Thread Rating:
  • 159 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL গোলকধাঁধায় গোগোল (সমাপ্ত)
(23-11-2022, 11:59 AM)Bumba_1 Wrote:
অবশ্যই  Heart Heart Heart Heart

আপডেট কৈ
Cool
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(24-11-2022, 11:44 AM)ddey333 Wrote: আপডেট কৈ
Cool

লে হালুয়া  Shy ২৪ তারিখ রাতে আপডেট দেওয়ার কথা ছিলো, আজই তো ২৪ তারিখ 
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
(24-11-2022, 02:18 PM)Bumba_1 Wrote: লে হালুয়া  Shy  ২৪ তারিখ রাতে আপডেট দেওয়ার কথা ছিলো, আজই তো ২৪ তারিখ 

ওহ , আচ্ছা তাই তো !!

Dodgy
Like Reply
বুম্বা দা রাত ৮ ঘটিকা পার হইয়া গেছেগা এহনো দেহি আপডেট দিলা না !!!!
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
[Image: Polish-20221124-204124306.jpg]


(৬)

সুজাতা হসপিটাল থেকে বিকেলের দিকে বাড়ি ফিরলো। এইসময় বাড়িতে গোগোলের থাকার কথা নয় .. ওর ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়। অন্যদিন বাইরে থেকে ফিরে থমথমে মুখে সোজা বাথরুমে ঢুকে যায় সে। তারপর খেতে বসে সুজাতার বিভিন্ন প্রশ্নবাণের সম্মুখীন হয়ে রাতের খাবার গলব্ধকরণ করতে করতে, শুধুমাত্র 'হুঁ' 'হ্যাঁ' 'পরে বলছি' .. এই জাতীয় উক্তি করে, একসময় খাওয়া শেষ হলে উঠে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিজের শোওয়ার ঘরে চলে যায়। তবে আজ গোগোলের রোজনামচার কিছুটা পরিবর্তন ঘটলো। সন্ধ্যের কিছু পরেই বাড়ি ফিরে এলো সে। সুজাতা লক্ষ্য করলো বাকি দিনগুলোর মতো বাড়িতে ঢুকে মুখ ব্যাজার করে না থেকে গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে হাতমুখ ধুয়ে, জামা কাপড় ছেড়ে রান্নাঘরের সামনে রাখা মোড়াটার উপর এসে বসলো গোগোল।

- "কি ব্যাপার? আজ অসময়ে বাড়িতে?"

- "যাব্বাবা, নিজের বাড়িতে আসবো তার আবার সময় অসময়ের কি আছে?"

- "আচ্ছা? তাই? এটাকে তুই নিজের বাড়ি বলে মনে করিস নাকি? এটা তো একটা হোটেল। একজন মাইনে করা কাজের লোক আছে না এই হোটেলে! যে জামা কাপড় কেচে দেবে, আয়রন করে দেবে, টাইমে টাইমে মুখে খাবার তুলে দেবে। আর তুই যখন খুশি বেরিয়ে যাবি, যখন খুশি ফিরবি। ইচ্ছে হলে খাবি, না ইচ্ছা হলে খাবি না। সেই জন্যই তো জিজ্ঞাসা করছি, এই অসময়ে বাড়িতে কেনো?

- "এ তো মহা বিপদে পড়ে গেলো দেখছি! দেরি করে ফিরলেও দোষ, তাড়াতাড়ি ফিরলেও দোষ .. হাম যায় তো লেকিন যায়ে কাহা? ভালো কথা, তোমাকে তো মাইনা দেওয়া হয় না, তুমি তো বিনা মাইনাতেই .. হেহে .."

- "একদম ইয়ার্কি করবি না, আমার মেজাজ একেবারেই ভালো নেই। এখন রুটি করছি, গরম চাটু ছুঁড়ে মেরে দেবো কিন্তু।"

- "এইতো সকালে টগরের সাথে কথা বলার পর এত হাসিখুশি মেজাজে বের হলে, এখন আবার মেজাজ খারাপ হলো কেন? হসপিটালে কিছু ঝামেলা হয়েছে নাকি? কোনো ক্রিটিক্যাল কেস?"

- "যার ঘরেই এরকম ক্রিটিকাল কেস আছে, তার আর হসপিটালের দরকার কি? আমি বেরিয়ে যাওয়ার পর হিয়া এসেছিল?"

- "হ্যাঁ মানে না মানে ..তু..তুমি জানলে কি করে?"

- "থাক, আর তোতলাতে হবে না। ও এসেছিল কেন? আজ হসপিটালে কাবেরীর সঙ্গে কথা হলো। ওর কাছ থেকেই জানতে পারলাম আজ নাকি হিয়াকে ওর আর সন্দীপের বিয়ে ঠিক হয়ে থাকার কথাটা বলার পর হিয়া প্রচন্ড রিয়্যাক্ট করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আমার তখনই সন্দেহ হয় ও এখানে এসেছিলো, কিন্তু আমি ওকে কিছু বলিনি। এমনিতেই যা কথা শোনাচ্ছিলো, এই কথা বললে না জানি .."

- "কথা শোনাচ্ছিল মানে? কি বলছিলো?"

- "কি আবার বলবে .. সন্দীপের গুনগান গাইছিলো। আর আমার গুণধর এই পুত্রটির গুষ্টির ষষ্ঠীপূজা করে ছেড়ে দিচ্ছিলো। বলছিলো, তুই খারাপ লোকের সঙ্গে মিশে খারাপ কাজকর্ম করিস। তোর স্বপক্ষে কথা বলার কোনো উপায় আছে আমার? শুধু ও কেনো, লোকজন আজকাল যা বলে বেড়াচ্ছে তোর সম্পর্কে, আমার তো কথা বলার কোনো জায়গাই নেই। তবে আমিও আজ দু'কথা শুনিয়ে দিয়েছি কাবেরীকে। অনেক বড় মুখ করে বলেছি ওকে .. আমার গোগোল কোনো খারাপ কাজ করতেই পারে না। কিন্তু তুই যে আমার মুখে চুনকালি দিবি .. সেটা তো আমি খুব ভালো করেই জানি। তবে একটা ব্যাপারেই খটকা লাগছে। বাড়ি ঢোকার মুখে হঠাৎ পঙ্কজ বাবুর সঙ্গে দেখা। সেদিনকে উনি যা বলেছিলেন, মানে তুই নাকি এই বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করে, বস্তিটাকে লালু আলমের হাতে তুলে দিবি। কিন্তু আজকে যা বললেন .. সেই কথার সঙ্গে আকাশ-পাতাল পার্থক্য .. উনি বললেন তোর জন্যই নাকি রেলপাড়ের এই বস্তি এখনো সুরক্ষিত আছে। এর তো মাথামুণ্ডু আমি কিছুই বুঝলাম না  .."

- "বলবো বলবো সব বলবো .. আজ যে আমাকে সব কথা খুলে বলতেই হবে। একই রাজনৈতিক দলের লোক হোলেও এলাকার বিধায়ক মানিক সামন্ত আর পার্টি প্রেসিডেন্ট লালু আলম এখন পরস্পরের শত্রু। তার প্রথম কারণ যদি হয় ক্ষমতা দখলের লড়াই, তাহলে দ্বিতীয় কারণ হলো এই বস্তি। গঙ্গানগরের প্রায় অর্ধেকের বেশি বস্তি এবং চওলগুলোকে বেআইনিভাবে অধিগ্রহণ করে সেখানে শপিংমল আর মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিং বানানোর প্রধান কারিগর সামন্ত আর তার ক্রাইম পার্টনার কামরাজের কু'নজর পড়েছে এই বস্তির উপর। এদিকে আলম সাহেবের শ্যেন দৃষ্টিও‌ আছে রেলপাড়ের এই বস্তিতে। তার একমাত্র কারণ হলো এই এলাকার পজিশন। কলেজ-কলেজ-বাজার থেকে শুরু করে হসপিটাল, রেলস্টেশন থেকে শুরু করে হাইওয়ে .. সবকিছু একেবারে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। এলাকার বিধায়ক এবং ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট  কামরাজের জোড়াফলা আটকাতে লালু আলমের এমন একজন ব্যক্তির দরকার ছিলো, যার এই রেলপাড়ের বস্তির প্রতিটা আনাচ-কানাচ একেবার নখদর্পণে এবং সেই ব্যক্তিকে এখানকার বেশিরভাগ মানুষ অন্তর থেকে ভালবাসে এবং চোখ বন্ধ করে ভরসা করে। সেইরকম মানুষ যে এখানে একমাত্র আমিই আছি, এ কথা আলম সাহেবের অজানা ছিলো না। কিন্তু শুধু ভালোবাসা আর ভরসা থাকলেই তো হয় না, তার সঙ্গে দরকার হয় ক্ষমতার .. যা আসে টাকা আর লোকবল থেকে। আমাদের ম্যান-পাওয়ার আরও সংগঠিত করার জন্য লালু আলম আমাকে টাকা দিচ্ছে আর সেই টাকা দিয়ে আমি এই বস্তির কাঞ্চন, সুবীর, রাজু .. এইরকম আরো অনেককে ব্যবহার করতে পারছি ওই দুই জোড়াফলার বিরুদ্ধে .. ওরা এখন এখানে আসার আগে দু'বার ভাবে। তুমি তো জানো মামণি, তোমার কাছে তো কিছুই অজানা নয়। যে মানুষগুলো আমার শৈশব এবং কৈশোর পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে, তাদের আমি কি করে ক্ষমা করি বলো তো মামণি? একে একে নিভিছে দেউটি .. হাহাহাহা .. আর মাত্র দু'জন .."

