Thread Rating:
  • 75 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL সৃষ্টি (সমাপ্ত)
(11-08-2022, 05:54 PM)Sanjay Sen Wrote: কোনো প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। শুধু মাঝে মাঝে এটা ভেবে অবাক হই এই দুজন কি একই মানুষ! যে গোলকধাঁধায় লিখছে আবার যে বিন্দা পিসির মতো অসাধারণ কিছু সৃষ্টি উপহার দিয়ে যাচ্ছে আমাদের।

প্রথমেই জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ  Namaskar  সবার সম্পর্কে বলতে পারবো না। কিন্তু আমার মনে হয় প্রকৃত শিল্পী সত্তা যার মধ্যে বর্তমান সেই লেখকের পক্ষে কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এবং একেবারে ভিন্ন স্বাদের সৃষ্টি ..  এই দুই ধরনের সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী লেখা অবশ্যই সম্ভব .. পুরোটাই মনের ব্যাপার। অর্থাৎ সে আদৌ লিখতে চায় কিনা, কিংবা লেখার তাগিদ খুঁজে পায় কিনা। 
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
ক্ষুরধার মস্তিষ্কের কাজ অনবদ্য হবেই। 
কেউ কল্পনাতেও ভাববে না একজন ইরোটিক লেখক ও এমন নাট্যকার হতে পারে। এতো গোছানো স্ক্রিপ্ট অনেকদিন পর দেখলাম। ভবিষ্যতে এটার মঞ্চায়নে আরও বেশি খুশি হবো কারণ এই স্ক্রিপ্টের সেই দম আছে। পুরোটা মাথায় বসে গেছে চোখ বন্ধ করে একেকটা অংকের দৃশ্য উপলব্ধি করতে পারছি।
তুমি সত্যিই গ্রেট দাদা.... Heart Heart
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(12-08-2022, 01:11 AM)nextpage Wrote: ক্ষুরধার মস্তিষ্কের কাজ অনবদ্য হবেই। 
কেউ কল্পনাতেও ভাববে না একজন ইরোটিক লেখক ও এমন নাট্যকার হতে পারে। এতো গোছানো স্ক্রিপ্ট অনেকদিন পর দেখলাম। ভবিষ্যতে এটার মঞ্চায়নে আরও বেশি খুশি হবো কারণ এই স্ক্রিপ্টের সেই দম আছে। পুরোটা মাথায় বসে গেছে চোখ বন্ধ করে একেকটা অংকের দৃশ্য উপলব্ধি করতে পারছি।
তুমি সত্যিই গ্রেট দাদা.... Heart Heart

অফুরান ভালোবাসা  Heart Heart ভালো থাকো এবং লিখতে থাকো
Like Reply
[Image: FB-IMG-1660631988623.jpg]

~ উপেক্ষিত নায়ক ~

মহাভারতের এক উপেক্ষিত মহানায়ক যুযুৎসু, ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র হয়েও লড়েছিলেন পাণ্ডবদের পক্ষে।
ধৃতরাষ্ট্রের সন্তানলাভের ইচ্ছা অদৃষ্টের খেয়ালে বার বার বিঘ্নিত হচ্ছিল। তখন হস্তিনাপুরে এসেছিলেন বশিষ্ঠ মুনির প্রপৌত্র ও পরাশর মুনির পুত্র জ্ঞানান্বেষী ঋষি ব্যাসদেব। ধৃতরাষ্ট্রজায়া গান্ধারী ব্যাসদেবের যথাসম্ভব সেবা করেছিলেন এবং তার পুত্রলাভের ইচ্ছা ব্যাসদেবকে জানিয়েছিলেন। গান্ধারীর আতিথ্যে খুশি হয়ে ব্যাসদেব তাঁকে শতপুত্রের বর দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে ধৃতরাষ্ট্রও সন্তানলাভের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। কারণ গান্ধারীর গর্ভধারণের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছিল। বংশরক্ষার তাগিদে ধৃতরাষ্ট্র বৈশ্য দাসী সুগধার (মতান্তরে সৌবলী) সঙ্গে মিলিত হন। তখনকার সময় রাজবংশে এই প্রথা প্রচলিত ছিল।

যথাসময়ে গান্ধারী ও সুগধা নামের দাসীটি গর্ভবতী হলেন। গান্ধারীর উদর এতই বড় হয়েছিল স্বর্গের দেবতারাও আশঙ্কিত হয়েছিলেন গান্ধারী ও গর্ভের সন্তানদের জীবন নিয়ে। সবার আশঙ্কাকে সত্যি করে গর্ভপাত হয়ে গিয়েছিল গান্ধারীর। কিন্তু ব্যাসদেবের মতো মহাঋষি বর বিফলে যেতে পারে না।
গান্ধারীর গর্ভপাত হওয়ার পর, গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসা মাংসপিণ্ড থেকে ব্যাসদেব ১০১টি ভ্রূণ আলাদা করে ১০১টি ঘিয়ের কলসিতে রাখলেন। প্রথম কলসি থেকে জন্ম নিয়েছিলেন দুর্যোধন। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাঁর কান্নার আওয়াজ শুনে পৃথিবীর সবকটি জঙ্গলের ভয়ঙ্কর পশুরা একযোগে চিৎকার করে উঠেছিল। যা ছিল অত্যন্ত অশুভ লক্ষণ।

