Thread Rating:
  • 120 Vote(s) - 2.98 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery ক্যান্সার আক্রান্ত স্বামীর স্ত্রীয়ের পরকীয়া
#61
পর্ব ৬

রবি কিন্তু মনীষার ঘরে ঢুকেছিলো ওর সাথে রাত্রিযাপন করতে নয়। বালিশ টা নিতে। আগের রাতের মতো সে আজকেও ঠিক করেছিল ডাইনিং রুমের সোফায় শোবে। তাই সে নিজের বালিশ নিতে ঘরে ঢুকেছিলো। রবিকে চুপচাপ বালিশ নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যেতে দেখে মনীষা পিছন থেকে ডেকে রবিকে আটকালো, "দাঁড়াও রবি , কোথায় যাচ্ছ ?"

- "আমি কাল যা করেছি , অন্যায় করেছি। তাই কালকের মতো আজকেও আমি ডাইনিং এই শোবো। "

- "দেখো তুমি কোথায় শোবে সেটা তোমার মর্জি , কিন্তু যাওয়ার আগে আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাও। তাছাড়া অরুণ হয়তো এখনো জেগে আছে। আমি চাইনা ওর সামনে কোনোরকমের কোনো কমপ্লিকেটেড সিচুয়েশন অ্যারাইভ হোক। তাই এখানে এসে বসো। "

মনীষার কথা মতো রবি বালিশ নিয়ে এসে বিছানায় বসলো। "বলো কি বলবে ?", রবি জিজ্ঞেস করলো মনীষাকে।

"কাল তুমি অরুণের কথায় ওসব করেছিলে না ?", সোজাসুজি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো মনীষা রবির দিকে। রবি তো হতবাক ! মনীষা কি করে জানলো ! সে তাই জিজ্ঞেস করে ফেললো , "তুমি কি করে জানলে ?"

অর্থাৎ রবি না চাইতেও একপ্রকার স্বীকার করে নিলো মনীষার সামনে , যে সে অরুণের কথায় এসব করেছিল কাল।  

"সেটা বড়ো প্রশ্ন নয় রবি। আসল কথাটি হলো , আমি যা বলছি সেটা সত্যি কিনা ? কাল তুমি অরুণের কথায় আমাকে স্পর্শ করেছিলে কিনা ? সত্যি করে বলো ....", মনীষা বেশ দৃপ্ত কণ্ঠে রবির কাছ থেকে কৈফিয়ত চাইলো।

- "হুমমঃ। ..... কিন্তু তুমি প্লিস অরুণকে ভুল বুঝোনা। ওর দিকটাও ভেবে দেখো। "

- "আমি তো ওর দিকটাই ভেবে দেখতে চাইছি রবি। আমি জানতে চাইছি অরুণ তোমাকে কেন এরকম কাজ করতে বললো ? ও তো এরকম ছিলোনা ! ভীষণ ভালোবাসতো আমায় , এখনো বাসে , তাহলে ও তোমাকে দিয়ে এসব কেন করাতে চাইলো ?"

- "আসলে অরুণ তোমাকে আমার সাথে সুখে দেখতে চাইছিলো। ও আমাদের দেখে বুঝতে পেরেছিলো যে আমরা স্বামী স্ত্রী হিসেবে থাকলেও আমাদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মতো কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। সেটা নিয়েই ও কনসার্ন ছিল। অরুণ জানে ও আর বেশিদিন বাঁচবে না। তাই ও আমাদের পরিণতির সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলো। ও দাঁড়িয়ে থেকে দেখতে চেয়েছিলো তুমি আমার সাথে একটা নতুন জীবনে প্রবেশ করছো। আমাকে তুমি তোমার স্বামী হিসেবে সম্পূর্ণভাবে মেনে নিয়েছো। "

- "আমাদের এই চার দেয়ালের ঘরের মধ্যে কি হবে বা হতে পারে সেটা অরুণ বাইরে থেকে জানবে কি করে ? ও কিভাবে সাক্ষী থাকতে চায় ?"

