Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
(04-11-2022, 07:09 PM)S.K.P Wrote: লাজ-লজ্জার মাথা খেয়েই যৌন সাহিত্য লিখতে হবে। লেখক/লেখিকা সবার জন্যই সমান দৃষ্টি নিয়ে পাঠকগণকে পড়তে হবে।
আমি চেষ্টা করেছি। তোমরা পড়ছো, উৎসাহ দিচ্ছ, এতেই আমি খুশি।
অতসী বন্দোপাধ্যায়
Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
ঘন্টা দুয়েকের ট্রেন যায়নি দেখতে দেখতে কেটে গেল। আসলে ট্রেনে করে যেতে আমার বেশ লাগে, জানালা দিয়ে বাইরের প্রকৃতি দেখার মজাই আলাদা।
স্টেশন থেকে বেরোনোর সাথে সাথেই হোটেলের এজেন্ট, ক্যাব ড্রাইভাররা এগিয়ে এলেন। সাধারণত আমি এদের এড়িয়ে চলি। কিন্তু এইবার তো আর হোটেল বুক করা নেই, তাই একজন হোটেলের এজেন্টের সাথে কথা বললাম। ওনার সাথে কথা বলতে বলতে আরো দুই তিনজনে এগিয়ে এলেন। আমি সবাইকে একই কথা জিজ্ঞাসা করলাম, হোটেল কোথায়, রুম আছে কিনা, রুমের ভাড়া কত, ফ্যাসিলিটি কি কি আছে, ব্রেকফাস্ট ফ্রী কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। সবার কথা শুনতে শুনতে এটা বুঝে গেলাম যে কোনো না কোনো হোটেলে রুম ঠিক পেয়ে যাব। এটা নিয়ে আর চিন্তা করার কোনো কারণ নেই । আমি আসার আগেই রিভিউ পড়ে দু তিনটে হোটেল সিলেক্ট করে নিয়েছিলাম। কাজেই ওনাদের সাথে আর কথা না বাড়িয়ে সামনে এগিয়ে এলাম।
সামনে এগোতেই একজন এসে বললেন, বহিনজি কাহা জানা হ্যায়? আমি বললাম হোটেলে যাব, উনি জিজ্ঞাসা করলেন হোটেলে আগে থেকে ঠিক করা আছে কিনা। জানালাম যে কোনো হোটেল ঠিক করা নেই । উনি খুব খুশি হয়ে বললেন, চলুন আমার গাড়িতে চলুন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম কত ভাড়া, উনি হাজার টাকা চেয়ে বসলেন। হাজার টাকা দিয়ে হোটেলে পৌঁছানোর কোনো মানেই হয় না। দরকার হলে হাজার টাকা বেশি ভাড়া দিয়ে ভালো রুমে থাকবো। অবশেষে একটা অটোওয়ালা সাথে কথা হল, উনি আমাকে আমার পছন্দের হোটেলে দিয়ে যাবেন, 200 টাকা নেবেন। যদি হোটেল পছন্দ না হয় তখন অন্য হোটেল দিয়ে যাবেন, কিন্তু তার জন্য আলাদা করে টাকা দিতে হবে।
যেতে যেতে অটো ড্রাইভার বললেন একটা নতুন হোটেল হয়েছে। আগে ওরা শুধু রেস্টুরেন্ট ছিল এখন থাকার রুম বানিয়েছে। আপনি একবার যেতে পারেন, খাবার খুব ভালো আর রুম পছন্দ না হলে অন্য জায়গায় চলে যাবেন। সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে খিদে খিদে পাচ্ছিল আর খাবার খুব ভালো শুনে মনে হল যাই একবার।
হোটেলটায় ঢোকার মুখেই রেস্টুরেন্ট আর পেছনের দিকে থাকার জায়গা। রেস্টুরেন্ট বাইরেও বসার জায়গা আছে আর ভেতরে এসিতেও বসা যায়।
রেস্টুরেন্ট দেখে খিদে বেড়ে গেল আর অটো ড্রাইভারকে বললাম আগে খেয়ে নি, পরে রুম দেখা যাবে। উনি শুনে বললে যে দেরি হয়ে যাবে, আপনি আগে হোটেল দেখে নিন কিন্তু শেষমেষ রাজি হয়ে গেলেন। ওনাকে বললাম আপনিও আমার সাথে বসে খেয়ে নিন। উনি প্রথমে রাজি হচ্ছিলেন না, দুবার বলতে রাজি হয়ে গেলেন।
