05-08-2021, 10:12 AM
" রিমান্ড পাশ করিয়েছ মইনুল? " সোয়েব জিজ্ঞাসা করে ময়নুলকে
" জি স্যার। দশ দিনের চেয়েছিলাম, কোর্ট সাত দিনের দিয়েছে। " মইনুল বলে
" বাহিরের লোককে কখনই আসামিদের ওপর হাত ওঠাতে দিবে না।"
" জি স্যার, কিন্তু যদি ওপরওয়ালারা বলেন তো আমি কি করতে পারি স্যার? "
" ওপরওয়ালাদের বলবে তারা যেন লিখিত নির্দেশ দেন।" সোয়েব বলে।
" জি স্যার। "
" এখন যেতে পার। আমি একটু পর যাব। " সোয়েব বলে
" জি স্যার" বলে সেলুট দিয়ে মইনুল চলে যায়।
সোয়েব এবার কবিরের দিকে লক্ষ করে, উস্কখুস্ক চুল, মুখভর্তি খোচাখোচা দাড়ি। ওর দিকেই তাকিয়ে আছে, কিন্তু দৃষ্টিতে শুন্যতা। বয়স কতোই বা হবে, পচিশ কিংবা ছাব্বিশ হবে। এই ছেলেটাই সেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রাশ কিবরিয়া ডাকাত, বিশ্বাস হতে চায় না। কিন্তু সোয়েব তার অভিজ্ঞতা থেকে জানে অনেক ঘাঘু অপরাধীদেরও নিষ্পাপ চেহারা থাকতে পারে।
" কি নাম তোর? " সোয়েব জিজ্ঞাসা করে
" কবির"
" পুরো নাম বল। "
" শাহরিয়ার কবির খান।" বলতে গিয়ে ব্যাথায় কাতরিয়া ওঠে কবির।
" বয়স কতো? "
" পচিশ বছর সাত মাস ছাব্বিশ দিন। " একমুহর্ত থেমে বলে কবির।
" এই বয়সেই ত্রিশ পাহাড়ি গ্রাম আর পন্চাশ বাস লুট, ষাটজন অপহরণ, চল্লিশ রেপ আর পঁয়ত্রিশ খুন। চমতকার ট্র্যাক রেকর্ড তোর। " ঠোটের কোনায় ধুর্ত হাসি রেখে বলে সোয়েব।
" সবকিছু যদি জেনেই গিয়ে থাকেন তখন কেন অযথা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন স্যার? আপনিও কি ওসি সাহেবের মতো দোষ স্বিকার করে নেয়ার জন্য মারধোর করবেন?"
" চুপ শালা কুকুরের বাচ্চা, আমাকে রাগাবি না। আমি সহজে কাওকে মারি না, কিন্তু যে আমাকে লাঠি ধরতে বাধ্য করে সে যতদিন বেচে থাকে দিনে দুইবার আমার নাম জপে, রাতে শোয়ার সময় আর সকাল ঘুম থেকে ওঠার সময়। " সোয়েব রেগে বলে।
" আমি এমনিতেও আপনার কথা চিরদিন স্মরণ রাখব স্যার। রাস্তায় পরে থেকে ধুকে ধুকে মরতে থাকা কোন কুকুর যদি পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া কোন পথচারীর চোখে ঘৃণার বদলে করুণা দেখতে পায় তবে হয়তো সেই পথচারীকে মৃত্যুর আগের মুহুর্ত অব্দি মনে রাখে।"
"তোর জন্য আমার কোন সহানুভুতি নেই। আমি শুধু আমার কর্তব্য করেছি। " শীতল কন্ঠে বলে সো্য়েব
" নিজের কর্তব্যটাই বা কতোজন করে স্যার? " কবির বলে।
সোয়েব কিছুক্ষণ নিরব থাকে, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে থাকে কবিরকে।
" আচ্ছা ঠিক আছে, তুইই বল। হঠাত করে কেন উধাও হয়ে গেলি? কোথায় গেলি, কোথায় কোথায় ছিলি এতোদিন। " সোয়েব বলে
