19-12-2022, 07:11 PM
পর্ব ৬
রবি কিন্তু মনীষার ঘরে ঢুকেছিলো ওর সাথে রাত্রিযাপন করতে নয়। বালিশ টা নিতে। আগের রাতের মতো সে আজকেও ঠিক করেছিল ডাইনিং রুমের সোফায় শোবে। তাই সে নিজের বালিশ নিতে ঘরে ঢুকেছিলো। রবিকে চুপচাপ বালিশ নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যেতে দেখে মনীষা পিছন থেকে ডেকে রবিকে আটকালো, "দাঁড়াও রবি , কোথায় যাচ্ছ ?"
- "আমি কাল যা করেছি , অন্যায় করেছি। তাই কালকের মতো আজকেও আমি ডাইনিং এই শোবো। "
- "দেখো তুমি কোথায় শোবে সেটা তোমার মর্জি , কিন্তু যাওয়ার আগে আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাও। তাছাড়া অরুণ হয়তো এখনো জেগে আছে। আমি চাইনা ওর সামনে কোনোরকমের কোনো কমপ্লিকেটেড সিচুয়েশন অ্যারাইভ হোক। তাই এখানে এসে বসো। "
মনীষার কথা মতো রবি বালিশ নিয়ে এসে বিছানায় বসলো। "বলো কি বলবে ?", রবি জিজ্ঞেস করলো মনীষাকে।
"কাল তুমি অরুণের কথায় ওসব করেছিলে না ?", সোজাসুজি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো মনীষা রবির দিকে। রবি তো হতবাক ! মনীষা কি করে জানলো ! সে তাই জিজ্ঞেস করে ফেললো , "তুমি কি করে জানলে ?"
অর্থাৎ রবি না চাইতেও একপ্রকার স্বীকার করে নিলো মনীষার সামনে , যে সে অরুণের কথায় এসব করেছিল কাল।
"সেটা বড়ো প্রশ্ন নয় রবি। আসল কথাটি হলো , আমি যা বলছি সেটা সত্যি কিনা ? কাল তুমি অরুণের কথায় আমাকে স্পর্শ করেছিলে কিনা ? সত্যি করে বলো ....", মনীষা বেশ দৃপ্ত কণ্ঠে রবির কাছ থেকে কৈফিয়ত চাইলো।
- "হুমমঃ। ..... কিন্তু তুমি প্লিস অরুণকে ভুল বুঝোনা। ওর দিকটাও ভেবে দেখো। "
- "আমি তো ওর দিকটাই ভেবে দেখতে চাইছি রবি। আমি জানতে চাইছি অরুণ তোমাকে কেন এরকম কাজ করতে বললো ? ও তো এরকম ছিলোনা ! ভীষণ ভালোবাসতো আমায় , এখনো বাসে , তাহলে ও তোমাকে দিয়ে এসব কেন করাতে চাইলো ?"
- "আসলে অরুণ তোমাকে আমার সাথে সুখে দেখতে চাইছিলো। ও আমাদের দেখে বুঝতে পেরেছিলো যে আমরা স্বামী স্ত্রী হিসেবে থাকলেও আমাদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মতো কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। সেটা নিয়েই ও কনসার্ন ছিল। অরুণ জানে ও আর বেশিদিন বাঁচবে না। তাই ও আমাদের পরিণতির সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলো। ও দাঁড়িয়ে থেকে দেখতে চেয়েছিলো তুমি আমার সাথে একটা নতুন জীবনে প্রবেশ করছো। আমাকে তুমি তোমার স্বামী হিসেবে সম্পূর্ণভাবে মেনে নিয়েছো। "
- "আমাদের এই চার দেয়ালের ঘরের মধ্যে কি হবে বা হতে পারে সেটা অরুণ বাইরে থেকে জানবে কি করে ? ও কিভাবে সাক্ষী থাকতে চায় ?"
- "শারীরিকভাবে হয়তো সে দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের মিলন দেখতে পাবে না , আর দেখা উচিতও নয়, সেটা অরুণ জানে। তাই ও আজ সকালে আমাকে নিজের ঘরে নিয়ে গেছিলো এটা জানার জন্য যে কাল রাতে আমার আর তোমার মধ্যে কিছু হয়েছে কিনা ? অরুণ আমাকে বিশ্বাস করে , তাই আমি যা বলবো সেটাই ও সত্য প্রবচন বলে মেনে নেবে। এইভাবেই ওর সাক্ষী থাকা হবে আমাদের মিলনের। সশরীরে সামনে থেকে না দেখলেও , একই বাড়িতে উপস্থিত থেকে সেটা অনুভব তো করতে পারবে , বিশেষ করে আমার মুখ থেকে শুনে। সেরকমই অরুণ ভেবে রেখেছিলো। "
- "তো তুমি কি বললে ?"
