Thread Rating:
  • 176 Vote(s) - 3.39 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery হেমন্তের অরণ্যে
#21
yr):.. Welcome back
[+] 1 user Likes Fardin ahamed's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#22
(03-10-2022, 09:04 PM)Henry Wrote:
হেমন্তের অরণ্যে 

(এই উপন্যাসের চরিত্র, স্থান সমস্ত কাল্পনিক। ...  

...
ফস করে অবান্তর ভাবে কাবেরী জিজ্ঞেস করল---বাড়ী ফিরছ কখন? 

---সাড়ে আটটা বাজবে...যা চাপ ইয়ার এন্ডিংয়ে। তোমার মত কলেজের সাতটা-দশটা চাকরী করলে সুখী হতে পারতাম। 

কাবেরী এড়িয়ে গিয়ে...
... ... ...
++++++


হালকা একটা তাঁত শাড়ি পরেই বাজার বেরিয়েছে কাবেরী। পাপান ঠিকই বলেছিল, জ্যৈষ্ঠের সন্ধ্যেটা বেশ গুমোট হয়ে রয়েছে। এমনিতে কলকাতায় গাছ কমে যাচ্ছে, তার ওপর ফ্ল্যাট বাড়ি উঠতেই থাকছে। ...
... ... ...
চলবে

আপনার নতুন গল্প দেখতে পেয়ে খুবই খুশী হলাম. আপনি এখানকার সেরা লেখকদের একজন. আমি আপনার গুণমুগ্ধ আপনার প্রথম লেখা থেকেই. আপনার প্রত্যেকটা লেখাই দারুণ. এই গল্পটিও আপনার লেখার স্বভাবসুলভ ছন্দে শুরু হয়েছে. অবশ্যই আরো একটি অসামান্য কাহিনী আমরা পেতে চলেছি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই.

আপনার প্রথম পর্বে, গল্পের সময়/কাল নিয়ে একটি অসঙ্গতি চোখে পড়লো. আপনি কাবেরী-অরুনাভের কথোপকথনে উল্লেখ করলেন যে, ইয়ার-এন্ডিং (নিশ্চয় ফিনান্সিয়াল) চলছে, মানে ইংরেজী মার্চ মাস; বাংলায় ফাল্গুন-চৈত্র. আবার প্রথম পর্বের শেষদিকে গিয়ে উল্লেখ করলেন যে 'জৈষ্ঠ্যের সন্ধ্যে' - মানে ইংরেজী মে-এর মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি - যেটা ইয়ার এন্ডিং নয়. তাই সন্ধ্যেটা জৈষ্ঠ্যের না হয়ে চৈত্র্যের সন্ধ্যে হলে অনেকটা হিসেবের কড়ি মিলে যায়. হ্যাঁ, অবশ্যই কোনভাবে ভুলটা 'Race 3' পর্যায়ের হয়ে যায়নি. অনুরোধ করবো, একবার দেখে নিন.

আরেকটি অনুরোধ ছিলো. আপনার একটি অসাধারণ গল্প "মঙ্গলসূত্র" অসমাপ্ত রয়ে গিয়েছিলো. আপনি "হেমন্তের অরণ্য" গল্পটি শেষ করার পর প্লীজ "মঙ্গলসূত্র" গল্পটির দিকে নজর দিন. আজও আশা রাখি, "মঙ্গলসূত্র" গল্পটি পুরোটা পড়ার.

