22-10-2022, 03:08 PM
এই পর্বটা ভালো লাগলো।
Romance ছিন্নমূল ঃ কামদেব
|
22-10-2022, 03:08 PM
এই পর্বটা ভালো লাগলো।
22-10-2022, 05:57 PM
(21-10-2022, 06:14 PM)kumdev Wrote: দরজার সামনে দাড়াতে দরজা খুলে গেল।সামনে হাসি মুখে লাজবন্তী।উন্নত বক্ষ গুরু নিতম্ব, বয়স অনুপাতে শারীরি গড়ণ অনেক পরিণত।লাজুর সঙ্গে স্টাডিতে চলে গেল। যাক পানু দেখে শেষ পর্যন্ত মনুর সুকুমার বৃত্তি জেগে উঠছে একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও
23-10-2022, 12:39 AM
Nice update
23-10-2022, 01:29 AM
আপনার লেখা পড়লে মন ভরে না। বার বার মনে হয় সব যদি এক সাথে পড়তে পারতাম! ইসস কি অসাধারন লেখা
25-10-2022, 03:44 PM
আপডেট চাই ।
25-10-2022, 06:23 PM
(24-10-2022, 12:12 PM)Boti babu Wrote: Wish you all a happy diwali
25-10-2022, 10:45 PM
26-10-2022, 06:15 PM
চতুস্ত্রিংশৎ অধ্যায়
সকালে বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা তারপর স্নান করে ভাত খেয়ে কলেজ যাওয়া সপ্তাহে তিন দিন পড়াতে যাওয়া রাতে ছাদে গিয়ে ঘণ্টা পাচেক পড়াশোনা।কলেজে নন্দিতা আয়ূষীর সঙ্গে দেখা হয় কথাও হয়।মাসের পর মাস কেটে যায়।দেখতে দেখতে পরীক্ষার সময় হয়ে এল।পরীক্ষাটা মিটলে মাকে ফেলে এখানে থাকতে হবে না।সেই গোপালপুর পুরানো বন্ধু বন্ধব।লাজোকে পড়ানোও শেষ।অবশ্য যেভাবে বাড়াবাড়ি শুরু করেছে বেশিদিন চালাতে পারবে মনে হয় না।একদিন বলছিল স্যার আপনার নম্বরটা দিন। তার কোনো নম্বর নেই শুনে অবাক হয়েছিল।আজ ক্লাসে কেকেসির ক্লাসে একটা ঘটনা ঘটেছে।উনি পড়াতে পড়াতে বারবার আমাকে দেখছিলেন।ঘণ্টা পড়ার পর আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন,বাবা কি করেন? স্যার আমার বাবা নেই,এক সময় বাংলাদেশে অধ্যাপনা করতেন। আরটিকেলটা তুমি নিজে লিখেছো? হ্যা স্যার। লেখার স্টাইলটা আমার পছন্দ হয়েছে।তোমার ভবিষ্যতের ইচ্ছে কি? দ্বিধা জড়িত গলায় বললাম,টিচিং লাইনে যাওয়ার ইচ্ছে। ভেরি গুড। ক্লাস থেকে বাইরে বেরোতে আয়ূষী বলল,এই নন্দিতা শুনেছিস কেকেসি ওকে কি বলেছেন? হঠাৎ নজরে পড়ে গেটের বাইরে ফুটপাথে ম্যাডাম শেখোয়াত।এখানে উনি কেন?আমাকেই খুজছেন নাতো?দ্রুত বেরিয়ে এলাম।ম্যাডাম হাফাতে হাফাতে বললেন,আভি ঘর চলা যাও। ঘর চলা যাও মানে ঘরে আবার কি হল? তুমার গ্রাম থেকে বিশ্বাসবাবু ফোন করেছিল তোমার মম অসুস্থ। কাকু ফোন করে বলেছেন ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আমার হাত-পা অবশ হয়ে এল। ম্যাডাম আমার হাত থেকে বইখাতা নিয়ে বললেন,শোচতে কিউ টিরেন পাকাড়কে এখুনি চলে যাও। দ্রুত শিয়ালদা স্টেশনের দিকে হাটতে শুরু করলাম।কখন ফোন করেছিলেন কাকু ঠিক কি বলেছেন জিজ্ঞেস করা হল না।ট্রেনে চেপে বসে মনে মনে ভগবানকে ডাকি। বারবার চোখের সামনে মায়ের ক্লান্ত মুখটা ভেসে ওঠে।জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি।একলা ঘরে খাটে শুয়ে আছে মা।দৃশ্যটা চোখের উপর ভেসে উঠতে গণ্ড বেয়ে গড়িয়ে পড়ে জল।সামনের আসনে বসা এক বয়স্ক দম্পতি অবাক হয়ে সুখকে দেখতে থাকেন।বাইরে থেকে দৃষ্টি ভিতরে আনতে বয়স্কা মহিলার সঙ্গে চোখাচুখি হতে জিজ্ঞেস করলেন,তুমি কাদছো কেন বাবা? মহিলার গলায় মমতার স্পর্শ পেয়ে ফুপিয়ে কেদে উথল সুখ। কি হয়েছে বাবা? চোখের জল মুছে বলল,আমার মা অসুস্থ। কি হয়েছে মায়ের? আমি বলতে পারবো না। ডাক্তার দেখাও নি? আণ্টি আমি পড়াশুনার জন্য কলকাতায় থাকি।খবর পেয়ে বাড়ী ফিরছি। আহা! এতে কান্নার কি আছে।অত চিন্তা করোনা তোমার মা ভাল হয়ে যাবেন। আণ্টি আমার মা ছাড়া কেউ নেই। ভাগ্যবতী মা,অসুস্থ শুনে ছেলে কাদছে মায়ের জন্য।মহিলার নিজের কথা মনে পড়ল।তাদের একমাত্র সন্তান বিয়ের পরে বউকে নিয়ে আলাদা হয়ে গেল।মায়ের কথা তার মনেও পড়ে না।তিনি তো জীবনের শেষপ্রান্তে চলে এসেছেন।বউ নিয়ে ছেলে যদি সুখে থাকে ভাল। শোনো বাবা শরীর থাকলে অসুখ বিসুখ থাকে।বাড়ি যাও ডাক্তার দেখাও দেখবে তোমার মা ভাল হয়ে যাবেন।অত ভেঙ্গে পড়লে চলে।তোমার মা ছাড়া কেউ নেই।তোমার মায়েরও তুমি ছাড়া কেউ নেই।মাথার উপর ভগবান আছে--।চোখ বুজে আছে দেখে মহিলা আর কিছু বললেন না।মহিলার স্বামী বললেন,অত কথা বলছো কেন? বলি কি সাধে।তুমি ওসব বুঝবে না। ট্রেন নৈহাটি পেরিয়ে গেল।সুখ ঘুমিয়ে পড়েছে।রাতে ঘুমায় না দিনে ঘুম পেয়ে যায়।মহিলা ভাবতে থাকেন,ছেলে চলে যাওয়ায় দুঃখ পেলেও একটা ব্যাপার তাকে বড় আহত করেছে।যাবার আগে তার অভিযোগ মা নাকি তার বউকে পীড়ণ করতো।নিজের ছেলের মুখে এমন অভিযোগ শুনতে হবে কল্পনাও করেন নি।বউমা তার মেয়ের মতো।হয়তো কখনো শাসনের সুরে কথা বলেছেন,নিজের মেয়ে থাকলেও করতেন।একে পীড়ণ বলে?পেটের সন্তানের মুখে এমন কথা শুনতে কোন মায়ের ভাল লাগে।একটু পরেই রাণাঘাট নামার জন্য প্রস্তুত হতে থাকেন। সুখর দিকে নজর পড়তে মনে হল ছেলেটি বোধ হয় ঘুমিয়ে পড়েছে।গায়ে ঠেলা দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,তুমি কোথায় নামবে? উম-ম।চোখ মেলে তাকায় সুখ। কোথায় যাবে? আমি রাণাঘাটে নেমে যাব। আমরাও রাণাঘাট নামবো। রাণাঘাট এসে গেছে!চমকে ওঠে সুখ। আসেনি এখুনি আসবে।না ডাকলে তো মুর্শিদাবাদ চলে যেতে। রাণাঘাট আসতে ওরা নেমে পড়ল।সুখকে আবার ট্রেন ধরতে হবে।মায়ের কথা মনে পড়তে আবার চঞ্চল হয় মন।আণ্টি বলছিলেন ডাক্তার দেখালে ঠিক হয়ে যাবে।ভাবছে কাকুর কাছে টাকা ধার চাইবে।ডাক্তার দেখাবার খরচা আছে। বেলা গড়াতে গড়াতে সূর্য হেলে পড়ে পশ্চিমে।কখন গোপাল নগর পৌছে মায়ের সঙ্গে মিলিত হবে সেই চিন্তায় অস্থির মন।গিরিদি মায়ের সঙ্গে গল্প করতে আসতো।গিরিদি কি মাকে একটু দেখাশোনা করবে না?সুবীমামা কি খবর পেয়েছে?মেসে যখন ফোন করেছেন কাকু তিনি নিশ্চয়ই কিছু না কিছু করবেন।এইসব ভাবতে ভাবতে ট্রেন গোপালনগরে ঢুকলো। স্টেশন থেকে বেরিয়ে দ্রুত হাটতে থাকে।