Thread Rating:
  • 176 Vote(s) - 3.39 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery হেমন্তের অরণ্যে
#41
গল্পের নায়ক কী? কোথাও আলমগীর!না নতুন কেউ আসবে..
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#42
কলকাতার মত এখানেও কাল সারারাত বৃষ্টি হয়েছে। জঙ্গলের বৃষ্টি কেমন হয়, ধারণা ছিল না কাবেরীর। সারারাত অনবরত জলের শব্দ। ঘুম ভাঙলো ভোরে। জানালা খুলে চমকে উঠল কাবেরী। বাড়ীর ঠিক উল্টো দিকেই বিস্তীর্ণ পাহাড় আর ঢাল জুড়ে শাল, মহুয়ার জঙ্গল। সকালে চকচকে রোদ। ধুলোবালি মুছে যাওয়াতে ক্লোরিফিল উজ্জ্বল গাছ যেন আরো চকচকে। বাইরে বেরিয়ে এলো কাবেরী। এই দোতলা বাড়ি সহ ষোল কাঠা বাগানবাড়ি। বাগানবাড়ি বললে ভুল হবে, ঝোপ ঝাড় আর পাহাড়ের ঢালে ইতিউতি কয়েকটা শাল-শিমুল গাছ।
কাবেরী মুগ্ধ হয়ে দেখছিল মায়ের দিক থেকে তার পূর্বপুরুষের এই বসত বাড়ি। এককালে বাড়ির চারপাশে পাঁচিল ছিল বোঝা যায়। কোথাও তার এখনো ভগ্নাংশ রয়ে গেছে। ভোরের বাতাস এসে কাবেরীর গায়ে পড়ছে। বাড়ির সামনেও পাহাড়। চারদিক যেন পাহাড় আর পাহাড়।

দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে একটু বিশ্রাম নিয়ে বেরোলো ওরা। ভোরের শীতল বাতাসটা আর নেই। এ জঙ্গলের আরেক বৈপরীত্যধর্মী রূপ। এখন তীব্র গরম আর কাঠফাটা রোদ। যদিও গাছ গাছালির ভিড়ে এই ছায়াটাও প্রশান্তির।
আলমগীর রাঁচির ছেলে। ঝরঝরে বাংলা বলে। সদ্য বিয়ে করেছে, শ্বশুরবাড়ি মুর্শিদাবাদে। পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারছে বেশ।
অসীম জিজ্ঞেস করল---ইকলেজ বাড়িটা কি অনেক দূরে হেমেন দা?
---কেন কাছেই তো। হেঁটে দশ মিনিট।
---ওমা! তবে তো হেঁটেই যেতে পারতাম। কাবেরী মাঝপথে বলল।
---আসলে তোদের একবার এলাকাটা চেনাবো বলেই গাড়ি নিয়ে আসা।

কিছুক্ষণের মধ্যে ধারনাটা বদল হল কাবেরীর। এখানে সকলে বাংলা বলে ও বোঝে। মুণ্ডারাও নিজেদের মধ্যে বাংলায় কথা বলে, সেই বাংলায় একটা গেঁয়ো টান রয়েছে। দুটো মুন্ডা ছেলে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। একজনের মাথায় একটা পুঁটলি মত বোঝা। অন্যজনের হাতে একটা গাছের ডাল। হেমেন দা আলমগীরকে গাড়ি থামাতে বললেন। ছেলে দুটোও দাঁড়িয়ে গেল। বয়স বেশি নয়, একুশ-বাইশ হবে। হেমেন দাকে দেখে ডাল হাতের ছেলেটা বলল---মাস্টার মশাই কুথায় যাচ্ছেন?
---শহর থেকে আমার বোন এসেছে। এলাকাটা দেখাতে নিয়ে যাচ্ছি। তোর কি কোনো কাম-কাজ আছে কুছুয়া।
ছেলেটা মাথা নাড়লো। হ্যা কি না বলল বোঝা গেল না। হেমেন দা দরজা খুলে ওকে তুলে নিল।

মুন্ডাদের নিজেদের ভাষা আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। হেমেন দা বললেন---বলতো খুকি মুন্ডাদের ভাষার নাম কী?
---ওই তো তুমি কাল বললে, মুন্ডা।
অসীম বলল---অলচিকি।
----না হল না। হাসলেন হেমেন দা।---ওটা সাঁওতালদের ভাষা। কুছুয়াও কি বুঝল, হেসে ফেলল।
কাবেরী মনে মনে ভাবলো অরুণাভ থাকলে নিশ্চিত বলে দিত। ওর জি.কে বা হিউমার সাংঘাতিক। অথচ সারা জীবন মানুষটা ব্যাংক আর টাকা-পয়সার হিসেব নিয়ে রয়ে গেল।
হেমেন দা বলতে লাগলেন---মুন্ডাদের ভাষা হল মুন্ডারী। অস্ট্রো-এশীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এবং ভারতীয় আর্যভাষা থেকেও প্রাচীনতর। এ ভাষা উড়িয়া, অসমীয়া ও বাংলা ভাষার প্রাথমিক ভিত রচনা করেছে। খাসিয়া, গারো, সাঁওতাল, কোল ইত্যাদি উপজাতীয় ভাষার সঙ্গে মুন্ডা ভাষার সম্পর্ক লক্ষণীয়।

ইকলেজ বাড়িটার সামনে এসে পৌঁছল ওরা। একতলা কলেজ বাড়ির কাজ এখনো অসমাপ্ত। জায়গাটা খানিকটা সমতল। একটা ছোট জলাশয় আছে। এই জলাশয়টিও কাবেরীদের পূর্বপুরুষের সম্পত্তি। সেই অর্থে বর্তমান হেমেন রায় ও কাবেরী চক্রবর্তীর যৌথ সম্পদ। এখান থেকে দেখা যায় হাঁসড়া গ্রামটা। ছোট গ্রাম। শাল জঙ্গলের মধ্যে ইতিউতি কয়েকটা চালা ঘর হারিয়ে গেছে যেন। ঘরগুলো বেশ ভালো লাগছে কাবেরীর। একে অপরের থেকে কত বিচ্ছিন্ন। কোনটা বেশ উঁচুতে, কোনটা ঢালে। কোনোটা খানিকটা সমান্তরাল জমিতে।
অদূরে আরো ঘন জঙ্গল। পাহাড়ের পর পাহাড়। সেদিকেই আঙ্গুল তুলে হেমেন দা বললেন---ওই পাহাড়েই বোঙ্গা দেবতার মন্দির।
---বোঙ্গা! মানে মুন্ডাদের আরাধ্য দেবতা। অসীম বিস্ময়ে বলল।
----হ্যা। মুন্ডাদের প্রধান আরাধ্য দেবতা বোঙ্গা। অর্থাৎ সূর্য দেবতা। ওদের আরো দেব-দেবী রয়েছে। এ বয়সে আমি আর পাহাড়ে উঠতে পারবো না। তোরা যদি চাস তো গিয়ে দেখ।
কুছুয়ার কাঁধে হাত রেখে হেমেন দা বললেন--ওদের নিয়ে যাস সাবধানে।

