Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
17-11-2022, 09:07 PM
(This post was last modified: 24-01-2023, 10:33 AM by Bumba_1. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(৫)
হঠাৎ করেই ঘুমটা ভেঙে গেলো বর্ণালী দেবীর। ধড়ফড় করে উঠে বসলেন তিনি, জল তেষ্টায় গলাটা শুকিয়ে যাচ্ছিলো। বিছানা থেকে উঠে জল খেয়ে বাথরুমে গেলেন, তারপর পাশের ঘরের পর্দা সরিয়ে উঁকি মেরে দেখলেন তার সন্তান অপূর্ব অকাতরে ঘুমোচ্ছে। দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকাতেই চোখে পড়লো ভোর চারটে বাজে। এটাই তো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ .. যখন সেই অলৌকিক এবং বীভৎস, অথচ তার ভবিষ্যৎ জীবনের রক্ষা কবজের মতো ঘটেছিল সেই ঘটনাটি।
সেই গোপন কুঠুরিতে দুর্বৃত্তদের দাম্ভিক পদ সঞ্চালন ঘনীভূত হয় প্রতিটা মুহূর্তে গিরগিটির রঙ মেখে। উত্তপ্ত বাতাসে উড়ে বেড়ায় ছাই, কালো ধোঁয়া। সমস্ত অন্ধকার জুড়ে হায়েনার চোখ জ্বলে। নারীমাংস লোভীরদের দীর্ঘ ছায়া জুড়ে অবসন্ন অন্ধকারের তীব্র আক্ষেপ। তাদের বিকৃত চেতনায় তীব্র কষাঘাত করে। তারপর হয়তো রাত শেষ হয়ে এলে হিংস্রতার জঘন্য মুখগুলো আলোকিত অন্ধকারের ভিতর সংগোপনে নিজেকে হারায়। জালনিবদ্ধ নারীটির উথাল মনে তখন বালিয়াড়ি ঝড়, বালিতে সাজানো মরীচিকা। আকাশ ভেঙে সাগরে মেশে, দুয়ারে আগত বিভীষিকা। মনজুড়ে ছিলো স্বপ্ন-মিছিল, বাঁকা পথ ধরে বাইপাস। জীবন আদর্শের মাথা নত করে স্থান পেয়েছিল ভাইরাস। ঠিক তখনই সে এলো মহা সমারোহে, দীপ্তি ছড়িয়ে প্রলয় তার। কাকে নিতে এলো অজানা তখন, হয়তো যার নামে আছে পরোয়ানার ভার। মৃত্যুর ডাক বদ্ধ কুঠুরিতে, ঠিকানায় নেই আপন-পর। ভেদাভেদে গড়া দূরত্ব আজ, সীমানা শুধুই নিজের ঘর। রাত শেষের ভোরের আকাশে হঠাৎ আগুন শিহরণ, বীভৎস ডঙ্কারে কাঁপে নিস্তব্ধতা। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কে যেন চলে যায় চুপি চুপি। মাটিতে রক্তের তাজা গন্ধ। আবিরে ছোঁয়েনি বসন্ত আকাশ, ভীত নিরাশারা ক্লান্ত, স্তব্ধ। খুশির মুখেরা মুখোশে ঢাকা, আজ দুঃখেরা সব মুক, জব্দ।
ভোররাতের দিকে তার নারী শরীরের সমস্ত রস শেষ বিন্দু পর্যন্ত শুষে নিংড়ে নিয়ে, তাকে উল্টেপাল্টে ইচ্ছে মতন ভোগ করে ওই অচেনা দুই দুর্বৃত্তের নিষ্ক্রমণ ঘটার পর যখন সে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় বিধর্মী ওসমান আর জ্যাকির মাঝখানে শুয়ে কিছুটা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলো, ঠিক তখনই ঘটে গিয়েছিল সেই ভয়ঙ্কর প্রলয়। চাপা আর্তনাদের আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে গিয়ে ওই ঘরের ভেতর মেঝেতে ড্রেসিং টেবিলের সামনে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় জ্যাকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে ভয়ে, আশঙ্কায় চিৎকার করতে গিয়েও করতে পারেনি সে। সে দেখতে পেয়েছিলো নেপালিটার চোখ দুটো ঠিকরে বেরিয়ে আসছে, বুকের বাঁদিকে হৃদপিন্ডের ঠিক নিচে কোনো একটি ধারালো এবং ছুঁচোলো অস্ত্র দিয়ে বারংবার কোপানোর ফলে সেখানে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে রক্ত নির্গত হতে হতে জমাট বেঁধে গিয়েছে আর তার সঙ্গে বেরিয়ে এসেছে ভেতরের কয়েক টুকরো মাংসপিণ্ড। তলপেটের নিচটায় চোখ যেতেই অতিমাত্রায় শিউরে উঠেছিল সে। জ্যাকির সম্পূর্ণ পুরুষাঙ্গ এবং অণ্ডকোষ কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তার মৃতদেহের বাঁ-পাশে পড়ে রয়েছে। পরবর্তীতে তার চোখ গিয়েছিল তারই পাশে খাটের উপরে দুই হাত-পা ছড়িয়ে পড়ে থাকা ওসমানের মৃতদেহের দিকে। এমনিতেই কদাকার মুখের অধিকারী দুর্বৃত্তটার দুটো চোখ ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুবলে নেওয়ার ফলে তার সমগ্র মুখমণ্ডল আরো বীভৎসরূপ ধারণ করেছিলো। তলপেটে নাভির দুই দিকে ধারালো শলাকা দিয়ে পৈশাচিক উল্লাসে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেওয়া হয়েছিল, আর তলপেটের নিম্নভাগে জ্যাকির মতো তার বিশালাকার পুরুষাঙ্গ যেটি সেই দিন কিছুক্ষণ আগেও অবলীলায় তার যৌনাঙ্গের পুরো দখল নিয়েছিল, সেটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল।
এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে সংজ্ঞাহীন হওয়ার আগে সে দেখতে পেয়েছিল সেই ঘরে ঘনিয়ে ওঠা আঁধারের বুক চিরে এক জমাট-বাঁধা ঘন অন্ধকার দাঁড়িয়ে আছে। ধীরে ধীরে সেই চোখ সয়ে যাওয়া অন্ধকার যখন মানুষের অবয়ব নিতে লাগলো, তখন তার দৃষ্টিগোচর হলো এক মূর্তির। ব্যাস তারপর আর তার কিছুই মনে নেই।
★★★★
প্রদীপ জানতো না, সে না কার গর্ভে জন্মেছিল। জানতো না .. কি তার পিতৃপরিচয়! সে তো এটাও জানতো না, যে সে কোনো ধর্ষিতার সন্তান নাকি কোনো অসতী নারীর! কোনো ধারণাই ছিল না কোন যৌনাঙ্গের ঘর্ষণে ক্রোমোজমের বীজ সে! জন্ম দিয়ে তাকে হয়তো ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল কোনো আস্তাকুঁড়ের পাশে। সভ্যতার উচ্ছিষ্ট হিসেবে সমাজ তাকে দেখেছে দিনের পর দিন। বাঁকা ঠোঁটে হাসির ধিক্কার দিয়েছে 'বেজন্মা' বলে। মাতৃদুগ্ধ আর মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত প্রদীপের কপালে সমাজ লিখে দিয়েছিল 'জারজ' উপাধি। তার জন্যে ছিলো না কোনো ধর্ম, কোনো মানবাধিকার। কোনো বিদ্যামন্দির তাকে গ্রহণ করেনি .. আসলে বোধহয় নাম-গোত্রহীনদের জন্য সমাজ স্বীকৃতি দেয় না এই সবকিছুতে। একেক সময় তার মনে হতো .. সে তো সেই ভ্রূণ, যে কেড়ে নিয়েছে তার সামাজিক স্বীকৃতি। মাঝে কন্ডম সেলে আটকে যদি থাকতো এই জীবন .. জীবনের মায়াজাল যদি না পেতো এই দেহ। সেটাই বোধহয় ভালো হতো। হয়তো এই ভাবেই কোনো ডাস্টবিনের পাশে, বা হয়তো কোনো উঁচু ফ্লাইওভারের ছায়াতলে, কিংবা হয়তো কোনো এক রেল লাইনের ধারে নেশার ঘোরে পড়ে থাকতে থাকতে থাকতে শেষ হয়ে যেতো তার জীবন।
প্রদীপ তার জন্মরহস্য না জানলেও, তার সমগ্র শৈশবকাল থেকে শুরু করে কৈশোরের অন্তিম সময় পর্যন্ত কোনো একজন শকুনের দৃষ্টি ছিলো তার প্রতি। সেই ব্যক্তি জানতো এই ছেলেটি তারই লাম্পট্যের ফল .. তার একমাত্র জারজ সন্তান। একজন লম্পট, দুশ্চরিত্র, সুবিধাবাদী, ঘাতক এবং সর্বোপরি একজন জনপ্রতিনিধি যখন তার সন্তানের খোঁজ পায়, তখন সেই ব্যক্তি তার সন্তানকে জনসমক্ষে স্বীকৃতি দিতে পারেনা সেটা হয়তো ঠিক, কিন্তু তার রক্তের ঋণশোধ করাতে বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠে। তাই যৌবনে পা দিতেই আস্তাকুঁড়ের নরক থেকে প্রদীপকে নিজের সাম্রাজ্যে উঠিয়ে নিয়ে আসে মানিক সামন্ত। এবং পরবর্তীতে তার যাবতীয় অসামাজিক এবং নিষিদ্ধ কার্যকলাপের দোসর হয়ে ওঠে প্রদীপ। আসলে রক্ত কথা বলে। হঠাৎ করেই সেই প্রদীপের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর প্রায় সাতদিন অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছিলো। যে ট্রাকটি প্রদীপকে পিষে দিয়ে চলে গিয়েছিল, তার হদিস যেহেতু এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি, তাই মৃত্যুর কারণ অর্থাৎ এটি হত্যা না দুর্ঘটনা সেই সম্পর্কে পুলিশ-বিভাগ এখনো কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি, তবে তদন্ত চলছে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার দাবি তুলে উচ্চ নেতৃত্তের কাছে বারবার অভিযোগ জানালেও সেই অর্থে কোনো ফল না পেয়ে ক্ষ্যাপা কুকুরের মতো হয়ে গিয়েছিল মানিক সামন্ত। "বুড়োদের দিয়ে আর কাজ হচ্ছে না .. সবকটা অপদার্থ .. এবার নতুনদের দায়িত্ব দেওয়ার সময় এসেছে।" এলাকার বিধায়কের এইরূপ ইচ্ছা প্রকাশে এই কেসের তদন্তভার অভিজ্ঞ মিস্টার গোস্বামীর বদলে দেওয়া হলো গঙ্গানগর পুলিশ-স্টেশনে সবে জয়েন করা এসআই সন্দীপ সেনগুপ্তকে।
★★★★
- "হায় ভগবান, এত বড় হয়ে গেলো, তাও এখনো খাওয়া শিখলো না ছেলেটা। পাগলেও নিজের ভালো বোঝে, তুই আর কবে বুঝবি? আমি তাই ভাবি - যে ছেলে উচ্ছের তরকারি, উচ্ছে ভাজা .. এগুলো মুখে তুলতো না কোনোদিন, সে ইদানিং পরিপাটি করে ওসব খেয়ে নিচ্ছে কি করে! তারমানে আমার মর্নিং শিফ্ট থাকলে, দুপুরে যেদিন আমি বাড়ি থাকি না, তুই সেদিন আজ যা করলি, তাই করিস তো? উচ্ছে দিয়ে তরকারি হলে বাটি থেকে সেটা পাতে না ঢেলে জানলা দিয়ে ফেলে দিস, তাই না? আজ তোকে হাতে-নাতে ধরেছি বলে জানতে পারলাম। ওরে শুধু মাছ, মাংস আর ডিম খেলেই হয় না .. আমাদের শরীরের জন্য ডাল, বিভিন্ন রকমের শাক-সব্জি .. এগুলোও খুব গুরুত্বপূর্ণ।"
- "ওইসব তুমি খাও মামণি .. ওগুলো বয়স্কদের খাদ্য। আমাদের মতো ইয়াং জেনারেশন ওইসব ঘাস-পাতা খায় না।"
- "আমি বয়স্ক? এই, আমার কতই বা বয়স হয়েছে রে? সাঁইত্রিশ আটত্রিশ হবে .. এখনো আমার বিয়ের সম্বন্ধ আসে, জানিস?"
