01-01-2023, 09:48 AM
নতুন বছরের শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন আমার অন্যতম প্ৰিয় লেখককে। নতুন বছরে আপনার সুস্বাস্থ্য এবং সার্বিক উন্নতির কামনা করি।
WRITER'S SPECIAL সৃষ্টি (সমাপ্ত)
|
01-01-2023, 09:48 AM
নতুন বছরের শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন আমার অন্যতম প্ৰিয় লেখককে। নতুন বছরে আপনার সুস্বাস্থ্য এবং সার্বিক উন্নতির কামনা করি।
01-01-2023, 10:04 AM
01-01-2023, 09:23 PM
12-01-2023, 04:34 PM
|| স্বামীজি ||
সালটা ছিল ১৮৯৩, জুলাই মাসের পড়ন্ত বেলায় জাপান থেকে কানাডা জলপথের একই জাহাজের দুই যাত্রী ছিলেন একজন গেরুয়া বসন পরিহিত সন্ন্যাসী ও আর একজন হলেন মধ্যবয়স্ক পার্সি ব্যবসায়ী। ইয়োকোহামা থেকে ভ্যাঙ্কুবার অভিমুখী জাহাজ চলেছে তার নিজের ছন্দে। ১২ দিনের যাত্রাপথেই জমে ওঠে দুজনের আলাপ। একজন যাচ্ছেন বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে মার্কিন মুলুকে আর অন্যজন চলেছেন শিকাগো ধর্মসভাতে।এনাদের একজন হলেন স্বামী বিবেকানন্দ ও অন্যজন হলেন আধুনিক ভারতবর্ষের শিল্পের জনক জামশেদজি টাটা। সেদিনের দুইজনের আড্ডাতে উঠে এসেছিল ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি ও বাণিজ্যের প্রসঙ্গ। স্বামী বিবেকানন্দের থেকে তিনি উৎসাহিত হয়েছিলেন দেশে ইস্পাত কারখানা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার। এছাড়াও তাদের বার্তালাপ এ উঠে আসে জাপানের দেশলাই কারখানার ব্যবসার কথা।স্বামী বিবেকানন্দ জামশেদজি কে বলেছিলেন জাপান থেকে দেশলাই আমদানি না করে কেন নিজের দেশে কারখানা গড়ে তুলছেন না? তিনি আরও বলেন, কারখানা হলে তো দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মজবুত হবে। দেশের ছেলেরা কাজ পাবে এবং দেশের অর্থ দেশেই থাকবে।১৪ বছরের ছোট সন্ন্যাসীর কাছ থেকে এই রকম একটা অভিমত পেয়ে জামশেদজি টাটা বেশ অভিভূত হয়েছিলেন। তাঁদের কথোপকথন বেশ অনেক দূর গড়িয়েছিল।ব্রিটিশ শাসনে ভারতীয় জনগণ কতটা অত্যাচারিত হচ্ছে এবং যার জন্য দু’বেলা অন্ন জোগাড় করা কতটা কষ্ট সাধ্য তা নিয়ে জামশেদজির কাছে বিশদে ব্যাখ্যা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ১৮৯৩ সালে ১১ সেপ্টেম্বর শিকাগো ধর্ম মহাসভায় বক্তৃতা দিয়ে এক ইতিহাস সৃষ্টি করেন স্বামী বিবেকানন্দ।তারপর থেকে গোটা দুনিয়া তাঁকে চিনে যায়।তাঁর এই সাফল্যে খুশি হন বোম্বাইতে বসবাসরত জামশেদজি টাটা। ততদিনে তাঁদের দুইজনের জাহাজ যাত্রার গল্প হৃদয়ে গেঁথে যায়। ১৮৯৮ সালে ২৩ নভেম্বর জামশেদজি স্বামী বিবেকানন্দকে এক পত্র লিখলেন, সেই পত্রে জানালেন ভারতের বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার চিন্তা ভাবনা করছেন। তাই তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন ভারতীয়দের বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য প্রচার পত্র লিখে দিতে। তার মধ্যেই স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশন নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ায় জামশেদজির অনুরোধ গ্রহণ করতে না পারলেও ভগিনী নিবেদিতাকে দেখা করতে বলেছিলেন জামশেদজি টাটার সঙ্গে।১৯০২ সালে স্বামী বিবেকানন্দ পরলোকগমন করেন। ঠিক তার দুই বছরের মধ্যেই ১৯০৪ সালে জামশেদজি টাটার মৃত্যু ঘটে।ভারতের ইস্পাত কারখানা গড়ে তোলার স্বপ্ন জামশেদজি টাটা তার উত্তরসূরিদের হাতে অর্পণ করে চলে গেলেন।১৯০৭ সালে তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের হাত ধরে গড়ে ওঠে টাটা স্টিল। এই কারখানাটি বর্তমানে বৃহত্তম ভাবে দন্ডায়মান বহুজাতিক সংস্থা রূপে।১৯০৯ সালে গড়ে ওঠে টাটাদের উদ্যোগে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স যা আজ আমাদের গোটা ভারতবর্ষের গর্ব। খাওয়া-দাওয়া প্রসঙ্গে স্বামীজি
