Thread Rating:
  • 80 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL সৃষ্টি (সমাপ্ত)
(28-07-2022, 10:54 PM)Jupiter10 Wrote: ছবি গুলো বাঁধিয়ে রাখতে পারেন। অথবা লামিনেশন করে অ্যালবাম করে রাখতে পারেন। এতে নষ্ট হবে না।

আর স্ক্যান করে pinterest.com এ সফ্টকপি করে আপলোড করে রাখতে পারেন।সেটা প্রচুর মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।

এর মধ্যে প্রত্যেকটি ছবি বেশ বড় এবং মাঝারি সাইজের কাঠবোর্ডের উপর আঁকা। যদিও প্রত্যেকটিতেই cellophane paper জড়ানো আছে। আর শেষে যেটা বললেন ওই pinterest.com .. সেখানে কি করে ছবি আপলোড করে, আমি তো সেটা জানি না।
[+] 3 users Like Bumba_1's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(28-07-2022, 11:02 PM)Bumba_1 Wrote: এর মধ্যে প্রত্যেকটি ছবি বেশ বড় এবং মাঝারি সাইজের কাঠবোর্ডের উপর আঁকা। যদিও প্রত্যেকটিতেই cellophane paper জড়ানো আছে। আর শেষে যেটা বললেন ওই pinterest.com .. সেখানে কি করে ছবি আপলোড করে, আমি তো সেটা জানি না।



https://youtu.be/OYbDQwLvzBY       for upload

https://youtu.be/GcSQtQ55J6A        for selling your artwork

প্রথমে ছবি গুলো scanner দিয়ে scan করে নেবেন। 300 dpi max image quality দিয়ে।

যদি ছবির সাইজ বড় হয়। Scan করা না যায় তাহলে ভালো DSLR camera দিয়ে ছবি তুলে সেটাকে resized করে JPEG format এ আপলোড করবেন।

ওখানে অনেকেই ছবি কিনতে আগ্রহী হয়। Royalty free মানে আপনার ছবির সত্ব আপনার কাছেই থাকবে কিন্তু তারা নিজের ইচ্ছা মতো কাজে লাগাবে। তারজন্য আপনাকে আপনার ইচ্ছা মতো ধনরাশি দিয়ে দেবে।

এতে আপনার ছবি আপনার কাছেই থাকবে। কিন্তু ছবি প্রেমী রা আপনার আসল ছবির একটা সফ্ট কপি নিজের কাছে রেখে নেবেন।



[+] 3 users Like Jupiter10's post
Like Reply
(28-07-2022, 11:18 PM)Jupiter10 Wrote: https://youtu.be/OYbDQwLvzBY       for upload

https://youtu.be/GcSQtQ55J6A        for selling your artwork

প্রথমে ছবি গুলো scanner দিয়ে scan করে নেবেন। 300 dpi max image quality দিয়ে।

যদি ছবির সাইজ বড় হয়। Scan করা না যায় তাহলে ভালো DSLR camera দিয়ে ছবি তুলে সেটাকে resized করে JPEG format এ আপলোড করবেন।

ওখানে অনেকেই ছবি কিনতে আগ্রহী হয়। Royalty free মানে আপনার ছবির সত্ব আপনার কাছেই থাকবে কিন্তু তারা নিজের ইচ্ছা মতো কাজে লাগাবে। তারজন্য আপনাকে আপনার ইচ্ছা মতো ধনরাশি দিয়ে দেবে।

এতে আপনার ছবি আপনার কাছেই থাকবে। কিন্তু ছবি প্রেমী রা আপনার আসল ছবির একটা সফ্ট কপি নিজের কাছে রেখে নেবেন।

বাহ এমন হয় জানতাম না তো। কত কিছুই জানি না। গ্রেট।
[+] 1 user Likes nandanadasnandana's post
Like Reply
সবসময় বলতে হয় না মাঝে মাঝে শুধু দেখতে হয়, উপভোগ করতে হয় আর সেটার স্বাদ আস্বাদন করতে হয়।

আমিও সেটাই করছি।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(28-07-2022, 11:18 PM)Jupiter10 Wrote: https://youtu.be/OYbDQwLvzBY       for upload

https://youtu.be/GcSQtQ55J6A        for selling your artwork

প্রথমে ছবি গুলো scanner দিয়ে scan করে নেবেন। 300 dpi max image quality দিয়ে।

যদি ছবির সাইজ বড় হয়। Scan করা না যায় তাহলে ভালো DSLR camera দিয়ে ছবি তুলে সেটাকে resized করে JPEG format এ আপলোড করবেন।

ওখানে অনেকেই ছবি কিনতে আগ্রহী হয়। Royalty free মানে আপনার ছবির সত্ব আপনার কাছেই থাকবে কিন্তু তারা নিজের ইচ্ছা মতো কাজে লাগাবে। তারজন্য আপনাকে আপনার ইচ্ছা মতো ধনরাশি দিয়ে দেবে।

এতে আপনার ছবি আপনার কাছেই থাকবে। কিন্তু ছবি প্রেমী রা আপনার আসল ছবির একটা সফ্ট কপি নিজের কাছে রেখে নেবেন।

অনেক অনেক ধন্যবাদ  Namaskar ঠিক আছে এই ভাবেই চেষ্টা করবো
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
(29-07-2022, 12:48 AM)nextpage Wrote: সবসময় বলতে হয় না মাঝে মাঝে শুধু দেখতে হয়, উপভোগ করতে হয় আর সেটার স্বাদ আস্বাদন করতে হয়।

আমিও সেটাই করছি।

আচ্ছা, ঠিক আছে 
Like Reply
(28-07-2022, 07:42 PM)Bumba_1 Wrote:
|| আমার মায়ের সৃষ্টি ||

আমার মায়ের কিছু হাতের কাজ এবং আঁকা শেয়ার করলাম আপনাদের সঙ্গে। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন।




[Image: FB-IMG-1659016190811.jpg]

[Image: FB-IMG-1659016182530.jpg]


[Image: FB-IMG-1659016177807.jpg]

[Image: FB-IMG-1659016173567.jpg]


[Image: FB-IMG-1659016168844.jpg]

[Image: FB-IMG-1659016156656.jpg]


[Image: FB-IMG-1659016148525.jpg]

[Image: FB-IMG-1659016142572.jpg]

[Image: FB-IMG-1659016137783.jpg]

[Image: FB-IMG-1659016128063.jpg]


Ek Se badhkar ek , উনাকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম 

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply
(22-07-2022, 02:34 PM)Bumba_1 Wrote:
|| আমার সৃষ্টি ||

যদিও এই সাইট নিজেকে জাহির করা বা নিজের গুনো গান গাওয়ার জন্য নয় .. তবুও আজ ইচ্ছে হলো নিজের কয়েকটি পুরনো আঁকা পোস্ট করতে (অবশ্য এটাও জানি আমার থেকে অনেক ভালো আঁকতে পারে এরকম মানুষ এই ফোরামেই হয়তো আছে)। তাই শেয়ার করলাম আমার পাঠক বন্ধুদের সাথে। কেমন লাগলো অবশ্যই জানিও‌ কিন্তু Namaskar 




[Image: FB-IMG-1624606560373.jpg]

[Image: FB-IMG-1658465577065-1.jpg]

[Image: FB-IMG-1658465584886.jpg]

দারুণ ছবি
[+] 1 user Likes bidur's post
Like Reply
(28-07-2022, 11:51 PM)nandanadasnandana Wrote: বাহ এমন হয় জানতাম না তো। কত কিছুই জানি না। গ্রেট।

অনেক ধন্যবাদ ম্যাডাম। আপনিও আপনার নন-এরটিক গল্প গুলোকে https://bengali.pratilipi.com/ তে পাবলিশ করুন। আমার বিশ্বাস সেখানে আপনি আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারবেন।



Like Reply
(29-07-2022, 12:08 PM)Somnaath Wrote:
Ek Se badhkar ek , উনাকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম 

