার করে স্পিকার হিসাবে আপনাকে বেস্ট ডিক্লিয়ার করেছিলেন ।”
ঋতুপর্ণা – “তা হতে পারে । তবে আমার মনে হয় আপনি একটু বাড়িয়ে বলেন ।”
রুদ্র একটু হেঁসে বলল, “একটুও বাড়িয়ে বলছি না । আমার যা মনে হয়েছে তাই বললাম । এখন বিশ্বাস করা না-করা সম্পূর্ণ আপনার ব্যপার ।”
ঋতুপর্ণা চুপচাপ আছে । কি বলবে ?
রুদ্র – “এরপরের প্রগ্রাম কবে ?”
ঋতুপর্ণা – “সামনের মাসে একটা আছে । কিন্তু ডেট ঠিক হয়নি এখনো ।”
রুদ্র - “ও আচ্ছা । যদি কিছু মনে না করেন তাহলে একটা রিকোয়েস্ট করব ?”
ঋতুপর্ণা একটু সচেতন হ’ল । কিন্তু মুখে সে ভাব ফুটে উঠেতে দিল না । স্বাভাবিক ভাবে বলল – “কি ?”
রুদ্র – “আপনার ফোন নাম্বারটা দেবেন । আমি ডেটটা আপনার কাছ থেকে নিয়ে হাজির হব ।”
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
ঋতুপর্ণার মনের ভেতরে হঠাৎই কুয়াশা জমতে শুরু করল । হয়তো সেটা সংশয়ই । ছেলেটার সারল্য, সৌজন্য, অপকট কথাবার্তা, উচ্ছ্বাস – এসব মিলিয়ে একটা মুখোশ নয়তো ? তার ভেতরে একটা চতুর মানুষ লুকিয়ে নেই তো ? মাত্র আধ ঘণ্টার পরিচয় । এইটুকু সময় একটা মানুষকে চেনার পক্ষে যথেষ্ট নয় । তাই সে বলল, “আমি মোবাইল ইউজ করি না ।”
রুদ্র থ মেরে গেল । কয়েক মুহূর্ত পরে সেটা কাটিয়ে উঠে বলল, “আজকাল তো মাছের দোকানদার, রিকশওয়ালা, ঠেলাওলা, কাজের মাসি – সবার কাছেই মোবাইল থাকে । আপনি দেখছি ব্যতিক্রমী । অদ্ভুত ব্যপার ।”
ঋতুপর্ণা – “আপনার সে রকম মনে হতে পারে । কিন্তু সত্যই আমার মোবাইল নেই ।” এটা বলেই তার খেয়াল হ’ল এটা একটা ভীষণ ঠুনকো অজুহাত হয়ে গেল । কলেজে কারো কাছে খোঁজ করলেই তার নাম্বার পেয়ে যাবে । কিন্তু বলেই যখন ফেলেছে, তখন আর কিছুই করার নেই ।
রুদ্রনাথ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইল । তার উচ্ছ্বাস সব কোথায় হাওয়া হয়ে গেছে, সেখানে হাজির হয়েছে বিস্ময় । এ যুগের একটা মেয়ে, যে কিনা জিন্স পরে, কো-এড কলেজে পড়াশোনা করে, এত সুন্দর বক্তৃতা দেয়, তার মতো অচেনা এক যুবকের সাথে একা একা দেখা করতে চলে এসেছে – সে বলে কিনা সে মোবাইল ইউজ করে না । মেয়েটা মনে হয় একটু ছিটগ্রস্থ । দুম করে চলে আসার পর হয়তো মনে হয়েছে কাজটা ঠিক হয়নি, তাই এখন নিজেকে গুটিয়ে নিতে চাইছে ।
কিছু সময় পর রুদ্রনাথ বলল, “ঠিক আছে । আমার মনে হয় আপনি চাইছেন না আপনার সাথে যোগাযোগ রাখি । এটা নিয়ে পরে ভাবা যাবে । যাই হোক, আমি একটা কাজ করতে করতে চলে এসেছিলাম । সেটা আজই কমপ্লিট করতে হবে । আসি, বাই ।” এই বলে রুদ্র চলে গেল, একবারও পিছন ফিরে তাকাল না ।