দুর্যোধনের জন্মের এক মাস পরে বাকি ১০০টি কলসি থেকে জন্ম নিয়েছিলেন ধৃতরাষ্ট্রের এক কন্যা এবং আরও নিরানব্বই জন পুত্র। কন্যার নাম ছিল দুঃশলা। একই সময় দাসী মা সুগধার গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন মহাভারতের এক উপেক্ষিত বীর যুযুৎসু। যিনি কৌরব হওয়া সত্ত্বেও ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র হওয়ার কৌলীন্য পাননি কোনও দিন। হস্তিনাপুর দাপিয়ে বেড়াতেন দুর্যোধন ও তাঁর ৯৯জন ভাই। যুযুৎসুর জীবন কেটেছে একা, দাসীপুত্র হওয়ার অপরাধে।

তৃতীয় কৌরব বিকর্ণ দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময় প্রতিবাদ করলেও কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরবপক্ষে ছিলেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে ভীমের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ হয়। সেই সময় ভীম দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণকালে বিকর্ণর ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিলে বিকর্ণ বলেছিলেন, ‘তখন তা আমার ন্যায় মনে হয়েছিল, এখন যুদ্ধ আমার কাছে ন্যায় মনে হচ্ছে। এসো ভীম যুদ্ধ করো।” বিকর্ণও ন্যায়ের পথ থেকে সরে গিয়ে দুর্যোধনের সঙ্গেই ছিলেন। যুযুৎসু ছিলেন একমাত্র কৌরব, যিনি স্রোতের বিপক্ষে হেঁটে ধর্মের পথে গিয়েছিলেন।

যিনি কখনও নিজের বিবেকের সঙ্গে তঞ্চকতা করেননি। আমৃত্যু ছিলেন ন্যায়ের পথে। কারণ কৌরব হওয়া সত্ত্বেও ধর্ম ও অধর্ম বিষয়ে তাঁর ছিল জ্ঞান ছিল গভীর। তবুও মহাভারতের রথী মহারথীদের ভিড়ে চাপা পড়ে গেছিল এই অসামান্য ব্যক্তিত্বটির অবদান।
মাত্র কয়েকজন কৌরব জানতেন অশুভ শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে তাঁদের কুলে। তাঁরা তাঁদের বিবেকের আহ্বানকে উপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু যুযুৎসু ছিলেন ব্যতিক্রম। বাল্যকাল থেকেই পাণ্ডবদের সাহায্য করে গিয়েছিলেন। দুর্যোধনের তঞ্চক প্রবৃত্তি থেকে জন্ম নেওয়া নানা হীন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা আগাম পাণ্ডবদের জানিয়ে দিয়েছিলেন। একবার মধ্যমপাণ্ডব ভীমকে পানীয় জলে বিষ প্রয়োগে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন দুর্যোধন। কিন্তু যুযুৎসু আগেই সতর্ক করায় ভীম নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যান।

মহাভারতের যুদ্ধকে বলা হয় ধর্মযুদ্ধ। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে যুযুধান দু’পক্ষের সমস্ত কুশীলবকে যে কোনও একটি পক্ষ অবলম্বনের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। নিঃসঙ্কোচে ও দ্বিধাহীনভাবে যে কেউ যে কোনও পক্ষে তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী যোগদান করতে পারতেন। যুযুৎসু বিবেকের টানে  চলে গিয়েছিলেন পাণ্ডব শিবিরে। দুর্যোধনের আর এক ভাই বিকর্ণ, যাঁর সঙ্গে যুযুৎসুর ছিল সখ্যতা, অত্যন্ত সৎ হয়েও তিনি রয়ে গিয়েছিলেন অধর্মের শিবিরে।

অনেকে ভাবেন, যুযুৎসু’র পাণ্ডব শিবিরে যাওয়া কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ওপর প্রভাব ফেলার মতো কোনও ঘটনাই ছিল না। কিন্তু সত্যিই কি তাই! যুদ্ধবিদ্যায় যুযুৎসুর সঙ্গে দুর্যোধন বাদে অন্য কোনও ধৃতরাষ্ট্রপুত্রের তুলনাই হয় না। তিনি ছিলেন কৌরবকুলে থাকা সেই বিরল শ্রেণির যোদ্ধাদের একজন, যাঁদের বলা হত অতিরথী। যিনি একা একইসঙ্গে ৬০০০০ সেনার সঙ্গে লড়তে পারতেন। যুযুৎসু কৌরবপক্ষে থাকলে পাণ্ডবদের যুদ্ধজয় সম্ভবত আরও বিলম্বিত হত।

