Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
-বুঝলে কাগজের অফিসে যারা কাজ করে তাদের চা খেতেই হবে। সেখানে কোনো লিমিট নেই। তাই না অনি।
-তুমি এক কাজ করলে পারো। আমি দাদার দিকে তাকিয়ে বললাম।
-বল।
-তুমি কিছু দিন অফিসে না গিয়ে বড়মাকে তোমার টেবিলে পাঠিয়ে দাও, বড়মার চা খাওয়া অভ্যাস হয়ে যাবে, তাহলে আর তোমার কোনো অসুবিধে হবে না।
বড়মা আমার কানটা ধরতে যাচ্ছিলেন আমি কান সরিয়ে নিয়ে বললাম, গায়ে চা পরে যাবে।
মিত্রা মুখ টিপে হাসতে গিয়ে কাপড়ে চা ফেললো।
ছোটমা বলে উঠলো তুই হাসতে গেলি কেনো, ওদের মা বেটার যুদ্ধ হচ্ছে হতে দে। দাঁড়া রাতে তোর মল্লিকদাকে তোর কীর্তি কলাপ বলবো।
-দারুণ নিউজ না। মল্লিকদা বললেন।
-দারুণ মানে। তুমি স্কুপ হিসাবে ট্রিট করতে পারো। আবার সাক্ষী কে মিত্রা।
-আমি নিউজগুলো লিখে দিতে পারি। মিত্রা বললো।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম। কালকের থেকে একলা থাকবি। আমি বেরোব।
-না না এরকম করিস না।
-উইথড্র কর।
-আচ্ছা উইথড্র।
চায়ের আসর ভাঙলো। তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পরলাম, আমার আর মিত্রার বিছানা আমার ওপরের ঘরে। আমি আগে ভাগে ঘরে চলে গেলাম। মিত্রা এলো একটু দেরি করে।
এসেই দরজা বন্ধ করে বললো, সবাই শুয়ে পরেছে। পটা পট করে ব্লাউজ, কাপড় খুলে ফেল, বাথরুমের দিকে দৌড়ালো।
-কি হলো রে।
-তুই টাওয়েলটা দে।
আমি এগিয়ে দিলাম।
মিত্রা বাথরুমে ঢুকলো। কিছুক্ষণ পরে চেঁচিয়ে ডাকলো। বুবুন।
আমি বাথরুমের গেটের কাছে গেলাম। কি হলোরে।
-কি শীত করছে।
-তার মানে।
-জানি না।
-বেরো তাড়াতাড়ি।
-তুই আয়, দরজা খোলা।
আমি দরজা খুলে দেখি, মিত্রা নেংটো হয়ে দাঁড়িয়ে।
-কি করছিলি।
-পটি।
-পাছু ধুয়েছিস।
-ধুতে গিয়েই তো শীত লাগলো।
-হাত পা মুছে নে। ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁপছে।
শায়া পরে বেরিয়ে এলো। কাপড়টা কোনো প্রকারে জড়িয়ে নিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো।
-ওষুধটা কে খাবে।
-দে।
আমি একটা ট্যাবলেট আর জলের গ্লাস এগিয়ে দিলাম।
ও ট্যাবলেটটা মুখে দিয়ে জল খেলো।
-নে এবার শুয়ে পর, আমি চাপা দিয়ে দিচ্ছি।
-তুই শুবি না।
-শোবো।
মিত্রার গায়ে একটা কম্বল চাপা দিলাম। ও বললো তুই চলে আয় তোকে জাপ্টে ধরে শুই, তাহলে শীতটা কমবে।
-দাঁড়া লাইটটা নিবোই আগে।
আমি লাইটা অফ করে ছোটো লাইট জালালাম। ওর কম্বলের তলায় গিয়ে শুয়ে পরলাম।
-কিরে শরীর খারাপ লাগছে নাকি।
-না। মাথাটা একটু যন্ত্রণা করছে।
-দাঁড়া টিপে দিই।
উঠে বসলাম, ওর মাথাটা টিপে দিলাম, ও উপুর হয়ে শুয়ে বললো কোমরটা টিপে দে, তাও দিলাম, তারপর বললো পা দুটো একটু টিপে দে, তাও দিলাম। কখন যে ও ঘুমিয়ে পরেছে বুঝতে পারলাম না। আমার গরম লাগছে, তবু আমি পাখাটা একটু কমিয়ে দিয়ে মিত্রার পাশে শুয়ে পরলাম ওর মাথায় হাত রেখে। কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। হঠাত প্রচন্ড গরম লাগলো, ঘুম ভেঙে গেলো। মিত্রার মাথায় হাত দিয়ে দেখি, গা পুড়ে যাচ্ছে, বড় লাইটটা জাললাম, ঘড়ির দিকে তাকালাম, দেড়টা বাজে। মাথাটা বন বন করে ঘুরে গেলো, টেবিলে একটা থার্মোমিটার ছিলো, কাগজের ডাঁই থেকে তাকে খুঁজে বার করলাম। মিত্রাকে ডাকলাম, ও গঁ গঁ করছে। বাধ্য হয়ে ওর বুকের কাপড় সরিয়ে ব্লাউজের বোতাম খুলে বগলে থার্মোমিটার গুঁজলাম, একশ সাড়ে তিন জ্বর। এতরাতে কাকে ডাকি, মিত্রাকে কোনো প্রকারে জাগালাম, বললাম, জ্বর এসেছে, আমাকে একটু হেল্প কর। চোখ জবা ফুলের মতো লাল।
-আমার শীত করছে।
-ঠিক আছে।
মানিপার্টসের ভেতর সব সময় কেলপোল নিয়ে ঘুরি, ভাবলাম একটা দিয়ে দিই। তারপর ভাবলাম না আগে মাথায় জল ঢালি। আর জল পট্টি দিই। মিত্রা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
-কি ভাবছিস।
-কিছু না। তুই মাথাটা এদিকে নিয়ে এসে শো। মাথাটা একটু ধুইয়ে দিই।
-শীত করবে।
-করলে কি করবো বল, জ্বরটা তো নামাতে হবে।
ওকে ধরে ধরে এপাশে শোয়ালাম। একটা পলিব্যাগ জোগাড় করে তাকে কেটে দুটুকরো করে ওর মাথার তলায় দিলাম। চুলগুলো যাতে না ভেঁজে তার ব্যবস্থা করলাম। তারপর বাথরুম থেকে বালতি করে জল এনে ওর মাথায় ঢাললাম। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে ঢালার পর ও বললো, অনি এবার তুই বন্ধ কর।
-কেনো! কি হয়েছে বল, অশ্বস্তি হচ্ছে।
-না শীত করছে। ওর দাঁত ঠক ঠক করে কাঁপছে।
চোখের লালাভাবটা কিছুটা কম, ছল ছল করছে। আমি ওর মাথা শুকনো করে মুছিয়ে দিলাম, মুখটা ভিঁজে টাওয়েল দিয়ে মুছিয়ে দিলাম।
-আর দিসনা, শীত।
বাধ্য হয়ে মানিপার্টস থেকে কেলপোল বার করে দিলাম। নে এই ট্যাবলেটটা খেয়ে নে।
ওকে মুখের মধ্যে ট্যাবলেটটা দিয়ে জল ঢেলে দিলাম এক ঢোক খেয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
-আর না।
-এই জন্যই তোদের এত রোগ, জলখাবি না মুতবিও না।
মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো।
-হাসিস না গা জ্বলে যায়।
মিত্রা দুচারবার হাঁচি মারলো। বুঝলাম ঠান্ডা লেগেছে।
মগে করে জল এনে যে পাঞ্জাবীটা সকালে ছিঁড়েছিলো তার থেকে দুটুকরো ছিঁড়ে নিলাম। খুঁজে খুঁজে একটা পিচবোর্ড বার করলাম।
-কি করবি।
-হাত পাখা পাবো কোথায় এই কানা রাতে, হাওয়া দিতে হবে তো।
ওর মাথার শিয়রে বসে জল পট্টি দেওয়া শুরু করলাম।
মিত্রা ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
-তোকে খুব কষ্ট দিচ্ছি না।
-একেবারে না। কথা বলিস না।
-দেখিস আমার কিছু হবে না। কৈ মাছের জান।
-জ্ঞান দিস না। জ্বরটা আগে নামাই তারপর তোর কথা শুনবো, এখন ঘুমোবার চেষ্টা কর।
-ঘুম আসছে না।
-আসবে।
দেখতে দেখতে এক ঘন্টা হয়ে গেলো। আবার থার্মোমিটার বগলে গুঁজলাম।
-কিরে আমার ব্লাউজের বোতাম খোলা কেনো।
-তোর মুনু চুষছিলাম।
-একবার ডাকবি তো। আমিও একটু চুষতাম।
-তুই থামবি।
-টেনসন করছিস কেনো, দেখবি কিচ্ছু হবে না।
জ্বর এখন আড়াই। আবার জলপট্টি দেওয়া শুরু।
আবার এক ঘন্টা পর দিলাম, দেখলাম জ্বরটা নিরানব্বই। জলপট্টি দেওয়া থামালাম।
-বুবুন গরম লাগছে।
-লাগুক কম্বল খোলা যাবে না।
-ঠিক আছে তুই একটা পাতলা চাদর গায়ে দে।
-ওর কথা মতো তাই করলাম।
-একবারে উঠবি না আমি একটু নীচ থেকে আসছি।
-কেনো।
-তোমার সেবা করার জন্য।
নীচে গিয়ে রান্নাঘর থকে সরষের তেল বার করলাম, গ্যাস জালালাম, তেলটা গরম করে সাঁড়াসি দিয়ে ধরে ওপরে নিয়ে এলাম।
-বুবুন বাথরুমে যাবো।
-এর মধ্যে তোর আবার বাথরুম পেলো। যেতে হবে না আমি মগ এনে দিচ্ছি মুত।
মিত্রা আমার কথা শুনে হেসে ফেললো।
-তুই আমাকে একটু ধর আমি যেতে পারবো।
আবার ওকে ধরলাম। ও আমার কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালো, বাথরুমের সামনে গিয়ে বললাম ভেতরে যেতে হবে না, এখানে মুত।
-ঠিক আছে তুই চোখ বন্ধ কর।
-ন্যাকামো করিস না। সব দিয়ে থুয়ে এখন বলে চোখ বন্ধ কর।
-আমার হবে না।
-ঠিক আছে বন্ধ করলাম।
আওয়াজ হলো। থামলো। বুঝলাম শেষ হয়েছে। কি হলো রে।
-একটু মগে করে জল এনে দে।
-কেনো।
-ধুতে হবে না।
-উঃ।
আবার মগে করে জল দিলাম। ধরে ধরে খাটে এনে শুইয়ে দিলাম। দাঁড়া থার্মোমিটারটা দিই।
-কতবার দিতে লাগে।
-তোর জানার দরকার আছে।
এবার জ্বরটা দেখলাম, সারে আটানব্বই।
-কত?
-সামান্য আছে। পাখাটা বন্ধ করলাম।
-পাখা বন্ধ করছিস কেনো
-সেবা করবো।
মিত্রা হেসে ফেললো।
-কাপড় খোল।
ও কাপড় খুললো।
-ব্লাউজ খোল।
-করবি।
-হ্যাঁ করবো, আমার নুনু তোকে দেখে এই সময় শাল গাছ হয়েছে কিনা।
-দেখি দেখি বলে আমার নুনুতে হাত দিলো, কোথায় রে এতো ছোট্ট হয়ে আছে।
-থাক।
টেবিলের ওপর থেকে তেলের বাটিটা নিয়ে এলাম, এখনো গরম আছে, আমি ফুটিয়ে নিয়ে এসে ছিলাম, প্রথমে ওর কোমর পিঠটা মালিশ করে দিলাম, তারপর বুকটা দিলাম, ও বদমাইশি করছে, মাঝে মাঝে আমার নুনুতে হাত দিচ্ছে, তারপর ওর চোখ মুখ কপাল ঘার মালিশ করলাম, তারপর বললাম, নে শায়া তোল।
-ওখানে তেল লাগাবি নাকি।
-হ্যাঁ। না হলে ঢুকবে না।
-তোরটা দে একটু তেল লাগাই।
মিত্রা শায়া তুললো, ভালো করে দুটো পা পায়ের চেটো তেল মালিশ করলাম এবার বললাম ব্লাউজ পর।
-এই তেল গায়ে।
-যা বলছি কর।
-তুই কিন্তু দারুণ ম্যাসেজ করতে পারিস।
-কেনো ভালো করতে পারি না।
-ওতে তুই মাস্টার।
মিত্রা কাপড় ব্লাউজ পরলো।
-নে এবার শুয়ে পর।
ও শুয়ে পরলো, আমি ওর পাশে শুয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম, ও আমাকে জাপ্টে ধরেছে।
-বুবুন।
-উঁ।
-তোকে অনেক কষ্ট দিচ্ছি না।
-ঘুমোবার চেষ্টা কর।
-জানিস বাবার কথা মনে পরে যাচ্ছে।
-কেনো।
-অসুস্থ হলে বাবাও ঠিক তোর মতো রসুন তেল দিয়ে সারা শরীর মালিশ করে দিতো। বড়ো হওয়ার পর খালি পা দুটো মালিশ করে দিতো।
-ও।
-আজ তোর মালিশ করা দেখে বাবার কথা মনে পরে গেলো।
বুঝলাম মিত্রা কাঁদছে।
-আবার কাঁদে।
-জানিস আজ সারা দিন কেঁদেছি। ছোটমার কাছে আমিও কনফেস করেছি।
-ভালো করেছিস।
-তুই আমাকে ভীষণ ভালোবাসিস না।
-একেবারে না।
-ভালো না বাসলে কেউ এই ভাবে করতে পারে না।
-সম্পত্তি দিয়েছিস, করতে হবে।
মিত্রা চুপচাপ।
-পাখাটা একটু চালিয়ে দিবি।
-না। আমি হাওয়া দিচ্ছি।
আমি পিচবোর্ডটা নিয়ে হাওয়া দিতে আরম্ভ করলাম।
-বুবুন।
-উঁ।
-আমাকে এখান থেকে কোথাও দূরে নিয়ে যাবি।
-যাবো।
-কোথায় বল।
-একটু ভালো হয়ে ওঠ নিয়ে যাব।
-সেখানে তুই আর আমি, আর কেউ থাকবে না।
-সেতো সমুদ্রের মাঝখানে যেতে হয়, কিংবা কোনো নির্জন দ্বীপে।
-তাই যাবো।
-আচ্ছা।
-কোথায় নিয়ে যাবি।
-ভেবে দেখি।
ও আমার হাতটা টেনে বুকের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলো। চোখ বন্ধ। আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। কথা বলতে বলতে কখন ঘুমিয়ে পরলো বুঝতে পারলাম না। আমি ওর গায়ে একটা পাতলা চাদর চাপা দিয়ে ওর মুখের দিকে চেয়ে রইলাম।
ওর পাশ থেকে সরে এসে ইজিচেয়ারে বসলাম।
সাড়ে চারটে বাজে। জ্বর দেখলাম, না এখন নেই।
একটু তন্দ্রা মতে এসেছিলো।
দরজা ঘট ঘট করতে তাকালাম, সোয়া পাঁচটা, পূব আকাশ সবে ফর্সা হয়েছে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
দরজা খুললাম, ছোটমা। চায়ের কাপ হাতে।
-লাইট জ্বেলে ঘুমোচ্ছিস। ভেতরে এলেন, কিরে এসব কি, বালতি মগ তেলের বাটি সাঁড়াসি, জলপট্টি।
ছোটমাকে ইশারায় চুপ করতে বললাম। তারপর চা খেতে খেতে সব বললাম
-এই মাত্র চারটে নাগাদ ঘুম পাড়িয়েছি। ছোটমা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন, কাপড়ের খুঁট দিয়ে চোখ মুছলেন। ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বড়মা, ছোটমা, মল্লিকদা, দাদা এসে হাজির। সবাই চুপচাপ। থম থমে মুখ। ছোটমা বললেন
-যা আমার ঘরে গিয়ে একটু শুয়ে পর। দুরাত তোর ঘুম হলো না, শরীর খারাপ করবে।
দাদার দিকে তাকিয়ে বললাম, ডাক্তারবাবুকে একবার ডাকো।
-দাঁড়া, আলো ফুটুক, ডাকছি।
ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, আমাকে একটু চা খাওয়াবে।
-চা কেনো, ছোটো ওকে একটু হরলিক্স করে দে। বড়মা বললেন।
ছোটমা বেরিয়ে গেলেন। দাদা ইজি চেয়ারে, আমি দাদার পাশে মাটিতে, বড়মা মিত্রার মাথার শিয়রে। মল্লিকদা চেয়ারে।
-মল্লিক আমার সিগারেটের প্যাকেটটা নিয়ে আয় তো।
মল্লিকদা বেরিয়ে গেলেন। সিগারেটের প্যাকেটটা নিয়ে এসে দাদাকে দিলেন। দাদা একটা সিগারেট ধরালেন।
-বুঝেছো।
-বলো।
-তোমরা কয়েকদিনের জন্য কোথাও ঘুরে এসো। আমি মল্লিক ঠিক ম্যানেজ করে নেবো।
-সেই ভালো।
-কিরে মল্লিক পারবো না।
-খুব পারবো।
-কোথায় যাই বলোতো।
-অনির বাড়ি চলে যাও। মিত্রা ওখানে গিয়ে কয়েকদিন বেশ ফুরফুরে ছিলো লক্ষ্য করেছিলাম।
-কিরে অনি যাবি।
-যাওয়া যায় তবে আগে ডাক্তারবাবুকে জিজ্ঞাসা করো উনি কি বলেন।
-মেয়েটার নার্ভের ওপর খুব চাপ পরে গেছে। সহ্য করতে পারে নি।
-সামন্ত তাই বলছিলো, বিকেলে এসেছিলো দেখে বললো, মা তোমার চোখটা ভালো ঠেকছে না, ওষুধ লিখে দিলো। আমার দিকে তাকিয়ে বড়মা বললেন হ্যাঁরে ওষুধটা খাইয়েছিস।
-আমি মাথা দোলালাম।
-জ্বরটা কখন এলো।
-দেড়টা।
-ডাকলিনা কেনো।
-শুতে গেলে সাড়ে এগারোটা, ডাকি কি করে।
-পাকামো করিস না। একা একা সব করলি।
-কি করবো।
-মল্লিক তোরাও কিছু জানতে পারিস নি।
-হ্যাঁ বাথরুমে আওয়াজ হচ্ছিল, ভাবলাম কেউ বাথরুম ইউজ করছে। প্রায় দুটো পযর্ন্ত জেগেছি, ছোটো অনি আর মিত্রার সম্বন্ধে গল্প করছিলো।
ছোটমা চা হরলিক্স নিয়ে এলেন। সবাইকে চা দিলেন আমাকে হরলিক্সের গ্লাসটা এগিয়ে দিলেন।
-এখান থেকে দুটো বিস্কুট নে।
নিলাম।
-তোমায় বলছিলাম, দেখো বাখরুমে ঘট ঘট শব্দ হচ্ছে।
-হ্যাঁ।
-তখন অনি মিত্রার মাথায় জল ঢালছিলো, সাড়ে তিন জ্বর উঠেছিলো।
-সব্বনাশ।
-তুই কি করলি সেই সময়। দাদা বললো।
-আমি প্রথমে জল ঢাললাম মাথায়, তারপর আমার কাছে ক্যালপল ছিলো দিলাম, সারারাত জলপট্টি দিলাম, রান্নাঘর থেকে তেল গরম করে এনে মুখে কপালে, পায়ে পায়ের চেটো, আর হাতে মালিশ করলাম। এই তো ঘন্টা খানেক হলো ঘুমিয়েছে।
-তুই তো ট্রেন্ড নার্স ।
ছোটমা মুখ টিপে হাসলো।
বড়মা দাদার দিকে তাকিয়ে বললো মস্করা হচ্ছে।
-তুমিই বলো বড়, ওই সময় মাথা ঠিক রেখে অনি ঠিক ঠিক কাজ করেছে কিনা।
-তোমার মতো তো নয় কিছু হলেই দশবার পায়খানায় দৌড়বে। ও ছোট আর আমার ছেলে।
মিত্রা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো।
-মেয়েটা জেগে গেলে ঘাড় মটকাবো।
-যাই ডাক্তারকে ধরে নিয়ে আসি।
দাদা চলে গেলেন। ছোটমা ইজি চেয়ারে বসলেন। আমি ছোটমার কোলে মাথা দিলাম, ছোটমা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
-যা না অনি, আমরা তো আছি, ছোটোর ঘরে গিয়ে একটু শুয়ে নে। বড়মা বললেন।
-না ঘুম পাচ্ছে না।
-থাক। ছোটমা বললেন।
-কি বিপদে ফেললে বলতো মেয়েটা। বড়মা ছোটোর দিকে তাকিয়ে বললো।
-সবই ওপর ওয়ালার ইচ্ছে, না হলে আমাদের কাছেই বা আসবে কেনো।
-ঠিক বলেছিস, কাল থেকে যেন একটা ঝড় যাচ্ছে।
অমিতাভদা, ডাক্তারবাবুর গলা পেলাম।
-কি অনিবাবু ধূম জ্বর এসেছিলো।
আমি উঠে দাঁড়ালাম, ছোটমা ইজিচেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন, ডাক্তারবাবু ইজি চেয়ারে বসলেন। মল্লিকদা চেয়ারটা দাদার দিকে এগিয়ে দিলেন, ওরা দুজনে মিত্রার পায়ের দিকে বসলো।
-বলোতো কি কি হয়েছিলো, আমি একটু মিলিয়ে নিই আমার সঙ্গে।
আমি পঙ্খানুপুঙ্খরূপে যা হয়েছিলো, তাই বললাম।
-তুমি কি ওর বুকে পিঠে তেল মালিশ করেছিলে।
মাথা নীচু করলাম।
-লজ্জার কিছু নেই তখন তুমি নার্স।
মাথা দেলালাম।
-দ্যাটস গুড।
-এমনি তেল না গরম তেল।
বললাম তেল গরম করে মালিশ করেছি।
-ওঃ ওয়ান্ডারফুল। ঝড়টা কাটলো। বুঝলে এডিটর।
-মস্করা রেখে আসল ব্যাপারটা বলো তো সামন্ত। বড়মা বললেন।
-কি হয়েছিলো জানো। ওর নার্ভগুলো হঠাত ক্র্যাম্প ধরে গেছিলো, তাই ও অস্বাভাবিক আচরণ করেছিলো। ওটা কিন্তু ও করে নি, ওর নার্ভগুলো করেছিলো। কাল আমি একটা ইঞ্জেকশন দিলাম, নার্ভগুলোকে জাগাবার জন্য আর একটা দিলাম ঘুমোবার জন্য, তাহলে নার্ভগুলো তাড়াতাড়ি সতেজ হবে। বিকেলে যে ট্যাবলেটটা দিলাম, সেটা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য, কিন্তু নার্ভগুলো ঘুমিয়ে পরেছিলো, যখন জাগতে আরম্ভ করলো, তখন আড়মোড়া ভাঙলো, জ্বর এলো, ধুম জ্বর। সেই সময় যা যা করার দরকার অনিবাবু তা করেছে। আজ দেখবে ও অনেক সতেজ থাকবে। কিন্তু একটা কথা এখান থেকে নড়ানো যাবে না। সাতদিন। তারপর তোমরা যেখানে যাবার যাও। তখন ঝড় একেবারে কেটে যাবে, ভবিষ্যতে ওকে একেবারে বেশি স্ট্রেইন দেওয়া যাবে না। একবার ব্রেকডাউন করলেই, পঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা। ছোট এবার একটু চা হোক। তারপর মাকে দেখছি। ছোটমা বেরিয়ে গেলেন।
-তুমি আগে একবার দেখো, তারপর চা খাবে। বড়মা বললেন।
-আর একটা ব্যাপার এর মধ্যে ঘটেছে। আমি বললাম।
-বলো।
-কালকে ও ক্লাবে গেছিলো……..
-হ্যাঁ তোমার ছোটমা আমাকে বৈকালে ঘটনাটা বলেছেন। ওটাও তুমি ভালো কাজ করেছো। সবই ফাস্ট্রেশন বুঝলে অনিবাবু। কখনো হতাশায় ভুগবে না, ভুগলেই বিপদ। কি থেকে কি হয় বলা মুস্কিল। আমরা পযর্বেক্ষণ করে যতটা পারি ওষুধ দিই।
ছোটমা চা নিয়ে ঘরে ঢুকলেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তোকে কম করে দিলাম, দুরাত তোর জাগা হয়ে গেলো।
-তাতে কিছু হবে না। ও খুব স্ট্রং ম্যান।
-থামো তুমি। ছেলেটাকে পিষে মেরে দিলে এরা। বড়মা বললেন।
-বুবুন। মিত্রা চোখ চাইলো।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। মিত্রা আমার দিকে তাকালো।
বড়মা মিত্রার মাথায় হাত রাখলো। তোকে চিন্তা করতে হবে না আমরা সবাই আছি।
ডাক্তার চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন, বুবুন কে।
বড়মা বললেন, অনির আর এক নাম। মিত্রা ওকে বুবুন বলে ডাকে।
-বাঃ বেশ মিষ্টি তো নামটা, অনি এ নামটা তোমার কে রেখেছিলো।
-আমার মা।
-ও।
মিত্রার চোখ দুটো ছল ছলে।
-কাঁদছিস কেনো। বড়মা ওর কপালে চুমু খেলেন।
-তোমাদের অনেক কষ্ট দিচ্ছি।
-মেলা বকিস না আর। একবার পাঁঠাটাকে জোর করে ডাকতে বলতে পারতিস। তাহলে এতোটা কষ্ট হতো না।
মিত্রা হেসে ফেললো।
-কি কষ্ট হচ্ছে মা।
মিত্রা শুয়ে শুয়ে কাপেলের দিকে চোখ তুলে, ডাক্তার বাবুর দিকে তাকালো। না কষ্ট হচ্ছে না।
ডাক্তারবাবু এগিয়ে গেলেন।
স্টেথো দিয়ে বুকটা দেখলেন। একটু কফ হয়েছে বুকে, আমি একটা ওষুধ লিখে দিচ্ছি। হাত পায় যন্ত্রণা করছে।
-করছিলো কাল রাতে, এখন করছে না।
-ঠিক আছে, স্নানের আগে ভালো করে তেল মেখে স্নান করবে, গরমজল ঠান্ডাজল মিশিয়ে। নর্মাল ডায়েট। পারলে একটু দুধ খাওয়াতে পারবে।
-এখানে গোয়াল ঘর পাই কোথায় বলতো।
-সেও ঠিক। আমাদের বাজারে যে দুধ পাওয়া যায় তাই দাও।
অমিতাভদার ফোনটা বেজে উঠলো।
-আরে আপনি আর ফোন করার সময় পেলেন না, এই সাত সকালে। ধরুন যে লিখেছে তার সঙ্গে কথা বলুন।
অমিতাভদা ফোনটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিলেন
-হ্যালো।
-শোনো তোমার মতো দু’টাকার সাংবাদিককে উড়িয়ে দেবার ক্ষমতা আমি রাখি, আজই লেখাটার সম্বন্ধে একটা অবজেকশন পাঠাচ্ছি, অমিতাভকে বলে ছেপে দেবে।
মাথাটা গরম হয়ে গেলো
-শোনেন আপনার মতো মন্ত্রীকে আমি জন্ম দিই, আপনার নাম করে এবার সিরিয়াল লিখবো, দেখি আপনার চেয়ারটা আপনি কি করে ধরে রাখেন, সাতদিনের মধ্যে আপনাকে রিজাইন দিতে বাধ্য করাবো, তখন লালবাতি নিয়ে ঘোরা বেরিয়ে যাবে, আর কালকের সকালের কাগজে আপনার ছেলের মধুচক্রের ব্যাপারটা ছাপবো উইথ ফটো, দেখি আপনার কেমন ক্ষমতা, আপনার দম থাকলে আপনি আমাকে আটকান। আর একটা কথা শুনে রাখুন যার কাছে নাম লিখিয়ে আপনি মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন, ওই লিস্টে সবার প্রথম আমার নামটা আছে, একটু ভালো করে জেনে নেবেন। ফোনটা কেটে দিলাম।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
সবাই আমার কথা শুনে থ। মল্লিকদা আমার চোখ মুখ দেখে ভয় পেয়ে গেছে, বুঝতে পারছে, অনি এবার একটা কেলোর কীর্তি করবে, এটা মল্লিকদা অনেকবার টের পেয়েছে।
আবার ফোনটা বেজে উঠলো। দাদা ধরলেন।
-হ্যাঁ বলো।
-এ্যাঁ। হ্যাঁ ও আমাদের নতুন মালিক। নিজেই লিখেছে। আমি কি বলবো বলো, আমি একজন সম্পাদক, ও লেখা দিলে আমাকে ছাপতে হবে, মালিক বলে কথা। একটা কাজে কাল এসেছিলো। ধরো।
-হ্যাঁ বলুন।
-আরে ভাই, তুমি মাথা গরম করছো কেনো।
-কি হলো আপনার ক্ষমতা শুকিয়ে গেলো।
-না। মানে।
-নেগোশিয়েসনে আসুন।
-বলো।
-এ মাসে আপনার দপ্তর থেকে ৩ কোটি টাকার এ্যাড বেরোচ্ছে, ২ কোটি আমার কাগজের নামে পাঠিয়ে দেবেন আজকের মধ্যে। না হলে কাল থেকে সিরিয়াল চলবে, আর আপনার চেয়ারটা পাওয়ার জন্য যে ওঁত পেতে রয়েছে, তার নামে ভালো ভালো কথা বলে, চেয়ারটা পাইয়ে দেবো।
-ঠিক আছে, ঠিক আছে।
-আর কিছু।
-কোনো ফোনটোন যেন করতে না হয়। ধরুন।
আমি অমিতাভদার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বাথরুমে গেলাম।
আমি বাথরুম থেকে শুনতে পাচ্ছি অমিতাভদার কথা, মন্ত্রীমহাশয় পারলে এখুনি এসে অনির কাছে ক্ষমা চাইবেন, কিন্তু আমি যেন আর না লিখি ওনার সম্বন্ধে। এটা অমিতাভদাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমি যা বলেছি উনি মেনে নেবেন।
ডাক্তারবাবু বললেন, এডিটর ছেলেটা খাঁটি ইস্পাত খুব সাবধানে ব্যবহার করো, না হলে হাত কেটে ফালাফালা হয়ে যাবে। কি আগুন দেখেছো। একটা মন্ত্রীকে পযর্ন্ত ঠুসে দিলে।
-বলনা বলো, এবার সামন্তর কথার উত্তর দাও। বোবার মতো বসে আছো কেনো, বোবার শত্রু নেই, মনে রাখবে ও আমার ছেলে একটাও ভুল কাজ করবে না, প্রয়োজনে ভুল কাজ করবে, আবার স্বীকারও করে নেবে। এতদিন হলো এইভাবে কোনোদিন কোনো মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছো। কি বল মিত্রা।
মিত্রা কি বললো, শুনতে পেলাম না। বাথরুম থেকে চোখে মুখে জল দিয়ে বেরোলাম।
-বাবা। তুই সকাল বেলা ভালো সওদা করলি তো। মল্লিকদা এমন ভাবে বলে উঠলেন, আমিও না হেসে পারলাম না।
-যাই বল মল্লিক অনির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে, কিরে অনি মন্ত্রী পুত্রের কেলাঙ্কারিটা দে, ছেপে দিই।
-মরণ। বড়মা এমনভাবে বললেন, সকলে হেসে ফেললো।
-অফিসে যাও আজই যদি এ্যাডের ব্যাপারটা কনফার্ম না করে কাল দেবো। আমার অনেক টাকার দরকার।
-একটা নিউজের দাম দু কোটি, তুই তো চম্পকের চাকরি খেয়ে নিবি।
-তোমরাইতো বাঁচিয়েছো চাকরিটা, কালকে ও বলছিলো।
-শুধু আমায় একা দোষ দিও না।
-লক্ষণও বুঝি দোসর ছিলো।
ছোটমা ফিক করে হেসে ফেললো। মল্লিকদার মাথা নীচু।
-চলো আমরা বুড়ো বুড়িরা এখন নিচে যাই। ডাক্তারবাবু বললেন।
-ওকে এখন কি দেবো। বড়মা বললেন।
-ডিমটোস্ট বা বাটার টোস্ট, ভালো করে সেঁকে, আর দুধ না হলে হরলিক্স বা বোর্নভিটা।
-অনি, ওকে হাতমুখ ধুইয়ে দে নিয়ে আসছি। ছোটমা বললেন।
কিছুক্ষণ পর ছোটমা ফিরে এলেন, হাতে মিত্রার কাপড় শায়া ব্লাউজ। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললেন
-ওগুলো ছেড়ে রাখিস, লন্ড্রীর ছেলেটা আসবে দিয়ে দেবো। মিত্রা ছোটমার দিকে তাকালো।
-আর তাকাস নি ওই ভাবে, খালি একা একা মজা নিয়ে যাচ্ছিস, আমরা ফাঁকে পরে যাচ্ছি। ছোটমা বেরিয়ে গেলো।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম।
- কিরে ছোটমা কি বলে।
-শুনলি তো।
-তার মানে, আমার প্রেসটিজে পুরো গ্যামাকসিন।
-বেশ করেছি।
-ভালো। ওঠ।
-দরজাটা বন্ধ কর।
-কেনো।
-কাপড়টা কাল পরিয়েছিস! খালি জড়িয়ে দিয়েছিলি।
-ও।
বাইরের দরজাটা বন্ধ করলাম।
-ধর একটু।
-কেনো।
-সব কেনোর উত্তর দেওয়া যায়।
-এগিয়ে আয়।
ও বিছানা থেকে এগিয়ে এলো। আমি ওর হাতদুটো ধরে দাঁড় করালাম, ও আমার বুকে ঢলে পরলো। আমি ওকে শক্ত করে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরলাম।
-মিত্রা!