খাবার অর্ডার দিয়ে ওনাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে কি কি দেখার জায়গা আছে? কতক্ষণ সময় লাগে অটোতে আর উনি কত ভাড়া নেবেন। ভাড়া উনি ঠিকঠাকই বললেন। মনে মনে ঠিক করে দিয়েছিলাম ওনার অটোতেই যাব, কিন্তু কিছু বলিনি।
আলুর পরোটা খেতে খেতে হঠাৎ খেয়াল করলাম ভদ্রলোক বারবার আমার বুকের দিকে তাকাচ্ছেন। বাইরে বসে গরমে কখন যে উইন্ডচিটারের চেন নামিয়ে দিয়েছি সেটার খেয়াল নেই আর উনি এই সুযোগের পুরো সদ্ব্যবহার করছেন। মাথাটা এত গরম হয়ে গেল যে আর কি বলব। কিছু কিছু লোকের এই একটা দোষ , আপনি তার সাথে যত ভালো ব্যবহারই করুন না কেন, সে ঠিক আপনার বুকের দিকে তাকাবেই।
খাওয়া হয়ে যাওয়ার পরে ওয়েটারকে জিজ্ঞাসা করলাম রুমের জন্য কোথায় কথা বলব। ওয়েটার জানালো যে রেস্টুরেন্টের ক্যাশ কাউন্টারে রুমের জন্য কথা বলতে হয়। যিনি বুকিং দিচ্ছিলেম উনি প্রথমেই জিজ্ঞাসা করলেন সঙ্গে কে আছে। কেন বাবা একটা একা একা মেয়ে কি ঘুরতে পারে না ! আর আমি তো আর বাচ্চা মেয়ে নই, ২৫ বছর বয়স হয়ে গেছে। যাইহোক আমার একা থাকা নিয়ে কোন সমস্যা হলো না আর উনি আমাকে জানালেন রুম আছে। আবার পরের প্রশ্নই ছিল ঘুরতে যাওয়ার জন্য হোটেল থেকে গাড়ি ভাড়া পাওয়া যাবে কিনা। ওনারা বললেন যে হোটেলের গাড়ি আছে, এছাড়াও দরকার হলে ওনারা বাইরে থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবেন। পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা অটো ড্রাইভার যে খুশি হচ্ছেন না বুঝতে পারছি। বেশ হয়েছে, আরো তাকা আমার দিকে।
হোটেলের রুম যেটা দেখালো সেটা খারাপ না। রুমে ঢুকলেই একটা ওয়ারড্রব, পাশে দুটো চেয়ার একটা টেবিল আর একটা কুইন সাইজ বেড। আমার একার জন্য যথেষ্ট। রুমের ভাড়াও একটু কম, হয়তো নতুন খুলেছে বলেই। রুম বুক করে ড্রাইভারকে ২০০ টাকা দিয়ে ছেড়ে দিলাম।
রুমে ফিরে সুমনের কথা মনে পড়ছিল। এইসব রুম বুকিং ওর দায়িত্ব ছিল। এমন একটা ভাব করত যেন বুকিং করা কত সাংঘাতিক কাজ। আর রুমে ঢুকে পড়ে আসল কাজ শুরু করে দিত। সুমনের সাথে উইকেন্ডে বেড়াতে গিয়ে একবার হোটেলে ঢুকে পড়লেই হল। তারপরে বাবুকে ভেতরে ঢুকতে দিতে হবে। এখন এখন তো আর সেসব কিছুই নেই। শেষ কয়েক মাসে জীবন কেমন পাল্টে গেছে।
এইসব চাইপাশ ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ অটো ড্রাইভারটার কথা মনে পড়ল। কিরকম নির্লজ্জের মত তাকাচ্ছিল। বাকি সব মেয়েদের মত আমিও লোকজনের তাকানোর সাথে অভ্যস্ত, কিন্তু এরকম নির্লজ্জের মত কেউ তাকালে একটা অস্বস্তি হয়, রাগও হয়। আমি না হয় এখন উপসী, তোদের তো স্বভাব দোষ।
রেস্ট নিয়ে রেডি হতে একটু দেরী হয়ে গেল। তাড়াতাড়ি রিসিপশনে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম গাড়ি রেডি তো? উনারা বললেন আপনিতো গাড়ির কথা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কিছু তো কনফার্ম করে যান নি। উনারা বললেন গাড়ির ব্যবস্থা ওরা করে দেবেন কিন্তু একটু দেরি হবে। পাশে একটা সদ্য বিবাহিত কাপেল গাড়ির রেট নিয়ে খুব দরদাম করছিল। কাউন্টারের ভদ্রলোক বললেন আপনারা একটা গাড়িতে চলে যান না, রেট একটু কম পড়বে আর তাড়াতাড়ি গাড়িও পেয়ে যাবেন।
