Poll: How is the story
You do not have permission to vote in this poll.
Good
100.00%
16 100.00%
Bad
0%
0 0%
Total 16 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 118 Vote(s) - 3.43 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica চন্দ্রকান্তা - এক রাজকন্যার যৌনাত্মক জীবনশৈলী
সবচেয়ে ভালো যেটা লাগলো, পানুগল্প বলে এই এক্সট্রা অর্ডিনারি থ্রিলারের মাঝখানে অপ্রয়োজনীয় যৌনদৃশ্য ঢোকানোর প্রচেষ্টা নেই | ছিমছাম টানটান উত্তেজনা সারাক্ষণ ফিল করে গেলাম পড়তে পড়তে | 

 আর ডনের ওই ফাস্ট অ্যাপিয়ারেন্সটা.... পুষ্পা ভাওকা ইয়াদ দিলা দিয়া কসম সে ! টেক মাই লাইক অ্যান্ড রেপু আন্না !  Heart
[+] 1 user Likes sohom00's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(07-04-2022, 12:39 AM)Shoumen Wrote: খুব ভালো লাগলো আপনার রিপ্লাই পেয়ে দাদা,,,  খুব কষ্ট হচ্ছে ব্যস্ততায় এটা বেশ বুঝতে পারছি,,, আর এই যে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র নিয়ে আসছেন,,, এটাই তো উপন্যাস এর ধর্ম,,,খুব চমৎকার একটা উপন্যাস হতে চলেছে,,, এটা পুরো বিশ্বাস আছে,,, নেক্সট আপডেট এর জন্য অপেক্ষা করছি

চেষ্টায় আছি একটা ভালো উপন্যাস তুলে ধরার... যেখানে শুধু মাত্র যৌনতা থাকবে না... সাথে কিছুটা থ্রিলারের সহবস্থান থাকবে... দেখা যাক... কতটা সফল হতে পারি...
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
(10-04-2022, 02:10 AM)sohom00 Wrote: সবচেয়ে ভালো যেটা লাগলো, পানুগল্প বলে এই এক্সট্রা অর্ডিনারি থ্রিলারের মাঝখানে অপ্রয়োজনীয় যৌনদৃশ্য ঢোকানোর প্রচেষ্টা নেই | ছিমছাম টানটান উত্তেজনা সারাক্ষণ ফিল করে গেলাম পড়তে পড়তে | 

 আর ডনের ওই ফাস্ট অ্যাপিয়ারেন্সটা.... পুষ্পা ভাওকা ইয়াদ দিলা দিয়া কসম সে ! টেক মাই লাইক অ্যান্ড রেপু আন্না !  Heart

অসংখ্য ধন্যবাদ তোমার লাইক আর রেপুর জন্য... এই ভাবে সাথে থেকো... এই রকম আরো বেশ দুয়েকটি পর্ব আসবে তোমাদের কাছে... আসলে সবটাই ওই চন্দ্রকান্তারই বলা কথাগুলো আমি জাস্ট সাজিয়ে তোমাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি আর কি... অনেকটা সেই মহাভারতের মত... ব্যাসদেবের বলে যাওয়া আর গনেশের লিখে রাখা... হা হা হা...
Namaskar
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
(08-04-2022, 10:57 AM)ddey333 Wrote: আজ কিছু পাওয়া যাবে নাকি ??

কাজের চাপ তো একটু কমেছে মনে হচ্ছে ....


Iex

শনিবার আর আপডেট দিয়ে উঠতে পারি নি... আজ দিচ্ছি... চেষ্টা করেছি একটু বড় আপডেট দিয়ে পুষিয়ে দেওয়ার... দেখ... কেমন লাগে... Heart
Like Reply
Wink 
[Image: 276946146_chapter-30.png]
৩০
মুঝসে পাঙ্গা মাৎ লেনা

পাতা ওল্টায় পর্ণা… গুঁজে রাখা বুক মার্ক বের করে নিয়ে… 

১২ই ফেব্রুয়ারি… মঙ্গলবার

আজকে লিখছি ঠিকই, কিন্তু ঘটনাটা কিছুদিন আগের ঘটে যাওয়া… সময়াভাবে আর লিখে উঠতে পারি নি… এখন একটু হাতে সময় পেয়েছি, তাই ডায়রিটা খুলে বসলাম… যাক… শুরু করি…

সেদিন ভোরে সবে মাত্র ঘুমটা ভেঙেছে… তখনও ব্রাশও করে উঠতে পারিনি… দেখি নন্দ, মানে আমাদের হোস্টেলের সেই ছেলেটি… এসে হাজির… 

আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতে দাঁত বের করে দিল… 

আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “কি রে? হটাৎ করে এই ভোরবেলা উদয় হলি?”

আমার প্রশ্নে মাথা চুলকে বলল, “দিদি, নিচে তোমার ফোন এয়েচে…”

এই অসময় ফোন? ফোন ব্যাপারটা ভোরে আর রাতে এলেই কেমন বুকের মধ্যেটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে যেন… তাও আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, “কে ফোন করেছে?”

মাথা নাড়ায় আমার প্রশ্নে নন্দ… “তা আমি কি করে বলবো? আমায় তোমায় খবর দিতে বলল, তাই এলাম… তা চলো, নিচে চলো…” বলে আর দাঁড়ায় না সে… যেমন হুট করে এসেছিল, তেমনই চলে গেলো সে…

ততক্ষনে সুচরীতা আর সুজাতাও উঠে পড়েছে নন্দর গলা পেয়ে… ওরা বিছানার উপরেই উঠে বসে আমায় বলে, “যা না… দেখ গিয়ে… কারুর কোন বিপদ আপদ হলো কি না বাড়িতে… এই ভাবে এমন ভোরবেলা আবার ফোন আসবেই বা কেন!”

ওদের কথায় মাথা নাড়ি আমি… ভাঁজ পড়ে কপালে… সত্যিই তো… এত ভোরে… ভাবতে ভাবতে হাত বাড়িয়ে হাউস কোটটাকে পরণের ম্যাক্সির উপরে জড়িয়ে নিলাম… তারপর মাথার চুলগুলো একটা হাত খোঁপায় বেঁধে নিয়ে সিড়ি দিয়ে তরতর করে নেমে গেলাম নিচে, অফিস ঘরের দিকে…

রিসিভার তুলে কানে দিয়ে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে শুনি দাদুর গলা… “তিতাস মা?”

দাদুর গলা বেশ ধরা মনে হলো আমার… তাতে দুশ্চিন্তা যেন আরো বেড়ে গেলো… “কি হয়েছে দাদু? তোমার গলাটা এমন কেন লাগছে? বাড়ির সবাই ঠিক আছে তো?” প্রবল দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে প্রশ্ন করি আমি…

“হ্যা রে মা, বাড়ির সবাই ঠিকই আছে… শুধু…” বলতে বলতে থেমে যায় বৃদ্ধ… বুঝতে পারি গলা বুজে আসে ওনার…

“কি হয়েছে দাদু… বলো…” আমি নিজের গলাটাকে যথা সম্ভব ঠান্ডা রেখে প্রশ্ন করি…

“রঘুটা চলে গেলো… বুঝলি মা…” ধরা গলার উত্তর আসে ফোনের মধ্যে থেকে…

“চলে গেলো? মানে?” আমার ঠিক বোধগম্য হয় না দাদুর কথায়…

“চলে গেলো মানে চলেই গেলো… অনেক চেষ্টা করলাম আমরা ওকে ধরে রাখার… কিন্তু হলো না রে… অনেকদিন সাথে ছিল তো!...” বলে ওঠে দাদু…

এবার আমার বুঝতে অসুবিধা হয় না দাদুর কথার মানে… শুনে আমার গলার মধ্যে দলা পাকিয়ে ওঠে যেন… রঘুকাকা… সেই ছোট্ট বেলা থেকে দেখছি মানুষটাকে… দাদুর ছায়াসঙ্গি বলা চলে তাকে… কত স্মৃতি সাথে সাথে ভীড় করে আসে আমার চোখের সামনে… নিষ্পাপ মুখটা ভেসে ওঠে মনের মধ্যে… চোখে জল চলে আসে আমার… অনেক কষ্টে নিজেকে সংযত করে জিজ্ঞাসা করি… “কখন?”

“এই তো… গতকাল… মাঝরাতে… এখানে, গ্রামের বাড়িতেই…” থেমে থেমে উত্তর দেয় দাদু… তারপর একটু থেমে বলে, “দিদিভাই! তুই আসবি একবার? বেলাডাঙায়? তোকে যে বড্ড ভালোবাসতো রঘুটা…”

“হ্যা হ্যা দাদু… নিশ্চয়ই আসবো… আসছি আমি… এখনই তৈরী হয়ে বেরোচ্ছি… তুমি চিন্তা করো না… আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পৌছে যাবো…” ব্যগ্র স্বরে বলে উঠি আমি… রিসিভারটাকে হাতের মুঠোয় চেপে ধরে, নিজেকে সামলে রেখে…

“আমি সূর্যকে বলে দিচ্ছি, তোর জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দিতে…” ওপাশ থেকে বলে ওঠে দাদু…

ওই মুহুর্তেও আমার ভেতরের অহংবোধ মাথা তুলে দাঁড়ায়… আমি দৃঢ় স্বরে বলি, “না দাদু… তার দরকার হবে না… আমি এখুনি বেরিয়ে ট্রেন ধরে নিচ্ছি…” তারপর একটু থেমে বলি, “তুমি ভেবো না, আমি ঠিক পৌছে যাবো…”

দাদু আমার গলার স্বরে কি বোঝে জানি না, খানিক চুপ করে থেকে বলে ওঠে, “বেশ… দেখ কি করবি… তুই না আসা অবধি আমরা অপেক্ষা করবো…” বলে ফোনটা কেটে দেয় ওপাশ থেকে… আমি হাতে রিসিভারটা নিয়েই ধপ করে বসে পড়ি পাশের চেয়ারটাতে… কানে আসে ফোনের মধ্যে থেমে লাইন টেনে যাওয়ার কোঁ কোঁ আওয়াজ… কিন্তু সে আওয়াজ আমার কানে পৌছায় না তখন… মনের মধ্যে তখন ভীড় করে আসা রঘুকাকার স্মৃতিগুলো যেন ছায়া মেলে ধরেছে… আমার ছোটবেলা… রঘুকাকার ঘাড়ের উপরে চেপে ঘুরে বেড়ানো… আমার হাজার দৌরাত্ম দাদুর কাছে কি ভাবে রঘুকাকা আড়াল করে আমায় প্রশ্রয় দিত… মনে পড়ে যায় একদিন, তখন কতই বা বয়স আমার… এই ছয় কি সাত… হটাৎ করেই বায়না ধরেছিলাম এখুনি আমায় মেলায় নিয়ে যেতে হবে বলে… সেবার আমাদের পাশের গ্রামে একটা কিসের মেলা বসেছিল, কিন্তু সেদিনকেই দাদুরা সবাই মিলে কলকাতা চলে আসার কথা… আমার প্রস্তাব এক কথায় নাকচ করে দিয়েছিল মামনি… কিন্তু আমার জেদ… যখন মাথায় ঢুকেছে মেলায় যাবো, তো যাবোই… শেষে রঘুকাকা এগিয়ে আসে… আমায় কোলে তুলে নিয়ে মামনিকে বলে, “বৌরানি… তোমরা তো বিকালের দিকে যাবে… আমি বড়কুমারীকে চট করে মেলা দেখিয়েই নিয়ে চলে আসবো… তুমি কিচ্ছুটি ভেবো না…” রঘুকাকার মুখের উপরে কেউ কখনও কথা বলে নি কোনদিন, সে আমাদের বাড়ির পরিচারক বলে কখন তাকে কেউ ভাবত না… তাই রঘুকাকা যখন বলেছে, তখন মামনির আর কথা যে বলা চলে না সেটা জানে… আমিও নাচতে শুরু করে দিলাম তাতে… রঘুকাকার পীঠে চেপে চললাম মেলায়…

তারপর আর একদিন, সেদিন ফকিরদের সাথে গড়ের জঙ্গলের মধ্যে খেলার সময় কি করে যেন গাছ থেকে পড়ে গিয়েছিলাম… বোধহয় হাত ফসকেই হবে… গোড়ালি থেকে পা মচকে সে এক কান্ড… সাথে সাথে গোড়ালি ফুলে ঢোল… কাজল আর ফকির, দুজনে মিলে অনেক কষ্টে আমায় নিয়ে এসে হাজির বাড়িতে… বাবা দেখেই তো দেখি চোয়াল শক্ত হয়ে গিয়েছে… আমিও মনে মনে প্রমোদ গুনছি… আমায় ছেড়ে দিয়ে ফকির আর কাজল দিল দে ছুট… আমি বাড়ির বাইরের দালানে চুপ করে বসে… মাথা নিচু করে… জানি এবার আসতে চলেছে আমার উপর দিয়ে ঝড়… দাদুও সে দিন নেই বাড়িতে, যে এসে আমায় আড়াল করবে বাপির বকুনি থেকে… আর সেই সময়ই কোথা থেকে রক্ষাকর্তার ভূমিকা এসে হাজির রঘুকাকা… বাপি কিছু বলার আগেই দেখি হাতে চুন হলুদ নিয়ে এসে হাজির সে… কি করে খবর পেয়েছিল কে জানে… তাড়াতাড়ি আমার পায়ের কাছে বসে যত্ন নিয়ে পায়ের গোড়ালিতে চুন হলুদ লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল… বাপি কি বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই প্রায় ধমকে উঠল বাবাকে, “দেখছ না, বড়কুমারীর পা ফুলে গিয়েছে… এখন কিছু বলার দরকার নেই তোমার… আমি দেখছি ব্যাপারটা…” অগত্যা বাবার প্রস্থান… আমার মুখে এক গাল হাসি…