সেই মুহূর্তে গগনভেদী চিৎকার করে উঠলো সুজাতা "না না না আমি কিচ্ছু জানিনা .. আমি আর কিচ্ছু শুনতে চাই না .. মাঝে যারা ছিলো তারা কোথায়, কখন, কিভাবে, কার হাতে .. আমি এসব কিচ্ছু জানতে চাই না। আমার পিসির ওই ঘটনাটার ব্যাপারে  সবকিছু জানার পরও যখন আমি তোকে আটকাতে পারিনি, উল্টে ছলে-বলে-কৌশলে পুলিশ ইন্সপেক্টর মিস্টার গোস্বামীর থেকে তোকে আড়াল করে গেছি! তখন আমার আর অধিকার নেই কিছু জানার। হয়তো এখানেই একজন অভিভাবিকা হিসেবে সম্পূর্ণ ব্যর্থ আমি। সব আমার দোষ .. যারা আমাকে বিশ্বাস করে, আমাকে ভরসা করে তাদের প্রিয় সন্তানের ভার দিয়েছিলো .. তা আমি পূর্ণ করতে পারিনি। যা হয়ে গেছে তা তো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না, কিন্তু এখনো সময় আছে ফিরে আসার সোনা মানিক আমার। আমি মুখে যাই বলি না কেনো, বাস্তবে আমি এত কঠিন হতে পারবো না। তোকে নিজের পেটে না ধরলেও আমি তো তোর মামণি! আমার খুব ভয় করছে .. এই প্রতিশোধের আগুনে সবকিছু পুড়ে ছারখার না হয়ে যায়! আমি আর কিছু হারাতে চাই না।" কথাগুলো বলে হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে গোগোলকে জড়িয়ে ধরলো সুজাতা।

রাতে আর বিশেষ কথা হলো না দু'জনের। খেয়েদেয়ে যে যার মতো শুয়ে পড়লো। ক্লান্তিতে বুঝে আসছে দু'চোখ। তবুও স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে করে না, বলা ভালো ভয় করে আজকাল। ভুল করে যে স্বপ্ন সাজিয়েছিলো মনের আকাশের নিলীমা দিয়ে, তা আজ হয়ে গেছে শুধুই দুঃস্বপ্ন। চাহনিতে যার অজস্র প্রাণের উচ্ছ্বাস, কে জানতো নেমে আসবে ঘুনে ধরা ভার? আয়নার সাথে বন্ধুত্ব ছিল যার, একটিবার  ইচ্ছে হয় না আয়না দেখতে আর। রাত তখন ক'টা খেয়াল নেই। তার চারপাশে বেশ কিছু মানুষের কথা শুনতে পেলো গোগোল .. তার সঙ্গে রাস্তায় চলা গাড়ির আওয়াজ। অনেকেই একসঙ্গে কথা বলছে, কিন্তু স্পষ্টভাবে কিছুই শোনা যাচ্ছে না। অসাড় হয়ে যাওয়া অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অথচ মস্তিষ্কের তীব্র সঞ্চালনে গোগোল বুঝতে পারলো আবার আসতে চলেছে সেই বিভীষিকাময় দুঃস্বপ্ন .. যেখানে সে নিজের অঙ্গ সঞ্চালন করতে পারবে না, অথচ সবকিছু অনুভব করতে পারবে একদম সুস্পষ্টভাবে।

★★★★

"কিরে, অপূর্ব তুই এখানে? বর্ণালী ম্যাডামের সঙ্গে অনেকদিন দেখা হয় না, কেমন আছেন উনি?" গঙ্গানগর সুপার মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে গোগোলের এই প্রশ্নে কিছুটা থতমত খেয়ে অপূর্ব উত্তর দিয়েছিলো "মা ভালো আছে। কালকে একটু বাইরে ঘুরতে যাচ্ছি তো, তাই একটা ছোট টুথপেস্ট, দুটো ব্রাশ, আর সাবান কেনার জন্য এখানে এসেছি। মা বাড়ির জিনিস বাইরে নিয়ে যেতে একদম পছন্দ করে না তো .."

- "তাই? এ তো খুব ভালো কথা, কোথায় যাচ্ছিস?"

- "মায়াবন্দর .. আমাদের গঙ্গানগর থেকে দুটো স্টেশন পরেই। জ্যাকি দাদা বলেছে ওটা নাকি দুর্দান্ত টুরিস্ট স্পট। একসঙ্গে পাহাড়, সমুদ্র আর জঙ্গল তিনটেই আছে ওখানে।"

- "জ্যাকি দাদা? মানে ওই নেপালি লোকটা? আগে গ্যারেজে কাজ করতো, এখন ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা করেছে। ভালো কথা, ওর বাইকের পেছনে আমি তোকে দু-একবার ঘুরে বেড়াতে দেখেছি। খুব সাবধান ভাই, ওই জ্যাকি আর ও যেসব এলিমেন্টের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে থাকে, তারা কিন্তু একদম সুবিধার লোক নয়।"

- "আগে কি করতো এখন কি করে, অত কিছু আমি জানিনা .. তবে জ্যাকি দাদা মোটেও খারাপ লোক নয়। এখানে তো ওই একমাত্র আমার বন্ধু, যে আমাকে বোঝে। তাছাড়া ওর যে ওস্তাদ আছে ওসমান চাচা, তিনিও খুব ভালো মানুষ। ওরা দুজনেই তো যাচ্ছে কাল আমাদের সঙ্গে, in fact ওরাই আমাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে। যাওয়ার খরচ, থাকা-খাওয়ার খরচ, সমস্ত কিছু ফ্রি .. ভালো মানুষ না হলে কখনো কেউ এরকম করে, বলো?"

অপূর্বর কথা শুনে গোগোল বুঝতে পারলো খুব ভালোভাবে তার মগজ ধোলাই করেছে ওই দুর্বৃত্তরা। এখন তাকে কিছু বলতে গেলে বা বোঝাতে গেলে সে তো বুঝবেই না, উল্টে কথাগুলো ওদেরকে জানিয়ে দিলে ওরা সজাগ হয়ে যাবে এবং এতে ফল হবে উল্টো। তৎক্ষণাৎ তার শরীরে একটা অদ্ভুত শিহরণ খেলে গেলো এই ভেবে যে নিজের প্রতিশোধ পূর্ণ করার হঠাৎ করেই একটা সুযোগ এসে গিয়েছে তার সামনে। এই চান্সটা নিতে না পারলে ভবিষ্যতে‌ হয়তো এই সুযোগ আর সে পাবে না। "তোর ওই নম্বরটাই আছে তো? তোকে পরে ফোন করে নেবো আমি, এখন গেলাম .. হ্যাপি জার্নি ইন অ্যাডভান্স।" এই বলে সেখান থেকে বিদায় নিলো গোগোল।

"আরে কি খবর দিলে গুরু .. সত্যি বলছো? ওই মাল দুটোকে খতম করতে পারলে তো এমনিতেই আমার রাস্তা অনেকটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে। মানিক সামন্তর খাস লোক ওই ওসমান আর জ্যাকি। ওই দুটোর জন্যই তো এমএলএর এত বাড়বাড়ন্ত। তুমি চিন্তা করো না, তোমার যাওয়ার সব বন্দোবস্ত আমি করে দেবো। ট্রেনে বা অন্য কোনো পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাওয়ার দরকার নেই .. ভবিষ্যতে প্রমাণ থেকে যাবে।  ধনঞ্জী ভাইয়ের ট্রাকে তুমি যাবে, অন্য কাউকে আমি বিশ্বাস করি না।" উচ্ছ্বাসিত হয়ে কথাগুলো বলেছিলো  লালু আলম।

মায়াবন্দরে দুপুরের দিকেই পৌঁছে গিয়েছিলো গোগোল। ট্রাকটা মায়াবন্দরে লালু আলমের বেনামে থাকা একটা পেট্রলপাম্পের প্রেমিসেসের মধ্যে আর পাঁচটা সাধারণ ট্রাকের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে সেখান থেকে অটো ধরে সী-বিচে পৌঁছায় গোগোল এবং তার সঙ্গী ধনঞ্জী ভাই। ঝাউবনে গা ঢাকা দেওয়া অবস্থায় বিকেলের দিকে অপূর্বকে ফোন করে জেনে নেয় তাদের বাংলোর সঠিক লোকেশন। তারপর অপেক্ষা .. শুধুই অপেক্ষা। "আপ আন্দার নেহি জাওগে স্যারজি?" ধনঞ্জী ভাইয়ের এই প্রশ্নে, গোগোল হেসে উত্তর দিয়েছিল "সব কাজের একটা সঠিক সময় আছে সিংজি .. জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ .."

