Thread Rating:
  • 91 Vote(s) - 3.44 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মন ২ - কাহিনীর নাম- শিবের শিব প্রাপ্তি- সমাপ্ত
আপনার গল্পের সবচেয়ে আকর্ষণনীয় দিক হচ্ছে কৃত্রিমতা বর্জন।।। আপনার আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গি ও লেখার গাথুনি সাদামাটা দৈনন্দিন কাজকেও উপজীব্য ও রোমাঞ্চকর তুলে.....
yourock
রোমাঞ্চের সন্ধানে রোমাঞ্চ প্রিয় আমি ??
[+] 1 user Likes Ah007's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
Splendid ❤️❤️
[+] 1 user Likes Maskin's post
Like Reply
প্রথমেই আপনাকে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে জানাই অনেক শুভেচ্ছা... 

আজ ২১শে ফেরুয়ারী, আর আমি অতি কষ্টে শেষ করতে পারলাম আপনার ১৯ তারিখের আপডেট... 

আপনার গল্প নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না... সত্যিই বলছি... আমার ভাঁড়ার প্রায় খালি হয়ে এসেছে বলতে বলতে... শব্দকোষে বোধহয় আর কোন কিছু বাকি নেই যা আপনার গল্পে বলে ফেলি নি... তাই সে দিকে আর যাচ্ছি না... কারন এই রকম সাবলিলতায় এত স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় একটা গল্পকে এতটা মাধুর্য আর রসত্মাবোধক করে তোলা যায়, তা বোধহয় একমাত্র আপনার দ্বারাই সেটা সম্ভব... 

আর সেই সাথে পুরো গল্পটির মধ্যে ছোট ছোট এমন এক একটা বাক্য রেখে দিয়ে যাচ্ছেন, যা পড়তে গিয়ে সত্যি বলছি... জীবন দর্শন হচ্ছে আমাদের মত নগন্য পাঠকদের... "ভগবান বানিয়ে তো দেন, কিন্তু ধরে রাখতে কোন সাহায্য করেন না।"... উফফফফ... অসাধারণ... এই একটা ছোট্ট বাক্যের মধ্যে দিয়ে যেন জীবনদর্শনের চিত্র তুলে ধরলেন আমাদের সামনে... আপনাকে আমার শত কোটি প্রণাম... 
.
.
.
তবে হ্যা... এটা ছাড়াও আমার আর একটা কথা আছে কিন্তু... একটু সাইডে আসুন তো!... সকলের সামনে সেটা বলবো না... 

(ফিস ফিস করে কথা হচ্ছে আমাদের কিন্তু) 
আমি - "আরে? এ সব কি বলছেন?"
নন্দনা - "কেন? কি বললাম আবার?"
আমি - "কি বললাম মানে? এতবার হলো, তাও এখন এই সব বলছেন?"
নন্দনা - "কি এত বার হলো? সেটা তো আগে বলুন..."
আমি - "যাহ! সেটা আবার নিজের মুখে বলা যায় নাকি? ইস... আপনিও না..."
নন্দনা - (গলার স্বর চড়তে শুরু করে দিয়েছে) "ছি ছি... আপনাকে আমি অন্য রকম মানুষ ভেবেছিলাম, এসব আমাকে কি বলছেন আপনি? আপনার সাহস দেখে তো আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি!"
আমি - (মাথা হাত চাপড়ে... নিজের গলারটাকে আরো খাদে নামিয়ে নিয়ে) "ঈঈঈঈঈ... না না... আমি সে সব কিছু বলছি না..."
নন্দনা - (ভ্রূ কুঁচকে) - "তাহলে?"
আমি - (ঢোঁক গিলতে গিলতে) "নাহ! ছেড়ে দিন... কিছু বলছি না..."
নন্দনা - (চোয়াল প্রায় শক্ত করে) "উহু... এখন বলছি না বললে শুনছে কে? বালের ওই সব কথা যখন শুরু করেছেন, তখন ঝেড়ে কাশূন দেখি..."
আমি - "অভয় দিচ্ছেন?"
নন্দনা - "হু দিচ্ছি..."
আমি - (এবারে একটু গদ গদ হয়ে) "আসলে বলছিলাম যে অনেকবার তো করেছেন..."
নন্দনা - (প্রায় খেঁকিয়ে উঠে) "আবার ঐ সব শুরু করলেন?"
আমি - (ফের মুখ প্রায় কাঁচুমাচূ) "এই জন্যই তো বলতে চাইছিলাম না আর..."
নন্দনা - (কি ভেবে নিয়ে) "আচ্ছা, বলুন..."
আমি - "না থাক... দরকার নেই..."
নন্দনা - (এবার প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে) "বোললাম তো বলতে, এত ভ্যানতাড়া করছেন কেন?"
আমি - (ফের মুখটা কাঁচু মাচু করে নিয়ে) "ঝেড়ে দেবেন না তো?"
নন্দনা - "না, ঝাড়বো না... বলুন তাড়াতাড়ি, আমার সময় নিয়ে আপনার ভ্যানতাড়া শোনার... যা বলার বলুন..."
আমি - (প্রায় হড়বড়িয়ে) "ফুলসজ্জায় বররা নতুন বৌএর ব্রা খুলতে পছন্দ করে, সেটা কি আপনার মানে থুড়ি শিবের মা জানে না? সেটা কি ওনার ক্ষেত্রে ঘটে নি? উনি ওনার প্রথম দিন কি বিনা ব্রা পড়েই বিছানায় শিবের বাবার জন্য অপেক্ষা করছিলেন?"
বলে আর নন্দনার জবাবের জন্য না অপেক্ষা করেই সেখান থেকে আমার পলায়ন...
horseride
[+] 4 users Like bourses's post
Like Reply
উফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ... আজকের পর্বটা ছিল একেবারে অন্যরকম.... One of the best update! কারণ ভেতরের পুরুষ, বিবেক, ভয়, কষ্ট সব বাঁধা সব দেয়াল টপকে একটা প্রেমিকা ছুটে যেতে চাইছে নিজ প্রেমিকের কাছে। সে আজ ভুলতে চায় অতীত... সে চায় বর্তমান ও ভবিষ্যত... যদিও একটা ধাক্কা অপেক্ষায় আছে... সবচেয়ে ভয়ানক ধাক্কা সেটি!!

আর ডিটেলিং নিয়ে কি বলবো... কি দিলেন মাইরি!! কণ্ঠর জোরে নানা ভঙ্গিমার মাধ্যমে শ্রুতি ব্যাখ্যান শুনে চোখের সামনে ক্রীড়া মুহুর্ত কল্পনার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে কিন্তু মারাত্মক লেখন শৈলীর দ্বারা সেই একই প্রতিফলন স্বচ্ছ ভাবে ফুটিয়ে তোলা যে কি সেটা আজকের পর্বে দেখতে পেলাম। উফফফফ খেলার কমেন্ট্রি যেন মগজের ভেতর অলীক চরিত্র সৃষ্টি করে তাদের কর্ম ব্যাস্ত করতে বাধ্য করলো।

একেবারে ওই মগনলাল বাবুর ভাষায় - নাজুক.. নাজুক ❤❤❤
[+] 4 users Like Baban's post
Like Reply
(21-02-2022, 11:55 AM)Ah007 Wrote: আপনার গল্পের সবচেয়ে আকর্ষণনীয় দিক হচ্ছে কৃত্রিমতা বর্জন।।। আপনার আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গি ও লেখার গাথুনি সাদামাটা দৈনন্দিন কাজকেও উপজীব্য ও রোমাঞ্চকর তুলে.....
[image]

অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার ভাল লেগেছে সেটাই আমার কাছে অনেক।
[+] 1 user Likes nandanadasnandana's post
Like Reply
(21-02-2022, 04:09 PM)Maskin Wrote: Splendid ❤️❤️

Namaskar Namaskar Namaskar Namaskar
[+] 1 user Likes nandanadasnandana's post
Like Reply
(21-02-2022, 04:28 PM)bourses Wrote: প্রথমেই আপনাকে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে জানাই অনেক শুভেচ্ছা... 

আজ ২১শে ফেরুয়ারী, আর আমি অতি কষ্টে শেষ করতে পারলাম আপনার ১৯ তারিখের আপডেট... 

আপনার গল্প নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না... সত্যিই বলছি... আমার ভাঁড়ার প্রায় খালি হয়ে এসেছে বলতে বলতে... শব্দকোষে বোধহয় আর কোন কিছু বাকি নেই যা আপনার গল্পে বলে ফেলি নি... তাই সে দিকে আর যাচ্ছি না... কারন এই রকম সাবলিলতায় এত স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় একটা গল্পকে এতটা মাধুর্য আর রসত্মাবোধক করে তোলা যায়, তা বোধহয় একমাত্র আপনার দ্বারাই সেটা সম্ভব... 

আর সেই সাথে পুরো গল্পটির মধ্যে ছোট ছোট এমন এক একটা বাক্য রেখে দিয়ে যাচ্ছেন, যা পড়তে গিয়ে সত্যি বলছি... জীবন দর্শন হচ্ছে আমাদের মত নগন্য পাঠকদের... "ভগবান বানিয়ে তো দেন, কিন্তু ধরে রাখতে কোন সাহায্য করেন না।"... উফফফফ... অসাধারণ... এই একটা ছোট্ট বাক্যের মধ্যে দিয়ে যেন জীবনদর্শনের চিত্র তুলে ধরলেন আমাদের সামনে... আপনাকে আমার শত কোটি প্রণাম... 
.
.
.
তবে হ্যা... এটা ছাড়াও আমার আর একটা কথা আছে কিন্তু... একটু সাইডে আসুন তো!... সকলের সামনে সেটা বলবো না... 

(ফিস ফিস করে কথা হচ্ছে আমাদের কিন্তু) 
আমি - "আরে? এ সব কি বলছেন?"
নন্দনা - "কেন? কি বললাম আবার?"
আমি - "কি বললাম মানে? এতবার হলো, তাও এখন এই সব বলছেন?"
নন্দনা - "কি এত বার হলো? সেটা তো আগে বলুন..."
আমি - "যাহ! সেটা আবার নিজের মুখে বলা যায় নাকি? ইস... আপনিও না..."
নন্দনা - (গলার স্বর চড়তে শুরু করে দিয়েছে) "ছি ছি... আপনাকে আমি অন্য রকম মানুষ ভেবেছিলাম, এসব আমাকে কি বলছেন আপনি? আপনার সাহস দেখে তো আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি!"
আমি - (মাথা হাত চাপড়ে... নিজের গলারটাকে আরো খাদে নামিয়ে নিয়ে) "ঈঈঈঈঈ... না না... আমি সে সব কিছু বলছি না..."
নন্দনা - (ভ্রূ কুঁচকে) - "তাহলে?"
আমি - (ঢোঁক গিলতে গিলতে) "নাহ! ছেড়ে দিন... কিছু বলছি না..."
নন্দনা - (চোয়াল প্রায় শক্ত করে) "উহু... এখন বলছি না বললে শুনছে কে? বালের ওই সব কথা যখন শুরু করেছেন, তখন ঝেড়ে কাশূন দেখি..."
আমি - "অভয় দিচ্ছেন?"
নন্দনা - "হু দিচ্ছি..."
আমি - (এবারে একটু গদ গদ হয়ে) "আসলে বলছিলাম যে অনেকবার তো করেছেন..."
নন্দনা - (প্রায় খেঁকিয়ে উঠে) "আবার ঐ সব শুরু করলেন?"
আমি - (ফের মুখ প্রায় কাঁচুমাচূ) "এই জন্যই তো বলতে চাইছিলাম না আর..."
নন্দনা - (কি ভেবে নিয়ে) "আচ্ছা, বলুন..."
আমি - "না থাক... দরকার নেই..."
নন্দনা - (এবার প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে) "বোললাম তো বলতে, এত ভ্যানতাড়া করছেন কেন?"
আমি - (ফের মুখটা কাঁচু মাচু করে নিয়ে) "ঝেড়ে দেবেন না তো?"
নন্দনা - "না, ঝাড়বো না... বলুন তাড়াতাড়ি, আমার সময় নিয়ে আপনার ভ্যানতাড়া শোনার... যা বলার বলুন..."
আমি - (প্রায় হড়বড়িয়ে) "ফুলসজ্জায় বররা নতুন বৌএর ব্রা খুলতে পছন্দ করে, সেটা কি আপনার মানে থুড়ি শিবের মা জানে না? সেটা কি ওনার ক্ষেত্রে ঘটে নি? উনি ওনার প্রথম দিন কি বিনা ব্রা পড়েই বিছানায় শিবের বাবার জন্য অপেক্ষা করছিলেন?"
বলে আর নন্দনার জবাবের জন্য না অপেক্ষা করেই সেখান থেকে আমার পলায়ন...
[image]

হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা......... Namaskar Namaskar
Like Reply
(21-02-2022, 06:57 PM)Baban Wrote: উফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ্ফ... আজকের পর্বটা ছিল একেবারে অন্যরকম.... One of the best update! কারণ ভেতরের পুরুষ, বিবেক, ভয়, কষ্ট সব বাঁধা সব দেয়াল টপকে একটা প্রেমিকা ছুটে যেতে চাইছে নিজ প্রেমিকের কাছে। সে আজ ভুলতে চায় অতীত... সে চায় বর্তমান ও ভবিষ্যত... যদিও একটা ধাক্কা অপেক্ষায় আছে... সবচেয়ে ভয়ানক ধাক্কা সেটি!!

