Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
খানিক বাদে জোন জোন করে সোলাইটিং মেশিন বেজে উঠলো । সম্ভবত কেউ জ্যাকপট পেয়েছে । লাহিড়ী বাবুও তার দৈনন্দিন রোজ নামছে খুলে ধরেছেন ডাক্তার ভদ্রলোকের কাছে । জনা ৫০ নির্ধারিত বসার জায়গা আছে তার নিচে একটা করে লাইফ জ্যাকেট রাখা । এক জন জাহাজের কর্মচারী এসে হাতের মাইক নিয়ে এনাউন্স করলো " প্রত্যেকে যে যার জায়গায় বসে পড়ুন । সমুদ্রের আগে খুব ঢেউ উঠছে , কেউ ঘোরা ফেরা করবেন না । নির্ধারিত সময়ে ক্যাপ্টেন আপনাদের সুরক্ষার সংকেত দেবেন । সাথে সাথে ক্যাপ্টেন এর ঘোষণা শোনা গেলো । কারেন্ট খুব বেশি ঝোড়ো হবো তার সাথে । আকাশ কুচ কুঁচে কালো হয়ে আছে চারি দিকে । দারুন রোম্যাচ লাগে এমন পরিবেশে । বাইরে অন্ধকার রাতের মতো , আর জাহাজের ভিতরে ঝলমলে এল আর জল ঝাপ্টা মেশানো ঝোড়ো হাওয়া ।
এক মুখ হাসি নিয়ে এগিয়ে আসলো বিল্টু , হাতে একটা প্লাস্টিকের মগ্ তাতে ৫ টাকার অনেক গুলো খুচরো । " বাবা ৬০০ টাকার জ্যাকপট !" লাহিড়ী বাবু বললেন " করেছিস কি , যা ভাঙিয়ে নিয়ে যায় খুচরোগুলো । তাকে যেতে হলো না , ম্যাকডোনান্ড এর ড্রেস এর মতো পরে থাকা একটা ছেলে এই মগ্ নিয়ে গেলো বিল্টুর হাত থেকে । আপনি নিজের জায়গায় বসুন । জাহাজ দুলছে বিশ্রী ভাবে , হেলে যাচ্ছে লাফিয়ে লাফিয়ে সময় সময় । সবার মুখ বেশ থমথমে । উঠে এসে লাহিড়ী আর বিল্টুর পাশে বসলেন ঝুমা দেবী । " দেখলি তো , কি সুন্দর অভিজ্ঞতা হচ্ছে , আমি না বললে তোরা পেতিস এমন অভিজ্ঞতা ! হাঁদার মতো বসে ছিলি তো বাপ ব্যাটায় । "
লাফিয়ে লাফিয়ে বসার হাতল ধরে সামলাতে সামলাতে বললেন ঝুমা দেবী । লাহিড়ী বাবুর ব্যাপারটা মোটেও ভালো লাগছে না । " মা আমি যেন জ্যাকপট পেয়েছি ৬০০ টাকা । " ঝুমা দেবী কৌতূহল না করেই বললেন " কি টাকা কোই ?" সেই সময় একটু অল্পবয়েসী মেয়ে ৫০০ টাকা আর ১০০ টাকা বিল্টুর হাতে দিয়ে গেলো । ছ মেরে টাকা টা নিয়ে ৫০০ টাকা নিজের কাছে রেখে বিল্টুর হাতে ধরিয়ে দিলেন 1০০ টাকা । যা খরচ করবি আমায় বলবি !"
