Posts: 54
Threads: 0
Likes Received: 182 in 78 posts
Likes Given: 345
Joined: Jun 2021
Reputation:
33
(22-04-2022, 11:59 PM)nextpage Wrote: পর্ব - আঠারো
পাশের মাঠে ক্লাবের ছেলে মেয়ে গুলো খেলছে। বড় কড়ই গাছটার মগডালে কতকগুলো চিল পাখি বসে আছে। মাঝে মাঝে দু পাখা মেলে উড়তে থাকে বিশাল আকাশের বুকে। ঝিরিঝিরি বাতাসে গাছের পাতা গুলো ঝরে পড়ে সবুজ বিছানার মত লাগছে। উত্তরে কোণে কালো মেঘ জমতে শুরু করেছে। বক পাখি গুলো দল বেঁধে ঘরে ফিরছে। ঝড় আসার সম্ভাবনা প্রবল।
সত্যিই ছবির মত বর্ণনা। এমন বর্ণনা ভরা লেখা পড়লে মন ভাল হয়ে যায়
•
Posts: 776
Threads: 0
Likes Received: 1,584 in 919 posts
Likes Given: 1,439
Joined: Jan 2021
Reputation:
187
কোথায় যাবে নিলয় আসলেই? পারবে কি তথাকে কিংবা দোলনকে ছেড়ে যেতে? বাস্তবতা কঠিন কিন্তু সেই বাস্তবতার সামনে নিজেই বা কি করে দাঁড়াবে...........
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,178 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(22-04-2022, 11:59 PM)nextpage Wrote: পর্ব - আঠারো
আমরা সকাল থেকে রাত অব্দি এই যে এত গাধার খাটুনি খেটে যাই কিসের জন্য। দায়িত্বের চাপে মেরুদণ্ড গুলো হালকা বাঁকা হতে থাকে কিন্তু সেটাকেই আড়াল করে কেন মিথ্যে হাসির ফোয়ারা ছোটাই মুখে। হাতের তালুয় কড় ধরে যায়, পায়ের তালুতে বয়ড়া। সাংসারিক চাপ, সামজিক চাপ, পারিপার্শ্বিক চাপ সবই সয়ে যাই কিসের তরে??
একটুখানি সুখ। দিন শেষে প্রিয়জনের মুখে হাসির রেখা আমাদের জীবনে সবচেয়ে বড় সুখ। সেই সুখের জন্য মানুষ সব করতে পারে। সেই সুখে কারও জন্ম দিতে পারে আবার সেই সুখেই কারও মৃত্যুর কারণ হতেও দ্বিধা কাজ করে না। আমরা বারবার আমাদের সেই প্রিয় মুখ গুলোর মুখে হাসি খুঁজে ফিরি। নিজেদের সেই হাসির কারণ করাতে ভালবাসি। ছোট্ট একটা হাসি সারাদিনের ক্লান্তি, জীবনের গ্লানি, সমস্ত পাপবোধ সব কিছু ছাপিয়ে জীবনটাকে নতুন করে সাজায়। আরেকটা দিনের জন্য উদগীরণ করায় প্রাণবায়ু, আবারও বাঁচতে শেখায়। আর আমরা আরেকটা দিনের সূচনা ঘটাই।
মানুষ আজব প্রাণী। মানুষকে ঠিকমতো বুঝতে পারা অসম্ভব। এর জন্যই হয়তো সৃষ্টির সেরা জীবের তকমাটা জবরদখল করে রেখেছে এই মানুষ। স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও মাঝে মাঝে কৌতূহলী হয়ে পড়ে সৃষ্টির সময় এমন কি উপদানে তৈরী করেছে মানুষ যার জন্য সৃষ্টি নিজেকে সষ্ট্রার উপরে নিয়ে যায়। শতাব্দীর পর শতাব্দীর বয়ে যায় এর বিশ্লেষণে। ক্লান্ত হয়ে পলায়নে কত মুনি ঋষি, মাথার ঝাকড়া চুল বিসর্জনে কত মনোবিশারদ। সত্যই তো মানুষ বড়ই আজব। শুধুই আজব নাকি সাথে বিশ্রী রকমের ভয়ংকর প্রাণীও বটে। এই পর্বের মুখবন্ধটা দারুন .. এছাড়া কবিতার লাইনগুলো তো এই গল্পের ইউএসপি .. সব মিলিয়ে অসাধারণ।
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(23-04-2022, 08:20 AM)tirths2000 Wrote: বড় সুন্দর লিখছেন। পড়ে মন ভরে যায়।
উৎসাহ দেবার জন্য।
❤️
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(23-04-2022, 08:28 AM)riyamehbubani Wrote: লেখার হাত বড় কাব্যিক। পড়লেই ভাল লাগে। লিখতে থাকুন লেখক।
পাশে থাকবেন।
পাঠকদের খুশি রাখতে পারাটাই বড় পাওনা।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(23-04-2022, 09:10 AM)a-man Wrote: কোথায় যাবে নিলয় আসলেই? পারবে কি তথাকে কিংবা দোলনকে ছেড়ে যেতে? বাস্তবতা কঠিন কিন্তু সেই বাস্তবতার সামনে নিজেই বা কি করে দাঁড়াবে...........