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ চলাকালীন যুযুৎসু দেখেছিলেন, তাঁর পিতার ঔরসজাত সন্তানরা একে একে ধরাশায়ী হচ্ছেন। প্রিয় গুরুজন ও আচার্যরা প্রাণ হারাচ্ছেন। তবুও ন্যায়ের পথে অবিচল হয়ে রক্তের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন যুযুৎসু। মহাভারতের যুদ্ধের শেষে জীবিত ছিলেন ১১জন এবং যুযুৎসু ছিলেন যুদ্ধশেষে জীবিত থাকা একমাত্র ধৃতরাষ্ট্রপুত্র।

যুদ্ধের পর অশান্ত হয়ে উঠেছিল হস্তিনাপুর। যুযুৎসু এর কারণ জানতে হস্তিনাপুরে গেলে নগরবাসীরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁকে কৌরবদের হত্যাকারী ও প্রতারক বলেন। যুযুৎসু জানতেন সত্যের পথ কোনও দিন মসৃণ হয় না, তাই সামান্যতম প্রতিবাদও করেননি। সমস্ত অপমান সহ্য করেছিলেন, সময়ের হাতে সত্যকে সঁপে দিয়ে। মহাপ্রস্থানে যাওয়ার আগে পাণ্ডবরা হস্তিনাপুরের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন যুযুৎসুকে। কিন্তু রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করে গিয়েছিলেন অর্জুনের পৌত্র পরীক্ষিৎকে। আপাতশান্ত, ধীরস্থির অথচ মহাপরাক্রমশালী মহানায়ক যুযুৎসু তাই মহাভারতের শেষ পর্বেও রয়ে গিয়েছিলেন উপেক্ষিত।

- ★★ -

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 10 users Like Bumba_1's post
Like Reply
(16-08-2022, 12:25 PM)Bumba_1 Wrote:
[Image: FB-IMG-1660631988623.jpg]

~ উপেক্ষিত নায়ক ~

মহাভারতের এক উপেক্ষিত মহানায়ক যুযুৎসু, ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র হয়েও লড়েছিলেন পাণ্ডবদের পক্ষে।
ধৃতরাষ্ট্রের সন্তানলাভের ইচ্ছা অদৃষ্টের খেয়ালে বার বার বিঘ্নিত হচ্ছিল। তখন হস্তিনাপুরে এসেছিলেন বশিষ্ঠ মুনির প্রপৌত্র ও পরাশর মুনির পুত্র জ্ঞানান্বেষী ঋষি ব্যাসদেব। ধৃতরাষ্ট্রজায়া গান্ধারী ব্যাসদেবের যথাসম্ভব সেবা করেছিলেন এবং তার পুত্রলাভের ইচ্ছা ব্যাসদেবকে জানিয়েছিলেন। গান্ধারীর আতিথ্যে খুশি হয়ে ব্যাসদেব তাঁকে শতপুত্রের বর দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে ধৃতরাষ্ট্রও সন্তানলাভের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। কারণ গান্ধারীর গর্ভধারণের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছিল। বংশরক্ষার তাগিদে ধৃতরাষ্ট্র বৈশ্য দাসী সুগধার (মতান্তরে সৌবলী) সঙ্গে মিলিত হন। তখনকার সময় রাজবংশে এই প্রথা প্রচলিত ছিল।

যথাসময়ে গান্ধারী ও সুগধা নামের দাসীটি গর্ভবতী হলেন। গান্ধারীর উদর এতই বড় হয়েছিল স্বর্গের দেবতারাও আশঙ্কিত হয়েছিলেন গান্ধারী ও গর্ভের সন্তানদের জীবন নিয়ে। সবার আশঙ্কাকে সত্যি করে গর্ভপাত হয়ে গিয়েছিল গান্ধারীর। কিন্তু ব্যাসদেবের মতো মহাঋষি বর বিফলে যেতে পারে না।
গান্ধারীর গর্ভপাত হওয়ার পর, গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসা মাংসপিণ্ড থেকে ব্যাসদেব ১০১টি ভ্রূণ আলাদা করে ১০১টি ঘিয়ের কলসিতে রাখলেন। প্রথম কলসি থেকে জন্ম নিয়েছিলেন দুর্যোধন। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাঁর কান্নার আওয়াজ শুনে পৃথিবীর সবকটি জঙ্গলের ভয়ঙ্কর পশুরা একযোগে চিৎকার করে উঠেছিল। যা ছিল অত্যন্ত অশুভ লক্ষণ।

দুর্যোধনের জন্মের এক মাস পরে বাকি ১০০টি কলসি থেকে জন্ম নিয়েছিলেন ধৃতরাষ্ট্রের এক কন্যা এবং আরও নিরানব্বই জন পুত্র। কন্যার নাম ছিল দুঃশলা। একই সময় দাসী মা সুগধার গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন মহাভারতের এক উপেক্ষিত বীর যুযুৎসু। যিনি কৌরব হওয়া সত্ত্বেও ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র হওয়ার কৌলীন্য পাননি কোনও দিন। হস্তিনাপুর দাপিয়ে বেড়াতেন দুর্যোধন ও তাঁর ৯৯জন ভাই। যুযুৎসুর জীবন কেটেছে একা, দাসীপুত্র হওয়ার অপরাধে।

