01-01-2023, 12:03 AM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
|
WRITER'S SPECIAL গোলকধাঁধায় গোগোল (সমাপ্ত)
|
|
01-01-2023, 12:14 AM
শুভ ইংরাজি নব বর্ষের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা
স্বাগত----২০২৩ সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
01-01-2023, 10:06 AM
(31-12-2022, 11:42 PM)মহাবীর্য্য দেবশর্ম্মা Wrote: হ্যাপি নিউ ইয়ারের শুভেচ্ছা রহিল জ্যেষ্ঠ। আগামী বৎসরের সকল দিন খুবই আনন্দে কাটুক উহার কামনা রহিল। (31-12-2022, 11:51 PM)Magibazchele Wrote: (01-01-2023, 12:03 AM)Baban Wrote: (01-01-2023, 12:14 AM)Monen2000 Wrote: শুভ ইংরাজি নব বর্ষের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইলো
01-01-2023, 09:30 PM
(This post was last modified: 01-01-2023, 09:32 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
নারীর সুপুষ্ট স্তন বিলাসেই তো তৃপ্তি লুকিয়ে থাকে একজন প্রকৃত প্রেম পূজারীর। ঠিক যেন কোণারক অথবা মোহন শিল্প অজন্তার রুবেন্স অথবা পিকাসোর ললিত আঁকা ছবি। লাগেজ ভ্যানে নরম তুলোর মতো বেফাঁস লাফিয়ে আসা যুগলচঞ্চু উন্মুখ স্তনেই তো জন্ম নেয় আদিম ভালোবাসা। বাকিটা জানতে হলে পড়তে হবে সম্পর্ক
মূল উপন্যাসঃ- গোলকধাঁধায় গোগোল
আগামী পরশু ৩ তারিখ রাতে নিয়ে আসছি প্রতিবারের মতোই একসঙ্গে বেশ কয়েকটি আপডেট সম্বলিত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্ব
02-01-2023, 09:30 AM
(01-01-2023, 09:30 PM)Bumba_1 Wrote: এখন তোমার লেখার স্টাইল আলাদাই লেভেলে পৌঁছে গিয়েছে বস। অপেক্ষায় থাকবো
02-01-2023, 11:55 AM
(01-01-2023, 09:30 PM)Bumba_1 Wrote: এটা কোনও হানিমুুন দৃশ্যের বর্ণনা মনে হচ্ছে। আমাকে আমার মত থাকতে দাও
02-01-2023, 02:13 PM
02-01-2023, 06:40 PM
(This post was last modified: 02-01-2023, 06:40 PM by Sanjay Sen. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(01-01-2023, 09:30 PM)Bumba_1 Wrote:এই লাইনগুলোতেই তো মন ছুঁয়ে গেল, অপেক্ষায় রইলাম
02-01-2023, 09:05 PM
03-01-2023, 07:08 PM
(28-12-2022, 08:59 PM)Bumba_1 Wrote:দুটো পার্ট একই গল্পের দুটো আলাদা রঙ আলাদা স্বাদ আলাদা ভাব। প্রথম টা খুবই সাধারণ সাবলীল পারিবারিক মননশীল রোমান্টিকতায় ভরপুর। ঘরের মানুষ গুলোর মনের ভেতরের সাধারণ গল্প তাদের আদর স্নেহ ভালোবাসা অনুযোগ অভিযোগ ছোট ছোট খুনসুটি সব কিছু মিলিয়ে মন ভরিয়ে দেয়। আর দ্বিতীয় টা কামের খেলার... সেটা আলাদাই রাখলাম :shy: হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। :shy:
03-01-2023, 07:24 PM
(03-01-2023, 07:08 PM)nextpage Wrote: দুটো পার্ট একই গল্পের দুটো আলাদা রঙ আলাদা স্বাদ আলাদা ভাব। অনেক ধন্যবাদ সঙ্গে থাকো এবং অবশ্যই পড়তে থাকো।
03-01-2023, 08:47 PM
(১২)
ভুলের পথে চললে হয়তো সাময়িকভাবে সুখ আসে, হয়তো বা বেশ কিছু আকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি ঘটে। কিন্তু সেই ভুলকেই চলার পথের পাথেয় করে নিলে জীবনে শান্তি লাভ হয় না কোনোদিন। তাই ভুল করা অতি সহজ, তবে সেই অতি সহজ পন্থা সর্বক্ষেত্রে অবলম্বন করলে জীবনে সর্বদা পরাজয় ঘটে। ভুল দিয়ে যাদের জীবন শুরু, ভুল দিয়েই তাদের জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। কামক্ষুধার বশবর্তী হয়ে এবং অতিরিক্ত লোভে ভুল পথে পা বাড়ালে পিছলে পড়া অবশ্যম্ভাবী। আর সেই ভুলের মাশুল দিতে গিয়ে কিছুক্ষেত্রে নিজের জীবনটাও বিসর্জন দিতে হয়। প্রতিমা দেবীর সঙ্গেও এমনটাই ঘটলো। সবার সন্তান কি কলকাতার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সুযোগ পায়? দূরদূরান্তে পড়াশোনা করে। ছাত্রাবাস্তায় বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে গিয়েই তো মানুষের মতো মানুষ হতে হয়। হলোই বা সাতান্ন বছর বয়সী স্বামীর সঙ্গে তার বয়সের অনেকটাই পার্থক্য। হলোই বা তিনি বহুদিন ধরে মধুমেহ এবং স্নায়ুরোগের সমস্যায় ভুগছেন, যার ফলস্বরূপ তার শরীরের যাবতীয় উদ্দাম উদ্দীপনা সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে। এই সব কিছু প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শারীরিক চাহিদা আর অতিরিক্ত লোভের বশবর্তী হয়ে প্রতিমা দেবী যদি বিপথে পা বাড়িয়ে এরকম উদ্দাম উশৃংখল জীবন বেছে না নিতেন, তাহলে বোধহয় আজ বেঘোরে তার প্রাণটা চলে যেত না। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধায়ক মানিক সামন্তর বাগানবাড়িতে এসে উপস্থিত হলেন মিউনিসিপাল হসপিটালের সুপারিনটেনডেন্ট ডক্টর আচার্য্য। যিনি এমএলএ সাহেবের আর এক রক্ষিতা কাকলি দেবীর স্বামী .. এ কথা পূর্বেই উল্লেখ করেছি। একসময় এই হসপিটালেরই আর.এম.