Thread Rating:
  • 90 Vote(s) - 3.47 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মন ২ - কাহিনীর নাম- শিবের শিব প্রাপ্তি- সমাপ্ত
ঊঊফফফফ দুর্দান্ত। কোনো কথা হবে না।
[+] 1 user Likes Rajaryan25's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(15-02-2022, 01:01 PM)raikamol Wrote: কথোপকথন যেন জীবন্ত। এ পর্বের প্রাপ্তি। ছোট ছোট সংলাপ। এ ভাবেই আমরা কথা বলি। ইরোটিকা নন্দনা দেবী আপনি এক ব্যতিক্রমী লেখা লিখছেন। তবে মাঝে মাঝে সেই সংলাপও একটু দীর্ঘ হয়ে আচ্ছে বই কি। লেকচারিং ভাব চলে আসছে।

অনেক ধন্যবাদ রাই। অনেক অনেক অনেক
Like Reply
(15-02-2022, 01:23 PM)raja05 Wrote: besh laglo

ধন্যবাদ রাজা ।
Like Reply
(15-02-2022, 06:55 PM)Baban Wrote: কি সাংঘাতিক পর্ব মাইরি!!! আর এই মহিলা বলে কিনা বুকে মোচড় আর লাগবেনা? আরে ভাই.. বুকে চিনচিনে ব্যাথা কি শুধুই দুঃখের মুহুর্ত পড়ে হয় নাকি? এই ভয়ানক অলীক টান, দূরে থাকতে না পারার ভয়, বার বার কাছে আসার ইচ্ছা, ভালোবাসার চুম্বন, বকা.. অধিকার ফলানো... এগুলি পড়লেও ওই একই অনুভূতি হয়।
এক প্রশ্ন আর উত্তরের পেছনে এক নারীর মস্তিষ্কে কতগুলো সম্ভাবনা এক মুহূর্তে ফুটে ওঠে আর তারপরে ঠোঁট থেকে বেরিয়ে আসে উত্তর বা প্রশ্ন.... পুরুষ কতটা বোকা বা চালাক জানিনা... (জানতে চাইও না) কিন্তু নারী ছাড়া তারা যে অসম্পূর্ণ তা নিশ্চিত.... উল্টোটাও.....তা সে সম্পর্কে প্রেমের হোক বা মমতার... দাদার হোক বাবা পিতার.... ভালোবাসা.. ভালোবাসাই। ❤

হ্যাঁ দুজনেই , একে অপর কে ছাড়া পূর্নতা পায় না। ঠিক ঠিক ঠিক
Like Reply
(15-02-2022, 11:22 PM)ddey333 Wrote: না কারো কিছু কিসেরও  ভুল না ...

সব ভুল আমার ... সব ব্যাপারেই

কারো মাথা খেয়েদেয়ে আর কাজ নেই আমার !! Namaskar

হুম বুঝি। মাঝে মাঝে কি যে হয় এই ছেলেটার।
Like Reply
(15-02-2022, 11:54 PM)Rajaryan25 Wrote: ঊঊফফফফ দুর্দান্ত। কোনো কথা হবে না।

Namaskar Namaskar Namaskar ধন্যবাদ অনেক অনেক
Like Reply
আগের পর্বের কিছু অংশ...

-     ভাল করলি নাআআআ। আমি চাইলাম দিলি না, এখন নিজেই দিয়ে গেলি কেনওওওও?
আমি দৌড়চ্ছিলাম অন্ধকারেই। গালে চুমু খাবার পরে, ওকে দেখার ক্ষমতা ছিল না। ভয় লাগছিল, পায়ে শাড়ি জড়িয়ে গেলে পরে যাব। শাড়ি টা কোমরের কাছে, হাত দিয়ে কিছু টা তুলে নিয়ে বাঁই বাঁই দৌড়চ্ছিলাম আন্টির কাছে আমি। ছুটতে ছুটতেই চেঁচিয়ে বলে দিলাম ওকে,
-     তোর সব কেনর উত্তর দিতে পারব নাআআআআআআআআআআআআআ। এটা আমি আমার ইচ্ছে তে দিলাআআআআআআআআম।
 
                                                                              অধ্যায় চার
                                                                              পর্ব একুশ
আজকে শিভ কে নিয়েই আমি এসেছি কলেজ এ। সকালে আমি স্নান করে ওকে খাইয়ে নিজে রেডী হব তখন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল। ওর দিকে তাকাতেই বলল, আমার সাথে যাবে। আমিও আর বিশেষ আপত্তি করিনি। ওকে স্নান করিয়ে খাইয়ে, একটা নীল রঙের টি শার্ট আর কালো একটা ট্রাউজার কিনেছিলাম সেটা পরিয়ে নিয়ে চলে এসেছি। শিভ এর ব্যাপারে কেউ ই বুঝতে পারছে না। আমি কাউকে বলার প্রয়োজন ও বোধ করছি না। কিন্তু ও যখন আমাকে মা বলছে, তখন সবাই আমার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে। থাকুক। একটা বাচ্চা ছেলে আমাকে মা বলছে, আর সেটাও যদি কেউ বুঝতে না পারে আমার কিছু বলার নেই। এটা তো সরল ব্যাপার যে, আমি ওর মা আর ও আমার ছেলে। জানি কিছু দিন চলবে এই ব্যাপার টা, পরে থেমে যাবে। আর রাকা রাজী হলে তো পুরো ব্যাপার টা সবার ই সামনে চলে আসবে।

আমার ক্লাস থাকে না সাধারণত। আজকেও ছিল না। এডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ থাকে অনেক। কিন্তু মন নেই আমার। মন পরে আছে আজকে রাকার মতামতের দিকে। শিভ আমার কাছে আসছে বার বার খেলতে খেলতে। কখনো এক টুকরো আপেল মুখে দিয়ে দিচ্ছি বা নিজেই আমার ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করে জল খাচ্ছে ও। যতবার ওকে দেখছি, ততবার ভয় টা জাঁকিয়ে বসছে আমার মনে মধ্যে। যদি রাকা না বলে?আমার মনে হচ্ছে যদি আমি শিভের জন্য ওকে বিয়ে করতে রাজী হই, তবে সেও শিভের জন্যই আমাকে বিয়ে করতে রাজী হবে। এ ছাড়া তো আর কোন কারন আমি দেখি না। একটা মিউচুয়াল ব্যাপার। আমার ও এখন সেই ব্যাপার টা আর নেই, যেটা আমি শুরুর দিকে রাকার ব্যাপারে অনুভব করতাম। সেই ভুল আমার ভেঙ্গে গেছে।

কত যে চিন্তা বলে বোঝাতে পারব না। শিভের বড় হতে হতে আরো বছর কুড়ি। এই কুড়ি বছর রাকা আমাকে নিয়ে থাকবে কি ভাবে? মানে শুধু কি ছেলের মা হিসাবে আমাকে ও দেখবে? হ্যাঁ, আর কি ভাবেই বা দেখতে পারে? কারন আমার তরফে ওর উপরে আর কোন রকম দুর্বলতা নেই। আর ওর তরফে তো নেই ই। ছয় বছর আগে , ওর চোখের সেই ঘেন্না এতো কম সময়ে মিটবে না। আমাকে চুমু খেয়েছিল বলে ও থুতু সুদ্দু ফেলেছিল আমারি সামনে। এতো অপমান নিয়ে বেঁচে আছি হয়ত শিভের জন্যেই। হ্যাঁ ভালো রাকাকে আমি বাসি। সেটা সেই ছোট বেলা থেকেই আছে। কিন্তু এর বেশী কিছু তো নেই। আমি ওকে চিনি বলে যে দাবী টা করতাম, সেই জোর আমার নেই আর। আমাকেই তৈরী থাকতে হবে ওর কাছ থেকে আসা অপমানের জন্য। শিভ কে দেখে নিলাম একবার। হ্যাঁ পারব আমি শিভের জন্য ওই অপমানের বোঝা বইতে। আমাকে তো রাকার উপরে নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না। তাহলে, শিভের মুখ চেয়ে খানিক অপমান সয়ে নিতে পারব না?  আশা করি আমাকে শিভের সামনে অপমান করবে না। কিন্তু, রাকা কে শিভের সামনে ছোট করা যাবে না কোন ভাবেই। সেটা আমার মাতৃত্বের অপমান হবে। ভগবান আমাকে এতো দিচ্ছেন, সাথে অপমান টুকুও না হয় নিলাম। শিভ কে পাবার জন্য আমি তো সব কিছু সইতেই রাজী আছি। শুধু প্রার্থনা ভগবানের কাছে, হে ঠাকুর আমাকে যেন শিভ ভালোবাসে। আমাকে যেন শিভ কে ছেড়ে থাকতে না হয়। তাতে যা অপমান, যা শাস্তি দেবার তুমি দিও আমাকে।

