16-11-2022, 10:51 AM
সর্বহারা যারা
চরম সুখি তারা
এক পেট এক ধোন
নো টেনশান ভোলা মন
চরম সুখি তারা
এক পেট এক ধোন
নো টেনশান ভোলা মন
Romance ছিন্নমূল ঃ কামদেব
|
16-11-2022, 10:51 AM
সর্বহারা যারা
চরম সুখি তারা এক পেট এক ধোন নো টেনশান ভোলা মন
16-11-2022, 12:11 PM
সুখ তো বৈচিমাসীর বাড়ি গিয়ে উঠতে পারে! সেখানেও তো বৈচিমাসীর কেউ নেই। দুজনে মিলে সুখে চোদন, থাকা সবই হবে। মাসীর পেটে বাচ্চাও হতে পারে
16-11-2022, 03:05 PM
17-11-2022, 02:24 AM
17-11-2022, 09:40 AM
17-11-2022, 11:26 AM
চত্বারিংশৎ অধ্যায়
সুখ উপুড় হয়ে শুয়ে আছে,ঘুমোচ্ছে না।কাকু তখন অফিসে না হলে দেখা করে আসতো।এখন মনে হচ্ছে টাকাটা নিয়ে নিলেই ভাল করতো।মামীর ব্যবহারে মাথাটা গরম হয়ে গেছিল।কি করে চলবে ভেবে দিশা পায় না।হাতের পুজি একমাসেই শেষ হয়ে যাবে।খোকনদা বলেছিল কোনো সমস্যা হলে জানাতে।মামার কথাটা একবার মনে হয়েছিল খোকনদাকে বলবে।পরে মনে হল পারিবারিক ব্যাপার খোকনদা হয়তো মামাকে ধরে হেনস্থা করবে ভেবে আর বলেনি।খোকনদা তার কোনো কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারে না?পার্টির লোকের শুনেছে অনেক ক্ষমতা। গ্রামে ফিরে যাবার কথা ভাবে। উপেনবাবু অফিস থেকে ফিরে চৌকিতে রঞ্জনকে দেখে একটু অবাক হলেন।আজকেই ফিরে এল?পোশাক বদলে তোয়ালে দিয়ে গা মুছতে মুছতে বললেন,কি ব্যাপার আজকেই ফিরে এলে? উপেনবাবুর গলা পেয়ে পালটি খেয়ে উঠে বসে সুখ। ফ্যাকাসে হাসল। মেস ছেড়ে দেবে এটা ফাইন্যাল? ভাবছি রেজাল্ট বেরনো অবধি থেকে যাই। রাইট।আমি তো সেই কথাই বলছি।তুমি কি করবে আগে থেকে ঘোষণা করার দরকার কি?গলা নামিয়ে বললেন,শোনো তোমায় একটা কথা বলি।ঐ আইটিরা তোমাকে নানাভাবে বোঝাবে আসলে ওদের কলিগকে এই মেসে আনার মতলব। কাকু আড়ালে ওদের বলেন আইটি।কাকু জানেন না বোঝালেও কোনো লাভ হবে না।এই মুহূর্তে মেস ছাড়া সুখর পক্ষে অসম্ভব।তার কোথাও যাবার জায়গা নেই।সেতো আর একমাস তারপর কি হবে ভেবে গায়ে জ্বর আসার উপক্রম। সুধীনরা ঢুকতে উপেনবাবু চুপ হয়ে যান।পুতুলদি এসে গেছে।সুখকে দেখে সুধীন বলল,আরে আপনি? সুখ হাসল। কালই চলে যাবেন নাকি? এখনো ঠিক করিনি। মাস শেষ হতে আরও কদিন বাকী আছে।তাড়াহুড়র কিছু নেই।সুধীন বলল। পুতুলদি চা দিয়ে গেল।সুখ চায়ে চুমুক দেয়। সীতেশ বলল,ঘরবাড়ি ছেড়ে কেউ মেসে পড়ে থাকে।চাকরি করতে হয় তাই দায়ে পড়ে এখানে থাকা। আমি তো শনিবারের জন্য মুখিয়ে থাকি।সুধীন তাল দেয়। তাকে শুনিয়ে বলছে সুখ বুঝতে পারে।