Thread Rating:
  • 25 Vote(s) - 3.24 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance প্রথম প্রেম by দীপান্বিতাবসু
#41
অনুপম গাড়ী চালাছে, পাশে হরিণ নয়না বসে । অনুপম ভাবছে, “মা প্ল্যানটা ভালই বানিয়েছে । তার সাথে মেয়েটাকে ভিড়িয়ে দিল । নিশ্চয়ই আগে থেকে সব ঠিক করা ছিল । কাজগুলো আর শেষ হবে না । এখন কতটা সময় নষ্ট হবে কে জানে । আগে থেকে যদি একটু আঁচ পাওয়া যেত তাহলে একটা বাহানা বানানো যেত । কিন্তু একেবারে লীনার সামনে বলে বসল । আজকাল যে কি একটা হয়েছে, লীনার মুখের দিকে তাকালে নিজের জোরটা হারিয়ে যায় । আর আজকে তো ওর অভিমানী মুখটা দেখে বুকটা যেন কেমন করে উঠল । মেয়েটা কি আমাকে আমাকে হারিয়ে দেবে নাকি ? আমাকে নিজের মায়াজালে জড়িয়ে ফেলবে ? আমাকে এর থেকে দূরে থাকতেই হবে ।”


লীনা আর চোখে মাঝে মাঝে দেখছে আর ভাবছে, “এরকমও মানুষ হয় ? পাশে সুন্দরী রমণী বসে আছে, কোন হুঁশই নেই । নিজের ভাবেই আছে । একটু খানি কথা বলতে কি হয় ? আমি কি বাঘ না ভাল্লুক যে কাছে এলে খেয়ে ফেলব ? আমি তো চাই কাছে আসতে । কিন্তু ওরকম গম্ভীর মুখ করে থাকলে কি করে কথা বলি । লোকটা একটা পাষণ্ড । নাকি খুব ভদ্র যে সুন্দরী দেখলেই নোলা দিয়ে জল পরে না । মনে হয় দ্বিতীয়টাই হবে । কারণ অফিসে তো কতগুলি সুন্দরী আছে । কারো দিকেই তো তাকায় না । ওর আহ্বানে তো যে কেউ সাড়া দেবে । না মানুষটা সত্যই ভালো । কিন্তু যদি একটু রসকষ থাকত তাহলে আরো ভালো হ’ত ।”

লীনা হঠাৎ খেয়াল করল গাড়ীটা পাহাড়গঞ্জে ঢুকছে । সে একটু অবাক হ’ল । এখানে কেন ? পাহাড়গঞ্জে কি আছে ? একটুপড়ে দেখল গাড়ী ঢুকছে রামকৃষ্ণ মিশনে । লীনা মনে মনে, “হে ভগবান, একি বেরসিক মানুষ ? সুন্দরী সঙ্গিনীকে নিয়ে এসব জায়গায় কেউ আসে ? মানুষটা সুস্থ মস্তিকে আছে তো ?”
গাড়ী থেকে নেমে লীনাকে নিয়ে অনুপম গেল মন্দিরের নীচে Exhibition দেখাতে । ভেতরে ঢুকে লীনার হতাশ ভাবটা একটু কাটল । কি সুন্দর করে সাজানো । অনুপম তাকে এক এক করে সব দেখাতে থাকল আর ব্যাখ্যা করতে থাকল । স্বামীজির জীবনের নানা ঘটনাগুলি তুলে ধরা আছে । লীনার আগ্রহ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকল । সে দু-একটা প্রশ্নও করল । সে স্বামী বিবেকানন্দ সম্বন্ধে কিছু কিছু শুনেছিল বা পড়েছিল কিন্তু এত কিছু জানত না । আর এত সুন্দর করে কেউ কক্ষনও বলেনি । শেষে যখন স্বামীজির ওপর 3D ফিল্মটা দেখল, সে মুগ্ধ হয়ে গেল । আবার যখন জানল যে এখানকারই দুজন সাধু মহারাজ এটা বানিয়েছেন, সে তো অবাক । এতদিন সাধু মানে, সবার মতোই, তারও একটা ধারণা ছিল, কিন্তু আজকে নতুন তথ্য পেল ।

এরপর অনুপম লীনাকে মিশনের নানা activity ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতে থাকল । লীনা কি বলবে, যত দেখে তার মুগ্ধতা ততই বাড়ে । শেষে অনুপম তাকে secretary মহারাজের কাছে নিয়ে গেল । তারা দুজনে মহারাজকে প্রণাম করল । আজকে লীনা নতুন করে প্রণাম করা শিখল । সাধুদেরকে প্রণাম করার সময় হাঁটু গেড়ে বসে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে হয় । অনুপম মহারাজের সাথে কথা বলতে থাকল আর লীনা হাঁ করে সব গিলতে থাকল । এসব কথা তো সে কক্ষনো শোনেনি । এত ভালো ব্যবহার সে কখনো দেখেনি । একটা মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে এত কিছু কি করে জানতে পারে ?

Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#42
এরপর তারা গেল খাওয়ার ঘরের দিকে । সেখানে In charge মহারাজের সাথে লীনার পরিচয় হ’ল । মহারাজ তাদেরকে স্যান্ডউইচ আর চা খাওয়ালেন । তারা যখন হাত ধুচ্ছিল তখন শুনল শঙ্খের আওয়াজ । অনুপম বলল, “ঠাকুরের আরতির সময় হয়ে গেছে । চল মন্দিরে বসি । আরতি দেখে যাব ।”

মন্দিরে ঢুকে লীনা অবাক । কি সুন্দর পরিবেশ । একপাশে মহিলারা আর এক পাশে পুরুষ ভক্তরা শৃঙ্খলিত, শান্ত ভাবে বসে আছেন । কোন আওয়াজ নেই । সবার দৃষ্টি সামনের দিকে । লীনা তাকাল সামনের দিকে । সেখানে, গর্ভমন্দিরে, ভগবান শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের মর্মর মূর্তি । কি সুন্দর মূর্তি । শান্ত, কোমল দৃষ্টি । যেন সকলকে কাছে ডাকছে । মূর্তিটি একটি বেদির ওপর বসানো । বেদিতে একটি পদ্মফুল খোদাই করা । যেন ঠাকুর পদ্মফুলের ওপর বসে আছেন । সুন্দর করে কাপড় পড়ানো । গলায় রজনীগন্ধার মালা । তাঁর বাঁদিকে মা সারদাদেবির ছবি বসানো । মাকেও সুন্দর করে কাপড় পরানো । মায়ের গলায় সোনার হার । আর ঠাকুরের ডানদিকে স্বামীজির ছবি । স্বামীজিকে গেরুয়া রঙের কাপড় পরিয়েছে ।

তারা জায়গা করে বসল । শুরু হল “খণ্ডন-ভব-বন্ধন” গান । লীনা দেখল ঠাকুরের সামনে আসনে যে সন্ন্যাসী বসেছিলেন তিনি উঠে আরতি শুরু করেছেন । একে একে প্রদীপ, শঙ্খ, বস্ত্র, পুষ্প আর চামর দিয়ে আরতি হল । এরপর “ওঁ হ্রীঁ ঋতং” আর “সর্ব মঙ্গল মঙ্গলে” গানের পর ঠাকুর-মা-স্বামীজির জয় দিয়ে শেষ হ’ল । (এসব কিছু সেদিন লীনা বোঝেনি । পড়ে জেনেছিল । প্রথমদিন সে শুধু সবকিছু মুগ্ধ হয়ে দেখেছিল ।) এরপর সকলে প্রণাম করে ধীরে ধীরে বাইরে বেরতে থাকল । আবার কেউ কেউ বসে রইল । তারা দুজনে বাইরে বেড়িয়ে এল । অনুপম তাকে নিয়ে গেল Book Stall –এ । সেখানে লীনা অনুপমের কাছ থেকে তিনটি বই উপহার পেল । এরপর তারা ফিরে গেল ।

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#43
রাত্রে শুয়ে শুয়ে লীনা ভাবছে সেই অদ্ভুত জায়গার কথা । ওখান দিয়ে সে দু-একবার গিয়েছে কিন্তু ভেতরে কোনদিন ঢোকেনি । আজ সে এক অন্য জগত দেখল । সুন্দর সুন্দর মানুষ, সুন্দর সুন্দর কথাবার্তা । আর তার মানুষটি ? কত জ্ঞান । কি সুন্দর করে তাকে সব কিছু বোঝাছিল । মাঝে মাঝে কোন রাজ্যে হারিয়ে যাচ্ছিল । আজ অনুপমকে সে নতুন করে জানল । আর তাতে তার অনুপমের প্রতি শ্রদ্ধা এল । তার বাবা-মা তার সাথে বন্ধুর মতো মেশে । সেজন্য তাদের কে সে খুবই ভালোবাসে । কিন্তু শ্রদ্ধা বলতে কি এতদিন সে ঠিক করে কখন উপলব্ধি করেনি । কারো প্রতি শ্রদ্ধা সে কক্ষণ অনুভব করেনি । আজ অনুপমের প্রতি তার শ্রদ্ধা আসছে । সে আজ বুঝতে পারছে বিয়ে মানে শুধুমাত্র কাম নয় । শুধুমাত্র দুই নরনারীর শরীরের লালসা চরিতার্থ নয় । সেখানে পরস্পর পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা এগুলিও দরকার । আজ সে নতুন করে জীবনের অর্থ খুঁজে পাচ্ছে ।


