Thread Rating:
  • 167 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছিন্নমূল ঃ কামদেব
#81
লেখক ২৬ জুনের পরে আর লগইন করেননি , এবারে একটু চিন্তা হচ্ছে বৈকি। 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#82
(04-07-2022, 10:46 AM)ddey333 Wrote: লেখক ২৬ জুনের পরে আর লগইন করেননি , এবারে একটু চিন্তা হচ্ছে বৈকি। 

আশা করছি উধাও হয়ে যাবেননা এই সাইট থেকে আরো অনেকের মতো........
Like Reply
#83
পঞ্চম অধ্যায়


খাওয়া দাওয়ার পর বারান্দায় গিয়ে বসলেন সুমনা।চারকাঠা জমির উপর দু-খানা ঘর একপাশে রান্না ঘর বাথরুম।বাথরুমের পাশে কুয়ো।বাড়ীর সামনে হাত কয়েক জমি তারপর কঞ্চির বেড়া দিয়ে ঘেরা।বরদা মাস্টারের ইচ্ছে ছিল সামনে ফুলের গাছ লাগাবেন সময়াভাবে হয়ে ওঠেনি।বারান্দায় বসে রাস্তার লোকজনের চলাচল দেখা যায়।মনু পরীক্ষা দিতে গেছে,আজই মনে হয় শেষ পরীক্ষা।কেমন পরীক্ষা দিচ্ছে কেজানে মুখ ফুটে বলেও না কিছু।ওর লেখাপাড়াটা যেন বন্ধ না হয়।সেদিন রাত্রের কথাটা মনে পড়ল।হঠাৎ কেন একথা বলল,খুব ভয় পেয়ে গেছিলেন সুমনা।এদেশে আসার পর থেকে দিন দিন মানুষটা কেমন হয়ে গেছে।এত বছর হয়ে গেল মাহিদিয়ার ছবিটা মন থেকে সরেনি।বরাবরই গম্ভীর কিন্তু উৎসাহ উদ্দীপনার অভাব ছিল না।কারো নিন্দা ওর মুখে শোনেন নি।সুবীটা একরকম বাড়ী থেকে তাড়িয়েই দিয়েছিল তবু কোনদিন সুবী সম্পর্কে কোনো বিরূপ মন্তব্য শোনেন নি।একটা কথা প্রায়ই বলতো,সুমন ভাল মন্দ যাহাই আসুক সত্যরে লও সহজে। হঠাৎ গিরিবালাকে দেখে উঠে ঘরে যেতে গিয়ে চোখাচুখি হতে হাসল গিরিবালা।এর পর চলে যাওয়া অভদ্রতা সুমনা বসে পড়লেন।গিরিবালার মুখ খুব আলগা সেজন্য ওকে এড়িয়ে চলতে চান।সারা পাড়ার খবর ওর হাতের তালুতে।সুমনা পরচর্চা পছন্দ করেন না।মনে হল গিরিবালা এদিকেই আসছে।যা কিছু ঘটে সব পছন্দের না হলেও ঘটনা ঘটে যায়।সুমনা হাসি হাসি মুখে করে বারান্দায় বসে থাকেন।গিরিবালা আসতে একটা মোড়া এগিয়ে দিয়ে বললেন,তোমার কাজ শেষ হল?
 কাজের কি শেষ আছে।বাড়ীতে কেউ নাই ব্যাটা কোথায়?
 পরীক্ষা দিতে গেছে।কত বাড়ী কাজ করো?
 আগে চার বাড়ী করতাম,ব্যানার্জীদের কাজ ছেড়ে দিয়েছি।এখন তিন বাড়ী করি।
 ছেড়ে দিলে কেন?
 ব্যানার্জীবাবু মানুষটা ভাল না।খালি রান্না ঘরে আসে।সিগারেট ধরাবি দেশলাই নাই?
 সুমনা প্রসঙ্গটা এড়াতে বললেন,বাড়ী গিয়ে আবার রান্না করবে?
 তাতো করতে হবে।জানেন বৌদি রূপ হচ্ছে মেয়েদের শ্ত্রু--।
সুমনার বিষম খাবার জোগাড়।কত আর বয়স হবে চল্লিশ-বিয়াল্লিশ।শেলেটের মতো মাজা রঙ পেটানো শরীর।অল্প বয়সে স্বামী মারা গেছে।ভ্যান চালাতো।সুমনা বললেন,তোমার স্বামি মারা গেল কিভাবে?
 মরবে তা জানতাম।নেশা করতো পাতা খেত মানা করলি শোনবে না।একদিন রাতের বেলা নেশা করে ফিরছে, ভ্যানের সঙ্গে গাড়ীর ধাক্কা।একেবারে স্পত ডেট।
কেমন নির্বিকার ভাবে কথাগুল বলল,যেন অন্য কারো ঘটনার কথা বলছে।সুমনা জিজ্ঞেস করলেন, একা একা খারাপ লাগে না?