ওরা জানে না কেন মেসে পড়ে আছে।শনিবারের জন্য অপেক্ষা করে বাড়ী যাবার জন্য।সেও এক সময় শনিবারের জন্য অপেক্ষা করত।চা শেষ করে সুখ বেরিয়ে পড়ল।কলেজ স্ট্রিট বই পাড়ায় বিভিন্ন দোকানের সামনে ঘোরাঘুরি করে।এক একটা দোকানে তিন-চারজন কর্মচারী।কর্মচারীদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করে।এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে রাতে ফিরে এল। রবিবারে পুতুলদি আসে না।মেস ফাকা এমন অবস্থায় আগে পড়েনি।বেরিয়ে একটা পাউরুটি দিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ সারে।কদিন পর মাস শেষ হতে সবাই উপেনবাবুকে টাকা দেয় সুখকে টাকা দিতে দেখে সুধীন বিরক্ত হয়ে বলল,আপনি টাকা দিচ্ছেন? ভাড়া দিতে হবে না? আপনি যে বললেন মেস ছেড়ে দেবেন? উপেনবাবু বললেন,মেস ছেড়ে দিলে দেখতেই পেতেন। সুধীন আর কথা বাড়ায় না।সুখ বুঝতে পারে ওরা তার উপর খুব রেগে গেছে কিন্তু তার কিছু করার নেই।সে ভাবছে এইমাসের পর কি হবে।একবার গ্রামে গিয়ে খোকনদাকে গিয়ে ধরবে?রেজাল্ট না বেরনো অবধি সুখ উচ্চ মাধ্যমিক পাস।এভাবে দিন কাটতে থাকে।সবাই অফিস বেরিয়ে গেলে সুখও বেরিয়ে পড়ে।কোনোদিন হাটতে হাটতে সেন্ট্রাল এভেনিউ ধরে শ্যাম বাজার পর্যন্ত গিয়ে বিধান সরণী ধরে ফিরে আসে আবার কোনোদিন গঙ্গার ধার দিয়ে বাগ বাজার তারপর সার্কুলার রোড ধরে ফিরে আসে মেসে।রাস্তার দুপাশে সারি সারি দোকান।দোকানে কর্মচারীরা ব্যস্ত খদ্দের নিয়ে।যতক্ষন বাইরে থাকে ভাল থাকে মেসে ফিরলেই একরাশ চিন্তা মাথা চেপে ধরে।একজন ঘনিষ্ঠ কেউ নেই যাকে মনের কথা বলে একটু সান্ত্বনা পেতে পারে। মাসের শেষ দিকে এক রবিবার।সবাই দেশে চলে গেছে।মেস একেবারে ফাকা, পুতুলদিও আসবে না।সুখ স্নানে যাবার তোড়জোড় করছে। সেদিনের পর থেকে আইটিরা তার সঙ্গে কথা বলে না। গোবরডাঙ্গা থেকে সুদীপাকে দেখতে আসার কথা।সুবীর রায় বনগাঁ স্টেশনে গিয়ে পাত্র পক্ষের জন্য অপেক্ষা করছে।এই সময় মনু থাকলে ভাল হতো।ছেলেটা বড় গোয়ার।তেজ করে টাকা নিল না।কোথায় আছে কে জানে।সুদীপাকে ঘুমোতে বলেছে ওর মা।ঘুমোলে মুখটা বেশ ফোলা ফোলা লাগে।মাঝে মাঝে জানলায় দাঁড়িয়ে দেখছে পাত্রপক্ষ আসছে কিনা।চারজন আসার কথা সেই মত মিষ্টি আনিয়ে রেখেছে। স্নান সেরে সুখ বেরোবার জন্য তৈরী হতে থাকে।সকালে চা-ও খাওয়া হয়নি।জানলায় চোখ রেখে বসুমতী দেখছে সুখ বুঝতে পারে।এক্টু পরেই দরজা দিয়ে ঢুকে জিজ্ঞেস করলেন,রঞ্জন তুমি দেশে গেলে না? মা নেই কি জন্য যাব। ওতো সহি বাত।