Thread Rating:
  • 93 Vote(s) - 3.49 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মন ১ - কাহিনীর নাম -সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে ( সমাপ্ত)
(12-01-2022, 06:45 PM)nandanadasnandana Wrote: ঠিক এ পাঁঁকে যে হাবুডুবু খেয়েছে সেই জানে

পাঁক কেন হবে , ভালোবাসা স্বর্গীয় ...

কিন্তু কিছু অভাগা মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করে শেষ করে রেখে দেয় ... অকল্পনীয় হয় সেই বেদনা ...
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(12-01-2022, 02:35 PM)Kallol Wrote: ভাগ্যের ছলনা তে দুজন বাস্তবের কঠিন রূপের মুখোমুখি। একদিকে নিজেদের পরিজন  , ওন্য দিকে  জীবনের প্রথম ভালোবাসা ,  একটা  কে আকড়ে ধরলে, অন্য টাা কে  হারাতে হবে। যদিও এখনও পর্যন্ত কেউ ই  মুখ ফুটে  বলেনি। ভবিষ্যতে কি হয় দেখার অপেেক্ষাাাায়।  Heart


হ্যাঁ সেটা আমার ও মনে হয়। জীবন তো কিছু বাইনারি ব্যাপার না যে সুইচ অন অফ করলে সমস্যা আসবে আবার চলে যাবে। দেখা যাক কি হয়
Like Reply
(12-01-2022, 07:01 PM)ddey333 Wrote: পাঁক কেন হবে , ভালোবাসা স্বর্গীয় ...

কিন্তু কিছু অভাগা মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করে শেষ করে রেখে দেয় ... অকল্পনীয় হয় সেই বেদনা ...

পাঁক কি সাধে বললাম? অনেক দুঃখে বললাম।
[+] 2 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply
(12-01-2022, 06:42 PM)nandanadasnandana Wrote: অসাধারণ। কিন্তু কি ভাবে জায়গা দিতে হয় জানিনা আমি। একটু বলে দিন

[Image: 20220112-161927.jpg]

ছবিটার উন্নত ভার্সন দিলাম। আপনি যদি এটি প্রথম পৃষ্ঠায় সেট করতেই চান তাহলে আগে এটি ডাউনলোড করে নিন। তারপরে এই নিচের রেপ্লায় বক্স এর upload image option ক্লিক করে ছবিটা আগে আপলোড করে কপি করে নিন..... তারপরে একদম প্রথম পোস্টের নিচে edit অপসনে গিয়ে full edit ক্লিক করে একেবারে লেখার শুরুতে গিয়ে এই ছবিটা পোস্ট করে দিন....... ব্যাস তারপরে আপডেট পোস্ট করলেই সেট হয়ে যাবে।

বাবারে.. এতসব লিখে নিজেরই সব গুলিয়ে গেলো Lotpot
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
শেষ পর্ব লিখতে গিয়ে নিজেই কেঁদে ভাসালাম খানিক।
[+] 3 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply
কাঁদার মতোই কাহিনীটা , কাহিনী নয় ... জীবনকাহিনী ...
Like Reply
                                                                           বারো

ভাগ্যের কেমন অদ্ভুত পরিহাস। এখন মনে হচ্ছে সব ঠিক ঠাক। নিজের জব এখানে। দিদি রা এখানে। সবাই কি সুন্দর এক হয়ে গেছি। বাড়িতে আমার বেশ গুরুত্ব এখন। বাবাও বলে নাকি মাকে, নান্দু টা কে আসতে বোল। কতকাল আসে না। এই গুলো শুনলেও কান্না পায়। না না দুঃখে না, আনন্দে। এতো আনন্দ, আর সে নেই। আমি যে কিছুই এর উপভোগ করতে পারছি না। ইশ থাকলে কি ভালই না হতো। ছেলেটা সব সময়ে আমাকে মার খেতেই দেখল। কোন দিন দেখল না তার মিমিও আনন্দে আছে। সত্যি করেই কি তার মিমি আনন্দে আছে? ওকে ছাড়া আনন্দ তো আমার লাগেই না। বরং ও আছে কাছে, শত দুখেও মনে হয় আনন্দে আছি।