-উঁ।
-কি হলো।
-মাথাটা কেমন ঘুরে গেলো।
-একটু খেয়ে নিয়ে আবার ঘুমিয়ে পর।
মিত্রা বুক থেকে মাথা তুলছে না, কিরে বাথরুমে যেতে পারবি, না এখানে এনে দেবো।
-না যাবো।
-দাঁড়া।
আমি ওকে কোলে তুলে নিয়ে বাথরুমের দরজার সামনে নিয়ে গেলাম, এখানে বোস।
-না, কমে গেছে। আমি ভেতরে যাই, তুই দরজাটা ভেজিয়ে দে।
আমি দরজাটা ভেজিয়ে দিলাম।
-কি রে হলো।
-হ্যাঁ।
-দেখলাম ও বসে আছে। দাঁড়া।
-উঠতে পারছি না।
আমি ওকে তুলে ধরলাম। উঃ কি ভারী রে বাবা।
মিত্রা হেসে ফেললো।
-নে দাঁত মাজ। আমি ডাক্তারবাবুকে তোর নতুন উপসর্গটা বলি।
-ও কিছু না, বলতে হবে না।
-ও দাঁত মাজলো, মুখ ধুলো আমি ওর পেছনে দাঁড়িয়ে আছি।
-তোর এতো রাগ।
-তুই বল মানসিক পরিস্থিতি এরকম, সাত সকালে ফোন, মাথাটা গরম হবে না।
-ভালোই হলো। দেবে।
-ওর বাপ দেবে, অমিতাভদা অফিসে পৌঁছলে ওর সচিবকে পাঠিয়ে দেবে।
-তাই বলে দু কোটি!
-ওটা তোর।
-শুধু আমার একার।
-থাক এখন এসব আলোচনা।
-কাল নীপা ফোন করেছিলো।
-কখন।
-যখন পেয়ারা পারছিলাম, তুই রবীনের সঙ্গে কথা বলছিলি তখন।
-কি বললি।
-বোললাম, তোর শরীর খারাপ। জিজ্ঞাসা করলো সব বললাম।
-তোরটা আমার ঘারে চাপিয়ে দিলি।
-কি মজা বলতো, আজ ওরা চলে আসবে।
-ঠিক আছে, তাড়া তাড়ি কর। ছোটমা এসে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।
-থাকুক।
-থাকুক কিরে। তুই তো আমাকে ফুল ঢিলে করে দিচ্ছিস।
-বেশ করছি।
ওকে ঘরে নিয়ে এলাম।
-ওদিকে মুখ করে দাঁড়া।
-আমি ফিরে দাঁড়ালাম।
ও শায়া ব্লাউজ পরে নিলো। দরজা খুললাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছোটমা এলেন, দুজনের জন্য খাবার নিয়ে।
-তুই মুখ ধুয়েছিস।
-আমি! কেনো!
-মুখ ধুবি না।
-কাল রাতে ঘুমিয়েছি!
-না ঘুমলে মুখ ধুতে নেই। পিচাশ। বেরো আগে।
ছোটমার ধমকানিতে ব্রাশ নিয়ে গেলাম।
-তুমি মুখে বললে কেনো, পিঠে দুচারঘা দিতে পারলে না।
-ছোটমাকে বল, ডাক্তারবাবু এখনো যান নি।
আমি বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম, ছোটমা নেই।
-কিরে ছোটমা গেলো কোথায়?
-তুই বলতে বললি, আমি বললাম, ছোটমা দৌড়ে নিচে চলে গেলো।
-ও।
ঘড়ির দিকে তাকালাম, আটটা বাজে।
-খেয়ে নে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
নিচে আওয়াজ পেলাম, অনি আমার সাক্ষাত দেবতারে এযাত্রায় মেয়েটা বেঁচে গেলো। কাল আমায় কি গালাগালটাই না দিলে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম।
-বুড়ীমাসি।
-তুই গালাগাল করেছিস।
-না।
-ওই যে বলছে।
-দাঁড়া আসুক।
-কোন কথা বলবি না। তোর প্রতি ওরও একটা অধিকার আছে।
মিত্রা মাথা নীচু করলো।
কিছুক্ষণ পর বুড়ীমাসি, ছোটমা ঢুকলেন। বুড়ীমাসির চোখের কোল ভারি, মিত্রা বুড়ীমাসির দিকে একবার তাকিয়ে মুখ নীচু করলো, বুড়ীমাসি, মাটিতে বসলো।
-তুমি জানোনা ছোটমা, পই পই করে বারণ করেছি, কে কার কথা শোনে।
আমি বুড়ীমাসির দিকে তাকালাম। বুড়ীমাসি চুপ করে গেলো। দেখেছো তোমার মিত্রাকে, যাও নিচে গিয়ে বোসো।
বুড়ীমাসি কিছুক্ষণ বসে নিচে চলে গেলো।
ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, ডাক্তার কি বললো।
-সাবালক মেয়ে, শরীরের ওপর অনেক অত্যাচার করেছে, সময় লাগবে। খাবার চার্ট দিয়ে গেলেন।
-আমি গ্যারেজ।
-দেবো কান মূলে, কি কাজ আছে রে তোর।
-দাওনা দাও মুখে বলছো কেনো।
-দেখলে তো কেসটা সকালে, তাহলে বলছো কেনো।
-সত্যি অনি আমরা তো অবাক হয়ে গেছিলাম, তুই হয়তো ত ত করবি। তোকে নিয়ে নিচে তিনজনে যা হৈ চৈ করছে না, বড়োর বুকটা ফুলে ছাপান্ন ইঞ্চি।
আমি ছোটমাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, তোমার।
ছোটমা আমার কপালে চুমু খেলো। মিত্রার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপলো।
-বুঝেছি। মিত্রা বললো।
-কি বুঝেছিস।
-তোকে বুঝতে হবে না।
ছোটমা মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
আমার খাওয়া শেষ ট্রেটা ছোটমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম, চা।
-নিয়ে আসা হচ্ছে। ওরটা শেষ হোক।
-ভোর হয়ে যাবে।
-তার মানে।
-কয়লার ইঞ্জিন।
-খুব কথা না। দিল আমার চুলে মুঠি ধরে।
মিত্রা হাসলো।
ছোটমা আমার ট্রেটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
-দাঁড়া আজ স্নান করার সময় তোর শরীর একেবারে ঠিক করে দেবো।
-দিবি।
আমি চুপ থাকলাম।
চা এলো, ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, অনাদিরা আসতে পারে।
-কেনো।
-কাল ফোন করেছিলো, উনি বলেছেন, আমার শরীর খারাপ। বুঝলে এবার।
-কি দুষ্টু বুদ্ধিরে তোর মিত্রা।
-অতএব আমি চা খেয়েই তোমার ঘরে গিয়ে ঘুমোবো। দু রাত অনেক জ্বালাতন সহ্য করেছি। রবিন নিচে আছে, বুড়ীমাসিও এসে গেছে, ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দাও।
-না আমি যাবো না।
-কেনো যাবি না।
-তাহলে তোকেও যেতে হবে।
-হুঁ।
-দাঁড়া নিচে গিয়ে বড়মাকে বলছি, তুই এইসব বলছিস।
-বল না বয়েই গেছে।
আমি উঠে পরলাম।
-কি রে সত্যি চলে যাচ্ছিস।
-হ্যাঁ।
-এখন ঘুমোস না, দুপুরে। তুই তো স্ট্রং ম্যান।
-ওঃ এদিকে তো টনটনে জ্ঞান আছে দেখছি।
ছোটমা আমাদের কথা শুনে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে হাসছেন।
-দে ট্রেটা দে, নিচে অনেক কাজ। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুই একটু বোস, আমি ঘন্টাখানেকের মধ্যে চলে আসবো।
অগত্যা আবার ইজি চেয়ার।
মিত্রার খাওয়া শেষ হতে ওকে ওষুধটা দিলাম।
-কিরে কত খাবো।
-রোগ বাধিয়েছিস খেতে হবে।
অনাদিরা যথাসময়ে এলো। সব জানলো। ওদের চোখ ছানাবড়া বলিস কি, কাকার সাথে ফোনে কথা বলিয়ে দিলো, কাকাকে সব জানালাম, নীপা কাঁদছে, আমি মিত্রার সঙ্গে ওকে কথা বলিয়ে দিলাম, অনাদিকে বললাম,
-আমরা যাবো আগামী সপ্তাহে, বড়মা ছোটমাও যাবে, তুই ওই কয়দিন জেনারেটরের ব্যবস্থা কর, আর একটা বাথরুম বানাবার ব্যবস্থা কর। বুড়োবুড়ী সব যাবে কোথায় কি হবে। একটা ট্রলির ব্যবস্থা রাখিস। এদিক ওদিক ঘোড়ার জন্য।
অনাদি বললো তোকে চিন্তা করতে হবে না।
বাসু মিত্রার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
-আমাকে একেবারে জালিয়ে পুরিয়ে মারছে।
-হ্যাঁ বলেছে।
অনাদিকে বললাম, চিকনার খবর কি।
-তোর বাড়িতে বসিয়ে এসেছি, বলেছি আমি না যাওয়া পযর্ন্ত কোথাও বেরোবি না।
অনাদিকে বললাম আমি চিকনার জন্য একটা ব্যবস্থা ভেবে রেখেছি, তুই বল ঠিক না ভুল, মিত্রাকে বাসুকেও বললাম আমাকে এ্যাটাক করিস। ভুল হলে।
-আমি একটা মিনি রাইস মিলের কথা ভাবছি। এই মুহূর্তে চিকনা এখন আমাদের গ্রাম, পাসের গ্রাম থেকে ধান কিনবে কিছু নিজে চাল তৈরি করবে, বাকিটা ধান রাইস মিলে বিক্রি করবে। আমি মিত্রা চিকনা থাকবো এই ব্যবসায়। চিকনার চল্লিশ ভাগ আমার তিরিশ মিত্রার তিরিশ, তারপর যখন দেখবো একটু দাঁড়িয়েছে। রাইস মিল বানাবো, আমাদের ওখানে পঞ্চাশ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো রাইস মিল নেই।
-জায়গা। অনাদি বললো।
-কেনো আমার বাড়িটা এখন কাজে লাগাক। অতো বড়ো বাড়ি খালি পরে রয়েছে।
-স্যার রাজি হবে।
-সে আমি বুঝিয়ে বলবো।
-আর আমার ভাগের জমি জমা আমি বাসন্তীমাকে দিয়ে দেবো, ওটা নিয়ে আমার একটা প্ল্যান আছে, আমি ওখানে যাই গিয়ে বড়দের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবো।
বাসু আমার দিকে বিস্ময় ভরা চোখে তাকালো।
-তুই ওখানে আর যাবি না।
-কেনো যাবো না।
-তাহলে সব দিয়ে দিবি বলছিস।
-ওঃ এই বুদ্ধি নিয়ে তুই কি করে ব্যবসা করিস।
মিত্রা হাসলো।
-চিকনার পয়সা কোথায়।
-তোকে কি পয়সার কথা বললাম।
-না, ওর চল্লিশ ভাগ মানে ওকে শেয়ারের চল্লিশ পার্সেন্ট দিতে হবে তো।
-কেনো, আমরা শেয়ারের ষাট ভাগ দিচ্ছি, কাজ তো আমরা কোরবো না, ও করবে, তার জন্য ও একটা মাসে মাসে মাইনে পাবে, তাছাড়া লভ্যাংশ ও নেবে না, যতোক্ষণ পযর্ন্ত ওর চল্লিশভাগ কোম্পানীতে জমা না পরছে।
-তুই এতো ভাবিস।
-ভাবতে হয়। আর একটা কথা শোন মনে পরে গেলো, অমলের কাছ থেকে তুই সাবধানে থাকিস।
-কেনো।
-মালটা তোর রাইভাল হয়ে গেছে।
-তুই জানলি কি করে।
-তুই পার্টি করিস কেনো, চাষ কর।
-বলনা বল, তোর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়, তাই তো তুই সকলের গুরু।
-গ্যাস খাওয়াস না।
-সত্যি বলছি অনি, আমিও সেরকম বুঝছি তাই তোকে বলছি।
-কি রকম।
-ও ঠিক আগের মতো বিহেভ করছে না।
-কেনো জানিস।
-বল।
-তোর কিছু হলে অনি বেক করবে, প্রয়োজনে তোকে একলাফে অনেক ওপরেও তুলে দিতে পারে, অমল সেটা জেনে ফেলেছে।
-সত্যি বলছি অনি এতোটা ভাবি নি।
-তুই ভাবিস নি, আমি ভাবি। তোকে দিয়ে আমি একটা কাজ করাবো, যেটা কামিং ইলেকশনে আমি কাজে লাগাবো, হয়তো তোকে এমএলএ বানাতেও পারি।
-যাঃ কি বলছিস।
-যা বলছি এখানে বলছি ওখানে কিছু বলবো না। তুই খালি তোর কমিউনিকেশন বাড়িয়ে যা, এমন কোনো কাজ করবি না, যাতে ব্যাড রিপার্কেসন হয়। বাসু কথাটা যেন পাঁচ কান না হয়।
-তুই বিশ্বাস করতে পারিস আমি দিবাকর হবো না।
মিত্রা হো হো করে হেসে ফেললো।
-তোদের বাজারে, তিনকাঠা মতো জায়গা পাওয়া যাবে।
-আছে। একটু বেশি দাম পরবে।
-কতো।
-লাখ চারেক টাকা।
-কাদের জায়গা।
-সুতনু বেরা আছে না, আমাদের পাশের গ্রামের, তার।
-তুই একটু কথা বলে রাখ। জায়গাটা আমার দরকার।
-ঠিক আছে, প্রয়োজন পরলে, কিছুটাকা হাতে গুঁজে ধরে রাখ।
-কি করবি।
-সব বলে দিলে হয়। ওখানে গিয়ে বলবো। চিকনার ব্যাপারটা ফাইন্যাল কর।
-ওখানে যাই কথা বলি, কাল তোকে জানাবো।
-আমাকে না পাস মিত্রার ফোনে জানাস।
-কিরে মিত্রা, তোর কি মত বল।
-ভালোই হবে মাসে একবার করে যাওয়া যাবে, তুই তো এমনি যাবি না।
-যার যা ধান্দা, ওটা হলে তুই আর চিকনা কন্ট্রোল করবি।
-অনাদি একটা থাকার ব্যবস্থা করো, বাথরুম আগে।
-কোনো চিন্তা নেই ম্যাডাম, আপনি আসুন দেখবেন বাথরুম রেডি।
আমি দেয়াল আলমাড়ি থেকে ব্যাগটা বার করলাম, দেখলাম, বেশি পয়সা নেই। মিত্রাকে বললাম নোট দে।
-আমার পার্স নিচে, বড়মার ঘরে।
-যা নিয়ে আয়। উঠতে পারবি তো।
-পারবো।
মিত্রা নিচে গিয়ে ওর পার্স নিয়ে এলো। কতো নিবি।
-হাজার পনেরো দে।
-অতো নেই।
-কতো আছে।
-বারো।
-তাই দে।
আমি অনাদির হাতে সতেরো হাজার দিলাম। কাজ চালা তারপর আমি যাচ্ছি।
-থাক না, তোকে চিন্তা করতে হবে না।
-আরে রাখ, আমি দুপুরে এক ফাঁকে বেরিয়ে তুলে আনবো।
ওরা খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলো।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
বুড়ীমাসি চলে গেছে, ছোটমা ওবাড়ি গেছে, বড়মা বললো, পাঁচ-ছদিন যায়নি, ফেরার পথে ব্যাংক হয়ে আসবে।
-কখন ফিরবে।
-খাওয়ার আগে ফিরবে বলেছে। তুই এক কাজ কর, মিত্রার জন্য এটা নিয়ে যা।
-কি।
-ভেজিটেবিল স্টু আছে।
-এটা কেনো।
-কথা বলিস না।
-দাও। দাদারা বেড়িয়ে গেছে।
-হ্যাঁ। আর শোন স্টুটা খাইয়ে ওকে স্নান করতে বল, তেল গরম করে দিচ্ছি।
-ঠিক আছে।
স্টুয়ের বাটি নিয়ে ওপরে এলাম।
-এটা কি করে।
-ভেজিটেবিল স্টু, ডাক্তারের হুকুম। তারপর তেল গরম হচ্ছে, স্নান। দুপুরে খেয়ে দেয়ে ঘুম।
মিত্রার চোখ দুটো ভারি হয়ে এলো।
-আবার কি হলো।
-না। কিছু না।
-নে খেয়ে নে।
-তুই একটু খা।
-এক চামচ।
মিত্রার চোখ দুটো চিক চিক করে উঠলো। ও আমাকে এক চামচ নিয়ে খাইয়ে দিলো।
-দারুণ খেতে রে। নিজে একচামচ খেলো।
-আর একবার নে।
-না।
-নে না।
-আর একবার, থার্ড রিকোয়েস্ট বড়মাকে ডাকবো।
-ঠিক আছে আর বলবো না।
আমি নিচ থেকে মিত্রার জামা কাপড় নিয়ে এলাম, প্যান্টিটা কাপরের ভেতরে নিয়ে এলাম, ভুললাম না। বড়মা রান্নাঘর থেকে বললো, তেল গরম করবো?
-দাঁড়াও খাওয়া হোক।
আমি ওপরে গেলাম।
-কিরে খাওয়া হয়েছে?
-তুই কাপড় নিয়ে এলি!
-কে নিয়ে আসবে! কেউ নেই। আমি, তুই বড়মা। সবাই কাজে বেরিয়েছে।
-কি মজা।
-তার মানে!
-আমি তুই ওপরে, বড়মা নিচে।
-বুঝেছি, আনন্দ রাখ। বড়মা তেল গরম করেছে, নিয়ে আসছি, স্নান কর।
আমি মিত্রার কাছ থেকে বাটিটা নিয়ে নিচে চলে এলাম। রান্নাঘরের বেসিনে রেখে বললাম, তেল গরম করেছো।
-একটু দাঁড়া।
বড়মা ধোঁকা তৈরি করছে, আমি একটা ধোঁকা ভাজা তুলে খেয়ে নিলাম।
-নিজে খেলি ওর জন্য নিয়ে যা।
-ছাড়ো তো, খেলে শরীর খারাপ করবে।
-কি আহাম্মক রে তুই।
-ঠিক আছে দাও।
বড়মা একটা থালার ওপর গরম তেলের বাটি বসিয়ে দিলো
-আজকে বেশ ঝাঁজ বেরোচ্ছে, তুমি কি রসুন দিয়েছো।
-হ্যাঁ।
ওপরে চলে এলাম। মিত্রা মাথা নীচু করে বসে আছে।
-কিরে কি চিন্তা করছিস।
-কিছু না।
আমি টেবিলের ওপর থালাটা রেখে, ওকে ধোঁকার বড়া দিলাম।
-কে দিলো রে।
-কে দেবে, বড়মা।
-তুই নিয়ে এলি না বড়মা দিলো।
-আমি আনতে চাই নি, আমাকে আহাম্মক বললো, নিয়ে এলাম।
মিত্রা একটা গোটা খেলো, আর একটা হাফ কামড়িয়ে আমাকে দিলো। আমি খেয়ে ফেললাম।
-নে রেডি হ। তৈল মর্দন শুরু হবে।
-দরজা বন্ধ কর।
-কেনো। কেউ তো নেই। আমি দরজা বন্ধ করলাম।
মিত্রা নীচে নেমে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো
-এখন শরীরটা বেশ ঝরঝরে লাগছে।
-এই কদিন একটু ঠিক করে থাক। কালকে খুব ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি।
-তোর চোখমুখ দেখে বুঝেছিলাম।
-তাহলে কেনো অবুঝপানা করিস।
-তোকে দেখলে আমি ঠিক থাকতে পারিনা।
-ঠিক থাকতে হবে।
-তুই আছিস আমার আর ভয় নেই, তোর কাছে আমাকে কনফেস করতে হবে।
-ঠিক আছে, সময় হলে করিস।
মিত্রা আমার ঠোঁটে চুমু খেলো।
-তেল ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
-যাক, আমার এখন যা খুশি তাই করবো।
-কর।
-তুই পাজামা পাঞ্জাবী খুলে টাওয়েল পর।
-কেউ চলে এলে।
-আসুক।
-আচ্ছা।
আমি পাজামা পাঞ্জাবী খুলে টাওয়েল পরলাম। মিত্রা কাপড় ব্লাউজ খুললো। আমি ওকে টেবিলটা ধরে পেছন ফিরে দাঁড়াতে বললাম, ভালো করে ওর পিঠে শিরদাঁড়ায় গরম তেল মালিশ করলাম, তারপর ওর পাদুটোয় তেল মাখালাম, মাঝে মাঝে ওর পুশিতে হাত চলে যাচ্ছে।
-আমার কিন্তু শির শির করছে।
আমি কোনো কথা বললাম না। নিজের কাজ করে চলেছি। উঠে দাঁড়ালাম, ঘুরে দাঁড়া। ও ঘুড়ে দাঁড়ালো, আমি তেল নিয়ে ওর বুকে পিঠে ভালো করে ডলছি।
-বুবুন তুই ইচ্ছে করে নিপিলে হাত দিচ্ছিস।
আমি চুপচাপ। ও আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওর বুকে তেল ঘষছি। মাঝে মাঝে যে ওর নিপিলটা ধরে নাড়াচ্ছি না তা নয়, তবু খুব গম্ভীর হয়ে কাজ করছি। ওর কাঁধে হাত দিলাম, গলায় তেল মাখাচ্ছি।
তবে রে। দিল আমার টাওয়েলে টান। খুলে গেলো। ও হাঁটু মুরে আমার পায়ের কাছে নীলডাউন হয়ে বসলো, আমার নুনুতে হাত দিলো। চামড়াটা সরিয়ে দিলো।
-শয়তান, আমার ভেঁজে না। এটা কি। এটা কি আমার।
আমি হাসছি।
-ওঠ।
-না উঠবো না।
ও টাওয়েলটা টেনে নিয়ে আমার নুনুর মুন্ডিটা মুছে নিয়ে একটা চুমু খেলো, তারপর মুখে পুরে দিলো, আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছে। আমি ইশারায় বললাম, ছাড়, বড়মা এসে পরলে একটা কেলেঙ্কারি হবে।
ও মাথা দোলাচ্ছে, আমার বিচিতে হাত দিয়েছে।
আমি ওকে জোর করে তুলে ধরে ওর ঠোঁটে চুমু খেলাম।
-তোর শরীর খারাপ।
-একবার, প্লিজ একবার।
-না। শরীর ঠিক হোক তারপর।
-প্লিজ। ও আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো।
আমি ওর বুকে হাত রেখেছি। ওর সারা গায়ে রসুন তেলের গন্ধ, পিছলে পিছলে যাচ্ছে।
-আমার গায়ে রসুন তেলের গন্ধ হয়ে গেলো।
-থাক বড়মাকে বলবো বেশি হয়ে গেছিল তুইও মেখেছিস।
-হ্যাঁ, ওরা তো ঝিনুক মুখে দিয়ে চলে না। আমাদের মতো কত হাজার বার করেছে, তা জানিস।
মিত্রা হাসলো।
-তোকে নিয়ে পারা যাবে না।
মিত্রাকে টেবিলের ওপর বসালাম, আমি হাঁটু মুরে নীচে বসলাম।
-পা দুটে ফাঁক কর।
-তুই মুখ দিবি।
-না চুষবো।
আমি ওর পুশিতে মুখ দিলাম, তেল জব জব করছে, আমি মাখিয়েছি, বেশ কিছুক্ষণের মধ্যেই জিভের খেলায় ওকে পাগল করে দিলাম, বুবুন আর না এবার কর।
আমি উঠে দাঁড়ালাম, আমারটা তখন তাগড়াই ঘোঁড়ার মতো, আমি ওকে কাছে টেনে নিলাম, একবারে মাপে মাপে, টেবিলের ওপর দুহাত রাখলাম, ও দুটো পা আমার দুহাতের ওপর দিয়ে দুপাশে রাখলো, আমি বললাম, আমার ঘাড়ে হাত দিয়ে পেছন দিকে ঝুলে পর, ও তাই করলো, ওর পুশিটা হাঁ হয়ে গেছে, আমার নুনুকে যেন ডাকছে, আয় আয়। আমি নুনুটা ধরে চামড়াটা টেনে সরালাম, আস্তে করে ওর পুশির মুখে রেখে দু তিনবার ওপর নীচ করলাম, ও দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরেছে। আমি চাপ দিলাম, টেবিল নড়ে উঠলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসলাম। ওর চোখে সেক্সের প্রবল ইচ্ছা। আমি আর একবার চাপ দিলাম, পুরোটা চলে গেলো, আমি কোমরটা ধরে একটু কাছে টেনে নিলাম, মিত্রা আমার গলা ছেড়ে দিয়ে আমাকে জাপ্টে ধরলো।
-কিরে লাগলো।
-না।
-আজ ভেতরটা ভীষণ জ্বালা করছে রে।
-ওই যে রসুন তেল।
-না।
-তাহলে।
-হবে মনে হয়। তুই কর দাঁড়িয়ে রইলি কেনো।
-জাপ্টে ধরলে করবো কি করে।
ও হাত ছেড়ে দিয়ে পেছন দিকে হাতটা দিয়ে হেলে পরলো।
-টেবিলটা এমন করে রেখেছিস হাত রাখার জায়গা পাচ্ছি না।
-আমি কি করে জানবো তোর উঠল বাই তো কটক যাই।
-নে কর।
আমি করতে আরম্ভ করলাম। দিনের বেলায় কোনোদিন করিনি, পরিষ্কার সব দেখতে পাচ্ছি, আমারটা পুরোটা ভেতরে যাচ্ছে আর বেরোচ্ছে। মিত্রাও দেখতে পাচ্ছে, আমার গোঁতানোর চোটে মিত্রার মাই দুলছে। আমি করে যাচ্ছি, মাঝে মাঝে ওর মাইতে হাত দিয়ে একটু টিপে দিচ্ছি। তেল বদবদে মাই হরকে হরকে যাচ্ছে।
-বুবুন হয়ে যাবে।
-হোক।
-তোর হবে না।
-দাঁড়া না।
-জোরে কর।
ও পাদুটে আমার কোমর পেঁচিয়ে ধরলো। আমি নীচু হয়ে ওর ঠোঁট ছোঁয়ার চেষ্টা করলাম, ও মুখটা এগিয়ে নিয়ে এসে চুমু খেলো, তারপর হঠাত আমাকে জাপ্টে ধরে কোমর দোলাতে আরম্ভ করলো, আমার নুনুটাকে ওর পুশি দিয়ে এমনভাবে চেপে চেপে ধরলো, আমি রাখতে পারলাম না
-কি রে, তোরও বেরোচ্ছে আমারও বেরোচ্ছে।
আমি চুপচাপ।
মিত্রা আস্তে আস্তে কোমর দোলানো বন্ধ করলো। তারপর আমার বুক থেক মুখ তুলে আমাকে চুমু খেলো।
-বার করবি না। এই ভাবে আমায় বাথরুমে নিয়ে চল।
-তুই তো দেড় কুইন্টালের বস্তা।
-তা হোক।
অগত্যা আমি ওইভাবে ওকে কোলে তুলে নিয়ে গেলাম। ও আমার গলা জড়িয়ে চুমু খাচ্ছে। বাথরুমে গিয়ে বললাম নাম।
-দাঁড়া না একটু।
-আমার দম নেই।
ও নিচে নেমে দাঁড়ালো, আমার নুনু ওর পুশি থেকে বেরিয়ে এসেছে।
-কি ছোটো হয়ে গেছে।
আমি হাসলাম।
-আজ আর একটা শখ মিটলো।
আমি ওর দিকে বিস্ময় ভরা চোখে তাকালাম।
-সেদিন দিবাকরের টা দেখে ছিলাম, করা হয় নি। আজ করলাম।
-তোর পেটে পেটে এত বুদ্ধি।
ও আমার ঠোঁট কামড়িয়ে ধরলো।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
ছোটমা এলো একটু দেরি করে, আমরা ছোটমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
-কিরে তোরা খেয়ে নিস নি কেনো।
আমি ছোটমার দিকে তাকালাম, মুখের সেই হাসি হাসি ভাবটা কোথাও উধাও হয়ে গেছে, কেমন যেন ফ্যাকাশে।
-কি হয়েছে তোমার।
-কই কিছু না তো।
-ওটা মুখে বলছো, তোমার মুখ অন্য কথা বলছে।
-তোর সব সময়…..।
চুপ করে গেলাম। বড়মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে, মিত্রা আমার কথা বোঝার চেষ্টা করছে, ওর মুখ দেখে বুঝতে পারলাম।
-ছোটো হাত মুখ ধুয়ে নে, ভাত বাড়ি। বড়মা বললেন।
-হ্যাঁ দিদি আমি এখুনি রেডি হয়ে নিচ্ছি।
সবাই একসঙ্গে টেবিলে বসলাম। বড়মা খাবার বেরে দিলেন, ছোটমা বড়মাকে সাহায্য করছেন। খাওয়া শুরু হলো, কিন্তু নিস্তব্ধে, ব্যাপারটা আমার ভালো লাগলো না, কোথায় যেন তাল কেটে গেছে মনে হচ্ছে।
-ও বাড়িতে কেনো গেছিলে।
-যাবো না। চার পাঁচদিন যাই নি, ঘরদোর একটু পরিষ্কার করার দরকার আছে তো।
-ফিরে আসার পর তোমার মুখটা গম্ভীর দেখাচ্ছে, কিছু হয়েছে।
-না।
-তুমিও কি আমার মতো।
ছোটোমা আমার দিকে তাকালো। চোখের ভাষা কিছু বলতে চায়। কিন্তু বলতে পারছে না।
-জানো ছোটোমা আমার জীবনে কতগুলো মিশন আছে। বলতে পারো স্বপ্ন….
