30-04-2022, 10:55 PM
(30-04-2022, 10:46 PM)Devil07 Wrote: dada ajj update asbe?
আসবে তবে একটু দেরি হবে।
সারাদিনে খাওয়া দাওয়াই হলো না এখনো।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Romance মায়া - আমরা সবাই বাঁধা যেখানে (সমাপ্ত)
|
30-04-2022, 10:55 PM
(30-04-2022, 10:46 PM)Devil07 Wrote: dada ajj update asbe? আসবে তবে একটু দেরি হবে। সারাদিনে খাওয়া দাওয়াই হলো না এখনো। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
30-04-2022, 11:03 PM
30-04-2022, 11:59 PM
পর্ব- ছাব্বিশ
রাতে ঘুমোতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল নিলয়ের। সকাল দশটা বাজতে চললো এখনো ঘুমোচ্ছে সে। তথা কয়েকবার উকি দিয়ে দেখে গেছে৷ এমনিতে এত বেলা পর্যন্ত নিলয় ঘুমায় না। কিন্তু এখন যেহেতু রেস্টে আছে তাই আর ডাক দেয় না। রান্নার খালা এখনো আসে নি তাই নিজেই নুডলস রান্না করতে যায়৷ কয়েকদিনে কিছু কিছু রান্না শিখে নিয়েছে৷ খালা যখন রান্না করে তখন পাশে দাড়িয়ে দেখে নেয়৷ এছাড়া দোলনের কাছ থেকেও শিখেছে কিছু কিছু।এজন্যই হয়তো বলে সময় আর পরিস্থিতি সবচেয়ে বড় শিক্ষক। কিছুদিন আগে যে কুটো টা নাড়তো না সে এখন আগুনে হাত পুড়ায়৷ সেখানে নিলয়েরও কিছু দোষ আছে, ও তো তথাকে সেদিকে পথ মাড়াতে দেয় নি। নুডুলস সিদ্ধ করে পানি ঝরাচ্ছে এমন সময় দোলন এসে হাজির হয়। দুহাতে ব্যাগ ভর্তি বিভিন্ন জিনিসে৷ তথা দৌড়ে এসে হাত থেকে ব্যাগ গুলো নিয়ে জিনিস গুলো বের করতে থাকে। এক ব্যাগে শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম। আরেকটা তে বিস্কুট, পাউরুটি, দুধের প্যাকেট, চাপাতা এসব। -এত কিছু তুমি একা একা কিনে নিয়ে এলে, আমাকে আরেকদিন সাথে করে নিয়ে যাবে দিদি। -(মুচকি হেসে) আমার বাজার করাটা তর সহ্য হচ্ছে না বুঝি। এটা থেকেও সরিয়ে দিতে চাস। -(জিভে কামড় দিয়ে) ছি দিদি এসব কি বলো। আমি তো এমনি বলেছিলাম। তোমার সাথে গেলে তোমাকে সাহায্য করা হয়ে যেত। -(হাসতে হাসতে) ঠিক আছে নিয়ে যাবো নে। তা তর পতি দেব কোথায়৷ আজও বাইরে গেছে। -না, ঘুমোচ্ছে। -(অবাক হয়ে) এখনো ঘুমোচ্ছে,শরীরটা খারাপ করেছে নাকি আবার। -না কাল হয়তো দেরি করে ঘুমিয়েছে তাই। -(ইঙ্গিত দিয়ে) শুধু নীলুই দেরি করে ঘুমিয়েছে নাকি তুইও। ভালই চলছে তাহলে বল। -বারে আমি কেন দেরি করে ঘুমোবো। (স্ফীত হাসি) -তাই বুঝি। সে ক দিন পর দেখা যাবে। এখন যাই ওটাকে ডেকে তুলি। দোলনের উচ্চস্বর চিৎকারে নিলয়ের ঘুম ভেঙে যায়। হুড়মুড় করে উঠে বসে -কিরে এভাবে চিৎকার করে ডাকে কেউ। -কি করবো শুনলাম অনেক রাত করে ঘুমিয়েছিস। তা সারারাত কি মশা মারছিলি নাকি যাতে তর বউকে না কামড়াতে পারে৷ -(কপট রাগভাব দেখিয়ে) সকাল সকাল এসব বলার জন্য ঘুমটা ভাঙলি নাকি। -না না, ডাকলাম নাস্তা করার জন্য, নাস্তা করে ঔষধ খেতে হবে তো। তর বউ নুডলস করেছে। -তরা দুজনে খা গিয়ে। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। নিলয় ফ্রেশ হয়ে আসার পর তিনজনে একসাথে নাস্তা করে নেয়। নাস্তা করার সময়ও দোলন নানা কথা বলে হাসিঠাট্টাতে সময়টা ভরিয়ে তোলে। রান্নার খালা আসলেও আজকের রান্নার দায়িত্ব টা দোলন আর তথা নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়। খালা জিনিস পত্র কাটাকুটি, মশলা বাটাবাটি করে সবকিছু রেডি করে রাখে। দুজনে মিলে আজ মাছ ভাজা, মুরগির মাংস, পোলাও, নানা রকমের ভাজা বড়া আর চাটনি রান্না করবে। দুজনের কেউই এত রান্নাতে এক্সপার্ট না। অগত্যা তাদের সাথে খালাকেও হাত লাগাতে হয়৷ একেই বলে বাজনার চেয়ে খাজনা বেশি। খালা একাই হয়তো রান্না করে নিত, কিন্তু সেই রান্না তিনজনে মিলে করছে। এটাতেও একটা আলাদা আনন্দ আছে। হাসিখুশি পরিবেশের মাঝে মিলেমিশে রান্নার অভিজ্ঞতা টা যৌথ পরিবার ছাড়া পাওয়া মুশকিল। সবসময় একটা অনুষ্ঠান বাড়ীর আমেজ পাওয়া যায়। লেখকের কিছু কথা- আমি যৌথ পরিবারে বড় হওয়া একজন। আমার বাবা-কাকারা ছয় ভাই। আমরা এগার জন ভাই বোন একপরিবারে বেড়ে উঠেছি। আমি বাড়ির দ্বিতীয় সন্তান ছিলাম। আমার ছোট বেলায় বাসায় দেখতাম বাসার মানুষ দোকানের কর্মচারী মিলিয়ে একসাথে ছাব্বিশ জনের রান্না হতো। এত মানুষের কারণে হয়তো খাবারে বিলাসিতা করার উপায় ছিল না, কোন বেলা ডিম রান্না হলেও অর্ধেক করে