এমনি চরিত্র ঝুমা দেবীর । মুখ ভার হয়ে গেলো দেবুর ১০০ তাকে কি বা হয় আজ কাল ।
ঝুমা দেবী অনেক ক্ষণ ধরে বসে আছেন একের পর এক জলোচ্ছাস কাটিয়ে জাহাজের দুলুনি তে । কখনো ঢেউ আসছে আগ্রাসী, ভাসিয়ে দিচ্ছে বল রুমের মেঝে পায়ের পাতা হাটু কখনো কখন । বেশি জল দেখে হাতের ব্যাগটা উঠিয়ে উঠিয়ে ধরে মনে মনে বিরক্ত হয়ে গল্ মন্দ করছেন জাহাজের লোক জন দের । আচ্ছা কোনো জ্ঞান আক্কেল নেই এতো গুলো মানসূহের জীবন নিয়ে ছেলে খেলা হচ্ছে । জাহাজের সব কর্মচারী সিই হার্নেস লাগিয়ে জল সোয়াইপ করছে । তাদের ডেকে ডেকে গালাগালি দিচ্ছিলেন ঝুমা দেবী ।
আবার সেই সমুদ্রের জল গড়িয়ে ডেক দিয়ে গড়িয়ে সমুদ্রে পড়ে যাচ্ছে । চার পাঁচ তলা বাড়ির সমান উঁচু ঢেউ গুলো কেটে কেটেও ছোট্ট জাহাজ একটু একটু করে বেশ এগিয়ে চলছিল । বিশাল কালো সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে একটু একটু করিয়ে এগিয়ে চলেছে গন্তব্য স্থলে । ইঞ্জিনের গর্জন পাল্লা দিচ্ছে বাইরের ঝোড়ো হাওয়া আর জলের ঝাঁপিয়ে আক্রমণ করা শব্দ কে পাল্লা দিয়ে ।ঘন্টা দেড়েক হয়ে গেছে । সবাই মনে অধৈর্য হয়ে অপেক্ষা করছে, এবার বোধ হয় এসে যাবে আন্দামান । বসে থেকে থেকে বেজায় মুত পেয়েছে জার্সি মাগি ঝুমার । ইতস্তত করে বার বার গুদে হাত দিয়ে সামনেই তফাতে মেয়েদের টয়লেটের দিকে তাকাচ্ছেন । বিলটু কিন্তু বুঝে গেছে তার মায়ের পেছাব পেয়েছে । অথচ আগেই সাবধান করে বারণ করে দেওয়া হয়েছে , যে কেউ কোনো ভাবেই যেন নিজের সিট্ থেকে না ওঠে ।
Posts: 88
Threads: 1
Likes Received: 55 in 22 posts
Likes Given: 12
Joined: May 2019
Reputation:
11
Khub bhalo jache dada egiye jaan
•
Posts: 88
Threads: 1
Likes Received: 55 in 22 posts
Likes Given: 12
Joined: May 2019
Reputation:
11
আপডেট গুলো আরেকটু বড় দেন। আজকে আপডেট দিয়ে দিন আরেকটা। রবিবার সময় আছে আজ
•
Posts: 152
Threads: 1
Likes Received: 97 in 79 posts
Likes Given: 193
Joined: Dec 2019
Reputation:
1
•
Posts: 20
Threads: 0
Likes Received: 5 in 4 posts
Likes Given: 23
Joined: Mar 2019
Reputation:
0
(18-01-2022, 01:09 AM)SwarnadeepWB2 Wrote: AMAR MA Er prem golpo ta old xossip porchilam just fatafati.karo kacha thakla please posto koro.it’s request আমিও গল্পটা খুঁজতেছি, করো কাছে থাকলে দেন plz
•
Posts: 88
Threads: 1
Likes Received: 55 in 22 posts
Likes Given: 12
Joined: May 2019
Reputation:
11
•
Posts: 2,729
Threads: 0
Likes Received: 1,204 in 1,060 posts
Likes Given: 43
Joined: May 2019
Reputation:
26
•
Posts: 88
Threads: 1
Likes Received: 55 in 22 posts
Likes Given: 12
Joined: May 2019
Reputation:
11
•
Posts: 88
Threads: 1
Likes Received: 55 in 22 posts
Likes Given: 12
Joined: May 2019
Reputation:
11
Are updateta diyei din dada
•
Posts: 27
Threads: 0
Likes Received: 16 in 14 posts
Likes Given: 10
Joined: Jan 2022
Reputation:
0
•
Posts: 250
Threads: 1
Likes Received: 136 in 114 posts
Likes Given: 10
Joined: Apr 2019
Reputation:
8
next part dada, tatatari den
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(28-01-2022, 08:08 PM)Dibakor Wrote: next part dada, tatatari den
দাদা আমি আর দেবোনা , খুব দুঃখিত .. ক্ষমা চাইছি
যদি ভার্জিনিয়া দাদা এখনো বেঁচে থাকেন ( একটু সন্দেহ আছে আমার ) উনি এসে দেবেন বাকিটা ... নাহলে মা ছেলে চোদাচুদির গল্প লেখার এখানে বিখ্যাত লেখকেরা আছেন ... তারা পারলে দয়া করে দেবেন হয়তো নিজেরা লিখে ..