আর ডিটেলিং নিয়ে কি বলবো... কি দিলেন মাইরি!! কণ্ঠর জোরে নানা ভঙ্গিমার মাধ্যমে শ্রুতি ব্যাখ্যান শুনে চোখের সামনে ক্রীড়া মুহুর্ত কল্পনার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে কিন্তু মারাত্মক লেখন শৈলীর দ্বারা সেই একই প্রতিফলন স্বচ্ছ ভাবে ফুটিয়ে তোলা যে কি সেটা আজকের পর্বে দেখতে পেলাম। উফফফফ খেলার কমেন্ট্রি যেন মগজের ভেতর অলীক চরিত্র সৃষ্টি করে তাদের কর্ম ব্যাস্ত করতে বাধ্য করলো।

একেবারে ওই মগনলাল বাবুর ভাষায় - নাজুক.. নাজুক ❤❤❤

অনেক অনেক ধন্যবাদ বাবান। হ্যাঁ যার গল্প এটা, তার বরের সাথে মিলনে অনেক সময় লেগেছিল। যদিও রাকার চরিত্র এ খেলা ছাড়া অনেক কিছুই কমন সেই লোকের সাথে।
Like Reply
খেলাগুলো বেশ ভালোই দেখলাম, দেখলাম কেন লিখলাম তা তো বুঝতেই পারছেন। অনেকের খেলা মনে পড়লো, বিশেষ করে ব্রাজিলের রোনাল্ডোর বার্সিলোনার হয়ে খেলা, আরও অনেকের। দুর্দান্ত বর্ণনা। আর গল্পটা তো অসাধারণ গতিতে এগিয়ে চলছেই।
[+] 1 user Likes kublai's post
Like Reply
(22-02-2022, 02:19 AM)kublai Wrote: খেলাগুলো বেশ ভালোই দেখলাম, দেখলাম কেন লিখলাম তা তো বুঝতেই পারছেন। অনেকের খেলা মনে পড়লো, বিশেষ করে ব্রাজিলের রোনাল্ডোর বার্সিলোনার হয়ে খেলা, আরও অনেকের। দুর্দান্ত বর্ণনা। আর গল্পটা তো অসাধারণ গতিতে এগিয়ে চলছেই।

Namaskar Namaskar Namaskar অনেক অনেক ধন্যবাদ
Like Reply
আগের পর্বের কিছু অংশ......

শুরুর দিকে ও যখন আমাকে কল করা কম করেছিল, আমি ভাবতাম অনেক বেশী ও হয়ত ক্লান্ত থাকছে। আমি ডিস্টার্ব করতাম না। কিন্তু এই নিয়ে তিন চার বার হলো যখন আমি দেখলাম ওর ফোন ব্যস্ত অতো রাতেও। কাউকে কিছু বলিনি আমি। আবার ভাবলাম, আমার সেদিনের ব্যবহারে ও হয়ত কষ্ট পেয়েছে। বা বুঝেছে আমাকে এড়িয়ে চলাই ভাল। মন টা খারাপ হয়ে গেল আমার। বা ও কি কাউকে প্রেম করছে আমাকে না পেয়ে?
  
                                                                                পর্ব ২৫
লীগের তখন শেষ দিক। আমি বুঝতে পারছিলাম, রাকা ক্লান্ত খুব। আর সেই টাইট ভাব টা নেই ওর মধ্যে। সেই ট্রেড মার্ক বডি ফেইন্ট, চকিত দৌড়, সময়ে বল ছাড়া এই ব্যাপার গুলো কমে যাচ্ছে ওর খেলা থেকে। ও কি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত কোন ভাবে? কিন্তু কেন? চেন্নাই এর সাথে এটিকে ড্র করল। কিন্তু আমি ভাবলাম ওকে আজকে আমি ফোন করব। ওকে শাসন করা দরকার। কার সাথে রাতে ওর ফোন ব্যস্ত থাকে আমাকে জানতেই হবে। ও রাতে না ঘুমোলে ক্লান্ত তো হবেই। এই প্রিমিয়াম লেভেলের খেলা তে ও বুঝতে পারছে না ওকে কতখানি শারীরিক ভাবে ফিট থাকতে হবে? ভয় ধরে গেল বুকে আমার। এ কীসের পাল্লায় পড়ল ও? সব দোষ আমার। আমি ছাড়া ওকে কেউ কন্ট্রোলে রাখতে পারে না। কেন যে মরতে এতো ভাবতে গেলাম সেদিনে? এখন তো সেই ওর পায়ে পরতে চাইছি আমি। সেদিনেই সব কিছু ইগো ছেড়ে সাবমিটেড হয়ে যেতাম আমি ওর কাছে। মনের, শরীরের ইচ্ছে মিটিয়ে নিত ও। ও তো অন্য কাউকে খুঁজত না আর। উফ ভাবতে পারছি না। সাড়ে দশ টার সময়ে কল করলাম ওকে আমি।খুব অসহায় লাগছে আমার। ফোন ই তো ধরে না এখন আর। অনেক পরে ধরে। ধরলেও আগের মতন হয়ে আর কথা বলে না। যাক ধরেছে। বলল খুব সাধারন ভাবে আমাকে,
-     হ্যাঁ বল

আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। বললাম
-     কি রে? আজকে এতো বাজে খেললি কেন?
-     কি করব? গার্ড এ রেখেছিল আমাকে?

মিথ্যা বলতে শিখেছে। ও কি ভাবে আমি খেলা বুঝি না? গার্ডে তো রাখবেই। ভাবলাম, এই রকম গার্ডে তুই লক্ষ্য থেকেছিস। সেই খান থেকে বেরোন জলভাত তোর কাছে। প্রায় চেঁচিয়ে উঠলাম আমি,
-     বাজে কথা কেন বলছিস তুই? তুই ক্লান্ত আছিস। তোকে ফিট লাগছে না রাকা।

আবার ঠাণ্ডা স্বরে বলল আমাকে,
-     তাহলে, তুই তো জানিস আমি ক্লান্ত। পেঁয়াজি করছিস কেন তবে আমার সাথে? ফোন রাখ। ঘুমাবো আমি। ষোল টা ম্যাচ খেললাম আমি। টায়ার্ড হয়ে যাওয়া টা স্বাভাবিক তাই না?

থ হয়ে গেলাম আমি কথা শুনে। আমাকে বাজে কথা, গালি, খিস্তী অনেক মেরেছে ও। কিন্তু এই রকম ইগনোর আমাকে কোন দিন ও করে নি। মাথা ঠান্ডা রাখলাম আমি, বললাম,
-     রাকা তুই সবে একুশ। এখন এক মাসে আঠেরো টা ম্যাচ খেললেও তুই ক্লান্ত হবি না। কেন আমাকে ফালতু বোঝাচ্ছিস? এই ক্লান্তি টা ম্যাচ খেলার নয়। তুই রাতে ঘুমোচ্ছিস না। কি হয়েছে তোর?

সত্যি টা সামনে চলে আসায় মনে হল উল্টো দিকে বেশ অস্বস্তি। কিন্তু সেটা কে কাউন্টার করল ও ভয়ঙ্কর বাজে ভাবে। বলল,
-     বাজে বকিস না তো। কোন ছোট বেলায় চারটে ম্যাচ খেলে সর্বজ্ঞ হয়ে গেছিস নাকি? রাখ আমি ঘুমাবো এখন।

কেমন অস্থির লাগছিল ওর কথা শুনে। বুঝলাম, আমাকে দমিয়ে দিতে চাইছে ও। সত্যি টা বাইরে আসতে দিতে চাইছে না একদম। সমস্যা নেই, ও আমাকে অপমান করুক। আমাকে অবহেলা করুক।আর এই রাকাই একদিন আমার মুখে কেমন খেলেছি না শুনলে পাগল করে দিত, সে আমাকে এই কথা বলল? ওকে বুঝিয়ে দিতে হবে, আমি খেলিনি তাই ওর জায়গায় পৌঁছোই নি। আর ওর থেকে খেলা টা আমি কম বুঝি না। এতোক্ষন ভাবছিলাম ও আমাকে অপমান করুক। আমি তো সাবমিটেড হতেই চেয়েছিলাম। কিন্তু এবারে অপমান টা ও আমাকে করল না, করল আমার বুদ্ধি কে আমার শিক্ষা কে। আমার মেইল ইগো টা একেবারে সদর্পে আমার মাথায় চেপে বসল যেন। মারাত্মক রেগে গেলাম আমি। ভাবলাম ও আমাকে জীবন থেকে সরিয়ে ফেলুক, কিন্তু নিজের কেরিয়ার টার কথা ও ভাববে না একবার? সেই ছোট বেলার মতন হয়ে গেলাম আমি। চেঁচিয়ে বললাম ওকে আমি
-     ঘুমোবি, নাকি ফোনে কথা বলবি অন্য কারোর সাথে?