স্বামী বিবেকানন্দ ধর্মের সঙ্গে খাদ্যভ্যাসের সম্পর্ককে চিরকালই অস্বীকার করেছেন। সন্ন্যাসী হয়েও তিনি মাছ-মাংস খাওয়ার সপক্ষেই বলে গেছেন। ধর্মের সঙ্গে নিরামিষ খাওয়ার প্রচলন কে তুড়ি মেরে উড়িয়ে বলেছেন -- “ ঈশ্বর কি তোমাদের মতো আহাম্মক, তিনি কি ফুলের ঘায়ে মূর্চ্ছযান যে একটুকড়ো মাংসে তাঁর দয়ানদীতে চড়া পরে যাবে! ” বিভিন্ন প্রকার মাছ-মাংস গ্রহণের পক্ষেই ছিল স্বামীজীর সমর্থন। গুরুভাইদের মাংস খাওয়া নিয়ে কুসংস্কার ভাঙতে একদিন সবাই কে নিয়ে বিডন স্ট্রীটে ফাউলকারী খাইয়ে এনেছেন। একবার ঠাকুর “ কি খেয়েছিস ? ” জানতে চাইলে বললেন -- “ মুরগির ডালনা ” ঠাকুর বললেন -- “ বেশ করেছিস ” নরেনের হোটেলে খাওয়া নিয়ে কেউ নালিশ করলে রামকৃষ্ণদেব বলেছিলেন -- “ ওরে শালা, তোর কিরে? তুই শালা যদি হবিষ্যিও খাস আর নরেন যদি হোটেলেও খায়, তাহলেও তুই নরেনের সমান হতে পারবি না। ” শ্রীশ্রীমায়ের কথায়, “ নরেন আমার নানারকমের মাংস রাঁধতে পারতো, চিরে চিরে ভাজতো, আলু চটকে কিসব রাঁধতো। ” স্বামীজির মত ছিল, “ যে ভালো রাঁধতে পারে না সে ভালো সাধু হতে পারে না, মন শুদ্ধ না হলে রান্না ভালো হয় না। ” বিবেকানন্দের সংগীত চর্চা
স্বামী বিবেকানন্দ নিজেই প্রশিক্ষিত গায়ক ছিলেন (যদিও পেশাদার নয়)। তিনি 'বেনি ওস্তাদ' যার আসল নাম 'বেনি গুপ্ত' তাঁর থেকে নরেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শিক্ষা পান। ১৮৮১ সালের শেষের দিকে রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের যখন প্রথম সাক্ষাত হয় (যদিও সেসময় স্বামীজি নরেন্দ্রনাথ দত্ত নামে পরিচিত) তখন নরেন কয়েকটি ভক্তিমূলক গান গেয়েছিলেন। তার কণ্ঠস্বর আর সংগীতের প্রতি তার ভক্তি রামকৃষ্ণকে অত্যন্ত প্রভাবিত করেছিল, এবং এর মধ্যেদিয়েই তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁর শ্রেষ্টতম শিষ্যটিকে। এরপরের ঘটনা আমাদের সকলেরই জানা.. নরেন থেকে বিবেকানন্দ হয়ে ওটায় এই গানের ছিলো এক বড়ো ভূমিকা। কেমন ছিলো স্বামী বিবেকানন্দের জীবনের শেষ সময়? স্বামীজির মহাপ্রয়াণ হয় ৩৯ বছর বয়েসে ১৯০২ সালে। বেলুড় মঠে তখন রাত ৯ টা ১০ মিনিট। তখন বেলুড় মঠে বা তার পার্শ্ববর্তী গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। কিন্তু টেলিফোন ছিল তবুও কোন সংবাদমাধ্যম আসেনি এবং পরের দিন বাঙ্গলাদেশের কোন কাগজেই বিবেকানন্দের মৃত্যূ সংবাদ প্রকাশিত হয়নি,এমন কি কোন রাষ্ট্রনেতা বা কোন বিখ্যাত বাঙ্গালী কোন শোকজ্ঞাপনও করেননি। ভাবতে পারেন..? স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর স্বল্প জীবনে অপমান, অবহেলা বহু পেয়েছেন, উপেক্ষিত হয়েছেন বার বার। পিতার মৃত্যুর পর স্বজ্ঞাতির সঙ্গে কোর্ট কাছারী করতে হয়েছে তাঁকে। বহু বার হাজিরা দিয়েছেন কাঠগড়ায়। নিদারুণ দরিদ্রের সংসারে সকালে উঠে অফিস পাড়া ঘুরে ঘুরে চাকরির খোঁজে বেরুতেন। দিনের পর দিন মা কে বলতেন মা আজ রাতে বন্ধুর বাড়িতে খেতে যাবো। প্রায় দিন দেখতেন সংসারে চাল,ডাল,নুন ,তেল কিছুই নেই কিন্তু ভাই ও বোন নিয়ে ৫ টা পেটের খাবার কি ভাবে জুটবে ? মুদির দোকানে ধার করে মাকে এক- দুই দিনের চাল ডাল দিয়ে ... মা কে বলতেন আমার রান্না কোরো না.. মা ! দিন দুই বন্ধুর বাড়িতে নিমন্ত্রণ আছে কিন্তু.. কোথায় নিমন্ত্রণ ? আনাহার আর অর্ধপেটে থাকতেন তৎ কালীন নরেন্দ্র.. ভাবা যায় !! চরম দারিদ্রের মধ্যে সারা জীবনটাই টেনে নিয়ে গেছেন। ২৩ বছর বয়েসে শিক্ষকের চাকরি পেলেন মেট্রোপলিটন কলেজে। যাঁর প্রতিষ্ঠাতা বিদ্যাসাগর মশাই আর হেডমাস্টার বিদ্যাসাগরের জামাতা। জামাতা পছন্দ করতেন না নরেন্দ্রনাথ দত্তকে .. শ্বশুরকে বলে...