উফ জল খেতে গিয়ে ভেজালো জামা টা। ওমনি তিড়িং বিরিং করে নেচে নেচে যে কেউ জল খায় আমি দেখিনি বাপের জন্মে। শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিলাম গলা টা। পার্স থেকে রুমাল টা বের করে বুকের যেখানে ভিজে ছিল সেখানে তলা দিয়ে লাগিয়ে দিলাম আমি। না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে ছেলের। বুকের ধুকপুকুনি বাড়ছে। বাড়ি গিয়েই হয়ত শুনব রাকা কি বলেছে। আচ্ছা যদি ও রাজী না হয়? তবে শিভ কি ভাবে আমার কাছে থাকবে? কারন এতো কম বয়েস রাকার, বিয়ে তো ও করবেই কাউকে না কাউকে। তখন সে যদি শিভ কে নিয়ে যেতে চায়? তখন তো কেউ শুনবে ও না শিভের কথা আর আমার কথা। মনে হলো পাথর টা আমার শ্বাসনালী তে আটকে গেল একেবারে। শ্বাস নিতে পারছি না মনে হচ্ছে। ঘামছি রিতীমতন। শরীর টা খারাপ লাগছে বড্ড। শিভের দিকে তাকিয়ে রইলাম আমি। সামনেই খেলছিল আমার টেবিলের কাছেই। ওকে টেনে নিলাম। মনে মনে বললাম,

-     কেন এলি আমার জীবনে তুই? তোকে ছাড়া যে আমি শেষ হয়ে যাব। একটু বুকে আয় আমার। আমাকে তুই বাঁচা। এই দ্যাখ তোকে বুকে নিলাম আর আমার শরীর খারাপ টা ভালো হয়ে গেল।

শিভ ও আমাকে জড়িয়ে ধরে রইল গলা টা ধরে। হয়ত বুঝেছে ওর শিবের কিছু হয়েছে। চুমু খেল আমাকে শিভ। শ্বাস নালীর পাথর টা গলে গেলো যেন। অনেকক্ষণ আটকে থাকা শ্বাস টা দমকে দমকে বেরিয়ে এলো আমার ভিতর থেকে, চোখ টা জলে ভরিয়ে দিয়ে।

বাড়ি যখন ঢুকলাম তখন সন্ধ্যে হয়ে গেছে। শিভ কে নিয়ে গেছিলাম ফুটবল নিয়ে তাশীর ধারে। জানিনা আজকে কি বলবে রাকা। বেঁচে নি ওর সাথে ওর মতন করে। আমার তো আর নিজের কিছু নেই। যে ভাবে শিভ চালায় আমি ও চলি। প্রতিটা ক্ষন তো ওকে দিয়ে দিয়েছি আমি। ওর খাওয়া, ওর শোওয়া, ওর পড়াশোনা, ওর খেলা, ওর গল্প শোনা। আমিও চাই না আর ক্ষনের হিসাব রাখতে। আর হয়ত কিছুক্ষন, তারপরেই তো……

রাকার ট্রায়ালের দিনেও আমার এতো টেনশন হয় নি যা আজকে হচ্ছে। ওর উপরে সেই নির্ভরশীলই হতে হলো আমাকে। ভেবেছিলাম, জীবনে ও মুখ আর দেখব না। কিন্তু আজ? আজকেও ওর উপরে নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে, ও আমার মতন একটা হিজড়ে, ছক্কা বা সমাজের কীট কে নিয়ে থাকবে কি না? ভগবান কে বলি, আমাকেই তুমি পাও তাই না? বার বার অগ্নী পরীক্ষা? আমি কিন্তু সীতা নই। পারব না অতো ধকল নিতে আমি বলে দিলাম।
ঢুকে দেখলাম আন্টি আঙ্কল এসেছেন। বাপি ভাই ও আছে। আমি ঢুকতেই সব যেন থম মেরে গেল। আমি বুঝে গেলাম কি হয়েছে। রাকা রাজী হয় নি। ছেলের উপরে জোর টা সেটা নিমেষে চুরমার হয়ে গেল আমার।

 ভাবছিলাম, সব ছেড়ে নিজের ঘরে গিয়ে হাউ হাউ করে আমি কাঁদি। কিন্তু পারলাম না। আমি তো দায়িত্ব নেবার অনেক আগে থেকেই শিভের মা। ওকে কি করে ছেড়ে দি আমি? ওকে কোলে নিয়ে উপরে চলে এলাম। ওর জামা প্যান্ট ছাড়িয়ে, ওর হাত পা ধুইয়ে, মুছিয়ে, অন্য জামা প্যান্ট পরিয়ে ওকে ছেড়ে দিলাম। ও নীচে চলে গেল একটা বল নিয়ে। ঠাম্মি র সাথে কথা বলতে চাইছিল। ওই টুকু সময়ের মধ্যে আমি বহুবার ওকে জড়িয়ে ধরলাম। অনেক আদর করলাম।

নিজের ও ফ্রেশ হতে ইচ্ছে করছিল না আমার। তাও সারাদিনের শাড়ি টা ছেড়ে, ঘরে পড়ার পোশাক পরে নিলাম। ভাবলাম যাই হোক। আমাকেই তো সামনাসামনি হতে হবে আগে। শিভের গায়ে আঁচ লাগতেও দেব না আমি। রাকার এই অপমান টাও না হয় আমার গায়েই লাগুক। শিভের সামনে দেখালেও হবে না। নীচে যাবার কথা ভাবলেই, রক্ত হিম হয়ে যাচ্ছে আমার। নীচে শিভের গলা পেতেই জোর টা ফিরে এল আমার কাছে। ভাবলাম, আমার অমৃত তো আমার কাছে। নাহ যাই। সামনে থেকে ফেস করি এই আঘাত টা। আঘাত পেতে পেতে একদিন সহ্য হয়ে যাবে আমার।

নীচে নেমে, আন্টি আর আঙ্কল কে দেখে একটু হেসে রান্না ঘরে চলে গেলাম। আজকে ভাত খেয়ে গেছিল শিব। ওর স্যুপ টা খায় নি। বানিয়ে দি। ও খেয়ে নিক সন্ধ্যে বেলায়। রাতে রুটি খাওয়াব ওকে আজকে। আমি সবজি কাটছিলাম আর চেষ্টা করছিলাম, বাইরে ওদের কথা শোনার। হয়ত আমি শুনতে পাব বলেই ওরা কিছু বলছে না। মা এলো রান্না ঘরে। মায়ের মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে না কি হয়েছে। মা এসেই আমাকে বলল,
-     যা তোকে তোর আন্টি ডাকছে।

আমি মায়ের দিকে তাকালাম। বুঝলাম মা চাইছে না খারাপ খবর টা আমাকে দিতে। আমি তো নিশ্চিত হয়ে গেলাম এখন রাকা রাজী হয় নি। মা কে জড়িয়ে ধরলাম আমি বললাম,
-     মা তুমি থাক আমার সাথে। এতো আঘাত তোমার বুকে থেকে না নিলে আমি মরে যাব।

তখন মনে মনে ভাবছিলাম রাকার কথা, উফ আমাকে ছোট বেলায় এতো গার্ড করে রেখেছিল কেন? বড় হয়ে আমাকে এই ভাবে শাস্তি দেবে বলে? ও যাই করুক আমাকে। ও যেন শিভ কে কেড়ে না নেয় আমার থেকে। আমার ও এত্তোটুকু ইচ্ছে নেই ওর বউ হবার । কিন্তু শিভ কে নিয়ে কিছু করলে আমি মনে হয় মরেই যাব। কেঁদে উঠলাম আমি মাকে জড়িয়ে ধরেই। মা আমার চুলে হাত বোলাচ্ছে। আমাকে বলল মা,

-     আঘাত কীসের? আমার মেয়ে কি ফেলনা নাকি?
ততক্ষনে আন্টি ডাকছেন আমাকে।
-     কই রে এদিকে আয়। শিবানী??????