- "শারীরিকভাবে হয়তো সে দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের মিলন দেখতে পাবে না , আর দেখা উচিতও নয়, সেটা অরুণ জানে। তাই ও আজ সকালে আমাকে নিজের ঘরে নিয়ে গেছিলো এটা জানার জন্য যে কাল রাতে আমার আর তোমার মধ্যে কিছু হয়েছে কিনা ? অরুণ আমাকে বিশ্বাস করে , তাই আমি যা বলবো সেটাই ও সত্য প্রবচন বলে মেনে নেবে। এইভাবেই ওর সাক্ষী থাকা হবে আমাদের মিলনের। সশরীরে সামনে থেকে না দেখলেও , একই বাড়িতে উপস্থিত থেকে সেটা অনুভব তো করতে পারবে , বিশেষ করে আমার মুখ থেকে শুনে। সেরকমই অরুণ ভেবে রেখেছিলো। "

- "তো তুমি কি বললে ?"

- "যা সত্যি সেটাই বলেছি, যে তুমি আমাকে নিজের ধারের কাছেও ঘেঁষতে দাওনি। তারপর অরুণকে আমি ভালোমতো শুনিয়েও দিয়েছি , সে যাতে এরকম উল্টোপাল্টা ধারণা নিজের মনের মধ্যে পোষণ করে না রাখে। মনীষা শুধু অরুণের ছিল , আর অরুণেরই থাকবে। "

- "তারপর এসব শুনে ও কি বললো ?"

- "সেরকম কিছু না। "

- "ও কি তোমাকে আবার একটা এরকম অ্যাটেম্প্ট নিতে পরামর্শ দিলো ?"

- "নাহঃ। ওকে যেভাবে আমি শাষিয়ে দিয়েছি , আর ও চাইলেও এসব কথা বলার সাহস পাবে না। চিন্তা নেই তোমার। "

- "হয়তো চাপে পড়ে নিজের কথা সে ফিরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু মনে মনে হয়তো সে এটাই চায় , এখনো। "

- "ঠিক বলতে পারবো না সেটা। আমি ওর যতই ভালো বন্ধু হই না কেন , তুমি ওর স্ত্রী , তুমি ওর সাথে বেশ কয়েকটা বছর ধরে সংসার করছো , ইউ নো হিম বেটার দ্যান মি।"

- "হুমম। .... আচ্ছা , কালকে কি শুধু বন্ধুর কথা রাখতেই তুমি এসব করেছিলে ? তোমার নিজেরও তো ইচ্ছা করেছিল নিশ্চই ? "

- "মিথ্যা বলবো না। সত্যি বলতে , হ্যাঁ আমারও ইচ্ছা করেছিল তোমাকে ছুঁতে। অরুণের কথায় সাহসটা একটু বেড়ে গেছিলো আর কি। আসলে আমিও তো একজন পুরুষ মানুষ। আমারও তো কিছু শারীরিক চাহিদা থাকতে পারে এই বয়সে। সেই টানেই হয়তো এতো বড়ো সাহস দেখিয়েছিলাম। কিন্তু আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি , এরকম ভুল আর দ্বিতীয়বার হবেনা। আমি তোমাকে ততদিন ছোঁবনা যতদিন না তুমি আমাকে অনুমতি দেবে। যদি তুমি সারাজীবন আমার থেকে দূরে সরে থাকো , তাও আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না। আমি যে আমার প্রিয় বন্ধুকে কথা দিয়েছি , তার অবর্তমানে তার পরিবার কে আমি আগলে রাখবো। "

মনীষা চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতা বজায় ছিল। মনীষার মুখ বন্ধ দেখে রবি বুঝলো যে আজকের মতো মনীষার সকল কৌতূহল , জিজ্ঞাসা ও কথা ফুরিয়েছে। তাই সে আবার নিজের বালিশ নিয়ে ঘর থেকে বেড়োতে যাচ্ছিলো। অমনিই মনীষা আবার রবিকে পিছন থেকে ডাকলো , "দাঁড়াও রবি। তোমাকে আজকে কষ্ট করে বাইরে গিয়ে সোফায় শুতে হবে না। তুমি এখানেই ঘুমো , মাঝখানে ডিসটেন্স রেখে , যেমনটা এতোদিন করতে।"