কবির চেয়ারে হেলান দিয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে সেইসময়ের পরিস্থিতি, ওর হারিয়ে যাওয়া, এরপর কবিরের ভবঘুরে জীবন। অচানক স্নিগ্ধার সাথে দেখা হওয়া, স্নিগ্ধাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ও স্বপ্নময় দিনগুলো তারপর হঠাত দুঃস্বপ্নের সেই দিনটি অতঃপর ওদের ধরা পরে যাওয়া। সোয়েব শুনতে শুনতে নোট করতে থাকে।
" তার মানে তুই ধোয়া তুলসী পাতা, তোর কোন দোষ নেই। সবই তোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র?" সোয়েব বলে
"আমি তা বলছি না। আমি দুটি খুনের সাথে জড়িত, যার একটি আমার নিজ হাতে হয়েছে যদিও তা আত্মরক্ষার্থে। " কবির বলে
" আমি নিজে তোর দেয়া তথ্যগুলো যাচাই করব। যদি সত্যিই নির্দোষ হয়ে থাকিস তবে তোর ভয় নেই। " সোয়েব বলে।
সোয়েবের বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত এগারোটা বেজে যায়। বাসায় ফিরে সোয়েব আবারো ডায়েরিটা খুলে দেখে, এতে কবিরের উল্লেখ করা বিভিন্ন ব্যাক্তির নাম আর ঠিকানা রয়েছে। হতে পারে কবির যা বলেছে তার পুরোটাই বানানো, কিন্তু যদি সত্য হয়ে থাকে তবে এক বিশাল অনর্থ ঘটতে যাচ্ছে, এমন কিছু ঘটতে কিছুতেই দেয়া যায় না। সোয়েব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল কালকেই তদন্তে বেড়িয়ে পরবে।
"এই, কি গো খাবে না? কতো দেরি করে ফিরলে, এখন আবার কাজ নিয়ে বসে পরলে যে? " সুমি বলে
" না গো, খেতে ইচ্ছা করছে না। তুমি খেয়ে নাও না লক্ষিটি? " সোয়েব বলে
"তোমাকে ছাড়া খেয়েছি কখনো? " বলে সুমি অন্য ঘরে চলে যায়।
সোয়েব তখন এসপি গৌতম রায় কে কল করে।
"হ্যালো স্যার, ঘুমিয়ে পরেছিলেন নাকি? ডিস্টার্ব করলাম? " সোয়েব বলে
" না সোয়েব। বলো। " গৌতম বলে
" আসলে স্যার, আমার সপ্তাহ খানেকের ছুটি প্রয়োজন। "
" বউকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাবে নাকি? "
" জি স্যার, শশুর বাড়ি থেকে একটু ঘুরে আসতাম । " সোয়েব বলে।
" বেশ, বেশ, যাও তাহলে, চিন্তা করোনা আমি এ দিকটা সামলে নেব।"
" থ্যাংক ইউ স্যার। " বলে ফোন কেটে দেয় সোয়েব।
এবার স্ত্রীর মান ভাঙ্গানোর পালা, সোয়েব প্লেটে ভাত তরকারি বেরে নিয়ে বেট রুমে যায়। সুমি বিছানার একপাশে বসে একটি বই নারাচাড়া করছিল। সোয়েব ওকে হাতে তুলে খাওয়াতে চায়। সুমি মানা করে বলে " আমার খিদে নেই। "
" এই যে দেখ আমিও খাচ্ছি। " বলে নিজে খায় সোয়েব। তারপর স্ত্রীকে খাওয়ায়।
রাতের খাবার শেষ করে ওরা শুয়ে পরে। সোয়েব ফিসফিস করে বলে " মা কে দেখতে ইচ্ছা করে না? "
" হুম, খুব করে। তুমি যাবে? " সুমি বলে।
" আসলে একটা জরুরি কাজে এক সপ্তাহের জন্য আমাকে শহরের বাহিরে যেতে হবে। ভাবছিলাম তোমাকে মার কাছে রেখে আসতাম । " সোয়েব বলে
সুমির কিছুটা আশাভঙ্গ হলেও সেটা বুঝতে না দিয়ে বলে " ঠিক আছে । "
" একটু চাটনি খেতে দাও না। " সোয়েব বলে
" না, এখন হবে না। "
" একসপ্তাহ তো আর চাটনি পাব না, তাই আজ রাত মন ভরে চাটনি খাব।" বলে সোয়েব সুমির নরম দেহটি জড়িয়ে নেয়।