আমি ওই ভাবেই মা কে নিয়ে বেরিয়ে এলাম রান্না ঘর থেকে। আন্টি মায়ের দিকে হেসে বললেন,

-     না দিদি, মেয়ে তো পছন্দ হয়েছে আমাদের। ভালই পছন্দ হয়েছে। কিন্তু আমার নাতির মা , আমাকে আন্টি বললে তো আর বিয়ে দেওয়া যায় না।

তারপরেও রাকার বাবার দিকে ঘুরে বললেন,
-     কি বলো তুমি? আমাকে মা বলতে পারবে এমন মেয়েকেই নাতির মা করতে হবে, তাই না??

তারপরেই প্রায় একেবারে হেসে গড়িয়েই পড়লেন আন্টি। আমি অবাক হয়ে গেলাম। আঙ্কল কি বললেন আমার কানেও এলো না। মানে, রাকা বিয়ে করবে বলেছে আমাকে?  শিভ কে কেউ কেড়ে নেবে না আর আমার থেকে? না না আমার মনে হয় এটা আঙ্কল আন্টি র কথা। রাকা হ্যাঁ বলে নি। বা রাকার উপরে জোর দিয়ে ওর কথা আদায় করেছেন আন্টি। আমি কিছু বলতেও পারছি না। কেমন একটা স্থবিরতা একটা হায়া আমাকে নুইয়ে দিচ্ছে একেবারে। বলতেও পারছি না যে,
-     আন্টি তোমাকে মা বলব এ আর বড় কথা কি। মায়ের মতই তো তুমিও আমাকে আগলে রেখেছ। নিজের মেয়ের মতই আমাকে অধিকার দিয়েছ, তোমাদের জন্য কিছু করার। আমার মায়ের থেকে কিছু কম তো তুমি নউ।

কিন্তু আমার শরীরের স্থবিরতার সাথে জিভ ও মনে হয় স্থবির হয়ে গেছে। মা আমার চিবুক ধরে বলল
-     যা গিয়ে প্রণাম কর সবাই কে। তোদের বিয়ের আয়োজন করতে হবে তো?

জীবনে এতো লজ্জায় কোন দিন ও পরিনি আমি। হ্যাঁ মেয়ে হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই রকম ভাবে বিয়ের কথা চলবে আর সামনে গিয়ে এক এক করে সবাই কে প্রণাম করতে হবে সে তো সিলেবাসের বাইরে ছিল। কোন রকমে আন্টি কে আঙ্কল কে বাপি কে মা কে প্রণাম করে রান্না ঘরে চলে এলাম আমি। হাঁপাচ্ছি রীতিমত। এক রাশ আনন্দের সাথে ঘিরে ধরেছে আমাকে ভয়। রাকা কি ইচ্ছে তে রাজী হলো নাকি, বাধ্য হয়ে রাজী হলো। ভাবলাম তারপরে, তাতে আমার কি যায় আসে। আমি তো চেয়েছিলাম শিভ আমার কাছে থাকুক। রাকাও তাই চেয়েছিল। হয়ত ও অন্য কাউকে বিয়ে করত কিন্তু শিভের জন্য আমাকে করছে। এই বিয়ে টা তো সেই রকম ই হচ্ছে। আমি কেন ভাবছি অতো রাকার মন? শিভের স্যুপ টা করে নিয়ে গেলাম ডাইনিং এ। ওকে বসিয়ে দিলাম। আন্টি উঠে এল শিভের দিকে। খাইয়ে দিতে ওকে। আমি আবার রান্না ঘরে এলাম, চা বসালাম সবার।

এতো আনন্দ লাগছে বলে বোঝাতে পারব না। শুনতে পাচ্ছি রাকা আসবে একটু পরে। ওরে বাবা!! ওর সামনে তো দাঁড়াতেই পারব না। এমন পরিস্থিতি র সামনে তো কোন দিন ও হই নি। তাও জেনে নিতে হবে ওর থেকে যে, কতটা বাধ্য হলো ও আমাকে বিয়ে করতে। সেই অনুযায়ী আমাকেও চলতে হবে। জানিনা অন্য ছেলে হলে কি হতো। কিন্তু ওকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি। থাকতে অসুবিধা হবে না ওর সাথে।
মা ততক্ষনে রান্না ঘরে এল। আমাকে বলল,
-     কি রে চুপ কেন?

আমি মায়ের দিকে তাকালাম। লজ্জা তো লাগছিল আমার খুব ই। কিন্তু তাও জিজ্ঞাসা করলাম,
-     রাকা কি রাজী হয়েছে, নাকি আন্টি বাধ্য করেছে?
-     তাতে তোর কি? তোর হিসাবে তুই ও তো বাধ্য হচ্ছিস তাই না?
-     হ্যাঁ সে তো বটেই। ওকে কে বিয়ে করতে যাবে?
-     তবে আবার কি? ওই সব ভাবিস না। যা চা টা দিয়ে আয়। আর বুঝিয়ে রাজী করালে তাকে বাধ্যতা বলে না।

 কালকে তোকে বোঝানোর পরে তুই ও রাজী হলি। আর এখন তুই রাকার কেন দোষ ধরছিস।
সব ব্যাপারেই মা আমাকে সাপোর্ট করে। এই শুয়োর টার ব্যাপারে এমন তেড়ে আসে কি বলব। মুখে রাগ দেখালেও, মনে মনে ভালই লাগে। জানিনা কেন? হয়ত আমার ভালোবাসাই আমাকে এই ভাল লাগা টা দেয়। রাতে সবাই আমাদের বাড়িতেই খাওয়া দাওয়া করল। আমি একটু রাকার সাথে কথা বলতে চাইছিলাম। যতই হোক বিয়ে হচ্ছে। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তো থাকবে না। তাও কথা বলতে হবে। আমি যখন সবার এঁটো প্লেট তুলে নিয়ে আসছিলাম। রাকা বসে ছিল তখনো। হয়ত শেষ গ্রাস টা নেবে। ওর চিরকাল ই ধীরে খাওয়া। কেউ ছিল না আশে পাশে। আমাকে দেখেই খুব নীচু গলায় বলল
-     তোর সাথে কথা ছিল কিছু।

শয়তান টা কে দেখলেই রাগ ধরে আমার। বলতে জাচ্ছিলাম ঝাঁঝিয়ে কিছু, কিন্তু থেমে গেলাম। মনে হলো আমিও তো কথাই বলতে চাইছিলাম ওর সাথে। ভাটানোর কিছু ছিল না ওর সাথে। ততক্ষনে রাকার খাওয়া শেষ হয়ে গেছিল। ওর প্লেট টা তুলে, এঁটো গুলো ওর থালার পাশে পরেছিল, সেগুলো তুলছিলাম। ওই ভাবে এঁটো তুলতে তুলতে, ওর দিকে না তাকিয়েই জবাব দিলাম,
-     আমি ছাদে যাই ছেলেকে নিয়ে খেয়ে দিয়ে। ওখানে আসলে কথা হবে।

চলে এলাম রান্না ঘরে। টেবিল টা মুছতে গিয়ে দেখি ও উঠে হাত ধুচ্ছে। হাত মোছার তোয়ালে টা পাশে নামিয়ে আমি উপরে এসে, বাথরুম এ গিয়ে ফ্রেশ হয়ে, সামান্য রূপ চর্চা করে নিলাম। মনে মনে ভাবছি, বিয়ে করছে বলে আমাকেই সব করতে হবে। মা ও তো তোয়ালে টা রেখে দিতে পারত। আমাকে দিয়েই রাখালো ওর পাশে। রূপচর্চা রোজ ই করি। ওই সামান্য একটু ক্রীম মাখি। আমার স্কীন অয়েলি বলে একটা ক্রীম আমি বারো মাস মাখি। বিশেষ করে গরমের সময়ে। চুল টা আঁচড়ে নিলাম। মা আর আন্টি গল্প করছিল আমার ঘরে। বাপি আঙ্কল আর ভাই মনে হয়ে টিভি দেখছে। আজকে হবু বউ এর সাথে ফোনে কথা বলতে যায় নি ছাদে। হয়ত আন্দাজ করেছিল আমরা ছাদে কথা বলতে পারি। আমি ছেলেকে নিয়েই ছাদে গেলাম। বাপি ওর জন্য একটা দোলনা করে দিয়েছে ছাদে। ও খেলে এই সময় টা ছাদে। গরম তো কম না। একটা হালকা জামা পরিয়ে নিয়ে গেলাম ওকে ছাদে। রোজ আসি। গিয়ে দেখলাম রাকা রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে।

কত থেকেছে এমন ও, আর আমি পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছি। কিন্তু আজকে বড্ড অচেনা লাগল ওকে। ছেলেকে ছেড়ে দিতেই ও দোলনা তে উঠে পড়ল। তারপরে আবার নেমেই ছাদে রাখা একটা তিন চাকার স্কুটার নিয়ে গড়গড় করে আওয়াজ করে চালাতে লাগল। রাকা পিছন ফিরে আমাদের দেখল। চলে গেলাম রেলিং এর কাছে। ঠাণ্ডা স্বরে বললাম ওকে
-     কি বলার জন্য ডাকা হলো আমাকে?

