Thread Rating:
  • 56 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL - জবানবন্দি

অনেক গল্পের ভীড়ে হয়তো গল্পের নতুন পর্বটি অনেকেরই পড়া হয়ে উঠেনি, তারা ব্যস্ত জীবনের কিঞ্চিৎ অবসরে পরে নিতে পারেন জবানবন্দির নতুন পর্ব।
সেই সাথে অতিথি থ্রেডেও গতকালই এসেছে টাটকা নতুন পর্ব।




এই গল্পকে সামনের দিকে সচলের জন্য নতুন আপডেটের কাজ শুরু হয়েছে, খুব শীঘ্রই নতুন পর্ব সহ দেখা হবে।
[+] 4 users Like nextpage's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
boro norom gobhir lekha. pore mon komol hoye porlo
[+] 2 users Like dinanath's post
Like Reply
(01-12-2022, 10:52 AM)dinanath Wrote: boro norom gobhir lekha. pore mon komol hoye porlo

ধন্যবাদ... Heart
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply

কি হয়েছে তোর? ভণিতা না করে সোজা উত্তর দিবি নইলে এই কাটা চামচ টা দেখছিস তো ওটা দিয়ে কিন্তু....


(মুখে খাবার থাকায় কিছু বলতে পারছিলাম না তাই হাত দিয়েই থামার ইঙ্গিত দিলাম, মুখের খাবার টা গিলে নিয়ে) আমি কি না করেছি নাকি যে তোকে কিছু বলবো না।





ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালে অন্য বিষয়ে মনোযোগ দেয়া বড্ড কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে। তবে পরবর্তী আপডেট তৈরী, আগামীকাল আসছে গল্পের নতুন পর্ব। সঙ্গেই থাকুন।
[+] 3 users Like nextpage's post
Like Reply
পর্ব- সাত





কথা আমার হাত ধরে টানতে টানতে বাসার দিকে নিয়ে যেতে লাগলো। আমি নিজেকে আটকাতে জোর খাটানোর চেষ্টা করলাম। আমার শরীর স্বাস্থ্য বেশি থাকার পরও কথার অমানুষিক শক্তির সাথে পেরে উঠা মুশকিল হয়ে পড়েছিল৷ তাও কোনমতে ওকে দাড় করালাম

কি হলো তুই এমন করছিস কেন? ওখানে কি আলাপ করলি ওদের সাথে? আর দেবযানীই বা ওটা কার সাথে চলে গেল?

(আমার প্রশ্ন শোনে কথা আর বিকাশ একে অন্যের দিকে বারবার তাকাচ্ছিলো আর শুকনো ঢোক গিলছিল, বিকাশ কিছু বলতে চেয়েছিল ওকে থামিয়ে দিয়ে কথা বলে উঠে)
চিন্তার কোন কারণ নেই কিঞ্জল বাবু! ও ছেলেটা তো দেবযানীর কাজিন। ওকে নিতে বাইক নিয়ে এসেছিল তাই ওর সাথেই চলে গেছে।

(আমার কেন জানি মনে হলো ব্যাপারটা এই পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নেই আরও কিছু আছে এর পেছনে) 
তাহলে তোরা মুখ ওমন করে রেখেছিস কেন? আর আমাকে বাসায় যাবার জন্যই বা তাড়া দিচ্ছিস কেন? সত্যি করে বল ঘটনা টা কি? 

(পাশ থেকে বিকাশ আমতা আমতা করে বলে উঠলো)
আরে বেটা কিসের আবার ঘটনা থাকবে? শালা তুই প্রেমে পড়ে দেখি পাগল হয়ে গেছিস, এত বকবক না করে চল বাসায় যাই। খিদে পেয়েছে খুব।

আমার মনের ভেতরের খেদ টা রয়েই গেছে কিন্তু ওদের স্বাভাবিক হতে দেখে আমার আগের মত দেবযানীকে হারিয়ে ফেলার ভয় টা আর তেমন করছে না। তখন তো ওকে চলে যেতে দেখে আর ওদের দুটির বিমর্ষ মুখ আমাকে প্রায় মেরেই দিচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো কেউ হয়তো আমার শরীর থেকে মূল্যবান কিছু খুবলে নিয়ে চলে গেছে। অদৃশ্য এক অসহ্য যন্ত্রণায় ভেতর থেকে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছিলাম। ওদের সাথে পা চালিয়ে বাসায় চলে আসলাম, আমি জামা কাপড় বদলে স্নান করার জন্য কল পাড়ের দিকে চলে গেলাম। যাওয়ার সময় দেখলাম কথা আর বিকাশ রান্নাঘরে মায়ের সাথে কিছু একটা নিয়ে কথা বলছে। শরীর ভিজিয়ে সাবান টা হাতে নিয়ে গায়ে মাখতে মাখতে রান্নাঘরের দিকে এলাম ওরা কি বলে শোনার জন্য? কি জানি আমার নামে কি না কি বলছে কে জানে। রান্নাঘরের কাছে পৌঁছাতেই বিকাশের গলা পেলাম
মামী তোমার রান্না কতখানি বাকি? 