ঋতুপর্ণা চুপ করে অনেকক্ষন বসে রইল । বুঝতে পারছিল সে যে সত্য বলেনি, এড়িয়ে যেতেই চেয়েছে, সেটা রুদ্র ধরে ফেলেছে । ঋতুপর্ণার খুব খারাপ লাগল । এক সময় সে ধীরে ধীরে “রায় এন্ড রায়” –এর অফিস থেকে বেড়িয়ে এল ।
বাড়ি ফিরতে ফিরতে ভাবতে লাগল – তার তো অনেক ছেলেবন্ধু আছে । কলেজে তো আছেই তাছাড়া কলেজ লেভেলের অনেকের সাথে এখনো যোগাযোগ আছে । কলেজ শেষ হবার পর বিভিন্ন জন বিভিন্ন দিকে গেছে কিন্তু যোগাযোগটা শেষ হয়ে যায়নি । প্রায়ই মোবাইলে তাদের কথা হয় । বেশিরভাগ সময়ই নানারকম মজা – হা হা, হি হি । কাজের কথা খুব কম । কাজের কথা বলতে, Graduation –এর পর কোন লাইনে গেলে সুবিধা, কোন কলেজে পড়া যায়, বিদেশে যাওয়া যায় কিনা – এই সব । যার এত বন্ধু-বান্ধব কলকাতায় এবং ভারতের বিভিন্ন Educational Institute –এ আছে, তার পক্ষে রুদ্রনাথের সঙ্গে এরকম ব্যবহার বোধহয় ঠিক হয়নি ।
বাড়ি ফেরার পর তার মনে বারে বারে ভেসে আসে সেই দৃশ্য । সে পুরু গদিওলা একটা সোফায় বসে আছে । পায়ের নীচে কার্পেট, সেন্টার টেবিলে আর্ট পেপারে ছাপা রঙিন, চোখ ধাঁধানো সব ম্যাগাজিন, আরামদায়ক শীতলতা – সব মিলিয়ে এক ভারী মনোরম পরিবেশ । কিন্তু সে সব কিছু ঠিক ভাবে এনজয় করতে পারছে না । কারন তার ভেতরে একটা উৎকণ্ঠা । মনটা পালাই পালাই করছে । এমন সময় সুদর্শন, স্মার্ট এক যুবক, চোখে হালকা ফ্রেমের ফ্যাশনেবল চশমা । গায়ের রং বাদামি । পরনে জিন্স আর হালকা মেরুন রঙের টি শার্ট । পায়ে স্নিকার । কাঁচের দরজা ঠেলে তার দিকে এগিয়ে আসছে ।
রুদ্রকে দেখে এবং তার সাথে কথা বলে ভালোই লেগেছিল । রুদ্রর মধ্যে একটা আপনকরা ভাব রয়েছে । কোনরকম নকল ভদ্রতার ভান নেই । বেশ সরল এবং অকপট ।
এই ভাবে এক সপ্তাহ কেটে গেছে । শেষে সে আর থাকতে পারল না । মনে মনে ঠিক করল রুদ্রর সাথে কথা বলতেই হবে । তাকে কী বলবে, এর মধ্যে মনে মনে তা সাজিয়ে নিল । এরপর ‘রায় এন্ড রায়’ –এর অফিসের ফোন নাম্বার যোগাড় করতে তার বিশেষ অসুবিধা হ’ল না । একদিন ১১টা নাগাদ সে ফোন করল ।
Posts: 249
Threads: 0
Likes Received: 195 in 171 posts
Likes Given: 340
Joined: May 2022
Reputation:
10
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Update - 3
রিসেপ্সানের মেয়েটা ফোন ধরল । সুরেলা কণ্ঠে বলল – “রায় এন্ড রায় চাটার্ড ফার্ম । বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি ।” তাকে সে দিনের কথা মনে করিয়ে দিতে মেয়েটি তাকে চিনতে পারল । তখন তাকে বলল যে সে রুদ্রনাথের সাথে কথা বলতে চায় । মেয়েটি তাকে একটু হোল্ড করতে বলল । একটু পরে রুদ্রর গলা শোনা গেল, “হ্যাঁ, বলুন ।”
ঋতুপর্ণা – “আমি..., আমি ঋতুপর্ণা বলছি ।”
রুদ্র – “হঠাৎ, আমাকে কি দরকার ?”