এ এক ঝামেলা! না পারছি ওকে সপাটে তুই তোকারি করতে, না পারছি অন্য কিছু বলতে। তুমি বা আপনি বলার তো প্রশ্নই আসে না। কিন্তু তুই টাও বলতে পারছি না। অনেক দূরে চলে গেছে ও আমার থেকে। তাই ভাব বাচ্যে কথা সারছিলাম আমি।

ভাবলাম আগে শুনি ও কি বলবে তারপরে আমি আমার কথা বলব। ও চুপ রইল। ও এখন কথা কম বলে। আগের সেই রাকা ও আর নয়। আগে এতো ক্ষন একলা থাকলে দশ বার আমাকে উৎপাত করত। কখনো চুল টেনে দিত বা হিটলার বলত একশ বার। বড্ড চুপ এখন ও। শুধু বড় বড় শ্বাস নেয় এখন। হয়ত কিছু বলতে ইচ্ছে আছে, কিন্তু বলতে কনফিডেন্স পায় না। ভাবলাম এই সেই রাকা, যে খিস্তী দিতে একবার ও ভাবত না। ধীরে ধীরে ও আমার পাশে এসে দাঁড়াল ।খুব নিচু গলায় বলল,
-     তুই মনে হয় বাধ্য হলি আমাকে বিয়ে করতে, তাই না?

সাড়া দিলাম না। কি উত্তর দেবো এ কথার। আমি তো বিয়ের কথা ভাবিও নি। একপ্রকার বাধ্যতাই, কিন্তু কিছু বললাম না আমাকে। ও আবার বলল,

-     হুম, তোর এই নীরবতাই আমাকে উত্তর দিয়ে দিলো রে!

কিছু ক্ষন চুপ থাকল রাকা। আমি তখন ও সাড়া দিই নি। ভাবছি, ও যা ভাবে ভাবুক আমার নীরবতা কে। সেটা কে ইন্টারপ্রেট করার দায়িত্ব আমার নেই। রাকা মুখ খুলল আমার, সেই থেমে থেমে, নিচু গলায়,
-     আসলে কি বলত? আমিও চাই নি তোকে আর আমার সাথে জড়াতে। কারন জানি তুই আমাকে কোন দিন ক্ষমা করতে পারবি না। কিন্তু বিশ্বাস কর, এমন কোন দিন নেই, সেদিনের পর থেকে যেদিনে আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করিনি, যেন তুই আমাকে ক্ষমা করিস। শান্তি পাই নি কোন দিন সেদিনের পর থেকে। সামান্য চোখ বুজলে, তোর জলে ভরা চোখ দুটো মনে পরে, ঘুমিয়ে গেলে তোর কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া টা স্বপ্নে দেখি।

কথাটা বলার পরে,অনেকক্ষণ চুপ রইল। আর বস্তুত এই সব কথার উত্তর আমার দেবার প্রয়োজন নেই। আমি তো এই সব ভাঁট শুনতে আসিনি। কোন দরকারি কথা থাকলে বলুক ও। ভাবলাম চলে যাই। কিন্তু আবার ও বলতে শুরু করল। প্রায় শুনতে পাচ্ছি না যেন, এতোই গলার স্বর নামিয়ে কথা বলছিল ও।
-     ভুলতে পারিনি আমি, আজকে আমি যে জায়গায় আছি, সে জায়গায় আমাকে আনতে একজন ই আমার সাথে সমান পরিশ্রম করেছিল।নিজের সর্বস্ব দিয়ে দিয়েছিল, আর তাকে আমি কত না কষ্ট দিয়েছি। কত বার ভেবেছি সব ছেড়ে চলে আসি তোর কাছে। কিন্তু ততদিনে বিয়ে হয়ে গেছিল আমার। যাই করি, আমার এই বোকামোর জন্য অঞ্জনার জীবন টা তো আমি নষ্ট করে দিতে পারি না। তাই আর আসা হয় নি। অঞ্জনা ও হয়ত আমার ভালবাসা না পেয়ে বুঝেছিল, কত বড় ভুল হয়ে গেছে আমাদের তিন জনের জীবনে। আহহ কি যে হয়েছিল আমার সেদিনে!!!!!!!!!

আহহ কথা টা বেশ জোরে রাগে বলতে গেলো ও। কিন্তু গলা টা কেঁপে গেলো শেষের কথা টা বলার সময়ে। এ মা! গলা ধরে এলো নাকি ওর? রাকা উল্টো দিকে মুখ ফিরিয়ে। আমি দেখার চেষ্টা করলাম ও কাঁদছে কিনা। চোখের জল মুছল কি আমাকে লুকিয়ে? নাটক যত! কিন্তু আমি এমন কাঁপছি কেন? আর সাথে চোখেও আমার জল? এমন কি বলল ও যাতে আমি এমন ভাবে কেঁদে ফেলছি। সব ই তো আমি জানি। সেই ঘটনার পাত্রী তো আমিই ছিলাম। ভিতরের কান্না টা যেন পুরো শরীর টা দুলিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। বুঝলাম, আজকের কান্না টা ওর সপাট স্বীকারোক্তির আমার বুকে এসে ধাক্কা লাগার কান্না। নাহ শুয়োর টার সামনে কাঁদব না একদম। কিন্তু ও কাঁদছে যে? আমার কি? কাঁদুক গে। বুঝে করুক গা। আমি সাড়া দেব না। এমন দেখাচ্ছে যেন খুব কষ্টে ছিল। আমি জানি কিচ্ছু কষ্ট পায় নি। একটা হিজড়ের জন্য কষ্ট কি? ও কি ভাবছে আমি ওর কান্না থামাব? বয়েই গেছে আমার। আমিও উল্টো দিকে মুখ ফিরিয়ে চোখের জল মুছে নিলাম। রাকা আবার বলতে শুরু করল। গলার ধরা ভাব টা খুব স্পষ্ট এবারে।
-     আসলে আমি চাই নি, আমার ছেলে একটা বাজে মানুষ হয়ে বড় হোক। আমি জানিনা ও বড় হয়ে কি হবে, কিন্তু আমার ইচ্ছে ও বড়ো হয়ে মানুষ হোক। আর তোর থেকে ভালো কেউ নেই ওকে মানুষ করার জন্যে। আমার জীবনে ওর মানুষ হওয়া ছাড়া আর কোন লক্ষ্য নেই।

মনে মনে ভাবলাম ছেলের কথা তোকে ভাবতে হবে না আর। আসলে জানিনা কেন শিভের ব্যাপারে আমি ছাড়া আর কেউ চিন্তা করছে, সেটাও ওর ভাল মন্দ নিয়ে আমি ভাবতে পারি না। খুব পজেসিভ হয়ে উঠেছি আমি শিভের উপরে। ভুলেই যাই, আমার শিভ রাকার ছেলে। আমার অনেক আগে ওর অধিকার। কিন্তু মানতে পারি না। শিভ যে আমার পেট থেকে হয় নি, এটা মেনে নেওয়া কষ্টকর। ও বলে চলে,
-     খেলা তো মনের আনন্দে খেলি এখন। প্রয়োজনের দলে নেই আর সেটা। সারা জীবন তোর কথা শুনে চলে আমার সব ভালো হয়েছে। বাস একদিন নিজের মনের কথা শুনেছিলাম, তার ফল করছি গত ছয় বছর আমি। না অঞ্জনা খুব ভাল মেয়ে ছিল। হয়ত আমার কষ্ট টা ও বুঝত। কিন্তু আমি ভুলতে পারিনি সেই বিকালের ঘটনা। আর সেই বিকালের জন্য আমি ওদের বাড়ির কাউকে আর নিজেকে ক্ষমা করতে পারিনি কোন দিন ই। জানি, স্বার্থপর হলাম একটু আমি। হয়ত তোর সাথে থাকতে থাকতে কোন দিন আমাকে ক্ষমা করলি তুই।