আমি আর নেই এসবের মাঝে
Posts: 46
Threads: 0
Likes Received: 77 in 47 posts
Likes Given: 77
Joined: Oct 2019
Reputation:
-1
(28-01-2022, 08:57 PM)ddey333 Wrote: দাদা আমি আর দেবোনা , খুব দুঃখিত .. ক্ষমা চাইছি
যদি ভার্জিনিয়া দাদা এখনো বেঁচে থাকেন ( একটু সন্দেহ আছে আমার ) উনি এসে দেবেন বাকিটা ... নাহলে মা ছেলে চোদাচুদির গল্প লেখার এখানে বিখ্যাত লেখকেরা আছেন ... তারা পারলে দয়া করে দেবেন হয়তো নিজেরা লিখে ..
আমি আর নেই এসবের মাঝে
দাদা কোন সাইট থেকে রিকভার করেছেন তার ব্যবস্থাটাতো বলে দিন
রোমাঞ্চের সন্ধানে রোমাঞ্চ প্রিয় আমি ??
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(28-01-2022, 10:56 PM)Ah007 Wrote: দাদা কোন সাইট থেকে রিকভার করেছেন তার ব্যবস্থাটাতো বলে দিন
ওই খুব বেশি তিক্ৰমবাজ লোকগুলোর ওপরে , যারা অপদার্থ ... টুকলিবাজ ... লুজার এসব বললো , তাদের ওপরে ছেড়ে দিন দাদা এই দায়িত্বটা ,
দেখা যাক না ... কে কি করে ...!!!
Posts: 46
Threads: 0
Likes Received: 77 in 47 posts
Likes Given: 77
Joined: Oct 2019
Reputation:
-1
(29-01-2022, 03:28 PM)ddey333 Wrote: ওই খুব বেশি তিক্ৰমবাজ লোকগুলোর ওপরে , যারা অপদার্থ ... টুকলিবাজ ... লুজার এসব বললো , তাদের ওপরে ছেড়ে দিন দাদা এই দায়িত্বটা ,
দেখা যাক না ... কে কি করে ...!!!
দাদা অন্যের দোষের জন্য আমাদের বঞ্চিত করবেন এতো পাটকেলের বদলে গোলা বর্ষন হয়ে গেলোনা!!!
রোমাঞ্চের সন্ধানে রোমাঞ্চ প্রিয় আমি ??
•
Posts: 8
Threads: 0
Likes Received: 3 in 2 posts
Likes Given: 175
Joined: Jun 2019
Reputation:
0
(28-01-2022, 10:56 PM)Ah007 Wrote: দাদা কোন সাইট থেকে রিকভার করেছেন তার ব্যবস্থাটাতো বলে দিন Uni jekhan theke paste koren sekhane theke purota recover hobena tai asa korben na. Tobe nirjonmela.com e pete paren
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(06-02-2022, 12:05 AM)Pocha Wrote: Uni jekhan theke paste koren sekhane theke purota recover hobena tai asa korben na. Tobe nirjonmela.com e pete paren
ঠিক কথা ..