“ খারাপ পড়ানোর অপরাধে ” বিদ্যালয় থেকে তাড়িয়ে দিলেন বিবেকানন্দকে। অথছ, যাঁর জ্ঞান, বুদ্ধি, ব্যুৎপত্তি তর্কাতীত, অন্তত সেই সময়েও। আবার বেকার বিবেকানন্দ। বিদেশেও তাঁর নামে এক বাঙ্গালি গুরু প্রচার করেন .. বিবেকানন্দ বেশ কয়েকটি বৌ ও দশ-বারো ছেলে পুলের পিতা ও এক আস্ত ভন্ড ও জুয়াখোর। দেশে ও বিদেশে অর্ধপেটে বা অভুক্ত থেকেছেন দিন থেকে দিনান্তে... চিঠিতে লিখেছিলেন : “কতবার দিনের পর দিন অনাহারে কাটিয়েছি। মনে হয়েছে আজই হয়ত মরে যাবো ... জয় ব্রহ্ম বলে উঠে দাঁড়িয়েছি .... বলেছি ...আমার ভয় নেই, নেই মৃত্যূ, নেই ক্ষুধা, আমি পিপাসা বিহীন। জগতের কি ক্ষমতা আমাকে ধ্বংস করে ?” অসুস্থ বিবেকানন্দ বিশ্ব জয় করে কলকাতায় এলে তাঁর সংবর্ধনা দিতে বা সংবর্ধনা সভা তে আসতে রাজি হয় নি অনেক বিখ্যাত বাঙ্গালী ( নাম গুলি অব্যক্ত রইল) শেষে প্যারিচাঁদ মিত্র রাজি হলেও ... তিনি বলেছিলেন .. ', নয় বিবেকানন্দ। ও কায়েত... তাই সন্ন্যাসী হতে পারে না ,আমি ওকে brother বিবেকানন্দ বলে মঞ্চে সম্বোধন করবো। ১৮৯৮, বিদেশের কাগজে তাঁর বাণী ও ভাষণ পড়ে আমেরিকানরা অভিভূত আর বাঙ্গালীরা ! সেই বছরই অক্টোবরে অসুস্থ স্বামীজি কলকাতার বিখ্যাত ডক্টর রসিকলাল দত্তকে দেখাতে যান,(চেম্বার- ২ সদর স্ট্রিট। কলকাতা যাদুঘরে পাশের রাস্তা )। রুগী বিবেকানন্দ কে দেখে সেই সময় ৪০ টাকা ও ঔষুধের জন্যে ১০ টাকা মানে আজ ২০২২ এর হিসাবে প্রায় ১৬০০০ টাকা নিলেন বিবিধ রোগে আক্রান্ত বিশ্বজয়ী দরিদ্র সন্ন্যাসীর কাছ থেকে ... বেলুড় মঠের জন্যে তোলা অর্থ থেকে স্বামী ব্রহ্মনন্দ এই টাকা বিখ্যাত বাঙ্গালী ডক্টর রসিকলাল কে দিয়েছিলেন। আরও আছে ... বিবেকানন্দের মৃত্যুর কোন ফটো নেই। এমনকি বীরপুরুষের কোন ডেথ সার্টিফিকেটও নেই কিন্তু সে সময় বালি-বেলুড় মিউনিসিপালিটি ছিলো। আর এই municipality বেলুড় মঠে প্রমোদ কর বা amusement tax ধার্য করেছিলো। বলা হয়েছিল ওটা ছেলে ছোকরাদের আড্ডার ঠেক আর সাধারণ মানুষ বিবেকানন্দকে ব্যঙ্গ করে মঠকে বলতো .. "বিচিত্র আনন্দ" বা "বিবি- কা আনন্দ"। ( মহিলা /বধূ / ... নিয়ে আনন্দ ধাম)। এই ছিলো তৎকালীন মুষ্টিমেয় বাঙ্গালীদের মনোবৃত্তি। সাধে কি শেষ সময় বলে গিয়েছিলেন -- “একমাত্র আর একজন বিবেকানন্দই বুঝেতে পারবে যে এই বিবেকানন্দ কি করে গেল।” আজ আমরা যে বিবেকানন্দকে কে নিয়ে এত মাতামাতি করছি, সেই বিবেকানন্দ কেই নিজের জীবদ্দশাতেই সহ্য করতে হয়েছিলো এত বঞ্চনা এত অপমান। ভালোই হয়তো করেছিলেন স্বামীজী এত তারাতারি এই পৃথিবীকে ত্যাগ করে.. নইলে হয়তো আজকের এইসব লোকদেখানো শ্রদ্ধা দেখে বলতেন ‘আদিখ্যেতা সব.." তথ্যসূত্রঃ- অজানা বিবেকানন্দ
12-01-2023, 06:28 PM
(This post was last modified: 12-01-2023, 06:32 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কিছু লেখা লাইন শিহরণ জাগালো আর কিছু লাইন পড়ে ক্রোধ জগতে বাধ্য। কেন যে এই জাতির অন্তরে আগ্রহ নামক অনুভূতি থাকা সত্ত্বেও সেটাকে বার বার ভুলভাবে ব্যবহার করে কিংবা অন্ধকারের প্রতি আকর্ষিত হয়ে কাউকে ঠিক মতো না চিনেই অপমান করার উল্লাস সুখ উপভোগ করে কে জানে? শেষের লেখা লাইনটা ব্যাপক।
12-01-2023, 07:32 PM
(12-01-2023, 06:28 PM)Baban Wrote: কিছু লেখা লাইন শিহরণ জাগালো আর কিছু লাইন পড়ে ক্রোধ জগতে বাধ্য। কেন যে এই জাতির অন্তরে আগ্রহ নামক অনুভূতি থাকা সত্ত্বেও সেটাকে বার বার ভুলভাবে ব্যবহার করে কিংবা অন্ধকারের প্রতি আকর্ষিত হয়ে কাউকে ঠিক মতো না চিনেই অপমান করার উল্লাস সুখ উপভোগ করে কে জানে? শেষের লেখা লাইনটা ব্যাপক। হ্যাঁ, ঠিক কথাই বলেছো। স্বামীজির সম্পর্কিত অনেক তথ্যই হয়তো অনেকের জানা, তবে যেগুলো অজানা .. সেগুলোই দেওয়ার চেষ্টা করেছি এই প্রতিবেদনে।
12-01-2023, 10:37 PM
13-01-2023, 10:02 AM
(12-01-2023, 04:34 PM)Bumba_1 Wrote: Ojana Vivekananda to ekta part er name puro uponyaser naam holo koto ojanare , eta diye dilam eijonnei, samnei boimela asche, aneke boita kine porte parbe , tobe tumi je beche beche bishesh ongshogulo ek kore likhecho , tar jonno hats off to you , tomar collections durdanto