-বল।
-যেমন প্রথম হচ্ছে, আমার যারা খুব কাছের মানুষ, আমি তাদের হাসি খুশি দেখতে চাই, জানি তাদেরও অনেক কষ্ট আছে, হয়তো সব কষ্টের সমাধান আমি করতে পারবো না, তবে আশি ভাগ চেষ্টা করলে পারবো। তোমার সমস্যা তোমায় বলতে হবে না, আমি জেনে নেবো।
-অনি।
-আমি ঠিক বলছি ছোটোমা।
-না এ ভুল তুই করবি না, তাহলে আমার থেকে বড় কষ্ট আর কেউ পাবে না।
আমি ছোটমার দিকে তাকালাম
-আর একটা কথা আমার কাছের মানুষের কাজে ভুল হলে সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু কেউ যদি অপমান করে থাকে, তাহলে বুঝবে তাকে ওই মুহূর্তে জ্যান্ত পুঁতে ফেলবো। সেই সময় অনি ভীষণ হিংস্র।
-তুই কেনো এই সব চিন্তা করছিস, আমার কিছু হয় নি।
-একটা গল্প বলি এই প্রসঙ্গে, ভাল করে শোনো। তখন ক্লাস টেনে পড়ি, কৈশোর যৌবনের সন্ধিক্ষণে, চোখে অনেক স্বপ্ন, ডাক্তার হব বদ্যি হবো। প্রথম ব্যাঙ কাটা হবে কলেজে। আগের দিন রাতে সারারাত ঘুমোলাম না, আমার কোনো বায়োলজিক্যাল বাক্স ছিলো না, অনাদির ছিলো আর বাসুর ছিলো। উনা মাস্টার সাইন্সের টিচার, টিফিনের পর ব্যাঙ কাটা হবে, চিকনা ব্যাঙ ধরে আনল পচা পুকুর থেকে। একটা কলাগাছের চোকলায় ব্যাঙ রেখে, পিন ফুটিয়ে হাত পা বেঁধে তাকে কাটা হলো। কলেজে একটা মাইক্রোস্ক্রোপ ছিল তাকে আনা হলো, স্লাইডে ব্যাঙের কি সব তুলে উনা মাস্টার সবাইকে দেখাচ্ছেন, কেউ ঠিক বলছে কেউ ভুল বলছে, আমাকেও ডাকলেন, আমি গেলাম। সত্যি বলতে কি ছোটোমা, আমি শুনে শুনে একটা কিছু বলতে পারতাম, কিন্তু আমি সত্যিটা বললাম, সবাই যা বললো, আমি তার ঠিক উল্টোটা বললাম। বললাম আমি হিজিবিজি ছাড়া কিছু দেখতে পাচ্ছিনা, উনা মাস্টার গুনে গুনে দশটা বেতের বাড়ি মারলো। কাঁদিনি কেনোনা আমার মনের কথা বোঝার মতো উনা মাস্টারের মানসিকতা ছিল না, ল্যাবরেটরি থেকে বেরিয়ে এসে উনা মাস্টারকে প্রচুর গালাগাল দিলাম, মনে মনে। চলে গেলাম পীরসাহেবের থানে, ওখানে অনেকক্ষণ বসে থাকলাম, মনে মনে প্রার্থনা করলাম, সত্যি তুমি যদি থাকো, তুমি যদি সত্যি কেউ হও, তাহলে আমার চোখটাকে মাইকোস্ক্রোপ বানিয়ে দাও, আমি মানুষ চিনতে চাই, আর মানুষের ভেতরটা যেন দেখতে পাই, সত্যি বলতে কি কিছুক্ষণ পর হাওয়ায় ভেসে এলো একটা কথা, ওরে এতে অনেক বেশি কষ্ট, পারবি সহ্য করতে, তখন ছোটো ছিলাম, এখন হলে বলতাম না, তখন কিন্তু আমি বলে ফেলছিলাম, হোক কষ্ট তবু তুমি আমায় এই শক্তি দাও।
সবাই চুপচাপ, বড়মা আমার মাথায় হাত রাখলেন, মিত্রা ছোটমা ভাতের থালা থেকে হাত তুলে আমার মুখের দিকে চেয়ে রয়েছে, আমি নিস্তব্ধে খেয়ে চলেছি। বুঝতে পারছি আমার চোখে মুখের চেহারায় পরিবর্তন ঘটেছে।
-পাগল। বড়মা বললেন।
কিছুক্ষণ সবাই চুপচাপ, যে যার নিজের মতো খাচ্ছে।
-শোন অনি তুই আজ সকাল বেলা যেভাবে ওই মন্ত্রীটার সাথে কথা বললি, তোর দাদা আজ তিরিশ বছরে ওইভাবে কারুর সঙ্গে কথা বলেছে? এটা হচ্ছে উইল পাওয়ার, সবার থাকে না। পৃথিবীতে কজন মানুষের এরকমটা থাকে বল। বড়মা বললেন।
আমি বড়মার দিকে তাকালাম।
-একটা কথা তোমায় বলি বড়মা, বলতে পারো আবার রিপিট করছি, তোমাদের পাঁচজনের কাছে আমি আমার জীবনের না পাওয়া অনেক জিনিস পেয়েছি, যা মনা মাস্টার, কাকীমা সারাজীবনে দিতে পারেনি, কিন্তু তাদের দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। আমার বাবারও কম ছিলো না।
-জানি।
-তোমাদের কাউকে কেউ যদি কোনো দিন অপমানসূচক কথা বলে থাকে, আর আমি আমার উপলব্ধি দিয়ে যদি বুঝতে পারি, সে ইচ্ছে করে এটা করেছে তার স্বার্থ সিদ্ধির জন্য, তাহলে মনে রাখবে, আমার কাছে তার শাস্তি, নৃশংস মৃত্যু, আমার হাত থেকে সে রেহাই পাবে না। তবে আমি তাকে নিজে হাতে কোনো দিন মারবো না।
-অনি!
ছোটমা এঁটো হাতে আমার কাছে উঠে এলেন। আমার গলা জড়িয়ে ধরলেন, বাঁহাতে আমার থুতনিটা ধরে মুখটা নিজের দিকে ঘোরালেন
-শোন বাবা, তুই পাগলামো করিস না, সত্যি বলছি, আমার, তোর মল্লিকদার কিছু হয় নি। পারিবারিক সমস্যা সকলের থাকে, আমারও আছে।
-আমি তোমার কাছ থেকে কিছু জানতে চাই নি। প্রয়োজন বোধ করলে জেনে নেবো।
পরিবেশ থম থমে, আমি ছোটমাকে বললাম, ভাত দাও।
ছোটমা আমার পাতে বাঁহাত দিয়ে দুহাতা ভাত দিলেন।
-একটু মাছের ঝোল নে।
-দাও।
-মিত্রা নিবি।
-দাও একটু।
ছোটমা মিত্রাকে দিলেন। আমি বড়মার পাত থেকে একটা চিংড়িমাছ তুলে নিলাম, মিত্রা দেখলো।
-কিরে তুই একলা একলা।
-তুই খাবি। তারপর সারারাত পায়খানা করবি।
-শয়তান। আবার জিজ্ঞাসা করছিস, লজ্জা করে না।
-বড়মার তাহলে খাওয়া হবে না।
-তুই খেলি কেনো।
-তুই ছোটোর পাত থেকে নে। দুজনে ভাগাভাগি করি। দেখ বাটিতে সব ফুরুত।
-তোর মতো রাক্ষস থাকলে।
-আচ্ছা দাঁড়া দাঁড়া আমি দিচ্ছি।
-বড়মা একটা চিংড়িমাছ মিত্রার পাতে তুলে দিলো।
-তোর থেকে আমারটা সাইজে বড়।
-তুই মালকিন, বড় হওয়া স্বাভাবিক।
-মালকিন মালকিন করবিনা বলে দিচ্ছি।
হাসলাম। খাওয়া চলছে।
-জানো ছোটমা, তোমাদের আমার মানুষ দেখার কতকগুলো গল্প বলি, গল্পগুলো আমার বাস্তবে দেখা। তোমার এর নির্যাসটা বলবে, সবাইকে সাতদিন সময় দিলাম। তারপর আমার চিন্তা-ভাবনাটা তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
-বল।
একদিন অফিসে ঢুকলাম একটু দেরি করে, তখন আমি গণিকাপল্লীর বাসিন্দা, সারারাত ঘুম হয় না, ভোরের দিকে একটু ঘুমোই, তাছাড়া সারারাতের ফাইফরমাশ তো আছেই। সেদিন মনে হয় দাদার মন মেজাজাটা ভালো ছিল না। আমায় খুব বকাবকি করলো, তারপর বললো, এক কাজ কর, নিকোপার্কে এক ছোটদের কার্নিভাল চলছে, একজন ফটোগ্রাফার গেছে, তুই লেখাটা রেডি করে দে। আমি অফিসের গাড়ি জীবনে খুব কম ব্যবহার করেছি। সেদিনও বাসে করে চলে গেলাম, সারাদিন পার্কে বাচ্চাদের সঙ্গে থাকলাম, শেষ হলো প্রায় রাত আটটা। দাদাকে ফোন করে বললাম, লেখাটা কি আজকেই লাগবে, দাদা বললো কেনো, আমি বললাম, প্রোগ্রাম এই শেষ হলো বেরোচ্ছি, তাহলে এক কাজ কর কাল সকালে দে, সানডে চিলড্রেন্স পেজে দিয়ে দেবো।
আর বাসে উঠতে ইচ্ছে করলো না, ওখান থেকে হাঁটতে আরম্ভ করলাম, চিংড়িহাটার মুখে যখন এসে পরেছি, দেখি একটা পাগলী তাড়াতাড়ি করে রাস্তা পার হচ্ছে, চোখ মুখটা কেমন ভয় ভয়। আমি থমকে দাঁড়ালাম, ওমা দেখি, ওর পেছন পেছন একটা পাগল, হাসতে হাসতে আসছে, বেশ ধীর পায়ে রাস্তা পার হলো, আমার খুব উৎসুক হলো, আমি ওদের পেছন পেছন গেলাম, রাস্তা পার হয়ে একটা কালভার্ট পরে, পাগলীটা দেখি ওই কালভার্টের পাশে এসে শুয়ে পরলো, একটু অন্ধকার অন্ধকার, রাস্তার আলোয় যতটা আলো আসছে। ঠিক ততটা আলো চারদিকে ছড়িয়ে পরেছে। আমি একটু দূরত্বে দাঁড়িয়ে ওদের লক্ষ্য করছি। পাগলটা পাগলির পাশে এসে বসলো, এ ওর মুখ দেখে, ও এর মুখ দেখে, বেশ কিছুক্ষণ পর পাগলিটা উঠে দাঁড়ালো, ছুটে পালাতে চাইলো, পাগলটা ওকে ধরে ফেলে আবার পাশে বসালো, গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো, বিশ্বাস করবে না, আমি প্রায় একঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ওরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হলো। বাসে আস্তে আস্তে অনেক ভাবলাম, গণিকাপল্লীতে ঢুকে সঙ্গম দেখলাম।
বিশ্বাস করবে না ছোটমা দুটোই সঙ্গম, একটার মধ্যে প্রাণ খুঁজে পেলাম, একটার মধ্যে পেলাম না। সেদিন সারারাত ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কেটে গেছিলো। ভোররাতে কি খেয়াল হলো কার্নিভালের লেখাটা লিখে ফেললাম। লেখাটা বেরোবার পর দাদা আমাকে ডেকে একটা ফাউন্টেন পেন দিয়েছিলো। আমি পেনটাতে এখনো লিখি নি রেখে দিয়েছি।
ওরা সবাই আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
ছোটমার গালদুটো ফোলা।
-ভাতটা গিলে ফেলো। বিষম লেগে যেতে পারে।
মিত্রা হেসে ফেললো, ছোটমা গোঁত করে ভাতটা গিলে ফেললো।
-দ্বিতীয়টা শুনবে।
-বল। বড়মা বললো।
-শিয়ালদা ক্যাফের অপজিটে।
মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো, ছোটমা হাসলো, মিত্রার দিকে তাকাবার পর, যখন মিত্রা ইশারায় কালকের কথাটা স্মরণ করিয়ে দিলো।
-তোরা হাসছিস কেনো।
-কালকে, মোগলাই পরাটা।
বড়মা বললেন ও হরি।
-আচ্ছা তোর মাথায় কি কুবুদ্ধি ছাড়া কিছু নেই।
-শুনলেই না ওমনি বলে দিলে কুবুদ্ধি। দাও শেষ চিংড়িটা।
-না একেবারে দেবে না, বড়মা ওটা তুমি খাবে।
-খাক না ওরকম করিস কেনো।
-সব সময় তুমি…….।
-ঠিক আছে মল্লিককে বলবো কালকে বেশি করে আনতে। বল তোর গল্পটা।
-সেদিন শ্যামবাজার হয়ে অফিসে আসছি। শেয়লাদার জ্যামে বাসটা দাঁড়িয়ে, এখনো বুঝলে বড়মা আমার একটা বদ অভ্যাস আছে, আমি জানলার ধার ছাড়া বাসে বসি না, তার থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাবো সে ভালো।
-এটা ভালো অভ্যেস বেশ রাস্তা দেখতে দেখতে যাওয়া যায় না, তাই বল।
-ওপাশে তাকিয়ে বলো।
-মিথ্যুক তুই কোনোদিন আমাকে জানলার ধারে বসতে দিস নি। কতো বোঁটকা গন্ধওয়ালা লোক পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, কি বলেছে জানো, তুই তো সেন্ট মেখেছিস লোকটা একটু শুঁকুক না, তাহলে তোর সেন্টেরও মহিমা ছড়িয়ে পরবে।
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
-বাসটা থামতেই, মুখটা বার করে দেখলাম, জ্যাম কতটা, দেখলাম পুলের ওপর পযর্ন্ত, তারপরি রাস্তায় চোখ চলে গেলো। দেখি একটা পাগল বসে আছে।
-আবার পাগল।
-ভেটকি কোথাকার, আগে শোন, তোরতো ঘটে বুদ্ধি নেই, কি বলছি তার উত্তর দেওয়ার, অন্তঃত চুপ করে শোন।
-তা বলে তুই ভেটকি বলবি। ছোটমা বললো।
-কেনো চুমা দেবো।
সবাই হেসে উঠলো, বড়মা আমার কানটা ধরে নেড়ে দিলেন।
-তুমি ওকে মারতে পারো না, খালি হাত বোলাও।
বড়মা পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বললেন, কত অভিজ্ঞতা বলতো, এই টুকু বয়সে।
-হুঁ।
-রাস্তায় অনেকে সিগারেট খেতে খেতে যাচ্ছে, বাস এসে গেছে, সিগারেটটা ফেলে দিয়ে ছুটে বাসে উঠে পরেনা।
-হ্যাঁ।
-সেরকম একটা সিগারেট টানছিলো পাগলটা। ফুটপাথের ধাপিতে একটা ল্যাম্প পোস্টে হেলান দিয়ে। তুমি যদি তার সিগারেট খাওয়াটা দেখতে তাহলে বুঝতে যেন কোন রাজবাড়ির ছোটবাবু। ঠেংয়ের ওপর ঠ্যাং তুলে, যেন সেটা সিগারেট নয় পাইপ, আমি তাকিয়ে আছি। হঠাত দেখি কোথা থেকে একটা পাগলি এসে হাজির, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলো, তারপর পাগলটার কাঁধে একটা টোকা দিয়ে সিগারেটটা চাইলো, পাগলটা একবার পাগলিটার দিকে তাকালো, পাগলিটার চাইবার চাহুনি, আর পাগলটার চাহুনি তুমি যদি দেখতে, আমি ঠিক তোমায় ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না, টোটাল ব্যাপারটা অনুভূতি সাপেক্ষ, তারপর পাগলটা আস্তে আস্তে উঠে চলে গেলো, পাগলিটা ওর পেছন পেছন হাঁটলো। বাসটা ছেড়ে দিলো। বাকিটা দেখতে পেলাম না।
ছোটমা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
-দুটো খন্ড চিত্র। কিন্তু একটু ভেবে দেখো, তোমাদের জীবন দর্শনের সঙ্গে অনেক কিছুর মিল খুঁজে পাবে।
বড়মা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন।
-কি দেখছো।
-তোকে।
-আমি কি সুন্দরী মেয়ে।
-না। পুরুষ। তোর চোখ দিয়ে সেই পাগল পাগলীকে দেখছি।
-সিনেমা শেষ। ঘড়ির দিকে একবার তাকাও। এরপর আর বলতে পারবে না। অনি তুই এখানে আসা ভুলে গেছিস।
-আর একটু বোস না।
-কেনো।
-তুই যে বললি আর একটা বলবি।
-সব একদিনে বললে হজম করতে পারবে না।
বড়মা আমার কানটা ধরলেন।
আমি উ করে উঠলাম।
-আমার কথা আমাকে ঘুরিয়ে বলা।
-আঃ কি আনন্দ, এবার জম্পেশ দিয়েছো বড়মা।
বড়মা কান ছাড়লেন।
-শোন শেষ গল্পটা বলছি।
-বল।
-দুরাত ঘুমোই নি, আজ তুমি ছোটো আর মিত্রা এক ঘরে, মল্লিকদা দাদা এক ঘরে, আর আমি একা দরজা লাগিয়ে রসুন তেল নাকে দিয়ে ভস ভস। ডোন্ট ডিস্টার্ব।
-শয়তান। মিত্রা চেয়ার ছেড়ে উঠে এলো।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
13-01-2022, 02:51 PM
মিত্রা এখন বেশ ভালো, আমি রেগুলার কিছুক্ষণের জন্য অফিসে যাই, ডাক্তারবাবু, সাতদিন সাতদিন করে প্রায় একমাস কাটিয়ে দিয়েছেন, মিত্রা বেশির ভাগ সময়টা এ বাড়িতেই আছে, মাঝে মাঝে বড়মা ছোটমাকে নিয়ে নিজের বাড়িতে কাটিয়ে আসছে, ওদের অবর্তমানে আমি দাদা মল্লিকদা রান্না করে খাচ্ছি। রান্না আমিই করেছি। দামিনী মাসীর ছেলে ভজুকে নিয়ে এসেছি এবাড়িতে কাজের জন্য। বড়মা ছোটমার অনেক কাজ ভজু করে দেয়, তবে ভজুর একটা বায়না, সে বাইরে শোবে না, তাই তাকে ওপরের বারান্দায় আমার ঘরের সামনে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। মিত্রা অফিসের কাজ এখন বুঝে ওঠার চেষ্টা করছে, আমার কাছে মাঝে মাঝে ক্লাস করছে। অনাদি চিকনার ব্যাপারে ফোন করেছিল, চিকনা মহাখুশী, সে কাজ শুরু করে দিয়েছে, বাড়িতে বাথরুম বানানো হয়েছে।
অফিসের অবস্থা এখন স্থিতিশীল, আমি সবসময় সবাইকে একটা চাপের মধ্যে রেখেছি। সবার সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ রাখার দরকার তা রেখেছি। এই একমাসে অফিসের আয় কিছুটা হলেও আমি বাড়িয়ে দিয়েছি। আপাতত অনি নামক বস্তুকে সবাই সমীহ কিংবা ভয় করতে শুরু করেছে।
আমার দেশের বাড়িতে যাওয়ার ডেট ফিক্সড হয়েছে, আগামীকাল। মিত্রা, ছোটমা, বড়মা বেশ কয়েকদিন হলো নিজের বাড়িতে গেছে। গুছিয়ে গাছিয়ে আজ রাতে ফিরবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমি ভজুকে সঙ্গে নিয়ে রান্নার কাজ শেষ করে ফেললাম, তারপর নিজেরা খেয়ে নিলাম বড়মা তিনবার ফোন করে ফেলেছে, কিরে কতদূর, তুইতো সবেতেই এক্সপার্ট।
আমি বড়মাকে বললাম, কেউ যখন ছিলনা তখন সব নিজে হাতে করতাম, বছরখানেক হলো সব ভুলে গেছিলাম, তোমাদের আর্শীবাদে আবার রপ্ত হলাম।
মিত্রার গলা পেলাম, বড়মা বলনা, শয়তান একা একা বেশ ভালো মন্দ খাচ্ছে, আমাদের জন্য রাতে যেন থাকে।
বড়মা আমাকে বললো, শুনতে পাচ্ছিস।
আমি বললাম এখন ছাড়, ভাতের হাঁড়ি উল্টেছি, কথা বলতে গেলে হাত পোড়াবো।
বড়মা বললো, ঠিক আছে ঠিক আছে রাখছি।
দাদা মল্লিকদা আগে আগে বেরিয়ে গেলো, আমি স্নান সেরে ভজুকে নিয়ে খেতে বসলাম, ভজুকে বললাম, দুপুরে খিদে পেলে, ফ্রিজ থেকে বার করে গরম করে নিয়ে খাবি।
ভজু এই কদিনে তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু ব্যাটা নিজের মনে নিজে থাকে। ওর কথাও ঠিক পরিষ্কার নয়। হাঁটা চলায় একটা এ্যাবনর্মালিটি আছে।
-কিরে ভজু আমরা না থাকলে দাদাদের চা তৈরি করে দিতে পারবি তো।
-আমি সব পারবো অনিদা, তুমি কিচ্ছু চিন্তা করো না।
আমি হাসলাম, ভজুও হাসলো।
এখন বাড়ির দায়িত্ব গেটে ছগনলাল, আর ভজু। তবে দুজনেই খুব সজাগ। মাছি গলতে পারে না।
আমি ওপরে এসে জামা-কাপড় পরলাম। রেডি হয়ে বেরোতে যাব, ফোনটা বেজে উঠলো। দেখলাম অদিতির নামটা ভেসে উঠেছে।
-হ্যালো।
-বলো অদিতি।
-কেমন আছ।
-ভালো।
-মিত্রাদি।
-ভালো আছে, তবে এখানে নেই।
-কোথায়।
-নিজের বাড়িতে।
-তাই। বড়মা ছোটমা।
-সবাইকে পাঠিয়ে দিয়েছি।
-তাহলে খাওয়া দাওয়া।
-রান্না করছি।
-তুমি।
-হ্যাঁ।
-তোমার এই গুণটাও আছে।
-ছিলো, মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিলো, এখন আবার একটু ঝালিয়ে নিচ্ছি।
-সত্যি অনিদা তুমি পারও বটে।
-তারপর তোমাদের খবর কি।
-ভালো। আজ তোমার প্রোগ্রাম কি।
-সেই ভাবে কিছু নেই। একবার অফিসে যাবো। তারপর এদিক ওদিক।
-দুপুরে একটু সময় দিতে পারবে।
-কখন বলো।
-আমি তোমায় তুলে নেবো।
-কোথায় দাঁড়াতে হবে।
-পার্ক স্ট্রীট।
-ঠিক আছে।
-আমি এশিয়াটিক সোসাইটির তলায় থাকবো। কটায় বলো।
-২ টে।
-আচ্ছা।
আমি অফিসে এলাম, নিউজরুমে ঢুকতেই, মল্লিকদা ডাকলেন। গিয়ে চেয়ারে বসলাম।
-ছোটো ফোন করেছিলো।
-কেনো।
-তোকে একবার ফোন করতে বলেছে।
-কেনো।
-কি করে জানবো।
-দেখো পিঁয়াজি করো না। ছোটো ফোন করলো আর তুমি জানবে না। এটা হয়।
-এই তো শুরু করে দিলি, তুই এখন মালিক, এসব কথা বললে লোকে কি ভাববে।
উঠে চলে এলাম। নিজের টেবিলে বসে, মিত্রাকে ফোন করলাম।
-বল।
-ছোটোমাকে দে।
-ওপরে।
-তুই কোথায়, পাতালে।
-এক থাপ্পর।
-আর মারিসনা সেদিন বড্ড লেগেছিলো।
মিত্রা খিল খিল করে হেসে উঠলো। ছোটোমা বলে চিল্লালো, শুনতে পাচ্ছি।
-তুই কি অফিসে।
-হ্যাঁ।
-কি করছিস।
-এখনো কিছু করছি না, আসতেই মল্লিকদা বললো, ছোটোমা ফোন করতে বলেছে তাই ফোন করছি।
-তোর আজকে হবে।
-কেনো রে আবার কি করলাম।
-কি করলি, দেখ না।
-তুই একটু হিন্টস দে।
-ধর।
-হ্যাঁরে তুই কোথায় রে। ছোটমার গলা।
-অফিসে।
-এরি মধ্যে ঢুকে পরেছিস।
-হ্যাঁ।
-কখন ফিরবি।
-বলতে পারবো না।
-তার মানে।
-আসি আমার ইচ্ছেয়, যাবো কাজের ইচ্ছেয়, কাজ শেষ হলেই যাবো।
-মাছের ঝোল কে রান্না করেছিলো।
-আমি।
-আমাদের জন্য রেখেছিস।
-পাঁচ-ছ পিস পরে আছে। ভজুকে বলেছি, খেয়ে নিস।
-তার মানে।
-দেখো ও রান্না তোমাদের মুখে রুচবে না, আমরা পুরুষরা চালিয়ে নেবো। তোমরা পারবে না। আসল কথা বলোতো। এর জন্য তুমি ফোন করতে বলো নি।
-তুই একবার আসবি।
-অবশ্যই না।
-কেনো।
-কাজ আছে। দুটো থেকে একজায়গায় মিটিং। কখন শেষ হবে জানি না।
-তাহলে তোকে বলা যাবে না।
-রাতে কথা হবে। বড়মা ঠিক আছে।
-ঠিক আছে কই রে মাথা খারাপ করে দিচ্ছে।
-কেনো।
-তার গতরে নাকি শুঁয়োপোকা পরে যাচ্ছে।
হো হো করে হেসে ফেললাম।
-রাখছি।
অমিতাভদার ঘরে গেলাম, দেখলাম চম্পকদা আর সুনীতদা বসে আছে। আমাকে দেখেই বললেন, আসুন ছোটো সাহেব।
আমি একটা চেয়ার নিয়ে বসলাম।
দাদাকে বললাম আমার কোনো কাজ আছে। ওরা দুজনে হেসে ফেললো।
-সত্যি অনি তোকে দেখে বোঝা মুস্কিল তোর রোলটা এই হাউসে কি। চম্পকদা বললেন।
-কেনো আমি যা আছি তাই, তোমরা একটা বাড়তি দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছো বইছি, যেদিন পারবো না, বলে দেবো এবার খান্ত দাও।
-সে সময় আসবে।
-কেনো আসবে না।
-বাই দা বাই, শোন মন্ত্রী মহাশয় অর্ধেক টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে।
-আমার কমিশন।
-তোর জিনিষ তুই পুরোটাই নে না, কে বারণ করতে যাচ্ছে।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো।
-তোমার টার্গেট কতদূর।
-মনে হচ্ছে ফুলফিল করতে পারবো। তুই এরকম ভাবে হেল্প করলেই হবে।
-আমি যতটা পারবো করবো, বাকিটা তুমি তোমার টিম।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
-হ্যাঁরে দাদার সঙ্গে কথা হচ্ছিল ওই জায়গাটা নিয়ে কিছু ভাবলি।
-কাগজপত্র রেডি করতে দিয়েছি, হয়ে যাক তারপর ভাববো। এখন অফিসের ঋণ শোধ। এটা আমার থেকে তোমরা দুজন ভালো করে জানো।
সুনীতদা চম্পকদা মাথা নীচু করলো।
-মাথায় রাখবে জিনিষটা আমার একার নয়, এই বটগাছটাকে বাঁচাতে পারলে, আমরা সবাই বাঁচবো।
-তুই বিশ্বাস কর অনি তুই আমার ছেলের মতো, এখনো সেই দিনটার কথা মনে পরলে, রাতে ঘুম হয় না।
-সুনীতদার ওই সব কিছু হয় না, সুনীতদার রাতে বেশ ভালো ঘুম হয়, সুনীতদার কিছু মনে থাকে না।
সুনীতদা আমার দিকে তাকালেন, তুই এই ভাবে বলছিস কেনো।
-তুমি ভেবে দেখো।
সুনীতদা চুপ।
-সুনীতদা এখনো সময় আছে, তোমায় নিয়ে আমার অনেক বড়ো কাজ করার স্বপ্ন আছে, তুমি এখনো শোধরাও নি।
-না অনি বিশ্বাস কর ওরা আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলো।
-আমার এখান থেকে অনেক বেশি মাইনের অফার আছে তোমার কাছে চলে যাও। তোমাকে কেউ ধরে রাখে নি।
-আমি যাবো না বলে দিয়েছি।
-না তুমি তা বলো নি। ঝুলিয়ে রেখেছো।
সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, আবার কি হলো।
-আবার বলি সুনীতদা তুমি যদি ভেবে থাকো অনি খুব দুর্বল তাহলে ভুল করবে। তোমাকে আমি ওয়াচে রাখছি।
-কিরে সুনীত তোর লজ্জা করে না। চম্পকদা বললেন।
-না তুই বিশ্বাস কর চম্পক।
-তাহলে অনি যা বলছে তুই প্রতিবাদ করছিস না কেনো। ও তো তোর পেছনে বলছে না।
সুনীতদা চেয়ার ছেড়ে উঠে চলে গেলো।
-বুঝলে চম্পকদা সুনীতদার স্বভাবটা মনে হয় চেঞ্জ করতে পারবো না।
-দাঁড়া আমায় একটু সময় দে।
দাদার ফোন থেকে সনাতন বাবুকে ডেকে পাঠালাম। সনাতন বাবু এলেন। চেয়ারে বসলেন।
-সুনীতবাবুর আবার কি হলো। সবার দিকে তাকালেন।
-ও অন্যায় করেছে, অনি বললো।
-আমরা শুধরে নিচ্ছি উনি পারছেন না।
-দাদা একটু চা খাওয়াবে।
-আমায় বলছিস কেনো, তুই হরিদাকে ডেকে বল।
-তুমি বলো, তোমার বলা আর আমার বলার মধ্যে পার্থক্য আছে।
সবাই মুচকি হাসলো। দাদা বেলে হাত দিলেন। হরিদা উঁকি মারলো। বুঝে গেলো।
-সনাতন বাবুকে বললাম আমার কাগজপত্র রেডি।
-না ছোটোবাবু, ওরা এখনো দেয় নি।
-কেনো।
-আপনি একটু বলুন।
-তাহলে আপনি কি করতে আছেন।
-আছি তো কিন্তু কতবার বলি বলুন তো।
-মেমো দিন, কি উত্তর দেয় দেখুন। আমি এর মধ্যে ঢুকলে এ্যাকশন অন্য হবে। ফোনটা সনাতনবাবুর দিকে এগিয়ে দিলাম।
-ডাকুন এখানে।
কিছুক্ষণ পর অরিন্দম আর কিংশুকবাবু ঢুকলেন। আমাকে দেখেই চমকে গেলেন। আমিই বললাম বসুন।
-আপনার কাগজ রেডি করেছি এখুনি দিয়ে দেবো। কিংশুকবাবু বললেন।
-আমায় কেনো, ওটা সনাতন বাবুর টেবিলে পাঠানোর কথা।
-এই সবে শেষ করলাম।
-কেনো। কাজের চাপ বেড়ে গেছে।
-না …..