বাস ওদিক থেকে একেবারে আওয়াজ আসা বন্ধ হয়ে গেল। পরক্ষনেই চেঁচিয়ে বলল ও আমাকে
-     বেশ করব কথা বলব অন্য কারোর সাথে। তাতে তোর কি? তোর সাথে বলছি না বলে তোর হিংসে হচ্ছে নাকি।
-     শাট আপ। জানোয়ার ছেলে। এতো রাতে আমি মরে গেলেও তোর সাথে কথা বলতাম না। আমি আর যাই হোক অমানুষ নই। তোর খেলার থেকে আর তোর থেকে ইম্পর্ট্যান্ট আমার জীবনে কিছু ছিল না , না থাকবে কোন দিন।

ফুঁসছি আমি কথা গুলো বলে। ওদিকে আবার চুপ। আমি থামলাম না, বললাম প্রচন্ড চেঁচিয়ে,

-     খবর্দার রাকা, রাত জেগে কথা বলবি না। আই এম লিস্ট বদারড, হুম ইউ আর টকিং উইথ। আই এম বদারড এবাউট টাইমিং ওনলি। তুই টাইম বদলা। তুই সন্ধ্যে বেলায় কিম্বা দুপুরে কথা বল। যার সাথে ইচ্ছে কথা বল তুই। কিন্তু রাত টা কেন বেছে নিয়েছিস তুই? লজ্জা করে না তোর? তোর কেরিয়ারের জন্য তোর বাবা মা কত স্যাক্রিফাইস করেছে! পুরো রুদ্রপুর কত আনন্দ, কত গর্ব করে তোকে নিয়ে, আর তুই এই সামান্য কারনে রাত জেগে থেকে নিজের খেলা নষ্ট করছিস?
-     থাম তো। জ্ঞান দিস না। নিজের চরকায় তেল দে।

আমি তো বিশ্বাস করতে পারছি না উল্টো দিকে রাকা আছে। আগের মতন হাসি মজা করে আমাকে রাগানোর জন্য বলছে না ও। দুজনাই রেগে আমরা। আর ও কথা গুলো বলছে আমাকে ভয়ঙ্কর ইগনোর করে। আমি বুঝতে পারছি ভাব টা। মানে আমার কল কেটে গেলেই ও বেঁচে যায়। আর একটা সময় ছিলো যখন, আমি না ও কে আগে কাটবে কল টা সেই নিয়ে ঝামেলা হয়ে আরো আধ ঘন্টা কথা যেত আমাদের। যখন বুঝলাম ও সত্যি রেগে আছে, তখন ঠাণ্ডা হলাম আমি। আমি তো সাবমিটেড হতে চেয়েছিলাম। এখন ঝগড়া করছি কেন? ভাবলাম ক্ষমা চেয়ে নি যদি কথা শোনে। বললাম,
-     আচ্ছা আচ্ছা সরি। ভুল হয়ে গেছে আমার। কিন্তু বল রাত জেগে কথা বলবি না আর। আচ্ছা বেশ আমার ফোন পছন্দ করিস না আর করব না ফোন, কিন্তু কথা দে, রাত জেগে আর কথা বলবি না। প্লিইইইইইইইইইইইজ।

শেষ কথা টা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললাম আমি। জলের ধারা চোখ থেকে গড়িয়ে গালে নেমে এসেছে আমার। বললাম
-     কই রে? বল কিছু। ওই !!!

কেটে গেলো ফোন টা ওর। কেটেই দিলো হয়ত। মারাত্মক ভয় পেয়ে গেলাম আমি। কীসের ভয় নিজেই বুঝতে পারছি না আমি। ওকে হারিয়ে ফেলার ভয়, নাকি ওর কেরিয়ারের ভয়? ভিতরের পুরুষ টা বেগতিক দেখে পালিয়েছে। এখানে ওর কাজ তো ছিলই না। শুধু মুদু আমাকে ভরকি দিয়ে চলে গেল সে। কি করব আমি? এবারে মতন তো লীগ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু ও যার সাথেই কথা বলুক তাকে বিয়ে করে নিক। এই রাত জেগে কথা বলে পরের দিন খেলবে কেমন করে? সেই বা কেমন মেয়ে? আমি রাকা কে জীবনে রাতে জাগিয়ে রাখি নি। আর ও কেমন ভালোবাসে রাকা কে যে অন্য সময়ে কথা বলতে পারে না। বা তিনটে মাস তার অপেক্ষা করার সময় নেই? না মেয়ে ভালো না। কবে যে আসবে ও? কার সাথে কথা বলব আমি এখন? আন্টির সাথে কথা বলব? কিন্তু আন্টি আমাকে ভালো বাসেন। আমি বললে আন্টি হয়ত আমাকে কিছু বলতে পারবেন না, কিন্তু মনে মনে তো চাইবেন যাতে আমার সাথে রাকার সম্পর্ক টা না হয়।

দুটো দিন আমি কাটালাম মারাত্মক মনো কষ্টে। মা কেও কিছু বলতে পারছি না আমি। বললেই তো রাকার সাথে আমার সম্পর্ক সামনে চলে আসবে। নাহ থাক। রনি কে বলি দেখি ও কি বলে।রনি কে ফোন করলাম আমি। রনি কে বললাম রাকার সাথে আমার ফোন কলের ব্যাপার টা। ও বেচারী ব্যস্ত আছে ওর একটা স্টল নিয়ে। কিন্তু আমাকে সময় দিল। বলল,
-     হুম জানতাম এমন টা হবে।
-     কেন কি জানতিস?
-     দ্যাখ কানা ঘুষো খবর আসছে, রাকা আর অঞ্জনা প্রেম করছে।

বুক টা ধড়াস করে উঠল আমার। হয়ত আমার পছন্দ মত হলো না ব্যাপার টা। কিন্তু আমি তো আসলে এটাই চেয়েছিলাম, ও একটা প্রপার মেয়ের সাথে প্রেম করুক। কিন্তু আমার কেন এতো বাজে লাগছে এবারে। রনি কে বললাম
-     তুই ঠিক জানিস?
-     না ঠিক তো জানিনা, তবে খবর তো আসেই রে উড়ে উড়ে।

চুপ করে গেলাম আমি। কি যে বলি এখন। সে বেশ করছিস প্রেম করছিস। কিন্তু তুই ভালো খেলিস বলেই তো তোর ছোট বেলার ক্রাশ অঞ্জনা কে পেয়েছিস। সেই খেলা টা কে ইগনোর করছিস কেন? রনি কে বললাম
-     সে ঠিক আছে, কিন্তু রাত জেগে কথা বললে খেলবে কি করে বলত?

রনি কিছুক্ষন চুপ করে রইল ফোনে। তারপরে বলল
-     দ্যাখ, সব ই বুঝতে পারছি আমি। কিন্তু কি জানিস, ও এখন বাধন ছাড়া হয়ে গেছে। এই তীব্র সাফল্য তারপরে পুরোন ক্রাশ।

আমি বললাম,
-     না না সে ও ওকেই জীবনে নিয়ে চলুক, কিন্তু খেলা টা কে বিসর্জন দিয়ে?
-     কি করবি? ও তো আর তোর হাতে নেই আগের মতন। দোষ তো তোর ই বল? তখন কত করে তোকে বললাম, তোর এই সব চিন্তা ভাবনা ছেড়ে ওকে বল তুই ওকেই ভালোবাসিস। দ্যাখ এখনো সময় চলে যায় নি। আমি উড়ো শুনেছি, সত্যি না ও হতে পারে। তুই ও একটু দেরী তে বুঝিস। এই তো এলো আগের সপ্তাহে, একদিন ই ছিল। তুই বলে দিতে পারতিস।

ওর আগের কথা গুলো ভাবার কোন অবকাশ পেলাম না আমি। কিন্তু আগের সপ্তাহে এসেছিল মানে? আমি উড়িয়েই দিলাম ওর কথা,
-     ধুর কি বলছিস আগের সপ্তাহে এসেছিল কোথায় ও। ও চারমাস রুদ্রপুরে আসে নি।
-     সে কি? তোর সাথে দেখা করেনি? আমি তো তোকে ফোন করিনি এই ভেবে তুই থাকবি ওর সাথে , সময় কাটাবি তাই।
-     কি বলছিস তুই? তুই কি ভাবে জানলি?
-     আমাকে ফোন করেছিল, বাগডোগরা থেকে একটা গাড়ীর জন্য।আমি করে দিয়েছিলাম ওকে গাড়ী। ফেরার গাড়ী ও করে দিয়েছিলাম। 

বুকটা খালি খালি লাগছিল আমার খুব। এটা কি ভাবে সম্ভব? ও এলো আমাকে জানালো না? আগে দশ দিন আগে থাকতে বলত আমাকে। গ্র্যান্ড ওয়েলকাম করতাম আমি ওর। ও সেটা পছন্দ করত খুব। ও চিরকাল ই চাইত আমি ওর কাছে নুয়ে থাকি। বিশেষ করে মেয়ে হবার পর থেকে। আমার আপত্তি ছিল তাতে। কিন্তু ওর আসার দিনে আর যাবার দিনে আমি নুয়েই থাকতাম ওর কাছে। ও যেমন ভাবে চাইত আমি থাকতাম। যা বলত করতাম। ওর কথা মতন ওর বাড়িতে থেকে রান্না বান্না ও করতাম আমি। খোলা চুলে থাকতাম, যেমন টা ও চাইত। ও সেটা এনজয় করত। আর আমার ওতেই আনন্দ ছিল। কিন্তু এটা কেমন হলো যে ও একবার আমাকে জানালো না ও রুদ্রপুরে আসছে? চুপ করে গেলাম আমি একেবারে। মনে তুফান আমার। রনি একেবারে চুপ করে ছিল। চোখ দুটো জলে একেবারে ভরে গেছে আমার। গলার কান্না আটকে। কথা বলতে গেলেই কেঁদে ফেলব আমি। আন্টিও আমাকে খবর দিলো না একবার ও? বুঝেছি, আন্টি ও চান না আমার সাথে রাকার কোন রকম সম্পর্ক। আমি আন্টি কে বলে দিয়ে আসব যে আমার তেমন কোন ইচ্ছে নেই। মানে ইচ্ছে নেই আন্টি তোমার ঘরে রাকার বউ হিসাবে আসার। ব্যস ও যেন বন্ধুত্ব টা নষ্ট না করে। আমি হাতে পায়ে ধরে নেব আন্টির। ও আমার থেকে দূরে চলে গেলে, আমি যে তাহলে শেষ হয়ে যাব একেবারে।

পরের দিন ই আন্টির বাড়ি গেলাম আমি। আমাকে দেখেই আন্টি বেড়িয়ে এলেন। সন্ধ্যে দিকে গেছিলাম আমি। আমাকে ঘরে বসতে বললেন আন্টি। বললেন রান্না ঘর সেরে আসছেন। আঙ্কল ফেরেন নি এখনো। আমার মন ভালো নেই। রনি র সাথে কথা হবার পর থেকেই আমি কাঁদছি প্রতি মুহুর্তে। পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে আমার। আন্টি ঘরে এলেন আঁচলে হাত মুছতে মুছতে। আমাকে বললেন,
-     কত দিন আসিস নি কেন রে? রাকা নেই বলে আসতে নেই আমাদের কাছে?

আমি আন্টি কে দেখলাম। ভাবলাম, আন্টি তুমি তো চাও না আমি আসি। তাই তো রাকা এলো আর আমাকে খবর ও দিলে না। ভাবলাম, আমি আর ত্র্যম্বক নেই। আমি এখন শিবানী। আগের মতন ইগো নিয়ে থাকলে চলবে না। আন্টি ভালো খারাপ যাই বলুন, আমাকে ব্যাপার টা খুব ট্যাক্ট ফুলি পার করতে হবে। আন্টির সামনে কোন রকম ইগো ,রাগ রিশ দেখালে হবে না। আন্টি কাছে আসতেই আন্টি কে জড়িয়ে ধরলাম আমি। আঁকড়ে ধরা যাকে বলে। দু হাতে জাপটে একেবারে। চোখে জল এলো একেবারে ছাপিয়ে আমার।  আন্টি কিছু বললেন না প্রথমে আমাকে। একটু পরেই দেখলাম দুটো হাত আমার পিঠে দিলেন। তারপরে একটা মাথায়। চুলে বোলাতে লাগলেন। ততক্ষনে আমি আন্টি কে জড়িয়ে ধরে ফোঁপাতে লেগেছি। ডুকরে ডুকরে কান্না বেরিয়ে আসবে আমার এবারে। আন্টি বুঝতে তো পারছেন কিছু হয়েছে আমার। কিন্তু কি হয়েছে সেটা বুঝতে না পেরে আমাকে ওই ভাবে জড়িয়ে ধরে বললেন বড় আদর করে,
-     শিবানী!!! ও শিব! কি হয়েছে মা? কান্না কীসের? আন্টি কোন ভাবে শিব কে কষ্ট দিলো নাকি? ও মা শিব। মা রে! দ্যাখ আমাকে! কি হয়েছে আমাকে বলতো।

আমি কান্নায় ভেঙ্গে পরলাম একেবারে। আন্টি কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললাম
-     ও আন্টি, আমি কোন ভুল করেছি তোমার কাছে? আমাকে তুমি এত দূরে করে দিয়েছ কেন?