অনুপম আজ কিছুতেই ঘুমতে পারছে না । সেই হরিণ নয়নার কথা বার বার তার মনে পড়ছে । সেই ডাগর ডাগর চোখ দুটি তার মনের দর্পণে ভেসে উঠছে । আগে অফিসে মেয়েটাকে দেখে তার মনে কোনরকম দাগ কাটেনি । তাকে অন্য সকলের মতোই মনে হয়েছে । আধুনিক মেয়েরা যেমন হয় সেরকমই একটা মেয়ে । আলাদা করে চোখে পড়ার মতো কিছু লক্ষ্য করেনি । কিন্তু আজ সে লীনার মধ্যে যেন অন্য এক মেয়েকে দেখল । নতুন কিছুকে জানার প্রবল আগ্রহ । লীনার ভেতরে নিশ্চয়ই অন্য একটা মেয়ে বাস করে যেটা বাইরে থেকে সবাই বুঝতে পারে না । তা নাহলে এইরকম এক পরিবেশে, যা তার পরিচিত জগতের বাইরে, সে যে আচরণ করেছে তা আজকের আধুনিকাদের কাছে তো আশা করা যায় না । কত আগ্রহ নিয়ে সব কিছু শুনছিল । মেয়েটা যেন ধীরে ধীরে তার হৃদয়ে প্রবেশ করছে । কখনো কখনো তার অবচেতন মনে যে নারীমূর্তির ছবি উঠে এসেছে তার সাথে লীনার সবকিছু কি মিলে যাবে ? লীনাই কি তার মনের সেই সুপ্ত বাসনা, যা সে অনেক বছর ধরে লালন-পালন করছে ? কিন্তু লীনার একটুকু অংশই সে দেখেছে, তাতে এই সিদ্ধান্তে আশা দূরহ । লীনাকে আরো জানতে হবে ।


কিন্তু লীনার চোখের দিকে তাকালে তার বিচার শক্তি যে হারিয়ে যায় । ঐ নিষ্পাপ মুখটা কোন কিছু ভাবার অবকাশ দেয় না । ইচ্ছা ক’রে সদ্য ফোটা ঐ গোলাপটা দুহাত দিয়ে তুলে ধরতে । এরই নাম কি প্রেম, যেখানে কোন বিচার চলে না, সামাজিক বাধা তাকে আটকাতে পারে না, সবার থেকে আলাদা হয়ে দুজনে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে দূরে-বহুদূরে ...
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#44
poka64


লেখ যদি তুমি এক লাইন

মধুর মতো তা লাগে ফাইন






অনুপম হচ্ছে নীলাতে লিন

নীলার বুকটা করে চিন চিন
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#45
১। গল্পে ধর্ম প্রসঙ্গে –


গল্প মানে এক বা একাধিক ব্যক্তির জীবন তুলে ধরা । নানা রকমের মানুষের বাস এই দুনিয়াতে । সেখানে এমন কিছু মানুষও থাকেন যারা ধর্মের সাথে যুক্ত । কিন্তু তারাও রক্তমাংসের মানুষ, তাই জড়িয়ে পরে অন্য রকম সম্পর্কে । কখনো ইচ্ছাকৃত, কখনো বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে । এই রকমই কিছু মানুষকে নিয়ে এই গল্প ।

২। এই সাইট প্রসঙ্গে –

এক নারীর নানা ভাবে আমাদের সামনে আসে । বালিকা, ভগিনী, পত্নী, মাতা, ইত্যাদি । একই নারী, বিভিন্ন সময়ে তার বিভিন্ন রূপ । কামিনী, সখী, গৃহিণী, মাতৃরুপ, ইত্যাদি । সে রকমই Exbii – কে যদি এক সয়ং-সম্পূর্না নারীর হিসাবে কল্পনা করা হয় ?
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#46
এই অনুলীনা গল্পটিকে একটি আলাদা থ্রেডে দিলে ভালো হয় না?
এই থ্রেডটির নাম পড়ে বোঝা যাচ্ছেনা যে এখানে অনুলীনা গল্পটিও আছে।
[+] 1 user Likes WrickSarkar2020's post
Like Reply
#47
(01-01-2023, 02:53 PM)WrickSarkar2020 Wrote: এই অনুলীনা গল্পটিকে একটি আলাদা থ্রেডে দিলে ভালো হয় না?
এই থ্রেডটির নাম পড়ে বোঝা যাচ্ছেনা যে এখানে অনুলীনা গল্পটিও আছে।

এই অদ্ভুত সুন্দর গল্পটার শুধু প্রথম  দুটো পাতা ছিল , আর নেই

হারিয়ে গেছে লিনার মতো ... Sad

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#48
তমাল ঘোষ আরো একটি গল্প শুরু করেছিলেন কিন্তু শেষ করার আগেই XOSSIP বন্ধ হয়ে যায়।

নতুন একটা থ্রেড খুলে যেটুকু লিখেছিলেন দিয়ে দিচ্ছি। 
Like Reply




Users browsing this thread: 2 Guest(s)