-পার্টি ফার্টি বন্ধ করুন, আগে কাজ তারপর ফুর্তি।
-না মানে……
-তোতলাবেন না। প্রফেসনাল হাউসে কাজ করছেন। আজকে কিছু বললাম না, এরপর দিন সনাতনবাবুকে মেমো ধরাতে বলেছি।
-অনিবাবু!
-আপনার কি খবর। অরিন্দমবাবুর দিকে তাকালাম।
-ওরা কিছুতেই মানছেন না।
-কলকাতায় আর লোক নেই, কালকে একটা টেন্ডার ফেলুন কাগজে। টেন্ডার জমা পরলে আমি ওপেন করবো।
-না কয়েকদিন সময় দিলে…….
-অরিন্দমবাবু, আমি ঘাসে মুখ দিয়ে চলি না, বকলমে ব্যবসা করবেন না।
কেউ যেনো অরিন্দমবাবুর গালে ঠাস করে একটা চড় মারলো।
-কি হলো চুপ করে গেলেন কেনো, অনি সব জেনে ফেলেছে, এতো কান্ড হওয়ার পরও আপনারা কি ভাবেন। আমি সব ভুলে গেছি। আপনাদের বলেছি না, বাহান্ন কার্ডের মধ্যে মাত্র ছটা কার্ড নিয়ে আমি গেম খেলছি। আপনারা পারবেন না, তা সত্বেও…….
-অনি দূর কর এগুলোকে। অমিতাভদা চম্পকদা দুজনেই চেঁচিয়ে উঠলেন।
অরিন্দমবাবু মাথা নীচু করে বসে আছেন।
-আমি কাল বাইরে যাচ্ছি, দাদা আজ তাড়াতাড়ি বাড়ি যাবেন, কাগজ দাদার হাতে পৌঁছে দেবেন। আমি তিনদিন পর এসে আবার বসবো।
-সনাতনবাবু এ সপ্তাহের স্টেটমেন্ট।
-দাদার হাতে দিয়ে দেবো।
হরিদা চা নিয়ে এলো, চায়ে চুমুক দিলাম, ফোনটা বেজে উঠলো, অদিতি।
-তুমি কোথায়।
-অফিসে।
-কটা বাজে দেখেছো।
-বেরোচ্ছি।
চম্পকদা আমার দিকে তাকালেন, মুচকি হেসে বললেন, কিরে আবার দাঁও মারবি।
-জানিনা।
-তুই আমাকে চাকরি থেকে দূর কর।
-কেনো।
-তুই সব নিয়ে এলে আমি কি করবো।
-আমার থেকে তুমি বেশি নিয়ে আসতে পারলে তুমি যাও।
-না এখানে তোর সঙ্গে পারবো না।
-জানো চম্পকদা কাগজের প্রতি তোমার ডেডিকেসন যদি ঠিক থাকে, কাগজ তোমার সব দায়িত্ব নেবে। একবার সুযোগ দিয়ে দেখো না। উঠি।
-তোর আর্টিকেলটা।
সবাই হেসে ফেললো।
-উঃ, ঠিক আছে রাতে দিয়ে দেবো।
দাদার ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। হরিদা বেরোতেই বললো
-ছোটবাবু তোমার সঙ্গে একটা কথা আছে।
-এখন।
-হ্যাঁ।
-দাদাকে বলে দিও, রাতে জেনে নেবো।
-ঠিক আছে।
বেরিয়ে এসে একটা ট্যাক্সি ধরে সোজা চলে এলাম পার্ক স্ট্রীটে, এশিয়াটিক সোসাইটির তলায় দাঁড়ালাম। মিনিট খানেক দাঁড়িয়েছি, দেখি অদিতি গাড়ির কাঁচ খুলে ডাকছে। আমি তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে বসলাম, ওমা দেখি মিলিও আছে, একটু অবাক হলাম, গাড়িতে বসে ওদের ভালো করে লক্ষ্য করলাম, দুজনে যা ড্রেস হাঁকিয়েছে আজকে, মাথা খারাপ করে দেওয়ার মতো, জিনসের প্যান্ট শর্ট গেঞ্জি, তাও আবার নাভির ঠিক ওপরের দু’ইঞ্চি আর নিচের চার ইঞ্চি উন্মুক্ত, আমি পেছনে হেলান দিলাম, লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখলাম, অদিতি মিলিকে ইশারায় কি বলছে, আমি জানলার দিকে মুখ করে চোরা চাহুনি মারছি। অদিতি স্টিয়ারিংয়ে বসেছে।
-অনিদা।
-উঁ।
-তোমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছি বলতো।
-কি করে বলবো।
-গেজ করো।
-আমায় হাত ধরে তুমি নিয়ে চলো সখা আমি যে পথো চিনি না।
ওরা দুজনেই খিল খিল করে হেসে উঠলো। সত্যি অনিদা তোমার সঙ্গ উপভোগ করা ভাগ্যের ব্যাপার।
-কেনো।
-তুমি খুব এনজয়েবল। চিয়ার লিডার।
-সে কি গো শেষ পযর্ন্ত……
-ঠিক আছে বাবা উইথড্র করছি।
-ক্যাঁচ করে ব্রেক মারলো অদিতি। সামনে একটা গাড়ি হঠাত ব্রেক কষেছে। আমি পেছনের সিটি একটু জবু থবু।
-কি হলো।
-ভাবছি।
-কি।
-জীবনের রূপ, রস, গন্ধ এখনো কিছুই উপভোগ করতে পারি নি, এরি মধ্যে যদি বেঘোরে প্রাণটা যায়।
-হা হা হা।
-হাসবেই, তোমরা তবু কিছু পেয়েছো। আমি এখনো মরুভূমিতে মরীচিকার মতো ঘুরছি।
-তুমি কিন্তু চাইলেই পেয়ে যাবে।
-এখানেই তো সব শেষ।
-কেনো।
-মুখ ফুটে আমি যে চাইতে পারি না।
-কেনো মিত্রাদি।
-সবাই তাই বলে, কিন্তু মালকিন বলে কথা, যতই হোক আমাকে মাসের ভাতটুকু দেয় তো।
-তুমি এখন মালিক।
-সেটা এখনো ভাবতে পারছি না।
-সে কি গো।
-হ্যাঁগো, তোমাদের মিথ্যে বলতে যাবো কেনো। হওয়ার পর থেকে যা ঝড় যাচ্ছে, ভাববার সময় পেলাম কোথায়।
-তা ঠিক। তুমি বলে লড়ে গেলে, আমরা পারতাম না।
গাড়িটা বাইপাস হয়ে স্প্রিং ভ্যালিতে ঢুকলো। আমি পেছনে বসে আছি। এই ছোটো গাড়িগুলোর এসিটা বেশ স্ট্রং একটুতেই ঠান্ডা লাগে আর শীত শীত করে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
-আমরা এসে গেছি।
-এটা কি তোমাদের নতুন অফিস।
-ওঃ সত্যি তুমি এসব বোলো না।
-কেনো।
-এটা মিলির ফ্ল্যাট।
-এখানে।
-হ্যাঁ।
-আরি বাস, তার মানে মিলি তো…….
-চুপ।
-কেনো।
-চলো আমরা নেমে দাঁড়াই অদিতি গাড়িটা পার্ক করে আসুক।
আমি আর মিলি নেমে দাঁড়ালাম। মিলি গেঞ্জিটা টেনে নামাবার চেষ্টা করলো, নামলো যদিও একটু তবে আবার যেই কে সেই। মিলির নাভির দিকে চোখ চলে যাচ্ছে, চোখ ঘুরিয়ে নিচ্ছি। মিলি বুঝতে পেরেছে।
-তোমারটা ক’ তলায়।
-এইটিনথ ফ্লোর।
-উনিশ তলা!।
-হ্যাঁ।
-কোনোদিন হেঁটে উঠেছো।
-না।
-একবার উঠে দেখো তো।
-এ জীবনে সম্ভব নয়।
-কেনো।
-চব্বিশ ঘন্টা লিফ্ট আছে তো।
-কারেন্ট যায় না, যায় তবে জেনারেটর আছে।
অদিতি আসছে, অদিতির হাঁটার স্টাইলটা অনেকটা মডেলদের মতো, কোমরটা এতো সুন্দর দুলছে তাকিয়ে থাকার মতো, মাথার ঘন কালো চুল কোমরের ওপরে এসে থমকে দাঁড়িয়েছে। চোখে স্নানগ্লাস, হাইট পাঁচ ছয় মেয়েদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট লম্বা। মিলি সেই তুলনায় একটু বেঁটে, আর টিনা এদের কাছে লিলিপুট।
-চলো।
আমি ওদের পাশাপাশি হেঁটে লিফ্টের কাছে এলাম। মিলি লিফ্ট বক্সের বোতামে হাত দিলো। দরজা খুললো, আমরা ভেতরে গেলাম, হাউইয়ের মতো লিফ্টটা ওপরে উঠে এলো, মিনিটখানেক লাগলো হয়তো। লিফ্ট থামলো, আমরা নামলাম, এক একটা ফ্লোরে ছটা করে দরজা, মানে ছটা করেই ফ্ল্যাট, একেবারে বাঁদিকের শেষরটায় দেখলাম কলাপসিবল গেট টানা, দরজায় লেখা আছে, মিলি সান্যাল, চিফ এক্সিকিউটিভ, এয়ারটেল। মিলি পার্স থেকে চাবি বার করে প্রথমে কলাপসিবল গেটটা খুললো, তারপর ভেতরের দরজাটা, আমি অদিতির পাশে দাঁড়িয়ে, এদের ব্যাপার স্যাপার মাথায় ঢুকছে না।
-খুব অবাক হচ্ছো না।
-মোটেই না।
অদিতি স্নানগ্লাসটা খুলে, আমার দিকে তাকালো। চোখে বিস্ময়।
-তুমি জানতে আমরা এখানে আসবো।
-এখানে আসবে এটা জানতাম না, তবে তোমাদের দুজনের কারুর একটা বাড়িতে যাচ্ছি গেজ করেছিলাম।
-এরপরের এপিসোড গেজ করো।
-তাও ভেবে রেখেছি।
-বলো।
-একটু আড্ডা হবে চুটিয়ে।
ভেতরে এলাম। এক্সিকিউটিভের মতোই ফ্ল্যাট। চারিদিকে ঝকঝকে আধুনিকতার ছাপ, টিনার ফ্ল্যাটে একটা অন্য গন্ধ পেয়েছিলাম। এখানে অন্য গন্ধ পাচ্ছি। ড্রইংরুমটা দারুণ সাজানো গোছানো, প্রায় ১২০০ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাট। মিলি কি এখানে একা থাকে নাকি। এসব প্রশ্ন এখানে করা বৃথা।
-বোসো। মিলি বললো। দাঁড়িয়ে আছো কেনো।
আমি ড্রইংরুমের মাঝখানে পাতা বড় সোফায় হেলান দিলাম। অদিতি আমার পাশের সোফায় বসেছে। হাত দুটো বুকের কাছে ভাঁজ করা, মাইদুটো হাতের ওপর দিয়ে উপচে পরেছে, গেঞ্জিটা অনেক ওপরে উঠে গেছে, প্রায় এক বিঘত দেখা যাচ্ছে, আমি ঘরের চারিদিকে চোখ বোলাচ্ছি, মাঝে মাঝে চোখ চলে যাচ্ছে অদিতির নিরাভরণ জায়গায়।
-জরিপ করা হলো।
-সামান্য।
-কি বুঝলে।
-মিলি বেশ বড়লোক।
-তোমার থেকেও।
আমি! হাসলাম।
-তুমি একটা এরকম কিনে নিতে পারো।
-পয়সা কোথায়।
অদিতি খিল খিল করে হেসে উঠলো।
-এতো হাসি কিসের। মিলি বললো।
-অনিদাকে জিজ্ঞাসা কর।
-কি গো অনিদা।
-দিতি বলছে এরকম একটা ফ্ল্যাট কিনতে, আমি বললাম পয়সা নেই।
মিলি মুচকি হাসলো, অদিতি বললো, তুমি কি নাম ধরে বললে এখুনি।
-দিতি।
-বাঃ নামটা ছোট করাতে বেশ স্মার্ট লাগছে তো, মিলির দিকে তাকিয়ে
-কিরে মিলি তাই না।
-অনিদার মাথা!
মিলি আমার পাশে এসে বসলো। ঠান্ডা না গরম।
-ঠান্ডাতো খাচ্ছি।
-কোথায়।
-তুমি পাশে এসে বসলে, তার ওপর তোমার ঘরের কুল পরিবেশ।
-ওঃ। তোমার সঙ্গে কথায় পারা যাবে না। যা অদিতি নিয়ে আয়। আমি রেডি করতে দিয়ে এসেছি, মনে হয় হয়ে গেছে।
-কি করতে দিয়ে এসেছো।
-চারটে শরবতি লেবু কেটে মেশিনে ফেলে এসেছি।
-বাবা তুমি তো বেশ করিৎকর্মা।
-তোমার থেকে নয়। এত ঝঞ্ঝাটের মধ্যেও তুমি রান্না করে খেয়ে বেরোও।
-এই লেটেস্ট নিউজটা আবার কে দিলো।
-অদিতি।
-আমার নামে কি বলছিস।
অদিতি ট্রেতে করে তিনটে গ্লাস নিয়ে এলো, বরফ দেওয়া দেখলাম।
-সকাল বেলা অনিদার রান্নার কথা বললাম।
-তাই বল। টেবিলে ট্রেটা নামিয়ে রাখলো অদিতি। গেঞ্জির ফাঁক দিয়ে ওর বুকের গভীর ক্লীভেজে চোখ পরলো।
-এটা আবার চিয়ারস করতে হবে নাকি।
-ধ্যুস তুমি না, এটা কি হার্ড ড্রিংকস।
-তোমাদের কাছে এই ব্যাপারগুলো রপ্ত করতে হবে।
-আমাদের সঙ্গে দুচারদিন ঘোরো শিখে যাবে। অদিতি বললো। নাও।
আমায় একটা গ্লাস হাতে তুলে দিলো।
-অনিদা সেই গল্পটা আর একবার বলবে। মিলি বললো।
-কোনটা।
-না অনিদা বলবে না।
হাসলাম।
-তুমি কোনোবারই পুরোটা বলো নি। কিছুটা রেখে ঢেকে বলেছো।
-তাহলে তোরটাও অনিদাকে বলতে বলবো।
-অনিদা আমার তোর দুজনেরটাই বলবে।
আমি হাসলাম ওদের কথায়। গ্লাসে চুমুক দিলাম। লেবুর রসটা একটু সামান্য তেঁতো তেঁতো লাগলো, বুঝলাম, একটু বেশি পেশা হয়ে গেছে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
-যতদূর মনে পড়ছে, সেদিন বাংলা ক্লাস করে ১১ নং ঘর থেকে বেরিয়ে হলঘরে এসেছি, মিত্রা বললো, যাবি।
আমি বললাম কোথায়।
-বসন্ত কেবিনে।
-কেনো।
-নিখিলেশদা অপেক্ষা করছে।
-আমরা হলঘরের মেইন গেটে আসতেই দেখলাম, অদিতি গেট দিয়ে ঢুকছে, আজকে অদিতি যে ড্রেস পরেছে, অনেকটা সেরকম, দারুন স্মার্ট লাগছিলো, অদিতি যেন উড়তে উড়তে আসছে, মিত্রার দিকে তাকিয়ে হাসতেই ও বললো চোখ একেবারে গেলে দেবো।
-তোমার সঙ্গে তখন মিত্রাদির ইন্টু মিন্টু চলছে।
-তখন ঠিক বুঝতাম না ব্যাপারটা বুঝলে, তবে ও একদিন কলেজে না এলে মনটা খারাপ হয়ে যেতো। ওর বাড়ি চিনতাম না, যেতেও পারতাম না, ওর এক বোন প্রেসিডেন্সিতে পড়তো আমি সেখানে যেতাম দেখা হলে জিজ্ঞাসা করতাম, না হলে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে আসতাম। আর আমি যদি না আসতাম, ও সিধে ডাফ হোস্টেলে চলে যেতো।
-একচুয়েলি সেকেন্ড ইয়ারে এসে বুঝলাম ওর সঙ্গে আমার একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, কিন্তু আমি তখন পড়শুনো নিয়ে খুব ব্যস্ত, পার্ট ওয়ানে ৱ্যাঙ্ক করলাম, তারওপর ফার্স্ট ক্লাস পেলাম, ও ওদের বাড়িতে নিয়ে গেলো, সেই ওদের বাড়িতে যাওয়া আসা শুরু, ওর বাবা আমাকে পছন্দ করলেও মা কোনোদিন করতেন না, হাবে ভাবে বুঝতাম। আমিও খুব বেশি যাওয়া আসা করতাম না। শেষ যেদিন কলেজ হলো, সেদিন দুজনে হেঁদুয়াতে বসে খুব কেঁদেছিলাম, আর দেখা হবে না বলে। রেজাল্ট বেরোবার পর একবার গেছিলাম। তারপর আর যাই নি। আমি ক্যালকাটা ও যাদবপুরে ভর্তি হলো, আমার জীবনটা এই সময় খুব টাফ গেছে। আমি তখন খুব নোংরা জায়গায় থাকতাম। কাউকে সেখানে যেতে বলতে পারতাম না।
-কোথায়।
-সোনাগাছিতে।
-কি বলছো অনিদা।
-এক গণিকা মাসির আশ্রয়ে।
-এই গল্পটা পরে শুনবো। অদিতিরটা বলো।
-আমার মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে যেন এদের সঙ্গে সেক্স করি।
হাসলাম।
-তারপর মিত্রাকে বললাম একটা মজা করি।
-ও বললো না তুই একবারে কিছু করবি না।
-তবু আমি ওর কাছ থেকে ছিটকে চলে গেলাম। তখন ভরা কলেজ চারিদিকে স্টুডেন্ট, আমি ঠিক সিঁড়ি দিয়ে ওঠার মুখটায় দাঁড়ালাম, অদিতি আমায় দেখলো, আমি ওর দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছি, যেই ও আমার কাছাকাছি এলো, আমি ওর পাছায় হাত দিয়ে একটু টিপে দিলাম, ও সজোরে একটা থাপ্পর তুললো, আমি ওর হাতটা চেপে ধরে, ভাবলেশহীন মুখে বললাম, দেখো মা, তুমি যে কলেজে পড় সেই কলেজে নেতাজী পড়েছেন, বিবেকানন্দ পড়েছেন আরো কতো মনিষী পড়েছেন হাতে গুণে শেষ করা যাবে না। তাঁরা যদি তোমার এই পোষাকটা দেখতেন লজ্জা পেয়ে যেতেন। মিলি হাসছে হো হো করে। তারপর মনে হয় অদিতিকে হাত জোড় করে বলেছিলাম, আমার এই ব্যবহারের জন্য ক্ষমা করো। অদিতি মুচকি মুচকি হেসে আমাকে থাপ্পর দেখাচ্ছে। সেদিন অদিতির মুখটা আমার চোখের সামনে এখনো ভাসে। অদিতির মুখটা রাঙা হয়ে উঠলো।
-আমারটা বললে এবার মিলিরটা বলো।
আমি মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে আড়মোড়া ভাঙলাম।
-মিলিরটা চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, মিত্রা, সুপ্রিয়, কল্লোল, সুমিতার সঙ্গে। ওরা বার খাওয়ালো, বললো এই মেয়েটাকে চুমু খেতে পারবি। আমি বললাম হ্যাঁ। শেয়ালদায় একদিন গেলাম মিলির পেছন পেছন। মিলিকে ট্রেনে উঠতে দেখলাম। মিত্রাকে বললাম, তুই মিলি যেখানে বসবে সেখানে দাঁড়াবি। আর মিলিও ঠিক জানালার ধারে বসেছিলো সেদিন।
-মিলি তখন মিত্রাদিকে চিনতো না।
-বলতে পারবো না, তবে মুখ চেনা ছিলো। তোমরা তখন জুনিয়র ইলেভেন থেকে সবে টুয়েলভে উঠবে আমরা থার্ড ইয়ার।
-হ্যাঁ। মিলি বললো।
-তারপর, অদিতি আমার দিকে চেয়ে চোখ মিটমিট করে হাসলো।
-আমি ট্রেনের সামনে এসে দেখলাম কি ট্রেন, দেখলাম লেখা আছে, শান্তিপুর। মিত্রা যেখানে দাঁড়িয়ে তার দুটো কামরা আগে থেকে জানলার ধারে যারা বসে আছে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে করতে এগোলাম, দাদা ব্যারাকপুর না শান্তিপুর। মিলির কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলাম, ব্যারাকপুর মিলি বললো শান্তিপুর মনে হয়ে মিলি পুর কথাটা বলতে পারে নি, আমি মিলির মাথাটা ধরে জানলার মধ্যে দিয়েই একটা চুমু খেয়ে সেই যে দৌড় দিলাম, তারপর ডিএস বিল্ডিংয়ের ভেতর দিয়ে একবারে ক্যাফের সামনে। কিছুক্ষণ কুত্তার মতো হাঁফালাম, ওরা এলো পনেরো মিনিট পর।
অদিতি মিলি হাসতে হাসতে গড়িয়ে পরে। মিলি দুবার আমার কোলেই হাসতে হাসতে গড়িয়ে পরলো। ওর শরীরটা বেশ গরম গরম লাগছে। অদিতি চোখ মুছে বললো
-এখন তোমার ইচ্ছে করছে না মিলি কে চুমু খেতে।
-ইচ্ছে করলেই তো হবে না।
অদিতি মিলির দিকে তাকিয়ে একটা এমন ইশারা করলো মিলি আমার কাঁধে হাত রেখে বললো
-আজ তোমাকে আমায় চুমু খেতেই হবে। সেদিন সত্যি বলছি অনিদা আমি তোমার চুমুর স্বাদটা ঠিক উপভোগ করতে পারি নি, আজ তোমাকে খেতেই হবে।
অদিতির হাসতে হাসতে গেঞ্জিটা এমন জায়গায় উঠে গেছে, যে সেটা খুলে ফেললেই চলে। মিলি আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। ওর নরম বুক আমার বুকের সঙ্গে লেপ্টে আছে আমি ওর দিকে চেয়ে আছি, মাথাটা বেশ ঝিম ঝিম করছে, ভীষণ সেক্স করতে ইচ্ছে করছে, ভাবছি মিলির ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াবো কিনা, মিলি তৃষিত নয়নে আমার ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে এসেছে, চোখে তৃষ্ণা।
আমার পক্ষে নিজেকে ধরে রাখা সত্যি খুব অসম্ভব মনে হচ্ছে, আমি মিলির ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে গিয়ে সরিয়ে আনলাম, মিলি আমার বুকের সঙ্গে আরো ক্লোজ হলো, ওর নরম বুক আমার বুকের সঙ্গে একেবারে মিশে গেছে, আমি মিলির ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম, মিলি নিজে থেকেই চুষতে শুরু করলো, অদিতি আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো, ও এগিয়ে আসছে, মিলি আমার ঠোঁট কিছুতেই ছাড়ছে না মাঝে মাঝে আওয়াজ করে চুমু খাচ্ছে। অদিতি কাছে এসে আমার দুপায়ের মাঝখানে বসলো। ও কিছুক্ষণ এক দৃষ্টে তাকিয়ে থেকে বললো
-কিরে তুই একাই সব খাবি আমাকে খেতে দিবি না।
মিলি ঠোঁট ছাড়লো।
-দেখছিস অনিদার ঠোঁটটা কেমন লাল করে দিয়েছি, যেন কমলালেবুর কোয়া। মিলি উঠে দাঁড়ালো।
-গেঞ্জিটা খুলি অনিদা, মনে কিছু করো না। মিলি টেনে গেঞ্জিটা খুলে ফেললো, একটা পিঙ্ক কালারের ব্রা পরা, টাইট হয়ে বুকের সঙ্গে সেঁটে রয়েছে। মাই দুটো থোকা থোকা গাঁদা ফুলের মতো, আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। অদিতি আমার হাতটা ধরলো ।
আমি অদিতিকে আমার কাছে টেনে নিলাম, ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম, মিলি সেন্টার টেবিলটা সরিয়ে দিয়ে আমার পায়ের কাছে বসে, প্যান্টের ওপর দিয়ে নুনুতে হাত দিলো, মনে মনে বললাম, যা থাকে কপালে আজকে। যা হয় হোক। আমি চেষ্টা করলেও কিছুতেই এখন এদের হাত থেকে রেহাই পাবো না, এরা আমাকে রেইপ করে ছেড়ে দেবে। গা ভাসালাম, অদিতি আমার ঠোঁট চুষছে। মিলি আমার প্যান্টের বোতাম খুললো, চেনটা টেনে নামালো, আমি অদিতির নিরাভরণ পেটে হাত দিলাম, অদিতি গেঞ্জিটা একটু তুলে দিলো, আমি গেঞ্জির তলা দিয়ে ওর বুকে হাত দিলাম। শিমুল তুলোর মতো তুলতুলে ওর মাইটা। অদিতি আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে, মিটি মিটি হাসছে। আমি ইশারায় ওকে বললাম, গেঞ্জিটা খোলো। ও ঠোঁট থেকে ঠোঁট না সরিয়েই গেঞ্জিটা আরো তুলে দিলো, আমি ওর পেছনে হাত দিয়ে ব্রার ফিতেটা আলগা করে দিলাম, ব্রার ভেতর থেকে মাইটা আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পরলো।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
অদিতি ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরালো, গেঞ্জি ব্রাটা খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলো, ওর মাই আমার চোখের সামনে আমি সোফায় আরো হেলে পরলাম, আদিতি আমার দুপাশে দুপা রেখে আমার পেটের ওপর বসলো, আমার মুখটা ধরে আমার ঠোঁটে ঠোঁট ডোবালো।
আমি অদিতির মাইতে হাত দিলাম, একেবারে হাতের সাইজ, দেবাশিষ কি ওর মাই কোনো দিন টেপে নি। অদিতি ঠোঁট চুষছে, মাঝে মাঝে আবেশে ওর চোখ বন্ধ হয়ে আসছে, মিলি আমার প্যান্টের চেন খুলে ড্রয়ার ধরে নিচে নামানোর চেষ্টা করছে, আমি ইচ্ছে করেই কোমরটা একটু তুলে ধরলাম, মিলি ড্রয়ার সমেত প্যান্টটা কোমর থেকে টেনে নামিয়ে দিলো, আমার নুনুটা ধরে চুমু খেলো, আমি দেখতে পাচ্ছি না তবে বুঝতে পারছি, আমার নুনুর চামড়াটা টেনে সরিয়ে দিয়ে মুখের মধ্যে নিয়ে চুষছে। কেন জানিনা আজ বেশ ভালো লাগছে, ঘরের এসিটা একটা রিদিমে চলছে।
অদিতি ঠোঁট থেকে ঠোঁট তুলে আমার ঠোঁটে আঙুল রাখলো।
-যতো তোমার ঠোঁটটা চুষছি তত ভালো লাগছে।
আমি ওর দিকে কামুক কামুক দৃষ্টি নিয়ে চেয়ে রয়েছি, ডানদিকের মাইটা আমার ঠোঁটের কাছে নিয়ে এসে ইশারায় বললো একটু মুখ দাও, আমি মুখ দিলাম, আর একটা মাই টিপতে লাগলাম, নরম ভাবে, মিলি চকাত চকাত করে আমার নুনু চুষে চলেছে, মাঝে মাঝে ওর মাই দুটের মাঝখানে নুনুটাকে রেখে, চেপে চেপে ধরছে, আবার কখনো মাই-এর নিপিলটা আমার নুনুর মুন্ডিতে ঘষছে।
-কিরে আমায় একটু সুযোগ দে।
অদিতি উঠে দাঁড়ালো, মিলি সম্পূর্ণ উলঙ্গ, শেভড পুশি, দুই থাইয়ের মাঝখানে ওইটুকু অংশ মিলিকে মোহময়ী করে তুলেছে, মিলি, আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মারলো। চলো বেড রুমে যাই। আমার হাত ধরে টেনে তুললো। আদিতি প্যান্ট, প্যান্টি খুলছে। আমার মাথার ঝিমঝিমানি এখন কিছুটা কম, নিজের নুনুর দিকে তাকিয়ে নিজেই ভয় পেয়ে গেলাম, অস্বাভাবিক একটা চেহারা নিয়েছে, এমনকি শিরা উপশিরা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, আমি মিলির কোমরে হাত দিয়ে আর একহাতে ওর মাই টিপতে টিপতে ওর বেড রুমে এলাম, দারুণ একটা সুন্দর চাদর ওর বিছানায় টান টান করে পাতা। খাটটা বেশ বড় আট বাই সাত। তিনজনে আরামসে শোয়া যায়।
ঘড়ের একদিকে একটা টেবিল, ল্যাপটপটা রাখা, একটা ফুলদানি বাহারি ফুলে ভর্তি। একটা সুন্দর গন্ধ ঘরের চারদিকে ম ম করছে, মনে হচ্ছে রুম ফ্রেশনার ছড়িয়ে রয়েছে, চারদিকে।
-শুয়ে পরতো দেখি একটু মজা করে তোমারটা চুষি।
আমি শুয়ে পরলাম, মিলি আমার কোমরের কাছে ঝাঁপিয়ে পরলো। অদিতি ঢুকলো, রিমোটটা নিয়ে এসিটা চালিয়ে দিলো। অদিতির পুশিটাও সেভ করা, মিলির থেকে চেহারায় সামান্য বড়, ক্লিটোরিসটা একটু ফুলে রয়েছে, আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো, একবারে তাকাবে না জুল জুল করে, তোমরা চোখতো নয়, একেবারে যেন চোখ দিয়েই করে দিচ্ছ, আস্তে করে খাটে উঠে এসে আমার কাছে হেলে শুয়ে পরলো, আমি ওর মাইতে হাত দিলাম, ও আর একটু উঠে এসে মাইটা আমার মুখের কাছে নিয়ে এলো, আমি ওর বাঁদিকের মাইটা চুষতে শুরু করলাম, একটা হাত ওর পুশিতে রাখলাম, ও পাদুটো সামান্য তুললো, পুশিটা ভিজে গেছে, আমি ওর চেরা জায়গায় কিছুক্ষণ আঙুল দিয়ে ওপর নিচ করলাম, মিলি আমার নুনু বিচি চুষে চলেছে, একটা ব্যাপারে আমি একটু অবাক হচ্ছি, আজ এতো চোষার পরও কিন্তু আমার নুনু কোনো সাড়া শব্দ দিচ্ছে না, খালি শক্ত শাবলের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে। মিলি আমি একটু চুষি। অদিতি আমার কাছ থেকে উঠে নিচে চলে গেলো, এবার দুজনে আমার নুনু নিয়ে খেলা শুরু করলো, আমি হাত বাড়িয়ে বালিশটা টেনে নিলাম, মাথার তলায় দিয়ে একটু উঁচু করলাম, একজন নুনু চুষছে তো আর একজন বিচি চুষছে।
-মিলি আমি একটু তোমারটায় মুখ দিই। মিলির মুখটা চকচক করে উঠলো যেন হাতে স্বর্গ পেয়েছে।
-কি ভাবে দেবে।
-তুমি তোমার কাজ করো, তোমার পাছুটা আমার দিকে একটু ঘুরিয়ে দাও।