কুছুয়া গাছের ডালটা হাতে নিয়ে আগে আগে চলেছে। খানিকটা পিছনে অসীম আর কাবেরী। অসীমের পরনে আকাশনীল শার্ট। কাবেরী একটা মেরুন রঙের তাঁত পরেছে, কমলা রঙা ব্লাউজ। পাহাড় ভেঙে উঠতে সামান্য হলেও তেমন কষ্ট হচ্ছে না কাবেরীর। কতদিন পর এভাবে পাহাড়ে ওঠা। অরুণাভ আর কাবেরী বিয়ের পর বেশ সাবলীল ভাবে পাহাড়ে উঠতে পারতো। ওই তো বছর দুই আগেও যখন ওরা কাশ্মীরে গিয়েছিল, ছেলেদুটোকে নিয়ে কাবেরী তরতর করে এগিয়ে গিয়েছিল। পেছনে পড়েছিল অরুণাভ। চুয়াল্লিশ বছরে এসে কাবেরী বুঝতে পারছে এখনও সে ক্ষমতা তার আছে। অসীম অবশ্য আগে আগেই উঠে যাচ্ছে। অসীমের চেহারাটা গোলগাল, ছোটখাটো। কুছুয়া তাদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছে। স্যার, দিদিমনিদের পেছনে পড়ে থাকতে দেখে সে দাঁড়িয়ে পড়ল।
একটা ঢিবি মত জায়গায় আটকে পড়ল কাবেরী। অসীম হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল---কষ্ট হচ্ছে। হাতটা ধরে সামলে নিল নিজেকে। ঢিবিটা পেরিয়েই কাবেরী বলল---ওমা! কষ্ট হবে কেন? বেশ তো লাগছে হাঁটতে।
---না না। তুমি তো আমার মত রোগা-পাতলা নও।
---তারমানে তুমি আমাকে মোটা বলছ?
কাবেরী মোটেই মোটা নয়। আবার যুবতী শরীরের ছিপছিপে তন্বী নয়। মধ্য তিরিশের দিক থেকে তার শরীর আস্তে আস্তে ভারীর দিকে যেতে শুরু করলেও, তা একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে রয়েছে। পেটে সামান্য মেদ আছে। তাতে কোমরে সামান্য ভাঁজ পড়ে। তবে সেই অতিরিক্ততা চল্লিশের যে কোনো নারীদেরই থাকে। খারাপ দেখায় না, বরং এতে বেশ পরিণতসুলভ দেখায় তাকে।

কছুয়া হাঁটা শুরু করল। ওরাও পিছু নিল নীরব অনুসরণকারীর মত। আর খানিকটা পথ পেরোনোর পর বড় শাল গাছটার তলায় ছোট্ট মন্দির। মন্দিরের দরজা খোলা। ভেতরে ঢুকতে দেখা পেল স্বয়ং বোঙ্গা দেবতার। নীল বর্ণ মাটির তৈরি এই মূর্তি আসলে * দের সূর্য দেবতারই প্রতিরূপ।
কাবেরী দু হাত মাথায় ঠেকিয়ে প্রণাম করল। পাশে দাঁড়ানো অসীমের হাসিমুখ দেখে কাবেরী জিজ্ঞেস করল হাসছ কেন?
---এই যে তোমার বিশ্বাস দেখে। মাটির দেবতার প্রতি এত আস্থা...
---আঃ অসীম! আদিবাসীদের দেবতারা খুব জাগ্রত হয় শুনেছি।
গলা ছেড়ে অট্টহাসি হাসল অসীম। কাবেরী বিরক্ত হল। মনে মনে ভাবলো নাস্তিকতা বোধ হয় পুরুষ মানুষদের একটি চরিত্র। অরুণাভটাও তাই। ঠাকুর-দেবতাকে তাচ্ছিল্য করা ওর অভ্যেস।
কাবেরীর রাগ ভাঙাতে অসীম বলল--চাইলে পুজোও দিতে পারো।
কুছুয়া বলল---এখুন হবেনি দিদিমণি। সক্কালে আসতে হবে। তখুন পূজা হয়।
মূর্তির পায়ের কাছে তখনও টাটকা ফুল, পূজার সামগ্রী দেখে বোঝা গেল সকালে এখানে পূজা হয়েছে।
বেরোনোর সময় অসীম লক্ষ্য করল মন্দিরের পাশ দিয়ে একটা জলস্রোত চলে গেছে। কুছুয়াকে জিজ্ঞেস করতে বলল---ইতু দেবীর থান হতে আসছে সার। গেলেই দিখতে পাবেন।
---ইতু দেবী? নামটা ইন্টারেস্টিং। এমন নামতো শুনিনি কখনো।
অসীমকে মাঝপথে থামিয়ে কাবেরী বলল--চলো না, গেলেই দেখতে পাবো।

গভীর জঙ্গলের এলোমেলো রাস্তা। হাতের শক্ত ডাল দিয়ে ঝোপঝাড় ছেঁটে রাস্তা বানাতে থাকলো কছুয়া। অসীম ভয় পেয়ে বলল---সাপ-খোপ নেই তো?
কুছুয়া তার কাজে রত থেকেই বলল---আছে নাই আবার! ময়াল, ঢেমনা, শিয়রচাঁদা, তপ সব আছে।
নিজে ভয় পেলেও, অসীম বলল---কাবেরী সাবধানে পা ফেলো।

অনেকটা পথ এই জঙ্গলাকীর্ন রাস্তায়। এসময় কুছুয়া চলে গেলে একা একা পথ খুঁজে ফেরা মুশকিল। অবশেষ এলো সেই বহু প্রতীক্ষিত ইতু দেবীর থান। দেবী বলতে কালো পাথর খন্ড। দুটো পাহাড়ের ফাটলের মাঝে তার স্থান। পাশ দিয়ে দুধসাদা ছোট ঝর্ণা। বোঙ্গা দেবের মন্দিরের পাশের জলস্রোতের উৎস এই ঝর্ণা।
এধার ওধার মুরগীর পালক দেখে অসীম বলল---এখানে বলি-টলি হয় নাকি?
---সে পরবের সময় হয়। এখুন তো গরম। আরো চারমাইনা পরে পরব। মানত কইরলে তখুন মুরগী দিতে হয়।
কছুয়াকে কথা শেষ করতে না দিয়ে কাবেরী জিজ্ঞেস করল---এখানে মানত করে কিসের জন্য?
---পোয়াতি হতে গেরামের বউরা আসে। যার ছেনা-পোনা হয় নাই, গাভীর দুধ কমছে, তারা আইসে। গত বসর আমার বউটা আইসছিল, এখন আমার বেটা হইছে দিদিমণি।
--তুমি বিয়ে করেছ?
লজ্জায় সরলমতি বালকের মত কুছুয়া মাথা নীচু করল। একুশ-বাইশ বছরে আদিবাসী এলাকার ছেলেরা বাপ হয়ে যায়! বিস্মিত হত কাবেরী।