নাহ!... খবরটা শোনার পর আমার মুখে আর হাসি ছিল না… চেয়ারের উপরে থম মেরে বসেছিলাম চুপ করে… চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল উষ্ণ অশ্রুধারা… কাঁদছিলাম আমি… নিঃশব্দে… এক সজন হারার বেদনায়…

শুধু আমার জন্যই রঘুকাকা এই ভাবে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা নয়… আমি জানি, শুনেছিলাম কার মুখ থেকে যেন… এখন ঠিক খেয়াল পড়ছে না… আমার পিমা… মানে আমার পিসিমা, রত্নকান্তা… তাকে প্রায় নিজের মেয়ের মত স্নেহ করতো রঘুকাকা… তাকেও এই ভাবেই আগলে রাখতো দাদুর ক্রোধ থেকে বরাবর… পিমা আর সেই ছেলেটি, ফায়েদ্… ওর সাথে যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, যা নিয়ে আমাদের পরিবারে একটা সময় তুমুল অশান্তির ঝড় বয়ে গিয়েছিল বলে শুনেছি… শুধু অশান্তিই বা বলি কেন… হটাৎ করে তো ফায়েদ্ কেমন যেন উধাওই হয়ে গেলো একেবারে… যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো ছেলেটি… সেই তখন, এই রঘুকাকাই দাদুকে লুকিয়ে খুঁজেছিল অনেক করে ছেলেটিকে… পরে নাকি পেয়েওছিল খোঁজ, কিন্তু বলতে পারে নি নাকি পিমাকে সেটা… বলেই বা কি করতো… তখন দাদুরও রক্ত গরম… এখনের মত এত ঠান্ডা হয়ে যায় নি দাদুর প্রতাপ… পিমা জানতে পারলেও তার কিছুই করার ছিল না সেই সময়… হয়তো এখন কার দিন হলে বেরিয়ে আসতো বাড়ি থেকে… নিজের ভালোবাসার মানুষটার জন্য… কিন্তু সেই সময় পিমার পক্ষে সম্ভব ছিল না নিশ্চয়… বা হয়তো আমার মত এতটা জেদী… এতটা বেপরোয়া ছিল না বলেই… চুপ করে মেনে নিয়েছিল নিজের ভবিতব্য… বুক চাপা দীর্ঘশ্বাসের আড়ালে লুকিয়ে রেখে দিয়েছিল নিজের ভালোবাসাটাকে…

কখন পেছনে নন্দ এসে দাঁড়িয়েছে খেয়াল করিনি… ও পাশে এগিয়ে এসে আমার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলে ওঠে, “দিদি… তুমি কাঁদছ?”

ওর কথায় সম্বিত ফেরে আমার… তাড়াতাড়ি হাতের উল্টো পীঠ দিয়ে চোখ মুছে তাকাই ওর দিকে… “না রে… ওই আর কি!...”

নন্দ যেন ভাবতেও পারে না, ওর ডাক্তার দিদি কাঁদতে পারে বলে… এগিয়ে এসে আমার কাঁধের উপরে হাত রেখে বলে, “কি হয়েছে দিদি? ফোনে কোন খারাপ খবর পেয়েছ?”

ওর গলার স্বরে তখন যেন আপনজনের উৎকন্ঠা… ওর এহেন উৎকন্ঠায় ভেতরটা যেন আরো হুহু করে ওঠে… আমি ঘুরে ওর গালের উপরে হাত রেখে বলি, “হ্যা রে… আমার খুব কাছের একজন চলে গেছে… তাই মনটা একটু খারাপ হয়ে গিয়েছে…”

“চলে গিয়েছে? কোথায়?” অবাক চোখে প্রশ্ন করে নন্দ…

ওর প্রশ্নে ওই কষ্টের মধ্যেও আমি ম্লান হেসে ফেলি… বলি, “এ যাওয়া সে যাওয়া নয়… এ একেবারে চলে যাওয়া…”

কি বুঝলো জানি না আমার কথায়… মাথা নাড়ে বিজ্ঞের মত… “ভেবো না দিদি… সব ঠিক হয় যাবে…”

… সব ঠিক হয়ে যাবে… কথাটা কতই না সহজে বলে ফেলল কিশোর নন্দ… হয়তো জানেও না, সজন হারানোর বেদনাটা… বা এখনও সে মানসিকতাই আসে নি সজন হারিয়ে গেলে কতটা নাড়া দিয়ে যায় মনের মধ্যেটায়…
.
.
.
[+] 5 users Like bourses's post
Like Reply
ট্রেন ধরে বেলাডাঙা পৌছতে পৌছাতে প্রায় সাড়ে বারোটার মত বেজে গেলো… শীতটা ততদিনে বেশ কমে গিয়েছে… কলকাতার শীত আর কতদিন থাকে… মাঝরাতের পর থেকে ভোর অবধি একটা শিরশিরানির মত থাকে ঠিকই, কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে কমে যায় অনেকটাই… যদিও, এখনও তেমন গরমও পড়েনি… কিন্তু জানি যে গ্রামে ওই দিকে এখনও বেশ ঠান্ডা আছে… তাই একটা জিন্স আর তার উপরে একটা ফুল হাতা গেঞ্জি… আর সেই সাথে একটা লেদার জ্যাকেট চাপিয়ে নিয়েছিলাম যাতে রাতে ফেরার সময় ঠান্ডাটা না লাগে… এই রকম আবহাওয়ায় মোটামুটি আরামদায়ক… পায়ে পড়ে নিয়েছিলাম স্নিকার… কারণ ট্রেন জার্নিতে এই ধরণের জুতো অনেক সুবিধাজনক… শত তাড়াতাড়ি করেও এর চেয়ে আগে এসে পৌছাতে পারলাম না… হয়তো গাড়িতে আসলে এর অনেক আগেই পৌছে যেতে পারতাম ঠিকই… কিন্তু ওই যে… বাড়ির কোন কিছুই নেবো না… এত কিছুর মধ্যেও আমার সেই জেদ কিছুতেই টলে না… সে যাই হোক… কি আর করা যাবে!... আসলে হয়তো একটু আগে আরো পৌছানো যেত, যদি না স্টেশনে ঢোকার সময় আগের ট্রেনটা মিস করতাম… আর এই সময়টা উল্টো দিকের ট্রেন… স্বভাবতই বেশ দেরীতে পেয়েছিলাম পরের ট্রেনটা, অনেকটা সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল স্টেশনে দাঁড়িয়ে… 


ট্রেন থেকে নামতেই দেখি প্ল্যাটফর্মের উপরেই ফকির আর কাজল অপেক্ষা করছে আমারই জন্য… ওদের চোখে মুখে একটা বিষন্নতার ছাপ ছেয়ে রয়েছে… আমায় দেখেই ফকির এগিয়ে আসে… আমার হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে বলে, “দাদু মুকে পাঠায় দিলো… তুকে লিয়ে যেতি… চল্… ভ্যানটারে লিয়ে আসিছি…”

ছোট স্টেশন, একটু হেঁটেই বাইরে চলে এলাম আমরা… সামনের দিকে মুখ তুলে তাকাতে দেখি একটা ভ্যান রিক্সা দাঁড় করানো রয়েছে রাস্তার পাশে… এটা ফকিরেরই ভ্যান রিক্সা… দাদুই কিনে দিয়েছে ওকে… আগে ফকির জন খেটে বেড়াতো… আর সময় সুযোগে ওই সব বনে জঙ্গলে শিকার করতে যেত… একদিন দাদুর কাছে কষে ধমক খেয়েছিল, আর তারপর দাদু ওকে এটা কিনে দিয়ে বলেছিল, নিজের গতর খাটিয়ে নিজে রোজগার কর… ওই সব শিকার টিকার মাথা থেকে বাদ দে… দাদুর কথা অমান্য করে, বেলাডাঙায় কেউ জন্মায় নি… মাথা নিচু করে ফকিরও মেনে নিয়েছিল দাদুর কথা, আর তারপর থেকে জানি ও ভ্যানই চালায়… হয়তো কষ্টের কাজ ঠিকই, কিন্তু মাথা উঁচু করে বাঁচে সে এখন… কারুর কোন পরোয়া করার দরকার পড়ে না আর… 

আমার ব্যাগটা নিয়ে ভ্যানের উপর রেখে ফিরে তাকায় আমার দিকে… “কোই রে… চল কেনে… উদিকে সক্কলে তোর তরে অপেক্ষা করছি তো…”

আমি ওর কথায় তাড়াতাড়ি পা চালাই… গিয়ে উঠে বসি ওর ভ্যান রিক্সায়… অন্য পাশে উঠে বসে কাজল… ফকির প্যাডেলে চাপ দেয়…

বাড়ি পৌছাতে খেয়াল করলাম পরিবেশ তখন যেন কেমন থমথমে হয়ে রয়েছে… চতুর্দিকে একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস যেন চেপে বসে রয়েছে বাড়ির আবহাওয়ায়… আমি ইচ্ছা করেই, বাড়িতে ওঠার সিড়ির মুখে নিজের পায়ের জুতোটা খুলে ঢুকলাম… ভেতরে, বৈঠকখানাতেই শুইয়ে রাখা রয়েছে রঘুকাকাকে… পা থেকে বুক অবধি সাদা চাঁদরে ঢাকা… মুখটুকু বের করা… গলায় মালা দিয়ে দিয়েছে কেউ… চোখের পাতায় তুলসিপাতা বসানো… গলার কন্ঠিটা তখনও গলাতেই রয়েছে… ঘরে উপস্থিত সকলেই, বাপি, জ্যেঠু, পিমা, কাকা, জ্যেম্মা… কিন্তু কারুর মুখে কোন কথা নেই… মনে হলো আমার আমি যেন একটা প্রেত পুরীতে এসে ঢুকলাম… আমায় দেখে দাদু ধীর পায়ে এগিয়ে এলো… কাঁধে হাত রেখে নীচু স্বরে প্রশ্ন করলো, “রাস্তায় আসতে অসুবিধা হয় নি তো দিদিভাই?”

আমি মাথা নাড়ি, না বলি… তারপর দাদুর পাশ দিয়ে ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে যাই শায়িত রঘুকাকার দিকে… পায়ের কাছে দাঁড়াই মাথা নীচু করে… চুপ করে তাকিয়ে দেখতে থাকি মানুষটাকে… যে মানুষটা আমাকে সেই ছোট্ট থেকে কোলে পীঠে করে বড় করে তুললো… যে মানুষটা সর্বদা আমায় রক্ষাকর্তার মত আগলে রাখতো… যে মানুষটা আমার এক পরম আত্মীয় ছিল… আমি ধীরে হাঁটু ভেঙে বসে পড়ি রঘুকাকার পায়ের সামনে… তারপর মাথা নীচু করে ঠেঁকাই আমার মাথাটাকে রঘুকাকার পায়ের উপরে… বুকের মধ্যেটায় তখন যেন কি ভিষন তোলপাড় চলছে… কিন্তু কিছুতেই চোখের কোনে জল আসে না… কেমন যেন সব কিছু শুকিয়ে গিয়েছে রঘুকাকাকে এই ভাবে শুয়ে থাকতে দেখে… আসলে কোনদিন তো দেখিনি আমি… রঘুকাকাকে শুয়ে থাকতে… কখনো শুনিনি, রঘুকাকার কোনদিন শরীর খারাপ হয়েছে বলে… শীত গ্রীষ্ণ বর্ষা… সব সময়ই যেন রঘুকাকা একেবারে ফিট… কখনও কোনদিন কোন ব্যধি রঘুকাকাকে স্পর্শ করতে পারে নি… কিন্তু সেই মানুষটা… এই ভাবে হটাৎ… আমি মুখ তুলে ফিরিয়ে তাকাই দাদুর দিকে… আমার চোখের প্রশ্ন বুঝে এগিয়ে আসে দাদু ফের… “হটাৎ করেই… কাল রাতে… অনেক রাতও হয়েছিল… কিছু করার সুযোগই দিল না… তাও তো আমি ছিলাম এখানে… কিন্তু থেকেও কোন লাভ হল না…” বলতে বলতে গলার স্বর কেঁপে যায় দাদুর… বুঝতে পারি… দীর্ঘদিনের সঙ্গী হারানোর বেদনাটা কেমন… মুখ তুলে তাকাই দাদুর দিকে… চোখের কোলে এক ফোঁটা জল চিকচিক করছে সেখানে…

জ্যেঠু এগিয়ে এসে আমার হাতে একটা মালা দিয়ে বলে, “যা তিতাস… এটা রঘুদাকে পরিয়ে দে…”

আমি মুখ ফিরিয়ে তাকাই জ্যেঠুর দিকে… অমন মানুষটার মুখটাও কেমন বিষন্ন… আমি জ্যেঠুর হাত থেকে মালা নিয়ে উঠে দাঁড়াই… তারপর ঘুরে রঘুকাকার পাশে গিয়ে হাঁটু ভেঙে বসে পড়ি মেঝের উপরেই… যত্ন সহকারে মালাটা গলায় পরিয়ে দিই… ততক্ষনে রিগর মর্টিস ধরে যাওয়া মাথাটাকে অতি কষ্টে সামান্য তুলে গলিয়ে দিই মালাটাকে ঘাড়ের মধ্যে দিয়ে… তারপর সেটা যত্ন করে বুকের উপরে সাজিয়ে দিই টেনে দিয়ে… হাত তুলে রাখি বরফ শীতল হয়ে থাকা রঘুকাকার গালের উপরে… হাত বোলাই পরম মমতায়… আরও একজন খুব কাছের মানুষকে হারিয়ে ফেললাম আমি… বুকের মধ্যেটা মুচড়ে ওঠে আমার… 

আমার মাথায় সস্নেহের হাত রেখে জ্যেঠু বলে ওঠে, “তিতু মা… এবার ওঠ… অনেকক্ষন এই ভাবে রঘুদাকে শুইয়ে রেখেছি… এবার আমাদের যেতে হবে…”

হ্যা… এটাই বাস্তব… মানুষটা আর নেই… তাই এখন শুধু শুধু দেরি করার কোন মানেই হয় না… জানি, আমার জন্যই এই এতক্ষন আটকে থাকতে হলো রঘুকাকাকে… না হলে অনেক আগেই সে মিলিয়ে যেত আনন্দলোকের পথে… একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়াই আমি… একটু সরে দাঁড়াই পাশে… ফকিররা এগিয়ে আসে…

আমি ধরা গলায় পিমার দিকে ফিরে জিজ্ঞাসা করি, “তরু? তরুকে দেখছি না!”

