Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
এই পরের পাতা ছেলেটার গল্পে একটা অন্যরকম flavor ( সঠিক বাংলা শব্দ মনে পড়ছে না এই মুহূর্তে ) পাই আমি , যেটা আরেকজনের গল্পেও পেতাম ,কাকসন ।
ফাইন ফরাসি ওয়াইনের মতো , যে কেউ হয়তো বুঝবে না বা উপলব্ধি করবে না !!
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
বর্তমান সময়ের মানুষ দুটোর মধ্যেকার মুহূর্ত গুলো ও তাদের অনুভূতি গুলো পড়লে যেন এক অদ্ভুত ভালোলাগার জগতে হারিয়ে যাই ক্ষনিকের জন্য হলেও। তারা একে ওপরের হয়েও নয়, না হয়েও তাই। এযে কি ভয়ানক টানাপোড়েন এর আন্তরিক চঞ্চল রূপ তা কেউ নিজেও বোঝেনা, বুঝতে চায়না। শুধুই কিছু ভালোলাগা মুহুর্ত লাভের নিষ্পাপ লোভ পেয়ে বসেছে তাদের। নেই তাতে উগ্র শরীরী আকর্ষণ, নেই ঠকানোর অশ্লীল আনন্দ। আছে বন্ধুত্ব আর আবেগ।
আর অতীতের ছেলেটার তো এখন আকাশে ভাষার সময়। তাই সে পাখিদের সহিত ভাসছে। অবশ্য এই পর্বের শেষ অংশে এসে ব্যাটা হিরো বাবুর বোধ হয় শুকিয়া গিয়েছে....... মানে মুখের পানি। ♥️♥️♥️♥️
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(08-11-2022, 07:47 PM)Baban Wrote: বর্তমান সময়ের মানুষ দুটোর মধ্যেকার মুহূর্ত গুলো ও তাদের অনুভূতি গুলো পড়লে যেন এক অদ্ভুত ভালোলাগার জগতে হারিয়ে যাই ক্ষনিকের জন্য হলেও। তারা একে ওপরের হয়েও নয়, না হয়েও তাই। এযে কি ভয়ানক টানাপোড়েন এর আন্তরিক চঞ্চল রূপ তা কেউ নিজেও বোঝেনা, বুঝতে চায়না। শুধুই কিছু ভালোলাগা মুহুর্ত লাভের নিষ্পাপ লোভ পেয়ে বসেছে তাদের। নেই তাতে উগ্র শরীরী আকর্ষণ, নেই ঠকানোর অশ্লীল আনন্দ। আছে বন্ধুত্ব আর আবেগ।
আর অতীতের ছেলেটার তো এখন আকাশে ভাষার সময়। তাই সে পাখিদের সহিত ভাসছে। অবশ্য এই পর্বের শেষ অংশে এসে ব্যাটা হিরো বাবুর বোধ হয় শুকিয়া গিয়েছে....... মানে মুখের পানি। ♥️♥️♥️♥️
তোমাদের মন্তব্য গুলো পড়লে অন্যরকম একটা শান্তি পাই নিজেকে বুঝাতে পারি কেউ হয়তো আছে যে আমার মনের কথা গুলো বুঝে।
কিঞ্জল এর ভাগ্যে কি আছে সেটা কে জানে
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
নতুন পর্ব যাদের এখনো পড়া হয় নি তারা জলদি করে ঢুঁ মারতে পারেন আগের পাতায়।
আমার অন্য গল্প অতিথি তেও নতুন পর্ব এসে গেছে।
সেই সাথে এই গল্প এগিয়ে নিতে নতুন আপডেটের জন্য লেখা শুরু করেছি, আশা করি দেখা হবে খুব শীঘ্রই।
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
আজ অনেকদিন পর ভীষন ভালো লাগছে, অনুভূতি টা বলে বুঝাতে পারবো না। এটুকু বলি আজ রাতে ঘুমটা ভালো হবে।
(খানিকটা এগিয়ে এসে আমার ডান গালে ছোট্ট একটা চুমু একে দিয়ে আমার কোল থেকে ঘুমিয়ে থাকা কাব্যকে নিজের কাছে নিয়ে এক দৌড়ে ঘরের ভেতর ঢুকে যায়)
তৈরী হয়ে আছে নতুন আপডেট তবে আর অপেক্ষা কিসের! আগামীকাল রাতেই আসছে গল্পের নতুন পর্ব।
সঙ্গেই থাকুন....
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(14-11-2022, 08:43 PM)nextpage Wrote:
আজ অনেকদিন পর ভীষন ভালো লাগছে, অনুভূতি টা বলে বুঝাতে পারবো না। এটুকু বলি আজ রাতে ঘুমটা ভালো হবে।
(খানিকটা এগিয়ে এসে আমার ডান গালে ছোট্ট একটা চুমু একে দিয়ে আমার কোল থেকে ঘুমিয়ে থাকা কাব্যকে নিজের কাছে নিয়ে এক দৌড়ে ঘরের ভেতর ঢুকে যায়)
তৈরী হয়ে আছে নতুন আপডেট তবে আর অপেক্ষা কিসের! আগামীকাল রাতেই আসছে গল্পের নতুন পর্ব।
সঙ্গেই থাকুন....
দারুন , আছি সাথে ভাই !!
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(14-11-2022, 09:20 PM)ddey333 Wrote: দারুন , আছি সাথে ভাই !!
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
15-11-2022, 08:59 PM
(This post was last modified: 15-11-2022, 11:43 PM by nextpage. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব-৫
টিক টিক করে সে এগিয়ে চলেছে, কখন যে সে একটু থমকে দাড়াবে! সে কি কখনও থামবে না?
সবাই তো চলার পথে একটু থমকে দাড়ায়। মাঝে মাঝে তার জন্য বড় কষ্ট হয়, সে থামে না কখনও,
শুধু তার পিছে ছুটে চলা জীবন ভর- কোন অবকাশ নেই যে তার। তার পিছে ছুটতে ছুটতে সবাই ক্লান্ত হয়- তবু সবাই ক্লান্ত পথে ছুটে চলে!