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
মিটিক কুড়ি বাদে ঢেউ এর পর ঢেউ আরো বেশি করে ঝম ঝম করে আছড়ে পড়তে শুরু করলো হটাৎ জাহাজ কে পুরো দস্তুর াগ মাথা স্নান করিয়ে । আর খোলাম কুচির মতো ছোট্ট শিপ লাফিয়ে লাফিয়ে উঠতে লাগলো জলের ঢেউ এর মাথায় ২ -৩ মিটারের মতো । বিশ্রী ভাবে লাফাচ্ছে ছোট্ট জাহাজ , এটাকে জাহাজ না বলে বোট বললেই ভালো হতো । সেফটি জ্যাকেট পড়তে বলা হয় নি এখনো কিন্তু স্যাফটি সাইন অন আর সাইরেন বাজছে চারি দিকে , তাই বসে থাকা জানা বিশেক লোক এর ওর দিকে তাগিয়ে মারতে চাইছিলেন বিপদের গভীরতা । কখনো দু একজন তাল সামলাতে না পেরে ঘরের পড়েতে মেঝেতে পড়ে গড়াগড়ি খেলেন ধুয়ে যাওয়া সমুদ্রের জলের মধ্যে ।
বয়স্ক দু একজন বেশ চোট পেয়েছেন তাতে । কিন্তু বোঝা গেলো আবহাওয়া মোটেই নিরাপদ নয় । এবার ঝুমার দেবীর আহমক বুদ্ধির জন্য তার মুখে ভয়ের প্রতিবিম্ব ধরা পড়লো । এমন আকাশ ভেঙে কালো সমুদ্রের জল আছড়ে পড়ছে ছোট্ট কাগজের নৌকার মতো শিপে , আর ঝড়ের গতিতে মুষল ধরে বৃষ্টি তিনি দেখেন নি জীবনে ।
বিলটুর হাত ধরে বললেন "কি শুরু হলো বলতো , কি হবে এবার !" বিলটু জুল জুল করে চারিদিক চেয়ে দেখতে লাগলো ছোট্ট ছোট্ট দেওয়ালের কাঁচের জানলা দিয়ে বাইরে বসে বসে । শুধু সামনের পেল্লাই খোলা গেট দিয়ে জল আছড়ে ভিতরে ঢুকছে । সেই গেটের ডেকোরেশন আছে মেলায় সার্কাস এর মতো তাতে কোনো দরজা নেই । মাথার উপরে সিলিং এর ছোট্ট ছোট্ট সাজানো ঝড় বাতি গুলো টং টং করে নড়ছে ।
এমনি সময় জাহাজের ক্যাপ্টেন এর কেবিন থেকে হন্ত দন্ত হয়ে সেফটি জ্যাকেট পড়ে টুপি দেয়া আর সাদা পোশাকে কাঁধে দু তিনটে নীল হলুদ রিবন লাগলো একজন সহ নাবিক এসে বললো "দেখুন কেউ অধৈর্য হবেন না , GPS , কম্পাস সহ ইঞ্জিনের কিছু যান্ত্রিক ত্রূটি ধরা পড়ায় আমরা নিকোবর থেকে ৩৮ নটিক্যাল মাইল তফাতে গভীর সমুদ্রে চলে এসেছি । স্যাটেলাইট ফোন -এ যোগাযোগ করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম কে , তবে রিলিফ নাভাল শিপ ১ ঘন্টার মধ্যেই এসে যাবে । আর এই সময় টুকু আমাদের সেইলর আটটেন্ডেন্ট আপনাদের সেফটি বেল্ট পড়িয়ে দেবে । কেউ নিজের জায়গা ছেড়ে এদিক ওদিক ঘুরবেন না , ডেকের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । জাহাজের ছাদে , বা জাহাজের ক্যাফেট লাউঞ্জে যাবার চেষ্টা এই মুহূর্তে করবেন না ।টয়লেট যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে সম্পূর্ণ রূপে ! প্রচন্ড কারেন্ট এর জন্য আমরা লোয়ার বেসমেন্ট এর সব পাম্প চালাতে বাধ্য হয়েছি । তবে আমরা চেষ্টা করছি আবহাওয়া সাধারণ রাখতে ।