- "যা সত্যি সেটাই বলেছি, যে তুমি আমাকে নিজের ধারের কাছেও ঘেঁষতে দাওনি। তারপর অরুণকে আমি ভালোমতো শুনিয়েও দিয়েছি , সে যাতে এরকম উল্টোপাল্টা ধারণা নিজের মনের মধ্যে পোষণ করে না রাখে। মনীষা শুধু অরুণের ছিল , আর অরুণেরই থাকবে। "
- "তারপর এসব শুনে ও কি বললো ?"
- "সেরকম কিছু না। "
- "ও কি তোমাকে আবার একটা এরকম অ্যাটেম্প্ট নিতে পরামর্শ দিলো ?"
- "নাহঃ। ওকে যেভাবে আমি শাষিয়ে দিয়েছি , আর ও চাইলেও এসব কথা বলার সাহস পাবে না। চিন্তা নেই তোমার। "
- "হয়তো চাপে পড়ে নিজের কথা সে ফিরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু মনে মনে হয়তো সে এটাই চায় , এখনো। "
- "ঠিক বলতে পারবো না সেটা। আমি ওর যতই ভালো বন্ধু হই না কেন , তুমি ওর স্ত্রী , তুমি ওর সাথে বেশ কয়েকটা বছর ধরে সংসার করছো , ইউ নো হিম বেটার দ্যান মি।"
- "হুমম। .... আচ্ছা , কালকে কি শুধু বন্ধুর কথা রাখতেই তুমি এসব করেছিলে ? তোমার নিজেরও তো ইচ্ছা করেছিল নিশ্চই ? "
- "মিথ্যা বলবো না। সত্যি বলতে , হ্যাঁ আমারও ইচ্ছা করেছিল তোমাকে ছুঁতে। অরুণের কথায় সাহসটা একটু বেড়ে গেছিলো আর কি। আসলে আমিও তো একজন পুরুষ মানুষ। আমারও তো কিছু শারীরিক চাহিদা থাকতে পারে এই বয়সে। সেই টানেই হয়তো এতো বড়ো সাহস দেখিয়েছিলাম। কিন্তু আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি , এরকম ভুল আর দ্বিতীয়বার হবেনা। আমি তোমাকে ততদিন ছোঁবনা যতদিন না তুমি আমাকে অনুমতি দেবে। যদি তুমি সারাজীবন আমার থেকে দূরে সরে থাকো , তাও আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না। আমি যে আমার প্রিয় বন্ধুকে কথা দিয়েছি , তার অবর্তমানে তার পরিবার কে আমি আগলে রাখবো। "
মনীষা চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতা বজায় ছিল। মনীষার মুখ বন্ধ দেখে রবি বুঝলো যে আজকের মতো মনীষার সকল কৌতূহল , জিজ্ঞাসা ও কথা ফুরিয়েছে। তাই সে আবার নিজের বালিশ নিয়ে ঘর থেকে বেড়োতে যাচ্ছিলো। অমনিই মনীষা আবার রবিকে পিছন থেকে ডাকলো , "দাঁড়াও রবি। তোমাকে আজকে কষ্ট করে বাইরে গিয়ে সোফায় শুতে হবে না। তুমি এখানেই ঘুমো , মাঝখানে ডিসটেন্স রেখে , যেমনটা এতোদিন করতে।"
মনীষার কথা শুনে রবির মনে হাজার মাইল বেগে এক দমকা হাওয়া বয়ে গেলো। সে প্রচন্ড খুশি হলো এটা ভেবে যে সে আবার মনীষার হারানো বিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। এটা সকলে পারেনা। সবাই বলে বিশ্বাস হলো কাঁচের মতো , একবার ভাঙলে সেটা জোড়া দেওয়া যায়না। আজ ব্যতিক্রম হয়ে দেখালো আমাদের রবি। কারণ সে তো সত্যিই অপরাধী ছিলোনা। সেদিক দিয়ে বলতে গেলে অপরাধী কেউই ছিলোনা , অরুণও নয়।
রবি কিন্তু মনীষার ঘরে ঢুকেছিলো ওর সাথে রাত্রিযাপন করতে নয়। বালিশ টা নিতে। আগের রাতের মতো সে আজকেও ঠিক করেছিল ডাইনিং রুমের সোফায় শোবে। তাই সে নিজের বালিশ নিতে ঘরে ঢুকেছিলো। রবিকে চুপচাপ বালিশ নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যেতে দেখে মনীষা পিছন থেকে ডেকে রবিকে আটকালো, "দাঁড়াও রবি , কোথায় যাচ্ছ ?"