সন্ধ্যেবেলায় বাংলো থেকে জ্যাকির বেরিয়ে আসা, তারপর সঙ্গে করে আরো দুই অচেনা ব্যক্তিকে নিয়ে বাংলোর ভেতর ঢোকা .. এর কোনো কিছুই চোখ এড়োয়নি গোগোলের। সে তো ওই দুই নারীমাংস লোভী বিকৃতমনস্ক দুর্বৃত্তদের ভালো করেই চেনে .. তাই মনে মনে বুঝতে পেরেছিলো রেলপাড়ের কলেজের একদা তার বাংলা শিক্ষিকা বর্ণালী ম্যাডামের কি অবস্থা ওরা করছে। কিন্তু অপেক্ষা করা ছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে, সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত, রাত গড়িয়ে মাঝরাত, শরীর আর বইছিলো না গোগোলের। ধনঞ্জী ভাই ততক্ষণে গাছের গোড়ায় বসা অবস্থাতেই ঢুলতে আরম্ভ করেছিলো। রাত প্রায় শেষ হতে চললেও তখনও ভোরের আলো ফোটেনি, চারিদিকে শ্মশানের নিস্তব্ধতা। গোগোল হঠাৎ লক্ষ্য করলো, বাংলোর দরজা খুলে টলতে টলতে ওই দুই অচেনা ব্যক্তি বেরিয়ে গেলো। দরজার পাল্লাটা বাইরে থেকে ভেজিয়ে দিতেই ভুলে গেলো মাতাল দুটো। এটাই সুযোগ .. কাজে লাগাতে হবে। "আমি গেলাম সিংজি, তুমি এখানে অপেক্ষা করো আমার জন্য।" ঝিমতে থাকা ধনঞ্জী ভাইয়ের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলে ঝোঁপের আড়াল থেকে বেরিয়ে পড়লো গোগোল।

খোলা অবস্থায় থাকা বাংলোর মেইন গেট পেরিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করলো গোগোল। সামান্য ফাঁক হয়ে থাকা দরজার পাল্লার ভেতর থেকে মৃদু আলোকরশ্মি এসে চোখে পড়াতে, ধীরে পায়ে সেইদিকে এগিয়ে গেল সে, তারপর দরজাটা খুলতেই চমকে উঠে দু'পা পিছিয়ে আসলো। ঘরের ভেতর জিরো পাওয়ারের আলো জ্বললেও চারপাশের আপাত অন্ধকারে চোখ সয়ে যাওয়ার ফলে বেডরুমের সবকিছু পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছিলো। খাটের উপর সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় পাশ ফিরে শুয়ে অকাতরে ঘুমোচ্ছিলেন বর্ণালী ম্যাডাম .. চোখে মুখে তার ক্লান্তির ছাপ। গোগোল স্পষ্ট দেখতে পেলো ম্যাডামের মুখোমুখি তার দিকে ফিরে তাকে জড়িয়ে ধরে উলঙ্গ হয়ে শুয়ে আছে জ্যাকি। নেপালিটা কিছুটা নিচের দিকে নেমে এসে বর্ণালী ম্যাডামের বিশালাকার ঝুলে যাওয়া একটা স্তনের বোঁটা তার মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে ঘুমন্ত অবস্থাতেও চুকচুক করে চুষে যাচ্ছে। ওদিকে বিধর্মী ওসমান সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থাতেই নিজের কালো, লোমশ একটা পা ম্যাডামের কোমরের উপর তুলে দিয়ে নিজের একটা হাত নিচে নামিয়ে এনে উনার দুই পায়ের মাঝে ঢুকিয়ে দিয়েছে। দৃশ্যটা দেখে প্রথমে কিছুক্ষণ স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো গোগোল। কিন্তু এখন এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করা মানেই নিজের লক্ষ্য থেকে সরে আসা। তাই ধীরে ধীরে জ্যাকির পাশে গিয়ে তাকে ধাক্কা দিতে লাগলো গোগোল, যতক্ষণ না তার নিদ্রাচ্ছন্ন ভাবটা কাটে।

"কে বে? আরাবুল দা, তুমি আবার ফিরে এলে নাকি? এখনো মাগীর শরীরের নেশা কাটেনি?" চোখ কচলাতে কচলাতে আড়মোড়া ভেঙে খাটের উপর উঠে বসে কথাগুলো বললো জ্যাকি। তারপর গোগোলের দিকে তাকিয়ে নিজের খুদে খুদে চোখ দুটো আরো ছোট করে জিজ্ঞাসা করলো "কে তুই? এখানে ঢুকলি কি করে? চুরি করতে এসেছিস নাকি? দেখ ভাই, আমাদের কাছে কিছুই নেই এই মাগীটা ছাড়া। চাইলে একে একবার চুদে নিজেকে শান্ত করতে পারিস।"

"মাদারচোদ .. ভালো করে তাকিয়ে দ্যাখ আমার দিকে, তোর যম এসেছে।" কথাগুলো বলতে বলতে ওই অবস্থাতেই জ্যাকির ঘাড় ধরে বিছানা থেকে উঠিয়ে তাকে মাটিতে দাঁড় করালো গোগোল। "ক..কে কে? দাঁড়া দাঁড়া, ভালো করে দেখতে দে। ও তুই? তুই হেলপাড়ের বস্তির ওই ছেলেটা না? তোর এত বড় সাহস তুই এখানে এসে আমার গায়ে হাত দিয়েছিস? ছাড় বলছি আমাকে, লাগছে কিন্তু আমার?" নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে করতে কথাগুলো বললো জ্যাকি।

"আমার হাত ছাড়ানোর ক্ষমতা নেই আবার হুমকি দিচ্ছে! এইসব ফালতু কথা ছাড় শুয়োরের বাচ্চা। তোর ক্ষমতা আমার বোঝা হয়ে গেছে। এবার বল তো তোদের প্ল্যানটা কি? ইনি একজন শিক্ষিকা, একে এখানে নিয়ে এসেছিস কেনো তোরা? কি করতে চাস এনার সঙ্গে?" চাপা হুঙ্কার দিয়ে বললো গোগোল।

"তোকে বলতে আমি বাধ্য নই। কিন্তু তবুও আমি বলছি, কেন জানিস? কারন তুই তো জেনে বুঝে সিংহের গুহায় ঢুকেছিস। এখান থেকে তো আর বেঁচে ফিরে যেতে পারবি না। তাই বাইরে গিয়ে কাউকে কিছু বলার প্রশ্নই ওঠে না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, অনেক প্ল্যানিং করে মাগীটাকে এখানে এনেছি আমরা। তারপর আজ দুপুর থেকে তোর ম্যাডামকে ল্যাংটো করে পুরো উল্টেপাল্টে চুদেছে আমার ওস্তাদ। সন্ধ্যেবেলা আমাদের আরো দু'জন পার্টনার এসেছিলো। তারপর চারজনে মিলে গণচোদন দিয়েছি মাগীটাকে। তার সঙ্গে ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে। ওটাকে মার্কেটে তো ছাড়বই। তার উপর আরো যে দু'জন পার্টনার এসেছিল, তারা এখন কিছু অ্যারেঞ্জমেন্ট করতে গেছে। ওরা ফিরে এলেই মাগীটাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়বো এখান থেকে। এখন এই মায়াবন্দরেই আন্ডারগ্রাউন্ড করা হবে একে। তারপর পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে মাগীটাকে বাইরে কোথাও পাচার করে দেবো।" খ্যাঁকখ্যাঁক করে হাসতে হাসতে কথাগুলো বললো জ্যাকি।

"তা তো বটেই তা তো বটেই .. এখন বুঝতে পারছি তোমরা কতটা শক্তিশালী। আসলে আমি মোটেও আসতে চাইনি, আমাকে ওর ছেলে ডেকে এনেছে এখানে। ওই যে ড্রেসিং টেবিলের উপর হ্যান্ডিক্যামটা রাখা আছে, ওটা দিয়েই রেকর্ডিং করেছো নাকি? ভেতরের চিপটা আছে তো, নাকি এডিট করা হয়ে গেছে সবকিছু? আর ওর যে ছেলে, মানে অপূর্ব .. ওকে নিয়ে তোমাদের কি প্ল্যান?" গলার স্বর কিছুটা নামিয়ে জ্যাকির ঘাড়টা ছেড়ে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো গোগোল।

"এইতো, এবার পথে এসো চাঁদু। হ্যাঁ, ওটা দিয়েই রেকর্ডিং করেছি। এখনো এডিট করা হয়নি, ওর ভিতরেই চিপটা আছে। কিন্তু কেনো? আর ওই হোমোচোদা অপূর্বর কথা বলছিস? ওকে এখান থেকে যাওয়ার আগে খালাস করে দিয়ে যাবো, তার সঙ্গে তোকেও। আমরা না আবার গুলি-টুলি পছন্দ করি না। আমাদের নিজস্ব হাতিয়ার আছে, যেটা ব্যবহার করতেই বেশি ভালোবাসি। দেখবি? এই দ্যাখ, এগুলো দিয়েই তোকে তিলে তিলে মারবো আজকে।" কথাগুলো বলে খাটের নিচ থেকে এক হাতেরও বেশি লম্বা ভীষণ সরু এবং তীক্ষ্ণ একটি শলাকা। আর একটি ধারালো বেশ বড় আকারের চপার বের করে আনলো জ্যাকি।