ও ছিলেন। মাঝে খড়গপুর বদলি হয়ে গিয়েছিলেন, বর্তমানে ডক্টর দাশগুপ্তের বদলে আবার ফিরে এসেছেন এখানে। নিজের পুরনো জায়গায় ফিরে এসে ডক্টর আচার্য্য ভীষণ খুশি, কারণ এটাই তার জন্মস্থান। তার স্ত্রীর সঙ্গে মানিকবাবুর অবৈধ যৌন সম্পর্কের কথা এলাকার অনেকে জানলেও তিনি এমন একটা ভাব করে থাকেন, যেন কিছুই জানেন না। অথবা সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে, তাই হয়তো জেনেও কিছু করার নেই। তাছাড়া এই বয়সে তিনি সংসার ত্যাগ করে যাবেনই না কোথায় .. সেজন্য অন্য কোনো বিষয় মাথা না ঘামিয়ে শুধুমাত্র নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। আর একটা কাজ অবশ্য তিনি করেন .. ওনাকে এখানে ফেরত নিয়ে আসার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সর্বদা এমএলএ সাহেবের হুকুম তামিল করে চলেন। "শোনো .. গা হাত পা পরিষ্কার করিয়ে, জামাকাপড় পড়িয়ে পাশের ঘরে একদম রেডি করে রাখা হয়েছে ওই মহিলাকে। সঙ্গে করে যে ডকুমেন্টসটা আনতে বলেছিলাম, এনেছো তো? তাহলে এখনই একটা ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দাও যে death due to cardiac arrest , বাকিটা আমি বুঝে নিচ্ছি।" মানিকবাবুর মুখে কথাগুলো শোনার পর ডক্টর আচার্য্য ভাবলেন, 'একটা মানুষ কতটা নৃশংস হলে এই ধরনের কাজ বা উক্তি করতে পারে। একজন মহিলা যার মৃত্যুর জন্য প্রত্যক্ষভাবে এই মানুষটাই দায়ী, মৃত্যুর পর সেই মহিলাকে সাজিয়ে গুজিয়ে দিয়ে তার ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দিতে বলছে। শরীরে কোনো মায়া-দয়া অবশিষ্ট নেই এই লোকটার। সম্পূর্ণরূপে নরপিশাচে পরিণত হয়েছে।' কিন্তু এই কাজটা করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে, সর্বোপরি তিনি নিজেই ফেঁসে যেতে পারেন। তাই ব্রিফকেস থেকে কাগজ বের করে সেটা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে ডক্টর আচার্য্য বললেন "আপনি ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দিতে বলছেন বটে, কিন্তু এত সহজে ব্যাপারটা মিটবে না। আপনার বাড়িতে এসে একজন অচেনা মহিলার মৃত্যু ঘটলো .. পুলিশ কি এই বিষয়টা নিয়ে কোনো ইনভেস্টিগেশন না করে ছেড়ে দেবে মনে করেছেন? আপনার কথা পুলিশ বিশ্বাস করবে কেনো? ঘটনাটা যেহেতু আপনার বাড়িতে ঘটেছে, তাই সেক্ষেত্রে একজন নিরপেক্ষ সাক্ষীর দরকার।" "বাহ্ তোমার তো আজকাল অনেক উন্নতি হয়েছে দেখছি। একটু বেশিই ভাবছো মাঝেমধ্যে, তার উপর আবার আমার কথার অমান্য করছো। তুমি অবশ্য একটা কথা ঠিকই বলেছো, ঘটনাটা যেহেতু আমার বাড়িতে ঘটেছে, তাই এক্ষেত্রে একজন নিরপেক্ষ সাক্ষীর দরকার .. যে ওই মহিলার মৃত্যুর সময় এখানে উপস্থিত ছিলো। সাক্ষী আছে তো .. একজন প্রকৃত নিরপেক্ষ সাক্ষী আছে, যে কিনা আবার এই মহিলা মানে মিসেস প্রতিমা কুন্ডুর বান্ধবী। এসো কাকলি, এই ঘরে এসো, তোমার বর এসেছে তো। ওকে না হয় বাকিটা তুমি নিজেই বুঝিয়ে বলো।" এমএলএ সাহেবের এই উক্তির পর ডক্টর আচার্য্য কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাশের ঘর থেকে পর্দা সরিয়ে বৈঠকখানা ঘরে প্রবেশ করলো তার স্ত্রী কাকলি দেবী। ঘরে ঢুকেই প্রায় নির্দেশের সুরে তার স্বামীর দিকে তাকিয়ে কাকলি দেবী বললো "এই শোনো, তোমার এইসব তত্ত্বকথা এখন রাখো তো! তোমাকে ফোন করে যে জন্য ডাকা হয়েছে সেই কাজটা করো। এত কাঁচা মাথার লোক ভাবো নাকি তুমি মিস্টার সামন্তকে? পুলিশকে উনি নিজেই ফোন করে দিয়েছেন, ওরা এলো বলে। তার আগে কয়েকটা কথা বলছি মন দিয়ে শুনে নাও। পুলিশ এলে আমি বলবো .. আমি যে এনজিওটার সঙ্গে যুক্ত আছি, তার ডোনেশানের ব্যাপারে আমি আর আমার বান্ধবী প্রতিমা একসঙ্গেই আজকে এমএলএ সাহেবের বাড়ি এসেছিলাম। এখানে আসার আগে থেকেই ও মানে আমার বান্ধবী বলছিলো ওর শরীরটা খারাপ। তারপর এখানে এসে কথা বলতে বলতে প্রতিমার শরীরটা আরও খারাপ হতে শুরু করে। এরপর হঠাৎ করেই ও সেন্সলেস হয়ে যায়। আমরা দু'জনে মানে আমি আর মিস্টার সামন্ত ভয় পেয়ে গিয়ে কি করবো কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তোমাকে ফোন করি। তারপর তুমি এসে প্রতিমাকে পরীক্ষা করে দেখো ও আর বেঁচে নেই। ঘটনাটা ঘটার পর যেহেতু ঘন্টা তিনেক পার হয়ে গিয়েছে, তাই তুমি ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দিয়েছো। নাও নাও তাড়াতাড়ি করো .. ওরা এক্ষুনি এসে যাবে।" তার স্ত্রীর মুখে কথাগুলো শোনার পর কিছুক্ষণ তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন ডক্টর আচার্য্য। নিজের স্ত্রীর উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরিস্থিতি যখন সম্পূর্ণরূপে হাতের বাইরে চলে যায় তখন বোধহয় এমনটাই ঘটে। নিজের স্বামীর বিপদের কথা বিন্দুমাত্র চিন্তা না করে একজন পরপুরুষের হয়ে ওকালতি করে যাচ্ছে তার স্ত্রী। অর্থ এবং রিপুর লোভ যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, তখন এইভাবেই বোধহয় আপনজন পর হয়ে যায়। চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো ডক্টর আচার্য্যর .. পকেট থেকে কলম বের করে ডেথ সার্টিফিকেট লিখতে শুরু করলেন তিনি। ঠিক সেই মুহূর্তে দরজা খুলে ঝড়ের গতিতে ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করলেন গুরুকুল বিদ্যামন্দিরের প্রধানশিক্ষক প্রতিমা দেবীর স্বামী অনাদিবাবু। "কোথায়? কোথায় আমার স্ত্রী? কোথায় ও? আমি জানি, সব এই লোকটা করেছে .. এর জন্যই আজ আমি আমার স্ত্রীকে .." এই বলে হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন মানিক সামন্তর উপর। ঘড়িতে তখন প্রায় সন্ধ্যা ছ'টা। ★★★★