- "আচ্ছা, তাই? আর কতদিন ওই একই জায়গায় তোমার বয়স দাঁড়িয়ে থাকবে শুনি? আপনার বয়স বহুকাল আগেই চল্লিশ পার হইয়া গিয়াছে মা জননী। আর যারা এখনো তোমাকে প্রপোজ করে বা বিয়ের সম্বন্ধ আনে তোমার জন্য, তাদের নির্ঘাত চোখে ন্যাবা হয়েছে।"
- "কিইইইই? এত বড় কথা? আজ তোর একদিন কি আমার একদিন। দেখি কে বাঁচায় আজ তোকে আমার হাত থেকে।"
দু'জনের এইরূপ কথোপকথনের মাঝেই নিজের হাত উঁচিয়ে গোগোলের পেছনে তাড়া করলো সুজাতা। ঘরের দরজা খোলাই ছিলো, সেখান থেকে বেরিয়ে বাড়ির সামনের সান বাঁধানো জায়গাটায় গোল গোল করে ঘুরতে লাগলো গোগোল আর তার পেছনে দৌড়াতে লাগলো সুজাতা। এইরকম ঘটনা ওদের জীবনে প্রায় নিত্যদিনের সঙ্গী। রেলপাড়ের বস্তির বাসিন্দারা মা-ছেলের মেঘ ও রৌদ্রের আস্তরণে ঢাকা এই টক-ঝাল-মিষ্টিতে ভরা খুনসুটি বেশ উপভোগ করে। আবার মাঝেমধ্যে কেউ কেউ এগিয়ে এসে দু-একটা ফোড়ন কেটে সুজাতার পক্ষপাতিত্ব করে, যতক্ষণ না গোগোল তার মামণির কাছ থেকে গোটা কয়েক চপেটাঘাত হজম করে শেষে রণেভঙ্গ দেয়।
"বাহ্ বেশ বেশ, ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা খেলছিস? আজ তোর দুষ্কর্মের আস্তানা, sorry sorry slip of the tongue হয়ে গেছে। আমি বলতে চাইছি তোর কর্মক্ষেত্র, মানে রেললাইনের ওপারের ওই পরিত্যক্ত টাউন হলটায় যাওয়া হয়নি এখনো?" হঠাৎ সামনে এসে দাঁড়ানো একজন পুলিশের উর্দিধারী যুবকের এইরূপ উক্তিতে গোগোল আর সুজাতা দু'জনেই থমকে দাঁড়ালো। তারপর গোগোলের দিকে তাকিয়ে সুজাতা ইশারায় জানতে চাইলো 'কে এই ব্যক্তি? গোগোলের পূর্ব পরিচিত কি না ..'
"আমি দিয়ে দিচ্ছি আমার পরিচয় মাসিমা নাকি কাকিমা নাকি আন্টি .. কি বলে ডাকি বলুন তো আপনাকে? উঁহু এগুলোর কোনটাই চলবে না .. you're looking so young .. আপনাকে ম্যাডাম বলে ডাকি, কেমন? anyways, আমি সন্দীপ .. সন্দীপ সেনগুপ্ত .. গঙ্গানগর পুলিশ স্টেশনে Sub inspector পোস্টে জয়েন করেছি। তবে এছাড়াও কিন্তু আমার আরেকটা পরিচয় আছে। মানে যার সঙ্গে আপনি এতক্ষণ ছোঁয়াছুঁয়ি খেলছিলেন, সে আমার বাল্যবন্ধু। তবে 'বন্ধু' শব্দটা এখন আর সেই অর্থে ব্যবহার করা যায় কিনা জানিনা, সহপাঠী বলতে পারেন। আমরা একসঙ্গে গুরুকুল বিদ্যামন্দিরে সম্ভবত ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। তারপর ও মানে অনির্বাণ একটা ব্লান্ডার করে ফেললো .. I mean কি সব ড্রাগ নিজের সঙ্গে carry করতে গিয়ে ধরা পড়ে কলেজ থেকে rusticated হয়ে গেলো। তারপর আর কি .. আমি আমার পড়াশোনা কমপ্লিট করলাম, জীবনে success পেলাম, সবই আপনাদের আশীর্বাদে। হেহেহে .." গা জ্বলানি একটা হাসি হেসে একদমে কথাগুলো বললো সন্দীপ।
"আপনি আমাকে কাকিমা, মাসিমা, ম্যাডাম বা নাম ধরে .. যা খুশি সম্বোধন করতে পারেন, তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। আপনাকে এর আগে কোনোদিন দেখিনি তাই চিনতে পারিনি প্রথমে। তবে আপনার সম্বন্ধে শুনেছি অনেক কিছুই। শেষের কথাগুলো কিন্তু আপনি অর্ধসত্য বললেন! আপনার মতো একজন সম্মানীয় পুলিশ অফিসারের কাছে এটা বোধহয় কাম্য নয়। আপনার সহপাঠী অনির্বাণের ব্যাগে ড্রাগের প্যাকেট পাওয়া গিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেটা ও নিজে সঙ্গে করে আনেনি। অন্য কেউ একজন ঢুকিয়ে দিয়েছিলো ওর ব্যাগে এবং যে এই কাজটা করেছিলো সে এই ব্যাপারটা পরে কলেজের কোনো এক টিফিন পিরিয়ডে তার কাছে স্বীকার করেছিলো। কি, আমি ঠিক বলছি তো? আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন অফিসার, বিন্দুমাত্র লজ্জাবোধ থাকলে গোগোল সম্পর্কে 'বন্ধু' শব্দটা এখন আর ব্যবহার করা যায় না বা উচিৎ নয়। কারণ বন্ধুত্বের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকতার কোনো স্থান নেই। যাগ্গে এসব কথা বাদ দিন, আপনার এখানে পদধূলি দেওয়ার কারণটা যদি একটু বলেন, তাহলে খুব ভালো হয়, কারণ আমাকে আবার ডিউটিতে বেরোতে হবে এখনই।" শান্ত অথচ দৃঢ় কন্ঠে সন্দীপের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বললো সুজাতা।
"ব্রাভো ব্রাভো .. ঘরে বাইরে সব জায়গাতেই তাহলে spokesperson রেখে দিয়েছিস অনির্বাণ! নবমীর রাতে দেখলাম এই এলাকার কয়েকজন তোর হয়ে কথা বলছিলো, আবার আজ দেখছি তোর সব কথা এই মহিলাই বলে দিচ্ছে। ঠিক আছে, এগুলো তোর ব্যক্তিগত ব্যাপার, তাই আমার কিছু বলার নেই। শুধু একটা suggestion অবশ্যই দেবো .. সেদিন তোর সঙ্গে যে মেয়েটাকে দেখলাম, মানে তুই যার সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলিস, তোর 'স্পেশাল ফ্রেন্ড' বলে পরিচয় করিয়ে দিলি যাকে। ওকে বা ওদের মতো substandard লোকজনকে নিয়েই খুশি থাক না ভাই। বামন হয়ে চাঁদ ধরতে যাওয়ার কোনো দরকার নেই।" প্রথমে কিছুটা ব্যঙ্গ করে তারপর শেষের কথাগুলো কতটা হুমকির সুরে বললো সন্দীপ।
"অফিসার .. আপনি কিন্তু এবার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। অনেকক্ষণ ধরে যা নয় তাই বলে যাচ্ছেন। আপনি আমার মামণির সম্পর্কে এইভাবে কি করে কথা বলতে পারেন? আপনি রেলপাড়ের যে সমস্ত লোকজনকে সাব স্ট্যান্ডার্ড বলছেন, তাদের শিক্ষা-দীক্ষা, সংস্কৃতি সম্বন্ধে কোনো ধারণা আছে আপনার?" গোগোলের এই কথায় সায় দিয়ে এতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে ওদের কথোপকথন শুনতে থাকা ওদের প্রতিবেশী রেলপাড়ের ক্লাবের প্রেসিডেন্ট পঙ্কজ বাবু বলে উঠলেন "গোগোল আমাদের রেলপাড়ের বস্তির গর্ব আর সুজাতা আমাদের সব সময়ের সুখ দুঃখের সঙ্গী। ওদের দুজনের সম্পর্কে এই ধরনের কথাবার্তা আমরা কেউ সহ্য করবো না। অফিসিয়ালি আপনার যদি কিছু কাজ থাকে এখানে, তাহলে সেটা করে এখনই চলে যান। না হলে কিন্তু .." পঙ্কজ বাবুর এই উক্তির পরেই সন্দীপ লক্ষ্য করলো তার পেছনে গোটা কয়েক লোক এসে জমা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রথমে কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়লেও, তৎক্ষণাৎ নিজেকে সামলে নিয়ে গলাটা যতটা সম্ভব গম্ভীর করে সন্দীপ বললো "না হলে কিন্তু .. কি? ভয় দেখাচ্ছেন আমাকে আপনারা? একজন অন-ডিউটি পুলিশ অফিসারকে হেনস্থা করার কি ফল হতে পারে সেই সম্পর্কে কোনো ধারণা আছে আপনাদের? আর তোকে বলছি শোন অনির্বাণ .. এরই মধ্যে অনেক ইনফরমেশন জোগাড় করেছি তোর সম্পর্কে, ভবিষ্যতে আরও করবো .. সাবধানে থাকিস। একটা কথা ভালো করে মনের ভেতর ঢুকিয়ে নে - তোদের মতো এইসব গুন্ডা লাফাঙ্গাদের বাপ এসে গেছে গঙ্গানগরে। তাই বাপের এলাকায় থাকতে হলে ছেলে ছেলের মত থাকবি।"
"অফিসার .. আপনাদের যত গুন্ডামি যত মাস্তানি সব এই উর্দির আড়ালে থেকে। কোনোদিন এই ইউনিফর্মটা খুলে রেলপাড়ে আসবেন। কোনটা বাপের এলাকা আর কোনটা ছেলের এলাকা .. ফিতে দিয়ে মেপে দেখিয়ে দেবো।" ততোধিক গুরুগম্ভীর গলায় হুঙ্কার দিয়ে উঠলো গোগোল।
গোগোলের এই উক্তিতে যেন আগুনে ঘি পড়লো .. মুখটা বিকৃত করে তার দিকে সন্দীপ এগিয়ে আসতেই, হঠাৎ করে তার সামনে এসে দাঁড়ালো স্বপন সাধুখাঁ'র মেয়ে টগর। সন্দীপকে হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়ে সে বলে উঠলো "একদম বাড়াবাড়ি করার চেষ্টা করবেন না স্যার, এর ফল কিন্তু ভয়ঙ্কর হবে। বামন হয়ে চাঁদ ধরার কথায় এবার আপনার এখানে আসার আসল কারণটা বুঝতে পারলাম। যাকে জোর করে আঁকড়ে ধরে রাখতে চাইছেন, সেই বন্ধন যাতে শিথিল হয়ে না পড়ে সেই প্রচেষ্টাতেই আপনার এখানে আগমন হয়েছে, তাই না? কিন্তু কি জানেন তো .. পরস্পরের প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা না থাকলে সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা বোধহয় বিধাতার পক্ষেও সম্ভব নয়। যাই হোক, এর বেশি আমি আর একটা কথাও বলবো না এই ব্যাপারে। একটু আগে আপনি বলছিলেন না সাকসেসের কথা। আচ্ছা, জীবনের সাফল্য মানে আপনি জানেন? যদি কেউ ছয় বছর বয়সে মাতৃহারা হয়ে নিজের খাবার নিজেই বেড়ে খেতে পারে, সেটাই সাফল্য। যদি কেউ পনেরো বছর বয়সে গার্লফ্রেন্ড জোগাড় করতে পারে, তাহলে সেটাই সাফল্য। যদি কেউ সতেরো বছর বয়সে ড্রাইভিং লাইসেন্স জোগাড় করতে পারে, সেটাই সাফল্য। যদি কেউ তেইশ বছর বয়সে কোনো সন্ত্রাস ছাড়াই শুধুমাত্র নিজের কর্মগুণে এলাকার বেতাজ বাদশা হয়ে উঠতে পারে, তাহলে সেটাই তার জীবনের সাফল্য। আর আপনার জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখি, আপনার সহপাঠী গুরুকুল বিদ্যামন্দির থেকে বেরিয়ে আসার পর মুখ্যু হয়ে বসে ছিলো না, রেলপাড়ের সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেছে। গোগোল দা গঙ্গানগর কলেজ থেকে ফিজিওলজি অনার্স নিয়ে ফাস্ট ক্লাস সেকেন্ড হয়েছিল। এবার আপনি আসতে পারেন।"
"এই অপমান আমি জীবনেও ভুলবো না। ওদিকের ব্যবস্থাটা আগে করে নিই, তারপর তোদের সব কটাকে যতদিন ডেসট্রয় না করে দিতে পারছি, আমার শান্তি নেই।" স্বগতক্তি রূপে বিড়বিড় করতে করতে রেলপাড়ের বস্তি ত্যাগ করলো সন্দীপ।
The following 11 users Like Bumba_1's post:11 users Like Bumba_1's post
• Baban, Bichitro, Boti babu, Chandan, ddey333, Mampi, nextpage, Roy234, Sanjay Sen, Somnaath, Undre
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
17-11-2022, 09:11 PM
(This post was last modified: 17-11-2022, 09:33 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
"শোনো মাসি .. বাবা এই কয়েকটা মুদিখানার জিনিস পাঠিয়ে দিলো .. সেগুলো দিতেই এসেছিলাম। এখন আবার দক্ষিণপাড়ায় যেতে হবে আমাকে .. রিহার্সাল আছে। "শ্যামা" হচ্ছে গো .. আর শ্যামার চরিত্রে কে অভিনয় করছে জানো? আমি গো আমি। তোমাদের দেখতে আসতে হবে কিন্তু .. আমি অবশ্য নেমন্তন্ন করে যাবো পরে। এখন আমার নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই গো, এই নাও ধরো ব্যাগটা। এবার যাই আমি?" এই বলে টগর চলে যেতে গেলে তার হাত ধরে সুজাতা বললো "ওরে ওরে শোন শোন .. যাবি তো, নিশ্চয়ই যাবি। কিন্তু রিহার্সালে দু'দণ্ড দেরি করে গেলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হবে শুনি? তুই শ্যামা করছিস? এই জানিস, আমিও না তোর বয়সে 'শ্যামা' গীতিনাট্যে অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু কার চরিত্রে বলতো? বজ্রসেনের . হাহাহাহা।"
- "সত্যি? কিন্তু তুমি তো শ্যামার চরিত্রে অভিনয় করতে পারতে গো। তোমাকে তো একদম ওইরকমই দেখতে।"
- "না রে .. শ্যামা করার জন্য এমন একজন ছিলো, যাকে কেউ রিপ্লেস করতেই পারতো না। যেরকম তার রূপ, সেরকম তার গুণ, যেরকম তার নাচের ভঙ্গিমা, সেরকম তার গানের গলা .. সব মিলিয়ে সর্বগুণসম্পন্না বলা যায়। কে জানিস? ওই যে দাঁড়িয়ে আছে তোর গোগোল দাদা, ওর মা .. অরুন্ধতী। সম্পর্কে সে আমার দিদি হতো, যদিও আমার থেকে বয়সে অনেকটাই বড়ো ছিল সে। যাক সে কথা, বলছিলাম এখন তো মাসের শেষ, হাত একদম খালি। তোর বাবা পয়সাকড়ির কথা কিছু বলেনি?"