 খারাপ লাগবে না, বোউদিকে সব কথা বলা যাবে না।খারাপ তো লাগেই সেই জন্য--- আর কিছু আয়ও হয়।পালবাড়ীর কাজ শেষে বেরোবার সময় পালবাবু বলল,তোমার বৌদি সন্ধ্যেবেলা বাপের বাড়ী যাবে।তুমি একবার এসো।ঘরে বউ থাকতে কাজের লোকের সঙ্গে কেন করে বুঝতে পারে না।
সুমনা দেখলেন গিরিবালা ওঠার কোনো লক্ষন নেই,কি কথায় কি এসে পড়ে বললেন,তুমি বাড়ী যাবে না?তোমার তো আবার রান্না করতে হবে।
  হ্যা বৌদি আসি।যদি কোনো দরকার হয় বলবেন।  
কেষ্টর চায়ের দোকানে আড্ডা চলছেই।কার্তিক বাইরে একজনের সঙ্গে কথা বলছে।গোবিন্দ আজও ভুলতে পারেনি সেদিনের অপমানের কথা।শালা বাঙালটা বড় বাড় বেড়েছে।লেখাপড়া ছেড়ে গোবিন্দ এখন কার্তিকের দলে ভীড়েছে।লোকটির সঙ্গে কথা শেষ করে কার্তিক দোকানে ঢুকে বলল,কিরে গোবে বাড়ী যাবি না?
 তুমি তো ওই ব্যাপারটা কিছু করলে না।
গিরিবালার সামনে বেইজ্জতি গোবেটা ভুলতে পারছে না কার্তিক বুঝতে পারে।গোবিন্দ বলল,কেতোদা তোমায় কিছু করতে হবে না তুমি শুধু সামনে দাঁড়াবে বোকাচোদাকে আমি একলাই টাইট করে দেবো।
 খালি খালি মুখ খারাপ করবি নাতো।কার্তিক পাশে বসতে বসতে বলল।
 তোরা শুনেছি একসঙ্গে পড়তি--।শিবেন বলল।
 শিবুদা তুমি বুঝবে না তোমার সঙ্গে হলে বুঝতে।
 তুই তো আগে গিরিবালাকে গাল দিয়েছিস।
 তাতে ওর কি,গিরিদি কি ওর মাগ? 
 শোন গোবে মাথা গরম করিস না।বাঙালরা হেভি গোয়ার হয় ওর বাবাকে এলাকার মানুষ খুব সম্মান করে--।
 থাক আমি শুনতে চাই না।
কার্তিক বুঝতে পারে ওকে বোঝালে বুঝবে না।গিরিবালার সামনে অপমান ভুলতে পারছে না।কার্তিক বলল,একটা ঘটনার কথা বলছি শোন।তখনও স্বাধীন হয়নি বাংলা দেশ বর্ডারে বাঙালী পুলিশ।একটা চালান দিয়ে ফিরছি দেখি একটা ছেলেকে ধরেছে একজন সিপাই।ছেলেটা এদেশে আসছিল।আমাকে দেখে সিপাইটা বলল,কিরে কেতো চালান হয়ে গেল?আমি কাছে এগিয়ে গেলাম।ছেলেটা বলছে টাকা তো দিয়েছি।
 টাকা চাইছি না ঘড়ীটা খুলতে বলছি।
 কেন ঘড়ি খুলবো কেন?
আমি বুঝতে পারলাম শালা ঘড়ির দিকে নজর পড়েছে বললাম,খুলে দিন ভাই ঝামেলা করে কি লাভ?
সিপাইটা ওর হাত চেপে ঘড়ি খুলতে গেল।কি বলব শালা কাধে রাইফেল পুলিশ ছেলেটা সিপাইয়ের তলপেটের নীচে সপাটে এক লাথি।সিপায় বিচি চেপে বসে পড়ল।ছেলেটা ছুট সিপাই বলল,এই কেতো পাকড়ো কেফেরের বাচ্চাকে।মন রাখতে আমিও ছেলেটাকে তাড়া করলাম।সিপাই ততক্ষনে সামলে নিয়ে পিছন পিছন আসছে।আরও কিছু সিপাই চলে এসেছে।ছেলেটা হরিণের মত ছুটছে।সিপাই গুলি চালালো।
 ছেলেটাকে গুলি করলো?গোবিন্দ জিজ্ঞেস করে।
 আনাড়ি শালা গুলি লাগলো আমার পা-এ।
 সেকি তারপর?
 তারপর আর কি সিপাইরা এসে ধরাধরি করে আমাকে পৌছে দিল।
 সেই ছেলেটা?
 কে জানে কোথায় পালালো।
 ভাগ্যিস তোমার পিঠে গুলি লাগেনি।
 ছেলেটার হিম্মত আছে।
   পরীক্ষার পর বাড়ী ফিরছে সুখ রঞ্জন।আজ শেষ দিন তাই বেশ হাল্কা লাগছে।মনে মনে হিসব করে সবে কলেজ ফাইন্যাল হল আরো অন্তত বছর সাতেক লাগবে এম.এ পাস করতে।অধ্যাপনার চাকরি করতে এম.এ করতেই হবে।কতদিনের স্বপ্ন সে অধ্যাপক হবে।
পিছন থেকে এক ভদলোক এসে জিজ্ঞেস করল,আচ্ছা ভাই কার্তিকবাবুকে কোথায় পাওয়া যাবে?
চোখ তুলে দেখল বছর পয়ত্রিশ বয়স হবে সুখরঞ্জন জিজ্ঞেস করল,ল্যাংচা কার্তিক?
লোকটি থতমত কিছুটা অপ্রস্তুত ফ্যাকাশে হাসল।সুখ রঞ্জন বলে,কি করে লোকটি?