আমিও ছুটে চলি শুধু তার পিছে, কেন সে থমকে দাড়ায় না একটু সুখের মাঝে? না না সে থামে না- জীবনের ডুব সাতারেও তার পিছে চলা, কত সুখ কত দুঃখ সবই থাকে তার মাঝে, থামে না কখনোই সে সুখে হোক বা দুঃখে! জানি আমি এই ছুটে চলার পথে- ক্লান্ত হবে যখন মন সেও থামবে না,হয়তো ক্লান্ত আমিই ঘুমিয়ে যাবো- কোন এক পথের বাঁকে, শুধু থামবে না সে! দুরন্ত কোন এক গতিতে- দুরন্ত কোন জীবনে সে উপস্থিত হবে।
সে জীবনও সে ক্লান্ত করে তুলবে, তাকেও সে ফেলে যাবে স্বার্থপরের মতো। কেন সে একটু থমকে দাড়ায় না? সে কি ক্লান্ত হয় না কোন এক মুহূর্তেও! যখন তার মাঝে অবস্বাদ আসে,
ক্লান্ত হয়েও সে কি করে ছুটে চলে? ঘুম ঘুম চোখে ক্লান্ত আমি- টিক টিক করে শুধু তুমিই অবিরাম ছুটে চল! যখন দেখি তুমি অনেক দূর- কেন জোর করে আবার তোমার পিছে চলা? এতো স্বার্থপর কেন সে? জীবনের শুরু থেকে ছোটা তার পিছে,
কখনও শেষ হয় না সে পথ চলা, শেষ বারের মতো ঘুমিয়ে পড়ার আগে! সময় তুমি এমন কেন?
কেন তোমার এই ছুটে চলা? কেন এতো খেলা আমাকে নিয়ে? কেনই বা অসময়ে ফেলে চলে যাও আমায়? আজ তুমি আমায় ছেড়ে বহুদূরে- অনেক দূরে চলে গেছ তুমি, জানি আর কখনোই যেতে পারবো না আমি, কি ক্ষতি হতো যদি একটু অপেক্ষা করতে? না না তোমাকে অপেক্ষা করতে বলব না, কেউ হয়তো তোমারই অপেক্ষায় আছে! পুরনো সঙ্গী ফেলে নতুনে তোমার সুখ, তুমি চলে যাও দূর বহুদূর। আমি এখন বড় ক্লান্ত- ছায়া ঘেরা এই পথের পাশেই বসবো আমি! এখানেই সুখের আবেশে হয়তো ঘুমাবো, শুধু অনুরোধ স্মৃতি করে রেখ আমায়, তোমার স্মৃতির পাতায়।
কথা গুলো মনের ভিতরে জেগেছিল আবার মনেই সুপ্ত হয়ে রয়ে গেল, ঠোঁটের কিনারায় এসে আর প্রাণ খুলে বলা হয়ে উঠলো না। কাকে বলবো যে আমাকে তার সাথে জড়িয়ে রেখেছে নাকি আমি যাকে আমার শূন্য শুষ্ক মরুভূমির মত বুকে জায়গা করে দিয়েছি। আমাকে অবাক করে দিয়ে সত্যিই আজ যেন সময় থমকে দাড়িয়েছে, পৃথিবীতে নিজ কক্ষপথে ঘুরতে গিয়েও স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে। প্রকৃতি নিজেকে থামিয়ে দিয়ে সবকিছু অচল করে রেখেছে শুধু চলমান দুটি আত্মার স্পন্দন একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে আছে সবকিছু ভুলে। কর্নে আর কোন শোরগোল ব্যতিব্যস্ত করছে না যেটুকুর উপস্থিতি আছে সেটাও আমার আর কথার প্রচন্ডরকম ভাবে বাড়তে থাকা হৃৎস্পন্দন। আমার মনের ভেতর কত রকমের চিন্তার খেলা খেলে চলেছে সবটার ঠাহর করতে পারছি কই আর ওদিকে কথা! আচ্ছা ওর মনেও কি আমার মতই উথাল-পাথাল ঢেউ বইছে নাকি বরাবরেই মত সবকিছু ভেঙে যাওয়া সত্ত্বেও সামলে নিয়ে শান্ত করে রেখেছে নিজেকে? আগে তো অবুঝের মত সবকিছু এড়িয়ে গেছি কিন্তু যখন ওর থেকে দূরে চলে এলাম তখন বুঝতে পারতাম আমি এতোদিনে কি কি হারিয়ে ফেলেছি নিজের ভুলে।
কথার নিঃশ্বাসে আমার বুক অস্থির হয়ে উঠেছে, ওকে আমার থেকে আর আলাদা করতে ইচ্ছে করছে না। ভূত বর্তমান ভবিষ্যতে কি হবে জানি না তবে অধৈর্য হয়ে পড়া মনে যে আকুলিবিকুলি সৃষ্টি হয়েছে তাতে ওকে ছাড়া নিজেকে কেমন অস্তিত্ব বিহীন মৃত কোন নাম না জানা গুল্মলতার মতই লাগছে। এত বছর পর এসে অনেক প্রশ্নের উত্থান হবে জেনেও আজ যে সাহসের সঞ্চার হয়ে চলেছে সেটা যদি বছর কয়েক আগে খানিকটাও জড়ো করতে পারতাম তবে কি বরাবরে মতই কথা আমার বুকে নিশ্চিন্তে মাথা রেখে সুখের স্বপ্ন বুনে চলতো। আহা! এমন কল্পনায় মনে শুধু সুখানুভূতি ছোঁয়ায় শীতল পরশ বুলিয়ে যায় তাতে এ ঘোর যেন কখনো না ভাঙে সেটাই চাওয়া থাকে সৃষ্টিকর্তার কাছে। এমন স্বর্গীয় মূহুর্তে সদা চঞ্চল মতি যার স্পর্শে শান্ত হয়ে আসছে সেই মানুষটার আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে মনের বিশাল আকাশ জুড়ে শ্রাবণের মেঘ গুলো জড়ো হচ্ছে একটু একটু করে। এখনি হয়তো আমার মনে জমা হওয়া ভালোবাসার মেঘ গুলো শ্রাবণের ধারা হয়ে নেমে আসবে আর ভিজিয়ে দিয়ে যাবে কথার এতো বছর ধরে আমার অবহেলায় দগ্ধ হতে থাকা নির্মল চিত্ত কে। সেই চরম সময়ের ব্যাপ্তিতে নিবদ্ধ থাকা মস্তিষ্কের নিউরন জুড়ে ছুটে চলা অলীক সুখের ইঙ্গিতে আজ আমার ব্যাকুল মন উদাস হয়ে আছে দুঃসাহস জাগাছে আমার ভালোবাসার মানুষটাকে নিয়ে দূরে কোথাও অজানা গন্তব্যে হারিয়ে যেতে।
কিরে এখানেই এমন করে কি দাঁড়িয়ে থাকবি নাকি? ভেতরে যাবি না?