এইতো শেষ এখন ভাতের ফেন টা ঝড়িয়ে নিয়েই তোদের খেতে দেব।
(উঁকি দিয়ে দেখি কথা বটি টা নিয়ে তাতে কি যেন কুটি কুটি করে কাটছে, মা ওর দিকে তাকিয়ে একটু ধমকে) কিরে তুই আবার বটি টা ধরলি কেন? দেখ হাত টা কাটতে পারিস কিনা। এটা যেভাবে ছিল সেভাবে রেখে সোজা ঘরে যা বলছি।

(ন্যাকামি করে বলে উঠলো)
আন্টি আমি তো এখন কাটাকাটি করতে পারি, দেখো তুমি কি সুন্দর শাক কেটে ফেলেছি।

(মা নিচু টুল টা থেকে উঠে এসে কথার সামনে থেকে বটি টা নিয়ে নিলো) হুম দেখতেই পাচ্ছি খুব কাজ শিখেছিস। তা সেটা এখন না করে শশুর বাড়ি গিয়ে করিস। যা তোরা দুটো এখন ঘরে যা।

(আমি রান্না ঘরে উঁকি দিয়ে বলে উঠলাম) 
ঠিক বলেছো মা এটাকে বিয়ে দিয়ে দাও। বেশি পাকনামি করে, যারা পাকনামি করে ওদের নাকি বুড়ার সাথে বিয়ে হয়।

(আমার গলাটা শোনেই মা আমার দিকে তাকিয়েই একটা ঝাড়ি দিলো) 
তোকে এখানে কে কথা বলতে বলেছে, যা স্নান করতে যা সারা গায়ে সাবান মেখে সাদা বক সেজে এখানে এসে ফোড়ন কাটছে।(মায়ের কথার ফাঁকেই কথা আমার দিকে তাকিয়ে সবগুলো দাঁত বের করে অদ্ভুত রকমের ভঙ্গি করে ভেংচি কাটতে লাগলো, মায়ের বকা খেয়ে আমি চুপচাপ কল পাড়ে চলে গেলাম ঠিকি কিন্তু ঐ ভেংচি কাটার সুদ তো আমি নেবই সেটা ঠিক করে রাখলাম)


গত দুদিন ধরে খেয়াল করছি দেবযানীর বাকি বান্ধবীরা দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়া আসা করলেও সাথে দেবযানী নেই। প্রথমে মনে হলো অসুখ-বিসুখ কিছু হতে পারে নইলে যাবে টা কোথায়! একদুই দিন পর হয়তো আবার কলেজে যাবে তখন ঠিক দেখতে পাবো। আর এবার দেখা হলে একটা সুযোগ বের করতে হবে ওর সাথে কথা বলার অজুহাত খুঁজতে। আর সেই ফাঁকে ওকে নিজের মনের গোপন কথাটা জানাতে হবে। ইশ! তখন ওর রিয়্যাকশন টা কি হবে ও কি রাজি হবে নাকি রিফিউজ করে দিবে কে জানে৷ আমার টেনশন একটু একটু করে বাড়তে লাগলো। বুকের ভেতরে কেউ যেন হাঁপর টানছে এমন গতিতে হৃদপিণ্ড টা চলাচল করছে। শরীরের ভেতরে অদ্ভুত এক অস্থিরতা কাজ করছে, এখনই এই অবস্থা আর দেবযানী যখন সামনে থাকবে তখন কি হবে সেটা ভেবেই পুরো গা শিউরে উঠছে বারবার। না আর কিছু ভাবতে চাইছি না এখন যা হবে সেটা ভালো কিছুই হবে সেটাই ধরে নিয়ে মানসিক সুখ পাবার অভিনব চেষ্টা চালিয়ে যাবার চেষ্টা করছি মাত্র।

আজ ওর কলেজের এখানে আবার আসলাম, আসতে চাই নি কারণ বিকাশ বা কথা বিষয়টা জানলে রাগ করতে পারে। কিন্তু গত পাঁচ দিন ধরে দেবযানীর কোন খবর নেই, আগেরদিন ওর টিউশনির কাছে গিয়েও ওর কোন পাত্তা পেলাম না। তখন মাথায় না না ধরনের চিন্তা খেলা করতে লাগলো কি হতে পারে কোথায় যেতে পারে কত কি অদ্ভুতুড়ে দুশ্চিন্তা মাথায় চেপে বসেছে। শেষমেশ মনে একটু সান্ত্বনা দিতে কিংবা অস্থিরতা কমানোর জন্যই আজ আবার দেবযানীর কলেজের এখানে এসে ওর অপেক্ষা করছি। কলেজের ঘন্টা পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে, মেয়েদের দল কলেজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দূর থেকেই দেখলাম দেবযানীদের গ্রুপ টা আসছে, পাশের একটু উঁচু জায়গায় উঠে ভীড়ের মাঝে দেবযানীকে খোঁজার চেষ্টা করলাম। কিন্তু আমার অশান্ত মন এবার বোধহয় ভাঙতে চলেছে, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ভগ্ন মনেই আমাকে ফিরতে হলো। আজও দেবযানী কে দেখতে পেলাম না। কলেজের সময় হয়ে যাচ্ছে, উপায় নেই না হলে আজ কলেজে যাবার মত মনের অবস্থা নেই। 
ক্লাসে কোনমতেই মন বসাতে পারছি না, বসে বসে উশখুশ করে যাচ্ছি। বুঝতে পারছি না দেবযানীর হলো টা কি? কোথাও কি বেড়াতে গিয়েছে? কিন্তু এখন এই বছরের মাঝ সময়ে এত লম্বা বেড়ানোতে কে যাবে! তাহলে কি ও অসুস্থ হয়ে পড়েছে? তাহলে কি এমন হলো যে কলেজ টিউশন কোথাও যাচ্ছে না। ওর খবর টা কার কাছে পাবো সেটাই তো বুঝতে পারছি না। আমি একটু বেশিই অমনোযোগী হয়ে পড়েছিলাম তাই স্যার কখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সেটা বুঝতেই পারি নি৷ স্যার মনে হয় আমাকে কিছু একটা জিজ্ঞেস করেছিল কিন্তু আমি তো আমার মাঝেই ছিলাম না। পাশ থেকে দোলন ধাক্কা দিয়ে আমার দেবযানীর চিন্তায় মগ্ন ধ্যান ভাঙায়, আর পাশে দাঁড়ানো স্যারকে দেখে চমকে উঠি। স্যার খানিকটা অপমানের সুরেই কিছু বলতে বলতে বোর্ডের দিকে চলে যায়৷ আমি চুপচাপ মাথা নিচু করেই দাঁড়িয়ে ছিলাম আর নিজেই নিজেকে দোষারোপ করতে লাগলাম। স্যার বসতে বলায় আমি আমার সীটে বসার সময় হঠাৎ পাশে চোখ পড়তেই দেখি কথা আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। ও হয়তো ঘটনাটা কি সেটার বুঝার চেষ্টা করছে আর ও আমার মনে কি চলছে সেটা ঠিকই পড়ে নিবে সেটা আশ্চর্য হবার মত কিছুই নয়।