সবাইকে চমকে দিয়ে হঠাৎ জঙ্গলের ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো একটা লোক। বেশ রুগ্ন লোকটার পরনে লাল কাপড় জড়ানো, হাতে লাঠি। কুছুয়া খুব সম্ভ্রমের চোখে বলল---দিগা বাবা, এই থানের পূজারী।
দিগা বাবা লোকটার বয়স হয়েছে, চোখ তুলে তাকালেন অসীম ও কাবেরী দিকে। বললেন---শহর থেকে আইসছেন বাবুরা?
কুছুয়াই বলল--হাঁ গো, বাবা। কলকাতা থিকে আইসছে।
---ইটা তো মানতের সময় লয়, তবে মা তোরে দেখে বড় ভালো লাইগলো। কাবেরীকে কথাটা বলল লোকটা।
কাবেরীর মাথায় একটা ফুল ছুঁইয়ে বলল---মরদ, ছ্যানা-পোনা লয়ে সুখী হ মা।
কাবেরী ভক্তি ভরে মাথা নুইয়ে থাকলো। দিগা বাবা এবার একটা ছোট্ট নুড়ি দিলেন কাবেরীর হাতে। দিগা বাবার চোখ প্রস্তর খণ্ডের দিকে---ইটা রাখিস নিজের কাছে। আর বেশি দের নাই, তুই মা হবি।

নুড়িটা একদম গোল। এমন নুড়ি এই এলাকায় কোথাও পাওয়া যায় বলে কাবেরীর মনে হল না।
কথাটা শুনে অসীম মুচকী হাসছে। ওখান থেকে বেরোনোর সময় কাবেরী নুড়িটা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো একেবারে মসৃণ। ঠিক যেন কারিগর দিয়ে কোনো পাথরকে এভাবে বানানো হয়েছে। কুছুয়া পাথরটার দিকে তাকিয়ে বলল---দিদিমণি, ই পাথর বড় কামের গো, আমার বউটারেও দিগা বাবা দিছিল। যার কাছে রয়, সে ছানা-পোনার মুখ দেখে।

হো হো করে হেসে উঠল অসীম---তাহলে মিস্টার চক্রবর্তীকে শিগগিরি খবরটা দাও কাবেরী। তিনি আবার বাবা হতে চলেছেন।
কাবেরী হেসে উঠে বলল--ধ্যাৎ।
ঠাকুর-দেবতায় বিশ্বাস থাকলেও কাবেরী মাদুল, কবজ, টোটকা এসবে একদম বিশ্বাস করে না। দুটো বড় বড় ছেলের মা কাবেরী, এ কথা জানলে দিগা বাবা নিশ্চই আর এই ইতু দেবীর থান মুখো হতেন না। মনে মনে হেসে উঠল কাবেরী।

ওরা যখন নীচে পৌঁছল, হেমেন দা একটা টিলার ওপর বসে রয়েছেন। আলমগীর গাড়ীর টুল বক্স খুলে ঠুং ঠাং করতে ব্যস্ত। কুছুয়া হাত নেড়ে রওনা দিল হাঁসড়া গ্রামের দিকে। গাড়ীতে উঠে ওরা রওনা দিল বাড়ির ঠিক উল্টো দিকে। উঁচু নীচু পাহাড়ি রাস্তা পেরিয়ে ঘন অরণ্যের মধ্য দিয়ে ছুটে চলেছে গাড়ি।

প্রায় ঘন্টা দেড়েকের দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে ওরা এসে পৌঁছল একটা ভগ্ন শিব মন্দিরের কাছে। হেমেন দা বললেন---এবার নেমে পড়তে হবে।
অসীম বলল---কাছেপিঠে দেখবার মতো কিছু আছে নাকি?
হেমেন দা একটা সিগারেট ধরিয়ে বললেন---আছে একটা বড় ঝর্ণা। ঠিক মন্দিরটার পেছনে।
কল কল জলের শব্দ কানে এলো কাবেরীর। কিশোরীর মেয়ের মতো বলে উঠল---ওই তো জলের শব্দ।
হেমেন দা বললেন---ঠিক শুনেছিস। তবে এখানে আসবার আরেকটা কারণ আছে। কাছেই ফরেস্ট অফিস। ফরেস্টের রেঞ্জার অফিসার আমার পরিচিত। তোরা যখন এসেছিস, কলেজের বিষয় নিয়ে একটু কথাবার্তাও হয়ে যাবে।

মন্দিরটা বেশ পুরোনো। এখানে যেন সবই কেমন পুরোনো বলে মনে হচ্ছে কাবেরীর। মন্দিরের বারান্দায় দুপাশে দুটো সিমেন্টের বাঘ। আর পাঁচটা * মন্দিরের মতই। হেমেন রায় বললেন---মুন্ডারা কিন্তু * দেবদেবীদদেরও পূজা করে। * রীতি মেনে তাদের বিয়ে হয়। হাঁসড়াতে একটা চার্চও আছে। ইদানিং কিছু মুন্ডা খ্রিস্টানও হয়েছে।
কাবেরী বিস্মিত হয়ে বলল---এতসব আছে। অথচ একটা কলেজ নেই?
হেমেন রায় হাসলেন। অসীম বলল---এটাই তোমাদের বিশ্বাস বুঝলে কাবেরী।

হেমেন দা বড় ঝর্ণা বলছিলেন, এটাকে ঠিক বড় বলা চলে না। ঝর্ণাটা নীচু। ছোট্ট একটা পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে জল। নীচে জল জমে একটা স্বচ্ছ জলাশয় তৈরি হয়েছে। তার তলায় নুড়ি-পাথর নজরে আসে।

ফরেস্টের রেঞ্জার অফিসার অর্জুন কুমার হাজারীবাগের মানুষ। বয়স আনুমানিক ষাট ছুঁই ছুঁই। দেখেই বোঝা যায় রিটায়ার্ডের বয়সে এসে পৌছেছেন। বেশ খাতির করে বসালেন সকলকে। হেমেন দাকে যে বেশ সম্ভ্রমের চোখে দেখেন বোঝা যাচ্ছে।
বেতের চেয়ারে ওরা বসে রইল। হেমেন দা পরিচয় করালেন---ইনি হলেন অসীম মজুমদার। আমার ছাত্র। আর ইনি কাবেরী চক্রবর্তী, আমার বোন। এই জমি জায়গার আরেক অংশীদার।
হাতজোড় করে নমস্কার করলেন অর্জুন কুমার। চা এসে গেল। বললেন--- ম্যাডাম, আপনাদের এই হেল্প ইয়াদ রাখবে মুন্ডাদের গাঁও। ওরা এখনো মূর্খ আছে, লেকিন একদিন পড়ালিখাই করলে বুঝতে পারবে, আপনারা এদের জন্য কত উপকার করলেন।
হেমেন রায়ও বললেন---অর্জুন বাবুও খুব আগ্রহী। অনেকদিনের চেষ্টা ছিল ওর। এই জমিদারী ছেড়ে সেই যে দাদুর বাবা উঠে গেছে, তারপর দাদুও খুব একটা আসেনি। যৌবনে দাদুর কাছে গল্প শুনে একবার এসেছিলাম। তারপর দাদু কবে কি উইল করে গেছে জানতাম না। বাবা মারা যাবের আগে বললেন---হিমু, হাঁসড়ায় আমাদের যে জমিদারী আছে, তা তোর দাদু তোর আর মিনুর মেয়ে খুকির নামে আছে। একদিন সময় বার করে চলে এলুম। তারপর জায়গাটা ভালো লেগে গেল। মাঝে মধ্যেই যাতায়াত বাড়তে লাগলো। অর্জুন বাবু জানতেন না, আমি যে মাঝে মধ্যেই আসি। এই জমির দখল কেউ নিতে আসবে না ভেবে একরকম কাগজপত্র রেডি করে জমিটা অধিগ্রহণের চেষ্টা করছিলেন অর্জুন বাবু। তারপর খোঁজ পেলেন আমার। সে অর্থে দেখতে গেলে এই কলেজ বাড়ি হওয়ার মূল কারিগর কিন্তু অর্জুন কুমারই।
অর্জুন কুমার লজ্জা পেলেন। বললেন---সার, আপনি না থাকলে আমি কি সবটা পেরে উঠতাম। ইধার বহুত সমস্যা। মুন্ডারা গোঁয়ার। ফরেস্টের লোকদের দুশমন মনে করে। আপনার কথা শুনল বলেই না।