অসংখ্য ধন্যবাদ  Namaskar 

(29-07-2022, 12:20 PM)bidur Wrote: দারুণ ছবি

অনেক ধন্যবাদ  Namaskar
Like Reply
আপনি, আপনার ছেলে ও মা, আপনাদের পরিবারের সকলেই দেখছি চিত্রকর। একেবারে ন্যাচারাল আর্ট যাকে বলে, ছবিগুলো সেরকমই।
[+] 1 user Likes sudipto-ray's post
Like Reply
(29-07-2022, 02:24 PM)sudipto-ray Wrote: আপনি, আপনার ছেলে ও মা, আপনাদের পরিবারের সকলেই দেখছি চিত্রকর। একেবারে ন্যাচারাল আর্ট যাকে বলে, ছবিগুলো সেরকমই।
 
thank you  thanks
Like Reply
[Image: IMG-20220811-122532-58.jpg]


|| বিন্দা পিসি জিন্দাবাদ ||

নাট্যকার এবং প্রচ্ছদ :- বুম্বা
(ছয় দৃশ্যের কিশোর নাটক)

নাটকের চরিত্রসমূহ 

ফুটবল টিমের ছেলেরা :- রাজু (ক্যাপ্টেন), দুলু, রনি, শঙ্কু, অন্তু, প্রয়োজনে আরো কয়েকজনকে নেওয়া যেতে পারে .. সকলেই কিশোর।

অন্যান্য চরিত্র :-
জগৎ দা - ক্লাবের সেক্রেটারি ও কোচ
ডাক্তার জেঠু - ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এবং পাড়ার ডাক্তার
দেবুদা - বডি বিল্ডার, পাড়ার একজন যুবক
পাগল - নাম শিবু
টুনু বাবু - বিন্দা পিসির ভাইপো
অভয়চরণ - প্রোমোটার এবং টুনু বাবুর বন্ধু
বিন্দা পিসি - পাড়ার পিসিমা এবং খেলার মাঠের মালকিন

নাটকের সময় :- ভোর পাঁচটা থেকে রাত আটটা
ক্লাবের নাম :- বেনু সংঘ
মাঠের নাম :- বেনু সংঘের মাঠ

দৃশ্য বিভাগ  

প্রথম দৃশ্য - ভোর পাঁচটা বেনু সংঘের মাঠ
দ্বিতীয় দৃশ্য - বিকেল চারটে জগৎদার বাড়ি
তৃতীয় দৃশ্য - বিকেল পাঁচটা প্রেসিডেন্টের বাড়ি
চতুর্থ দৃশ্য - সন্ধে ছ'টা বেনু সংঘের মাঠ
পঞ্চম দৃশ্য - সন্ধ্যে সাতটা বিন্দা পিসির বাড়ি
ষষ্ঠ দৃশ্য - রাত আটটা প্রেসিডেন্টের বাড়ি

বিঃ দ্রঃ নাট্যাভিনয়ের সময় আনুমানিক ৩০ মিনিট (নাট্যাভিনয়ের জন্য নাট্যকারের অনুমতি আবশ্যক)



প্রথম দৃশ্য

দৃশ্যপট :- একটা পাড়ার দৃশ্য। মঞ্চের ডানদিকে থাকবে কতকগুলি বাড়ি ঘরের বোর্ড কাটিং, দু-একটা গাছের সিম্বল আর মঞ্চের বাঁদিকে থাকবে দূরে একটা গাছ, ফুটবল মাঠ আঁকা দৃশ্য (হলে ভালো হয়) একটা গোলপোস্টের সিম্বল।
বাঁ দিকের গাছের আড়ালে গা-ঢাকা দিয়ে বসে থাকবে একটা লোক, তাকে সামান্য দেখা যাবে।
সময় :- ভোরবেলা .. মঞ্চ আধো অন্ধকার, মাঠটা অস্পষ্ট দেখা যাবে। বলে ড্রপ দিতে দিতে দু'জন ছেলের মঞ্চের ডানদিক অর্থাৎ পাড়ার দিক থেকে প্রবেশ .. প্রথমে রাজু তার পিছনে দুলু। একটা স্পটলাইট ওদের অনুসরণ করবে।

রাজু - (বাড়িগুলির দিকে তাকিয়ে চাপা গলায়) রনি, এই রনি .. রনি এ....ই রনি।

দুলু - কি ঘুম রে বাবা! ভাবজিলাম ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখিস। আমি জানি ও দেয়নি .. একটুও সিরিয়াস নয় .  রনি, এই রনি।

রনি - (একটা বাড়ির ভেতর থেকে) যা...ই , আসছি, দাঁড়া।

শঙ্কু - (পিছন থেকে) রাজু সরি, একটু লেট হয়ে গেল রে।

রাজু - অন্তুকে ডেকেছিস? ও যা ঘুমকাতুরে!

শঙ্কু - ডেকেছি, মুখ ধুয়ে আসছে।

(ইতিমধ্যে আরও দু'জন মঞ্চে প্রবেশ করে। ছেলেরা স্বল্পপরিসরে বেশ কায়দা করে বল কাটাতে কাটাতে মাঠের দিকে এগিয়ে যায়। হঠাৎ মাঠের ও পাশে বসা লোকটা যেন জেগে ওঠে। হাতে লাঠি নিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে পড়ে .. লোকটা একটা পাগল)

রাজু - কি আপদ রে বাবা, এই ভোররাতে পাগল এলো কোত্থেকে?

শঙ্কু - পালাই চল, এ বদ্ধ পাগল, কোত্থেকে এসেছে কে জানে (পিছিয়ে আসে শঙ্কু)

দুলু - চুপ কর তো .. আমি দেখছি দাঁড়া (একটু এগিয়ে যেতেই পাগলটা আস্তে আস্তে উঠতে থাকে, একটা লাফ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়)

পাগল - ও .. আমাকে ধরবি? মাঠে ঢুকবি? দাঁড়া .. ঠ্যাং ভেঙে দেবো তোদের। (মাটিতে লাঠি ঢুকতে ঢুকতে নানা অঙ্গভঙ্গি করে ভয় দেখাতে থাকে) হুঁ হুঁ .. মাঠে একবার পা দিয়ে দেখ না .. এই মাঠটা আমার, আমার বাবার আর আমার চৌদ্দপুরুষের। যা ভাগ এখান থেকে .. পালা (বলে আবার চলে যায়)

দুলু - (সকলের দিকে তাকিয়ে) চল তো, ওকে জাপটে ধরি সবাই মিলে।

রাজু - দুলু যাস না .. বেশি মস্তানি দেখাস না। পাগলের সাথে কিচ্ছু চলে না, ওরা যা খুশি তাই করতে পারে। (দুলুর হাত ধরে)

দুলু - তুই কি ভীতু রে .. পালাবো? প্র্যাকটিস করবো না? কাল ফাইনাল খেলা, মাঠটাও ঠিক করতে হবে।

রাজু - (রাগতভাবে) সবই তো বুঝতে পারছি, কি করবো বল না! ক্ষতি তো আমাদের হবে, তা ভালো রকম বুঝতে পারছি। কিন্তু উপায় কি বল? চল, ও বেলায় প্র্যাকটিস করব পাগলের সাথে লড়া যাবে না।

(পাগলটা হঠাৎ বিকট হাসি হেসে ওঠে, ঠিক যেন মনে হয় যাত্রা করছে। আর তাই শুনে আশেপাশের কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করে ডাকতে লাগলো .. বাদ্যযন্ত্র একটা বাজানো হবে)

শঙ্কু - চল বাবা চল, ভয় করছে কেমন। (দুলুর পিঠে হাত রেখে বলে)

দুলু - কাল ফাইনাল খেলা, আজকের সকালটা মাঠে মারা গেলো। জগৎদা কি করে দ্যাখ .. মাথাটা আস্ত চিবিয়ে খাবে।

রাজু - এখন কিচ্ছু করার নেই, ও বেলাটা তো হাতে আছে। জগৎদাকে পরে বললেই হবে, এর মধ্যে মনে হয় পাগলটা চলে যাবে।

সকলে - হ্যাঁ বাবা .. চল চল।

(ধীরে ধীরে সকলের প্রস্থান / মঞ্চ অন্ধকার হয়। পাগলটা গিয়ে আবার বসে নিজের জায়গায়)

দ্বিতীয় দৃশ্য

দৃশ্যপট এবং সময় :- বিকেল চার'টে জগৎ দার বৈঠকখানার ঘর। মঞ্চে পর্যাপ্ত আলো, সামান্য আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো ঘর। দরজা খোলা, জগৎ দা বসে বসে কাগজ পড়ছেন। মঞ্চের বাঁ দিকে বসে আছে .. দরজা ডানদিকে। জার্সি গায়ে ছেলেদের প্রবেশ, হাতে ফুটবল।

রাজু - (দরজার সামনে) জগৎ দা, ভিতরে আসছি।

জগৎ - (চোখ তুলে) কি ব্যাপার রে, মাঠে যাসনি? আয় আয় ..