দেখে মনে হচ্ছে এরা পাকা খেলোয়াড় এর আগে যাদের সঙ্গে আমি সেক্স করেছি, তারা এদের মতো পাকা খেলোয়াড় ছিলো না। মিলি ঠিক মাপে মাপে আমার বুকের দুপাশে পা রেখে পুশিটা আমার মুখের কাছে রাখলো।
-ঠিক আছে।
-হ্যাঁ।
মিলির পুশিটা অদিতির থেকে কম ভিঁজে আছে, বেশ টাইট, পুশির পার দুটো নিখুত ভাবে কামানো, একফোঁটা চুল নেই মাঝখানের অংশটা বেদানা রংয়ের, পুশির ওপরের ক্লিটোরিসটা বেশ ফুলে আছে, আমি বুড়ো আঙুল দিয়ে ওর ক্লিটোরিসটা একটু নাড়া চড়া করলাম, মিলির কোমর দুলছে, তারমানে জমি তৈরি, কষর্ণ করলেই হলো। আমি তবু জিভটা শরু করে ওর পুশির চেরা অংশে ওপর থেকে নিচ পযর্ন্ত বোলালাম, মিলি হঁ হঁ করে উঠলো। আমি মনে মনে হাসলাম।
বেশ লাগছে, জীবনে প্রথম দুজন নারীর সঙ্গ একসঙ্গে উপভোগ করছি, আমার ভাগ্যে যে এরকমটা ঘটতে পারে কোনোদিন ভাবি নি, নিজে নিজেই বললাম, অনি সত্যি তোর ভাগ্য, দেখলে হিংসে হয়।
-উঁ উ উ উ উ উ উ উ।
-কি হলো।
-তোমার জিভটাও কি তোমার এইটে নাকি। আমার নুনুতে হাত দিয়ে।
-কেনো।
মিলি আমার নুনু চুষতে চুষতে দাঁত দিলো। আমার কোমর দুলে উঠলো।
-উঃ তুমি যে ভাবে জিভ ঘষছো, আমার এখুনি হয়ে যাবে।
-ভালো তো।
-না।
-কেনো।
-সবে মজা নিতে শুরু করেছি। এরি মধ্যে শেষ হলে চলে।
-মিলি এবার তুই ওঠ, অনেক সুখ উপভোগ করেছিস। এবার আমি একটু করি।
-কর।
যেন দুজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলেছে, কে কতটা সুখ বেশি উপভোগ করে ফেলেছে। মিলি আমার বুকের কাছ থেকে পায়ের কাছে চলে গেলো। অদিতি আস্তে আস্তে কাছে এগিয়ে এলো।
-কি ভাবে বোসবো বলো।
-সামনের দিক করে বসো।
-না অনিদা তা হবে না, আমাকে যেভাবে করলে সে ভাবে করো। মিলি বললো।
আমি মুচকি হাসলাম।
-মরা, তুই কর না আমার দিকে তাকাচ্ছিস কেনো।
-সরটিয়ালি করলে হবে না।
আমি হাসছি।
অদিতি এগিয়ে এলো।
-তুমি আমার কাছে এগিয়ে এসো।
আমি অদিতির পাদুটো আমার মাথার দুপাশে রেখে সামনের দিক থেকে পুশিটাকে আমার মুখের কাছে নামিয়ে আনতে বললাম, অদিতি আমার কথা মতো কাজ করলো।
অদিতির পুশিটা অনেকটা ফুলে গেছে, পুশির পাড়দুটো, বেশ ফোলা। আমি হাত দিলাম, অদিতি মুচকি মুচকি হাসছে। আমি অদিতির পুশিতে একটা চুমু খেলাম, অদিতি উঃ করে উঠলো, একবার জিভটা শরু করে ওপর থেকে নিচ পযর্ন্ত বুলিয়ে দিলাম, অদিতির চোখের রং বদলে গেলো। আমি অদিতির দুই মাইতে হাত দিয়ে একটু টিপতে টিপতে ওর পুশিতে জিভ বোলাতে লাগলাম, আর মুখটা ভালো করে দেখতে লাগলাম, অদিতি মাথা ঝুঁকিয়ে আমাকে লক্ষ্য করছে, ওর পুশিতে কি ভাবে জিভ বোলাচ্ছি, মাঝে মাঝে ওর পাছা ধরে টিপছি, আবার মাইতে ফিরে যাচ্ছি।
মিলি আর সহ্য করতে পারলো না, ও চোষা বন্ধ করে এবার আমার নুনুটা দিয়ে ওর পুশির ওপর নিচ করছে, বুঝতে পারছি এবার ও নিজে নিজেই ঢুকিয়ে নেবে। কিছুক্ষণ এভাবে করার পর আমি বুঝতে পারলাম, আমার নুনু মিলির পুশির মধ্যে ঢোকার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, মিলি ওর পুশির গর্তে আমার নুনু সেট করে আস্তে আস্তে চাপ দিচ্ছে, মুখ দিয়ে আঃ উঃ শব্দ বেরিয়ে আসছে।
অদিতি ঝুঁকে পরে হাতদুটো বিছানার ওপর ভর দিয়ে ওর পুশিটা আমার মুখের ওপর চেপে ধরছে, ওর চাপের চোটে আমার জিভ আর নড়াচড়া করতে পারছেনা।
-অদিতি পেছন ফিরে দেখ।
অদিতি আমার মুখের কাছ থেকে উঠে পরলো।
-এ কি রে তুই ঢুকিয়ে নিয়েছিস।
আমি মিলির দিকে তাকিয়ে, আমার ওই শক্ত নুনুটা কখন মিলির পুশির মধ্যে ঢুকে গেছে বুঝতেই পারি নি, মিলি পুশির ঠোঁট দিয়ে আমার নুনুকে কামড়ে কামড়ে ধরছে। আমি কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে, অদিতি আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে মিলির ফুলে ওঠা ক্লিটোরিসে আঙুল ছোঁয়ালো, মিলি উঃ করে উঠলো, ওর কোমর দুলছে।
-অদিতি আমার মুনুটায় একটু মুখ দে।
অদিতি এগিয়ে গিয়ে মিলির মুনুতে মুখ দিয়ে চুষতে লাগলো, আমি শুয়ে আছি, আমার নুনু গিলে খাওয়া মিলির পুশিটার দিকে তাকিয়ে। এদিকেরটায় একটু মুখ দে। অদিতি ওদিকেরটায় মুখ দিলো। আমি হাসছি।
-দুষ্টু দুষ্টু মুখ করে একবারে হাসবে না, অনেকদিন পর এরকম এনজয় করছি।
আমি ইচ্ছে করে হাত বাড়িয়ে অদিতির পাছুটা ধরে একটু কচলে দিলাম। পুশিতে আঙুল দিলাম, অদিতি কোমরটা একটু পিছিয়ে আমাকে ভালো করে হাত দেওয়ার সুযোগ দিলো। আমি পেছন থেকে ওর পুশিতে আঙুল দিচ্ছি, অদিতিও কোমর দুলিয়ে রেসপন্স করছে।
-অদিতি আমার হয়ে যাবে, তুই বরং কর, মিলি তড়াক করে উঠে পরলো। আমি মিটি মিটি হাসছি, মিলি আমার বুকের ওপর শুয়ে আমার ঠোঁট কামড়ে দিয়ে বলল
-সত্যি অনিদা তোমার জিনিষটা ঈশ্বর প্রদত্ত।
-কি করে বুঝলে।
-ব্যবহার করে দেখলাম। দারুণ।
-নে ওঠ আমায় একটু সাহায্য কর।
অদিতি ঠ্যাং ফাঁক করে বসেছে। পুশিটা হাঁ হয়ে আছে।
-নে ঢুকিয়ে নে।
-তুই অনিদারটা একটু ধর।
মিলি উঠে বসে আমারটা সোজা করে ধরলো। অদিতি এবার একবার চাপ দিয়েই তড়াক করে উঠে পরলো।
-কি হলো রে।
-আরি বাবা কি শক্ত।
-ঢুকিয়ে নে, প্রথমটা একটু জ্বালা জ্বালা করবে তারপর দেখবি স্বর্গে আছিস।
অদিতি প্রায় চারবারেরে চেষ্টায় ভেতরে ঢোকালো, ঢুকিয়েই আমায় জড়িয়ে ধরে বুকে শুয়ে পরলো, আমার ঠোঁটে চুমু খেয়ে বললো, সত্যি অনিদা মিলি ঠিক কথা বলেছে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
মিলি তখন নিচে আমার আর অদিতির লক পজিসন ভালো করে পর্যবেক্ষণ করছে।
-হ্যাঁ হ্যাঁ ওই জায়গায় দে। আর একটু ঘষ। আঃ। অদিতি বলে উঠলো।
বুঝলাম অদিতির পুশিতে আঙুল দিচ্ছে মিলি। অদিতির নরম বুক আমার বুকের সঙ্গে চেপ্টে গেছে।
-তুমি এরকম শুয়ে থাকবে নাকি, আমাদের একটু করবে না।
-তোমরা করছো তো, আগে তোমাদের পালা শেষ হোক, তারপর নয় আমি করবো।
অদিতি উঁ উঁ উঁ করে আমার ঠোঁটে চকাত করে একটা চুমু খেলো।
-কিরে তুই এরকম ভাবে শুয়ে শুয়ে সময় নষ্ট করবি নাকি, কর।
-কি করবো, করছি তো।
-কোমরটা দোলাতে পারছিস না।
-তুই দুলিয়ে দে।
-দেখছো অনিদা দেখছো, সহ্য হচ্ছে না।
আমি হাসলাম।
মিলি অদিতির কোমরে হাত দিয়ে দু-তিনবার চেপে চেপে দিলো।
-নে ওঠ অনেক হয়েছে।
আমি বুঝলাম এই করলে আজ রাত কাবার করে দেবে এরা।
আমি নীচ থেকে দু তিনবার ঠেলা দিলাম, অদিতি ও মাগো করে উঠলো আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
-কি হলো।
-বাপরে বাপ এতো নাভি পযর্ন্ত চলে গেছে, আমি পারছি না।
-ওঠো, তোমরা অনেক করেছো এবার আমি একটু করি।
আমি অদিতিকে জাপটিয়ে ধরে, একপাক ঘুরে নিলাম, অদিতি এখন আমার তলায় আমি হাতের ওপর ভর দিয়ে, অদিতিকে দুতিনবার স্ট্রোক করতেই অদিতি মাথা দোলাতে আরম্ভ করলো।
-কি হলো।
-উ তোমারটা কি মোটা আর শক্ত।
-কেনো দেবাশিষেরটা এরকম নয়।
-দূর, নেংটি ইঁদুরের মতো। তারপর মাল খেয়ে দুতিনবার টিক টিক করলেই পরে যায়, তাই আমি আর মিলি এই ফ্ল্যাটে সেক্স করি, কি করবো বলো অনিদা শরীরের জ্বালা।
মিলি ড্যাব ড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
-চলো নিচে যাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে করি তারপর খাটে শুয়ে।
আমি উঠে পরলাম, একটা পচাত করে আওয়াজ হলো, মিলি মুখ টিপে হাসলো, আমার নুনু সোজা মাথা তুলে দাঁড়িয়ে।
সেদিন মিত্রাকে করার কথাটা মনে পরে গেলো।
আমি খাট থেকে নিচে দাঁড়ালাম। অদিতি আমার দিকে তাকিয়ে বললো, মিলি তুই প্রথম কর। মিলি আমার দিকে এগিয়ে এলো আমি মিলিকে জড়িয়ে ধরে একটু চুমু খেলাম, ওর মাইতে একটু হাত দিলাম, তারপর ওর পুশিতে হাত দিয়ে ভালো করে চটকালাম, ভিজে একেবারে দই হয়ে আছে। অদিতির থেকে মিলির সেক্স একটু বেশি।
-আমি মিলিকে বললাম, চলো তোমার টেবিলে একটু পেছন দিকে হেলে উঠে বসো।
-কেনো। তুমি পাছুতে করবে নাকি।
-না রে বাবা না। পুশিতে।
-ঠিক আছে।
মিলি আমার কথা মতো টেবিলের কাগজ একদিকে সরিয়ে উঠে বসলো। আমি সাইজ করে নিয়ে আমার নুনুতে হাত দিয়ে ওর পুশির গর্তে রাখলাম, অদিতি নীচু হয়ে দেখছে। আমি একটা চাপ দিলাম, মিলি একটু পেছনের দিকে সরে গেলো।
-কি হলো লাগছে।
-না, তুমি করো।
আমি এবার একটু জোরে চাপ দিলাম, পুরোটা ঢুকে গেলো, অদিতির দিকে তাকিয়ে একটু হাসলাম, অদিতি আমায় চুমু খেলো এবার আমি কোমর দোলাতে শুরু করলাম, প্রথমে আস্তে পরে বেশ দ্রুত করতে লাগলাম, মিলি দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করছে আমার চোদন, আমার নুনুটা কেমন টন টন করছে, কিন্তু রস বেরোবার কোনো নাম গন্ধ নেই, আমি নীচু হয়ে মিলির বুকে মুখ দিলাম, মিলি একহাত পেছনে রেখে একহাতে মাই তুলে আমায় চোষায় সাহায্য করছে। মাই চুষতে চুষতে ওর ঠোঁটে চুমু খেলাম, মিলির চোখ বন্ধ, মিলি কোনো নড়া চড়া করছে না।
-কি হলো মিলি।
-একটু দাঁড়াও বার করো।
আমি বার করে নিলাম।
-অদিতি অনিদারটায় একটু মুখ দেতো।
অদিতি নীচু হয়ে আমার নুনুতে মুখ দিলো, এ এক নতুন অভিজ্ঞতা দারুন লাগছিলো।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে না থেকে মিলিকে চুমু খেলাম ওর মাই টিপতে শুরু করলাম, মিলি মিটি মিটি হাসছে, ব্যাপরটা এরকম “ফুল এন্টারটেইনমেন্ট”
-অদিতি এবার ঢুকিয়ে দে আমার ওখানে।
অদিতি বাধ্য মেয়ের মতো, আমার নুনুটা ধরে মিলির পুশির গর্তে রাখলো, অনিদা চাপ দাও।
আমি চাপ দিলাম।
-আরিবাশ কি সুন্দর ঢুকে গেলো রে মিলি। দারুন দেখতে লাগলো।
-এখন তুই দেখ এরপর আমি দেখবো।
আমি আবার করতে শুরু করলাম, এবার একটু জোরে আমার যেনো আর তর সইছে না। মিলি মিটি মিটি হাসছে আমার দিকে মুখ করে ওর চোখ দুটো ছোটো হয়ে আসছে, বুঝতে পারছি মিলির খুব আরাম হচ্ছে।
-অনিদা বার করো না। একটু দাঁড়াও।
হাসলাম। বেরিয়ে যাবে।
মিলি হাসলো, একটু সহ্য করে নিই। এভাবে কোনো দিন করিনি, সত্যি মার্ভেলাস এক্সপিরিয়েন্স হচ্ছে তোমার পাল্লায় পরে।
অদিতি আমার পায়ের কাচে হাঁটু মুরে বসে আমার বিচি চুষছে। মিলির পুশিতে আমার নুনু পুরো ঢুকে আছে। মিলি আমাকে জাপ্টে ধরে চুমু খেলো, আমার ঠোঁট চুষলো।
-নে অদিতি তুই একটু করে নে তারপর বিছানায় গিয়ে করবো।
আমি অদিতিকে দাঁড় করিয়ে সেইম ভাবে বসালাম। অদিতিকে করতে আরম্ভ করলাম, মিলি নিচে পায়ের কাছে বসে আছে, আমার করার চোটে টেবিলটা কেঁপে কেঁপে উঠছে, অদিতির মাই নাচা নাচি করছে, ও পা দুটো ফাঁক করে আমার হাত দুটো শক্ত করে ধরেছে, আমি মিটি মিটি হাসছি, অদিতিও হাসছে।
-অনিদা বার করো একটু চুষি।
আমি অদিতির পুশি থেকে নুনুটা টেনে বার করলাম।
মিলি সময় দিল না, সঙ্গে সঙ্গে মুখে পুরে নিয়ে চুষতে শুরু করে দিলো। আমি অদিতির মাই চুষছি, অদিতি আমার কানের লতিতে জিভ দিয়েছে
-অনিদা।
-উঁ।
-তুমি মিত্রাদিকে কোনো দিন করেছো।
-না।
-মিত্রাদি তোমায় পেলে ভীষণ সুখী হবে।
আমি হাসলাম।
-অদিতি একটি ফাঁক কর ঢুকিয়ে দিই। মিলি নীচ থেকে বললো।
অদিতি পা দুটো সামান্য ফাঁক করলো। বুঝতে পারলাম, মিলি ঠিক জায়গায় রেখেছে, আমি সজোরে চাপ দিলাম।
-অনিদা গো।
-কি হলো লাগল।
অদিতি ঠোঁট চেপে রয়েছে।
কয়েক মিনিটের মধ্যে আমি গোটা কুড়ি ঠাপ মারতেই অদিতি উঠে বোসে আমাকে জড়িয়ে ধরে, ওর পুশি দিয়ে নুনুটা কামরে ধরলো
-আরনা অনিদা আমার হয়ে যাচ্ছে। অদিতি আমার বুকে মুখ ঘসতে আরম্ভ করলো।
আমি এবার একটু ভয় পেলাম, কিরে বাবা এতবার করলাম, এখনো আমারটা বেরোলো না। তার মানে কোন সমস্যা হলো নাকি আমার এতটা দম নেই তো। মাথার মধ্যে কি যে হলো কে জানে, আমি মিলিকে বললাম, চলো, তোমায় একটু করি।
মিলি বিছানায় এসে শুলো আমি মিলির পাদুটো দুপাশে সরিয়ে ওর পুশির সামনে হাঁটু গেড়ে বসলাম, সত্যি আমার নুনু শক্ত হয়ে থর থর কাঁপছে, এবার মিলির পুশিতে ঢোকাতে বেশি বেগ পেতে হলো না, একবারেই ঢুকে গেলো। আমি দুহাতের ওপর ভর দিয়ে করতে আরম্ভ করলাম, মিলিও আমাকে নিচ থেকে সমান তালে সঙ্গত করছে, আমি গতি বাড়ালাম, মিলি আমাকে জাপ্টে ধরে পাদুটো দিয়ে পেঁচিয়ে আমার নাড়াচাড়া বন্ধ করে দিলো, বুঝলাম দুজনেরই একবার করে হয়ে গেলো, আমার কিছুতেই এখনো হলো না কেনো।
আমি অদিতিকে বললাম, অদিতি এসো আমার যে আশ মিটছে না তোমায় একটু করি।
অদিতি মিলির পাশে এসে শুলো। আমি অদিতিকে করতে আরম্ভ করলাম, অদিতি এবার দেখলাম নিজেও একটু একটু করে করছে আমি অদিতির বুকে মুখ দিয়ে ওর মাই চুষতে শুরু করলাম, বেশ কিছুক্ষণ করার পর দেখলাম, অদিতি আর পারছে না। আমার যেন মনে হলো এবার হবে। আমি থামাতে চাইলাম না। করেই যাচ্ছি, অদিতি আমাকে বলে উঠলো অনিদা আমি এত সুখ আর সহ্য করতে পারছি না, তুমি এবার মিলিকে করো।
মিলি পাশেই শুয়ে ছিলো, আমি মিলির বুকে উঠে করতে শুরু করলাম, সে এক দক্ষ যজ্ঞ যেনো, আমার নুনুর রস কিছুতেই বের হচ্ছে না, ভেতরে ভেতরে একটা প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে। আমার মধ্যে যেনো একটা পশুত্ব জেগে উঠলো। আমি যেনো মিলির পুশিকে নুনু দিয়ে দুমড়ে মুচড়ে একাকার করে দিচ্ছি। মিলি আমার সব অত্যাচার ঠোঁটে ঠোঁট চেপে সহ্য করছে, বেশ কিছুক্ষণ পর বুঝলাম, এবার আমার বেরোবে, আমি মিলির পুশি থেকে নুনু বার করে উঠে বসলাম, মিলি বুঝতে পেরেছে, মিলি তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠে আমার নুনুতে হাত পাতলো, অদিতিও এসে হাত পাতলো আমি অদিতিকে জড়িয়ে ধরে মাইটা চুষতে শুরু করলাম, মিলি আমার নুনুটা ধরে মাস্টার বাইটের মতো করছে, তারপর আমার রস বেরোতে আরম্ভ করলো, আমি মিলির বুক থেকে মুখ তুলে ওর কাঁধে হেলে পরলাম, ছিরিক ছিরিক করে আমার রস বের হতে আরম্ভ করলো, কতোক্ষণ বেরোলো আমি জানি না, আমি অদিতির কাঁধে হেলে পরে চোখ বন্ধ করলাম, অদিতি আমার বুকে হাত বোলাচ্ছে, কিছুক্ষণের মতো একেবারে ঝিমিয়ে পরলাম, যখন ঝিমুনিটা কাটলো দেখলাম, মিলি আমার নুনু চুষছে। অদিতি আমার বিচিতে হাত দিয়ে মোলায়েম ভাবে টিপছে। ভেতরে ভেতরে একটা অস্বস্তি।
-অনিদা।
-উঁ।
-তোমার কি এখনো বেরোবে।
-জানিনা।
-দেখো তুমি তো পুকুর করে দিয়েছো।
আমি অদিতির কাঁধ থেকে মাথা তুললাম, দেখলাম সত্যি মিলির হাত ভর্তি হয়ে বিছানায় গড়িয়ে পরে গেছে।
-তোমার কি এরকম বের হয় নাকি।
-না।
-তাহলে।
-বলতে পারবো না।
আমি উঠতে গিয়ে মাথাটা একটু টাল খেলো। ঘরে এসি চলছে, তবু আমি একটু একটু করে ঘেমে যাচ্ছি। ওদের কিছু বুঝতে দিলাম না। তিনজনে একসঙ্গে বাথরুমে গেলাম, আধুনিক বাথরুম বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই, একটু ফিচলেমি করলাম, ওদের পুশি আর মাই ধরে, একটু হাসাহাসি, তারপ জামা প্যান্ট পরলাম। বাইরের সোফায় এসে বসলাম, মিলি গরম গরম কফি করে নিয়ে এলো সঙ্গে ভুট্টার কর্ন।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
কফি খেতে খেতে নানা রকম গল্প হলো। মিলিরা নিজেদের কথা কিছু কিছু বললো, মিলির হাজবেন্ড এখন সেপারেশনের জন্য ফাইল করেছে, অদিতি দেবাশিষকে নিয়ে মোটেই সুখী নয়, তবে থাকতে হয় থাকছে। এই যা। আমি কাজের কথায় এলাম।
-তোমরা কিছু চাইলে নাতো আমার কাছে।
-এরপরও চাইবার কথা বলছো। অদিতি বললো।
-জীবনে চরম পাওয়া তোমার কাছ থেকে পেলাম।
মিলির চোখদুটো ভারি হয়ে গেলো। আমার কাছে এসে আমার কাঁধে মাথা রেখে বললো
-একটা অন্যায় করেছি অনিদা, তোমায় না জানিয়ে।
-অন্যায় করেছো। কোথায়।
-মিলি তোমায় শরবতি লেবুর সঙ্গে শিলাজিত খাইয়ে দিয়েছিলো।
আমি অবাক হবার ভঙ্গি করে বললাম, তাই। আমি তো কিছু বুঝতে পারলাম না।
-তোমার খুব কষ্ট হয়েছে, বিশ্বাস করো আজ দুজনে মিলে প্ল্যান করেছিলাম, তোমাকে নিয়ে এনজয় করবো। সেদিন তোমার বাড়িতে তোমার শরীরটা দেখে ঠিক থাকতে পারি নি।
হেসে ফেললাম।
-অদিতি আমায় বারণ করেছিলো, আমি শুনি নি।
-এই দেখো বোকার মতো কাঁদে। আমাকে ঠিক মতো চাইলেই পেতে, আমি সবার জন্য।
-কত দিন এনজয় করিনি জানো, প্রায় দুবছর।
আমি মিলির দিকে তাকালাম।
আমি মিলার মাইটা একটু টিপে দিলাম। এই মিলি।
-না না প্লীজ আর নয়, তুমি চাইলেও আর পারবো না।
-কেনো।
-তুমি যে ভাবে করলে, কোনোদিন ভুলবো না।
-ওটা আমি করিনি, তোমরা করিয়েছো।
অদিতি মাথা নীচু করে বসে আছে।
-এই ভাবে করে তোমরা স্যাটিসফায়েড।
-এ প্রশ্ন করো না, উত্তর দিতে পারবো না। কাম পাগল মেয়েদের কাছে স্যাটিসফেকসন।
-তোমার যেদিন ইচ্ছে করবে বলবে চলে আসবো। অদিতি বললো।
হাসলাম।
-আমরা তোমার জন্য যথাসর্বস্ব চেষ্টা করবো, আগামী মাসে আমাদের দুজনের কোম্পানীতেই সিক্স মান্থের বাজেট, তোমাকে যতটা বেশি সম্ভব পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো।
-চলো আর একবার করবো।
দুজনেই চেঁচিয়ে উঠলো , না।
দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকালাম, সাড়ে পাঁচটা।
-আবার কবে দেখা হবে।
-তুমি চাইলেই।
আমি উঠে দাঁড়ালাম।
-চলি তাহলে।
-চলি বলতে নেই অনিদা আসি বলো। অদিতি বললো।
-ওদের চোখ দুটো ছল ছল করে উঠলো। মিত্রাদি খুব ভাগ্য করে জন্মেছে, তোমার মতো একটা ছেলে পেয়েছে।
আমি দুজনের ঠোঁটে একটা করে চুমু খেয়ে বেরিয়ে এলাম।
ওদের হাত থেকে রেহাই পেয়ে নিচে এলাম, ওরা দুজনে কেউ নামলো না। মনটা ঠিক আজকের এই ব্যাপারটা মেনে নিচ্ছে না, এদের আজকের রিলেসনের ব্যাপারটা স্বতঃস্ফূর্ত নয়, তবু করতে হলো, মনে মনে নিজেকে বোঝালাম, ওরা ক্যাশে কোনো দিন যাবে না, সবসময় কাইন্ডের প্রত্যাশী। সামান্য এটুকু মেলামেশায় যদি দুজনের কাছ থেকে পঞ্চাশ কোটি টাকার ব্যবসা পাওয়া যায় ক্ষতি কি। ক্যাশ হলে দেবাশীষের মতো টেন পার্সেন্ট ছাড়তে হতো। আমার অফিসের এক মাসের মাইনে। ভাবতেই বুকটা কেমন ধড়াস ধড়াস করে উঠলো। অদিতি মিলি দুজনেই আমাকে কথা দিয়েছে, এ্যাডের ব্যাপারে তোমাকে কিছু চিন্তা করতে হবে না, আগামী মাসের প্রথম উইকেই তুমি নেক্সট তিন মাসের কনফার্মেসন পেয়ে যাবে। এও বললো দেবাশিষ, টিনা, নির্মাল্যকে বলার দরকার নেই। ওদের সঙ্গে তুমি আলাদা আলাদা ভাবে বুঝে নিও। তবে টিনা যে ভীষণ প্রিজার্ভ এটা ওরা স্বীকার করেছে। সত্যি কি মানুষের মন, তাই না, কতই রঙ্গ দেখবো দুনিয়ায়।
-দাদা যাবেন নাকি।
একটা ট্যাক্সি আমার সামনে দাঁড়িয়ে, ড্রাইভার জানলার কাছে এসে মুখ বাড়িয়ে বলছে। কখন যে বাইপাসের ওই ব্যস্ত রাস্তা পার হয়ে এপাশে চলে এসেছি মনে করতে পারছি না। চলো।
উঠে বসলাম, পকেট থেকে মোবাইলটা বের করলাম, সুইচ অফ। অন করলাম, প্রচুর মিস কল আর ম্যাসেজ ঢুকলো, দেখতে ইচ্ছে করলো না, মনটা কেমন ভারি ভারি। টিনার ব্যাপারটা স্বতঃস্ফূর্ত ছিলো এই ব্যাপারটা স্বতঃস্ফূর্ত নয়, এরা আমাকে শেষ পযর্ন্ত শিলাজিত খাইয়ে এই কারবার করবে, আমি ভাবতেই পারি নি। সেই জন্য তখন লেবুর রসটা একটু তিতকুটে স্বাদ লাগছিলো।
-কোথায় যাবেন? জানলা দিয়ে দেখলাম, পার্কসার্কাসের মুখে। না অফিসে যেতে ভালো লাগছে না। ঘড়ির দিকে তাকালাম, সাড়ে ছটা বাজে। বললাম ট্রাংগুলার পার্ক। সোজা অমিতাভদার বাড়ি চলে এলাম।
ট্যাক্সি থেকে নামতেই ভজু ছুটে এলো
-অনিদা এসে গেছো।
-কেনো রে।
-ওরা এখনো আসে নি।
-তাই।
-রান্না করবো।
-দাঁড়া।
আমি ভেতরে এলাম, ভজু সব আলো জ্বালায় নি। আমি ভজুকে বললাম, সব আলো জ্বালিয়ে দে। অন্ধকার অন্ধকার লাগছে। ভজু পটাপট সব আলো জ্বালিয়ে দিলো।
-কাজের মাসি এসেছিলো।
-হ্যাঁ। সব বাসন মেজে দিয়ে গেছে।
-তুই কিছু খেয়েছিস।
-না।
-কেনো।
-খিদে পায় নি।
-ঠিক আছে। দাঁড়া আমি স্নান করে নিই তারপর এসে রান্না বসাচ্ছি।
-এখন স্নান করবে।
-হ্যাঁ, আজ অনেক ঘোরা হয়ে গেছে।
-আমি আলু পেঁয়াজ কেটে রাখি।
-বেশি কাটিস না, কম কম করে কাট।
আমি ওপরে চলে এলাম, মনের ভেতরটা কেমন খচ খচ করছে, আমাকে আমার কেম্পানীর জন্য এতটা নামতে হবে ভাবতে পারি নি। কিন্তু নামতে হলো যখন তখন ঘোমটা দিয়ে লাভ নেই, এবার আমাকে অন্য খেলা খেলতে হবে। আমার আরো টাকা চাই।
বাথরুমে গিয়ে ভালো করে স্নান করলাম, যেন দেহের সমস্ত আবর্জনা ডলে ডলে পরিষ্কার করছি। হঠাত আজকে এরকম মনে হচ্ছে কেনো? এর আগেও তো আমি তনুর সঙ্গে মিশেছি, ঝিমলির সঙ্গে মিশেছি, নীপার সঙ্গে মিশেছি, শেষ টিনার সঙ্গে, মিত্রার কথা বাদই দিলাম। কোথায় তখন তো এরকম মনে হলো না। মনে হচ্ছে নিজেই নিজেকে জটিল আবর্তের মধ্যে জড়িয়ে ফেলছি।
-অনিদা আমার আলু কাটা শেষ।
বাথরুম থেকেই চেঁচিয়ে বললাম, একটু বোস। যাচ্ছি।
বেরিয়ে এসে পাজামা পাঞ্জাবী পরলাম। নিচে নেমে এলাম। ভজু চা করছে, আমায় এককাপ দিলো, নিজে এককাপ খেলো, বাইরে গেটে গিয়ে সিংজীকে দিয়ে এলো। সিংজীর সঙ্গে ভজু বেশ জমিয়ে নিয়েছে।
চা খাওয়া শেষে ভজুকে বললাম, তোদের জন্য কিছু খাবার কিনে নিয়ে আয়, আর মুরগীর মাংস কিনে আন, একটা ফ্রাইএর মতো করে কাটবি, আট পিসের বেশি করবি না, আর একটা মুরগী চিলি করবো সেই ভাবে পিস করে আনবি।
-ঠিক আছে।
আমি ওকে টাকা দিলাম, দেশি পেলে আনবি, না হলে পোলট্রি।
-আচ্ছা।
ভজু চলে গেলো। আমি রান্নাঘরে ঢুকলাম। তেল মশলা সব গোছালাম। ওরা কখন আসবে তাও জানিনা। ফোন করতে ইচ্ছে করছে না। বার বার দুপুরের কথাগুলো মনে পরে যাচ্ছে। চেষ্টা করছি না ভাবার জন্য, কিন্তু কিছুতেই মন থেকে সরিয়ে দিতে পারছি না। গ্যাস জালিয়ে গরম জল বসালাম। ভজু খুব তাড়াতাড়ি ফিরে এলো।
ভজুকে বললাম, কপিস নিয়ে এসেছিস।
-দুটো ভালো মুরগি পেলাম, বুঝেছো অনিদা, একেবারে দেশি। ১৪ পিস করলাম। আর একটা ছোটো ছোটো টুকরে করে নিয়ে এসেছি। হাড় বাদ দিয়ে।
-ঠিক আছে, টক দই নিয়ে এসেছিস।
-হ্যাঁ হ্যাঁ।
-তুই এদিকটা কেটে কুটে রেডি করে দে। আমি ওদিকটা দেখি।
-আচ্ছা।