আন্টি চমকে উঠলেন মনে হলো। আমি কাঁদতে কাঁদতে বলছিলাম হয়ত বা বুঝতে পারেন নি, বললেন
-     কি বলছিস তুই পাগলী? তুই কি ভুল করেছিস? আর আমি তোকে দূরে সরিয়ে দেবো? কি হয়েছে বল তো আমাকে।

আমি ওই ভাবেই কাঁদতে কাঁদতে বললাম আন্টি কে,
-     রাকা এসেছিল আমার সাথে দেখা করে নি জানো? তুমিও আমাকে বলনি কেন, ও এসেছে? প্লিস আন্টি, আমি ওর জীবনে কোন ভাবে থাকব না। কিন্তু ও আমার থেকে দূরে চলে গেলে আমি মরে যাব আন্টি। কিছু তো চাই না বল? শুধু ওর সাথে আগের মতন বন্ধুত্ব রাখতে চাই আমি। জানি কোন ভাবেই আমি ওর যোগ্য নই। তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পার। আমি কোন দিন ও ওর জীবনে আসতে চাইব না। এই তোমার পা ছুঁয়ে আমি কথা দিলাম।

এই বলে আমি হাঁটু মুড়ে, ঝুঁকে আন্টির পা ধরে নিলাম। আন্টি থ হয়ে আছেন একেবারে। রেগে গেছেন নিশ্চয়ই খুব। আমি সেটা দেখে পা দুটো কে আঁকার করে ধরলাম একেবারে। আমার স্থির বিশ্বাস ছিল আন্টি আমার উপস্থিতি মানতে পারছেন না রাকার জীবনে। না কোন মা ই মানতে পারবে না। কিন্তু আমি তো রাকা কে আটকে দিয়েছি। তারপরেও কেন আন্টি আমাকে এই শাস্তি দিচ্ছেন?  আন্টির মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম,

-     এই তোমার পা ছুঁয়ে আমি বলছি, আমি ওর জীবনে ঢোকার কোন ভাবেই চেষ্টা করব না গো আন্টি। কিন্তু তুমি ওকে আমার সাথে বন্ধুত্ব টা রাখতে বোল প্লিস আন্টি প্লিস!!! আমাকে এই ভাবে ওর থেকে দূরে করে দিও না গো।

আর পারলাম না। কাঁদতে লাগলাম আমি একেবারে বাচ্চাদের মতন। নিজেকে রুখতে পারছিলাম না। ভাবছিলাম আমার কান্না দেখে আন্টি যদি একটু সদয় হন। আন্টি একেবারে থ হয়ে আছেন। মুখে একটা অদ্ভুত কাঠিন্য। আমার হাত ধরে তুললেন। আমাকে বিছানায় বসালেন। ভীষণ ঠাণ্ডা গলা মনে হলো আন্টির। বললেন
-     কি বললি? রাকা এসেছিল? কবে?

চমকে উঠলাম। আন্টির দিকে চেয়ে দেখলাম রীতিমত রাগে ফুঁসছেন আন্টি। রাগুন উনি। আমাকে জানতেই হবে কেন আন্টি আমাকে খবর দেন নি। বললাম ওই রকম কাঁদতে কাঁদতেই,
-     গত সপ্তাহে। রনির কাছে গাড়ী নিয়েছিল বাগডোগরা থেকে আসবে বলে।
-     সে কী? আমি জানি না সেটা?
-     মানে? তোমাকেও বলেনি ও?
-     কি বলবে?

আমিও থ হয়ে গেলাম এবারে। এতো রেগে গেলে কেউ অভিনয় করতে পারে কি? আন্টি জানেন না রাকা এসেছিল? কি হচ্ছে ব্যাপার টা? আন্টি আমাকে লোকাচ্ছেন না। আন্টি জানেন না ও এসেছে। আমাকে বলে নি ও এসেছে। ও তবে এলো কোথায়? অঞ্জনার বাড়িতে? নাহ এটা আন্টি কে বললে হবে না। আমি তো এই কথা টা বলেই কেলো করে দিলাম। রাকা ঝাড় খাবে এখন। ইশ ছিঃ ছিঃ কি কি সব বলে ফেললাম আমি আন্টি কে। যেগুলো আন্টি জানত না, এখন সেগুলো ও জেনে গেল। একেবারে চুপ করে গেলাম আমি। কি দরকার ছিলো ওর আন্টি কে না জানিয়ে রুদ্রপুরে আসার? অথচ রনি কে বলল। এতো বোকা তো ও নয়, যে রনি জানবে আর ও ভাববে আমি জানতে পারব না। তার মানে আমাকে জানাতেই ও রনি কে বলেছিল। ওর রোজগার এখন কোটি তে। বাগডোগরা থেকে যেকোন গাড়ি করে এখানে আসতে ওর ব্যাঙ্ক ব্যালান্স কমে যেত না। তার মানে ও আরে ঠারে আমাকে বোঝাচ্ছে? সেটাই আশ্চর্য্য লাগছে যে এই ভাবে বোঝাচ্ছে কেন আমাকে। সোজাসুজি কথা বলার ছেলে ও। আমি মেয়ে হবার পরেও কত মেয়ে দেখত আমার সামনে। এখন এতো ঘুর পথ নিচ্ছে কেন? আন্টির কথায় চমক ভাঙল আমার,
-     কি রে কি বলবে বল?

আমতা আমতা করলাম আমি। চোখের জল মুছে বললাম
-     তোমাকেও কেন লোকালো ও?
-     সেটাই তো ভাবছি রে। তুই আর কিছু জানিস মনে হচ্ছে। কি লোকাচ্ছিস শিব আমাকে বল!!

আমি ভাবছি বলব কিনা। নাহ বলে দেওয়াই ভাল। যদি ঠিক না হয়? কিন্তু আমার যুক্তি বলছে এটা বেঠিক না হওয়ার কোন কারন নেই। বুক টা দম ধরে এলো আমার। হতে পারে মেয়েটা অঞ্জনা নয়।কিন্তু এই কারনেই ও রুদ্রপুরে এসেছিল। আর আমাকে বুঝিয়েছে রনি কে বলে। কিন্তু যেই হোক সে ভালো মেয়ে না। সে রাকাকে নয়, রাকার ফুটবল না, রাকার নাম যশ কে ভালবেসেছে। সেটা আমি মানতে পারছি না। আন্টি আমাকে ঝাঁকালেন,
-     কি রে বল!!!
-     না মানে আমি শুনলাম, ছোট থেকে ও যে মেয়েকে ভালবাসত , অঞ্জনা, ওরা দুজনে প্রেম করছে এখন।

আন্টি পাত্তা দিলেন না কথা টা। বললেন
-     দুত্তেরি! ওই কথা কে জিজ্ঞাসা করেছে। তোর সাথে কি হয়েছে বল। ও প্রেম করতেই পারে, কিন্তু যে ছেলে, মায়ের কাছে মার খেলে তোকে গিয়ে বলত, সে এতো বড় খবর তোকে দেয় নি কেন? আর কি বলছিলি তখন? আমার ছেলের জীবনে ঢুকবি না। কি বলছিলি ওসব। তোকে কে বলল, তুই আমার ছেলের জীবনে আছিস বলে আমি কষ্টে আছি?? না না, পরিষ্কার করে বলত কি হয়েছে তোদের?

আমি প্রমাদ গুনলাম এবারে। আমি আন্টির কাছে এসে আন্টি কে কষ্ট দিয়ে ফেললাম। সত্যি আমি ভেবেছিলাম, আন্টি চান না আমি রাকার জীবনে থাকি। রাকা তো মা কে ভয় পায় খুব। তাই হয়ত আমাকে এভোয়েড করছে। কিন্তু রাকা বাড়িতেও বলে নি ও এসেছে, আর সেটা আন্টি কে কষ্ট দিল আমি নিশ্চিত। আন্টি এবারে বললেন কিন্তু বেশ রেগে। আমার কাঁধ দুটো কে ধরে বললেন,
-     ব অ অ ল। কি হয়েছে? আমাকে অনেক কথাই বলে না। কিন্তু তোকে বলেনি, এটা ভালো না। আমি ওর মা। অনেক কিছু লোকাবে আমার থেকে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তোর কাছে লোকাচ্ছে মানে, ব্যাপার টা ঠিক না। কি হয়েছে তোর সাথে আগে সেটা আমাকে বল।তোকে কেন লোকাচ্ছে ও।  না বললে, শিব আমি কোন ভাবে সাহায্য করতে পারব না। চুপ থাকিস না আর।

আমি চুপ রইলাম। বলা কি ঠিক হবে আন্টি কে? নাহ বলেই দি। আর এটাও তো বলে দেব আমি ওর জীবনে থাকব না। আন্টির তো রাগ হবার কথা নয়। বলে দিলাম আন্টি কে।
-     আসলে আন্টি, যেবারে সিনেমা দেখতে গেলাম, তখন আমাকে ও প্রপোজ করেছিল

আন্টি চুপ করে গেলেন। কিছুক্ষন পর বললেন
-     হুম, তারপরে? তুই কি বলেছিলি।
-     না না আন্টি আমি না বলেছিলাম। আমি রাজী হইনি।

আমাকে অবাক করে আন্টি আমাকে বললেন
-     কেন না করলি কেন?

চুপ রইলাম আমি। আন্টির সামনে বলতে পারছি না একদম ব্যাপার টা। আন্টি নাছোর বান্দা। আমাকে আবার নক করলেন আন্টি
-     কি রে না করলি কেন তুই? ওকে ভালোবাসিস না? আমি তো জানি তোর থেকে ভালো আমার ছেলেকে আর কেউ বাসে না।

অবাক হয়ে তাকালাম আন্টির দিকে আমি। আন্টি কি ভাবে জানলেন এই কথা? চুপ রইলাম আমি। কি করে বলি আমার মনের দোলাচল? তাও বললাম আন্টি কে
-     আমি যে ওর যোগ্যা নই আন্টি
-     কেন?

অনেকক্ষণ চুপ থাকলাম। বুঝতে পারছিলাম না, কি ভাবে বলব। তাও লজ্জার মাথা খেয়ে বলেই দিলাম,
-     সম্পর্ক এগোলে, এক সাথে থাকার জেদ করত ও। আর আমি কোন দিন ও মা হতে পারতাম না। এই সব জেনে কি ভাবে ওর প্রস্তাবে রাজী হই বলো? ভালো তো বাসি ওকেই। ওর পরবর্তী জীবন টা নিজের স্বার্থের জন্য নষ্ট হতে দিতে পারি না।

আন্টি বিছানায় আমার পাশে বসে পরলেন। চুপ করে রইলেন অনেকক্ষণ। বললেন
-     বড্ড বেশী ভাবিস। আমাকে বলবি না একবার ও এই কথা গুলো। আমি হাসপাতালে চাকরি করি। কতো লোকে সারোগেসি করায়। কত রাস্তা আছে। দুজনের দুজন কে ভালো লাগলে, একবার তো কথা বলবি আমার সাথে কিম্বা তোর মায়ের সাথে? তোর মা জানে?

মাথা নেড়ে বললাম, জানে না। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন আন্টি
-     এখন আর কেঁদে কি হবে? হাত থেকে তির তো বেরিয়ে গেছে। ছেলেরা ওমনি  হয় রে। ছুট দিয়েছ কি সব শেষ করে দেবে এক মুহুর্তে। নাহ ওকে না বলে দেওয়া তোর উচিৎ হয় নি।
-     কি করব বলো? আমি কি করে জানব, আমি না বলতেই ও অঞ্জনার দিকে ঝুঁকবে? আর তাতে আমার এখনো আপত্তি নেই। কিন্তু ও কথা বন্ধ করে দিলো কেন? আমাকে রীতিমত অপমান করেছে ও সেদিনে ফোনে। সেই জোর টাই আমার আর নেই ওর উপরে।
-     সেটাই স্বাভাবিক তাই নয় কি? তুই বল, তুই অঞ্জনার জায়গায় থাকলে, ওকে দিতিস তোর মতন এমন সুন্দরী, আর এমন একটা বন্ধুর সাথে মিশতে?