--কি করে মানে--।
--লোক চালান করে?জিজ্ঞেস করল সুখ রঞ্জন।
--ওই আর কি।
--সোজা গিয়ে বা-দিকে ঘুরে জিজ্ঞেস করবেন,কেষ্টর চায়ের দোকান।ঐখানেই ওর আড্ডা।
লোকটি ধন্যবাদ বলে দ্রুত হাটতে থাকে।
ভদ্রলোক মনে হয় বাংলাদেশে যাবার জন্য ল্যংচা কার্তিককে খুজছে।পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে গোবেটা এখন ওদের সঙ্গে ওঠা বসা।গোবের সঙ্গে ওর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।বাবা অবশ্য ওকে পছন্দ করেনা।
 পরীক্ষা কেমন হল?
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল ডাক্তারবাবুর মেয়ে,হাসি হাসি মুখে তার দিকে তাকিয়ে।মনে হয় পরীক্ষা দিয়ে ফিরছে।
 কি হল চিনতে পারছো না?
 আপনি ডাক্তারবাবুর মেয়ে।
মেয়েটি খিল খিল হেসে বলল,আমি তোমার খুড়ী না জেঠি?আপনি আপনি করছ।
 না মানে একজন অচেনা মেয়ে--।
 এই যে  বললে ডাক্তারবাবুর মেয়ে?
 না মানে আলাপ নেই--।
 কি মানে মানে করছো।আলাপ করলেই আলাপ হয়। পাস করার পর আমরা হয়তো একই কলেজে পড়বো।পরীক্ষা কেমন হল বললে নাতো?
 মোটামুটি।আপনার মানে তোমার কেমন হয়েছে?
 ভালই।দেখা যাক রেজাল্ট বেরোলে বোঝা যাবে।তোমার নাম সুখদা রঞ্জন না? আমার নাম জানো তো--পাঞ্চালি মিত্র।
 হ্যা গোবের কাছে শুনেছি।
 গোবে মানে মল্লিকদের বাদর ছেলেটা?ও তোমার বন্ধু? পাঞ্চালির চোখে ভর্ৎসনা।
 বন্ধু মানে এক সময় আমার সঙ্গে পড়তো।
 খবরদার বলছি ওর সঙ্গে মিশবে না।
 কিরে বাড়ী যাবি না?
 বেলা কখন এসে দাড়িয়েছে পাঞ্চালি খেয়াল করেনি।বেলার চোখে ইঙ্গিতবহ হাসি।পাঞ্চালি বলল,হ্যা যাবো।তারপর সুখর দিকে তাকিয়ে বলল,আসি।পরে কথা হবে।
পাঞ্চালিকে আগে চিনতো কিন্তু কোনোদিন কথা হয়নি।আজ হঠাৎ যেচে কেন কথা বলল।বড়লোকের খেয়াল।অঞ্চলের নামজাদা ডাক্তার ওর বাবা।
বেলা জিজ্ঞেস করে,কি কথা হচ্ছিল?
 এমনি কিছু না জিজ্ঞেস করল,পরীক্ষা কেমন হয়েছে?বললাম ভালো।আজকের পরীক্ষা ভাল হলেও অঙ্কটা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।
 তোর সঙ্গে আগে আলাপ ছিল?
 তুই চিনিস না ও মাস্টার মশায়ের ছেলে।
 চিনবো না কেন।  বিআরবিকে অঞ্চলের কে না চেনে।
 আচ্ছা বেলা তুই কি অন্য কিছু ভাবছিস?
 মিথ্যে রাগ করছিস আমি কি কিছু বলেছি?
Like Reply
#84
যাক তাহলে এতদিন পরে একটু আপডেট পেলাম ! 
Like Reply
#85
গল্প খুব সুন্দর, এর পরের অংশ পড়ার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।
Like Reply
#86
অনবদ্য
তোমারেই চেয়েছি,
শতরূপে শতবার ,
নিয়মে অনিয়মে ।
Like Reply
#87
এই গল্পের বেলির আগমন হলো।
yourock     clps
[+] 1 user Likes Lajuklata's post
Like Reply
#88
ছোট্ট আপডেট , কিন্তু নায়িকার আগমন হয়ে গেলো এটাই বড়ো জিনিস !!


Smile Heart
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#89
ডাক্তার বাবুর মেয়ে....
আমাদের নায়িকা পাঞ্চালীর আগমন ঘটে গেল সাথে আরেকজন বেলা।
দেখি কাহিনি কোন দিকে মোড় নেয়।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
#90
নায়িকার আগমনের ভেতর দিয়ে আপডেট, ভালোই লাগলো কামদেব দা। যদিও ছোট আপডেট কিন্তু তারপরেও দেখা তো মিললো.......
Like Reply
#91
Darun laglo dada heroine chole aseche akhon dekha jak golpo kon dike jai
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
Like Reply
#92
পাঞ্চালিকে আবার কবে দেখতে পাবো ??