রাজু - (রাজুর পিছন পিছন সকলে ঢোকে) না জগৎ দা, প্র্যাকটিস হচ্ছে না।

দুলু - সকালেও হয়নি, এ বেলও হবে কিনা সন্দেহ।

জগৎ - (উৎকণ্ঠায়) প্র্যাকটিস হবে না কেন রে? কি হয়েছে?

দুলু - আর বলো কেন, একটা পাগল সকাল থেকে মাঠ দখল করে বসে আছে। আর ..

রাজু - শুধু তাই নয়, কেউ গেলেই লাঠি দিয়ে তেড়ে মারতে আসছে।

জগৎ - (উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে) আশ্চর্য .. পাগল এলো কোত্থেকে .. আর মাঠেই বা যাবে কেন? আর তোরাই বা কেমন, পাগল দেখে পালিয়ে এলি .. কাল ফাইনাল খেলা, এটা ভুলে গেলি?

রাজু - সেই জন্যই তো জগৎ দা আপনার কাছে এলাম ..

জগৎ - আমার কাছে এসে কি হবে? ওটাকে হটিয়ে অন্তত প্র্যাকটিসটা করা দরকার। শীল্ড ফসকালে মান থাকবে?

দুলু - কিন্তু জগৎ দা, আমাদের করবার কি আছে! ভয়ংকর জেদি পাগল, দেখবেন চলুন না। সমস্ত দুপুর ধরে মাঠে পাগলটা কি কান্ডই না করেছে।

জগৎ - কি .. করেছে কি?

রাজু - কি করেনি সেটাই বলুন, রাজ্যের মরা ডালপালা গাছ-গাছড়া নিয়ে এসে ভর্তি করে দিচ্ছে মাঠটা। বলছে এটা ওর মাঠ, ওর বাবার মাঠ, ওর চোদ্দপুরুষের মাঠ। কিছু বলতে গেলে লাঠি নিয়ে তেড়ে আসছে মারতে।

জগৎ - সে কি? মারতে আসছে .. নষ্ট করে ফেলল .. এতসব কান্ড ঘটে গেলো .. আর তোদের এতক্ষণে খেয়াল পড়লো! ক্লাবের প্রেসিডেন্টের কাছে গিয়েছিলি?

রাজু  - (কাঁচুমাচু হয়ে) না .. ভেবেছিলাম ও চলে যাবে, আমরা এবেলা বেশি করে প্র্যাকটিস করবো, কিন্তু এ বেলাও যে মাঠ পাবো না, তা ভাবতে পারিনি।

জগৎ - আচ্ছা বল তো, পাগলটাকে আগে কখনো দেখেছিস?

রনি - না .. কোনোদিনই না, মনে হচ্ছে বাইরে থেকে এসেছে।

রাজু - (করুন ভাবে) কি হবে জগৎ দা?

(নেপথ্যে অন্তুর গলা) রাজু'দা রাজু'দা (তারপর ঝড়ের বেগে প্রবেশ)

অন্তু - এই যে রাজুদা তোমরা এখানে, শিগগির চলো দেখবে পাগলটা গোটা মাঠে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে কি কান্ড করছে!

রাজু - (অসহিষ্ণু হয়ে) শুনলে তো জগৎ দা!

জগৎ - শুনলাম কিছু তো একটা করতে হবে।

দুলু - থানায় খবর দিলে হয় না?

জগৎ - থানা! খেপেছিস? 'মশা মারতে কামান দাদা' .. থানায় গিয়ে মরি আর কি! পুলিশকে বিশ্বাস আছে? কোত্থেকে কি হয়ে যাবে। মাঝখান থেকে মাঠটাই বেহাত হয়ে যাবে। ও সবে কাজ নেই, অন্য কিছু ভাবতে হবে।

রাজু - তাহলে .. (হতাশ হয়ে) অন্য কি?

জগৎ - প্রেসিডেন্ট বাবু ছাড়া তো কোনো ভরসা দেখছি না। আগে তাকে গিয়ে বলা হোক, একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হবে। চল আগে সবাই তার সঙ্গে দেখা করি।

রাজু - হ্যাঁ হ্যাঁ তাই চলুন। চল রে সবাই ডাক্তার জেঠুর বাড়ি।

জগৎ - তোরা এগো, আমি আসছি (মঞ্চের বাঁদিকের  দরজা দিয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ে, আর ছেলেরা কথা বলতে বলতে মঞ্চের ডানদিকের উইংস দিয়ে বেরিয়ে যায়, মঞ্চ ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়।)

তৃতীয় দৃশ্য

দৃশ্যপট এবং সময় :- বিকেল পাঁচটা .. প্রেসিডেন্টের বৈঠকখানা ঘর কাম চেম্বার। দৃশ্য সজ্জার  বিশেষ কিছু পরিবর্তন হবে না, শুধু মঞ্চের বাঁদিকে রোগী দেখার জন্য একটা হাই বেঞ্চ থাকবে। প্রেসিডেন্টকে সকলেই ডাক্তার জেঠু বলে ডাকে। মঞ্চে আলো জ্বলে ওঠার পর দেখা যাবে ঘরের মধ্যে সকলেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে।

ডাক্তার - (চিন্তিত হয়ে) সবই তো শুনলাম, কিন্তু উপায় তো একটা বের করতে হবে। এদিকে থানা পুলিশ করলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না।

দুলু - পাগলটাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেললে হয় না জেঠু?

ডাক্তার - তোরাই দেখছি পাগল। বুঝতে পারছিস না! ও হলো সেয়ানা পাগল। যে বলে আমার মাঠ, আমার বাবার মাঠ, আমার চোদ্দপুরুষের মাঠ .. এইসব কথা শুনে আমার মনে হচ্ছে সে রীতিমতো শেখানো পড়ানো পাগল।

শঙ্কু - হ্যাঁ জেঠু হতে পারে, মালতী কাজ করে ফেরার পথে দেখেছি ও প্যাকেট থেকে কেক বের করে খাচ্ছে। সঙ্গে আবার জলের বোতলও আছে।

জগৎ - স্যার আমার মনে হচ্ছে এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কেউ বা কারা নিশ্চয়ই করাচ্ছে, এর পিছনে ষড়যন্ত্র আছে।

ডাক্তার - অবশ্যই (উঠে দাঁড়িয়ে পড়েন) আমারও তাই মনে হচ্ছে। কেউ তোমাদের ম্যাচ পন্ড করতে চাইছে অথবা মাঠের দখল নিতে চাইছে।

রাজু - আমাদের সাথে কারই বা শত্রুতা আছে যে খেলা পন্ড করবে? আর মাঠই বা কেন নেবে?