তার কথা শেষ হলো না পুরো জাহাজ অন্ধকার হয়ে গেলো । ইঞ্জিনের ত্রূটি যখন হয়েছে , তখন জেনারেটার এ দুর্ভোগ হবে না এমন ধরে নেয়া বোকামি । আর্তনাদ করে উঠলো সবাই ইষ্ট দেবতার নাম নিয়ে । এদিকে আরো চার জন ইউনিফর্ম পড়া জাহাজের সেফটি ক্যাডেট হবে দৌড়িয়ে ভিতরে এসে টর্চ এর আলো জ্বেলে , এক জন কে ধরে ধরে কোমরে LED দেয়া সেফটি বেল্ট লাফাতে লাগলো। ঝপাং ঝপাগ করে অফুরন্ত জলের রাশি গোগ্রাসে গিলতে আসছে বলরুম কে । তারই মধ্যে লোহার ধাতব সফট এ সিই হার্নেস লাগিয়ে চারজন এক একজন কে সেফটি জ্যাকেট পড়াচ্ছে ।সাধারণত জাহাজের সেফটি বেল্ট , উড়োজাহাজের সেফটি বেল্ট এর থেকে মাপে বড়ো হয় । আর অবিচ্ছিন্ন নয় । সিলিন্ডার এর পিন টেনে খুলে দিলে গলায় কমলা লুমিনিসেন্ট চাকতি হয়ে জলে জ্বলতে থাকে তাতে মানুষের মাথা ভেসে থাকে জলের উপরে । অনেক দূর থেকেই হেলিকপ্টার বা উড়োজাহাজ থেকে এগুলো দেখা যায় । সবাই কে লাইফ জ্যাকেট পরানোর কাজ শেষ , তখনও জলের অশান্ত রাশি ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছিলো জাহাজ কে ভিজিয়ে স্নান করিয়ে । ওয়ার্নিং ব্যারিকেট যেটা নাকি রাস্তার পাশে দেখা যায় হামেশা ডিভাইডার এর মতো কাজ করে সেই ধরণের তিন চারটে ফাঁপা ড্রামের মতো তাতে অনেক বড়ো রাবারের কম্বল জড়ানো । সেটা আনা হলো । বিলটু বিড় বিড় করে ঝুমা দেবী কে বললো : এতো লাইফ বোট !"
বিকট আওয়াজে দুলে প্রচ্ছদ বিস্ফোরণের মতো ঝাকুনি দিয়ে শিপ টা শুন্যে দাঁড়িয়ে উঠে পাক খেয়ে উঠলো । কিছু বুঝে নেবার আগে চোখে অন্ধকার দেখলো বিলটু , বসে না শুয়ে আছে জ্ঞান নেই , খুব জোরে আছড়ে পড়েছে সামনের লোহার দেয়ালে কপাল ফেটে গেছে সেখানেই , পাশে ঝুমা দেবী উল্টে পড়েছেন মাথা তারই পাশের একটা লোহার থামে ঠুকে মুখ গুঁজে । শুয়ে থেকে ঘাড় বেঁকিয়ে দেখবার চেষ্টা করলো বল রুমের মেঝে টাকে । অবিশ্রাম জল বাঁধ ভাঙা ড্যামের মতো আছড়ে পড়ছে জাহাজের ভিতরে , এদিক ওদিক ছিটকে পড়ে আছে জনা চারেক লোক , সবাই কে কি ভাবে ছিটকে পড়েছে বোঝা যাচ্ছে না । বাবাকে বুঝতে পারলো না কোথায় । জাহাজের হল এক দিকে হেলে পাক খাচ্ছে জলের স্রোতের মধ্যে , সমুদ্রের ফুলে ফেঁপে উঠা অশান্ত অতল জলের দিকে কাত হয়ে জাহাজ লাফিয়ে উঠলো খড় কুটোর মতো , আর মারণ আকাশ জুড়ে আছড়ে পড়া দানবীয় জলের রাক্ষস এর সাথে যুদ্ধ করবার চেষ্টা করেও ভেসে গেলো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ।
কিছু শব্দ আর শুনতে পেলো না বিলটু কানে । শুধু হাত বাড়িয়ে মায়ের পেটে লাগানো স্যাফটি জ্যাকেটের নব টেনে নিতে পারলো কোনো ভাবে । বুঝতে পারলো ভোস করে জলের মধ্যেই ফুলে উঠলো সেটা বেলুনের মতো । চোখ বন্ধ হয়ে গেলো জলে , নোন জলে খাবি খেয়ে নিঃস্বাস নেবার চেষ্টা করলো প্রাণ বাঁচাতে । ডূবে গেলো কালো অতল জলের অন্ধকারে । প্রাণ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টায় নিজের কোমরের সেফটি জ্যাকেটের দড়ি টা টানলো প্রাণ পন শেষ চেষ্টা করে । ভোস করে শুধু আওয়াজ পেলো সে , আর জলের উদ্দাম ঢেউ এ ডূবে বুঝতে পারলো সব কিছু ভেসে যাচ্ছে জলের অশান্ত তোড়ে ।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