আজ না হয় কাল এই সত্যের মুখোমুখি হতেই তো হবে।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
•
Posts: 118
Threads: 0
Likes Received: 225 in 118 posts
Likes Given: 835
Joined: Jun 2021
Reputation:
32
(22-04-2022, 04:51 PM)bourses Wrote: অসাধারন লাগছে ভাই... যে ভাবে দুটি নারীর মাঝে রেখে মানসিক দন্দকে তুলে এনেছ, তা অনবদ্য... পড়তে পড়তে মনেই হয় যে এটা তোমার প্রথম লেখা গল্প বলে... চালিয়ে যাও... সাথে আছি...
ক্লান্ত ফুলে শিশির তখন দু’এক ফোঁটা।
রাই কিশোরী এই বেলাতেও আদরে আঁকা।
একটু পরেই
ভিজব আমি ভিজবে তুমি এসব যখন খবর পড়ে ;
ঠিক তখনই
আতর মেখে রিং বেজে যায় রাইয়ের স্বরে।
তারপর পর পরই !
দরজায় ভেতর ব্যর্থ হয় আকাশ পাড়ের জোংস্না স্নান।
বলব কি আর !
ঘরের মধ্যেই এখন আমার একফালি চাঁদ, চাঁদের সমান।
ভারি সুন্দর
Posts: 118
Threads: 0
Likes Received: 225 in 118 posts
Likes Given: 835
Joined: Jun 2021
Reputation:
32
(22-04-2022, 11:59 PM)nextpage Wrote: পর্ব - আঠারো
আরতি শব্দটা ছোট কিন্তু এর গভীরতা ব্যাপক।আ'' অর্থে ব্যাপ্তি; "রতি" অর্থে প্রেম, ভালোবাসা ও অনুরাগ । যে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রী বিগ্রহের নিজের প্রীতি বর্ধিত হয় অর্থাৎ তিনি ভক্তের প্রতি প্রসন্ন বা সন্তুষ্ট হন এবং ভগবানের প্রতিও ভক্তের প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসা, ভক্তি ও অনুরাগ বৃদ্ধি পায় তাকে আরতি বলে ।
বাঃ
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
সবকটি পর্বই মন জয় করার মতো কিন্তু এই আঠেরো নম্বরটি যেন আলাদাই মায়া জড়ানো এক অদ্ভুত আমেজ সৃষ্টিতে সক্ষম। বিশেষ করে দুই বন্ধুর অতীত। স্বামী স্ত্রীয়ের হালকা দুস্টুমি। বাড়তে থাকা ভালোবাসা আর সর্বোপরি ওই আরতি সংগীত এর অংশটা উফফফফফ। ♥️♥️♥️
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(23-04-2022, 12:31 PM)Baban Wrote: সবকটি পর্বই মন জয় করার মতো কিন্তু এই আঠেরো নম্বরটি যেন আলাদাই মায়া জড়ানো এক অদ্ভুত আমেজ সৃষ্টিতে সক্ষম। বিশেষ করে দুই বন্ধুর অতীত। স্বামী স্ত্রীয়ের হালকা দুস্টুমি। বাড়তে থাকা ভালোবাসা আর সর্বোপরি ওই আরতি সংগীত এর অংশটা উফফফফফ। ♥️♥️♥️
ঐ তো দাদা আরতির ভাবার্থ।
মনের ঈশান কোনে প্রেম জাগছে। তাই আরতি (প্রেম) সঙ্গীত এসেই গেল। কিন্তু কার মনের ঈশান কোন সেটাই ধরতে পারছি না
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
লেখা নয় জাদু .....