মনীষার কথা শুনে রবির মনে হাজার মাইল বেগে এক দমকা হাওয়া বয়ে গেলো। সে প্রচন্ড খুশি হলো এটা ভেবে যে সে আবার মনীষার হারানো বিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। এটা সকলে পারেনা। সবাই বলে বিশ্বাস হলো কাঁচের মতো , একবার ভাঙলে সেটা জোড়া দেওয়া যায়না। আজ ব্যতিক্রম হয়ে দেখালো আমাদের রবি। কারণ সে তো সত্যিই অপরাধী ছিলোনা। সেদিক দিয়ে বলতে গেলে অপরাধী কেউই ছিলোনা , অরুণও নয়।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#62
আপনার লেখা কোনো প্রতিষ্ঠিত নামজাদা লেখকের থেকে কম নয়। এই ভাবেই চালিয়ে যান।
[+] 2 users Like Anita Dey's post
Like Reply
#63
(19-12-2022, 07:40 PM)Anita Dey Wrote: আপনার লেখা কোনো প্রতিষ্ঠিত নামজাদা লেখকের থেকে কম নয়। এই ভাবেই চালিয়ে যান।

আমি জানিনা আপনার এই প্রশংসার যোগ্য আমি কিনা। তবে এতোটা সাধুবাদ জানানোর জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। 
[+] 1 user Likes Manali Basu's post
Like Reply
#64
চমৎকার আপডেট
[+] 1 user Likes Jibon Ahmed's post
Like Reply
#65
লেখা অবশ্যই ভালো হচ্ছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই আপনি এ ভাবেই চালিয়ে যান পাসে সব সময়ই আছি
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
#66
(19-12-2022, 08:28 PM)Manali Basu Wrote: আমি জানিনা আপনার এই প্রশংসার যোগ্য আমি কিনা। তবে এতোটা সাধুবাদ জানানোর জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। 

দারুন সাবলীল লেখা আসলে , প্রশংসা না করে থাকা যায়না।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#67
(19-12-2022, 07:40 PM)Anita Dey Wrote: আপনার লেখা কোনো প্রতিষ্ঠিত নামজাদা লেখকের থেকে কম নয়। এই ভাবেই চালিয়ে যান।

যাক , আরেকজন দে কে পাওয়া গেলো অবশেষে।

এতদিন আমি একাই লড়াই করছিলাম !! Heart Namaskar
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#68
অনেক সুন্দর হচ্ছে
[+] 1 user Likes Ari rox's post
Like Reply
#69
(19-12-2022, 09:58 PM)ddey333 Wrote: যাক , আরেকজন দে কে পাওয়া গেলো অবশেষে।

এতদিন আমি একাই লড়াই করছিলাম !! Heart Namaskar

লড়াই ? কিসের লড়াই ??
[+] 2 users Like Manali Basu's post
Like Reply
#70
দিদি চালিয়ে জান অনেক ভালো হচ্ছে
[+] 1 user Likes Sagorsannydubai's post
Like Reply
#71
(19-12-2022, 10:18 PM)Manali Basu Wrote: লড়াই ? কিসের লড়াই ??

না না কিছু না , এমনিই আরকি !!
Big Grin Big Grin
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#72
Excellent writing!! Update next part pls
[+] 1 user Likes Fing fing's post
Like Reply
#73
Amazing update slowly slowly this story is becoming a masterpiece keep going ....
[+] 1 user Likes Chickfry's post
Like Reply
#74
I will try my level best to give the next update as soon as possible..

[Image: 17492820-292034177892549-5985662947522676802-o.jpg]
[+] 5 users Like Manali Basu's post
Like Reply
#75
Heart 
Ato din account silo na but... Niomito portam..... But apnak appreciate na kore passilam na.... So i create a new account only for comment on your post......

And this story is one most favourite of mine......Keep going please Heart  Heart

Note : I want to change my rating to 5 star..... But i can't find how to change it...... Sorry for that....
[+] 1 user Likes rahul32155's post
Like Reply
#76
দিদি আজকে আপডেট আসবে
[+] 1 user Likes Sagorsannydubai's post
Like Reply
#77
(20-12-2022, 09:39 PM)Manali Basu Wrote: I will try my level best to give the next update as soon as possible..