পিমা কিছু বলার আগেই আমার কাঁধে একটা হাতের চাপ উপলব্ধি করে ঘুরে তাকাই পাশে… দেখি রঘুকাকার ছেলে তরুন এগিয়ে এসেছে আমার দিকে… আমি গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরি… ওর বুকে মাথা রাখি… ও আমার মাথার চুলে হাত বোলায়… যেন ওর পিতৃবিয়োগ হয় নি… আমার হয়েছে… এমন ভাবে সস্নেহে শান্তনা দিতে থাকে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে…

খালের পাড়ে, পারলৌকিক কাজ মিটতে মিটতে প্রায় বেশ রাতই হয়ে গেলো… প্রায় নয়টা সাড়ে ন’টা তো হবেই… শহরে হয়তো ন’টা-টা কোন রাতই নয়, কিন্তু গ্রামে সেটা অনেকটাই… বাড়ি ফিরে সকলে যারা যারা শ্মশানে গিয়েছিল, সকলে আগুন হাত ছুঁয়ে টুকটাক লৌকিকতা সম্পন্ন করে নিয়ে হাত মুখ ধুয়ে ফিরে যাবার তোড়জোড় করতে শুরু করে দিল… সেদিনই ফিরতে হবে সকলকে… কারন কলকাতার বাড়িতে প্রায় কেউই নেই… তাই ইচ্ছা থাকলেও কারুর থেকে যাওয়া সম্ভব নয়… দাদু যাবে না বলে দিল… রঘুকাকার বাকি কাজ শেষ করেই ফিরবে কলকাতা… জ্যেঠু, বাবা আর কাকা ফিরে আসবে, গাড়ি তো সাথে আছেই… আমায় ডেকে জ্যেঠু বলল, “তিতু মা… তুই নিশ্চয়ই ফিরে যাবি… তাহলে আমাদের সাথেই ফিরে চল… আমি তোকে তোর হোস্টেলে নামিয়ে দেবো…”

প্রথমটা আমি কোন উত্তর দিই না… চুপ করেই থাকি… দেখে দাদু এগিয়ে আসে, আমার মাথায় হাত রেখে বলে, “যা না মা, বাবাদের সাথেই ফিরে যা… আর জেদ করিস না…”

দাদুকে বলি আমি, “না… আমি এখন যাবো না… ওরা চলে যাক…”

পিমা এসে আমার হাতটা ধরে… শান্ত গলায় বলে, “দেখ তিতাস… এত জেদ ভালো নয়… যতই হোক… এই সময়টা অন্তত নিজের জেদটাকে একটু সরিয়ে রাখ সোনা…”

আমি মুখ তুলে তাকাই পিমার দিকে… চোখে চোখ রেখে ধীর গলায় বলি, “কি পেয়েছ তুমি? এই ভাবে সব কিছু মেনে নিয়ে? তাতে তুমি কি ভালো আছো?”

পিমা কেমন অবাক চোখে তাকায় আমার দিকে… বোধহয় ভাবতেও পারেনি আমার কাছ থেকে এই রকম একটা প্রশ্ন ছুটে আসতে পারে বলে… সকলের সামনে যেন ভিষন অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে পিমা… ঝটিতে একবার নিজের বাবামশায়ের দিকে তাকিয়ে নিয়ে চাপা গলায় আমায় বলে ওঠে, “ওরে, চুপ কর… এই সব কথা সবার সামনে বলতে নেই…”

সবার সামনে নিজের মনটা পিমা কোনদিনই খুলে মেলে ধরতে পারে নি… তাই নিজের ভালোবাসাও হারিয়ে ফেলেছে ওই জেদটা দেখাতে না পেরে… কিন্তু আমি তো পিমা নই… আমি, আমিই… যেটা ঠিক বলে ভেবেছি, সেটাই মেনে থাকবো… সেখান থেকে আমায় টলানো সহজ ব্যাপার নয়… আমার মন যেটা বলে, সেটাই আমি শুনি… তাতে যদি পৃথিবীর আবর্তন থেমেও যায়, তাতেও আমার কিছু করার নেই… আমি পিমার মত করেই গলার স্বর একেবারে খাদে নামিয়ে বলি, “না পিমা… আমি জানি, তুমি মেনে নিয়েছ সব কিছু নিজের জীবনের সমস্ত সুখ জলাঞ্জলি দিয়ে… মেনে নিয়ে তুমি আজ নিঃস্ব… কিন্তু আমি সেটা হতে দেবো না… যখন আমি স্থির করেই ফেলেছি, ওই বাড়ির সাথে আর কোন সম্পর্ক রাখবো না, মানে রাখব নাই… আমায় প্লিজ… এই ভাবে বোল না বারেবার…”

কখন আমার পেছনে বাপি এসে দাঁড়িয়েছে, খেয়াল করিনি… চমকে পেছন ফিরে তাকাই কাঁধের উপরে হাতের স্পর্শে… মুখ তুলে তাকিয়ে দেখি বাপি… চোখ ভর্তি এক রাশ ভালোবাসা… দেখে সত্যি বলতে আমার মনটা ভিষন হু হু করে উঠল যেন… আমি মুখ কিছু না বলে বাপিকে জড়িয়ে ধরে মুখটা গুঁজে দিই বাপির বুকের মধ্যে… আমার মাথায় হাত রাখে বাপি… মাথার চুলের মধ্যে একটা চুমু খেয়ে বলে, “ভালো আছিস তিতাস মা… শরীর ঠিক আছে তো?”

আমি উত্তর দিতে পারি না… গলাটা কেমন বুজে আসে একটা চাপা কান্নায়… দুই হাতে আরো জোরে আঁকড়ে ধরি বাপিকে… মাথা নাড়ি বুকের মধ্যে চেপে ধরে রেখে… 

“কাল সকালে যাবি?” ফের জিজ্ঞাসা করে বাপি…

এবারেও উত্তরে শুধু মাথা নেড়ে হ্যা বলি… চেষ্টা করেও কিছু বলতে পারি না মুখ দিয়ে…

“সাবধানে ফিরিস… আর বেরোবার সময় খেয়ে নিস কিছু… কেমন!” পিতৃস্নেহ মাখা কন্ঠে বলে ওঠে বাপি… উত্তরে ফের মাথা নাড়ি আমি… আরো ঘন করে জড়িয়ে ধরি বাপির শরীরটাকে… সেই ছোটবেলার মত…

দেরি সত্যিই হয়ে যাচ্ছিল… দাদুই তাড়া দেয়… তাই আর সবাই সময় না নষ্ট করে গাড়িতে উঠে চুপচাপ বেরিয়ে যায় দাদুর সাথে টুকটাক কিছু কথা বলে… দাদুও আর কথা বাড়ায় না আমার যাওয়া নিয়ে… ওরা বেরিয়ে যেতে আমায় বলে, “দিদিভাই, আমি উপরে গেলাম… তুই গিয়ে কিছু মুখে দিয়ে নে… তারপর শুয়ে পড়… অনেক ধকল গেছে তোর সারাদিন…”

আমি জিজ্ঞাসা করি, “তুমি রাতে কিছু খাবে না?”

উত্তরে মাথা নাড়ে বুড়ো… “নাহ! রে… ভালো লাগছে না… রঘুটার জন্য বড্ড মনটা ভার হয়ে আছে… গলা দিয়ে আজ আর কিছু নামবে না… তুই যা মা… জামা কাপড় বদলে কিছু মুখে দে… তোরও তো সেই আসার পর থেকে আর কিছুই জোটে নি খাওয়া দাওয়া…” বলে আর দাড়ায় না দাদু… সিঁড়ি দিয়ে ধীর পদক্ষেপে উঠে যায় উপরে… নিজের ঘরের দিকে…

আমি আরো খানিক অপেক্ষা করি… তারপর যখন বুঝি যে বাবারা বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছে ততক্ষনে, আমি ফকিরকে ডাক দিই… ও এলে আমি বলি, “ভ্যানটা নিয়ে আয়… আমায় একটু স্টেশনে ছেড়ে দিয়ে আসবি…”

শুনে অবাক হয়ে যায় ফকির… কি বলবে বোধহয় বুঝে উঠতে পারে না সে… এই এত রাতে আমি একা ফিরবো… এদিকে যে আমায় বারণ করবে, সে হিম্মতও ওর নেই… ব্যাজার মুখে গোঁজ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সে খানিক… ওকে এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাড়া লাগাই… “কি রে? বললাম… কানে গেলো না? ভ্যানটা আনতে বললাম তো!”

“কিন্তু… তুই এতো রাতে…” আমতা আমতা করে সে…

“চিন্তা করিস না… এখন বেরোলে লাস্ট ট্রেনটা পেয়ে যাবো… ওটা আমাদের এখানে দশটা ছাপ্পান্নোয় আছে… আমি জানি…” নিজের ব্যাগ গোছাতে গোছাতে বলি আমি…

“সে তো ঠিক আছি… কিন্তু কত্তা মশাই যদি জানতি পারে… তুই এতো রাতির বেলায় বেরোয়ছিস… তাইলে?” সভয়ে ফের প্রশ্ন করে ফকির…

আমি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলি, “দাদু এখন উপরে উঠে গেছে… আর রাতের মধ্যে নামবে না… কাল সকালে বলে দিস, আমি বেরিয়ে গিয়েছি রাতেই… আমার কাল একটা বিশেষ কাজ আছে কলেজে, তাই…”

তাও ওখানে দাঁড়িয়ে মাথা চুলকায় ফকির… পা যেন কিছুতেই নাড়াতে পারে না সে… মন চায়না কিছুতেই ওই অত রাতে আমায় একলা ছেড়ে দিতে… 

আমি এগিয়ে গিয়ে ওর কাঁধে হাত রাখি… “ভাবিস না… আমার সাথে বাবার লুগারটা আছে… তাই আমার কিছু হবে না…” বলতে বলতে প্যান্টের পেছনের পকেটে গোঁজা লুগারটা বের করে দেখাই ওকে…

ওটা দেখে যেন কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত হয় ফকির… মাথা ঝাঁকিয়ে বেরিয়ে যায় নিজের ভ্যান রিক্সাটা আনতে…
.
.
.
[+] 5 users Like bourses's post
Like Reply
ট্রেনে না ওঠা অবধি ফকির আমার সাথেই দাঁড়িয়ে থাকে প্ল্যাটফর্মে… শুনশান প্ল্যাটফর্ম… প্রায় কেউই নেই বলতে গেলে… আসলে ওই সময়টা কেউই আর কলকাতার দিকে যাবার নেই সম্ভবত… আমি একাই প্রায়… ট্রেন আসতে দুই চারজন নামলো, উঠলাম শুধু আমি… ওর দিকে হাত নেড়ে ভিতর পানে ঢুকে গেলাম… লোকাল ট্রেন… কামরা একেবারে খালি বলতে গেলে… সর্বসাকুল্যে তিনজন গ্রাম্য মানুষ… ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে এদিক সেদিক… আমি একবার ভেতরটা ভালো করে দেখে নিয়ে কামরার একেবারে শেষ দিকে গিয়ে পৌছলাম… ট্রেন হর্ণ বাজিয়ে ছেড়ে দিল… জানলা দিয়ে একবার দেখে নিলাম ফকিরকে… ও হাত তুলে টাটা করে দিল আমায়… ওর শরীরটা দৃষ্টির আড়ালে সরে যেতে লম্বা করে থাকা সিটের উপরে দেওয়ালে হালান দিয়ে জানলার ধার ঘেঁষে বসে পড়লাম… ভালো করে তাকালাম কামরার ভিতরে বসা লোকগুলোর দিকে… প্রত্যেকেই গ্রাম্য… একেবারেই সাধারণ তারা… দেখে কাউকেই পরিচিত বলে মনে হলো না… মোটামুটি আমি আমার গ্রামের সকলকেই চিনি… দেখা হলে কথা বলি, নিজের থেকেই ডেকে… শ্মশানেও দেখা হয়েছিল গ্রামের সকলের সাথেই… রঘুকাকার অন্তষ্টি… গ্রামের প্রায় সকলেই এসেছিল সেখানে… সকলের সাথেই নিজে গিয়ে কথা বলেছি… আর কিছুই না… খুশি হয় মানুষগুলো… আমাদের বাড়ির সাথে এদের একটা নিবিড় সম্পর্ক জড়িয়ে আছে তো… তাই… আমি এই ভাবে যেচে গিয়ে কথা বলি বলে ওদেরও ভালো লাগে… বড়কুমারী, ভালো থেকো বলে বড়রা আশির্বাদ করলো… কিন্তু এই মুহুর্তে কামরার ক’জনের কেউই চেনা ঠেকলো না আমার… মানে এরা আমাদের গ্রামের নয়… 


পর পর গোটা দুয়েক স্টেশন চলে যাবার পর দেখি এরা সকলেই উঠে দাঁড়ালো… এগিয়ে এসে ট্রেনের দরজার কাছে এসে পৌছালো… বুঝলাম এবার এরাও নেমে যাবে… পরের স্টেশনেই… ওদের মধ্যেরই একজন বৃদ্ধ আমার দিকে ফিরে বলে উঠল, “তুমি চৌধুরী বাড়ির নাতনি… তাই না?”