অসীম বলল---হেমেন দা, কলেজবাড়ীর জমিটা কত?
---তিন কাঠা। সব মিলিয়ে দাদুর উইল অনুযায়ী আমার আর খুকীর দেড়-দেড়। দাদু অবশ্য কার কোনো অংশ লিখে দিয়ে যায়নি। কাজেই খুকি যে কোনো জমি তার দাবী করতে পারে।
অসীম ঠাট্টা করে কাবেরীর দিকে চেয়ে বলল---তাই নাকি?
কাগজপত্র বের করে মাপযোগ সহ কলেজ বাড়ির প্ল্যানিং দেখাতে লাগলো অর্জুন কুমার। হেমেন দা, অসীম তা নিয়ে ব্যস্ত। কাবেরীর নজর পড়ল ফরেস্টের বাংলোর রঙ্গন গাছের ওপর একটা পাখি বসে সুরে সুরে ডেকে চলছে। পাখিটার কাছে চলে গেল কাবেরী, তবু পাখিটা ভয় পেল না। মনে এলো বাড়ীর টিয়াটার কথা, ছেলেদুটো খাবার দিচ্ছে কিনা কে জানে।
+++++++++



[Image: eb253512-cf3f-4369-b998-bcd36a6a9978.png]
facebook share public
--ইটা রাখিস তোর কাছে। আর বেশি দেরী নাই, তুই মা হবি।
Like Reply
#43
সেই পুরনো হেনরি দা। কিন্তু তার লেখা আগের মতোই প্রাণবন্ত। চালিয়ে যান দাদা, পাশে আছি।
Like Reply
#44
কাবেরী 44 এ গিয়ে আবার মা হবে ভালো কথা ( বাবা কে হবে), কিন্তু লেখক কাবেরীর শরীরের মাপ যোগ চেহারার বর্ণনা একটু পরিষ্কার ভাবে উপস্থাপন করলে কাবেরীর সাথে তাইলে আরেকটু একাত্ম হতে পারতাম। সাথে ছবিটি পর্বের শেষে না দিয়ে প্রথমেই দিয়ে দিন না।
লেখা ছবি দুটির প্রেমে পরে যাচ্ছি দাদা একটু চেষ্টা করবেন একটু বড় করে আপডেট দেওয়া যায় কিনা । ফাটাফাটি হচ্ছে।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 2 users Like Boti babu's post
Like Reply
#45
অসাধারণ বর্ননা।

পরবর্তী আপডেট এর অপেক্ষায়
Like Reply
#46
অনবদ্য. অসাধারণ.
[+] 1 user Likes ray.rowdy's post
Like Reply
#47
অসাধারণ ঝরঝরে লেখা পড়ার আলাদা সুখ। সেই সুখে সুখি হলাম
Like Reply
#48
খুবই স্বচ্ছন্দ লেখা।
Like Reply
#49
জঙ্গলের জংলী অদ্ভুত প্রকৃতি আর আবহাওয়া, সাথে লেখকের লেখন শৈলী মিলে যেন এক অদ্ভুত মুহূর্তের উপস্থাপন করেছেন এই পর্বে। দারুন লাগলো। আর শেষে ছবির নিচের লেখাটা পরে সত্যিই শিহরিত হতে হয় সকলকে। মানে এমন জংলী জগতে আদিম কিছুর শুরু হতে চলেছে।
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#50
[Image: deb4368a-5d46-4057-99f1-3861953ed797.png]
খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো নিজের বুক দুটো।

হাঁসড়া গ্রামটা জনবিচ্ছিন্ন পাহাড়ি একটা ছোট্ট গ্রাম হলেও, এখানকার লোকেদের রাঁচি শহরের সঙ্গে একটা সংযোগ রয়েছে। আর সেটার সংযোগ দূরের একটা খনি এলাকা। খনিটা যদিও বেশি বড় নয়, তবু কাঠ কাটা ছাড়া মুন্ডাদের জীবিকার অন্যতম আশ্রয়। খনি এলাকায় কাজ করে মুন্ডারাই। সারা দিন বড় দুটো ট্রাকে করে কয়লা যায়। মুন্ডাদের প্রয়োজনে ওই ট্রাকে করেই ওরা শহরে যায়। ওই দুটো যানবাহনই হাঁসড়ার মানুষদের বিশ্ব সংসারের সাথে যোগাযোগ মাধ্যম।

রান্না সেরে হাত মুছে বারান্দায় এসে বসল কাবেরী। কানে এলো ট্রাক দুটো যাওয়ার শব্দ। অনেকটা দূরে বড় রাস্তায় হলেও নির্জন অরণ্যে বেশ গম গম করে শব্দটা জানান দেয়। হেমেন দা আর অসিত বেরিয়েছে সেই সকালে। কাবেরী এই কদিন রান্না-বান্নায় হাত লাগাতে কুন্তীটাও বেশ গা-ছাড়া দিয়েছে। বেলা বাড়তে গরমটা তেতে উঠেছে। ভাগ্যিস এই বাড়িটা বেশ একটা গাছ-গাছালিময় হিমশীতল পরিবেশে, তা নাহলে গা পুড়ে যেত, রোদের দিকে একাকী নেড়া পাহাড়টার দিকে তাকিয়ে ভাবলো কাবেরী।
বাথরুমের কাঠের দরজায় পুরোনো আমলের লোহার শেকলের খিল। সেটা আটকে আবার তার মধ্যে একটা শঙ্কু আকৃতির হুড়কো ঢুকিয়ে দিতে হয়, তা নাহলে বাইর থেকে টানলেই খুলে যায়। চৌবাচ্চা থেকে জল তুলে স্নান করার এই পদ্ধতিটা বেশ চমকপ্রদ লেগেছে কাবেরীর। মান্ধাতার এই বাথরুমে একটা অস্বচ্ছ বড় আয়না আছে। কাবেরী একদিন ভেবেছিল ওটা পরিষ্কার করে নেবে। কিন্তু পরক্ষণে বাথরুমে ঢুকলে মনে হয়, থাক না। ক'টাতো দিন, এই পুরাতন বাড়িতে চকচকে আয়না বরং বেমানান লাগবে। শাড়িটা গা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পাশে রাখতে গিয়ে দেখল একটা ইঁদুর ছোটাছুটি করছে। একসময় এই ইঁদুর-আরশোলা দেখলে কাবেরী কি ভীষণ ভয় পেত, অরুণাভর তা নিয়ে মজা করার বাড়বাড়ন্তও ছিল বেশ। বয়স বাড়তে বাড়তে কাবেরীর এখন এসবের বালাই নেই। বরং তাতানটা ছোট বেলায় বেশ ভীতু ছিল। একবার অরুণাভদের পুরোনো বাড়িতে একটা ঘরচিতি সাপ ঢুকে পড়েছিল সন্ধ্যা বেলা। তাতান তখন ক্লাস সেভেন, পাপান ক্লাস ফোর। শ্বাশুড়ি মা তখন শয্যাশায়ী, সিঁড়ি ভেঙে নামতে পারতেন না। তাতান ভয়ে চিৎকার জুড়ে সারা ঘর মাথায় তুলতে লাগলো। কাবেরী নিজেই সাপটাকে মেরেছিল লাঠি দিয়ে। অরুণাভ অফিস থেকে ফিরে মৃত সাপটাকে দেখে বলেছিল--দেখেছিস তাতান, তোর মা কত বীরাঙ্গনা দেখেছিস, একটা নির্বিষ সাপকে মেরে ফেলেছে।
সাপটা নির্বিষ; কাবেরী অবশ্য জানতো না। পরে ওই সাপটার জন্য কাবেরীর এমন দুঃখ হয়েছিল, অরুণাভ মন্তব্য করেছিল; খুনের পর আসামীর অনুতাপ করবার মত।
ইঁদুরটা পালাবার পথ না পেয়ে বাথরুমের এক কোনায় ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে। কাবেরী চাইলে এখুনি এটাকে শেষ করে ফেলতে পারে, তবু সাপটার কথা মনে পড়ায় কেমন মায়া পড়ে গেল।