- "আরে ওসব তুমি ছাড়ো না মাসি। পয়সা-টয়সা এখন দিতে হবে না। তোমার যখন খুশি তখন দিলেই হবে।"
- "সে তো আমি মাস পড়লেই দিয়ে দেবো। কিন্তু তোর বাবা সত্যিই কিছু বলেনি টাকার কথা?"
- "বাবার কথা ছাড়ো তো .. তুমি তো জানোই, এই ব্যাপারে বাবা কত বড় চশমখোর। তবে আমি আসার সময় পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি 'আমি তো ওখানে গিয়ে মানে তোমাদের এখানে এসে টাকা-পয়সার কথা কিছু বলবই না, তুমি যদি পরে কিছু বলো, তাহলে তোমার একদিন কি আমার একদিন।' ব্যাস আর কি .. এই পৃথিবীতে স্বপন সাধুখাঁ যদি সব থেকে বেশি কাউকে ভয় পায়, তাহলে সে হলো আমি .. একদম বলতি বন্ধ হয়ে গেছে বুড়োর।"
- "ইশ্ , তার মানে তুই এখানে আসার আগে তোর বাবার সঙ্গে ঝগড়া করেছিস? সত্যি রে টগর তোকে যত দেখি ততই অবাক হই। কিন্তু সব থেকে অবাক হলাম আজ যখন তুই তোর গোগোল দাদার ব্যাপারে ওইরকম ভাবে কথা বলছিলিস ওই ইন্সপেক্টরের সঙ্গে।"
সুজাতা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল, তাকে থামিয়ে দিয়ে গোগোল বললো "টগর রানী, ফরফরানি .. তোর মুখে তো খুব বুলি ফুটেছে আজকাল, ইন্সপেক্টরকে চমকে দিলি একেবারে। যাই হোক, কত টাকা হয়েছে বল .. আমি দিয়ে দিচ্ছি আমার কাছে আছে।"
"এই বাবু, তুই টাকা দিবি মানে? তোর কাছে টাকা কোথা থেকে এলো?" বিস্ময় প্রকাশ করে বললো সুজাতা।
"ওহো .. সব সময় এই ফাটা-রেকর্ড বাজিয়েই চলেছে। এটা কোথা থেকে হলো, এটা কোথা থেকে পেলি, এটা করলি কেনো, এটা কি করে এলো, এটা তো আমি জানিনা .. আরে বাবা একটু আগে যিনি এসেছিলেন, ওই গুণধর ইন্সপেক্টর .. তিনি তো নিজের মুখে বললেন, শোনোনি আমার কর্মক্ষেত্রের কথা? আমি যখন কারোর কাছে একটা কাজ করি, তার মানে সেখান থেকে অবশ্যই টাকা পাই। মাগনাতে কাজ করি না নিশ্চয়ই! তাই বললাম আমার কাছে টাকা আছে, এতে এত অবাক হওয়ার কি আছে বুঝতে পারছি না? শোনো, তোমাদের মতো ওইসব পাতি চাকরি আমি করি না, যে চাকরিতে মাসের শেষে টাকা ফুরিয়ে যায়। আমার পকেটে সবসময় ইনটাক্ট টাকা থাকে, বুঝলে কিছু?" গড়গড় করে কথাগুলো বলে চললো গোগোল।
"তোর কর্মক্ষেত্রের কথা ইন্সপেক্টরের মুখে তো আমি অবশ্যই শুনেছি, কিন্তু তার সঙ্গে এটাও শুনলাম 'দুষ্কর্মের আস্তানা' এই শব্দটা। এই কথার মানে কি? তুই কার কাছে কি কাজ করিস? বলতেই হবে এখন তোকে।" সুজাতা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল, সেই মুহূর্তে তার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো। ফোনটা রিসিভ করে জানতে পারলো হসপিটালে একটা এমার্জেন্সি হয়েছে, এই মুহূর্তে তাকে আসতে হবে। টগরের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে আদর করে, আর গোগোলের দিকে কটমট করে তাকিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে গেলো সুজাতা।
- "তারপর টগর রানী ফরফরানি .. বল কত টাকা হয়েছে? আমি দিয়ে দিচ্ছি এখনই।"
"এই শোনো আমাকে 'ফরফরানি' বলবে না বলে দিলাম। তাহলে ধরে এমন পিটবো না! মনে আছে তো .. মনে আছে? সেদিনকে এই কথা বলেছিলে বলে কিরকম গুমগুম করে কিল মেরেছিলাম তোমার পিঠে। তোমাকে রেলপাড়ে সবাই যমের মতো ভয় পেতে পারে, কিন্তু আমি পাই না .. বুঝেছো? হিহিহিহি .." গোগোলের কথার উত্তরে প্রথমে কপট রাগ দেখিয়ে পরে খিলখিল করে হেসে উঠে দৌড়ে পালাতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালো টগর - "ও মা হিয়া দিদি .. তুমি! কখন এলে?"
- "কেনো? এসে খুব অসুবিধা করে দিলাম বুঝি তোদের দুজনের?"
- "ও মা , ছিঃ ছিঃ তা কেন হবে? তুমি কখন এলে দেখতেই পাইনি, তাই জিজ্ঞাসা করছিলাম।"
- "ভাগ্যিস এলাম, না হলে তো এই দৃশ্য দেখতেই পেতাম না। মা ওদিকে কাজে বেরিয়ে গেছে আর ছেলে বাইরে থেকে মেয়ে নিয়ে এসে বাড়িতে বেলেল্লাপনা করছে।"
"হিয়া .. এইসব কি বলছিস তুই? তোর মুখে এই ভাষা যে আমাকে শুনতে হবে, তা আমি কল্পনাতেও ভাবিনি কোনোদিন। ছিঃ ছিঃ লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে আমার। এখানে কিছুক্ষণ আগে একটা খুব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে। তাছাড়া টগর একটা কাজে এসেছিলো, আর মামণি তো এতক্ষণ ছিলো, এইমাত্র বেরিয়েছে।" কিছুটা উচ্চকণ্ঠেই কথাগুলো বললো গোগোল।
"থাক, ছেড়ে দাও গোগোল দাদা। হিয়া দিদি এসেছে এতদিন পর, তোমরা ঝগড়া করো না, সব মিটমাট করে নাও .. আমি বরং যাই। আর আমি কিচ্ছু মনে করিনি হিয়া দিদির কথায়।" এই বলে চোখের কোণায় জল এসে যাওয়া টগর চলে যেতে উদ্যত হতেই, তাকে থামিয়ে দিয়ে হিয়া বললো "নাটক করার কোনো দরকার নেই। এখান থেকে এখন এই মুহূর্তে যদি কেউ চলে যায় তাহলে আমি যাবো, তুই নয়। একটু আগে তোদের দু'জনের খুনসুটি দু'জনের আলোচনা, আমি সবকিছু শুনেছি। তোরা দু'জনে এখন কোয়ালিটি টাইম কাটাচ্ছিস সেটা আমি বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছি। তাছাড়া সেদিনকে মানে নবমীর রাতে তো তোর গোগোল দাদা বলেই দিলো তুই ওর 'বিশেষ একজন' .. তাহলে এখন শুধু শুধু ন্যাকামি করছিস কেন? আমি এসেছিলাম মামণির কাছে, তোর গোগোল দাদার কাছে তো আসিনি। এরপর এখানে আসার আগে মামণিকে ফোন করে তবেই আসবো।"
"হিয়া দিদি, হিয়া দিদি .. প্লিজ শোনা, চলে যেও না। একটা সম্পূর্ণ পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝিতে এই সব কিছু ঘটছে, এটা আমি বেশ বুঝতে পারছি। এই ব্যাপারটাকে শুধু শুধু টেনে নিয়ে গিয়ে সেই বস্তাপচা সিরিয়াল বা বোকা বোকা রোমান্টিক উপন্যাসগুলোর মতো করে ফেলো না। তুমি তো শিক্ষিতা বুদ্ধিমতী মেয়ে গো .. আমার মতো অশিক্ষিত বোকা মানুষ তো তুমি নও। ওই মানুষটার মুখের কথাটাই ধ্রুব সত্যি হিসেবে ধরে নিলে? যাকে এত ভালোবাসো তার মনের ভেতরের আকুতিগুলো শুনলে না? তোমার সঙ্গে ওই মানুষটিকে দেখে ঈর্ষাতে জ্বলে-পুড়ে যাচ্ছিলো গো আমার গোগোল দাদা। রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে তোমাকেও হয়তো ঈর্ষার আগুনে কিছুটা পোড়াতে চেয়েছিল, তাই হয়তো মুখ ফসকে আমার সম্বন্ধে ওইরকম কিছু বলে ফেলেছে। কিন্তু, বিশ্বাস করো হিয়া দিদি গোগোল দাদার মনে আমার জন্য স্নেহ হয়তো কিঞ্চিত থাকলেও থাকতে পারে কিন্তু ভালোবাসা? হাহাহাহা .. একটুও নেই। আমার মতো পাগলিকে কে ভালবাসবে গো? তাছাড়া প্রেম-ভালবাসা ওইসব আমি নিজেই কিছু বুঝিনা। তবে, ছোট মুখে একটা বড় কথা বলছি, প্লিজ কিছু মনে করো না। সেদিন তোমার সঙ্গের ওই মানুষটি, মানে আমাদের থানার নতুন ইন্সপেক্টর। সে একটু আগে এখানে এসে অনেক খারাপ খারাপ কথা বলে গেছে গোগোল দাদাকে আর তোমাদের মামণিকে। তোমার ব্যাপারেও সাবধান করতে এসেছিলো। হ্যাঁ গো, আমি সত্যি বলছি। তবে আমি আচ্ছা করে কথা শুনিয়ে দিয়েছি, আর সেই কথা শুনে ল্যাজ গুটিয়ে বাবু পালিয়েছে। হিহিহিহি .." বাড়ির বাইরে চলে আসা হিয়ার আর হাতদুটো ধরে দুটি চোখ ততক্ষণে জলে ভরে গিয়ে টলটল করতে থাকলেও মুখে যতটা সম্ভব হাসি এনে মৃদুস্বরে কথাগুলো বললো টগর যাতে গোগোল শুনতে না পায়।
"সন্দীপবাবু এখানে এসেছিলেন? কি বলেছেন ওদেরকে উনি? আর আমার ব্যাপারে সাবধান করতে এসেছিলো মানে? কাকে সাবধান করতে এসেছিলো?" বিস্ময় প্রকাশ করে জানতে চাইলো হিয়া।
- "সত্যি বাবা , তোমার মতো বকুরাম আমি আর দেখিনি জীবনে। যদিও স্পষ্ট করে বলেনি, তবে আকার ইঙ্গিতে এটাই প্রকাশ করেছিলো যাতে গোগোল দাদা আর তোমার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখে .. এবার বুঝলে কিছু? তুমি প্লিজ ভেতরে যাও, গোগোল দাদা একদম ভালো নেই গো .. সারাদিন মনমরা হয়ে থাকে, খাওয়া দাওয়াও করে না। তুমি আবার ভেবো না এইসব আমি নিজে এসে দেখেছি। এগুলো আমি সব মামণি .. সরি সরি আমার তো মামণি নয়, আমার তো মাসি। মানে আমি সুজাতা মাসির কাছ থেকে সব শুনেছি, তাই তোমাকে বললাম। এবার আমার সত্যি সত্যি দেরি হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ পাড়ায় আমার একটা রিহার্সাল আছে। পরে এসে তোমাকে নেমন্তন্ন করে যাবো, আসতে হবে কিন্তু আমার নাচ দেখতে।"
"এই শোন .. তুই এতো কিছু করিস ওদের জন্য আমি মামণির কাছ থেকে অনেক কিছুই শুনেছি তোর ব্যাপারে। তার ওপর আজ আবার সন্দীপ বাবুর সঙ্গে ঝগড়া করেছিস তোর গোগোল দাদাকে খারাপ কথা বলেছে বলে। তোর গোগোল দাদা তোকে ভালবাসে না এই কথা তো বললি, কিন্তু তুই? তুই ভালবাসিস না ওকে? বল .. সত্যি করে বল।" উত্তেজনায় হাঁপাতে হাঁপাতে জিজ্ঞাসা করলো হিয়া।
ভালোবাসা! সে তো জন্মেছে মনে, বসত করেও মনে। ভালোবাসার অলিখিত কাব্য কথা বলে যায় চরণে। আমার সকাল, বিকেল, এমনকি রাত্রিও সঁপে দিয়েছি তাকে। তবে শুধুই অন্তরে, এর কোনো বাহ্যিক প্রকাশ নেই। সব আলসেমি ফেলে তাকে দেখতে ছুটে যাই রেলপাড়ের পশ্চিমের ধুধু প্রান্তরের সেই উচু দিগন্ত থেকে আরো উঁচুতে। একাকী হয়েও একা নই তো আমি .. সে থাকে তো আমার অনুভবে সর্বদা। প্রহর গুনি আবার কবে দেখা হবে তার সঙ্গে এই ভেবে। বৃষ্টি তো আমার কাছে শুধু বৃষ্টি নয়, সে যে ভালোবাসার জলছবি। তাকে ভালোবেসে আমার মতো একজন মূর্খেরও কবিত্ব প্রকাশ পায়। এখানে সেখানে যেখানেই যাই খুঁজি তার ছায়া সারাক্ষণ। না পেয়ে হতাশ হই, কিছুটা দুঃখী, মনে মনে আলাপন। তাকে নিয়ে বিলাসী মনে স্বপ্নের জাল বোনা,শত কাজের মাঝেও হঠাৎ করেই হয়ে যাই আনমনা। কখনো আবার অভিমান মেঘের সমান ভালোবাসার রঙে সৃষ্টি হয়, আবার কখনো নিমেষে উধাও হয়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। স্মৃতির গভীরে হারাই যদি, হেসে উঠি ক্ষণে ক্ষণে। উচ্ছল আমি চঞ্চল আমি ভালোবাসো আছে তাই, তাকে নিয়েই গল্প বাকিটা জীবন, সে ছাড়া যে আর কিছুই নেই। কি সব ছাইপাঁশ বলে ফেললাম। আসলে অশিক্ষিত তো তাই ঠিকঠাক গুছিয়ে কথা বলতে পারি না .. আমি চললাম গো হিয়া দিদি।" হিয়াকে বাড়ির দরজার সামনে একা রেখে ঝড়ের গতিতে সাইকেল চালিয়ে বেরিয়ে গেলো টগর, তার ঝাপসা চোখে ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে লাগলো মেয়েটা .. তারপর ধীরে ধীরে দক্ষিণপাড়ার অভিমুখে যাওয়ার রাস্তায় মিলিয়ে গেলো সে।