এখুন তুমি একেলি।বসুমতী চলে গেলেন। সুখ তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়ল।কলকাতার পথে ঘুরতে ঘুরতে সব কিছু ভুলে থাকা যায়।হ্যারিসন রোড ধরে শিয়ালদার দিকে হাটতে থাকে। অনেকে ফুটপাথে পশরা সাজিয়ে বসেছে।দেখতে দেখতে মনের মধ্যে ঝিলিক দিয়ে উঠল।পরমুহূর্তে চুপষে যায়।পশরা নিয়ে বসতে গেলেও পুজি লাগে।এখন মনে হচ্ছে মামার দেওয়া টাকাটা ফিরিয়ে দিয়ে ভুল করেছে।শিয়ালদা পৌছে ফুটের একটা দোকানে চারটে কচুরীর ফরমাস করে।কচুরি খেয়ে ঢক ঢক করে অনেকটা জল খেল।ব্যাস লাঞ্চ শেষ।এবার কি করবে?সার্কুলার রোড ধরে দক্ষিন দিকে হাটতে শুরু করল। বনগাঁয় ট্রেন ঢুকতে সুবীররায়ের তীক্ষ্ণ নজর যাত্রীদের দিকে।বাবা মা ছেলেকে নামতে দেখে সুবীর রায় দ্রুত এগিয়ে গেলেন।সঙ্গে আরেকজন মহিলা। জোর হস্তে হেসে সুবীর রায় বলল,আসুন। স্টেশন হতে বেরিয়ে একটা ভ্যান রিক্সায় ওদের তুলে দিয়ে আগে আগে সুবীর রায় সাইকেলে চলেছে। জানলা দিয়ে ওদের আসতে দেখে আশালতা মেয়েকে ঘুম থেকে তুলে তৈরী হতে বলল।দরজা খুলে হেসে অভ্যর্থনা করে ভিতরে নিয়ে বাসাল।পরস্পর আলাপে জানা গেল সঙ্গে মহিলা প্রতিবেশিনী।আশালতা কিছুটা বিরক্ত এই প্রতিবেশীরাই ব্যাগড়া দেয়।আশালতা চারটে প্লেটে মিষ্টি সাজিয়ে নিয়ে ওদের সামনে রাখল। আবার এসব কেন? এটুকু তো করতেই হয়। মিষ্টি খেতে খেতে আলাপ চলতে থাকে। মৌলালীতে এসে এদিক ওদিক দেখে তারপর ডান দিকে বাক নিয়ে ধর্মতলার ফুটপাথ ধরে হাটতে থাকে।এদিকটায় দোকানপাট কম।ফুটপাথ দিয়ে লোকজন হেটে চলেছে।সকলেই কিছু না কিছু চিন্তা করতে করতে চলেছে।কারো সঙ্গে কারো চিন্তার মিল নেই।সুখ ভাবে তার মত অবস্থা কারো নয়।এসপ্লানেডে এসে কার্জন পার্কে ঢোকার মুখে দেখল একটা লোক সামনে কাপড় বিছিয়ে ভিক্ষে করছে।সুখ হাসল এই একটা পেশা কোনো পুজি লাগে না।পার্কে ঢুকে পশ্চিমদিকে একটা খালি বেঞ্চ দেখে বসল।এখানে ওখানে দু-একজন ঘুমোচ্ছে।সুখ আন্দাজ করার চেষ্টা করে এদের কিভাবে চলে?এদের পেশা কি? পার্কের দক্ষিন দিকে রাস্তা মুখো রাণী রাসমণির মূর্তি।রাস্তার বিপরীত দিকে শেষ প্রান্তে একটা টয়লেট।লোকে ঢূকছে বেরোচ্ছে।সূর্য রাজভবনের দিকে হেলে পড়েছে।অনেক বেলা হল।এবার ওঠা যাক।তলপেটের নীচে মৃদু বেদনা অনুভব করে।পার্ক থেকে বেরিয়ে টয়লেটের দিকে এগিয়ে যায়।ভিতরে ঢুকে একটায় ঢুকে জিপার খুলে পেচ্ছাপ করতে থাকে।নজরে পড়ল পাশের লোকটি উচু হয়ে উকি দিয়ে দেখছে।বেশ ধোপ দুরস্ত পোশাক।