- "আমি কাল যা করেছি , অন্যায় করেছি। তাই কালকের মতো আজকেও আমি ডাইনিং এই শোবো। "
- "দেখো তুমি কোথায় শোবে সেটা তোমার মর্জি , কিন্তু যাওয়ার আগে আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাও। তাছাড়া অরুণ হয়তো এখনো জেগে আছে। আমি চাইনা ওর সামনে কোনোরকমের কোনো কমপ্লিকেটেড সিচুয়েশন অ্যারাইভ হোক। তাই এখানে এসে বসো। "
মনীষার কথা মতো রবি বালিশ নিয়ে এসে বিছানায় বসলো। "বলো কি বলবে ?", রবি জিজ্ঞেস করলো মনীষাকে।
"কাল তুমি অরুণের কথায় ওসব করেছিলে না ?", সোজাসুজি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো মনীষা রবির দিকে। রবি তো হতবাক ! মনীষা কি করে জানলো ! সে তাই জিজ্ঞেস করে ফেললো , "তুমি কি করে জানলে ?"
অর্থাৎ রবি না চাইতেও একপ্রকার স্বীকার করে নিলো মনীষার সামনে , যে সে অরুণের কথায় এসব করেছিল কাল।
"সেটা বড়ো প্রশ্ন নয় রবি। আসল কথাটি হলো , আমি যা বলছি সেটা সত্যি কিনা ? কাল তুমি অরুণের কথায় আমাকে স্পর্শ করেছিলে কিনা ? সত্যি করে বলো ....", মনীষা বেশ দৃপ্ত কণ্ঠে রবির কাছ থেকে কৈফিয়ত চাইলো।
- "হুমমঃ। ..... কিন্তু তুমি প্লিস অরুণকে ভুল বুঝোনা। ওর দিকটাও ভেবে দেখো। "
- "আমি তো ওর দিকটাই ভেবে দেখতে চাইছি রবি। আমি জানতে চাইছি অরুণ তোমাকে কেন এরকম কাজ করতে বললো ? ও তো এরকম ছিলোনা ! ভীষণ ভালোবাসতো আমায় , এখনো বাসে , তাহলে ও তোমাকে দিয়ে এসব কেন করাতে চাইলো ?"
- "আসলে অরুণ তোমাকে আমার সাথে সুখে দেখতে চাইছিলো। ও আমাদের দেখে বুঝতে পেরেছিলো যে আমরা স্বামী স্ত্রী হিসেবে থাকলেও আমাদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মতো কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। সেটা নিয়েই ও কনসার্ন ছিল। অরুণ জানে ও আর বেশিদিন বাঁচবে না। তাই ও আমাদের পরিণতির সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলো। ও দাঁড়িয়ে থেকে দেখতে চেয়েছিলো তুমি আমার সাথে একটা নতুন জীবনে প্রবেশ করছো। আমাকে তুমি তোমার স্বামী হিসেবে সম্পূর্ণভাবে মেনে নিয়েছো। "
- "আমাদের এই চার দেয়ালের ঘরের মধ্যে কি হবে বা হতে পারে সেটা অরুণ বাইরে থেকে জানবে কি করে ? ও কিভাবে সাক্ষী থাকতে চায় ?"
- "শারীরিকভাবে হয়তো সে দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের মিলন দেখতে পাবে না , আর দেখা উচিতও নয়, সেটা অরুণ জানে। তাই ও আজ সকালে আমাকে নিজের ঘরে নিয়ে গেছিলো এটা জানার জন্য যে কাল রাতে আমার আর তোমার মধ্যে কিছু হয়েছে কিনা ? অরুণ আমাকে বিশ্বাস করে , তাই আমি যা বলবো সেটাই ও সত্য প্রবচন বলে মেনে নেবে। এইভাবেই ওর সাক্ষী থাকা হবে আমাদের মিলনের। সশরীরে সামনে থেকে না দেখলেও , একই বাড়িতে উপস্থিত থেকে সেটা অনুভব তো করতে পারবে , বিশেষ করে আমার মুখ থেকে শুনে। সেরকমই অরুণ ভেবে রেখেছিলো। "
- "তো তুমি কি বললে ?"