বাজার পেরোতে যাবে মনে হল কে যেন তার নাম ধরে ডাকছে।ফিরে দেখল সিধু।কাছে এসে বলল,তুই কলকাতা থেকে আসছিস? হ্যা কেন? শুনেছিস মাসীমার কথা? সেই জন্যই তো আজ চলে এলাম। তা হলে ওদিকে কোথায় যাচ্ছিস?হাসপাতাল যাবি না? মাকে কি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে? এদিকটা তো মনে আসেনি।সুখ বলল,মা হাসপাতালে তার মানে বাড়ি ফাকা? কোনো চিন্তা করিস না কেস এখন কমরেড খোকনদার হাতে। খোকন মানে কাতান খোকন? কি হচ্ছে কি কেউ শুনলে শালা ঝামেলা হয়ে যাবে।হিসিয়ে উঠল সিধু। কাকু কিছু করেনি? কে কাকু? কাকু মানে দেবেন বিশ্বাস। হ্যা উনিও হাসপাতালে গেছিলেন।তুই হাসপাতাল যাবি?দাড়া দোকান থেকে সাইকেলটা নিয়ে আসি। সত্যি মানুষ চেনা অত সহজ নয়।এই সিধুর সঙ্গে পাঞ্চালির জন্য গোলমাল হয়েছিল।পাঞ্চালির দিকে ওর নজর ছিল পাত্তা না পেয়ে ওকে নানাভাবে ডিস্টার্ব করত।ওকে বলেছিল একটি থাপ্পড়ে গালে পঞ্চপাণ্ডবের ছাপ লাগিয়ে দেব। এই পিছনে ওঠ।সাইকেল নিয়ে এসে সিধু বলল। দোকান ছেড়ে চলে এলি? বাবা আছে। মিনিট পনেরো-কুড়ি পর আমরা হাসপাতালে পৌছালাম।বুকের মধ্যে ঢিপ ঢিপ করছে মাকে কেমন দেখব।ঢুকতে যাবো দারোয়ান পথ আটকে বলল,ভিজিটরস আউয়ারস খতম। পাশে দেখলাম সিধু নেই।কি করি এত কষ্ট করে এসে মাকে দেখতে পাব না।এক্টু পরেই সিধু এল সঙ্গে খোকনদা। তুমি কলকাতা থেকে এলে? হ্যা মাকে একবার দেখার ব্যবস্থা করে দিন। এখন তো আইসিতে আছে।দূর থেকে দেখে চলে আসবে। দারোয়ানজী ছোড় দিজিয়ে এক নজর দেখে চলে আসবে। বাইরে সাইকেল রেখে সিধুর সঙ্গে উপরে উঠে গেলাম।একটা ঘরের কাছে নিয়ে কাচের ভিতর দিয়ে দেখলাম,মা শুয়ে আছে।মুখে মাস্কের সঙ্গে নল লাগানো।বুঝলাম স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।ভাল করে লক্ষ্য করি মায়ের বুকটা ওঠা নামা করছে আশ্বস্থ হলাম।কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে আমরা নীচে নেমে এলাম। খোকনদা বলল,দেখা হল?তুমি এসেছো ভাল হয়েছে।কাল এমআরআই হবে চার হাজার খরচা আছে।সকাল নটার মধ্যে চলে এসো। কিন্তু অত টাকা? তোমাকে চিন্তা করতে হবে না।তোমার মামা কি নাম আছে? সুবীর রায়। উনি দেবেন টাকা। খোকনদা আপনি যা করেছেন আমি চির ঋণী হয়ে থাকব। কেন করব না?মা আছে না।দেখ ভাই আমি তুমাদের মত শিক্ষিত নাই।তুমি দাঁড়িয়ে আছো কোথায়? মাটিতে। ধরিত্রি তোমাকে ধরে আছে।মা হচ্ছে ধরিত্রী।মা কি জিনিস কেউ না জানুক খোকন মণ্ডল জানে।মার সঙ্গে যে বেইমানী করবে জানবে খোকন মণ্ডল তার পহেলা দুষমন।যাও এখন বাড়ী যাও।হাসপাতালে হলে টাকা লাগতো না বাইরে থেকে করাতে হবে। চোখের জল আড়াল করতে দ্রুত সেখান থেকে অন্যত্র চলে গেলাম।
26-10-2022, 06:40 PM
মন টা ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো,চালিয়ে যান ভাই কি সাবলিল লেখা
26-10-2022, 07:09 PM
উৎসবের আলোড়ন এখনো শেষ হয়নি , এখনো শোনা যাচ্ছে বাজির আওয়াজ চারদিক থেকে ...
