Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
পর্ব- পাঁচ
এভাবেই সময় কাটতে থাকে। অন্য দিন গুলোর মতই সকালের নাস্তা শেষ করে নিলয় তৈরী হতে থাকে, অন্যদিকে কলেজে যাবার জন্য তৈরী হয় তথা। আজকে যে এরিয়াতে নিলয় সেলসে যাবে সেদিকেই তথার কলেজ। রাস্তায় ধারে অটোর অপেক্ষা করছে তথা। নিলয় হয়তো হেঁটেই চলে যেত কিন্তু তথা যে পর্যন্ত অটো না পাচ্ছে ততক্ষণ ও দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। মিনিট পাঁচেক হয়ে গেল, যে অটো গুলো আসছে কোনটাতেই সিট খালি নেই। দুজনের নিস্তব্ধতা ভাঙে নিলয়ে ডাকে
-আজ না হয় রিক্সাতেই চলে যাও। আমিও ওদিকেই যাবো। দুজনে একসাথেই যাওয়া যাবে।
চোখ দুটো ছোট করে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে কি যেন ভেবে তথা সম্মতি জানায় মাথা নাড়িয়ে।
রিক্সায় উঠে পড়ে দুজনে। রিক্সায় বসার পর দুজনের মাঝখানে যতটুকু ফাঁকা থাকার কথা তার চেয়ে একটু বেশিই ফাঁকা থাকা ওদের মাঝে। কলেজ থেকে কিছুটা দূরে থাকতেই তথা নিলয় কে নেমে যেতে বলে। নিলয়ও কোন উচ্চবাক্য না করেই নেমে যায়। ও জানে তথা চায় না কলেজের কেউ দুজনকে একসাথে দেখে কোন কানাঘুষো করুক।
ফুটপাত ধরে হাঁটতে থাকে নিলয়, হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠে। পকেট থেকে ফোনটা বের করতেই দেখে কোম্পানির টিএসএমের ফোন। ফোন রিসিভ করে কথা বলা শেষে ফোনটা আবার পকেটে রেখে দেয়। মেজাজটা বিগড়ে যায় নিলয়ের। সেই আবার নতুন মান্থলি টার্গেট, সেলস আরও বাড়ানো এটা সেটা বলার জন্যই অফিসার গুলো ফোন করে। ওরা এসি রুমে বসে টার্গেট চাপিয়ে দিয়েই খালাস। সেই টার্গেট ফিলাপ করতে কত কাঠখড় পোড়াতে হয় সেটা তো ফিল্ডে যে কাজ করে সে জানে। আনমনে রাস্তা পার হতে চলে নিলয়।
-নীইইলু দাঁড়া...
ফুটপাত থেকে বা পা রাস্তায় নামাতে গিয়েও থমকে দাঁড়ায় ও। চোখের সামনে খুব জোরে ব্রেক কসে দাঁড়ায় একটা বাইক আর কিছু একটা বলে চলেছে বাইক চালক। হয়তো গালি টালি দিচ্ছে ওকে। কিন্তু ওসবের দিকে খেয়াল নেই ওর। নিলয় ভাবে আমি কি ঠিক শোনলাম। না না আমার মনের ভুল হয়তো। এ নামে এখানে কে ডাকবে আমাকে, এসব ভাবতেই ভাবতেই আবার পা বাড়াতে চায় ও। কিন্তু পারে না
-প্লিজ নীলু একবার দাঁড়া।
না না আমি তো ভুল শুনছি না। এবার তো স্পষ্ট শুনতে পেলাম আমাকে ডাকছে। এতদিন পর কোথা থেকে এলো ও।
নিলয় পিছন ফিরে তাকাতে পারে না। ওর শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে। ও জানে না কি ভাবে ওর সামনে দাঁড়াবে। পা দুটো অসার হয়ে গেছে মনে হচ্ছে, এই বুঝি দমবন্ধ হয়ে আসবে। স্পষ্ট অনুভব করছে পেছনে এসে দাড়িয়েছে একজন। কাঁধে একটা হাতের স্পর্শ পায় নিলয়৷ সাথে সাথে শ্বাসের গতি বেড়ে গেছে ওর। কেউ যেন প্রাণপণে হাঁপড় টেনে চলেছে ওর বুকে। চোখ বন্ধ করে নেয় নিলয়।