বিয়েতে কোনোরকম আতিশয্য তার পছন্দ নয় .. এ কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলো সুজাতা। ডক্টর দাশগুপ্তেরও অনেকটা সেইরকমই ইচ্ছে ছিলো। গত সপ্তাহে তাদের রেলপাড়ের বাড়িতেই রেজিস্ট্রি করে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিলো দু'জনের। সাক্ষী হিসেবে ছিলেন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এবং তাদের দীর্ঘদিনের সুখ দুঃখের সঙ্গী রেলপাড় হাইকলেজের প্রধানশিক্ষক পঙ্কজবাবু, আর সুজাতার বান্ধবী হিয়ার মা কাবেরী দেবী। এছাড়াও নিমন্ত্রিতদের মধ্যে ছিলো গোগোলের বন্ধুরা আর টগরের পরিবার। "এই .. আজ তোরা কিন্তু একদম বিরক্ত করবি না আমার এই মিষ্টি বান্ধবীটাকে। ওদের দু'জনের কিন্তু আজ একান্তে সময় কাটানোর দিন, পরস্পরকে আরো ভালো করে চিনে নেওয়া জেনে নেওয়ার দিন। যাও যাও, এখন সবাই বাড়ি যাও, যা কথা হবে কালকে .." এই বলে হিয়াকে নিয়ে ওইদিন ওদের বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার আগে সবাইকে একে একে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলো কাবেরী। তারপর নিজের বান্ধবী সুজাতার দিকে মুচকি হেসে চোখ টিপে ফিসফিস করে বলেছিলো "বেস্ট অফ লাক .. কাল গল্প শুনবো .." কাবেরীর কথায় সুজাতা লজ্জায় রাঙা হয়ে গিয়েছিল একেবারে। তারপর একসময় সবাই চলে গেলে নিজেদের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতে করতে ডক্টর দাশগুপ্তকে বলেছিলো "কাবেরীটার কোনোদিন আক্কেল হবে না দেখছি .. ঘরে সব ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রয়েছে .. তাদের সামনেই .. ইশশ, আমার তো লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছিলো .." এই কথার কোনো উত্তর না দিয়ে তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে বিছানায় নিজের কাছে ইশারায় ডেকেছিলেন ডক্টর দাশগুপ্ত। পরিণত দুটি মন ও শরীর .. এতদিনের অপেক্ষায় ক্লান্ত পরিশ্রান্ত। জ্যোৎস্নার রাতে পূর্ণিমার চাঁদের হাতেই যেন জীবন উৎসর্গ করে শুরু হলো তাদের পথ চলা। চারিদিকে ছড়িয়ে আছে রজনীগন্ধা, চাঁপা, বেল ফুলের গন্ধ। সংশয় কাটিয়ে উঠে পরস্পরের ভয় বুক কাঁপার এটাই তো উপযুক্ত সময়। জানালার পর্দা ওড়ায় দুষ্টু হাল্কা বাতাস, মায়াজালে চাদর বিছায় রূপালী জ্যোৎস্নার আকাশ। "আজ রাতে আমরা শুধু গল্প করবো .. কেমন!" মৃদুস্বরে বলেছিলো সুজাতা। বিশেষ কোনো তারা ছিলো না ডক্টর দাশগুপ্তর দিক থেকেও। এলোমেলো অগোছালো কথা শুরু হয় উভয়পক্ষ থেকেই। উপহার দেয় মুগ্ধ সময়, ঠোঁটে আনে হাসি। চেনাজানার প্রহর কাটে, হৃদয়ের পাশাপাশি। তারপর একসময় দুটি দেহ প্রেমের জোয়ারে ভেসে গিয়ে উত্তাল তরঙ্গ তুলে প্রাণে জাগায় ঢেউ। স্বপ্ন ভাসে চোখের পাতায় শরীর মাখা সুখ। রাতজাগা দুটি পাখি ভালোবাসার স্পর্শে কাতর। সেই মুহূর্তে নিজেকে অন্য কিছু নয় শুধুমাত্র একজন প্রেম পূজারী ভাবতে ইচ্ছে করছিলো প্রতাপের। অতি প্রাচীন বিলাসের মতো সুজাতার অকৃত্রিম অগাধ অনাবৃত স্তনযুগলের বন্দনা করার বাসনা জাগছিলো তার মানে। নারীর সুপুষ্ট স্তন বিলাসেই তো তৃপ্তি লুকিয়ে থাকে একজন প্রকৃত প্রেম পূজারীর। ঠিক যেন কোণারক অথবা মোহন শিল্প অজন্তার রুবেন্স অথবা পিকাসোর ললিত আঁকা ছবি। লাগেজ ভ্যানে নরম তুলোর মতো বেফাঁস লাফিয়ে আসা যুগলচঞ্চু উন্মুখ স্তনেই তো জন্ম নেয় আদিম ভালোবাসা। নারীর সুপুষ্ট স্তন বিলাসেই রক্তবীর্য, স্নায়ুঘাত, লৌহপেশী .. যা সম্পূর্ণা এক নারীর স্তনেই উজ্জীবিত। সুজাতার মাঝবয়সী বর্তুল স্তনের পরতে পরতে সেই মুহূর্তে মৃত্যুবরণ করতেও রাজি ছিলো প্রতাপ। সুজাতার স্তনবৃন্তে মৃগনাভীর সুগন্ধের পসরা। লজ্জায় নিজেকে আড়াল করার ব্যর্থ চেষ্টায় স্তনের দুলুনিতে নিজের প্রতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিল সে। অতঃপর তার নববিবাহিতা স্ত্রীর স্তনযুগল নিয়ে খেলতে খেলতে আদিম নেশায় পাগল হয়ে গিয়েছিলো প্রতাপ। ★★★★
সন্দীপের মৃত্যুর কারণ এবং তার মৃত্যুর পর পুলিশি তদন্তে বাকি সবার মতো কাবেরীর কাছেও এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিলো, যার সঙ্গে কিছুদিন পর সে নিজের মেয়ের বিয়ে দিতে যাচ্ছিলো, সেই সন্দীপ কত বড় একটা ঘৃণ্য চক্রান্ত করেছিলো। তার উপর যেখানে সন্দীপের মা-বাবা এই সমস্ত কিছুর জন্য তাদের ছেলেকেই দায়ী করে তাদের দিক থেকে বারংবার ক্ষমাপ্রার্থনা করে, অবশেষে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন, সেখানে কাবেরীর দিক থেকে পুরনো কথাগুলো মনে রেখে শুধু শুধু জটিলতা বাড়ানোর কোনো মানেই হয় না। একসময় তার হবু জামাই সন্দীপের হয়ে সুজাতার কাছে ওকালতি করা এবং সেটাকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে বাগ-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ার জন্য তার বান্ধবীর কাছে পরে সবিনয় ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছে কাবেরী। কিন্তু এত কিছুর পরেও হিয়া আর গোগোলের সম্পর্কটা সে এখনো মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। এর পেছনের এক এবং অদ্বিতীয় কারণ হলো গোগোলের অতীত। আজ সকালেই হরিহর কাকাকে নিয়ে বিশেষ একটি কাজে তাদের গ্রামের বাড়ি শিমুলপুরে গেছে কাবেরী। রাতের মধ্যেই ফিরতে হবে তাকে .. হিয়া একা বাড়ি আছে। তাই আটটা'র মধ্যে বেরিয়েছে তারা .. একটা ট্রেন পাল্টে, তারপর এক ঘন্টার বাস জার্নি। শিমুলপুর পৌছতে প্রায় ঘন্টা তিনেক সময় লেগে যায়। তার মা আর হরিহর কাকা বেরিয়ে যাওয়ার পর বিছানায় গিয়ে আরো কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলো হিয়া। ঘুম ভাঙতেই দেখলো ঘড়িতে দশ'টা বেজে গিয়েছে। 