উদাস হয়ে বসে আছি .... Sad
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#93
দাদার লেখা মধুর চেয়েও মিষ্টি। পাঞ্চালী মিত্র, গল্পের নায়িকা নাকি!!!  অবশ্য দাদার লেখা বোঝা দায়, আরও কতো চরিত্র আসবে। 

আপডেট দেরিতে পাই, কোন দুঃখ নাই। কিন্তু দাদা একটু বড় করে চাই। লাইক ও রেপু রইল দাদা।
Like Reply
#94
দাদার গল্পের চরিত্রগুলোর কর্ম-ভবিষ্যৎ-হৃদয়াবেগ সম্পর্কে পূর্বানুমান যথেষ্ঠ কঠিন. নতুন কিন্তু যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ নারীচরিত্র পাঞ্চালীর আগমনে কাহিনীর পরিধি আরো বেড়ে গেলো. আমার মতে, পাঞ্চালী কাহিনীতে কেন্দ্রীয় না পার্শ্ব নারীচরিত্র, তা অবশ্যই ভবিষ্যতে জানা যাবে. আমার মতে এখনও গল্পের নায়িকা সুমনা. সুমনার জীবনে হয়তো বিধাতার ইচ্ছেয় অজান্তে সেই দেবদ্যূতীর আগমন ঘটে গেছে, যে আগে গিয়ে সুমনার জীবনে তার মনের অনেক গহীনে চাপা অথচ অপূর্ণ চাহিদাগুলো পূরণে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে, যে চাহিদাগুলো সম্পর্কে সুমনা নিজেই সচেতনভাবে অবগত নয় বা এখনও এরকম কোনো কিছু ভাবা অন্যায় মনে করে থাকে.

আরো একটি সম্ভাব্য-ঘটনাক্রম ওঠে আসছে - যদিও তা অনুমান মাত্র. গোবের (আরে বখাটে গোবিন্দ) কিছু ঋণ শোধ-বোধ করার আছে সুখোর সঙ্গে. গোবে কি পরবর্তীতে সুখোর প্রেমিকা(বা স্ত্রী) পাঞ্চালীর জীবনে এসে সেই ঋণশোধ করবে? না কি সুমনা পাঞ্চালীর জীবনে এক দেবীর ন্যায় তাকে সুখের সন্ধান দেবে যা থেকে সে বঞ্চিতা; কেননা সুমনা নিজেও তো একজন নারী, সে নিশ্চয় আরেক নারীর মনোকষ্ট আঁচ করার ক্ষমতা রাখে. কাকে দিয়ে - নিজের দ্বিতীয় সন্তানকে দিয়ে?

দাদা অনেকগুলো সম্ভাবনার দিক খুলে দিয়েছেন. এখনও কোনো কিছু সুস্পষ্টভাবে অনুমান করা কঠিন. দেখি, দুষ্ট জাদুকর বিধাতার মতো কলকাঠি নেড়ে কোনদিকে কাহিনীকে মোড় দিয়ে থাকেন - রইলাম অপেক্ষায়.    
[+] 1 user Likes ray.rowdy's post
Like Reply
#95
(10-07-2022, 11:53 AM)ray.rowdy Wrote:
দাদার গল্পের চরিত্রগুলোর কর্ম-ভবিষ্যৎ-হৃদয়াবেগ সম্পর্কে পূর্বানুমান যথেষ্ঠ কঠিন. নতুন কিন্তু যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ নারীচরিত্র পাঞ্চালীর আগমনে কাহিনীর পরিধি আরো বেড়ে গেলো. আমার মতে, পাঞ্চালী কাহিনীতে কেন্দ্রীয় না পার্শ্ব নারীচরিত্র, তা অবশ্যই ভবিষ্যতে জানা যাবে. আমার মতে এখনও গল্পের নায়িকা সুমনা. সুমনার জীবনে হয়তো বিধাতার ইচ্ছেয় অজান্তে সেই দেবদ্যূতীর আগমন ঘটে গেছে, যে আগে গিয়ে সুমনার জীবনে তার মনের অনেক গহীনে চাপা অথচ অপূর্ণ চাহিদাগুলো পূরণে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে, যে চাহিদাগুলো সম্পর্কে সুমনা নিজেই সচেতনভাবে অবগত নয় বা এখনও এরকম কোনো কিছু ভাবা অন্যায় মনে করে থাকে.

আরো একটি সম্ভাব্য-ঘটনাক্রম ওঠে আসছে - যদিও তা অনুমান মাত্র. গোবের (আরে বখাটে গোবিন্দ) কিছু ঋণ শোধ-বোধ করার আছে সুখোর সঙ্গে. গোবে কি পরবর্তীতে সুখোর প্রেমিকা(বা স্ত্রী) পাঞ্চালীর জীবনে এসে সেই ঋণশোধ করবে? না কি সুমনা পাঞ্চালীর জীবনে এক দেবীর ন্যায় তাকে সুখের সন্ধান দেবে যা থেকে সে বঞ্চিতা; কেননা সুমনা নিজেও তো একজন নারী, সে নিশ্চয় আরেক নারীর মনোকষ্ট আঁচ করার ক্ষমতা রাখে. কাকে দিয়ে - নিজের দ্বিতীয় সন্তানকে দিয়ে?

দাদা অনেকগুলো সম্ভাবনার দিক খুলে দিয়েছেন. এখনও কোনো কিছু সুস্পষ্টভাবে অনুমান করা কঠিন. দেখি, দুষ্ট জাদুকর বিধাতার মতো কলকাঠি নেড়ে কোনদিকে কাহিনীকে মোড় দিয়ে থাকেন - রইলাম অপেক্ষায়.    