[Image: 17492820-292034177892549-5985662947522676802-o.jpg]
Eagerly waiting
[+] 1 user Likes Pmsex's post
Like Reply
#78
পর্ব ৭

অরুণ আজকেও পরীকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের বালিশে হেলান দিয়ে বই পড়ছিলো। আজকেও সে ঘুমের ওষুধ খাইনি। কারণ এখন অরুণ আর বিশেষ স্ট্রেস নেয় না। তাই সে রোজ ঘুমের ওষুধ খাওয়াটাও ত্যাগ করেছে। বই পড়তে পড়তে সে মনীষার কথা ভাবছিলো। চোখ ছিল বইয়ের পাতায় কিন্তু মন ছিল মনীষার দিকে।

অরুণ ভাবছিলো কি করে মনীষাকে এই মিথ্যে বিয়ে থেকে বের করে আনবে। মনীষা কবে এই মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে। অরুণ এবার চাইছিলো জীবনের শেষ কয়েকটা দিন সে মনীষাকে নিয়ে ভালোভাবে স্বামী স্ত্রীর মতো আবার কাটাবে। কিন্তু সেটা যে এতো সহজ ছিলোনা। মনীষা তার বিয়ে করা একমাত্র বউ হতে পারে, কিন্তু সে তার হাতের পুতুল নয়, যে যখন চাইলো ডিভোর্স দিয়ে অন্য কারোর সাথে বিয়ে করতে বাধ্য করলো , আবার যখন চাইলো সেই বিয়ে ভাঙিয়ে পুনরায় তাকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনলো। এইভাবে সবকিছু হয়না। অরুণ ক্যান্সার আক্রান্ত একজন রোগী হতে পারে কিন্তু তাই বলে তার সব আবদার কে শেষ ইচ্ছে বলে মেনে নেওয়া যায়না।

ওদিকে মনীষা ও রবি যথা নিয়মে একে অপরের থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে শুয়ে পড়লো। গতরাতে রবির সোফায় ঠিকমতো ঘুম হয়নি , তার উপর সারাটা দিন তার কেটেছে দ্বন্দ্বে , নিজের মনের সাথে। অরুণের কথা মেনে তার মনীষার কাছে যাওয়া উচিত ছিল কিনা। সে তো মনীষার চোখে সেই জন্য ছোটও হয়েগেছিলো। সারাটা দিন তাই তার চিন্তায় চিন্তায় কেটে ছিল , কিভাবে সে মনীষাকে রাতে ফেস করবে এটা ভেবে।

এইসবের জন্যে রবির শরীর ও মনের উপর দিয়ে অনেক ধকল গ্যাছে। তাই সে বিছানায় শুতেই ঘুমের দেশে পাড়ি দিলো। কিন্তু অরুণের মতো মনীষারও আজকে ঘুম আসছিলো না। পার্থক্য ছিল শুধু এটাই যে অরুণ ভাবছিলো মনীষার কথা আর মনীষা ভাবছিলো রবির কথা। কি কথা ?

রবি কিছুক্ষণ আগে যে কথা গুলো প্রতিশ্রুতির আকারে মনীষা কে বললো, সেই কথা। রবি কখনো মনীষা ও পরীকে ছেড়ে যাবে না। সবসময়ে তাদের পাশে থাকবে , তা মনীষা রবিকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করুক বা না করুক। এইসব কথা শুনলে কোন মেয়েরই না মন গলে , যদি সে দেখে কেউ নিঃস্বার্থ ভাবে তার পাশে রয়েছে , তাও আবার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে। বদলে কি মনীষার সত্যি কিছু দেওয়ার নেই ? মনীষা সেটা নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করলো মনে মনে। 

ভাবতে ভাবতে হঠাৎ সে অনুভব করলো রবির হাতটা তার পেটের উপর এসে পড়েছে। আসলে রবি আজ অকাতরে ঘুমোচ্ছিলো। তাই সে তাদের মাঝখানের সেই ডিসটেন্সটা মেইনটেইন করতে পারেনি। বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে ছড়িয়ে শুতে গিয়ে সে অজান্তেই মনীষার খুব কাছাকাছি চলে এসছিল।