'ইশশ .. বড্ড দেরি হয়ে গেছে। ঠিক আছে কিছু পরোয়া নেহি, এখন তো লাটসাহেব সাইটে আছে, পৃথিবীর এদিক-ওদিক হয়ে গেলেও ওখান থেকে নড়বে না। কিন্তু ওর মতো বকুরামকে কি করে সাইজ করতে হয় সেটা আমার থেকে ভালো কেউ জানে না।' কথাগুলো ভাবতে ভাবতে নিজের মনেই হেসে উঠলো হিয়া। তারপর বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে প্রাতঃরাশ করে মোবাইলে গোগোলের নম্বরে রিং করলো। ওদিক থেকে কলটা রিসিভ হতেই নিজের গলাটা যতটা সম্ভব ভেঙে নিয়ে, একজন অসুস্থ মানুষের মতো দুর্বল স্বরে বলতে আরম্ভ করলো "এই শোনো না .. আজ সকাল থেকেই আমার ভীষণ জ্বর তার সঙ্গে বমিও শুরু হয়েছে .. কি করবো কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। তাই তোমাকে ফোন করছি .. তুমি একবার আসতে পারবে?" "আমি? আমি এখন কি করে যাবো? রাজ্যের কাজ এখানে, সেগুলো ফেলে এই মুহূর্তে আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। সে না হয় সাইট থেকে ফেরার সময় তোমাকে দেখে আসবো। জ্বর এসেছে আর তার সঙ্গে যখন বমি হচ্ছে তাহলে অবশ্যই এখনই একজন ডাক্তার দেখানো দরকার। কাবেরী আন্টি আছে তো! উনাকে বলো না, হসপিটাল নিয়ে গিয়ে যদি একবার কাউকে দেখিয়ে দিতে পারে তোমাকে। না হলে বলো আমি এখনই ডাক্তার আঙ্কেলকে ফোন করে বলছি তোমাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য।" শশব্যস্ত হয়ে বললো গোগোল। "এই চুপ করো তো, সব কথায় আগে একবার ডাক্তার আঙ্কেল পরে একবার ডাক্তার আঙ্কেল। বলছি আমার শরীরটা ভালো লাগছে না, কিরকম যেন করছে। আমার মনে হয় কোনো কঠিন অসুখ হয়েছে, বুঝলে? আমি বোধহয় আর বাঁচবো না। চিরতরে চলে যাওয়ার আগে একবার তোমাকে চোখের দেখা দেখতে খুব ইচ্ছে করছে গো! আসবে না একবার সোনা?" প্রথমে ঝাঁঝিয়ে উঠে, তারপর কাঁদো কাঁদো ভঙ্গিতে এবং সবশেষে গলায় যতটা সম্ভব মধু ঢেলে কথাগুলো বললো হিয়া। "কি আবোল তাবোল কথা বলছো বলো তো! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। এইতো বললে জ্বর হয়েছে আর বমি হচ্ছে। এখন আবার বলছো কঠিন অসুখ হয়েছে। আর কোনোদিন যদি আমার সামনে 'বাঁচবো না' এই কথাটা বলো, তাহলে আমার একদিন কি তোমার একদিন। ঠিক আছে ঠিক আছে তুমি বেশি মেন্টাল স্ট্রেস নিও না, আর একদম কেঁদো না। আমাকে একটু সময় দাও, আমি এখানকার কাজগুলো তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আসছি তোমার ওখানে। তারপর গিয়ে যদি দেখি শরীর বেশি খারাপ হচ্ছে তাহলে কিন্তু অবশ্যই ডাক্তার ডাকতে হবে, তখন বাধা দিও না যেন! তবে কি জানো তো কাবেরী আন্টি মনে হয় আমাকে খুব একটা পছন্দ করে না, তাই কিছুটা দ্বিধাবোধ হয় আজকাল তোমাদের বাড়ি যেতে।" গোগোলের কথাগুলো শোনার পর ফোনটা কেটে দিয়ে হিয়া খিলখিল করে হেসে উঠলো। "ইশ্ কি বোকা ওই লাটসাহেব। কত সহজেই আমার কথাগুলো বিশ্বাস করে নিলো। মা'কে নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না বকুরাম। ওরা আজ কেউ বাড়িতে নেই বলেই তো তোমাকে ডেকেছি।'' স্বগোতক্তি করে বাথরুমে ঢুকে গেলো হিয়া। একটু আগে প্রবল ঝড় হয়ে গেছে, তারপর বাতাসের বেগ কমলে শুরু হয়েছে বৃষ্টি .. অবিরত, একটানা। ধীরে ধীরে জল জমছে রাস্তায়। হিয়া জানলায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছে অনেকক্ষণ ধরে। খুব জোর ছাঁট, ভিতরে জল আসছে। ভিজে যাচ্ছে পরনের পাতলা সুতির নাইটিটা, তবু তার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। তার মা থাকলে বাড়িতে অন্য কোনো লোক এলে নাইটির উপর একটা হাউসকোট পড়তে বলে হিয়াকে। বাইরের লোক দেখলে হিয়াও হাউসকোট ছাড়া কখনো তাদের সামনে আসে না। কিন্তু আজ তো তার মা বাড়িতে নেই, তাছাড়া আজ তো কোনো বাইরের লোক আসছে না .. আসছে তার কাছের মানুষ, মনের মানুষ গোগোল। বাতাসে বৃষ্টির গন্ধ আর গায়ে তার স্পর্শ পেলে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয় হিয়ার। গলা দিয়ে গুনগুন স্বর সোনা না গেলেও মাথা দুলছে হিয়ার। তার সারা শরীরের আন্দোলিত হচ্ছে একটা গান .. নিঃশব্দে। হিয়ার শরীর খারাপের খবরটা শোনার পর থেকে কাজে প্রায় মন বসাতেই পারছিলো না গোগোল।বারোটা নাগাদ একরাশ দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে হিয়াদের বাড়ি এলো সে। বাইরের দরজা খোলাই ছিলো .. যা সচরাচর থাকে না। দু'একবার হিয়া, কাবেরী আন্টি এবং হরিহর কাকার নাম ধরে ডেকে কারোর সারাশব্দ না পেয়ে ধীরে ধীরে উপরে উঠে এলো গোগোল। কাবেরী আন্টি এবং হরিহর কাকা দুজনেই বাড়িতে নেই, হিয়ার কিচ্ছু হয়নি, সে তাকে মিথ্যে বলে এখানে নিয়ে এসেছে .. এই কথাগুলো শোনার পর অন্য দিন হলে হিয়াকে ভর্ৎসনা করে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত গোগোল। কিন্তু এই মুহূর্তে সদ্যস্নাতা লাবণ্যময়ী অপরুপা একদম অন্যরূপের হিয়ার দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারছিলো না সে।
03-01-2023, 08:50 PM
হিয়ার ঝুলন খোঁপার ভাঁজে আজ যেন তার পৃথিবী কাঁপে। তার মায়াবী মুখমণ্ডলের দিকে একবার তাকালে চোখ সরিয়ে নেওয়া ভীষণ কষ্টকর আজ গোগোলের পক্ষে। কপালে সযত্নে আঁকা রয়েছে সুদৃশ্য লাল রঙের টিপ। চোখে ভাসে দূর সমুদ্রে জেগে থাকা কৃষ্ণদ্বীপ। অঙ্গে তার পাতলা ফিনফিনে সুতির একটা স্লিভলেস নাইটি, ঠিক যেন প্রকৃতির একটা অতি ক্ষীণ আচ্ছাদন আবৃত রয়েছে তার পুরুষ্টু দেহতরু জুড়ে।পেলব কব্জিতে আঁটা চিকন সোনার বালা। যেখানে হয়তো অনন্তকাল ধরে তার মন বাঁধা পড়ে আছে এই পাদপীঠে। গলায় সোনার কারুকাজ করা হারে শোভা পাচ্ছে পদ্মনীল পাথর। দুই কানে দুই ধারে ফুটে আছে দু'ফোঁটা রত্ন মহাগৌরবে।
