Thread Rating:
  • 159 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL গোলকধাঁধায় গোগোল (সমাপ্ত)
(29-11-2022, 03:17 PM)ambrox33 Wrote: দাদা, তোমার  লেখার কোন তুলনা নেই।

আচ্ছা, ধন্যবাদ
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(29-11-2022, 03:11 PM)Bumba_1 Wrote:
তৃষিত বুকে ভাঙ্গা-গড়ার খেলা চলছে অবিরত। চাঁদের আলো কেঁপে ওঠে অজানা এক সঙ্কেতে। রূপকথারা প্রেম লিখে যায় কাব্য গাঁথা মালায়, না বলা স্বপ্নগুলো তুষের অনল জ্বালায়। ঈশান কোণের মেঘের রামধনু রঙ ছুঁয়ে দেখার বড্ড সাধ। সন্ধ্যাবেলা শঙ্খের আওয়াজে ছুটে যায় পাবে বলে পরশ। ইচ্ছেরা কথা কয় সঙ্গোপনে ধ্রুবতারার সাথে একলা ভাসবে বলে। বুকের মণিকোঠায় জমাটকষ্ট এখনও বাঁধ ভাঙ্গেনি চোখের জলে, যদি কখনো দেখা হয়ে যায় সেই বালুকাবেলায়।


[Image: Polish-20220303-195512411.jpg]

বাকিটা জানতে হলে পড়তে হবে সিঁদুরে মেঘ
মূল উপন্যাসঃ- গোলকধাঁধায় গোগোল

আগামীকাল রাত থেকে শুরু হবে ক্লাইম্যাক্সের পর্বগুলি

বাহ, কি অসাধারণ লেখার ভঙ্গিমা। স্টার্টারেই খিদেটা বেড়ে গেল, মেইন কোর্সের অপেক্ষায়।  Smile

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
(29-11-2022, 05:18 PM)Sanjay Sen Wrote: বাহ, কি অসাধারণ লেখার ভঙ্গিমা। স্টার্টারেই খিদেটা বেড়ে গেল, মেইন কোর্সের অপেক্ষায়।  Smile

ধন্যবাদ   Namaskar তবে এগুলোই সম্ভবত সব থেকে দুর্বল লাইন আগামী পর্বের। আরো ভালো, আরো বড় কিছুর অপেক্ষায়। সঙ্গে থাকো ..
Like Reply
(29-11-2022, 03:11 PM)Bumba_1 Wrote:
তৃষিত বুকে ভাঙ্গা-গড়ার খেলা চলছে অবিরত। চাঁদের আলো কেঁপে ওঠে অজানা এক সঙ্কেতে। রূপকথারা প্রেম লিখে যায় কাব্য গাঁথা মালায়, না বলা স্বপ্নগুলো তুষের অনল জ্বালায়। ঈশান কোণের মেঘের রামধনু রঙ ছুঁয়ে দেখার বড্ড সাধ। সন্ধ্যাবেলা শঙ্খের আওয়াজে ছুটে যায় পাবে বলে পরশ। ইচ্ছেরা কথা কয় সঙ্গোপনে ধ্রুবতারার সাথে একলা ভাসবে বলে। বুকের মণিকোঠায় জমাটকষ্ট এখনও বাঁধ ভাঙ্গেনি চোখের জলে, যদি কখনো দেখা হয়ে যায় সেই বালুকাবেলায়।



বাকিটা জানতে হলে পড়তে হবে সিঁদুরে মেঘ
মূল উপন্যাসঃ- গোলকধাঁধায় গোগোল

আগামীকাল রাত থেকে শুরু হবে ক্লাইম্যাক্সের পর্বগুলি


উফফফফফ কিসব লাইন। সাংঘাতিক  clps
অপেক্ষায় আসন্ন দুর্দান্ত পর্বের।
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
(29-11-2022, 10:24 PM)Baban Wrote: উফফফফফ কিসব লাইন। সাংঘাতিক  clps
অপেক্ষায় আসন্ন দুর্দান্ত পর্বের।

Heart Heart Heart Heart 
Like Reply
সিঁদুরে মেঘ!!
সেটা তো ঘর পোড়া গরুদের ভয়ের কারণ।
কে জানি আবার কার ঘর পুড়লো বা পুড়তে চলেছে।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(29-11-2022, 11:26 PM)nextpage Wrote: সিঁদুরে মেঘ!!
সেটা তো ঘর পোড়া গরুদের ভয়ের কারণ।
কে জানি আবার কার ঘর পুড়লো বা পুড়তে চলেছে।

দেখা যাক .. অপেক্ষা করা ছাড়া তো উপায় নেই  Smile
Like Reply
বিসর্জনের বাজনা বাজা শুরু হয়ে গেছে।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
(30-11-2022, 11:43 AM)Boti babu Wrote: বিসর্জনের বাজনা বাজা শুরু হয়ে গেছে।

ব্যাপারটা বোধহয় এত সোজা হবে না  Smile
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
[Image: Polish-20221130-114456602.jpg]

(৭)

"আব তেরা কেয়া হোগা কালিয়া থুড়ি গোগোলুয়া? হিহিহি .. এবার তোমাকে কে বাঁচাবে আমার হাত থেকে শুনি?" দরজাটা বন্ধ করতে করতে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে উক্তি করলো হিয়া।

"ইশ্ শেষমেষ আমার নামের এই অপভ্রংশ? তা আমাকে আর কে বাঁচাবে? পড়েছি মোগলের হাতে খানা খেতে হবে সাথে। কিন্তু একটা কথা বল .. তুই তখন ওইরকম মহিষাসুরমর্দিনীর রূপ ধারণ করলি যে বড়ো! ভয় করলো না একটুও?" মৃদূস্বরে জিজ্ঞাসা করলো গোগোল।

"ভয়? কিসের ভয়? তুমি ওই মেয়েটার .. কি যেন নাম .. হ্যাঁ, রনিতা .. ওর ইঙ্গিত আর শরীরী ভাষা বুঝতে না পারলেও, একজন মেয়ে হিসেবে আমি ঠিক বুঝতে পেরেছি ওর অভিব্যক্তি। আমার ভালোবাসা যেখানে ডেঞ্জার জোনে আছে, সেখানে সমস্ত ভয়, বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আমি ঝাঁপাবো না তো কে ঝাঁপাবে শুনি? তাছাড়া আমার সঙ্গে এইরকম একজন লম্বা-চওড়া মাচোম্যান থাকতে আমার ভয় কেনো করবে?" মুচকি হেসে খুব সহজভাবে উত্তর দিলো হিয়া।

- "আচ্ছা .. বুঝলাম .."

- "মানে টা কি, হ্যাঁ?‌ আমি উনাকে ভালোবাসার কথা বললাম, আর উনি 'আচ্ছা' 'বুঝলাম' এইসব বলে যাচ্ছেন! এই মানুষটার তো কোনো তাপ-উত্তাপ নেই দেখছি। আরে উল্টোদিকের সুন্দরী কোনো নারী যদি ভালবাসার কথা বলে, তবে তার কথার প্রত্যুত্তর ভালোবাসাতেই দিতে হয়। বুঝলে হুঁকোমুখো হ্যাংলা?"

- "ঠিক তো? ভেবে বললি তো কথাটা? তারমানে আমার উল্টোদিকে থাকা যেকোনো সুন্দরী নারী আমাকে ভালোবাসার কথা বললে, আমিও তাহলে প্রত্যুত্তরে তাকে .."

"অসভ্য ছেলে একটা .. এই ছিলো তোমার মনে? জানি তো, আমি তো লক্ষ্য করেছি .. যখন ওই শাকচুন্নিটা তোমার সঙ্গে কথা বলছিলো, তখন একেবারে বিগলিত হয়ে পড়েছিলে তুমি।" এই বলে হাত উঁচিয়ে গোগোলের দিকে তেড়ে এলো হিয়া।

এক দৌড়ে খাটের পেছনে চলে গিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো "আরে ও আমার থেকে বয়সে দুই বছরের বড়ো .. ওকে আমি ছোটবেলায় দিদি বলতাম আর ও আমাকে ভাই বলতো .."