পড়তো সবার ভাগে। তবুও একসাথে খাবার আনন্দটাই ছিল অন্যরকম। এখনো সবাই একই বাড়িতে আছি। তবে ব্যবসার সাথে রান্না ঘর গুলোও ভাগ হয়েছে তবুও কারও ঘরে ভাল কিছু রান্না হলে সেটা বাকি ঘরের ছেলে মেয়েদের জন্য ঠিকি তোলা থাকে। এত মানুষ একবাড়িতে থাকলে বাসায় সবসময় একটা কোলাহল আর হই হুল্লোড়ে মাতিয়ে থাকে। যৌথ পরিবার আপনাকে যেই পরিবেশ আর শিক্ষায় বড় করবে সেটা কোথাও পাবেন না। দুপুরে সবাই একসাথে খেতে বসে৷ অনেকদিন পর হাসি ঠাট্টায় সুন্দর একটা মূহুর্তে সময়টা কেটে যায়৷ দোলন নানা কথা বলে নিলয়কে খ্যাপিয়ে তুলে মাঝে মাঝে তথাও দোলনের সাথে যোগ দিয়ে সেটার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়৷ ব্যাচারা নিলয় একা একা সব হাসিমুখে সহ্য করে নিতে হয়। ----★★★---- বিকেলের দিকে নিলয়ের রুমে যায় দোলন। নিলয় শুয়ে মোবাইলে গান শুনছিলো। দোলন কে আসে দেখে একটু সরে গিয়ে দোলন কে বসার জায়গা করে দেয়। দোলন ফাঁকা জায়গাটাতে বসে। -কিরে কিছু ভাবলি? -হম, ভাবছি কাল থেকে কাজে জয়েন দিতে হবে। অনেক দিন হয়ে গেল৷ আর এখন শরীরটাও ভালই লাগছে। -(রেগে গিয়ে) তোকে কি আমি কাজের কথা জিজ্ঞেস করেছি নাকি। সবসময়ই কাজ কাজ আর কাজ। তোর জীবনে অন্য কিছু নেই। -থাকবে না কেন। তোরা আছিস তো, তোদের জন্যই বেঁচে আছি। -(ভেংচি কেটে) নইলে বুঝি মরে ভূত হয়ে যেতি। -মরে যেতাম না যেমন সত্য তেমন এত ভাল থাকতাম না হয়তো। -বুঝেছি, এত বাতেলা ঝারতে হবে না। আসল কথা বল কিছু ভেবেছিস তথার ব্যাপারে? -ভাবছি রে, ও তো এখানে থাকতে চায়। কাল রাতে রীতিমতো হুমকি দিয়েছে এখানে থেকেই পড়বে, না হলে আর পড়বে না। কি যে করি তুই কি বলিস? -তোদের মাঝে আমাকে ঢোকাচ্ছিস কেন? তোর মন কি বলে সেটাই কর৷ তোর উপর আমার বিশ্বাস আছে, যেটা ঠিক মনে হয় সেটাই করবি। -আমি কি করবো। ও আমার কাছে ভাল থাকবে কি? আমি বুঝতে পারছি এবার এখানতে থাকতে চাওয়াটা এক দু বছরের জন্য নয়। তাই আরও বেশি ভাবছি। সারাজীবনে ব্যাপার হুট করে কিছু বললেই তো হয় না। ও ছোট তাই হয়তো বিষয়টা গভীর ভাবে ভাবছে না। -তোর দিকটা আমি বুঝি, কিন্তু মেয়েটা কিন্তু তোকে ভালবেসে ফেলেছ। ওকে তুই কষ্ট দিতে পারিস না। আমি কিন্তু ওর চোখে তর প্রতি বিশ্বাস, আস্থা, ভালবাসা আর আবেগ দেখেছি। সবচেয়ে বড় তোর প্রতি ওর মায়া। -সেটা আমি জানি৷ কিন্তু বাস্তবে কি ভালবাসাই সব। ভালতো অনেকেই অনেক কে বাসে সবাই কি সেই মানুষটাকে পায়। এখন হয়তো আবেগের বশে ও এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, পরে যখন আবেগে বাস্তবতার আঁচড় লাগবে তখন সেই ভালবাসা ফুস করে উড়ে যাবে। দুদিন পর হয়তো সময়ের সাথে শরীর মন দুটোই পাল্টাবে তখন হয়তো আজকের জন্য আফসোস করবে। সেটা আমি হতে দিতে চাই না। ক্ষণিকে ভালবাসা আর আকর্ষণে বড় কোন সিদ্ধান্ত নেয়া বোকামি। -তুই সব বিষয়ে এত বাস্তববাদী হয়ে গেলি কেন। সব কি ওই তত্ত্বে চলে নাকি। আমি ওকে এই কয়েকদিনে যা দেখলাম তাতে ও তেমন না, যে তোকে ছেড়ে চলে যাবে৷ ওর ভালবাসা টা কিন্তু তোর প্রতি একদিনে হয় নি৷ অনেক দিনে তিল তিল করে বেড়ে উঠেছে। এটা সহজে ভাঙার নয়, এটা আমি বিশ্বাস করি। -কিরে তুই হঠাৎ করে ওর হয়ে এত ওকালতি করছিস কেন। ভালো তো তুইও আমাকে বাসিস তাহলে ওকে তোর জায়গাটা ছেড়ে দিতে চাইছিস। -(হঠাৎ নিলয়ে এমন কথায় হতভম্ব হয়ে যায়, কিছুক্ষণ চুপ থেকে) এটা সত্যি আমিও তোকে ভালবাসি। মিথ্যে বলবো না, প্রথম দিন যখন ওর কথা শুনলাম সেদিন থেকেই ওর সাথে আসার অদৃশ্য লড়াই শুরু হয়ে গেছিলো। এটাও ঠিক আমি এত সহজে কখনো কাউকে তোর কাছে আসতেই দিতাম না, শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতাম।( একটু থেমে) কিন্তু ওকে কাছ থেকে দেখে সেই লড়াই করার শক্তিটাই হারিয়ে ফেলেছি আমি৷ ওর চোখে তোর জন্য যে মায়া আর তোকে পাবার যে কাতরতা দেখেছি সেটার কাছে হেরে গেছি। ও সত্যিই ভাল মেয়ে। আর সবচেয়ে বড় কথা তোর চোখেও তোর মনেও কিন্তু আমি একই টান টা অনুভব করেছি তথার জন্য৷ বল আমি কি মিথ্যে বলেছি?? -(লম্বা শ্বাস নিয়ে) তোর কাছে আমি কখনোই কিছু লুকাতে পারবো না৷ জানি নারে কখন কিভাবে যে ওর প্রতি টান টা তৈরী হয়ে গেছে, ওর মায়ায় পড়ে গেছি বলতে পারবো না। হয়তো ওকে ভালবেসে ফেলেছি। আগে এতটা বুঝতে পারে নি, কিন্তু ওর চিটাগং যাবার কদিন আগে থেকে সেটা যেন ফিল করতে শুরু করেছি। ওকে ট্রেনে উঠিয়ে বাসায় আসার পর আমি বুঝতে পারলাম আমি সত্যিই ওকে ভালবেসে ফেলেছি, তাই ওকে ছেড়ে আসার পর সেই যন্ত্রণা টা আমাকে দুদিনে কাবু করে ফেলেছে৷ ও সত্যিই আমার অস্তিত্বে মিশে গেছে। -তাহলে বৎস তুমিও প্রেমিক হয়ে গেলে। -কিন্তু দোলন তুই? তোকে আমি কি করে অস্বীকার করবো। তোর একটা অস্তিত্ব আছে আমার কাছে৷ তুইও আমার অনেকটা জুড়ে আছিস আমি তো তোকেও... (দোলনের বাঁধায় কথাটা শেষ হয় না) -নীলু তোর মনে আছে কলেজে থাকতে আমাকে প্রপোজ করেছিলি। সেদিন আমি তোকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু জানিস তরপরে আমি বুঝতে পারি আমিও তোকে ভালবাসি, যতদিন গেছে তত সেই বিশ্বাস টা পোক্ত হয়েছে। তুই আমাকে আগলে রাখতি, সবসময় আমার খেয়াল রাখতি, আমার সুখে দুঃখে সবসময় পাশে পেতাম। তবে তোকে মুখ ফোটে কখনই বলতে পারতাম না। ভাবতাম তুই যদি ভুল বুঝিস। আর পরে তো তুই সেই হারিয়ে গেলি৷ (একটু দম নিয়ে) জানিস নীলু তুই আর আমি হলাম নদীর দুই পাড়ের মত। একত্রে বয়ে চলবো ঠিকি কিন্তু কখনো আমরা এক হতে পারবো না। তবে আমরা কখনোও আলাদা হবো না, নদীর জল যেমন দুই পাড় কে জোড়ে রাখে ঠিক তেমনি আমরাও সবসময় একসাথেই থাকবো। এটাই আমাদের নিয়তি। আমার আর তর জায়গা কেউ নিতে পারবে না।( চোখের কোনে অশ্রু বিন্দু ফোটে উঠে) আর মনে রাখবি দুজন দুজনকে পেলেই শুধু ভালবাসা পূর্ণতা পায় না। দূর থেকেও ভালবাসা যায়, দুজন দুজনার হওয়া যায়। -তর মতন আর কেউ হবে নারে। তুই ছিলি বলে আমাকে নিজেকে নিয়ে কখনোই ভাবতে হয় নি৷ আমি জানি আমি যতবার ভাঙবো তুই ততবারই আমাকে গড়বি। তুই কখনই আমার শুধু বন্ধু ছিলি না। এটা যে সত্য এটা আমাদের দুজনকেই মানতে হবে। আমরা পরস্পরকে অনেকদিন ধরে চিনি জানি। তুই চাইলেও তর মনে আমার যে জায়গাটা আর কাউকে দিতে পারবি না তেমনি তো আমিও। তোর জায়গাটাতে আমি অন্য কাউকে বসাতে পারবো না। কথা দে সবসময় আমার পাশে থাকবি। (জড়িয়ে ধরে দোলনকে) -(ধমকের সুরে) কেউ আলাদা করতে আসুক দেখি আমাদের। আমি ছেড়ে কথা বলবো না বলে দিলাম সেটা তথা হোক আর যেই হোক। (কান্নার সাথে হাসির মিশ্রিত সুর) জানিস আমি জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস করি, এ জন্মে হইতো তোকে আমি পেলাম না কিন্তু পরের জন্মে আমি ঠিক তোর হব। তোর জন্যই অপেক্ষা করবো। আমার হবি তো? অবসরের পর বাবা একটা বিজনেসের কথা ভাবছে, আমি কথা বলে রেখেছি তুই সেটাতে থাকবি। -এসবের কি দরকার ছিল। তুই আজকে যা করলি তোর জায়গায় আমি থাকলেও হয়তো এটা করতে পারতাম না। আমি ভাবতাম এতদিন ধরে হয়তো শুধু আমি স্যাক্রিফাইস করে গেছি, কিন্তু তুই আমাকে ভুল প্রমাণ করে দিলি সবচেয়ে বড় স্যাক্রিফাইস টা তুই করেছিস। এমন করে সবাই পারে নারে। এতদিন ধরে তুই আমার জন্য শুধু করেই গেলি কিচ্ছু চাস নি। ভালবাসার আসল অর্থ টা তর কাছেই জানলাম। -ছিল পরে বুঝবি৷ এখন যাই রে, রাত হতে চললো। উঠে নিলয়ের রুম থেকে বেরিয়ে যাবার সময় বাইরে তথাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে -(চোখ রাঙিয়ে) কিরে তুই কি আড়ি পেতে কথা শুনছিলি নাকি। এটা মোটেই পছন্দ করি না। -(মাথা নিচু করে) সরি দিদি আর এমন হবে না। -(হাসতে হাসতে) ধুরু বোকা মেয়ে আমি রাগ করেছি নাকি। আমার নীলু কে তোর কাছে দিয়ে যাচ্ছি দেখে রাখিস৷ উল্টাপাল্টা কিছু হলে কিন্তু আমি তোকেও ছাড়বো না বলে দিলাম। একটা কখা মনে রাখিস এতদিন আমার জন্য নীলু ছিল আর নীলুর জন্য আমি। আর এখন তোর জন্য আমরা দুজনেই আছি। যদি জীবনকে সঠিক পথে রাখতে পারিস তবে দুজনকেই সাথে পাবি আর যদি ভুল করিস তবে সব হারাবি। -(অবাক হয়ে) দিদি (আর কিছু বলতে পারে না, দোলনকে জড়িয়ে ধরে ওর কাঁধে মাথা গুঁজে দেয়) আমি এমন কিছু কখনো করবো না যেন তুমি ওর কাছে ছোট হয়ে যাও। আমিও আগেও সাধারণ জীবনে ছিলাম সামনেও থাকার চেষ্টা করবো। -ছাড় ছাড় অনেক হয়েছে। যাকে জড়িয় ধরলে কাজ হবে তাকে গিয়ে ধর( বলেই তথার গাল টিপে দেয়) এখন আসিরে, কাল একবার আসবো। নিচ পর্যন্ত দোলনকে এগিয়ে দিয়ে আসে তথা। রিক্সায় উঠে বাসার দিকে যেতে থাকে। নিঃশব্দে দু চোখ বেয়ে জলের ধারা ছুটে চলে। তবে সব কান্না কি কষ্টের হয়? আজ কষ্ট আনন্দ দুটোই হচ্ছে দোলনের। নিজের ভালবাসা না পেলেও আরেকজন কে পাইয়ে দেবার মাঝে আরও বেশি খুশি পাওয়া যায়। ভালবাসার মানুষকে খুশী দেখার চেয়ে আর বড় পাওয়া কি হতে পারে। নীলুকে কেড়ে নিতে পারতো কিন্তু সুখ খুঁজে পেত কি? সবসময় একটা যন্ত্রণা তাড়া করে বেড়াতো। এখন সেটার ভয় নেই। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