আমি ওনার কথায় একটু আশ্চর্যই হলাম বলা যেতে পারে… আমার গ্রামের নয়, তাও আমায় চেনে ইনি? উত্তরে স্মিত হেসে মাথা নাড়াই… হ্যা…

“বাপরে… কি কান্ডিটাই না করলা তুমি… সেদিন…” গদগদ স্বরে বলে ওঠেই প্রৌঢ়…

আমি ঠিক ধরতে পারি না ওনার কথা… ভ্রূ কুঁচকে জিজ্ঞাসা করি… “কোন দিনের কথা বলছেন বলুন তো! বুঝলাম না ঠিক…”

আমার প্রশ্নে যেন আরো উচ্ছসিত হয়ে ওঠেন প্রৌঢ়… হাত নেড়ে বলে ওঠেন, “কেনো… হেই যে সেইদিনই… সাহার পুরা দলটারে ধরাই দিলে… পুলিশে… উফফফফ… কিই রণচন্ডি মূর্তি ধরিছিলে তুমি গো…”

এবার আমিও হেসে ফেলি… মাথা নাড়ি… “ও… আরে না না… সেই রকম কিছু না… ওই আর কি…”

“সেই রকম কিছু লয় কি গো মেইয়ে… সেইদিনই তো দেকলুম… তুমার ওই চৌধুরীবাড়ির রক্ত ফুটা… উফফফ… কি সিক্কাই টা না দিলে গো…”

আমি উত্তরে আবারো স্মিত হাসি… বলি, “না জেঠু… আর কিছু না… ওটার দরকার ছিল… না হলে বড্ড জ্বালাচ্ছিল আপনাদের… ওর একটা শিক্ষা হওয়াই প্রয়োজন ছিল…”

আমার কথায় আরো হাসি চওড়া হয় প্রৌঢ়ের… “ছিলই তো… হেটাই তো করার দরকার ছিলই বটে… কিন্তু কে করবে সুনি… সকলেই তো ডরাই তো উহারে…” 

কথায় কথায় ট্রেনের গতি কমতে শুরু করে দেয়… তাতে যেন হটাৎ করেই প্রৌঢ়ের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে… উদ্গ্রিব মুখে আমায় প্রশ্ন করে, “তা মা তুমি কি একাই যাবে… সাথে কেউ নাই?”

আমি এবারেও হাসি স্মিত… “হ্যা জেঠু… আমি একাই যাবো…”

ভদ্রলোক যেন আরো চিন্তিত হয়ে ওঠেন আমার উত্তরে… “কিন্তু মা… দিন কাল তো ভালো নই এট্টুও… আর তাছাড়া তুমি একলা মাইয়া… যদি…”

আমি ওনার কথা শেষ হবার আগেই হাত তুলে আস্বস্থ করার চেষ্টা করি… বলি, “আমায় নিয়ে ভাববেন না জেঠু… আমি ঠিক থাকবো… আপনি বরং সাবধানে বাড়ি ফিরবেন… অনেক রাত হয়ে গেছে…”

তখন স্টেশনে ট্রেন ঢুকছে… মাথা নাড়েন প্রৌঢ়… তারপর হাত তুলে বলেন, “দেখো মা… সাবধানে যাইও… কি আর আমি কই!” বলে ট্রেন থামতে নেমে গেলেন… সাথে ওই দুজনও নেমে গেলো ট্রেন থেকে… ভদ্রলোক যেন কিছুতেই নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না… ট্রেনটা যতক্ষন না ছেড়ে যায়, চিন্তিত মুখ নিয়ে আমার জানলার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেন উনি… তারপর ট্রেন চলতে শুরু করলে হাত তুলে আমায় বিদায় জানালেন… আমিও হাসি মুখে হাত নাড়লাম ওনার দিকে তাকিয়ে… ইশারায় যেন বলার চেষ্টা করলাম বেশি চিন্তা না করতে…

ট্রেনএর গতি বাড়তে সামনের সিটের উপরে পাদুটোকে লম্বা করে তুলে দিয়ে শরীরটাকে আরো এলিয়ে দিয়ে বসলাম আমি… কামরায় শুধু মাত্র তখন আমি একা… তীব্র গতিতে ট্রেন ছুটে চলেছে রাতের অন্ধকার চিরে… ট্রেনের দুলুনি, সারাদিনের ক্লান্তি আর জানলা থেকে আসা দুরন্ত শীতল হাওয়ায় চোখ লেগে গিয়েছিল প্রায়… ঘোরের মধ্যেই মাঝে মধ্যে খেয়াল করেছি ট্রেনএর গতিবেগ কমার, থামার আর তারপর আবার বৃদ্ধি পাওয়ার… একের পর এক স্টেশন ফেলে এগিয়ে চলেছি কলকাতার দিকে…

হটাৎ করেই কানে কিছু মানুষের গলার স্বরে ঘুমের আলগা চটকটা কেটে যায়… দেখি কোন একটা স্টেশনে ট্রেনটা থেমেছে… আর আমার কামরাতেই দুটো লোক এসে উঠলো… আমি মুখ না ফিরিয়েই আলগা চোখের ফাঁকে দেখলাম লোকদুটোকে… একটা ঢ্যাঙা মত… গায়ের রঙ কুচকুচে কালো… রোগা পাতলা… ভাঙা চোয়াল… কামরার আলোয় চোখগুলো বেশ লালচে আর হিংস্র লাগলো আমার… নিশ্চয় নেশা করে রয়েছে… খাড়া নাক… মোটা ঠোঁট… গায়ে একটা ঢোলা জামা পড়ে… কোন শীতবস্ত্র নেই… অবস্য থাকবেই বা কেন… মাল খেয়ে থাকলে কি আর গরম লাগে? চোখের মণি সরিয়ে অপর লোকটির দিকে তাকালাম… সেটা এটার তুলনায় একটু বেঁটে… কিন্তু আগেরটার মত অত কেলে নয়… তবে বেশ সাংঘাতিক চেহারার… আমার জায়গা থেকেই বসে দেখতে পেলাম ওর একটা কানের লতি কাটা… আর সেই কাটা লতির তলা থেকে শুরু করে গলার বেশ খানিকটা পুরানো একটা কাটা দাগ, লম্বা লম্বি ভাবে নেমে গিয়েছে… দ্বিতীয় লোকটির মাথার চুল বেশ পাতলা… প্রায় টেকোই বলা যায়… এটারও চোখ ঘোলা… লালচে… মানে এটাও খেয়ে আছে ভালোই… চেহারাও আগেরটার থেকে ভারী, পেটের উপরে একটা নোয়াপাতি ভুঁড়িও রয়েছে… ওরা দুজনেই উঠে ট্রেনের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে কথা বলতে লাগলো… আমিও আবার চোখটাকে হাল্কা বন্ধ করে মাথাটাকে জানলায় হেলিয়ে বসে রইলাম চুপ করে… ইচ্ছা করেই নিজের চোখটাকে সামান্য ফাঁক করে রাখলাম এমন ভাবে, যাতে আমি দেখতে পাই ওদের, কিন্তু ওরা মনে করে যে আমি চোখ বন্ধ করেই আছি… ট্রেন আবার স্টেশন ছেড়ে গতি বাড়ালো…

দেখলাম এবার লোকদুটো ভেতর দিকে তাকালো… ওদিকটা দেখে নিয়ে এদিকে চোখ ফেরাতেই আমায় দেখতে পেয়ে যেন থমকে গেলো একটু… চাপা স্বরে নিজেদের মধ্যে কিছু একটা বলাবলি করলো… তারপর আসতে আসতে ভেতরে ঢুকে দরজার পাশের সারির সিটেই আমার দিকে মুখ ফিরিয়ে বসল দুজনে… এমন ভাবে বসল, যাতে আমি যদি উঠে যাবার চেষ্টা করি, তাহলে ওদের দুজনের মধ্যে দিয়েই আমায় যেতে হবে… দুজনেই বসে আমায় স্থির দৃষ্টিতে দেখতে লাগল… কিন্তু কিচ্ছু বলল না…

এই ভাবে প্রায় মিনিট দশেক কেটে গিয়েছে, ততক্ষনে আবার একটা স্টেশনে ট্রেন এসে থেমেছে… প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে থেমেছে, তারপর ফের চলতে শুরু করে দিয়েছে…

ট্রেনে গতি বাড়তে এবারে খেয়াল করলাম ওরা নিজেদের মধ্যে একবার চোখ চাওয়া চাওয়ি করে নিলো… তারপর দুজনেই আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো… সিটের হেলান দেওয়ার হাতলের উপরে হাত রেখে… টেকোটা ফিসফিসিয়ে কিছু লম্বুটাকে বলল… তারপর জামার নীচ থেকে একটা কাট্টা বা যাকে বলে ওয়ান শর্টার বের করে হাতে নিলো… লম্বুটাও দেখি প্যান্টের পেছন থেকে একটা লম্বা মত ছুরি বের করে নিলো হাতে… তারপর আরো একবার নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়াচাই করে নিয়ে ধীর পায়ে এগোতে লাগলো আমার দিকে… ওদের ওই ভাবে সাবধানে এগোনো দেখে বুঝতে পারি, যে ওরা ভেবেই নিয়েছে এই রকম রাতের কামরায় একা অবলা মেয়ে আমি… আর তার উপরে আমি ঘুমাচ্ছি… তাই একাবারে অতকির্তে আমার উপরে ঝাঁপাবার প্ল্যান কষেছে… আমি চুপ করেই থাকি একইভাবে… ওদের আরো এগোতে দিই… মনে মনে ভাবি, দেখিই না… মাল দুটো কি করতে চায়…

বসার প্রথম সারি ছেড়ে আমার বসে থাকা সারির সামনে এসে পড়তেই আমি চোখ খুলে ওদের দিকে তাকালাম… আমায় চোখ খুলতে দেখে থেমে গেলো ওরা… আমায় শরীরটা দুজনেই ওখানে দাঁড়িয়েই মাপতে লাগলো…

আমি আসতে করে পা দুটোকে সামনের সিট থেকে নামিয়ে রাখলাম নীচে… তারপর হাত তুলে আড়মোড়া ভাঙলাম… শরীরটাকে টান করে ধরে…

ওরা বোধহয় আমার ব্যবহারে একটু অবাকই হলো… এই ভাবে একলা একটা শহুরে মেয়ে… দেখতে তো আর আমায় সেই রকম কোন বিশেষ কিছু ডাকাবুকোও নয়… বরং যথেষ্ট কামোদ্রেককারী যৌবনে ভরা চেহারার… যেমন আঁট বুক, তেমনি মাংসল সুঠাম থাই… সে কিনা ফাঁকা কামরায় ওদের সামনে ভয়ে জড়সড় হয়ে যাবার বদলে, তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে আড়মোড়া ভাঙতে পারে, সেটা বোধহয় ওদের ঠিক মাথায় ঢোকে না…

লন্মুটা সবে এগোতে যাবে, আমি হাত তুলে থামালাম ওকে… আমায় হাত তুলতে দেখে স্পষ্ট বুঝতে পারলাম একটু আশ্চর্যই হয়েছে ওরা… আমি নিজের শরীরটাকে কোমর থেকে একবার ডানদিকে, তারপর বাঁদিকে মোচড় দিয়ে আড়মোড়া ভেঙে বললাম, “দেখো… তোমরা কে আমি জানি না… আর জানার ইচ্ছাও নেই… তবে আমার মন মেজাজ এখন সত্যিই ভিষন খারাপ হয়ে আছে… আর ভিষন টায়ার্ডও লাগছে… তাই কোন ঝামেলা পাকাবার চেষ্টা করো না… আমায় একটু একা থাকতে দাও…” ওদের ওটা মুখে বললাম ঠিকই, কিন্তু আমি জানি, ওরা ছাড়বে না আমায়, তাই আমায় কি করতে হবে, সেটা ততক্ষনে ভেবে নিয়েছি আমি… টেকোটার হাতে কাট্টাটা রয়েছে… তাই আমার টার্গেট হচ্ছে প্রথমে টেকো… ওর হাত থেকে ওটা ফেলতেই হবে… ছুরি আমি বুঝে নেবো… ওটা নিয়ে ভাবছি না আমি… আমার সটকান এর শিক্ষা কিসে লাগবে তাহলে?