আমি এতো গভীর ব্যাপারে জাইনা কোনো গল্পেই , পড়তে খুব ভালো লাগে ... কামদেব দাদার মনে হয় সব পড়েছি ... ওনার মতো এতো সুন্দর করে সাধারণ জীবনের লেখা আর কেউ পারেনা ...


কিন্তু ওই বিশেষ অজাচার গ্রুপ যথারীতি এই গল্পের রেটিং কমিয়ে দিয়েছে , দূষিত করে রেখেছে ওই একটা বিশেষ লোক আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা  এই ফোরামকে

বোঝেনা যে এসব করে কিছু লাভ নেই , ওর মা চোদা গল্প কোনোদিন শেষ হবে না আর কেউ পাত্তাও দেয় না আর ...
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
#96
Anek din holo kono update nei sir
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
Like Reply
#97
উনি অনেক বড় লেখক ! ওনার মর্জি মতন লেখেন উনি ! তাইতো কিছুই বলার নেই ! এই ভাবে কমেন্টে পেজ ভরবে আর উনি এঞ্জয় করবেন !
[+] 1 user Likes আমিও_মানুষ's post
Like Reply
#98
দাদা, আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রয়েছি. আপনি সময় নিন, কিন্তু দারুণ একটা পর্ব নিয়ে আসুন. আর আপনি কখনও নিরাশ করেননি.
Like Reply
#99
ষষ্ঠ অধ্যায়

বেশ কয়েকমাস পর।মনার কলেজ নেই বরদা রঞ্জন কলেজে গেছেন।ফোর্থ পিরিয়ডে ক্লাস টেন-এ ক্লাস ছিল।হেড মাস্টারমশায় ক্লাস এইটে একটা বদলি ক্লাস দিয়েছেন।ঘোষবাবু আসেন নি ওর ইতিহাস ক্লাস।ক্লাস এইটের ইতিহাস অসুবিধে হবে না।বিআরবি ইংরেজির শিক্ষক হলেও ওর গলার স্বর এবং পড়াবার স্টাইলের জন্য ছেলে মেয়েরা মুগ্ধ হয়ে শোনে।ছেলেরা বি আর বিকে দেখে মুখ চাওয়া চাওয়ি করে।
 ঘো্যবাবু আসেন নি আমি তোমাদের ইতিহাসই পড়াবো।
একটা ছেলে বই এগিয়ে দিতে বরদা রঞ্জন বই খুলতে গান্ধীজীর ছবি নজরে পড়ল।জাতির জনক অহিংসায় বিশ্বাসী।গুলি বন্দুক হিংসার বাইরের রূপ আসল হিংসা মানুষের মনে।গান্ধীজীর হিংসার জন্য সুভাষকে কংগ্রেস ত্যাগ করতে হয়েছিল।সুভাষ যখন সীতারামাইয়াকে হারিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হলেন গান্ধীজী বলেচিলেন,সীতারামাইয়ার পরাজয় আমার পরাজয়।একথা বলা কি খুব আবশ্যক ছিল।বরদা রঞ্জন মনে মনে ভাবতে থাকেন।এক সময় উঠে দাঁড়িয়ে শুরু করলেন পড়াতে।
সুভাষ বসু গৃহবন্দী।যার রক্তে স্বাধীনতার স্পৃহা তার পক্ষে এই বন্দীজীবন অসহ্য তিনি স্থির করলেন শাসকের দৃষ্টি এড়িয়ে অন্য দেশে চলে যাবেন যেই ভাবা অমনি কাজ।প্রথম তিনি গেলেন সোভিয়েতে সেখানে তখন স্টালিনের শাসন।সোভিয়েতের প্রতি সুভাষের কিছুটা দুর্বলতা ছিল।কয়েকদিন অপেক্ষা করেও স্তালিনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেন না।অগত্যা তিনি জার্মানীর উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।হিটলার তাকে সাদরে বরন করলেন।সুভাষ তার অভিপ্রায়ের কথা জানিয়ে বললেন তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান।কিন্তু হিতলার তাকে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বললেন।সুভাষ তখন পাড়ি দিলেন জাপানে।সেখানে ছিলেন রাসবিহারী বসু জাপানের নাগরিকত্ব নিয়ে ভারতীয় যুদ্ধ বন্দীদের নিয়ে আজাদ হিন্দ বাহিনি গঠণ করেছিলেন।সুভাষকে পেয়ে তিনি বাহিনীর দায়িত্ব সুভাষের হাতে তুলে দিলেন। তোজো তার সব শর্ত মেনে নিলেন।...।ঘণ্টা বাজতেই সব ক্লাসের ছাত্ররা হৈ-হোই করে বেরিয়ে পড়ল।বরদারঞ্জন থামলেন বললেন,বাকীটা তোমরা ঘোবাবুর কাছে শুনে নিও।