" জি স্যার। দশ দিনের চেয়েছিলাম, কোর্ট সাত দিনের দিয়েছে। " মইনুল বলে
" বাহিরের লোককে কখনই আসামিদের ওপর হাত ওঠাতে দিবে না।"
" জি স্যার, কিন্তু যদি ওপরওয়ালারা বলেন তো আমি কি করতে পারি স্যার? "
" ওপরওয়ালাদের বলবে তারা যেন লিখিত নির্দেশ দেন।" সোয়েব বলে।
" জি স্যার। "
" এখন যেতে পার। আমি একটু পর যাব। " সোয়েব বলে
" জি স্যার" বলে সেলুট দিয়ে মইনুল চলে যায়।
সোয়েব এবার কবিরের দিকে লক্ষ করে, উস্কখুস্ক চুল, মুখভর্তি খোচাখোচা দাড়ি। ওর দিকেই তাকিয়ে আছে, কিন্তু দৃষ্টিতে শুন্যতা। বয়স কতোই বা হবে, পচিশ কিংবা ছাব্বিশ হবে। এই ছেলেটাই সেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রাশ কিবরিয়া ডাকাত, বিশ্বাস হতে চায় না। কিন্তু সোয়েব তার অভিজ্ঞতা থেকে জানে অনেক ঘাঘু অপরাধীদেরও নিষ্পাপ চেহারা থাকতে পারে।
" কি নাম তোর? " সোয়েব জিজ্ঞাসা করে
" কবির"
" পুরো নাম বল। "
" শাহরিয়ার কবির খান।" বলতে গিয়ে ব্যাথায় কাতরিয়া ওঠে কবির।
" বয়স কতো? "
" পচিশ বছর সাত মাস ছাব্বিশ দিন। " একমুহর্ত থেমে বলে কবির।
" এই বয়সেই ত্রিশ পাহাড়ি গ্রাম আর পন্চাশ বাস লুট, ষাটজন অপহরণ, চল্লিশ রেপ আর পঁয়ত্রিশ খুন। চমতকার ট্র্যাক রেকর্ড তোর। " ঠোটের কোনায় ধুর্ত হাসি রেখে বলে সোয়েব।
" সবকিছু যদি জেনেই গিয়ে থাকেন তখন কেন অযথা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন স্যার? আপনিও কি ওসি সাহেবের মতো দোষ স্বিকার করে নেয়ার জন্য মারধোর করবেন?"
" চুপ শালা কুকুরের বাচ্চা, আমাকে রাগাবি না। আমি সহজে কাওকে মারি না, কিন্তু যে আমাকে লাঠি ধরতে বাধ্য করে সে যতদিন বেচে থাকে দিনে দুইবার আমার নাম জপে, রাতে শোয়ার সময় আর সকাল ঘুম থেকে ওঠার সময়। " সোয়েব রেগে বলে।
" আমি এমনিতেও আপনার কথা চিরদিন স্মরণ রাখব স্যার। রাস্তায় পরে থেকে ধুকে ধুকে মরতে থাকা কোন কুকুর যদি পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া কোন পথচারীর চোখে ঘৃণার বদলে করুণা দেখতে পায় তবে হয়তো সেই পথচারীকে মৃত্যুর আগের মুহুর্ত অব্দি মনে রাখে।"
"তোর জন্য আমার কোন সহানুভুতি নেই। আমি শুধু আমার কর্তব্য করেছি। " শীতল কন্ঠে বলে সো্য়েব
" নিজের কর্তব্যটাই বা কতোজন করে স্যার? " কবির বলে।
সোয়েব কিছুক্ষণ নিরব থাকে, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে থাকে কবিরকে।
" আচ্ছা ঠিক আছে, তুইই বল। হঠাত করে কেন উধাও হয়ে গেলি? কোথায় গেলি, কোথায় কোথায় ছিলি এতোদিন। " সোয়েব বলে
কবির চেয়ারে হেলান দিয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে সেইসময়ের পরিস্থিতি, ওর হারিয়ে যাওয়া, এরপর কবিরের ভবঘুরে জীবন। অচানক স্নিগ্ধার সাথে দেখা হওয়া, স্নিগ্ধাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ও স্বপ্নময় দিনগুলো তারপর হঠাত দুঃস্বপ্নের সেই দিনটি অতঃপর ওদের ধরা পরে যাওয়া। সোয়েব শুনতে শুনতে নোট করতে থাকে।