পেচ্ছাপ করছি না অন্য কিছু দেখছে হয়তো।ইচ্ছে করল চোয়ালে টেনে এক ঘুষি কষায়।লোকটি চলে গেল।দেখে তো ভদ্রলোক বলে মনে হল একী অসভ্যতা।পেচ্ছাপ হয়ে গেলে ঝাকিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে বেরিয়ে এল।রাস্তার উলটো দিকে একটা গাড়ীতে হেলান দিয়ে সেই লোকটা দাড়িয়ে।চোখাচুখি ইশারায় ডাকলেন।আশপাশে তাকিয়ে বুঝতে পারে তাকেই ডাকছেন। দ্বিধা হলেও রাস্তা পেরিয়ে সুখ লোকটার কাছে যেতে জিজ্ঞেস করল,কি করো? চেনে না জানে না এ প্রশ্ন কেন?সুখ বলল,কিছু করিনা। পড়াশুনা কতদূর? সুখ যেন ক্ষীন আলোর দেখা পেল উৎসাহের সঙ্গে বলল,এবার ইংরেজী অনার্স নিয়ে বিএ পরীক্ষা দিয়েছি। বাড়ী কোথায়? মুখে এসে গেছিল গোপাল নগর বলল,হ্যারিসন রোড।রেজাল্ট বেরোলে আমি সিয়োর পাস করে যাবো। ভদ্রলোক একটা কার্ড এগিয়ে দিয়ে বললেন,কাজ করার ইচ্ছে থাকলে কাল দশটার মধ্যে দেখা কোরো। দরজা খুলে উঠে পড়তেই গাড়ী চলতে শুরু করে।ইস ভদ্রলোকের নামটা জিজ্ঞেস করা হল না।কার্ডটা চোখের সামনে তুলে ধরতে দেখল, ইংরেজীতে লেখা Pleasure Poly Clinic. পলি ক্লিনিক--এই ভদ্রলোক কি তাহলে ডাক্তার?তাহলে গাড়ীতে লাল ক্রশ চিহ্ন থাকার কথা।ভাল করে খেয়াল করেনি। কার্ডটা পকেটে রেখে হাটতে শুরু করল।এক্টু আগে যা ঘটল তাকি সত্যি?বিশ্বাস করতে পারছে না।মনে মনে স্থির করে চাকরি হোক না হোক কাল সে যাবেই।গিয়ে দেখবে এই ঠিকানায় এরকম কোনো প্রতিষ্ঠান নেই।তাহলেও গিয়ে দেখতে কি হয়েছে।একটা কথা মনে হতে ঠোটে হাসি ফোটে,ন্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয়।তার কি এমন ক্ষতি হতে পারে।কাকু কাল বাড়ি থেকে সরাসরি অফিস গিয়ে সন্ধ্যেবেলা ফিরবে।না হলে কাকুর সঙ্গে আলোচনা করা যেতো। মেসে ঢোকার মুখে ভাবে রাতে হোটেলে খাবে কিনা?পর মুহূর্তে মনে হল চাকরি যদি হয়ও বেতন হবে একমাস পরে।দুটো আটার রুটি তরকারি পাচ টাকা খরচ করে কিনে মেসে ঢুকলো।লাইট জ্বেলে পকেট হতে কার্ডটা বের করে ভাল করে দেখতে থাকে।আবার যত্ন করে রেখে দিল।কাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে যেতে হবে।সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্টটা আর বিএ-র এ্যাডমিট কার্ডটাও নিতে হবে।
17-11-2022, 11:40 AM
মনটা উদাস হয়ে গেলো , বড়ো খারাপ সময় চলছে সুখের।
এই পর্বটা আবার মনে করিয়ে দিলো ... কি শক্তিশালী লেখনী কামদেব দাদার !!
17-11-2022, 12:29 PM
সব আপডেটই প্রত্যেকবার এত ছোটো মনে !অসাধারণ!
17-11-2022, 02:08 PM
পলি ক্লিনিক??