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(23-04-2022, 05:32 PM)ddey333 Wrote: লেখা নয় জাদু .....
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 95
Threads: 0
Likes Received: 270 in 111 posts
Likes Given: 751
Joined: Jun 2021
Reputation:
60
আপনার লেখা পড়ে ভাল লাগল ভাই।
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
পর্ব- উনিশ
আজকাল চারপাশের পৃথিবী, মানুষজন, আবহাওয়া, সবার আচরণ সবকিছু কেমন যেন বদলে গেছে।সবাই নিজের স্বতন্ত্র স্বত্তা হারিয়ে ফেলেছে। কেমন যেন সবাই কলকারখানার ঐ চলমান যন্ত্র গুলোর রূপ ধরেছে। মানুষ এখন সবকিছুই অগ্রিম পেতে চায়। আর তাই তো আজ আমরা লাগাম ছাড়া ঘোড়ার মতো হয়ে গেছি। যে যেমনি হোক না কেন, যে যেটা করুক না কেনো আজ আমাদের প্রত্যাশিত ফল যেকোন মূল্যে পেতে চাই, আদায় করে নিতে চাই। আর তাই নিজেদের এতোটা নিজে নামিয়ে আনি যে আমরা যে মানুষ সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ, বুদ্ধিমান আর বিবেকমান প্রানী সেটাই ভুলে যাই। আর তাই আজ মানব জাতির এমন অধঃপতন।
পাল্টাতে হবে!! এই সমাজ, সমাজের মানুষ সবাইকে পাল্টাতে হবে। তবে এর আগে নিজেকে পাল্টাতে হবে। তবেই না সব পাল্টে আমরা আবার মানুষ হবো। সেই মানুষ যার জন্য নাকি সৃষ্টিকর্তাও স্বয়ং প্রশংসা করেছিলেন।
তথার এইচএসসি পরিক্ষা চলছে। সকালে ওকে পরিক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে নিজের কাজে চলে যায় নিলয়। আবার পরিক্ষা শেষে কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করতে হয় তথার জন্য। যদিও এভাবে পরিশ্রম টা বেশিই হয়ে যায় নিলয়ের জন্য। কিন্তু ও ভাবে আর তো কয়েকটা দিন তারপর তথার গন্তব্য আলাদা আর আমার আলাদা। এরপর নিলয়ের মুক্তি। ওর দ্বায়িত্বের পালা শেষ, আর দশটা মানুষের মতই স্বাধীন।
কিন্তু মানুষ চাইলেই কি স্বাধীন হতে পারে। এই পৃথিবীটাই যে একটা কারাগার। আর সেখানে আমরা সবাই বন্দী৷ দায়িত্ব- কর্তব্য, সম্পর্ক, সুখ-সমৃদ্ধি, ভালবাসা এসবের বেড়াজালে আমরা সবাই বন্দী। এই সবকিছুর পরেও যে নিজের জন্য কিছুটা সময় দরকার হয় সেটা কজনে উপলব্ধি করতে পারে। হয়তো অনেকেই পারে কিন্তু নিজের জন্য বাছাই সময়টুকুও বিলিয়ে দেয় অকাতরে।
আজকাল নিলয়ের নিজের কাছে নিজেকে খুব একা লাগতে শুরু করেছে৷ সবার জন্য সবকিছু করতে গিয়ে নিজের জন্য আর কিছুই যে রইলো না। হয়তো হাসিমুখ গুলো দেখে সকল বেদনা দূর হয়ে যায় কিন্তু নিজের হাসি টা হারিয়ে ফেলেছে সেটা কোথায় খুঁজে পাবো। আদৌ পাবে কি না কে জানে, আর যতখনে পাবে তখন কি আর সেই সময় টা পাবে।