ব্লাউজ, ব্রেসিয়ারের হুকটা আলগা করে খুলে ফেলল গা থেকে। ইঁদুরটা তখনও রয়েছে। যেন অনাহুত অতিথির মত তাকিয়ে রয়েছে তার দিকে। বাইরে বেরোনো ছাড়া, বাড়িতে থাকলে ব্রেসিয়ার পরার অভ্যাস নেই কাবেরীর। এখন সারাদিন ব্লাউজের ভিতর এঁটে বসে থাকা বস্ত্রখণ্ডটিকে মুক্তি দিতে পেরে যেন শান্তি হল তার। পেটে মৃদু মাংস, মোটেই দৃষ্টিকটু নয় বরং পরিণত বয়সের মধ্যবয়স্কা মহিলাদের আকর্ষণের এক অনবদ্য জায়গা। শরীরে ইতিউতি মাংস বাড়ায় স্তনও বেড়েছে। খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো নিজের বুক দুটো। সন্তান লালন করতে গিয়ে কখনো দেখা হয়নি তার। কাবেরীর সেই ফর্সা কোমল স্তন, যা দুটি শিশুকে লালন করেছে, এখন চুয়াল্লিশ বছরের বুকে নুইয়ে পড়েছে কিছুটা। বাদামী বৃন্ত দুটি যেন শুকনো মরচে ধরা, ডানদিকেরটা খানিকটা ভেতরে ঢুকে আছে। তবু তার স্তনদ্বয়ের মাংসল পুষ্টতা যেন আবার খরস্রোতা হয়ে উঠবার ক্ষমতা জাহির করছে।

স্নান থেকে বেরিয়ে দেখল কুন্তী এসে পৌঁছেছে। বারান্দায় ঝাঁট দিয়ে তকতকে করে রেখেছে জায়গাটা। হেমেন দার ইজি চেয়ারে বসে রয়েছে একটা আদিবাসী বাচ্চা মেয়ে। একটা ময়লা ফ্রক তার গায়ে। কাবেরী বুঝতে পারলে মেয়েটি কুন্তীর সাথে এসেছে। মুখের আদলেও কুন্তীর মুখটাই যেন কেটে বসানো।
বাচ্চা মেয়েটার চিবুকে হাত দিয়ে কাবেরী জিজ্ঞেস করল---ভারী মিষ্টি মেয়ে তো, কে হয় তোর?
---বইন।
---কী নাম?
মেয়েটা ভয় পেয়ে সিঁধিয়ে গেল কুন্তীর আড়ালে।
কুন্তী নিজেই লাজুক, তবু বোনের ভয় কাটাতে বলল----নাম বইলে দে দিদিমণিকে।
মেয়েটা এবার অস্পষ্ট ভাবে কি একটা বলল কাবেরীর কান অবধি পৌছালো না---শুনতে পেলুম না তো।
অগত্যা কুন্তীকেই বলতে হল--কুশি।
---কুন্তীর বোন কুশি, বাঃ।

কলকাতা থেকে কয়েকটা ফল এনেছিল কাবেরী। এখনো সেগুলো ব্যাগে রয়ে গেছে। ব্যাগ খুলে একটা আপেল এনে দিল কুশির হাতে, আরেকটা কুন্তীকে। মেয়েটা আপেলটা লুফে নিল আনন্দে। কামড় দিয়ে হাসি মুখে তাকালো কাবেরীর দিকে।

এখনও হেমেন দা বা অসিতের আসার নাম নেই। কুশির ভয় কেটে গেছে। কুশির সাথে গল্প করতে লাগলো কাবেরী। কুশির একটা ছোট বোন আছে তার নাম টুনি। কুশির বাবা-মা খনিতে কাজ করে, ইত্যাদি ইত্যাদি।

হেমেন দা আর অসীম খানিকক্ষনের মধ্যে ফিরল।অসীমের হাতে ধরা একটা জ্যান্ত মোরগ। মোরগটার ডানা ঝাপটানি দেখে ব্যথাতুর হয়ে কাবেরী বলল--এটাকে কোথায় পেলে?
হেমেন দা বললেন---গ্রামের আজ হাটের দিন, এটা পাহাড়িয়া মোরগ। এর স্বাদই আলাদা। কয়েকটা দিন দানা-পানি দিলে, আরো ঝরঝরে হয়ে উঠবে।
----ওমা! এটাকে মেরে ফেলবে?
অসীম হেসে বলল---পুষতেও পারো। বারান্দা জুড়ে নোংরা করবে ছাড়া তেমন কিছু ক্ষতি করবে না।
কাবেরী কথা না বাড়িয়ে বলল---যাও তোমারা স্নান করে এসো, আমি খাবার বাড়ছি।

কাবেরী স্নানে ঢুকলে সারা বাথরুম ফেনিল হয়ে থাকে। অরুণাভ মাঝে মধ্যেই বিরক্ত হয়। অসীম ঢুকে দেখল বাথরুমের ইতিউতি ফেনা। সঙ্গে সাবানের চমকপ্রদ সুগন্ধ। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে কতবার বাথরুমে ঢুকেছে অসীম। ললিতার কাছে যা দাবী করে, ললিতা তা আনুগত্যশীল রমণীর মত পূরণ করে। এইতো কদিন আগে ছেলেটা কলেজে ছিল, অসীমের সেদিন ইউনিভার্সিটি ছুটি। দুজন বাড়িতে নিভৃতে একলা। বাথরুমে নগ্ন হয়ে মেতে উঠেছিল দুজনে। অসীমের গা টা কেমন শিরশির করে উঠল। একটু আগে নিশ্চিত কাবেরী এখানে নগ্ন হয়েছিল, এখনো কাবেরীর গায়ের সাবানের গন্ধ তার বহু প্রত্যাশিত ছাত্রাবয়সের একপেশে প্রেমকে কামনায় রূপান্তরিত করে তুলছে। জাঙ্গিয়াটা খুলে ফেলতেই লজ্জা পেল অসীম। ভাবনার উত্তাল খেলায় তার পুরুষাঙ্গ সাড়া দিয়ে ফেলেছে। এখন সে মধ্য চল্লিশ বয়সী পিতা, ললিতাও সাঁইত্রিশে পা দিল। কাবেরী অসীমের বয়সী। কাবেরীর বড় ছেলে কলেজ পাশ করতে চলল। এই বয়সে এসব! যে অসীম একদিন কাবেরীকে জ্ঞান দিয়েছিল মনে বার্ধক্যকে স্থান না দিতে, সেই অসীমের এখন মনে হচ্ছে মনে পাপ জমছে তার।
+++++++