রবি ঘুমের মধ্যে মনীষাকে পাশবালিশ ভেবে জড়িয়ে ধরেছিলো। মনীষার শরীর অবশ্য বালিশের থেকেও কোমল এবং আরামদায়ক , তাই রবি সেই মানুষরূপী কোলবালিশ-টি কে আরো শক্ত করে জাপটে ধরেছিলো। মনীষা এখন রবির হস্তবন্ধনে আবদ্ধ ছিল। কিন্তু আজকে মনীষা রবিকে আর ভুল বোঝেনি। সে বুঝেছে যে রবি ঘুমের ঘোরে তাকে কোলবালিশ ভেবে জড়িয়ে ধরেছে।

দয়ালু মনীষা রবিকে জাগিয়ে দিয়ে ওর ঘুম নষ্ট করতে চাইছিলো না। তাই সে রবির বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলো না। উল্টে নিজের কমফোর্টের জন্য মনীষা নিজের হাতটা রবির পিঠে আলতো করে রেখে দিলো। দেখে মনে হচ্ছিলো স্বামী স্ত্রী একে অপরকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি মনীষারও ঘুম পেয়ে গেলো। সেও ঘুমিয়ে পড়লো রবির হস্তযুগলের ঘেরাটোপে। রবির শরীরের তাপের সান্নিধ্যেই হয়তো মনীষার ঘুম তাড়াতাড়ি চলে এলো। মনীষা যে বহুদিন অরুণের আদরের স্পর্শ পায়নি। আর অরুণ ছাড়া ওর জীবনে অন্য কোনো পুরুষ ছিলোনা যে ওর শরীরে ভালোবাসাময় উত্তাপের সঞ্চার ঘটাবে, ওকে আরাম দেওয়ার জন্য।

পাশের ঘরে অরুণেরও চোখ লেগে এসছিল। সে বইটা পাশের টেবিলে রেখে দিয়ে মাথাটা বালিশে দিলো। ভাবলো কালকে সে মনীষার সাথে কথা বলবে। তাকে আবার ফিরিয়ে আনবে নিজের কাছে। কিন্তু এখন যে অরুণের অজান্তেই তার মনীষা পাশের ঘরে রবিকে জড়িয়ে ধরে শুয়েছিল। সে কি আর ফিরে আসবে ?

পরের দিন সকাল হলো। রবি ও মনীষার একসাথে ঘুম ভাঙলো। ঘুম ভেঙে তারা একে অপরকে নিজেদের অতিব নিকটবস্থায় পেলো। কিছুক্ষণ তারা ওইভাবেই রইলো , হয়তো ঘোর কাটেনি ততক্ষণে। তারপর তারা একে অপরের আঁটোসাঁটো বন্ধন থেকে নিজেদের মুক্ত করলো। রাতে ঘুমের মধ্যে তারা একে অপরকে এমনভাবে জাপটে ধরেছিলো যেন একে অপরকে ছাড়া বাঁচা দায় হয়ে পড়েছে। রবির জীবনেও কেউ নেই , আর মনীষাও জানে খুব শীঘ্রই সে নিজের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটা-কে হারাতে চলেছে। সে এখন মানসিকভাবে প্রস্তুত এই ভবিতব্য কে মেনে নিতে।

আজকে অরুণ বরং কিছুটা আগে উঠে পড়েছিল , বা বলা ভালো যে আজ রবি ও মনীষার উঠতে দেরী হয়েছিল। অনেকদিন পর ওদের আজ ভালো ঘুম হয়েছিল একে অপরের সংস্পর্শে এসে। অরুণ ঘর থেকে বেড়িয়ে দেখে মনীষার ঘরের দরজা এখনো বন্ধ। সে খানিকটা অবাকই হয়। মনীষার তো উঠতে কখনো এতো দেরী হয়না। রবিও বা কি করছে এতোক্ষণ ধরে ? ওরও কি এখনো ঘুম ভাঙেনি ? ব্যাপারটা ভারী অদ্ভুত তো ! অরুণ মনে মনে ভাবলো। সে তখন কি করবে ভেবে না পেয়ে ডাইনিং রুমের সোফায় বসে সকাল সকাল টিভি চালিয়ে দেখতে লাগলো।

কিছুক্ষণ পর মনীষা নিজের ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো। দেখলো অরুণ উঠে গ্যাছে , এবং টিভি দেখছে।

- "ওহঃ , তুমি উঠে গ্যাছো। সরি আজকে একটু দেরী হয়েগেলো উঠতে। দাঁড়াও তোমার খাবার করে আনছি।"

- "নাঃ নাঃ মনীষা, ঠিক আছে। তোমাকে অতো তাড়াহুড়ো করতে হবে না। তুমি নিশ্চিন্তে আগে ফ্রেশ হয়ে নাও , তারপর ধীরে সুস্থে খাবার বানিও। আচ্ছা রবি কোথায় ? ও এখনো ওঠেনি ?"