গোগোলের দৃষ্টির অতল আঁধারে আনন্দবর্ষণ। তবে সে কেন চায় না তার প্রেমিকের দিকে? হঠাৎ করেই যেন নিজের সামনে তুলেছে এক স্বচ্ছ অসীম দেওয়াল। হয়তো বা সেটা নারীসত্তার লজ্জায়, হয়তো বা সেটা সাময়িক। কিন্তু হঠাৎ করেই সৃষ্টি হওয়া এই প্রতিকূল স্রোতে কি করে তার প্রেয়সীর কাছে যায় গোগোল! কি করে এই নিঃসঙ্গতার ভেতর তার হিয়াকে পায়! ঝলমলে ত্বকে তার আলোকবন্যা, মৃগনাভী সৌরভে দিশেহারা গোগোল। গর্বিত হিমালয় শৃঙ্গের মতো সুতীক্ষ্ণ নাক তার লজ্জায় রাঙা হয়ে কিছুটা ফুলে গিয়েছে। ভয়ঙ্কর আবেদনময়ী দুই ঠোঁটের সঙ্গমস্থল কেঁপে ওঠে বারবার। প্রেম জোয়ারে ডুব দিয়ে মন সদ্যস্নাতা। নান্দনিক আরাধনায় সে যে এখন দিশেহারা। শুধুমাত্র উষ্ণ আদরের প্রতীক্ষায়। হিয়া আর গোগোল রয়েছে তাদের পরস্পরের হৃদয়ের প্রতিটা স্পন্দনে। অনুভবশক্তি সর্বদা চায় পরস্পরকে জড়িয়ে থাকতে। এই সমগ্র জগৎ সাক্ষী তাদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসার। অনন্তকাল ধরে তারা এই ভাবেই বেঁচে থাকার আশা করে পরস্পরের মধ্যে। হিয়ার গভীর অথচ মায়াবী চোখে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মাঝে মাঝে নিজেকেই হারিয়ে ফেলে গোগোল। সে যেন কোনো অজানা অতলস্পর্শী গুপ্তধন খুঁজে পায় হিয়ার ওই চোখে। তার দুই নয়নে মায়াবদ্ধ হয়ে সপ্ন দেখে যায় .. যেদিকে তাকিয়ে থাকলে শত কষ্ট, শত বেদনা নিমেষে ভুলে যাওয়া যায়। হিয়া যে তার শুক্লা তিথির ফুটন্ত চাঁপা, রোদেলা বিকেলবেলা। হাতের মাঝে হাত রেখে পথ চলা আর ক্লান্তিহীনভাবে তাকে ভালবেসে জড়িয়ে ধরা। প্রেয়সী হিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে তৃপ্তির চোখে সেই মহার্ঘ চুম্বন লাভ করা। হাজারো দ্বিধা দ্বন্দ্বের নক্সা বোনা বেগুনি সন্ধ্যা, হিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে শিরা উপশিরা বেপরোয়া হওয়া। গোগোলের যৌবনের স্রোত ত্বকের ব্যারিকেড ভাঙা ভাষা আর চর্মসুখ ছাপিয়ে অন্য আগুনের অনুভূতি খোঁজা। তারপর একসময় হিয়াকে আলিঙ্গনবদ্ধ অবস্থায় উত্তপ্ত শরীরের রক্ত শাখায় হরমোনের মুক্তি লাভ। এমনকি এই অনাকাঙ্ক্ষিত অথচ মহার্ঘ্য মুহূর্তে গোগোলের কমতে থাকে কার্টিসাল হরমোন চাপ। তাইতো আজ তারা সর্বস্ব ভুলে পরস্পরকে ভালোবাসার আদর-ঘরে বন্দী করেতে চায়। হয়তো বা এতদিন জমে থাকা অবসাদের আয়ু কমবে পরস্পরের প্রতি ছড়িয়ে পড়া ক্রমাগত আদরে। পরস্পরের ঠোঁটে ঠোঁট উপলব্ধি ম্যাজিকের মতো যৌবনের ঝিলিক। এই প্রথম তাদের যৌবন ফিনকি দিয়ে বলবে 'ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত।' বৈষ্ণব পদাবলীর এলোমেলো পাতা আর রোমকূপের সে কী ভীষণ রতি সিঞ্চন! "এ্যাই শুনছো .. মা রান্না করে রেখে গেছিলো। আজ কি হয়েছে জানো? তোমার ফেভারিট আলুপোস্ত। ডাল আর তরকারি তো পর্যাপ্ত আছেই, সঙ্গে দু'পিস মাছও আছে দেখছি। আমি শুধু একটু এক্সট্রা ভাত করে নিলাম .. দু'জনের খুব ভালোভাবে হয়ে যাবে, তাই না বলো? তুমি কিন্তু আজ আমার সঙ্গে এখান থেকেই খেয়ে যাবে।" কিছুটা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল গোগোল, হিয়ার ডাকে ঘোর কাটলো তার। আনমনা হয়ে তার দিকে গোগোলকে তাকিয়ে থাকতে দেখে, মুচকি হেসে হিয়া বলে উঠলো "এই যে লাটসাহেব .. কি দেখছো অমন করে তাকিয়ে? একটু আগেই তো সবকিছু দেখেছো আমার, এখনো আশ মেটেনি বুঝি? দুষ্টু কোথাকার। এতক্ষণ ধরে দস্যিপনা করার পর কোথায় ভাবলাম আমার একটু সেবাযত্ন করবে এই মানুষটা! তা নয়, দেখি পাশ ফিরে শান্তির নিদ্রায় মগ্ন হয়ে আছে। কি আর করবো .. ইচ্ছে না থাকলেও খেতে তো হবেই। তাই বাধ্য হয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে রান্নাঘরে গিয়ে ভাত বানালাম, তারপর টেবিলে খাবার সাজিয়ে এসে দেখি বাবু এখনো ঘুমোচ্ছে! এসো .. খেতে দিয়েছি।" - "হিয়া ...." - "কি হয়েছে? বলো .. এ কি তোমার চোখে জল কেনো? তুমি কাঁদছো?" - "আরে না না .. কাঁদবো কেনো? চোখে মনে হয় কিছু একটা পড়েছে .. ভীষণ জ্বালা করছে .. তাই বোধহয় .." - "এ মা .. কি আবার পড়লো .. জ্বালা করছে? কই দেখি .." - "না না ঠিক আছে, এখন কমেছে। বলছিলাম .. আমি তো রোজ এই সময় বাড়িতে ফিরেই খাই মামণির সঙ্গে .. আজকে মানে এখান থেকে খেয়ে গেলে .." - "হ্যাঁ, তো কি হয়েছে? একদিন না হয় আমরা একসঙ্গে লাঞ্চ করলাম। তুমি কি বলতে চাও, তুমি বাইরে থেকে লাঞ্চ করে গেলে মামণি রাগ করবে? রোজ যে তোমাকে বাড়িতে ফিরে খেতে হবে এমন মাথার দিব্যি কেউ দিয়েছে? আর শোনো, মামণি এখন একা নেই। উনার জীবনে একজন নতুন মানুষ এসেছে। একটু স্পেস দাও উনাকে। সব সময় 'মামণি' 'মামণি' করো না তো! এবার আমাদের কথাটা একটু ভাবো .. এই যে আজ আমরা এত সুন্দর একটা সময় কাটালাম, সেটা নিয়ে কিছু বলো .." - "না না, তা নয় .. আসলে .." গোগোল আর হিয়ার কথোপকথনের মাঝে হঠাৎ করেই গোগোলের ফোনটা বেজে উঠলো। সুজাতা ফোন করেছে .. ফোনটা ধরে অপর প্রান্ত থেকে 'এত বেলা হয়ে গেলো, সে এখনো ফিরলো না' এটা শোনার পর গোগোল বললো "আসলে এদিকে আজ সাংঘাতিক কাজের চাপ মামণি। আমি বাইরে থেকে লাঞ্চ করে নেবো। তোমাকে ফোন করতেই যাচ্ছিলাম .. ঠিক আছে, বাড়িতে ফিরে কথা হবে .. এখন রাখি তাহলে!" জীবনে এই প্রথমবার সুজাতার কাছ থেকে সত্যিটা লুকিয়ে গেলো গোগোল। - "তুমি মিথ্যে বললে কেন? আমাদের বাড়িতে আমার সঙ্গে লাঞ্চ করবে, এটা বললে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেতো?" - "তা নয় হিয়া, কিন্তু কাবেরী আন্টি আর