- "যা সত্যি সেটাই বলেছি, যে তুমি আমাকে নিজের ধারের কাছেও ঘেঁষতে দাওনি। তারপর অরুণকে আমি ভালোমতো শুনিয়েও দিয়েছি , সে যাতে এরকম উল্টোপাল্টা ধারণা নিজের মনের মধ্যে পোষণ করে না রাখে। মনীষা শুধু অরুণের ছিল , আর অরুণেরই থাকবে। "
- "তারপর এসব শুনে ও কি বললো ?"
- "সেরকম কিছু না। "
- "ও কি তোমাকে আবার একটা এরকম অ্যাটেম্প্ট নিতে পরামর্শ দিলো ?"
- "নাহঃ। ওকে যেভাবে আমি শাষিয়ে দিয়েছি , আর ও চাইলেও এসব কথা বলার সাহস পাবে না। চিন্তা নেই তোমার। "
- "হয়তো চাপে পড়ে নিজের কথা সে ফিরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু মনে মনে হয়তো সে এটাই চায় , এখনো। "
- "ঠিক বলতে পারবো না সেটা। আমি ওর যতই ভালো বন্ধু হই না কেন , তুমি ওর স্ত্রী , তুমি ওর সাথে বেশ কয়েকটা বছর ধরে সংসার করছো , ইউ নো হিম বেটার দ্যান মি।"
- "হুমম। .... আচ্ছা , কালকে কি শুধু বন্ধুর কথা রাখতেই তুমি এসব করেছিলে ? তোমার নিজেরও তো ইচ্ছা করেছিল নিশ্চই ? "
- "মিথ্যা বলবো না। সত্যি বলতে , হ্যাঁ আমারও ইচ্ছা করেছিল তোমাকে ছুঁতে। অরুণের কথায় সাহসটা একটু বেড়ে গেছিলো আর কি। আসলে আমিও তো একজন পুরুষ মানুষ। আমারও তো কিছু শারীরিক চাহিদা থাকতে পারে এই বয়সে। সেই টানেই হয়তো এতো বড়ো সাহস দেখিয়েছিলাম। কিন্তু আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি , এরকম ভুল আর দ্বিতীয়বার হবেনা। আমি তোমাকে ততদিন ছোঁবনা যতদিন না তুমি আমাকে অনুমতি দেবে। যদি তুমি সারাজীবন আমার থেকে দূরে সরে থাকো , তাও আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না। আমি যে আমার প্রিয় বন্ধুকে কথা দিয়েছি , তার অবর্তমানে তার পরিবার কে আমি আগলে রাখবো। "
মনীষা চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতা বজায় ছিল। মনীষার মুখ বন্ধ দেখে রবি বুঝলো যে আজকের মতো মনীষার সকল কৌতূহল , জিজ্ঞাসা ও কথা ফুরিয়েছে। তাই সে আবার নিজের বালিশ নিয়ে ঘর থেকে বেড়োতে যাচ্ছিলো। অমনিই মনীষা আবার রবিকে পিছন থেকে ডাকলো , "দাঁড়াও রবি। তোমাকে আজকে কষ্ট করে বাইরে গিয়ে সোফায় শুতে হবে না। তুমি এখানেই ঘুমো , মাঝখানে ডিসটেন্স রেখে , যেমনটা এতোদিন করতে।"
মনীষার কথা শুনে রবির মনে হাজার মাইল বেগে এক দমকা হাওয়া বয়ে গেলো। সে প্রচন্ড খুশি হলো এটা ভেবে যে সে আবার মনীষার হারানো বিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। এটা সকলে পারেনা। সবাই বলে বিশ্বাস হলো কাঁচের মতো , একবার ভাঙলে সেটা জোড়া দেওয়া যায়না। আজ ব্যতিক্রম হয়ে দেখালো আমাদের রবি। কারণ সে তো সত্যিই অপরাধী ছিলোনা। সেদিক দিয়ে বলতে গেলে অপরাধী কেউই ছিলোনা , অরুণও নয়।