- "ওটা পাস্ট টেন্স .. এখন যা দিনকাল পড়েছে তাতে ওই ধরনের ঢলানি মেয়েরা অল্পবয়সী হ্যান্ডসাম ছেলে দেখলেই তাকে ভাইয়া থেকে সাইয়া বানাতে বেশি সময় নেয় না। আর তাছাড়া ও তো নিজের মুখেই বললো 'প্লিজ ডোন্ট কল মি 'দিদি' রাইট নাউ .. কল মি ওনলি রনিতা' .. উফ্ ওই ন্যাকা ন্যাকা গলাটা শুনেই তো মাথায় আগুন জ্বলে গিয়েছিল আমার .."

- "আচ্ছা বাবা আচ্ছা .. তোর সব কথা মেনে নিলাম .. কিন্তু সন্দীপ?"

- "মানে? এখানে আবার ওনার কথা আসছে কোত্থেকে? আগের দিন তো এই বিষয়ে তোমার সঙ্গে সব কথাই হয়েছে। কেউ যদি আমার সঙ্গে লেজুড় হয়ে কোথাও চলে আসে, সেখানে তো আমার কিছু করার নেই। ওই সিচুয়েশনে তুমি আমাদের দু'জনকে দেখে মিস আন্ডারস্ট্যান্ড করেছো .. দ্যাট ইজ ইওর প্রবলেম। তারপরে নিজেই ইচ্ছাকৃতভাবে টগরের সঙ্গে তোমার নাম জড়িয়ে আমার কাছে দেখাতে চেয়েছো তোমার জীবনেও একজন বিশেষ কেউ এসে গেছে। ভুল তুমি করেছো, আমি নয়। ইনফ্যাক্ট, সবসময় তুমি ভুল করো। নিজেকে এবং নিজের জীবন দর্শনকে নিজের ভালোবাসার মানুষের থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া, কাউকে জবাবদিহি না করা, মানুষকে অযথা ভুল বোঝা .. এই দোষগুলো তো তোমার মধ্যে আছেই।"

- "আচ্ছা, সে না হয় বুঝলাম .. সব আমার দোষ। কিন্তু তোর সঙ্গে ইন্সপেক্টর সন্দীপ সেনগুপ্তর বিয়ে ঠিক হয়ে রয়েছে .. এই কথাটা যখনই মনে পড়ে তখনই আমার মাথায় আগুন জ্বলে যায়। পরক্ষণেই মুষড়ে পরি এই ভেবে সময়ের টানে হারিয়ে যাচ্ছে দিন, কাল, বছর .. পরে আছে একাকীত্ব। অন্তরালে লুকিয়ে আছে মোহ, খুব নিরবে পুড়ে প্রেম রেখে যায় শুধু বিষন্নতার ছোপ। একাকীত্ব খুঁজে চলে এক টুকরো আলোর দিশা।"

"আমি একজন স্বাধীন দেশের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক। তাই আমার জীবনসঙ্গী ঠিক করার স্বাধীনতা নিশ্চয়ই আমার আছে। কোনো গুরুদেবের কথায় ছোটবেলায় ঠিক হয়ে থাকা বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে আমি জড়াতে পারবো না। এই কথা আমি আমার মা'কে জানিয়ে দিয়েছি। তবে এটাও ঠিক সন্দীপ বাবুকে আমি এসব কথা বলতে পারবো না, কারণ তিনি নিজে থেকে আমাকে কিছু বলেননি। আর আমি এটাও জানি, মা এই ব্যাপারে সন্দীপ বাবুকে কিছু বলবে না এবং সম্পূর্ণভাবে আমার বিরোধিতা করবে এই ক্ষেত্রে। তাই সেই দায়িত্বটা তোমাকেই নিতে হবে। আরে, এইসব ডায়লগ তো তোমার দেওয়া উচিৎ ছিলো আমাকে ইমপ্রেস করার জন্য! এই মানুষটার তো দেখছি সত্যিই কোনো হেলদোল নেই। তুমি আদৌ আমাকে ভালোবাসো তো? আচ্ছা প্রেম কাকে বলে জানো? বাই দ্যা ওয়ে, আমি কিন্তু মোটেই প্লেটনিক লাভের কথা বলছি না। আমি বলতে চাইছি শরীরী ভালবাসার কথা। যেখানে প্রেমের সঙ্গে কাম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। সামাঝরাহে হো না মেরি বাত?" ইঙ্গিতপূর্ণ ভঙ্গিতে কথাগুলো বললো হিয়া।

- "আমি জানিনা আজকাল তুই কাদের সঙ্গে মেলামেশা করছিস। তবে তারা তোর মাথাটা পুরো বিগড়ে দিয়েছে, এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত। খুব পেকে গেছিস তাই না? আজ তোর ভালোভাবে ক্লাস নিতে হবে। প্রেম প্রধানত কাম থেকেই উদ্ভূত, যদিও তা পুরোপুরি এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রেম হলো এক উদ্ভাবন, এক রূপান্তর, এক অনন্যবোধ, এক জাদুরসায়ন। এর কারণেই প্রেমের ক্ষেত্রে দেহ প্রতীক হয় বটে, কিন্তু শুধু তা যৌনতায় পরিণত হয় না। জীবকুলের মধ্যে মানুষই একমাত্র প্রাণী যে শরীরকে মুক্ত করতে পেরেছে তার মন ও মস্তিষ্ক দিয়ে। দেহের সৌন্দর্যের অনুসদ্ধানের সাথে যখন বাসনা সম্পর্কিত হয়ে সৌন্দর্যের উদ্যাপনে অগ্রসর হয়, তখন সেই তাড়নার নতুন পরিগ্রহণ যে বিজয় অর্জন করে, তাই প্রেম। প্রেম আসলে যৌনসত্যের এক বিনির্মাণ, যা তাকে চরিতার্থতা দেয় যেন শরীর তার প্রাকৃতিক ভূমিকাকে সুন্দরভাবে সম্পাদন করতে পারে। প্রেমের এই অগ্রগতি আসলে যৌনসম্পর্ক সৃষ্টির এক ধরনের উদারীকরণ ঘটায়, যৌনতাকে সদগুণে উপনীত করে।"

এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে কয়েক মুহূর্তের জন্য বিরতি নিলো গোগোল। তার দিকে ভ্রু কুঞ্চিত অবস্থায় মুখ হাঁ করে তাকিয়েছিল হিয়া। পুনরায় বলতে শুরু করলো গোগোল।