রেট নিয়ে আমার কোন সমস্যা ছিল না, আর অন্য কারো সাথে গাড়ি শেয়ার করার ইচ্ছেও ছিল না। কিন্তু পরে ভাবলাম একে তো দেরি হয়ে গেছে, গাড়ি পেতে আরো কত দেরি হবে তার কোন ঠিক নেই। একা একা গেলে সেই লোক কেমন হবে কে জানে, এর চেয়ে ভালো এদের সাথেই যাই।
গাড়িতে আমি আর বউটা পেছনে বসলাম আর বরটা সামনে ড্রাইভারের পাশে বসলেন। ওদের একটাই সমস্যা, একটু পরে পরেই গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলার জন্য নেমে পরে। ড্রাইভার একটু বিরক্ত হচ্ছিলেন কিন্তু আমার ভালই লাগছিল। তাড়াতাড়ি গাড়ি চালিয়ে টুরিস্ট স্পটে পৌঁছে ভিড়ের মধ্যে একশটা ছবি তোলার থেকে, ওরা যে জার্নিটা এনজয় করছে সেটাই ভালো। আমিও ওদের কিছু ছবি তুলে দিলাম।
গন্ডগোল বাঁধলো ফেরার সময়। ঘুরতে এবং খেতে আমাদের বেশ কিছু সময় লেগেছে তাই ফেরার সময় ড্রাইভার একটু স্পিডেই গাড়িটা চালাতে শুরু করল। হঠাৎ বউটা বলে গাড়ি থামাও। আমি ভাবলাম হয়তো আবার ছবি তুলবে, কিন্তু কিছু ভাবার আগেই গাড়ির মধ্যে হরহর করে বমি করে দিল।
আমি ড্রাইভার কে বললাম গাড়িটা দাঁড় করান, উনি একটু রেস্ট নিক, আপনি গাড়ির ভেতরটা একটু পরিষ্কার করে দিন। তারপরে আস্তে আস্তে গাড়ি চালান।
এইসব এইসব করতে করতে প্রায় ১৫-২০ মিনিট চলে গেল। আমি গাড়িতে উঠে দেখলাম ভেতরটা পরিষ্কার হয়েছে বটে কিন্তু বমির গন্ধ বের হচ্ছে। কিছু বললাম না কারণ কিই বা করার আছে। ড্রাইভার আবার গাড়ি স্টার্ট করলেন, স্টার্ট করার সাথে সাথে আবার বমি। এবারও গাড়ির ভেতরে আর কিছুটা আবার আমার উইন্ডচিটারের হাতায় পড়ল।
এইবার ড্রাইভার দেখলাম বেশ রেগে গেলেন। উনি সঙ্গে সঙ্গে হোটেলে ফোন করে বললেন যে প্যাসেঞ্জার শুধু বমি করছে, গাড়ি একদম নোংরা হয়ে গেছে, ফিরতে ফিরতে দেরি হয়ে যাবে। হোটেল থেকে বলল আরেকটা গাড়ি আসছে, বমির ওষুধ দিয়ে আসছে, চিন্তা করার কোন কারণ নেই। পেসেঞ্জাররা রেস্ট নিক, কোনো অসুবিধা হবে না।
আরেকটা গাড়ি আসছে শুনে আমি বেশ খুশি হলাম। বমির গন্ধে আমার নিজেরও অস্বস্তি হচ্ছিল। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন নতুন গাড়ি আসবে। তখন সূর্যাস্ত হচ্ছে, বাইরেটাকে দেখতেও খুব ভালো লাগছিল। বরটাকে দেখলাম খুব আদর করে বউটার পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি হঠাৎ দেখে আমাদের গাড়ির সামনে একটা বাইক এসে থামল। ওনাকে চেনা চেনা লাগছে তারপর মনে পড়ল কাউন্টারে উনি বসে ছিলেন কারো সাথে কথা বলছিলেন। উনি এসে ওষুধ দিলেন তার পরে আমাকে বললেন আপনি বরং আমার সাথে বাইকে চলুন। অচেনা লোকের সাথে বাইকে যাওয়ার কোন ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু গাড়িতে বমির গন্ধ, আবার যে বমি করবে না তারও নিশ্চয়তা দিই। বরটাও বলল , দিদিভাই আপনি কিছু মনে না করলে বাইকে চলে যান। আমাদের জন্য আপনাকে এই বিরম্বনায় পরতে হলো। শেষমেশ ঠিক হলো আমি বাইকেই যাব, গাড়ি আর বাইক একসাথে চলবে এবং গাড়িটাকে বলা হলো খুব আস্তে আস্তে চালাতে।