টিফিনে ক্লাস খালি হতেই আমিও বাইরে বের হবার জন্য উঠে দাঁড়িয়েছি ওমনি দেখি কথা এসে হাজির। ওর হাতে একটা টিফিন বক্স সেটা খুলে আমার সামনে রেখে ইশারায় বসতে বলে। আমি কোনদিনই কলেজে টিফিন নিয়ে আসি না আগেও কখনো আনিনি, আমার কাছে কেমন যেন লাগে বাসা থেকে খাবার আনতে। তবে আমার চিন্তার তেমন কিছু নেই বাকিরা যে যা আনে প্রায়ই তার মাঝে আমি ভাগ বসাই। আমার পাশেই কথা বসে ওর আনা টিফিন বক্স টা খুলে নেয়, তাকিয়ে দেখলাম নুডুলস এনেছে আজ। নুডুলস তেমন একটা পছন্দের না আমার, আর সেটা আমার চোখে মুখে স্পষ্ট ফুটে উঠেছিল। কিন্তু আমার যেন কিছুই করা ছিল না, কথা আমার দিকে তাকিয়ে চোখের ভ্রো উঁচিয়ে হা করার নির্দেশ দিলো। ও নিজেই চামচে করে নুডুলস আমার মুখে তুলে দিলো পরে আবার নিজেও খেলো। খেতে খেতে হঠাৎ করেই জিজ্ঞেস করলো
কি হয়েছে তোর? ভণিতা না করে সোজা উত্তর দিবি নইলে এই কাটা চামচ টা দেখছিস তো ওটা দিয়ে কিন্তু....

(মুখে খাবার থাকায় কিছু বলতে পারছিলাম না তাই হাত দিয়েই থামার ইঙ্গিত দিলাম, মুখের খাবার টা গিলে নিয়ে) অামি কি না করেছি নাকি যে তোকে কিছু বলবো না।

না করার সাহস টা একবার করে দেখ আমি কি অবস্থা করি তোর।
(কথাটা বলেই আমার দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে আবার এক চামচ নুডুলস তুলে দেয়, ওকে চঞ্চলই ভালো লাগে এমন শান্ত দেখলে কেমন একটা ভয় করে)

আমি ওকে সবটা বলতে শুরু করি ও মনোযোগ দিয়ে সবটা শুনছে, তবে খেয়াল করলাম আমি দেবযানীর ঘটনাটা বলার সময় কথা কেমন জানি বারবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। মনে হয় কিছু একটা লুকাতে চাইছে আমার কাছে৷ আমার বলা শেষ হতেই কথা আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
একটা জিনিস জানানোর আছে তোকে, রাগ করবি নাতো?

কি এমন বলবি যে রাগ করবো?

না মানে আসলে (কথা বারবার ইতস্তত করতে থাকে) দেবযানীর কিছু হয় নি তুই টেনশন করিস না।

(দেবযানীর খবর কথা কি করে জানলো সেটা ভেবে অবাক হই আমি)
তুই কি করে জানলি? তাহলে কলেজে আসছে না কেন??

(বোতল থেকে খানিকটা জল খেয়ে নেয়ে কথা)
ও এখানে নেই তাই। ওর বাবার বদলি হয়ে গেছে তাই ওদের সবাই নতুন জায়গায় চলে গেছে। সেদিন ও টিসি নেবার জন্যই এসেছিল কলেজে। ওর বান্ধবীদের সাথে সেদিন ওটা নিয়েই কথা বলছিলাম।

এর মানে তোরা আগে থেকেই সব জানতি? তাহলে আমাকে বললি না কেন? 