ততক্ষনে টেকো ধাতস্থ হয়ে উঠেছে… খিঁচিয়ে উঠল সে… “খানকি মাগী… চিনিস আমাদের? আমাদেরই ড্যায়লগ ঝাড়ছিস? বাঁড়া এখানে, এই ট্রেনের কামরাতেই ফেলে চুদবো তোকে… তারপর বডিটাকে বাইরে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেবো… দেখি কোন বাবা এসে বাঁচায় তোকে…” তারপর লম্বুর দিকে ফিরে বলে উঠল… “এই নচে… দাঁড়িয়ে দেখছিস কি? ধর মাগীটাকে গিয়ে… দেখি ওর প্যান্টের তলায় কেমন মাখন গুদ ঢেকে রেখেছে… ধর শালীকে… আজ রেন্ডিকে চুদে খাল করবো দুজনে মিলে… কোনো হিঁয়া নেই ওকে বাঁচায় আমাদের হাত থেকে…”

টেকোর কথায় নচে নামের লম্বু এগোতে শুরু করে আমার দিকে… আমিও সিটে বসেই পায়ের পাতা বেঁকিয়ে আঙুল ছুঁইয়ে রাখি ট্রেনের মেঝেতে… অপেক্ষা করি আরো খানিকটা আমার দিকে এগিয়ে আসার… তারপর দূরত্ব বুঝে নিয়ে পায়ের আঙুলের উপরে শরীরের ভর রেখে একটা চাপ দিয়ে স্প্রিংএর মত লাফিয়ে উঠি সিট থেকে… ওই টুকু জায়গার মধ্যে দিয়েই নিজের শরীরটাকে লম্বুকে টপকে গিয়ে পড়লাম পেছনে এগিয়ে আসতে থাকা টেকোর বুকের উপরে… বাড়িয়ে রাখা পায়ের পাতা দিয়ে ঝাড়লাম একটা জোরালো লাথি ওর বুকের উপরে… লাথির ঝাপটায় টাল সামলাতে না পেরে ওর হাত থেকে ছিটকে বেরিয়ে গেলো ওয়ান শর্টারটা… ট্রেনের খোলা দরজা গলে একেবারে সোজা বাইরে… 

আমি লাফ দেওয়ার সময় আমার বাঁ পাটাকে মুড়ে নিয়েছিলাম… যার ফলে আমার ডান পায়ের লাথি খেয়ে টাল খাওয়া টেকোর মুখের উপরে গিয়ে পড়ল আমার বাঁ পায়ের হাঁটুটা… ওটার আঘাতে সাথে সাথে নাক মুখ দিয়ে গলগলিয়ে রক্ত বেরিয়ে এলো… একেবারে চিৎ হয়ে আছড়ে পড়লো ট্রেনের মেঝেতে… দুই সিটের সারির মধ্যে… আমিও ওর সাথেই পড়লাম গিয়ে ওর বুকের উপরে হাঁটু মুড়ে…

লম্বু প্রথমটায় আমার ওই রকম লাফ থেকে একটু হকচকিয়ে গিয়েছিল… কিন্তু সাথে সাথে নিজেকে সামলে ছুরিটা তুলে তেড়ে এলো আমার দিকে… আমার পেছন থেকে…

আমি ওকে আমার দিকে অগ্রসর হতে দেখে চট করে হাত বাড়িয়ে দুই দিকের সিটের সারির উপরে হাত রেখে শরীরটাকে ফের ছিলে ছেঁড়া ধনুকের মত বেঁকিয়ে একটা বাইসাইকেল কিক মারলাম… এবার আমার লাথিটা গিয়ে পড়লো লম্বুর ঠিক বাঁ কানের পাশ ঘেঁসে কাঁধের উপরে… আমার লাথি খেয়েও দেখি দমে না লম্বু… হাত তোলে আমার দিকে ছুরি চালাবে বলে… আমি ট্রেনের মেঝেতে ততক্ষনে পা রেখে দাঁড়িয়ে পড়েছি… মুহুর্তের মধ্যে হাত চালালাম… ওর চোয়াল লক্ষ্য করে… তারপরেই ওর বুকে… পরের পাঞ্চটা গিয়ে পড়ল ওর পেটে… তাইকোন্ডর পাঞ্চ… ঘুঁষি খেয়ে ওঁক ওঁক করে উঠল লম্বু… মুখ দিয়েও ওরও দেখি রক্ত বেরিয়ে এলো ঝলকে… ঐ রকম পাঞ্চের চোটে…

কিন্তু আমার একটা ভুল হয়ে গিয়েছিল এর মধ্যে… অবস্য ভুল বলাটা ঠিক হবে না… বুঝতে পারি নি আমি… আমি যখন লম্বুকে নিয়ে পড়েছি, ততক্ষনে টেকো ওই ভাবে পড়েও যে কোমর থেকে রামপুরিয়া একটা টেনে বের করে নেবে, সেটা আমার হিসাবে ছিল না… ওই ভাবেই চালিয়ে দিলো রামপুরিয়াটাকে… আমার থাই লক্ষ্য করে… ওটা একেবারে সরাসরি গেঁথে গেলো আমার থাইতে… প্যান্টের কাপড় ফুঁড়ে… 

ডাক্তারি শিক্ষায় আমি জানি যে এখন যদি আমি ওটাকে থাই থেকে টেনে তুলতে যাই, তাহলে আরো রক্তপাত হবে… তাই ওটা নিজের পায়ের উপরে গাঁথা দেখে নিয়ে গুরুত্ব দিলাম না… ওই ভাবেই ওটাকে গেঁথে থাকতে দিলাম… দেখি লম্বু আমার ঘুঁষি খেয়ে বসে পড়েছে সামনের সিটটায়, পেট চেপে ধরে… আমি ঘুরে দাঁড়ালাম টেকোর দিকে… “শুয়ারের বাচ্ছা… খানকির ছেলে… আমার সাথে লাগতে এসেছিস… আজ তোর মা ডাকিয়ে ছাড়বো বোকাচোদা… দ্যাখ শালা… তোকে আজকে যমের বাড়ি পাঠিয়েই ছাড়বো…” দাঁতে দাঁত চিপে খিঁচিয়ে উঠলাম এবার আমি…

একটা ভদ্র মেয়েকে এই ভাবে খিস্তি দিতে দেখে বমকে গেছে ততক্ষনে টেকো… আর সেই মুহুর্তটাকেই কাজে লাগালাম আমি… প্যান্টের পেছনের পকেটে রাখা লুগারটাকে বের করে এনে দিলাম ট্রিগার টেনে… টেকোর ভাগ্য ভালো চলন্ত ট্রেনের দুলুনিতা আমার হাত হেলে গেলো… গুলিটা গিয়ে লাগলো ওর ডান কাঁধের মাংসের মধ্যে… বাপরে বলে চিৎকার করে নিজের কাঁধ চেপে ধরল টেকোটা… পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি সিটের উপরে বসে লম্বুও তখন সভয়ে তাকিয়ে আমার দিকে… ওরা কেউই বোধহয় ভাবতে পারে নি যে আমার কাছেও অস্ত্র থাকতে পারে বলে…

দেখি ট্রেনএর গতি কমছে… মানে সামনেই কোন স্টেশন আসছে… গুলির আওয়াজ নিশ্চয় গার্ড বা ড্রাইভার শুনে থাকবে এতক্ষনে… ট্রেন একেবারে থামতেই দেখি ওরা কিছু আরপিএফ নিয়ে কামরাগুলো খুঁজতে খুঁজতে আসছে… আমি দরজার কাছে গিয়ে ওদের দেখতে পেয়ে চিৎকার করে ডাকলাম… লুগারের নলটাকে তখনও টেকোর দিকে তাক করে ধরে রেখে… লম্বু যে ওইখান থেকে চট করে বেরোতে পারবে না সেটা জানি… কিন্তু টেকোর পালাবার চান্স আছে, তাই সেটা যাতে না হয়, তার জন্য ওর দিকেই তাক করে রাখলাম আমি…

আরপিএফ এসে ওদের দেখে হতবাক… “আরে… এই দুটো তো চোলাইয়ের স্মাগলার… আমরা তো অনেকদিন ধরেই এদের খুজছিলাম…” তারপর আমার দিকে ফিরে জিজ্ঞাসা করলো, “আপনি? আপনি কে? আর এই লাস্ট ট্রেনএ যাচ্ছেনই বা কোথায়?” 

আমি তখন ওনাদের ডিটেলসএ সব খুলে বললাম… আমি কোথা থেকে আসছি, মাঝে ওরা কোথা থেকে উঠেছে… কি কি হয়েছে… সব… ওরা দেখি আমার কাছে সে সব শুনে হাঁ করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে… বোধহয় হিসাব মেলাতে পারছিল না… এই রকম একটা সুন্দরী যুবতী মেয়ে… এই রকম আধুনিক পোশাক আশাক… এই রকম আগুন ঝরানো যৌবন তরঙ্গে ভরা চেহারা… আর তার হাতে বন্দুক… ধরেছে দুটো ফেরারী আসামী…

আমি ওনাদের মধ্যে একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম, এখানে কোন হসপিটাল আছে? কারণ আমার পায়ের একটা ছুরি বিঁধে আছে, ওটা বের করতে হবে…

আমার কথায় ওনাদের নজর পড়ে পায়ের দিকে… তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠে, “ওহ হো… কি অবস্থা হয়েছে আপনার পায়ের… বের করে নেন নি কেন?” বলে তাড়াতাড়ি বের করে নেবার জন্য এগোতে যায় সে…

আমি বাধা দিয়ে বলি, “না না… এই ভাবে এখন বের করলে আরো ব্লিডিং হবে… তার থেকে যদি এখানে হসপিটাল থাকে তাহলে বলুন, সেখানেই যাই…”

শুনে ওনাদের অফিসারই হবে বোধহয় ভদ্রলোক… বললেন, “কিন্তু এই ভাবে থাকলে তো সেপটিক হয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি… কিন্তু এখান থেকে এখনও হাওড়া ঢুকতে প্রায় ঘন্টা খানেক… এই এতক্ষন কি এই ভাবে থাকতে পারবেন আপনি?”

[+] 5 users Like bourses's post
Like Reply
আমি মৃদু হাঁসি ওনার কথায়… উনি আসলে আমার চরিত্র ঠিক ঠাওর করে উঠতে পারেন নি… পারাটা সম্ভবও নয়… দেখে তো নিশ্চয় বড়লোকের আদুরে দুলালি ভেবে নিয়েছেন… আধুনিক পোষাক… চেহারাও সেই রকম… ভাববেন কি করে, এই মেয়ের ভেতরেই এতটা আগুন থাকতে পারে বলে… সে যাই হোক… আমি ওনাকে আস্বস্থ করার চেষ্টা করি… বলি, “দেখুন আমি মেডিকাল স্টুডেন্ট… আমি জানি কতক্ষনে কি হলে সেপ্টিসিজম ধরতে পারে… আপনি চিন্তা করবেন না শুধু শুধু… আমি এই ভাবেই চালিয়ে নেব… আশা করি হাওড়াতে পৌছানোর পর একটু হসপিটালে নিয়ে যেতে পারবেন আমায়…”


তাড়াতাড়ি জিভ কাটেন অফিসার… “ছি ছি… এটা তো আমাদের ডিউটি… তবে এবার আর আপনাকে একা ট্র্যাভেল করতে হবে না… বাকি রাস্তাটা কামরায় আমি নিজে থাকবো, সাথে আরো বেশ কিছু সিপাইও যাবে…” তারপর একবার মেঝেতে পড়ে থাকা টেকোটার দিকে দেখে নিয়ে বলল, “আর তাছাড়া এদেরও একবার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে… বেশ ভালোই ব্লিড করছে দেখছি… ভাগ্য ভালো এর যে গুলিটা কাঁধে লেগেছে… বুকে লাগলে তো এতক্ষনে আমাদের অনেকটাই কাজ হাল্কা হয়ে যেত…” বলতে বলতে হটাৎ করে কি মনে হতে আমার দিকে মুখ তুলে উনি বললেন, “কিন্তু আপনার হাতের ফায়ার আর্মসটা তো আমায় সিজ করতে হবে… আশা করি এটার লাইসেন্স আছে আপনার…”

ওই আগের জাকির ভাইয়ের ঘটনার পরেই কাকা আমার নামে লাইসেন্সটা ট্রান্সফার করিয়েই দিয়েছিল… তাই এই ব্যাপারটায় আমি নিশ্চিন্তই ছিলাম… ওনার কথায় ঘাড় নাড়ি… “হ্যা… এটা আমার নামেই রিনিউড হয়েছে… সে নিয়ে কোন চিন্তা নেই…”

হাত ওল্টান অফিসার… “বেশ… তাহলে তো আর কোন চিন্তাই নেই… আর তাছাড়া আপনি গুলিটা চালিয়েছেন সেলফ ডিফেন্সের জন্য… তাই এতে আপনার দিকে কোন প্রবলেম ক্রিয়েটেড হবে না…” তারপর থেমে বললেন, “কিন্তু এটা এই মুহুর্তের জন্য আমি সিজ করবো… ওটা পরে আপনি পেয়ে যাবেন…”

শুনে মাথা হেলাই আমি… লুগারটা ওনার হাতে তুলে দিয়ে বলি, “এই তো নিন… আপনি আপনার ডিউটি করছেন, তাতে আমার কিছু বলার নেই… শুধু একবার আমার কাকাকে যদি একটা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, খুব ভালো হয়…”

অফিসারের ভ্রূ কোঁচকায় আমার কথায়… “কাকা? কে আপনার কাকা?”