আজ অবসরে মনটা খুব অবুঝ হয়ে আছে, অশান্ত মন নিলয়কে ভাবিয়ে তুলে
বাস্তবতা আমার জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমি তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি।
আমার প্রতিভা আর পাগলামির ভেতরে একটা সূক্ষ্ণ সীমারেখা আছে। আমি সেই রেখাটি মুছে ফেলেছি।
আমার নিয়তি হল একটি অদ্ভুত, অখ্যাত রেস্তোরাঁর মতো। যেখানে উদ্ভট রকমের ছোট ছোট কিছু ওয়েটার আছে, যারা এমন এমন সব জিনিস নিয়ে আসে, যেগুলো আমি কখনো চাইনি আর এগুলো আমার পছন্দও না।
একটা কথা বলি,
আচ্ছা বইয়ের দোকানে গেলে মানুষ গুলোর চরিত্র এমন দুর্বল হয়ে যায় কেনো?
বাদ দেই এসব আসল জায়গায় ফিরে আসি..
জীবনের সবচেয়ে সুখের ঘটনা হলো এমন সব কাজ করা, যা আমি করতে পারবো না বলে সবাই ধরে নেয়।
আজকাল আমি নিজের সঙ্গেই কথা বলি। কারণ এখন আর আমার কথা শোনার মত কেউ নেই আর আমি ওই একজনের কথাই শুনি। আমি মনে হয় পাগল হয়ে গেছি।। আমি এসব উল্টাপাল্টা কি ভাবছি।
-কি ব্যাপার কোন চিন্তা সমুদ্রে নিজেকে নিমজ্জিত করে রেখেছো।
-(তথার ডাকে ঘোর ভাঙে নিলয়ের, আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে) কোথাও না।
-ডুব না দিলেই ভাল। চা খাবে তো
-হুম, এখনি আমি করছি তুমি যাও।
-নাহ, আজ আমিই করি। কোন বারণ শুনবো না।
-আচ্ছা তা না হয় তুমিই চা করো। এমনিতেও সামনে তো নিজের টা নিজেরই বানিয়ে নিতে হবে। একটু একটু শিখতে থাকো।
-(অবাক হয়ে) কেন আমার শিখতে হবে কেন?
-বারে মেডিকেলে চান্স পেলে তখন কি আর এখানে থাকবে? হোষ্টেলে থাকবে সেখানে নিজেরই তো করতে হবে।
-(মূহুর্তেই মুখে কালো মেঘের ছায়া নেমে আসে) ও আমার চলে যেতে হবে এখানে আর থাকতে পারবো না।
-এ মা এটা আবার কেমন কথা। কোথায় না কোথায় তোমার চান্স হবে সেটা জানা আছে নাকি। যেখানে এডমিট হবে সেখানেই তো যেতে হবে।
-(একরাশ বেদনার ছটা চোখে মুখে) তাড়িয়ে দিবে সেটা বলছো না কেন।
-এসব কি উল্টো পাল্টা ভাবছো, তাড়াবো কেন। ছুটি পেলে এসে থাকবে আমি না করবো নাকি। এখন চা টা তো করে নিয়ে এসো।
যেন একটা চলন্ত লাশ উঠে চলে গেল। নিলয় চোখে মুখে জল দিয়ে বিছানায় এসে বসে। একটু পরে দু হাতে দুটো কাপ নিয়ে নিলয়ের পাশে বসে তথা।
-(চায়ে চুমুক দিতে দিতে)আচ্ছা যদি এখানের মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে যাই তবে?