তার মধ্যে এরকম একটা আপডেট জানি এখানে ব্যক্তিগত কথা বলা উচিত নয় , কিন্তু না বলে থাকতে পারলাম না ... হয়তো শুধুই একটা coincidence ... আমার মা ও গত দুই দিন ধরে হসপিটালে আছে ,সেলিব্রাল এটাক আমি দিল্লিতে , যেতে পারিনি এখনো নানা কারণে ...
26-10-2022, 09:22 PM
মন খারাপ করা আপডেট ।
রেপু দিলাম । সাথে আছি ।
26-10-2022, 09:25 PM
আজকের পর্ব পরে অনেক আগের কিছু স্মৃতি মনে পড়েগেল সেই সাথে চোখের জল চলে এসেছে। লাইক রেপু এডেড দাদা।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
28-10-2022, 06:35 PM
28-10-2022, 10:04 PM
(This post was last modified: 28-10-2022, 10:04 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পঞ্চত্রিংশৎ অধ্যায়
সিধু সাইকেল চালাচ্ছে আমি পিছনে বসে।খোকনদা এখন আর মাংসের দোকানে বসে না।কর্মচারী দিয়ে দোকান চালায়।এখন একেবারে বদলে গেছে।সিধু বকে যাচ্ছে আমি কোনো কথা বলছি না।মায়ের সঙ্গে দেখা হলেও এভাবে দেখব ভাবিনি।প্রতিটা দিন যেন এক-একটা বইয়ের পাতা।একটা পৃষ্ঠা পড়ি আর জীবন সম্পর্কে কতকিছু জানতে পারি।বরেনদা একটা কবিতা শুনিয়েছিলেন নদী পাহাড় সাগর সমগ্র প্রকৃতি আমাদের শিক্ষা দেয়।কেউ গ্রহণ করতে পারে কেউ পারে না।খোকনদা মাকে ধরিত্রীর সঙ্গে তুলনা করেছে।সত্যি শেখার শেষ নেই। সিধুর দোকানের কাছে আসতে আমি নেমে পড়ি।বললাম,এটুকু আমি হেটে চলে যাব।তোকে আর যেতে হবে না। কাল সকাল নটার মধ্যে চলে যাস। বাসায় ফিরে আবার রান্না করা তার চেয়ে বরং বাজার থেকে রুটি তরকারি কিনে নিয়ে যাই।গোটা চারেক রুটি আর আলুর দম কিনে বাসায় ফিরে আসলাম।দরজা খুলে ঘরে ঢূকে পোশাক বদলে খাটে শুয়ে পড়লাম।হাসপাতালের দৃশ্যটা ভেসে উঠল।স্বাভাবিকভাবে খেতে পারছে না তাই স্যালাইন দিতে হয়েছে।ভূপেন শেঠের বাড়ী রান্না করতে করতে মা জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়।তখন চিৎকার চেচামেচি হতে লোক জড়ো হয়।খোকনদা খবর পেয়ে মাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।চিকিৎসায় মায়ের জ্ঞান ফিরলেও পুরোপুরি সুস্থ হন নি। এই বয়সে পরিশ্রমের ধকল নিতে পারেনি।নিজেকে অপরাধী মনে হতে লাগল।আমার জন্যই তো মায়ের এত খাটাখাটনী। সমস্ত রকম শিক্ষার আলাদা মূল্য আছে।পরীক্ষা দিলে আমি হয়তো গ্রাজুয়েট হয়ে যাব।কিন্তু একজন ছুতোর মিস্ত্রী কাঠ খোদাই করে যেমন নক্সা প্রস্তুত করে আমি কি তা পারব? অথচ এদেশে একজন ভাল মাইনের কেরাণি একজন ছুতোর মিস্ত্রীকে নীচু নজরে দেখে।বাইরে কে যেন ডাকছে মনে হল।বেরিয়ে দেখলাম গিরিদি দাঁড়িয়ে আছে।