"আচ্ছা বুঝলাম, তার মানে এইগুলো সবসময় তোদের সঙ্গেই থাকে। তোদের পথের কাঁটাকে তোরা এই ভাবেই সরিয়ে দিস, এমনকি নিজেদের বিকৃত যৌনলালসা চরিতার্থ করার পর সেই নারীও যদি প্রতিবাদে গর্জে ওঠে, তবে তাকেও নির্মমভাবে এই অস্ত্রগুলো দিয়েই হত্যা করিস। আজ থেকে প্রায় বারো বছর আগে হাইওয়ের ধারে বাঁশবাগানের পিছন দিকটায় একটা পরিত্যক্ত গ্যারেজে এইভাবেই এক নারীকে গণ;., করার পর নির্মমভাবে হত্যা করেছিলিস তোরা, তাই তো? যদিও সেই বীরাঙ্গনা নারী তোদের এক দুর্বৃত্ত সঙ্গীকে শেষ করে তবেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন।" দাঁতে দাঁত চেপে বজ্রকঠিন গলায় কথাগুলো বললো গোগোল।

"তার মানে, তুই সেই .." গোগোলের কথাগুলো শোনার পর, এর বেশি আর একটাও কথা বের হলো না জ্যাকির মুখ দিয়ে। তার জ্বলন্ত চোখের দিকে তাকিয়ে হাতগুলো কিরকম যেন শিথিল হয়ে এলো নেপালিটার, মাথাটা ঘুরতে লাগলো বনবন করে।

সেই মুহূর্তে তড়িৎগতিতে জ্যাকির শিথিল হয়ে আসা হাত থেকে ওই দুটো ভয়ঙ্কর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে গোগোল বললো "এখানে ঢোকার আগে ভাবছিলাম, তোদের মারবো কিভাবে। আগ্নেয়াস্ত্র অবশ্যই আছে আমার কাছে, কিন্তু ওতে তো শব্দ হবে, লোক জানাজানি হবে, তারপর এই গুলির সূত্র ধরে বন্দুক পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করবে পুলিশ। কিন্তু ঈশ্বর আছেন, তিনি আমার দিকটা ভেবেছেন। তোদের অস্ত্র দিয়েই যদি তোদেরকে মারি, তাহলে মৃত্যুটা হবে বেদনাদায়ক আর ভয়ঙ্কর এবং কোনো প্রমাণ থাকবে না।" কথাগুলো শেষ করার আগেই অত্যন্ত সরু এবং ধারালো শলাকাটা ক্ষিপ্রতিতে জ্যাকির বুকের বাঁ দিকে ঢুকিয়ে দিলো গোগোল। তারপর জ্যাকিকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে তার মুখের উপর নিজের ডান'পা টা সজোরে চেপে ধরে ওই অবস্থাতেই শলাকাটা বুকের ভেতর বারংবার ঢুকিয়ে এবং বের করে খোঁচাতে লাগলো। এর ফলে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হওয়ার সঙ্গে ভেতরের মাংসপিণ্ড গুলি বেরিয়ে এলো বাইরে। মুখের উপর পা চেপে ধরে থাকার জন্য "গোঁ গোঁ" শব্দ ছাড়া আর কিছুই বের হলো না জ্যাকির মুখ দিয়ে। কিছুক্ষণ কাটা ছাগলের মতো হাত-পা নাড়ানোর পর যখন ধীরে ধীরে সে নিস্তেজ হয়ে পড়লো, গোগোল বুঝতে পারলো নেপালিটার শরীরে আর বাধা দেওয়ার ক্ষমতাটুকু অবশিষ্ট নেই এবং গলা দিয়ে আওয়াজ বের করার সামর্থ নেই। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে সে ঢলে পড়বে। "যাওয়ার আগে তোর মৃত্যু কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, সেটা অনুভব করে যাওয়াই ভালো .." এই বলে অন্য হাতে থাকা ধারালো চপারটার এক কোপে জ্যাকির অন্ডকোষ সমেত পুরুষাঙ্গটা কেটে নিলো গোগোল। "ওঁককক .." এইরূপ গলা দিয়ে একটা আওয়াজ বের করে ঠিকরে বেরিয়ে আসা দুটো চোখ খুলে রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো জ্যাকি।

সেই মুহূর্তে গোগোলের ঘাড়ের উপর একটা রদ্দা পড়তেই সে ছিটকে পড়ে গেলো ঘরের এক কোণে। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে চকিতে উঠে বসে সে দেখলো তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে সাক্ষাৎ যমদূতের মতো চেহারার ওসমান মন্ডল। "মেরে ফেললি, মেরে ফেললি ওকে? হে আল্লাহ্ , আর কয়েক সেকেন্ড আগে যদি আমার ঘুমটা ভাঙতো তাহলে ওকে আমি বাঁচাতে পারতাম। তোর মা আমার একটা শাগরেদকে মেরেছিল, আজকে তুই আর একটাকে মারলি। জ্যাকি তোকে চিনতে না পারলেও, আমি এক দেখাতেই চিনতে পেরেছি। তখন হাজারবার মানিক বাবুকে বলেছিলাম মা-বাবা যখন দুটোই মরেছে, তখন ওদের ছেলেটাকেও শেষ করে দিই, তাহলে কোনোদিন হয়তো কালসাপ হয়ে আমাদেরকেই কাটতে আসবে .. কিন্তু উনি কিছুতেই পারমিশন দিলেন না। আর দেখো, আজ শালা সেটাই হতে চলেছে। লেকিন এখন আর সেরকম কিছু হবে না। কিঁউ কি তুম গলত আদমি সে পাঙ্গা লে লিয়া বেটা .. তোর মা'কে ভরপুর চোদার পর যেরকম আছড়ে আছড়ে, কুপিয়ে কুপিয়ে মেরেছিলাম! ঠিক সেই ভাবে আজ তোকে মারবো .. তবেই আমার শান্তি।" এই বলে ওসমান মাটিতে পড়ে থাকা চপারটা তুলতে যেতেই, মুহূর্তের মধ্যে উঠে দাঁড়িয়ে ক্ষিপ্রগতিতে ওসমানের দুই পায়ের মাঝে প্রচন্ড জোরে একটা লাথি মারলো গোগোল। তৎক্ষণাৎ "আঁউউউউউ .. হায় আল্লাহ্" বলে নিজের অন্ডকোষ সমেত পুরুষাঙ্গটা চেপে ধরে মাটিতে বসে পড়লো বিধর্মীটা।

"চুপ শালা .. এটা ডায়লগ দেওয়ার সময় নয়। এখানে কাজ করতে হয় মুহূর্তের মধ্যে। এই যুদ্ধে যো জিতা ওহ সিকান্দার, না হলে সবকিছু ফক্কা। তুই আমাকে কি মারবি? এই সময় শুধু তুই কেন, তোর মতো হাজারটা ওসমান মন্ডলে এলেও আমার কিচ্ছু করতে পারবে না। আমার শরীরে এখন অসুরের শক্তি। বিশ্বাস হচ্ছে না? দেখবি?" এই বলে মাটিতে পড়ে যাওয়া ওসমানের বুকের উপর এক লাফে চেপে বসলো গোগোল। একশো হাতির বল গায়ে থাকা যমদূত ওসমানের পক্ষে অপূর্বকে নিজের উপর থেকে ঠেলে সরানো কিছুতেই সম্ভবপর হচ্ছিল না।
[+] 12 users Like Bumba_1's post
Like Reply
 দু'জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি চরমসীমায় পৌঁছেছিল। একসময় নিজের একটা হাত দিয়ে ওসমানের দুটো হাত মাথার উপর তুলে সেটাকে বজ্রমুষ্টিতে চেপে ধরে বিধর্মীটার মুখের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে এসে ওসমানের দিকে জ্বলন্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে গোগোল বললো "তুই যতবার আমার মায়ের কথা বলবি .. ততটাই যন্ত্রণাদায়ক হবে তোর মৃত্যু। ঠিক যেভাবে ওই নেপালিটার হয়েছে, ঠিক যেভাবে নিশীথ বটব্যালের হয়েছিলো, আমি অবশ্য আমার দিদাকে এতটা কষ্ট দিয়ে মারিনি। হ্যাঁ, একদম কারেক্ট আছে। আমি তো তোর চোখে এই ভয়টাই দেখতে চেয়েছিলাম। এই বাঁচার আকুতিটাই তো দেখতে চেয়েছিলাম আমি। এটাকে কি বলে জানিস তো? মরার আগেই মরে যাওয়া। এবার তোর যাওয়ার পালা .. তবে যাওয়ার আগে, এক মিনিট .. তুই তোর এই নোংরা চোখ দিয়ে আমার মায়ের শরীরটাকে দেখেছিলিস, তাই না? সেই চোখ তো আমি অক্ষত অবস্থায় তোমার দেহের সঙ্গে দান করতে পারবো না আঙ্কেল। ও আঙ্কেল, আঙ্কেল গো .. শুনছো আমার কথা? বুঝতে পারছিস আমি কি বলতে চাইছি? আমি আসলে এটাই বলতে চাইছি যে, এইভাবে .. এইভাবে ঠিক এইভাবে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তোর চোখ দুটো আগে অন্ধ করে দেবো .." কথা বলা শেষ হলো না তার আগেই ওসমানের মুখটা চেপে ধরে গোগোল মাটি থেকে শলাকাটা তুলে নিয়ে বিধর্মীটার দুই চোখ ক্রমাগত কোপাতে শুরু করে দিলো। 