বাইকের পেছনে উঠে বসলাম। কেমন একটা অদ্ভুত লাগছিল। বাইক চলতে শুরু করল, উনি খুব আস্তে আস্তেই বাইক চালাচ্ছিলেন। কেউই কারো সাথে কথা বলছিলাম না, কথা কি বলবো কেউ তো কাউকে চিনি না।
আমি ওনাকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কি হোটেলের ম্যানেজার? উনি হেসে বললেন না না আমি এই হোটেলের ইনভেস্টার। উইকেন্ডে আসি, এছাড়া আমি জব করি। উনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন আমি কি করি? আমি বললাম আমি এমবিএ শেষ করে জব করছি। উনি বললেন যে উনিও ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করে জোকা থেকে এমবিএ করেছেন। আমিতো জোকা শুনে খুশি হয়ে গেলাম, বললাম আমিও তো জোকা। যাক বেড়াতে এসে জোকার একজন সিনিয়ারের সাথে দেখা হয়ে গেল। উনি বললেন যে আমি কিন্তু তোমার থেকে অনেকটাই সিনিয়ার। কোন ইয়ারে পাস করেছে সেটাও বললেন। আমি মনে মনে হিসাব করলাম, উনি আমার থেকে 16 বছর আগে পাশ করেছেন আর ইঞ্জিনিয়ারিং করতে এক বছর বেশি লাগে। উনি আমার থেকে প্রায় ১৭-১৮ বছরের বয়সে বড়।
ওনাকে জিজ্ঞাসা করলাম স্যার আপনার নাম কি। উনি বললেন আমার নাম রাজেশ আর এতক্ষণ যখন স্যার বলে ডাকো নি, তখন আর স্যার বলতে হবে না। তুমি তো বাঙালি, তুমি আমাকে রাজেশদা বলেই ডাকো। আমি জিজ্ঞাসা করলাম আমি বাঙালি বুঝলেন কি করে? আমার হিন্দি উচ্চারণ শুনে? রাজেশদা হেসে বলল তোমার হিন্দি উচ্চারণ বেশ ভালো। প্রশংসা কার না ভালো লাগে, রাজেশদা বললোও বেশ বিশ্বাসযোগ্য করে।
অবশেষে আমরা হোটেলে পৌঁছলাম। ওদের গাড়িটাও আমাদের সাথে সাথেই পৌঁছল। বউটাকে দেখে মনে হল একটু ভালো আছে। ওরা ওদের ঘরে চলে গেল। আমি রাজেশদা কে ধন্যবাদ জানালাম আর হ্যান্ডসেক করলাম। রাজেশদা বলল, অতসী ইভিনিং স্ন্যাক্স তুমি ঘরেও খেতে পারো বা বাইরে এসেও খেতে পারো। আমি বললাম ঠিক আছে। আমি ঘরে গিয়ে একটু ফ্রেশ হয়ে অর্ডার করছি। রাজেশ দা বলল অর্ডার করে দিও, খাবার রেডি হতে হতে কিন্তু আধঘন্টা লাগিয়ে দেবে। আমি বললাম ঠিক আছে, আমি তাড়াতাড়ি অর্ডার করে দেব। রাজেশদা তো তখনও আমার হাত ধরে আছে। আমি একটু হেসে এবার হাতটা ছাড়িয়ে দিলাম, রাজেশদাও একটু হাসলো। আমি রাজেশদাকে টাটা বলে খুশি মনে নিজের রুমে চলে এলাম।
রাজেশদা বেশ স্মার্ট। চাকরি করে সাথে একটা ব্যবসা খুলেছে , কথাবার্তাও খুব ভালো। আমার ডান হাতটা তো এখনো গরম হয়ে আছে।
অতসী বন্দোপাধ্যায়
The following 11 users Like 123@321's post:11 users Like 123@321's post
• ddey333, kapil1989, radio-kolkata, Rakimul, ray.rowdy, S.K.P, Sanjay Sen, suktara, Tanvirapu, WrickSarkar2020, জীবন পিয়াসি
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
লেখার ছন্দ খুব সুন্দর এবং সাবলীল।
দুজনেই তাহলে ছাত্র জোকার
মগজে কুটকুট উৎকণ্ঠার পোকার !!