-এখানের হোষ্টেলে উঠে যাবে।
-(উৎসুক হয়ে) আমি তো হোস্টেলে থাকতে পারি না। খাওয়া দাওয়া তো ভাল না। ওসব খেতে পারি না। না না, আমি থাকতে পারবো না।
(মোবাইলে দোলনের ফোন এসেছে, কিন্তু এখন তথার সামনে রিসিভ করা যাবে না। তাই সাইলেন্ট মুডে রেখে দেয়)
-আস্তে আস্তে সব কিছু শিখতে হবে। প্রথমে একটু কষ্ট হবে, তবে একটু মানিয়ে নিবে। দেখবে ধীরে ধীরে সব কিছু আয়ত্তে চলে আসবে। কত মানুষ থাকে না হোষ্টেলে। ওখান থেকে কলেজ কাছে হবে। ক্লাসমেট রা কাছে থাকবে, পড়াশোনায় সুবিধা হবে।
-এরপরও অনেকে থাকে না বাসায়। আমিও না হয়...
-আচ্ছা পরে দেখা যাবে৷ তবে আমি জানি তোমার দূরে কোথাও চান্স হবে। সেটাই ভাল হবে তোমার জন্য।
-ওহহ তোমারও এটাই ইচ্ছে। দূরে হলেও আমি মাইগ্রেশন করে চলে আসবো।
-লাভ কি? আমার যদি চাকরিতে বদলি হয়ে যায় তখন তো ঐ হোষ্টেলেই থাকতে হবে। এর থেকে মানিয়ে নিতে শিখো সেটাই ভাল হবে।
-(নির্লিপ্ত কন্ঠে) তোমার বদলি হতে যাবে কেন। তার চেয়ে ভালো আমিই চলে যাব। ঠিকি বলেছো ওখানে থাকতে থাকতে শিখে যাবো।
-আরে বাবা এখন এসব নিয়ে ভেবে কি লাভ। দেরি আছে তো নাকি। তখন দেখা যাবে। এখন যাও পড়তে বসো, পরশু পরিক্ষা আছে তো নাকি।
নিলয়ের খালি চায়ের কাপ টা নিয়ে তথা বেরিয়ে যায়। মোবাইলটা হাতে নিতেই দেখে গোটা চারেক মিসড কল হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি কল ব্যাক করে দোলনের কাছে। একবার রিং হতেই কল রিসিভ হয়ে যায়, যেন মোবাইল টা হাতে নিয়েই বসে ছিল।
-কি কই তুই? ফোন রিসিভ করছিলিস না কেন?
-বাসায় আছি। ওই তো বাইরে ছাদে ছিলাম তো তাই টের পায় নি (মিথ্যেটা বলার সময় গলাটা কেঁপে উঠে)
-যাক বাবা। আমি তো ভাবছি কোথায় আছিস কে জানে। ফোনটাও রিসিভ করছিস না। আমি তো টেনশনে মরি।
-আরে পাগলী, এতে টেনশন করার কি আছে।
-তুই বুঝবি না। এতক্ষণ আমার মনে কি চলছিলো সেটা আমি জানি।
-এখন তো জানলি আমি ঠিকঠাক আছি। তাই মাথা থেকে টেনশন দূর করে ঠান্ডা হ।
-টেনশনে রেখে এখন বলিস ঠান্ডা হতে। আমি তোর মত ঠান্ডা হয়ে দুনিয়াদারী চালাতে পারি না।
-বুঝি তো, সবসময় আমার ভাল-মন্দ নিয়ে চিন্তা তুই ছাড়া আর কেউ করে না তো। কাল ভার্সিটি ক্যাম্পাসে যাবি ঘুরতে।
-(উৎফুল্ল হয়ে) সত্যি নিয়ে যাবি।
-তোকে মিথ্যে বলতে যাবো কেন। আমি ফোন করবো যাবার আগে।
টুকটাক আরও কিছু কথা চলে কিছুটা সময়। রাতের খাওয়া সেড়ে ছাদের কোনে এসে দাড়ায় নিলয়। ইদানীং নিজের কাছে নিজেকে কেমন ছোট ছোট লাগছে নিলয়ের। ওহ বুঝতে পারছে এমন কিছু ওর দ্বারা হয়ে চলেছে যেটা না হলে ভাল হতো। কিন্তু ও কি করবে সব কিছু আর নিজের নিয়ন্ত্রণে চলে না। প্রকৃতি যেভাবে চালায় সেভাবেই চলতে হয়। এরপরও নিলয়ের নিজের কাছে মনে হয় ও নিজেকে ঠকাচ্ছে নাকি ওদের কে।
নিলয়ের দুচোখে আজ ঘুমের বদলে শূন্যতার খেলা। কিছু এলোমেলো দিক দিশান্তর ছোটাছুটি করা নাকি অন্য কিছু?