যাই হোক, রাহুল কে টেক্সট টা করে অপেক্ষা করে বসে আছি। এক দিন গেলো, দু দিন গেলো, কোন উত্তর এলো না। রোজ ই সকালে উঠে ফোন দেখি। ভাবি কোন উত্তর আসবে। আসে না কোন উত্তর। ভিতরের ছটফটানি টা আমার বাড়ছে। অনেক দিন চুপ থাকার পরে আর পারলাম না । যাকে জীবনে ফোন করতাম না সেই দিদি কে ফোন লাগালাম । মানে বড়দি কে। সবাই কেমন আছে জিজ্ঞাসা করার পড়ে অর্জুনের কথা জিজ্ঞাসা করতেই, দিদি বলল- দিদিও গত দশ দিন তাকে ফোনে পায় নি।

আমার ভিতরের পাগলামো টা বেড়ে গেলো। দিদিকে দেখালাম না ব্যাপার টা কিন্তু তারপর থেকে আমি রোজ ই ফোন করি, কোন উত্তর পেল কি না। আরো দশ দিন গেলো। দিদির প্রায় কাঁদো কাঁদো অবস্থা। আমার অবস্থাও তথৈবচ। দিদি ফোনে কাঁদে। আর আমি ফোন রেখে কাঁদি। কেমন যেন হাত পা আসছিল না আমার শরীরে। ক্লাস করাতে ইচ্ছে করত না। দুজন স্কলার ছিল, ওদের দিকেও মন দিতে পারছিলাম না। রাতে ঘুম উড়ে গেল আমার। নাহ আর অপেক্ষা করা ঠিক না। রাহুল কে ফোন টা করেই দিলাম

-     হ্যাঁ মাসী বল
-     সরি তোমাকে ডিস্টার্ব করলাম ।
-     না না ।
-     বলছি, দেখো, অর্জুনকে গত দিন কুড়ি ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাকে বলবে ও কোথায় থাকে? আমি সেখানে যাব
মনস্থির করে নিয়েছি। ছেলেটা ইম্পর্ট্যান্ট, আমার ইগো বা সমাজ নয়।
-     ও থাকে মিশিগান এ। কিন্তু ওখানে ওকে কোথায় খুজবে মাসী?
-     কেন? ওর অফিসের ঠিকানা দাও। আমি যোগাযোগ করে নেব।
-     সে দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু আমাকে একবার খোঁজ নিতে দাও। আমি পরশু বিকালে তোমাকে জানাচ্ছি। যদি খোঁজ পাই তো বলে দেব, আর না পেলে অফিসের ঠিকানা আর সব কিছু তোমাকে জানিয়ে দেব।
-     বেশ

শেষ কথাটা বলতে গিয়ে আমার গলা টা কেঁপে গেল। ফোন টা রেখে হাপুস নয়নে কাঁদলাম। জোরে জোরে ডুকরে ডুকরে। কত অজানা ভয়, কত চিন্তা। বুকের ভিতর টা ধড়াস ধড়াস করছিল মারাত্মক ভাবে আমার। কি জানি কেমন আছে ছেলেটা?  কবে যে পরশু সন্ধ্যে বেলা আসবে?

আমি পরের দিন আমার কলেজ কতৃপক্ষ কে আরজেন্ট জানিয়ে ভিসার এপ্লাই করে দিলাম। ওরা ব্যবস্থা করে দেবে। বলে দিলাম যত দ্রুত করতে পারে ততই ভাল। আমি ই যাব। ছোড়া কে কান ধরে নিয়ে আসব। মায়ের ছেলেকে মায়ের কাছে ফেরত দেব। বলব আর যেতে হবে না বাইরে। থাকুক এখানে আমার চোখের সামনে। বিয়ে করুক সংসার করুক। থাকতে হবে না অমন ছেলেকে বাইরে।

যেদিন কে আমাকে খবর জানাবে বলেছিল রাহুল, সেই দিন আমি দুপুর থেকে অপেক্ষা করছি ফোনের। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যে হলো, ফোন আর আসে না। আমি এবারে নিজেই ফোন টা করব ভাবছি। তখন দরজায় কলিং বেল বাজল। দৌড়ে গেলাম আমি দরজা খুলতে। দিদি হবে।
 