বারান্দা ধরে হেটে আসছে মুকুল স্যার। বাঘের মত ভয় পায় সবাই স্যার কে। যেমন কড়া শাসনে তেমনি ভাল পদার্থ বিজ্ঞান আর উচ্চতর গণিতে মুকুল স্যার। ৯ম শ্রেণিতে প্রবেশ করে স্যার, পুরো ক্লাসের শিক্ষার্থীরা উঠে দাঁড়ায়। কিন্তু তৃতীয় সারির একটা বেঞ্চে বসা তিনজন উঠে দাঁড়ায় না, ওখানেই বসা নিলয় সাথে তার দুই সহপাঠি। এটা ওদের নৈমিত্তিক ব্যাপার। আর সেটাতে স্যারের চোখ ফাকি দেবার জন্যই ইচ্ছে করে দুসারি বেঞ্চ পরে বসে ওরা।
বয়সটাই তখন এমন ডেয়ারিং কিছু করে দেখানোর। হঠাৎ শরীরের পরিবর্তন আর কিছু ইঁচড়েপাকা বন্ধুর পাল্লায় পরে ছেলেদের জীবনটাই অনেকটা বদলে যায়। নতুন নতুন বিষয়ের সাথে চেনাজানা হতে থাকে। কেউ সেটা হজম করে এগিয়ে যেতে পারে আবার কেউ বদহজমে গোল্লায় যায়। এই বয়ঃসন্ধিতেই আমুল বদলে যেতে থাকে সব। গলার স্বর থেকে শুরু করে নাকের নিচে গোফের অস্তিত্ব সেই সাথে শারীরিক পরিবর্তন। সেসব সামলাতে সামলাতেই ইঁচড়েপাকাদের পাল্লায় যৌন শিক্ষাতেও হাতে খড়ি শুরু হয়ে যায় অধিকাংশের। লুকিয়ে পর্ণ দেখা কিংবা চটি গল্প পড়ে আনকোরা শরীরে কামোত্তেজনার আবির্ভাব ঘটতে থাকে। শুরু হয় বিপরীত লিঙ্গের প্রতি অদ্ভুত এক আকর্ষণ।
সেই সব কিছুই ঘটে গেছে নিলয়ের সাথেও। হয়তো একটু বেশিই ঘটে গেছে। কারণ ওকে তখন এসব বিষয়ে বুঝিয়ে বলার মত কিংবা ওর কিশোর মনে শান্ত পথ দেখানোর অভিভাবক কেউ ছিল না। নিলয়ও আকর্ষণ বোধ করতো বিপরীত লিঙ্গের দিকে। ছেলেদের যেমন পরিবর্তন আসে তেমনি পরিবর্তন মেয়েদেরও আসে। সেই বদল গুলো ভীষণ ভাবেই দৃষ্টি কাড়ে। যেমন এখন নিলয়ের কাড়ছে। ক্লাসে বসে লুকিয়ে লুকিয়ে মেয়েদের শরীর বিশ্লেষণে ব্যস্ত নিলয় আর ওর বন্ধুরা। কার বুকটা বেশি বড় দেখাচ্ছে, কার পিছনটা বেশি ভারী সেসবের চুলচেরা গবেষণা। স্যার যে ক্লাসে চলে এসেছে সেদিকে ওদের খেয়ালই নেই। আর অগত্যা ওদের অমনোযোগী ভাব স্যারের কাছে ধরা পড়তেই বেধম প্রহার।
নিলয়রা যখন মাধ্যমিকে সে সময়টাতেই কলকাতার মুভি ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন নতুন নায়কের আগমন সে সাথে রোমান্টিক ছবির জয়জয়কার। এসব রোমান্টিক ছবির রোমান্স গুলো ওদেরও ছুয়ে যেত। বয়ঃসন্ধির হরমোনে প্রেম জেগে উঠে ছেলে মেয়ের নরম হৃদয়ে। এটা আসলে সে অর্থে কোন প্রেম ভালবাসা না। যেটা হয় সেটা হলো শরীরের প্রতি আকর্ষণ। নিলয়ের ক্লাসের অনেকেই সেই আকর্ষণের মায়ার জালে বন্দী পড়েছে। কিন্তু ওর তো তেমন কেউ নেই। ক্লাসের ফাঁকে কিংবা টিফিনে সবাই তাদের জুটিতে ব্যস্ত হয়ে যায়। শুধু ওর কোন ব্যস্ততা নেই। মনে মনে ভাবে এখন একটা প্রেম করা ভীষন ভাবে জরুরি হয়ে দাড়িয়েছে। নইলে বাকিদের কাছে মুখ দেখানো যাবে না, প্রেস্টিজ বলে আর কিছুই থাকবে না।
ক্লাসে এমনিত ওর বন্ধু বান্ধবী নেহাত কম নয়৷ তবে ওদের মাঝে একজনের সাথে নিলয় একটু বেশিই সহজ৷ ওরা কাছে সহজেই সব বলে দিতে পারে, পড়াশোনাের বিষয়ে আলোচনা হোক কিংবা দুষ্টুমির কোন বিষয় ওর সাথেই সব থেকে বেশি শেয়ার করে। একটা সময় ভাবতে থাকে ওকেই প্রপোজ করে দেখি। যদি কপাল ভাল থাকে তবে আমারও একটা প্রেম হয়ে গেলে বেঁচে যাই।