- "প্রেম কামকে অসাধারণ ভাবে উপভোগ করার মনোশারীরিক এক উদ্দীপনরথ। প্রেম হলো কামজ, যেমন পদ্ম হলো পঙ্কজ। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রেম ছাড়া কাম সম্ভব, যদিও তার আয়ু হতে পারে ক্ষণিক। প্রেম উপহার চায়, আর এজন্যই উপস্থাপন করে নিজেকে কামের জন্য। কাম বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে শারীরিক মিলন হলো নিকটতম দেহযোগাযোগ আর প্রেম হলো প্রাণের বা আত্মার ঐকতান। কিন্তু কখনও কখনও চূড়ান্তভাবে কামকে পাওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে তাকে আড়াল বা অস্বীকার করে প্রেম, নিজেকে করতে চায় সদগুণসম্ভাবিত। এটা অনেকটা কামের জন্য কামের বিরুদ্ধে এক সংগ্রাম। এটার রয়েছে একটি দার্শনিক সৌন্দর্য: অস্বীকৃতির প্রাপ্তি। প্রেম যে-শারীরিক নিদর্শন খুঁজতে চায় কাম তা ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করে। কাম হলো সেই যৌনতা যা বর্তমান ও ক্রিয়াশীল, যা নির্দেশনাপ্রাপ্ত ও অভিমুখী। যৌনতা প্রাকৃতিকভাবে যায় প্রজননে, কামে তা নয়। কামের সমাপ্তি আনন্দেই। যৌনতা জীবগত আর কাম মানবগত। কামক্রিয়ায় সবসময়ই থাকে অদৃশ্য ও চিরক্রিয়াশীল সঙ্গী, থাকে অভীপ্সা ও কল্পনা; থাকে একাধিক অংশগ্রহণকারী। প্রাণিযৌনতা ও মানবকামের মধ্যে আছে পার্থক্য। প্রাণিযৌনতায় কল্পনা নেই, নেই ফ্যান্টাসিও, আছে শুধু অভ্যাস। কিন্তু মানবকামে এগুলো আছে, রয়েছে যৌনমনস্তত্ত্বের খেলাও .. ও কথা থাক। যৌনতায় প্রাণীদের কোনো রূপকথা নেই, নেই কোনো আলাদা জগৎও, কিন্তু মানুষ সৃষ্টি করেছে এই সবকিছু। তপস্ব্যা ও লাম্পট্য, এ দুটোরই প্রকাশ রয়েছে কামে। এরা বিপরীতধর্মী হলেও কামের সার্থকতায় প্রজননকে বাতিল করে উভয়েই, যদিও একটার উদ্দেশ্য আধ্যাত্মিক বা লৌকিক সাধন ও পরিত্রাণ, অন্যটির উদ্দেশ্য ব্যক্তিক স্বাধীনতা। দুটোই পরিহার করে প্রজননকে। প্রথমটির দেখা মেলে তন্ত্র ও বাউল সাধনায় যেখানে যৌনতাকে ব্যবহার করা হয় যান হিসেবে,আর দ্বিতীয়টির উদাহরণ সাদীয় সাহিত্য ও তাঁর জীবন। প্রেম হলো এমন এক শারীরিক অবস্থা, যখন শরীরের সব ইন্দ্রিয়ই অংশগ্রহণ করে, এবং এই অংশগ্রহণ শরীরকে একটি তূরীয় অবস্থায় নীত করে। মানুষের ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটে, এবং তার ফলাফল হিসেবে আসে জননেন্দ্রিয়ের চূড়ান্ত উদ্দীপন। কোনোকিছুই বাকি থাকে না .. চোখ, কান, সুগন্ধ,স্পর্শ, মর্দন এমনকি স্বাদও ক্রীড়াময় হয়ে ওঠে। প্রেম যদি কোনো গোপন রসায়ন হয় তবে পেমে পড়া মানুষেরা যেন হয়ে ওঠে অলীক সত্তা, তাদের ভাষা ও আচরণ যেন হয়ে ওঠে অবাস্তব, ও অচেনা। সামাজিক বা ধর্মীয় নৈতিকতাও এই প্রবৃত্তির জাগরণকে থামাতে পারে না। তখন প্রেম হয়ে ওঠে বিশেষ ধারণা বা লক্ষণ। প্রেমিকের কাছে তার প্রিয়তমা বা প্রেমিকার কাছে তার প্রিয়তম হলো পৃথিবীর পরিচিতিকরণের অবতার, একজন অন্যজনকে উপহার দেয় এক নতুন পৃথিবী যার নিরন্তর অন্বেষক হয়ে ওঠে তারা পরস্পর। এজন্যই প্রেমে বিভ্রম বলে কিছু থাকে না, কারণ তা স্বচ্ছতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় সম্পর্কের স্থায়ীকরণের মাধ্যমে। প্রতিটি প্রাণীর শরীররই ইন্দ্রিয়ের মহোৎসব, সেখানে পূজা পায় এক ইন্দ্রিয়দেবতা। কিন্তু সাধারণ প্রাণীর ইন্দ্রিয়দেবতাটি একটি উদ্দেশ্যকে নিয়ে অগ্রসর হয়। উদ্দেশ্য পূরণ হলেই সে থাকে তৃপ্ত। তার মানে, প্রাণীর এই দেবতা সুস্থ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ। কিন্তু মানুষের এই দেবতা মাতাল, শৃঙ্খলাহীন। একই সময়ে সে পূরণ করতে চায় অনেক উদ্দেশ্য। এই বহুগুণিত প্রবণতাই উপহার দেয় প্রেম যা কামের পথ ধরে হাজির হয়। শুধু তা-ই নয়, তা মানুষকে করে তোলে নতুনের অভিলাসী, আবিষ্কারমুখী। মানুষের ভেতরে বাস করা ইন্দ্রিয়দেবতাই এই পুনরাবিষ্কারের ও নবীকরণের কাজ করে যায়। এই সৃষ্টিশীলতা তাকে বহুসৃষ্টিশীল হওয়ার শক্তি জোগায়। শুধু এটুকুই নয়, সে উপহার দেয় আকস্মিকতা ও পুনর্নির্মাণের ইচ্ছা, দেয় পরিবর্তনের মানসিকতা, দেয় অঙ্গীকারও। যৌনবাস্তবতার বাইরে একটি কল্পনাকে স্বাগত জানায় সে যা সৃষ্টি করে সৌন্দর্য। নৈতিক প্রত্যয়গুলোকেও সে নির্দ্বিধায় ভেঙে ফেলে। এ অর্থে প্রেম লঙ্ঘনকারী। প্রেম কামকে পূরণের মুখোশ হলেও এটা ইন্দ্রিয়ের একধরনের সৌন্দর্যকে আবাহন জানায়। এটা এক আনন্দের জন্ম দেয় যাকে উপভোগ করে শরীর। শুধু কাম প্রেম নয় কখনোই, অতি কাম বা অসুন্দর কাম বরং প্রেমকে হত্যা করতে পারে। প্রেম নিজে সুন্দর নয় কিন্তু তা সৌন্দর্য সৃষ্টি করতে সক্ষম। প্রেম এক ভুল যা থেকে সুন্দরের জন্ম। বোদল্যের বলেছেন, প্রেমের অসাধারণ এবং সর্বোচ্চ আনন্দ রয়েছে ভুল করার নিশ্চিততার মধ্যে। আর এ কারণেই কখনও কখনও মনে হয় প্রেম বুঝি দেহাতীত বা কামাতীত কোনো কিছু। এর কারণ হলো সেই সৃষ্টসৌন্দর্য যা কামকে ঢেকে রাখে।"

"হোল্ড অন .. হোল্ড অন .. তখন থেকে এইসব কি বলে যাচ্ছ তুমি? এখানে কি প্রেম এবং কাম সাহিত্য, তার সঙ্গে তোমার স্নাতক স্তরের সাবজেক্ট ফিজিওলজির সংমিশ্রণে একটা হচপচ ক্লাস হচ্ছে? তোমার এই জ্ঞানের সম্ভাষণের একটা শব্দও আমার মাথায় ঢোকেনি, বিশ্বাস করো। একটা সহজ প্রশ্ন করেছিলাম, তার সহজভাবে উত্তর চাই। ডু ইউ লাভ মি অর নট .. আমি জানি উত্তরটা, কিন্তু তবুও তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই।" গোগোল হয়তো আরো অনেক কিছু বলতো, কিন্তু তাকে থামিয়ে দিয়ে বেশ রাগত স্বরে কথাগুলো বলল হিয়া।

"তৃষিত বুকে ভাঙ্গা-গড়ার খেলা চলছে অবিরত। চাঁদের আলো কেঁপে ওঠে অজানা এক সঙ্কেতে। রূপকথারা প্রেম লিখে যায় কাব্য গাঁথা মালায়, না বলা স্বপ্নগুলো তুষের অনল জ্বালায়। ঈশান কোণের মেঘের রামধনু রঙ ছুঁয়ে দেখার বড্ড সাধ। সন্ধ্যাবেলা শঙ্খের আওয়াজে ছুটে যায় পাবে বলে পরশ। ইচ্ছেরা কথা কয় সঙ্গোপনে ধ্রুবতারার সাথে একলা ভাসবে বলে। বুকের মণিকোঠায় জমাটকষ্ট এখনও বাঁধ ভাঙ্গেনি চোখের জলে, যদি কখনো দেখা হয়ে যায় সেই বালুকাবেলায়। আর তুই আমাকে জিজ্ঞাসা করছিস আমি তোকে ভালোবাসি কিনা? নিজের থেকেও বেশি, এই পৃথিবীর সবার থেকে বেশি, এমন কি তোর থেকেও বেশি ভালোবাসি তোকে আমি।" চাপা অথচ দৃঢ় কন্ঠে কথাগুলো বললো গোগোল।