(কথার কাঁপতে থাকা ক্ষীণ গলার স্বরে আমি আবার নিজের মাঝে ফিরে আসি, ওর চোখের দিকে তাকিয়ে স্থির হয়ে থাকা মনিতে নিজের প্রতিবিম্ব দেখতে পাচ্ছি। সেই সাথে ভীষণ রকমের অপার্থিব সুখের আকুলতা যেখানে হয়তো আমি ছাড়া আর কারও অধিকার নেই)
ইচ্ছে করছে না রে! থাক না আর কিছুক্ষণ।
(পরাজিত সৈনিকের ক্ষতবিক্ষত দেহের যন্ত্রণায় যখন ঔষধের উপশম পায় তখনকার মতই একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসে কথার ঈষৎ ফাঁক হওয়া ঠোঁটের আড়াল থেকে)
আমি তো চাই! তুই পারবি?
(আমাকে ওর আলিঙ্গন থেকে মুক্ত করে দেয়)
নে চল রাত হয়েছে, দিপু টেনশন করবে।
আমি কিছু একটা বলতে চেয়েও যেন কোথাও আটকে গেলাম, তবে কি আবার হারিয়ে ফেলছি কথা কে? ওর প্রস্থানের ছায়া অনুসরণ করে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে লাগলাম। খানিক আগের চঞ্চলতা টা এখন যেন কিসের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে আমার সামনে যে আছে সে একদম অন্য একজন মানুষ যার মাঝের দৃঢ়তা, প্রয়োজনের গাম্ভীর্য, সময়ের দায়িত্ব আর পরিস্থিতির পক্কতা ওর ব্যক্তিত্বে আলাদা জৌলুশ এনে দিয়েছে। বারান্দার কাছে হঠাৎ থমকে দাঁড়ায় কথা পেছন ফেরে আমার দিকে এগিয়ে আসে, ওকে আসতে দেখে আমি স্থির হয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়ি।
আজ অনেকদিন পর ভীষন ভালো লাগছে, অনুভূতি টা বলে বুঝাতে পারবো না। এটুকু বলি আজ রাতে ঘুমটা ভালো হবে।
(খানিকটা এগিয়ে এসে আমার ডান গালে ছোট্ট একটা চুমু একে দিয়ে আমার কোল থেকে ঘুমিয়ে থাকা কাব্যকে নিজের কাছে নিয়ে এক দৌড়ে ঘরের ভেতর ঢুকে যায়)
আমি অবাক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছি একই মানুষে কত রূপ ওর চলে যাওয়াটা আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই কলেজ জীবনের স্মৃতিতে যেখানের কথা ছিল এরকম চঞ্চলতায় ঢাকা শিশুসুলভ চলাফেরা। এই কথাকে আবার যেন অনেকদিন পর ফিরে পেয়েছি।
ঝড়ো হাওয়ার মত এসেছিলে তুমি,
দিয়েছিলে হৃদয়ে শীতল ছোঁয়া।
কল্পনাতে তুমিই তো রানী,
নাইবা হলো বাস্তবে পাওয়া।
নিম্নচাপের প্রভাবে তুমি
ঘুরেছো দিক বিদিক,
ঘূর্নিঝড়ের শেষে হাওয়া
ঠিক চিনবে দক্ষিণ দিক।
চেয়েছি তোমায় পাবো না জেনে
ভাগ্যের পরিহাস নিলাম মেনে
ভালোবাসার ডাক তো ঐ ঈশ্বরও শোনে।
এসএসসি পরীক্ষা শেষ তাই সময়টা এখন শুধুই উপভোগের আর সেটার সদ্ব্যবহার কিভাবে করতে হয় সেটা আমার আর বিকাশের চেয়ে ভালো কে জানে। বিকেলের দিকে আমি আর বিকাশ বাজার থেকে বেড়িয়ে গ্রামের পথ ধরে হ্যাচারীর ওখানে চলে গেলাম এখানের মোটর ঘরের পেছনের মাচা টা আমাদের অবসরের আড্ডার যায়গা। সন্ধ্যা নেমে আসছে তাই আমরা আবার বাড়ি ফেরার পথ ধরি। কলেজ রোডের তালতলার কাছে আসতেই আমার পকেটে থাকা মোবাইলটা বেজে উঠে, না তখনো আমার নিজের কোন মোবাইল পাওয়া হয়ে উঠেনি তবে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে মানে আমি একটু বড় হয়েছি সেই সুবাদে মায়ের ছোট্ট বাটন মোবাইলটা এখন আমার পকেটে শোভা পায়। মোবাইলটা পকেট থেকে বের করতেই দেখি কথাদের বাসার নাম্বার থেকে কল এসেছে, রিসিভ করতেই
আন্টি তোমার বাঁদর টা কই গো?
(মেজাজ টা গরম করে দিলো, একটু রাগত্ব স্বরেই বললাম)
বাঁদর টাই আছে এ পাশে ম্যাডাম।
(আমিই যে ফোনটা ধরবো সেটা হয়তো ও বুঝতে পারে নি তাই কি বলে পরিস্থিতিটা সামলাবে সেটাই ভাবতে ভাবতে এলোমেলো কয়েকটা শব্দে আওরিয়ে চলেছে তারপর কিছুটা সামলে নিয়ে)
কই তুই? বাসায়?