ডাক্তার - নেবে রে নেবে। তোরা ছেলেমানুষ, এসব বুঝবি না। (জগৎ দার দিকে তাকিয়ে) আমাদের এখনি অ্যাকশান নিতে হবে, না হলে মাঠ হাতছাড়া হবে। বিনা কারণে একটা পাগল সারাদিন এক জায়গায় থাকতে পারে না।

জগৎ - আমিও তো তাই ভাবছি, কিন্তু কি করা যায়। তোদের মাথায় কি আসছে? (ছেলেদের দিকে তাকিয়ে)

(ছেলেরা কেউ কেউ মাথা চুলকায়, এ ওর দিকে তাকায়, কিছুই তাদের মাথায় আসে না)

ডাক্তার - আমি ভাবছি অন্য বিপদের কথা।

জগৎ - (উৎকণ্ঠায় উঠে পড়ে) সেটা কিরকম স্যার?

ডাক্তার - ভাবছি এই করতে করতে রাতে যদি দু-একখানা থান ইঁট গেঁথে দেয় কিংবা কোনো ঠাকুরের কাঠামো নিয়ে এসে বসিয়ে দেয় তাহলে আর কিছু করার যাবে না। পাগলটা তো উপলক্ষ মাত্র, আসল উদ্দেশ্য মাঠ দখল .. এরকম তো আজকাল হরদমই হচ্ছে।

জগৎ - এটা খুব সত্যি কথা, (ছেলেদের দিকে তাকিয়ে) আচ্ছা মাঠটা তো বিন্দা পিসির, সরকারদের বড়কর্তার মেয়ে। তোদের সঙ্গে কোনো ঝগড়াঝাঁটি হয়নি তো তার?

রাজু - না না পিসির সাথে কিছু হয়নি। তবে ওদের বাড়ির একটা লোক, কি যেন নাম রে দুলু (দুলুর দিকে তাকিয়ে)

দুলু - ঐ তো কি যেন .. দাঁড়া মনে করছি (একটু ভেবে) টুলু না টুনু কি যেন নাম .. খুব দুষ্ট লোক। খালি খালি এসে আমাদের বলবে এখানে বিল্ডিং উঠবে, এখানে খেলবি না।

জগৎ - (স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে) ব্যাপারটা এতক্ষণে পরিষ্কার হলো, এটা ওদেরই মতলব। তবে স্যার যা করতে হবে এক্ষুনি, আজ সন্ধ্যের মধ্যেই।

ডাক্তার - হ্যাঁ দেখছি। আমার মনে হয় দেবুকে একবার ডাকা দরকার, তার সাহায্যের প্রয়োজন আছে।

জগৎ - হ্যাঁ .. হ্যাঁ তাই করুন। দেবুই পারবে এ কাজ সামাল দিতে।

ডাক্তার - ঠিক আছে, দেবুকে একটা ফোন করে ডেকে নিই। (উঠে গিয়ে টেলিফোনের রিসিভার তুলে নেন এবং ফোন করেন) হ্যাঁ .. হ্যালো আমি ডাক্তারবাবু কথা বলছি .  দেবু আছে? দেবু? নেই? কোথায় গেছে .. ক্লাবে? ও হ্যাঁ হ্যাঁ, ওর তো আজ ক্লাস আছে। আচ্ছা ঠিক আছে (ঘড়ি দেখে) এখন সাড়ে পাঁচটা বাজে .. ক্লাস শেষ হয়েছে এতক্ষণে হয়তো। অ্যাঁ .. না না .  কিছু বলতে হবে না .. আমি দেখছি কাউকে পাঠিয়ে ডেকে আনতে পারি কিনা .. আচ্ছা ছাড়ছি।

ডাক্তার - (রিসিভার নামিয়ে) তোমরা একজন চট করে গিয়ে ক্লাব থেকে দেবুকে ডেকে আনো। বলবে আমি ডাকছি, তাড়াতাড়ি যাও।

রনি - আমি যাচ্ছি জেঠু, যাবো আর আসবো। (দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে যায়)

ডাক্তার - (জগৎ দাকে ডেকে) আসুন এর মধ্যে আমরা একটা প্ল্যান করে নি।

(ওরা ঘরের এক কোণে গিয়ে শলাপরামর্শ করতে লাগলেন, এদিকে ছেলেরা মাটিতে বসে বল লোফালুফি করতে লাগলো)

(কিছুক্ষণ পরে দেবুর প্রবেশ)

দেবু - (সর্বাঙ্গে ঘাম, পড়নে শর্ট প্যান্ট আর স্যান্ডো গেঞ্জি) আমি সব শুনেছি জেঠু। (ছেলেদের দিকে তাকিয়ে) এই বোকাগুলো আমাকে কিচ্ছু বলেনি সকাল থেকে, তাহলে ওর খেলার মাঠে 'নগর-পত্তন' করা আমি ঘুচিয়ে দিতাম। বলুন স্যার, এখন কি করতে হবে?

ডাক্তার - এসো দেবু, দারুন সমস্যা, ইমিডিয়েটলি একটা ব্যবস্থা করতে হবে।

দেবু - ঠিক আছে স্যার, আপনারা বসুন না, আমি ব্যাটাকে ঘাড় ধরে এনে আপনার কাছে ফেলছি।

ডাক্তার - (ব্যস্ত হয়ে) না না, ওসব নয় .. এতে বিপদ বাড়বে।

দেবু - কেন স্যার, কিসের বিপদ?

ডাক্তার - আরে বুঝতে পারছো না, ও যদি সত্যি পাগল হতো, তাহলে সারাদিনই মাঠটায় পড়ে থাকত না। একবার না একবার সে বেরিয়ে আসতো, সারাদিনে একটা হুল্লারি নিশ্চয়ই হতো। মাঠটা এভাবে আগলাতো না।

দেবু - তাহলে আপনি কি ভাবছেন? এর মধ্যে কারো কোনো চক্রান্ত আছে?

জগৎ - (ততক্ষণে জেঠুর পাশে এসে দাঁড়িয়ে) আমরা তো সেই রকমই একটা কিছু অনুমান করছি। শোন দেবু ..  দাদা একটা প্ল্যান দিলেন, একটু কাজে লাগিয়ে দেখা যাক না, কিছু করা যায় কিনা।

দেবু - (উৎসুক হয়ে) কি রকম?

জগৎ - বলবো .. চল, পথে যেতে যেতে সকলকেই বলবো (ছেলেরা সবাই উৎসুক্য নিয়ে শুনছে ওদের দিকে তাকিয়ে এবং সকলকে একসঙ্গে জড়ো করে) তোরা সবাই চল .. আগে আমাদের বেণু সংঘ মাঠে যাওয়া দরকার। কাজটা খুব সাবধানে করতে। হবে কি বলুন দাদা? (জেঠুর দিকে তাকিয়ে)

ডাক্তার - অবশ্যই .. সবটা তো আমাদের অনুমান। তাই বিপদের একটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

ছেলেরা - (সবাই মিলে) আমরাও যাবো?

জগৎ - তোরাই তো যাবি .. মাঠে ঢুকবি, ওকে চলে যেতে বলবি, দেবু থাকবে মাঠের পিছন দিকে। আর দেরি নয়, চল চল বেরিয়ে পড়ি। চলুন স্যার .. (একটু চিন্তা করে) ওঃ স্যার একটা গামছা নিয়ে আসুন। চল তোরা, স্যার আসছেন ..

(একে একে সকলে বেরিয়ে যায়, ইতিমধ্যে জেঠু ভিতর থেকে অর্থাৎ মঞ্চের বাঁদিকে উইংসের পাশ থেকে একটা গামছা নিয়ে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যান, মঞ্চ অন্ধকার হয়)
[+] 6 users Like Bumba_1's post
Like Reply
[Image: IMG-20220811-122551-150.jpg]

চতুর্থ দৃশ্য

দৃশ্যপট এবং সময় :- বেনু সংঘের মাঠ, সন্ধ্যা ছটা .. মঞ্চ স্বল্পালোকিত। মঞ্চের বাঁদিকে পাগল টাকে দেখা যাচ্ছে, সে নানা রকম কাজে যেন ব্যস্ত। মঞ্চের ডান দিক থেকে ছেলের দল ঢুকছে, বলে ড্রপ দিচ্ছে, ওকে বল ছুঁড়ে দিচ্ছে। (সবই প্রায় অভিনয়ের মাধ্যমে .. অভিনয় হবে মাইমের মাধ্যমে)

(পাগলটারও যেন অন্য মূর্তি। সে একটা মুখোশ পড়েছে। লাঠি হাতে নাটকীয় ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে ওঠে)
হারে রেরে রেরে রেরে
আসিস কেরে, আসিস কেরে?