যথারীতি পাঁচ তারা রেটিং, লাইক আর রেপু পয়েন্টস রইলো. ভালো থাকবেন.
[+] 4 users Like ray.rowdy's post
Like Reply
#23
সেই পুরানো লেখার স্বাদ যেন আবারো ফিরে পেলাম। অ্যাডাল্ট অমনিবাস এর প্রতিটা গপ্পো আজও মনে আছে। বিশেষ করে ক্ষিদে, ব্রুট, ছাই চাপা আগুন দারুন ছিল। সুখ অসুখ তো অবশ্যই। এবার আশা করি এই নতুন কাহিনীও মন জয় করবে সকলের। নিয়মিত আপডেট পাবো আশা করি।
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#24
Please to be continued.
মঙ্গলসূত্র গল্পটা complete করলে ভালোলাগতো
[+] 1 user Likes sankpan's post
Like Reply
#25
কাবেরী গোটা চারেক তাঁত ছাড়া, কয়েকটা সুতির শাড়ি নিয়েছে। গরমে সুতির শাড়ির বিকল্প নেই। ব্যাগ গোছানোর সময়ে টুথপেস্ট, ব্রাশ, সাবান শ্যাম্পু ছাড়াও নিজের স্বল্প কিছু প্রসাধনী ভরে নিয়েছে। পাপান বেছে বেছে কয়েক খানা বই দিয়েছে। ট্রেনেই যাবার কথা ছিল। আচমকা তাতান বলল--মা বাইরে দেখো একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। হেমেন মামা বোধ হয় গাড়ি এনেছেন।
---গাড়ী! বিস্মিত হল কাবেরী।
অরুণাভ এসময় অফিস বেরিয়ে গেছে। দুই ছেলের কপালে চুমু দিয়ে বেরোলো কাবেরী। যাবার সময় ছেলেদুটোকে পই পই করে বলে গেল---অহেতুক ঝগড়া করবিনা। আর বাপি যা বলবে শুনবি।
মনে মনে ভাবলো ছেলে দুটোই না কত বড় হয়ে গেল। এই প্রথমবার দুটো ছেলেকে ছেড়ে এত দিনের জন্য সে কোথাও যাচ্ছে।
গাড়ির পেছনের সিটের দরজাটা খুলে দিলেন হেমেন দা। ব্যাগটা ভারী হয়ে গেছে, গাড়িতে তুলে দিতে ছেলে দুটোকে ডাকলে ভালো হত। অমন সময় দেবদুতের মতো সামনের সিট থেকে নেমে এলো অসীম। কাবেরী চমকে গেল। অসীম হেসে বলল---কেমন সারপ্রাইজ দিলাম বলো। হেমেন দা যে তোমার দাদা এদ্দিন জানতামই না।
---ললিতা কোথায়?
---কাননুর গেছে। ওর বাপের বাড়ি। তাই হেমেন দা যখন প্রস্তাব দিল, ভাবলাম কদিন ঘুরে আসলেই পারা যায়।

গাড়ী চলতে শুরু করল। ড্রাইভার ছেলেটা অল্প বয়সী। ওর পাশে বসেছে অসীম। হেমেন দা আর কাবেরী পেছনের সিটে।
কলকাতা ছাড়িয়ে ওরা যখন বেরোলো তখন বারোটা দশ। একবার রাস্তায় নেমে চা খেল ওরা।কাবেরীর অবশ্য এমন দুপুরে চা খাবার অভ্যেস নেই। গাড়িতেই বসে রইল ও।
ওরা যখন গাড়ির কাছে ফিরল হেমেন দা বললেন---আমাকে সামনে দে অসীম।
কাবেরীর পাশে বসল অসীম। রোদ বাড়ছে। অসীম বলল--- হেমেন দা জানলাটা আটকে দাও। এসি দেব।
কাবেরী ওর পাশের জানলাটা আটকানোর চেষ্টা করল। বেশ শক্ত। বুঝতে পেরে অসীম কাবেরীর ওপর ঝুঁকে আটকে দিল জানলাটা।
অসীমের এত কাছাকাছি আসার অস্বস্তি কাটিয়ে কাবেরী বলল---সন্তুর কোন ক্লাস হল?
সন্তু অসীম ও ললিতার ছেলে। ওইটুকু ছেলের গানের গলা ভারী সুন্দর।
---এইবার সেভেন হল। সারাদিন গান-বাজনায় আগ্রহ। পড়ায় বড্ড ফাঁকি দিচ্ছে।
হেমেন দা বললেন---ও যেটা চায় করুক না, কখনো বাধা দিস না।

হাইওয়ে দিয়ে গাড়ি ছুটছে, এ কথা ও কথায় অসীম, কাবেরী, হেমেনের সময়টা কেটে যাচ্ছে। আটটার সময় পুরুলিয়া ঢুকল ওদের গাড়ি। রাতের অন্ধকারে আস্তে আস্তে ওদের গাড়ি জঙ্গলের রাস্তা ধরে এগোচ্ছে। হেমেন দা বললেন---খুকি, দিনের আলো হলে দেখতে পেতিস অযোধ্যা পাহাড়।
জানলাগুলো খোলা, সাঁই সাঁই বাতাস এসে ঢুকছে। অসীম বলল---একটা গান ধরো কাবেরী।
----ওমা! গান?
---ধর না, হেমেন দাও বললেন সিগারেট ধরিয়ে।
কাবেরী গলা ছাড়লো। শেষ কবে গান গেয়েছে মনে পড়ল না। অসীমদের কবিতাবাসরে একবার গেয়েছিল। সেটা নজরুল গীতি।