হরিহর কাকা আজ বাড়িতে নেই এটা যখন পরে মামণি জানতে পারবে, তখন নিশ্চয়ই আমার আসার ব্যাপারটা তোমার মা'কে বলবে মামণি। এরপর কাবেরী আন্টি যখন জানতে পারবে আমি উনার অনুপস্থিতিতে তোমাদের বাড়ি এসেছি, তখন আমার প্রতি উনার ধারণাটা কি হবে একবার বুঝতে পারছো? তুমি ভালো করেই জানো এমনিতেই উনি আমাকে পছন্দ করেন না।" - "তো? কি হয়েছে? তোমার ভয়ে নাকি রেলপাড়ের বস্তিতে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খায়, আর এই সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে এতটা ঘাবড়ে যাচ্ছ কেনো? তুমি তো আমাকে ভালোবাসো .. তাহলে নিজের ভালোবাসার জন্য এইটুকু কথা শুনতে পারবে না?" - "পারবো হিয়া, ১০০ বার পারবো। আমি আমার কথা বলছি না বা ভাবছি না, আমি ভাবছি তোমার কথা। আসলে আমি এখানে এসেছি জানতে পারলে কাবেরী আন্টি তোমাকেও তো বকাবকি করবে। তাছাড়া আজ যেটা হলো .. আই মিন একটু আগে আমাদের মধ্যে .. যেটা হলো সেটা বোধহয় ঠিক হলো না .. আশা করি আমার কথাগুলো তুমি বুঝতে পারছো .." গোগোলের এই উক্তিতে চোখ-মুখের চেহারা মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে গেলো হিয়ার। প্রচন্ড রেগে গিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলো "না, আমি বুঝতে পারছি না .. আমাকে মা কি বলবে না বলবে সেটা আমার উপর ছেড়ে দাও। আমি এখন অনেক বড় হয়ে গেছি, আমাকে বকাবকি করা অতটা সোজা নয়। তাছাড়া, এত সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটানোর পর তুমি এই ধরনের কথাবার্তা বলছো কি করে? তোমাকে আমি সত্যিই চিনতে পারছি না, লাটসাহেব! 'আজ যেটা হলো, সেটা ঠিক হলো না' মানে? আমাদের মধ্যে আজ যা হয়েছে দু'জনের সম্মতিতে পরস্পরকে ভালোবেসে হয়েছে। তাহলে এই ধরনের কথা আসছে কি করে? তোমার এই কথা শোনার পর এখন তো আমার নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে। এটাই মনে হচ্ছে যে, তোমাকে এখানে ছল করে ডেকে এনে আমি আমার নিজের বাসনা চরিতার্থ করেছি। তোমার কথা শুনে এটাই মনে হচ্ছে তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসো না .." নিজের বলা কথাগুলো শেষ করে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললো হিয়া। "হিয়া হিয়া হিয়া .. লক্ষী সোনা আমার .. ভুল বুঝোনা আমাকে। আমি তোমাকে কোনো দোষ দিতে চাইনি। আমি জানি তো যা হয়েছে আমাদের পরস্পরের সম্মতিতেই হয়েছে। আর আমি এটাও জানি আমরা দু'জন দুজনকে নিজেদের সবটুকু দিয়ে নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসি। আমি শুধু বলতে চেয়েছি .. যাগ্গে বাদ দাও, আমার কিন্তু এবার ভীষণ খিদে পেয়ে গেছে .. তুমি তো টেবিলে ভাত বেড়ে এসেছো। চলো, খেতে দেবে না আমায়?" হিয়াকে শান্ত করে তাকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে, তার দুটো হাত ধরে কথাগুলো বললো গোগোল। "নাহ্ .. তুমি বরং এখন বাড়ি যাও .. এখানে তোমার খাওয়ার দরকার নেই। আমাকে একটু একা থাকতে দাও এখন।" গম্ভীর গলায় বললো হিয়া। "ভুল হয়ে গেছে হিয়া .. আমি কথাগুলো ওইভাবে বলতে চাইনি। আচ্ছা ঠিক আছে, এই দেখো আমি তোমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ক্ষমা চাইছি, তাহলে হবে তো? অভুক্তকে এভাবে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলতে নেই! এতে গৃহস্থের অকল্যাণ হয়। প্লিজ খেতে দাও .. পেটে ছুঁচো ডন মারছে যে .." কথাগুলো বলে হিয়ার কপালে একটা স্নেহের চুম্বন এঁকে দিলো গোগোল। কিছুক্ষণের জন্য সৃষ্টি হওয়া একবুক অভিমান নিয়ে থেকেও হিয়া বুঝতে পারেনি কার প্রতি তার এই অভিমান! তার মনের মানুষের প্রতি? শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে তিলে তিলে গড়ে ওঠা এতদিনের ভালবাসার প্রতি? না কি নিজের প্রতি? গোগোলের শেষ কথাগুলো শোনার পর এবং তার কাছ থেকে স্নেহের চুম্বন পাওয়ার পর বাষ্পে কেঁপে ওঠে তার বুক। জ্বালা করে ওঠে তার চোখের কোণ, নিজেকে অপরাধী মনে হয় এতক্ষণ ধরে তার মনের মানুষকে কথার বানে বিদ্ধ করার জন্য। কয়েক ঘন্টা পূর্বে প্রকৃতির বুকে হয়ে যাওয়া বৃষ্টিপাতের মতোই হিয়ার মনেও বৃষ্টি এলো। কতদিন বর্ষা নামেনি পোড়া এই মনে! ঈশানের কোল ঘেঁষে যে মেঘের নদী, তারই ছায়ায় হারায় তার মনের গোধূলিবেলার স্বপ্নেরা, না শোনা পুরানো অভিমান সন্ধ্যার মায়াজালে। অতঃপর দুপুরের আহারাদি সমাপ্ত করে হিয়াকে নিজের স্নেহের পরশে ভরিয়ে দিয়ে বিদায় নিলো গোগোল। কিন্তু, এত কিছুর মাঝে কোথাও যেন তার মনে একটা কিঞ্চিত দ্বিধার রেশ রয়ে গেলো। ★★★★
বাড়ি থেকে খেয়েদেয়ে একটু বিশ্রাম করে আবার সাইটে চলে যায় গোগোল। যদিও আজ হিয়াদের বাড়ি আসার আগে লেবারদের হাফ বেলা ছুটি দিয়ে এসেছিলো গোগোল। কারণ এখানে কি পরিস্থিতি, হিয়ার শরীরের কতটা গুরুতর অবস্থা সে তো এগুলো কিছুই জানতো না! কিন্তু বর্তমানে খাওয়া-দাওয়া যখন হয়ে গিয়েছে, তখন এই মুহূর্তে বাড়িতে যেতে ইচ্ছা করছিল না তার। মনটাও কোনো এক অজানা কারণে কিরকম যেন আনচান করছিলো। তাই আবার তার কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে ফিরে গেল সে। একদা জ্যোৎস্না অভিমুখী পাড়ি দিয়েছিল গোগোলের যে স্বপ্ন, হয়তো অতীতে অনেকবার মুখ থুবড়ে পড়েছে সে বাস্তবের রুক্ষ জমিতে। তার হয়তো মনে হয়েছিলো এবারও চাঁদ ছুঁয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলো না সে। তবুও নিরাশার অন্ধকার দেখেনি সে কখনো। সাফল্যের