01-05-2022, 12:25 AM
Aaj poro din joto mon kharap chilo sob akdom golpo ta pore chole gelo avabei chalia jan
01-05-2022, 12:57 AM
(01-05-2022, 12:25 AM)Boti babu Wrote: Aaj poro din joto mon kharap chilo sob akdom golpo ta pore chole gelo avabei chalia jan ধন্যবাদ ভাই। আর সবসময় ভালো থাকার চেষ্টা করবেন। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
01-05-2022, 10:09 AM
(This post was last modified: 01-05-2022, 10:56 AM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
নিলয়, তথা আর দোলন .. এদের তিন জনের পারস্পরিক সমীকরণ এবং কথোপকথন শুনে main prem ki diwani Hoon চলচ্চিত্রের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো কিংবা ঋতুপর্ণ ঘোষের শুভ মহরত। যেখানে নায়িকা বলছে "আচ্ছা একসঙ্গে দুজনকে ভালোবাসা যায় না?" aur haar kar jeetne waale ko baazigar kehte hai এই কথাটা দোলন প্রমাণ করে দিয়েছে নিজের sacrifice দিয়ে .. শেষের কয়েকটা লাইন পড়তে পড়তে আমার মতো কঠিন হৃদয়ের মানুষের চোখেও জল এসে গিয়েছিলো। ভালো থেকো আর লিখতে থাকো।
01-05-2022, 10:50 AM
(01-05-2022, 10:09 AM)Bumba_1 Wrote: নিলয়, তথা আর দোলন .. এদের তিন জনের পারস্পরিক সমীকরণ এবং কথোপকথন শুনে main prem ki diwani Hoon চলচ্চিত্রের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো কিংবা ঋতুপর্ণ ঘোষের শুভ মহরত। যেখানে নায়িকা বলছে "আচ্ছা একসঙ্গে দুজনকে ভালোবাসা যায় না?" aur haar kar jeetne waale ko baazigar kehte hai এই কথাটা দোলন প্রমাণ করে দিয়েছে নিজের sacrifice দিয়ে .. শেষের কয়েকটা লাইন পড়তে পড়তে আমার মতো কঠিন হৃদয়ের মানুষের চোখেও জল এসে গিয়েছিলো। ভালো থেকো আর লিখতে থাকো। দুটো ছবির কোনটাই দেখা হয়ে উঠেনি বলে আফসোস হচ্ছে। ঈদের ব্যস্ততার পর দেখে নিতে হবে। তোমাদের বিশ্লেষণ গুলো আমার চিন্তাধারার গভীরতা বাড়ায়। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
01-05-2022, 12:07 PM
(This post was last modified: 01-05-2022, 01:26 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(01-05-2022, 10:50 AM)nextpage Wrote: দুটো ছবির কোনটাই দেখা হয়ে উঠেনি বলে আফসোস হচ্ছে। ঈদের ব্যস্ততার পর দেখে নিতে হবে। Prem ki deewani hoon না দেখলেও শুভ মহরৎ ছবিটি অবশ্যই দেখার চেষ্টা কোরো। পারলে ওই ঋতুপর্ণ বাবুর উৎসব, হীরের আংটি, তিতলি,খেলা এই ছবিগুলো দেখার চেষ্টা কোরো। তোমার মতো লেখার হাত যার সে অনেক ভালো ভাবে বুঝবে প্রতিটা ছবির প্রতিটা দৃশ্যকে। এর মধ্যে কয়েকটা ইউ টিউবে হয়তো পেয়ে যাবে। ♥️ এবারে আসি পর্বে - চতুর্থ দেয়াল ভেঙে সরাসরি পাঠকদের সাথে কথা বলা ব্যাপারটা বেশ ভালো লাগলো প্রথমেই জানিয়ে রাখি। উফফফফফ দেখে নিজেরই ভালো লাগছে যে ওই বিশেষ নারী চরিত্রটির ওপর শুরু থেকেই আমার আলাদা আকর্ষণ ছিল সেটা আজও আছে। কারণ ঠিক ভুলের মধ্যে জড়িয়েও সে ঠিক। সব হারিয়েও সে জয়ী। অনেক জমানো ব্যথা বুকে নিয়েও সে সুখী। মিলন না হলেও সে সম্পূর্ণ আজ। আমি জানতাম এটাই....... না থাক..... আর আলাদা করে বলার কিছু নেই শুধুই এটাই যে অনেক সেরা লেখার মধ্যে এটি একটি হয়ে থাকবে। আমার বানানো গল্পের প্রচ্ছদ ভালো করে দেখলে তুমি বুঝবে যে মেয়েটিকে নিলয় জড়িয়ে আছে সেটি তথা আর দূরে দাঁড়ানো মেয়েটিই দোলন। কারণ কেন জানি মনে হচ্ছিলো যে...... থাক..... কিছু কথা অন্তরে ♥️♥️♥️
01-05-2022, 01:17 PM
খুব সুন্দর লাগলো। বিশেষ করে আপনার অনুভব গুলো ব্র্যাকেটে রেখেছেন। এই স্টাইলটা অনবদ্য লাগলো। চালিয়ে যান।
01-05-2022, 03:06 PM
নিজের সাথে কখনো প্রতারণা করা যায়না, করলেও মনে হয় সেটার পরিনাম ভয়াবহ। নিলয় কে দেখে তেমনটাই মনে হয়।
দোলন আর নিলয়ের সম্পর্কের নামই বা কি? মনে হয় সবার উপরে বিশ্বাস সত্য, তেমনটাই সম্পর্ক। দোলন আজ অবশ্যই জয়ী হয়েছে নিজের কাছে, kabhi kabhi kho kar bhi toh pa sakhte hai