টিফিন হয়েছে।বরদা রঞ্জন বুকে মৃদু যন্ত্রণা অনুভব  করেন।শিক্ষকরা সবাই ফিরে এসেছে টিচার্স রুমে।কেউ কেউ হাত মুখ ধুয়ে টিফিন বাক্স খুলে টিফিন সারতে ব্যস্ত।পান্নাবাবু ভুড়ি উচিয়ে এক পাশে বসে আছেন।সহকারী প্রধান শিক্ষক অমূল্যবাবু বললেন,পানুবাবু আপনার মধ্য প্রদেশ তো ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
পান্না বাবু জামা টেনে ভুড়ী ঢেকে মৃদু হেসে বললেন,আমার ওয়াইফ বলে তুমি রোগা হয়ে যাচ্ছো।
সকলে হো-হো করে হেসে উঠলেন।হাসির কারণ সবাই  বলে স্ত্রী কিম্বা গিন্নী পানুবাবু বলেন ওয়াইফ।ধীরে ধীরে শুরু হয় আলোচনা অর্থাৎ পরচর্চা।বরদাবাবু এসব আলোচনায় অংশ নেন না আজ আবার শরীরটায় অস্বস্তি জাপটে আছে।মাস কয়েক আগে ড মিত্রকে দেখিয়েছিলেন,হার্টে ব্লকেজ ধরা পড়েছে।সুমনকে সেকথা বলেন নি অযথা চিন্তা করবে।একবার মনে হল হে্ড স্যারকে বলে চলে যাবেন।
আবার মনে হল আর তো মোটে একটা ক্লাস দরকার নেই।ঘণ্টা বাজতে টিফিন শেষ হল।একে একে যাদের ক্লাস আছে খাতা নিয়ে বেরিয়ে গেলেন।বরদাবাবুর ফিফথ পিরিয়ড অফ। 
    ঘুম ভাঙ্গতে সুমনা উঠে বসেন।দুপুরে ঘুমানোর অভ্যেস নেই হাতে কাজ নেই তাই একটু গড়িয়ে নেওয়া। রান্নাঘরে বাসন গোছাতে গিয়ে একটা কাপ হাত থেকে পড়ে ভেঙ্গে গেল।অমঙ্গল আশঙ্কায় বুকের মধ্যে ছ্যৎ করে উঠল।নীচু হয়ে বসে কাপের ভাঙ্গা টুকরগুলো গুছিয়ে তুলতে থাকেন।বাইরে কে যেন ডাকছে।কাপের টুকরোগুলো এক পাশে সরিয়ে রেখে বাইরে বেরিয়ে দেখলেন কাচা পাকা চুল এক ভদ্রলোক দাড়িয়ে।সুমনাকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,মাস্টারমশায় নেই?
 ওর ফিরতে দেরী আছে।কিছু বলতে হবে?
 এ সময় পাবো না জানতাম।বলবেন পশুপতিবাবু এসেছিলেন।
 সুমনা ঘাড় কাত করে সম্মতি জানালেন। 
সিক্সথ পিরিয়ড শুরু হয়েছে সবাই ক্লাসে চলে গেছেন।বরদা বাবু বেঞ্চে বসে আছে দেখে অমুল্যবাবু জিজ্ঞেস করলেন,স্যার আপনার ক্লাস নেই?
 ঘণ্টা পড়ে গেছে?
 আপনার কি শরীর খারাপ চোখ মুখ কেমন লাগছে।
 না না তেমন কিছু না।বরদাবাবু চক ডাস্টার নিয়ে ক্লাসে চলে গেলেন।
অমূল্যবাবু অবাক হয়ে দেখতে থাকেন,মানুষটা অদ্ভুত কারো সাহায্য নিতে চান না।শুনেছেন পূব বাংলায় কোন কলেজে অধ্যাপনা করতেন।চোখ দুটো কেমন ঘোলাটে বললেন ঠিক আছে।হেড স্যারের সঙ্গে একটা বিষয় আলোচনা করার আছে।অমূল্যবাবু হেডস্যারের ঘরে ঢুকতে গিয়ে অপ্রস্তুত,সেই মহিলা বসে আছেন।ভদ্রমহিলার ছেলে এই কলেজে পড়ে।হেড স্যারের সঙ্গে এত দরকার কিসের।দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করেন,স্যার আসবো?
হেড স্যার সত্যেনবাবু বিবাহিত অমূল্যবাবুর চেয়ে বয়স অনেক কম চোখ তুলে বললেন,আসুন।শুনুন মিসেস মুখার্জী আপনার ছেলের উপর আমাদের নজর আছে--।মহিলা ততক্ষনে উঠে দাড়িয়েছেন হেসে বললেন,আজ আসি স্যার।মিসেস মুখার্জি বেরোতে যাবেন কয়েকটি ছেলে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে বলল,স্যার পড়ে গেছেন।
পড়ে গেছেন?এরকম একটা কিছু হবে অমূল্যবাবু ছুটলেন ক্লাস নাইনের দিকে।হেডস্যারও ছুটলেন।খবর পেয়ে আরও অনেক স্যার চলে এলেন ক্লাস ছেড়ে।বরদাবাবু দেওয়ালে হেলান দিয়ে মেঝতে বসে।
 স্যার কি হয়েছে?
 বুকের মধ্যে অসহ্য পেইন।
সবাই ধরা ধরি করে টিচার্স রুমে নিয়ে গিয়ে টেবিলের উপর শুইয়ে দিলেন।
 এখন কেমন লাগছে স্যার?
হাত তুলে কি যেন বলতে চাইলেন কিন্তু কিছু বলার আগেই নিস্তেজ হয়ে গেলেন।
 ডাক্তারকে খবর দিন।
 এখন কোনো ডাক্তারখানা খোলা পাবেন।
 ডক্টর মিত্রকে ফোন করুন। 
 এখন কি ওকে বাড়ীতে পাওয়া যাবে?
 ফোন না করলে কি করে বুঝবেন?