সকলে - তুমি এখান থেকে যাও তো .. ভাগো .. আমরা খেলবো এখন।

পাগল - (মাথা নাড়িয়ে) হুঁ .. হুঁ .. হুঁ .. হুঁ .. রে ..
ও আমার চাঁদু রে
দেখবি এবার জাদু রে,
ভ্যানিশ করে উড়িয়ে দেবো
পড়বি গিয়ে মাদুরে।

(ডাক্তার জেঠু আর জগৎ দা মঞ্চের ডান দিকে একটু আড়ালে দাঁড়িয়ে, ইশারায় ছেলেদের এগিয়ে যেতে বলছেন)

রাজু - (জোর দিয়ে) তুমি যাবে কিনা বলো? আবার ছড়া কাটা হচ্ছে! ভালো চাও তো সব গুটিয়ে নিয়ে চলে যাও, মাঠ আমাদের এক্ষুনি চাই।

পাগল - ও .. হো, মাঠ নিবি, মাঠ চাই, বল খেলবি .. আয়, আয়, আয়না .. তবে খেলি চল .. চটপট আয় .. কি হলো খেলবি না? ভয় পাচ্ছিস?
থাকে যদি প্রাণের মায়া
মারাস নে আর মাঠের ছায়া
ঘরে গিয়ে প্রাণ বাঁচা রে
হারে রেরে রেরে রেরে ..

দুলু - (এগিয়ে যায়) তবে রে।

পাগল - (সঙ্গে সঙ্গে লাফ দিয়ে মঞ্চের মাঝখানে এসে দুলুর দিকে লাঠি বাগিয়ে ধরে, সেই মুহূর্তে ঝড়ের বেগে পিছন থেকে দেবুদা এসে পাগলটাকে জাপটে ধরে। পাগলটা নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করে, রাজু ওর মুখোশটা খুলে নেয়। ধস্তাধস্তিতে পাগলের গোঁফদাড়ি খুলে যায়, অন্তু তাড়াতাড়ি সেগুলো টেনে খুলে নেয়, ডাক্তার জেঠু ও জগৎ দা চলে আসে।)

দেবু - এই দুলু .. জেঠুর কাছ থেকে গামছা নিয়ে হাত দুটো বাঁধ ওর, তারপর চলতো চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাই ক্লাবে।

পাগল - (তারস্বরে চিৎকার করে) বাঁচাও ..  টুনুবাবু বাঁচাও।

দেবু - চুউউউপ .. মারবো এক থাপ্পড় ..  চুপ কর ব্যাটা বদমাইশ, পাগল সেজেছে।

ডাক্তার - মারিস না, মারিস না .. ব্যাপারটা আগে জানা দরকার .. টুনুবাবুটা কে?

পাগল - (হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে) ছেড়ে দেন, বাবু ছেড়ে দেন। আমার কোন দোষ নাই, আপনার পায়ে পড়ি .. আমি গরীব মানুষ।

দেবু - (ধমকের সুরে) চুপ .. আগে বল পাগল সাজতে দিয়েছিলি কেন? কে তোকে সাজতে বলেছে?

পাগল - (ঢোক গিলে) বলছি বলছি .. একটু জল খাবো (হাত বাড়িয়ে দেখায়)

জগৎ - আচ্ছা ঠিক আছে .. ওকে একটু জল দে ..

অন্তু - (কোথা থেকে একটা বোতল এনে ওকে দিলো) এই নাও, খাও।

(পাগলটা জল খেয়ে মঞ্চের চারদিকে দেখে)

দেবু - এবার বল .. কে তোকে সাজতে বলেছিল?

পাগল - (কেঁদে ওঠে) বাবু ... নাম বললে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।

জগৎ - চিন্তা করিস না .. তোর কিচ্ছু হবে না, আমরা আছি তো, বল এবার।

পাগল - আমার কিছু হবে না তো? আমাকে বাঁচাবেন তো?

দেবু - (অধৈর্য হয়ে) এবার ঠিক মার খাবি, ধৈর্য চলে যাচ্ছে আমার।

পাগল - না বাবু মারবেন না, টুনুবাবু আমাকে এই কাজ করতে বলেছে।

ডাক্তার - টুনুবাবু আবার কে?

রাজু - ওই যে তখন বললাম, বিন্দা পিসির কে যেন একটা হয়।

পাগল - ভাইপো হয়।

ডাক্তার - এবার বুঝলাম, ও তোকে পাগল সাজতে বলেছে।

জগৎ - আর অমনি তুই পাগল সেজে নিলি! বোকা কোথাকার, এবার তোর কি হয় দ্যাখ‌..

পাগল - (জগৎ দার পায়ে পড়ে) না বাবু পেটের দেয় করেছি। আমি চুরি ডাকাতি করতে পারি না, খুন করতে পারি না, শুধু দিনমজুরি খাটি, হরবোলা হয়ে পাখির ডাক ডাকি আর যাত্রা করি। তাই টুনুবাবু আমাকে পাগল সেজে ছেলেদের ভয় দেখাতে বলেছে। (পাগল কাঁদতে থাকে)

ডাক্তার - তোমার বাড়ি কোথায়?

পাগল - মশাট বাবু, হাওড়া জেলায় ..

জগৎ - নাম কি?

পাগল - আজ্ঞে শিবু .. শিবচরণ দাস।

জগৎ - সেখান থেকে এখানে এলি কি করে?

শিবু - টুনুবাবু নিয়ে এসেছেন। মশাটে টুনুবাবুর শ্বশুরবাড়ি কিনা! টুনুবাবু বলেছে 'সারাদিন পাগল সেজে থাকবি, রাত আটটায় এসে নিয়ে যাবো।'

জগৎ - এর জন্য তোকে কি দেবে?

শিবু -  টাকা দেবে বাবু .. পাঁচশো টাকা (হাতে করে দেখায়)

জগৎ - মাত্র পাঁচশো .. তার জন্য এত কান্ড!

রাজু - তোমাকে যদি এখন থানায় দিই, তাহলে কি হবে জানো?

শিবু - না বাবু থানায় দিও না, মরে যাবো।

জগৎ - আর যদি তোকে ছেড়ে দিই, তাহলে কি হবে?

শিবু - ও বাবা (ভয় সিঁটিয়ে যায়) না না বাবু ছেড়ে দিও না, তাহলে প্রোমোটার বাবু জানে মেরে ফেলবে।

জগৎ - ওহ্ .. এর মধ্যে আবার প্রোমোটারও আছে! (জেঠুর দিকে তাকিয়ে) বাপ রে এ তো আচ্ছা বিপদ .. কেস তো দারুণ প্যাঁচালো দেখছি।

ডাক্তার - (চিন্তিত হয়ে) তাই তো দেখছি, কোথাকার জল কোথায় যে গড়াবে কে জানে !

শিবু - হ্যাঁ বাবু, প্রোমোটার বাবুই তো টুনুবাবুকে বলেছে তার পিসির জমিতে 'ফেলাট' করে দেবে। তাই ...  