এসকর্ট সার্ভিস নয় তো! রত্নাকরের মত? হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
17-11-2022, 03:30 PM
17-11-2022, 07:05 PM
17-11-2022, 09:09 PM
18-11-2022, 09:02 AM
সবাই বলছে কামদেব দাদা সুখকে মেল এসকর্ট তৈরী করবে।
কিন্ত এর আগে আমাদের ভাবনা সত্যি হয় নি। বসুমতী, লাজবন্তী বা আয়ুষী কারো সাথেই কিছু হয় নি। এবার দেখা যাক কামদেব দাদা কি ভেবেছেন।
19-11-2022, 09:35 PM
19-11-2022, 09:41 PM
একচত্বারিংশৎ অধ্যায়
স্বপ্নের মতো কেটে গেল রাত।ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে গেল।চোখে মুখে জল দিয়ে ফিরে এসে দেখল পুতুলদি এসে গেছে।চা খেয়ে স্নানে যাবে।পলি ক্লিনিক বলতে ডাক্তার কম্পাউণ্ডার নার্সের কথা মনে আসে।এর একটাতেও তার সম্ভাবনা নেই।পিয়ন বেয়ারা হলেও হতে পারে।যাইহোক আপাতত চালাবার মতো কিছু একটা হলেই হল। পুতুলদি চা দিয়ে গেল।চায়ে চুমক দিয়ে ভাবে রেজাল্ট বেরোলে ভাল চাকরির জন্য ফাকে ফাকে চেষ্টা করতে হবে।সারা জীবন পিয়নগিরি করে কাটাবে নাকি?রান্না ঘরে গিয়ে বলল,পুতুলদি আমি নটার সময় বের হবো। পুতুলদি চোখ তুলে একবার তাকিয়ে আবার রান্নায় মন দিল।পুতুলদি শোনে কথা বলে খুব কম।পুতুলদিকে দেখে মায়ের কথা মনে পড়ল। মা অবশ্য মেসে নয় লোকের বাড়ীতে কাজ করতো। চা শেষ করে স্নানে চলে গেল।ভাল করে গামছা দিয়ে সারা শরীর রগড়ে স্নান করে।একটা ধন্দ্ব কিছুতে কাটেনা।পলি ক্লিনিকে কি চাকরি হতে পারে।ঠগবাজের পাল্লায় পড়ল নাতো?ঠগবাজের একটা উদ্দেশ্য থাকে।এ ক্ষেত্রে কিইবা উদ্দেশ্য থাকতে পারে?স্নান সেরে ঘরে এসে বাক্স খুলে সার্টিফিকেট গুলো বের করল।একটা নতুন জামাও বের করে।শ্রাদ্ধের সময় পাওয়া একদিনও পরেনি। পুতুলদি বলল,খেতে দিয়েছি। এর মধ্যে সব হয়ে গেল।সুখর ভাল লাগে।রান্না ঘরে আসন পেতে খেতে বসে গেল।খুব ক্ষিধে পেয়েছিল কাল থেকে কিছুই তেমন খাওয়া হয়নি।খেতে খেতে সুখ বলল,তুমি চলে যাও।থালা আমি ধুয়ে রাখব। পুতুলদি চলে গেল।সুখ নিজেকে বোঝায় কোনো কিছু আশা না করাই ভাল।আশা করলেই হতাশ হতে হয়।চাকরি না হোক একটা অভিজ্ঞতা হবে।খাওয়া দাওয়া সেরে সাজগোজ করে হাত আয়নায় নিজেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে।কার্ডটা বের করে আরেকবার চোখ বুলিয়ে নিল।অন্যদিনের কথা আলাদা আজ বাসেই যাবে।হেটে ঘর্মাক্ত হয়ে যাওয়া ঠিক হবে না।ফেরার সময় নাহয় হেটেই ফিরবে।হেটে কলেজ স্ট্রীট অবধি গিয়ে নির্দিষ্ট বাসে চেপে বসল।কাকুর কথা মনে পড়ল।কাকু বলেছিলেন,বিদেশে কোনো কাজকে ছোটো ভাবা হয় না।কোনো রেস্টরেণ্টে যে তোমাকে চা এগিয়ে দিচ্ছে তাকে কোনো ইউনিভার্সিটিতে দেখলে অবাক হয়োনা।