  মাস্টার মশাইয়ের নাম বলবেন।
একজন হেডস্যারের ঘরে গিয়ে ফোন করতে গেল।অমুল্যবাবু বললেন,ওকে দেখেই আমার কেমন মনে হয়েছিল।
 আপনি ক্লাসে যেতে দিলেন কেন?
 ভদ্রলোক ভীষণ চাপা নিজের কথা কাউকে বলতে চান না।
 আগে অধ্যাপনা করতেন এখন কলেজের চাকরি একটা ফাস্ট্রেশন ছিল।
 ডাক্তার মিত্র আসছেন।স্যারকে ভালই চেনেন।বেশ উদবিগ্ন মনে হল। 
ড.দেবাঞ্জন মিত্রের আজ হাবড়া চেম্বারে বসার কথা।তারই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।এমন সময় ফোন  আসতে কিছুটা বিরক্ত হয়ে ফোন ধরলেন।মাস্টার মশায়ের কথা শুনে আপত্তি করতে পারলেন না।ডক্টর মিত্র দ্রুত প্রস্তুত হতে থাকেন।পলি জিজ্ঞেস করল,বাপি কোথায় যাচ্ছ?
 তোমার মাস্টার মশায় কলেজে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
ড মিত্র নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করেন।  গাড়ী নিয়ে বের হলেন।স্টিয়ারিং এ বসে মনে পড়ল প্রথম সাক্ষাতের কথা।ওর নাম শুনেছিলেন কারও বাড়ীতে গিয়ে উনি পড়ান না জানতেন।ওর কাছে ইংরেজী পড়ার জন্য পলির খুব আগ্রহ।মাস্টার মশায়কে চেম্বারে দেখে মনে হল মেঘ না চাইতে জল।দীর্ঘ টান টান শরীর চোখের দিকে সরাসরি তাকানো যায় না।
ড মিত্র বললেন আসুন মাস্টার মশায়।
 আমি  প্রথম নই  তিন নম্বরে।
 উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে বরদাবাবুর দিকে তাকায় যেন কোনো অদ্ভুত মানুষ দেখছে।সুযোগ পেয়েও সুযোগ নেয় না এমন মানুষ হয় নাকি।ড মিত্রের মুখে কথা যোগায়না তিনি এয়াণ্টি চেম্বারে ঢুকে গেলেন।এক নম্বর রোগীর ডাক পড়ল।দুজন রোগীর পর বরদাবাবুর ডাক পড়ল।ড মিত্র মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করেন কি ভাবে কথাটা বলবেন।স্টেথো সারা শরীরে বুলিয়ে মনে হল হার্টে সমস্যা আছে।প্রেস্ক্রিপশন লিখে দিলেন সেই সঙ্গে ইসিজি করার পরামর্শ।
 আপনার ফিজ?বরদাবাবু দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন।
 বসুন মাস্টার মশায়,ফিজের জন্য চিন্তা করতে হবে না।  
 আপনার ফিজ।বরদা বাবু বসে বললেন।
 আমার মেয়ে এবার কলেজ ফাইন্যাল দেবে।
 আমি বাড়ীতে গিয়ে পড়াই না।
 স্যার আমি ডাক্তার নয় একজ বাবা হিসেবে অনুরোধ করছি সপ্তাহে একটা দিন পলিকে যদি ইংরেজীটা দেখিয়ে দেন চির কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবো।
 যে যেই পেশায় থাকুক সবার মধ্যেই একজন বাবা থাকে।বরদাবাবু হাসলেন।
 স্যার প্লীজ
 ঠিক আছে ।অনেককে ফিরিয়ে দিয়েছি এই প্রথম পারলাম না।
 থ্যাঙ্ক ইয়ু স্যার থ্যাঙ্ক ইয়ু।
গাড়ী কলেজ কম্পাউণ্ডে ঢুকিয়ে গাড়ী থেকে নামলেন দেবাঞ্জন মিত্র।সবাই ছুটে এল।
 মাস্টার মশায় কোথায়?
 টিচার্স রুমে শুইয়ে রেখেছি।
 কতক্ষন আগে হয়েছে?
 তা আধ ঘণ্টা কি চল্লিশ মিনিট হবে।
 করেছেন কি?আধ ঘণ্টার উপর এমনি ফেলে রেখেছেন?ফোন কোথায় আছে?
 হেড স্যারের ঘরে।
ড মিত্র ঘুরে হেড স্যারের ঘরে দিকে চললেন।ডায়াল ঘুরিয়ে বললেন,ড দেবাঞ্জন মিত্র বলছি দ্রুত একটা আয়াম্বুলেণস পাঠান। ফোন রেখে বললেন,বনগা হাসপাতাল থেলে আয়ামুলেন্স আসছে।চলুন কোথায় মাস্টার মশায়।
 সবাই টিচার্স রুমে ফিরে এলেন।বিশাল টেবিলে দীর্ঘ দেহ টান টান শায়িত চোখের পাতা বন্ধ।ড মিত্র ঝুকে একটা হাত তুলে নিয়ে চমকে উঠলেন।একেবারে ঠাণ্ডা তারপর হাতের উলটো পিঠে শরীরে বুলিয়ে কিছু বোঝার চেষ্টা করেন।এক সময় সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে চশমা খুলে রুমাল বের করে চোখ মুছলেন।
 ডাক্তারবাবু কেমন দেখলেন?