"সত্যি বলছো .. সত্যি বলছো তুমি? আমার ভালোবাসা যে শুধুই তোমাকে ঘিরে। দিয়েছি মন, দিতে পারি প্রাণ। বেঁধেছি তোমায় নিয়ে কত স্বপ্ন, আরও কত শত গান। তুমি আমার অন্তরে সুখের ছায়া, শূন্য দেহে প্রাণ। তোমায় ছেড়ে যায়না থাকা, মনকে বাঁধে পিছুটান। তুমিও সপ্ন সাজিয়ো আমায় নিয়ে, এটাই একমাত্র চাওয়া তোমার কাছে।" গোগোলের খুব কাছে গিয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে গভীর কন্ঠে উক্তি করলো হিয়া।

কথাগুলো শুনতে শুনতে হিয়ার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো গোগোল। এই দৃষ্টি আগে কখনো দেখেনি হিয়া। বেলার পড়ন্ত রোদ এসে পড়েছে হিয়ার মুখে .. সেই আলো এক অদ্ভুত মোহময়ী রূপ সৃষ্টি করেছে তার মধ্যে। গোগোলের এই মুহূর্তে মনে হচ্ছিলো হিয়া যেন পৃথিবীর বুকে যেন সর্বশ্রেষ্ঠ সদ্য ফোটা একটি গোলাপ ফুল, যার মোহনীয় সৌরভে মন মুগ্ধতায় আকুল হয়ে যায়। এ যেন সমগ্র রূপের শ্রেষ্ঠ বাহার, যার ভেতর নেই কোনো ভ্রান্তি, পুরোটাই স্বচ্ছ। যার ভুবন মোহিনী হাসিতে যেন মেঘেরাও থমকে তাকায়, হীরে-মুক্তো ঝরে পরে প্রতিটি হাসির লহমায়। যার অভিসার অলৌকিত সিগ্ধতায় এই হৃদয় ছুঁয়ে যায়, অসহায় চিত্ত স্বপ্নীল সন্ধানে বার বার ওর ওই এক চিলতে হাসিতে হারায়।

হিয়ার অপরূপ লাবণ্য এবং সৌন্দর্য অবলোকন করে আদ্যোপান্ত সিরিয়াস এবং কঠিন থেকে কঠিনতর হৃদয়ের অধিকারী গোগোলের মধ্যেও সাহিত্যের ভাব প্রকাশ পেয়েছিলো - "তোমাকে মনের মণিকোঠায় রাখি, তবু মেলাতে পারি না ভালোবাসা। তখন বড্ড ক্লান্ত আমি, রাজ্যের ক্লান্তি যেন আমার শরীরে। জানো তুমি? আমার সব অনুভূতিটুকু নিয়েও আমাকে বোঝোনি তুমি কিংবা হয়তো বুঝতে চাও না। চোখের মণিতে তুমিই তো ছিলে, দেখোইনি কিংবা হয়তো দেখতেই চাও না। বড়োই অবহেলিত আমি। কিন্তু আর হারতে চাই না, আমার আমিকে পরাজিত করে। এখন আকাশের বুক পুড়ে খায় বিকের রোদ, মেঘ পোড়া লাল আভাগুলো চুমু খায় অশান্ত জলের পাঁজর। জ্যোৎস্নার দীপ্তি ছুঁয়ে দেয় হলুদ বনের শরীর। বাতাসে সুগন্ধি ছড়িয়ে প্রেমের সেই চিরন্তন গান গেয়ে যায় রাত পাখিরা।"

গোগোলের মুখে জীবনে এই প্রথমবার 'তুই' থেকে 'তুমি' এবং নিজের সম্পর্কে ওই কথাগুলো শুনতে শুনতে আনন্দে চোখ ভিজে গিয়েছিল হিয়ার, তিরতির করে কাঁপছিল তার গোলাপী ওষ্ঠদ্বয়। তারপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ .. সেই অতি আকাঙ্ক্ষিত চুম্বনের মুহূর্ত .. ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে পারস্পরিক অস্তিত্বের অনুভব .. এতদিন পরে আজ বুঝি বা প্লাবন এলো .. কিন্তু একি! যে বেগে প্লাবন .. সেই বেগেই কি ভাঁটা! চুম্বকের বিপরীত মেরুর মতো যে বেগে আকর্ষণ তার চেয়েও দ্রুত বেগে দূরে সরে যাওয়া .. যেনো সমমেরুতে তুমুল বিকর্ষণ। তৃষ্ণার এক ফোঁটা জল যেমন স্বস্তির চেয়ে তৃষ্ণাকে আরো বাড়ায় তেমনি অসমাপ্ত সেই চুম্বন যেনো ওদের দুজনের অস্থিরতাকে আরো বাড়িয়ে দিলো।‌ এতদিনকার তৃষ্ণার্ত চাওয়া কি আর এই ক’সেকেন্ডে নিবারণ সম্ভব! হয়তো আবার প্লাবন আসবে .. চুম্বনের বন্যায় ছাপিয়ে যাবে দু’কূল .. হয়তো বা এই অসমাপ্ত চুম্বনের হাহাকার বোধহয় এ জন্মে আর ঘুচবে না।

★★★★

হিয়া বাড়ি ফিরে গেছে অনেকক্ষণ। গোগোল অবশ্য তাকে অনেকবার অনুরোধ করে বলেছিলো "মামণি তো একটু পরেই চলে আসবে। একসঙ্গে লাঞ্চ করে  বাড়ি যেও, আমি তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসবো।" উত্তরে হিয়া জানিয়েছিল - আজ সে এমন অমৃত পান করেছে যে, পৃথিবীর কোনো ভালো খাবার আজ আর তার মুখে রুচবে না। বাড়ি থেকে গানের কলেজে যাচ্ছে বলে সে বেরিয়েছে। এমনিতেই অনেকটা দেরি হয়ে গেছে, আর বেশি দেরি করলে তার মা চিন্তা করবে। তাছাড়া গোগোল এখন তাকে পৌঁছে দিতে গেলে সেটা যদি তার মায়ের চোখে পড়ে, তাহলে আবার হাজারটা কথা উঠবে। গোগোলকে হয়তো অনেক অপমান সহ্য করতে হবে। তাই হিয়া জানিয়ে দিলো .. সে একাই ফিরবে। তবে রেলপাড়ের বস্তি থেকে বেরোনোর পর একজোড়া চোখ যে তাকে ক্রমান্বয়ে অনুসরণ করছিলো, সেটা হিয়া বুঝতে পারেনি।

কামরাজের ফোন এসেছিলো গঙ্গানগর পুলিশ স্টেশনে নতুন জয়েন করা সাব-ইন্সপেক্টরের কাছে। একদা গঙ্গানগর ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের জেনারেল ম্যানেজার, অধুনা এলাকার সবথেকে বড় ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট কামরাজের বাড়িতে আজ সন্দীপের দুপুরের খাবার নিমন্ত্রণ।

গন্তব্যে পৌঁছাতে গেলে রেলপাড়ের বস্তির উপর দিয়ে যেতে হবে তাকে .. এটা ভেবেই মেজাজটা খিঁচড়ে গেলো সন্দীপের। দুপুরবেলা থানা থেকে নিজের কোয়ার্টারে ফিরে ফ্রেশ হয়ে গাড়ি চালিয়ে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাওয়ার সময় সন্দীপ ফুটপাথের ধারে একজন অর্ধোলঙ্গ মাঝবয়সী মহিলাকে বসে থাকতে দেখলো। প্রথম দর্শনেই তার পুলিশের চোখ বুঝতে পারলো মহিলাটি মানসিক ভারসাম্যহীন। পাগলী গোছের মহিলাটির মাথায় একটা গামছা বাঁধা আর শরীরের বস্ত্র বলতে .. একটি শতচ্ছিন্ন শাড়ি কোনোরকমে গায়ে জড়ানো রয়েছে। যার ভেতরে না আছে কোনো অতিরিক্ত বস্ত্রখন্ড, না আছে কোনো অন্তর্বাস।

দৃশ্যটা দেখেই সন্দীপের দুই পায়ের মাঝের পুংদন্ডটি অতিমাত্রায় উত্তেজিত হয়ে উঠলো। অর্ধনগ্ন নারীর রূপ দেখার লোভ সামলাতে না পেরে গাড়ি থামিয়ে দাঁড় করালো ফুটপাতের পাশেই। গাড়ি থেকে নেমে সামনেই একটা পান-বিড়ির দোকান থেকে সিগারেট কিনলো। তারপর এমন একটা ভাব করে গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে স্মোকিং করতে লাগলো, যেনো কিছুই ঘটেনি, এই মুহূর্তে এই ভাবেই তাকে ধূমপান করতে হবে। নিজেকে অতি চালাক ভেবে নেওয়া সন্দীপের সিগারেট কেনাটাতো শুধুমাত্র একটা অজুহাত, আসলে মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাটির শতচ্ছিন্ন কাপড়ের মধ্যে দিয়ে উঁকি মারা গোপন অঙ্গগুলি দেখে নেওয়াই তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো।

রাজকীয় কায়দায় সিগারেট টানতে টানতে পুনরায় পান বিড়ির দোকানটার কাছে গিয়ে দোকানদারকে সন্দীপ জিজ্ঞাসা করলো "এই শোন, ওই পাগলীটা কবে থেকে এখানে আছে রে? ওর বাড়ি কোথায়? তোদের এলাকাতেই থাকে, নাকি অন্য কোনো জায়গা থেকে উদয় হয়েছে?"