ঘাড় নেড়ে, এবারেও না বললাম আমি। আন্টি দেখে বললেন
-     তবে? অঞ্জনার তো দোষ নেই। দোষ রাকার। আর দোষ তোর। রাকার দোষ কারন ও বোঝেই না তোর ভালোবাসা টা, আর তোর দোষ তুই ওকে ছেড়ে দিলি। ধরে রাখলি না নিজের কাছে। বলতে পারতিস, তুই ভালো করে খেলে আয়, আমি অপেক্ষা করব। ও জানোয়ার ঠিক এসে হাজির হতো। এই সব ইতরামো গুলো করত না।

আমি যেন অধৈর্য্য হয়ে উঠলাম একেবারে। সত্যি ভাবিনি এই কথা। মনে হয়েছিল, আমি তো ওকে ভালোবাসি। ওকে ট্রিক করে আটকে রাখতে তো চাই নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেটা করলেই ভাল হতো। মাথা নিচু করে বসেছিলাম আমি আন্টির পাশেই। আন্টি বললেন,
-     শোন, পরের সপ্তাহে ও আসবে। তোকে ফোন করে দেব। সেজেগুজে আসবি। একেবারে লাখে একটা হয়ে। সেদিনে ওকে বলবি তুই রাজি । বুঝলি? কি রে রাজী তো নাকি?
-     হ্যাঁ একেবারে।
-     আর কোন মনের ধারনা নেই তো?
-     না না আর কিচ্ছু নেই। যে ভাবে বলবে ও সেই ভাবেই আমি রাজী।

আন্টি মাথায় হাত দিলেন। মুখে হাসি। বললেন
-     কোথায় একটা সুন্দরী মেয়ে, ছেলেরা নাচবে তোর ইশারায়। তা না নিজেই নেচে মরছিস।

লজ্জা পেলাম আন্টির কথায়। বললাম চেননা তো নিজের ছেলেকে তাই বলছ। দরকার নেই বাবা ওকে নাচিয়ে। কেরিয়ার খারাপ হয়ে যাবে ওর। তার থেকে নিজেই নাচি। ও ঠিক থাক।
[+] 6 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply
সামনেই পরীক্ষা ছিল আমার। তাও মায়ের কাছ থেকে হাজার চারেক টাকা নিয়ে পার্লার এ গেলাম, রাকা আসার দিন তিনেক আগে। চুল টা লম্বা হয়ে গেছিল আমার। স্টেপ করে কাটালাম আমি। সামান্য ছোট করলাম চুল টা। নিজেকে দেখেই দারুন লাগছিল আমার। মনে হলো, এতে কেউ না পটলে তার জন্য স্বর্গের অপ্সরা লাগবে। হরমোনাল ইফেক্ট এ স্কিনের গ্লেজ মারাত্মক সুন্দর ছিল আমার। ওরা অনেক খুজেও হাতে আর পায়ে সামান্য লোম  পেল না আমার। নেইল আর্ট পছন্দ করতাম তাই হাতে আর পায়ের নেইল আর্ট করে বাড়ি ফিরেছিলাম আমি। মা আমাকে দেখে আঙ্গুল কেটে আর শেষ করতে পারছে না।

রনি কে বলেছিলাম কথা টা। রনি আনন্দের সাথেই বলেছিল আমাকে, ও যাবে আমার সাথে। আমিও রাজী হয়ে গেছিলাম। ওর সামনেই না হয় আমি আর রাকা একসাথে জীবন কাটানোর প্রতিজ্ঞা নেব। রনি সেই সময়ে পাশে থাকলে আমার খুব ভাল লাগবে। মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম। তিন জনে চলে যাব আমরা পিছনে আমাদের আড্ডার জায়গায়। ওখানে গিয়ে রাকার পায়ে ধরে নেবই যাতে ও আমাকে ক্ষমা করে দেয়। এখানে আমি অঞ্জনার থেকে একটু হলেও প্রিভিলেজ পাব। আমরা এতোদিনের পুরোন বন্ধু। আর এর পর থেকে ও যা চায় তাই দেব আমি ওকে। কনফিডেন্ট ছিলাম আমি, রাকা আমাকে একটা চান্স দেবেই। আর ওটাই দরকার আমার। নিজের যা আছে আমি সব ওর জন্য সঁপে দেব। শুধু ও যেন ভালো ভাবে আমাকে মেনে নেয়। আর ভালো ভাবে খেলা টা চালিয়ে যায়।

এই সব ভেবে, নিজেকে কনফিডেন্ট লাগল আমার বেশ। যেদিনে আমার যাবার কথা ছিল, আন্টি কাজে যাননি। আমাকে ফোন করে দিয়েছিলেন সকালে। আমি নিজেই শাড়ি পরেছিলাম সেদিন। খারাপ পরিনি। আমার মা কে পরিয়ে দিতে বললে শত প্রশ্ন করত মা। রাকার সাথে গত কয়েক দিনের টানাপোড়েন মা আন্দাজ করেছিল। আমার মন খারাপ করে থাকা হয়ত মায়ের ও নজরে এসেছিল। কিন্তু আজকে সকাল থেকে আমার মন ছিল ভাল। স্নান করে, নিজেকে একেবারে শেষ অব্দি পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম আমি। একবার ছেড়ে দুবার শাম্প্যু করেছিলাম মাথায় সকালেই। যাতে আমার চুল শুকিয়ে যায় যাবার আগে। কানের পরেছিলাম প্রথমবার আমার কানের ফুটো হবার পরে। ছোট একটা হনুমানের গদার আকারে কানের ছিল আমার। ভালো লাগত আমার সেটা। নর্ম্যাল আমেরিকান ডায়মন্ড দিয়ে সাজানো দুটো বালা পরেছিলাম দু হাতে। কপালে টিপ পরেছিলাম একটা ছোট্ট হলুদ রঙের। কারন শাড়ি টা হলুদ শিফনের পরেছিলাম আমি।

মা আমাকে দেখে মুচকি হেসে বলেছিল বাপির স্কুটি টা নিয়ে যেতে। জানত মা রাকা আসবে। আমার কোন সাজের কি মানে সেটা মা দেখলেই বলে দিতে পারত। মা কে প্রণাম করেই বেড়িয়েছিলাম আমি। ভাবছি ঠাকুর আজকে এই আশির্ব্বাদ টা কোর আমাকে। রাকা যেন আমাকে গ্রহন করে। দেরী না হয়ে যায় আমার জীবনে। আমি আর রনি যখন পৌছুলাম, দেখলাম রাকা বাড়িতেই। বাব্বাহ সেই পাঁচ মাস বাদে দেখলাম ছেলেটা কে। ঘরে ছিল, বেরিয়ে এলো বাইরে। আন্টি ও আমার দিকে চেয়ে আছেন প্রশংসার চোখে। রাকাও দেখছে। দুজনের নজরেই অনেক অনেক ভালোলাগা ছিল। লজ্জা পেলাম এবারে। কিন্তু রাকা কে দেখেই তেড়ে গেলাম আমি স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গী তে।

-     কি রে জানোয়ার, বাঁদর, সেদিনে ফোনে আমাকে যা নয় তাই বললি। ক্ষমা চাইলাম, তাও ফোন কেটে দিলি। কি ভেবেছিস কি তুই? আমাকে এই ভাবে তুই কষ্ট দিবি?

এই বলে দুমাদুম কিল মারতে লাগলাম আন্টির সামনেই। থামছিলাম না আমি। আন্টি চুপ করে দাঁড়িয়েছিলেন। রনি গাড়ি টা বাইরে রেখে ততক্ষন ভিতরে এলো। আমি কথা বলতে বলতেই কিল পারছিলাম ওর বুকে হাতে
-     যা খুশি কর আমাকে, অপমান কর, মার,খারাপ কথা বল, কিন্তু কথা বলছিস না কেন? কি রে উত্তর দে?

রাকা চুপ করে রইল। না তো আমাকে আটকালো। না আমাকে একটা কথা বলল। উত্তর পেলাম আমি সেই সময়েই, যখন ঘর থেকে বেরিয়ে এলো অঞ্জনা, অঞ্জনার মা, স্মিতা আন্টি আর অঞ্জনার বোন। সেটা দেখেই আমার হাঁটু কেঁপে গেল। বুকের মধ্যে হাজার দামামা বাজতে শুরু করল। মনে হলো আমার আশা নেই আর কোন ভাবেই। এই পরিস্থিতি তে পরব আমি ভাবিনি কোন দিন। আন্টি আমাকে আজকে কেন ডাকলেন? আমি কেমন জানিনা, ভয় পেয়েই একটু সরে গেলাম আন্টির কাছে। রাকাকে মারছিলাম আমি আমার অধিকারেই। রাকা কিছু বলছিল না, এমন আদরে ভরা মার ও অনেক খেয়েছে। কিন্তু এটা অঞ্জনার সহ্য হল না। ফুঁসছিল ও রাগে। আমাকে একবার দেখে নিয়ে, ওর মা কে বলল,

-     দ্যাখ মা কত বড় নির্লজ্জ। আন্টির সামনেই তার ছেলেকে এই ভাবে মারছে। রাকার ব্যাথার কোন পরোয়া ও করে নাকি?

অঞ্জনা সামনে আসতেই রাকা একটু সাবধানী হয়ে গেল। আমাকে ভালো লাগা টা ওর চোখে আর রইল না। আমি তখন আন্টির কাছে। আমার কাছে এটা অবাক করার ব্যাপার। আন্টির সামনেই আমি রাকার ঘাড়ে চেপে ঘুরে বেড়াতাম। হ্যাঁ আমার মা রাগ করত কিন্তু আন্টি কোনদিন রাগ করেনি। একটু হলেও আমি সামলে নিলাম। আন্টি চুপ করে আছেন আমাকে ধরে। আর রাকা অনেক টা মাথা নিচু করে তাকিয়ে। অঞ্জনা কে বললাম,
-     অঞ্জনা!! আমি ওকে লাগার মতন করে মারি না রে!

বলতে পারলাম না অঞ্জনা কে, রাকার এক সূচ্যাগ্র কষ্ট আমার কাছে শত শত হাতুরির আঘাতের সমান। আজকে ও আমাকে বলছে রাকার ব্যাথার কথা? কথা টা বললাম বটে, কিন্তু বলতে গিয়ে কান্না গলায় চলে এল আমার। রাকা আমার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে রইল। কিন্তু অঞ্জনা রাগে ফেটে পড়ল একেবারে। বলল,
-     সে আমি দেখেছি কেমন করে মারছিস তুই। যতই তুই মেয়ে হয়ে সেজে ঘুরে বেড়াস, তুই তো ছেলেই ত্র্যম্বক? তোর হাতে মারলে রাকার ব্যাথা লাগবে না এই কথা আর যে বিশ্বাস করুক, আমি করব না। তুই কি ভেবেছিলি, সুন্দরী সেজে ঘুরে বেরিয়ে রাকা কে ফাঁসিয়ে ফেলবি? তুই সত্যি কারের মেয়ে হলে এই কাজ টা করতে পারতিস না। এখন যা এখান থেকে, রাকার সাথে আমার অনেক কথা আছে।

যেতেই তো চাইছি এখান থেকে। পালাতেই ত চাইছি, এই খান ছেড়ে। পারছি কই। নাম টা ভুলতে বসেছিলাম আমি। আমার জীবনের সব থেকে বাজে সময়ের একটা পরিচিতি আমি চাইছিলাম না সামনে আসুক। যেমন ঘা, হলে তাকে ব্যাথা দিয়ে আরো ব্যাথা পেতে ইচ্ছে করে, তেমন ই আমার পা দুটো স্থানু হয়ে গেল আরো ব্যাথা পাবার আশায়। অঞ্জনা সেই ঘা টা আরো বেশি করে খুঁড়ে দিল আমার। আন্টি চুপ করে আছেন। বড় কঠিন চোখ। আগুন ঝড়ছে আন্টির চোখ থেকে। রাকা মনে হয় কি করবে বুঝতে পারছে না। ঘেন্না লাগছে আমার নিজেকে এবারে। আমি স্বপ্নে ভাবিনি এমন পরিস্থিতি তে আমাকে পরতে হবে। রনির দিকে তাকিয়ে দেখি ও বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে আছে অঞ্জনার দিকে। আমি কেঁদে ফেললাম এবারে। রাকা চুপ করে আছে। ও কেন বলছে না অঞ্জনা কে, যে তুই কেন শিব কে চলে যেতে বলছিস? ও আমার কতখানি তুই জানিস না? ব্যস এই টুকু বলে দিলে, আমি সারা জীবন কাটিয়ে ফেলব। এই টুকুই তো চাই এখন। এর বেশী আর কিচ্ছু চাই না। হ্যাঁ আন্টির কথায় আমি ভেবেছিলাম, রাকা আমাকে গ্রহন করবে, আরেক টা চান্স দেবে। কিন্তু এখন আর সেই বিশ্বাস নেই আমার। আমি একবার রাকার দিকে তাকিয়ে আছি আর একবার আন্টির দিকে তাকাচ্ছি। আন্টি আমাকে ধরে রেখে দিয়েছেন। কিন্তু রাকা? ও কেন বলছে না শিব তুই থাক যাবি না কোথাও। রনি বলল এবারে কথা,
-     কেন শিব কেন যাবে? শিব তো আজকে বলে না, গত আট বছর এ বাড়িতে যাতায়াত করে। গত এগারো বছর ওর রাকার সাথে বন্ধুত্ব। তুই রাকার সাথে কথা বল, কে মানা করেছে। ওকে যেতে বলছিস কেন?