"অনেক দিনের শূন্যতা মোর ভরতে হবে
মৌনবীনার তন্ত্র আমার জাগাও সুধারবে,
বসন্তসমীরে তোমার ফুল-ফুটানো বাণী
দিক পরানে আনি-
ডাকো তোমার নিখিল-উৎসবে
মিলন শতদলে"
---আর পারবো না। এই চল্লিশোর্ধ্ব বয়সে... গলা বলে আর কিছু আছে নাকি।

অসীম বলল---এ তো বসন্তের গান। এখন তো গ্রীষ্ম।
কাবেরী লজ্জায় কুটি গিয়ে হেসে বলল---যা মনে এলো গাইলাম। তুমিও তো ভালো গান গাও। বাব্বা! সেই ইউনিভার্সিটির ফাংশনে গেয়েছিল---
"মনে কী দ্বিধা রেখে গেলে চলে
মনে কী দ্বিধা রেখে গেলে চলে সে দিন ভরা সাঁঝে..."

অসীমও সঙ্গ দিয়ে গাইল---
''যেতে যেতে দুয়ার হতে কী ভেবে ফিরালে মুখখানি-
কী কথা ছিল যে মনে"

হেমেন দা বললেন---তোদের দুজনের কি ইউনিভার্সিটিতে কোনো কেমিস্ট্রি ছিল।
অসীম হেসে বলল---যা ছিল আমারই। ওর মনে তখন তরুণ ব্যাংক ম্যানেজার অরুণাভ চক্রবর্তী বাসা বেঁধেছেন।
--এই যাঃ! তাতানের বাবাকে ফোন করা হল না।
হেমেন দা বললেন---একদম হাঁসড়া গিয়ে। আর এই জঙ্গলে কোথাও টেলিফোন বুথ নেই।

ড্রাইভার আলমগীর আচমকা ব্রেক কষে গাড়ি আটকালো।
---কী হল আলমগীর? হেমেন দা তটস্থ হয়ে বললেন।
---সামনে দেখেন সার... হাতি। ফিসফিসিয়ে বলল আলমগীর।
ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় গোটা পনেরো হাতি। আলমগীর গাড়ির হেডলাইট নিভিয়ে রেখেছে। চাঁদের আলোতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

এমন হাতি একবার দক্ষিণ ভারতে দেখেছিল কাবেরী। তখন পাপানের জন্ম হয়নি। তাতান খুব ছোট। ওর কি আনন্দ। তারপর ডুয়ার্স এ হাতির পিঠে দুই ভাই মিলে সাফারি করেছিল। তবে এমন বুনো হাতি দেখার মজাই আলাদা। আস্তে আস্তে পালটা নেমে গেল স্থাণু জমি দিয়ে। গাড়িটা চলতে শুরু করতেই কাবেরী গান ধরল---
"মনে রবে কি না রবে আমারে
মনে রবে কি না রবে আমারে সে আমার মনে নাই।
ক্ষণে ক্ষণে আসি তব দুয়ারে, অকারণে গান গাই.."
+++++++
Like Reply
#26
অরুণাভ অফিস থেকে ফিরে দেখল বাড়িটা নিঃঝুম হয়ে আছে। ড্রয়িং রুমের আলো নেভানো। তাতান এখনো ফেরেনি। পাপান এখনো ঘুমোচ্ছে। মা থাকলে এতক্ষণ ঘুমানোর জো নেই ওর। বকাঝকা দিয়ে ঠিক ডেকে তুলবেই। অসীম মোজা খুলতে খুলতে গম্ভীর গলায় হাঁক দিল----পাপান!
ধড়ফড় করে উঠে বসল পাপান। ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখল রাত্রি ন'টা। চোখ ডলতে ডলতে বেরিয়ে এলো ও।
---এটা ঘুমোবার সময় হল? ধমক দিয়ে উঠল অরুণাভ।---মা ফোন করেছে?
---না তো।
---মালতী এসেছিল?
---হ্যা রান্না করে দিয়ে গেছে।
---তোর মায়ের ট্রেনটা যেন কটায় ছিল? কাঁধে তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢোকার মুখে বলল অরুণাভ।
বেসিনে চোখে জলের ঝাপটা দিয়ে মুখটা মুছতে মুছতে পাপান বাবার দিকে তাকালো খানিকটা বিস্ময়ে---মা তো ট্রেনে যায়নি। হেমেন মামা গাড়ি এনেছিল। অসীম কাকুও ছিল।
---অসীম! কুঁচকে উঠল অরুণাভর ভ্রু জোড়া। অসীমকে কেন যেন অরুণাভর পছন্দ নয়। বাড়ীতে কবিতার আসর বসাতো, যা অরুণাভর একবারে নাপসন্দ ছিল। অসীম যে ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় কাবেরীর প্রেমে পড়েছিল, এ কথা অরুণাভ জানতো। তা নিয়ে কখনো মাথা ঘামায়নি অরুণাভ।এখন অরুণাভ-কাবেরী কিংবা অসীম, তারা প্রত্যেকেই মধ্যবয়সের নরনারী, নতুন করে প্রেম-প্রণয়ের বিষয় নেই। বিষয়টি হচ্ছে বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে ওই গান-বাজনা, বিদঘুটে সব কাব্য আলোচনা আর ঘনঘন চা এসব দেখলেই গা জ্বলে যেত অরুণাভর।