আবার চুপ করে গেল রাকা। এবারেও আমার বলার কিচ্ছু নেই। একটা হালকা হাওয়া এলো সেই মুহুর্তে। মনের প্রাঙ্গনে যে ময়লা টা জমে ছিল,সেই হাওয়ায় উড়ে গেল অনেক টা ময়লা। যেন মনে হলো, আঙিনা টা বেশ পরিষ্কার এখন। রাকাও এতো ক্ষনে সামনে নিয়েছে। গলার ধরা ভাব টা আর নেই। ও বলল,
-     আমি জানি ওকে আমি তোর ঘাড়ে চাপিয়ে দিলাম। কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না। ওকে তোর কাছে রাখতে এর থেকে ভালো কোন উপায় আমার ও মাথায় আসে নি। হয়ত তোর কাছে থাকার আমার ও এইটা একমাত্র উপায়। তাই মা যখন আমাকে কালকে বলল তোকে বিয়ে করার কথা আমি ভাবিনি কিচ্ছু। হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম তখনি। খুব ভয়ে ছিলাম, তুই আমাকে স্ট্রেট রিজেক্ট মারবি। কিন্তু মা বলল, শিভের মুখ চেয়ে তুই ও রাজী হয়েছিস। দ্যাখ, আগে অনেকবার আমাকে ক্ষমা করেছিস তুই। এবারের জন্য ভিক্ষে চাইব না। তোর সাথে থেকে, সেই ক্ষমা আদায় করব ঠিক। তুই দেখে নিস।

ফুঁপিয়ে উঠলাম আমি আনমনেই। তাকালাম ওর দিকে। কেমন বুক জুড়ে একটা কষ্ট হল আমার। ও হয়ত বলল ভিক্ষে চাইবে না। কিন্তু বলা কথাই কি সব? ওর মন যে কখন থেকে আমার সামনে হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেটা কেউ না বুঝলেও আমি বুঝতে পারছি। কোন দিন ওকে এতো অসহায় কারোর সামনে হতে দেখিনি। ওকে অসহায় দেখতে ভালো লাগে না আমার। হতে পারে ও আমাকে খুব অপমান করেছে। কিন্তু তার বদলে ওকে অসহায় হয়ে কারোর থেকে ভিক্ষা চাইতে হবে এটা কল্পনা ও করিনি। তাতে সেই কেউ টা আমিই হই না কেন। বললাম না তখন, ভিতরের উঠোন টা বেশ পরিস্কার হয়ে গেছিল। আর যতই উঠোন টা পরিস্কার হচ্ছিল, রাগ টা চলে গিয়ে তীব্র অভিমান ফিরে আসছিল আমার মধ্যে। মনে পরছিল, আমি তো হিজড়ে।

মনে শক্ত হয়ে গেল আমার ওই কথা টা মনে করে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে, কেমন যেন কাছে থেকেও বড্ড দূর থেকে কথা বলছে। আগে তো কত কিছু জোর করে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিত। আজকে সেই ক্ষমতা ওর নেই। আর সত্যি তো, ওর সাথে এতো মানসিক দুরত্বে থেকে, আমি কেন ওর কথা এতো ভাবছি? আর বাস্তবিক ই, ও যদি ভাবে এই সব সিম্প্যাথেটিক কথা বলে ও আমার থেকে কোন গুরুত্ব পাবে, তবে ভুল ভাবছে ও। সাড়াই দেব না এই সব ফালতু কথার আমি। ক্ষমা, প্রার্থনা, বাবাহ কত কথা শিখে গেছে। গান্ডু সালা। ভাবলাম চুপ থাকি, কিন্তু ছেলের প্রসঙ্গ তুলল ও। ওখানে আমি কোন কথা ফেলে রাখতে চাই না। আমি রেলিং থেকে তাশির দিকে চেয়ে ওকে বললাম,
-      ছেলে কেন আমার ঘাড়ে চাপবে? আমার জীবনে ও ছাড়া কিছু নেই। তাই ওর ঘাড়ে চাপার কথা যেন আজকেই শেষ হয়। আমরা রাজী হবার আগেই ও আমাকে মায়ের আসনে বসিয়েছে। আর আমার দিক থেকেও এর কোন ব্যেতিক্রম নেই। ছেলের জন্যেই হয়ত আমরা বিয়ে করছি, কিন্তু ছেলেকে আর এই সব আলোচনায় আনার দরকার নেই। আমাদের মধ্যেকার কোন ঝামেলা, কোন মলিনতা, কোন অপ্রিয় কথা, যেন ছেলের সামনে, ছেলের কানে, ছেলের মনে কোন ভাবেই না যায়।

বলে চুপ করে গেলাম। গল গল করে উগরে দিলাম ওর সামনে কথা গুল। নার্ভাস লাগছিল নিজেকে খুব। হয়ত আমার এই অসংলগ্ন কথার মানে বোঝার চেষ্টা করছিল ও। কি জানি বুঝল কিনা। অনেকক্ষণ পরে বলল
-     ও আচ্ছা ঠিক আছে। আর কিছু বলব না। আমার খেলা আছে পরের মাসে কাতার আর মায়ানমারের সাথে। পরের মাসে পনের দিন আমি হয়ত থাকব না। তুই তার আগেই বিয়ে টা করে নিতে চাইছিস নাকি ট্যুর শেষ হলে করতে চাইছিস।

উত্তর দিলাম না আমি। আমার তো ইচ্ছে, এখনি হয়ে যাক বিয়ে টা। ওকে পরিষ্কার করে দেওয়া ভাল। বিয়ে আমি ওর বউ হতে করছি না। ওর সাথে শুতেও করছি না। কিন্তু কি যে বলি এখন? যদি বলি এখনি বিয়ে টা করে নি, ও কি ভাববে? ভাববে আমি মরে যাচ্ছি ওর বউ হতে। আর যদি দেরী করি,তাহলে শিভের ব্যাপার টা আমাকে ভাবাচ্ছে। বিয়ে হয়ে গেলে আইনত এবং সত্যি সত্যি ই আমি ওর মা হয়ে যাব। কারোর কিছু বলার থাকবে না। কিন্তু কি যে উত্তর দি। রাকা আমার দিকে চেয়েই ছিল। আমি চেয়ে ছিলাম, তাশির দিকে। উত্তর টা ওই দিয়ে দিল,
-     আমার মনে হয় আগেই করে নেওয়া ভাল। তারপরে তুই যা ভাল বুঝিস।

ইচ্ছে করছিল, সেই আগের মতন ওর ঘাড়ে হুড়ুম করে চেপে পরি আনন্দে। কিন্তু আর সহ্য হয় না ওকে। তাই নিজেকে সামলালাম। আরো একটা ব্যাপার আছে। একটা সময় অব্দি আমি ছাড়া ওর শরীরে কেউ স্পর্শ ও করত না। জানিনা কেন, মেয়ে হবার পরে, একটা সময় অব্দি, এটাই ভাবতাম, এই ছেলেটা আমার নিজের, আমারি সব কিছু। কিন্তু মাঝে আরেক টা মেয়ে ওই শরীর টা কে জড়িয়ে ধরেছে। না জানি কত কিছুই করেছে। ঘেন্না হলো একটা। তাই এই সময়ে এমন একটা ভাব করলাম যেন আমার কিছু যায় আসত না, পরে বিয়ে করলেও। ভাববাচ্যেই বললাম গম্ভীর হয়ে,
-     মা কে বলে দিলে ভালো হয় সেটা।