13-01-2023, 02:39 PM
এরকম লোকেরা মনে হয় পাঁচ হাজার বছরে একজন জন্মায় , আমি নিজে স্বামীজীর বিশেষ অনুগামী।
যতটা সামর্থ আমার , প্রত্যেক বছরে কিছু পাঠাই বেলুড় মঠের আকউন্টে। আমার একজন মারাঠি বুড়ো বন্ধু আছেন , প্রফেশনাল জীবনে যাকে নিজের গুরু মানি। টাটা মোটরের quality বিভাগের প্রধান ছিলেন , ওনার পুনের বাড়িতে একবার দুইদিন কাটিয়েছিলাম। অবাক হয়ে গেছিলাম ওনার বিশাল দোতলা বাড়ির একটা ঘর দেখে , স্বামীজীর একটা পুরো রিয়েল সাইজের মূর্তি ছিল ওখানে আর ওনাকে রোজ দেখেছি ওই মূর্তির সামনে সকালে এক ঘন্টা করে বসে ধ্যান করতে। অবাক হয়ে গেছিলাম একজন মারাঠি লোকের বিবেকানন্দর ওপর এতো শ্রদ্ধা দেখে , আমরা কজন বাঙালি আর ওই রকম ভাবে মনে রেখেছি ওই বীর তপস্বীকে ??
13-01-2023, 03:15 PM
(13-01-2023, 10:02 AM)Chandan Ghosh Wrote: Ojana Vivekananda to ekta part er name বুঝলাম
(13-01-2023, 02:08 PM)Somnaath Wrote: মাংস তো অবশ্যই খেতে ভালোবাসতেন , তার সঙ্গে আইসক্রিম উনার ভীষণ প্রিয় ছিল। হ্যাঁ, একদম ঠিক কথা। আসলে মুখের স্বাদ বদলের থেকেও অন্য একটা ব্যাপারে উনি মাঝে মাঝে আইসক্রিম কিনে খেতেন। স্বামীজির ইনসোমনিয়ার পেশেন্ট ছিলেন, এছাড়াও লিভারের সমস্যা, কিডনির সমস্যা ডায়াবেটিস, হার্টের প্রবলেমের সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস্ট্রিক আলসার ছিলো। যখন অসম্ভব যন্ত্রণা হতো পেটে, তখন আইসক্রিম খেয়ে কিছুটা হলেও জ্বালা জুড়াতো হয়তো। (13-01-2023, 02:39 PM)ddey333 Wrote: এরকম লোকেরা মনে হয় পাঁচ হাজার বছরে একজন জন্মায় , আমি নিজে স্বামীজীর বিশেষ অনুগামী। দক্ষিণ ভারতে স্বামীজি ভগবান রূপে পূজিত হন। অথচ উপরের প্রতিবেদনটি করলে জানা যায়, জীবদ্দশায় কতটা দুঃখে, কষ্টে, অবহেলায় কেটেছিলো তাঁর জীবন।
23-01-2023, 09:41 AM
(This post was last modified: 23-01-2023, 09:52 AM by Bumba_1. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
আজ এই মহান দেশনায়কের জন্মদিন। বিভিন্ন জায়গায় সবাই তার কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলছে, কোথাও আবার তার শৈশব কৈশোর যৌবন নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, তার মৃত্যুরহস্য নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এখানে সম্পূর্ণ একটি অন্য বিষয় নিয়ে একটা প্রতিবেদন দিলাম। সময় করে অবশ্যই পড়ে দেখবেন। ~ কার্টুনে সুভাষচন্দ্র ~
১৯৪৬ সালের ২৩ জানুয়ারি। সুভাষচন্দ্র বসু নিখোঁজ প্রায় এক বছর হল। সে বছর সুভাষের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ছাত্ররা বিরাট এক মিছিল করল। সবচেয়ে বড়ো মিছিল হয়েছিল বোম্বেতে (বর্তমানে মুম্বাই) ছাত্রদের। কোনো রাজনৈতিক নেতার হাত ছিল না তাতে। সরকার ভয় পেল। পুলিশ কমিশনার হ্যারল্ড এডুইন বাটলার নির্দেশ দিলেন ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করার। প্রথমে কাঁদানে গ্যাস, তারপর সরাসরি গুলি। তাতে মারা গেল সেদিনের সেই 'টুকরে টুকরে গ্যাং'-এর ৮০ জন ছাত্র, আহত ৫০০ জনের বেশি... এখন যাদের আমরা গালভরা 'শহীদ' নাম দিয়েছি। পরদিন পত্রিকায় কুট্টি আঁকলেন এই বিখ্যাত কার্টুন (Cartoons)। কমিশনার বাটলার চারদিকে সরকারি গ্যাস মুখোসধারী পুলিশে ঘেরা হয়ে বলছেন "যদি সত্যি কাঁদার ইচ্ছে থাকে, তোমাদের সে ব্যবস্থা করছি।" কোনোক্রমে গ্রেপ্তার হতে হতে বাঁচলেন কুট্টি। বোঝাই যায়, নিখোঁজ হবার পরেও নেতাজি লাইভ ওয়্যার। বিপজ্জনক। সমকালেও সুভাষের পথ একেবারেই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। একদিকে যেমন সমর্থকরা তাঁর পক্ষে প্রচার করতেন, অন্যদিকে বিরোধীরা শানাতেন সমালোচনার অস্ত্র। সমকালীন কমিউনিস্ট থেকে আর এস এস, কেউ তাঁকে ছেড়ে কথা বলেনি। আর সবক্ষেত্রেই কার্টুন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। আজ এতদিন পরে সেই সব কার্টুন দেখে কেমন অলীক রূপকথার মত মনে হয় বৈকি! তখনকার কমিউনিস্ট পার্টির একনিষ্ঠ পত্রিকা এবং এককালের মুখপত্র ‘পিপলস ওয়ার’ পত্রিকা দিনের পর দিন নেতাজিকে বিদ্রুপ করে কার্টুন এঁকে গেছে। ১৯৪২-এর ১৯ জুলাই-এর এই কার্টুনটি যেমন। এখানে স্পষ্টই সুভাষ বোসকে তোজোর গাধার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল। এতেই শেষ হল না, একের পর এক নিম্নরুচির কার্টুন প্রকাশ পেতে লাগল সেই পত্রিকায়। কোথাও সুভাষ বোস তোজোর পাশে বামন, কোথাও গোয়েবলস-এর হাতে নাচা বাঁদর, আবার কোথাও জাপানি স্বৈরতন্ত্রের মুখ। সেই পত্রিকাতেই নেতাজির অভিধা হয়েছিল “the running dog of Japanese Fascism”. সবচেয়ে ক্রুর ছবি ছিল ১৯৪২ এর ২২ নভেম্বরে ছাপা কার্টুনটি, যেখানে দেখা যাচ্ছে সুভাষ বোস নিজে জাপানি বোমায় চেপে এদেশের দুর্ভিক্ষ পীড়িত জনগণের মাথায় ল্যান্ড করছেন। এখন ফিরে দেখলে এসব ঐতিহাসিক ভুল ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। মজার ব্যাপার, এই ধরনের আক্রমণের ব্যাপারে আর এস এস-ও পিছিয়ে ছিল না। নাথুরাম গডসের নিজের সম্পাদিত পত্রিকা ‘অগ্রণী’তে একটা কার্টুন প্রকাশ করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রামের পরিবর্তে আরএসএসের দুই তিরন্দাজ উদ্যত হয়েছে দশমাথা রাবণকে জ্বালাতে। সেই তিরে লেখা রয়েছে ‘অখণ্ড ভারত’। রাবণের প্রধান মুখ যেখানে মহাত্মা গান্ধীর, সেখানে পরের মুখগুলি বানানো হয়েছে সর্দার বল্লভভইি প্যাটেল, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো নেতাদের মুখের আদলে। তবে মুদ্রার উলটো দিকও ছিল। ন্যাশনাল প্রেসের পক্ষ থেকে শ্যামসুন্দরলাল অগ্রবাল অদ্ভুত একটা পোস্টার ছেপে প্রকাশ করে কানপুরের দেওয়ালে দেওয়ালে লাগিয়ে দিলেন। আপাতদৃষ্টিতে গোটা পোস্টার বেশ চমকে ওঠার মতো। নেতাজিকে এখানে তুলনা করা হয়েছে কালীর অন্যতম রূপ ছিন্নমস্তার সঙ্গে। আজাদ হিন্দ ফৌজের পোশাক পরে তিনি তাঁর নিজের গলা কেটে উৎসর্গ করছেন দেশের জন্য। আশেপাশে ছড়িয়ে আছে আরও সৈনিকদের কাটা মাথা। তলায় লেখা— “सुभाष चन्द्र बोसे कि अपूर्व भेट” (সুভাষ চন্দ্র বোসের অপূর্ব উপহার)। আজাদ হিন্দের আত্মত্যাগ ঠিক কতটা সাড়া জাগালে একজন মানুষ বেঁচে থাকতেই ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনীয় হন, তা বলাই বাহুল্য। সেই আমলেই নেতাজিকে নিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল জয় হিন্দ কেমিক্যাল ওয়ার্কস। বেশ মজার বিজ্ঞাপন। নেতাজি, গান্ধীজী, নেহেরু, প্যাটেল বা আজাদ— সবার যে একখানা করে ইন্দ্রলুপ্ত আছে, তা খেয়াল করেছিল তারা। সেই জন্যেই, একমাত্র উপায় মাথায় ‘জয় হিন্দ আমলা গন্ধনিধি হেয়ার অয়েল’। শেষে বলি প্রমথ সমাদ্দারের সেই বিখ্যাত কার্টুনের কথা। দেশ সবে স্বাধীন। কিন্তু সবাই জুজু দেখছে। ওই বুঝি নেতাজি আসেন। জওহরলাল দূরবিনে চোখ রেখেছেন, প্যাটেল মাথা চুলকাচ্ছেন, শাস্ত্রী হতাশ হয়ে মাটিতে বসে। দেশজুড়ে গুজব "নেতাজী আসছেন নেতার বেশে"... কে জানত? পঞ্চাশ বছর পেরিয়েও নেতাজির ভূত আজও তাড়া করে বেড়াবে দেশের অনেক নেতাদের!তবে নেতাজির কার্টুন নিয়ে সেরা কাজটি করেছিলেন প্রফুল্ল চন্দ্র লাহিড়ী। একদম ঠিক ধরেছেন। ইনিই কাফি খাঁ কিংবা পিসিয়েল নামে দিনের পর দিন বাংলা ইলাস্ট্রেসন আর কার্টুনকে পৌঁছে দিয়েছেন এক নতুন উচ্চতায়। সুভাষচন্দ্রের জীবন নিয়ে সত্তরের দশকে প্রকাশিত অসামান্য বই ‘সুভাষ আলেখ্য’ তাঁর লেখায় আঁকায় ভরে তোলেন। স্বয়ং ওয়াল্ট ডিজনি তাঁর কাজে মুগ্ধ হয়ে আমেরিকায় থেকে যেতে বলেছিলেন। থাকেননি তিনি। এই বইতে কী সুন্দরভাবে নেতাজির জীবনকে ফুটিয়ে তুলেছেন পাতাজোড়া ছবি আর অন্যপাতায় লেখায়, তা না দেখলে বিশ্বাস হয় না। এ মুখার্জী থেকে প্রকাশিত এই বইটি দেখতে অনেকটা অ্যালবামের মতো। এমন অসামান্য আলেখ্য পৃথিবীতে খুব কমই লেখা হয়েছে। -- ★★ --