সেদিন সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। যতই বৃষ্টি হোক, বৃষ্টির ক্লাস না হলেও ওদের গ্রুপটার কলেজে আসা চাই। দুতলার ওদের ক্লাসের সামনের বারান্দার গ্রিলের ওপাশে দুটো আকাশি গাছ। আকাশি পাতায় বৃষ্টির ফোটা গুলো পড়ে গ্রিলের এপাশে হালকা করে আসছে। একটু দূরে একটা আরেকটা গাছ, তাতে ফুল ধরেছে। কি ফুল সেটা জানা নেই তবে ছোট ছোট সাদা ফুল গুলো থেকে বেশ সুন্দর গন্ধ ছড়াছে। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। ওখানেই নিলয় আরেক বন্ধু কে দিয়ে ওর প্রিয় বান্ধবীকে ডেকে আনায়।
- কিরে কি হলো ডাকলি কেন?
- একটা কথা বলবো শুধু হ্যাঁ না তে জবাব দিবি।
-কি বলবি, সিরিয়াস কিছু হয়েছে।
- না তেমন কিছু না, মাআ মাআনে বিষয়টা হলো ইয়ে আমি তো তোকে বল বলতে চাই
-কি বলতে চাস সেটা বলবি তো
-আমি তোকে ভালবাসি, তুইও কি আমাকে ভালবাসিস (এই ঝড়ো বাতাসের শীতলতার মাঝেও কপালে ঘামবিন্দু দেখা দেয় ওর)
-কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে নিলয় কে বলে দেখ তুই আমার বন্ধু। তোকে আমি...
-তুই হ্যাঁ না তে বলে দে।
- তুই বুঝার চেষ্টা কর, আমি তোকে বন্ধু হিসেবে... বাকি কিছু বলার আগেই নিলয় ওখান থেকে হাটা শুরু করে সোজা সিড়ি বেয়ে নিচতলায় নেমে যায়।
ইশ কি ভুল করে বসলাম। আগেই বুঝা উচিত ছিল, এখন তো বাকিরা বিষয়টা জেনে গেলে আর মুখ দেখাতে পারবো না, কি কারণে যে পাগলামি টা করতে গেলাম। ও যদি এবার বন্ধুত্ব টাও না রাখে কি হবে তখন। ভাবতে ভাবতে হল ঘরের দিকে এগিয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎ ধাক্কা খায়।
-ওফফ দেখে যেতে পার না।
চোখ খোলে যায় নিলয়ের। কাঁধে হাতের স্পর্শ টা এখনো পাচ্ছে ও।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
The following 13 users Like nextpage's post:13 users Like nextpage's post
• a-man, Ami Raja, Baban, bourses, Bumba_1, ddey333, DURONTO AKAS, raja05, samael, SubtleKN, Voboghure, WrickSarkar2020, অভিমানী হিংস্র প্রেমিক।
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,178 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
ইশশশ .. এমন জায়গায় থামলেন .. এইসব ঠিক না
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
হটাৎ হটাৎ এমন সব অসাধারণ লেখা নিয়ে কিছু লেখকের আবির্ভাব ঘটে যে তাদের লেখার জাদুতে হারিয়ে যেতে বাধ্য পাঠক মহল। হাতের ইশারা আর গিলি গিলি ছু এর পরেই পায়রা গুলো উড়তে শুরু করে চোখের সামনে আর দর্শকদের অবাক মুখ দেখে সাফল্যের হাসি হাসি লেখক... নানা.. জাদুকর ♥️
লাইক রেপু সাথে শুভকামনা।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
বেশি কিছু বলবো না ...