চলে আসছিলাম আমি তারপরে ছেলেকে কোলে নিয়ে। কিন্তু মনে হলো আরো একটা কথা বলা দরকার। ও তাকিয়েই ছিল আমাদের দিকে। ছেলের আমার কোলে থাকা দেখছিল। ওকে বললাম
-     দরকার নেই, অনুষ্ঠান করে বিয়ে করার। অঞ্জনা আমার ও বন্ধু ছিল। তাই রেজিস্ট্রি করলেই ভাল।এমনিতেই বাধ্যতার বিয়ে, আর অঞ্জনার উপরে এতো বড় অবিচার করতে পারব না আমি, ধুমধাম করে বিয়ে করে।  আর সেটা আমি মা কে বোঝাতে পারব না। অন্য কেউ সেই দায়িত্ব টা নিলে ভাল হয়। এখন যাচ্ছি, ছেলে ঘুমোবে।
রাকা মনে হয় আমার পিছনেই আসছিল আমার। আমি আর তাকালাম না। সিঁড়ি টা অন্ধকার ছিল, আমি নামতেই, রাকা দরজার পাশে সুইচ টা দিয়ে সিঁড়ির আলো টা জ্বালিয়ে দিল। ফিরে তাকালাম ওর দিকে আমি। ভুলে গেছিলাম, এই সুইচ অনেক বার ও জ্বালিয়েছে,নিভিয়েছে এর আগে। তরতর করে নেমে এলাম আমি নীচে ছেলে কোলে নিয়ে।
 
 
মানুষের জীবন টা কেমন তাই না? কোন স্থিরতা নেই। এই ভাবছেন, এখন সব ঠিক, পরক্ষনেই কোন বড় ঝড় এসে সব লণ্ডভণ্ড করে দিল। বা এই হয়ত মনের মধ্যে বিষাক্ত কোন বিষ রয়েছে, এমন একটা ঘটনা ঘটল, মনের ভিতরের সব মলিনতা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল। আজ থেকে মাস খানেক আগেও আমি, বেশ স্বাভাবিক ভাবেই জীবন চালাচ্ছিলাম নিজের। ভাবছিলাম, আমার জীবন আমার কন্ট্রোলে আছে। যেমন চালাব তেমনি চলবে। কিন্তু এই এক মাসে যা হয়ে গেল তাতে, নিজের জীবনের উপরে আর নিজের কন্ট্রোল এর উপর আস্থা তো রাখতে পারছি না। ধরুন একটা ছেলে আনন্দে ফুটবল খেলছে। দারুন খেলছে। হাফ টাইমেই সে দুটো গোল দিয়ে দিয়েছে। হাফ টাইমে কেউ এসে ওকে খবর দিল, ওরে আজকে অঙ্কের খাতা বেরিয়েছে, আর তুই ফেল করেছিস। ব্যস ছেলেটা আর খেলতেই পারল না। মাঠে রয়েছে, কিন্তু সে না থাকাই। হয়ত সে ভাবছে, তার ডাক্তার বাপ, তাকে রাতে খুব বকবে, পাড়া প্রতিবেশী জানবে, সে ফেল করেছে। বা তারা গরীব, লোকের বাড়িতে কাজ করে আসা তার মা , ফেল করেছে জানলে খুব কাঁদবে।  ব্যস তার সেই মুহুর্তের কর্ম, সাধনা, সব কিছু মাটি। আমি সেই প্রসঙ্গে যাচ্ছি না, সে পড়াশোনা করেছিল কিনা, বা করেনি। আমি বলতে চাইছি, মাত্র একটা ইনফর্মেশন বা ঘটনা, একটা মানুষের বর্তমান কে, কি ভাবে এম্ফাসাইজ করে। আমি হলাম এই ছেলেটির মতন। আর রাকা হলো ঠিক এর উল্টো। রাকার ভাষায়, কিচ্ছু বাল ছেঁড়া যায় না ওর। আর আমার কথায়, আমার সর্বস্ব ছেঁড়া যায়। এই শিভের আসা আমার জীবন টা কে একেবারে অন্য রকম ভাবে চালাতে শুরু করল। আমার ছেলে থেকে মেয়ে হবার সময়েও এটা মাথায় আসে নি কারন সেটা আমার কাছে অনেক টা এক্সপেক্টেড ছিল। কিন্তু এখন যেটা ঘটছে, সেটা আমি আমার মনের দূরতম কোনেও স্থান দিই নি গত ছয় বছরে।

তাই রাজী হয়ে গেলেও, আমি জানিনা বউ হলে কি কি করতে হয়। ধরে নিলাম, রান্না বান্না ছেলে দেখা এই গুলো কাজ, তবে ঠিক আছে। আমি এই গুল করে দিতে পারব। নিজের কলেজ সামলেও করে দিতে পারব আমি। আমি তো ছেলে ছিলাম, কাজেই আমার গঠন মেয়েদের থেকে একটু আলাদা। বিশেষ করে কোমরের নীচের অংশ টা। কাজেই শক্তি বা সামর্থ্য আমার বেশি সাধারন মেয়েদের থেকে। সে সব ম্যানেজ করতে পারব। কিন্তু এর থেকে বেশী কিছু হলে জানিনা কি করব। যেমন সদবা মেয়ে, কথাটা মা প্রায় ই বলে। বাংলা দিন ক্ষনের হিসাব রাখা, আর সেই সব তিথিতে বাপির মঙ্গলের জন্য মা কত কিছু করে। সব থেকে বড় কথা, শারীরিক সম্পর্ক না হলেও, এক সাথে শোয়া।আমাদের ক্ষেত্রে নিশ্চই সেটা এক ঘরে হবে না। আর এই গুলো কেই মেনে নেওয়াই কঠিন। এখন বুঝছি, সিদ্ধান্ত হয়ত একটাই নিলাম আমি, কিন্তু এর যে এতো ডালপালা আছে, আর সেখানেও প্রতিপদে, ছেলে আর মেয়ের পৃথকীকরণ, আর এতো আলাদা আলাদা সিদ্ধান্ত নেওয়া, সেটা ভাবিনি। আর আমার প্রতিটা সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করতে আমাকেই লড়তে হবে আমি নিশ্চিত।
[+] 11 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply
ঠিক হলো, জুন মাসের ২৫ তারিখে ভালো দিন আছে, সেদিনেই আমাদের রেজিস্ট্রি হবে। আমার মা আর আন্টি চেয়েছিল রাকাদের বাড়িতে একটা ছোট অনুষ্ঠান হবে। আমি সেটা চাইনি। কেমন লাগছিল আমার। মেয়েটা দু মাস ও হয় নি মারা গেছে। আর তার মধ্যেই এই সব। রাকা কে টেক্সট করে দিতে ও হয়ত কথা বলেছিল মা আর আন্টির র সাথে। বন্ধ হয়ে গেছিল।
মাঝে একদিন অঞ্জনার বাবা এসেছিলেন আমাদের বাড়ি। আমি প্রণাম করেছিলাম আঙ্কল কে। ছেলে কে নিয়ে অনেকক্ষণ ছিলেন উনি। খেলা ধুলা করলেন ছেলের সাথে। আমি চা নিয়ে গেছিলাম। মনে হয়েছিল আঙ্কল মনে হয় কিছু বলতে চান আমাকে। আমি চা দিতেই বললেন
-     আয় রে মা। রাকা আমাকে বলেছে বিয়ের ব্যাপারে, অনুমতি নিয়েছে আমার।

আমি কি বলব আর। দাঁড়িয়ে রইলাম চুপ্টি করে। আঙ্কল বললেন
-     ভাল হয়েছে রে। দাদুভাই টা কে দেখে মনে হলো ওর মেন্টাল হেলথ যেটা ডিগ্রেড করেছিল, সেটা খুব ভাল জায়গায় এখন। তোকে থ্যাঙ্কস দিলে তোকে অপমান করা হয় রে মা।

আমি হাঁ হাঁ করে উঠলাম
-     না না আঙ্কল, থ্যাঙ্কস দেবেন কেন? ও যে আমার কাছে কি, আপনাকে বলে বোঝাতে পারব না।
-     হুম, আমি হয়ত বুঝি। যাই হোক, রাকা বলছিল, তুই নাকি রাজী ছিলিস না বিয়েতে?