01-05-2022, 03:24 PM
it's a phenomenon......bhabna chinta gulo k khub bhalo kore likhchen
01-05-2022, 06:34 PM
(01-05-2022, 12:07 PM)Baban Wrote: Prem ki deewani hoon না দেখলেও শুভ মহরৎ ছবিটি অবশ্যই দেখার চেষ্টা কোরো। পারলে ওই ঋতুপর্ণ বাবুর উৎসব, হীরের আংটি, তিতলি,খেলা এই ছবিগুলো দেখার চেষ্টা কোরো। তোমার মতো লেখার হাত যার সে অনেক ভালো ভাবে বুঝবে প্রতিটা ছবির প্রতিটা দৃশ্যকে। এর মধ্যে কয়েকটা ইউ টিউবে হয়তো পেয়ে যাবে। ♥️ সামনে কদিন রিল্যাক্সে মুভি গুলো দেখে নিবো। এই পর্বের টাইপিং করতে গিয়ে আমার ছোট বোন তো কেঁদেই দিয়েছিল। রাতে যখন বাসায় আসলাম সে তো আমাকে চেপে ধরেছে, তাকে বলতেই হবে ঐ কলেজে থাকতে কাকে সামনে রেখে এমন গল্প আমি সাজালাম। সে কি ঐ মেয়েটাকে চিনে কিনা। কিন্তু সব প্রশ্নের তো উত্তর দেয়া যায় না। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
01-05-2022, 06:35 PM
(01-05-2022, 01:17 PM)babandas622 Wrote: খুব সুন্দর লাগলো। বিশেষ করে আপনার অনুভব গুলো ব্র্যাকেটে রেখেছেন। এই স্টাইলটা অনবদ্য লাগলো। চালিয়ে যান। আপনারা পাশে থাকলে অবশ্যই চলবে। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
01-05-2022, 06:36 PM
(01-05-2022, 03:06 PM)a-man Wrote: নিজের সাথে কখনো প্রতারণা করা যায়না, করলেও মনে হয় সেটার পরিনাম ভয়াবহ। নিলয় কে দেখে তেমনটাই মনে হয়। সবাইকে মুক্ত করে দিলাম। সবাই বাঁধনে আটকে থেকেও মুক্তির স্বাদ পাবে। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
01-05-2022, 06:37 PM
(01-05-2022, 03:24 PM)raja05 Wrote: it's a phenomenon......bhabna chinta gulo k khub bhalo kore likhchen ❤️ হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
01-05-2022, 11:18 PM
01-05-2022, 11:21 PM
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
01-05-2022, 11:30 PM
(This post was last modified: 02-05-2022, 01:30 AM by nextpage. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
অন্তিম পর্ব
দোলন চলে যাবার পর চুপচাপ বসে থাকে নিলয়। দোলনের কথা গুলো মনের মাঝে বারবার আওড়াতে থাকে৷ নিজেকে দোলনের জায়গায় বসানোর চেষ্টা করে। না সে কখনো এত বড় ত্যাগ টা করতে পারতো না৷ মেয়েরা নিজের পছন্দের ভালবাসার জিনিসকে যেকোনো মূল্যে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করে, প্রাণপণে লড়ে যায়। সেখানে দোলন আজ নিজেকে হারিয়ে দিয়ে সব কিছু জিতে নিল। মনের যুদ্ধ বড় যুদ্ধ সেই যুদ্ধে বিনা রক্তপাতে নিলয় তথাকে জিতিয়ে দিয়ে সত্যিকারে দোলনই জিতে গেল। অনেক সময় সব হারিয়েও সব পাওয়া যায়। নিলয় ভাবে, দোলন হয়তো বুঝতে পেরেছিল সে তথার দিকে একটু হলেও বেশি ঝুকে গিয়েছে। সত্যিই তো ওর মনটা তো তথার এখানেই পড়ে থাকতো। মেয়েদের চোখ এড়ানো এত সহজ না। আমরা হয়তো মেয়েদের দুর্বল ভাবি। কিন্তু ওরাই সবদিক থেকে বেশি শক্তিশালী। নারী হলো প্রকৃতি প্রকৃতি যদি না হতো তবে আমাদের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যেত না৷ প্রকৃতি ঠিকি সব কিছু সামলে ভারসাম্য রেখে চলে। প্রতিটা ঘরে নারী আছে কারও মা, কারও স্ত্রী, কারও বোন বা কারো সন্তান। ওরা লড়াই করে যায় সবসময় কিন্তু থেকে যায় আড়ালে। নারী যদি ঠিক অবস্থানে থাকে তবে সব কিছু এমনিতেই ঠিকঠাক চলতে থাকে। রাতে খাওয়ার সময় তথার সাথে তেমন কোন কথা হয় নিলয়ের৷ তথাও মনে করে একটু সময় দেয়া উচিত। তাড়াহুড়ো করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তথার মনে মনে একটু হলেও ভয় হয় যদি নিলয় ওকে গ্রহন না করে৷ সে নিজের সেই ভয়ংকর অতীত টার জন্য আরও বেশি ভীত। সেটা তো সবটাই নিলয় জানে, যদি সেটার জন্য ওদের মাঝের দূরত্ব টা থেকেই যায় তবে কি আর স্বাভাবিক কোন সম্পর্ক গড়ে ওঠবে না কখনো। নিজের ভুল গুলোর জন্য নিজেকে নিজে কখনই ক্ষমা করতে পারবে না যদি না নিলয় ওকে ক্ষমা করে৷ কিন্তু কি করে কথাটা বলবে সেটাই ভেবে পায় না। সকালে দুজনে নাস্তা করছে, দোলন আজ আসে নি এখনো। -তোমার ব্যাগ গোছানো আছে? -কেন? ব্যাগ দিয়ে কি হবে? -কেন আবার চিটাগং যাবে পরশু যাবার টিকিট কেটেছি। -(তথা হতবাক হয়ে যায়, কি বলবে বুঝতে পারে ন) না না আমি যাবো না, আমি তো বলেছি আমি এখানেই থাকবো। -যেতে তো তোমাকে হবেই। -তার মানে আমার এই কথাটা তুমি রাখবে না? আমার চাওয়ার কোন দাম নেই।