"তুই-তুকারি করবেন না স্যার, সম্মান দিয়ে কথা বলতে শিখুন, তাহলেই সম্মান পাবেন .. না হলে নয়। আর ওর বাড়ি কোথায় জেনে আপনার কি দরকার?" উত্তর করলো দোকানদার।

"এই .. একদম গলা উঁচু করে কথা নয় .. তোকে আমি চিনতে পেরেছি। তোর নাম তো রাজু .. তোদের বস্তির নেতা অনির্বাণের পেছনে ঘুরঘুর করিস।" একটু মেজাজ দেখিয়ে কথাগুলো বললো সন্দীপ। "অনির্বাণ মানে গোগোল আমাদের সকলের বন্ধু .. ওকে আমরা সবাই চোখ বন্ধ করে ভরসা করি এবং ভালোবাসি। আপনার সঙ্গে কোনো এক কালে ও পড়াশোনা করতো বলে হয়তো ওকে আপনার করা তুই-তুকারি ও মেনে নিলেও আমি কিন্তু নেবো না, শেষবারের মতো বলছি স্যার।" বেশ উত্তেজিত হয়ে কথাগুলো বললো রাজু।
[+] 9 users Like Bumba_1's post
Like Reply
এমনিতেই এই মুহূর্তে সে একা আছে .. তার উপর 'অন ডিউটিতে' নেই। এখন যদি রাজু দল-বল নিয়ে এসে তার উপর চড়াও হয় তাহলে মানসম্মান নিয়ে এখান থেকে ফেরা মুশকিল হয়ে যাবে তার পক্ষে। তাই আর বাগবিতণ্ডায় না গিয়ে গলাটা একটু নরম করে সন্দীপ বললো "আরে বাবা আমি এমনি জিজ্ঞাসা করছি .. ওকে তো আগে এখানে দেখিনি, তাই জানতে চাইছি ওর বাড়ি আছে, নাকি রাস্তাতেই থাকে?"


সাব-ইন্সপেক্টর গলার স্বর নরম করায় রাজুও স্বাভাবিকভাবেই বললো "নাহ্ বাড়িঘর কিছু নেই .. ও রূপসা .. বেশ কয়েকদিন হলো হীরাবাঈয়ের কোঠা থেকে বিতাড়িত হয়ে কোথায় যেন চলে গিয়েছিল। আজ সকাল থেকেই ওকে এখানে দেখছি .. ব্যবস্থা অবশ্যই একটা নেওয়া হবে।"

"ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারলাম না .. যদি একটু খোলসা করে বলো তাহলে খুব ভালো হয় রাজু ভাই .." ব্যাপারটার মধ্যে একটা রহস্যের গন্ধ পেয়ে গলায় যেন আরো কিছুটা মধু ঢেলে কথাগুলো বললো সন্দীপ।  

"কি আর বলবো স্যার .. খুবই দুঃখজনক ঘটনা। বলতেও খারাপ লাগে, ভাবতেও খারাপ লাগে। তখন আমরা খুব ছোট, পরবর্তীতে স্বপন কাকার মুখে যেটুকু শুনেছি .. গ্রামের সহজ-সরল মেয়ে রূপশ্রীকে ফুঁসলিয়ে বিয়ে করে তার স্বামী বিয়ের প্রথম রাতেই তাকে মালবাজারে হীরাবাঈয়ের কোঠায় বিক্রি করে দেয়। এখানে আসার পরে প্রথম বেশ কয়েকটা রাত সদ্য কুড়িতে পা দেওয়া মেয়েটির রাগ, তেজ, ক্ষোভ, বিদ্রোহ অতিমাত্রায় প্রকাশ পেলেও পরবর্তীতে কোঠার মালকিন কর্তৃক অত্যাধিক প্রহার এবং দুর্বৃত্তদের দ্বারা উপর্যুপরি বলপূর্বক সম্ভোগের ফলে অনেকটা স্তিমিত হয়ে এসেছিলো মেয়েটির প্রতিবাদ। হয়তো সবকিছুই তার নিষ্ঠুর ভাগ্যের পরিহাসের উপর ছেড়ে দিয়েছিলো সে। সময় যত গড়িয়েছে কোঠার পরিবেশের সঙ্গে ততটাই মানিয়ে নিয়েছে সে। রূপশ্রী থেকে পাল্টে রূপসা হয়ে যায় তার নাম। এক সময় এই মহিলা রাজ করেছে হিরাবাঈয়ের কোঠায়। যৌবনকালে রূপসা এলাকার বিধায়ক মানিক সামন্তর বাঁধা মেয়েমানুষ ছিলো। কিন্তু এই পেশায় শরীরের বয়স বাড়লে সে মূল্যহীন হয়ে পড়ে। রূপসার ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছিল। তবে মানিক সামন্ত তার নৌকার দড়ি অন্য ঘাটে বাঁধলেও, এতদিন বঞ্চিত থাকা অন্যান্য কাস্টমারের দ্বারা টুকটাক রোজগার হচ্ছিলো রূপসার। কিন্তু ভাগ্যের এই নিষ্ঠুর পরিহাসে বাধ সাধলো তার শরীর। জটিল যৌনরোগ ধরা পড়লো রূপসার .. ব্যাস আর কি .. হীরাবাঈয়ের কোঠার প্রতি এই মহিলার এতদিনের কন্ট্রিবিউশন ভুলে গিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হলো ওখান থেকে। বাকিটা তো দেখতেই পারছেন।" সবিস্তারে জানালো রাজু।

"ওহ্ .. জটিল যৌনরোগ মানে তো মাগীটার এইডস হয়েছে মনে হয়, তাই না? তা তো হবেই, কোন কাস্টমার কখন প্রটেকশন ছাড়া ঠেপে দিয়ে চলে যাচ্ছে, কার কি রোগ আছে ভগবান জানে। সেখান থেকেই তো রেন্ডিগুলোর এইসব অসুখ হয়। এদের মধ্যে আবার অনেকে সেইসব রোগের কথা চেপে রেখে আমাদের সমাজের আরো ক্ষতি করে। এটা একটা ক্রাইম, ঠিক করেছে মাগীটাকে তাড়িয়ে দিয়েছে ওখান থেকে। আমি এখনই আমার হায়ার অথরিটিকে জানিয়ে এসব ফালতু এলিমেন্টকে এখান থেকে সরানোর ব্যবস্থা করছি।" তাচ্ছিল্য ভরে কথাগুলো বলছিলো সন্দীপ। 

"এই ভুলটা করার একদম চেষ্টা করবেন না ইন্সপেক্টর সাহেব। এটা রেলপাড় এলাকা .. এখানে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গাছের একটা পাতাও নড়ে না। রাস্তার ধারে ওঁকে ওইভাবে বসে থাকতে দেখে হঠাৎ করেই আপনার গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়া, তারপর রাজুর দোকান থেকে সিগারেট কিনে আড়চোখে ওঁর দিকে তাকিয়ে স্মোকিং করতে থাকা .. আপনার এই সমস্ত কার্যকলাপ আমি এতক্ষণ দূর থেকে লক্ষ্য করছিলাম। অসুখটা শুনেই মজা চটকে গেলো তাই না? যে বদ মতলব নিয়ে আপনি প্রশ্নগুলো করছিলেন রাজুকে, যেই শুনলেন সেটা আর সম্ভব নয় তখনই নীতি-পুলিশগিরি শুরু হয়ে গেলো? আমি একটু আগেই খবর পেলাম .. তাই সঙ্গে করে জামাকাপড় নিয়ে এসেছি ওঁকে দেওয়ার জন্য। তারপর একটা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ঠিক আমরাই করে দেবো। এই বিষয়ে আপনার মাথা ঘামানোর দরকার নেই। এখন কেটে পড়ুন এখান থেকে।" হঠাৎ করে আবির্ভূত হয়ে গম্ভীর গলায় কথাগুলো বললো গোগোল।