অপরিসীম যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হতে হতে যমদূতটার গগনভেদী চিৎকার গোঙানিতে পরিণত হলো গোগোলের বাঘের থাবার মতো পাঞ্জার নিচে। "তোমার যন্ত্রণার এখনো অনেক বাকি আঙ্কেল .. ও আঙ্কেল .. নিরীহ অসহায় মানুষদের চিরতরে ধ্বংস করে যে অমানুষ পৈশাচিক আনন্দলাভ করে তাকে তো এত সহজে মরতে দেওয়া যাবে না। চোখের মাথা তো খেয়ে নিয়েছো। এবার তোমার শরীরের সব থেকে গর্বের যে জিনিসটা, যেটা দিয়ে কত যে অসহায় মহিলার সতীত্ব হরণ করেছো, তা বোধহয় গুনে শেষ করা যাবে না। তুমি মরে গেলে তোমার বডিটা তো জাহান্নামে চলে যাবে। কিন্তু তোমার হাতিয়ার, যেটা নিয়ে তুমি নাকি ভীষণ গর্ব করো। সেটাকে তো সংরক্ষণ করে রেখে দিতে হবে। তাই না আঙ্কেল?" কথা বলতে বলতেই শলাকার পরিবর্তে গোগলের হাতে উঠে এলো ধারালো চপারটা, তারপর মুহূর্তের মধ্যে বিধর্মীটা কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুরুষাঙ্গটা বিচ্ছিন্ন করে দিলো তার শরীর থেকে।

ওসমানের মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়েছিল গোগোল। আসলে তখন আর বাধা দেওয়া, যন্ত্রণায় দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয় চিৎকার করা .. এর কোনো অবস্থাতেই ছিলো না সে। এতক্ষণ মৃত্যুভয়ে আতঙ্কিত হয়ে থাকলেও এখন মনে-প্রানে মৃত্যুকেই আহ্বান করে যাচ্ছিলো ওসমান মন্ডল। এই বিভীষিকাময় যন্ত্রণা আর যে তার শরীর নিতে পারছে না। চোখ দুটো আগেই অন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাই গোগোলকে চাক্ষুষ দেখতে না পেলেও তার উপস্থিতি অনুধাবন করে সেইদিকে হাতজোড় করে বলে উঠলো "আমি আমার সব দোষ স্বীকার করছি, আমি মহাপাতক। এবার .. এবার পুরোপুরি শেষ কর আমাকে, জ্বালা জুড়োক শরীরের। তুই তো আমার সন্তানের মতো, তোর কাছ থেকে আমি মৃত্যুভিক্ষা চাইছি।"

এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলো গোগোল। ছলে-বলে-কৌশলে বা শক্তি দিয়ে শত্রুর বিনাশ তো অবশ্যই করা যায়, কিন্তু উল্টো দিকের ব্যক্তি যখন মৃত্যুবরণ করার আগে হাতজোড় করে তার সমস্ত দোষস্বীকার করে মৃত্যুভিক্ষার অনুরোধ করে .. তার মতো তৃপ্তিদায়ক পরিস্থিতি বোধায় খুব কমই হয়। গোগোল আর সময় নষ্ট না করে অর্ধমৃত ওসমানের একটা হাত ধরে মাটি থেকে তুলে দাঁড় করিয়ে "তবে তাই হোক .." এইটুকু বলে তার পেটের ভেতর তীক্ষ্ণ শলাকাটা ঢুকিয়ে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়ে তাকে বিছানার উপর ফেলে দিলো। তারপর হঠাৎ ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো বর্ণালী ম্যাডাম খাটের উপর উঠে বসে তার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে। 

কিন্তু এই ভোররাতে প্রেসারকুকারে সিটি‌ কোথা থেকে আসছে? কিছুই বোধগম্য হলো না তার। "এই গোগোল ওঠ, অনেক বেলা হলো কিন্তু। সাড়ে সাতটা বেজে গেছে। আমাকে দশটার মধ্যে বেরোতে হবে। তাড়াতাড়ি মুখ হাত-পা ধুয়ে বাজারে যা। তুই এলে তবে রান্না চাপাবো।" সুজাতার গলার আওয়াজে ঘুম ভাঙলো গোগোলের।

"তুমি তো দুপুরে চলে আসবে বললে, তখন তাহলে একসঙ্গে লাঞ্চ করবো। আজ আর ভাত খেয়ে যাওয়ার দরকার নেই। রসময় মোদকের দোকান থেকে গরম গরম কচুরি আর মালপোয়া নিয়ে এসেছি। গরম থাকতে থাকতে তাড়াতাড়ি বেড়ে দাও তো, দু'জনে মিলে খাই। আর এই নাও তোমার টাকা। আজ আমি আমার টাকায় বাজার করেছি। ছেলে এখন বড় হয়েছে, এইটুকু স্বাধীনতা তো ছেলেকে দেবে, নাকি?" রান্নাঘরের সামনে বাজারের ব্যাগটা নামিয়ে রেখে বললো গোগোল।

- "ঠিক আছে দিতে পারি তোকে স্বাধীনতা, কিন্তু আজ একটা প্রমিস করতে হবে তোর মামণির কাছে। অতীতে যা হয়েছে .. হয়েছে। সেই ব্যাপারে আমি কিছু জানতেও চাই না, কিছু শুনতেও চাই না। এমনকি আমাদের এই বস্তির সমস্যার ব্যাপারেও গতকাল যা বললি, তার সবকিছুই আমি মেনে নিলাম। এই ব্যাপারে তোর সিদ্ধান্তের উপর ভরসা রাখবো। কিন্তু আমাকে এখন একটা কথা দিতে হবে .. তোকে এই ভয়ঙ্কর প্রতিশোধের নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিজের হাতে আর কখনো আইন তুলে নিবি না, প্রতিজ্ঞা কর আমার সামনে। যাতে আমি উপরে গিয়ে তোর মায়ের সামনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারি, তোর মায়ের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারি।"

- "জানো তো মামণি, কাল রাতে হঠাৎ জীবনের সাথে দেখা। হ্যাঁ গো হ্যাঁ সত্যি বলছি। আরে জীবন, জীবন .. বুঝতে পারলে না? লাইফের কথা বলছি। যাই হোক, ও আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে রাস্তা দিয়ে চলে যাচ্ছিলো। আমি গিয়ে খপ করে ওর হাতটা চেপে ধরে বললাম - অনেক খোঁজার পর আজ পেয়েছি তোকে, কথা না বলে চলে যাচ্ছিস যে বড়! তোকে আজ বলতে হবে সবকিছু, সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আমার। কেনো আমার চলার পথে প্রতি পদে পদে বাধা? কেনো এত বিপুল অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয় সর্বক্ষণ? তারপর কোনো কথা নেই .. সব নিঃস্তব্ধ। দু'জনের দৃষ্টি বিনিময় হলো বেশ কিছুক্ষণ ধরে। এরপর আমার হাতে এক টুকরো রঙিন কাগজ গুঁজে দিয়ে ও বললো 'এটা জীবন-বীমা নয়, অবসরে পরে নিও না হয় ..' তারপর, তারপর জানো তো মামণি হঠাৎ করেই বলা নেই কওয়া নেই, কোথায় যেন অদৃশ্য হয়ে গেলো ও .. আর খুঁজেই পেলাম না।"

- "কি লেখা ছিলো যে, ওই এক টুকরো রঙিন কাগজে?" অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলে উঠলো সুজাতা

- "শুনবে? শুনবে মামণি? অপেক্ষায় থমকে সেই দুঃস্বপ্ন, আজও উৎকণ্ঠায় ধিকি ধিকি আগুনের আঁচে বেঁচে আছে। দু'চোখের বানভাসি জলে ধুয়ে যাক অতীত। থাকুক শুধু আমার সোনালী স্বপ্ন মাখা বর্তমান। জীবনের গাড়িটা পিছনে টার্ন করে ফিরে যাই এক অন্যরকম অতীতে .. যেখানে নেই কোনো দুঃস্বপ্ন, নেই কোনো খারাপ স্মৃতি .. আছে শুধুই ভালোলাগার পরশ। যেখানে তারার চাদরে মোড়া উজ্জ্বল আকাশের নিচে গন্ধরাজ, বেল, জুঁই, রজনীগন্ধা, বকুলফুলের মিষ্টি সুবাস এক ভালোলাগার আবেশে ভরে যেতো মন-প্রাণ। ক্ষমা করো হে স্বপ্নের অতীত, ভাগ্যের পরিহাস আমি মেনে নিয়েছি। এই হাত আর পাপ কাজ করবে না, ধরবে না কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র। আসলে বয়সের যোগফল নিমিত্ত সংখ্যা মাত্র। এভাবেই মনের আনাচে-কানাচে পরে থাকে কিছু ব্যর্থ আশা। সময় সুযোগে ওরা এসে হানা দেয়, আদায় করে নেয় সর্বস্ব সুদে আসলে। দুঃস্বপ্নের অতীত তোমাকে আমি ভুলতে চাই। তুমি অপেক্ষা করো তোমার চতুর্দশীর। আমি চললাম আমার স্বপ্নে সাজানো ভবিষ্যতে। ঠিক যেন বর্ষামুখর রাতে পালতোলা নৌকোর মাঝি পথ হারিয়ে ছুটে চলছে দেখবে বলে নতুন ভোরের সূর্যোদয়।"

সুজাতার চোখ দিয়ে ততক্ষণে অশ্রুধারা বয়ে চলেছে।

★★★★

লালু আলম আজকাল বেজায় খুশি এবং কৃতজ্ঞ গোগোলের প্রতি। তার ধারণা অনুযায়ী ওর প্রতিটি পদক্ষেপ এখন একেবারে সঠিকভাবে হচ্ছে। বর্তমানে তার সব থেকে বড় শত্রু বিধায়ক মানিক সামন্তর গুটিগুলো একে একে সরে যাচ্ছে আর তার এগিয়ে চলার পথ মসৃণ হয়ে উঠছে। আজ আলম সাহেবের বাংলোতে তাই আইটেম ডান্সের আসর বসবে .. শহর থেকে জোহরাবাঈ আসছে। তার সঙ্গে ছুটবে মদের ফোয়ারা। গোগোল আজ তার কর্মক্ষেত্র মানে ওই মুখো আর হয়নি। কারণ এইসব অপসংস্কৃতি তার ভালো লাগেনা .. একথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে আলম সাহেবকে। সেও আর জোর করেনি গোগোলকে .. শুধু শুধু হাতের তুরুপের তাসকে চটিয়ে কি লাভ!