সেই দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কিছুটা ইতস্তত করে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলো হিয়া। তাকে কথা বলতে হবে গোগোলের সঙ্গে .. অনেক বোঝাপড়া আছে।
★★★★
মিউনিসিপাল হসপিটালে নিজের কেবিনে মাথা নিচু করে বসেছিলো সুজাতা। অনেকরকম চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিলো তার মাথায়। আজ না হয় কাল, কাল না হয় পরশু .. তাকে জানতেই হবে গোগোলের রোজগারের উৎস। মাঝের বেশ কয়েকটা বছর বেশ শান্তিতেই কেটেছিল তার। কিন্তু বর্তমানে শুধু পরিবারের নয় কর্মক্ষেত্রেও অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছে। নতুন যিনি সুপারিনটেনডেন্ট হয়ে এসেছেন তিনি ডক্টর দাশগুপ্তর থেকে একেবারেই ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। শুধু ভিন্ন বললে ভুল হবে, দু'জন একেবারে দুই মেরুর মানুষ বলা চলে। কোরাপশন যেখানে প্রাক্তন সুপারের দরজায় কড়া নাড়তে ভয় পেতো, সেখানে যিনি বর্তমান সুপার তিনি পুরোপুরি দুর্নীতিতে ডুবে আছেন। কানাঘুষো শোনা যায় তার স্ত্রী কাকলি দেবী অত্যন্ত চরিত্রহীনা এক নারী, যার সঙ্গে এই অঞ্চলের সব থেকে ভয়ঙ্কর এবং প্রভাবশালী দুই দুর্বৃত্ত কামরাজ এবং মানিক সামন্তর অবৈধ সম্পর্ক আছে।
আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে তার কেবিনে এইরকম এক দুপুরেই ঘটে গিয়েছিল সেই অপ্রত্যাশিত ঘটনা। ডক্টর দাশগুপ্ত যাকে 'প্রতাপ' বলেই সম্মোধন করতো সুজাতা। তিনিই তো এখানে, এই ঘরে একবার মাত্র সুজাতার নগ্নরূপ দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন। তারপর অনেক সাওয়াল অনেক বাগবিতণ্ডার পর সুজাতা ধীরে ধীরে নিজেকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করেছিলো ডক্টর দাশগুপ্তর সামনে। তার কাঁধে একটা হাত রেখে বলেছিলো "আমিও শরীরের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজেছি প্রতাপ .. কিছুতেই পাইনি। সে যে কি কষ্ট! শরীরে একটা জৈবিক সুখ অবশ্যই বিদ্যমান, কিন্তু ভালোবাসা না পাওয়ার উপলব্ধির বেদনা যে আরো অনেক, অনেক বেশি তীব্র। তোমার স্ত্রী পক্ষাঘাতে পঙ্গু, তুমি তার কাছ থেকে শারীরিক সুখ পাওনা। তাই তুমি আমার শরীরের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজতে চাইছো, তাই তো? তবে নাও .. দেখো খুঁজে পাও কি না! ভালো করে দেখো আমাকে প্রতাপ .. মনে কোনো দ্বিধা রেখো না, যদি এই শরীরটাকে পেলে তোমার ভেতরের সমস্ত মোহ মিটে যায় .." কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আগের মতো এখন একটুও সংকোচ বোধ হচ্ছিলো না সুজাতার। বরং ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে স্বগতক্তি করে সে বলে উঠলো ইশ্ প্রতাপটা কি ভীতু ছিলো .. বলা নেই কওয়া নেই ধপ করে আমাকে প্রণাম করে ফেললো!" তারপরেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো সুজাতার ভেতর থেকে।
"কি রে, একা একা বসে হেসে চলেছিস আর আর কি বিড়বিড় করছিস? তবে আমি কিন্তু এখানে কোনো হাসির কথা বলতে বা আলোচনা করতে আসিনি। আমার ডিউটি ওভার, এখন বাড়ি যাবো। তার আগে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা তোকে জানাতে এসেছি, মন দিয়ে শোন কথাগুলো।" চমক ভেঙে সুজাতা তাকিয়ে দেখল তার সামনে কাবেরী দেবী দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছে।
- "বল .. কি বলতে চাস .."
- "দ্যাখ, আমি বেশি ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বা রহস্য করে কথা বলতে পছন্দ করি না। সোজা কথা সোজা ভাবে বলতে ভালোবাসি। তোকে বেশ কয়েক বছর আগে বলেছিলাম মনে আছে নিশ্চয়ই .. হিয়া আর আমার দাদার বাল্যবন্ধু শশাঙ্ক বাবুর ছেলে সন্দীপের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ছোটবেলা থেকেই। সেই সন্দীপ বর্তমানে গঙ্গানগর পুলিশ স্টেশনে সাব-ইন্সপেক্টর পোস্টে জয়েন করেছে। ভালো ছেলে শিক্ষিত ছেলে, এখন বয়স অল্প। এরপরে আরো প্রমোশন পাবে, প্রচুর উন্নতি হবে ওর। ওদের বাড়ি থেকে তো কোনো অসুবিধাই নেই, ওদের বাবা-মা-ছেলে তিনজনেরই হিয়াকে ভীষণ পছন্দ। কিন্তু আমার মেয়েটা যে এতটা অবাধ্য এবং অসভ্য হয়ে গেছে সেটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আসলে এগুলো হয়েছে বাজে সঙ্গে মিশে। আজ সকালে ওকে যখন পুরো ব্যাপারটা খুলে বলতে গেলাম .. মানে সন্দীপের সঙ্গে ওর বিয়ের ব্যাপারটা। তখন আমাকে কি বলে জানিস? ও নাকি একজন এডাল্ট মেয়ে, ওর অনুমতি না নিয়ে নাকি বিয়ের কথা বলে আমি ভীষণ অন্যায় করেছি। তারপর তেজ দেখিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো। ফোন করছি ফোন ধরছেনা .. আমি তো চিন্তায় চিন্তায় শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। তারপর একটু আগে ফোন করে জানলাম হিয়া বাড়িতে ফিরেছে, এতক্ষণ কোথায় ছিলো জিজ্ঞাসা করাতে কোনো উত্তর না দিয়ে ফোনটা কেটে দিলো। যাইহোক, আমি তোর কাছে এসেছি তার প্রধান কারণ হলো .. সন্দীপ আমাকে কিছুক্ষণ আগে ফোন করে জানিয়েছে ও নাকি লোকমুখে শুনতে পেয়েছে গোগোল আর হিয়ার মেলামেশার কথা। ওদের দু'জনের এই মেলামেশাটা সন্দীপ একদম মেনে নিতে পারছে না এটা স্পষ্ট করে আমাকে জানিয়ে দিয়েছে। দ্যাখ সুজাতা, তোকে একটা কথা বলি .. আমি তোর সহকর্মী এবং অনেক পুরনো বন্ধু সে কথা ঠিক। কিন্তু স্ট্যাটাস বলে তো একটা ব্যাপার আছে। ধরে নে সন্দীপের সঙ্গে ওর বিয়ের কোনো সম্বন্ধ যদি নাও হতো, তাহলেও তো গোগোলের মতো একটা ছেলের সঙ্গে আমি আমার মেয়ের বিয়ে দিতাম না। কতো কথাই তো শুনতে পাই ওর সম্পর্কে আজকাল .. সন্দীপও বলছিলো অনেক কিছুই। তাই বলি কি .. ছেলেকে সবসময় মাথায় না তুলে, একটু শাসন কর। এবার যদি সন্দীপ বেঁকে বসে, তাহলে কি বিপদ হবে বুঝতে পারছিস তো?"
- "মাইন্ড ইয়োর ল্যাঙ্গুয়েজ মিসেস কাবেরী দত্ত। আমার স্ট্যাটাস, আমার অর্থনৈতিক অবস্থা, আমার বংশ পরিচয় .. এই সবকিছু নিয়ে তুই যা খুশি বলতে পারিস .. আমি কিচ্ছু মনে করবো না। কিন্তু খবরদার, আমার গোগোল সম্পর্কে আর একটাও বাজে শব্দ মুখ দিয়ে উচ্চারণ করলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। কত বড় বংশের ছেলে ও তুই জানিস? দু'দিন হলো এখানে এসেছে একটা ছেলে, তার মুখ থেকে তুই কিছু কথা শুনে সেটা যাচাই না করে এত বড় মন্তব্য করলি কি করে? তুই কি গোগোলকে নতুন দেখছিস? তুই জানিস না ও কি করতে পারে আর কি করতে পারে না? কে কি ধারণা করে আছে ওর সম্পর্কে আমি জানিনা। আমি বিশ্বাস করি আমার ছেলে এমন কোনো অনৈতিক কাজ করতে পারে না যাতে মানুষের ক্ষতি হয়। তুই তোর মেয়ের সঙ্গে কার বিয়ে দিবি সেই সম্পর্কে আমার কিচ্ছু বলার নেই, এটা তোদের পারিবারিক ব্যাপার। কিন্তু একটা কথা আমি অবশ্যই বলবো হিয়া আজ যেটা করেছে একদম ঠিক করেছে। তুই তোর মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিস সেই ছোটবেলায় অথচ তাকে জানাচ্ছিস এখন .. তার বিয়ের কয়েকমাস আগে? নাবালিকা অবস্থায় না হোক, ওর যখন আঠারো বছর বয়স হলো, তখনও তো জানাতে পারতিস। এত বড়ো ইনসেন্সিবল কাজ তুই করলি কি করে? আর তোর হবু জামাই সন্দীপ? ও তো ভীষণ মিথ্যাবাদী ছেলে। ও এত কিছু তোকে বললো আর এটা বলেনি যে ও আজ সকালে আমাদের বাড়িতে গিয়ে গোগোলের কথা তো ছেড়েই দিলাম, আমাকে পর্যন্ত চূড়ান্ত অপমান করে এসেছে। তারপর বস্তির লোকেদের ধমকানিতে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। আমার কথা বিশ্বাস না হয় তুই রেলপাড়ের সমস্ত লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারিস। তোর কথা যা শোনার শুনে নিয়েছি, যা বোঝার বুঝে নিয়েছি, এবার যা করার আমি করবো। এবার তুই আয়, আমাকে রাউন্ডে বেরোতে হবে।"
কথাগুলো শেষ করেই নিজের ছোট্ট কেবিনটা থেকে গটগট করে বেরিয়ে গেলো সুজাতা। সেই দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন কাবেরী দেবী।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন
The following 12 users Like Bumba_1's post:12 users Like Bumba_1's post
• Baban, Bichitro, Boti babu, Chandan, ddey333, kublai, Mampi, Monen2000, saha053439, Sanjay Sen, scentof2019, Somnaath
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,075 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
17-11-2022, 09:45 PM
(This post was last modified: 17-11-2022, 09:49 PM by Baban. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
আজকের পর্ব পড়ার পর আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি বর্তমানে যে পর্যায় এসে গল্পটি দাঁড়িয়েছে - গসিপির বাংলা বিভাগের অন্যতম সেরা গল্প এটি। মানুষ মূলত সর্বদা নিজের কাজকেই এগিয়ে রাখতে চায় কারণ সেটি তার সৃষ্টি। কিন্তু আমি যেটা বিশ্বাস করি সেটাই বলি। নিজে এতগুলো গপ্পো লেখার পরেও বলছি.... বা বলা উচিত লেখার পরেই বলতে পারছি এই কথাটা। জাস্ট ফাটাফাটি ♥️♥️
যেন একটা মসলায় ভরপুর কমার্সিয়াল ফিল্ম দেখলাম। আমাদের সন্দীপ বাবু সোনাকে খুব আদর করে গাল দুটো টিপে দিতে ইচ্ছে করছে। ওলেবাবালে সোনামনাটা আমাদের। কুচুমোনাটা!