ফোনটা বেজে উঠলো।
রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ফোনটা ধরলাম। মিত্রার ফোন।
-তুই কোথায়।
-বাড়িতে।
-বাড়িতে! এই সময়!! তুই কবে থেকে এত ভালো হলিরে।
-কখন আসছিস।
-কি করছিস।
-রান্না করছি।
-কি মজা, কি রান্না করছিস।
-আলুভাতে ভাত ডাল।
-তোকে কষ্ট করে করতে হবে না। আমরা গিয়ে করবো।
-ঠিক আছে।
-ছাড়িস না ছাড়িস না ধর ধর।
-কি রে অনি তুই এই সময় বাড়িতে শরীর খারাপ। বড়মার গলা।
-না।
-তোর গলাটা কেমন কেমন লাগছে।
-না না আজ কাজ করতে ইচ্ছে করছিল না চলে এলাম।
-তোকে কিছু করতে হবে না, আমি গিয়ে সব করবো।
-ঠিক আছে চলে এসো।
ফোনটা কেটে দিলাম।
-অনিদা আমি সব গুছিয়ে নিয়েছি।
-আচ্ছা।
অনেক দিন সেদ্ধ ডাল খাই নি, মসুর ডাল সেদ্ধ করলাম, শুধু মাত্র একটু তেল লঙ্কা দিয়ে বেশ ভারি ভারি করে, তারপর চিলি চিকেন বানালাম। ভজুকে বললাম, ডাল বাটতো।
-কেনো অনিদা।
-পাকোরা তৈরি করবো।
ভজু ডাল বাটতে গেলো, আমি ড্রইংরুমের ঘরিটার দিকে তাকালাম, সাড়ে নটা বাজে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
একটা ওভেনে চিকেন বাটারফ্রাই করতে আরম্ভ করলাম, ভজুর ডাল বাটা শেষ হলে আর একদিকের ওভেনে পকোরা তৈরি করতে শুরু করলাম।
বাইরের গেটে গাড়ির আওয়াজ পেলাম। বুঝলাম সবাই এলেন। ভজু বাইরে বেরিয়ে গেছে।
আমি রান্নাঘরে ভাজা ভাজি করছি। মিত্রা এসে ঝড়ের মতো ঢুকলো।
-আরিব্বাশ কি করছিস রে, বলে একটা গরম পকোরা তুলে নিলো, গালে পুরেই চেঁচিয়ে উঠলো বুবুন বুবুন ফুঁ-দে ফুঁ-দে, আমি ওর দিকে তাকালাম, ও হাঁ করে রয়েছে, হেসে ফেললাম, লোভী। আমি ওর হাঁ করা মুখে ফুঁ-দিলাম, বড়মা এসে রান্না ঘরের গেটে দাঁড়ালেন।
-কি করছিস।
-ফুঁ-দিচ্ছি। গরম মুখে তুলেছে ছেঁকা লেগে গেছে।
মিত্রার চোখ জলে ভরে উঠেছে। বড়মা হাসতে হাসতে ডাকলেন ও ছোটো দেখবি আয়।
আমি তখনো মিত্রার মুখে ফুঁ-দিচ্ছি।
ছোটমা আমার আর ওর অবস্থা দেখে হেঁসে কুটি কুটি খাচ্ছে।
-হলো।
-এতো গরম রান্না করে কেউ।
-তোকে কে খেতে বলেছে।
-ছোটমা একটা খাও দেখো কি দারুণ বানিয়েছে।
মিত্রা একটা তুলে ছোটমার মুখে গুঁজে দিলো একটা বড়মার মুখে।
আমি চিকেন ফ্রাইটা একটু উল্টে পাল্টে দিচ্ছি।
-বুঝলি মিত্রা তুই একটা ফাউ পেলি। ছোটমা হাসতে হাসতে বললেন।
-তা বলতে, রান্নার হাত থেকে বাঁচলাম।
-তা বাবুর্চি সাহেব আজকের মেনু।
ছোটমাকে বললাম।
-করেছিস কি তুই। সব শেষ।
-হ্যাঁ শেষের পর্যায়।
-স্যার আমাদের একটু যদি চা দেন।
তাকিয়ে দেখলাম মল্লিকদা। দাদা সোফায় বসে আছেন।
-আরিব্বাস আজ দেখছি রাজযোটক, সবাই একসঙ্গে, মনে হচ্ছে কিছু একটা স্ক্যাম হয়েছে।
-তোর জেনে লাভ। তোকে দুপুরে ডেকেছিলাম, তুই যাস নি।
-একটা চিকেন দিবি। দারুন ভাজছিস। রংটাও হেভি লাগছে।
-খাওয়ার সময় একটা কম পাবি। সব গোনা গুনতি।
-তুই একটা কম খাস। যে রান্না করে সে খায় না, বড়মাকে দেখিস না।
-ভাগ এখান থেকে।
-ছোটমা যাওনা একটা নিয়ে এসো না।
-তুই যা।
-একবারে আসবি না দেবো গরম খুন্তির ছেঁকা দিয়ে।
-সে কি রে। নিজে যখন তুলে খাস।
-আমি পকোরা ভাজা শেষ হতে কড়া নামিয়ে গরম জল বসালাম।
-ওটা কি করবি।
-তোমরা চা খাবে বললে।
-বাবাঃ তোর এতো টনটনে জ্ঞান। ছোটমা বললো।
-যা এবার বেরো, আমি করে নিচ্ছি। বড়মা আমার পাশে এসে দাঁড়ালেন, মিত্রা একটা ঠ্যাং তুলে নিয়ে খাচ্ছে। -বিউটিফুল।
-সেটা কিরে।
-ঠ্যাংটা।
-আমি ভাত বসাই নি। শেষে বসাবো ঠিক করেছিলাম।
-ঠিক আছে আমি দেখে নিচ্ছি। আমার গালে হাত দিয়ে বললো, তুই একেবারে ঘেমে গেছিস। যা যা জমা ছাড়।
-শুরু হলো।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম।
-তুই এতো ভালো রান্না কবে থেকে করতে শিখলি।
-তোর জেনে লাভ।
-তোকে দিয়ে মাঝে মাঝে রান্না করাবো। বড়মা আর একটা দেবে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, রেওভাটের মতো খেয়ে চলেছে।
-কিরে। বড়মা বললেন
-আর একটা ঠ্যাং।
-নে ওখান থেকে।
-সর সর বড়মা পারমিশন দিয়েছে।
মিত্রা আমাকে ঠেলে এগিয়ে গেলো।
-আর খাবি না।
-তুই এত ভালো রান্না করেছিস কেনো। না করলে খেতাম না।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে না হেসে পারলাম না, এতো পরিতৃপ্তি সহকারে খাচ্ছে, সমস্ত অভিব্যক্তি ওর চোখে মুখে ফুটে উঠেছে।
-রাতে আর খাবি নাতো।
-উঁ, বলেছে। সেই বিকেল থেকে কিছু খাই নি।
-হ্যাঁরে মিত্রা……
-ওঃ ওটা খাওয়া হলো নাকি, কয়েকটা কচুরী আর মিষ্টি। মল্লিকদাটা কিপ্টা, বললো অতো খেলে বাড়িতে গিয়ে আর খেতে পারবে না।
বড়মা ওর কথা শুনে হো হো করে হেসে ফেললেন।
আমার দিকে তাকিয়ে বললেন ফ্রিজে কিছু আছে।
-সকালের একটু তড়কারি, আর মাছ আছে।
-বড়মা আমার জন্য দুপিস।
-কিসের দুপিস রে। ছোটমা বললেন। ছোটমা রেডি হয়ে চলে এসেছেন।
-সকালের মাছ, মল্লিকদা তখন বললো না। মিত্রা বললো।
-রেখেছিস। আমার দিকে তাকিয়ে।
-আমি রাখি নি। ভজুকে বলেছিলাম, ও খায় নি।
-তুই ওকে খেতে দিস নি।
-কেনো দেবো না, আমি ও একসঙ্গে খেয়েছি।
-ছেলেটাকে না খাইয়ে মারবি নাকি।
-মহা মুস্কিল।
ভজু পেছনে দাঁড়িয়ে হাসছে।
আমি রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। সোফায় এসে বসলাম।
অমিতাভদা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, কি রে চা কোথায় গেলো।
-আসছে।
-তাহলে তুই কি করছিলি।
আমি চুপ থাকলাম। মিত্রা প্লেটে করে পকোরা নিয়ে এলো, সেন্টার টেবিলে রাখলো, একটা তুলে নিয়ে বললো
-এটা তোর ভাগেরটা নিলাম। তুই একটা কম খাস।
মিত্রা আজ খোশ মেজাজে আছে, ওকে দেখেও ভালো লাগছে। অনেক বেশি ঝরঝরে। দাদা একটা পকোরা তুলে নিয়ে মুখে দিয়ে বললো, টেস্টটা ভালো এনেছিস তো, কি দিয়ে বানালি।
-স্রেফ ডাল বাটা।
মিত্রা কয়েকটা নিয়ে এসে ভজুর হাতে দিলো। ভজুর মহা আনন্দ।
মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো, দিদিমনি চিলি চিকেন যখন বানাচ্ছিল অনিদা দারুন গন্ধ বেরিয়েছিলো।
-তাই, দাঁড়া একটু খেয়ে দেখি, মেখে ছিলো কে।
-আমি।
মিত্রা রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো।
ছোটমা চা নিয়ে এলো।
-হ্যাঁরে ডালে সম্বার দিস নি।
-না। ওই ভাবে খেয়ে দেখো না আজকে।
-তোর বড়মা তাই বললেন।
আমার মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বললো, তুই সবেতেই এক্সপার্ট।
সবাইকে আজ খুশি খুশি দেখছি। ঢুকলো সবাই যখন একসাথে, তারমানে একসাথেই কোথাও গেছিলো সব। এদের দুজনের কথাবার্তায়ও মনে হচ্ছে বেশ খোশ মেজাজেই আছে।
আমি চায়ে চুমুক দিয়ে দাদাকে বললাম, কাগজ দিয়েছে ওরা।
-হ্যাঁ হ্যাঁ, সনাতন সব দিয়ে গেছে, তোর ঝাড় খাওয়ার পর, ঠাকুর না কে এসেছিলো, যে গাড়ির ব্যাপারটা দেখে।
-কি বললো।
-সনাতন বললো, সে নাকি স্যারেন্ডার করেছে। ব্যাপারটা কি বলতো। তুই পটা পট বিজ্ঞদের মতো সব বলে গেলি, ওরাও মেনে নিলো।
আমি বললাম, প্রত্যেকটা গাড়ি পিছু, তেল কিলোমিটার মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো টাকা কিংশুকের পকেটে আসে, আমাদের চারশো গাড়ি আছে, তাহলে বোঝো কত টাকা মাস গেলে ওর পকেটে আসছে। পেমেন্ট যেহেতু ওর হাত দিয়ে যাচ্ছে, অতএব টাকা ওর কাছেই আসবে।
-তুই ধরলি কি করে। আমি কাউকে বলবো না। বল। তোর কাছ থেকে এই গোয়ান্দাগিরিটা শিখতে হবে।
আমি ফিক করে হেসে ফেললাম, মিত্রা বড়মা এসে আমার দু পাশে বসলো, দুজনের হাতেই চায়ের গ্লাস।
-সর না দুকাঠা জায়গা নিয়ে বসে আছিস কেনো।
আমি একটু সরে বসলাম।
-হ্যাঁরে তুই পাকোরাতে কি দিয়েছিস রে।
-কেনো।
-একটা বেশ ভালো গন্ধ ছাড়ছে।
-তোমার ওখানে চাউমিনের মশলা ছিলো একটু দিয়ে দিয়েছি।
-এই বুদ্ধিটাতো কোনো দিন খাটাইনি।
-দিলে তো সব মাটি করে।
-আ মরন, কি হলো আবার।
-আমি অনির কাছ থেকে গোয়েন্দাগিরি শিখছিলাম।
-এই বুড়ো বয়সে। অনি একবারে বলবি না। ও যেমন আছে তেমন থাক। ছেলেটা আগুনের সামনে তেকে সবে উঠে এলো, ওমনি খোঁচানো শুরু হয়ে গেছে না।
-দেখলি অনি, তুই এবার বল কার দোষ।
-ছোটমা আর চা আছে।
ছোটমা রান্নাঘর থেকে বললো, কেনো রে।
-একটু নিয়ে এসো না। তিনজনের জন্য।
-দেখো দেখো কে কাকে দেখে। তুমি নিজে এক গ্লাস নিয়ে এসে বসে গেলে।
-কেনো তুমি খাও নি, তোমায় না দিয়ে গিলছি নাকি।
অমিতাভদা চুপ করে গেলেন।
-মাসে এক লাখ টাকা মানে বছরে বারো লাখ সরাতো। অমিতাভদা বললেন।
-এবার ওটা ব্যাঙ্কে যাবে ঋণ শোধ হবে।
বড়মা আমার দিকে তাকালেন।
-এই ভাবে তুমি যদি দেখো, তাহলে মাসে ড্রেনেজ মানি প্রায় ৫০ লাখ টাকা। বছরে কতো।
দাদা আমার দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে।
-৬ কোটি
-বলিস কি!
-এটাতো খুব সাধারণ ব্যাপার। এ্যাডের ব্যাপারটা যদি তোমায় বলি, তুমি হার্ট ফেল করে যাবে।
-কি রকম।
-আমি এই কদিনে কত কোটি টাকার এ্যাড কালেকসন করেছি।
-১২৫ কোটি।
-এর থার্টি পারসেন্ট আমার কমিশন। তাহলে কত কোটি হলো।
-যাঃ তুই গাঁজাখুরি গল্প বলছিস।
-না দাদা ও ঠিক বলেছে। আমি ওর ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। মিত্রা মাথা নীচু করে বললো।
চম্পকদা, সুনীতদা এই করে ওই জায়গাটা কিনেছিলো, বকলমে মলের সঙ্গে পার্টনারশিপ করে, নতুন কাগজ বার করবে। কতদিয়ে কিনেছিলো শুনবে।
-কতো।
-৭৫ কোটি টাকায়, তিনটে ফ্লোর ৩০০০০ স্কয়ার ফিট।
ছোটমা কখন এসে চেয়ার নিয়ে বসেছে, জানিনা, ওরা সবাই অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে।
-এতো টাকা এরা পেলো কোথায়। বুঝে দেখো।
-কাগজ কে করবে।
-সুনীতদা এডিটর, চম্পকদা এ্যাড দেখবে। তোমার হাতের তৈরি ছেলেগুলোকে নিয়ে পালিয়ে যাবে, কাগজ তৈরি হয়ে যাবে।
-মিত্র আমাকে মালিক বানাবার আগে আমার কাছেই অফার ছিলো, যখন দেখলো আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না, তকন ফোটাবার ধান্দা করলো, কিন্তু মিত্রা যে আমার পূর্ব পরিচিত এটা ওরা ঠিক বুঝতে পারে নি। তাছাড়া তুমি বছরখানেক আগে একবার ওদের ক্লাবের একটা প্রোগ্রামে আমাকে পাঠিয়েছিলে, সেই দিন ওকে দেখলাম, ওর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে আলাপ করালো ও। ওর বাড়িতে গেলাম। প্রায় ছবছর পর দেখা।
-ছয় না আট বছর। মিত্রা বললো।
-এরপর মিত্রা যে ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে যেতে পারে ওরা তা ভাবে নি।
-আমার মালিক হওয়ার সংবাদ যখন পাকা হয়ে গেছে মিত্রার সৌজন্যে তখন ওরা তড়িঘড়ি ঘর গোছাতে গেলো, বেশ ফাঁদে পা দিলো, আমি সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম। দেখলাম ওরা টোপ গিললো, ইসলাম ভাইকে সব বললাম। মেইন অপারেটর ও। আমি জানতাম ও বিগড়ালে ভজুর মা দামিনী মাসি আছে। কাজ আমি বার করে নেবই। তা ইসলাম ভাই আমাকে ভালবাসে, সে মযার্দাটুকু রেখেছে। ওকে একসময় আমি ভীষণ হেল্প করেছিলাম।
-মেরিনা মাসি যখন ছিলো তাই না অনিদা। ভজু বললো।
-তোর মনে আছে।
-হ্যাঁ।
ভজু আমার অনেকদিনের সঙ্গী।
ছোটমা উঠে গিয়ে ভজুর মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো নেড়ে দিলেন, ভজু ফিক ফিক করে হাসছে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
নাও অনেক গল্প হলো, এবার খাবার বন্দোবস্ত করো। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, কিরে তুই কাপর ছাড়বি না।
-খেয়ে নিই।
-পেট ঠিক আছে।
-খারাপ হতে যাবে কেনো।
-ঠিক আছে।
সবাই একসঙ্গে খেতে বসলাম, আমি মাঝখানে, আমার একপাশে মিত্রা একপাশে বড়মা, আর আমাদের মুখোমুখি ছোটমা, মল্লিকদা অমিতাভদা। নিচে ভজুর আসন করা হয়েছে, ভজু নিচ ছাড়া কোথাও বসবে না, সকালেও আমি টেবিলে বসে খেয়েছি ভজু নিচে। আজ বুফে সিস্টেম যে যার ইচ্ছে মতো নিয়ে খাও। তবে বড়মা ছোটমাই সব দিচ্ছেন।
আমি মিত্রার পাতের দিকে তাকালাম।
-একবারে হাত দিবি না। নিজেরটা সামলা।
-তখন দু পিস মেরেছিস।
-বেশ করেছি তোর কি। পারলে তুইও খা।
-হাগুড়ে।
মিত্রা ডালে চুমুক দিলো।
-ডালটা দারুন বানিয়েছিস। বড়মা একবাটি আলাদা করে সরিয়ে রাখোতো।
-কেনো গিলবি।
-তুই কথা বলবি না আমি বড়মার সঙ্গে কথা বলছি।
ছোটমা মল্লিকদা মুচকি মুচকি হাসছে। দাদা গম্ভীর হওয়ার অভিনয় করছে, বড়মা চুপচাপ।
-কাল যেতে হবে, রাস্তায় যদি গাড়ি থামাতে বলিস………খুব আস্তে চিবিয়ে চিবিয়ে বললাম। তবে সবাই শুনতে পেয়েছে।
-আচ্ছা তুই খা না, ওকে ওর মতো খেতে দে, ওর খুব খিদে পেয়েছে আজ। অমিতাভদা বললেন।
মিত্রা আমার দিকে তাকালো, ভাবটা এরকম বোঝ এবার।
-হ্যাঁরে অনি তুই চিলি চিকেন তৈরি করা শিখলি কোথা থেকে। বড়মা বললেন।
-ভজুরাম বলে দাও তো।
-আমরা দুজনে কয়েকমাস রামবাগানের একটা হোটেলে কাজ করেছিলাম।
বড়মা আমার মুখের দিকে তাকালেন। মিত্রা আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে, আমি ওর পাত থেকে একটা মাংসের টুকরো সরিয়ে দিলাম, ছোটমা দেখে মুখ টিপে হাসলো।
-তোর আর কি অভিজ্ঞতা আছে বলতো। বড়মা ভাতে ডাল মেখে বললো।
-সব একদিনে হলে হয় কি করে বলোতো, তুমি মিত্রাকে ঠ্যাং খাওয়াবে আমার জন্য কিছু রাখবে না।
-শয়তান, তুই আমার পাত থেকে তুলে নিয়েছিস। আমি এখানে রেখেছিলাম দে আগে।
আমি তখন মিত্রার পাত থেকে তুলে নেওয়া ঠ্যাংটা সাঁটাতে আরম্ভ করেছি। ও আমার মুখ থেকে ওটা কেড়ে নিয়ে বাকিটা খেয়ে নিলো।
সবাই হো হো করে হাসলো।
-যাই বল চিলি চিকেনটা হেবি বানিয়েছিস। মল্লিকদা বললেন।
-ছোটমা ভাত।
আমার পাতে ভাত পরলো।
-কিগো ডালের কোনো কমেন্টস পেলাম নাতো। বড়মার দিকে হেলে বললাম।
-তোর কাছ থেকে রান্নাটা শিখতে হবে।
-খালি আমি শিখতে গেলেই বয়েস হয়ে যায় না।
-চুপ করো। জীবনে নিউজ ছাড়া কিছু শিখেছো।
আমি মুচকি মুচকি হাসছি, কি গো মাছ কোথায় গেলো।
বড়মা জিভ বার করলেন। ছোটমা দেখে হেসে ফেললেন।
-একবারে নিয়ে আসবে না। ওটা আমাদের তিনজনের জন্য, সকালে ওরা খেয়েছে। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো।
-তুই একা খা না। বুঝেছি আজ তোর শরীর ভালো হয়ে গেছে। ওষুধ পরছে তো। খিদে পাবেই। ওখানে চ পান্তা গেলাবো।
-চিংড়িমাছের টক।
-সব।
ছোটমা উঠে মাছের বাটি নিয়ে এলেন।
-উঃ সাইজ কি পাবদা মাছের। দাদাকে একটা মল্লিকদাকে একটা দিয়ে দাও, বাকিটা তোমার ও পাশে রেখে দাও। একবারে এপাশে নয়, তাহলে কিছু জুটবে না।
বড়মা হেসে ফেললেন। ও ছোটো তোরা তখন ওকে বেশি করে কচুরি খাওয়াতে পারতিস।
-ভাত নিবি না।
-না।
-কেনো।
-এগুলো খেতে হবে না।
-এতো খাবি। নির্ঘাত আজ রাতের ঘুমটা ভালো হবে না।
-না হোক।
-অনি তুই তোর অভিজ্ঞতাগুলো লিখে রাখিস?
-হ্যাঁ।
-একটা কাজ কর।
-একবারে কাগজের জন্য লিখবি না। বড়মা বললেন।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললেন।
-তোমরা ওকে পয়সা দেবে।
-বুঝলি কিছু অনি তোর বড়মার কথা। কার সঙ্গে ঘর করলাম বল তিরিশ বছর।
অমিতাভদা এমন করে বললো, সবাই আবার হেসে ফেললো।
-আমায় একটু চিলি চিকেন দেবে। বড্ড ভালো রেঁধেছে অনি।
মিত্রা মাতা নীচু করে মুখ টিপে হাসলো।
ছোটমা অমিতাভদার পাতে দিলেন। মল্লিকদা নিস্তব্ধে খেয়ে যাচ্ছে।
আমি কবিতা আওড়ালাম, “আমসত্ব দুধে ফেলি তাহাতে কদলি দলি/ হাপুশ হুপুশ শব্দ, চারিদিক নিস্তব্ধ/ পিঁপড়া কাঁদিয়ে যায় পাতে’’।
-এটা আবার কে রে। বড়মা বললেন।
মল্লিকদার গলা পেলাম, বুঝলে না আমায় আওয়াজ দিলো।
আমি চুপ।
-বুঝলি অনি ভালো জিনিষের কদর করতে হয় নিস্তব্ধে।
ছোটমা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
-শোনো বড়, অনির একটা আলাদা পাঠক আছে, তারা অনির লেখা পড়তে ভালোবাসে, ও লিখতে শুরু করলেই কাগজের সার্কুলেশন বাড়বে, সার্কুলেসন বাড়া মানেই এ্যাড আসবে। এ্যাড আসা মানে ঋণ শোধ হবে।
-ও বাবা এতো আছে, তাহলে তুই লেখ অনি।
আবার সকলে হেসে উঠলো।
-কাল কখন বেরোবে।
-পাঁচটা।
-তারমানে চারটে থেকে তোড়জোড় চলবে।
-কাকে যেতে বলেছিস। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম।
-তুই যেরকম বলেছিস সেরকম ব্যবস্থা করেছি।
-কি রকম।
-রবীন যাবে, বড় গাড়ি আসবে।
-অনাদিকে ফোন করেছিলি।
-আমি করিনি। নীপা ফোন করেছিলো। বলে দিয়েছি।
-বেশ।
-তোমাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। অমিতাভদার দিকে তাকালাম।
-ভজু আছে।
-কিরে ভজু পারবি তো।
-খুব পারবো, তোমায় চিন্তা করতে হবে না।
-ও বাড়ির কি ব্যবস্থা করলি।
-বুড়ীমাসি আসবে। সব তালা দিয়ে দিয়েছি। ওরা তো আছে।
-কিছু খুলে রেখে আসিস নি তো।
-ছোটমা তালা দিয়েছে। আমি দিই নি।
-যাক রক্ষে, না হলে তোর তালা লাগানো, তালা তালার মতো ঝুলবে, কিন্তু দেখা যাবে কেউ এসে ঢুকে গেছে।
-হ্যাঁ তোকে বলেছে।
খাওয়া শেষ হলো। আমি ওপরে উঠে এলাম। মিত্রা এলো একটু পরে।
-যাই বল বুবুন তুই আজ দারুন রান্না করেছিস, সবাই খুব তৃপ্তি করে খেলো।
-তুই।
-আমার কথা বাদ দে। আমি তো হাগুড়ে।
হাসলাম। মিত্রা কাপর খুলছে, ব্লাউজ খুললো
-দে ফিতেটা একটু আলগা করে। আমি ওর ব্রার ফিতেটা খুলে দিলাম, ব্রাটা বুক থেকে খসে পরলো, আমি ওর মাইটা একটু টিপে দিলাম।
-তুই শুরু করলি মনে থাকে যেন।
-না আজ কোনো কিছু নয়।
ও এগিয়ে এসে আমার পাজামার ওপর দিয়ে নুনুটা মুঠো করে ধরলো।
-আঃ।
-কি হলো।
-তুই তো আমার লোমটোম ছিঁড়ে দিবি।
-খোল একটু হাত বুলিয়ে দিই।
-না। বাথরুমে যাবি।
-হ্যাঁ, যা খেলাম পটি না করলে হজম হবে না।
-ছোটমার কাছ থেকে কার্মোজাইম খেয়ে আয়।
-খেয়ে এসেছি।
-যা বাথরুমে যা। আমি শুলাম।
-না এখন শুবি না। আমি ঘুরে আসি তারপর।
মিত্রা টাওয়েলটা নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো। আমি আমার কাগজপত্র গুলো গুছিয়ে নিলাম, চিকনার ডিডটা দেখলাম, হ্যাঁ হিমাংশু বাংলায় লিখে পাঠিয়েছে। অফিসের কাগজগুলো উল্টে পাল্টে দেখে নিলাম। হ্যাঁ সব ঠিক আছে। ওখানে গিয়ে মিত্রাকে অনেক কাজ শেখাতে হবে। না হলে আমার অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে যাবে।
মিত্রা বাথরুম থেকে বেরোলো, বুকের ওপর টাওয়েলটা বেঁধে বেরিয়ে এসেছে। আমি ওর দিকে তাকালাম।
-তাকাস না তাকাস না। অনেক দেখেছিস।
আমি উঠে দাঁড়ালাম।
-বুবুন খারাপ হয়ে যাবে বলে দিচ্ছি, একবারে কাছে আসবি না।
-তখন খামচে ধরেছিলি না।
-ঠিক আছে আর করবো না, প্রমিস।
মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বললাম প্রমিস, প্রমিস দেখানো হচ্ছে।
-আমি চেঁচাবো।
-চেঁচা। দেখি কত তোর গলার জোর।
-আমি বাথরুমে ঢুকে যাবো।
-ছিটকিনি দিয়ে দেবো, সারারাত থাকতে হবে।
-ঠিক আছে ঠিক আছে, আর কোনো দিন হবে না।
-ছেড়ে দিলাম মনে রাখবি।
-ওই হোল্ডঅলটার ওপরের চেন টেনে আমার ম্যাক্সিটা দে।
-নিজে নিয়ে নে।
-দে না।
-আমি ম্যাক্সিটা বার করে ওর দিকে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম। খাটের ওপর গিয়ে বসলাম, কাগজগুলো গুছিয়ে একটা ফাইল টেনে নিলাম।
মিত্রা ম্যাক্সিটা পরে চুল আঁচড়াচ্ছে।
-এগুলো কি আজ বুঝবি, না ওখানে গিয়ে বুঝবি।
-কি বলতো।
-চিকনার ব্যাপারটা।
-ওখানে গিয়ে।
-টাকা তুলেছিস।
-হ্যাঁ।
-কতো।
-২ লাখ। তুইতো তাই বলেছিলি।
-ঠিক আছে। লাগলে আবার এসে নিয়ে যাবো।
-সনাতনবাবু ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়ার স্লিপগুলো তোকে দিয়ে সই করাচ্ছে।
-হ্যাঁ।
-তুই লিখে রাখছিস ডাইরিতে।
-হ্যাঁ। তুই যা যা বলেছিস আমি তাই করছি, একেবারে অক্ষরে অক্ষরে।
আমি টেবিলে গিয়ে ফাইলটা রাখলাম। মিত্রা মুখে লোসন লাগাচ্ছে। শুলাম, কালকে রেডি হয়ে ডাকবি, তার আগে ডাকবি না।
-দাঁড়া তোকে শোয়াচ্ছি।
-আবার শুরু করলি।
-আমি কিন্তু এখন টাওয়েল পরে নেই।
হাসলাম।
মিত্রা নিজের কাজ শেষ করে বিছানায় এলো, সরে শো।
-বিরক্ত করিস না, তুই ওই পাসে গিয়ে শো।
-না আমি ধারে শোবো, তুই সরে যা।
আমি সরে গেলাম, ও শুলো।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
অনেক দিন থেকে লক্ষ্য করছি মিত্রা এখন মাথায় আর সিঁদুর দেয় না। মাঝে মাঝে ভাবি ওকে একবার জিজ্ঞাসা করি, তারপর আর জিজ্ঞাসা করা হয় না, এখন ও চুলটা উল্টে আঁচড়ায়, বয়সটা যেন কয়েক বছর কমিয়ে ফেলেছে। মিত্রা আমার দিকে ফিরে শুলো, আমার বুকে ওর মুখটা রাখলো।
-বুবুন।
-উঁ।
-তুই কি ভাবছিস বলতো। অনেকক্ষণ থেকে তোকে লক্ষ্য করছি।
-কি ভাববো, কিছু না।
-তুই লুকাচ্ছিস কেনো। বল না।
-সত্যি আমার ভাবার আর কি আছে, কে আছে কার জন্য ভাববো। তোর কোম্পানীর ভবিষ্যত ভাবছি, যা জটিল পরিস্থিতি, যত ঢুকছি, তত যেন গাড্ডায় পরে যাচ্ছি।
-আজকে কোথায় গেছিলাম জিজ্ঞাসা করলি না।
মিত্রার দিকে তাকালাম, আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। চোখে অনেক প্রশ্ন। আমার কপালে হাত দিলো। চোখের পাতায় হাত দিলো।
-তোকে অনেক কষ্ট দিচ্ছি। কি করবো বল, আমার কে আছে, তুই ছাড়া, আমাকে সবাই ঠকিয়েছে।
-আবার মন খারাপ করে।
-তুই বিশ্বাস কর, অনেক চেষ্টা করি, পারি না। তোকে না পেলে হয়তো জীবনটা শেষই করে ফেলতাম।
-কেনো। এতটাই দুর্বল তুই, আগেতো এরকম ছিলি না।
-সত্যি চাপ কি জিনিষ জানতাম না, শয়তানগুলোর হাতে খেলার পুতুল হয়ে গেছিলাম, কেউ তখন আমার পাশে এসে দাঁড়ায় নি, যাকেই বিশ্বাস করেছি সেইই সব কিছু নিয়ে ভেগে পরার ধান্দা করেছে, এমন কি শরীরটাকে পযর্ন্ত বাদ দেয় নি।
-কে সে বলতে পারবি।
-তুই তাকে শাস্তি দিবি, কিন্তু আমার ছটা বছর ফিরিয়ে দিতে পারবি?