রাতটা সবে শুরু। কাবেরী নিজের ঘরে আলো জ্বেলে বই পড়ছে। পাপান পছন্দ করে দিয়েছে হিচকক সমগ্র। এসব বই জোর করে পাপানই পড়ায় মা'কে। হেমেন দা বোধ হয় ঘুমিয়ে পড়লেন। অসীম লেখার টেবিলে ছিল একটু আগে দেখে এসেছে কাবেরী। রান্না ঘর থেকে কুন্তীর বাসন ধোয়ার টুং-টাং শব্দ। বেশ নিঃঝুম, এত নিঃঝুম রাত্রিতে ফিসফাস করলেও বোধ হয় শোনা যাবে। অকস্মাৎ সমস্ত নির্জনতা ভেঙে একটা গমগমে গলার স্বর শোনা গেল---কুন্তী!
এত রাতে কুন্তীকে কে নিতে এসেছে। বইয়ের পাতাটা যত্ন করে মুড়ে রেখে উঠে দাঁড়ালো কাবেরী। হেমেন দাও দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছেন। দেখাদেখি অসীমও লেখার টেবিল ছেড়ে বাইরে। হ্যারিকেন আর চাঁদের আবছা আলোয় লোকটাকে অস্পষ্ট হলেও দেখা যাচ্ছে। বেশ দীর্ঘ উচ্চতার একটি আদিবাসী লোক। মাটির মত গায়ের রঙ, ঘামের ওপর আলো পড়ে চকচক করছে। পেটানো কঠোর চেহারায় কাঁধের ওপর গামছা ফেলা। রুক্ষ পাথরে খোদাইকৃত মুখে অগোছালো দাড়ি গোঁফ, চোখ দুটো যেন লাল হয়ে জ্বলছে।
লোকটা বারান্দার ওপর কিছু একটা রেখে মেঝেতে বসে পড়ল। এতক্ষন জিনিসটা লক্ষ্য করেনি কাবেরী, চমকে উঠল বারান্দায় রাখা ধারালো অস্ত্রটার দিকে তাকিয়ে। চকচকে ঈষৎ বাঁকানো অস্ত্র মানুষ মারবার জন্য যথেষ্ট। ওটাকেই হাঁসুয়া বলে বোধ হয়। অথচ হেমেন দা ভীষণ শান্ত হয়ে বললেন---বুধন যা, বাড়ী যা। হাড়িয়া খেয়ে তোর মাথার ঠিক নেই।
বুধন বিচ্ছিরি ভাবে হাসল---মাস্টার মশাই, আমি কুথা বাড়াইতে আসিনি। আমার বিটি কুথায়? বিটিরে লিয়ে চলে যাবো।
---বুধন মাথা ঠান্ডা কর।
---মাস্টারমশাই ভালো হইতেছে না। দিখেন আমার বিটি, তার ভালো-মন্দটা আমি বুঝি। তার বিয়া দিব। কথা পাকা। আপনি কেডা? ভালোয় ভালোয় বিটিরে কুথায় লুকাই রাখছেন বাহারে আনেন।
এধার ওধার চেয়ে লোকটা ডাক দিল---কুন্তী! তোর বাপ তরে লিতে আসসে।
কাবেরী খেয়াল করল রান্না ঘরে ঠুং-ঠাং শব্দ বন্ধ। কুন্তী বাইরে আসছে না। ভেতরে আলো জ্বলছে। অতর্কিতে হাঁসুয়া নিয়ে ঢুকে পড়ল লোকটা সোজা রান্নাঘরে। টানতে টানতে বার করে আনলো কুন্তীকে। ---বাপ আমি যাবোনি।
---চল মাগী। তোরে কাল মানা কইরছিলি। আর কামে আসবিনি। ফের আইসছিস।
কাবেরী কড়া গলায় বলল---কী হচ্ছে কী?
লোকটার চোখ পড়ল কাবেরীর দিকে। বেশ তীক্ষ্ণ ভয়ঙ্কর চোখ। অস্ত্রটা এখনো হাতে। হেমেন দার দিকে তাকিয়ে বলল---মাস্টার মশাই, ইকলেজ গড়ছেন, গড়েন। মুন্ডাপাড়ায় মাতব্বরী ফলাইতে আসবেন নাই। আমি বুধন মুন্ডা, হাঁসড়া বুধনের নামে ডরে। জেল খাটা খুনের আসামী এই বুধন, দিদিমনিরেও বুঝাই দেন।
কথা না বাড়িয়ে লোকটা কুন্তীকে টানতে টানতে চলে গেল। অসীম আর হেমেন দা দুটো পুরুষমানুষ দাঁড়িয়ে রইল। কাবেরী মুখ চাইল হেমেনের দিকে।

হেমেন রায় অসহায়ের মত বললেন---কুন্তীর বাবা বুধন মুন্ডা। হাঁসড়ার ত্রাস। ওকে মুন্ডারা সকলেই ভয় পায়। খুন করতে হাত কাঁপে না লোকটার। খনি অঞ্চলে কাজ করত আগে, কোনো একটা মারামারির ঘটনায় কোপ মারে খনির ম্যানেজারকে। ভাগ্য ভালো লোকটা বেঁচে যায়। ছ'মাস জেল খেটে ছাড়া পেয়েছে আজই খবর পেলাম। কুন্তীর জোর করে বিয়ে দিতে চায়।
----কিন্তু কুন্তীর তো বিয়ের বয়স হয়নি হেমেন দা। কাবেরী বিস্মিত হয়ে বলল। যদিও গ্রাম গঞ্জ থেকে শহরের বস্তি এলাকায় আজও দেদার নাবালিকা বিবাহ হচ্ছে; একথা কলেজ শিক্ষিকা হিসেবে কাবেরীর জানা। এমন উদাহরণ তার প্রাথমিক কলেজেই দেদার মেলে। অনেক মেয়েদেরই দেখেছে, প্রাইমারী কলেজে পড়াশোনা করত ভালো। শিক্ষক-শিক্ষিকারা উদ্যোগ নিয়ে ক্লাস ফোরের পর ভালো কলেজে দিল, কিন্তু বাড়ির চাপে আর এগোল না। কয়েকদিন পর শোনা যায় মেয়েটার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কাবেরী নিজেই কলকাতার বস্তি এলাকার কত মেয়েকে প্রাইমারী কমপ্লিট করবার পর হাইকলেজে ভর্তি করিয়েছে। সবার শেষ অবধি এগোনো হয়নি। তবু কাবেরী বলল---পুলিশে খবর দিলে হয় না?