না, এই শিমুলতলির দিকে একটু হাঁটতে গিয়েছিলাম এখন তালতলা আছি।
ওহ তাহলে তো বাসার কাছেই আছিস, একটু বাসায় আয়...
কেন?
দরকার আছে। দেরি যেন না হয়, তাড়াতাড়ি আয়
(আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কলটা কেটে দিলো)
একবার ভাবলাম যাবো না ও বললেই কি যেতে হবে নাকি। সবসময় কেমন একটা অধিকার খাটায় আমার একদম ভালো লাগে না। আবার ভাবি যদি এখন না যাই তবে আবার মোবাইল করে মা কে বিচার দিবে আর কান্নাকাটির অভিনয় তো ওর কাছে হিরোইনদের শেখা উচিত। এমন একটা ভাব করবে যেন আমি ওকে কত কি না বলেছি। না যেতেই হবে একবার, গিয়ে তো দেখি কেন ডাকছে। বিকাশ কে বললাম সাথে যাবার জন্য কিন্তু ওর অজুহাত টা বরাবরই তৈরী করা থাকে। তাই সুযোগ বুঝেই কেটে পড়লো, সত্যি বলতে বিকাশ কথা কে কেন জানি ভীষণ ভয় পায়।
তালতলা থেকে একটু এগিয়েই একটা গলিপথ সেটা ধরে গোটা পঞ্চাশ পা বাড়াতেই কথাদের বাসায় পৌছে গেলাম। কলিং বেল টা চাপতে দেরি হলো কিন্তু গেটটা খুলতে দেরি হলো না, মনে হয় কথা এখানেই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলো আমার জন্য। ভেতরের ঢুকতে গিয়ে মনে হলো বাসাটা কেমন খালি খালি লাগছে
কিরে বাসায় কেউ নেই নাকি? আন্টি কই অর্পি কে দেখছি না।
মা অর্পি কাকী সবাই একটু বাজারে দিকে গেলো, টেইলার্সে কিছু জামা দেয়া আছে সেগুলো আনতে। আর কিছু কেনাকাটা আছে হয়তো
তাহলে তুই একা বাসায় কি করিস? আর আমাকে এখন ডাকলি কেন?
(আমার হাত ধরে টানতে টানতে ঘরের ভিতর নিয়ে গেল)
এমনি মন চাইলো তাই কেন তোকে কি দিনক্ষণ দেখে আসতে বলতে হবে নাকি। চুপ করে এখানে বসে থাক আমি আসছি।
(আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বাতাসের বেগে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। আমি চুপটি করে সোফায় বসে পড়লাম, ওর মতে মতে না চললে বিপদ আছে। কিন্তু গেল টা কোথায় আর কেনই বা ডাকলো সেটা জানা হলো শুধু মুখ দিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বেরিয়ে এলো)
কেন ডাকলি সেটা তো বল।
না আমার আওয়াজ শোনার মত কেউ ছিল না সেখানে, আমি উঠে গিয়ে টিভি টা অন করে ফিরে আসতেই কথাও ঘরে ঢুকলো তবে এবার খালি হাতে নয়৷ দু হাতে ধরা ট্রে টাতে কিছু খাবার আছে হয়তো। কাছে আসতেই দেখি চিড়ে পোলাও আর ডিম পাউরুটি। ধোয়া উঠা গরম নাস্তা দেখে আমার জিভে জল চলে এসেছে, বুঝাই যাচ্ছে কথাই রান্না করেছে সেই সাথে প্লেটের ডেকোরেশন টাও সুন্দর হয়েছে। ওকে একটু খুঁচা দিতে ইচ্ছে হলো
কিরে কি ব্যাপার আজ? আন্টি আমার জন্য এগুলো করেছে নাকি, ওয়াও ঘ্রানেই বলছে দারুন হবে খেতে।
(আমার হাতে প্লেট গুলো দিতে গিয়েও সরিয়ে নিলো, আর মিষ্টি একটা ভেংচি দিয়ে রাগত স্বরে বললো)
তোর আন্টি করেছে মানে? আন্টিই সব করে নাকি আমি কি কিছু করতে পারি না বুঝি? আমি তোর জন্য বানিয়েছিলাম আর তুই কি না, যা তোর আর খেতে হবে না।
তুই করেছিস? সত্যি? তাই তো বলি ওমন বিচ্ছিরি দেখাচ্ছে কেন আর কেমন একটা পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে
(দিলাম আরেকটু রাগিয়ে)
কি বললি? বিচ্ছিরি লাগছে আমার রান্না? পঁচা গন্ধ করছে? যা আমার পঁচা বিচ্ছিরি রান্না তোর খেতে হবে না আমি সব ফেলে দেবো এখনি৷ তুইও চলে যা তোর অনেক কাজ ব্যস্ত মানুষ।
ও আমার কাছ থেকে উঠে চলে যেতে চাচ্ছিলো আমি শক্ত করে ওর হাতটা চেপে ধরতেই একটা চাপা আর্তনাদ শুনতে পেলাম। কথার মুখের দিকে তাকাতেই দেখি অসহ্য যন্ত্রণায় চোখ মুখ কুঁচকে আছে আর অন্য হাতে আমার হাতটা সরানোর চেষ্টা করছে। হাত সরাতেই দেখি আমি ওর কব্জির যেখানে ধরেছিলাম সেখানটা কালচে লাল হয়ে আছে আর দেখে মনে হচ্ছে হালকা পুড়ে গিয়ে ফুসকা পড়ে গিয়েছিল সেটা গলে গিয়েছে।
কিরে এটা কিভাবে হলো? হাত পোড়ালি কি করে?
(যন্ত্রণায় চোখের কোনে জল জমে গেছে আর মুখ দিয়ে চাপা গোঙানির আওয়াজ বেড়িয়ে আসছে সেটা সহ্য করেই কোন মতে বলে উঠলো)
গরম তেল ছিটকে এসেছিল।
(ওর এমন অবস্থা দেখে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল, আমার জন্যই তো এমন হলো আর আমিই কিনা ওকে খুঁচা দিয়ে যাচ্ছিলাম)
কিছু লাগিয়েছিস? ঘরে অয়েন্টমেন্ট আছে কি?