একটা অদ্ভুত নেশা ধরানো মায়াবী গল্প
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(08-04-2022, 09:16 PM)Bumba_1 Wrote: ইশশশ .. এমন জায়গায় থামলেন .. এইসব ঠিক না
লিখতে লিখতে মোবাইলের চার্জ শেষ। চার্জ দিতে গিয়ে দেখি ইলেক্ট্রিসিটি নেই। ভাবলাম জেনারেটর চালু করেই মোবাইল চার্জ দিয়ে সব লিখে ফেলবো। জেনেরেটর চালু করতে গিয়ে দেখি ডিজেল শেষ। ডিজেলের জন্য নিলয় কে পাঠালাম।
কিন্তু ঐ নিলয় তো বেপাত্তা।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(08-04-2022, 10:31 PM)ddey333 Wrote: বেশি কিছু বলবো না ...
একটা অদ্ভুত নেশা ধরানো মায়াবী গল্প
মায়ার কবলে ফেলতে পারলেই সার্থকতা পাবো।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 252
Threads: 0
Likes Received: 184 in 162 posts
Likes Given: 132
Joined: Dec 2021
Reputation:
0
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
•
Posts: 1,228
Threads: 0
Likes Received: 975 in 705 posts
Likes Given: 1,681
Joined: Jul 2020
Reputation:
66
Suspence rekhe dilen......khub bhalo likhchen
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(09-04-2022, 12:22 PM)raja05 Wrote: Suspence rekhe dilen......khub bhalo likhchen
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 252
Threads: 0
Likes Received: 184 in 162 posts
Likes Given: 132
Joined: Dec 2021
Reputation:
0
(09-04-2022, 11:37 AM)nextpage Wrote: আজকেই আপডেট দেবার চেষ্টা করবো।
পাশে থাকবেন
আপডেট কখন দিবেন?
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(09-04-2022, 06:49 PM)Arpon Saha Wrote: আপডেট কখন দিবেন?
রাতে আপডেট আসবে।
❤️❤️
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,457 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
পর্ব- ছয়
কাঁধ টা ভার শূন্য লাগছে,
দুটো হাত নিলয়কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে। পিঠের কিছুটা জায়গা ভিজে গেল ওর চোখের জলে। না নিলয় আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। মুখ থেকে অস্পষ্ট ভাবে বেরিয়ে আসে
-দোলন।
ওর ফোঁপানো শব্দটা এবার কানে লাগছে। কি করছিস ধাম এবার। হাতের জোড় টুকু ছাড়িয়ে ঘুরে দাড়ায় নিলয়। দোলনের মুখোমুখি দাড়াতেই আবার জড়িয়ে ধরে ওকে।
-দোলন কি করছিস, ছাড় আমাকে। রাস্তায় এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরে? মানুষ জন দেখছে তো নাকি৷ কথা শোন আমার।
-ছাড়বো না। কেন তর কথা শুনবো বল, তুই কি আমার কোন কথা শুনিস? যদি শুনতি
-আচ্ছা বাবা, এখন থেকে শুনবো এবার তো ছাড়। দেখ কত মানুষ চেয়ে রয়েছে।
এবার দোলন বাহুডোর আলগা করে দেয়। স্বাভাবিক হয়ে দাড়ায়। মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নিলয়ের দিকে।
-তুই আগের মতই আছিস। শুধু মুখটা কেমন কালো হয়ে গেছে। আর একটু শুকিয়ে গেছিস।
-তা হয়তো হবে। চল কোথাও গিয়ে বসি। এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে কথা বলবি নাকি। সামনেই টাউন হল মোড়ে একটা কফিসপ আছে চল ওখানে যাই।
হাঁটতে হাঁটতে কফিসপের দিকে এগোতে থাকে ওরা। নিলয়ের হাতটা ছাড়ে না দোলন, যেন সর্বশক্তি দিয়ে ধরে রেখেছে ও।
কফি সপের ভিতরে একটা কর্নার টেবিলে বসে ওরা দুজনে। নিলয় ডেস্কে গিয়ে দুটো স্যান্ডউইচ আর কফির অর্ডার করে আবার টেবিলে ফিরে আসে। সপের সাউন্ড সিস্টেমে গান চলছে।
-তা এখানে কবে এসেছিস রে দোলন।
-এসেছি মাস দুয়েক হলো। বোনকে কলেজে ভর্তি করালাম এখানে।
-তা এখানে কোথায় আছিস?