ভেবেছিলাম তুই কষ্ট পাবি তাই।

তাহলে কি এখন পাচ্ছি না? তোর কিন্তু তখনি বলে দেয়া উচিত ছিল। 

আমি রাগ দেখিয়ে ওখান থেকে উঠে পড়ি, ও আমাকে পেছন থেকে আটকানোর চেষ্টা করে কিন্তু টিফিন টাইম শেষে সবাই ক্লাসে ঢুকতে থাকায় সেটা আর হয়ে উঠে না। ও চুপচাপ নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পড়ে আর আমি নিজের ব্যাগটা নিয়ে দূরে অন্য বেঞ্চে গিয়ে বসে পড়ি। এখন কেন জানি ওর কাছাকাছি বসতে ইচ্ছে করছে না। তাই নিজের প্রিয় গ্রুপের সবার কাছ থেকে দূরে চলে গেলাম।
কলেজ ছুটির পরও কথা আমার সাথে কিছু একটা বলার জন্য অপেক্ষা করছিলো কিন্তু আমার রাগ তখনো পঞ্চমীর চরমে তাই ওকে পাশ কাটিয়ে হনহন করে কলেজ থেকে বেড়িয়ে গেলাম। বাসায় এসে স্নান করে চুপচাপ টিভির সামনে বসে গেলাম আর দেবযানীর কথা ভাবতে লাগলাম তবে অদ্ভুত ভাবে আমার তেমন একটা খারাপ লাগছে না আগে যেমনটা লাগছিলো। এখন একবারও এমনটা মনে হচ্ছে না যে দেবযানী আমার থেকে দূরে চলে গেছে ওকে আর কখনো দেখতে পাবো না আমি। সহজ বাংলায় ও তো আমার থেকে হারিয়ে গেছে তবে কেন সেই বিরহে আমার অন্তর জ্বলেপুড়ে ছাড়খার হয়ে যাচ্ছে না। তখন হয়তো আমি ওর কিছু হয়েছে নাকি সেটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম কিন্তু ও ঠিক আছে জেনে মনটা শান্ত হয়ে এসেছে। তবে দেবযানীকে হারানোর বিরহের চেয়ে আমার যেন কথার উপর রাগটা বেশি হচ্ছে। আমার তো এখন বিরহের যন্ত্রনায় কাতরাতে থাকার উচিত ছিল কিন্তু সেটা না হয়ে উল্টো দুপুরের সময় হওয়া কথার উপর রাগ টা রয়ে গেছে আর মন বলছে ও কেন আমাকে মিথ্যে বললো সেদিন। 
আচ্ছা তাহলে সেদিন সত্যটা জেনে গেলে কি আমার কষ্ট হতো না? আমি কি দেবযানী কে হারিয়ে ফেলার যে ভয় টা পাচ্ছিলাম এ কদিন ধরে সেটার কষ্ট টা পেতাম না। কেন জানি বুকের ভেতরে তেমন একটা ব্যাথা অনুভব করছি না নাকি সেই অনুভূতি টা এখনো বুঝে উঠতে পারি নাই কে জানে। সবকিছু ছাপিয়ে আমি যেন বারবার কথার ব্যাপারেই ভেবে চলেছি, দেবযানী কে হারানোর কষ্ট সইতে পারলেও ওর মিথ্যে টা সহ্য হচ্ছে না। হঠাৎ বাইরে মায়ের গলা পেলাম কারও সাথে কথা বলছে, আরেকটা গলার আওয়াজ পেলাম আর যা বুঝার বুঝে গেলাম কে এসেছে এখন। ভেবেছিলাম এখনি দোকানে চলে যাবো ঐ শাঁকচুন্নিটার সামনে থাকবো না, কিন্তু বের হতে যাবো ওমনি মা ডেকে উঠলো
কিঞ্জল তুই কথার সাথে একটু যা তো ওর কি জানি দরকার।




★★★★★


দিপু দার অফিস থেকে একটা বনভোজনের আয়োজন করা হয়েছে, যেহেতু সবাই ফ্যামিলি নিয়েই যাবে তাই আমাকেও সেটার মাঝেই ইনক্লুড করে নিলো। তবে আমার যাবার তেমন একটা ইচ্ছে ছিলো না জ্বরের পর মুখে সবকিছু বিস্বাদ লাগতে শুরু করেছে, কিছুই তেমন খেতে পারি না। আর শরীরটাও এখনো স্ট্যাবল হয় নি না হলে তো আমি চাইছিলাম বাড়ি চলে যেতে। কিন্তু কথা যেতে দিলে তো, মা কে কি মন্ত্র পড়িয়েছে কে জানে ও যেটা বলে সেটাই ঠিক। এমন জানলে এখানে আসতামই না, মাঝে মাঝে ভয় হয় আবারও যদি সেই আগের মতই আবার মায়ায় আটকে যাই তবে কি হবে? আমার না হয় আমাকে নিয়ে কোন চিন্তা নেই আমি তো বরাবরই ভবঘুরে যাযাবর। নিজের প্রতি কখনই আমার খেয়াল ছিল না আর অন্যদের আবেগ আস্থা ভালোবাসা সবকিছুর প্রতিই ছিলাম নিদারুণ উদাসীন। কিন্তু কথা! ওকে যে আবার কষ্ট দিয়ে ফেলবো, ওর হাসিখুশি মুখটা হয়তো আবারও মলিন হয়ে উঠবে। বিষাদে ছায়ার ঢেকে যাবে প্রাণোচ্ছল সদা চঞ্চল দুরন্ত কথার জীবনটা। আমি তো জীবনটাকে বয়ে যেতে দিয়েছিলাম কিন্তু জীবন তো আমাকে বারবার পাড়ে এনে ঠেকায়। জীবন আমার কাছে কি চায় কে জানে আমার তো চাওয়া পাওয়ার কোন হিসেব নেই সব কিছু অনেক আগেই চুকিয়ে দিয়েছি।
আগামীকাল সকালে বনভোজনের জন্য বাস ছাড়বে তিনদিন দু রাতের ট্যুর তাই টুকটাক জামাকাপড় গুছিয়ে নিতে হবে। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে আমার ঘরে এসে ব্যাগটা বের করে বিছানায় রেখে ভাবতে শুরু করলাম কোন কোন জামা কাপড় গুলো নেব সাথে করে। আমার একটা ভীষন বাজে রোগ আছে নিজের জিনিস কখনই নিজে গুছাতে পারি না এমনকি নিজের পছন্দ মত জামাকাপড় পর্যন্ত ঠিক করে কিনতে পারি না৷ সাথে হেল্পিং হ্যান্ড কারও থাকা চাই সে যেটা চয়েজ করে দিবে সেটাই চট করে আমারও চয়েজ হয়ে যায়। একবার ভাবলাম কথা কে কি একবার ডাক দেব, পরক্ষণেই ভাবলাম রাতে এখন ওকে ঘর থেকে ডেকে আনা টা খুব একটা ভালো দেখাবে না। দিপু দা মুখে কিছু না বলুক মনে মনে একটা বিরূপ ধারণা পোষণ করতেই পারে। তার জায়গাঢ আমি থাকলে আমিও সেটাই করতাম এটাই স্বাভাবিক এটাই প্রকৃতির নিয়ম। হঠাৎ করেই দরজার টোকা দেয়ার শব্দ হলো, পেছন ফিরতেই দেখি দরজাটা অর্ধেক খোলা অবস্থায় কথা দাড়িয়ে পাশে দিপু দা আছে। দিপু তা বলে উঠলো,
কি করছো কিঞ্জল বাবু ভেতরে আসবো কি? 

(না চাইতেও হাসি এসে গেলো মুখে)
এটা আবার কেমন কথা দাদা! এ ঘরে আসতে আবার তোমাদের পারমিশন নেয়া লাগবে নাকি?