কি দেখাতে চায় তারা?
যেটা আমার না দেখার কথা?
অদ্ভুত কিছু বাজে স্বপ্ন আজ তাই পূরণের হাতছানি।
তাকি শুধু নিছক অভিনয়?
না না এ আমার ভ্রম!!!
তবে সে নিজের চোখে দেখা!!
বিশ্বাস গুলো আজ বড় অসহায়, তবে কি তারাও?
না তারা কি বিক্রি হবার কথা?
হবেই না কেনো যেখানে মনুষ্যেত্ব টাই বিকিয়ে যাওয়া॥
সব কিছু ভুল, সবকিছুই আবদ্ধ এই ভুলে।
বড় ভুলটা ছিল সেই জন্মে।
জন্মটা ভুল আরও ভুল বেঁচে থাকার সেই লড়াইটা!!
এবার হাসি পায়॥ অট্টহাসিতে নিজেকে ভাসানো যখন ভালবাসাটাও নাকি ভুলের খেলা।।
এই ভুলের জীবন কিসের প্রয়োজন??
ধিক্কার এই লালসিত জীবন ধিক্কার বেঁচে থাকার কারণ!!!
সময়ের খরাস্রোতে বদলানো জীবন এখন আর কিসের উদাহরণ??
নাকি আরেকটা মিথ্যায় ঢেকে দিতে চায় এই জীবন।।।
প্রচন্ড যন্ত্রণা কষ্টের চর্ষাকিত প্রতিটা সময় ক্ষণিকের তরে আরেকটি যন্ত্রণার অপেক্ষা বৈকি!!!
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
The following 18 users Like nextpage's post:18 users Like nextpage's post
• a-man, auditore035, Baban, Badmas boy, bad_boy, Boti babu, Bumba_1, ddey333, DEEP DEBNATH, lizzyfawn, MNHabib, raikamol, raja05, samael, SubtleKN, Voboghure, WrickSarkar2020, অভিমানী হিংস্র প্রেমিক।
Posts: 1,152
Threads: 0
Likes Received: 1,380 in 926 posts
Likes Given: 3,549
Joined: Apr 2022
Reputation:
145
Golpo ta kothai jabe otai vabchi chalia Jan dada ❤❤❤❤❤a vabei sathe achi
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(23-04-2022, 07:41 PM)sunilgangopadhyay Wrote: আপনার লেখা পড়ে ভাল লাগল ভাই।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(24-04-2022, 12:38 AM)Boti babu Wrote: Golpo ta kothai jabe otai vabchi chalia Jan dada ❤❤❤❤❤a vabei sathe achi
এইতো ক্রমশ শেষের দিকে।
ষুরু যেটা হয়েছে শেষ তো হবেই।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
ছন্দময় গদ্য ....
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,178 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
একা শহর একা প্রহর
.. একা কাটাই দিন,
একা হাঁটি একা খাটি
.. একা বন্ধুহীন!
নিজেই হাসি নিজেই কাঁদি
.. নিজেই আছি বেশ,
নিজের সাথে দেখা করেই
.. হবো নিরুদ্দেশ!
বর্তমান পরিস্থিতিতে নিলয়ের হয়েছে এই অবস্থা
যেটুকু বুঝতে পারছি গল্প সম্ভবত শেষের দিকে। দুই আঙ্গিকের কথোপকথন এবং নিলয়ের আত্মবিশ্লেষণ - সব মিলিয়ে পর্বটি খুবই উপভোগ্য লেগেছে।
|