বাপের ঘাড়ে বসে বেকার দিনের পর দিন খেতে এদেশে লজ্জা করে না কিন্তু বাজারে সবজি বিক্রী করতে লজ্জা পায়।কত কথা মনে পড়ছে।সুখ কোনো কাজে লজ্জা পায় না।কাজের বদলে পারিশ্রমিক পাবে এতে লজ্জা কিসের? বাস থেকে নেমে ঠিকানা খুজে খুজে পার্ক এভেনিউয়ের(নাম পরিবর্তিত) নির্দিষ্ট নম্বরে পৌছে কোথাও প্লেজারের নাম গন্ধ পেল না।গেটে একজন দারোয়ান দাঁড়িয়ে গেটের ওপাশে বিশাল চত্বর সারি সারি গাড়ী দাঁড়িয়ে তার পিছনে বিল্ডিং।সুখ সসংকোচে এগিয়ে দারোয়ানকে কার্ড দেখিয়ে কিছু বলার আগে দারোয়ান হাত দিয়ে একটা সিড়ি দেখিয়ে বলল,উপার চলা যাইয়ে। সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে থাকে দোতলার ল্যাণ্ডিং-এ পৌছে দেখল দরজা বন্ধ।আবার সিড়ি দিয়ে আর উপরে উঠে দেখল করিডোরের দুপাশে ঘরে বেডে পেশেণ্টরা শুয়ে আছে।এতক্ষনে মনে হচ্ছে এটা চিকিৎসালয়।এবার কি করবে সুখ ইতস্তত করে।একজন নার্সকে আসতে দেখে সুখ সব কথা বলতে মহিলা তাকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দিল।সেই ঘরে দুজন মহিলা তার ওজন নিল প্রেশার দেখল তারপর বাধা দেবার আগেই সুচ ফুটিয়ে রক্ত নিয়ে বলল,ওই ঘরে গিয়ে বসুন। সুখ একটা সোফায় গিয়ে বসল।আরও দু-তিনজন তারই মত বসে আছে।সুখ হতবাক চাকরির জন্য এসেছে সে ব্যাপারে কেউ কিছু বলল না,রক্ত নিল কেন?এর সঙ্গে চাকরির কি সম্পর্ক? পাশে বসা একজন বলল,ভেনেরাল টেস্ট। ভেনেরাল টেস্ট মানে আমার কোনো যৌন রোগ আছে কিনা তার পরীক্ষা।যৌন রোগ কিভাবে হবে?মনে পড়ল বৈচিমাসীর কথা আর সেই মহিলার কথা।ওদের শরীরে কোনো যৌন রোগ ছিল নাতো?সময় কেটে যাচ্ছে এখান থেকে চলে যাবে কিনা ভাবতে থাকে।কতক্ষন এখানে অপেক্ষা করবে।হঠাৎ নজরে উগ্র সাজের এক মহিলা শর্ট ঝুলের জামা গায়ে হাই হিল পরে হেটে দক্ষিন দিকে চলেছে।চলার তালে তালে পাছার বল দুটো নাচছে।এই মহিলা তো সাধারণ নয়।ওদিকে যাচ্ছেই বা কোথায়? সুখ দেখল শেষ প্রান্তে একটা দরজা খুলে মহিলা ভিতরে মিলিয়ে গেল।ওদিকে আরেকটা সিড়ি আছে নাকি?একজন মহিলা এসে তার পাশের লোকটিকে ডেকে নিয়ে গেল। এই লোকটিও কি তারই মত চাকরির জন্য এসেছে? একজন মহিলা এসে বলল,আপনি আসুন। সুখ উঠে তার সঙ্গে একটা ঘরে গেল।একটা লোক টেবিল চেয়ার সাজিয়ে বসে আছে।সেই মহিলা তাকে বসতে বলে চলে গেল। টেবিলের উলটো দিকের ভদ্রলোক ফাইল থেকে মুখ সরিয়ে বললেন,আপনি সিলেকটেড।শুনুন পনেরো দিন ট্রেনিং হবে।ট্রেনিং পিরিয়ডে পার ডে ভাতা একশো টাকা।নিন এখানে সই করুন।ভদ্রলোক খাতা এগিয়ে দিল। সুখ স্বাক্ষর করতে ভদ্রলোক তার হাতে একশো টাকা ধরিয়ে দিল। টাকাটা নিয়ে বলল,আমি তাহলে যেতে পারি? হ্যা কাল বেলা তিনটে থেকে ট্রেনিং।