প্রচন্ড মাথায় আঘাত লাগলো লোহার কিছু ভারী অংশ । মনে হলো শরীরটা ছিটকে অনেক দূরে গিয়ে আছড়ে ফেললো কোথাও সমুদ্রের গভীর জলের মধ্যে । শেষ বার চোখ খুলে দেখবার চেষ্টা করলো , লাল রক্ত তে ভিজে গেছে তার মুখ , শুধু বুঝতে পরলো কাত হয়ে হেলে থাকা জাহাজ টা থেকে সে অনেক দূরে চলে এসেছে সমুদ্রের মরণ ঢেউ তে। চোখ খুলে পড়ে দুলতে লাগলো তার দেহ অশান্ত সাগরের বুকে ।
কতক্ষন সমুদ্রের নোনা জলে ভেসেছে বিলটু আর তার শরীর খেয়াল নেই । মুখের উপর সূর্যের সোজা তীরের ফলার মতো বিকিরিত কিরণে চোখ চাইবার চেষ্টা করলো সে । উফফফ খুলতে পারছে না চোখ । কপাল ফেটে গেছে বিশ্রী ভাবে তাতে নোনা জল লেগে দগদগে ঘা তাও শুকিয়ে গেছে ভিতরে আর জলে বাইরের চামড়া পচে গেছে । জ্বর জ্বর লাগছে তার । তাও চোখ খুললো , জলে ভাসছে তাঁর শরীর ।
বেঁচে যাওয়ার চরম আনন্দে জলের মধ্যে হাঁচোড় পাঁচর করলো সে । পায়ে নুড়ি কাঁকর এর স্পর্শ । বাঁ চোখটা খুলতে পারছে একটু । উঠে দাঁড়িয়ে দেখলো চারিদিকে । পিছনে অতলান্ত শান্ত নির্মল সমুদ্র আর কিছু দেখা যায় না । এই সমুদ্রই কিনা ভয়াল ভয়ঙ্কর হয়ে গিলে খেয়ে নিতে চেয়েছিলো । দূরে দেখতে পেলো সমুদ্রে তাঁর লাইফ জ্যাকেট । না চোখ খুলতে পারছে ঠিক মতো করে , সামনে একটা সবুজ বালিয়াড়ি দ্বীপ । সমুদ্র সৈকত বড্ডো ছোট , এদিক থেকে ওদিকে হাটতেই শেষ হয়ে যায় এমন , যেন বিন্দুর মতো সমুদ্রে ভেসে আছে এই একখণ্ড জমি । আস্তে আস্তে এগিয়ে আসলো সমুদ্রের হাটু জল থেকে দ্বীপের দিকে । খুব বড়ো জোর ১ কিলোমিটার হবে , চোখেই দেখা যাচ্ছে শেষ টা, তার পায়ের সামনের সমুদ্র সৈকত বড়ো জোর 500 মিটার হবে , তার শেষেই পাথুরে হালকা টিলার মতো সমুদ্রে নেমে গেছে পাথর খন্ড , সেটাই শেষ সীমা সেখানে সমুদ্র ঢেউ তুলে আছড়ে পড়ছে পাথরের দেয়ালে কোনো বালি নেই , কিন্তু তার পায়ের সামনে তীর তীর করে সমুদ্রের জল খেলা করছে এদিকে সমুদ্র্রের ঢেউ নেই বললেই চলে । হাজারো রঙের ছোট ছোট মাছ , এই এক আঙ্গুল হবে , আর ছোট ছোট গেঁড়ি . সামুদ্রিক শঙ্খ আর তাদের মরা খোলশ মিশিয়ে আছে বালিতে না জানি কত হাজার বছর ধরে । নিজের দিকে তাকিয়ে অস্থির হয়ে গেলো বিলটু , প্যান্ট ছিঁড়ে গেছে লোহায় ধারালো কিছুতে লেগে আর পরনের জামাটাও তার শখের নতুন জামা , একটা হাত নেই ছিঁড়ে চলে গেছে কোথাও সমুদ্রের গর্ভে ।
একটু হাটতেই পায়ে যন্ত্রনা অনুভব করলো সে । পায়ের দিকে দেখলো একবার , উরু তাও চিড়ে গেছে এক আঙ্গুল , ভিতরের সাদা মাংস বেরিয়ে গেছে জলে ভিজে ভিজে । পা টেনে টেনে এগিয়ে এসে বসলো বালিয়াড়ি তে । তাকে বাঁচতে হবে , অপেক্ষা করতে হবে যদি কোনো জাহাজ এদিকে আসে । কিন্তু মা বাবা কি বেঁচে আছে ?