(দিপু দা কে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে কথা ঘরে ঢুকে আসে) 
আমি তো আগেই বলেছি তোর ঘরে ঢুকতে আবার পারমিশন নিতে হবে কেন তুই কোথাকার লাট সাহেব টা শুনি। 

(ওর কথায় আমি দিপু দা দুজনেই হেসে উঠলাম) 
কিরে কাব্য কই?

(শাড়ির আঁচল টা কোমড়ে গুজে নিতে নিতে) 
মাত্র ঘুম পাড়িয়ে আসলাম, আজকাল জ্বালাতন টা বেশি করছে তোর আশকারা পেয়ে। কিরে তোর ব্যাগ গোছানো হয় নি? (মাথা নাড়িয়ে না সূচক জবাব দিলাম) জানতাম তোর দ্বারা এ কর্মটা হবে না, তা একটা বার ডাক দিলে তো পারতি। যা সরে দাঁড়া সামনে থেকে (আমাকে ঢেলে সরিয়ে দিয়ে আলমারি খুলে ও যে নতুন জামা প্যান্ট গুলো কিনে দিয়েছিলো সেগুলো বের করতে থাকলো)

(বিছানার এক প্রান্তে বসা দিপুদা হাসতে হাসতে বলে উঠলো)
দেখো ভাই দেখে যাও আমাকে কি পরিস্থিতির মাঝে এ বাসায় থাকতে হয়। 
(সাথে সাথেই কথা দিপু দার দিকে তাকিয়ে চোখ রাঙিয়ে বলে উঠলো)
তোমার এখানে কি কাজটা শুনি যাও ঘরে যাও ছেলেটা একা আছে আর সে এখানে এসে বসে বসে কেলিয়ে যাচ্ছে।

কথার দাবড়ানি খেয়ে দিপুদা চোরের মত পলায়ন করলো, আমিও আর কিছু না বলে চুপচাপ এক কোণে দাঁড়িয়ে রইলাম। পাকা গিন্নির মত কথা এক এক করে সবকিছু গুছিয়ে ব্যাগ রেডি করে একপাশে রেখে দিলো। ওটা ওর বা হাতের খেল কারণ আমার কি লাগবে না লাগবে সবটাই তো ওর জানা মাঝে মাঝে আমাকেই নিজের পছন্দ জানতে ওকে জিজ্ঞেস করতে হয়। ব্যাগ গোছনো শেষে ঘরের জগটাতে জল নেই দেখে সেটা হাতে নিয়ে বাইরে চলে গেল এদিকে আমি মোবাইলটা হাতে নিয়ে একটু ফেইসবুকে লগইন করে এটা ওটা দেখছিলাম। কথা জল নিয়ে ফিরে এসে বিছানা টা ঝাঁট দিয়ে আমাকে শুয়ে পড়তে বললো। আমি বাধ্য ছেলের মত বিছানায় চলে যাই ও আমার উপরে কাঁথা টা জড়িয়ে দেয়,
শরীরটা কিন্তু এখনো ঠিক হয় নি বেশি রাত করিস না ঘুমিয়ে পড়।
(আমার মাথায় একবার হাত বুলিয়ে কপালে ছোট্ট করে একটা চুমো খায়)
বড় বাতিটা নিভিয়ে দিয়ে নাইট ল্যাম্প টা জ্বালিয়ে দেয়, দরজার কাছাকাছি চলে গিয়েছিল কি মনে করে আবার ফিরে এসে আমার মুখের উপর ওর মুখটা নিচু করে আনে মাত্র ইঞ্চি খানেক দূরত্বে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো,
শরীর খারাপ লাগলে ডাক দিস কিন্তু। 

একই সাথে আদেশ আর অনুরোধ কেমন করে যায় সেটা কথার কাছ থেকেই শেখা উচিত, এমন করুণ আকুলতা মাখা কন্ঠে হালকা স্নেহ ভালবাসা মিশ্রিত ঝাঁজ মনকে পাগল করে তোলে। আমি বিভোর হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, কত অপরূপ মনোহর লাগছিলো শাব্দিক ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না, কপালের দু পাশ দিয়ে সাপের মত পেঁচিয়ে নেমে আসা দু গোছা চুলে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল ওকে। পিটপিট করতে থাকা চোখের পাতাদ্বয় আমার ভেতরে উথাল-পাতাল ঢেউ তুলতে শুরু করেছিল। খুব ইচ্ছে করছিলো কমলার কোয়ার মত ওর কোমল নরম ঠোঁট দুটিতে ভালোবাসার আবেশ জড়িয়ে ছোট্ট একটা চুমো খেতে। শুকিয়ে আসা গলাটা হাসফাস করছিলো নিজেকে একটু ভিজিয়ে নিতে। আমার চঞ্চল চোখ জোড়া যেন আমার মনের কথা গুলো এক এক করে কথা কে জানিয়ে দিচ্ছিলো তাই হবে হয়তো, না হলে ও জানলো কি করে আমার কাতর মন কি চাইতে ইচ্ছে করছে। আচমকাই আমার শুষ্ক ঠোঁটে কোমলতার স্পর্শ পেলাম আমি সঙ্গে সঙ্গেই চোখ বুজে নিলাম। একটা গাঢ় চুম্বনের পর হঠাৎ নিজের ওষ্ঠ গুলো কেমন নিঃসঙ্গ লাগলো। চোখ মেলে তাকাতেই দেখি আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি হেসে কথা ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। আমি নির্বাক দৃষ্টিতে ওর প্রস্থানের দিকে তাকিয়ে রইলাম, এর আগে যতবার ওর ওমন চলে যাওয়া দেখেছি ততোবারই ওকে হারানোর শঙ্কায় ভুগেছি কিন্তু আজ যেন আমার মন জুড়ে সেই শঙ্কার কোন অবকাশ নেই। ভেতর থেকে কেউ যেন বারবার বলে উঠেছে তুই পেয়েছিস, তাকে পেয়েছিস।