(মনমরা হয়ে বলতে থাকে) -এত কিছু বুঝি না আমি। যদি আমার সাথে চিটাগং না যাও তবে মাইগ্রেশানের জন্য কাগজপত্র উঠাবে কি করে। ওখানে গিয়ে তো সেগুলো আনতে হবে নাকি। -(অবাক হয়ে যায় সেই সাথে হাসি খেলে যায় মুখে) সত্যি! তাহলে আমি এখানে থেকেই পড়বো। -আপাতত সেটাই মনে হচ্ছে। -(উল্লাসে চোখ মুখ রাঙা হয়ে উঠে, শিশু সুলভ আচরণে মেতে থাকে) বিকেলের দিকে দোলন আসে। তথা সকালের ঘটনাটা জানায়৷ নিলয় বাসায় ছিলো না হয়তো কোন কাজে বাইরে গেছে। সারাটা বিকেল দুজনে মেতে থাকে মেয়েদের খুনসুটিতে। -দিদি একটা কথা জিজ্ঞেস করবো? -কর না। -তুমি তো আমাকে কদিন আগেও চিনতে না, তবুও সেই আমার জন্য এত বড় একটা কাজ করে ফেললে। তোমার ঋন আমি কখনো শোধ করতে পারবো না। -শুন একটা কথা বলি, যেটা আমি করেছি সেটা কাউকে না কাউকে করতেই হতো। যদি আমি ছাড় না দিতাম তবে তোকে ছাড়তে হতো। তোকে আমি প্রথম দিনই বলেছিলাম তুই আমার ছোট বোনের মত। সেই ছোট বোনকে কষ্ট দিয়ে আমি কি সুখে থাকতে পারতাম। -তোমার ভাবনা টা আমি হয়তো কোনদিনও ভাবতাম না। উল্টো তোমাকে খলনায়ক হিসেবে ধরে নিতাম। জানো যেদিন প্রথম তোমাকে ওর সাথে দেখেছিলাম তখন খুব হিংসে হচ্ছিলো তোমার উপর। আচ্ছা তোমারও কি হয়েছে এমন? -হবে না আবার। নীলু যেদিন তর কথা বললো সেদিনই ইচ্ছে হচ্ছিলো তোকে গলা টিপে মেরে দেই। কিন্তু ওর মোবাইলে তোর মায়া ভরা ছবিটা দেখে সেই ইচ্ছে ট মরে গেল। কিন্তু তোকে হিংসে এখনি করি আর পরেও করবো। তুই যে আমার নীলু র উপর ভাগ বসালি। -জানো আমার নিজের উপর রাগ হয়। মনে হয় যদি আমি না থাকতাম তবে তোমরা দুজনে এক হতে। আমি হয়তো উড়ে এসে জুড়ে বসলাম তাই না। -কপালে থাকতে হয় রে, সেটা তুই না হলে অন্য কেউ আসতো সেই জায়গায়। কিন্তু এটা মনে রাখিস নীলু আমার যতটুকু ছিলো ততটুকুই থাকবে সেটাতে ভাগ বসাতে আসিস না।(হাসতে হাসতে বলতে থাকে) সেই ভাগ আমি ছাড়বো না। -সেটা এতোদিনে বুঝে গেছি৷ সেটাতে ভাগ বসানোর ইচ্ছে আমার নেই। আমার টুকুতেই আমি সন্তুষ্ট। হয়তো পরে দেখবো আমাকে আবার ঐ দূরে রেখে আসবে। আরও কত মেয়েলী কথায় সন্ধ্যা নেমে আসে। নিলয় এখনো বাসায় আসে নি৷ বারবার তৃষার ফোন আসছে তাই দোলন বিদায় নিয়ে চলে আসে। ----★★★---- সন্ধ্যা থেকেই আকাশে গুড়ুম গুড়ুম শব্দে বাজের ঝলকানিতে চারপাশ আলোকিত হয়ে যাচ্ছে। রাত বাড়ছে সাথে বাইরে ঝড়ো হাওয়ার বেগটাও। মাঝে মাঝে এমন শব্দে বাজ পড়ছে পুরো বিল্ডিং টা কেঁপে উঠছে। এই শহরের একটা বাজে অভ্যাস আছে আকাশটা একটু মেঘে ঢেকে গেলেই বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ লোডশেডিং করে দেয়। পরে বৃষ্টি আসুক আর না আসুক তাতে তাদের কিছুই আসা যায় না। তবে আজ এখনো বিদ্যুৎ যায়নি তবে যেতে কতক্ষণ। তাই আগে থেকেই চার্জার লাইট গুলো একটু চার্জ দিয়ে নেয় নিলয়। রাতের খাওয়া টা আজ একটু আগেই সেরে নিয়েছে ওরা। রাতের খাবার খেয়ে নিলয় একটু কাজে হাত দেয়। অনেক কাজ জমে আছে, সেগুলো এখন সেরে রাখতে হবে। দোলন বলছিলো ওর বাবার বিজনেসের কথা। আঙ্কেলের সাথে নিলয়েরও কথা হয়েছে৷ হয়তো সামনের মাসে এই চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে ওটাতে মনোনিবেশ করবে। অনেকদিন ধরে মার্কেটিং এ কাজ করছে নিলয় তাই এই বিষয়ের অভিজ্ঞতা নেহাত কম নয়। নতুন বিজনেস দাঁড় করাতে গেলে ওর এই অভিজ্ঞতাটাই কাজে লাগবে। একবার সব ঠিকঠাক চলতে থাকলে ওকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হবে না। বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, বাতাসের ঝাপটায় জানলাগুলো কাঁপছে। ঘুমিয়ে পড়ার তোরজোর করে নেয় নিলয়। ডিম লাইট জ্বেলে শুয়ে পড়ে নিলয়। হঠাৎ মনে হয় দরজাটা একটু সরে গেছে, ওদিকে তাকাতে দেখে কিছু একটা হাতে নিয়ে তথা দাড়িয়ে। বাতিটা জ্বেলে দেখে বালিশ হাতে দাড়িয়ে আছে তথা। -কি ব্যাপার এখানে দাড়িয়ে আছো কেন, ঘুমাও গিয়ে। -না মানে যেভাবে বাজ পড়ছে তাতে ও ঘরে ভয় করছে। তাই আর কি। -ও ঘরে কি বাজ আলাদা করে পড়ছে? তাহলে তুমি এখানে শুয়ে পড়ো আমি ও ঘরে চলে যাই। -(আশাহত হয়ে) আরে একা ভয় করছে দেখেই তো এখানে আসলাম। তুমি ও ঘরে চলে গেলে তো সেই একাই থাকতে