তৃতীয় কৌরব বিকর্ণ দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময় প্রতিবাদ করলেও কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরবপক্ষে ছিলেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে ভীমের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ হয়। সেই সময় ভীম দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণকালে বিকর্ণর ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিলে বিকর্ণ বলেছিলেন, ‘তখন তা আমার ন্যায় মনে হয়েছিল, এখন যুদ্ধ আমার কাছে ন্যায় মনে হচ্ছে। এসো ভীম যুদ্ধ করো।” বিকর্ণও ন্যায়ের পথ থেকে সরে গিয়ে দুর্যোধনের সঙ্গেই ছিলেন। যুযুৎসু ছিলেন একমাত্র কৌরব, যিনি স্রোতের বিপক্ষে হেঁটে ধর্মের পথে গিয়েছিলেন।

যিনি কখনও নিজের বিবেকের সঙ্গে তঞ্চকতা করেননি। আমৃত্যু ছিলেন ন্যায়ের পথে। কারণ কৌরব হওয়া সত্ত্বেও ধর্ম ও অধর্ম বিষয়ে তাঁর ছিল জ্ঞান ছিল গভীর। তবুও মহাভারতের রথী মহারথীদের ভিড়ে চাপা পড়ে গেছিল এই অসামান্য ব্যক্তিত্বটির অবদান।
মাত্র কয়েকজন কৌরব জানতেন অশুভ শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে তাঁদের কুলে। তাঁরা তাঁদের বিবেকের আহ্বানকে উপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু যুযুৎসু ছিলেন ব্যতিক্রম। বাল্যকাল থেকেই পাণ্ডবদের সাহায্য করে গিয়েছিলেন। দুর্যোধনের তঞ্চক প্রবৃত্তি থেকে জন্ম নেওয়া নানা হীন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা আগাম পাণ্ডবদের জানিয়ে দিয়েছিলেন। একবার মধ্যমপাণ্ডব ভীমকে পানীয় জলে বিষ প্রয়োগে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন দুর্যোধন। কিন্তু যুযুৎসু আগেই সতর্ক করায় ভীম নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যান।

মহাভারতের যুদ্ধকে বলা হয় ধর্মযুদ্ধ। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে যুযুধান দু’পক্ষের সমস্ত কুশীলবকে যে কোনও একটি পক্ষ অবলম্বনের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। নিঃসঙ্কোচে ও দ্বিধাহীনভাবে যে কেউ যে কোনও পক্ষে তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী যোগদান করতে পারতেন। যুযুৎসু বিবেকের টানে  চলে গিয়েছিলেন পাণ্ডব শিবিরে। দুর্যোধনের আর এক ভাই বিকর্ণ, যাঁর সঙ্গে যুযুৎসুর ছিল সখ্যতা, অত্যন্ত সৎ হয়েও তিনি রয়ে গিয়েছিলেন অধর্মের শিবিরে।

অনেকে ভাবেন, যুযুৎসু’র পাণ্ডব শিবিরে যাওয়া কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ওপর প্রভাব ফেলার মতো কোনও ঘটনাই ছিল না। কিন্তু সত্যিই কি তাই! যুদ্ধবিদ্যায় যুযুৎসুর সঙ্গে দুর্যোধন বাদে অন্য কোনও ধৃতরাষ্ট্রপুত্রের তুলনাই হয় না। তিনি ছিলেন কৌরবকুলে থাকা সেই বিরল শ্রেণির যোদ্ধাদের একজন, যাঁদের বলা হত অতিরথী। যিনি একা একইসঙ্গে ৬০০০০ সেনার সঙ্গে লড়তে পারতেন। যুযুৎসু কৌরবপক্ষে থাকলে পাণ্ডবদের যুদ্ধজয় সম্ভবত আরও বিলম্বিত হত।

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ চলাকালীন যুযুৎসু দেখেছিলেন, তাঁর পিতার ঔরসজাত সন্তানরা একে একে ধরাশায়ী হচ্ছেন। প্রিয় গুরুজন ও আচার্যরা প্রাণ হারাচ্ছেন। তবুও ন্যায়ের পথে অবিচল হয়ে রক্তের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন যুযুৎসু। মহাভারতের যুদ্ধের শেষে জীবিত ছিলেন ১১জন এবং যুযুৎসু ছিলেন যুদ্ধশেষে জীবিত থাকা একমাত্র ধৃতরাষ্ট্রপুত্র।