রনির কথায় এবারে আন্টি মুখ খুললেন। রাকা কে বললেন,
-     রাকা তুই ওদের নিয়ে ঘরে যা। শিব কে নিয়ে ভাবতে হবে না।

আন্টি আমাকে নিয়ে রান্না ঘরে দিকে যাবেন সেই সময়ে অঞ্জনা বলল কথা। অঞ্জনার মা আর বোন দুজনাই চুপ এখন। কিন্তু অঞ্জনা বলল,
-     তবু তোর লজ্জা নেই না ত্র্যম্বক? এখন দাঁড়িয়ে আছিস এখানে। কি ভাবছিস? আন্টি ভদ্রতা করে বললেন, সেটাও বুঝলি না?

আমি যাচ্ছিলাম আন্টির সাথে রান্না ঘরে। কিন্তু কথা টা শুনে দাঁড়িয়ে পরলাম। সত্যি কি আন্টি ভদ্রতা করলেন? তাকালাম আন্টির দিকে। দেখলাম আন্টি আমার দিকে তাকিয়ে বড় মিষ্টি করে হাসলেন। ভরসা দিলেন আমাকে। তারপরে পিছন ঘুরে অঞ্জনা নয় রাকা কে বললেন,
-     রাকা, অঞ্জনা প্রথমবার আমাকে দেখল।আর শিব কে নিয়ে আমি গত আট বছর আছি। তুই ও আছিস। কাজেই  আমার চরিত্র অঞ্জনার জানার কথা নয়, আর ও জানেও না। আমার কাছে মুখে এক আর মনে এক, ব্যাপার টা নেই। এটা ওর জানার কথা নয়। কিন্তু তুই তো জানিস। ওকে মানা কর, আমার আর শিবের কথা ভাবতে। ওনারা তোর গেস্ট। আমার ছেলের গেস্ট। আমার কাছে বড় আদরের। মানা কর, আমার আর শিবের ব্যাপারে কথা বলতে। শেষ বার বললাম ।

আর অপেক্ষা না করে আন্টি প্রায় আমাকে টানতে টানতে রান্না ঘরের দিকে নিয়ে যেতে লাগলেন।  পিছন থেকে শুনলাম রাকা অঞ্জনা কে বলছে,
-     আরে তুমি চুপ কর। আমার মা কে কিছু বোল না। আমার মা এক আলাদা মানুষ।

অঞ্জনা হয়ত শুনল কথা টা। কিন্তু স্মিতা আন্টি বলে উঠলেন এবারে।
-     এত কথা হচ্ছে ওকে নিয়েই। এতো গুলো মানুষ চাইছে না ওকে। তবু লজ্জা নেই হিজড়ে টার।

আন্টি থেমে গেলেন। কেন শুনতে পেলাম আমি এই কথা টা। বহুকাল শুনিনি। ভিতরের সর্বস্ব মনে হল আমার জ্বলছে। আমার মনুষত্ব, আমার ভিতরে মেয়েটা দাউ দাউ করে জ্বলছে এই কথা টা শুনে। কিন্তু বলার কি আছে আর। রাকা এখনো কিছু বলল না আন্টি কে। মানে সেও মেনে নিলো। আন্টি মারাত্মক রেগে গেছেন। কিন্তু আন্টি কিছু বলার আগেই, চিৎকার করে রনি মার মুর্তি নিয়ে তেড়ে গেল স্মিতা আন্টির দিকে। এবারে রাকা এগিয়ে এল। হাতাহাতি হলো দুজনের। রনি কে ছিটকে দিল রাকা। চেঁচিয়ে উঠল রনির উপরে রাকা,
-     বাস্টার্ড! তোর সাহস কি ভাবে হয় আন্টির দিকে তেড়ে আসার এই ভাবে? সান অফ অ্যা বিচ।

ওরা চারজন ছাড়া আমরা আরো তিনজন ছিলাম বাড়িতে। আমরা তিনজন থম মেরে গেলাম। আন্টি বলতে গেলে থরথর করে কাঁপছেন। রাগে। আমার রাগ শেষ। নিজের উপরে করুনা হচ্ছে। রনির ও মনে হয় রাগ শেষের দিকে। বুঝে গেছে আমার মতই, যে কার উপরে রাগ করছে ও! আমার খারাপ লাগছে রনির জন্য। বেচারীর উপরেই রাকা আমার উপরে রাগ টা ঝেড়ে দিল। ইংরাজি তে ওই গালি টার মানে করলে কি দাঁড়ায়, রাকা আমাকে বলেছিল এক কালে। রাকা বলল রনি কে এই কথা টা? রনি কিছুক্ষন রেগেই তাকিয়ে রইল। গালি টা শুনে বেচারি একেবারে নিথর হয়ে গেছে। হয়ত ভাবছে আন্টির সামনে রাকা কেন ওকে এই গালি টা দিলো। রনি হেসে উঠল জোরে। আমি ভাবছি ছেলেটা কি পাগল হয়ে গেল নাকি? বলল,
-     আমারি ভুল জানিস রাকা। তোর জন্য যে নিজের জমানো সব কিছু, ইভেন নিজের মন ও উজার করে দিয়েছে, তুই তাকে হিজড়ে বললি, আর আমাকে ছেড়ে দিবি, এটা আমিও ভাবিনি। কিন্তু তাই বলে ওই গাল টা দিলি? রাকা আমার বাড়িতে তুই গেছিস অনেক বার। আমার মায়ের হাতে তৈরী খাবার ও খেয়েছিস। কি করে বললি রে আমাকে? ছিঃ। যাই হোক তুই এই সবের উর্ধে চলে গেছিস আমি বুঝে গেছি। ভাবিস না তোকে আমি ছেড়ে দিলাম, কিছু বললাম না এর কারন আমি কিছু করতে পারব না। কিন্তু কি জানিস, আমি আন্টি কে আমার মা ছাড়া আর কিছু মনে করিনি।

বলতে বলতে রনির চোখে জল চলে এল। রাকা হয়ত ওই সময়ে বলে ফেলেছে কথাটা। রনি কে ওই ভাবে রিয়াক্ট করতে দেখে হয়ত একটু হলেও খারাপ লাগছিল। রনি কিন্তু ও থামছে না।
-     হ্যাঁ ঠিক করেছিস তুই। শিব কে ছেড়ে দিয়েছিস। কারন আজকে আমি বুঝে গেছি, তুই শিবের যোগ্য নোস। কোন ভাবেই নোস। তুই আজকে যাই হয়ে যাস না কেন, যত বড় কেউ কেটা হোস না কেন, তার জন্য শিব আর একমাত্র শিব দায়ী। সত্যি বলতে তুই একটা বিগ জিরো।

আমি রনি কে থামাচ্ছি এবারে।
-     রনি থাম তুই। তুই কেন বন্ধুত্ব নষ্ট করছিস?

রনি আমার দিকে চেয়ে এবারে রাগে ফেটে পরল। ছেলে গুনো এমন ই হয়, যত রাগ মেয়েদের উপরে। আমাকে বলল
-     তুই থাম! সব দোষ তোর। কে তোকে ওকে ছাড়তে বলেছিল? সেদিনেই কানের নীচে থাবড়ে ওকে সিধে করে দিতে পারতিস। যাই হোক শোন শিব, আজকে এখানে এসেছিলাম, তোদের মিলন দেখব বলে। আমাকে বহু মেয়ে রিজেক্ট করেছে জীবনে। আমিও কুত্তা, পিছনে পিছনে ঘুরে বেরিয়েছি তাদের। এতো কষ্ট পাইনি, যা আজকে পেলাম।আমি নিজের চোখে দেখেছি, ওকে খেলতে পাঠানো, সেই টাকা জোগার করা, ওর পরীক্ষায় পাশ করানো। জানিনা তুই কত খানি কষ্ট পেয়েছিস এখন।কিন্তু আমি আর পারছি না থাকতে, বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। তোর এই অপমানের পালা শেষ হলে বলিস তোকে বাড়ি পৌঁছে দেব আমি।

আমি রনি কে চুপ করতে বলছি। ভাবছি, ওরে চুপ কর তুই, আমার কাছে ওর ঋণের থেকে ওর আছে আমার ঋণ অনেক অনেক বেশি। কেন পুরোন কথা তুলছিস। বন্ধু আমি ওর, ভালোবাসি ওকে নিজের থেকেও বেশি। রাকা মনে হয় রনির কথা গুলো হজম করতে পারল না। মাথায় নিজের ইগো চড়ে বসেছে ওর। তাই, আমি রনি কে কিছু বলার আগেই, রাকা বলল বেশ টোন্ডিং এর সুরে,
-     ভালই তো হলো তোর রনি। আমি মাঝে নেই আর, হিজড়ে টা কে তুই বিয়ে করে নে। ও তো মেয়ে হয়েছে, আমাকেই পাবে বলে। একটা ছেলে তো লাগবে ওর নাকি? তোর ও সাহসের পরীক্ষা হয়ে যাবে। কেমন হিজড়ে কে বিয়ে করতে পারিস দেখব।  

ইশ ছিঃ ছিঃ ছিঃ। কি বলছে রাকা এগুলো? শেষে তুই ও আমাকে হিজড়ে বললি রাকা? এতোক্ষন মনে জোর ধরে ছিলাম, তুই নিজের মুখে বলিস নি আমাকে কথা টা। সেটাও বলে দিলি? আর দাড়িয়েই থাকতে পারলাম না আমি। হাঁটু মুড়ে বসে পরলাম ওখানেই। দু হাতে মুখ ঢেকে কাঁদছি। কি জানি অঞ্জনা আর অঞ্জনার পরিবার হয়ত মজা নিচ্ছে। নাহ এটা থামানো দরকার। না হলে আরো কত রক্তাক্ত হতে হবে কে জানে? আমাকে ওরা দুজনে কিছু বলতেই দিচ্ছে না। আমি আন্টির দিকে চেয়ে বললাম কাঁদতে কাঁদতেই,
-     আন্টি ওদের থামাও।

কিন্তু তার আগেই আমাকে হিজড়ে বলার জন্য, রনি রাকার কলার ধরে নিলো নিজের হাতে। ডান হাত টা তুলে রাকাকে মারতে যাবে তখনি আমি চেঁচিয়ে উঠলাম,
-     রনি !!!!!!!! নাআআআ!!!!! ওর খেলা আছে সামনে ইন্ডিয়ার। মারিস না ওকেএএএ