সময় মত আসবেন। কোথায় ট্রেনিং হবে? এখানে আসবেন আমি নিয়ে যাব। সুখর ধোয়াশা কাটে না।তাকে সিলেক্ট করা হয়েছে।কিন্তু কাজটা কি?মনে হচ্ছে ট্রেনিং দিয়ে কাজ শিখিয়ে নেওয়া হবে।মনে মনে হিসেব করে পনেরো দিনে দেড় হাজার টাকা।একটা দুশ্চিন্তা কাটলো।টাকাটা পকেটে রাখতে গিয়ে সার্টিফিকেটগুলো হাতে ঠেকল। কেউ তার শিক্ষাগত যোগ্যতা জানতে চাইল না।ট্রেনিং হলে বুঝতে পারবে কোন বিষয়ে শিক্ষা দিতে চায়।ওদিকের সিড়ি দিয়ে নামবে ভেবে সুখ দক্ষিন দিকে এগিয়ে গেল।দরজা খুলে ঢুকতে যাবে একটা ষণ্ডা গোছের লোক এসে বলল,এদিকে কোথায় যাচ্ছেন? নীচে যাবো। উত্তর দিকের সিড়ি দেখিয়ে বলল,সিড়ি ওদিকে। ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগে এই সিড়ি দিয়ে নামলে আপত্তি কেন?আবার ঘুরে উত্তর দিকে সিড়ির দিকে গেল। লিফট আছে তবু সুখ সিড়ি দিয়ে নামতে থাকে। তিনতলা থেকে দোতলায় নেমে দেখল আসার সময় দরজা বন্ধ ছিল এখন দরজা খুলেছে।সুখর কৌতূহল হল দক্ষিন দিকে সিড়ি দিয়ে নামতে বাধা দিল কেন। ভিতরে গিয়ে দেখল বা-দিকে একটা লম্বা মত ঘরে লোকজন অপেক্ষা করছে।আর ডানদিকে বিভিন্ন ডাক্তারের চেম্বার।অপেক্ষমান লোকজন মনে হয় ডাক্তার দেখাতে এসেছে। একপাশে টেলিফোন অপারেটার দু-কানে ফোন লাগিয়ে অনর্গল বকে যাচ্ছে। ডাক্তার বাগচী? না এ সপ্তাহে হবে না।আপনি মুখার্জিকে দেখাতে পারেন--তা হলে নেক্সট উইক?...হ্যা নামটা বলুন...সকাল এগারোটা। কেউ সম্ভবত ডাক্তারের এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট চাইছে।দক্ষিন দিকে কিছুটা এগিয়ে যেতে দেখল দেওয়াল।তিনতলার থেকে দোতলা বেশ ছোট মনে হল। কিছুক্ষন এদিক ওদিক দেখে সিড়ি দিয়ে একতলায় নেমে এল।এদিক ওদিক ঘুরে দেখল অন্য কোনো দিকে সিড়ি নেই।তিনতলার থেকে সিড়ি নীচে নেমে এসেছে ।তাহলে কি সে ভুল দেখল?হুউম... ট্রেনিং-এ তো আসছে রহস্যটা বের করতে হবে। রাস্তায় এসে বুঝতে পারে অনেক বেলা হয়ে গেছে।বাসে উঠতে ইচ্ছে করল না হাটতে থাকে। আজকের মত ক্লাস শেষে ইচ্ছে করলে চলে যেতে পারেন।কিন্তু কোথায় যাবেন?স্টাফ রুমের একদিকে কয়েকজন কি নিয়ে যেন কথা বলছে।শুক্লাও ওদের মধ্যে আছে।ননদ ভাইওলেণ্ট ছেড়া ছেড়া কিছু শব্দ কানে আসছে।ছুটির ঘণ্টার জন্য অপেক্ষা করছেন দীপশিখা।কলেজ সার্ভিস থেকে বছর কয়েক আগে এসেছে শুক্লা।বিয়ে হয়নি বয়স বেশী নয়। দীপাদির সঙ্গে ওর খুব ভাব। পার্কের কাছে এসে ফেবারিট কেবিনে ঢুকে সুখ দুটো টোস্ট আর চায়ের ফরমাস করল।পকেটে পয়সা থাকলে ভাবনা-চিন্তাগুলোও বেশ হালকা মেজাজের হয়। বাসে উঠে জানলা ঘেষে বসল দীপশিখা।