যুদ্ধের পর অশান্ত হয়ে উঠেছিল হস্তিনাপুর। যুযুৎসু এর কারণ জানতে হস্তিনাপুরে গেলে নগরবাসীরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁকে কৌরবদের হত্যাকারী ও প্রতারক বলেন। যুযুৎসু জানতেন সত্যের পথ কোনও দিন মসৃণ হয় না, তাই সামান্যতম প্রতিবাদও করেননি। সমস্ত অপমান সহ্য করেছিলেন, সময়ের হাতে সত্যকে সঁপে দিয়ে। মহাপ্রস্থানে যাওয়ার আগে পাণ্ডবরা হস্তিনাপুরের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন যুযুৎসুকে। কিন্তু রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করে গিয়েছিলেন অর্জুনের পৌত্র পরীক্ষিৎকে। আপাতশান্ত, ধীরস্থির অথচ মহাপরাক্রমশালী মহানায়ক যুযুৎসু তাই মহাভারতের শেষ পর্বেও রয়ে গিয়েছিলেন উপেক্ষিত।

- ★★ -

অসাধারণ!

এমনিতে মহাভারতের এই সব চরিত্র নিয়ে খুবই কম লেখা অথবা প্রতিবেদন বের হয়। এমনকি পাঠ্য পুস্তকেও খুব কম লেখা হয়ে থাকে এইসব চরিত্র নিয়ে। ফলে জন সাধারণ এদের কাহিনী বেশি জানতে পারে না। আমি খুব সম্ভবত নতুন মহাভারত টিভি সিরিয়ালেই এই ঘটনাটা প্রথম বার দেখেছিলাম। যদিও খুব ক্ষুদ্র রূপে।

আজকে আপনার এই প্রতিবেদনটা পড়ে ধৃতরাষ্টের আরেক সন্তানের বিষয়ে কিছুটা বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারলাম। আমি এটা কপি করে নিলাম।

বুম্বাদা আপনাকে নমন!!

মহাভারতে এমন বহু চরিত্র আছেন যারা অতটা চর্চিত নন। আমি তাদের বিষয়ে জানতে খুবই আগ্রহী। আপনি এই বিষয়ে বিশেষ করে আপনার একটা দৃষ্টিকোণ দিয়ে এই চরিত্র গুলোকে বিশ্লেষণ করেন। যেটা খুবই উপাদেয়। তার সঙ্গে চিন্তন এবং জ্ঞানেরও প্রসার হয়।বোঝো যায় আপনি বহু পুস্তক ঘেঁটে সেখান থেকে রিফারেন্স বের করেছেন।

আগামীকালে আপনার দৃষ্টিকোণ থেকে একলব্য, কর্ণ, গান্ধারী এবং কুন্তীর বিষয়েও জানতে পারবো।

ধন্যবাদ।



[+] 2 users Like Jupiter10's post
Like Reply
উপস্থাপনা মন্দ নয়, তবে এসব জেনে কি হবে বাল?  Tongue

[Image: Images-2-2-1.jpg]

Like Reply
(16-08-2022, 01:21 PM)Jupiter10 Wrote: অসাধারণ!

এমনিতে মহাভারতের এই সব চরিত্র নিয়ে খুবই কম লেখা অথবা প্রতিবেদন বের হয়। এমনকি পাঠ্য পুস্তকেও খুব কম লেখা হয়ে থাকে এইসব চরিত্র নিয়ে। ফলে জন সাধারণ এদের কাহিনী বেশি জানতে পারে না। আমি খুব সম্ভবত নতুন মহাভারত টিভি সিরিয়ালেই এই ঘটনাটা প্রথম বার দেখেছিলাম। যদিও খুব ক্ষুদ্র রূপে।

আজকে আপনার এই প্রতিবেদনটা পড়ে ধৃতরাষ্টের আরেক সন্তানের বিষয়ে কিছুটা বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারলাম। আমি এটা কপি করে নিলাম।

বুম্বাদা আপনাকে নমন!!

মহাভারতে এমন বহু চরিত্র আছেন যারা অতটা চর্চিত নন। আমি তাদের বিষয়ে জানতে খুবই আগ্রহী। আপনি এই বিষয়ে বিশেষ করে আপনার একটা দৃষ্টিকোণ দিয়ে এই চরিত্র গুলোকে বিশ্লেষণ করেন। যেটা খুবই উপাদেয়। তার সঙ্গে চিন্তন এবং জ্ঞানেরও প্রসার হয়।বোঝো যায় আপনি বহু পুস্তক ঘেঁটে সেখান থেকে রিফারেন্স বের করেছেন।

আগামীকালে আপনার দৃষ্টিকোণ থেকে একলব্য, কর্ণ, গান্ধারী এবং কুন্তীর বিষয়েও জানতে পারবো।

ধন্যবাদ।

প্রথমেই জানাই অনেক ধন্যবাদ।  Namaskar হ্যাঁ, এগুলো আসলে তথ্যমূলক লেখা। authentic লেখকদের বিভিন্ন লেখা থেকে সংগ্রহ করা। ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো আরো এই ধরনের LimeLight এর আড়ালে থাকা চরিত্রগুলোকে সামনে আনতে।

[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
(16-08-2022, 02:22 PM)Somnaath Wrote: উপস্থাপনা মন্দ নয়, তবে এসব জেনে কি হবে বাল?  Tongue

কিছুই হবে না .. তবে নিজে পড়তে এবং সেটাকে সাজিয়ে নিয়ে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভালো লাগে .. এই আর কি ..