আমি তখন কাকার পরিচয় দিই… তাতে উনি দেখি একটু বিস্মিত হন… “সেকি? আপনি চন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর ভাইঝি? আগে বলবেন তো…”

আমি ওনার কথায় এবার সত্যিই হেসে ফেলি খিকখিকিয়ে… কোন রকমে হাসি থামতে বলি, “আমি কি সুযোগ পেয়েছি কিছু বলার, সেই তখন থেকে?”

আমার কথায় অফিসার এবার নিজেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন… “হ্যা… সেটাও অবস্য ঠিক… সেই থেকে যা গেলো আপনার উপর দিয়ে… ওকে… ওকে… আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন… আমি মেসেজ রিলে করিয়ে দিচ্ছি হেড কোয়ার্টারে… আমাদের ট্রেন ওখানে পৌছবার সাথে সাথেই যাতে আপনার বাড়ির লোক এসে যায়…”

আমি তাড়াতাড়ি হাত তুলে থামাই ওনাকে… “না না… ওই ভুলটা একদম করবেন না… আপনি আলাদা করে শুধু মাত্র কাকাকে খবরটা দেবার ব্যবস্থা করুন… আমি চাইনা কোন মতেই আমার বাড়ির বাকিরা কেউ এই ব্যাপারটার সম্বন্ধ জানুক… তাহলে আর রক্ষে থাকবে না আমার… বোঝেনই তো…”

মাথা নাড়েন অফিসার, আমার কথায়… হেসে বলেন, বুঝতে পারছি আপনার পরিস্থিতি… কিন্তু আপনার কাকা খবর পেলে, বাড়ির বাকিরা আসবেন কি না জানি না… তবে আমার মনে হয় না বাড়ির লোকের কাছ থেকে এটা লুকোতে পারবেন বলে…” বলে নিজেই হা হা করে হেসে ওঠেন… আমি ও যোগ দিই ওনার হাসিতে…

হাওড়ায় পৌছাতে দেখি কাকা হাজির… আর শুধু কি কাকা? সেই সাথে আমার জাঠতুতো ভাই, বাপিও এসে গিয়েছে স্টেশনে… আমায় দেখেই তো তড়িঘড়ি এগিয়ে এলো ওরা… আমি হাত তুলে ওদেরকে আস্বস্থ করার চেষ্টা করলাম ঠিকই কিন্তু সেকি আর ওরা মানে? ওখানেই ওদের হম্বিতম্বি শুরু হয়ে গেলো… বললাম আমাদের সাথে আসতে… সেই যখন এলিই তখন আমাদের সাথে না আসার কি ছিল? তোকে নিয়ে আর পারা যায় না… এক একটা কান্ড করে বসিস… আমি তখন ওদের কথার উত্তর দেবো কি, পায়ে ততক্ষনে বেশ যন্ত্রনা শুরু হয়ে গিয়েছে… সেটা বোধহয় সাথে থাকা অফিসার আমার মুখ দেখেই বুঝতে পেরেছিলেন… উনিই বাপিদের বললেন, “দেখুন… উনি যা করেছেন, তা একেবারে অসাধ্য সাধন… ওনার সহযোগিতাতেই এই এত বড় একটা স্মাগলার আমরা ধরতে পেরেছি… কিন্তু আমার মনে হয় এখন এই সময় ওনাকে না বকে ওনার যাতে ট্রেটমেন্টটা তাড়াতাড়ি হয়, তার ব্যবস্থা করা উচিত…”

তাতে কাকা দেখি বাপিকে বলল, “দাদা, এখন তিতাসকে কিছু বলো না… আমি দেখছি ব্যাপারটা…” তারপর অফিসারকে বলল, “ওকে এখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হসপিটাল শিফট করা উচিত…”

কাকার কথায় অফিসার মাথা নাড়েন… “আমিও সেটাই বলতে চাইছিলাম স্যর…” তারপর পাশে থাকা ওনার একজন সিপাইকে ডেকে একটা মাল বওয়াবার ট্রলি আনতে বললেন…

মাল বওয়াবার ট্রলি শুনে আমি নাক কুঁচকাই… তাতে হেসে ফেলেন উনি… বলেন, “কি করবো ম্যাডাম… এখন এটাই ভরসা… আপনার যা পায়ের অবস্থা, তাতে আপনাকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না… আর হুইল চেয়ার আনতে টাইম লাগবে… তার থেকে হাতের কাছে যখন এটা আছে, তখন এটাতেই কাজ চালিয়ে নিই না হয়…”

আমি শুনে কাঁধ ঝাঁকাই… অগত্যা… এখন যে সত্যিই কিছু করার নেই, সেটা বুঝতে পারি… একটা কুলি ওর সেই মালের ট্রলি নিয়ে এলে উঠে বসি ওটার উপরেই অতি কষ্টে… পা’টাকে সাবধানে সামনে দিকে সোজা করে রেখে… বাকিরা আমায় নিয়ে দৌড় দেয় রেল হসপিটালের দিকে… আমি একবার অফিসারের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করি, “ওই লোক দুটো?”

অফিসার বলেন, “ওদের নিয়ে ভাববেন না ম্যাডাম… ওদের চালান করে দেওয়া হয়েছে এতক্ষনে… অনেক ভুগিয়েছে এরা… সহজে এরা আর পার পাবে না… অনেক কেস ঝুলে আছে ওদের উপরে…”

পাশ থেকে বাপি ধমকে ওঠে, “এখন কি তোর ওদের কথা না শুনলেই নয়… নিজের পায়ের যা অবস্থা করেছিস… আগে চল, এটাকে ঠিক করি… কতটা কি হয়ে আছে কে জানে…” 

উত্তরে কিছু বলি না আমি আর… জানি, বুঝতেই পারছি, বাপির মনের উদবেগটা… এখানে চুপ করে থাকাই শ্রেয় বুঝতে পারি…

হসপিটালে ছুরিটা বের করে ভালো করে ড্রেসিং করে দিল আমায়… বলেছিল অ্যাডমিট করার জন্য… কিন্তু আমি বেঁকে বসি… নিজের পরিচয় দিয়ে বলি, “আমায় ড্রেসিং করে ছেড়ে দিন, আমি কলেজে গিয়ে ভালো করে দেখিয়ে নেবো…”

আমায় মেডিকাল স্টুডেন্ট জেনে আর জোর করেন না ইমার্জেন্সির ডাক্তার… ছেড়ে দেন ফার্স্ট এড করে দিয়ে…

হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসার পর বাপি বলে আর তোর কোন কথা শুনবো না, এবার আমাদের সাথে সোজা বাড়ি যাবি…

কিন্তু আমার সেই জেদ… না মানে না… আমি বলি, “আমায় নিয়ে ভেবো না… আমি ঠিক চলে যেতে পারবো… কালকে আমার একটা ভিষন ইম্পর্টেন্ট ক্লাস আছে… আমাকে অ্যাটেন্ড করতেই হবে…” তারপর ভাইকে বলি, “তুই আমায় একটা শুধু ট্যাক্সি ধরিয়ে দে স্ট্যান্ড থেকে… আমি চলে যেতে পারবো…”

এবার বাপি সত্যিই রেগে যায় আমার উপরে… গম্ভীর গলায় ভাইকে বলে, “এই… তুই গাড়িটা এখানে আনতে বল… তিতাস গাড়িতেই যাবে…” তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলে, “ঠিক আছে… তোকে বাড়ি যেতে হবে না… আমরা তোকে হোস্টেলেই নামিয়ে দিয়ে আসছি…”

বাপির কথার উপরে আর জেদ করি না… চুপ করে মেনে নিই… গাড়ি আসতে ওরা সেই রাতেই আমায় হোস্টেলে নামিয়ে দিয়ে আসে… 
.
.
.
“এটা কে? মেয়ে? নাকি অন্য কিছু?” ডায়রিটা বন্ধ করে চুপ করে বসে ভাবে খানিক পর্ণা… “সত্যি বলতে, আমি হলে তো যে কি করতাম ওই রকম সিচুয়েশনে পড়ে! উফফফফফফ… ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে এখনও আমার… নাহ! ওকে বলতেই হবে… একবার অন্তত কান্তার সাথে কথা বলিয়ে দিতে আমায়… দেখা হবে কি না কোনদিন জানি না… তবে কথা বলতে তো আর দোষ নেই… আমি বলবো… ঠিক কথা হলে… গড় করি তোমায় আমি… এযে একেবারে রণচন্ডী… তবে এটাও ঠিক… মেয়েদের এমনই হওয়া উচিত… না হলে এই পুরুষশাষিত সমাজে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা যায় না… একদম ঠিক করে কান্তা… কাউকে পাত্তা না দিয়ে… কেনই বা দেবে? মেয়েরাই বা কিসে কম?”

ভাবতে ভাবতেই উঠে পড়ে বিছানা ছেড়ে পর্ণা… ডায়রিটা আলমারির মধ্যে ঢুকিয়ে রেখে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে…

ক্রমশ…

[+] 8 users Like bourses's post
Like Reply
গল্পের নাম   " ....... যৌনাত্মক জীবনশৈলী "


এতো মনে হচ্ছে জেমস হেডলি চেজের একটা বিশাল ক্রাইম থ্রিলার এর মতো গড়াচ্ছে ব্যাপারগুলো !!

অসাধারণ , ফাটাফাটি ... কাঁপাকাঁপি চলছে ... 


yourock clps clps Heart Namaskar
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
কি যে বলা উচিত বুঝতেই পারছিনা। একদিকে একজনকে চিরতরে হারানোর দুঃখ আরেকদিকে এই ভয়ানক কান্ড! এই মেয়ে যে কি জিনিস তা তো আন্দাজ করতেই পারি। শরীরে জমিদার পরিবার ও বিদেশি স্বাধীনচেতা মানুসিকতা দুই গুনের রক্ত বইছে। তার ওপর রাগী জেদি সুন্দরী কামুক দুস্টু মিষ্টি ছেলেমানুষি আবার প্রাপ্তবয়স্ক যাৰ রূপের সাক্ষী নিজেই সাথে আমরাও। সব মিলে দুর্ধর্ষ পর্ব।

কিন্তু একটা কথা বলতে চাইবো সেটা মোটেও গল্পের গুন বা আসন্ন পরিস্থিতি নিয়ে নিয়ে নয়। আমি বলতে চাই এইশেষের দুটো পর্ব তুমি কিন্তু অন্য দিনের জন্য রেখে দিতে পারতে। এতে দুটো লাভ হতো।

১) তোমার হাতে অলরেডি দুটো আপডেট আগের থেকেই থাকতো তাই হাতে সময়ও থাকতো আসন্ন পর্ব গুলো আরাম করে লেখার কাজের ফাঁকে।

২) এই প্রথম পর্ব দুটোর মধ্যে যে অদ্ভুত ব্যাখাহীন অনুভূতি জাগরণকারী ব্যাপারটা ছিল সেটার রেশ নিয়েই যদি আজকের পর্ব শেষ হতো তাহলে যেন ভালো হতো।

এটা সম্পূর্ণ আমার অভিমত। আমার সাথে একমত কেউ নাই হতে পারে। পর্ব ও লেখনীর গুন নিয়ে লেখককে এটাই বলবো - লা জবাব!♥️

লাই রেপু সাথে আবারো অপেক্ষা অজানা চন্দ্রকে আরও জানার।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(11-04-2022, 04:00 PM)bourses Wrote: আমি মৃদু হাঁসি ওনার কথায়… উনি আসলে আমার চরিত্র ঠিক ঠাওর করে উঠতে পারেন নি… পারাটা সম্ভবও নয়… দেখে তো নিশ্চয় বড়লোকের আদুরে দুলালি ভেবে নিয়েছেন… আধুনিক পোষাক… চেহারাও সেই রকম… ভাববেন কি করে, এই মেয়ের ভেতরেই এতটা আগুন থাকতে পারে বলে… সে যাই হোক… আমি ওনাকে আস্বস্থ করার চেষ্টা করি… বলি, “দেখুন আমি মেডিকাল স্টুডেন্ট… আমি জানি কতক্ষনে কি হলে সেপ্টিসিজম ধরতে পারে… আপনি চিন্তা করবেন না শুধু শুধু… আমি এই ভাবেই চালিয়ে নেব… আশা করি হাওড়াতে পৌছানোর পর একটু হসপিটালে নিয়ে যেতে পারবেন আমায়…”