টগর রানী ফরফরানী কি দিলো গুরু। মেয়েটা ডিল জিত লিয়া আজ। ভেতরের আবেগ ইচ্ছা যতই লুকোক, যতই বড়ো হয়ে জবাব দিতে শিখুক না কেন..... সে একজন সুন্দরী। মোটেও রূপের কথা বলছিনা। রূপ ধোঁকা দিতে পারে কিন্তু মন নয়। তাই সে মন থেকে সুন্দরী।
আর সাথে গোগোলের মামনিও কাঁপিয়ে দিলো। কি জবাব দিলো আমাদেরর কুচুমোনা সন্টামনা সন্দীপ কে। উফফফফ
আমার কাছে সেরার সেরা পর্ব এটি
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
(17-11-2022, 09:11 PM)Bumba_1 Wrote: "শোনো মাসি .. বাবা এই কয়েকটা মুদিখানার জিনিস পাঠিয়ে দিলো .. সেগুলো দিতেই এসেছিলাম। এখন আবার দক্ষিণপাড়ায় যেতে হবে আমাকে .. রিহার্সাল আছে। "শ্যামা" হচ্ছে গো .. আর শ্যামার চরিত্রে কে অভিনয় করছে জানো? আমি গো আমি। তোমাদের দেখতে আসতে হবে কিন্তু .. আমি অবশ্য নেমন্তন্ন করে যাবো পরে। এখন আমার নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই গো, এই নাও ধরো ব্যাগটা। এবার যাই আমি?" এই বলে টগর চলে যেতে গেলে তার হাত ধরে সুজাতা বললো "ওরে ওরে শোন শোন .. যাবি তো, নিশ্চয়ই যাবি। কিন্তু রিহার্সালে দু'দণ্ড দেরি করে গেলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হবে শুনি? তুই শ্যামা করছিস? এই জানিস, আমিও না তোর বয়সে 'শ্যামা' গীতিনাট্যে অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু কার চরিত্রে বলতো? বজ্রসেনের . হাহাহাহা।"
- "সত্যি? কিন্তু তুমি তো শ্যামার চরিত্রে অভিনয় করতে পারতে গো। তোমাকে তো একদম ওইরকমই দেখতে।"
- "না রে .. শ্যামা করার জন্য এমন একজন ছিলো, যাকে কেউ রিপ্লেস করতেই পারতো না। যেরকম তার রূপ, সেরকম তার গুণ, যেরকম তার নাচের ভঙ্গিমা, সেরকম তার গানের গলা .. সব মিলিয়ে সর্বগুণসম্পন্না বলা যায়। কে জানিস? ওই যে দাঁড়িয়ে আছে তোর গোগোল দাদা, ওর মা .. অরুন্ধতী। সম্পর্কে সে আমার দিদি হতো, যদিও আমার থেকে বয়সে অনেকটাই বড়ো ছিল সে। যাক সে কথা, বলছিলাম এখন তো মাসের শেষ, হাত একদম খালি। তোর বাবা পয়সাকড়ির কথা কিছু বলেনি?"
- "আরে ওসব তুমি ছাড়ো না মাসি। পয়সা-টয়সা এখন দিতে হবে না। তোমার যখন খুশি তখন দিলেই হবে।"
- "সে তো আমি মাস পড়লেই দিয়ে দেবো। কিন্তু তোর বাবা সত্যিই কিছু বলেনি টাকার কথা?"
- "বাবার কথা ছাড়ো তো .. তুমি তো জানোই, এই ব্যাপারে বাবা কত বড় চশমখোর। তবে আমি আসার সময় পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি 'আমি তো ওখানে গিয়ে মানে তোমাদের এখানে এসে টাকা-পয়সার কথা কিছু বলবই না, তুমি যদি পরে কিছু বলো, তাহলে তোমার একদিন কি আমার একদিন।' ব্যাস আর কি .. এই পৃথিবীতে স্বপন সাধুখাঁ যদি সব থেকে বেশি কাউকে ভয় পায়, তাহলে সে হলো আমি .. একদম বলতি বন্ধ হয়ে গেছে বুড়োর।"
- "ইশ্ , তার মানে তুই এখানে আসার আগে তোর বাবার সঙ্গে ঝগড়া করেছিস? সত্যি রে টগর তোকে যত দেখি ততই অবাক হই। কিন্তু সব থেকে অবাক হলাম আজ যখন তুই তোর গোগোল দাদার ব্যাপারে ওইরকম ভাবে কথা বলছিলিস ওই ইন্সপেক্টরের সঙ্গে।"
সুজাতা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল, তাকে থামিয়ে দিয়ে গোগোল বললো "টগর রানী, ফরফরানি .. তোর মুখে তো খুব বুলি ফুটেছে আজকাল, ইন্সপেক্টরকে চমকে দিলি একেবারে। যাই হোক, কত টাকা হয়েছে বল .. আমি দিয়ে দিচ্ছি আমার কাছে আছে।"
"এই বাবু, তুই টাকা দিবি মানে? তোর কাছে টাকা কোথা থেকে এলো?" বিস্ময় প্রকাশ করে বললো সুজাতা।
"ওহো .. সব সময় এই ফাটা-রেকর্ড বাজিয়েই চলেছে। এটা কোথা থেকে হলো, এটা কোথা থেকে পেলি, এটা করলি কেনো, এটা কি করে এলো, এটা তো আমি জানিনা .. আরে বাবা একটু আগে যিনি এসেছিলেন, ওই গুণধর ইন্সপেক্টর .. তিনি তো নিজের মুখে বললেন, শোনোনি আমার কর্মক্ষেত্রের কথা? আমি যখন কারোর কাছে একটা কাজ করি, তার মানে সেখান থেকে অবশ্যই টাকা পাই। মাগনাতে কাজ করি না নিশ্চয়ই! তাই বললাম আমার কাছে টাকা আছে, এতে এত অবাক হওয়ার কি আছে বুঝতে পারছি না? শোনো, তোমাদের মতো ওইসব পাতি চাকরি আমি করি না, যে চাকরিতে মাসের শেষে টাকা ফুরিয়ে যায়। আমার পকেটে সবসময় ইনটাক্ট টাকা থাকে, বুঝলে কিছু?" গড়গড় করে কথাগুলো বলে চললো গোগোল।
"তোর কর্মক্ষেত্রের কথা ইন্সপেক্টরের মুখে তো আমি অবশ্যই শুনেছি, কিন্তু তার সঙ্গে এটাও শুনলাম 'দুষ্কর্মের আস্তানা' এই শব্দটা। এই কথার মানে কি? তুই কার কাছে কি কাজ করিস? বলতেই হবে এখন তোকে।" সুজাতা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল, সেই মুহূর্তে তার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো। ফোনটা রিসিভ করে জানতে পারলো হসপিটালে একটা এমার্জেন্সি হয়েছে, এই মুহূর্তে তাকে আসতে হবে। টগরের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে আদর করে, আর গোগোলের দিকে কটমট করে তাকিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে গেলো সুজাতা।
- "তারপর টগর রানী ফরফরানি .. বল কত টাকা হয়েছে? আমি দিয়ে দিচ্ছি এখনই।"
"এই শোনো আমাকে 'ফরফরানি' বলবে না বলে দিলাম। তাহলে ধরে এমন পিটবো না! মনে আছে তো .. মনে আছে? সেদিনকে এই কথা বলেছিলে বলে কিরকম গুমগুম করে কিল মেরেছিলাম তোমার পিঠে। তোমাকে রেলপাড়ে সবাই যমের মতো ভয় পেতে পারে, কিন্তু আমি পাই না .. বুঝেছো? হিহিহিহি .." গোগোলের কথার উত্তরে প্রথমে কপট রাগ দেখিয়ে পরে খিলখিল করে হেসে উঠে দৌড়ে পালাতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালো টগর - "ও মা হিয়া দিদি .. তুমি! কখন এলে?"
- "কেনো? এসে খুব অসুবিধা করে দিলাম বুঝি তোদের দুজনের?"