হুম! ঐ টেবিলের নিচে একটা বক্স আছে ওটাতেই আছে হয়তো, আমিই নিয়ে আসছি।
চুপ করে বস এখানে, এসব কে করতে বলেছিল তোকে। সবটাতে মাতব্বরি না করলেই না৷ আন্টি দেখলে যে কতগুলো বকা খাবি সেটার খবর আছে।
(ওকে কথা গুলো বলতে বলতে আমি বক্স খুলে অয়েন্টমেন্ট টা খুঁজতে থাকি)
মা থাকলে তো করতে দিবে না তাই তো...
তোর জন্যই তো করেছিলাম এখন তুই আমাকে বকাবকি করছিস, আমি কি ইচ্ছে করে পুড়িয়েছি নাকি
(পেছন ফেরে দেখি কথা গাল ফুলিয়ে বসে আছে, চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। আমি ওর কাছে গিয়ে বসে হাতটা নিজের কোলের কাছে টেনে নেই)
এতো বকবক করিস কেন? চুপ করে বসে থাকবি বলে দিলাম।
আমি অয়েন্টমেন্ট নিয়ে ওর পোড়া জায়গাটাতে ভালো করে লাগিয়ে দিয়ে হালকা করে ফুঁ দিতে থাকলাম। আমার হাতে থাকা কথার হাতটা যেন খানিকটা কেঁপে উঠলো, হাতের লোম গুলো দাড়িয়ে গেছে। না সেদিকে আমার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই বরং আমি ওর পোড়া ঘা তে মনোনিবেশ করলাম। আমার শুশ্রূষা হয়তো কথার ভালো লাগছিলো তাই বুঝি ও আমার দিকে আরেকটু সরে আসলো। না আমার গায়ের সাথে ওর গা লেগে নেই তবুও যেন আমি ওকে অনুভব করতে পারছি। আমার সংবেদনশীল ইন্দ্রিয় বলছে কথা আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার কেন জানি ওর মুখটা দেখার ইচ্ছে করছে কিন্তু ওর চোখের দিকে তাকানোর সাহস পাই না। ওখানে তাকালে আমার যেন সব কেমন গুলিয়ে যায় নিজেকে হারিয়ে ফেলি ওর চোখের গভীরতায় মন বলে ওখানে শুধু আমার নামই লেখা। কিন্তু আমি তো ওমন করে কখনো কিছু ভাবি নি, ভাবা হয়ে উঠেনি। মনের ভেতরে চলা দোটানার মাঝেই আমি ভীরু ভীরু দৃষ্টিতে কথার দিকে তাকানোর চেষ্টা করি।
ও আমার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে হয়তো ওর আর আমার মাঝে ইঞ্চি কয়েকের ব্যবধান কোন রকমে আমাদের আলাদা করে রেখেছে। আমি কখনই ওর চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে পারি নি কেন সেটা জানি না অদ্ভুত একটা অস্বস্তি কাজ করতো মনের ভেতরে। কিন্তু আজ কোন এক মোহনীয়তার আগলে আমি যেন বন্দী হয়ে পড়েছি চাইলেও যেন ওর চোখ থেকে আমার দৃষ্টি সরাতে পারছি না। জীবনের ১৫ টা বসন্ত পার করে আসা আমি সঙ্গ দোষে না হয় পারিপার্শ্বিক প্রভাবেই যৌন জ্ঞান খানিকটা বৈকি অনেকটাই প্রাপ্ত করে নিয়েছি। সেটারই প্রভাবে হয়তো আমার শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে কামবেগ তাড়িত হতে লাগলো। ছড়িয়ে পড়া উষ্ণতায় আমার নাক মুখ হালকা ঘামতে শুরু করেছে। বিপরীতে বসা কথার মাঝে কোন হেলদোল দেখতে পারছি না তবে ওর প্রতিটা নিঃশ্বাসে নাকের পাটা ভীষণ ভাবেই ফুলে উঠছিল বারবার। আমার হাত ওর কব্জি ছেড়ে কাঁধের কাছে কখন চলে এসেছে সেটা আমার ঘোরের মাঝে থাকা মস্তিষ্ক অবলোকন করতে পারে নি। এর আগে অনেকবার ওকে স্পর্শ করেছি কিন্তু পূর্বে কখনই আজকের মত এত নরম মোলায়েল কোমল মনে হয় নি ওকে। আমার হাতের স্পর্শে যেন একটু একটু করে নরম চকলেটের মত গলে যাচ্ছে কথা। আর রিপুর ফাদে আটকে থাকা আমার বাসনাদি জিভ সেটার স্বাদ নেবার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছে। আমার চঞ্চল হাত গুলো ওর তপ্ততা ছড়ানো কানের পাশে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে, কথাও যেন বশীভূতের মতই আমার আরও কাছে চলে এসেছে৷ খানিক নড়াচড়াতেই আমার ঠোঁট যুগল ওকে স্পর্শ করে যাবে। ওর চোখ গুলো ছোট হয়ে আসছে ওখানের স্থিরতা আমাকে আরও প্রশয় দিয়ে যাচ্ছিলো। কথার ঈষৎ ফাঁক হওয়া ঠোঁটের কম্পন আমাকে হয়তো আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে, আমার দ্বিধাগ্রস্থ মনকে শান্ত করে ও দুচোখ বন্ধ করে নেয়। এটাই সেই সময় সবকিছু পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবার আগে কি হয়েছে আর পরবর্তীতে কি হবে সেই হিসাবের খাতা না খুলে এখন সবচেয়ে উত্তম মূহুর্ত রিপুর তাড়নায় ছুটতে থাকা মনকে শান্ত করার। আজকের পর ওর সাথে আমার সম্পর্ক কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটার ভাবনায় ভেসে যাবার আগেই আমি দু চোখ বন্ধ করে এগিয়ে দিলাম আমার তৃষ্ণার্ত ওষ্ঠদ্বয় কে।
হঠাৎ করেই আমার তপ্ত কপালে ঠান্ডা হাতের ছোঁয়া পেতেই অনেক কষ্টে মরিচের মত জ্বালা করতে থাকা চোখজোড়া খোলার চেষ্টা করি। আধো আধো চাহনিতে বুঝতে পারি হাতটা কথার ও আমার পাশেই উদ্বিগ্ন চেহারায় বসে আছে।
(ভাঙা ভাঙা কন্ঠে কিছু শব্দ জোড়ার চেষ্টা করতে থাকি)
তু...তুই এএএখানে, কি...ইইই হয়েছে তোকে এমনননন দেখাচ্ছে কেন?