-দূর্গাবাড়ির ওখানে ৮ তলা নতুন বিল্ডিং টা সেটার ৪ তলায় একটা ইউনিট ভাড়া নিয়েছি। ওখানেই আছি। একদিন যাবি আমার ওখানে।
-তা দেখা যাবে।
আড় চোখে দোলন কে দেখতে থাকে। শরীরে অন্যরকম উত্তেজনা। ওর চোখে ধরা পড়ে যাবার ভয়।
সপের সাউন্ড বক্সে চন্দ্রবিন্দুর একটা গান বাজছে। গানগুলো ছোটবেলার ভাললাগা, নষ্টালজিয়া। মন বিভোর করে দেয়।
ফিকে হয়ে আসা অন্ধকার
প্লাটফর্মে ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভাঁড়
জানলার কাঁচটাতে লেগে থাকা শূন্যতা
সশব্দে ছুটে চলে ট্রেন।
ফেলে আসা মুখগুলো ভোরবেলায়
লুকোচুরি আর চোর চোর খেলায়
কুয়োতলা মুখোমুখি জড়তার বাঁধা ঠেলে
আমাকে কি কিছু বলছেন ?
বলতে পারিনি তার যেটুকু যা ভাষা ছিল
কেঁপে ওঠা চোখের পাতায়
তারপর ভোরবেলা ডিঙিয়েছি চৌকাঠ,
ভয়ানক সতর্কতায়
এভাবেও ফিরে আসা যায়,
এভাবেও ফিরে আসা যায়।
খুনসুটি গানহাসি মেয়ের দল
ভাল লেগে গেল এই মফস্বল
বিকেলের রোদ ছিল আর অনুরোধ ছিল
আরেকটা বাউল শোনান।
চোখ বন্ধ করে গানটাতে ডুবে যায় নিলয়।
দোতলা থেকে নেমে সোজা হল ঘরে ঢোকে যায় নিলয়। ওদিকে দোতলার বারান্দায় এখনো দাড়িয়ে আছে দোলন।
-ধ্যাত ঐ পাগলের আজ কি হল কে জানে। এমন করলো ও। আমার কথাটাও ঠিকমত শোনলো না। না দেখে আসি আবার কোথায় গেল।
নিচতলায় নেমে চোখ ঘুরিয়ে নিলয় কে খুঁজে। না ওকে দেখতে পায় না। বারান্দা ধরে এগিয়ে যায়। সামনে যাকে পাচ্ছে জিজ্ঞেস করে নিলয়ের ব্যাপারে। একজন বলে ওকে হল ঘরের দিকে যেতে দেখেছে। দোলন ও ছুটে যায় হল ঘরের দিকে। হল ঘরে পৌঁছে ডাক দেয়
-নীলু, নীলু এই নীলু। কই তুই?
না কোন সাড়াশব্দ নেই। আরও ভেতরের দিকে যেতে যেতে শেষের দিকের একটা চেয়ারে নিলয় কে দেখতে পায়। ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ায় দোলন।
-কিরে তোকে যে আমি ডাকছি শোনতে পাচ্ছিস না।
-কোন কথা না বলে মাথা নিচু করে বসে থাকে নিলয়।
-কানে বয়ড়া হয়েছে কি শুনতে পাচ্ছিস না। বলেই নিলয়ের পিঠে চিমটি কাটে।
-ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠে নিলয়। মেরে ফেলবি নাকিরে। এখানে এসেছিস কেন? একা থাকতে দে।
-সাধে এসেছি নাকি? এতবার পিছন থেকে ডাকলাম, একবার দাঁড়ালি না কেন??