- "ও মা , ছিঃ ছিঃ তা কেন হবে? তুমি কখন এলে দেখতেই পাইনি, তাই জিজ্ঞাসা করছিলাম।"
- "ভাগ্যিস এলাম, না হলে তো এই দৃশ্য দেখতেই পেতাম না। মা ওদিকে কাজে বেরিয়ে গেছে আর ছেলে বাইরে থেকে মেয়ে নিয়ে এসে বাড়িতে বেলেল্লাপনা করছে।"
"হিয়া .. এইসব কি বলছিস তুই? তোর মুখে এই ভাষা যে আমাকে শুনতে হবে, তা আমি কল্পনাতেও ভাবিনি কোনোদিন। ছিঃ ছিঃ লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে আমার। এখানে কিছুক্ষণ আগে একটা খুব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে। তাছাড়া টগর একটা কাজে এসেছিলো, আর মামণি তো এতক্ষণ ছিলো, এইমাত্র বেরিয়েছে।" কিছুটা উচ্চকণ্ঠেই কথাগুলো বললো গোগোল।
"থাক, ছেড়ে দাও গোগোল দাদা। হিয়া দিদি এসেছে এতদিন পর, তোমরা ঝগড়া করো না, সব মিটমাট করে নাও .. আমি বরং যাই। আর আমি কিচ্ছু মনে করিনি হিয়া দিদির কথায়।" এই বলে চোখের কোণায় জল এসে যাওয়া টগর চলে যেতে উদ্যত হতেই, তাকে থামিয়ে দিয়ে হিয়া বললো "নাটক করার কোনো দরকার নেই। এখান থেকে এখন এই মুহূর্তে যদি কেউ চলে যায় তাহলে আমি যাবো, তুই নয়। একটু আগে তোদের দু'জনের খুনসুটি দু'জনের আলোচনা, আমি সবকিছু শুনেছি। তোরা দু'জনে এখন কোয়ালিটি টাইম কাটাচ্ছিস সেটা আমি বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছি। তাছাড়া সেদিনকে মানে নবমীর রাতে তো তোর গোগোল দাদা বলেই দিলো তুই ওর 'বিশেষ একজন' .. তাহলে এখন শুধু শুধু ন্যাকামি করছিস কেন? আমি এসেছিলাম মামণির কাছে, তোর গোগোল দাদার কাছে তো আসিনি। এরপর এখানে আসার আগে মামণিকে ফোন করে তবেই আসবো।"
"হিয়া দিদি, হিয়া দিদি .. প্লিজ শোনা, চলে যেও না। একটা সম্পূর্ণ পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝিতে এই সব কিছু ঘটছে, এটা আমি বেশ বুঝতে পারছি। এই ব্যাপারটাকে শুধু শুধু টেনে নিয়ে গিয়ে সেই বস্তাপচা সিরিয়াল বা বোকা বোকা রোমান্টিক উপন্যাসগুলোর মতো করে ফেলো না। তুমি তো শিক্ষিতা বুদ্ধিমতী মেয়ে গো .. আমার মতো অশিক্ষিত বোকা মানুষ তো তুমি নও। ওই মানুষটার মুখের কথাটাই ধ্রুব সত্যি হিসেবে ধরে নিলে? যাকে এত ভালোবাসো তার মনের ভেতরের আকুতিগুলো শুনলে না? তোমার সঙ্গে ওই মানুষটিকে দেখে ঈর্ষাতে জ্বলে-পুড়ে যাচ্ছিলো গো আমার গোগোল দাদা। রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে তোমাকেও হয়তো ঈর্ষার আগুনে কিছুটা পোড়াতে চেয়েছিল, তাই হয়তো মুখ ফসকে আমার সম্বন্ধে ওইরকম কিছু বলে ফেলেছে। কিন্তু, বিশ্বাস করো হিয়া দিদি গোগোল দাদার মনে আমার জন্য স্নেহ হয়তো কিঞ্চিত থাকলেও থাকতে পারে কিন্তু ভালোবাসা? হাহাহাহা .. একটুও নেই। আমার মতো পাগলিকে কে ভালবাসবে গো? তাছাড়া প্রেম-ভালবাসা ওইসব আমি নিজেই কিছু বুঝিনা। তবে, ছোট মুখে একটা বড় কথা বলছি, প্লিজ কিছু মনে করো না। সেদিন তোমার সঙ্গের ওই মানুষটি, মানে আমাদের থানার নতুন ইন্সপেক্টর। সে একটু আগে এখানে এসে অনেক খারাপ খারাপ কথা বলে গেছে গোগোল দাদাকে আর তোমাদের মামণিকে। তোমার ব্যাপারেও সাবধান করতে এসেছিলো। হ্যাঁ গো, আমি সত্যি বলছি। তবে আমি আচ্ছা করে কথা শুনিয়ে দিয়েছি, আর সেই কথা শুনে ল্যাজ গুটিয়ে বাবু পালিয়েছে। হিহিহিহি .." বাড়ির বাইরে চলে আসা হিয়ার আর হাতদুটো ধরে দুটি চোখ ততক্ষণে জলে ভরে গিয়ে টলটল করতে থাকলেও মুখে যতটা সম্ভব হাসি এনে মৃদুস্বরে কথাগুলো বললো টগর যাতে গোগোল শুনতে না পায়।
"সন্দীপবাবু এখানে এসেছিলেন? কি বলেছেন ওদেরকে উনি? আর আমার ব্যাপারে সাবধান করতে এসেছিলো মানে? কাকে সাবধান করতে এসেছিলো?" বিস্ময় প্রকাশ করে জানতে চাইলো হিয়া।
- "সত্যি বাবা , তোমার মতো বকুরাম আমি আর দেখিনি জীবনে। যদিও স্পষ্ট করে বলেনি, তবে আকার ইঙ্গিতে এটাই প্রকাশ করেছিলো যাতে গোগোল দাদা আর তোমার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখে .. এবার বুঝলে কিছু? তুমি প্লিজ ভেতরে যাও, গোগোল দাদা একদম ভালো নেই গো .. সারাদিন মনমরা হয়ে থাকে, খাওয়া দাওয়াও করে না। তুমি আবার ভেবো না এইসব আমি নিজে এসে দেখেছি। এগুলো আমি সব মামণি .. সরি সরি আমার তো মামণি নয়, আমার তো মাসি। মানে আমি সুজাতা মাসির কাছ থেকে সব শুনেছি, তাই তোমাকে বললাম। এবার আমার সত্যি সত্যি দেরি হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ পাড়ায় আমার একটা রিহার্সাল আছে। পরে এসে তোমাকে নেমন্তন্ন করে যাবো, আসতে হবে কিন্তু আমার নাচ দেখতে।"
"এই শোন .. তুই এতো কিছু করিস ওদের জন্য আমি মামণির কাছ থেকে অনেক কিছুই শুনেছি তোর ব্যাপারে। তার ওপর আজ আবার সন্দীপ বাবুর সঙ্গে ঝগড়া করেছিস তোর গোগোল দাদাকে খারাপ কথা বলেছে বলে। তোর গোগোল দাদা তোকে ভালবাসে না এই কথা তো বললি, কিন্তু তুই? তুই ভালবাসিস না ওকে? বল .. সত্যি করে বল।" উত্তেজনায় হাঁপাতে হাঁপাতে জিজ্ঞাসা করলো হিয়া।
ভালোবাসা! সে তো জন্মেছে মনে, বসত করেও মনে। ভালোবাসার অলিখিত কাব্য কথা বলে যায় চরণে। আমার সকাল, বিকেল, এমনকি রাত্রিও সঁপে দিয়েছি তাকে। তবে শুধুই অন্তরে, এর কোনো বাহ্যিক প্রকাশ নেই। সব আলসেমি ফেলে তাকে দেখতে ছুটে যাই রেলপাড়ের পশ্চিমের ধুধু প্রান্তরের সেই উচু দিগন্ত থেকে আরো উঁচুতে। একাকী হয়েও একা নই তো আমি .. সে থাকে তো আমার অনুভবে সর্বদা। প্রহর গুনি আবার কবে দেখা হবে তার সঙ্গে এই ভেবে। বৃষ্টি তো আমার কাছে শুধু বৃষ্টি নয়, সে যে ভালোবাসার জলছবি। তাকে ভালোবেসে আমার মতো একজন মূর্খেরও কবিত্ব প্রকাশ পায়। এখানে সেখানে যেখানেই যাই খুঁজি তার ছায়া সারাক্ষণ। না পেয়ে হতাশ হই, কিছুটা দুঃখী, মনে মনে আলাপন। তাকে নিয়ে বিলাসী মনে স্বপ্নের জাল বোনা,শত কাজের মাঝেও হঠাৎ করেই হয়ে যাই আনমনা। কখনো আবার অভিমান মেঘের সমান ভালোবাসার রঙে সৃষ্টি হয়, আবার কখনো নিমেষে উধাও হয়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। স্মৃতির গভীরে হারাই যদি, হেসে উঠি ক্ষণে ক্ষণে। উচ্ছল আমি চঞ্চল আমি ভালোবাসো আছে তাই, তাকে নিয়েই গল্প বাকিটা জীবন, সে ছাড়া যে আর কিছুই নেই। কি সব ছাইপাঁশ বলে ফেললাম। আসলে অশিক্ষিত তো তাই ঠিকঠাক গুছিয়ে কথা বলতে পারি না .. আমি চললাম গো হিয়া দিদি।" হিয়াকে বাড়ির দরজার সামনে একা রেখে ঝড়ের গতিতে সাইকেল চালিয়ে বেরিয়ে গেলো টগর, তার ঝাপসা চোখে ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে লাগলো মেয়েটা .. তারপর ধীরে ধীরে দক্ষিণপাড়ার অভিমুখে যাওয়ার রাস্তায় মিলিয়ে গেলো সে।
সেই দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কিছুটা ইতস্তত করে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলো হিয়া। তাকে কথা বলতে হবে গোগোলের সঙ্গে .. অনেক বোঝাপড়া আছে।
★★★★
মিউনিসিপাল হসপিটালে নিজের কেবিনে মাথা নিচু করে বসেছিলো সুজাতা। অনেকরকম চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিলো তার মাথায়। আজ না হয় কাল, কাল না হয় পরশু .. তাকে জানতেই হবে গোগোলের রোজগারের উৎস। মাঝের বেশ কয়েকটা বছর বেশ শান্তিতেই কেটেছিল তার। কিন্তু বর্তমানে শুধু পরিবারের নয় কর্মক্ষেত্রেও অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছে। নতুন যিনি সুপারিনটেনডেন্ট হয়ে এসেছেন তিনি ডক্টর দাশগুপ্তর থেকে একেবারেই ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। শুধু ভিন্ন বললে ভুল হবে, দু'জন একেবারে দুই মেরুর মানুষ বলা চলে। কোরাপশন যেখানে প্রাক্তন সুপারের দরজায় কড়া নাড়তে ভয় পেতো, সেখানে যিনি বর্তমান সুপার তিনি পুরোপুরি দুর্নীতিতে ডুবে আছেন। কানাঘুষো শোনা যায় তার স্ত্রী কাকলি দেবী অত্যন্ত চরিত্রহীনা এক নারী, যার সঙ্গে এই অঞ্চলের সব থেকে ভয়ঙ্কর এবং প্রভাবশালী দুই দুর্বৃত্ত কামরাজ এবং মানিক সামন্তর অবৈধ সম্পর্ক আছে।
আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে তার কেবিনে এইরকম এক দুপুরেই ঘটে গিয়েছিল সেই অপ্রত্যাশিত ঘটনা। ডক্টর দাশগুপ্ত যাকে 'প্রতাপ' বলেই সম্মোধন করতো সুজাতা। তিনিই তো এখানে, এই ঘরে একবার মাত্র সুজাতার নগ্নরূপ দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন। তারপর অনেক সাওয়াল অনেক বাগবিতণ্ডার পর সুজাতা ধীরে ধীরে নিজেকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করেছিলো ডক্টর দাশগুপ্তর সামনে। তার কাঁধে একটা হাত রেখে বলেছিলো "আমিও শরীরের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজেছি প্রতাপ .. কিছুতেই পাইনি। সে যে কি কষ্ট! শরীরে একটা জৈবিক সুখ অবশ্যই বিদ্যমান, কিন্তু ভালোবাসা না পাওয়ার উপলব্ধির বেদনা যে আরো অনেক, অনেক বেশি তীব্র। তোমার স্ত্রী পক্ষাঘাতে পঙ্গু, তুমি তার কাছ থেকে শারীরিক সুখ পাওনা। তাই তুমি আমার শরীরের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজতে চাইছো, তাই তো? তবে নাও .. দেখো খুঁজে পাও কি না! ভালো করে দেখো আমাকে প্রতাপ .. মনে কোনো দ্বিধা রেখো না, যদি এই শরীরটাকে পেলে তোমার ভেতরের সমস্ত মোহ মিটে যায় .." কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আগের মতো এখন একটুও সংকোচ বোধ হচ্ছিলো না সুজাতার। বরং ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে স্বগতক্তি করে সে বলে উঠলো ইশ্ প্রতাপটা কি ভীতু ছিলো .. বলা নেই কওয়া নেই ধপ করে আমাকে প্রণাম করে ফেললো!" তারপরেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো সুজাতার ভেতর থেকে।
"কি রে, একা একা বসে হেসে চলেছিস আর আর কি বিড়বিড় করছিস? তবে আমি কিন্তু এখানে কোনো হাসির কথা বলতে বা আলোচনা করতে আসিনি। আমার ডিউটি ওভার, এখন বাড়ি যাবো। তার আগে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা তোকে জানাতে এসেছি, মন দিয়ে শোন কথাগুলো।" চমক ভেঙে সুজাতা তাকিয়ে দেখল তার সামনে কাবেরী দেবী দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছে।
- "বল .. কি বলতে চাস .."
- "দ্যাখ, আমি বেশি ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বা রহস্য করে কথা বলতে পছন্দ করি না। সোজা কথা সোজা ভাবে বলতে ভালোবাসি। তোকে বেশ কয়েক বছর আগে বলেছিলাম মনে আছে নিশ্চয়ই .. হিয়া আর আমার দাদার বাল্যবন্ধু শশাঙ্ক বাবুর ছেলে সন্দীপের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ছোটবেলা থেকেই। সেই সন্দীপ বর্তমানে গঙ্গানগর পুলিশ স্টেশনে সাব-ইন্সপেক্টর পোস্টে জয়েন করেছে। ভালো ছেলে শিক্ষিত ছেলে, এখন বয়স অল্প। এরপরে আরো প্রমোশন পাবে, প্রচুর উন্নতি হবে ওর। ওদের বাড়ি থেকে তো কোনো অসুবিধাই নেই, ওদের বাবা-মা-ছেলে তিনজনেরই হিয়াকে ভীষণ পছন্দ। কিন্তু আমার মেয়েটা যে এতটা অবাধ্য এবং অসভ্য হয়ে গেছে সেটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আসলে এগুলো হয়েছে বাজে সঙ্গে মিশে। আজ সকালে ওকে যখন পুরো ব্যাপারটা খুলে বলতে গেলাম .. মানে সন্দীপের সঙ্গে ওর বিয়ের ব্যাপারটা। তখন আমাকে কি বলে জানিস? ও নাকি একজন এডাল্ট মেয়ে, ওর অনুমতি না নিয়ে নাকি বিয়ের কথা বলে আমি ভীষণ অন্যায় করেছি। তারপর তেজ দেখিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো। ফোন করছি ফোন ধরছেনা .. আমি তো চিন্তায় চিন্তায় শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। তারপর একটু আগে ফোন করে জানলাম হিয়া বাড়িতে ফিরেছে, এতক্ষণ কোথায় ছিলো জিজ্ঞাসা করাতে কোনো উত্তর না দিয়ে ফোনটা কেটে দিলো। যাইহোক, আমি তোর কাছে এসেছি তার প্রধান কারণ হলো .. সন্দীপ আমাকে কিছুক্ষণ আগে ফোন করে জানিয়েছে ও নাকি লোকমুখে শুনতে পেয়েছে গোগোল আর হিয়ার মেলামেশার কথা। ওদের দু'জনের এই মেলামেশাটা সন্দীপ একদম মেনে নিতে পারছে না এটা স্পষ্ট করে আমাকে জানিয়ে দিয়েছে। দ্যাখ সুজাতা, তোকে একটা কথা বলি .. আমি তোর সহকর্মী এবং অনেক পুরনো বন্ধু সে কথা ঠিক। কিন্তু স্ট্যাটাস বলে তো একটা ব্যাপার আছে। ধরে নে সন্দীপের সঙ্গে ওর বিয়ের কোনো সম্বন্ধ যদি নাও হতো, তাহলেও তো গোগোলের মতো একটা ছেলের সঙ্গে আমি আমার মেয়ের বিয়ে দিতাম না। কতো কথাই তো শুনতে পাই ওর সম্পর্কে আজকাল .. সন্দীপও বলছিলো অনেক কিছুই। তাই বলি কি .. ছেলেকে সবসময় মাথায় না তুলে, একটু শাসন কর। এবার যদি সন্দীপ বেঁকে বসে, তাহলে কি বিপদ হবে বুঝতে পারছিস তো?"