এম সি মানে মিতা চ্যাটার্জির ননদ ভাইওলেণ্ট হয়ে গেছে।শ্বশুর বাড়ী হতে বাপের বাড়ী রেখে গেছে শুক্লার কাছে শুনল।যেখানে যা শুনবে দীপাদিকে এসে বলা চাই।দীপশিখা মজা করে বলেছিলেন,চাকরি করছো এবার একটা বিয়ে করে ফেলো। চারদিকে যা শুনছি বিয়ে করতে ভয় হয়। যা শুনছো সেটাই সব নয়।চব্বিশ ঘণ্টায় দিন-রাত্রি দুই আছে। শুনেছো মিসেস চ্যাটার্জির ননদের কথা।ওর হাজব্যাণ্ড নাকি আগের প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ের পরও যোগাযোগ রাখে। দীপশিখা বিরক্ত হন বলেন,আমি শুনতে চাই না। মৌলালী আসতেই নেমে পড়লেন দীপশিখা।সিড়ি ভেঙ্গে তিনতলায় উঠে ল্যাচ ঘুরিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে চেঞ্জ করে পাখা ফুল স্পীডে দিয়ে বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে পড়লেন।মনে হল এই সময় কেউ যদি এককাপ চা এগিয়ে দিত।ফোন বাজছে। এখন আবার কে?ব্যাগ থেকে ফোন বের করে স্ক্রিনে চোখ যেতে মৃদু হেসে বললেন,পরীক্ষার খবর কি? ভাল।মোমো তুমি কেমন আছো? আর কেমন আছি।ডাক্তার চেঞ্জ করেও কিছু হল না।জানিস শনিবার একটা মজা হয়েছে।কলেজে গিয়ে মনে হল গ্যাস বন্ধ করেছি কি?একবার ভাবলাম বাড়ী ফিরে আসি আবার মনে হল শনিবার তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে যাবে।ক্লাসে মন দিতে পারছি না।দুশ্চিন্তা মাথায় জমাট বেধে আছে।বাড়ি ফিরে দরজা খুলে পাখা চালায় নি যদি কিছু হয়ে যায়। রান্না ঘরে গিয়ে নীচু হয়ে রেগুলাটরে হাত দিয়ে দেখলাম বন্ধ।ঊঃস যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো। মোমো তোমায় একটা কথা বলবো? কি কথা?এত ভণিতা করছিস কেন? তুমি একজন সাইক্রিয়াটিস্টকে দেখাও--। তুই কি আমাকে পাগল ভেবেছিস--। মোমো শোনো--। চুপ কর লঘু গুরু সব ভুলে গেলি?দীপশিখা ফোন কেটে দিলেন। ঐটুকু মেয়ে যাকে সেদিন জন্মাতে দেখলাম--এদের মুখের কোনো আগল নেই।এখনো তো পাস করেনি--। দীপশিখা রান্নাঘরে গিয়ে চায়ের জল চাপিয়ে দিলেন।চায়ের জল ফুটছে দীপশিখার মেজাজ ক্রমশ শান্ত হতে থাকে।মেয়েটাকে এভাবে বলা ঠিক হয় নি।এই হয়েছে মুষ্কিল আজকাল কি যে হয়েছে এমন মাথা গরম হয়ে যায়। সুখ মেসে ঢুকে দেখল সবাই এসে গেছে।উপেনবাবু বললেন,আজ কোথায় কোথায় যাওয়া হয়েছিল? ঐ একটু পার্ক এভেনিউয়ের দিকে গেছিলাম।প্লেজারের কথা চেপে গেল।এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না। তার মনে নানা রকম প্রশ্ন উকি ঝুকি দিচ্ছে।ফ্রক পরা মেয়েটা তারপর সিড়ি দিয়ে নামতে যাওয়ায় বাধা দিল তাতেই সন্দেহটা দৃঢ়ীভুত হয়। |
« Next Oldest | Next Newest »
|