ঋতুপর্ণা – “আপনার সাথে একটু দেখা করতে চাই ।”
রুদ্র – “আপনার সাথে তো কথা হয়ে গেছে । আবার কি ?”
ঋতুপর্ণা – “দেখা হওয়াটা খুবিই জরুরী ।”
রুদ্র নিস্পৃহভাবে বলল – “যা বলার তা ফোনেই বলুন । দেখা করার প্রয়োজন নেই ।”
ঋতুপর্ণা – “প্রয়োজনীয়তা আছে বলেই তো বলছি ।” ঋতুপর্ণার যেন জেদ চেপে গেছে । যেভাবেই হোক দেখা করতেই হবে । এট এনি কস্ট ।
রুদ্র চুপ করে আছে । সে কি বিরক্ত ? ঋতুপর্ণা বুঝতে পারছে না । সে আবার অনুরোধের সুরে বলল, “প্রযোজনটা ফোনে ঠিক বলা যাবে না । একবার দেখা করুন না, প্লিজ । আপনার বেশি সময় নষ্ট করব না ।”
রুদ্রনাথ অনিচ্ছা সত্ত্বেও বলল - “ঠিক আছে । আজকে তো অনেক কাজ আছে । পরে একদিন হবেক্ষন ।”
ঋতুপর্ণা – “আপনার অফিস তো পাঁচটা পর্যন্ত । তারপর ?”
রুদ্র – “আপনার যখন এতই ইচ্ছা, তখন আজকেই ব্যাপারটা মিটে যাওয়া ভালো । আপনি আগেরদিনের মতো অফিসে চলে আসুন ।”
ঋতুপর্ণা আঁতকে উঠল – “না না, অফিসে না, অফিসে না ।”
রুদ্র রীতিমতো অবাক হয়ে – “কেন এখানে অসুবিধা কোথায় ?”
ঋতুপর্ণা – “অসুবিধা আছে বলেই তো যেতে চাইছি না ।”
রুদ্র – “তাহলে কোথায় দেখা করতে চান ?”
ঋতুপর্ণা – “অফিস ছাড়া অন্য যায়গায় । ধরুন পার্কে ।”
রুদ্র এবারে যেন একটু রেগে গেল – “আমার সাথে পার্কে যেতে আপনার অসুবিধা হবে না ?”
ঋতুপর্ণা দৃঢ়ভাবে বলল – “না হবে না ।”
রুদ্র – “ঠিক আছে, আপনি কোথায় থাকবেন ?”
ঋতুপর্ণা – “আমি গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের language college –এর গেটের কাছে অপেক্ষা করব ।”
Posts: 32
Threads: 0
Likes Received: 34 in 27 posts
Likes Given: 30
Joined: Dec 2021
Reputation:
6
গল্পের শুরুটা দারুণ হয়েছে পরবর্তী আপডেট এর অপেক্ষায়
Posts: 20
Threads: 0
Likes Received: 9 in 8 posts
Likes Given: 76
Joined: Dec 2022
Reputation:
0
(06-01-2023, 02:45 PM)ddey333 Wrote: poka64
চিকেন ফ্রাই গরম গরম
শুরুটা দাদা হয়েছে চরম
প্রথম দেখাতেই রুদ্রনাথ
ঋতুর চেকে কিস্তি মাত
Dada Jante Icce Kore Eta Ki Puran Paray Kora Coment Naki ?
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(07-01-2023, 07:21 PM)Ahid3 Wrote: Dada Jante Icce Kore Eta Ki Puran Paray Kora Coment Naki ?
Yes.