 ওর বাড়ীতে খবর দিয়েছেন?
 আমি তো বলেছিলাম বাড়ীতে নিয়ে যাবার কথা।সত্যেনবাবু বললেন।
ড মিত্র চোখ তুলে তাকালেন,এই ভদ্রলোক হেডমাস্টার হিসেবে নতুন এসেছেন।বললেন,যাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে তাকে বাড়ীতে নিয়ে যাবেন কেন?
একজন মাস্টার মশায় ভীড় করে থাকা ছেলেদের বললেন,যাতো স্যারের বাড়ীতে খবর দিয়ে আয়।বলবি স্যার অসুস্থ হয়ে পড়েছে চিন্তার কিছু নেই।
এয়াম্বুলেন্স আসতে স্ট্রেচারে করে বরদাবাবুকে তোলা হল।মুখে অক্সিজেন মাস্ক দিতে একটু নড়ে উঠলেন।একজন নীচু হয়ে ডাকলেন,স্যার।
কোনো সাড়া পাওয়া গেল না।ড মিত্র হেড স্যারের ঘরে গিয়ে হাবড়ার চেম্বারে ফোন করে জানালেন জরুরী কাজে আটকে গেছেন যেতে পারবেন না।ফিরে গাড়ীতে স্টার্ট করে বললেন,আপনারা আসুন আমি হাসপাতালে আছি।
সুখদা রঞ্জন শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিল।সুমনা দেবী এক কাপ চা নিয়ে ঢুকে চৌকির একপাশে বসে চায়ে চুমুক দিলেন।মনু চা খায়না বই থেকে মুখ সরিয়ে মায়ের দিকে একবার দেখল।
 কিছু ভাবছো?
 হঠাৎ হাত থেকে পড়ে কাপটা ভেঙ্গে গেল।
 বাইরে কারা যেন ডাকাডাকি করছে ঘর থেকে বেরিয়ে সব শুনে ভাবলেন,আমি জানতাম এই মনু তাড়াতাড়ি কলেজে যা তোর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
ধড়ফড়িয়ে উঠে একটা জামা গায়ে দিয়ে কলেজের দিকে ছুটলো সুখদা রঞ্জন।সুমনা গালে হাত দিয়ে চৌকিতে বসে পড়েন। অন্ধকার ঘনিয়ে আসে সুমনা দেবী উঠে ঠাকুরকে জল বাতাসা দিলেন।ঠাকুরের সামনে দাঁড়িয়ে করজোড়ে কিছুক্ষন স্বামীর মঙ্গল কামনা করেন।সময় কাটতে চায়না একবার ঘর একবার বাহির করতে থাকেন।
খবর পেয়ে সুবীর রায় সাইকেল নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।অল্পদিনের মধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন জামাইবাবু।কি এমন হয়েছে একেবারে হাসপাতালে আনতে হল।দ্রুত পাডেলে চাপ দিলেন।হাসপাতালের নিচে বেশ ভীড়।ভীড় সরিয়ে জিজ্ঞেস করে সব জানতে পারলেন।বাড়ীর কাউকে দেখছেন না।
সুমনাদেবী বাইরে গিয়ে বসলেন।রাস্তা দিয়ে যথারীতি চলাচল করছে লোকজন।ছেলের উপর রাগ হয়।তোর একটা আক্কেল নেই।সেই কখন গেছে বাসায় মা চিন্তা করবে।আবার ঘরে এসে বসলেন।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলেন কাটা নটার ঘর পেরিয়ে চলেছে।এত রাত হয়ে গেল করছে কি?সেই রাতের কথা মনে পড়ল।মনুর পড়া চালিয়ে যেও।সেই কথা কি শেষে সত্যি হবে ভগবান।আচলে চোখ মুছলেন।  তিনি কি একবার এগিয়ে কলেজের দিকে যাবেন? শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখলেন,সাইকেল নিয়ে একটা ছায়ামূর্তি বাড়ীতে ঢুকছে।কাছে আসতে বুঝতে পারেন সুবীর।পাইকপাড়া থেকে সুবীর হঠাৎ কি মনে করে।
 কি রে সুবি তুই?
 জামাইবাবুর খবর পেয়ে এসেছিলাম।
 তোর জামাইবাবু কই?
মাথা নীচু করে সুবীর সাইকেল স্ট্যাণ্ড করছেন।
 কি রে তোর জামাইবাবু কই?
 আসছে।
বাড়ীর সামনে ভীড় জমে গেল।ফুলে সজ্জিত একটা ম্যাটাডোর এসে দাড়ালো।সুমনার মুখে কথা সরেনা।ম্যাটাডোরে শায়িত বরদা রঞ্জন ফুলে ফুলে ঢাকা।মাথার কাছে নিশ্চল বসে মনু।সুমনা রাস্তায় গিয়ে বেরিয়ে থাকা পা জোড়া ধরে গালে মুখে বোলাতে থাকেন।সকলের অলক্ষ্যে দড়িয়ে পাঞ্চালি চোখ মুছচে। 
Like Reply
দাদা এতোদিন পরে একটা আপডেট দিলেন তাও এত হৃদয় বিদারক সত্যি চোখের জল কিছুতেই থামছে না।।।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
Like Reply




Users browsing this thread: 5 Guest(s)