-অন্ততঃ শাস্তি পেয়ে সে এইটুকু বুঝুক তার অন্যায় হয়েছিলো।
-পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে, জানিষ তারা এই জন্য পৃথিবীর আলো দেখে।
-কে সেই ব্যক্তি বললি না।
-আবার কে ওই অমানুষটা।
-সেদিন তুই ওর কাছে গেছিলি কেনো।
-আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলো।
-কেনো।
-ও ভেবেছিলো তোর গলায় মালিকানার লকেট ঝুলিয়ে দিয়ে ও পেছন থেকে খেলবে। তুই একটা গ্রামের ছেলে, গর্ধভ, ওর কাজ গোছাতে অনেক সুবিধা। আমি তোকে জানতাম, তোর সঙ্গে যে আমার একটা রিলেশন ছিলো, তা ওকে বলি নি, বলেছি ফাইনাল হওয়ার পর। আমি সেই সুযোগটা নিলাম। আমার এ ছাড়া বাঁচার কোনো পথ ছিলো না।
-কাঁদবি না, কান্নাকে আমি ঘৃণা করি। পৃথিবীটা কেঁদে ভাসাবার জায়গা নয়, এখানে তোকে লড়ে অর্জন করতে হবে, সোজা আঙুলে না উঠলে বাঁকা আঙুল দেখাতে হবে।
-কাউকেতো আমার বুকটা দেখাতে পারি না, তাই কাঁদি। তুইও মাঝে মাঝে অবুঝপনা করিস।
-বল সেগুলো আমায়। না বললে আমিই বা বুঝবো কি করে কোনটা আমার ভুল কোনটা ঠিক।
-তুই শুনবি আমার কথা।
-শোনার মতো হলে নিশ্চই শুনবো। আমি কাজ করতে চাই, প্রথমে ঘর গোছাবো তারপর শেষ করবো।
-তুই কেনো মলকে সরাতে গেলি, ও তোর প্রতি রিভেঞ্জ নেবে। আমি ওকে চিনি। এতদিন আমাকে দেখিয়ে ওর ব্যবসা করেছে। ক্লাবে কি আমি ইচ্ছে করে গেছি। তুই দেখেছিস কোনো দিন, সেই লাইফস্টাইল কি আমার ছিলো।
-জানি।
-ওরা আমাকে যেদিন টোডির বিছানায় তোলার চেষ্টা করলো সেদিনই আমি সব বুঝতে পারলাম, নিজেকে বাঁচাতে ওরা যা যা বলেছে, তাতে সই করেছি। ওরে ঘর শত্রু যে বিভীষণ আমি কি করবো।
আমি মিত্রার মুখটা বুক থেক তুললাম
- টোডি কে!
-ও বম্বেতে থাকে প্রচুর ক্ষমতা।
-কি করে বুঝলি
-সেন্ট্রালের অনেক মিনিস্টারের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক।
-বেশ, সেই কারণে তার প্রচুর ক্ষমতা। পাগলী।
-আরো আছে। সিআইআই, ফিকির মেম্বার।
-তোকেও বানিয়ে দেবো। তুই জানিষ না, একটা কাগজের ক্ষমতা কতটা।
-সেটা এখন বুঝছি, আগে বুঝতাম না, তুই সেদিন যেভাবে মন্ত্রীটার সঙ্গে কথা বললি, সেদিন একটু একটু বুঝলাম।
-তোর কি মনে হয় আমি পারবো।
মিত্রা আমার বুকে চুমু খেলো
-তোর জন্য আমার বুকটা মাঝ মাঝে ফুলে ওঠে।
-বেশি ফোলাস না দেখতে বাজে লাগবে।
-দেখেছিস। হাসলাম।
-আজকে তোর জন্যই এক জ্যোতিষির কাছে গেছিলাম সবাই।
-আমার জন্য। জ্যোতিষি, সে আবার কি করবে।
-তোর ভবিষ্যত জানতে।
-কার কালেকসন।
-ছোটমার।
-জ্যোতিষি আমার কি ভবিষ্যত বলবে, ও ওর ভবিষ্যত বলতে পারবে।
-এই কথাই সেও বললো।
-কি বললো, ভেরি ইন্টারেস্টিং।
-বড়মা বারণ করেছে তোকে বলতে।
-তাহলে বলিস না।
-তোকে না বললে আমার পেট ফুলে যাবে।
-তাহলে বল।
-তোকে কেউ আটকাতে পারবে না। তুই যে কাজ করবি সেই কাজে সাকসেস হবি। তুই একগুয়ে গোঁয়াড় কারুর কথা শুনবি না।
-আর।
-তোর প্রচুর শত্রু। কিন্তু সবাই তোর কাছে মাথা নোয়াবে।
-তাহলে আমি রাজা লোক বল।
-তুই কিছুতেই সিরিয়াস নস, দেখ তুই কি ভাবে কথা বলছিস।
-তোর মাই দুটো কি ভারিরে, বুক ফেটে যাচ্ছে।
-দেখ দেখ তুই কি রকম।
-আচ্ছা নিজেরটা গুছিয়ে তোকে ছেড়ে কবে পালিয়ে যাব বল।
-তুই আমাকে ছেড়ে কোনোদিন পালাতে পারবি না।
-কেনো।
আমাকে আলাদা ডেকে জিজ্ঞাসা করেছিলো, আমার সঙ্গে তোর ফিজিক্যাল রিলেসন হয়েছে কিনা।
-তুই বোকার মতো সত্যি কথা বললি।
-যা হয়েছে তাই বলেছি, বোকার মতো কেনো।
-তুই বলতে পারতিস হয় নি। তাহলে দেখতিস অন্য কথা বলছে। সব বুজরুকি।
-ঠিক আছে বুজরুকি, তোর ভূত ভবিষ্যত বললো কি করে।
-সেটা কি রকম।
-তোর মা বাবা নেই, তুই পড়াশুনায় দারুণ।
-বলে নি আমি গ্রেট মাগীবাজ।
-সত্যি কথা বলবো।
-বল।
-আমাকে সে কথাও বলেছে। তোর বহু নারীসঙ্গ আছে, আমি যদি তোর সঙ্গে থাকতে চাই তাহলে আমাকে মেনে নিতে হবে।
বুকটা ধড়াস করে উঠলো, মিত্রা আমাকে বুঝতে চাইছে, নাকি জ্যোতিষের গল্প ফেঁদে……।
-নারীসঙ্গ হয়েছে না হবে।
-তা বলতে পারলো না। তবে তোর নারীসঙ্গ আছে।
-এই তো তোর সঙ্গে করছি।
মিত্রা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।
-দিনরাত যখনই সুযোগ পাই তোর মাই টিপি পুশিতে হাত দিই, নুনু খাঁড়া হলে তোর পুশিতে ঢোকাই।
-দেখেছিস তুই। এই সম্বন্ধেও বলেছে।
-কি বলেছে।
-তোকে বোঝা খুব মুস্কিল। কিন্তু তুই যাকে একবার ভালোবাসবি, তার জন্য তুই জীবন দিবি।
-তোর জন্য অবশ্যই এ কাজ করবো না।
-সেই জন্য দুরাত জেগেছিস, রবীনের পেট থেকে কথা বার করে, আমার পৌঁছবার আগে বাড়িতে পৌঁছেছিলি, আমাকে তেঁতুল খাইয়ে বমি করিয়েছিলি, বুড়ীমাসিকে দাঁড় করিয়ে বমি পরিষ্কার করেছিলি, সকালে আমার হাতে একটা ঠেসে থাপ্পর খেয়েছিলি, নিজে কেঁদেছিস, আমাকে কাঁদিয়েছিস, জ্বর হয়েছে রাত জেগেছিস, সারারাত জেগে জেগে মাথায় জলপট্টি দিয়েছিস, আমাকে সুস্থ করে তোলার জন্য নীচ থেকে তেল গরম করে এনে আমার সারা শরীর মালিশ করেছিস।
আমি মিত্রার মাথাটা ধরে বুকে চেপে ধরলাম
-ছাড় আমাকে, বলতে দে, আমারও কিছু বলার থাকতে পারে, আমারও কিছু চাওয়ার থাকতে পারে তোর কাছে, সেটা কোনোদিন বোঝার চেষ্টা করেছিস।
কিছুক্ষণ চুপচাপ
-এরপর কাঁদলে, বলবি কাঁদবি না আমি কান্নাকে ঘেন্না করি। কান্না ছাড়া একটা মেয়ের বলবার কি আছে বলতো। বড়মাকে দেখেছিস, ছোটোমাকে দেখেছিস, তারা তোর সামনে কাঁদে না, তোর আড়ালে তারা বালিশ ভেঁজায়, তোর চোখ আছে সেগুলো দেখার। কেন! কেন! কেন! তারা কাঁদবে তোর জন্য। তুই কে!
আমি মিত্রার মুখটা বুকে চেপে ধরে আছি, বুঝতে পারছি মিত্রার চোখ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা জল পরছে, কিছু বললাম না, ভাবলাম একটাই কথা, আমি কি আমার অজান্তে এদের কোথাও আঘাত করে ফেলেছি, যর জন্য ওদের রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে মিত্রা এসব কথা বলছে। খেয়াল করতে পারছি না। এদিকটা এত দিন ভাবি নি, আমি দাদা মল্লিকদার সেফটির কথা ভেবেছি, ওদের আশ্রয় পাকা করেছি, আমি থাকতে ওদের কোনো অসুবিধে হবে না। মিত্রাকে এই মুহূর্তে একটা জায়গায় নিয়ে এসে দাঁড় করিয়েছি, আরো অনেক কাজ বাকি, ওপর তলার কিছু লোককে ছাঁটতে হবে। এই মুহূর্তে নয়, আমাকে আরো ছমাস অপেক্ষা করতে হবে। তার আগে ওখানে দুটো উইং বার করে নিতে হবে। অনাদি চিকনা সেটা পারবে বলে মনে হচ্ছে, প্রত্যেক মানুষের একটা স্বপ্ন থাকে, অনাদির রাজনৈতিক কেরিয়ারের স্বপ্ন আছে, আমাকে সেটা কাজে লাগাতে হবে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
-কিরে আবার নিজের মধ্যে ডুবে গেছিস।
মিত্রার দিকে তাকালাম। চোখের পাতা ভেঁজা ভেঁজা। আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। হাসলাম।
-তোর এই বিচ্ছু হাসিটাই সকলকে হিপনোটাইজ করে দেয়।
-তোকেও!
-হ্যাঁ, আমাকেও। তোর প্রতি ভীষণ রাগ হয়, মনে হয় তোকে আঁচড়ে কামড়ে……
-বেড়ালের মতো।
মিত্রা হেসে ফেললো, বুকে মুখ লুকিয়ে বললো যখনই তুই হেসে ফেলিস আর কিছু বলতে পারি না।
-এই হাসিটুকু ছাড়া আমার কি আছে দেবার বল। আমি পরিবারের মধ্যে বড় হয়ে উঠি নি, আমার মধ্যে কিছু প্রবলেম থাকবেই, এটা তোদের মেনে নিতে হবে।
-আমরা সকলে তোকে মেনে নিয়েছি, মানিয়ে নিয়েছি। তুই তো খারাপ ছেলে নোস।
-নারে মিত্রা সেটা বলতে পারবো না, নিজের আয়নায় নিজের মুখ দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি। এবার সেটা চেষ্টা করবো। একদিন মন খারাপ হলে আমি দীঘা আড়িতে গিয়ে সময় কাটিয়েছি, পাখিদের সঙ্গে কথা বলেছি, গাছের সঙ্গে কথা বলেছি, না হলে শ্মশানে গিয়ে বসে থেকেছি, মনে মনে কাউকে খোঁজার চেষ্টা করেছি, সব শেষে পীর সাহেবের থানে। একসময় তোর মতো কতো কেঁদেছি, আমার কান্নার মূল্য কেউ দেয়নি এই পৃথিবীতে, একদিন নিজেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম, কেঁদে কিছু লাভ নেই, চোখটা পাথরের মতো করতে হবে। দেখিস না, দেবতার চোখে জল নেই, সব সময় হাসি হাসি মুখ। ওখানে বসে থাকলে ভারী মনটা অনেক হাল্কা হয়ে যেতো, নিজের মনকে বোঝাতাম অনি তুই পৃথিবীতে একা, তোকে লড়ে উঠতে হবে। এক ফোঁটা জমি বিনা যুদ্ধে কাউকে ছাড়বি না, হকের জিনিষ কোনো দিন আপোষ করবি না। কলেজ লাইফে তোকে পেলাম, তোকে আঁকড়ে ধরে অনেক স্বপ্ন দেখলাম, তুই হারিয়ে গেলি, তারপর খড়কুটোর মতো ভাসতে লাগলাম, অমিতাভদা আমার মধ্যে কি দেখেছিলেন জানি না, আমাকে ওনার বাড়িতে স্থান দিলেন, কিন্তু ভালো লাগলো না, চলে গেলাম, তারপর আবার তুই ফিরে এলি, আমার জীবনটাকে একেবারে ওলোট পালট করে দিলি, তুই আসার পরই দেখলাম বড়মা ছোটমাও আমাকে একটু একটু করে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে। এরকম সিচুয়েশনে কোনোদিন পরিনি, তারপর দেখলাম, তোকে বড়মাকে ছোটমাকে মল্লিকদাকে দাদাকে আঘাত করার জন্য সবাই মুখিয়ে আছে, আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না, দাদা মল্লিকদা না বললে হয়তো ইসলাম ভাই আমার কথায় ওদের দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দিতো, কেউ কোনো দিন হদিস পেতো না।
-অনি কি বলছিস তুই।
-আমি ঠিক কথা বলছি মিত্রা, আমি মলের খোঁজ খবর দিন পাঁচেক রাখি নি, যদি এর মধ্যে ও সত্যি কিছু করে থাকে, গেমটা আমার হাতের বাইরে চলে যাবে, ইসলাম ভাই ওকে রাখবে না। আমি হয়তো ওকে রাখতে চাই, ওদের থিয়োরি আলাদা, যে ওদের পথের কাঁটা তাকে ওরা গোড়া থেকে উপরে ফেলে দেয়।
-অনি তুই থাম আমি আর সহ্য করতে পারছি না।
-বিশ্বাস কর মিত্রা তোকে তোর প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে গেলে কিছু নোংরা খেলা খেলতেই হবে। একে এককথায় বলতে পারিস রাজনীতি। এইজন্য তোদের কিছু বলি না, আমি জানি তোর মতো বড়মা, ছোটমা, মল্লিকদা, দাদা একই কথা বলবে। তোরা বস্তুবাদে বিশ্বাসী, সাধারণ গেরস্থ, এ সব সহ্য করতে পারবি না, তার থেকে নিজের টেনশন নিজের কাছেই রাখি। এই টেনশন তোদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে কেনো তোদের আনন্দটুকু শুষে নেবো।
-তুই কি করে জানলি বড়মা ছোটমা কিছু বোঝে না।
-বোঝে তবে ওপর ওপর, ভেতরের ব্যাপারটা বোঝে না। দেখলি না সেদিন কাজ শেষ হয়ে যাবার পর নিজেকে কনফেস করলাম। আমি আগে যদি সব ব্যাপারটা তোদের বলতাম, তোরা কাজটা করতে দিতিস।
মিত্রা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
-আমি জানি বলেই তোদের কিছু বলিনি, আমার একটা বদ অভ্যাস আছে মিত্রা, জানিষ আমি যে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে সাধনা করি সেই ভূমি পযর্ন্ত জানবে না আমি কি করছি। এটাকে তন্ত্র সাধনা বলে। তন্ত্র পড়েছিস।
-না। তুই পড়েছিস।
-সম্পূর্ণ নয়, যতটা পড়েছি তার থেকে এটুকু শিক্ষা নিয়েছি।
-আমাকে পড়াবি।
-চাইলে পড়তে দেবো।
-কোথায় আছে।
-আমার ফ্ল্যাটে।
-তোর ফ্ল্যাটে একদিন নিয়ে যাবি।
-যাবো।
-ফিরে এসে যাবো।
মিত্রা আমার চোখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
-জানিস বুবুন, জ্যোতিষি ভদ্রলোকেরও প্রচুর পড়াশুনা। দাদা মল্লিকদা অনেকভাবে ক্রস করেছে, উনি কিন্তু সব অঙ্ক করে করে বলে দিচ্ছিলেন।
-দাদাদের সম্বন্ধে কি বলেছেন।
-ওটা তোকে বলবো না, ওরাই তোকে বলবে। আমি আমারটা তোকে বলতে পারি।
-তোকে কি বললো
-আমার জীবনে যে ঝড়টা গেলো, সেটা আর এজীবনে আসবে না, শুধু তোর জন্য, আমার এখন সুখের জীবন।
মিত্রার চোখ মুখটা চিক চিক করে উঠলো।
-সবার সামনে বললো।
-না, আমি বড়মা ছোটমা ছিলাম।
-আচ্ছা আমি যদি তোদের প্রয়োজনে কোনো খারাপ কাজ করি তোরা মেনে নিবি।
-এটাও বলেছে, তুই নিজের জন্য কোনোদিন কিছু করবি না, যা করবি সবই আমাদের দিকে তাকিয়ে।
-তোরা বিশ্বাস করিস।
-করতাম না এখন করছি। তুই যে মলেদের ব্যাপারটা ঘটিয়েছিস সেটাও ও বলেছে।
-দাদাদের সামনে।
-হ্যাঁ, দাদা ডিটেলস জানতে চেয়েছিলো, উনি তোর গ্রহ নক্ষত্র বিচার করে বললেন। আরো বললেন তুই ধূমকেতুর মতো কামিং আঠারো মাসে আরো অনেক কাজ করবি, তারপর তুই থামবি। আমাদের শত বাধাতেও তুই থামবি না।
হাসলাম।
মিত্রা আমার নাকটা টিপে নাড়িয়ে দিয়ে বললো, আবার বিচ্ছু হাসি।
-আমার আঠারো মাসের কাজের দিনক্ষণ ঠিক করে দিয়েছে, জ্যোতিষ মশাই।
-আবার শয়তানি।
-না এতো যখন বলে দিলো, এটাও বলে দিতে পারতো।
-তোর কি একটুও বিশ্বাস নেই।
-আমি তো বিশ্বাস অবিশ্বাসের কোনো কথা বলি নি।
-তাহলে তুই এরকম বলছিস কেনো।
আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে আছি।
-জানিস ভদ্রলোক আর একটা কথা বলেছে।
-কি।
-না থাক ওটা তোকে পরে বলবো।
-খারাপ না ভালো।
-তোর কোনো খারাপ নেই। তোকে সাহায্য করার জন্য প্রচুর লোক বসে আছে, তুই চাইলেই পেয়ে যাবি।
ঘড়িতে ঢং ঢং করে ঘন্টা বাজলো। তাকিয়ে দেখলাম, সাড়ে তিনটে।
-কটা বাজলো দেখেছিস।
-দেখেছি।
-আর মাত্র এক ঘন্টা বাকি তারপর দরজায় কড়া নাড়বে।
-থাক আর ঘুমবো না, একটু করি।
-খেপেছিস। আমার দম নেই।
-কাকে করেছিস।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, চোখে হাসির রেখা।
-দেখেছিস তুই কি শয়তান, কোনোদিন সত্যি কথা বলবি না।
-বললে কষ্ট পাবি তাই বলি না।
-একটুও কষ্ট পাবো না, বল।
-ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে, তোকে।
-শয়তান।
আমি মিত্রাকে আরো বুকের কাছে টেনে নিলাম, ওর ঠোঁটে চুমু খেয়ে বললাম, একটু ঘুমিয়ে পর।
-ভালো লাগছে না, কাল যেতে যেতে গাড়িতে ঘুমুবো।
-বড়মা কিছু বলবে না, ছোটমা ছোট ছোট ভাষন দেবে।
-দিক, একটু কর না।
-না মন চাইছে না।
-কেনো।
-জানিনা আজ তোকে জড়িয়ে শুয়ে থাকতে ভালো লাগছে।
-তাহলে তোর ওপর উঠে শুই।
-শো।
-আমার ভার বইতে পারবি।
-পারবো।
-আবার বলবি নাতো দেড়মনি বস্তা।
-না।
মিত্রা আমার ওপর উঠে এলো। আমার গলা জড়িয়ে কাঁধের কাছে মুখ রাখলো, ওর গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পরছে, আমার একটা হাত ওর পিঠে, একটা হাত ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
-বুবুন
-উঁ।
-তুই আমায় খুব ভালো বাসিস, না।
আমি চুপ চাপ রইলাম।
-কিরে বল।
আমি চুপচাপ।
আমার কাঁধ থেকে মুখ তুলে, আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো, চুপ করে আছিস কেনো, বলবি না।
-সব ব্যাপার মুখে বলা যায় না, অনুভূতি দিয়ে বুঝতে হয়।
-তোর অনুভূতিটা কোথায় এখানে, না এখানে।
মিত্রা আমার বুকে হাত দিলো, আর কোমর দুলিয়ে আমার নুনুর ওপর দুবার ঘষলো।
-আবার দুষ্টুমি করছিস।
-বেশ করছি। তোর কিছু করার আছে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
বুঝলাম মিত্রা তার অভিষ্ট সিদ্ধির উদ্দেশ্যে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে, আমি মনে মনে ঠিক করলাম, আজ কিছুতেই করবো না, চোখ ঘুরিয়ে ঘড়ির দিকে তাকালাম, দেখলাম চারটে বাজতে দশ, একটু পরেই ঘরের দরজায় ধাক্কা পরবে।
-কি রে শয়তান, মনে মনে কি ফন্দি আঁটছিস।
-কৈ কিছু না।
-তোর চোখের মনি স্থির হয়ে গেলো কেনো।
-তা আমি কি করে বলবো।
-চোখ গেলে দেবো।
মিত্রা আবার কোমর দোলাচ্ছে, হাসছে, আমিও মিটি মিটি হাসলাম।
-দেবো ঠোঁট ফাটিয়ে। ঘুসি তুললো।
-ব্যাথা লাগবে। তুই চাস ফোলা ঠোঁট নিয়ে এতটা রাস্তা যাই।
-তোকে যন্ত্রণা দিতে পারলে আমার খুব আনন্দ হয়।
-দে না, কে বারণ করেছে। আমি একটু সেবা শুশ্রুষা পাবো।
-না না তুই এরকম বলিস না, আমি তাহলে পাগল হয়ে যাবো। মিত্রা আমার মুখটা চেপে ধরলো।
ঘড়ির দিকে লক্ষ্য করলাম, চারটে বাজে।
-আমার পাজামাটা খোল।
-খুলবো।
মিত্রার চোখ চক চক করে উঠলো। ও উঠে বসে, আমার পাজামার দড়িটা খুললো, পাঞ্জাবীটা টেনে গা থেকে খুলে ফেলে দিলো, নিজের ম্যাক্সিটা খুলে আমার বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো। নীচু হয়ে আমার নুনুটাকে পুশির কাছে সেট করে নিয়ে ঘষতে লাগলো।
-তোরটা এত ছোট কেনো! এতক্ষণ ধরে ঘষলাম।
-ভালো লাগছিলো না, এখন ভালো লাগছে তাই তোকে খুলতে বললাম।
মিত্রা আমার বুকে মুখ দিয়ে আমার মুনু চুষছে। আমার ঠোঁট চুষছে। মুখ তুললো।
-বুবুন।
-কি।
-আমাকে একটা ব্লু-ফ্লিম দেখাবি, তুই তো ভালো কমপিউটার শিখে গেছিস।
-কে বললো তোকে।
-টিনাকে একদিন ফোন করেছিলাম, ও বললো, মাঝে মাঝে তুই ওর কাছে কম্পিউটার, ইন্টারনেট শিখতে যাস, এখন তুই ভালো শিখে গেছিস।
-এই তো তুই করিতকর্মা হয়ে উঠেছিস, খবর জোগাড় করতে শিখে গেছিস।
-নারে তোর কনসেনট্রেসন দেখে আমি অবাক হয়ে যাই, সেদিন বড়মাকে বলছিলাম, টিনাকে ফোন করার পর।
-কি বললো বড়মা।
-বললো অন্য কোনো মেয়ে হলে ভুল ভাবতো, মিত্রা তুই ওকে ভুল ভাবিস না। আমি বললাম একি বলছো বড়মা, বুবুন আমার কাছে চিরকাল বুবুন থাকবে, ওকে আমার কাছ থেকে কেউ কোনো দিন ছিনিয়ে নিতে পারবে না। বড়মা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেলো।
মিত্রা কোমর দোলাচ্ছে, চোখের চেহারা আস্তে আস্তে বদলে যাচ্ছে।
-একটু মুখ দেবো।
-দে।
মিত্রা আমার দিকে পাছু ঘুড়িয়ে মুখ দিলো, ব্যাপারটা এরকম আমারটায় একটু হাত দে।
আমি নীচু হয়ে ওরটায় হাত দিলাম, ঘড়ির দিকে তাকলাম, চারটে পনেরো।
মিত্রা আমার নুনু, মন দিয়ে চুষছে, আমিও ওর পুশিতে আঙুল ঢুকিয়েছি, এরি মধ্যে ভিজিয়ে ফেলেছে। আমি মাঝের আঙুলটা ওর পুশির গর্তের মধ্যে ঢুকিয়ে নাড়াতে আরম্ভ করলাম, মিত্রা কোমর দোলাচ্ছে।
-অনি, ও মিত্রা এবার ওঠ, কি ঘুমরে তোদের বাবা। ওরে সাড়ে চারটে বাজলো। রেডি হতে হবে তো। বড়মার গলা।
মিত্রা আমার নুনু থেকে মুখ তুলে তড়াক করে উঠে বসলো। আমার নুনুটা সবে মাত্র দাঁড়িয়েছে, দেখলাম সামান্য দুলছে, আমি ইশারায় ওকে বললাম চুপ। ও আমাকে ঘুসি দেখাচ্ছে, আমি চোখ ছোটো করে ওকে বললাম, আমি কি করবো, বড়মা এসে যদি ডাকে।
ও আমার বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পরে আমার বুকে কামর দিয়ে বললো, সব সময় দুষ্টু বুদ্ধি, তাই তুই বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলি। দাঁড়া আজ ওখানে চল তোকে দেখাচ্ছি।
-আমি তোকে বারন করেছিলাম।
ও আমার মুখ চিপে আমার মুনু কামরে ধরলো। বল আর এরকম করবি, শয়তান।
আমি জোড়ে হাসতে পারছিনা, বড়মা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে।
-কিরে মিত্রা ওঠ, অনি।
-হ্যাঁ বড়মা উঠি।
-উঃ তোদের ঘুম বটে, যেন কুম্ভকর্ণ।
মিত্রা আমার বুকে শুয়ে আছে।
-ওঠ।
-না উঠবো না।
-ঠিক আছে, আজ রাতে সারারাত।
-হ্যাঁ ওখানে নীপা আছে।
-ঠিক আছে নীপাকে এবাড়িতে শুতে বলবো।
-ঠিক।
-আমি কথা দিচ্ছি।
-মনে থাকে যেনো।
-আমারটায় একটু জিভ দে।
মিত্রা আমার মুখের কাছে ওর পুশিটাকে নিয়ে এলো, আমি কিছুক্ষণ ওর পুশিতে জিভ দিয়ে চেটে দিলাম। ওর মাইটা টিপলাম।
-হয়েছে।
-তুই বল এই সময় ছাড়তে ইচ্ছে করে, তুই কি শয়তান দেখ।
ও আবার আমার বুকে শুয়ে পরলো।
অনেক কষ্টে ওকে ওঠালাম, এরমধ্যে ছোটমা একবার দরজা হাঁকরে গেছে, আমি দরজা খুলে বলেছি, মিত্রা বাথরুমে বেরোলেই যাচ্ছি।
আমি দাঁত মেজে ফ্রেশ হলাম, স্নান করলাম না। জামা প্যান্ট পরলাম, বারান্দায় এসে দেখলাম সবে পূব আকাশের রং কমলা হয়েছে, অনাদিকে একটা ফোন করলাম।
-হ্যালো।
-কোথায় রে চেঁচামিচির আওয়াজ পাচ্ছি, বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া করছিস নাকি।
-না রে একটা ঝামেলা হয়ে গেছে, থানায় আছি।
-থানায়, কি করছিস!