দেবু - হ্যাঁ, তাই তুমি পাগল হয়েছো আর আমরা তোমার ভয়ে সুড়সুড় করে মাঠ ছেড়ে দেবো। টুনুবাবুকে মাঠের দখল নেওয়া দেখাচ্ছি (জেঠুর দিকে তাকিয়ে) স্যার চলুন তো বিন্দা পিসির বাড়ি যাই। পিসির মতটা আগে জানা দরকার। (এরপর শিবুর দিকে তাকিয়ে) শোন, তোকে আমরা আরো বেশি টাকা দেবো।  পিসির কাছে সব কথা খুলে বলবি। না হলে এ্যায়সা ধোলাই দেবো না (বলে আবার চড় দেখায়)।

(সকলের প্রস্থান .. মঞ্চে ব্যান্ডের সুর .. ধীরে ধীরে মঞ্চ অন্ধকার হয়)

পঞ্চম দৃশ্য

দৃশ্যপট এবং সময় :- বিন্দা পিসির বাড়ি, সন্ধ্যে সাতটা। (ঘরে জেঠু, জগৎ, দেবু চেয়ারে বসে। ছেলেরা কেউ চেয়ারের পেছনের দিকে দাঁড়িয়ে, কেউ বিন্দা পিসির ঘরে রাখা পত্রপত্রিকা দেখছে, মাঝে মাঝে মুখাভিনয়ে কথা বলছে। মঞ্চের বাঁদিকে বিন্দা পিসির
বাড়ির ভিতর ঢোকার পথ। পিসি দু'হাতে দু কাপ চা নিয়ে ভিতর থেকে আসছেন - মঞ্চে আলো জ্বলে ওঠে)

বিন্দা পিসি - নিন দাদা চা খান। (জেঠু আর জগৎ দার হাতে একটা করে কাপ ধরিয়ে)

দেবু - পিসি আমাকে চা দিও না।

পিসি - কেন? একটুখানি খা.. দাঁড়া আমি আসছি। (পিসি ভেতরে যান একবার দেবুর চা নিয়ে আসেন, তারপর আবার ভেতর থেকে নিজের চা এবং একটা কৌটো আনেন)

দেবু - তুমি বসো, এখন একটা কিছু উপায় বলো।

পিসি - দাঁড়া, ছেলেদের একটা করে বিস্কুট দিই। (ছেলেদেরকে একে একে বিস্কুট দেন .. ছেলেরা বিস্কুট খায় এবং বড়রা চা খায়) সত্যি বলছি, আমি ভাবতেই পারছি না টুনু এতদূর গেছে!

জগৎ - কেন, আপনাকে এ ব্যাপারে কিছু বলেনি কোনোদিন? আপনি কিছু জানতেন না?

পিসি - (উত্তেজিত হয়ে) আমি এ সবের বিন্দু বিসর্গও জানি না। তবে হ্যাঁ, মাঝে মাঝেই মাঠের জমিটা নেওয়ার জন্য উৎপাত করতো। (একটু থেমে কিছু একটা মনে করার চেষ্টা করে) এই কিছুদিন আগের ঘটনা ‌.. প্রায় দিন দশেক আগের কথাই হবে .. সন্ধ্যে সাতটা কিংবা সাড়ে সাতটা তখন .. বৃষ্টি পড়ছিল বাইরে একটা লোককে নিয়ে এলো টুনু ..

(বিন্দা পিসি কথা বলতে বলতে মঞ্চে অন্ধকার হয়ে গেল। একটা গোল স্পটলাইট মঞ্চের বাঁ দিকের কোনে ফেলা হলো। 'ফ্ল্যাশ-ফ্লোরে' ঘটনাটা দেখানো হবে .. সেখানে তিনজন কথা বলছে - দু'জন প্যান্ট শার্ট পরা লোক আর বিন্দা পিসি)

টুনু - পিসি, বলছি তুমি মাঠটা ছেড়ে দাও। এমন সুযোগ আর পাবে না। ওখানে অন্তত দুটো বড় অ্যাপার্টমেন্ট হবে, ৩২ টা ফ্ল্যাট হবে দু-দুটো ফ্ল্যাটের মালিক তুমি হবে .. ভাবো দেখি, কি কান্ডটা হবে। এটা কি একটা ফেলে দেওয়ার কথা?

পিসি - সে তুই যাই বলিস বাপু, ছেলেদের খেলার মাঠ আমি কেড়ে নেবো কি করে? ধর্মে সইবে আমার?

টুনু - উফ্, তোমার এই ধর্ম টর্ম ছাড়ো তো! বলি, ছেলেমেয়েদের খেলার জন্য তোমার কিসের গরজ? তোমার নিজের ছেলেপুলে নেই, নাতি নাতনি নেই, তাহলে ওদের জন্য তোমার মাথাব্যথা কেন? তোমার জমির কি পজিশন তুমি নিজেই জানো না। লুফে নেবে যে কোনো প্রোমোটার, কি বলেন অভয়বাবু? (অন্য ব্যক্তিটির দিকে তাকিয়ে)

অভয় বাবু - হ্যাঁ, টুনুবাবুতো ঠিকই বলেছেন পিসিমা।

পিসি - না বাবা, সে হবার নয়। বাপঠাকুর্দার সময় থেকেই ছেলেরা ওই মাঠে খেলে আসছে, তাদের আশীর্বাদ আছে। আর আমি সেটা বিক্রি করে দেবো, এমন অন্যায় করতে পারবো না।

অভয় বাবু - এই তো .. আপনাদের এই এক সেন্টিমেন্ট! ওসব দিন এখন আর নেই। এখন এক ইঞ্চি জমি কেউ ফেলে রাখে না। কেন না জমি মানেই পয়সা, কলকাতা শহরে দেখুন না - যেদিকে তাকাবেন শুধু ফ্ল্যাট ফ্ল্যাট আর ফ্ল্যাট .. মফস্বলেও তাই। দেশের এত লোকসংখ্যা, তাদের থাকতে জায়গা তো দিতে হবে! এ ব্যাপারে আপনার তো একটা দায়িত্ব থাকবে।

টুনু - (ঘাড় নেড়ে সায় দেয়) হুঁ শুনলে তো, কত বড় কথাটা বললো অভয় বাবু (তারপর একটা কাগজ বের করে) নাও এই কাগজটায় একটা সই করে দাও। তিনজনের পার্টনারশিপে ফ্ল্যাটগুলো তৈরি হবে, এটাই তার প্রমাণ। কেউ তোমাকে ঠকাবে না।

পিসি - না রে সে হয় না, আমি সই করতে পারব না।

টুনু - (স্বগতোক্তি করে) ভালো কথায় দেখছি কাজ হবে না। (প্রকাশ্যে) তাহলে ফ্ল্যাট করাতে তোমার মত নেই, তাই তো?

পিসি - নাঃ একেবারেই না ..

অভয় বাবু - পিসিমা আর একবার ভাবুন। আপনি একা মানুষ, এরপর তো আপনাকে 'ওল্ডহোমে' যেতে হবে। এই ব্যবস্থা হলে আপনার ওখানে যাওয়ার কি দরকার?

পিসি - ওরে বাবা তোরা চুপ কর আমার মাথা ঘুরে যাচ্ছে। মাঠ আমি বেচবো না, বেচবো না, বেচবো না .. হয়েছে তো? এখন যা।

টুনু - ঠিক আছে থাকো তুমি তোমার খেলার মাঠ নিয়ে, চলুন অভয় বাবু।

(মঞ্চ অন্ধকার হয় কয়েক মুহূর্ত, আবার আগের দৃশ্য ফিরে আসে)

পিসি - তাহলে প্রোমোটার আর টুনুই এই কাজ করেছে। (পাগলের দিকে তাকিয়ে) আর তোর এত বড় সাহস, তুই এদের ভয় দেখাচ্ছিস?

শিবু - (পিসির পা ধরে ভেউ ভেউ করে কেঁদে ফেলে) ক্ষমা করো মা, ক্ষমা করো। আমাকে বাঁচাও এই কান মুলছি, এই নাকখৎ দিচ্ছি। আর হবেনা, কক্ষনো না, তুমি আমাকে বাঁচাও মা .. টুনূবাবু মেরে ফেলবে।

(শিবুর কান্না দেখে সকলেই বিচলিত হয়, কেউ কেউ গায়ে হাত দিয়ে সান্ত্বনা দেয়।)

দেবু - চুপ কর, মেরে ফেললেই হলো! কে কাকে মেরে ফেলে দেখছি।

ডাক্তার - কিন্তু দেবু করবে টা কি এখন? এটারই বা কি গতি হবে? আর মাঠের দখলই বা নেবে কি করে? এই সময় কারো সঙ্গে কোনো বিবাদে যাওয়াটাও তো ঠিক নয়। খুবই ভাবনার বিষয়, একেবারে দোটানায় পড়া গেলো।

পিসি - শুনুন দাদা অত চিন্তার কারণ নেই। টুনুর শাস্তি দরকার। আমরা 'কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলবো' ওকে দিয়েই ওদের শায়েস্তা করবো।

ডাক্তার - কি রকম, শুনি একবার। তুমি কি সেরকম কিছু ভেবেছো?