Posts: 2,729
Threads: 0
Likes Received: 1,204 in 1,060 posts
Likes Given: 43
Joined: May 2019
Reputation:
26
Posts: 223
Threads: 0
Likes Received: 184 in 140 posts
Likes Given: 1,923
Joined: Nov 2021
Reputation:
9
সুন্দর আপডেট।
শুধু হাত গরম হলেই হবে?
Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
রুমে ঢুকেই প্রথমে স্নান করলাম। শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে মনটা বেশ ফুরফুরে লাগছিল। বমি পর্ব বাদ দিয়ে আজকের ঘোরাটা বেশ ভালই হয়েছে। এই জায়গাটা সত্যিই সুন্দর, আর আমার একটা ছুটির দরকার ছিল।
স্নানের পর খাবার অর্ডার করতে গিয়ে দেখি রুমের ইন্টারকম কাজ করছে না। তার মানে তো খাবার অর্ডার দিতে বাইরে যেতে হবে। ইস রুমে ঢোকার আগে যদি খাবারটা অর্ডার দিয়ে দিতাম তাহলে এতক্ষণে খাবার রেডি হয়ে যেত। নিজের বোকামিতে নিজের উপরই রাগ হলো। কিন্তু কি আর করা যাবে, তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে খাবার জন্য বাইরে চলে এলাম।
বাইরে বেরিয়ে দেখি রেস্টুরেন্টে বেশ ভালো ভিড়। আর রেস্টুরেন্টের কোণের দিকের একটা টেবিলে রাজেশদা একা একা বসে আছে। আমি রাজেশদার টেবিলের পাশে গিয়ে বললাম, রাজেশ দা খুব খিদে পেয়েছে। খাবার অর্ডার এখনো করা হয়নি। তাড়াতাড়ি কি হবে গো?
রাজেশ দা বলল আমি চিকেন পকোড়া অর্ডার করেছি, আমারটা এক্ষুনি এসে যাবে। দুজনে মিলে খেতে শুরু করি আর তুমি কিছু একটা অর্ডার করে দাও। পকোড়া খেতে খেতে ওটা এসে যাবে।
খিদেও পেয়েছিল তাই আর কিছু না ভেবে রাজেশদার পাশে গিয়ে বসে পড়লাম। পকোড়া খেতে খেতে রাজেশদা জিজ্ঞাসা করল, অতসী বিয়ার খাবে? আমিও দিব্যি বলে দিলাম যে আমি বিয়ার খাই না। রাজেশদা আমার দিকে তাকিয়ে মিচকি হেসে বলে সত্যি? আমিও বললাম কেন বিশ্বাস হচ্ছে না? রাজেশদা বলল একদম না, কাঁচা ঢপ মারছো। আমি হেসে বল্লাম আসলে সত্যি বলতে কি, খুব অল্প কিছু পছন্দের লোকের সাথে বসলেই খাই। না হলে খাই না। রাজেশদা বলল আমিও তাই। লোকজন পছন্দ না হলে দরকার ছাড়া কথাই বলি না তো বিয়ার খাওয়া। এই বলে একটা ওয়েটারকে ডেকে বললো দুটো বিয়ার দিয়ে যেতে। আমি হেসে ফেললাম কিন্তু আর না করলাম না। বাইরে ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে, উইন্ডচিটারে বউটা বমি করে দেওয়ার পরে সেটা আর পরিনি, একটু বিয়ার ভালই লাগবে।
বিয়ার খেতে খেতে রাজেশ দা জিজ্ঞাসা করল ,অতসী হঠাৎ একা একা ঘুরতে বেরিয়েছো, কি ব্যাপার? তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে না যে তুমি একা একা ঘুরে বেড়াও। আমি এই প্রসঙ্গে কোনো কিছু বলতে আগ্রহী ছিলাম না। তাই শুধু বললাম মুম্বাইতে নতুন চাকরি নিয়ে এসেছি, ভাবলাম একটু আশেপাশের জায়গাগুলো ঘুরে দেখি। রাজেশদা যাতে এই ব্যাপারে আর কিছু জিজ্ঞাসা না করে তাই আমি বললাম রাজেশ দা, তুমি হঠাৎ এই হোটেলে কি করে আর কেন ইনভেস্ট করলে? রাজেশ দা বলল ২০০৮ সালের রেসেশনের সময় রাজেশ দা অনসাইটে পোস্টিং ছিল। রেসেশনের সময় প্রচুর লোকের চাকরি চলে যায় আর রাজেশদাদের আবার দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। পরপর দু'বছর কোনো ইনক্রিমেন্ট পায়নি। সেই থেকেই ঠিক করে নিয়েছিল যে চাকরির বাইরে কিছু একটা উপার্জনের জায়গা তৈরি করতেই হবে। তারপর থেকেই এই বিজনেস ওই বিজনেস করতে করতে অবশেষে এই হোটেল। রেস্টুরেন্ট আগে থেকেই ছিল আর পেছনের দিকটা ফাঁকাই ছিল। এই জমিতে যে রুম হয়েছে তার সব খরচটা দিয়েছে রাজেশদা দিয়েছে। পার্টনারশিপের ব্যবসা, প্রফিট শেয়ারিং হয়।
আমি বললাম নতুন করেই যখন ঘর করেছো, আরো কিছু ফ্যাসিলিটি দিতে পারতে। বাথরুমে হেয়ার ড্রায়ার নেই, তোমার রুমের ইন্টারকম কাজ করে না, এইসব কেন? রাজেশ দা বললে ইন্টারকম দিব্যি কাজ করে, হয়তো তারটা খোলা আছে, পেছনে গুঁজে দিলেই কাজ করতো। আমি বলে বসলাম পিছনে গোঁজা কি আমার কাজ নাকি? রাজেশ দা মিচকি হেসে বলল না অতসী, ওটা আমার কাজ, আমি রাতে তোমার রুমে গিয়ে গুঁজে দেবো । আমি বুঝতে পারলাম কি বলেছে, কিন্তু কোন উত্তর দিলাম না।
আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে রাজেশ দা বলল, তোমার ক্যারিয়ার প্ল্যান কি? আমি বললাম কোন প্ল্যান নেই, ছোটবেলায় পড়তে হবে তাই পড়েছি। গ্রাজুয়েশন করতে করতে বুঝতে পারলাম যে এমবিএ করলে ভালো প্রসপেক্ট আছে, এমবিএ করে নিলাম। অংকে আরেকটু ভালো হলে হয়তো রিসার্চে যেতাম, কিন্তু মনে হলো যে এমবিএ টাই সহজ হবে। রাজেশদা নাকি অঙ্কে ভালই ছিল, নিজের ইচ্ছেও ছিল যে অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করবে। কিন্তু ক্লাস টুয়েলভে প্রেম করতে শুরু করে, আর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে তাড়াতাড়ি চাকরি পেয়ে যাবে। সেই জন্য অংকে অনার্স না পড়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়ে যায়।
আমি হেসে বললাম, আরব্বাস ক্লাস টুয়েলভ থেকে প্রেম করছো! রাজেশ দা হেসে বললো ক্লাস ৮ থেকে করছি, ১২ এর টা সিরিয়াস। আর আমাকে দুম করে জিজ্ঞাসা করে বসলো তুমি কবে থেকে করছ? আমিও কিছু না ভেবে উত্তর দিয়ে দিলাম কলেজ থেকে। এক মুহূর্ত থেমে জিজ্ঞাসা করল সদ্য ব্রেকআপ হয়েছে? আমি বললাম না, বেশ কিছু মাস হয়ে গেছে।
রাজেশ দা আমাকে বলল যে রাজেশ দা বিয়ার রিপিট করবে, আমি বললাম আমিও।
গ্লাসে বিয়ার ঢালতে ঢালতে ভাবছিলাম যে এই লোকটাকে ঘন্টাখানেক আগেও চিনতাম না, এখন বসে দিব্যি কেমন গল্প করছি। বিয়ার খেতে খেতে খেয়াল করলাম, রাজেশদা আমার সাথে গল্প করছে বটে কিন্তু আশেপাশের সব টেবিলের দিকে নজর রাখছে। রাজেশদা কে জিজ্ঞাসা করলাম রাজেশদা, তুমি খেয়াল করছো না সব টেবিলে খাবার ঠিকমত আসছে কিনা? রাজেশ দা বলল খাবার ঠিক মতো আসছে কিনা সেটা তো দেখছি না , শুধু খেয়াল রাখছি লোকজন খুশি কিনা। তারপরে আবার দিকে তাকিয়ে, একটা ফিচেল হাসি হেসে জিজ্ঞাসা করল অতসী তুমি খুশি তো? আমি কোন উত্তর না দিয়ে হেসে দিলাম।