চুপ রইলাম আমি। তারপরে বললাম,
-     হ্যাঁ। আমার ওকে বলে না, বিয়ের ই কোন ইচ্ছে ছিল না আঙ্কল। আপনি তো জানেন, কোন ন্যাচুর‍্যাল, গড মেড উওম্যান নই আমি। আমার মন টা মেয়ের ছিল, আমি মেয়ে হয়েছি। তাই বিয়েতে কোন ইন্টারেস্ট নেই বললেই চলে। আজকেও যদি কোন উপায় আসে, শিভ আমার ছেলে হয়ে গেল, তাহলে আমার রাকাকে বিয়ে না করলেও চলে।
-     না রে মা, ভাল করেছিস বিয়েতে রাজী হয়েছিস। রাকার ও কেরিয়ার অনেক টা বাকি এখনো। ওর একজন সঙ্গী দরকার। ওকে যে বুঝবে। ওকে যে ভালোবাসবে। আর আমি যতদুর শুনেছিলাম অনার মুখ থেকে, তোর থেকে রাকা কে ভালো করে কেউই আর চেনে না। যাই হোক, এতো ভাবিস না আর। আমি উঠব রে মা এবারে। মাঝে মাঝে আসব কিন্তু তোকে জ্বালাতে।
-     ওমা সে কী কথা আঙ্কল। একটা ফোন করে নেবেন আমাকে। আমি হয়ত কলেজে থাকব ওকে নিয়ে। আপনি ব্যস্ত মানুষ, আমাকে বলে দিলেই আমি চলে আসব।
-     ধুর পাগলী , বুড়ো হয়েছি, শিভ টা বড় মায়াবী। তাই দেখতে ইচ্ছে করে। আসলে আমি এই সন্ধ্যের পরেই আসব। চলি রে মা।

তারপরে চলে গেলেন আমাকে আশির্ব্বাদ করে। চোখের জল লোকালাম কোনরকমে। আঙ্কল এর শেষ কথাটা আমাকে কাদিয়েই দিল। আমি হয়ত ওনার কষ্ট টা বুঝতে পারছি না। কিন্তু এটা বুঝতে পেরেছি, আজকে যে যা কষ্ট লুকিয়ে রাখছে,সেটা সবটা শিভের জন্য। আমি তো নিশ্চিত, অঞ্জনার মা আর বোন আমাদের এই বিয়ে টা  মেনে নেবে না। জানিনা , কোন দিন দেখা হলে আবার কত টা অপমানের জ্বালা বুকে নিতে হবে আমাকে।  
 
রাকা কে বিয়ে করা টা আমার কাছে এক দিক থেকে বাধ্যতা অন্যদিক থেকে প্রয়োজনীয়তা। তাই চেয়েছিলাম হয়ে যাক তাড়াতাড়ি। কিন্তু মনে উত্তেজনার কোন জায়গা ছিল না। আমি তো রাকা কে দেখিনি, দেখেছি শিভ কে। আর শিভ আমার কাছেই ছিল। আমার খুব আশা, যে বিয়ের পরেও বিশেষ কিছু বদলাবে না। আমরা মা ব্যাটা তে থাকব যেমন আছি, আর রাকা থাকবে রাকার মতন। কিন্তু ওই যে বললাম, হিসাবে মানুষ অতো দড় নয়, কারন আমরা পার্থীব ব্যাপারে হিসাব করি, আর উপর ওয়ালা তো, কত জন্মের লার্নিং, পাপ, পূন্য হিসাব করে একটা আরেঞ্জমেন্ট ফিক্স করেন। যাই হোক, বিয়ে টা হয়ে গেল। আমাদের বাড়িতেই বিয়ে টা হলো। আমরাই ছিলাম। রাকাদের পরিবার, আমাদের পরিবার, রনি রনির হবু বউ আর অঞ্জনার ড্যাডি, মা আর বোন। আমার বোন এসেছিল বর আর মেয়ে নিয়ে। অঞ্জনার পরিবারের জন্য মা একটা ঘর ছেড়ে দিয়েছিল। ওনারা আসবেন, থাকবেন পুরো দিন। একটা ঘর তো লাগবেই। তারপরে ওনারা বেশ উচ্চবিত্ত। কাজেই মা এই ব্যবস্থা টা ওনাদের জন্য করেছিলেন। ওনারা যে এসেছেন এই বিয়েতে এটাই অনেক আমার কাছে। শিভের জন্য, ওনাদের আশীর্ব্বাদ দরকার ছিল।

কথা হয়েছে, সন্ধ্যে এবং রাত, রনি এই ক জনের জন্য, এবং রাকার গ্রামের বাড়ি আর আমাদের কিছু প্রতিবেশীর জন্য খাবার এর ব্যবস্থা করবে আমাদের বাড়িতেই। ওই জনা চল্লিশ মানুষের ব্যবস্থা। আমি আর না করতে পারিনি। রনি কে বলেছি টাকা নিতে। জানিনা কি করবে ও। সবাই বিয়ে নিয়ে মত্ত। আমার বিশেষ কিছু উত্তেজনা নেই। একটাই উত্তেজনা, আমি শিভের বৈধ মা এখন থেকে। লোকে বাপের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আর আমার তো সারা জীবন ই চাকা উল্টো দিকে ঘোরে। যাই হোক দুপুরের খাওয়াও রনি ব্যবস্থা করেছিল।

একটা কথা চুপি চুপি বলে রাখি, যতই বিয়ে নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা না থাকুক, একটা ব্যাপার নিয়ে মাথা ব্যাথা ছিল। সেটা হল, কোন রাখহরি র বউ হতে আপত্তি ছিল আমার। রাকার নাম রাখহরি সেটা আমি অনেক আগেই জানতাম। একটা সময় তো এসেছিল জীবনে আমার, যখন আমি ভেবেছিলাম, রাকা আমাকে গ্রহন করেছে। থাক সেসব কথা, কিন্তু সেই সময়েই আমার মনে হতো, ও আমাকে মেনে নিলে ওকে বলব, নাম টা বদলাতে। রাখহরি কারোর নাম হলো? আমি কিছু বলতে পারছিলাম না ওকে। কারন এখন কোন সম্পর্কই ছিল না আর আমাদের। কিন্তু টেনশন এ ছিলাম ব্যাপার টা নিয়ে খুব। তাই যখন সাইন করছিলাম, ম্যারেজ পেপার এ, রাকার নাম টা ভালো করে পড়লাম। দেখলাম, কথা মতন ও রাখহরি টা বদলে, রাকা করে নিয়েছে। কারন রেজিস্ট্রী পেপার এ রাকা চ্যাটার্জী ই ছিল। ও বুঝতে পেরেছিল সেটা। কারন সাইন করার আগে আমি দেখছিলাম পড়ে ওর নাম টা। সাইন করার পড়ে ওর দিকে তাকিয়ে দেখি, আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।গা টা জ্বলে গেছিল আমার। নাটক যত! ও সাইন করল কি না করল আর দেখিনি আমি। ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম ওই ঘর থেকে।
[+] 13 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply
moner jantrik byapar gulo samleo last tuku r wit ta besh jomiye dilen...sign kore hasche amar dike.....bhalobasa accept korte parche na but name or moto howa chai......aste aste anek kichui change hobe dekhchi......i think suddenly ektu paisa r j meye tar opor choto theke crush chilo take peye jawate raka r matha kaj koreni.....noile j take toiri korlo take tar khub sensetive jaigai o aghat korte parto na......ato diner kasto ta ekdiner bhalabasa te chole jabe na......manchi cheleder anek kom sacrifice korte hoi meyeder theke.....khub khub choto choto byapar gulo teo meye gulo anek kichu chere dai.....hoito setai thik...hoito na......besh lagche ei golpe sei byapar ta dekhte......hoito trans bole byapar ta r gurutyo anek kom or emni kichu....but tao sacrifice shiv k anek ta besi korte hobe raka r theke....noile oi opoman bholar noi......let go kore age chole eseche but ekta kasto thakbei ......r akhon again let korleo ekta bhae thakbei whole life.....how raka handle that otai dakhar
[+] 2 users Like raja05's post
Like Reply
শিবের মাথায় সর্বক্ষণ ছেলের চিন্তা, তারপর নিজের পরিবারের দায়িত্ব  ও আছে।তার উপর রাকা ও তার পরিবারের লোকজন ও আছে। এদের কে নিয়ে এতো চিন্তা করলে, নিজের কলেজের কাজ হয়তো কোনদিন  লাটে উঠবে। নয়তো  শরীর টাই  কর্মক্ষেত্রে থাকবে  , মন  টা    থাকবে না।   Heart
 