"গুরু .. দুটো গাড়ি ঢুকেছে আমাদের রেলপাড়ের বস্তিতে। বিদেশী গাড়ি .. অনেক দামি হবে মনে হয়। কে এলো বলো তো .. আলম সাহেব নাকি অন্য কেউ? তুমি একবার চলো গুরু .." মধুর চায়ের দোকানে বসে আড্ডা মারছিলো গোগোল। সেখানে কাঞ্চন এসে তাকে কথাগুলো বলাতে "না না, লালু আলম এখন এদিকে আসবে না, চল তো দেখি .. যাওয়ার আগে সুবীর আর রাজুকে নিবি নিবি।" উঠে পড়লো গোগোল।

ক্লাবের ঠিক সামনে দাঁড় করানো রয়েছে একটা সাদা এবং একটা মেটালিক গ্রে কালারের Audi গাড়ি। খবরটা শুনে গোগোল আগে থেকেই ধারণা করে রেখেছিলো, এই সময় কাদের আগমন ঘটতে পারে এখানে। গাড়ি দুটো দেখে সে নিশ্চিত হলো কামরাজ এসেছে তার দলবল নিয়ে এখানে। নিজের দলের লোকেদের চোখের ইশারায় প্রস্তুত হতে বলে গাড়ি দুটোর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো গোগোল। মেটালিক গ্রে কালারের গাড়িটা থেকে প্রত্যাশা মতোই নেমে এলো বনমানুষের মতো চেহারার, কদাকার মুখের কামরাজ। চেহারার সেই অর্থে কোনো পরিবর্তন হয়নি, বয়সের ভারে শরীরটা আরো মেদবহুল হয়েছে, তার সঙ্গে প্রশস্ত হয়েছে মাথার টাক .. এই পর্যন্তই। লোকটাকে দেখে মুহূর্তের মধ্যে পূর্বের সমস্ত স্মৃতি ঘুরেফিরে আসতে লাগলো গোগোলের মনে। এইতো সেই ব্যক্তি .. যে তাদের পরিবারের ধ্বংসের অন্যতম প্রধান কারণ। মাথার রগটা দপদপ করতে শুরু করে দিলো, সেই সঙ্গে চোয়াল দুটো শক্ত হয়ে গেলো তার। আজ সকালে মামণির সামনে প্রতিজ্ঞা না করলে এখনই হয়তো ভালো-মন্দ কিছু একটা ঘটে যেতে পারতো।

"আরে এ যে মেঘ না চাইতেই জল। ভেবেছিলাম আজ বস্তি খালি থাকবে। কিন্তু তুমি আছো দেখছি। নমস্কার অনির্বাণ বাবু .. তুমি আমার থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট, তাই তোমাকে তুমি করেই বলছি। দেখো আমি কোনো ঝামেলা বা ঝগড়ায় যেতে চাই না। আজেবাজে কথা না বলে একদম কাজের কথায় আসি তাহলে! আমাদের আটকাতে যার হয়ে কাজ করছো তুমি, তোমার কি ধারনা সে এখানে মন্দির বানাবে? আমরা এখানে যা করবো, সেও এখানে তাই করবে। শুধু তফাৎ একটাই, আমাদের বানানো জিনিসগুলো হবে আরো উন্নতমানের এবং যেহেতু আমরা জনদরদী মানুষ, সর্বোপরি একজন জনদরদী নেতা যখন আমাদের সঙ্গে আছে, তখন এই বস্তির জনগণকে আমরা কেউ বঞ্চিত করবো না। প্রথম ক'দিন বাইরে গিয়ে কোথাও ভাড়া থাকতে হবে তারপর এখানে আমাদের প্রজেক্ট শেষ হলে তোমাদের প্রত্যেককে পুনর্বাসন দেবো। আর যাদের এখানে ব্যবসা আছে, দোকান-টোকান আছে .. তাদের শপিংমলে জায়গা করে দেবো। এবার বলো আমার প্রোপজলটা কেমন লাগলো? রাজি তো তোমরা সবাই?" গাড়ি থেকে নেমে গোগোল আর তার পাশে এবং পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা গুটিকয়েক বস্তিবাসীর উদ্দেশ্যে কথাগুলো বললো কামরাজ।

"তাই নাকি? যে কথাগুলো মুখে বললেন, অর্থাৎ পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যাপারটা। সেটা স্ট্যাম্প পেপারে লিখে দিতে পারবেন? আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে বলতে হয় .. এই বস্তির যে অংশটুকু জুড়ে ওরা থাকে বা আমরা থাকি, সেখানে প্রত্যেকের নামে অগ্রিম দলিল বানিয়ে দিতে পারবেন? কারণ এই বস্তির বাসিন্দারা সরকারের দেওয়া দানপত্রের জমিতে বাড়ি করে বা ভাড়া থেকে বসবাস করছে। তাদের নিজের নামে এখনো পর্যন্ত কোনো দলিল তৈরি হয়নি। আমাদের কাছে এখানে বসবাস করার একটাই প্রমাণ .. ওই সরকারি দামপত্র। আপনার পার্টনার মানিক সামন্তকে বলেও এর কোনো সুরাহা হয়নি। তবে শীঘ্রই হবে, এই ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকুন। যাইহোক, আপনারা এখানে প্রজেক্ট শুরু করলে সেই দানপত্র আপনাদের নামে করে দিতে হবে। তাই একবার এখান থেকে তারা উচ্ছেদ হয়ে গেলে এখানে ফিরে আসার কোনো সরকারি প্রমাণ আর থাকবে না আমাদের কাছে। আর শপিংমলে দোকান করে দেওয়ার কথা বলছেন? এইতো আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে কাঞ্চন .. ওদের বাসনের দোকান। ওই যে ওই পাশে দাঁড়িয়ে আছে সুবীর .. ও মাছের ব্যবসা করে। আমার ডান দিকে মধু, যে দাঁড়িয়ে আছে .. ওর চায়ের দোকান আর আমার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা রাজুর পান বিড়ি সিগারেটের দোকান এই বস্তিতে। আপনি আমাকে বিশ্বাস করতে বলেন আপনাদের ওই ঝাঁ চকচকে শপিংমলে এই সবকিছুর ব্যবসা করতে পারবে ওরা?" মুচকি হেসে, কিন্তু দৃঢ় গলায় কথাগুলো বললো গোগোল।

"নেতা .. নেতা হয়েছো তুমি, তাই না এদের সবার? ভেবেছিলাম কোনো বাকবিতণ্ডায় যাবো না। এখন দেখছি চাপকে পিঠের চামড়া তুলে নিলেই ঠিক হতো।" কামরাজের এইরূপ উক্তিতে তার দিকে ক্ষিপ্রতিতে তেড়ে গিয়ে সুবীর বললো "খুব সাবধান .. গুরুর গায়ে হাত দেওয়া তো দূরের কথা, ওর একটা চুল ছুঁয়ে দেখুন না, মাছ কাটার বটি দিয়ে গলা নামিয়ে দেবো একেবারে।"

সেই মুহূর্তে পেছনের সাদা রঙের Audi গাড়িটার দরজা খুলে গেলো। সেখান থেকে নামলো একজন গৌরবর্ণা, আকর্ষণীয়া বছর পঁচিশের সুন্দরী যুবতী। যা পরনে হাঁটু পর্যন্ত লম্বা একটি খাটো ঝুলের কালো রঙের ফরমাল স্কার্ট এবং উপরে সাদা শার্টের উপর ওই স্কার্টের রঙের একটি সুদৃশ্য ফর্মাল কোট। "কাম ডাউন কাম ডাউন .. এখানে এত চেঁচামেচি কিসের? উফ্ ভীষণ ডার্টি প্লেস। এখানে মাল্টিজিমটা কোথায় হবে তার পজিশনটা কিন্তু আমি ঠিক করবো ড্যাডি।" গাড়ি থেকে নেমে কামরাজের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলে, গোগোলের দিকে তাকিয়ে সেই যুবতী বলে উঠলো "ও মাই গড .. আর ইউ অনির্বাণ? গাড়িতে বসে তোমাকে দেখতে দেখতে আমার সন্দেহ হয়েছিলো। কারণ ড্যাডির কাছ থেকে শুনেছিলাম তোমরা এই বস্তিতেই এসে উঠেছো। কিন্তু এখন গাড়ি থেকে নেমে ভালো করে তোমাকে দেখে সিওর হলাম .. ইয়েস ইউ আর অনির্বাণ। উফফফ ইউ আর লুকিং ভেরি ভেরি হ্যান্ডসাম। তার উপর এই beard look এ জাস্ট ফাটাফাটি লাগছে তোমাকে। আরে আমি রনিতা .. রনিতা দিদি, একসঙ্গে গাড়ি করে কলেজে যেতাম। মনে পড়েছে এবার? বাট প্লিজ ডোন্ট কল মি 'দিদি' রাইট নাউ .. কল মি ওনলি রনিতা .. ডিড ইউ গেট দ্যাট?"