(কথা অদ্ভুত চাহনিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে)
পাগল বলে কি? তোর কি হুশ নেই নাকি। তোর গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে সেই কখন থেকে আবোল তাবোল বকে যাচ্ছিস আর বলে কি না কি হয়েছে। একটাবার ডাকতে পারলি না? ভাগ্যিস দিপু তোর ঘরের এদিক দিয়ে যাচ্ছিলো নয়তো জানতেই পারতাম না।
আমি আর কিছুই বলতে পারছি না গলা কেমন জড়িয়ে আসছে, শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছি কথার বিধস্ত মুখের দিকে।
★★★★★★
দেবযানীকে আমার দিকে আঙুলে ইশারা করতেই আমার প্রাণ যেন যায়যায় অবস্থায় ঝুলে রয়েছে৷ দোকান ভর্তি মানুষ সেই সাথে কাকাও আছে সবার সামনে ওর বাবা যদি এখানে কিছু বলে উঠে তবে আমার আর মুখ দেখানোর জায়গা থাকবে না। আমার তো তখন ইচ্ছে করছিলো কিছু বলার আগেই ওর বাবার কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিই। যা হয়েছে হয়েছে আগামীতে এমন আর কখনো হবে না। আমার না কোন মান সম্মানের বালাই নেই কিন্তু আমার বোকামির জন্য আমার বাবার আমার পরিবারের মান সম্মান সব আজ ধুলায় মিশতে চললো তার কি হবে। কেন যে এইসব করতে গেলাম কে জানে, কোন মায়ার কবলে পড়ে হেন কর্মে নাম লেখালাম ঈশ্বর জানেন। আমি কান ধরছি আর কখনো ওর দিকে ফিরেও তাকাবো না দরকার হলে রাস্তা বদল করে নেব, সামনে পড়লে চোখ বুজে নেব তবুও দেবযানী কে দেখার সাধ জন্মের মত ঘুচিয়ে দেব।
কিরে কোনটা, দেবযানীর দিকে তাকিয়ে ওর বাবা আরেকবার জিজ্ঞেস করলো।
ঐতো দেখতে পারছো না তুমি, দেবযানী আবারও ইশারায় আমাকে দেখায়।
না আমি আর দাড়িয়ে থাকতে পারছি না, পারি তো এখনি এখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই। ওদের এগিয়ে আসতে দেখে আমি নিজেকে যতটা পারি অসহায়ের মত গুটিয়ে নিলাম। আমার কাচুমাচু হয়ে থাকা মুখটা যে কেউ দেখলে তার হৃদয় হয়তো কেঁদে উঠতো কিন্তু দেবযানীর বাবা কি সেসবের ধার ধারবে৷ আমার কাছাকাছি আসতেই আসন্ন ঝড়ের মোকাবিলা করতে নিজেকে প্রস্তুত করার নিমিত্তে চোখ বন্ধ করে সাহস সঞ্চার করার চেষ্টা করলাম।
না মনে হলো ওরা আমাকে ডিঙিয়ে আরেকটু আগে এগিয়ে গেছে সেটা ভেবে স্বস্তি পাবার আগেই ভাবনার উদয় হলো তবে কি সরাসরি কাকার কাছেই বিচার দিয়ে দিবে নাতো৷
তবে তো আজ আর রক্ষে নেই আমার, আগত বিপদ কে সামলাতে এক দৌড়ে দোকান থেকে প্রস্থান করবার প্রস্তুতি নিতে লাগলাম। তার আগে একবার চোখ মেলে পেছনে দেখে নেবার সিদ্ধান্ত নিলাম।
বাবা ঐ যে এই বড় টেডিটা আমার পছন্দ। আমাকে কিন্তু এটাই কিনে দিতে হবে আগেই বলে দিলাম(অদ্ভুত রকমের নাকি সুরে বাবার আদরের দুলালীর আবদার শুনে আমার কান খাঁড়া হয়ে গেল।)
তুই কি বড় হবি না? এতোদিন ধরে তাহলে এই টেডি টা প্রতিদিন দেখে যেতিস। তোর না বাসায় আরও পুতুল আছে এখন আরেকটা দিয়ে কি করবি?