খুব সকালে হালকা নাস্তা করেই আমরা দিপুদার অফিসের দিকে রওনা হয়ে গিয়েছিলাম ওখান থেকেই বাস ছাড়বে৷ অফিসের সামনে সারি সারি কয়েকটা বাস দাড়ানো অনুমান করাই যাচ্ছে অনেক মানুষ যাচ্ছে। হয়তো সবাই ফ্যামিলির নিয়ে যাচ্ছে তাই মানুষজন একটু  বেশিই। মিনিট দশেকের মাঝেই অফিস চত্ত্বরে অনেক মানুষের সমাগম হয়ে গেছে। আমি কথা কাব্য এক কোনে বসে ছিলাম, দিপু দা এসে জানালো তিন নাম্বার বাসে আমরা উঠবো। আমি দিপু দার সাথে হাত লাগিয়ে আমাদের ব্যাগ গুলো বক্সে রেখে দিলাম। কথা বাসের মাঝের দিকে জানালার ধারে বসেছে বাইরে থেকেই আমাদের চোখাচোখি হতেই ও মিষ্টি একটা হাসি ছুঁড়ে দিলো আমার দিকে। সকাল সকাল স্পেশাল মানুষটার কাছ থেকে এমন একটা হাসি উপহার পেলে দিনটা এমনিতেই সুন্দর হয়ে উঠে৷ আমি আর দিপুদা বাসে উঠে নিজেদের সীটের দিকে এগিয়ে গেলাম। আমি কথাদের পেছনের সীটে বসতে যাবো তার আগেই কথা ডেকে ওঠে

তুই ওদিকে কোথায় যাচ্ছিস? এদিকে বস এসে (ও নিজের পাশের সীট টা ইশারায় দেখায়)

(দিপুদা থাকা সত্ত্বেও ওর পাশে বসতে আমার কেমন ইতস্তত বোধ করছে, শত হোক অফিসের অনেক কলিগ আছে এখানে তাদের কাছে ব্যাপারট ওড লাগতে পারে)
না না এখানে দিপু দা বসুক না, আমি তো এখানেই আছি এইতো পেছনের সীটটাতেই।(কথাটা বলেই আমি পেছনের সীটটাতে বসতে গেলাম)

(পেছন থেকে দিপু দা বাঁধা দিলো)
আরে তুমি পেছনে বসবে কেন? তুমি ওর সাথে বসো কাব্য কেও তো দেখে রাখতে হবে। আজকাল বড্ড হাত পা নাড়ায়।

তুমি?

আমার ভাই বসার ফুসরত কই? অনেক কাজের চাপ আছে আমার উপর সেগুলো ম্যানেজ করতে হবে। আমাকে সামনে বাসে স্যারদের সাথে থাকতে হবে। তুমি বরং ওর সাথে থাকো।

কি দেখলি তো তোর দিপুদাও বলে দিলো নে এবার সামনে আয় (মুখে মিষ্টি করে বললেও চোখের ভাষায় কড়া শাসনের সাথে আদেশের ভাব ছিল)

এবার আমি অপারগ না চাইলেও এবার কথার সাথেই বসতে হবে, এটা নিয়ে কথা বাড়ানোর চেয়ে বরং সেটাই ভালো। বাসে আরও অনেকেই আছে তারা বিরক্ত হতে পারে। আমি চুপচাপ কথার পাশে গিয়ে বসে পড়ি, মনে মনে ভাবছিলাম শুরুতে বসতে মানা করেছি সেটার শাস্তি সরূপ কি অপেক্ষা করছে কি জানে। আমার ভাবনার মাঝে ছেদ ফেলেই কথার আক্রমণ শুরু হয়, আমার পেটের কাছে জোরালো চিমটির আঘাত। বাসে সবার সামনে বিব্রতকর পরিস্থিতি টা এড়ানোর জন্য কোন রকমে দাঁতে দাঁত চেপে ব্যাথা টা সহ্য করে নিলাম।
(আমার কানের কাছে মুখটা এনে ফিসফিস করে বলে উঠে)
আমি কিছু বললে সেটার উল্টো টাই করতে হবে সেটা কি প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছিস নাকি। আগেই ভালোই ভালোই বসে গেলে চিমটি টা খেতে হতো না।

(ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠা মুখেই বলে উঠলাম)
আমি তো ভেবেছিলাম দিপু দা....
(বাকিটা শেষ করার আগেই আমাকে থামিয়ে দিয়ে) 
তোকে এতো ভাবতে বলেছে কে? যখন ভাবার সময় ছিল তখন কই ছিলি, ঠিকি তো পালিয়েছিলি আমাকে ফেলে রেখে।
(বাক্যটা শেষ করার আগেই মুখটা গোমড়া করে আমার থেকে সরে বসে জানালার গ্লাসে মাথা ঠেকিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে)
আমিও কি যে করি মাঝে মাঝে, কি সুন্দর এতোক্ষণ হাসিখুশি ছিল কথা আর এখন মুখটা গোমড়া করে বসে আছে। সবটাই আমার দোষ আমি ভাবি একরকম আর হয়ে যায় আরেক রকম। এখন ওকে কি বলে ওর মোডটা ঠিক করবো সেটাই বুঝতে পারছি না। তবে হঠাৎ করেই একটা ঘটনা মনে পড়লো, কলেজে থাকার সময় আমরা একটা স্টাডি ট্যুরে গিয়েছিলাম। আমি আর কথা একই কলেজে পড়তাম তবে আমাদের সেকশন ছিলো আলাদা আলাদা। সেবারও আমাকে ওর পাশে বসানোর জন্য কি কান্ড টাই না করেছিল। ওর পাশের সীটে যে বসেছিল ওকে বলেছিল আমার সাথে এক্সচেঞ্জ করে নিতে। কিন্তু ওটা আরেক ঘাড়ত্যাড়া বান্দা সে কোন মতেই সীট এক্সচেঞ্জ করবে না, এতো বুঝানোর পরও যখন ও রাজি হচ্ছিলো না আমি কথা কে বারবার বলছিলাম যে কোন ব্যাপার না একসাথে বসে যেতে হবে এমন তো কোন বাধ্যবাধকতা নেই৷ কিন্তু কে শুনে কার কথা, ও তো শেষপর্যন্ত মারতে পর্যন্ত চেয়েছিল তবে শেষ দিকে স্যার এসে বিষয়টা মিটমাট করে দেয়। অবশেষে আমার জায়গা হয়েছিল ও পাশেই আর কথার ঠোঁটে ফুটে উঠেছিল বিজয়ের হাসি।