" তার মানে তুই ধোয়া তুলসী পাতা, তোর কোন দোষ নেই। সবই তোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র?" সোয়েব বলে
"আমি তা বলছি না। আমি দুটি খুনের সাথে জড়িত, যার একটি আমার নিজ হাতে হয়েছে যদিও তা আত্মরক্ষার্থে। " কবির বলে
" আমি নিজে তোর দেয়া তথ্যগুলো যাচাই করব। যদি সত্যিই নির্দোষ হয়ে থাকিস তবে তোর ভয় নেই। " সোয়েব বলে।
সোয়েবের বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত এগারোটা বেজে যায়। বাসায় ফিরে সোয়েব আবারো ডায়েরিটা খুলে দেখে, এতে কবিরের উল্লেখ করা বিভিন্ন ব্যাক্তির নাম আর ঠিকানা রয়েছে। হতে পারে কবির যা বলেছে তার পুরোটাই বানানো, কিন্তু যদি সত্য হয়ে থাকে তবে এক বিশাল অনর্থ ঘটতে যাচ্ছে, এমন কিছু ঘটতে কিছুতেই দেয়া যায় না। সোয়েব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল কালকেই তদন্তে বেড়িয়ে পরবে।
"এই, কি গো খাবে না? কতো দেরি করে ফিরলে, এখন আবার কাজ নিয়ে বসে পরলে যে? " সুমি বলে
" না গো, খেতে ইচ্ছা করছে না। তুমি খেয়ে নাও না লক্ষিটি? " সোয়েব বলে
"তোমাকে ছাড়া খেয়েছি কখনো? " বলে সুমি অন্য ঘরে চলে যায়।
সোয়েব তখন এসপি গৌতম রায় কে কল করে।
"হ্যালো স্যার, ঘুমিয়ে পরেছিলেন নাকি? ডিস্টার্ব করলাম? " সোয়েব বলে
" না সোয়েব। বলো। " গৌতম বলে
" আসলে স্যার, আমার সপ্তাহ খানেকের ছুটি প্রয়োজন। "
" বউকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাবে নাকি? "
" জি স্যার, শশুর বাড়ি থেকে একটু ঘুরে আসতাম । " সোয়েব বলে।
" বেশ, বেশ, যাও তাহলে, চিন্তা করোনা আমি এ দিকটা সামলে নেব।"
" থ্যাংক ইউ স্যার। " বলে ফোন কেটে দেয় সোয়েব।
এবার স্ত্রীর মান ভাঙ্গানোর পালা, সোয়েব প্লেটে ভাত তরকারি বেরে নিয়ে বেট রুমে যায়। সুমি বিছানার একপাশে বসে একটি বই নারাচাড়া করছিল। সোয়েব ওকে হাতে তুলে খাওয়াতে চায়। সুমি মানা করে বলে " আমার খিদে নেই। "
" এই যে দেখ আমিও খাচ্ছি। " বলে নিজে খায় সোয়েব। তারপর স্ত্রীকে খাওয়ায়।
রাতের খাবার শেষ করে ওরা শুয়ে পরে। সোয়েব ফিসফিস করে বলে " মা কে দেখতে ইচ্ছা করে না? "
" হুম, খুব করে। তুমি যাবে? " সুমি বলে।
" আসলে একটা জরুরি কাজে এক সপ্তাহের জন্য আমাকে শহরের বাহিরে যেতে হবে। ভাবছিলাম তোমাকে মার কাছে রেখে আসতাম । " সোয়েব বলে
সুমির কিছুটা আশাভঙ্গ হলেও সেটা বুঝতে না দিয়ে বলে " ঠিক আছে । "
" একটু চাটনি খেতে দাও না। " সোয়েব বলে
" না, এখন হবে না। "
" একসপ্তাহ তো আর চাটনি পাব না, তাই আজ রাত মন ভরে চাটনি খাব।" বলে সোয়েব সুমির নরম দেহটি জড়িয়ে নেয়।