 
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
দুনিয়ায় কত আছে দেখবার 
কত কি জানার কত কি শেখার

তুমি এই ভাবেই ভরিয়ে দিতে থাকো আর আমরা সমৃদ্ধ হতে থাকি।  Namaskar

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
(16-08-2022, 03:57 PM)Sanjay Sen Wrote:
দুনিয়ায় কত আছে দেখবার 
কত কি জানার কত কি শেখার

তুমি এই ভাবেই ভরিয়ে দিতে থাকো আর আমরা সমৃদ্ধ হতে থাকি।  Namaskar

অসংখ্য ধন্যবাদ  thanks অবশ্যই চেষ্টা করবো।
Like Reply
খুব সুন্দর লাগলো। অনেক কিছু জানতে পারলাম। হয়তো এমন অনেক চরিত্র ও তাদের কেন্দ্র করে কাহিনী থাকে যা আমরা সেভাবে জানতে পারিনা, চাইনা কিংবা চোখই পড়েনা। তাইতো বলে - যেথায় দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমৃত রতন। ❤
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(16-08-2022, 07:53 PM)Baban Wrote: খুব সুন্দর লাগলো। অনেক কিছু জানতে পারলাম। হয়তো এমন অনেক চরিত্র ও তাদের কেন্দ্র করে কাহিনী থাকে যা আমরা সেভাবে জানতে পারিনা, চাইনা কিংবা চোখই পড়েনা। তাইতো বলে - যেথায় দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমৃত রতন। ❤

অসংখ্য ধন্যবাদ  thanks সঙ্গে থাকার জন্য
Like Reply
(16-08-2022, 12:25 PM)Bumba_1 Wrote:
[Image: FB-IMG-1660631988623.jpg]
 

যুদ্ধের পর অশান্ত হয়ে উঠেছিল হস্তিনাপুর। যুযুৎসু এর কারণ জানতে হস্তিনাপুরে গেলে নগরবাসীরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁকে কৌরবদের হত্যাকারী ও প্রতারক বলেন। যুযুৎসু জানতেন সত্যের পথ কোনও দিন মসৃণ হয় না, তাই সামান্যতম প্রতিবাদও করেননি। সমস্ত অপমান সহ্য করেছিলেন, সময়ের হাতে সত্যকে সঁপে দিয়ে। মহাপ্রস্থানে যাওয়ার আগে পাণ্ডবরা হস্তিনাপুরের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন যুযুৎসুকে। কিন্তু রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করে গিয়েছিলেন অর্জুনের পৌত্র পরীক্ষিৎকে। আপাতশান্ত, ধীরস্থির অথচ মহাপরাক্রমশালী মহানায়ক যুযুৎসু তাই মহাভারতের শেষ পর্বেও রয়ে গিয়েছিলেন উপেক্ষিত।

- ★★ -

Heart. dada jante parlam notun kichu. dhonyobad
[+] 1 user Likes raktim's post
Like Reply
(17-08-2022, 10:19 AM)raktim Wrote: Heart. dada jante parlam notun kichu. dhonyobad

you're most welcome   welcome
Like Reply
তোমার বদৌলতে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
সত্যিই ইতিহাস শুধু জয়ীদের কথা বলে, প্রধান চরিত্রদের কথা বলে। কিন্তু আড়ালেও যে অনেক বীর থাকে অনেক মহান কুশীলব থাকে তাদের সামনে নিয়ে আসে না।
ধন্যবাদ দাদা পোষ্ট টা করার জন্য।
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(17-08-2022, 12:31 PM)nextpage Wrote: তোমার বদৌলতে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
সত্যিই ইতিহাস শুধু জয়ীদের কথা বলে, প্রধান চরিত্রদের কথা বলে। কিন্তু আড়ালেও যে অনেক বীর থাকে অনেক মহান কুশীলব থাকে তাদের সামনে নিয়ে আসে না।
ধন্যবাদ দাদা পোষ্ট টা করার জন্য।

you're most welcome  welcome
Like Reply
Exclamation 
[Image: FB-IMG-1662195931307.jpg]

~ কিছু অজানা কথা ~

দ্রৌপদী নিঃসন্দেহে মহাকাব্য মহাভারতের প্রধানতম নারী চরিত্র। মহাভারতের কাহিনি অনুসারে, তিনি ছিলেন পঞ্চ পাণ্ডবের স্ত্রী। কেমন ছিল পাঁচ স্বামীর সঙ্গে তাঁর গৃহজীবন? মহাভারত ঘাঁটলে এই বিষয়ে পাওয়া যায় কয়েকটি চমকে ওঠার মতো তথ্য—