23-01-2023, 12:23 PM
নেতাজির বিরুদ্ধে তার নিজের দেশের লোকজন অনেক চক্রান্ত করেছিল, সেই জন্যই বোধহয় তিনি আর নিজেকে প্রকাশ করতে চাননি পরবর্তীকালে। জয় হিন্দ নেতাজি অমর রহে।
23-01-2023, 12:26 PM
কি অদ্ভুত তাইনা?নিজের দেশের মানুষেরাই তাকে ইয়ে এমন ভাবে...... কি আর বলি থাক আজ সেসব। এটাও সত্যি, এটাও বাস্তব। খুশি কে গীত গাইতে গাইতে এগিয়ে চলুক আজকের সমাজ এটাই চাইবো। জয় হিন্দ!♥️♥️
23-01-2023, 02:10 PM
(23-01-2023, 12:23 PM)Somnaath Wrote: নেতাজির বিরুদ্ধে তার নিজের দেশের লোকজন অনেক চক্রান্ত করেছিল, সেই জন্যই বোধহয় তিনি আর নিজেকে প্রকাশ করতে চাননি পরবর্তীকালে। জয় হিন্দ নেতাজি অমর রহে। (23-01-2023, 12:26 PM)Baban Wrote: কি অদ্ভুত তাইনা?নিজের দেশের মানুষেরাই তাকে ইয়ে এমন ভাবে...... কি আর বলি থাক আজ সেসব। এটাও সত্যি, এটাও বাস্তব। খুশি কে গীত গাইতে গাইতে এগিয়ে চলুক আজকের সমাজ এটাই চাইবো। জয় হিন্দ!♥️♥️ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারত তথা বাঙালির হৃদয়ের এমন একজন মানুষ যার চির উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি এবং স্বার্থহীন দেশ প্রেমের জোয়ারে আজও উদ্বেলিত সমগ্র ভারতবাসীর অন্তর। কিন্তু কি হলো শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রিয় নেতাজীর? এই কালজয়ী প্রশ্নের সাথে সাথেই কিভাবে হল এবং কেন হল এই প্রশ্নগুলো কিন্তু একইসাথে উদ্বেলিত হয় আমাদের হৃদয়। এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর আমরা আদৌ কোনদিনও জানতে পারবো কিনা সেটা নিয়েই এখন তৈরি হয়েছে অনেক সংশয়। আমরা সকলেই জানি জাপানের, তাইহোকু সেনা বিমান ঘাঁটিতে নেতাজির বিমান ,দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল বলে প্রচারিত আছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ওই বিমান দুর্ঘটনায় নাকি শুধুমাত্র নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ই দগ্ধ অবস্থায় মৃত্যু হয়েছিল। অথচ বেঁচে গিয়েছিলেন কিন্তু বিমানে সফররত নেতাজির অনান্য বিশ্বস্ত সহযাত্রীরা।যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমান। যিনি ছিলেন নাকি নেতাজী র শেষ সময়ে একমাত্র সাথী ।মূলত হাবিবুর রহমান ই সবাইকে জানান নেতাজী মারা গেছেন এবং তার মৃত্যুর কারণ হলো বিমান দুর্ঘটনা। কে এই হাবিবুর রহমান? যদি পিছনের দিকে তাকাই তাহলে আমরা দেখতে পাব হাবিবুর রহমান জন্মে ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরে। শিক্ষা জীবন শেষ করে 15 জুলাই 1936 যোগদান করেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার 2nd ব্যাটেলিয়ানে একজন সৈনিক হিসেবে। পরে লেফটেন্যান্ট হিসেবে পদোন্নতি হয়। 15th ফেব্রুয়ারি 1942 সালে মালায়াতে ব্রিটিশ সেনা আত্মসমর্পণ করে জাপানি সেনার কাছে। যুদ্ধবন্দী হিসেবে জেলে ছিলেন তিনি।। পরবর্তীকালে তিনি তিনি নেতাজির ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হন এবং নেতাজির উদ্যোগে তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আজাদ হিন্দ ফৌজ এর নিযুক্ত করাহয়। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে তিনি আজাদহিন্দ ফৌজ এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন এবং ক্রমশ নেতাজির ছায়াসঙ্গী হয়ে ওঠেন। 1947 সালে স্বাধীনতার সময় হাবিবুর রহমান পাকিস্তান চলে যান।যুক্ত হন পাকিস্তানের সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিসে।নিযুক্ত হন মূখ্য অ্যাডমিস্টেটর নর্দান অঞ্চল গিলগীট্ ও বালুচিস্থান, পাকিস্তানের অ্যাডিশনাল ডিফেন্স সেক্রেটারি হিসেবে।গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন আজাদ কাশ্মীর কাউন্সিলের ও।তিনি কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করার জন্য বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন।আলোচনায় সফল না হলে . সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের * রাজা হরি সিংহ কে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘোষণা করেন। মূলত তারপরই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন কাশ্মীরের শেষ * রাজা। জম্মু ও কাশ্মীর আজাদীর লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য পাকিস্তান সরকার হাবিবুর রহমান কে 1) ফকর-ই- কাশ্মীর, 2) গাজী-ই-কাশ্মীর, 3) ফতে -ই- ভিমবীর।এবং পাকিস্তান আর্মিতে সাফল্যের জন্য আর্মির পক্ষ থেকে হাবিবুর রহমানকে 1)Sitara-e-Pakistan 2)Nishan-e-Imtiaz 3)Tamgha-e-Imtiaz এবং 4)Tamgha-i-Khidmat এর গুরুত্বপূর্ণ সন্মান দেওয়া হয়েছিল। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অপর একজন বিশ্বস্ত ও বিশেষ আস্থাভাজন ছিল আজাদহিন্দ ফৌজের মেজর জেনারেল শাহ নওয়াজ খান। ব্রিটিশ কলেজে পড়াশোনা শেষ করে তিনি যুক্ত হন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে। এরপর, ক্যাপ্টেন পদে নিয়োগ, সিঙ্গাপুর পোস্টিং এবং জাপানের সাথে যুদ্ধের সময় তিনি 1942 সালে যুদ্ধবন্দি হিসেবে গ্রেপ্তার হন। পরে সুভাষচন্দ্র বসুর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে 1943 সালে তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি INAতে যোগদান করেন। এক্ষেত্রেও কারাগার থেকে তার মুক্তির ব্যাপারে নেতাজি হস্তক্ষেপ করেছিলেন এবং তাকে আই এন এ তে সামিল করেছিলেন। আজাদহিন্দ ফৌজ যখন বৃটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন তখন মেজর জেনারেল শেহনাজ খান কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের। 1945 সালে INA সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কাছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর 1946 সালে আজাদহিন্দ ফৌজের মেজর জেনারেল শাহ নাওয়াজ খান সহ বাহিনীর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করার দায়ে লালকেল্লায় প্রকাশ্যেই কোর্ট মার্শাল করা হয়। এই বিচার প্রক্রিয়া চলার সময় মেজর খান সম্পূর্ণরূপে সহিংস পথ ছেড়ে গান্ধীজীর অহিংস পথে চলার কথা ঘোষণা করেন। এরপর জহরলাল নেহেরুর উদ্যোগে মুক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে কংগ্রেসে যোগ দান করেন এবং, সংসদীয় রাজনীতিতে একাধিকবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। শাহ নওয়াজ খান চারবার (1951, 1957, 1962 এবং 1971) লোকসভায় নির্বাচিত হন উত্তর প্রদেশের ‘মেরাট’ কেন্দ্র থেকে। 1967 ও 1977 সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়ে ছিলেন কারণ 1965 ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তার ছেলে মাহমুদ পাকিস্তান আর্মির দায়িত্বে ছিল বলে বিরোধীরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কমিটির পদ থেকে শাহজাহান খানের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এই দাবি খারিজ করে দিয়েছিলেন। এখন প্রশ্ন হলো হঠাৎ করে নেতাজির দুজন ছায়াসঙ্গী হাবিবুর রহমান এবং শাহনওয়াজ খান বদলে গেলেন কি করে ? কি করে তারা সুবিধাবাদী রাজনীতিতে ঢুকে পড়লেন ?তাহলে কি নেতাজীর ভাবধারায় সত্যিই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এরা ? নাকি পুরোটাই ছিল জেল থেকে বেরিয়ে এক উন্মুক্ত পৃথিবী দেখার অভিপ্রয়াস?, প্রশ্ন আছে আরো ,যে নেতাজি অখন্ড স্বাধীন ভারতবর্ষের জন্য . ভাইদের নিজের ছায়া সঙ্গী করে রেখেছিলেন, যে নেতাজি * .