না না আমি কোন কিছু শুনবো না, তুমি কিন্তু কথা দিয়েছিলে যে আমাকে কিনে দিবে (কথা টা বলেই দেবযানী বাচ্চাদের মত হাত পা ছুঁড়তে শুরু করলো)
ঠিক আছে দেব দেব (দেবযানীর আবদার মেনে নিয়ে ওকে শান্ত করলো)
আমি একটু দূরে বলতে এইতো হাত দুয়েক হবে দূরত্বে দাড়িয়ে আছি আর ওদের বাবা মেয়ের মাঝের কথা শুনছি। আমার খাঁচা থেকে বেড়িয়ে যাওয়া আত্মা যেন আবার ফিরে এলো নিজের মাঝে। আগের সব ভয় শঙ্কা আশঙ্কার মেঘ মনের আকাশ থেকে সরে গিয়ে আনন্দের রোদে ঝলমলিয়ে উঠতে লাগলো। খানিক আগের ভাবনা গুলো নিজে থেকেই হাসির উদ্রেক সৃষ্টি করতে লাগলো আপন মনে। নিজেকে নিজের কাছে কেমন বোকা বোকা লাগতে শুরু করেছে, মনে হচ্ছে এমন ভয় হয়তো আগে কখনো পাই নি আমি।
আমি কাউন্টারের দিকে এগিয়ে গেলাম সেখান থেকে নিরাপদ দূরত্বের মাঝে দেবযানীকে সবচেয়ে উত্তম রূপে অবলোকন করতে পারবো। দেবযানী ততোক্ষনে নতুন কেনা টেডি টা কে হাতের কাছে পেয়ে চাপা উল্লাস করতে শুরু করলো। আর আমি আপ্লুত নয়নে সেই অপরূপা শোভিত মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের স্বাদ আস্বাদন করে যাচ্ছি। আচ্ছা তবে কি দেবযানী প্রতিদিন এই টেডি টা কে দেখে যেত আর ওমন মিষ্টি হাসিখানা ছুড়ে যেত মুক্ত আকাশ পানে। আর সেটাকে মুঠোতে পুরে নিয়ে আমি নিজের কাছে সাজিয়ে রেখেছি আপন যতনে। যাক একদিক থেকে তো বাঁচা গেল ও আমাকে সকালে খেয়াল করে নি কিংবা চিনতে পারে নি। এটার জন্য কি আমার মনে কষ্ট জমার কথা ছিল বিষাদে বিভোর হয়ে যেতে হতো কিন্তু আমি তো সেসবের কিছুই উপলব্ধি করি নি বরং দেবযানী কে এতো টা কাছ থেকে দেখার আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে চলেছিলাম। আর ওকে আরও বেশি করে জানতে পারলাম এই ছোট্ট একটা মূহুর্ত কে উপলক্ষ করে, যে আমি একটু আগে কান ধরতে রাজি ছিলাম যে আর কখনো দেবযানীর দিকে ফিরেও তাকাবো না সেই আমিই আবার নতুন করে প্রেমে পড়তে লাগলাম দেবযানীর হাসিতে ওর আহ্লাদী আচরণে আরও হয়তো অনেক অজানা কারণে। কোথায় যেন পড়েছিলাম প্রেমে পড়তে কোন কারণ দরকার হয় না আর যেটাতে অনেক কারণ জড়িয়ে থাকে সেখানে ভালোবাসা না নিছক কিছু চাওয়া পাওয়া কিংবা সময়ের সাথে বয়ে যাওয়া অনুভূতির লেনদেন। তাই তো কখনো কোন একটা মূহুর্তে এসে নিজেকে আর সেই সম্পর্কে খুঁজে পাওয়া যায় না যেটুকু থাকে সবটাই শরীরের চাহিদা।
একবার সুযোগ পেয়ে গেলে খুব কম মানুষই সেটার সদ্ব্যবহার করে আর বাকিরা আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে পড়ে। আমিও হয়তো সেটাই হয়ে উঠেছিলাম, যেখানে আগে আমি ভীত সতন্ত্র হয়ে পড়েছিলাম সেখানেই এখন দেবযানীকে দেখার জন্য দিন কে দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছি। কিছু দিন সাথে বিকাশ থাকে আবার কোন দিন আমি একাই চলে যাই কলেজের কাছে দূরে আড়ালে দাড়িয়ে দেবযানীকে এক নজর দেখার অভিলাষে। আমার মনের চাহিদা একটু একটু করে বেড়েই যাচ্ছে আমি অতি সাহসী কিংবা দুঃসাহসী হয়ে উঠছি। আমি হয়তো দেবযানীর পিছু নিতে শুরু করে দিয়ে ছিলাম নিজের অজান্তেই যেটাকে আমার অবচেতন মন ভালোবাসার প্রতি আকর্ষণ বা আমার আত্মিক টান ধরে নিয়েছিল। আজকাল দেবযানী কোন টিউশনে কখন আসে কার সাথে আসে কোন পথে যায় সবটাই আমার নখদর্পনে এসে গিয়েছে। কলেজ আর টিউশনির সময়টা কোন ভাবে কাটিয়ে নিয়ে বাকি সময়ের সবটাই আমি দেবযানীর পেছনে উড়াতে লাগলাম। ক্লাসে স্যার ম্যাডাম কি পড়াচ্ছে সেদিকে আমার আর মনোযোগ থাকে না আর থাকবেই কি করে আমার মস্তিষ্ক সবসময়ই তো সময়ের হিসেব কষে যায় কখন ছুটির ঘন্টা বাজবে আর আমি আমার মনে বেজে চলা প্রেমের ঘন্টায় সুর তুলবো।
আমি হয়তো একটু বেশিই এগিয়ে গিয়েছিলাম আর নিজের দিকটা ভুলে যেতে বসেছিলাম। আর সেটার এফেক্ট পড়তে শুরু করেছিল আমার নিয়মিত জীবনে বিশেষ করে আমার পড়ালেখায়। টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় আমার রেজাল্ট আশানুরূপ হয় নি, ফেল করবো না জানি তবে প্লেসমেন্ট করতে পারে নি। বাসায় কি করে জানাবো সেটা ভাবতে গিয়ে শরীরের ঘাম ছুটে যাচ্ছিলো৷ নোটিশ বোর্ডে রেজাল্ট দেখে আমার গ্রুপের কেউ তো বিশ্বাসই করতে পারে নি যে আমার মার্ক এতো কম আসবে৷ ওদের চোখে হয়তো বিগত দিনগুলোতে আমার বদলে যাওয়া টা তেমন করে চোখে পড়ে নি৷ না পড়েছে একজনের নজরে পড়েছে সেটা আমিও আগেই বুঝতে পেরেছিলাম তাই ওকে এড়িয়ে যাচ্ছিলাম বারবার। আজ ওর মুখের হাবভাব দেখেই বুঝতে পারছি আমার উপর বেজায় নাখোশ হয়ে আছে কিন্তু সবার সামনে কিছু বলছে না৷ তবে আমার মনে আছে স্যার একদিন বলেছিল কালো মেঘে ঢাকা আকাশ যত বেশি শান্ত দেখাবে ঝড় ততো প্রবল আসার শঙ্কা তৈরী করে। সাবধান বানী টা মাথায় রেখে টিফিন টাইম টা পালিয়ে বেড়িয়েছি কোন মতে কিন্তু যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই তো সন্ধ্যে হয়। ক্লাসে ঢোকার সময় পড়লাম তো সোজা ওর সামনেই
ছুটির পর অপেক্ষা করিস, তোর সাথে দরকার আছে।
না.. মানে আমার তো একটু কাজ ছিল। আজ হবে না হয়তো।
তোর ইচ্ছে, দাঁড়ালে দাঁড়াবি না হলে আমি তোর বাসা চিনি ওখানেই দেখাবে। মাঝখানে আন্টি সব জানবে আর কি...