PROUD TO BE KAAFIR  devil2


                                 
[+] 1 user Likes Kallol's post
Like Reply
উফফ প্রতিটা পর্ব যত এগোচ্ছে ততই রোমাঞ্চকর হয়ে উঠছে.... হ্যা... ভালোবাসার গল্পও রোমাঞ্চকর হতে পারে যদি তাতে থাকে আসন্ন প্রতিটা মুহূর্ত দিন রাত জানার প্রবল ইচ্ছা... কি হবে, কিভাবে হবে, কতটা সফলতা থাকবে, কতটা অভিমান থাকবে, কতটা অধিকার বাড়বে, কতটা মমতা বাড়বে, কতটা কাছে আসবে.... জানার প্রবল ইচ্ছা ভেতরে রোমাঞ্চ সৃষ্টি করে..... এবারে এক নতুন ধাপের সূচনা হচ্ছে.... আর তারা দূরে নেই...... চাক বা না চাক.... কাছে এসেই গেছে.... ওই নিষ্পাপ বাচ্চাটাই আজ ওদের আবার সম্মুখে দাঁড় করিয়েছে.... সন কিছুর পরেও কিছু যতটুকু বাকি ছিল... সেটা পূর্ণ করতে ❤
[+] 4 users Like Baban's post
Like Reply
Masterpiece ??
[+] 1 user Likes Maskin's post
Like Reply
didi aj lekha deben na ?
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
all good ? u well ?
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
অসামান্য, অনবদ্য, অভূতপূর্ব... আর কি কি বলা যায় বলুন তো? যখনই একটু সময় বের করতে পেরেছি, তখনই এই গল্পটার নেশায় বুঁদ হয়ে গিয়েছি... এত সাবলিলতায় অথচ সমস্ত মাধুর্য ঢেলে গল্পটা যে ভাবে সাজিয়ে তুলছেন, তাতে আপনাকে সন্মানমা না জানিয়ে পারছি না... ছোট খাটো বানান ভুল চোখে পড়ে ঠিকই কিন্তু গল্পের মাধুর্যে তা যেন সেটা কখনই পড়ার অসুবিধা ঘটায় না একেবারেই... 

আমি নিজে ছেলে হয়েও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে ছোট থেকে অনেক ফুটবল খেলেছি, কিন্তু সত্যি বলতে বোধহয় কখন এতটা ডিটেলে আমিও ভেবে দেখি নি খেলাটাকে... এটা শুধু মাত্র রিসার্চ ওয়ার্ক করে লেখা সম্ভব নয়... আমি নিশ্চিত, আপনি নিজে অতীতে ভালো ফুটবল খেলতেন, তা না হলে এত খুঁটিনাটি প্রকৃত কোচিং ক্যাম্পে না থাকলে জানা সম্ভব হত না... আপনার গল্প পড়তে পড়তে মনে হচ্ছে যেন টিভিতে ফুটবল ম্যাচের ধারাবিবরণী শুনছি... আহা... অসাধারণ... একটি মেয়ের পক্ষে যে এই ভাবে একটা খেলার প্রচ্ছদ আঁকা যায়, সেটা বোধহয় আপনার গল্প না পড়লে বিশ্বাসই হত না... অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের একটা গল্প আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য...

আর সেই সাথে অসংখ্য ধন্যবাদ গল্পের মধ্যে দিয়ে আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে এত কাছ থেকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার জন্যও... এই রকম একটা ফোরামে, এই ধরনের লেখা, সত্যিই... অভিনব এবং অভিনন্দনীয়...

মানুষের জীবন টা কেমন তাই না? কোন স্থিরতা নেই। এই ভাবছেন, এখন সব ঠিক, পরক্ষনেই কোন বড় ঝড় এসে সব লণ্ডভণ্ড করে দিল। বা এই হয়ত মনের মধ্যে বিষাক্ত কোন বিষ রয়েছে, এমন একটা ঘটনা ঘটল, মনের ভিতরের সব মলিনতা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল। আজ থেকে মাস খানেক আগেও আমি, বেশ স্বাভাবিক ভাবেই জীবন চালাচ্ছিলাম নিজের। ভাবছিলাম, আমার জীবন আমার কন্ট্রোলে আছে। যেমন চালাব তেমনি চলবে। কিন্তু এই এক মাসে যা হয়ে গেল তাতে, নিজের জীবনের উপরে আর নিজের কন্ট্রোল এর উপর আস্থা তো রাখতে পারছি না। ধরুন একটা ছেলে আনন্দে ফুটবল খেলছে। দারুন খেলছে। হাফ টাইমেই সে দুটো গোল দিয়ে দিয়েছে। হাফ টাইমে কেউ এসে ওকে খবর দিল, ওরে আজকে অঙ্কের খাতা বেরিয়েছে, আর তুই ফেল করেছিস। ব্যস ছেলেটা আর খেলতেই পারল না। মাঠে রয়েছে, কিন্তু সে না থাকাই। হয়ত সে ভাবছে, তার ডাক্তার বাপ, তাকে রাতে খুব বকবে, পাড়া প্রতিবেশী জানবে, সে ফেল করেছে। বা তারা গরীব, লোকের বাড়িতে কাজ করে আসা তার মা , ফেল করেছে জানলে খুব কাঁদবে।  ব্যস তার সেই মুহুর্তের কর্ম, সাধনা, সব কিছু মাটি। আমি সেই প্রসঙ্গে যাচ্ছি না, সে পড়াশোনা করেছিল কিনা, বা করেনি। আমি বলতে চাইছি, মাত্র একটা ইনফর্মেশন বা ঘটনা, একটা মানুষের বর্তমান কে, কি ভাবে এম্ফাসাইজ করে।

থামবেন না প্লিজ... পরবর্তি আপডেটের আশায় উন্মুখ হয়ে রইলাম... 

সাথে রইল আমার রেপু এবং লাইক... এক রাশ ভালোবাসায় নিমজ্জিত...
Heart Heart Heart
[+] 4 users Like bourses's post
Like Reply
দিদি নতুন পর্ব কাল দিলেন না যে?
কোনো প্রব্লেম?
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(18-02-2022, 07:10 PM)Baban Wrote: দিদি নতুন পর্ব কাল দিলেন না যে?
কোনো প্রব্লেম?

আমাকে বিচিত্র বললো “ নন্দনাদিও ছেড়ে চলে গেছে । কি মজা । „
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(18-02-2022, 08:34 PM)Bichitravirya Wrote: আমাকে বিচিত্র বললো  “ নন্দনাদিও ছেড়ে চলে গেছে । কি মজা । „

সত্যিই মজা.... দারুন মজা....... clps

আপনার বন্ধুকেও বলবেন... শুনে দারুন খুশি হলাম
clps

আমি জানিনা দিদি সত্যিই ছেড়ে গেছেন কিনা.. যদি এটা সত্যি হয় তাহলে জেনে দারুন খুব আনন্দ পেলাম দিদি..... নিজের সৃষ্টি অসমাপ্ত রেখে চলে গেলেন। শিভ মা পেলো জানলাম... কিন্তু ওর বাবা মায়ের কি হলো আর জানবোনা হয়তো আমরা। 
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(18-02-2022, 08:45 PM)Baban Wrote:
সত্যিই মজা.... দারুন মজা....... clps

আপনার বন্ধুকেও বলবেন... শুনে দারুন খুশি হলাম
clps

আমি জানিনা দিদি সত্যিই ছেড়ে গেছেন কিনা.. যদি এটা সত্যি হয় তাহলে জেনে দারুন খুব আনন্দ পেলাম দিদি..... নিজের সৃষ্টি অসমাপ্ত রেখে চলে গেলেন। শিভ মা পেলো জানলাম... কিন্তু ওর বাবা মায়ের কি হলো আর জানবোনা হয়তো আমরা। 

একে বলে “ লটকে বুদ্ধু ঘার কো আয়ে „ । আপনার রাগ দেখে ফিরে আসতেই হলো ।

মজা বলতে আমি প্রতিবাদ করাটাকে বুঝিয়েছিলাম বাবান দা । আমার মত উনিও চলে গিয়ে প্রতিবাদ করেছেন । তবে আমি চলে গেছিলাম ঝগড়া থামানোর জন্য । থামার বদলে বেড়েছে বলা যায় । আর নন্দনা দি তো মডারেটর কিংবা এডমিন কে জিজ্ঞেস করেছিল । সেখানে tirths2000 গিয়ে উত্তর দিল । এইজন্য নন্দনা দি চলে গেছেন ।

এদিকে দেবু তো আগুন হয়ে আছে । নেভানো দরকার ।

❤️❤️❤️
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
ঠোঁটে ঠোঁট রাখলেই, 
লজ্জায় লাল হয় গোধূলির মুখ।
তোরও কি আমার মতো,
আদর কাঙাল বুক??
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply




Users browsing this thread: 4 Guest(s)