অদ্ভুত এক প্রাচীন পরিবেশ মনে হচ্ছে কাবেরীর। দোতলা বিরাট সেকেলে বাড়িটাকে জোছনা রাতের আবছা আলোয় দৈত্য বলে মনে হচ্ছে। দিনের আলো ছাড়া চারপাশ বোঝা দায়। আলমগীর আর অসীম হাত লাগিয়ে ব্যাগ পত্তর নামিয়ে এনেছে। এই বাড়িতে কোথাও বিদ্যুৎ নেই। চওড়া বারান্দায় টেবিলের ওপর যেটা জ্বলছে, সেটা হ্যারিকেন। একটা পনেরো-ষোল বছরের আদিবাসী মেয়ে বাতি দিয়ে জ্বেলে দিল আরো দুটো, সব মিলিয়ে তিনটে হ্যারিকেন এখন। হ্যারিকেন জিনিসটাকে কতদিন পরে দেখল কাবেরী। তাতান-পাপান থাকলে, তাদের কাছে নিঃসন্দেহে এটা প্রাগৈতিহাসিক মনে হত।

হেমেন দা আদিবাসী মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললেন---এই হল কুন্তী। মহাভারতের নয়। হাঁসড়ার মুন্ডা পাড়ার মেয়ে। যখন যা প্রয়োজন একেই বলে নিস।
কাবেরী ব্যাগ থেকে জিনিস পত্তর বের করাতে করাতে বলল--বাংলা বোঝে তো?
হেমেন দা হেসে বলল---এই এলাকার বৈচিত্র্য এই যে, এখানে সকলে বাংলা, হিন্দি আর মুন্ডাদের নিজের ভাষা মুন্ডারা বোঝে আর বলতে পারে।
কাবেরী একবার স্নানে যেতে চায়। হাতের ওপর শাড়ি-ব্লাউজ, তোয়ালে নিয়ে বলল---কুন্তী আমাকে একবার বাথরুমটা দেখিয়ে দাও দেখি।
হ্যারিকেন হাতে ঝুলিয়ে মেয়েটা এগোতে লাগলো।

মান্ধাতা আমলের বাথরুম। দেওয়ালে অজস্র ফাটল। লতাপাতা, বটের চের গজিয়েছে তার ভেতরে। তবে বেশ বড় বাথরুমটা। লম্বাটে। একটা বড় চৌবাচ্চা জলে পরিপূর্ণ। শাড়ির ভেতর হাতটা নিয়ে গিয়ে ব্লাউজের হুকটা আলগা করে দিল কাবেরী। লক্ষ্য করল কুন্তী তখনও হ্যারিকেন হাতে দাঁড়িয়ে।
---হ্যারিকেনটা রেখে তুমি চলে যাও।
মেয়েটা কোনো কথা না বলে তাই করলো। দরজাটা বন্ধ করে দিল কাবেরী। বাথরুমের ভেতরে হ্যারিকেনের আলো। মগে করে চৌবাচ্চা নিয়ে গায়ে জল দিতেই বুঝতে পারলো, ভারী শীতল জল।