তাড়াতাড়ি জিভ কাটেন অফিসার… “ছি ছি… এটা তো আমাদের ডিউটি… তবে এবার আর আপনাকে একা ট্র্যাভেল করতে হবে না… বাকি রাস্তাটা কামরায় আমি নিজে থাকবো, সাথে আরো বেশ কিছু সিপাইও যাবে…” তারপর একবার মেঝেতে পড়ে থাকা টেকোটার দিকে দেখে নিয়ে বলল, “আর তাছাড়া এদেরও একবার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে… বেশ ভালোই ব্লিড করছে দেখছি… ভাগ্য ভালো এর যে গুলিটা কাঁধে লেগেছে… বুকে লাগলে তো এতক্ষনে আমাদের অনেকটাই কাজ হাল্কা হয়ে যেত…” বলতে বলতে হটাৎ করে কি মনে হতে আমার দিকে মুখ তুলে উনি বললেন, “কিন্তু আপনার হাতের ফায়ার আর্মসটা তো আমায় সিজ করতে হবে… আশা করি এটার লাইসেন্স আছে আপনার…”

ওই আগের জাকির ভাইয়ের ঘটনার পরেই কাকা আমার নামে লাইসেন্সটা ট্রান্সফার করিয়েই দিয়েছিল… তাই এই ব্যাপারটায় আমি নিশ্চিন্তই ছিলাম… ওনার কথায় ঘাড় নাড়ি… “হ্যা… এটা আমার নামেই রিনিউড হয়েছে… সে নিয়ে কোন চিন্তা নেই…”

হাত ওল্টান অফিসার… “বেশ… তাহলে তো আর কোন চিন্তাই নেই… আর তাছাড়া আপনি গুলিটা চালিয়েছেন সেলফ ডিফেন্সের জন্য… তাই এতে আপনার দিকে কোন প্রবলেম ক্রিয়েটেড হবে না…” তারপর থেমে বললেন, “কিন্তু এটা এই মুহুর্তের জন্য আমি সিজ করবো… ওটা পরে আপনি পেয়ে যাবেন…”

শুনে মাথা হেলাই আমি… লুগারটা ওনার হাতে তুলে দিয়ে বলি, “এই তো নিন… আপনি আপনার ডিউটি করছেন, তাতে আমার কিছু বলার নেই… শুধু একবার আমার কাকাকে যদি একটা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, খুব ভালো হয়…”

অফিসারের ভ্রূ কোঁচকায় আমার কথায়… “কাকা? কে আপনার কাকা?”

আমি তখন কাকার পরিচয় দিই… তাতে উনি দেখি একটু বিস্মিত হন… “সেকি? আপনি চন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর ভাইঝি? আগে বলবেন তো…”

আমি ওনার কথায় এবার সত্যিই হেসে ফেলি খিকখিকিয়ে… কোন রকমে হাসি থামতে বলি, “আমি কি সুযোগ পেয়েছি কিছু বলার, সেই তখন থেকে?”

আমার কথায় অফিসার এবার নিজেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন… “হ্যা… সেটাও অবস্য ঠিক… সেই থেকে যা গেলো আপনার উপর দিয়ে… ওকে… ওকে… আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন… আমি মেসেজ রিলে করিয়ে দিচ্ছি হেড কোয়ার্টারে… আমাদের ট্রেন ওখানে পৌছবার সাথে সাথেই যাতে আপনার বাড়ির লোক এসে যায়…”

আমি তাড়াতাড়ি হাত তুলে থামাই ওনাকে… “না না… ওই ভুলটা একদম করবেন না… আপনি আলাদা করে শুধু মাত্র কাকাকে খবরটা দেবার ব্যবস্থা করুন… আমি চাইনা কোন মতেই আমার বাড়ির বাকিরা কেউ এই ব্যাপারটার সম্বন্ধ জানুক… তাহলে আর রক্ষে থাকবে না আমার… বোঝেনই তো…”

মাথা নাড়েন অফিসার, আমার কথায়… হেসে বলেন, বুঝতে পারছি আপনার পরিস্থিতি… কিন্তু আপনার কাকা খবর পেলে, বাড়ির বাকিরা আসবেন কি না জানি না… তবে আমার মনে হয় না বাড়ির লোকের কাছ থেকে এটা লুকোতে পারবেন বলে…” বলে নিজেই হা হা করে হেসে ওঠেন… আমি ও যোগ দিই ওনার হাসিতে…

হাওড়ায় পৌছাতে দেখি কাকা হাজির… আর শুধু কি কাকা? সেই সাথে আমার জাঠতুতো ভাই, বাপিও এসে গিয়েছে স্টেশনে… আমায় দেখেই তো তড়িঘড়ি এগিয়ে এলো ওরা… আমি হাত তুলে ওদেরকে আস্বস্থ করার চেষ্টা করলাম ঠিকই কিন্তু সেকি আর ওরা মানে? ওখানেই ওদের হম্বিতম্বি শুরু হয়ে গেলো… বললাম আমাদের সাথে আসতে… সেই যখন এলিই তখন আমাদের সাথে না আসার কি ছিল? তোকে নিয়ে আর পারা যায় না… এক একটা কান্ড করে বসিস… আমি তখন ওদের কথার উত্তর দেবো কি, পায়ে ততক্ষনে বেশ যন্ত্রনা শুরু হয়ে গিয়েছে… সেটা বোধহয় সাথে থাকা অফিসার আমার মুখ দেখেই বুঝতে পেরেছিলেন… উনিই বাপিদের বললেন, “দেখুন… উনি যা করেছেন, তা একেবারে অসাধ্য সাধন… ওনার সহযোগিতাতেই এই এত বড় একটা স্মাগলার আমরা ধরতে পেরেছি… কিন্তু আমার মনে হয় এখন এই সময় ওনাকে না বকে ওনার যাতে ট্রেটমেন্টটা তাড়াতাড়ি হয়, তার ব্যবস্থা করা উচিত…”

তাতে কাকা দেখি বাপিকে বলল, “দাদা, এখন তিতাসকে কিছু বলো না… আমি দেখছি ব্যাপারটা…” তারপর অফিসারকে বলল, “ওকে এখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হসপিটাল শিফট করা উচিত…”

কাকার কথায় অফিসার মাথা নাড়েন… “আমিও সেটাই বলতে চাইছিলাম স্যর…” তারপর পাশে থাকা ওনার একজন সিপাইকে ডেকে একটা মাল বওয়াবার ট্রলি আনতে বললেন…

মাল বওয়াবার ট্রলি শুনে আমি নাক কুঁচকাই… তাতে হেসে ফেলেন উনি… বলেন, “কি করবো ম্যাডাম… এখন এটাই ভরসা… আপনার যা পায়ের অবস্থা, তাতে আপনাকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না… আর হুইল চেয়ার আনতে টাইম লাগবে… তার থেকে হাতের কাছে যখন এটা আছে, তখন এটাতেই কাজ চালিয়ে নিই না হয়…”

আমি শুনে কাঁধ ঝাঁকাই… অগত্যা… এখন যে সত্যিই কিছু করার নেই, সেটা বুঝতে পারি… একটা কুলি ওর সেই মালের ট্রলি নিয়ে এলে উঠে বসি ওটার উপরেই অতি কষ্টে… পা’টাকে সাবধানে সামনে দিকে সোজা করে রেখে… বাকিরা আমায় নিয়ে দৌড় দেয় রেল হসপিটালের দিকে… আমি একবার অফিসারের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করি, “ওই লোক দুটো?”

অফিসার বলেন, “ওদের নিয়ে ভাববেন না ম্যাডাম… ওদের চালান করে দেওয়া হয়েছে এতক্ষনে… অনেক ভুগিয়েছে এরা… সহজে এরা আর পার পাবে না… অনেক কেস ঝুলে আছে ওদের উপরে…”

পাশ থেকে বাপি ধমকে ওঠে, “এখন কি তোর ওদের কথা না শুনলেই নয়… নিজের পায়ের যা অবস্থা করেছিস… আগে চল, এটাকে ঠিক করি… কতটা কি হয়ে আছে কে জানে…” 

উত্তরে কিছু বলি না আমি আর… জানি, বুঝতেই পারছি, বাপির মনের উদবেগটা… এখানে চুপ করে থাকাই শ্রেয় বুঝতে পারি…

হসপিটালে ছুরিটা বের করে ভালো করে ড্রেসিং করে দিল আমায়… বলেছিল অ্যাডমিট করার জন্য… কিন্তু আমি বেঁকে বসি… নিজের পরিচয় দিয়ে বলি, “আমায় ড্রেসিং করে ছেড়ে দিন, আমি কলেজে গিয়ে ভালো করে দেখিয়ে নেবো…”

আমায় মেডিকাল স্টুডেন্ট জেনে আর জোর করেন না ইমার্জেন্সির ডাক্তার… ছেড়ে দেন ফার্স্ট এড করে দিয়ে…

হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসার পর বাপি বলে আর তোর কোন কথা শুনবো না, এবার আমাদের সাথে সোজা বাড়ি যাবি…

কিন্তু আমার সেই জেদ… না মানে না… আমি বলি, “আমায় নিয়ে ভেবো না… আমি ঠিক চলে যেতে পারবো… কালকে আমার একটা ভিষন ইম্পর্টেন্ট ক্লাস আছে… আমাকে অ্যাটেন্ড করতেই হবে…” তারপর ভাইকে বলি, “তুই আমায় একটা শুধু ট্যাক্সি ধরিয়ে দে স্ট্যান্ড থেকে… আমি চলে যেতে পারবো…”

এবার বাপি সত্যিই রেগে যায় আমার উপরে… গম্ভীর গলায় ভাইকে বলে, “এই… তুই গাড়িটা এখানে আনতে বল… তিতাস গাড়িতেই যাবে…” তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলে, “ঠিক আছে… তোকে বাড়ি যেতে হবে না… আমরা তোকে হোস্টেলেই নামিয়ে দিয়ে আসছি…”

বাপির কথার উপরে আর জেদ করি না… চুপ করে মেনে নিই… গাড়ি আসতে ওরা সেই রাতেই আমায় হোস্টেলে নামিয়ে দিয়ে আসে… 
.
.
.
“এটা কে? মেয়ে? নাকি অন্য কিছু?” ডায়রিটা বন্ধ করে চুপ করে বসে ভাবে খানিক পর্ণা… “সত্যি বলতে, আমি হলে তো যে কি করতাম ওই রকম সিচুয়েশনে পড়ে! উফফফফফফ… ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে এখনও আমার… নাহ! ওকে বলতেই হবে… একবার অন্তত কান্তার সাথে কথা বলিয়ে দিতে আমায়… দেখা হবে কি না কোনদিন জানি না… তবে কথা বলতে তো আর দোষ নেই… আমি বলবো… ঠিক কথা হলে… গড় করি তোমায় আমি… এযে একেবারে রণচন্ডী… তবে এটাও ঠিক… মেয়েদের এমনই হওয়া উচিত… না হলে এই পুরুষশাষিত সমাজে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা যায় না… একদম ঠিক করে কান্তা… কাউকে পাত্তা না দিয়ে… কেনই বা দেবে? মেয়েরাই বা কিসে কম?”

ভাবতে ভাবতেই উঠে পড়ে বিছানা ছেড়ে পর্ণা… ডায়রিটা আলমারির মধ্যে ঢুকিয়ে রেখে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে…

ক্রমশ…



বাহঃ অসাধারণ একটা আপডেট,,,  খুব ভালো লাগলো,,, প্রথমে বলতে গেলে আপনজন এর মৃত্যু,, সেই মৃত্যুর শোক,,,তার উপর আবার সেই রাতেই একটা ভয়ানক এডভেঞ্চার,,, ফিল্মের নায়কের মতো একশন,,,  আবার যখম,,,,  অসাধারণ,,,  খুব চমৎকার,,,  তবে সেক্স টা মিস করছি চন্দ্রকান্তার,,,,  ?,,, তবে উপন্যাস পড়ে খুবই ভালো লাগছে,,, সত্যি দাদা অসাধারণ লেখক আপনি,,, চমৎকার গল্পকার,,,  আপনি প্লিজ সব সময় লিখুন,,, সবার মন জয় করবেন ???,,, ভালো থাকবেন।
[+] 1 user Likes Shoumen's post
Like Reply
Darun Update
[+] 1 user Likes chndnds's post
Like Reply
অনেক দিন বাদে এই ফোরামে এলাম আপনার এই উপন্যাস টা পড়তে। পর পর বেশ কয়েক টা আপডেট পড়লাম। পড়তে পড়তে যে কোথায় হারিয়ে ফেললাম নিজেকে সেটা ই ভাবছি। কি অনবদ্য লেখা। মশাই আপনি তো শিডনি সেলডন এর বাঙ্গালী প্রতিকৃতি। যেমন যৌনতা তে সাবলীল তেমন ই থ্রিলার এ। আর এ্যাকশন দৃশ্য গুলো পড়তে পড়তে মনে হচ্ছে হলিউড স্ক্রিপ্ট।
এর পর বলি আপনার চন্দ্রকান্তার কথা। উফফ এতো মেয়ে নয় পুরো আগুনের গোলা। আমি গর্বিতা যে আমিও নারী আর আমার এখনের আর্দশ আপনার চন্দ্রকান্তা।
[+] 1 user Likes জীবনের জলছবি's post
Like Reply
(23-03-2022, 11:54 AM)জীবনের জলছবি Wrote: আপনি  হুডিনি হয়ে ঐন্দ্রজালিক মোহাবিষ্ট  করে  ফেলেছেন সমগ্র পাঠকবর্গ কে।
আমি কেন জানি না নিজের মধ্যে এক মিশ্র অনুভূতি র মোহে আবিষ্ট।   নিজের জীবনের  ফেলে আসা বোধ এর সাথে মিশিয়ে ফেলছি।
মনে পড়ে  যাচ্ছে  
William Wordsworth এর একটা লাইন
And miles to go before I sleep,
And miles to go before  I sleep.