---হয়। তবে প্রত্যন্ত অরণ্য অঞ্চলে আদিবাসী এলাকায় তাদের নিজেদের কিছু আইন-কানুন থাকে। তাতে পুলিশও নাক গলাতে চায় না। আর যদি পুলিশ কিছু ব্যবস্থা নেয়ও, তাহলে গোটা মুন্ডা পাড়ার সাথে দুশমনি করে ইকলেজ গড়ার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হতে পারে।

কাবেরীর বিষয়টা একেবারে পছন্দ হল না। তা বলে এমন একটা অন্যায় মেনে নিতে হবে। ঘুম আসছে না কাবেরীর। যে হেমেন দা কাবেরীর চোখে এতদিন হিরোর মত ছিলেন, এখন তাকেও কাবেরীর কৌশলী মনে হচ্ছে। ঘুম আসছে না, এ পাশ ওপাশ করে চলেছে ও। টেলিফোন রিসিভারটার দিকে নজর পড়ল কাবেরীর। অরুণাভ কি ঘুমিয়ে পড়ল। ওকে ব্যাপারটা না জানাতে পারলে শান্তি নেই কাবেরীর।

অরুণাভ ঘুমোতে যাবার উপক্রম করছে সবে। কাবেরী না থাকায় বিছানাটা এলোমেলো হয়ে রয়েছে। কাল একবার মালতীকে দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে নেবে ঠিক করল সে। অমন সময় ফোনটা বেজে উঠল।
ছেলেদের খোঁজ নিল কাবেরী। ছোটটার ঠান্ডা লেগেছে। এমনিতে মা বাড়ি নেই, কাল নাকি বৃষ্টিতে বাড়ি ফিরেছে পাপান। অরুণাভ জানালো এসি-ফ্যান অফ করে শুয়ে আছে ও। ছেলেরা অসুস্থ হলে কাবেরীর চিন্তা বাড়ে। যদিও পাপানটা অনেক বেশি দায়িত্বশীল। একা একা সেঁক নেয়, ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ে লাগলে স্প্রে, ভাপ এসব একাই নিতে পারে। একবার শীতকালে গলা ব্যথা হওয়ায় নিজেই রাতে উঠে গরম জলে গারগিল করল। তবু এতদুরে কাবেরী, চিন্তাটা একটা জিইয়ে রইল।

অরুণাভর চোখ ঘুমে জুড়ে আসছে। এখুনি শুয়ে পড়লেই ভোঁস ভোঁস করে নাক ডাকবে। তাই দ্রুত কথা সারতে জিজ্ঞেস করল---এত রাতে ফোন করলে কেন বললে না তো? ঘুম পাচ্ছে বাপু। তাড়াতাড়ি বলো।

কাবেরীর গলায় এবার একটা উৎকণ্ঠা ধরা পড়ল। এক এক করে সবটা বলল সে। স্বামীর কাছে সবটা বলাটাই যেন কাবেরীকে আশ্বস্ত করে। অরুণাভও সেটা জানে। তবে অরুণাভর ভয় হচ্ছে, কাবেরী কখনো কখনো মাথায় জেদ নিয়ে বসে থাকে। কোন জঙ্গলে একা পড়ে আছে, সঙ্গে হতচ্ছাড়া হেমেন দা। তাই সাবধান করে দিতে বলল--- তুমি আবার আগ বাড়িয়ে এসবে মাতব্বরী করতে যেও না। ওসব আদিবাসী লোক সাংঘাতিক হয়।
---কিন্তু পুলিশকে তো জানানো যেতে পারে।
ঠিক একই কথা হেমেন রায়কেও বলেছিল কাবেরী।
---খবরদার এসব করতে যেও না। তোমার বনের মোষ তাড়ানো হেমেন দা আপাতত এই একটি কথা ঠিক বলেছেন। ট্রাইবালরা নিজেদের সামাজিক বিষয়ে নাক গলানো পছন্দ করে না। পুলিশও ওসব ঝামেলা এড়িয়ে যাবে।
---তা বলে একটা নাবালিকা...
---আঃ কাবেরী, তুমি দুই ছেলের মা হয়ে মাঝে মধ্যে এমন করো না! তোমার ছেলেরাও তোমার চেয়ে ম্যাচিওর আচরণ করে।
হতাশ হল কাবেরী। সব পুরুষেরাই একই রকম, হেমেন দা, অসীম কিংবা অরুণাভ। পুরুষ মানেই একজন সাহসী, নির্ভীক হবে এমন ধারণা কাবেরীর চূর্ণ হচ্ছে।
অরুণাভ কাবেরীর মনের অবস্থা বুঝতে পারছে। কথা এড়িয়ে বলল---জানো আজ মালতী মাছের ঝোলে নুন দেয়নি। কদ্দিন যে এরকম আরো খেতে হবে!
---তুমিও তো বলেছিলে নিজের মত করে লাইফ এনজয় করতে।
শব্দ করে হাসল অরুণাভ----এখনো বলছি। বয়স বাড়ছে। নিজের মত ঘোরো, আমোদ-প্রমোদ করো। তা বলে মালতীর রান্নার নিন্দার মাধ্যমে নিজের বউয়ের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে পারবো না?
---সেটা তো বউর কাছে না করে, নিজের কলিগদের কাছেও করতে পারো।
---করি তো। আমার কলিগরা জানেন মিসেস চক্রবর্তীর অনেক প্রতিভা আছে। শিক্ষকতা করেন, ভালো রাঁধেন, গান গাইতে পারেন, কবিতা...এই রে তোমায় বলতে ভুলে গেছি। মিঃ দত্তের মেয়ের বিয়ে। নেমতন্ন করে গেছেন। বাড়ীতে এসেছিলেন।
---মিঃ দত্তের মেয়ে বলতে? পিঙ্কি?
---আজ্ঞে হ্যা। পিঙ্কিও এসেছিল। কাকিমাকে বিশেষ করে যেতে হবে আবদার করে গেছে। আমি তো বললুম তোমার কাকিমা তো এখন শান্তিতে ছুটি কাটাতে অরণ্যে গেছেন।
---শান্তি আছে? এই যে ছেলেটা ঠান্ডা লাগিয়ে বসল!
---অহেতুক টেনশন করো না। তোমার ছেলেরা তোমার অগোচরে বড় হয়ে গেছে কাবেরী। আর তুমি জানো তোমার স্বামী ব্যস্ত মানুষ। পারলে তুমি একটা প্রেম করা শুরু কর। নিদেনপক্ষে ব্যস্ত স্বামীর প্রতি অভিযোগগুলো থাকবে না।

অরুণাভর এমন ঠাট্টা বা উপদেশ এখন কাবেরীর একদম ভালো লাগছে না। বলল---দেখো, ছেলেটার কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা। কাল কোচিংয়ে যেতে দিও না। কাশি করছে না তো? সিরাপটা টিভি সেটের পাশে ড্রয়ারে রাখা আছে।