অরুণাভ সকালের কাগজ রাতে পড়ে। তাতান ফিরেছে। টিভিটা অন করে ও ততক্ষণ ধরে একটা পুরোনো খেলার হাইলাইটস দেখে যাচ্ছে। পাপান পড়ার ঘরে। টেলিফোনটা রিং হতেই কাগজ থেকে চোখ সরিয়ে অরুণাভ তাকালো রিসিভারের দিকে। তাতানই উঠে গিয়ে ধরল ফোনটা।
----মা?
--কিরে বাপি এসেছে?
---হ্যা। তুমি পৌঁছেছ?
---হ্যা। ভাই কি করছে?
---পড়ার ঘরে।
---মালতী এসেছিল?
---হ্যা। রান্না করে দিয়ে গেছে।
---ছাদে কাপড়-চোপড়গুলো নামিয়ে রেখেছে?
---ভাই জানে, আমি তো বিকেলে ছিলাম না।
---তোর বাপি কোথায়?
তাতান বাবার দিকে চেয়ে রইল। অরুণাভ ফোনটা ধরতেই কাবেরী বলল---চা খেয়েছ?
---এই তো খেলাম, নিজে বানিয়ে।
হাসলো কাবেরী---এবার নিজে বানিয়ে খেতে শেখো।
---পৌঁছালে কখন?
---আর বলো না। এত রাস্তা!
---তা পূর্বপুরুষের জমিদারী কেমন দেখলে?
---দেখলাম কি? দিনের আলোয় গোটা বাড়িটা দেখতে পাবো। মালতী কি রান্না করে দিয়ে গেছে গো?
---দেখিনি। ওই বিস্বাদ খাবার খেতে হবে কতদিন এবার।
---আঃ লক্ষ্মীটি, বেশি বাইর থেকে খাবার আনিও না। পাপানটা কাল থেকে পেটটা খারাপ বলছিল। একটু দেখো।
অরুণাভ হাসলো। বলল---কাবেরী, বেড়াতে গেছ, এসব ভাবলে চলে? তা তোমার কবি বন্ধু গেছে শুনলাম।
---হ্যা অসীম যে হেমেন দার ছাত্র তোমাকে তো আগেই বলেছিলাম। তবে ললিতা আসেনি জানো।
---তাহলে তো অসীমের প্রেমিক ভাগ্য খুলে গেল। দেখো ঘন ঘন রোমান্টিক কাব্য শুনিয়ে তোমাকেই না পাগল করে দেয়।
---ধ্যাৎ। শোনো না, ছাদে বোধ হয় কাপড়গুলো রয়ে গেছে। মালতীটার কোনো জ্ঞানগম্য নেই। আর হ্যা রাতে ওষুধগুলো খাবে। বৃষ্টি হলে ঘরের জানলাগুলো....
---এই রে বৃষ্টি এসেছে!
অরুণাভ অফিস থেকে ফেরার সময়ই লক্ষ্য করেছিল হালকা গুমোট ভাব।আকাশের দক্ষিণ পশ্চিম কোণে ঈষৎ মেঘ ছিল।

ছাদের ওপর দীর্ঘদিন পর উঠল অরুণাভ। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত টানা দড়িতে তাতান-পাপানের শর্টস, টিশার্ট, কাবেরীর শাড়ি, সায়া ব্লাউজ, অরুণাভর ট্রাউজার মেলা। আজ সকালেই মালতীকে ঘর মোছার কাজে লাগিয়ে এতগুলো জিনিস কেচেছে কাবেরী। অরুণাভ কতবার বলেছে, তবু ওয়াশিং মেশিনে কাচা পছন্দ হয় না ওর।

হেমেন দা বড় বারান্দায় সিগারেট ধরিয়ে বসেছেন। পাশেই পাজামা পরে অসীম খালি গায়ে বসে রয়েছে। অসীমের গায়ের রঙ কাবেরী বা অরুণাভর মত ফর্সা নয়। অসীম খানিকটা শ্যামলা।
হেমেন দা বললেন---খুকী কুন্তীকে বলে একটু রান্না ঘরটা দেখিস।
কাবেরী বড় ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল সাড়ে দশটা। ভাতে ভাতে রেঁধে ফেলার উপক্রম করা ছাড়া উপায় নেই। নিজেই হাত লাগালো রান্না ঘরে।
+++++++
Like Reply
#27
শুরুটা একটু পড়েই কমেন্ট না করে থাকতে পারলাম না। দুর্দান্ত একটা গল্প পড়তে যাচ্ছি...