পিসি - ভেবেছি, বলবো আসুন (পিসি .. জেঠু দেবু এবং জগৎদার সঙ্গে কিছু পরামর্শ করে নেন মুখাভিনয়ের মাধ্যমে) ঠিক আছে তো?

(সকলে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানায়)

শিবু - পিসি আমার কি হবে?

পিসি - তোরই তো এখন সব থেকে বেশি কাজ। তুই মাঠে চলে যা, সারাদিন রোদে থেকে তোর মাথা গরম হয়ে গেছে, তুই অজ্ঞান হয়ে গেছিস - এটাই অভিনয় করবি।

শিবু - পিসি তারপর কি হবে?

পিসি - তুই মরার মতো পড়ে থাকবি, ডাক্তারবাবু তোকে দেখবার জন্য চেম্বারে নিয়ে আসবেন, তারপরে যা কাজ হবার হবে। (দেবুর দিকে তাকিয়ে) দেব নাও, চটপট কাজ শুরু করে দাও।

দেবু - নাও সবাই চলো। চলুন জেঠু, জগৎ দা চলুন, আমাদের অপারেশন শুরু করতে হবে। শিবু তুই মাঠে চলে যা। (ছেলেদের দিকে তাকিয়ে) তোরা আমার সাথে আয় জেঠুর চেম্বারে। আচ্ছা পিসি তাহলে আসি, তুমি ঠিক আটটায় চলে এসো।

পিসি - হ্যাঁ, আমি ঠিক সময়েই যাবো। তোমাদের কাজ যেন সিদ্ধ হয়। দুগ্গা দুগ্গা (সকলের প্রস্থান / মঞ্চ অন্ধকার হয়)

ষষ্ঠ দৃশ্য / শেষ দৃশ্য

দৃশ্যপট এবং সময় :- ডাক্তার জেঠুর চেম্বার, রাত আটটা। (মঞ্চ অন্ধকার, দরজা খোলা, কেউ কোথাও নেই। আবছা আলোয় দেখা যাচ্ছে শিবু ঘুমোচ্ছে অঘোরে। দুজন লোক চুপিসারে মঞ্চের ডান দিক থেকে ঢুকছে। একটা টর্চ হাতে নিয়ে মাঝে মাঝে জ্বালছে এবং কি যেন খুঁজছে। তারপর গোটা মঞ্চটাই একবার প্রদক্ষিণ করে নিলো।)

১ম জন - নাঃ কিছু দেখা যাচ্ছে না, ব্যাটা গেলো কোথায়?

২য় জন - কোথায় আর যাবে, এখানেই ওকে এনেছে শুনেছি।

১ম জন - ব্যাটা বদমাইশ, অজ্ঞান হওয়ার আর সময় পেলো না, আমাদের ফাঁসাবে দেখছি। (হঠাৎ টর্চের আলো দিয়ে পড়লো ঘরের কোণে হাইবেঞ্চের উপর শুয়ে থাকা শিবুর উপর) ওই তো শুয়ে আছে .. চলুন চলুন দেখি।

২য় জন - আস্তে আস্তে বেশি হড়বড় করবেন না, কেউ কোথাও টের পেয়ে গেলে বিপদ হবে। (দুজনে কাছে যায়, শিবুর নাকে হাত দিয়ে দেখে) নাহ্ মরে নি, ব্যাটা অজ্ঞান হয়ে আছে। আর না হয় ডাক্তার ঘুমের ওষুধ দিয়েছে।

১ম জন - ঠিক আছে চটপট করুন, বডিটাকে তুলে নিয়ে সোজা আপনার বাড়ি চলে যাবো। কেউ টের পাবে না।

২য় জন - হ্যাঁ, এখন এটাই আমাদের প্রথম কাজ, এখান থেকে নিয়ে গিয়ে ব্যাটাকে গিলিয়ে একেবারে জন্মের মতো ঘুম পাড়িয়ে দিতে পারলেই, ব্যাস .. কেল্লাফতে। তারপর কাল থেকে নতুন প্ল্যান .. টুর্নামেন্ট খেলা দেখাচ্ছি! আমার নাম অভয়চরণ সামন্ত, কেলুপাড়ার ছেলে।

১ম জন - (টরচ ঘুরিয়ে) যাক এখন কেউ কোথাও নেই, আপনি ব্যাটার মুখটা চেপে বাঁধুন, আমি তুলে নিয়ে বাইরে চলে যাবো।
(২য় জন শিবুর মাথার কাছে গিয়ে, তার মুখের উপর একটা কাপড়ের ফেট্টি ধরেছে, আর ১ম জন কোমরের নিচে যেই না হাত দিয়েছে .. সঙ্গে সঙ্গে শিবু তরাক করে লাফিয়ে উঠে বসে পড়েই চিৎকার করে উঠলো 'দেবুদা, জেঠু পিসি ..')

(সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চের জোরালো আলো জ্বলে উঠলো। আর মঞ্চের চারদিক থেকে রাজু, রনি, শঙ্কু, দুলু, অন্তু, দেবুদা, জগৎদা ও জেঠু এক পা এক পা এগিয়ে এসে করে ঘিরে ধরলো ওদের দুজনকে। শিবুও বেঞ্চ থেকে নেমে পড়লো তাড়াতাড়ি। ওরা দু'জন পালাবার চেষ্টা করলে সকলেই মঞ্চের ডানদিক থেকে বাঁদিক পর্যন্ত অর্ধ বৃত্তাকারে হাতে হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকলো।)

দেবু - কি টুনুদা পালাচ্ছো কার ভয়ে .  পাগলের ভয়ে না আমাদের ভয়ে?

টুনু - দেবু .. হাত ছার, ভালো হবে না। হাত ছেড়ে কথা বল। (হাত ছাড়াবার চেষ্টা করে)

ডাক্তার - (অভয়ের হাতটা সজোরে ধরেন) ও তুমি এখন এই করছো? ও হলো কেলুপাড়ার অভয়‌। তুমি নিজেও তো একদিন এই মাঠে খেলেছো, তার এই প্রতিদান দিলে? বড় তালেবর হয়েছো, কায়দা করে জমি নেবে?

অভয় - (বিনীত ভাবে) ছাড়ুন ডাক্তার বাবু .. ছাড়ুন ..

ডাক্তার - বয়স্ক বিধবা মানুষকে ঠকাতে লজ্জা করে না? তোমরা কি বলো তো? মানুষ তো?

অভয় - (লজ্জিত ভঙ্গিতে) ভুল হয়ে গেছে ডাক্তারবাবু।

(পিসির প্রবেশ সঙ্গে থানার মেজবাবু)

ডাক্তার - আসুন এই যে দুই মক্কেল। একজনকে পাগল সাজিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে, বিধবার সম্পত্তি মারার ধান্দায় ছিলো।

মেজবাবু - (পিছনে কনস্টেবল) আপনারা ওদের হাত ছেড়ে দিন, আমি থানায় নিয়ে যাচ্ছি (কনস্টেবলের দিকে তাকিয়ে) এদের গাড়িতে তোলো।

(কনস্টেবল টুনুবাবু এবং অভয়চরণ দুজনকেই গাড়িতে নেওয়ার জন্য উইংসের কাছে যেতেই, পিসি ওদের দাঁড়াতে বললো)

পিসি - দাঁড়ান মেজবাবু, একটু দাঁড়ান। (চারজনেই ঘুরে দাঁড়ায়) - এই যে (একটা কাগজ দেখিয়ে) এইটা আমার 'দানপত্র' করা কাগজ .. এই কাগজে আমি লিখে দিলাম যে - আমার এই চার বিঘা জমি যুগ যুগ ধরে ছেলেদের খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আপনারা (সকলের দিকে তাকিয়ে ( সকলের সাক্ষী থাকলেন .. এবার আসুন।

(ছেলেরা ছুটে এলো সবাই, পিসিকে তুলে ধরলো)

দেবু - থ্রি চিয়ার্স ফর বিন্দা পিসি ..