কলিং বেলের আওয়াজে দরজা খুলতেই আমার বর এল। আজকে বেশ তাড়াতাড়ি।
-     কি ব্যাপার? আজকে বেশ তাড়াতাড়ি?
আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়ে খানিক চটকে নিয়ে বলল
-     তোমাকে মিস করছিলাম। ভাবলাম তোমার কলেজে চলে যাই। তারপরে ভাবলাম আজকে বুধবার, আমার মহারানীর তো স্টাডি লিভ থাকে
-     বাবাহ আমার ও দিন ক্ষনের হিসাব ভালই রাখ দেখি আজকাল?
-     হুহু বাওয়া। বললে হবে? আমার গুণ্ডা গুন্ডির মা তুমি
-     আহা। কি কথা।
আমি জল দিলাম। জল খেয়ে বলল, চল কোথাও ঘুরে আসি।
আমি অবাক। মানে অবাক ঠিক নই। ও এই রকম ই। কোন প্লান ছাড়াই কাজ করে । বললাম
-     কোথায়?
-     এই ধর গাড়ি নিয়ে চলে যাব মন্দার মনি।
-     পাগলা। কাজ নেই আমার? মেয়েটার সামনে পরীক্ষা, আমার কলেজে ,এক্সাম চলছে, সেই খেয়াল আছে?
-     ও তাই বুঝি। ইচ্ছে করছিল তোমাকে আরো কাছে পেতে।
আমি এদিক ওদিক কাজ করছিলাম। ওর গা থেকে পোশাক টা খুলে হ্যাঙ্গারে রাখ ছিলাম। কাজ করতে করতেই বললাম,
-     আমি কি ভাবে দূরে আছি, জানতে পারি কি?
-     সে তুমি বুঝবে না। তোমার শাড়ির আঁচল উড়বে হাওয়ায়। এই সুন্দর সুগন্ধি কেশ আমার মুখে চোখে পড়বে হাওয়ায় উড়ে। সে একটা আলাদা রোম্যান্টিক ব্যাপার।
-     হ্যাঁ আর চুলে জট পড়বে হাওয়া তে। এই শোন তুমি যতবার এই রকম রোম্যান্টিক হয়েছ, ততবার গুণ্ডা গুন্ডি এসেছে আমার পেটে। খবরদার ওই সবের নাম করবে না
-     আরে ধুর। সে তো আমি ইচ্ছে করে দিয়েছি। একটা পরিবারে চারটে পুঁচকে না হলে জমে নাকি
-     আর তাদের মা কে হাড় জ্বালিয়ে খেতে পারলে আরো জমে!!!
-     হুম। তাদের মা পাগল হয়ে ঘুরে বেড়াবে। আর আমি মাঝে মাঝেই তাদের মা কে এই ভাবে জড়িয়ে ধরে কোলে তুলে নেব
এই বলে এগিয়ে এসে আমাকে কোলে তুলে নিল আমার বর। আমিও গলা জড়িয়ে ধরলাম। জানিনা এই জন্যেই হয়ত লোকটার প্রেমে আমি পাগল। আমাকে কাছে পেলেই, কি ভাবে আমার সাথে লেপ্টে থাকবে সেই চিন্তায় ঘোরে। বললাম
-     এখন না। দিদি আর ললিত দা আসছে সুবর্ন কে নিয়ে।
আমার চুলে নাক টা ঢুকিয়ে দিয়েছে বর। জড়ানো গলায় বলল
-     উম্ম আমি কি করব? আমার এখন তোমাকে দেখেই প্রেম পেয়েছে।
-     উফফফ ছাড়ো না। রাতে করেও হয় না?
-     সে তো সেক্স করি। এখন প্রেম পাচ্ছে
-     আহা ছাড়ো না
-     না
কলিং বেল বাজল। দিদিরা এল।
 
 
 দৌড়ে গিয়ে দরজা খুললাম আমি। ভেবেছিলাম দিদি এলো মনে হয়। কিন্তু খুলেই যা দেখলাম তাতে আমার অজ্ঞান হয়ে যাবার অবস্থা। একী !!! অর্জুন তুই!!!!!!

কোন কথা বলল না অর্জুন। ঢুকে এলো ঘরে। আমি দরজা বন্ধ করে দিলাম। চীৎকার করে উঠলাম। মনের মধ্যে অজস্র প্রশ্ন। ওকে দেখে রাগ হচ্ছে প্রচন্ড, আনন্দ হচ্ছে সীমাহীন। মনে হচ্ছে মাথা ফাটিয়ে দি জানোয়ার টার। আবার মনে হচ্ছে যাক বাবা ফিরল। রেখে দি নিজের কাছে। আবার হচ্ছে তীব্র অভিমান। এতোদিন বাদে মনে পড়ল? আমি তো রোজ ওকে ভেবেছি। পাগলের মতন ভেবেছি। এতো দিনে আমাকে মনে পড়েছে। কিন্তু হলো উলটো টা। চীৎকার করে উঠলাম আমি

-     কীরে তুই এতো দিন কোথায় ছিলিস। বাড়ির কেউ তোকে পায় কেন পায়নি? কি পেয়েছিস তুই? সবাই কে এমনি ভাবে তিলে তিলে মারবি?