- "মাইন্ড ইয়োর ল্যাঙ্গুয়েজ মিসেস কাবেরী দত্ত। আমার স্ট্যাটাস, আমার অর্থনৈতিক অবস্থা, আমার বংশ পরিচয় .. এই সবকিছু নিয়ে তুই যা খুশি বলতে পারিস .. আমি কিচ্ছু মনে করবো না। কিন্তু খবরদার, আমার গোগোল সম্পর্কে আর একটাও বাজে শব্দ মুখ দিয়ে উচ্চারণ করলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। কত বড় বংশের ছেলে ও তুই জানিস? দু'দিন হলো এখানে এসেছে একটা ছেলে, তার মুখ থেকে তুই কিছু কথা শুনে সেটা যাচাই না করে এত বড় মন্তব্য করলি কি করে? তুই কি গোগোলকে নতুন দেখছিস? তুই জানিস না ও কি করতে পারে আর কি করতে পারে না? কে কি ধারণা করে আছে ওর সম্পর্কে আমি জানিনা। আমি বিশ্বাস করি আমার ছেলে এমন কোনো অনৈতিক কাজ করতে পারে না যাতে মানুষের ক্ষতি হয়। তুই তোর মেয়ের সঙ্গে কার বিয়ে দিবি সেই সম্পর্কে আমার কিচ্ছু বলার নেই, এটা তোদের পারিবারিক ব্যাপার। কিন্তু একটা কথা আমি অবশ্যই বলবো হিয়া আজ যেটা করেছে একদম ঠিক করেছে। তুই তোর মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিস সেই ছোটবেলায় অথচ তাকে জানাচ্ছিস এখন .. তার বিয়ের কয়েকমাস আগে? নাবালিকা অবস্থায় না হোক, ওর যখন আঠারো বছর বয়স হলো, তখনও তো জানাতে পারতিস। এত বড়ো ইনসেন্সিবল কাজ তুই করলি কি করে? আর তোর হবু জামাই সন্দীপ? ও তো ভীষণ মিথ্যাবাদী ছেলে। ও এত কিছু তোকে বললো আর এটা বলেনি যে ও আজ সকালে আমাদের বাড়িতে গিয়ে গোগোলের কথা তো ছেড়েই দিলাম, আমাকে পর্যন্ত চূড়ান্ত অপমান করে এসেছে। তারপর বস্তির লোকেদের ধমকানিতে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। আমার কথা বিশ্বাস না হয় তুই রেলপাড়ের সমস্ত লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারিস। তোর কথা যা শোনার শুনে নিয়েছি, যা বোঝার বুঝে নিয়েছি, এবার যা করার আমি করবো। এবার তুই আয়, আমাকে রাউন্ডে বেরোতে হবে।"
কথাগুলো শেষ করেই নিজের ছোট্ট কেবিনটা থেকে গটগট করে বেরিয়ে গেলো সুজাতা। সেই দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন কাবেরী দেবী।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন
অসাধারণ , তোমার লেখা যত পড়ি তত মনে হয় আমি কেন লিখলাম, এই লেখার সামনে আমার টা কিছুই নয়।
যাইহোক তাড়াতাড়ি আপডেট নিয়ে আসো।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
Posts: 1,158
Threads: 0
Likes Received: 1,385 in 928 posts
Likes Given: 3,576
Joined: Apr 2022
Reputation:
146
আবার না পড়েই লাইক রেপু এডেড রাতে আরামসে সবটা পড়ে কমেন্ট করবো দাদা।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
17-11-2022, 10:14 PM
(This post was last modified: 17-11-2022, 10:14 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(17-11-2022, 10:05 PM)Monen2000 Wrote: অসাধারণ , তোমার লেখা যত পড়ি তত মনে হয় আমি কেন লিখলাম, এই লেখার সামনে আমার টা কিছুই নয়।
যাইহোক তাড়াতাড়ি আপডেট নিয়ে আসো।
তোমার লেখনী তোমার মতো করে ভালো আমার লেখনী আমার মতো করে ভালো। এই দুটোর কখনোই তুলনা টানা উচিত নয়। তবে এই পর্ব যে তোমাদের ভালো লেগেছে, তার জন্য আমি যৎপরোনাস্তি আপ্লুত এবং আনন্দিত।
(17-11-2022, 10:10 PM)Boti babu Wrote: আবার না পড়েই লাইক রেপু এডেড রাতে আরামসে সবটা পড়ে কমেন্ট করবো দাদা।
আচ্ছা ঠিক আছে
Posts: 2,733
Threads: 0
Likes Received: 1,206 in 1,062 posts
Likes Given: 43
Joined: May 2019
Reputation:
26
Posts: 1,158
Threads: 0
Likes Received: 1,385 in 928 posts
Likes Given: 3,576
Joined: Apr 2022
Reputation:
146
অসাধারণ দাদা জাস্ট অসাধারণ যৌনতা ছাড়াও আজ যেরকম উত্তেজিত হয়েছি তা লেখা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবো না। তবু কিছুতো লেখতে হবে তাই নিজের মত করে লেখলাম।
টগর রানি ফরফরানি এই টগরের এক তরফা নিঃস্বার্থ ভালোবাসা মনে দাগ দিয়ে গেছে , সত্যিই ভালোবাসা কি দুই তরফেই হতে হবে এমন আবার কোথায় লেখা আছে , টগরের জন্য আবার চিন্তা হচ্ছে সন্দীপ এর লাস্ট কথাটার জন্য দেখা যাক কি হয় ভবিষ্যতে।
বর্নালী ম্যাডাম থেকে জানতে পারলাম ঐ দিন রাতে কি হয়েছিল, কিন্তু দাদা যদি একটু বিস্তারিত ভাবে গোগোলের ঐ লোমহর্ষক অভিযানটা দিতেন মনে হয় আরো ভালো হত। যেরকম ভাবে গুরুকুল বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষকেরবেলায় দেখিয়া ছিলেন।
হিয়া আর গোগোলের বাড়ির ভেতরে কি কথা হয়েছে সেটাও জানা হলো না। সুজাতার গোগোলের হয়ে রুখে দারানো দেখে সত্যিই দারুণ লেগেছে কিন্তু যখন সুজাতা অনির্বাণের সব কীর্তি জানতে পারবে তখন কি হবে ।।।।।
সন্দীপ এর মত হাড়ামি টাইপের বন্ধু আমাদের চার পাশে অনেক আছে তাই মনে হয় সন্দীপ যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তাহলে আজ হোক আর কাল সেও মায়ের ভোগে যাবে, কারণ গোগোল কিন্তু আর সেই ছোট্ট গোগোল নেই যার ব্যাগের ভেতর ড্রাগস সন্দীপ রেখেছিল এটা যানার পরেও কিছু কিছুই করতে পারেনি কারণ তখন তো গোগোলের কোনও কিছুই করার ক্ষমতা ছিল না কিন্তু আজকের পরিস্থিতি ভিন্ন সে এখন রেল পারের বস্তির বেতাজ বাদশা অনির্বাণ।
Rock you dada
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,458 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
বর্ণালীর ব্যাপারটা আজ খোলাশা করলে সেটা তো আমি আগেই বলেছিলাম যে কাজটা অনির্বাণ এর তবে এখনো প্রশ্ন আছে ও এ ব্যাপারে জানলো কি করে?
আজকে তো মা ছেলের খুনসুটিতেই ভাসিয়ে দিয়েছিলাম নিজেকে ব্যাস টগর এসে আমাকে তুলে নিলো আবার আরও গভীরে ভাসিয়ে নিলো। যদিও টগর সম্পর্কে তেমন জানা হয় নি তবে আজ ওর চটপটে ভাবটার সাথে অনেক বেশি ম্যাচিউর লেগেছে। প্রতিটা ডায়লগের গভীরতা ছিল ওজন ছিল হোক সেটা সন্দ্বীপের কথায় রিয়্যাক্ট করা কিংবা সুজাতা গোগোলের সাথে কথোপকথনে। তার চেয়েও বেশি অনবদ্য ছিল হিয়া কে কথা গুলো বলার সময় নিজের ভেতরের আবেগ কে সামলে নিয়ে দারুন ভাবে স্পিচ ডেলিভারি করেছে। তাই হয়তো আজ হিয়া গল্পের অনেকটা জুড়ে থেকেও কোথাও ছিল না বরং এক পর্বেই আলোটা টগরের উপরে চলে এসেছে।
সন্দ্বীপ তো গোগোলের পাশে থাকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তবে মাঝখানের বছর গুলোতে এমন কি হয়ে গেল যে ও এমন ডেস্পারেট হয়ে উঠেছে গোগোলের বিরুদ্ধে সেটা হিয়া অব্দি গড়িয়ে গেল পর্যন্ত। উত্তর জানা দরকার আর সেটা তো বুম্বা দা দিবে।
বল এবার হিয়ার কোর্টে সে কিভাবে খেলতে চায় সেটা ও ভালো করে জানে, তেমন করেই ফল আসবে। আজ কেন জানি মনে হলো হিয়া না থাকলেও টগর তো আছে যদিও জানি ওকে হয়তো তুমি শেষ পর্যন্ত রাখবে না তার আগেই হাপিশ...
সুজাতার মাতৃ মনে পরপর আঘাত এসেছে, ছেলের জন্য কি করতে পকরে সেটা উপলব্ধি করতে পারছি।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(17-11-2022, 11:51 PM)chndnds Wrote: Darun laglo
অনেক ধন্যবাদ
•
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(18-11-2022, 01:05 AM)Boti babu Wrote: অসাধারণ দাদা জাস্ট অসাধারণ যৌনতা ছাড়াও আজ যেরকম উত্তেজিত হয়েছি তা লেখা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবো না। তবু কিছুতো লেখতে হবে তাই নিজের মত করে লেখলাম।
টগর রানি ফরফরানি এই টগরের এক তরফা নিঃস্বার্থ ভালোবাসা মনে দাগ দিয়ে গেছে , সত্যিই ভালোবাসা কি দুই তরফেই হতে হবে এমন আবার কোথায় লেখা আছে , টগরের জন্য আবার চিন্তা হচ্ছে সন্দীপ এর লাস্ট কথাটার জন্য দেখা যাক কি হয় ভবিষ্যতে।
বর্নালী ম্যাডাম থেকে জানতে পারলাম ঐ দিন রাতে কি হয়েছিল, কিন্তু দাদা যদি একটু বিস্তারিত ভাবে গোগোলের ঐ লোমহর্ষক অভিযানটা দিতেন মনে হয় আরো ভালো হত। যেরকম ভাবে গুরুকুল বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষকেরবেলায় দেখিয়া ছিলেন।
হিয়া আর গোগোলের বাড়ির ভেতরে কি কথা হয়েছে সেটাও জানা হলো না। সুজাতার গোগোলের হয়ে রুখে দারানো দেখে সত্যিই দারুণ লেগেছে কিন্তু যখন সুজাতা অনির্বাণের সব কীর্তি জানতে পারবে তখন কি হবে ।।।।।
সন্দীপ এর মত হাড়ামি টাইপের বন্ধু আমাদের চার পাশে অনেক আছে তাই মনে হয় সন্দীপ যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তাহলে আজ হোক আর কাল সেও মায়ের ভোগে যাবে, কারণ গোগোল কিন্তু আর সেই ছোট্ট গোগোল নেই যার ব্যাগের ভেতর ড্রাগস সন্দীপ রেখেছিল এটা যানার পরেও কিছু কিছুই করতে পারেনি কারণ তখন তো গোগোলের কোনও কিছুই করার ক্ষমতা ছিল না কিন্তু আজকের পরিস্থিতি ভিন্ন সে এখন রেল পারের বস্তির বেতাজ বাদশা অনির্বাণ।
Rock you dada
প্রথমেই বলি এই পর্ব যে তোমাদের এত ভালো লেগেছে তার জন্য আমি আপ্লুত এই পর্বে যখন ওসমান আর জ্যাকির হত্যাকারীর নাম আমার তরফ থেকে officially reveal (যদিও প্রায় সবাই আন্দাজ করতে পেরেছিল কাজটা কে করেছে) করেই দিলাম তখন সেদিনকার ঘটনার বিশদ বিবরণ এবং কথোপকথন অবশ্যই দেবো পরবর্তীকালে। হিয়া আর গোগোলের কি কথা হলো বাড়ির ভেতরে, আর তারপরে তার মা কাবেরী দেবীর ফোনটা সে কেটেই বা দিলো কেনো ওটাই তো রহস্য এই পর্বের। তা না হলে রহস্য-রোমাঞ্চ উপন্যাস জমবে কেন? সঙ্গে থাকো আর পড়তে থাকো।
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(18-11-2022, 01:47 AM)nextpage Wrote: বর্ণালীর ব্যাপারটা আজ খোলাশা করলে সেটা তো আমি আগেই বলেছিলাম যে কাজটা অনির্বাণ এর তবে এখনো প্রশ্ন আছে ও এ ব্যাপারে জানলো কি করে?