বললাম এসো গিরিদি। বারান্দায় বসতে বসতে গিরিদি বলল,মনু আমি তোমার রান্না করে দিয়ে যাব? আমি রুটি কিনে এনেছি।আজ থাক। হাসপাতালে গেছিলাম তোমারে দেখলাম নাতো? আমি একটু দেরী করে গেছিলাম। মনু কোনো দরকার হলি বলবা লজ্জা করবা না। গিরিদি তুমি কেমন আছো? কেমনে ভাল থাকি বলো।সারাক্ষন ভগবানরে ডাকতিছি ভগবান তাড়াতাড়ি বৌদিরে বাড়ীতে ফিরোয় এনি দাও।আজ নিয়ে দুইদিন হয়ে গেল এখনো সালান দেচ্ছে।তুমার মামা আসতিছে আমি আসি।কোনো দরকার হলি বলবা। সুবীরমামা সাইকেল নিয়ে হাজির হল।গিরিদি ঠিক নজর করেছে।মামা বসতে বসতে বলল,ওই মেয়েছেলেটা কি বলছিল? মায়ের কাছে আসতো।জিজ্ঞেস করল রাতে রান্না করে দিয়ে যাবে কিনা? খবরদার এদের একদম প্রশ্রয় দিবি না।জল খাওয়া তো। জল এনে দিতে গেলাসে চুমুক দেবার আগে জিজ্ঞেস করল,কখন এসেছিস? লালগোলা ধরে সন্ধ্যে নাগাদ। ঢক ঢক করে জল খেয়ে বলল,হাসপাতালে গেছিলি? হ্যা এইমাত্র ফিরলাম। কাতান খোকন কিছু বলছিল? বলল কাল সকাল নটার মধ্যে হাসপাতালে পৌছাতে এমআরআই করাতে হবে। মামা ফোলিও ব্যাগ খুলতে খুলতে বলল,এই বয়সে এত ধকল পোষায়।ব্যাগ থেকে একগোছা টাকা বের করে এগিয়ে দিয়ে বলল,দেখতো কত আছে? টাকা গুনতে গুনতে কাকুর কথা মনে পড়ল।মামা সম্পর্কে কাকুর ধারণা ঠিক নয়।গুনে বললাম, সাড়ে-চার হাজার। তোর কাছে রেখে দে কাল লাগবে। খোকনদা বলছিল চার হাজারের কথা। ওকী ডাক্তার নাকি?কিযে লেখাপড়া করিস।রেখে দে কোথায় কি লাগে।কাল নটার মধ্যে চলে যাবি আমার একটু দেরী হবে। মামা চা খাবে? চা করেছিস? খেলে করতাম। দরকার নেই।তোর পরীক্ষা তো এসে গেল। পরীক্ষা এসে গেলেও কিছু করার নেই। মামা চলে গেল।রাত হয়েছে সকাল সকাল খেয়ে শুয়ে পড়া যাক।কাল সকালে অনেক কাজ।কলকাতায় এখন যাওয়ার প্রশ্নই নেই।মাকে ভালোয় ভালোয় সুস্থ করে বাড়ীতে এনে ওসব ভাবা যাবে। রুটিগুলো চামড়ার মত শক্ত হয়ে গেছে।ঝোলে ভিজিয়ে নরম করে চিবোতে থাকে।এম আর আই কথাটা শুনেছে কিন্তু সেটা কি ঠিক জানা নেই।এই পরীক্ষা করে কি জন্য তাও জানে না।এক্স-রে যেমন বাইরে থেকে ভিতরে ছবি তুলে ভেতরের অবস্থা বোঝে ওই রকম এম আর আই করে সেরকম কিছু জানা যায় হয়তো। রাতে শুয়ে সকালের অপেক্ষায়,ঘুম আসে না চোখে।হাসপাতাল হতে সুস্থ হয়ে ফিরলে বিশ্রাম দরকার।লোকের বাড়ী কাজ করতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।পড়াশোনা নিয়ে ভাবছে না।কত মানুষ কত রকম স্বপ্ন দেখে সব স্বপ্ন কি বাস্তবায়িত হয়?মামাকে বলে কোনো একটা কাজ জুটিয়ে নেবে।শুভ নন্দিতারা ভাববে কলেজে আসছে না গেল কোথায়?