বিয়ার খেতে খেতে রাজেশদা কে বললাম রাজেশ দা, আরেকটা সাইডডিশ কিছু লাগবে তো। রাজেশদা বলল, বেবি এবার তুমি ডিনারের অর্ডার দিয়ে দাও। আমি রাজেশদা কে বললাম, এই তুমি আমাকে বেবি বলে ডাকলে কেন? রাজেশদা বলল, আরে তুমি তো একটা ছোট্ট বেবির মতো , বলে একটা হাত দিয়ে আমার গাল দুটোকে টিপে দিল।
আমি অল্প রেগেই বললাম, তুই বড্ড অসভ্য রাজেশদা । তোমার মনে হয় নেশা হয়ে গেছে। রাজেশদা হাহা করে হেসে বলল, দু বোতল বিয়ার খেয়ে কারো আবার নেশা হয় নাকি। তারপরে আমার দিকে তাকিয়ে রাজেশ দা বলল, তুমি সত্যি খুব সুন্দর অতসী। তোমার সাথে লাস ভেগাসেও যাওয়া যায়, আবার লাইব্রেরীতেও বসা যায়। এরকম অদ্ভুত প্রশংসা কেউ কখনো আমার করেনি। আমি কথা ঘোরানোর জন্য বললাম, না না আমি আর ডিনার করবো না তুমি কিছু অর্ডার দিয়ে দাও।
আমি মনে মনে ভাবছি যে লোকটা কি চায়। আমার থেকে এতটা বড়, এমনিতে ভালো ব্যবহার করছে কিন্তু আবার গালটাও টিপে দিল। ঘরের ইন্টারকম নিয়ে এমন একটা মন্তব্য করল যার অন্য রকম মানেও হতে পারে। অথচ লোকটার উপর আমার যতটা বিরক্তি বা রাগ হওয়া উচিত, সেটা তো হচ্ছে না। আমি ঠিক করলাম আমি আর বিয়ার খাব না। আরেকটা কিছু খাবার এলে সেটা খেয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়বো।।
এই সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে দেখি সেই সদ্য বিবাহিত যুগল খেতে এসেছে। আমি ডাকতে যাব রাজেশ দা ফিসফিস করে বলল ডেকো না। আমি রাজেশ দা কে ইশারায় জিজ্ঞাসা করলাম কেন? রাজেশ দা মিচকি হেসে বলল ওরা হানিমুন কাপেল, ওদেরকে একটু স্পেস দাও। তাও আমি হাত তুলে ডাকলাম। দেখলাম বরটা একাই এগিয়ে এলো। রাজেশদাই জিজ্ঞাসা করল যে বউটা কেমন আছে, আর কোন সমস্যা হয়েছে কিনা? বরটা বলল সব ঠিক আছে। তারপরে আমার দিকে তাকিয়ে বলে বিয়ার খাচ্ছেন? আপনাদের দুজনের তো ভালো ফ্রেন্ডশিপ হয়ে গেছে দেখছি। আমি কিছু একটা বাজে উত্তর দিতে যাব তখন রাজেশ দা একটা হাত দিয়ে আমার থাই চেপে ধরল। আমি বুঝলাম কিছু বলতে বারণ করছে।
বরটা চলে গেলে আমি রাজেশদা কে বললাম যতসব ফালতু লোকজন, কিছু একটা উত্তর দিয়ে দেয়া উচিত ছিল। রাজেশদা বলল অতসী, এই জন্যই তো তোমাকে আমি ওদেরকে ডাকতে না বলেছিলাম। আমি বললাম যে কি করে বুঝবো একটা ফালতু লোক। কি যে ভাবছে আমাদের সম্পর্কে কে জানে। রাজেশ দা খুব একটা নিষ্পাপ মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার কি মনে হয় অতসী, ওরা কি ভাবছে আমাদের সম্পর্কে? লজ্জায় আমার মুখ লাল হয়ে গেল, আমি কিছু উত্তর দিতে পারলাম না। দুষ্টু রাজেশটা ঠোঁটের কোণায় অল্প হাসি নিয়ে স্বাভাবিক মুখ করে বসে রইল।
অতসী বন্দোপাধ্যায়
Posts: 141
Threads: 1
Likes Received: 136 in 90 posts
Likes Given: 46
Joined: Aug 2020
Reputation:
9
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
চমৎকার হচ্ছে !!