রনি থেমে তো গেল, কিন্তু রনির একশনের রিয়াকশন এ রাকার পাঞ্চ টা রনির ঠোঁটে পরল। জোর ছিল না বেশী। কিন্তু আমি দেখলাম কেটে গিয়ে রক্ত বেরোতে শুরু করল রনির ঠোট দিয়ে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ, কি হচ্ছে এসব। এই রকম নোংরা ব্যাপার সিনেমাতেও দেখায় না। আমি রনির কাছে ছুটে গেলাম। দেখলাম ও আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। ঠোঁটের কষে রক্ত। আমাকে দেখে জামার কলারে রক্ত টা একবার মুছে নিল। রাকা ভাবল রনি কে ও কাবু করে ফেলেছে। আবার টোন্ড করল ও,
-     বাহ ও বলল আর থেমেও গেলি। কি প্রেম বাবা। আগেই বলতে পারতিস ওকে। ও তাহলে আমার পিছনে ঘুরত না।

আমি আর কিছু বলার মতন পরিস্থিতি তে নেই। এই সব কথার উত্তর তো হয়না। রনি এবারে রাগল না যেন আর। রাকার দিকে তাকিয়ে বলল
-      সে সৌভাগ্য আমার নেই রে। হবেও না। আজকে যা কষ্ট যা যন্ত্রনা তুই ওকে দিলি, ও জীবনে আর কাউকে ভালবাসতে পারবে বলে আমি মনে করি না। না হলে অমন একটা মেয়ের ভালবাসা পাবার জন্য আমি জন্ম জন্ম অপেক্ষা করতে রাজী। যাই হোক, তোর চোখে এখন পট্টি আছে। আমি জানি একদিন তুই বুঝবি। সেদিনে দেরি না হয়ে যায় তোর।

তারপরে আমার দিকে তাকিয়ে আর আন্টি কে দেখে বলল
-     আমি এলাম রে শিব। আন্টি এলাম।

বেরিয়ে গেলো ও। হাঁ করে তাকিয়েছিলাম আমি ওর দিকে। কি হয়ে গেল? এটা কি সত্যি হচ্ছে? নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি। মাথা ঘুরছে আমার। রাকা আমার সামনেই ছিল দাঁড়িয়ে। আমাকে বলল,
-     সব শুনে নিয়েছিস তুই? এবারে চলে যা আমাদের বাড়ি থেকে। আর যেন তোর মুখ দেখতে না হয় আমার।

মাথা নিচু করে রইলাম আমি। আর কি বাকি রইল অপমানের, তাই হিসাব করছিলাম আমি। আন্টি সেখানে দাঁড়িয়ে নেই যেখানে আগে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যাবার আগে আন্টি কে চাইছিলাম আমি খুব আমার কাছে। রাকা যখন খেলতে যেত, চার মাস ছয় মাস আসত না, আমি আসতাম আন্টির কাছে। জিজ্ঞাসা করে নি, আর আসব কিনা রাকা না থাকলে। রাকা আমাকে তাড়া দিচ্ছে। সাথে অঞ্জনা আর অঞ্জনার মা। নিজেদের মধ্যে বলা বলি করছে। এখনো বিদায় হবে না? বাবাহ কি মধু কে জানে এই বাড়িতে। এতো ছোট লাগল নিজেকে যে মনে হচ্ছিল, আজকেই জীবন টা আমার শেষ হয়ে গেল না কেন? এখানেই আমার হার্ট ফেইল করছে না কেন? এতো দুঃখ, অপমান নিতে পারে আমার হৃদয়? নিজেও জানতাম না আমি। আমি কি বুঝতে পারছি না অপমান টা? কীসের আশায় দাঁড়িয়ে আমি এখনো এখানে। অঞ্জনার মা তাড়া দিলেন আমাকে,
-     কি হলো, এবারে তো যা। বেরিয়ে যা বাড়ি থেকে এক্ষুনি। আর কোন দিন ও যেন না দেখি রাকার আশে পাশে তোকে।

তারপরে রাকার দিকে ফিরে বললেন,
-     রাকা চলো, আমাদের আলোচনা টা সেরে ফেলি।

সব ই কানে আসছিল। কিন্তু ভালবাসায় মানুষ কুকুরের থেকেও অধম হয়ে যায়। তাই কি? হ্যাঁ তাই, না হলে আমি চলে যেতে পারছি না কেন? কীসের আশায় এখানে আছি। জানিনা, আমার পা সরছে না। মনে হচ্ছে পা নড়ালেই আমি ধড়াস করে মাটিতে পরে যাব। বসে পরলাম ওখানেই আমি। তখনি আমার মাথার উপর দিয়ে কিছু একটা ভারী জিনিস উড়ে গেল দরজার দিকে। ভয়ে মাথা টা নামিয়ে নিতেই আওয়াজ টা পেলাম।

ধরাম!!!!

আওয়াজ টা পেয়ে তাকিয়ে দেখি, রাকার একটা দামী এয়ার ব্যাগ উঠনে, একেবারে সদর দরজার কাছে একেবারে ছড়িয়ে পরে রয়েছে।গতবারেও আমি এই ব্যাগ টা গুছিয়ে দিয়েছিলাম। ধরাম করে পরে, ব্যাগের হ্যান্ডেল টা ভেঙ্গে গেল। একটা চাকা ভেঙ্গে গড়িয়ে গেল কলতলার দিকে। বুঝলাম, আন্টি রাকার ব্যাগ টা বাইরে বের করে ছুঁড়ে দিলেন সজোরে। ভিতরের বেশ কিছু জামা প্যান্ট, এবডোমেন গার্ড আরো অনেক কিছু ছড়িয়ে এদিকে ওদিক হয়ে গেল। তাকিয়ে দেখলাম আন্টি দাঁড়িয়ে আছেন সামনে আমার। আমার হাত ধরে তুললেন আন্টি কে। চোখে এতো রাগ থাকতে পারে একটা মানুষের আমি জানতাম না। কেঁদে কেঁদে চোখ টা লাল হয়েই ছিল আন্টির। এখন আবার রাগে আরো রাঙ্গা হয়ে গেছে সেটা। বুকে ভয় ধরানোর জন্য যথেষ্ট। আমাকে তুলে ধরে নিজের হাত টা দরজার দিকে পয়েন্ট করে বললেন রাকা কে,
-     ব্যাগ বের করে দিয়েছি, এনাদের সবাই কে নিয়ে এক্ষুনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যা।

আমি চমকে গেলাম একেবারে।কি করছেন আন্টি, আমার জন্যে নিজের ছেলের সাথে এ কি ব্যবহার করছেন? আন্টি কে কিছু বলতে যেতেই আমার দিকে চুপ করতে ইশারা করলেন। ওই রাগের মুর্তি আমি সহ্য করতে পারলাম না। চোখ বুঝে ফেললাম। আন্টি মনে হয় পাগল হয়ে গেছেন রাগে। পাশেই দরজার হুড়কো টা ছিল। তুলে এগিয়ে গেলেন রাকার দিকে। ঠান্ডা স্বরে বললেন
-     কি রে? শুনতে পেলি না? আমি কিন্তু এই হুড়কো টা মাথায় মেরে মাথা একেবারে চেলিয়ে দেব বলে দিলাম।বেরিয়ে যা বাড়ি থেকে আমার। দু মিনিট সময় দিলাম তোকে। যা আছে নিয়ে পালা, বাঁচতে চাইলে। উপায় নেই আমার না হলে তোর টাকায় তৈরি করা বাড়ি আমি ত্যাগ দিতাম। আমি নিজের পয়সা করে তোর এই বাড়ি ভেঙ্গে নিজের কুঁড়ে বানিয়ে তবে আমার শান্তি হবে। আর তোর স্পর্ধা কি ভাবে হয় আমাকে না জানিয়ে তোর প্রেমিকা কে বাড়িতে নিয়ে আসার? জানিস না এ বাড়িতে আমি ছাড়া কারোর অধিকার নেই কিছু নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার? ছ্যাঃ। যা যা বেরিয়ে যা এখনি।

আন্টি কিন্তু রেগে বললেন না কথা গুলো । খুব ঠাণ্ডা মাথায় বললেন। মানে ড্যাম সিরিয়াস উনি। অঞ্জনার মা এগিয়ে এলো এবারে, কিছু বলার আগেই আন্টি হাত জোর করলেন অঞ্জনার মায়ের কাছে, বললেন,

-     এটা আমার বাড়ি। এই বাড়িতে আমি ছাড়া কেউ কথা বলে না। আমি সেই অধিকার কাউকে দিই নি। এই বাড়িতে শিব এর তত খানি জায়গা যত টা রাকার। রাকার জায়গা শেষ। কাজেই এর পরে শিব এর উপরে প্রতিটা কথা আপনি ভেবে চিনতে বলবেন এই আশা রাখব। না হলে আমার বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে অপমান করার জন্য আপনার কোন সম্মান রাখতে পারব না। ভালো হবে যদি আপনি কোন কথা না বলেন। দরজা ওই দিকে। আপনারা আসতে পারেন এবারে।

রাকা মনে ভাবেও নি ব্যাপার টা এই দিকে চলে যাবে। ও প্রায় কাতর হয়ে আন্টি কে বলল,
-     মা!!!!!

আন্টি ততধিক গর্জে উঠলেন
-     কে তোর মা? আমি যত টুকু বুঝলাম,তোর তো পুরোন কাউকে স্বীকার করতেই সমস্যা। যে বন্ধু না থাকলে , তুই আজকেও হয়ত এই রুদ্রপুরে মারামারি করতিস কোন বস্তি তে। যে না থাকলে আজকে যে মেয়ে তোকে মাথায় তুলেছে সে তোকে চেয়েও দেখত না। যে মেয়ে নিজের ছোটবেলার জমানো সব কিছু দিয়ে তোকে একটা সঠিক রাস্তা দিলো , তুই তার অপমান করলি, তোর থেকে আমি কি আশা করব? ভেবে দেখিস তো রাকা,শিব না থাকলে, শিব তোকে জোর করে কলকাতা না পাঠালে আজকে তোর কি হতো? যেদিনে এখানে আমার কাছে এসে বলেছিল আন্টি হাজার পঞ্চাশ তুমি জোগার কর, বাকি টা আমি বুঝব, সেদিনেই ও আমার মেয়ে হয়ে গেছিল। আমি তো ভাবিও নি, মেয়েটা তোকে এতোখানি ভালবাসে। সে তুই ওকে তোর মনের মতন মেয়ে নাই ভাবতে পারিস, কিন্তু ওকে অপমান করার স্পর্ধা তোর হয় কি করে? আর রনি কে তুই মারলি? ভুলে যাস না ছেলেটা নিজের জমানো টাকা থেকে তোকে টাকা দিয়ে কলকাতা পাঠিয়েছিল। ওর টাকা টা দেখিস না রাকা, হিসাব করলে ওর ভালোবাসার ঋণ তোর উপরে পাহাড়ের মতন হয়ে আছে। আর তুই ছেলেটা কে আজকে কাঁদালি? তোকে বলে রাখি, এখনকার পর থেকে তোর উপরে সামান্য আশা ও করি না। কিছু মনে করিস না বাবা, তোকে আমি মানুষ করতে পারিনি। শিব আমাকে আটকাতো, বলত আন্টি ওকে বোক না, ওর খেলা আছে আজকে, খেলতে পারবে না।ভুল করেছিলাম আমি। সেদিনেই তোকে জন্ম না দেওয়া উচিৎ ছিল যেদিন তুই আমার পেটে এসেছিলি। কি করব, সবার আশা পুরন হয় না। তুই একটা জানোয়ার হয়ে বড় হলি।  তুই কি ওকে মেনে নিবি না, আমি কোন দিন ওকে তোর হাতে দিতাম না। তুই ওর যোগ্য কোন ভাবেই নোস।