একদা তার বন্ধু এবং বর্তমানে তার সব থেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী অনির্বাণের মুখে কথাগুলো শুনে রাগে অপমানে গা জ্বলে উঠলো সন্দীপের। কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো, সেই মুহূর্তে পকেটে থাকা মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো তার। সাইডে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করে দু-একটা কথা বলার পর গোগোলের দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে গাড়িতে উঠে বেরিয়ে গেলো সন্দীপ।

★★★★

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। গোগোলের বিশ্বস্ত বন্ধু মাছ ব্যবসায়ী সুবীরের সন্ধ্যের পর থেকে সেই অর্থে ব্যবসা সংক্রান্ত কোনো কাজ থাকে না। বাস থেকে লোকটা গঙ্গানগর টার্মিনাসে নামার পর থেকেই তার দিকে নজর রেখেছে সুবীর। কারণ লোকটাকে কিছুটা দিশেহারা মনে হচ্ছে তার। মাঝবয়সী শীর্ণকায় লোকটা যে স্থানীয় নয়, তা তার হাবভাবই বলে দিচ্ছে। এইসময় টার্মিনাসের চারিদিকে বেশ ভিড় থাকে। খবরটা আগে থেকেই ছিলো, তাই সুবীরের নজর তার মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটাকে খুঁজে নিয়েছে। সেটা হলো লোকটার হাতে থাকা একটা ব্রিফকেস।

 টার্মিনাস থেকে বড়বাজারের চৌমাথার মোড় পর্যন্ত যাওয়ার পথে ভিড়ের মধ্যে লোকটা বারবার তার হাতের ব্রিফকেসটার দিকেই তাকাচ্ছে। সুবীর লক্ষ্য করলো লোকটার কপাল-গাল-মুখ বেয়ে বেশ ঘাম ঝরছে। তার মানে খবরটা সম্ভবত পাকা, সেইজন্যেই ভিড়ের মধ্যে অতি সতর্কিত লোকটা। ভিড় ঠেলে চৌমাথার মোড়ে এসে দ্রুত এগিয়ে গেলো ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের দিকে। এখনই তাড়াহুড়ো করলে হবে না, ধীরেসুস্থে কার্যসিদ্ধি করতে হবে। ছায়ার মতো লোকটার পিছু নিলো সুবীর।

লোকটা প্রি-পেইড ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের কাউন্টারে এসে ট্যাক্সি বুকিংয়ের জন্য কাউন্টারে কথা বলতে লাগলো। ঠিক তখনই চুপিসারে তার একেবারে গা ঘেষে দাঁড়ালো সুবীর। ট্যাক্সির ভাড়া ঠিক হওয়ার পর নিজের প্যান্টের পেছনের পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে ট্যাক্সি ভাড়া দেওয়ার জন্য দুটি হাত ব্যবহার করতে হবে বলে লোকটা মুহুর্তের জন্য তার হাতের ব্রিফকেসটা মাটিতে নামিয়ে রাখলো .. ব্যাস, ওইটুকু সময়ই যথেষ্ঠ। তৎক্ষণাৎ ব্রিফকেসটা তুলে নিয়ে দ্রুত দৌড়োতে লাগলো সুবীর। লোকটাও সেই মুহূর্তে নিজের ব্রিফকেস তুলতে গিয়ে দেখলো সেটা নেই, সঙ্গে সঙ্গে ঘাড় ঘোরাতেই সে দেখতে পেলো একটা অল্পবয়সী গাট্টাগোট্টা ছেলে সেটা নিয়ে দ্রুত দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। লোকটাও ‘চোর চোর’ বলে চেঁচিয়ে সুবীরের পেছনে দৌড়ালো। এমনিতেই ভারী চেহারা, বেশি দৌড়ালে হাঁপিয়ে যায়। এমত অবস্থায় টার্মিনাস চত্বরের বাইরের দিকে গেলে তাকে ধরে ফেলা সহজ হবে, তাই বাস টার্মিনাসের দিকে যাওয়া যাত্রীদের ভিড়টাকে কাজে লাগিয়ে তাদের মধ্যে গা ঢাকা দিয়ে থাকার চেষ্টা করলো সুবীর। লোকটাও তাকে ধাওয়া করতে করতে সেই ভিড়ের কাছাকাছি এসে খেই হারিয়ে ফেললো। এতবড় বাস টার্মিনাসে লোকটার ‘চোর চোর’ বলে চেঁচানো স্বত্ত্বেও দূরপাল্লাগামী বাসের যাত্রী হতে যাওয়া বা বাস থেকে নেমে বড় রাস্তার দিকে আসা যাত্রীদের মধ্যে কেউ তার কথায় কর্ণপাত করছিলো না। সবাই কলের পুতুলের মতো শুধু নিজের নিজের কাজ-গন্তব্য নিয়ে ব্যস্ত। 

লোকটা এদিক ওদিক তাকিয়ে সুবীরকে দেখতে না পেয়ে আবার অন্যদিকে তাকে খোঁজার জন্য এগোলো। লোকটার মুখচোখের অবস্থা বারবার বলে দিচ্ছে তার মনের মধ্যে বিশাল উৎকণ্ঠার উথাল-পাথাল চলেছে। এতক্ষণে দূরপাল্লার বাসগুলো সব ছেড়ে দিয়েছিলো। নতুন কোনো বাসের আগমনও ঘটেনি এখনো .. তাই আশেপাশের ভিড় বেশ কিছুটা হাল্কা হয়ে গিয়ে চারপাশ অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। সেই মুহূর্তে লোকটা দেখতে পেলো কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে সুবীর তার হাতে ব্রিফকেসটা নিয়ে দু'জন লোকের সঙ্গে কথা বলছে। "ওই তো আমার ব্রিফকেস আর এই তো সেই চোর .." এই বলে দ্রুতপায়ে এগিয়ে এলো সে। ব্রিফকেসটা পুনরায় দেখতে পাওয়ার উত্তেজনায় সুবীরের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা দু'জন লোকের পোশাকের দিকে সেভাবে তাকায়েনি লোকটি। অতঃপর সুবীরের আরো কাছে এসে থমকে গেলো সে .. দু'জন পুলিশের ইউনিফর্ম পড়া লোক দাঁড়িয়ে আছে।

দু'জনের মধ্যে পুলিশের পোশাক পড়া প্রথমজন লোকটাকে দেখে জিজ্ঞাসা করলো "এই ব্রিফকেস আপনার?’' লোকটা সুবীরের হাতের ব্রিফকেসটার দিকে তাকালো, তারপর পুলিশদের দিকে একটা কম্পিত দৃষ্টি দিয়ে বললো, "আজ্ঞে হ্যাঁ, এটা আমার। ওই প্রি-পেইড ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে ভাড়া মেটানোর সময় এই ছোকরা নিয়ে পালিয়েছিলো, সেই থেকে আমি এই বাস টার্মিনাস জুড়ে হন্যে হয়ে ওকে খুঁজছি। আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ ছেলেটিকে ধরার জন্য। এবার দয়া করে আমার জিনিস আমাকে দিয়ে দিন .. একটু তাড়া আছে।"

দ্বিতীয় পুলিশ কর্মীটি এবার কিছুটা গম্ভীর গলায় জিজ্ঞাসা করলো, '‘আরে এত তাড়া কিসের মশাই? কি আছে এই ব্রিফকেসে?’' লোকটা একটু আমতা আমতা করে জবাব দিলো "আজ্ঞে সেরকম কিছু নয়, একটা ফাইল আর জরুরী কিছু কাগজপত্র।" লোকটির কথা শোনার পর এবার প্রথমজন সুবীরের কাছ থেকে  ব্রিফকেসটা‌ নিয়ে একটু ঝাঁকিয়ে বললো '‘ফাইল বা কাগজের তুলনায় এটা বেশ ভারী। এতে অন্য কিছু আছে, আপনি যদি এটার মালিক হন তাহলে নিশ্চয়ই এর লকের চাবি আছে আপনার কাছে .. এটা খুলুন।" 