কথার কোলে বসে থাকা কাব্য বারবার নড়াচড়া করছিলো, হাত পা ছুড়ছিল মায়ে হাত থেকে ছাড়া পেয়ে নিচে নামার জন্য। আর ওদিকে আমার উপর তো আগে থেকেই কথার মেজাজ বিগড়ে ছিল আর সেই রাগ টা কাব্যর উপর ঝেড়ে দিলো, কাব্য কে এক ঝটকায় কথা আমার কোলে দিয়ে বলে উঠলো
সবগুলো আমাকে জ্বালিয়ে খাচ্ছে, একটু চুপচাপ বসতে পারে না এই ছেলে। এটার জন্যই পারি না নইলে কবে সব ছেড়ে দূরে চলে যেতাম। 
(রাগে ফুসফুস করছে কথা, ও এমনি যখন রাগ উঠে তখন এমন করেই তেলে জলে জ্বলতে থাকে)
কাব্য মায়ের কাছে বকা খেয়ে কাঁদতে শুরু করেছে। আমি কোলে নিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করতে থাকি, এর মাঝেই বাস চলতে শুরু করে। কোনমতে খুনসুটি আর খেলতে খেলতে কাব্যর কান্না থামাতে পারি, পাশ ফিরে তাকাতেই দেখি কথা এখনো বাইরের দিকেই তাকিয়ে আছে। আমি ওরদিকে একটু এগিয়ে গিয়ে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললাম,
বাপরে বাপ এতো রাগ যে শরীর দিয়ে তাপ বেরোচ্ছে দেখি তোর। তা আমার রাগ টা কাব্য কে দেখাতে গেলি কেন? দরকার হলে আরেকটা চিমটি মারতি অবশ্য আগের চিমটির ব্যাথাটা কমে গেছে চাইলে আরেকটা দিতে পারিস।
(আমাকে চিমটি দেবার জন্য নিজেকে এগিয়ে দিলাম)

আমার দিকে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে হঠাৎ ফিক করে হেসে দেয় কথা। আর হালকা করে কিল মারতে থাকে আমার হাতে। 
ইশ! কেন যে আমি তোর উপর রাগ করে থাকতে পারি না কে জানে। তুই একটা শয়তান, কুত্তা, বিলাই.... (আর কিছু বলতে পারে না তার আগেই হিহিহি করে হাসতে থাকে, কাব্য ঘাড় ফিরিয়ে অবাক চোখে মায়ের প্রাণ খোলা হাসি আস্বাদন করতে থাকে)
কথা আমার বা হাত টা দুহাতে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আরও কাছে চলে আসে আমার, আর আয়েসি ভঙ্গিমায় আমার কাঁধে মাথা রেখে বাইরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকে। বাস চলছে তার আপন গতিতে জানালার ফাঁক গলে ভেতরে প্রবে? করা দুরন্ত বাতাসে কথার সামনের দিকে মুক্ত কেশে ঢেউ খেলতে থাকে।

[+] 9 users Like nextpage's post
Like Reply
অসাধারণ একটি পর্বের সাক্ষী থাকলাম আমরা  clps তাই এই অধমের তরফ থেকে কয়েকটি লাইন ..

আমার উপাধিতে আক্ষায়িত যারা তাদের ভালবাসা মনে সুপ্ত,
তোমার প্রেম নিঃসার্থ তাই স্রোতের ভীরে ভালবাসা বিলুপ্ত।
সেই প্রেমের রাত ভীষন সুখের ছিলো,
যে রাতে দেবযানী অর্ধমৃত ঘুমিয়েছিলো।
মনে অনেক শব্দগুচ্ছ ছিলো,
হাতে কলম পাশে ডাউড়িও ছিলো,
অমিমাংশিত একটা গল্প ছিলো,
বুকে গোপন কিছু চাপা কষ্ট ছিলো,
রাত তখন খুব বেশিই নির্জন ছিলো,
তবুও ডাইড়িতে না কিছু লেখা হয়েছিলো।
সেইদিন যে আমার মন দেবযানীর সাথেই ছিলো!
[+] 3 users Like Bumba_1's post
Like Reply
রোমান্টিকতায় ভরপুর আপডেট।
[+] 1 user Likes S.K.P's post
Like Reply
(04-12-2022, 09:33 PM)Bumba_1 Wrote: অসাধারণ একটি পর্বের সাক্ষী থাকলাম আমরা  clps তাই এই অধমের তরফ থেকে কয়েকটি লাইন ..

আমার উপাধিতে আক্ষায়িত যারা তাদের ভালবাসা মনে সুপ্ত,
তোমার প্রেম নিঃসার্থ তাই স্রোতের ভীরে ভালবাসা বিলুপ্ত।
সেই প্রেমের রাত ভীষন সুখের ছিলো,
যে রাতে দেবযানী অর্ধমৃত ঘুমিয়েছিলো।
মনে অনেক শব্দগুচ্ছ ছিলো,
হাতে কলম পাশে ডাউড়িও ছিলো,
অমিমাংশিত একটা গল্প ছিলো,
বুকে গোপন কিছু চাপা কষ্ট ছিলো,
রাত তখন খুব বেশিই নির্জন ছিলো,
তবুও ডাইড়িতে না কিছু লেখা হয়েছিলো।
সেইদিন যে আমার মন দেবযানীর সাথেই ছিলো!