সকলে - হিপ্ হিপ্ হুররে ..

দেবু - থ্রি চিয়ার্স ফর বিন্দা পিসি ..

সকলে - জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ ..

|| সমাপ্ত ||

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 7 users Like Bumba_1's post
Like Reply
দারুন দারুন!! এ যে একটা ছোট থ্রিলার গল্প নানা নাটকের সাক্ষী হলাম আমরা পাঠক নানা দর্শকরা। নাটক শেষের দৃশ্যটা আমিই বলে দি - মঞ্চে সকলের একত্র হয়ে দর্শকদের উদ্দেশে মাথা নামিয়ে ধন্যবাদ জানানো আর ওপাশ থেকে সকলের দর্শকদের করতালি, সাথে সিটি আর কারো কারো মুখ থেকে ভেসে আসছে - দারুন দারুন, বিন্দা পিসি যুগ যুগ জিও!!
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
একদিকে আদিবাসাত্মক গল্প তো অন্যদিকে মেনস্ট্রিম ছোট গল্প, প্রেমের গল্প, একেবারে শিশুদের জন্য লেখা গল্প, ভূতের গল্প, কবিতা, ছড়া, আঁকা, ওদিকে আবার গান। শুধু নাটক লেখাটাই বাকি ছিল সেটাও আজ পূর্ণ করে দিলে। সর্বগুণ-সম্পন্ন এই কথাটা তোমার জন্য একেবারে appropriate - এ কথা আগেও বলেছি, আবারো বলতে বাধ্য হলাম। এটা যদি গল্পের আকারে লিখতে তাহলেও কিন্তু বেশ রোমহর্ষক হতো ব্যাপারটা। তবে নাটকের আকারে কোনো কিছু লেখা কিন্তু বেশ কঠিন, অনেক নিয়ম-টিয়ম মেনে লিখতে হয় দেখছি।

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply
(11-08-2022, 02:43 PM)Baban Wrote: দারুন দারুন!! এ যে একটা ছোট থ্রিলার গল্প নানা নাটকের সাক্ষী হলাম আমরা পাঠক নানা দর্শকরা। নাটক শেষের দৃশ্যটা আমিই বলে দি - মঞ্চে সকলের একত্র হয়ে দর্শকদের উদ্দেশে মাথা নামিয়ে ধন্যবাদ জানানো আর ওপাশ থেকে সকলের দর্শকদের করতালি, সাথে সিটি আর কারো কারো মুখ থেকে ভেসে আসছে - দারুন দারুন, বিন্দা পিসি যুগ যুগ জিও!!

একদম ঠিক বলেছো। দর্শক আসন থেকে অভিবাদন (যদি আদৌ পছন্দ হয়) ভেসে আসার মাঝে মঞ্চ ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে যাবে এবং পর্দা নিমজ্জিত হবে।   Smile

(11-08-2022, 03:09 PM)Somnaath Wrote: একদিকে আদিবাসাত্মক গল্প তো অন্যদিকে মেনস্ট্রিম ছোট গল্প, প্রেমের গল্প, একেবারে শিশুদের জন্য লেখা গল্প, ভূতের গল্প, কবিতা, ছড়া, আঁকা, ওদিকে আবার গান। শুধু নাটক লেখাটাই বাকি ছিল সেটাও আজ পূর্ণ করে দিলে। সর্বগুণ-সম্পন্ন এই কথাটা তোমার জন্য একেবারে appropriate - এ কথা আগেও বলেছি, আবারো বলতে বাধ্য হলাম। এটা যদি গল্পের আকারে লিখতে তাহলেও কিন্তু বেশ রোমহর্ষক হতো ব্যাপারটা। তবে নাটকের আকারে কোনো কিছু লেখা কিন্তু বেশ কঠিন, অনেক নিয়ম-টিয়ম মেনে লিখতে হয় দেখছি।

এই কথাটা আমি ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। আগে ভীষণ লজ্জা পেতাম, তবে এখন শুনতে শুনতে ব্যাপারটা সয়ে গিয়েছে। সব গুন আমার মধ্যে আছে কিনা জানি না, কিন্তু এটা ঠিক যে আমি আমার সীমিত ক্ষমতার মধ্যে শিল্পী সত্তা বজায় রেখেছি। এবার সবদিক বিচার করে তোমরাই ভালো বলতে পারবে আদৌ সেগুলো পাতে দেওয়ার যোগ্য কিনা। 
হ্যাঁ, ঠিকই বলেছো .. পড়ে যতটা সহজ বলে মনে হচ্ছে, লেখার সময় মঞ্চস্থ হওয়ার উপযোগী নাটক লেখা কিন্তু ভীষন কঠিন। আসলে এইসব লেখার একটা বিশেষ ধরন আছে, যেটা ফলো করতে না পারলে ভরাডুবি হয়ে যেতে পারে।  Smile
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
সত্যিই এগুলো পড়লে আর দেখলে আবারো পুরানো বাবান হয়ে অন্যরকম গল্প লিখতে ইচ্ছে জাগে। নিজের ওই গল্প গুলো মনে পড়ে যায়। সেই ভূমি, সেই দূরত্ব, বন্ধু, খোকন, ভয় সবকটা, তাছাড়া ছড়া গুলোও যেন অপেক্ষায়। কিন্তু নানা কারণে আর ঐদিকে নজর দেওয়াই যাচ্ছেনা। নিজের বর্তমান গপ্পো আর নিজস্ব দায়িত্বপালনের মাঝে সেই বাবান চাপা পড়ে যাচ্ছে। ভাবছি নষ্টসুখ শেষ হলে এবার এই বাবানকে বিরতি দেবো। আর পারলে ওই বাবানকে আবারো ঘুম থেকে জাগাবো। দেখি।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(11-08-2022, 03:47 PM)Baban Wrote:
সত্যিই এগুলো পড়লে আর দেখলে আবারো পুরানো বাবান হয়ে অন্যরকম গল্প লিখতে ইচ্ছে জাগে। নিজের ওই গল্প গুলো মনে পড়ে যায়। সেই ভূমি, সেই দূরত্ব, বন্ধু, খোকন, ভয় সবকটা, তাছাড়া ছড়া গুলোও যেন অপেক্ষায়। কিন্তু নানা কারণে আর ঐদিকে নজর দেওয়াই যাচ্ছেনা। নিজের বর্তমান গপ্পো আর নিজস্ব দায়িত্বপালনের মাঝে সেই বাবান চাপা পড়ে যাচ্ছে। ভাবছি নষ্টসুখ শেষ হলে এবার এই বাবানকে বিরতি দেবো। আর পারলে ওই বাবানকে আবারো ঘুম থেকে জাগাবো। দেখি।

প্লিজ, ওই বাবান টাকে আবার ঘুম ভাঙ্গিয়ে জাগাও, তাহলে আমার থেকে বোধহয় আর বেশি কেউ খুশি হবে না।
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
কোনো প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। শুধু মাঝে মাঝে এটা ভেবে অবাক হই এই দুজন কি একই মানুষ! যে গোলকধাঁধায় লিখছে আবার যে বিন্দা পিসির মতো অসাধারণ কিছু সৃষ্টি উপহার দিয়ে যাচ্ছে আমাদের।

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 2 users Like Sanjay Sen's post
Like Reply




Users browsing this thread: 24 Guest(s)