ফিরে আসার জন্য ধন্যবাদ হেনরি দা।
[+] 1 user Likes dudhlover's post
Like Reply
#28
darun lekha
Like Reply
#29
ভালো লাগল।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
Like Reply
#30
(05-10-2022, 01:48 PM)Henry Wrote: অরুণাভ অফিস থেকে ফিরে দেখল বাড়িটা নিঃঝুম হয়ে আছে। ড্রয়িং রুমের আলো নেভানো। তাতান এখনো ফেরেনি। পাপান এখনো ঘুমোচ্ছে। মা থাকলে এতক্ষণ ঘুমানোর জো নেই ওর। বকাঝকা দিয়ে ঠিক ডেকে তুলবেই। অসীম মোজা খুলতে খুলতে গম্ভীর গলায় হাঁক দিল----পাপান!
ধড়ফড় করে উঠে বসল পাপান। ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখল রাত্রি ন'টা। চোখ ডলতে ডলতে বেরিয়ে এলো ও।
---এটা ঘুমোবার সময় হল? ধমক দিয়ে উঠল অরুণাভ।---মা ফোন করেছে?
--
+++++++

opurbo lekha o lekhak.
Like Reply
#31
খুব সুন্দর এগোচ্ছে। লিখতে থাকুন দাদা এইভাবেই
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#32
(05-10-2022, 01:48 PM)দাদা এই গল্প টা শেষ করে মঙ্গলসুত্র আবারো শুরু করেন এবং স্বর্গীয় শয্যা তাও শুরু করে দিন অপেক্ষায় থাকব আমি বাংলাদেশ থেকে আপনার অনেক বড় ফ্যান Wrote: অরুণাভ অফিস থেকে ফিরে দেখল বাড়িটা নিঃঝুম হয়ে আছে। ড্রয়িং রুমের আলো নেভানো। তাতান এখনো ফেরেনি। পাপান এখনো ঘুমোচ্ছে। মা থাকলে এতক্ষণ ঘুমানোর জো নেই ওর। বকাঝকা দিয়ে ঠিক ডেকে তুলবেই। অসীম মোজা খুলতে খুলতে গম্ভীর গলায় হাঁক দিল----পাপান!
ধড়ফড় করে উঠে বসল পাপান। ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখল রাত্রি ন'টা। চোখ ডলতে ডলতে বেরিয়ে এলো ও।
---এটা ঘুমোবার সময় হল? ধমক দিয়ে উঠল অরুণাভ।---মা ফোন করেছে?
---না তো।
---মালতী এসেছিল?
---হ্যা রান্না করে দিয়ে গেছে।
---তোর মায়ের ট্রেনটা যেন কটায় ছিল? কাঁধে তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢোকার মুখে বলল অরুণাভ।
বেসিনে চোখে জলের ঝাপটা দিয়ে মুখটা মুছতে মুছতে পাপান বাবার দিকে তাকালো খানিকটা বিস্ময়ে---মা তো ট্রেনে যায়নি। হেমেন মামা গাড়ি এনেছিল। অসীম কাকুও ছিল।
---অসীম! কুঁচকে উঠল অরুণাভর ভ্রু জোড়া। অসীমকে কেন যেন অরুণাভর পছন্দ নয়। বাড়ীতে কবিতার আসর বসাতো, যা অরুণাভর একবারে নাপসন্দ ছিল। অসীম যে ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় কাবেরীর প্রেমে পড়েছিল, এ কথা অরুণাভ জানতো। তা নিয়ে কখনো মাথা ঘামায়নি অরুণাভ।এখন অরুণাভ-কাবেরী কিংবা অসীম, তারা প্রত্যেকেই মধ্যবয়সের নরনারী, নতুন করে প্রেম-প্রণয়ের বিষয় নেই। বিষয়টি হচ্ছে বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে ওই গান-বাজনা, বিদঘুটে সব কাব্য আলোচনা আর ঘনঘন চা এসব দেখলেই গা জ্বলে যেত অরুণাভর।