লোকটা কেমন যেন একটু ঘাবড়ে গেলো। সে বলে উঠলো, ‘'এটা আমার স্যার, আমি সত্যি কথাই বলছি। সেরকম কিছু নেই এটার মধ্যে .. অফিসের কনফিডেন্সিয়াল জিনিস তো সবার সামনে দেখানো উচিত নয়।" প্রথম পুলিশ কর্মীটি বললেন, "এই ছেলেটিও দাবী করছে এই ব্রিফকেসটা ওর। আমরা তো কাউকেই চিনি না, কি করে বুঝবো কে সত্যি বলছি আর কে মিথ্যে? আপনি হয় এর চাবি খুলুন, না হলে আমরা এটা বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যাচ্ছি। পরে থানায় এসে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে এটাকে নিয়ে যাবেন।" 

‘"না না স্যার, আ..আমি খুলছি, এখনই খুলছি .." এই বলে লোকটা পকেট থেকে ব্রিফকেসের লকের চাবি বের করলো। ততক্ষণে পুলিশের আরও দু'জন কর্মী এবং তার সঙ্গে সিনিয়র ইন্সপেক্টর গোস্বামী অকুস্থলে এসে হাজির হয়েছেন। লোকটা ব্রিফকেসটা মাটিতে রেখে লকের মধ্যে ঢুকিয়ে আস্তে আস্তে চাবি ঘোরালো .. লক খোলার শব্দ হলো। তারপর বাইরের দিকের দুটো চাবি খুললো। পুলিশ কর্মীদের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে হঠাৎ লোকটা ব্রিফকেসের ঢাকনা খুলে একটা রিভলবার বের করে আনলো। দৃশ্যটা দেখামাত্রই ওখানে উপস্থিত সুবীর আর বাকি পুলিশকর্মীরা কিছুটাই ইতস্ততঃ করে কয়েক পা পিছিয়ে গেলেও, মুহূর্তের মধ্যে যেন দেবদূতের মতো উদয় হয়ে গোগোল ঝঁপিয়ে পড়লো রিভলবারধারী লোকটার ওপর।

 ওই লোকটা তার রিভলবার থেকে একটা গুলিও চালালো, কিন্তু সেটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলো। ততক্ষণে গোগোল তাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরেছে। বাকি পুলিশকর্মীরা দ্রুত লোকটাকে কব্জা করে তার হাত থেকে রিভলবারটা ছিনিয়ে নিলো। "অনেক নাটক করেছো বাছাধন .. এইবার তোমার খেল খতম .." এই বলে সিনিয়র ইন্সপেক্টর মিস্টার গোস্বামী লোকটার ব্রিফকেসের ভেতরে তাকাতেই তার মধ্যে বেশ কিছু মোটা মোটা সাদা পাউদারের প্যাকেট দেখতে পেলেন। একটা প্যাকেট বের করে সেটার প্লাস্টিক কভার খুলে ভেতরে একটু শুঁকে নিয়েই বললেন, '‘এ তো নিষিদ্ধ ড্রাগস মনে হচ্ছে .. তাও আবার বেশ ভালো পরিমাণে। খবরটা তার মানে একশো শতাংশ সত্যি। থ্যাঙ্ক ইউ  অ্যান্ড হ্যাটস অফ টু ইউ অনির্বাণ এন্ড কোং .. এই সবকিছুই আজ সম্ভব হয়েছে তোমাদের নির্ভীক সাহসিকতার জন্য .. এর পুরস্কার তোমরা অবশ্যই পাবে।"

তারপর নিজের অধস্তন কর্মীদের লোকটাকে দেখিয়ে বললেন, "ইমিডিয়েটলি এরেস্ট করো একে। এর কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে এর পেছনের আসল মাথাটি কে .. সেই তথ্য বের করতে হবে। এছাড়া নারকোটিক্স বিভাগকেও খবর দিতে হবে দ্রুত।" সিনিয়র ইন্সপেক্টর গোস্বামীর অর্ডার পেয়েই উপস্থিত পুলিশকর্মীদের একজন গোগোলের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করে লোকটিকে বামাল সমেত নিয়ে গেলো থানায়।

কামরাজের বাড়িতে দুপুরে খাওয়ার নিমন্ত্রণ থাকলেও, নিজের কোয়ার্টারে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছিল সন্দীপের। তার চোখমুখের চেহারা কিরকম যেন পাল্টে গিয়েছিলো। "ইতনা দের লাগিয়ে দিলেন স্যারজি .. পুলিশ স্টেশন সে আপকে লিয়ে ফোন আয়া থা .. ওরা বলছিল কি আপনার মোবাইল সুইচ অফ আছে। কুছু খাবেন? চা বানিয়ে দেবো?" বৃদ্ধ আর্দালির এই প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে "যাও এখান থেকে .. বিরক্ত করো না .." এইটুকু বলে বাথরুমে ঢুকে গেলো সন্দীপ।

(ক্রমশ)


ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 15 users Like Bumba_1's post
Like Reply
দুটি লাইক একটি রেপু ডান রেপু শেষ তাই একটা দিলাম রাতে আরামসে পড়ে আবার কমেন্ট করবো।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
উফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ এই পর্ব পড়ে রীতিমতো ঘেমে উঠতে হলো হালকা। শুধুই শরীরী উত্তেজনায় এমন হয়না, লেখনীর জাদুতে প্রেমের পবিত্র বহিঃপ্রকাশও আগুন ধরায় বুকে। আমাদের গোগোলুয়া যা খেল দেখালো আজকে উফফফফফ! ওদিকে হিয়াকে যা সব বললো ওই ছেলে। একই মস্তিষ্কে তার যেমন দানব রূপ লুকিয়ে, তেমনি লুকিয়ে ভালোবাসার কাঙাল এক বালক। হিয়া আর গোগোলের ওই তুই থেকে তুমির মুহুর্তটা কে স্যালুট ♥️

কিন্তু হিয়া কি নতুন কোনো বিপদে? ওর যেন কিচ্ছুটি না হয়। তাহলে যে কারো একজনের ভিতরের সেই দানব দখল করবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আর তারপরে ধ্বংসলীলা চলবে!!

সন্দীপ বাবু যে সর্বগুনসম্পন্ন আজ টের পেলাম। ছেলে আর কুচুমনা নেই যে। পুরো বড়ো হয়ে গেছে। পায়ের মাঝের অঙ্গ বড়ো হতে হতে মাথা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেলো।

আর শেষে গোগোলের কেরামতি পুরো চুমু
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(30-11-2022, 09:14 PM)Boti babu Wrote: দুটি লাইক একটি রেপু ডান রেপু শেষ তাই একটা দিলাম রাতে আরামসে পড়ে আবার কমেন্ট করবো।

আচ্ছা ঠিক আছে  Smile পড়ে ফিডব্যাক দিও 
[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
(30-11-2022, 09:31 PM)Baban Wrote: উফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ এই পর্ব পড়ে রীতিমতো ঘেমে উঠতে হলো হালকা। শুধুই শরীরী উত্তেজনায় এমন হয়না, লেখনীর জাদুতে প্রেমের পবিত্র বহিঃপ্রকাশও আগুন ধরায় বুকে। আমাদের গোগোলুয়া যা খেল দেখালো আজকে উফফফফফ! ওদিকে হিয়াকে যা সব বললো ওই ছেলে। একই মস্তিষ্কে তার যেমন দানব রূপ লুকিয়ে, তেমনি লুকিয়ে ভালোবাসার কাঙাল এক বালক। হিয়া আর গোগোলের ওই তুই থেকে তুমির মুহুর্তটা কে স্যালুট ♥️

কিন্তু হিয়া কি নতুন কোনো বিপদে? ওর যেন কিচ্ছুটি না হয়। তাহলে যে কারো একজনের ভিতরের সেই দানব দখল করবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আর তারপরে ধ্বংসলীলা চলবে!!