-তোর আশে পাশে কে আছে।
-কেনো বলতো।
-বল না।
-কেউ নেই।
-ফোনের ভয়েস অফ করাতো।
-হ্যাঁ। আমি অনাদির গলা শুনেই বুঝতে পেরেছি কিছু একটা হয়েছে, আমি রেকর্ডিংটা অন করলাম।
-শোন তোকে আমি ফোন করতাম, আর একটু পরে।
-কি হয়েছে বলবি তো, তোর কোনো সমস্যা।
-না। আমরা সবাই ঠিক আছি।
-তাহলে।
-শেলি কালকে সুইসাইড করেছে।
-কখন।
-বিকেল বেলা।
-তুই কখন জানতে পেরেছিস।
-সাতটা নাগাদ।
-দেবা কোথায়।
-বেপাত্তা।
-শেলির বডি এখন কোথায়।
-থানায় রাখা আছে, পোস্টমর্টেম হবে, টাউনে নিয়ে যাবে।
-অমল কি বলছে।
-থানায় বলেছে আমার ঘনিষ্ট বন্ধু, পুরোটা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে।
-ঠিক আছে তোকে পরে ফোন করছি। তোর সঙ্গে আর কে কে আছে।
-বাসু আছে।
-চিকনা।
-ওকে রেখে এসেছি তোর বাড়িতে।
-ঠিক আছে তোকে চিন্তা করতে হবে না। শোন থানার ফোন নম্বরটা দে।
অনাদি থানার ফোন নম্বরটা দিলো।
মিত্রা কখন যে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে দেখতে পাই নি, ও আমার মুখের দিকে ফ্যাকাশে চোখে তাকিয়ে আছে।
-কি হলো তোর আবার, ওরকম ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছিস কেনো।
কাকে ফোন করলি।
হেসেফেললাম, বাবাঃ একেবারে ঠান দিদির মতো কথা বলছিস।
-সত্যি করে বল আবার কি হলো।
-কিছু হয় নি।
-আমি তোর মুখ দেখে বুঝতে পেরেছি তুই যতই লুকাবার চেষ্টা কর। মিত্রা একটু গলা চড়িয়ে বললো।
নিচ থেকে বড়মা চেঁচিয়ে উঠলো কি হয়েছে রে মিত্রা।
-দেখলি দেখলি, তুই সত্যি সব গজব করে দিবি।
-আমরা এখন বেরোবো, তোর কোথাও যাওয়া হবে না, পৃথিবী উল্টে গেলেও না।
-অবশ্যই বেরোবো, আমি এক ঘন্টা বেশি টাইম নেবো।
-না তা হবে না, তোকে আমাদের সঙ্গে এখুনি বেরোতে হবে।
-বেরোবো, সত্যি বলছি, গেঞ্জি ছাড়।
-না আগে তুই বল কে ফোন করেছিল, কোন থানার ফোন নম্বর চাইলি।
দেখলাম সিঁড়ি দিয়ে চার মূর্তিমান উঠে এলো।
-দেখলি দেখলি, আমি কথা দিচ্ছি তোদের সঙ্গেই যাবো।
-কি হয়েছে রে মিত্রা। বড়মা বললেন।
বড়মা ছোটমা দুজনেই আজ জমপেশ একটা শাড়ি পরেছে, মনে হচ্ছে ঢাকাই জামদানি, লালাপাড় খোলটায়ও লালের আভাস, দারুন দেখতে লাগছে। মাথায় ডগডগে লাল সিঁদুর। একেবারে মা মা।
আমি সবাইকে একটা ঠক করে প্রণাম করলাম।
বড়মা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, মিত্রা কি বলছে, তুই সত্যি কথা বল।
-ঠিক আছে তোমরা দুজনে চা করে নিয়ে এসো, দাদা আর মল্লিকদা আমার ঘরে আসুক, মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, আয় তুইও শুনবি আয় কি হয়েছে, ছাগল কোথাকার। বড়মা নড়ল না ছোটমা দৌড়ে নিচে চলে গেলো। মিত্রা মুখ টিপে হাসলো।
ওরা এসে ভেতরে বসলো।
আমি দাদাকে দিকে তাকিয়ে বললাম, আমি এখুন একটা ডিসিশন নিয়েছি, বলতে পারো ইনস্ট্যান্ট, তোমরা বলো আমি ঠিক না ভুল। এবং তোমরা যদি না বল, আমি এখুনি প্রমাণ করে দেবো আমার ডিসিশন ঠিক, তোমাদের ঠিক পাঁচ মিনিট সময় দেবে, না হলে পাখি উড়ে যাবে।
-তুই কি বলছিস, মাথায় ঢুকছে না। তোর কাল রাতে ঠিক মতো ঘুম হয় নি।
-আমার মাথা এন্টারটিকার মতো ঠান্ডা।
ছোটমা চা নিয়ে ঘরে ঢুকলো।
-বল শুনি।
-তুমি চিনবে না, মিত্রা চেনে, মিত্রার সঙ্গে আলাপ আছে, ছোটমা বড়মা হয়তো ওর মুখ থেকে শুনে থাকবে, আমি গেইজ করছি। আমার গ্রামের একটা মেয়ে কাল বিকেলে বিষ খেয়ে সুইসাইড করেছে, আমি বলছি সে সুইসাইড করেনি, তাকে মার্ডার করা হয়েছে, তার নাম শেলি, সে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে লটঘট করেছিলো, সেই ছেলে, যার নাম দিবাকর।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
বড়মা ছোটমা মিত্রার চোখ ছানাবড়া, ওরা এই সাত সকালে আমার কথা শুনে অবাক।
-কি বলছিস তুই।
-এখুনি আমি অনাদিকে ফোন করেছিলাম, বলতে চেয়েছিলাম আধঘন্টার মধ্যে রওনা দিচ্ছি। ও এই কথা শোনালো। দিবাকরের সঙ্গে সুনীতদার ভালো রিলেসন, যে মিত্রাকে নিয়ে রিউমার রটিয়ে একটা বিচ্ছিরি অবস্থা তৈরি করেছিলো আমাদের হাউসে, দেখেছো কি ভাবে আমি তা সামাল দিয়েছি (দাদার দিকে তাকিয়ে) তোমার কথায় আমি তাকে সেই সময় ছেড়ে দিয়েছিলাম। দিবাকর এখন ফেরার, অনাদি থানায় যেহেতু দিবাকর আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমি সন্দেহ করছি, অতীশবাবু আমাদের হেড মেশিনম্যান কাল আসেন নি, আমি সন্দেহ করছি, সুনীতদা কাল খুব তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বেরিয়ে গেছে। সুনীতদার ব্যাপারটা তুমি বলতে পারবে। আমি ঠিক কথা বলছি কিনা।
-হ্যাঁ, সুনীত কাল একটু তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেছে। মুখটা একটু শুকনো শুকনো ছিলো।
-আমি এক্সপেক্ট করছি, ওরা দেবাকে মলের কাছে শেল্টার দিয়েছে। ওরা নিশ্চই দেবাকে এ পৃথিবীতে রাখবে না, ওরা শেষ করে দেবে, দেবা ওদের অনেক কিছু জানে।
-তুই কি করে জানলি।
-আমার থার্ড সেন্স বলছে। বলো তাড়াতাড়ি কি ডিসিশন। তোমাদের আমি অপেক্ষা করতে পারবো না, আমার খেলা এই মুহূর্তে শুরু করতে হবে।
মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, ব্যবসা করছিস, আমার টেনসন ভাগ করে নিবি বলেছিলি বল কি করবি।
আমি জানি না। আমার কোনো ডিসিশন নেই।
-মল্লিকদা তোমার।
-জানি না দাদা যা বলবে তাই হবে।
দাদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। আমি কি বলবো বল তোর কথা হজম করতে পারছি না।
-তোমাদের দ্বারা কিছু হবে না। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম
-সকাল বেলা তুই সিন ক্রিয়েট করলি কেনো, আজ শেষবারের জন্য বললাম, আমার কাজে তোমরা কেউ বাধা দেবে না, আমি তোমাদের ছেড়ে চলে যাবো। এবার চুপচাপ আমার খেলা দেখে যাও। কোনো কথা বলবে না।
দাদার দিকে তাকিয়ে বললাম, তোমার ঘরের চাবি কার কাছে।
-একটা আমার কাছে আছে, আর একটা সন্দীপের কাছে।
সন্দীপকে ফোন লাগালাম। ভয়েস অন, রেকর্ডিং অন। সবাই শুনুক।
-গুডমর্নিং স্যার।
-তুই কোথায়।
-তোর গলাটা এরকম কঠিন কঠিন কেনো।
-ফালতু কথা রাখ। যা বলছি তার উত্তর দে।
-জাস্ট বেরোবো অফিস থেকে, গোছাচ্ছি।
-আমার সঙ্গে সেই ছেলেগুলো সেদিন আড্ডা মারছিলো ওরা আছে।
-আছে।
-কজন আছে।
-দুজন আছে। আর সব বেরিয়ে গেছে।
-ওদের থাকতে বল, আমি এখুনি আবার ফোন করবো এখন অফিস থেকে বেরোবি না।
-আচ্ছা।
-আর্ট ডিপার্টমেন্টে কে আছে।
-দ্বীপায়ন আছে। ও এখন আমাদের কাছে, সব এক সঙ্গে বেরোবো।
-দ্বীপায়নকে থাকতে বল।
-আচ্ছা।
-দেখতো সুনীতদা কাল কখন বেরিয়েছে, আর অতীশবাবু কাল এসেছিলো কিনা। আমি তোকে একটু বাদে ফোন করছি।
-গুরু গুরুত্বপূর্ণ কিছু।
-কথা বলতে বারণ করেছি।
-আচ্ছা আচ্ছা।
ওরা সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, কারুর মুখে কোনো শব্দ নেই, মিত্রা আমার পাশে এসে আমার হাতটা চেপে ধরেছে, ওর হাতটা বরফের মতো ঠান্ডা। আমার মুখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
আমি ফোন ডায়াল করলাম। ভয়েজ অন, রেকর্ডিং অন।
-ইসলাম ভাই।
-আমি জানি তুই ফোন করবি।
-কি করে বুঝলে।
-তুই খবরের গন্ধ পেয়েছিস।
-মালটাকে কোথায় রেখেছো।
-তুই বিশ্বাস কর আমার হাতে এখনো আসে নি। মল আমাকে ফোন করে শেল্টার দেবার কথা বলেছে।
-তুমি দেবে।
-আমি তোকে আর একটু পর ফোন করতাম। মার্ডার কেস। তুই বল।
-আমার কাছে খবর আছে। ও কোথায় আছে।
-তুই আমার গুরু, আজ থেকে সত্যি তোকে আমি গুরু বলে মানছি অনি, আল্লাহ কসম, আমি তোকে গত দেড়মাস ফলো করলাম, তুই আমার থেকে অনেক দূরে এগিয়ে গেছিস, একদিন আমি তোর গুরু ছিলাম, আজ তুই আমার গুরু।
-তুমি তোমার আল্লাহর নামে দিব্যি কাটছো। আমি এই সুযোগ হাত ছাড়া করবো না।
-তুই বল আমি কি করবো, তুই যা বলবি, আমি তাই করবো।
-মল তোমার অনেক ক্ষতি করেছে, এই সুযোগে ওকে ……
-তুই বললে আজই সাঁটিয়ে দেবো। তোকে আগেও বলেছি, তোর কেউ ক্ষতি করবে আমি মেনে নেবো না। তোর দাদা তোকে বারণ করেছে তুই বলেছিস, তাই ছেড়ে দিয়েছি।
-ঠিক আছে, ফোন বন্ধ করবে না, আমি একটু বাদে তোমায় ফোন করবো।
-আচ্ছা।
ছোটমা আমার পায়ের কাছে এসে বললো, অনি তুই আমার মাথায় হাত দিয়ে শপথ কর তুই কোনো অন্যায় কাজ করছিস না।
-আমি তোমাদের সামনে আমার কাজ করছি, কোনো লুকিয়ে চুরিয়ে নয়। কি করি শেষ পযর্ন্ত দেখো, তারপর বলো আমি কোনো অন্যায় করছি কিনা।
-ওই মেয়েটার মুখের দিকে তাকা।
-ওর দিকে তাকাবার সময় নেই, ওর জন্যই তোমাদের সামনে ফেস করছি। ও শক্ত না হলে ওকে শেয়ালে কুকুরে খাবে। তোমরা এটা চাও।
-আমরা সবাই সব জানি, তুই একটু ঠান্ডা হ।
-ঠান্ডা হওয়ার সময় নেই, লোহা গরম হ্যায় মার দো হাতোরা।
-আমি তোর পায়ে ধরছি।
-এ কি করছো বড়মা, তুমি আমার মা।
আমি ছোটমার হাত ধরে গলা জড়িয়ে ধরলাম, তোমরা আমার প্রতি বিশ্বাস হারিও না।
-তোর বড়মার দিকে তাকা।
-সবাইকে দেখা হয়ে গেছে, আমাকে জিততে হবে, আমি হারবো না।
ছোটমা আমার কোলোর ওপর মাথা রেখে ঝড় ঝড় করে কেঁদে ফললো।
আমি আবার ফোন ধরলাম।
-কি খবর।
-তোর প্রেডিকসন ঠিক, দাদা কাল তাড়াতারি বেরিয়ে গেছে, তার আগেই সুনীতদা ভাগলবা।
-কখন।
-সাতটা নাগাদ এক্যুরেট বলতে পারছি না।
-গুড। অতীশবাবু।
-না কাল অতীশবাবু আসে নি।
-ঠিক আছে।
-তুই এক কাজ কর, দ্বীপায়ন, ওই ছেলেগুলো তোর পাশে আছে।
-হ্যাঁ।
-দাদার ঘরের চাবি তোর কাছে।
-হ্যাঁ।
-দাদার ঘর খোল, দাদার ডানদিকের নীচের ড্রয়ারের একেবারে পেছন দিকে তিনটে খাম আছে, ওটা বার কর, দেখবি ওপরে লেখা আছে, অনি কনফিডেনসিয়াল এক, দুই, তিন। তিনটে খাম একটা কালো গার্ডারে আটকানো আছে। শোন কেউ যেন তোর সঙ্গে না যায়। তুই দাদার ঘরে গিয়ে খোঁজ, আমি তোকে ফোন করছি।
-আচ্ছা।
-তুই আমার ঘরে কবে ঢুকেছিলি!
-আজ থেকে দেড়মাস আগে ওটা বোমা রাখা আছে। তোমায় সব বলে দেবো, কালকের কাগজটা আমার মতো করে বের করবে, এটা আমার রিকোয়েস্ট তোমার কাছে, রাখবে।
-তুই বলছিস যখন রাখবো, তোর ওপর বাজি ধরে আমি কোনো দিন হারিনি।
বড়মা রেগে টং, মরণ ছেলেটা কি করছে দেখতে পাচ্ছ না, তুমি হলে তো হার্টফেল করতে।
সবাই হেসে ফেললো। এমনকি ছোটমা চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে কেঁদে, সেও হেসে ফেললো।
-আমি তো অস্বীকার করছি না বড়। কালকে তুমি সব নিজের কানে শুনে এসেছো, আমি এই সময় ওকে বাধা দিলে ও শুনবে। ওর যে এতো সোর্স কি করে জানবো, আমি তো লোক লাগাই নি ওর পেছনে।
-দেখো দেখো কি করে চালাতে হয়, এই পাঁচ কড়ি ছেলের কাছে।
-সত্যি আমি শিখছি বড়।
বড়মা আমার কাছে এসে মাথায় হাত রাখলেন, তুই ঠান্ডা মাথায় কাজ কর। আমি তোকে বলছি, তুই জিতবি।
মিত্রা লজ্জার মাথা খেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। ওর মাথা আমার কাঁধে। বড়মা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আমি সনাতনবাবুকে ফোনে ধরলাম।
-কোথায় আছেন।
-ছোটোবাবু বাড়িতে, সবে ঘুম থেকে উঠলাম।
-এখুনি গাড়ি নিয়ে দাদার বাড়িতে চলে আসুন, প্রশ্ন করবেন না কেনো। ঠিক আছে। আধাঘন্টা সময় দিলাম।
-না মানে।
-এই মুহূর্তে আমার সময় কম, মনে রাখবেন এটা আমার হুইপ।
-আচ্ছা।
ফোনটা কেটে দিলাম। সন্দীপকে ফোন করলাম।
-হ্যাঁ বস পেয়েছি।
-যা যা বলেছিলাম, ঠিক সেই রকম।
-হ্যাঁ।
-তোর ল্যাপটপ তোর কাছে।
-হ্যাঁ।
-সবাইকে নিয়ে দাদার বাড়িতে চলে আয়। আধা ঘন্টার মধ্যে। শোন অফিসের গাড়ি নিয়ে নয়। একটা ট্যাক্সি করে।
-আচ্ছা।
কখন যে ভজু এসে ঘরের এক কোনে, বসে আছে, জানিনা। ও আমার দিকে জুল জুল করে তাকিয়ে হাঁটুর মধ্যে মুখ গুঁজে বসে আছে। ভজুর দিকে তাকিয়ে হাসলাম। ভজুও হাসলো। ভজু আমাকে এ অবস্থায় বহুবার দেখেছে।
আমি আবার ফোন ডায়াল করলাম।
-মিঃ মুখার্জী।
-আরে অনিবাবু এত সকালে। গুড মর্নিং।
-আপনার খাবার রেডি করলাম।
-তাই নাকি।
-কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি, দশটার মধ্যে কজ করে ফেলতে হবে। না হলে পাখি ওড়াং হয়ে যাবে।
-বলেন কি।
-আপনি অনেক দিন আমায় কোন কেস দেন নি। দিলেন দিলেন, এতো শর্ট টাইমে।
-হ্যাঁ। কেসটা আপনি ট্যাকেল করতে পারবেন। আর ঠিক মতো করতে পারলে আপনার ডবল প্রমোশন হয়ে যেতে পারে।
-আপনি যখন বলছেন আমি রিস্ক নেবো।
-তাহলে আপনারা ঘুঁটিগুলো একটু নাড়াচাড়া করে, এখুনি একবার এখানে চলে আসুন, বাড়ির ঠিকানা লিখে নিন।
-বলুন। বললাম।
-একলা আসবেন। কেউ যেনো সঙ্গে না আসে।
-সে আর বলতে। আমি আধাঘন্টার মধ্যে পৌঁছে যাচ্ছি। দুদশ মিনিট এদিক ওদিক হলে ক্ষমা ঘেন্না করে নেবেন। ফোনটা কেটে দিলাম।
-এটা কে রে, চিন্তে পারলাম না। দাদা বললেন।
-ইনি সিবিআই-এর ইষ্টার্ন জোনের চিফ।
-ছোটো চা নিয়ে এসো, আমি আর পারছি না। দাদা বললেন।
-বাথরুম কাছে আছে চলে যাও, তোমারতো টেনশন হলে পায়খানা পায়। বড়মা বললেন।
সবাই আবার হাসলো। মল্লিকদা কোনো কথা বলছেন না, গাঁট হয়ে বসে আছে, ছোটোমা এতক্ষণে আমার কোল থেকে মাথা তুলে উঠলেন। নিচে গেলেন চা আনতে। দাদা সত্যি সত্যি বাথরুমে গেলো।
মিত্রা ঠায় কাঁধে মাথা দিয়ে বসে আছে।
Posts: 543
Threads: 6
Likes Received: 1,388 in 480 posts
Likes Given: 861
Joined: Feb 2021
Reputation:
82
আমি আবার ফোন করলাম।
-হ্যাঁ বল, অনি।
-খোঁজ পেলে।
-না।
-তোমায় মল ফোন করেছিলো।
-হ্যাঁ, বললো তাড়াতাড়ি ডিসিসান দিতে।
-কি বললে।
-অনেক টাকার অফার দিচ্ছে।
-কি করবে।
-ভাবছি।
-আমি ঘুঁটি সাজিয়ে নিয়েছি। কাজ শুরু করে দিয়েছি। কোনটা চাও টাকা, না জীবন।
-তুই আমাকে মেরে দিবি!
-অনি কোনোদিন কাউকে মারে না তুমি জানো। আর ইসলাম ভাইকে সে কোনোদিন মারবে না, বরং ইসলাম ভাই সে ভুল করতে পারে।
-ইস অনি আজ শুক্রবার, আমাদের জুম্মাবার, তুই একথা বলতে পারলি।
-তুমি জানো ভালো করে, অনি যেখানে হাত দেবে, তার শেষ দেখে ছাড়বে। এর প্রমাণ মেরিনা বহিনের সময় তুমি পেয়েছো।
-ওই একটা ব্যাপারে আমি সারাজীবন তোর কাছে ঋণী থাকবো।
-বলো কি করতে চাও।
-তুই বল আমায় কি করতে হবে।
-তুমি মলকে ফোন করে বলে দাও, বিকেল পযর্ন্ত ওর কাছে রাখতে, আমি সাসপেক্ট করছি, এই মুহূর্তে অতীশবাবু, দিবাকর সুনীতদার বাড়িতে আছে।
-তুই সত্যি গুরুদেবে, খবরটা তুই পেলি কোথায়।
-আমার পীরসাহেব এখন মাথার ওপর বসে আছে, ও আমাকে বলে দিলো, এও বললো, আমি এই মুহূর্তে কোনো অন্যায় কাজ করবো না।
-তুই বল আমায় কি করতে হবে, আমি তোর গোলাম।
-আমার বাড়ি চলে এসো।
-কোথায়, তোর ফ্ল্যাটে?
-না। দাদার বাড়িতে। আর শোনো ট্যাক্সি নিয়ে আসবে। দূরে ছেড়ে দেবে, রিক্সা করে আসবে, মেসিন সঙ্গে রাখবে।
-আমাকে নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবে না। আমি ঠিক পৌঁছে যাবো।
দাদার দিকে তাকিয়ে বললাম, এবার তোমায় একটা সাহায্য করতে হবে।
-বল কি করতে হবে।
ছোটমা চা নিয়ে এলো, মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, তোর হাতের ঠান্ডা ভাবটা এবার গরম হয়েছে, টেনসন অনেকটা হজম করেছিস, ওঠনা ছোটমার সঙ্গে একটু কাজ করনা, নির্জীবের মতো ঠায় বসে আছিস কেনো। আমি কি মরে যাচ্ছি, এমন ভাবে বসে আছিস।
মিত্রা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে, নড়ে চরে বসলো।
বড়মার দিকে তাকিয়ে বললাম, কতোক্ষণ দাঁড়াবে, একটু বোসো, এবার বুঝতে পারছো আমি করতে যাচ্ছি।
-একটু একটু বুঝছি।
-বোসো, সব বোঝাবো।
-তোর কি এগুলো মুখস্ত ছিলো।
-কি।
-তুই পড়া মুখস্তর মতো কাজ করছিস।
হেসে ফেললাম।
-জানো বড়মা ঘা খেতে খেতে নিজে ঘেয়োকুত্তা হয়ে গেছি, ওই যে ভজুকে দেখতে পাচ্ছ, ও আমার অনেক কাজের সাক্ষী।
দাদার দিকে তাকিয়ে বললাম, আমি যা যা বলছি তুমি শোনো, তুমি খালি ফোন করে জানতে চাইবে।
-বল।
-ভবানী ভবনে ফোন করো, জানতে চাও আমাদের ওই থানার কথা বলে এই রকম কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা, ঘটলে ওরা কি সাসপেক্ট করছে। তোমার পরিচয় দিয়ে ফোন করবে।
-তাহলে তোদের ওখানকার এসপিকে ফোন করি।
-এই তো তোমার মাথা কাজ করতে শুরু করেছে। বাকিটা তোমায় বলতে হবে না। তারপর তোমার জেলা সভাধিপতিকে বলে দাও, অনাদির গায়ে যেনো হাত না পরে। অমল দায়টা ওর ঘাড়ে চাপিয়ে ওর রাজনৈতিক কেরিয়ার বুমেরাং করতে চাইছে। নিরঞ্জন তোমার কাছের লোক।
-ওটা ও পারবে না, আমি ফোন করবো, ওকে এসপিকে ফোন করতে বল। বড়মা বললেন।
আমি বড়মার দিকে তাকালাম, একটু অবাক হলাম। আমার চোখের কথা বড়মা পরে ফেললো।
-ভাবছিস বড়মার সঙ্গে নিরঞ্জনের পরিচয় কি করে হলো। তুই আমার কাছে কনফেস করেছিস, আমিও তোর কাছে কনফেস করবো। ঠিক সময়ে।
ছোটমা চা নিয়ে এলো। মিত্রা সকলকে এগিয়ে দিলো। ভজু ছোটমার পেছনে। ট্রে ধরে দাঁড়িয়ে।
অমিতাভদা এসপিকে ফোন করলেন। উনি খবরের সত্যতা স্বীকার করলেন। বললেন, সাসাপেক্ট করছি মার্ডার, ছেলেটা বেপাত্তা, ওর বাবা-মাকে থানায় নিয়ে এসেছে।
-আচ্ছা।
-এখন খবর করবেন না, আপনি দুপুরের দিকে ফোন করুন, আমি ডিটেলস দেবো।
-কেনো, কোনো পলিটিক্যাল ইস্যু আছে নাকি।
-সে রকম একটা গন্ধ পাচ্ছি। ছেলেটি ওখানকার পঞ্চায়েতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, ওকে ইনটরোগেট করেছি। দিবাকর ছেলেটা নাকি আপনার অফিস নিয়েও কি গন্ডগোল করেছে শুনছি।
-হ্যাঁ সেই জন্যই তো আপনার কাছে বিষয়টা জানতে চাইছি, আমার অফিসের কেউ জড়িত কিনা।
-কি করে বলি বলুনতো দাদা, কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ায় কিছুই বলতে পারছি না।
-ঠিক আছে।
-আপনার কাছে কোনো খবর থাকলে যদি একটু হেল্প করেন।
-দুপুরে কথা হবে।
-অরিজিন্যাল ব্যাপারটা বুঝলে। আমি দাদাকে বললাম
-বুঝলাম, তোর দূরদৃষ্টি অনেক বেশি।
-দাও দেখি নিরঞ্জনকে ধরে মুখপোড়ার পার্টি করা বের করছি।
-থামো থামো তাড়াহুড়ে করছো কেনো। অনি কি বলে শোনো।
-থামো, নাক টিপলে দুধ বেড়োয় ও কি বলবে আমাকে।
আমি মুখ টিপে হেসে ফেললাম, এই স্পিরিটটা আমার দরকার।
দাদা ফোনটা ডায়াল করে দিলেন।
-কেরে নিরঞ্জন।
-হ্যাঁ দিদি আমি, তুমি এত সকালে।
-মুখপোড়া কোনো খবর রাখিস, আমি এখানে বসে তোদের সব খবর রাখি।
-বাবাঃ তুমি তো এই সাত সকালে খুব ফায়ার মনে হচ্ছে, দাদার সঙ্গে কিছু……
-মরণ তোর দাদার সঙ্গে হতে যাবে কেনো।
-তাহলে।
-তোর ওপর রাগ হচ্ছে।
-আমার ওপর বলো কি হুকুম আছে।
-তোর ওখানে কে একটা খুন হয়েছে।
-আমাদের এখানে, না।
-অনিদের গ্রামে।
-হ্যাঁ।
-আমি আজ ওখানে যাবো বলে ঠিক করেছিলাম, যেতে পারছি না। অনাদি না কে তোর অনিদের গ্রামের পঞ্চায়েত তাক নাকি ফাঁসানো হচ্ছে, তোর অমল না কে সে এটা করছে।
-না না তুমি ভুল শুনেছো।
-তোর কাছ থেকে আমি খবর নেবো, আমি তিরিশ বছর সাংবাদিকের ঘর করছি।
-জানিতো, তুমি এসো, আমি এসকর্টের ব্যবস্থা করছি।
-তার আর দরকার পরবে না, শোন অনাদির যদি কিছু হয়, অনিকে বলবো তোকে আচ্ছা করে দিতে, মনে রাখিস।
-না না তোমার পায়ে পরি অনিকে বলোনা, ও আগুন, ওর বায়োডাটা আমার কাছে আছে, ও ভিজে বেড়াল, ওতো আমার বাবা গো, আমার গদি খেয়ে নেবে, তুমি চাও তোমার ভাইয়ের গদি চলে যাক।
-তাহলে কি করবি।
-তোমায় কথা দিচ্ছি অনাদির গায়ে কেউ হাত দিতে পারবে না।
-মনে থাকে যেনো। আর কাল আমার কাছে এসে দেখা করবি।
-ঠিক আছে। আমি কথা দিলাম।
বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন।
-কিরে তোর মতো কথা বলতে পারলাম।
আমি বড়মাকে জড়িয়ে ধরে বুকে মুখ রাখলাম। বাইরে গাড়ির আওয়াজ পেলাম। বুঝলাম সন্দীপ এলো। ভজু ওদের সঙ্গে করে ওপরে নিয়ে এলো ওদের মুখ থম থমে, ফুল টেনসনে আছে। ছোটমা ভজু বেরিয়ে গেলো।
মিত্রাকে বললাম ফোনটা দে।
-তোর, না আমার।
-আমার।
-ওটাতো তোর হাতে।
-সরি।
-দ্বীপায়ন।
-হ্যাঁ দাদা।
-আমার ফোন থেকে কয়েকটা জিনিস সন্দীপের ল্যাপটপে ট্রান্সফার করে নাও। আগে তারপর সব বলছি।
আমি ওকে ফাইলগুলো দেখিয়ে দিলাম। দ্বীপায়ন ল্যাপটপটা টেবিলে রেখে কাজ শুরু করলো।
ভজু মিঃ মুখার্জীকে নিয়ে এলেন। সবার সঙ্গে ওনাকে পরিচয় করিয়ে দিলাম।
উনি বললেন আমার কি সৌভাগ্য, আজ কার মুখ দেখে সকালে উঠেছিলাম এরকম বিগ বিগ লোকের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সৌভাগ্য হলো।
চা এলো।
সন্দীপকে বললাম আমার খাম দে। সন্দীপ ব্যাগ থেকে সব বার করলো।
এক নম্বর খামটা মিঃ মুখার্জীর হাতে দিয়ে বললাম, চা খেতে খেতে লেখাটা আপনি পরুন, সব ডাটা পাবেন। আপনি বুঝে যাবেন আপনার কাজ কি, আর এর সঙ্গে একটা ফাউ দেবো।
মিঃ মুখার্জী চা খেতে খেতে পড়া শেষ করে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।
-কালকের কাগজে এটা বেরোলে ঝড় বয়ে যাবে সরকারে।
-আপনার।
-এ কাজ আমি করতে পারলে, সত্যি বলছি অনিবাবু আমার ডবল প্রমোশন বাগিয়ে ছাড়বো। এতো বড় কেস আপনি হাতে রেখে দিয়েছেন এতদিন।
-আর একটা কথা শুনুন। আমার অফিসের একটা স্টাফের এ্যাড্রেস আপনাকে দিচ্ছি, যেটা ফাউ বললাম। সেইটাও এই মওকায় ঢু মেরে দিন। সেখানে একজন খুনিকে আপনি পেয়ে যাবেন।
-বলছেন কি।
-আমি তার ছবি আপনাকে দেখিয়ে দিচ্ছি। সন্দীপ হয়ে গেছে।
দ্বীপায়ন আমার দিকে তাকিয়ে বললো। দাদা একটু আসবেন।
আমি কাছে গেলাম, মিত্রা বুঝে গেছে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।
আমি গেলাম দ্বীপায়ন আমায় ইশারায় বললো, এটা।
আমি বললাম, এটাই জীবন্ত দলিলরে পাগল।
-এই মেয়েটা কাল মারা গেছে, পুলিশ বলছে সুইসাইড আমি প্রমাণ করে দেবো সুইসাইড নয় মার্ডার। আমার ইচ্ছে ছিলো আজ যাবো না, কিন্তু কথা দিয়েছি বড়মাদের যাবো, তাই আমাকে যেতে হবে।
-তুই থাকলে ভালো হতো। সন্দীপ বললো।
-মিত্রা একটা কাপর সিঁদুর কৌটো আর চুড়ি নিয়ে আয়।
মিত্রা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো।
-সরি সরি আর হবে না। আমি করে ফেলতে পারবো।
-মেনা বোতল এনে দেবো।
-দাদা আছে।
-থাকুক।
-মিঃ মুখার্জী এই সেই ছেলে (দিবাকর) আর এই সেই ব্যাক্তি (সুনীত)। এর সঙ্গে আপনি একেও পাবেন (অতীশ)। খালি অপারেশন হয়ে গেলে আমাকে একবার জানাবেন। আর একটা কথা, জীবনে কোনোদিন এরা যেনো ভেতর থেকে বাইরে বেরোতে না পারে।
-আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন। আপনাকে কথা দিলাম।
-দেরি করবেন না আপনার কাজে লেগে পরুন।
আমি সন্দীপের কাছে গেলাম, ছবিগুলো সাজিয়ে দিলাম। মনে পড়ে গেলো মিত্রা ফাংশনের ছবি তুলেছিলো। ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, তুই সেই ফাংশনের ছবি তুলেছিলি না।
-হ্যাঁ।
-তোর মনে পরে তুই দেবা আর শেলির ছবি তুলেছিলি কিনা।
-না মনে পরছে না। সেটাতো ওই অবস্থায় আছে এখনো দেখা হয় নি।
-কোথায় তোর ক্যামেরা।
-নিচে ব্যাগের মধ্যে।
-নিয়ে আয়।
খেয়াল পরলো সেই ছেলে দুটোর দিকে। ওরা আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমি দেখে হেসে ফেললাম। বড়মার দিকে তাকিয়ে বললাম, ভজুকে বলোনা কচুরী জিলিপি আনতে।
-তোর খিদে পায়।
-এখন পাচ্ছে।
-যাচ্ছি।
আমি এগিয়ে গেলাম, সেই রাতের পর তোমাদের সঙ্গে দেখা হলো।
-দাদাকে তোমার কথা প্রতিদিন জিজ্ঞাসা করি।
-তোমাদের কেনো ডেকেছি বলতো।
-তুমি বলো, যা বলবে তাই করবো।
-খুব রিস্কের কাজ।
-পারবো।
-পারবে।
-তুমি বলনা অনিদা।
-ঠিক আছে বলছি।
|