অদ্ভুত এক প্রাচীন পরিবেশ মনে হচ্ছে কাবেরীর। দোতলা বিরাট সেকেলে বাড়িটাকে জোছনা রাতের আবছা আলোয় দৈত্য বলে মনে হচ্ছে। দিনের আলো ছাড়া চারপাশ বোঝা দায়। আলমগীর আর অসীম হাত লাগিয়ে ব্যাগ পত্তর নামিয়ে এনেছে। এই বাড়িতে কোথাও বিদ্যুৎ নেই। চওড়া বারান্দায় টেবিলের ওপর যেটা জ্বলছে, সেটা হ্যারিকেন। একটা পনেরো-ষোল বছরের আদিবাসী মেয়ে বাতি দিয়ে জ্বেলে দিল আরো দুটো, সব মিলিয়ে তিনটে হ্যারিকেন এখন। হ্যারিকেন জিনিসটাকে কতদিন পরে দেখল কাবেরী। তাতান-পাপান থাকলে, তাদের কাছে নিঃসন্দেহে এটা প্রাগৈতিহাসিক মনে হত।

হেমেন দা আদিবাসী মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললেন---এই হল কুন্তী। মহাভারতের নয়। হাঁসড়ার মুন্ডা পাড়ার মেয়ে। যখন যা প্রয়োজন একেই বলে নিস।
কাবেরী ব্যাগ থেকে জিনিস পত্তর বের করাতে করাতে বলল--বাংলা বোঝে তো?
হেমেন দা হেসে বলল---এই এলাকার বৈচিত্র্য এই যে, এখানে সকলে বাংলা, হিন্দি আর মুন্ডাদের নিজের ভাষা মুন্ডারা বোঝে আর বলতে পারে।
কাবেরী একবার স্নানে যেতে চায়। হাতের ওপর শাড়ি-ব্লাউজ, তোয়ালে নিয়ে বলল---কুন্তী আমাকে একবার বাথরুমটা দেখিয়ে দাও দেখি।
হ্যারিকেন হাতে ঝুলিয়ে মেয়েটা এগোতে লাগলো।

মান্ধাতা আমলের বাথরুম। দেওয়ালে অজস্র ফাটল। লতাপাতা, বটের চের গজিয়েছে তার ভেতরে। তবে বেশ বড় বাথরুমটা। লম্বাটে। একটা বড় চৌবাচ্চা জলে পরিপূর্ণ। শাড়ির ভেতর হাতটা নিয়ে গিয়ে ব্লাউজের হুকটা আলগা করে দিল কাবেরী। লক্ষ্য করল কুন্তী তখনও হ্যারিকেন হাতে দাঁড়িয়ে।
---হ্যারিকেনটা রেখে তুমি চলে যাও।
মেয়েটা কোনো কথা না বলে তাই করলো। দরজাটা বন্ধ করে দিল কাবেরী। বাথরুমের ভেতরে হ্যারিকেনের আলো। মগে করে চৌবাচ্চা নিয়ে গায়ে জল দিতেই বুঝতে পারলো, ভারী শীতল জল।

অরুণাভ সকালের কাগজ রাতে পড়ে। তাতান ফিরেছে। টিভিটা অন করে ও ততক্ষণ ধরে একটা পুরোনো খেলার হাইলাইটস দেখে যাচ্ছে। পাপান পড়ার ঘরে। টেলিফোনটা রিং হতেই কাগজ থেকে চোখ সরিয়ে অরুণাভ তাকালো রিসিভারের দিকে। তাতানই উঠে গিয়ে ধরল ফোনটা।  
----মা?
--কিরে বাপি এসেছে?
---হ্যা। তুমি পৌঁছেছ?
---হ্যা। ভাই কি করছে?
---পড়ার ঘরে।
---মালতী এসেছিল?
---হ্যা। রান্না করে দিয়ে গেছে।
---ছাদে কাপড়-চোপড়গুলো নামিয়ে রেখেছে?
---ভাই জানে, আমি তো বিকেলে ছিলাম না।
---তোর বাপি কোথায়?
তাতান বাবার দিকে চেয়ে রইল। অরুণাভ ফোনটা ধরতেই কাবেরী বলল---চা খেয়েছ?
---এই তো খেলাম, নিজে বানিয়ে।
হাসলো কাবেরী---এবার নিজে বানিয়ে খেতে শেখো।
---পৌঁছালে কখন?
---আর বলো না। এত রাস্তা!
---তা পূর্বপুরুষের জমিদারী কেমন দেখলে?
---দেখলাম কি? দিনের আলোয় গোটা বাড়িটা দেখতে পাবো। মালতী কি রান্না করে দিয়ে গেছে গো?
---দেখিনি। ওই বিস্বাদ খাবার খেতে হবে কতদিন এবার।
---আঃ লক্ষ্মীটি, বেশি বাইর থেকে খাবার আনিও না। পাপানটা কাল থেকে পেটটা খারাপ বলছিল। একটু দেখো।
অরুণাভ হাসলো। বলল---কাবেরী, বেড়াতে গেছ, এসব ভাবলে চলে? তা তোমার কবি বন্ধু গেছে শুনলাম।
---হ্যা অসীম যে হেমেন দার ছাত্র তোমাকে তো আগেই বলেছিলাম। তবে ললিতা আসেনি জানো।
---তাহলে তো অসীমের প্রেমিক ভাগ্য খুলে গেল। দেখো ঘন ঘন রোমান্টিক কাব্য শুনিয়ে তোমাকেই না পাগল করে দেয়।
---ধ্যাৎ। শোনো না, ছাদে বোধ হয় কাপড়গুলো রয়ে গেছে। মালতীটার কোনো জ্ঞানগম্য নেই। আর হ্যা রাতে ওষুধগুলো খাবে। বৃষ্টি হলে ঘরের জানলাগুলো....
---এই রে বৃষ্টি এসেছে!
অরুণাভ অফিস থেকে ফেরার সময়ই লক্ষ্য করেছিল হালকা গুমোট ভাব।আকাশের দক্ষিণ পশ্চিম কোণে ঈষৎ মেঘ ছিল।