প্রেম ও দেহ র ঐহিক থেকে শৈল্পিক রুপান্তর  যে এমন সাবলীল ভাষা তে উপস্থাপন করা সম্ভব সেটা এই গল্প টা না পড়লে অনুভব করতে পারতাম না।
শব্দের এমন ছন্দবন্ধ মায়াময়তা যে সেটা কখন লেখনী র গন্ডি পেরিয়ে স্বপ্নিল মনোচিত্র তে পরিনত হয়েছে নিজেই বুঝতে পারি নি।
আর চন্দ্রকান্তা র এই রুপ টা তে সত্যি ই মনে হচ্ছে মহাকাল এর মহাকালী, রুদ্রের রুদ্রাণী।

(14-04-2022, 11:40 AM)জীবনের জলছবি Wrote: অনেক দিন বাদে এই ফোরামে এলাম আপনার এই উপন্যাস টা পড়তে। পর পর বেশ কয়েক টা আপডেট পড়লাম। পড়তে পড়তে যে কোথায় হারিয়ে ফেললাম নিজেকে সেটা ই ভাবছি। কি অনবদ্য লেখা। মশাই আপনি তো শিডনি সেলডন এর বাঙ্গালী প্রতিকৃতি। যেমন যৌনতা তে সাবলীল  তেমন ই থ্রিলার এ। আর এ্যাকশন দৃশ্য গুলো পড়তে পড়তে মনে হচ্ছে হলিউড স্ক্রিপ্ট।
এর পর বলি আপনার চন্দ্রকান্তার কথা। উফফ এতো মেয়ে নয় পুরো আগুনের গোলা। আমি গর্বিতা যে আমিও নারী আর আমার এখনের আর্দশ আপনার চন্দ্রকান্তা।

না না... ওই সব হুডনি টুডনি কিছু না... আমি শুধু মাত্র চেষ্টা করি... আপনাদের মত পাঠক পাঠিকাদের সামনে আমার সামান্য চেষ্টাটুকু তুলে ধরতে হাজার কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে... যতটা পারি... 

এখানে অনেকেই চন্দ্রকান্তার চারিত্রিক বৈশিষ্টগুলি দেখে চমৎকৃত হয়েছে, তার সাহস, ক্রোধ, মমতা... আসলে এগুলি হয়তো সমস্ত নারী সত্তারই প্রকাশ... নারীতো এমনই!... তার একই অঙ্গে এই রকমই তো নানান রঙের বৈশিষ্টের বহিপ্রকাশ দেখা যায়... কখন এক বা কখনও অনেক... আমি চেষ্টা করেছি আমার উপন্যাসের নায়িকাকে সমস্ত রূপ রসে রাঙিয়ে তুলতে... যাতে আপনারই মত অপর এক নারী তাকে দেখে নিজের ভিতরের সত্তাটাকে আবিষ্কার করতে পারে... 

এখানে আমার যতটা না কৃতিত্ব... তার থেকে অনেক বেশি কিন্তু চন্দ্রকান্তার নিজের... সে যদি না আমার সামনে তাকে এই ভাবে মেলে ধরত, তাহলে আমি কি পারতাম তাকে গল্পের মাধ্যমে সকলের সামনে এই ভাবে তুলে ধরতে? সে ব্যাসদেবের মত ছত্রে ছত্রে নিজেকে আমার সামনে উন্মোচিত করে গিয়েছে, আর আমি চেষ্টা করেছি গনেশের মত তার সে রূপ আমার কলমে ধরে রাখতে... ব্যস... এই টুকুই...

ভালো থাকবেন, সাথে থাকবেন...
Heart
Like Reply
(14-04-2022, 02:46 AM)chndnds Wrote: Darun Update

Heart Heart Heart Heart Heart
Like Reply
(12-04-2022, 01:39 AM)Shoumen Wrote: বাহঃ অসাধারণ একটা আপডেট,,,  খুব ভালো লাগলো,,, প্রথমে বলতে গেলে আপনজন এর মৃত্যু,, সেই মৃত্যুর শোক,,,তার উপর আবার সেই রাতেই একটা ভয়ানক এডভেঞ্চার,,, ফিল্মের নায়কের মতো একশন,,,  আবার যখম,,,,  অসাধারণ,,,  খুব চমৎকার,,,  তবে সেক্স টা মিস করছি চন্দ্রকান্তার,,,,  ?,,, তবে উপন্যাস পড়ে খুবই ভালো লাগছে,,, সত্যি দাদা অসাধারণ লেখক আপনি,,, চমৎকার গল্পকার,,,  আপনি প্লিজ সব সময় লিখুন,,, সবার মন জয় করবেন ???,,, ভালো থাকবেন।

ধন্যবাদ ভাই... অসাধারণ বলে গালি দিও না প্লিজ... সবটাই ওই কাজের ফাঁকে একটু চেষ্টা করা আর কি... তোমাদের মত পাঠকদের মনোরঞ্জনের জন্য...
Heart
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
(11-04-2022, 07:19 PM)Baban Wrote: কি যে বলা উচিত বুঝতেই পারছিনা। একদিকে একজনকে চিরতরে হারানোর দুঃখ আরেকদিকে এই ভয়ানক কান্ড! এই মেয়ে যে কি জিনিস তা তো আন্দাজ করতেই পারি। শরীরে জমিদার পরিবার ও বিদেশি স্বাধীনচেতা মানুসিকতা দুই গুনের রক্ত বইছে। তার ওপর রাগী জেদি সুন্দরী কামুক দুস্টু মিষ্টি ছেলেমানুষি আবার প্রাপ্তবয়স্ক যাৰ রূপের সাক্ষী নিজেই সাথে আমরাও। সব মিলে দুর্ধর্ষ পর্ব।

কিন্তু একটা কথা বলতে চাইবো সেটা মোটেও গল্পের গুন বা আসন্ন পরিস্থিতি নিয়ে নিয়ে নয়। আমি বলতে চাই এইশেষের দুটো পর্ব তুমি কিন্তু অন্য দিনের জন্য রেখে দিতে পারতে। এতে দুটো লাভ হতো।

১) তোমার হাতে অলরেডি দুটো আপডেট আগের থেকেই থাকতো তাই হাতে সময়ও থাকতো আসন্ন পর্ব গুলো আরাম করে লেখার কাজের ফাঁকে।

২) এই প্রথম পর্ব দুটোর মধ্যে যে অদ্ভুত ব্যাখাহীন অনুভূতি জাগরণকারী ব্যাপারটা ছিল সেটার রেশ নিয়েই যদি আজকের পর্ব শেষ হতো তাহলে যেন ভালো হতো।

এটা সম্পূর্ণ আমার অভিমত। আমার সাথে একমত কেউ নাই হতে পারে। পর্ব ও লেখনীর গুন নিয়ে লেখককে এটাই বলবো - লা জবাব!♥️

লাই রেপু সাথে আবারো অপেক্ষা অজানা চন্দ্রকে আরও জানার।

প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই, এই ভাবে প্রতি আপডেটের পরেই তোমার সুন্দর সমালোচনা উপহার দেওয়ার জন্য... এই ভাবেই পাশে থেকো যতদিন গল্প লিখে যেতে পারি...

না, এই দুটো পর্ব পরের জন্য রেখে দিলে হতো না গো... কারন চন্দ্রকান্তা এগিয়ে চলেছে একটু একটু করে তার পরবর্তী জীবনের দিকে... আর সে চলার পথে যখন যে ভাবে ঘটনা গুলি ঘটেছে, তা এখন না সাজিয়ে রাখলে পরে মিল খুজে পাওয়া যাবে না আর... কারন জীবন থেমে নেই... সে কিন্তু তার ডাক্তারী পড়ার শেষ প্রান্তে প্রায় পৌছে গিয়েছে... এবার তাকে ভাবতে হবে তার জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ের... 

আর আমি পর্ব তুলে রাখার কে? যার গল্প সে আমায় সেটা পরে দেওয়ার অনুমতি দিলে তো!... আমার ঘাড়ে মাথা তো একটাই ভাই... কাটা গেলে বৌ ছেলে কি করবে?

হা হা হা... happy
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
(11-04-2022, 04:53 PM)ddey333 Wrote: গল্পের নাম   " ....... যৌনাত্মক জীবনশৈলী "


এতো মনে হচ্ছে জেমস হেডলি চেজের একটা বিশাল ক্রাইম থ্রিলার এর মতো গড়াচ্ছে ব্যাপারগুলো !!

অসাধারণ , ফাটাফাটি ... কাঁপাকাঁপি চলছে ... 


yourock clps clps Heart Namaskar

Namaskar Namaskar Namaskar Namaskar
বেশি কাঁপিও না আবার... তাহলে ফেটে বেরিয়ে আসবে... হে হে...

না না... জাস্ট মজা করলাম... তুমি যে ভাবে আমার প্রতিটা আপডেটের সাথে থাকো, তা যদি আরো সকলে এসে একবার কিছু বলে যেত তোমার মত করে, আহা... স্বপ্ন গো... 
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
সকল পাঠক পাঠিকাদের 
চৈত্র সংক্রান্তিশুভ নববর্ষের 
আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই!!!
Namaskar

আগামী শনিবার পরবর্তি আপডেট দেবো...
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
(14-04-2022, 05:34 PM)bourses Wrote: না না... ওই সব হুডনি টুডনি কিছু না... আমি শুধু মাত্র চেষ্টা করি... আপনাদের মত পাঠক পাঠিকাদের সামনে আমার সামান্য চেষ্টাটুকু তুলে ধরতে হাজার কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে... যতটা পারি... 

এখানে অনেকেই চন্দ্রকান্তার চারিত্রিক বৈশিষ্টগুলি দেখে চমৎকৃত হয়েছে, তার সাহস, ক্রোধ, মমতা... আসলে এগুলি হয়তো সমস্ত নারী সত্তারই প্রকাশ... নারীতো এমনই!... তার একই অঙ্গে এই রকমই তো নানান রঙের বৈশিষ্টের বহিপ্রকাশ দেখা যায়... কখন এক বা কখনও অনেক... আমি চেষ্টা করেছি আমার উপন্যাসের নায়িকাকে সমস্ত রূপ রসে রাঙিয়ে তুলতে... যাতে আপনারই মত অপর এক নারী তাকে দেখে নিজের ভিতরের সত্তাটাকে আবিষ্কার করতে পারে... 

এখানে আমার যতটা না কৃতিত্ব... তার থেকে অনেক বেশি কিন্তু চন্দ্রকান্তার নিজের... সে যদি না আমার সামনে তাকে এই ভাবে মেলে ধরত, তাহলে আমি কি পারতাম তাকে গল্পের মাধ্যমে সকলের সামনে এই ভাবে তুলে ধরতে? সে ব্যাসদেবের মত ছত্রে ছত্রে নিজেকে আমার সামনে উন্মোচিত করে গিয়েছে, আর আমি চেষ্টা করেছি গনেশের মত তার সে রূপ আমার কলমে ধরে রাখতে... ব্যস... এই টুকুই...

ভালো থাকবেন, সাথে থাকবেন...
Heart

প্রথমেই আপনাকে অকুন্ঠ ধন্যবাদ আপনার এই উত্তর এর জন্য। হ্যাঁ আপনি ঠিক ই বলেছেন যে চন্দ্রকান্তা সত্য ই নারীর প্রকৃত স্বরুপা। সে একাধারে চৌষট্টি কলার পারঙ্গম সংহিতা, আবার মহাকালী র রৌদ্র রুপের সঙ্গম। 
আমাদের অশেষ সৌভাগ্য যে চন্দ্রকান্তা আপনাকে  তার সমস্ত অস্তিত্ব র রুপ আমাদের সন্মুখে উপস্থিত করতে বলেছেন। আর এটা ও তার এক অতি সঠিক সিদ্ধান্ত যে আপনার মত এক অতি উচ্চমানের অসাধারন লেখক তার জীবন কাহিনী লিখছেন। আপনার উপমা একদম সঠিক 
আপনি শ্রীগনেশ আর চন্দ্রকান্তা মর্হষি বেদব্যাস
[+] 1 user Likes জীবনের জলছবি's post
Like Reply




Users browsing this thread: 51 Guest(s)