পত্নী হিসেবে দ্রৌপদী ছিলেন নিষ্ঠাবতী। প্রত্যেক স্বামীকেই তৃপ্ত করার ক্ষমতা ছিল তাঁর। এক জন স্বামী টানা এক বছর দ্রৌপদীর ঘরে কাটানোর পরে দ্রৌপদীর সান্নিধ্য লাভের সুযোগ মিলত দ্বিতীয় স্বামীর। এই নিয়মে পর্যায়ক্রমিকভাবে চলত তাঁদের গৃহজীবন।

 এক স্বামীর সঙ্গে এক বছর কাটানোর পরে দ্বিতীয় স্বামীর কাছে যাওয়ার আগে অগ্নিতে প্রবেশ করে নিজেকে শারীরিকভাবে শুদ্ধ এবং পুনরায় কুমারী করে নিতেন দ্রৌপদী। প্রত্যেক স্বামীর ঔরসে পাঁচটি করে পুত্র সন্তানের জননী হয়েছিলেন দ্রৌপদী।
বিবাহের আগেই যুধিষ্ঠির তাঁর ভাইদের ডেকে শোনান সুন্দ-উপসুন্দ নামে দুই রাক্ষস ভ্রাতার গল্প। জানান, কীভাবে এক সুন্দরী নারীর প্রেমে পড়ে তারা পরস্পরের ধ্বংসের কারণ হয়েছিল। তিনি বোঝাতে চান, দ্রৌপদী যেন তাঁদের ভাতৃবিবাদের কারণ না হন। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই, তিনি এই নিয়ম চালু করেন যে, এক এক ভাই একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দ্রৌপদীর সঙ্গে যাপন করবেন। তারপর দ্রৌপদীর সান্নিধ্য পাবেন দ্বিতীয় ভাই। কেউ এই নিয়ম অমান্য করলে মিলবে শাস্তি। এক বার ক্ষাত্রধর্ম পালনের দায়ে অর্জুন এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটান। শাস্তিস্বরূপ তাঁকে ১২ বছর নির্বাসনে কাটাতে হয়।

 যুধিষ্ঠির যেহেতু জ্যেষ্ঠ সেহেতু তিনি স্থির করেন, দ্রৌপদীর সান্নিধ্য তিনিই সবার আগে উপভোগ করবেন। অন্য ভাইয়েরা তাঁর এই সিদ্ধান্ত মেনে নেন।
যুধিষ্ঠির তৃপ্ত হয়েছিলেন দ্রৌপদীকে কাছে পেয়ে। কিন্তু দ্রৌপদীর মনে হয়েছিল, যুধিষ্ঠিরের মধ্যে বড় বেশি আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতা ক্রিয়াশীল। নারীর সূক্ষ্ম অনুভূতি বোঝার ক্ষমতাও তাঁর কিঞ্চিৎ কম বলেই মনে হয়েছিল দ্রৌপদীর।

যুধিষ্ঠিরের পর একে একে ভীম, অর্জুন ও নকুল ও সহদেব দ্রৌপদীর সঙ্গ লাভ করেন। দ্রৌপদীর প্রতি ভীমের ভালবাসা ছিল প্রগাঢ়। পঞ্চ স্বামীর মধ্যে তিনিই সর্বাধিক ভালবাসতেন দ্রৌপদীকে। দ্রৌপদীর সমস্ত ছোটখাটো ইচ্ছাপূরণের ব্যাপারে ভীম ছিলেন সদাতৎপর। তিনি দ্রৌপদীকে কুবেরের বাগান থেকে ফুল এনে উপহার দিতেন। ভীম বাহ্যত কর্কশ ও ক্রোধী প্রকৃতির হলেও দ্রৌপদীর প্রতি তাঁর ব্যবহার ছিল সদা কোমল। দ্রৌপদীকে বিরাট রাজ্যে রানি সুদেষ্ণার দাসীর ভূমিকা পালন করতে হবে জেনে ভীম কেঁদে ফেলেছিলেন। দ্রৌপদীও অত্যন্ত ভরসা করতেন ভীমকে। বিরাট রাজ্যে কীচকের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার পরে প্রতিবিধানের আশায় দ্রৌপদী ছুটে গিয়েছিলেন ভীমের কাছেই।

পাঁচ স্বামীর মধ্যে দ্রৌপদী সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন অর্জুনকে। কারণ অর্জুনই তাঁকে স্বয়ম্বর সভায় জিতে নিয়েছিলেন। যদিও অর্জুনের প্রিয়তমা পত্নী দ্রৌপদী ছিলেন না। অর্জুন তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন সুভদ্রাকে, যিনি ছিলেন কৃষ্ণের ভগিনী। সুভদ্রার গর্ভজাত অভিমন্যু ছিলেন অর্জুনের প্রিয়তম পুত্র। দ্রৌপদীর গর্ভজাত নিজের সন্তানদের তুলনায় অভিমন্যুকে সবসময়েই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন অর্জুন।