হবে। -আজ কি ঝড় বৃষ্টি নতুন হচ্ছে নাকি, হঠাৎ যে ভয় পেতে শুরু করলে। -থাক আর কিছু বলতে হবে না। আমিই ও ঘরে চলে যাচ্ছি (তখনি বাজ পড়ার বিকট শব্দে কেঁপে উঠে সব, তথাও কুঁকড়ে যায়) -দরকার নেই, আজ না হয় এখানেই শুয়ে পড়ো। (একপাশে সরে যায় গিয়ে জায়গা করে দেয়, উল্টো দিকে কাত হয়ে শুয়ে থাকে নিলয়। ফাঁকা জায়গায় দোলন গুটিসুটি দিয়ে শুয়ে পড়ে।) নিলয় তার পিঠে তথার উষ্ণ নিশ্বাস অনুভব করে। ঘরের নিস্তব্ধতা আড়াল করে বাইরের দমকা হাওয়ার বৃষ্টি আর বিকট বাজের শব্দ। তথার মন উশখুশ করে চলেছে কিছু বলার জন্য, ওর কিছু জিনিস তো জানতেই হবে। -আচ্ছা, একটা প্রশ্ন করি। -(ঘুম জড়ানো কন্ঠে) কি? -তুমি কি আমাকে কোন কারণে ঘৃণা করো? -মানে কি বলতে চাইছো? -না মানে তোমার মনে কি কোথাও আমাকে নিয়ে ঘৃণা জন্মে আছে। -এমন মনে হবার কারণ? -আমার যে একটা বিশ্রী অতীত আছে। -(তথার দিকে পাশ ফিরে) কোন অতীতের কথা বলছো। -এমন ভান করছো যেন কিছুই জানো না। তোমাকে তো সব বলে দিয়েছিলাম। -এসব কিছু আমার মনে নাই। সবকিছু সেদিনই ভুলে গেছি। তুমিও ভুলে যাও সেটাই সবার জন্য ভালো। -তার মানে তুমি কি আমাকে সেই ভুলের জন্য ক্ষমা করে দিয়েছো। তুমি যদি ক্ষমা না করতে পারো তবে আমি নিজেকে কখনই ক্ষমা করতে পারবো না। -হুম করে দিয়েছি। ভুল তো সবাই করে ভুল করেই তো সেটা থেকে শিক্ষা নিতে হয়। তুমিও নিয়েছো, তাই সেটাকে মনের মাঝে পুষে রেখে গ্লানি বাড়িয়ে লাভ কি। -(তথা নিলয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে) আরেকটা কথা বলবো? -আবার কি? ঘুমোতে দিবে না। -এটাই শেষ। -তাড়াতাড়ি বলো। -আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি, I love you -(কিছুক্ষণ তথার দিকে একপলকে চেয়ে থেকে জড়িয়ে ধরে নিলয়, আলতো করে চুমো দেয় ওর কপালে, আর মৃদু আওয়াজে বলে) আমিও তোমাকে ভালবাসি। তথা প্রগাঢ় আবেগ আবেশে নিজেকে নিলয়ের প্রশস্ত বুকে গুজে দেয়। উষ্ণ আলিঙ্গনে বাহুপাশে জড়িয়ে ধরে একে অন্যকে। রক্তের উত্তাপে ভাগ করে নিতে থাকে দুটো শরীর। দুই কপোত- কপোত-কপোতীর প্রগাড় প্রেমোদক আবেশের মাঝে সম্মোহিতের মত নিলয়ের বুকে চুমো একে দেয় তথা। থুতনিতে হাত দিয়ে তথার মুখ টা নিজের আরও কাছে টেনে আনে নিলয়। -তোমার সমস্ত অতীত, অতীতের গ্লানি, ভুল সব আজ আমি গ্রহন করে নিলাম এখন থেকে তুমি শুধুই আমার। তোমার দেহ, মন আজ এই স্পর্শে পবিত্র হয়ে উঠোক। দুচোখ বুজে নিজেকে আরও এলিয়ে দেয় তথা৷ তিড়তিড় করে কাঁপতে থাকা ঠোঁট গুলোতে নিলয় নিজের ঠোঁটের পরশ বুলিয়ে দেয়। ঠোঁট গুলো ঈশত ফাঁকা করে নিলয়ের ঠোঁট জোড়া অবগাহন করে নেয় নিজের মাঝে। পরস্পর যেন অমৃতসুধার খোঁজ করে চলেছে সমান্তরাল লেহনীয় কার্যে। লালায় ভিজে উঠা জিভ গুলো যক্ষের ধন খোঁজার মত তরপাতে থাকে। চুষণের উত্তেজনায় পুরো শরীরে কামনার আগুন জ্বলতে শুরু করে। হাত পায়ের আঙড়িতে নিলয়কে জড়িয়ে নেয় তথা। নিলয়ের হাত পালা করে চড়তে থাকে তথার পিঠে আর নিতম্বে। বাজ পরার আলোর ঝলকানির আলো জানালার ফাঁক গলে ঘরে ছড়িয়ে পরে। ডান হাতের আঙুল গুলো খেলতে থাকে তথার নাভিকমলে। কোমল স্পর্শ ফর্সা পেটে ঢেউ খেলতে থাকতে। মুচড়ে উঠে তথার শরীর। বা হাত উঠে আসে বুকের কাছে। ছানা মাখার মত করে হাত চালায় তথার টেনিস বলের মত স্তনে। উত্তেজনায় শিউরে উঠে পুরো শরীর। কাঁপতে থাকে তথার শরীর, এ কাঁপন শীতের নয় উষ্ণতার উত্তেজনার। উঠে বসে নিলয়, এক হাতে তথাকেও টেনে নেয় নিজের কাছে। চোখ খুলে তাকায় তথা। লজ্জার আভায় রাঙা হয়ে আছে মুখ। মাথা গলিয়ে তথার জামা খুলে নেয় নিলয়। আঙুলের আলতো স্পর্শে স্তনের বোটার চারপাশে অদৃশ্য রিং বানাতে থাকে। অদ্ভুত এক অনুভূতিতে শরীরে সুখের অনুভব হতে থাকে তথার। নিজের শরীর যেন আজ নিজের কথা শুনতে চাচ্ছে না। শরীরে প্রতিটা প্রান্ত আজ যেন বেশিই ছোঁয়াছে হয়ে আছে। আঙুলের ছোট স্পর্শেই সারা শরীরে বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে। নিলয়ের হাতের কারুকাজে স্তন বৃন্তগুলো জেগে উঠে স্তনের সৌন্দর্য যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জিভের ঠগা দিয়ে স্তন বৃন্ত গুলো ভিজিয়ে দেয়। জিভের স্পর্শে তথার শরীর উত্তেজনার প্রভাবে ধনুকের মত বাঁকা হয়ে ওঠে। নিলয় মুখ ডুবিয়ে দেয় বাম স্তনে, ছোট্ট শিশুর মত চোষতে থাকে অমৃত লাভের আশায়। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না তথা৷ কামনার পারদ চরমে উঠে গেছে নিজের নখ হয়তো বসিয়ে দিয়েছে নিলয়ের ঘর্মাক্ত পিঠে। সেদিকে হুশ নেই নিলয়ে, এই ব্যাথা সহ্য হয়ে যায় স্তন বোটার নোনতা স্বাদে। আরেক হাত ছানতে থাকে উন্মুক্ত থেকে যাওয়া স্তন। এমন সুখের অনুভব আগে কখনও হয়নি তথা। নিলয়ের মাথা চেপে ধরে নিচের খোলা বুকে, আর মাথায় চুমু খেয়ে যায়। বাইরে প্রচন্ড ঝড় হচ্ছে। বৃষ্টির উন্মত্ত ধারা সব থুয়ে মুছে নিয়ে যাচ্ছে। এমন মূহুর্তে দুটি প্রাণ মিলিত হচ্ছে পবিত্র মিলনে। আমাকে নাও, আমাকে নাও আগুনে নাও, ফাগুনে নাও, ঢেউয়ে ঢেউয়ে নাও, নাও না নাও দু-হাত ভরে নাও। প্রথম ভুল, প্রথম রাগ আলগোছে গোপন দাগ, নাও প্রথম ছোঁয়া নাও, নাও না নাও দু চোখ ভরে নাও।। তুমি তাকালেই হয়ে যাই বোকা ভীতু প্যাডেলে ছুটেছে একরোখা, এই ঘুম ঘোর নাও না .. তুমি ছেড়ে যাওয়া গল্পের মাঝে কিছু কথা যোগান হয়ে বাজে, যদি ফের দেখা দাও .. ঢেউয়ে ঢেউয়ে নাও, নাও না নাও উজাড় করে নাও। আমাকে নাও, আমাকে নাও আগুনে নাও, ফাগুনে নাও, ঢেউয়ে ঢেউয়ে নাও, নাও না নাও দু-হাত ভরে নাও, প্রথম ভুল, প্রথম রাগ আলগোছে গোপন দাগ, নাও প্রথম ছোঁয়া নাও, নাও না নাও দু চোখ ভরে নাও।। পাঁচ বছর পর গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে বসে আছে নিলয়, পিছনের সীটে তৃষা হাত আয়নায় মেকাপের শেষ ছোঁয়া দিয়ে নিচ্ছে নিজের মুখমন্ডলে। নিলয় সামনের আয়নায় ওকে দেখতে দেখতে বলে -কীরে দোলন কইরে, এখনো সাজগুজ হয়নি ওর নাকি। -না দাদাভাই, দিদির সাজ শেষ সে তার ছেলেকে নিয়ে পড়েছে। -বলে রাখলাম দেখি নিস, দিপ্ত ওর আশকারাতে উচ্ছন্নে যাবে। -আস্তে বলো দাদা ঐ যে আসছে। দোলন এসে গাড়ির সামনের সীটে বসে৷ নিলয়কে দেখেই বাবা বাবা ডাকতে ডাকতে নিলয়ে কোলে ছোটে আসে। -(দোলন মুখ ঝামটা দিয়ে বলে) যা যা এখন বাবার কাছেই যা এখন তো আর মাম্মামকে দরকার নেই। -(নিলয় হাসতে হাসতে বলে)তুই তো দেখি দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছিস। -(তৃষা চিৎকার করে উঠে) এখানে বসে থাকবে নাকি৷ তাড়াতাড়ি চলো না হলে অনুষ্ঠানে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাবে তো। ওরা চারজনে ময়মনসিংহ মেডিকেল অডিটোরিয়ামের সামনে এসে গাড়ি থেকে নামে। একটু পরেই অনুষ্ঠান শুরু হবে। ওরা নিজেদের আসনেই বসে পড়ে। অনুষ্ঠান শুরু হয় কীর্তি শিক্ষার্থীদের মেডেল দেয়া হচ্ছে। চার নাম্বারে তথার নাম ডাকা হয়। তথা মঞ্চে উঠে মেডেল আর স্মারক গ্রহন করে। তথাকে দেখেই মা মা বলে চিৎকার করে উঠে দিপ্ত। সবাই ওরদিকে তাকিয়ে দেখছে কি সুন্দর হাততালি দিচ্ছে সে। অনুষ্ঠানের বিরতিতে বাইরে এসে দিপ্ত কে কোলে তুলে নেয় তথা। -কিরে মাম্মাম কে বেশি বিরক্ত করিস নি তো। (মাথা নাড়িয়ে না করে, লাফ দিয়ে দোলনের কোলে চলে যায়) দিদি তুমি না থাকলে ওকে যে কে সামলাতো। আমি কো একদম পারি না। -মাম্মাম আমি তোমাকে বিরক্ত করি? -না গো সোনা আমার (দোলনের গালে হামি খায় দিপ্ত) -দিদি জামাইবাবু আসলো না? -নারে ওর অফিসে কি যেন মিটিং আছে। -(তৃষা গাল ফুলিয়ে বলে) আমাকে তো কেউ দেখেই না। -(কাছে গিয়ে তৃষা কে জড়িয়ে ধরে তথা) এটা তুই বলতে পারলি আমাকে। তুই আমার সোনা বোন। -(ঢেস দিয়ে নিলয় বলে) আজকাল আমাকেও দেখে নারে কেউ বুঝলি তৃষা। -(পেটে চিমটি কেটে) তাই নাকি, হিসাব টা তুলা থাক বাসায় গিয়ে হবে। চলো চলো সবাই মিলে সেলফি তুলি, তৃষার ডাকে সবাই একসাথে দাড়ায়। তৃষা মোবাইল বের করে পটাপট ছবি তুলতে থাকে। (সমাপ্ত) হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
02-05-2022, 12:06 AM
কিছু হাসিমুখ, কিছু ভালোবাসা রয়ে যায়
কিছু আবেগ কিছু পিছুটান থেকে যায় অশ্রু ভরা মুখগুলো থাক আজ থাক লুকিয়ে মুখোশ আড়ালে নকল হাসিটা যেন ঠোঁট বেঁকিয়ে কিছু কিছু অতীত নিজেই নিজেকে মনে করিয়ে হওয়ার গতিতে দিন চলে যায় পাতা ঝরিয়ে রয়ে যায় শুধু আজ,চলি ইহাই করি বরণ রাতের শেষে আবার দেখা দেবে গেরুয়া গগন - বাবান গল্পের শেষে এইকটা লাইন আমার পক্ষ থেকে এই গল্পকে। অসাধারণ একটা গল্প। দোলন এর বলিদান আর নারীর মায়াময় রূপ সব মিলে একটা সুন্দর গল্প জমা হয়ে রইলো গসিপি নামক খাতায় ♥️ |
« Next Oldest | Next Newest »
|