ছাদের ওপর দীর্ঘদিন পর উঠল অরুণাভ। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত টানা দড়িতে তাতান-পাপানের শর্টস, টিশার্ট, কাবেরীর শাড়ি, সায়া ব্লাউজ, অরুণাভর ট্রাউজার মেলা। আজ সকালেই মালতীকে ঘর মোছার কাজে লাগিয়ে এতগুলো জিনিস কেচেছে কাবেরী। অরুণাভ কতবার বলেছে, তবু ওয়াশিং মেশিনে কাচা পছন্দ হয় না ওর।

হেমেন দা বড় বারান্দায় সিগারেট ধরিয়ে বসেছেন। পাশেই পাজামা পরে অসীম খালি গায়ে বসে রয়েছে। অসীমের গায়ের রঙ কাবেরী বা অরুণাভর মত ফর্সা নয়। অসীম খানিকটা শ্যামলা।
হেমেন দা বললেন---খুকী কুন্তীকে বলে একটু রান্না ঘরটা দেখিস।
কাবেরী বড় ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল সাড়ে দশটা। ভাতে ভাতে রেঁধে ফেলার উপক্রম করা ছাড়া উপায় নেই। নিজেই হাত লাগালো রান্না ঘরে।
+++++++
Like Reply
#33
ধন্যবাদ দাদা আমাদের জন্য গল্প নিয়ে ফিরে আসার জন্য
Like Reply
#34
দারুণ চলছে লেখা. আরো একটা অনুরোধ ছিলো. আপনার প্রথম পর্বের font size টা অনেক বড় ছিলো, আর তৎপরবর্তী প্রত্যেকটি পর্বে font size দু'ধাপ নীচে নেমে গেছে. যদি আপনি এখন যেই font size-টা select করছেন, তার থেকে এক ধাপ উঁচু size-টা select করেন, মনে হয় পড়তে আরো সুবিধে হবে.


বর্তমানে আপনার font size.
অনুরোধ রইলো এর.
Like Reply
#35
আপনি আমার গুরু.. আপনাকে ফিরে পেয়ে
খুবই আনন্দিত আমি।
Like Reply
#36
......
Like Reply
#37
(06-10-2022, 03:35 PM)Henry Wrote: [Image: e9ff3b5f-41ff-4beb-9683-64dc08bf4dc3.png]
উপন্যাসের প্রচ্ছদ

yourock  দারুণ 
কিন্তু দাদা গল্পের আপডেট কোথায়।।।।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
Like Reply
#38
Darun suru. Asa kori chaliye jaben
[+] 1 user Likes nostonari's post
Like Reply
#39
অসাধারণ হচ্ছে
Like Reply
#40
এই যা: গোলমাল হয়ে গেল যে, আমি তো ভেবেছিলাম খুকী আর হেমেনদা এতো অসীম এলো এবার উপায়? রোমাঞ্চকতা নিয়ে অপেক্ষা করছি। হেনরী দা’র লেখা বলে কথা। বড্ড ভালো লাগছে। আপনি লিখুন আমরা আপনার সাথে আছি।
Like Reply




Users browsing this thread: 21 Guest(s)