Namaskar
পেন্নাম জানাই দাদা...
তোমার ক্ষুরধার মস্তিষ্কের কোন কিছুর অবলোকন ক্ষমতা আর সেটা উপর নিজের সৃষ্টির আঁচড় দেয়া অনবদ্য।
আমি বরাবরের মতই মন্ত্রমুগ্ধ
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(05-12-2022, 12:30 AM)S.K.P Wrote: রোমান্টিকতায় ভরপুর আপডেট।

thanks
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
মনপ্রাণ ছুঁয়ে যাওয়া কাহিনী , অভূতপূর্ব উপস্থাপনা !!


clps Heart
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(05-12-2022, 09:27 AM)ddey333 Wrote: মনপ্রাণ ছুঁয়ে যাওয়া কাহিনী , অভূতপূর্ব উপস্থাপনা !!


clps Heart

thank you dada..
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
খুব খুব সুন্দর একটা পর্ব। সম্পর্কের রসায়ন যত জটিল ততই যেন তার প্রতি কৌতূহল ও আকর্ষণ বেড়েই চলে। এই দুটো মানুষের সম্পর্ক বন্ধুত্ব ছাড়াও যে বিশেষ জন্ম নিয়েছে সেটার অতীত যাই হোক ভবিষ্যত কতটা প্রখর সেটা জানার লোভ বড্ড বেড়ে চলেছে। না মোটেও শারীরিক ফলাফলের কথা বলছিনা, বলছি ভালোবাসার কথা ♥️

দারুন লাগলো পর্বটা। শুধু বেচারা কাব্য বাবু অন্যের ভাগের ঝাড় খেলো এটাই খারাপ লাগলো। Big Grin
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(09-12-2022, 11:02 PM)Baban Wrote: খুব খুব সুন্দর একটা পর্ব। সম্পর্কের রসায়ন যত জটিল ততই যেন তার প্রতি কৌতূহল ও আকর্ষণ বেড়েই চলে। এই দুটো মানুষের সম্পর্ক বন্ধুত্ব ছাড়াও যে বিশেষ জন্ম নিয়েছে সেটার অতীত যাই হোক ভবিষ্যত কতটা প্রখর সেটা জানার লোভ বড্ড বেড়ে চলেছে। না মোটেও শারীরিক ফলাফলের কথা বলছিনা, বলছি ভালোবাসার কথা ♥️

দারুন লাগলো পর্বটা। শুধু বেচারা কাব্য বাবু অন্যের ভাগের ঝাড় খেলো এটাই খারাপ লাগলো। Big Grin

ভবিষ্যতৎ জানি না তবে অতীত জানা আছে সেটাই আগে জানাবো।

সত্যিই কাব্য বেচারার জন্য মনটা খারাপ লাগছে।
তবে বাস্তবে কাব্য বিরাট পাজি একটা ছেলে অনেক চঞ্চল হাতে পায়ে স্বস্তি নেই।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
জমে উঠেছে ফুটবল বিশ্বকাপ সেই সাথে এই ফোরামের গল্পের আসরও। সেই সবের ফাঁকে এই গল্পের নতুন আপডেট মিস হতেই পারে। যাদের এখনো নতুন পর্ব পড়া হয় নি তারা পড়ে নিতে পারেন।
সেই সাথে অতিথি থ্রেডেও নতুন পর্ব এসেছে দেখে আসতে পারেন।




নতুন আপডেটের কাজ শুরু হয়েছে, দেখা হবে খুব শীঘ্রই।
[+] 3 users Like nextpage's post
Like Reply

কিরে মিথ্যে বলার জন্য এতো ভাবতে হচ্ছে? থাক মিথ্যে বলতে হবে না, মন চাইলে ছুটির পর না হয় ইচ্ছে মত মারিস তবুও আমার সাথে ওমন করে কথা না বলে থাকিস না। তুই ইগ্নোর করলে আমি সহ্য করতে পারি না। তুই চাইলে ওমন একটা না দশটা গফ জোগাড় করে দেব তোর জন্য খুশি তো?




আজ আর্জেন্টিনার খেলা সেটার জন্য অন্য কাজে মন বসানো বড়ই কষ্টসাধ্য। তবুও কিছু লিখার যেহেতু চেষ্টা করছি তবে সেটারও তো খেয়াল রাখতে হয়। তাই পরবর্তী আপডেট তৈরী করে নিলাম। আগামীকাল রাতেই আসতে চলেছে গল্পের নতুন পর্ব। সঙ্গেই থাকুন...
[+] 3 users Like nextpage's post
Like Reply
কাকসন, ওকে ভীষণ মিস করছি আজকাল।
কেউ  কি দিতে পারবে ওর খোঁজ বা ?
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
বেতালা ভালা হইসে চালাইয়া যাও ভালো লাকছে।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
(13-12-2022, 10:36 PM)ddey333 Wrote: কাকসন, ওকে ভীষণ মিস করছি আজকাল।
কেউ  কি দিতে পারবে ওর খোঁজ বা ?

পল্টিবাজ।
আসবে বলেও আর আসলো না। গল্পটা ওমন করে ঝুলিয়ে দিয়ে চলে গেল।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(13-12-2022, 11:18 PM)Boti babu Wrote: বেতালা ভালা হইসে চালাইয়া যাও ভালো লাকছে।

অনেক দিন পর কমেন্ট করতে দেখে আমি আপ্লুত..
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(14-12-2022, 06:35 PM)nextpage Wrote: অনেক দিন পর কমেন্ট করতে দেখে আমি আপ্লুত..

এমন কিছুই না ভাই গল্প পরি লাইক দি চুপ চাপ চলে যাই  । পড়ে কমেন্ট করবো করবো করে আর কমেন্ট করা হয়ে উঠে না তার জন্য  SORRY  Big Grin Namaskar
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply




Users browsing this thread: 5 Guest(s)