লাইক এবং রেপু ...
Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
(06-11-2022, 06:24 AM)কুয়াশা Wrote: অসাধারণ আপডেট
অনেক ধন্যবাদ, এভাবেই উৎসাহিত করুন।
অতসী বন্দোপাধ্যায়
•
Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(05-11-2022, 11:00 PM)S.K.P Wrote: সুন্দর আপডেট।
শুধু হাত গরম হলেই হবে?
Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
06-11-2022, 01:30 PM
(This post was last modified: 06-11-2022, 01:30 PM by 123@321. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
অতসী বন্দোপাধ্যায়
Posts: 1,237
Threads: 2
Likes Received: 2,210 in 1,011 posts
Likes Given: 1,613
Joined: Jul 2021
Reputation:
654
খুব সুন্দর ভাবে এগোচ্ছে গল্পটি , আপনার এই গল্পের যাত্রাপথে সামান্য কিছু লাইক আর রেপু রইল আপনার জন্য। এই ভাবেই চলতে থাকুক।
Posts: 283
Threads: 0
Likes Received: 91 in 84 posts
Likes Given: 12
Joined: Aug 2022
Reputation:
1
সম্পুর্ন আলাদা করে লিখা, লেখকের জন্য শুভকামনা।
Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
(06-11-2022, 03:52 PM)Sanjay Sen Wrote: খুব সুন্দর ভাবে এগোচ্ছে গল্পটি , আপনার এই গল্পের যাত্রাপথে সামান্য কিছু লাইক আর রেপু রইল আপনার জন্য। এই ভাবেই চলতে থাকুক।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
অতসী বন্দোপাধ্যায়
•
Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
(06-11-2022, 04:30 PM)The-Devil Wrote: সম্পুর্ন আলাদা করে লিখা, লেখকের জন্য শুভকামনা।
অনেক ধন্যবাদ
অতসী বন্দোপাধ্যায়
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(06-11-2022, 01:30 PM)123@321 Wrote: ধ্যাৎ
খুব মজা না, সামনে পেলে একটা রাম চিমটি কাটতাম।
এই না খবরদার একদম , খুব লাগবে কিন্তু ...
মেয়েদের এমনিতেই লম্বা লম্বা নখ হয় !!
Posts: 223
Threads: 0
Likes Received: 184 in 140 posts
Likes Given: 1,923
Joined: Nov 2021
Reputation:
9
সুন্দর ভাবে এগোচ্ছে গল্প। বুঝতে পারলাম গরম হতে আরো সময় লাগবে। লাইক রেপু+।
Posts: 169
Threads: 3
Likes Received: 407 in 132 posts
Likes Given: 110
Joined: Jul 2019
Reputation:
103
(06-11-2022, 09:32 PM)S.K.P Wrote: সুন্দর ভাবে এগোচ্ছে গল্প। বুঝতে পারলাম গরম হতে আরো সময় লাগবে। লাইক রেপু+।
থ্যাঙ্ক ইউ, থ্যাঙ্ক ইউ
অতসী বন্দোপাধ্যায়
•
Posts: 2,729
Threads: 0
Likes Received: 1,204 in 1,060 posts
Likes Given: 43
Joined: May 2019
Reputation:
26
•
|