সাথে একটা ঢাউস ব্যাগ। বুঝলাম ও বাড়ি যায় নি। সোজা এয়ারপোর্ট থেকে আমার কাছে এসেছে। আবার চীৎকার করলাম

-     কি রে বাড়ি যাস নি কেন? সব কটা লোক কান্না কাটি করছে। কি রে বল?? কি রে? উত্তর দিচ্ছিস না কেন?? আমি মরে যাব কোনদিন তোর জন্য। কি রে ?????

কাছে গিয়ে রাগে, দুঃখে আনন্দে ওর বুকে কিল মারতে শুরু করলাম আমি। ওকে দেখে খুশী তে পাগল হয়ে গেছিলাম একেবারে।মনের আনন্দে কোথায় বুকে নিয়ে আদর করব তা না, মারতে শুরু করে দিলাম। ও কিছু বলল না আমাকে। কিল গুলো খেল অকাতরে। আমার হাত টাও ধরল না। কেমন একটা ভাব লেশ হীন মুখ। মুখের সেই ঔজ্জ্বল্য যেন হারিয়ে গেছে। চোখে সেই আঁধার।
শুধু আমার দিকে তাকিয়ে বলল

-      আমার খুব ঘুম পেয়েছে। তিন দিন ঘুমোই নি।

আমি অবাক হয়ে গেলাম। সাথে ভয় লাগল তীব্র। ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম, এ তো ঠিক লাগছে না আমার। নাহ বেশী প্রশ্ন নয় এখন। ওর ঘুম দরকার। ওকে বললাম স্নান করতে। আমি কোন রকম দুটো গরম ভাত, মাছ ভাজা আর আলুভাতে দিয়ে খাইয়ে দিলাম ওকে। কোন কথা না বলে আমার বেড রুম এ গিয়ে শুয়ে পড়ল। ঘুমিয়ে গেল অকাতরে।
 
কিন্তু আমি পড়লাম বিপদে। ও যে এখানে এসেছে, সেটা অবশ্যই ওর মা জানে না। ভাবলাম, আমি আগে জানি। চোখ মুখ দেখে ভালো ঠেকল না আমার। ওর মায়ের কাছে না পাঠিয়ে আগে জানা দরকার ও এখানে কেন আগে এল। আমি রাহুল কে টেক্সট করে দিলাম, - অর্জুন ঈন্ডিয়া এ এসেছে। আমার কাছে কাছে। কাউকে কিছু বলার দরকার নেই।

সমস্যা হলো ছোড়দি কে তো বলতে হবে। বাইচান্স দিদি চলে এসে ওকে দেখলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না। একবার ভাবলাম ওকে বলি চল পালাই দুজনে। কিন্তু কি জানি, ও কেন এলো আমার কাছে, কি বলবে,কিছুই তো জানি না। কথা কম বলে খুব ও। খুটিয়ে না জানলে সমস্যা হবে। তার আগে কি ছোড়দি কে সব টা জানাবো? না জানাবো না।

কিন্তু ছোড়দি এসে অর্জুন কে এখানে দেখলে কি হবে? নাহ বলেই দি ছোড়দি কে। তারপরে কালকে ওকে দুই বোন এ বুঝিয়ে ওর বাড়ি দিয়ে আসব। দিদিকে ফোন করে বললাম একবার আসতে। আমার গলা শুনে দিদি তো আন্দাজ করেছিল কিছু নিশ্চয়ই। দশ মিনিটে দিদি এসে হাজির।

-     কি হয়েছে?