 অন্যান্য স্বামীরা যখন একাধিক বিবাহ করেছেন, তখন দ্রৌপদীকে খুব একটা ব্যথিত হতে দেখা যায় না মহাভারতে। কিন্তু অর্জুন যখন সুভদ্রাকে বিয়ে করলেন, তখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন দ্রৌপদী। সুভদ্রা দাসীর বেশে দ্রৌপদীর সামনে হাজির হয়েছিলেন শুধু এইটুকু বোঝানোর জন্য যে, সামাজিক মর্যাদায় তিনি সর্বদাই দ্রৌপদীর নিম্নবর্তী।

 ভাইদের মধ্যে যুধিষ্ঠিরের প্রতি নকুল ও সহদেবের আনুগত্য ছিল সর্বাধিক। মদ্রদেশ শাসনের সুযোগ তাঁরা হেলায় ছেড়ে দিয়েছিলেন যুধিষ্ঠিরের সান্নিধ্য পাওয়ার লোভে। দ্রৌপদীর সঙ্গে নকুল ও সহদেবের সম্পর্কও সর্বদাই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে যুধিষ্ঠিরের নির্দেশ ও পরামর্শের দ্বারা।

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 7 users Like Bumba_1's post
Like Reply
অর্জুন এবং ভীম ছাড়া বাকি পাণ্ডবরা কি আদৌ অন্য বিবাহ করেছিল?

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply
(04-09-2022, 03:36 PM)Somnaath Wrote: অর্জুন এবং ভীম ছাড়া বাকি পাণ্ডবরা কি আদৌ অন্য বিবাহ করেছিল?


 হ্যাঁ, অবশ্যই অন্যত্র বিবাহ করেছিল তারা...

দ্রৌপদীকে বাদ দিয়ে যুধিষ্ঠিরের আর একটি মাত্র স্ত্রীর উল্লেখ পাওয়া যায়, যার নাম হলো — দেবিকা এবং তার পুত্রের নাম হলো যৌধ্যেয়। দেবিকার গর্ভে উৎপন্ন যুধিষ্ঠিরের আর কোনো পুত্র বা পুত্রীর উল্লেখ পাওয়া যায় না।

দ্রৌপদী অতিরিক্ত ভীমের  অন্য তিন স্ত্রী যথাক্রমে -

১.বলন্ধরা — সর্বগ ( পুত্র )

২. হিড়িম্বা — ঘটোৎকচ ( পুত্র ) দ্রৌপদীর সাথে বিবাহের পূর্বে।

৩. নাগ রমনী ( রাজস্থানের লোক কথা অনুযায়ী )

এখানে একটি কথা বলে নিই, যুধিষ্ঠির ও দ্রৌপদীর সহবাস পর্বে অর্জুন এক ব্রাহ্মণের সাহায্যার্থে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য যুধিষ্ঠিরের কক্ষে প্রবেশ করে। অতএব পূর্বের শর্তানুযায়ী অর্জুন বারো বছরের জন্য বনবাস গ্রহণ করেন। এই সময় তিনি পরিস্থিতি অনুযায়ী তিনটি বিবাহ করেন ও পুত্র সন্তানের জন্ম দেন, যেমন ..

১.উলপী — ইরাবান (পুত্র)

২. চিত্রাঙ্গদা — বভ্রুবাহন (পুত্র)

৩. সুভদ্রা — অভিমন্যু (পুত্র)

নকুলের দ্রৌপদী অতিরিক্ত আর একটি মাত্র স্ত্রীর উল্লেখ পাওয়া যায়--

করেনুমতি— নিরামিত্র ( পুত্র )

সহদেবের ক্ষেত্রেও আর একটি স্ত্রীর উল্লেখ পাই--

 বিজয়া-- সুহোত্র ( পুত্র )

পঞ্চপান্ডবের এই স্ত্রীরা পুত্রদের নিয়ে পিতার নিকটেই বাস করতো। শুধুমাত্র সুভদ্রা থাকতো তার স্বামী অর্জুন তথা দ্রৌপদীর সঙ্গে।
[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
একরকম ভাবে ভাবলে এগুলো পড়ে বা জেনে কেমন যেন লাগে। কিন্তু মন পরিষ্কার করে ভাবলে এদের প্রত্যেকের প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি ও সম্মান সর্বদা বজায় থাকে। জীবন স্রোতে ভাসতে ভাসতে মানব সভ্যতাকে অনেক কিছুর সাক্ষী হতে হয় যার কিছু ভালো কিছু মন্দ আবার কিছু বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য আবার কিছু ব্যাখ্যাহীন। কিন্তু স্রোতের ঢেউ সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে চলে। এক রূপ থেকে আরেক রূপে, এক যুগ থেকে আরেক যুগে। কিন্তু সময় স্রোত থামেনা। সে বিশাল রূপে কিংবা সরল রূপে ভাসিয়ে নিয়ে চলে। খুব ভালো লাগলো এই ব্যাপারটা আরও ভালো ভাবে জেনে। ♥️
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply




Users browsing this thread: 2 Guest(s)