কোনো ভগ্নাংশ হয় না। হয়ে সে ষোল-কলায় পূর্ণ চন্দ্রের মতো সম্পূর্ণ। নয়তো সেই চন্দ্রহীন অমাবস্যার মতো নিকষ কালো অন্ধকারের ব্যর্থতায় ঢাকা পড়ে যায়। ব্যর্থতার সারণিতে সাফল্য সর্বদা সংখ্যালঘু হলেও, একজন প্রকৃত উদ্যমী নিজের লক্ষ্যে স্থির ব্যক্তির উদ্দাম বারবার ব্যর্থ হতে পারে না। তাই সেই চাঁদ ছোঁয়া স্বপ্নের অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে গোগোল। রেলপাড়ের কলেজবাড়ির দোতলা হওয়ার কাজ খুব ভালোভাবে চলছে। জীবনের প্রথম সুযোগই যদি সে ভালোভাবে এই কাজটা সম্পন্ন করতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে সাফল্য যে তার দরজায় এসে কড়া নাড়বে, এ কথা বলাই বাহুল্য। কলেজ বিল্ডিং-এ ঢোকার মুখে হঠাৎ টগরকে দেখে থমকে দাঁড়ালো গোগোল। প্রধানশিক্ষক পঙ্কজবাবুর ঘর থেকে বেরিয়ে আসছিলো সে। টগরকে দেখেই বাইক থেকে নেমে তার সামনে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো "কি রে তুই এখানে, হঠাৎ?" "দরকার ছিলো .." এইটুকু বলে গোগোলের পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যেতে চাইলো টগর। - "কি ব্যাপার? আমি একটা প্রশ্ন করলাম, সেটার ঠিকভাবে উত্তর না দিয়ে এভাবে চলে যাচ্ছিস যে .. খুব তাড়া আছে নাকি?" - "বললাম তো দরকার ছিলো .. হুঁ একটু তাড়া আছে। বাবা দোকানে, বোন বাড়িতে একা আছে .. তাই যেতে হবে আমাকে .." - "আরে, কি দরকার সেটাই তো জানতে চাইছি। তুই তো আগে এভাবে আমার সঙ্গে কথা বলতিস না। তাছাড়া শিউলিকে বাড়িতে রেখে তুই তো এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াস। অনেকবার তো আমাদের বাড়িতেও এসেছিস, কই তখন তো ফিরে যাওয়ার এত তাড়া দেখিনি .." - "আগে কি করেছি আর কি করিনি সে কথা থাক না গোগোল দাদা! আর আমি মোটেই বোনকে বাড়িতে একা রেখে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াই না .. দরকারে বেরোতে হয় আমাকে। মিড-ডে মিলের মালগুলো তো সব আমাদের দোকান থেকেই আসে, বাবার শরীরটা ক'দিন ধরে বেশ খারাপ যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে হাঁটাচলা করতে পারছে না, তাই আমি হেডস্যারের কাছে এসেছিলাম হিসাবটা দিতে।" - "ও হো .. স্বপন কাকুর কি হয়েছে রে? আমি তো কিছু জানি না .." - "তুমি ব্যস্ত মানুষ .. তোমার না জানাটাই তো স্বাভাবিক .. বাবার তো বরাবরই সাইটিকার প্রবলেম আছে .. ব্যথাটা যখন বাড়ে তখন একদম বেশি হাঁটাচলা করতে পারে না। বাড়ির লাগোয়া দোকান তো, তাই শুধু দোকানে যেতে পারছে আবার দোকান থেকে বাড়ি .. ব্যাস ওইটুকুই।" - "এতটা খারাপ অবস্থা হয়েছে স্বপন কাকুর আমাকে একবার জানাবি তো! ঠিক আছে আমি ডাক্তার আঙ্কেলকে বলে দেবো, উনি একবার চেক করে নেবেন।" গোগোলের কথা শুনে মুচকি হাসলো টগর। তার হাসি দেখে বিস্মিত হয়ে গিয়ে গোগোল জিজ্ঞাসা করলো সে হাসছে কেন! উত্তরে টগর জানালো .. - "আচ্ছা গোগোল দাদা, তুমি কি মনে করো .. তুমি বলে দেবে, তারপর কাজগুলো হবে? একটু আগে বললাম যে তুমি ব্যস্ত মানুষ তাই তোমার না জানাটাই স্বাভাবিক। তোমার ডক্টর আঙ্কেল অর্থাৎ প্রতাপ আঙ্কেলই দেখে গেছেন বাবাকে। উনার ওষুধই খাচ্ছেন আমার বাবা। তোমরা এক বাড়িতেই থাকো, অথচ দেখো তুমি এতটাই ব্যস্ত যে তুমি কিছুই জানো না এসবের। ঠিক আছে তোমার যা জানার তা তো জেনে নিয়েছো, এবার তাহলে আমি যাই?" - "টগর .. বলছিলাম তুই কি কোনো কারণে রাগ করেছিস আমার উপরে? না মানে, ঠিক রাগ নয় .. আমি বলতে চাইছি তোর কি অভিমান হয়েছে আমার উপর, কোনো কারণে?" - "অভিমান? হঠাৎ এই প্রশ্ন?" - "না মানে তুই এভাবে কথা বলছিস তো আমার সঙ্গে। তাছাড়া .." - "তাছাড়া?" - "সেদিনকে .. মানে ওই বিভীষিকাময় রাতে যখন তোকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম আমি ওই দুর্বৃত্তদের হাত থেকে, তুই তো তখন প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় ছিলি। সে সময় রনিতা আমাকে কয়েকটা কথা বলেছিলো তোর সম্পর্কে। মানে .. ওরা তোকে কেন টার্গেট করেছে .. আই মিন .. রনিতা যখন আর নেই, তখন সে কথা আমি এখন আর বলতে চাই না .. শোন না, বলছিলাম এখান থেকে তো তোদের বাড়ি অনেকটাই দূর, তুই সাইকেল এনেছিস নাকি হেঁটে হেঁটে ফিরবি? খাওয়া দাওয়া করেছিস? চল না আমি তোকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসি .." - "না, আমি সাইকেল আনিনি .. হেঁটেই ফিরবো .. এত তাড়াতাড়ি খাওয়া হয় না আমার, বাড়িতে গিয়ে খাবো বোনের সঙ্গে .. কোনো দরকার নেই তোমার পৌঁছে দিয়ে আসার .. কত ব্যস্ত তুমি এখন .. তোমার এখন কত কাজের চাপ! এতটাই ব্যস্ততা যে আজ বাড়িতে খেতেও যেতে পারোনি, সারাদিন এখানেই থাকতে হচ্ছে তোমাকে।" - "এক মিনিট এক মিনিট .. তুই কি করে জানলি আমি আজ বাড়িতে খেতে যাইনি .. আমি তো কথাগুলো মামণিকে ফোনে .." - "হুঁ জানি .. যখন তোমার মামণি তোমাকে ফোন করেছিলো, সেইসময় আমি তোমাদের বাড়িতে ছিলাম .. মুদিখানার কিছু মাল দিতে গিয়েছিলাম। ফোনটা রাখার পর তোমার কর্মব্যস্ততা নিয়ে খুব চিন্তা করছিল সুজাতা মাসি। অথচ এখানে এসে দেখলাম, আজ এখানে কোনো কাজই হচ্ছে না। আরে বাবা মানুষের পার্সোনাল লাইফ বলেও তো একটা ব্যাপার থাকে। কিন্তু সবাই তো আর সেটা বোঝে না .. যাক সে কথা .. আমি এখন যাই, অনেক দেরি হয়ে গেলো .. বোনটা একা না খেয়ে বসে রয়েছে আমার জন্য .." অন্য সময় হলে হয়তো টগরের এই কথাগুলো ধর্তব্যের মধ্যেই ধরতো না গোগোল। হয়তো বা তাকে বলতো "আজকাল খুব ডেঁপো হয়েছিস, তাই না?" কিন্তু আজ তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির চোখের কোণে জমে থাকা জল আর করুন মুখে বলা প্রত্যেকটি কথা তীরের ফলা হয়ে বিঁধলো তার বুকে। ঠিক যেন নীরব মৃত্যু যন্ত্রণায় এক অদ্ভুত মলিন শব্দ, যা মনের কোণে আলপনা এঁকে এক নিমিশেই সুনামির জলে ভেসে যায়। লাঙল চোষে টগরের বলা প্রতিটা শব্দের অর্থ খুঁড়ে এনে মাটির পরোতে পরোতে অস্থির মুহূর্তের এই ব্যাকুলতা। কখনো দেখেছে তার চোখে বসন্তের কোকিলের কুহু সুরের আকুলতা আবার কখনো যন্ত্রণাগুলো মনের উঠোনে বসবাস করছে নিবিড়ে .. ঠিকানা বিহীন সীমানা বহুদূরে আকাশ বাতাস সরু রাস্তার মোড়ে। অথচ তার নাকে এখনো হিয়ার শরীরের সুমিষ্ট গন্ধ, তার অঙ্গে এখনো হিয়ার কোমল আদরের স্পর্শ, ভালোবাসার সিঞ্চনের শব্দের বুনিয়াদ মননে জড়িয়ে রয়েছে। গোগোলকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে একা রেখে দ্রুতপায়ে বেরিয়ে গেলো টগর। হঠাৎ হয়ে আসা গোগোলের ঝাপসা চোখে ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে লাগলো মেয়েটা .. তারপর ধীরে ধীরে তাদের বাড়ির অভিমুখে যাওয়ার রাস্তায় মিলিয়ে গেলো সে। সেই দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কিছুটা ইতস্তত করে কলেজ বিল্ডিং-এ প্রবেশ করলো গোগোল। (ক্রমশ)
ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন
03-01-2023, 10:04 PM
বেশি কিছু বলার দরকার নেই, শুধু একটাই অসাধারণ।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
03-01-2023, 10:12 PM
03-01-2023, 10:37 PM
(This post was last modified: 03-01-2023, 10:39 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
প্রথম ভাগ টুকু যদি বাদ দি তবে অবশিষ্ট প্রতিটা ভাগ দুর্দান্ত। তারমানে এটা নয় যে প্রথম অংশটা দারুন নয়। সেটা এক চলমান গল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ কিন্তু আজকের বাকি লেখা গুলো অন্যতম সেরা লেখা হয়ে থাকবে তোমার সৃষ্টির। মিলন তিথির পূর্ণিমা চাঁদ যেভাবে অন্ধকার ঘুচিয়ে আলো প্রবেশ করালো দুই মানব জীবনে থুড়ি চার জনের জীবনে সেটা সত্যিই সুন্দর। হিয়ার রাগ আর গোগোল বাবুর তাকে মানানোর অংশটা বড্ড মিষ্টি।♥️♥️
আর শেষের টগরের আর গোগোলের অংশটা হয়তো জন্ম দিলো এই কাহিনীর নতুন এক ভাগের। জীবন স্রোতে লড়াইয়ের পাশাপাশি আজ সত্যিই বোধহয় গোগোল পড়লো গোলোকধাঁধায়।
04-01-2023, 12:06 AM
ভালোবাসা দীর্ঘজীবী হোক আজকে পর্বের মূল নির্যাস , বেঁচে থাকুক ভালোবাসা এভাবেই। লাইক রেপু এডেড।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
04-01-2023, 01:14 AM
সিংহাসন কখনো ফাঁকা থাকে না সেটা রাজারই হোক কিংবা অসুরের।
কামরাজের জায়গাটা মানিক সামন্ত নিজের করে নিয়েছে পাকাপোক্ত ভাবেই। আর প্রথম শিকারেই প্রতিমা বিসর্জন... কিভাবে ঘটলো ঘটনাটা সেটা হয়তো পড়ে সময় বুঝে জানিয়ে দিবে। সামন্তকে যতটা ঠান্ডা মনে হচ্ছে সে ততোটাও ঠান্ডা থাকবে তো সেটাই দেখার বিষয়। নারী দেহের প্রতি পুরুষের আকর্ষণ সৃষ্টির আদি লগ্ন থেকে আর স্তনদ্বয় যে উহার সবচেয়ে বড় প্রভাবক সেটা অনেক মনিষীরা তাদের কথায় লেখায় প্রকাশ করে গেছেন। স্তন নজরে আসার সাথে সাথে যে শিহরণ শরীর জুড়ে খেলা শুরু করে সেটা অন্য সব গুপ্ত অঙ্গে করাতে পারে না। সুজাতা আর দাসের মিলন টা সংক্ষিপ্ত হয়ে গেল খুব তবে প্রতিটা শব্দের ওজন অনেক। হয়তো গল্পে তেমন কার্যকরী নয় তাই ছোট রেখেছো না হলে একটু বড় হলে ভালই লাগতো। একই বিষয় গোগোল আর হিয়ার মিলনেও, বড্ড তাড়াহুড়ো করে ভারী শব্দে মোড়ে দিলে। টগরের মান টা ওর দিক থেকে স্বাভাবিক, সেই সাথে কিছু একটা দেখানোর চেষ্টা করলো সে গোগোল কে। গোগোল কি সত্যিই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কেমন একটা কনফিডেন্স লেভেলে ঘাটতি লাগলো, কিছু কি হয়েছে...? :shy: হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। :shy:
04-01-2023, 09:34 AM
(03-01-2023, 10:37 PM)Baban Wrote: খুব সুন্দর করে বললে, অনেক ধন্যবাদ
সঙ্গে থাকো |
|
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 1 Guest(s)


![[Image: 20221231-222313.jpg]](https://i.ibb.co/ZJ4kr4F/20221231-222313.jpg)
![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)

![[Image: Happy-New-year-2023.jpg]](https://i.ibb.co/MCLpsr6/Happy-New-year-2023.jpg)
![[Image: IMG-20230101-WA0026.jpg]](https://i.ibb.co/qJk5H28/IMG-20230101-WA0026.jpg)
![[Image: Polish-20220303-195512411.jpg]](https://i.ibb.co/vcQ6fZ7/Polish-20220303-195512411.jpg)
![[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]](https://i.ibb.co/V2jFPGW/Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e04c001a911ac0.gif)

![[Image: Images-2-2-1.jpg]](https://i.ibb.co/89NWqpy/Images-2-2-1.jpg)
![[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]](https://i.ibb.co/ngdFS53/Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif)
![[Image: Polish-20221228-152547517.jpg]](https://i.ibb.co/zf9pcHn/Polish-20221228-152547517.jpg)
সঙ্গে থাকো এবং অবশ্যই পড়তে থাকো।![[Image: Polish-20221231-100927239.jpg]](https://i.ibb.co/QHKKXM4/Polish-20221231-100927239.jpg)