(কড়া ঝাঁজে কথা গুলো শুনিয়ে আমার পথ ছেড়ে ওর বেঞ্চে চলে গেল)
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,178 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
দু-এক জায়গায় বানান ভুল হয়েছে ঠিক করে নিও। আর পরাজিত সৈনিকের যে পংক্তিটা বললে, সেটা অসাধারণ .. মন ছুঁয়ে গেলো। আর সবশেষে as usual বলতেই হবে বরাবরের মতোই ..
আমি হবো উড়নচণ্ডী
এবং খানিক উস্কোখুস্কো
এই জন্মের পারিপাট্য সবার আগে ঘুচিয়ে দেবো
তুমি কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমেষে সবটুকু জল শুষে নেবো
তুমি শুধু আমার হবে দেবযানী।
পরের জন্মে কবি হবো
তোমায় নিয়ে হাজারখানেক গান বাঁধবো,
তোমার অমন ওষ্ঠ নিয়ে
নাকছাবি আর নূপুর নিয়ে
মেলায় মেলায় বাউল হয়ে ঘুরে বেড়াবো
তুমি শুধু আমার হবে দেবযানী।
Posts: 223
Threads: 0
Likes Received: 184 in 140 posts
Likes Given: 1,923
Joined: Nov 2021
Reputation:
9
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
উফফফফফ কি সব লিখছো হে লেখক। তোমার লেখা ভর্তি খাতার পাতা যত উল্টোচ্ছি, পরের পাতায় চোখ বুলিয়ে আরও ডুবে যাচ্ছি অচেনা অজানা ওই মানুষ গুলোর সাথে। কাছে আসা, প্রথম সেই অজানা ভয় লাগা, প্রথম সেই বড়ো হয়ে ওঠা আর একদিন সত্যিই পরিপূর্ণ ভাবে বড়ো হয়ে ওঠা আর জীবনকে চিনতে শেখা মানুষ গুলোর ঠিক ভুল আর মধ্যেকার সম্পর্ক যেভাবে ফুটে উঠছে তা অসাধারণ। ♥️
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
বুক বহুদিন আগেই ফেটে গেছিলো ,
এই পরের পাতা আবার রক্ত ঝরাচ্ছে !
বাঁচতে দেবে না কেউ
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(15-11-2022, 09:25 PM)Bumba_1 Wrote: দু-এক জায়গায় বানান ভুল হয়েছে ঠিক করে নিও। আর পরাজিত সৈনিকের যে পংক্তিটা বললে, সেটা অসাধারণ .. মন ছুঁয়ে গেলো। আর সবশেষে as usual বলতেই হবে বরাবরের মতোই ..
আমি হবো উড়নচণ্ডী
এবং খানিক উস্কোখুস্কো
এই জন্মের পারিপাট্য সবার আগে ঘুচিয়ে দেবো
তুমি কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমেষে সবটুকু জল শুষে নেবো
তুমি শুধু আমার হবে দেবযানী।
পরের জন্মে কবি হবো
তোমায় নিয়ে হাজারখানেক গান বাঁধবো,
তোমার অমন ওষ্ঠ নিয়ে
নাকছাবি আর নূপুর নিয়ে
মেলায় মেলায় বাউল হয়ে ঘুরে বেড়াবো
তুমি শুধু আমার হবে দেবযানী।
ধন্যবাদ দাদা..
না তুমি দেখছি দেবযানীর প্রেমে পড়ে গেছ তাহলে তোমাকে সাবধান করার জন্য একটা স্পয়লার দিয়েই দিই, খুব বেশি হলে আর মাত্র দুটো পর্বেই ওকে পাবে তার পর হাপিশ করে দেব।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(15-11-2022, 09:33 PM)S.K.P Wrote: Lovely update.
আমার লেখায় আপনার প্রথম মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(15-11-2022, 10:27 PM)Baban Wrote: উফফফফফ কি সব লিখছো হে লেখক। তোমার লেখা ভর্তি খাতার পাতা যত উল্টোচ্ছি, পরের পাতায় চোখ বুলিয়ে আরও ডুবে যাচ্ছি অচেনা অজানা ওই মানুষ গুলোর সাথে। কাছে আসা, প্রথম সেই অজানা ভয় লাগা, প্রথম সেই বড়ো হয়ে ওঠা আর একদিন সত্যিই পরিপূর্ণ ভাবে বড়ো হয়ে ওঠা আর জীবনকে চিনতে শেখা মানুষ গুলোর ঠিক ভুল আর মধ্যেকার সম্পর্ক যেভাবে ফুটে উঠছে তা অসাধারণ। ♥️
সবই তোমাদের আশীর্বাদ...
আর বাকিটা খুব কাছের কিছু মানুষের জীবন দর্শন।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(15-11-2022, 10:45 PM)ddey333 Wrote: বুক বহুদিন আগেই ফেটে গেছিলো ,
এই পরের পাতা আবার রক্ত ঝরাচ্ছে !
বাঁচতে দেবে না কেউ
বৌদিকে বলে একটু মলম লাগিয়ে নাও দাদা।
নাকি বৌদি ওসবের কিছু জানে না।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 248
Threads: 0
Likes Received: 195 in 171 posts
Likes Given: 340
Joined: May 2022
Reputation:
10
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(15-11-2022, 11:48 PM)nextpage Wrote: বৌদিকে বলে একটু মলম লাগিয়ে নাও দাদা।
নাকি বৌদি ওসবের কিছু জানে না।
অল্প অল্প জানে !!
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(16-11-2022, 07:17 AM)Jibon Ahmed Wrote: বাহ!! চমৎকার আপডেট দাদা
ধন্যবাদ ভাই...
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
|