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
রুদ্র ঠিক সময়ে পৌঁছে দেখল ঋতুপর্ণা গেট থেকে একটু আগেই এগিয়ে এসেছে । আজকে পরনে জিন্স আর সাদা টপ । মুখে উৎকণ্ঠা ফুটে উঠেছে । রুদ্রর একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল । সে বলল – “সরি, কাজ শেষ করতে একটু দেরী হয়ে গেল ।”
ঋতুপর্ণা – “ঠিক আছে, বেশি দেরী তো হয়নি ।” দুজনে একসাথে পাশাপাশি হাঁটতে লাগল । কারো মুখে কোন কথা নেই । পার্কে পৌঁচ্ছে লেকের ধারে একটা বেঞ্চে বসল । দুজনেই চুপচাপ । ঋতুপর্ণা মনে মনে ভাবছে কিভাবে শুরু করবে । সে যথেষ্ট স্মার্ট কিন্তু এই মানুষটার সামনে এলে তার যেন সব গোলমাল হয়ে যায় । আগের দিনের মতো আজকেও না গরবর হয়ে যায় ।
রুদ্র ভাবছে - কি মেয়ে রে বাবা দেখা করার জন্য এত তাড়া, আজকেই দেখা করতে হবে । আর এখন চুপচাপ লেকের দিকে তাকিয়ে বসে আছে । লেকের জল দেখার যদি এতই সক তো একা এলেই তো হ’ত । তাকে ডাকার কি প্রযোজন ছিল । মনে হয় মেয়েটা হুইমজিক্যাল । কিছুক্ষণ পর সে নিজেই বলল – “এবারে বলুন, আপনার কি বক্তব্য আছে । আমার সাথে দেখা করাটা এত আর্জেন্ট কেন ?”
ঋতুপর্ণা – “সেদিন আপনার সাথে ঠিক করিনি । আমি মিথ্যা বলেছিলাম । হয়তো আপনাকে ভুল বুঝেছিলাম বা আমার মাথায় ভুত চেপেছিল । সে জন্য আমি ক্ষমাপার্থি ।”
রুদ্রর চোখে হালকা কৌতুক – “ও, এই কথাগুলি বলার জন্য আপনার এত সময় লাগল ? হোমওয়ার্ক করতে আপনার তো এত সময় লাগা উচিৎ নয় । আপনি তো বিলিয়ান্ট মেয়ে ।”
ঋতুপর্ণা ব্যঙ্গটা গায়ে না মেখে বলল – “বিশ্বাস করুন, সেদিনের পর থেকে ঐ ব্যাপারটা নিয়ে যত ভেবেছি, ততই আমার খারাপ লেগেছে । খুব অস্বস্তিতে কটা দিন কাটিয়েছি ।”
রুদ্র – “অদ্ভুত ব্যাপার তো !”
ঋতুপর্ণা – “সে আপনি যাই বলুন । আমাকে পাগল, খামখেয়ালি, বাতিকগ্রস্ত যা ইচ্ছা ভাবতে পারেন ।”
রুদ্র – “আপনি তো বক্তৃতা খুব সুন্দর দেন । অনেক প্রাইজও পেয়েছেন । তা আজকেও কি বক্তৃতা শোনাবার জন্য আমাকে ডেকেছেন ?”
ঋতুপর্ণা মুখটা করুন হয়ে গেল । বলল – “আমি সত্যি বলছি । আই অ্যাম এক্সট্রিমলি সরি । আই ...” । সে কথা শেষ করতে পারল না ।
রুদ্র ঋতুপর্ণাকে দেখে এবং তার সাথে কিছু সময় কাটিয়ে বুঝতে পারল যে সে সত্যই তার সেদিনের ব্যবহারের জন্য লজ্জিত এবং অনুতপ্ত । সে একটু হেঁসে বলল – “একটা কথা বলব ?”
ঋতুপর্ণা জিজ্ঞাসু চোখে তাকালো ।
রুদ্র – “আপনি আপনার সম্বন্ধে যে বিশেষণগুলি ব্যবহার করলেন, সেগুলিতে লিঙ্গ ভুল হয়ে গেল ।”
ঋতুপর্ণা একটু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে হেঁসে ফেলল ।
রুদ্র মজা করে – “আপনি কি নিশ্চিৎ, ঐ বিশেষণগুলি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ?”
ঋতুপর্ণা মাথা না তুলে – “না মানে ...”
রুদ্র – “আপনি তো সরি বলেছেন । আর কিছু বলার দরকার নেই । ঐ ব্যপারটা ওখানেই ইতি ।”
কিছুক্ষণ দুজনে চুপ । একসময় ঋতুপর্ণা মাথা তুলে বলল – “বলছিলাম ...”
রুদ্র জিজ্ঞাসু চোখে তাকাল । ঋতুপর্ণা বলল – “আমরা তো বন্ধু হতে পারি ?”
রুদ্র – “আপনার কথা আমার মনে থাকবে ।”
ঋতুপর্ণা নিজের মোবাইলটা বের করে – “আপনার নাম্বারটা বলুন ।”
Incomplete….
|