- "উঠেছে , ঘরেই আছে। "

অরুণের কথা না শুনে মনীষা আগে রান্নাঘরে ঢুকলো খাবার তৈরী করতে। তার এখন ফ্রেশ হওয়ার সময় নেই। অরুণ যাই বলুক না কেন , সে জানে সে আজকে দেরী করে ঘুম থেকে উঠেছে। তাই তাকে আগে রান্নাঘরে ব্রেকফাস্ট বানানোর কাজটা সেড়ে ফেলতে হবে। তাই নিজের দিকে নজর দেওয়ার টাইম নেই।

মনীষা কেন তার কথা না শুনে ওয়াশরুমে না গিয়ে সোজা রান্নাঘরে চলে গেলো সেটা নিয়ে অরুণ একদমই বিচলিত ছিলোনা। এরকম ছোটখাটো অবাধ্যতা সংসারের প্রয়োজনে আকছার মনীষা করে থাকে। সংসারটা তার , সে অরুণের চেয়ে ভালো বোঝে পরিস্থিতি অনুযায়ী সংসারে কোন কাজটা আগে প্রাধান্য দিয়ে করতে হবে আর কোনটা পরে।

অরুণের মনে তখন হাজার প্রশ্ন ভীড় করছিলো রবি ও মনীষাকে নিয়ে। নাহঃ , সে সন্দেহ করছিলোনা ওদের। সে তার স্ত্রী ও বন্ধুর উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখে। তবুও মনের ঈশান কোণে কিছু প্রশ্নের উদয় হচ্ছিলো। দুজনেরই আজকে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হলো ? যদি তা না হয় , রবি যদি আগেই উঠে থাকে তাহলে ওই বা এতোক্ষণ বেড়োচ্ছিলোনা কেন ঘর থেকে ? 

ভাবতে ভাবতে অরুণ দেখলো রবিও ঘর থেকে বেড়িয়ে এসছে। অরুণকে দেখা মাত্রই রবি ওকে "গুড মর্নিং" বললো। অরুণও প্রত্যুত্তরে একই শুভেচ্ছা জানালো। তারপর রবি অরুণের সামনে দিয়েই রান্নাঘরে প্রবেশ করলো যেখানে মনীষা বাড়ির সকলের জন্য খাবার তৈরী করছিলো। সে মনীষাকে রান্নাঘরে হেল্প করতে লাগলো। মাঝে মাঝে দুজনের মধ্যে স্বাভাবিক দু-চারটে কথা হচ্ছিলো।

কিন্তু এই স্বাভাবিক জিনিসটা অরুণের দেখতে ভালো লাগছিলো না। অরুণের হালকা হালকা জেলাস ফীল হতে শুরু করছিলো রবি কে নিয়ে। আসলে সুস্থ থাকতেও সে কখনোই মনীষাকে সংসারের কাজে হেল্প করেনি , যা আজকাল-কার দিনে যেকোনো কোঅপারেটিভ হাসব্যান্ড করে থাকে। মনীষা যে ছোট ছোট সাহায্য গুলো অরুণের কাছ থেকে কোনোদিন পায়নি , যেটা নিয়ে মনীষা কখনো অভিযোগ করেনি কিন্তু এক্সপেক্ট করতো , সে সব আজ রবি ওকে প্রোভাইড করছিলো। যেটা রবির প্রতি অরুণের মনে জেলাসি এবং মনীষার মনে সম্মান বাড়িয়ে দিচ্ছিলো।