সত্যিই ছেলেদুটো বড় হয়ে গেল অনেক। এখন আর সেই মা মা আচরণটা নেই। ছেলেরা বড় হলে মায়ের কেমন অনুভূতি হয়, সার্থকতার নাকি ঘোর একাকীত্ব? কাবেরীর জানালা দিয়ে চাঁদের আলো পড়ছে দুধ সাদা বিছানায়। দুটোই অনুভূতি হচ্ছে কাবেরীর। দুটো ছেলেই কম বেশী মেধাবী। এর পেছনে ভূমিকা কাবেরীরই। অরুণাভও তা স্বীকার করে। পড়াশোনা, টিউশন, আঁকার ক্লাস সবটা কাবেরী সবসময় নখদর্পনে রাখতো। শ্বশুরের পুরোনো বাড়ীতে থাকার সময় প্রতিবেশীদের আনাগোনা ছিল। পেছনে নিন্দে করত তারা, কাবেরী ছেলে দুটোকে পড়ুয়া করে তুলেছে, এর ওর সাথে মিশতে দেয় না, ইত্যাদি ইত্যাদি। বাস্তবে কাবেরী কখনো তার ছেলেদের অন্যদের সাথে মিশতে বারণ করেনি। বরং ঠিক উল্টো। দুটো ছেলের ক্লাসে ভালো রেজাল্ট করা, নানাবিধ পরীক্ষায় পুরস্কার পাওয়া ঈর্ষান্বিত করত তাদের। তখন অবশ্য আনন্দই হত কাবেরীর। এখন সব সাফল্য ছেলেদের। এখন কেউ বলবে না কাবেরী চক্রবর্তী তার এক একটা ছেলেকে সোনার টুকরো করে তুলেছে। না থাকুক কৃতিত্বের ভাগিদারী, তবু সোনার টুকরো গড়ে তোলাতেই আনন্দ, মা হিসেবে এই আনন্দ কাবেরী বারবার পেতে চায়। হ্যারিকেনের সলতেটা কমিয়ে দিল কাবেরী। মিহি বাতাস এসে ঢুকছে ঘরে।
+++++++

[Image: fe844923-34ef-413c-b155-81e7da9b185d.png]
স্নান করে বেরিয়ে দেখল কাবেরী। হেমেন দার ইজি চেয়ারে বসে রয়েছে একটি বাচ্চা মেয়ে। কুন্তীর মুখটা কেটে বসানো।
Like Reply
#51
[Image: f28bdd36-88bc-4354-ac75-498fa9de3223.png]
আগের ছবিগুলোর মুখাবয়ব পরিবর্তন করলাম। যাতে পাঠকের মনে চরিত্রগুলোর একটি নির্দিষ্ট চিত্র থাকে।

[Image: e9ff3b5f-41ff-4beb-9683-64dc08bf4dc3-1.png]
[+] 17 users Like Henry's post
Like Reply
#52
দারুন দাদা দারুণ ছবি বলেন আর লেখা বলেন দুটো দারুণ হয়েছে।

আচ্ছা দাদা পর্বের শুরুতে যেমন ছবি দিচ্ছেন ঠিক সেই ভাবেই পর্বের মাঝে কি এই ভাবে ছবি দেওয়া যায় কিনা দেখবেন । মানে দেখুন যেভাবে প্রথমেই যে ছবিটি দিলেন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল নিজের বুক দুটো শুরুতেই এমন ছবি একদম পারফেক্ট শুরু ঠিক সে ভাবেই স্নান এর পরের ছবিটা যদি পর্বের শেষে না দিয়ে আগে দিতেন তাহলে হলে পর্বটা আরো অন্ন মাত্রা পেতো। জানি দাদা লেখার সঙ্গে ছবি খুবই চাপের কাজ হয়ে যাচ্ছে একটু বেশী আবদার করছি কিন্তু কি করবো বলেন আমরা পাঠকরাতো একটু লোভী তাই এমন আব্দার করলাম দেখবেন যদি পারা যায় ।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 2 users Like Boti babu's post
Like Reply
#53
গল্পটা খুব সুন্দর ভাবে এগিয়ে চলেছে। ♥️
জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভাগ হলো যৌনতা। সেটা ভোলা অসম্ভব। তাই এই যৌনতার পূর্বের ও পরের রূপ যতটা কামুক ও বৈচিত্রপূর্ণ হয় ততই আরও আকর্ষণ বাড়ে পাঠকদের।
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#54
সুপার আপডেট দাদা। আর একটা কথা, কাবেরীর আগের চেহারাটাই ভালো ছিলো। 

লাইক ও রেপু রইল।
Like Reply
#55
ashadaran,darun golpo
Like Reply
#56
জানি দাদা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে তবু না বলে পারলাম না আমার মতো পাঠকের কথাই মনে কিছু নেবেন না, আমি মোটামুটি আপনার আগের যতগুলো গল্প পড়েছি তার ভেতরে একটি কমন জিনিস লক্ষ্য করেছি । আপনার গল্পের নায়িকা ভরা পরিবার স্বামী সন্তান নিয়ে খুবই সুখী থাকে প্রথম দিকে তারপর যেকোনো কারনে হোক Extra marital affair হয়ে যায় তারপর দেখা যায় নিজের সংসার স্বামী সন্তান সব ছেড়ে ঐ প্রেমিকের হয় যায়। এমন গল্প পড়ে যে কেউ তত্ক্ষণাত্ খুব পরিমাণে উত্তেজিত হয়, লজ্জার কথা আমিও উত্তেজিত হইয়া যায়।

বাস্তবে জীবনের এমন ভুড়ি ভুঁড়ি ঘটনা আমাদের চার পাশে কতই ঘটছে, গল্পতো বাস্তব জীবন থেকেই উঠে আসে। কিন্তু কেউ কখনো ঐ সন্তানদের কথা বা এত বছরের ভালোবাসার সংসারের কথা একটু যৌনতার জন্য কিভাবে ভুলে যাই জানি না।

এখন যেটার জন্য এতো কথা বললাম আপনার কাছে আবেদন বলুন আর নিবেদন বলুন দয়া করে এই গল্পের নায়িকাকে কে গল্পের শেষে নতুন বাচ্চা নিয়ে সে যেন নিজ সংসারে ফেরত যেতে পারে সে ব্যবস্থা করবেন । এই আবেদন নিবেদন করার কারন আছে দেখুন গল্পের নায়িকার বয়স অলরেডি 44 ধরুন ও আর কত দিন যৌনতাতে অগ্রসর হবে ধরুন বেশির থেকে বেশি 10/12 বছর, নায়িকা এক ছেলে ছোট আর এক ছেলে কলেজ শেষ করবে সামনে এখন যদি এই 10/12 বছরের যৌনতার জন্যে পুরানো সংসারের মায়া ত্যাগ করে নতুন সংসার শুরু করে তা হলে তার বর্তমান দুই ছেলের কি হবে ভবিষ্যতে।

দাদা আপনার গল্প আপনি ঠিক করবেন কি করবেন তবুও নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। দেখবেন ঘরের লক্ষ্মী যেন শেষে ঘরে ফেরত আসে নিজের এত বছরের বানানো সংসারে, সেই দিকে একটু দেখবেন দাদা।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 4 users Like Boti babu's post
Like Reply
#57
superb! Awesome update
[+] 2 users Like Bebo.'s post
Like Reply
#58
Great story! Wonderful writings!
Like Reply
#59
Awesome story! Outstanding and stunning writings!
Like Reply
#60
Absolutely fantastic and wonderful story!
Like Reply




Users browsing this thread: 20 Guest(s)