ের মধ্যে কোনদিনও কোন ভেদাভেদ করেননি, সেই নেতাজির তথাকথিত শেষ মুহূর্তের সঙ্গী হাবিবুর রহমান কেন বিভাজনের পক্ষে ভারত ছেড়ে পাকিস্তান চলে গেলেন? শুধু তাই নয় ,কিভাবে ই বা তিনি . জনসংখ্যা বেশি হওয়ার জন্য জম্মু-কাশ্মীর কে জোড় করে পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করার জন্য মূখ্য ভূমিকা পালন করেন? কিভাবেই বা ঘৃণ্য চক্রান্ত করে কাশ্মীরের রাজা হরি সিং কে নিজের জায়গা ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছিল? প্রশ্ন আছে হাবিবুর রহমান কেও নিয়েও। আজ যখন প্রায় প্রমাণ হয়ে গেছে যে তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু গুজব ছাড়া অন্য কিছু নয়, সেই জায়গা থেকে ঠিক কি প্রমাণের ভিত্তিতে শাহনওয়াজ খান কমিটি 1945 সালের 18 আগস্ট দিনটিতে নেতাজির বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটেছিল বলে মান্যতা দিলেন? তাহলে জহরলাল নেহেরুর মন্ত্রিসভায় গিয়ে তার নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা বা সর্বোপরি আবেগ বা প্রেম কি শেষ হয়ে গিয়েছিল ? তিনি কি ভুলে গিয়েছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বময় কর্তার দেশের জন্য আত্মত্যাগের ইতিহাস? কেন জহরলাল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েও তিনি উপযুক্ত মর্যাদা পাইয়ে দেননি আজাদহিন্দ বাহিনীর হাজার হাজার তার সহ কর্মীদের! তাহলে কি নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য এবং মৃত্যু নিয়ে কোন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের অসম্ভব চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছিলেন তিনি? সেক্ষেত্রে তিনি কি ভুলে গিয়েছিলেন আজাদহিন্দ ফৌজ এর কুড়ি হাজার বীর বিপ্লবীর শহীদ হওয়ার ইতিহাসকে ? এখান থেকে আরও একটা বড় প্রশ্ন কিন্তু উঠে আসে নেতাজির এই হঠাৎ করে অন্তর্ধান এবং তারপর তার কি তাকে জোর করে ভারতবাসীর চোখে তাকে মৃত প্রমাণ করার অপপ্রয়াসের শুরুটা আসলে কবে থেকে ছিল ? তবে কি ষড়যন্ত্রের নিগূঢ় জাল অত্যন্ত সযত্নে বোনা হয়েছিল 1945 সালের 18 আগস্ট এর অনেক আগে থেকেই? জানিনা ভবিষ্যত উত্তর দেবে কিনা, কিন্তু দেশের বীর বিপ্লবী দেশ মায়ের এই বীর সন্তান কে কোন ষড়যন্ত্রী নোংরা হাত শেষ করতে পারেনি বলেই বিশ্বাস করতে আজও বড্ড ইচ্ছা করছে! তাই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একজন অতিসাধারণ নেতাজির একজন ভক্ত, সংগ্রাহক এবং দেশপ্রেমিক হিসেবে দাবি .. দয়া করে আর একটা নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করুন ,যারা সঠিকভাবে তদন্ত করে সামনে আনবে নেতাজির অন্তর্ধান আসল রহস্য ।দেশবাসীর সামনে উন্মুক্ত করবে সেই সমস্ত সত্য ,যাকে গলাটিপে হত্যা করার অনেক প্রয়াস হয়েছে হয়ত আমাদের এই ভারত থেকেই ।ভারত মায়ের বিশ্ববন্দিত সেই ছেলের শেষ পর্যন্ত সত্যিই কি হয়েছিল সেটা জানার অধিকার আছে সকল ভারতবাসীর ই। হয় মুখার্জি কমিশনের রিপোর্ট সর্বসমক্ষে উন্মুক্ত করা হোক আর না হলে একটা নতুন কমিটি বা কমিশন গঠন করা হোক যারা সঠিক ভাবে এবং দ্রুততার সাথে নেতাজি সংক্রান্ত সকল ষড়যন্ত্রের রহস্যের উদ্ঘাটন করবে।
23-01-2023, 03:38 PM
(23-01-2023, 09:41 AM)Bumba_1 Wrote: (23-01-2023, 02:10 PM)Bumba_1 Wrote: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারত তথা বাঙালির হৃদয়ের এমন একজন মানুষ যার চির উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি এবং স্বার্থহীন দেশ প্রেমের জোয়ারে আজও উদ্বেলিত সমগ্র ভারতবাসীর অন্তর। কিন্তু কি হলো শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রিয় নেতাজীর? এই কালজয়ী প্রশ্নের সাথে সাথেই কিভাবে হল এবং কেন হল এই প্রশ্নগুলো কিন্তু একইসাথে উদ্বেলিত হয় আমাদের হৃদয়। এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর আমরা আদৌ কোনদিনও জানতে পারবো কিনা সেটা নিয়েই এখন তৈরি হয়েছে অনেক সংশয়। আমরা সকলেই জানি জাপানের, তাইহোকু সেনা বিমান ঘাঁটিতে নেতাজির বিমান ,দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল বলে প্রচারিত আছে। সমৃদ্ধ হলাম
23-01-2023, 05:53 PM
|
« Next Oldest | Next Newest »
|