অরুণের এসব দেখে নিজেকে খুব হেল্পলেস মনে হচ্ছিলো। এরকম নিরামিষ সহযোগিতা দেখে সে কিছু বলতেও পারছিলোনা , আবার এসব দেখে হজমও করতে পাচ্ছিলো না। রবির মনে মনীষা কে নিয়ে তখন কোনো পাপ বা দুরভিসন্ধি ছিলোনা , তাই অরুণের সামনেই সে খুব সহজভাবে মনীষার সাথে মেশার চেষ্টা করছিলো। মনীষাও তালে তাল দিয়ে রবির সাথে ভালোমতো আচরণ করছিলো। তাই মাঝে মাঝে হাসি খুনসুটি হচ্ছিলো ওদের মধ্যে , যেটা অরুণের চোখে অসহ্য হয়ে উঠছিলো।

কিন্তু এই তো কয়েকদিন আগে সে নিজেই দাঁড়িয়ে থেকে দুজনের চার হাত এক করেছিল। সে তো এটাই দেখতে চেয়েছিলো যে মনীষা রবির সাথে স্বাভাবিক হয়ে মেলা মেশা করুক , কারণ তার মৃত্যুর পর মনীষাকে তো রবির সাথেই থাকতে হবে। তাহলে আজ কেন তার এতো কষ্ট হচ্ছে ? এর উত্তর হলো , এক্সপেকটেশন। যখন রবির মুখ থেকে অরুণ শুনলো মনীষা রবিকে দৃপ্ত ও আপোষহীন ভাবে বহিস্কার করেছে শুধু মাত্র তার প্রথম স্বামী অরুণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার জন্য , তখন যেন অরুণ নতুন করে আবার মনীষার প্রেমে পড়ে গেলো। সে মনীষাকে নিয়ে নতুন করে আশা বাঁধতে শুরু করলো।

যে অরুণ জীবনের সব মায়া ত্যাগ করে উঠেছিল , সেই অরুণই তখন "আনন্দ সিনেমার রাজেশ খান্নার" মতো নিজের জীবনের শেষ কয়েকটা মুহূর্ত প্রাণবন্তভাবে বাঁচতে চাইলো তার মনীষার সাথে। বলতে চাইলো "জিন্দেগি বড়ি হোনি চাহিয়ে বাবুমশাই , লাম্বি নেহি " যার বঙ্গার্থ জীবন আকাশের মতো সীমাহীন বড়ো হওয়া উচিত, সমুদ্রের মতো দীর্ঘ ও গভীর নাহলেও চলবে।

সে নিজের উপর গর্ববোধ করতে শুরু করলো , মনীষার মতো সুন্দরী মেয়ের মনের একাধিপত্য স্থাপনের। রবি তার চেয়ে দেখতে তুলনামূলকভাবে সুন্দর হতে পারে , ধনী হতে পারে , হয়তো সবদিক দিয়ে অরুণের চেয়ে হাজার গুন সেরা ও সফল মানুষ হতে পারে , কিন্তু অরুণের ভালোবাসার সামনে সবকিছু ফেল।

অরুণের এই গর্বই যে কখন অহংকারের রূপ নিয়েছিল সেটা সে ধরতে পারেনি। সে ধরেই নিয়েছিল যে, যাই হয়ে যাক , সে যাই করুক না কেন মনীষা তার ব্যাতিত অন্য কোনো পুরুষকে মন দেওয়া তো দূরের কথা , চোখ তুলে পর্যন্ত তাকাবে না। কিন্তু এখন অনেক দেরী হয়ে যাইনি তো ?  ঘরের বাইরে থেকে অরুণ ও রবির মধ্যেকার সব কথা মনীষার শুনে নেওয়া , রবি ও মনীষার মধ্যে সব ভুল বোঝাবুঝি শেষ হয়ে যাওয়া , মনীষার মনে রবির জন্য সম্মান হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া, এক নতুন সম্পর্ক বা সমীকরণের জন্ম দিলো না তো ??

উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাবো পরের পর্বে। ......
Like Reply
#79
Ei muhurte ei golpo tar update er jonno sab theke besi wait kori
[+] 1 user Likes Deedandwork's post
Like Reply
#80
Heart 
Protiti porber por ai je akta issa toiri hoy..... J er por ki holo..... Aitai to chai.... R aitai akta valo lekha gun....... Keep going.... yourock


Tobe akta mon theke onurodh didi..... Joto porboi hok na kano... Seta apnar baktigoto bapar...... But please complete korben.
[+] 1 user Likes rahul32155's post
Like Reply




Users browsing this thread: 6 Guest(s)