তারপরে অঞ্জনার মায়ের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বললেন,
-     ওই যে তোর নতুন মা আছেন। ওনাদের নিয়ে এ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যা বাবা। আমাদের কথা ভাবতে হবে না তোকে।আমরা আমাদের চালিয়ে নেব। কি ভেবেছিলি? এদের কে অপমান করে তাড়াবি, আর মা কে একটা বাড়ি, একটু সুখ স্বাছন্দ্য দিবি আর তোর মা গলে যাবে? তুই তোর মা কে এই রকম ভাবিস? তোর মা সম্মানের জন্য অতো বড় বাড়ি, জমি, সম্পত্তি ছেড়ে এক কথায় তোর বাবার হাত ধরে এই দরিদ্রের জীবন যাপন করে। যাই হোক, ভাবনা চিন্তা সব তুই পুড়িয়ে ফেলেছিস আমি সেটা বুঝে গেছি। যা যা দাঁড়িয়ে থাকিস না, রাগ উঠে যাচ্ছে। যা আ আ আ আ রাকা। অনেক আশীর্বাদ রইল। ভালো থাকিস।

রাকা মনে হয় কেঁদে ফেলল। নিজের মা এমন ভাবে তাড়িয়ে দেবে ভাবতেও পারছে না ও। পাশেই আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। মায়ের উপরে রাগ টা আমার উপরে নিল এসে আমার গাল টা চেপে ধরে। আমার খোলা চুল টা মুঠি করে ধরে, আর গাল টা নিজের হাতে চেপে ধরে আমাকে বাড়ির দেওয়ালে ঠেসে ধরল। উহহহ লাগে রাকা আমার। হিজড়ে হলেও আমার উপরে দীর্ঘ দিন ইস্ট্রোজেন চলেছে রাকা। আমি এখন তোর সাথে যুঝতে পারি না আর। এই সব ভাবতে ভাবতেই আমার চোখে আবার জল চলে এল। আমি ওর হাত টা ধরে সরানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ওর গায়ের জোরের কাছে পারব কেন? ও আমাকে ওই ভাবেই গাল টা নিজের হাতে চেপে ধরে বলল,
-     শান্তি পেলি এবারে? আমার মা কে আমার থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে? তুই মেয়ে হতেই পারিস না। অঞ্জনার মা তোকে ঠিক ই বলেছে তুই হিজড়ে। তুই …তুই… একটা বোঝা। নোংরা নর্দমার পোকা আমার জন্য।

আমি ব্যাথা পাচ্ছি। কিন্তু ওর কথা শুনে ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম না আমি। পাই ব্যাথা। ওই তো দিতে চাইছে! ছোট থেকে আমাকে বাঁচিয়ে ওই এসেছে।এখন দিক ব্যাথা ও। ব্যাথা দিয়ে যদি ওর মনের রাগ একটু কমে। আমার ব্যাথায় যদি আমার উপরে ওর ঋণ কিছু কমে। উফ, মা গো মনে হচ্ছে গাল টা কেটে যাচ্ছে এবারে। রাকা আরো আমাকে কষ্ট দে তুই। এতোক্ষন মানসিক যন্ত্রনা দিচ্ছিলি, এবারে একটা কাজ কর, তোর ওই শক্তিশালী পা দিয়ে আমাকে পিষে ফ্যাল। মার আমাকে তুই মার। বাঁচতে তো চাইছি না আর। তড়পাস না আমাকে আর। প্লিজজজজজজ।
সে যাক, কিন্তু ও প্রতি ক্ষেত্রে আমাকে ভুল বুঝছে কেন? আমি কি করেছি? আমি শুধু তো তোকে ভালোবেসেছি।মনে মনে বলছি ওকে, তুই তো শুনলি ও না আমার কথা রাকা! একবার শুনলে আজকের এই ধুন্ধুমার ব্যাপার টা হতো না। কাঁদছি হাউ হাউ করে। আর ও ধরে আছে গাল টা আমার চেপে। আর ওর বাঁ হাত টা আমার ঘাড়ের কাছে চুল টা শক্ত করে ধরে রেখে দিয়েছে। ওই ভাবেই চেঁচিয়ে উঠলাম আমি,
-     হ্যাঁ মেরে ফেল আমাকে। শেষ করে দে। কথা দিচ্ছি কেউ তোকে কিছু বলবে না। আমার কি দোষ বল? আমি তোকে বলেছিলাম কোনদিন, আমি তোকে ভালবাসি? আমি কোন দিন তোকে চেয়েছি আমার বয়ফ্রেন্ড হিসাবে। তুই!!! রাকা তুই!!! তুই আমাকে প্রপোজ করেছিলি, আমি না!!!

ততক্ষনে ও আমার গাল টা ছেড়ে দিয়েছে। আমার চুল এর মুঠি টাও ছেড়ে দিয়েছে। আমি দেওয়াল থেকে সামনে এগিয়ে এসেছি কথা বলতে বলতে। কাঁদছি ফুঁপিয়ে আমি। বললাম,
-     কি ক্ষতি করেছি আমি তোর? কি কষ্ট দিয়েছি তোকে আমি আজ পর্যন্ত? কি চেয়েছি আমি তোর থেকে?

কাঁদছিলাম আমি কথা গুলো বলতে বলতে। আমি থামলাম না, বললাম,
-     না জানি তুই কত কি করেছিস আমাকে। আমি এখানে বলতেও পারব না আর বলতেও চাইছি না।কিঞ্চু আমাকে দোষ দিচ্ছিস কেন তুই? 

রাকা এতোক্ষন চুপ ছিল কিন্তু এবারে আমাকে আর বলতে দিল না রাকা। আমাকে থামিয়ে দিল চিৎকার করে।
-     চোওওপ!! আর একটা কথা বলবি না তুই। হিজড়ে শালা!

তারপরে অঞ্জনা আর অঞ্জনার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল
-     হ্যাঁ আমি তোকে চুমু খেয়েছি। হ্যাঁ খেয়েছি। ভুল করেছিলাম। কি ভেবেছিলি, এই টা বলে তুই অঞ্জনার থেকে আমাকে দূরে করে দিবি? কিন্তু ঘেন্না পাই সেটা ভাবলে এখন আমি। এই নে!! বিচ!!!!!!!!

বলে এক দলা থুতু উঠনে ফেলে দিল রাকা। আমি চেয়ে রইলাম সেদিকে। নিথর হয়ে। এর থেকে ভগবান আমাকে মেরে ফেলল না কেন? কিন্তু ভগবান থাকেন না সামনে। অন্য কেউ থাকেন, কৃষ্ণ হয়ে বস্ত্র হরন রুখতে। আমার সর্বস্ব হরন রুখতেই মনে হয়, আন্টি তেড়ে এলেন এবারে রাকার দিকে দরজার হুড়কো টা নিয়ে। আমি সেটা দেখতে পেয়ে ছুটে গিয়ে আন্টি কে জড়িয়ে ধরলাম। আন্টি ছুঁড়ে দিলেন হুড়কো টা রাকার দিকে। রাকা কোন রকমে সেটা এড়িয়ে গেল। মনে মনে ভাবছি, আন্টি ওর খেলা আছে। ওকে কিছু কোর না। ওকে কিছু কোর না।
রাকা ব্যাগ টা এক লাথি তে কোথায় পাঠিয়ে দিল কে জানে। আমি আন্টি কে জড়িয়ে ধরে কাঁদছি ডুকরে ডুকরে। আন্টিও তাই। কাঁদতে কাঁদতেই দেখছি, ওরা বেরিয়ে গেল ধীর পায়ে বাড়ি থেকে এক এক করে। তীব্র চিৎকার করে উঠলাম আমি,
-     রাকা দাঁড়া!!!!!! রাকা চলে যাস না!!! আমি কোন দিন আসবো না তোর কাছে!!!! রাকা আ আ আ আ আ আ আ আ আ আ আ!!!!!!!!!!!
[+] 9 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply
প্রত্যেক টা আপডেট যাষ্ট Wowww  yourock
“What a slut time is. She screws everybody.”
[+] 1 user Likes samael's post
Like Reply
j raka or jonyo salwar niye elo se aj thutu fello ......thik ki bolbo bujhte parchi na.....raka r jonyo aj o shibani hote pereche r shiv r jonyo o aj raka hote pereche......thik ei ekta byapar kei kono bhabei overlook korte parchi na
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
সেই শুরু থেকে আজ অব্দি এখনো টান টান সূতোর মতোন।
[+] 1 user Likes Maskin's post
Like Reply
Khub sundor update
[+] 1 user Likes Bondhon Dhali's post
Like Reply
আজকের পর্ব পড়ে কিছু মধুর মধুর বাণী আসছে আমার রাখার প্রতি। আজকের রাকা বা শিভের বাবার জন্য নয়.... সেই পুরোনো রাকার জন্য। তাহলে বলেই ফেলি -

এই যে মহান খেলোয়াড় বোকা*&# রাকাবাবু...... তোমার কি মেন্টালি কোনো প্রব্লেম আছে? নাকি নিজেকে মহান পুরুষ ভেবে বসে আছে যে যা ইচ্ছে করবো... মরদ তাই করে এমন কিছু ভাবেন .... শুনে রাখুন উদগাণ্ডু স্যার..... ওই হিজড়ে যাকে বলছেন সে না থাকলে তো ফেলু মস্তান ছাড়া কিছুই হতেন না.... আপনার কাছে তো পুরুষত্ব মানে মারপিট আর নারী শরীর... একটা না হোক আরেকটা...... কিন্তু ওই মেয়েটার কাছে আপনি যে কি সেটা আপনি জেনেও ভুলে গেছেন। যে এতো কিছু করলো তার সাথে খারাপ ব্যবহার তাও মানা যায় কিন্তু এইভাবে অপমান!!

আর রনির মানসিক জোর সাংঘাতিক মানতেই হবে... নইলে ওতো কিছু শোনার পড়েও হাসছিলো সে.... শালা দম আছে মালটার ভাই.... স্যালুট..... চাইলেই শিক্ষা দিতে পারতো কিন্তু রাকার বাড়ি ও তার মায়ের মান সে রেখেছে..... আর বদলে পেলো উপহার - সন অফ আ *#*# তাও

এর থেকে তো ভাল হতো রনির মতো মানুষকে নিজের করে নিতো শিবানী... হ্যা ami জানি আমি ভুল বলছি..... কিন্তু তাও বলছি..... অমন নামরদের কথা ভুলে সত্যিকারের বন্ধুর পাশে চিরকালের মতো চলে যাওয়া.... যদিও জানি সেটা মানায়না.... এতো বড়ো ধাক্কা সব ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে একজনকে। নিজের নারীত্ব কে সে নিজেই আগলে রাখবে আজ সেটাই তার কাছে পরীক্ষা.... মেয়েটার আয়নার সামনে দাঁড়ানোর যোগ্যতা আর ইচ্ছা টুকু কেড়ে নিয়েছিল ওই মহান বোকা*#*#

যাইহোক.... মাথা গরম হয়ে গেছিলো তাই অনেক কিছু বলে ফেললাম..... কিন্তু শিবানী যা করেছে... ঠিকই করেছে হয়তো... ওর ভেতরের প্রেমিকা তো সেদিন খুন হয়েছিল... বেঁচেছিলো মমতাময়ী মা সত্তাটা....... সে আজও আছে.. চিরকাল থাকবে।

সাংঘাতিক পর্ব ছিল!!
[+] 4 users Like Baban's post
Like Reply
কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না।??
[+] 1 user Likes kublai's post
Like Reply
শিকড় ভুলে যাওয়া অথবা শিকড়কে আকড়ে ধরে এগিয়ে যাওয়া.. 
মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ...  যারা আকড়ে ধরে এগিয়ে যেতে জানে... তারাই স্মরণীয় হয়ে থাকেন.. রূঢ় বাস্তবতা চমৎকার লেখনীর মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন....
সন্মাননা...... Namaskar
রোমাঞ্চের সন্ধানে রোমাঞ্চ প্রিয় আমি ??
[+] 1 user Likes Ah007's post
Like Reply
(22-02-2022, 02:56 PM)samael Wrote: প্রত্যেক টা আপডেট যাষ্ট Wowww  [image]

Namaskar Namaskar  ধন্যবাদ অনেক
[+] 1 user Likes nandanadasnandana's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)