সমুদ্রের ধার ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটা শুরু করলো , পরনে তার আডিডাসের জুতো , ভিজে ঢোল হয়ে আছে , খুব অসুবিধা হচ্ছে হাটতে । কিন্তু বালিতে অনেক ধারালো ঝুনিকের খোলা পা কেটে যাবে , তাই ভিতরের মোজা টা খুলে নিলো সে , পায়ের ক্ষতর জন্য পা ভাজ করতে পারছে না ।
একটা আয়নাও নেই, কপালের ঘা টা যদি একটু দেখতে পারতো । হাত লাগিয়ে লাগিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করলো কত টা ফেটে গেছে কপাল ।
উফফ অনেকটা ।
এতক্ষন সে অনুভব করে নি তৃষ্ণা কি , কিন্তু এবার শরীরের সব অঙ্গ গুলো এক এক করে জেগে উঠেছে , মরে যায় নি বলে । প্রচন্ড তৃষ্ণা পাচ্ছে । কিন্তু জন মানব হীন এই ছোট্ট একটা ভূ খন্ডে সে কোথায় পাবে খাবার আর কোথায় পাবে জল ? একটা বিশেষ ধরণের ঘাস গোত্রের জঙ্গল পিছনে , জঙ্গল নয় ঝোপ বলা চলে । বড়ো জোর দু একটা মাঝারি মাপের গাছ , নাম জানা নেই , আর এই ঝোপ বড়ো জোর হাটু পর্যন্ত , আর কলমি শাকের মতো লতানো হলদেটে একটা লতা , যেখানে সেখানে বেড়ে উঠেছে দ্বীপ জুড়ে । দু একটা বাক্স , সমুদ্রের জলে ভেসে উঠেছে ।
হরে কৃষ্ণ এক্সপোর্টস "নেচার কেয়ার প্রোডাক্টস "। হাত দিয়ে ভিজে বাক্স গুলো ছিড়ে দেখতে চাইলো কি আছে । ইসবগুল এর বাক্স , শালা খাবার কিছু নেই , সেখানে আবার ইসব গুল। আরেকটু এগিয়ে আরেকটা বাক্স , ছেড়বার চেষ্টা করলো , নাঃ কাপড়ের জালি দিয়ে বাধা , একটা চাকু থাকলে ভালো হতো ।বুঝতে পারলো আমূল স্প্রে । না এটা খাওয়া যাবে অন্তত কয়েক দিন । দুধ বলে কথা । যদি কিছু খেতে না পায় , অন্তত দুধ খেয়ে কাটাতে পারবে । তৃষ্ণায় বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে । আরেকটু এগিয়ে মনে হলো একজন মাঝবয়েসি লোক তারই মতো ভেসে এসেছে। কিন্তু জ্ঞান ফেরেনি । পায়ে আগের থেকে সচ্ছলতা এসেছে হাঁটা চলা করবার । কিন্তু গোড়ালি তে ব্যাথা । এতো বাঁচা মরার লড়াই , ব্যাথা পেলে কি চলবে ।
Posts: 2,729
Threads: 0
Likes Received: 1,204 in 1,060 posts
Likes Given: 43
Joined: May 2019
Reputation:
26
•
|