একদিন ওরা বুঝতে পারবে সুখদারঞ্জন আর ক্লাসে আসবে না। সিদ্ধেশ্বর পাস করে দোকানে বসে আর পড়ল না।তারও আর পড়া হল না।বছর দুয়েকের মত কলেজে ক্লাস করলেও দুজনেই উচ্চ মাধ্যমিক পাস। এই রকম ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে এক সময়। ভালভাবে আলো ফোটার আগেই ঘুম ভেঙ্গে গেল।তাড়াতাড়ি স্নান সেরে নিল।কত দেরী হবে কে জানে।স্নান করে তৈরী হয়ে হাসপাতলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল।অফিসে গিয়ে দেখা করে নিজের পরিচয় দিতে ওরা কাগজ পত্র দিয়ে Diagnostic Centre-এ যেতে বলল।কাছেই সেণ্টার।গিয়ে কাগজ দেখাতে চার হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দিল।টাকা জমা দিয়ে অপেক্ষা করছি একটু পরেই স্ট্রেচারে করে মাকে নিয়ে ভিতরে চলে গেল। বাইরে একটা বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করছি।মাকে কোথায় নিয়ে গেল।অস্থির অস্থির লাগছে।মিনিট পনেরো হয়ে গেল।এয়াপ্রোন পরা একজনকে দেখে উঠে গিয়ে জিজ্ঞেস করে জানা গেল।এম আর আই করার আগে একটা ওষুধ খাওয়ানো হয় তাতে ভিতরটা রঙীন হয়।মা ওষুধ খেতে পারছে না।সেজন্য ডাক্তারকে খবর দেওয়া হয়েছে।একটা ফিয়াট গাড়ী এসে দাড়াতে একজন মহিলা নামলেন।জানা গেল উনি ডাক্তার।কিছুক্ষন পর ক্যাশ কাউণ্টার হতে আমাকে ডেকে জানালো,ওষুধ ছাড়াই করা হচ্ছে।আমাকে এক হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হল। কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না।দরজা দিয়ে সুবিমামাকে ঢুকতে দেখে এগিয়ে গেলাম। হয়ে গেছে? না এখন হবে।মামাকে ব্যাপারটা বললাম। তোকে অত ভাবতে হবে না।ডাক্তারবাবুরা যা করছে জেনে বুঝেই করছে।ওই তো দিদি। দেখলাম স্ট্রেচারে শুইয়ে মাকে গাড়ীতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে গেল।নিঃসাড়ে শুয়ে আছে নড়াচড়া করছে না।কলকাতা থেকে এসে অবধি মার সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। মামা এসে বলল,তুই খেয়েছিস? না গিয়ে খাবো। এম আর আই হয়ে গেছে।বেডে দিয়েছে একবার গিয়ে দেখে যা বাড়ী যা। আমি একটু ইতস্তত করি।মামা বলল,তুই থেকে কি করবি যা করার ডাক্তারবাবুরা করছে। মাকে ছাড়বে কবে? আমি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলবো তুই বাড়ী গিয়ে খাওয়া দাওয়া কর।কটা বাজে দেখেছিস?
28-10-2022, 10:32 PM
কি লেখা !!
মুখের ভাষা হারিয়ে যায় , এসবের নিয়ে কোনো মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার তো অন্তত নেই ...
28-10-2022, 10:37 PM
মা আমার মা.....
|
« Next Oldest | Next Newest »
|