সন্দীপ বাবু যে সর্বগুনসম্পন্ন আজ টের পেলাম। ছেলে আর কুচুমনা নেই যে। পুরো বড়ো হয়ে গেছে। পায়ের মাঝের অঙ্গ বড়ো হতে হতে মাথা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেলো।

আর শেষে গোগোলের কেরামতি পুরো চুমু

প্রথমেই জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ  Namaskar আমার উপন্যাসের এই পর্বটি যে তোমার ভালো লেগেছে তার জন্য আমি যৎপরোনাস্তি আপ্লুত।

কিন্তু হিয়া কি নতুন কোনো বিপদে? ওর যেন কিচ্ছুটি না হয়। তাহলে যে কারো একজনের ভিতরের সেই দানব দখল করবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আর তারপরে ধ্বংসলীলা চলবে!! তোমার আমার বন্ধুত্ব এবং মধুর সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই বলছি .. এই উক্তির মধ্যে একজন লেখকের প্রতি একজন পাঠকের একটা প্রচ্ছন্ন হুমকির আভাস পেলাম  Big Grin Big Grin এর উত্তরে আমি এখনই কিছু বলতে পারছি না‌ .. দেখা যাক কি হয় ভবিষ্যতে।
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
(30-11-2022, 09:42 PM)Bumba_1 Wrote:
প্রথমেই জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ  Namaskar  আমার উপন্যাসের এই পর্বটি যে তোমার ভালো লেগেছে তার জন্য আমি যৎপরোনাস্তি আপ্লুত।

কিন্তু হিয়া কি নতুন কোনো বিপদে? ওর যেন কিচ্ছুটি না হয়। তাহলে যে কারো একজনের ভিতরের সেই দানব দখল করবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আর তারপরে ধ্বংসলীলা চলবে!! তোমার আমার বন্ধুত্ব এবং মধুর সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই বলছি .. এই উক্তির মধ্যে একজন লেখকের প্রতি একজন পাঠকের একটা প্রচ্ছন্ন হুমকির আভাস পেলাম  Big Grin Big Grin  এর উত্তরে আমি এখনই কিছু বলতে পারছি না‌ .. দেখা যাক কি হয় ভবিষ্যতে।

আরে নানা এই হুমকি আমার নয় হে লেখক। যদিও দৃঢ় ভাবে তাও বা বলি কিকরে Big Grin

উল্লেখিত ওই লাইনের মধ্যে যে ব্যাক্তির কথা বলেছি তিনি হলেন যার একই অঙ্গে দুই রূপ বর্তমান। আমি এটাই বলতে চেয়েছি যেন ওই দ্বিতীয় রূপ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না নিয়ে নেয় দেহের। নইলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে সেই পুরুষ যার প্রাণ লুকিয়ে দুই নারীর অন্তরে। এক তার মা আরেক হলো প্রেমিকা।

বাকি তো লেখকের কেরামতি।
Big Grin
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(30-11-2022, 09:57 PM)Baban Wrote: আরে নানা এই হুমকি আমার নয় হে লেখক। যদিও দৃঢ় ভাবে তাও বা বলি কিকরে Big Grin

উল্লেখিত ওই লাইনের মধ্যে যে ব্যাক্তির কথা বলেছি তিনি হলেন যার একই অঙ্গে দুই রূপ বর্তমান। আমি এটাই বলতে চেয়েছি যেন ওই দ্বিতীয় রূপ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না নিয়ে নেয় দেহের। নইলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে সেই পুরুষ যার প্রাণ লুকিয়ে দুই নারীর অন্তরে। এক তার মা আরেক হলো প্রেমিকা।

বাকি তো লেখকের কেরামতি।
Big Grin

একদম তাই .. দেখা যাক কি হয়  Smile
Like Reply
আহা দাদা আজ যে শিক্ষকের ভুমিকা নিয়ে নিলে।
এতো সুন্দর একখানা ক্লাস নিলে যে এখন মনে হচ্ছে আগে কিছুই জানতাম না বিষয়টা সম্পর্কে আজ যেন জ্ঞান ভান্ডারের দেখা পেলাম। প্রেম কাম ভালোবাসা চাহিদা সব এক সূত্রে গাঁথা তবে কে কার আগে আসবে বা কে কার পরে এসে পূর্ণতা দিবে সেটাই দেখার বিষয়। তবে এতো ভারী ভারী কথা ছোট্ট হিয়ার মাথায় তো ঢুকলো না তবে মনে যে দাগ কেটেছে সেটা বুঝাই যাচ্ছে।
মস্তিষ্ক যতই জানুক প্রিয় আমারে ভালোবাসে তবে মাঝে মাঝে অবুঝ হয়ে যাওয়া মন প্রিয়র মুখ থেকেই শুনতে চায় একবার নয় বারবার। আজ যে সেটার মিলন দেখলাম।

একজোড়া চোখ হিয়ার পিছু করছে! রণিতার লোক নয় তো? কিছু হলে কিন্তু কাউকে ছাড়বো না। হিয়া কেউ হারালে গোগোলের ভেতরের আগ্নেয়গিরি কিন্তু সব ধ্বংস করে দিয়ে যাবে।

এই রূপসা তো সেই রূপসা!
এখনো বুঝতে পারলাম না সন্দ্বীপ এর সমস্যা টি গোগোলের সাথে?? মাঝখানে বৃহৎ একটা অংশ জানা না গেলে সেটা বুঝা যাবে না।
গোগোল ওখানে পৌঁছালো কি করে?? আর লোকটাই বা কে? হারাধনের ছেলেদের সাঙ্গপাঙ্গ?
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
এখনো অনেক বাকি ছবি মাত্র শুরু হয়েছে । অসাধারণ ভাবে কাম আর ভালোবাসার ব্যাখ্যা দিলা । গোগোল আর হিয়া প্রথম প্রমঘন চুম্বন সাথে হিয়াকে বুঝানো এক কথাই দারুণ। আমাদের সমাজে এমন অনেক কীট আছে যারা রাস্তার পাগলকেও ভোগের বস্তু ভাবে, বাস্তবে দেখেছি , আমি ওখন তবলা শিখতাম মিউজিক কলেজে সন 1998 হবে ক্লাস 6 এ পড়ি মিউজিক কলেজের সামনে এক নগ্ন বছর 25/30 পাগলি বসে থাকতো যদিও ভয়ে তার দিকে তাকাতাম না। সরকার থেকে অনেক বার ওকে মানসিক রোগের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ও বারবার সেখান থেকে পালিয়ে এসেছিল। একদিন কলেজে সামনে দেখলাম ওবসে আছে আর ওর পেট ভীষন ভাবে ফুলে আছে। দিন যায় মাস যায় তার পেট ফুলতে থাকলো তারপর সরকার থেকে ডেলিভারির সময় হসপিটাল ভর্তি করা হয়। মিউজিক কলেজের কাছাকাছি সরকারি হাসপাতাল আর হাসপাতালের কাছাকাছি আমার কলেজ ছিল তাই সব দেখতাম আশা যাওয়ার সময়। ওর একটা ফুটফুটে ছেলে হয়। সরকার থেকে বাচ্চাটাকে সরকারি হোমে দিয়ে দেয় তার পর ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ঐ পাগলির বাচ্চার বাবা কে ছিল????
পাগলের কাহিনীর এখানেই শেষ নয় তার আরেকটা বাচ্চা হয়ে ছিল ও নগ্ন হয়ে পুরু শহর ঘুরে বেড়াতো ঐ সাত মাসের গর্ভবতী অবস্থায়। দেখতাম কত হায়নার চোখ ওর দিকে তাকিয়ে থাকতো।
এখানেও প্রশ্ন পাগলির দ্বিতীয় বাচ্চার বাবা কে?????
এখানেই যদি ঐ পাগলির কাহিনীর শেষ হলে মনে হয় ভালো হতো কিন্তু তারপরে যা হয়েছিল ওর সঙ্গে তা বলতে সত্যিই পারবো না।
আর ইচ্ছা করছে না কিছু বলতে দাদা।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
ফাটাফাটি আপডেট দাদা......হিয়ার ও ভবিষ্যৎ কি রকম আছে বর্তমানে লেখক ছাড়া কেউ জানে না .... waiting more
[+] 1 user Likes Rinkp219's post
Like Reply




Users browsing this thread: 39 Guest(s)