"হ্যাঁ মানে, না মানে এইবার চিনতে পারলাম। আসলে অনেক পুরনো কথা তো, মনে পড়ে না সবকিছু আর মনে রাখতেও চাই না।" কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উত্তর দিলো গোগোল। "মনে রাখতে চাই না বললে তো হবে না ডিয়ার, এবার থেকে তোমার সব সময় যাতে সব কিছু মনে পড়ে সেই চেষ্টাই করা হবে। এনিওয়েস, এই প্রথম তোমাদের বস্তিতে এলাম, আমাকে একটু ঘুরে দেখাবে না সবকিছু?" গোগোলের আরো কাছে এগিয়ে আসতে আসতে কথাগুলো বললো রনিতা।

"কোনো দরকার নেই সবকিছু ঘুরে দেখার। আপনি আর আপনার গুণধর বাবা তো এখানে ধান্দায় এসেছেন। আপনার বাবা এসেছে ছলে, বলে, কৌশলে এখানকার লোকগুলোর মাথায় হাত বুলিয়ে বস্তিটাকে করায়ত্ত করার জন্য, আর আপনি এসেছেন মাল্টিজিম কোথায় হবে তার পজিশন দেখার জন্য। আপনাদের দেখাশোনা কথাবাত্রা হয়ে গেছে নিশ্চয়ই, এবার ভালোয় ভালোয় কেটে পড়ুন তো এখান থেকে।" ঝড়ের গতিতে গোগোল আর রনিতার ঠিক মাঝখানে এসে উপস্থিত হয়ে কথাগুলো বললো হিয়া। 

"হেই .. হু দ্য হেল আর ইউ? এইসব কথা বলার তুমি কে? সাচ এ ডার্টি প্লেস এন্ড ডার্টি পিপল।" বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিরক্তিভরে উক্তি করলো রনিতা।

"এতই যদি ডার্টি প্লেস আর ডার্টি পিপল হয় .. তাহলে ফুটুন না এখান থেকে। দাঁড়িয়ে আছেন কেনো এখনো? আপনার তো বিয়ে হয়েছিলো শুনেছিলাম। অথচ এখনো বাবার বাড়িতেই থাকেন। কি অদ্ভুত সব ব্যাপার স্যাপার! শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে এডজাস্ট করতে পারলেন না, নাকি শরীরে কোনো খুঁত-টুঁত আছে .. যে স্বামী এসে বাপের বাড়িতে বসিয়ে দিয়ে গেছে? অল্পবয়সী পরপুরুষ দেখলেই খালি ছোঁকছোঁক করা, তাই না? ঢলানি মেয়েমানুষ কোথাকারে। আর এই মানুষটাও হয়েছে তেমনি। এতক্ষণ ওর বাপটার উপর হম্বিতম্বি করছিলো পুরুষমানুষ বলে। যেই দেখেছে একটা মেয়ে এসে দাঁড়িয়েছে, অমনি মিনমিন করা শুরু করে দিয়েছে। সাধে কি আর বলি .. তোমাদের গুরুর চরিত্রের ঠিক নেই।" ঝাঁঝিয়ে উঠে কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বললো হিয়া।

হিয়ার এইরকম রণচন্ডী মূর্তি আর মুখে এই ধরনের অজানা-অচেনা ভাষা এর আগে কোনোদিন দেখেনি বা শোনেনি গোগোল। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সে স্বপ্ন দেখছে নাকি এটা ঘোরতর বাস্তব সেটা বোঝার জন্য এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকেই একবার চিমটি কেটে দেখলো সে। 

"হাউ ডেয়ার ইউ? এই মেয়েটা এখানে দাঁড়িয়ে একভাবে আমাকে অপমান করে যাচ্ছে, আর তুমি কিচ্ছু বলবে না অনির্বাণ? চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবে? এই নাকি তুমি এদের গুরু, এদের হিরো?" কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে উঠলো রনিতা।

"আ..আমি আবার কি বলবো? কিছু না বলে, কিছু না করেই যখন এত কথা শুনছি! তাহলে এরপর আর একটা কথা বললে যে কি হবে, সেটা শুধু আমিই বুঝতে পারছি। আপনি মানে তুমি বরং যাও এখান থেকে। এলাকার লোকজন কিন্তু তেতে আছে, তোমাদেরই বিপদ হবে।" এইটুকু বলে রাজুর পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো গোগোল।

"এত কথা শোনার পরেও যে আপনারা এখানে দাঁড়িয়ে আছেন সেটা দেখেই আমি অবাক হচ্ছি। রিড মাই লিপস .. জাস্ট গেট লস্ট.." রনিতার মুখের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে কথাগুলো বললো হিয়া। "ঠিক আছে এখন চলে যাচ্ছি। কিন্তু আমি আবার আসবো .. তখন কিন্তু ঝড় উঠবে। আর একটা কথা মনে রেখো - আমার কোনো জিনিস চোখে লেগে গেলে, সেটা জড়বস্তু হোক বা রক্তমাংসের মানুষ .. আমি কিন্তু সেটা হাসিল করে তবেই ছাড়ি। চলো ড্যাডি .." হিয়ার উদ্দেশ্যে রনিতা কথাগুলো বলার পর, দু'জন দুই গাড়িতে উঠে হুশ করে বেরিয়ে গেলো।

"আর এই যে মশাই .. পেত্নীটাকে তো বিদায় করলাম। এবার তোমার ভূত কি করে ছাড়াতে হয় সেটা দেখছি। বাড়ি চলো .. কথা আছে।" জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গোগোলের উদ্দেশ্যে হিয়ার কথাগুলো শুনে সুবীর বলে উঠলো "হ্যাঁ বৌদি, এই ব্যাপারে আমরা কেউ গুরুকে সাপোর্ট করবো না। আমরা সবাই কিন্তু তোমার দলে, তুমিই একমাত্র পারো গুরুকে সোজা করতে।" চারিদিকে একটা হাসির রোল উঠলো।

"এ্যাই .. আমি কিছু বলছি না বলে তোদের সাহস বড্ড বেড়ে গেছে তাই না? ওকে 'বৌদি' বলে ডাকছিস কেনো? কথাটা যদি পাঁচকান হয়ে যায়, তাহলে আবার একটা অশান্তি শুরু হবে কিন্তু।" সুবীর এবং বাকিদের উদ্দেশ্যে কিঞ্চিত প্রশ্রয়সূচক ভর্ৎসনার সুরে কথাগুলো বললো গোগোল। 

"আজ বৌদি হয়নি, কিন্তু একদিন তো হবেই .. তাই এখন থেকেই সম্বোধনের প্র্যাকটিসটা সেরে রাখা ভালো .." এই কথা বলে কাঞ্চন এবং তার সঙ্গে বাকিরা  যে যার কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো। এদিকে গোগোল আর হিয়া পরস্পরের হাত ধরে বাড়ির অভিমুখে হাঁটতে লাগলো।

(ক্রমশ)



ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


Like Reply
এক কথায় অসাধারণ আপডেট,......রনিতার ক্যারেক্টার টা দেখার বিষয় আছে কি রকম ওর বাবার মতন না অন্য কিছু .....
[+] 1 user Likes Rinkp219's post
Like Reply
লাইক রেপু এডেড। রাতে ভালো করে পড়ে কমেন্ট করবো।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিনা। তিনটে বিভাগ কে এমন ভাবে ফুটিয়ে তুল্লে যে একটানা পড়ে যাওয়া ছাড়া আর অবাক হওয়া ছাড়া কিছুই বলার নেই। মা আর ছেলের মাঝের ওই সম্পর্ক দুঃখ কষ্ট ভালোবাসা আবেগ যতটা বুকে মোচড় দেয় ততটাই বুকে ভয় ধরায় ওই মাঝের ভয়ানক লিখিত অংশ গুলো। বড্ড ভয়ঙ্কর ও অমানবিক। যদিও সেটাই কাম্য ওই মানুষ গুলোর জন্য কিন্তু আমাদের চেনা ওই পুচকে গোগোল বাবুসোনার বর্তমান হিংস্র রূপের মাধ্যমে এই কার্যসিদ্ধি বড়ো কষ্ট দেয়। না চাইতেও আজ সে এমন হয়ে উঠলো। যার হাত কাঁপেনা পৈশাচিক কিছু করতে। অবশ্যই শয়তানের বিনাশ করতে।

আর শেষের ওই দিদিমনির নজর আর গোগোলের পুরুষ হিসাবে কমল হয়ে যাবার মাঝে হিয়ার হিরোইন হয়ে ওঠার অংশটা ফাটাফাটি। যা শিক্ষা দিলো ওই যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যাকে। একেবারে ড্যাডির রক্ত বয়ে যাচ্ছে দিদিমনির শরীরে। কামরাজ কে সামলাক গোগোল আর মেয়েকে হিয়া। কারণ এই বিশেষ ব্যাপারে গোগোল হয়তো খুব একটা কেরামতি দেখাতে পারবেনা। তাইতো এই বয়সে হিয়ার কাছে ঝাড় খেলো। বড্ড সুন্দর লাগলো শেষ অংশটা ♥️
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(24-11-2022, 09:28 PM)Rinkp219 Wrote: এক কথায় অসাধারণ আপডেট,......রনিতার ক্যারেক্টার টা দেখার  বিষয় আছে কি রকম ওর বাবার মতন না অন্য কিছু .....