আজকে তো মা ছেলের খুনসুটিতেই ভাসিয়ে দিয়েছিলাম নিজেকে ব্যাস টগর এসে আমাকে তুলে নিলো আবার আরও গভীরে ভাসিয়ে নিলো। যদিও টগর সম্পর্কে তেমন জানা হয় নি তবে আজ ওর চটপটে ভাবটার সাথে অনেক বেশি ম্যাচিউর লেগেছে। প্রতিটা ডায়লগের গভীরতা ছিল ওজন ছিল হোক সেটা সন্দ্বীপের কথায় রিয়্যাক্ট করা কিংবা সুজাতা গোগোলের সাথে কথোপকথনে। তার চেয়েও বেশি অনবদ্য ছিল হিয়া কে কথা গুলো বলার সময় নিজের ভেতরের আবেগ কে সামলে নিয়ে দারুন ভাবে স্পিচ ডেলিভারি করেছে। তাই হয়তো আজ হিয়া গল্পের অনেকটা জুড়ে থেকেও কোথাও ছিল না বরং এক পর্বেই আলোটা টগরের উপরে চলে এসেছে।
সন্দ্বীপ তো গোগোলের পাশে থাকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তবে মাঝখানের বছর গুলোতে এমন কি হয়ে গেল যে ও এমন ডেস্পারেট হয়ে উঠেছে গোগোলের বিরুদ্ধে সেটা হিয়া অব্দি গড়িয়ে গেল পর্যন্ত। উত্তর জানা দরকার আর সেটা তো বুম্বা দা দিবে।
বল এবার হিয়ার কোর্টে সে কিভাবে খেলতে চায় সেটা ও ভালো করে জানে, তেমন করেই ফল আসবে। আজ কেন জানি মনে হলো হিয়া না থাকলেও টগর তো আছে যদিও জানি ওকে হয়তো তুমি শেষ পর্যন্ত রাখবে না তার আগেই হাপিশ...
সুজাতার মাতৃ মনে পরপর আঘাত এসেছে, ছেলের জন্য কি করতে পকরে সেটা উপলব্ধি করতে পারছি।
গোগোল কি করে মায়াবন্দরের ব্যাপারটা জানলো এবং অপূর্বর কাছে আশা একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন .. এই ব্যাপারগুলো অবশ্যই খোলসা করা হবে পরবর্তীতে। ধীরে ধীরে কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজের খোসা ছাড়াতে পারলেই তো রহস্য-রোমাঞ্চ উপন্যাসের সার্থকতা। তবে এই উপন্যাসের নায়িকা হিয়া তার রূপে, গুণে এবং স্বভাবে সবার নয়নের মণি হয়ে উঠেও আজ সমস্ত লাইমলাইট যে টগর কেড়ে নিতে পেরেছে তার কাছ থেকে, তার জন্য লেখক হিসেবে আমি একটু হলেও গর্ববোধ করছি সঙ্গে থাকো আর পড়তে থাকো।
Posts: 1,242
Threads: 2
Likes Received: 2,219 in 1,014 posts
Likes Given: 1,615
Joined: Jul 2021
Reputation:
658
কত কিছু পেলাম এই পর্বে। বর্ণালী দেবীর সেই বিভীষিকাময় রাতের স্মৃতিচারণ, প্রদীপের জন্ম রহস্যের উন্মোচন - তাই আমি ভাবছিলাম যে আগের দিন দলের একটা ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ওইভাবে ঘেমে-নেয়ে একসা হচ্ছিল কেন হারামি বিধায়কটা। এখন বুঝলাম মালটাই ওর অবৈধ বাপ। এরপর বলতেই হবে সন্দীপের বীর বিক্রমে আগমন এবং বাকিদের কাছে তো বটেই, উপরন্তু একটা বাচ্চা মেয়ের কাছে ঝাড় খেয়ে লেজ গুটিয়ে পলায়ন। ব্যাপারটা দারুন এনজয় করেছি আর তার সঙ্গে ওদের কথোপকথন গুলো পুরো সিনেম্যাটিক ছিল - একদম মারকাটারি যাকে বলে। তবে এই পর্বের পুরোটাই ব্যালেন্স করে গেছে এই উপন্যাসের আমার সব থেকে প্রিয় চরিত্র সুজাতা। বাইরে যাই করুক বাড়িতে ছেলেকে নিজের কন্ট্রোলে রেখেছে, সন্দীপের বাঁদরামি almost চেপে দিয়েছে আর শেষে কাবেরীকে যেভাবে দাবড়ে দিলো, তাতে আজকের এই পর্ব সুজাতাময়। কিন্তু না, এখানেই একটা টুইস্ট আছে। আজকের পর্বে সুজাতা, গোগোল, হিয়া এদের মতো রথী মহারথীরা প্রেজেন্ট থাকলেও সবার নজর কেড়ে নিয়েছে ওই so-called অর্ধশিক্ষিত মুদিখানার দোকানদারের মেয়ে টগর - তার উপস্থিতিতে, তার বাচন ভঙ্গিমায়, তার বক্তব্য প্রেম প্রকাশে। হিয়া শেষ পর্যন্ত থাকুক আর নাই থাকুক টগর যেন থাকে - এটাই একমাত্র অনুরোধ তোমার কাছে। কারণ, তুমি মানুষটা তো ভীষণ আনপ্রেডিক্টেবল, সর্বোপরি টগরের সাইকেল চালিয়ে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার দৃশ্যটা পড়তে পড়তে কেন জানি না মনে হচ্ছিল তোমার মাথায় অন্য কিছু ঘটছে। থাক এর বেশি আর কিছু বললাম না। সবশেষে এটা বলতেই হবে মহারাজা তোমারে সেলাম।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,450 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,263
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(18-11-2022, 09:11 AM)Sanjay Sen Wrote: কত কিছু পেলাম এই পর্বে। বর্ণালী দেবীর সেই বিভীষিকাময় রাতের স্মৃতিচারণ, প্রদীপের জন্ম রহস্যের উন্মোচন - তাই আমি ভাবছিলাম যে আগের দিন দলের একটা ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ওইভাবে ঘেমে-নেয়ে একসা হচ্ছিল কেন হারামি বিধায়কটা। এখন বুঝলাম মালটাই ওর অবৈধ বাপ। এরপর বলতেই হবে সন্দীপের বীর বিক্রমে আগমন এবং বাকিদের কাছে তো বটেই, উপরন্তু একটা বাচ্চা মেয়ের কাছে ঝাড় খেয়ে লেজ গুটিয়ে পলায়ন। ব্যাপারটা দারুন এনজয় করেছি আর তার সঙ্গে ওদের কথোপকথন গুলো পুরো সিনেম্যাটিক ছিল - একদম মারকাটারি যাকে বলে। তবে এই পর্বের পুরোটাই ব্যালেন্স করে গেছে এই উপন্যাসের আমার সব থেকে প্রিয় চরিত্র সুজাতা। বাইরে যাই করুক বাড়িতে ছেলেকে নিজের কন্ট্রোলে রেখেছে, সন্দীপের বাঁদরামি almost চেপে দিয়েছে আর শেষে কাবেরীকে যেভাবে দাবড়ে দিলো, তাতে আজকের এই পর্ব সুজাতাময়। কিন্তু না, এখানেই একটা টুইস্ট আছে। আজকের পর্বে সুজাতা, গোগোল, হিয়া এদের মতো রথী মহারথীরা প্রেজেন্ট থাকলেও সবার নজর কেড়ে নিয়েছে ওই so-called অর্ধশিক্ষিত মুদিখানার দোকানদারের মেয়ে টগর - তার উপস্থিতিতে, তার বাচন ভঙ্গিমায়, তার বক্তব্য প্রেম প্রকাশে। হিয়া শেষ পর্যন্ত থাকুক আর নাই থাকুক টগর যেন থাকে - এটাই একমাত্র অনুরোধ তোমার কাছে। কারণ, তুমি মানুষটা তো ভীষণ আনপ্রেডিক্টেবল, সর্বোপরি টগরের সাইকেল চালিয়ে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার দৃশ্যটা পড়তে পড়তে কেন জানি না মনে হচ্ছিল তোমার মাথায় অন্য কিছু ঘটছে। থাক এর বেশি আর কিছু বললাম না। সবশেষে এটা বলতেই হবে মহারাজা তোমারে সেলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধুবর এইরকম মন্তব্য পেলে ভালো কিছু লেখার তাগিদ হাজারগুন বেড়ে যায়।পাঠকদের বিশেষ করে প্রিয় পাঠকের অনুরোধ রাখতে পারলে লেখকের থেকে খুশি বোধহয় আর বেশি কেউ হয় না। তবে এখনই বেশি কিছু না বলে এটুকুই বলতে পারি .. দেখা যাক কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর সবশেষে সেই এক ফাটা রেকর্ডের মতো বলবো - সঙ্গে থাকো আর পড়তে থাকো।
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(18-11-2022, 09:30 AM)ddey333 Wrote: পুরোপুরি একমত !!
শুধু এখানে কেন।, আগের ফোরামেও কোনো গল্পে এরকম চরম উত্তেজক বর্ণনা ছিল বলে মনে পড়ছে না।
অনেক ধন্যবাদ দাদা এই উপন্যাসের যৌনতায় মোড়া পর্বগুলি ভয়ঙ্কর উত্তেজক, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তবে বর্তমান পর্বটিতে কোথাও যৌনতার লেশমাত্র নেই। এটি আপাদমস্তক একটি রোমান্টিক এবং তার সঙ্গে কিছুটা রহস্য-রোমাঞ্চে ঘেরা পর্ব ছিলো
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,450 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,263
(18-11-2022, 12:23 PM)Bumba_1 Wrote: অনেক ধন্যবাদ দাদা এই উপন্যাসের যৌনতায় মোড়া পর্বগুলি ভয়ঙ্কর উত্তেজক, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তবে বর্তমান পর্বটিতে কোথাও যৌনতার লেশমাত্র নেই। এটি আপাদমস্তক একটি রোমান্টিক এবং তার সঙ্গে কিছুটা রহস্য-রোমাঞ্চে ঘেরা পর্ব ছিলো
সে তো দেখেছি , কিন্তু পুরো গল্পটাতে যৌনতাকে যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে আমি সেটার কথাই বলছিলাম !!
Posts: 1,379
Threads: 2
Likes Received: 1,412 in 975 posts
Likes Given: 1,720
Joined: Mar 2022
Reputation:
81
সবাই যা বলার বলে দিয়েছে তাই নতুন করে কিছুই বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। প্রেমের বর্ণনা হোক বা মৃত্যুর বর্ণনা হোক - তোমার মতো এইরকম লেখার বাঁধুনি সচরাচর দেখা যায় না। কথোপকথনের মাঝে মাঝে কি সুন্দর ভাবে রূপকগুলো ব্যবহার করো, যত প্রশংসা করি সেটাই কম হবে। গোগোল তো টগরকে ভালোবাসে না, আমি না এই পর্ব পড়ার পরে টগরের প্রেমে পড়ে গেছি। আমাকে দেবে ওকে ভালবাসতে?
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(18-11-2022, 02:41 PM)ddey333 Wrote:
সে তো দেখেছি , কিন্তু পুরো গল্পটাতে যৌনতাকে যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে আমি সেটার কথাই বলছিলাম !!
হ্যাঁ, এই উপন্যাস আসলে যৌনাত্মক .. একথা সর্বৈব সত্যি
(18-11-2022, 02:54 PM)Somnaath Wrote: সবাই যা বলার বলে দিয়েছে তাই নতুন করে কিছুই বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। প্রেমের বর্ণনা হোক বা মৃত্যুর বর্ণনা হোক - তোমার মতো এইরকম লেখার বাঁধুনি সচরাচর দেখা যায় না। কথোপকথনের মাঝে মাঝে কি সুন্দর ভাবে রূপকগুলো ব্যবহার করো, যত প্রশংসা করি সেটাই কম হবে। গোগোল তো টগরকে ভালোবাসে না, আমি না এই পর্ব পড়ার পরে টগরের প্রেমে পড়ে গেছি। আমাকে দেবে ওকে ভালবাসতে?
এইরূপ মন্তব্যের জন্য অন্তর থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর ভালোবাসা অফুরান তবে সবশেষে বলি শুধু টগর কেনো, কাউকেই বেশি ভালোবাসা বোধহয় উচিৎ নয়, তাতে কিন্তু পরে কষ্ট পেলেও পেতে হতে পারে।
|