-কেন ডেকেছিলি, এখন বলে ফেল।
- কি হয়েছে তোর বল তো। আজ হঠাৎ এসব বললি যে
-এমনি, ভুল হয়ে গেছে। আর বলবো না।
- কেন বলবি না? তুই তো বলিস আমি তোর বেষ্ট ফ্রেন্ড। আমি তো সবসময় তকে ভালবাসি৷ তাকা আমার দিকে।
নিলয় ওর দিকে তাকায়। রাগে মুখ লাল হয়ে আছে দোলনের। রাগান্বিত মুখটা দেখে হাসি খেলে যায় ওর হৃদয়ে।
-উফ তোকে যা লাগছে না। তর গাল দুটো পুরো লাল হয়ে গেছে।
-(মেকি রাগ দেখিয়ে)ভাল হয়েছে। থাকা তুই, আমি গেলাম।
-তুই কোথায় যাবি? বস এখানে। একটা ভুল করে ফেলেছি। ক্ষমা করে দে প্লিজ। এই যে কান ধরলাম।
-হয়েছে হয়েছে আর ভাব ধরতে হবে না। মাফ করে দিয়েছি।
-তাহলে একটা পাপ্পি দে।
-ওরে শয়তান ছেলে আজ তকে মেরেই ফেলবো।বলেই জড়িয়ে ধরে নিলয়কে।
নিলয়ও জড়িয়ে ধরে দোলন কে। নিলয় অনুভব করতে পারে দোলনের শ্বাসপ্রশ্বাস। ওর নরম শরীরের রক্ত চলাচল। দোলনের শিমুল তুলোর মত নরম বুক দুটি লেপ্টে যায় ওর বুকের সাথে। চুলের গন্ধ এসে নাকে লাগে। রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়। মাথায় কাম পোকা গুলো নড়াচড়া বাড়াতে থাকে। হাত নিসপিস করে উঠে দোলনের শরীরে চড়ে বেড়াবার । নিলয়ের ঠোঁট দুটো ইচ্ছে করে চুমো খেতে ওর ঘাড়ে, উষ্ণ ঠোঁটের ছোঁয়ায় আদর করতে ওর কানের লতিতে, লাল হয়ে যাওয়া নরম গালে। কিন্তু ও নিজেকে সংযত করে।
কারণ দোলন ওকে সরল বিশ্বাসে জড়িয়ে ধরেছে,সেখানে কোন কাম ভাবনা নেই, কামনার উষ্ণতা নেই। যা আছে সেটা প্রগাঢ় বন্ধুত্বের ভালবাসা বন্ধুত্বের অধিকারে। নিলয় ছোট্ট করে চুমো খায় দোলনের কপালে। সাথে সাথে ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
কাঁধে আবার ধাক্কা লাগছে। কিরে কি ভাবছিস তখন থেকে কফি টা তো ঠান্ডা হয়ে গেল। নিলয় তাকিয়ে থাকে দোলনের মুখে দিকে। সেই আগের মতই মায়া ভরা মুখ, সেই হাসি।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
The following 15 users Like nextpage's post:15 users Like nextpage's post
• a-man, Akash88, Ami Raja, Arpon Saha, auditore035, Baban, bourses, Bumba_1, ddey333, DURONTO AKAS, raja05, samael, Voboghure, WrickSarkar2020, অভিমানী হিংস্র প্রেমিক।
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
উফফফফফ! একি মায়াবী গল্প শুরু করলেন দাদা? যেন চোখ বুজেও চোখের সামনে সিনেমাটা দেখছি....... কখনো অজানা ভালোলাগা কিছু কল্পনা কিছু প্রাপ্তি কিছু ফেলে আসা মুহূর্ত কিছু অলীক চাহিদা..... দুর্দান্ত একটা গল্প ♥️♥️
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
কেমন যেন একটা নেশা ধরে যাচ্ছে ... না মদ অথবা গাঁজা না .... মন খারাপ করেও ভালো লাগার মাথা ঝিমঝিম করা নেশা ...
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,178 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
09-04-2022, 09:34 PM
(This post was last modified: 09-04-2022, 09:35 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
হৃদয় দুলিল, দুলিল দুলিল,
প্রবল পবনে তরঙ্গ তুলিল
হৃদয় দুলিল, দুলিল দুলিল,
পাগল হে নাবিক,
ভুলাও দিগবিদিক,
পাগল হে নাবিক,
ভুলাও দিগবিদিক,
পাল তুলে দাও, দাও দাও দাও
প্রেমের জোয়ারে ভাসাবে দোঁহারে
বাঁধন খুলে দাও, দাও দাও দাও
প্রেমের জোয়ারে ভাসাবে দোঁহারে
বাঁধন খুলে দাও, দাও দাও দাও
ভুলিব ভাবনা
পিছনে চাব না
পাল তুলে দাও, দাও দাও দাও
প্রেমের জোয়ারে ভাসাবে দোঁহারে
বাঁধন খুলে দাও, দাও দাও দাও ..
চলতে থাকুক নিলয় আর দোলনের প্রেম পর্যায় - সঙ্গে আছি।
Posts: 912
Threads: 1
Likes Received: 867 in 546 posts
Likes Given: 3,345
Joined: Dec 2018
Reputation:
40
Darun sundor ... Akta onnorokom nesha lege jacche golpotay ...
|