সেটাই দেখার, এই উপন্যাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্র 

(24-11-2022, 09:30 PM)Boti babu Wrote: লাইক রেপু এডেড।  রাতে ভালো করে পড়ে কমেন্ট করবো।

আচ্ছা,  ঠিক আছে
Like Reply
(24-11-2022, 09:48 PM)Baban Wrote: কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিনা। তিনটে বিভাগ কে এমন ভাবে ফুটিয়ে তুল্লে যে একটানা পড়ে যাওয়া ছাড়া আর অবাক হওয়া ছাড়া কিছুই বলার নেই। মা আর ছেলের মাঝের ওই সম্পর্ক দুঃখ কষ্ট ভালোবাসা আবেগ যতটা বুকে মোচড় দেয় ততটাই বুকে ভয় ধরায় ওই মাঝের ভয়ানক লিখিত অংশ গুলো। বড্ড ভয়ঙ্কর ও অমানবিক। যদিও সেটাই কাম্য ওই মানুষ গুলোর জন্য কিন্তু আমাদের চেনা ওই পুচকে গোগোল বাবুসোনার বর্তমান হিংস্র রূপের মাধ্যমে এই কার্যসিদ্ধি বড়ো কষ্ট দেয়। না চাইতেও আজ সে এমন হয়ে উঠলো। যার হাত কাঁপেনা পৈশাচিক কিছু করতে। অবশ্যই শয়তানের বিনাশ করতে।

আর শেষের ওই দিদিমনির নজর আর গোগোলের পুরুষ হিসাবে কমল হয়ে যাবার মাঝে হিয়ার হিরোইন হয়ে ওঠার অংশটা ফাটাফাটি। যা শিক্ষা দিলো ওই যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যাকে। একেবারে ড্যাডির রক্ত বয়ে যাচ্ছে দিদিমনির শরীরে। কামরাজ কে সামলাক গোগোল আর মেয়েকে হিয়া। কারণ এই বিশেষ ব্যাপারে গোগোল হয়তো খুব একটা কেরামতি দেখাতে পারবেনা। তাইতো এই বয়সে হিয়ার কাছে ঝাড় খেলো। বড্ড সুন্দর লাগলো শেষ অংশটা ♥️

হ্যাঁ, আমি লেখার সময়েই বুঝতে পারছিলাম ওসমান আর জ্যাকির মৃত্যুর সময়ের ওই ঘটনাগুলো এত নির্মম, এত বীভৎস এবং এত পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে না বর্ণনা করলেই বোধহয় ভালো হতো। কিন্তু আমি নিজের হাতকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না। আমি বুঝতে পারছি ওই সিচুয়েশনে গোগোলকে নির্মম এবং অমানবিক মনে হয়েছে। হয়তো মনে হয়েছে এবার প্লিজ থামুক ছেলেটা, আর অত কষ্ট দিয়ে হত্যা করার দরকার নেই ওই দুর্বৃত্তদের। কিন্তু এখন পুরো ব্যাপারটা যে আমার হাতে নেই। যেটা ঘটেছে সেটাই লিখতে বাধ্য হচ্ছি। সবশেষে বলি অনেক ধন্যবাদ  Namaskar সঙ্গে থাকো এবং পড়তে থাকো।
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
লাইক এবং রেপু দিয়ে দিয়েছি, জাস্ট অসাধারণ এর।বেশি কিছু বলাটা বিলাসিতা মাত্র।
I'm the King of Dark
                &
I rule over all Devils
               devil2 devil2
[+] 1 user Likes Monen2000's post
Like Reply
(24-11-2022, 10:10 PM)Monen2000 Wrote: লাইক এবং রেপু দিয়ে দিয়েছি, জাস্ট অসাধারণ এর।বেশি কিছু বলাটা বিলাসিতা মাত্র।

thank you   thanks
Like Reply
মা না হতে পারলে নাকি নারী জনম সার্থক হয় না। সুজাতার হয়তো সেই অপবাদ টা থাকবে না ও গোগোলের মা হবার সবটাই করেছে। আজ ওদের অংশটুকু আলাদা নজর কেড়েছে প্রতিটা শব্দের ওজন আর বাক্যের মর্মার্থ হৃদয়ে গেথে গেছে।

মায়াবন্দরের কাহিনী আজ খোলাসা করে দিলে... সেই সাথে সেই রাতের লোমহর্ষক ঘটনা আবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো। 

হিয়া তো দেখি আজ ফুল ফর্মে চলে এসেছে সে কি টগর করে কাউন্টার দিদে চায় নাকি?? কামরাজ আর তার মেয়ের সামনে সপাটে বয়ান রেখেছে সাথে তো গোগোল কেউ ছাড়ে নি।

তবে নতুন দিদিমণির হুমকি টা তো হালকা করে নেয়া যাচ্ছে না।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
আজকের পর্ব এক কথাই অসাধারণ, সবসময় এমন পর্ব প্রত্যাশা করি আপনার কাছে । আজকের পর্বের সব আলো এক হিয়া নিয়ে চলে গেছে, গোগোলের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। আচ্ছা গোগোলের আর হিয়ার মাঝে ঐ দিন বাড়িতে কি কথা হয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি। কিছু একটা কথা হয়েছে যে জন্য হিয়া এখন আর কাউকেই ভয় পাই না।

নেপালি আর ওর গুরুর শেষটা পড়ে মনটা এত দিনে শান্তি হয়েছে।
আর কি পরবর্তী আপডেট অপেক্ষায় থাকবো।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
(25-11-2022, 12:42 AM)nextpage Wrote: মা না হতে পারলে নাকি নারী জনম সার্থক হয় না। সুজাতার হয়তো সেই অপবাদ টা থাকবে না ও গোগোলের মা হবার সবটাই করেছে। আজ ওদের অংশটুকু আলাদা নজর কেড়েছে প্রতিটা শব্দের ওজন আর বাক্যের মর্মার্থ হৃদয়ে গেথে গেছে।

মায়াবন্দরের কাহিনী আজ খোলাসা করে দিলে... সেই সাথে সেই রাতের লোমহর্ষক ঘটনা আবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো। 

হিয়া তো দেখি আজ ফুল ফর্মে চলে এসেছে সে কি টগর করে কাউন্টার দিদে চায় নাকি?? কামরাজ আর তার মেয়ের সামনে সপাটে বয়ান রেখেছে সাথে তো গোগোল কেউ ছাড়ে নি।

তবে নতুন দিদিমণির হুমকি টা তো হালকা করে নেয়া যাচ্ছে না।

হ্যাঁ, ঠিকই বলেছো, এই উপন্যাসের কোনো চরিত্রকেই হাল্কাভাবে নেওয়া যাবে না। কে যে কখন কোথা থেকে কি করে দেয় .. ভগবান জানে  Smile সবশেষে বলি অনেক ধন্যবাদ  thanks সঙ্গে থাকো এবং পড়তে থাকো।
Like Reply
(25-11-2022, 01:16 AM)Boti babu Wrote: আজকের পর্ব এক কথাই অসাধারণ, সবসময় এমন পর্ব প্রত্যাশা করি আপনার কাছে । আজকের পর্বের সব আলো এক হিয়া নিয়ে চলে গেছে, গোগোলের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। আচ্ছা গোগোলের আর হিয়ার মাঝে ঐ দিন বাড়িতে কি কথা হয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি। কিছু একটা কথা হয়েছে যে জন্য হিয়া এখন আর কাউকেই ভয় পাই না।

নেপালি আর ওর গুরুর শেষটা পড়ে মনটা এত দিনে শান্তি হয়েছে।
আর কি পরবর্তী আপডেট অপেক্ষায় থাকবো।

বুম্বা একে একে সব খোলসা করবে , don't worry  Smile অনেক ধন্যবাদ,সঙ্গে থাকো আর পড়তে থাকো।
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
সেক্স অ্যান্ড ভায়োলেন্স  -  হরেদরে  -  কাম আর ক্রোধ  -  প্রথম ও দ্বিতীয় রিপু  -  জীবনের চালিকাশক্তি ।  জীবন-কাহিনীরও । সালাম ।
[+] 1 user Likes sairaali111's post
Like Reply
ডবল লাইক আর ডবল রেপু দিয়ে রাখলাম এখন , পড়বো কিন্তু রাত্রে !!


Smile
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
 তোমার লেখার মাধ্যমে পুরো ব্যাপারটা এতটাই জীবন্ত করে ফুটিয়ে তুলে ছিলে যে মায়াবন্দরের বাংলোর ওই রাতের ঘটনাটা পড়তে পড়তে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিল। তবে আগের পর্বের সব আলো যদি টগর নিয়ে যায়, আজকের পর্বের সমস্ত আলো নিয়ে গেলো হিয়া, she rocks 
কিন্তু একটাই প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। গোগোল তো প্রতিজ্ঞা করেছে সে আর প্রাণঘাতী অস্ত্র তুলবে না, তাহলে কামরাজ আর মানিক সামন্ত শাস্তি পাবে কি করে? 

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply




Users browsing this thread: 42 Guest(s)