আমি হাত দিয়ে ইশারা করলাম চুপ করতে। দিদি ভয় পেয়ে গেল বেশ। আমি দিদিকে ডেকে এনে দেখালাম দরজা খুলে যে অর্জুন ঘুমোচ্ছে আমার ঘরে। দিদি অবাক তো হলোই, সাথে মারাত্মক ভয় পেয়ে গেল।

অর্জুনের খবর পাওয়া যাচ্ছে না সেটা সবাই আমরা জানতাম। সবাই চিন্তায় ছিলাম। আমার কান্না বা ওর জন্য ভয় কোন টাই আমি দিদির কাছে ব্যক্ত করিনি আগে। দিদি আমাদের ব্যাপার টা কিছুই জানে না। কিন্তু আন্দাজ নিশ্চই কিছু করেছিল না হলে আমার কাঁধ দুটো কে ঝাঁকিয়ে প্রায় চীৎকার করে বলল কেন আমাকে, একেবারে রণচন্ডী মুর্তি। ভয় পেয়ে গেলাম আমি সেটা দেখে।

-     কি করেছিস তুই? ও এখানে কেন। নিজের বাড়ি যায় নি কেন??
-     দিদি একটু আমার কথা শোন।
-     কোন কথা আমি শুনব না। ও এখানে কেন তুই আমাকে বল আগে।
-     বিশ্বাস কর আমি ওকে ডাকিনি। ও নিজে এসেছে। এসে বলল তিনদিন ঘুমাই নি আমি ঘুমাবো। আমি রান্না করলাম । ও খেয়েই ঘুমোল। আমি তারপরে তোকে ফোন করলাম।
-     ওর মা কে জানাস নি? আমাকে একটা কথা তুই বলতো, ও ওর বাড়ি না গিয়ে তোর কাছে কেন এল?
-     আমি জানিনা দিদি আমার কাছে কেন এসেছে

দিদিকে বলতে পারছি না যে কিছু বলতেই ও এসেছে। কিন্তু দিদি আন্দাজ করেছিল ব্যাপারটা। এমন কিছু বলতে এসেছে যেটা সকলের সামনে বলা যায় না। দিদি গর্জে উঠল

-     মিথ্যুক। ও তোর কাছে এসেছে কেন নিজের বাড়ি না গিয়ে।

তারপরে খুব গলা নামিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করল দিদি

-     সত্যি করে বলতো, কি সম্পর্কে জড়িয়েছিস তোরা।

আমি আর সামলাতে পারলাম না নিজেকে। জোরে কেঁদে উঠলাম আমি। ওই খানেই মেঝেতে বসে আমি ভুলুন্ঠিতা হয়ে কাঁদছি। দিদি মারাত্মক রেগে গেছে। কিন্তু আমি কান্না থামাতে পারছি না। আর দিদিকে বলতেও পারছি না । দিদি তখনো আমাকে ঝাঁকিয়ে যাচ্ছে। আমার কান্নাতে দিদি বিশ্বাস করে নিয়েছে, আমরা কোন সম্পর্কে আছি। আর আমার সাথে কিছু হবার কারনেই অর্জুন গত বেশ কিছু দিন বাড়ির সাথে কেন, কারোর সাথেই যোগাযোগ রাখে নি। চেঁচিয়ে উঠল দিদি

-      কি সম্পর্ক তোদের মধ্যে। নান্দু বল আমাকে। তোকে তো গুলি করে মেরে ফেলা উচিৎ। তুই এতো অমানুষ হলি কি করে? তুই মানুষ নোস তুই শয়তান। তোর মধ্যে শয়তানের বাস। একটা বাচ্ছা ছেলের মাথাটা খেলি কোথায় তুই। খড়গপুরে? কি দিয়ে ভুলিয়েছিস ওকে? রূপ দিয়ে? না শরীর দিয়ে? কোন ছলাকলায় ওকে ধরেছিস তুই রাক্ষুসী??? বল শিগগিরি। তোকে আমি আজকে মেরে ফেলব, ডাইনি।

বুঝে গেলাম, সেদিনে যখন বাড়ি গেছিলাম, বড়দি ছোড়দি কে বলছিল যে অর্জুন খড়গপুর থেকে পড়াশোনা করেছে। আর দিদি জানে আমার ও রিসার্চ খড়গপুর থেকে। দিদির দুয়ে দুয়ে চার করতে সময় লাগে নি। আমি নিজের উপরে ঘেন্নায় সিটিয়ে গেলাম দিদির কথা শুনে। উত্তর দেবার কথা ও মাথায় এলো না ।
 
 আর উত্তর দেবো কি। সেদিনের মতন আজকেও আমার উপড়ে চড় থাপ্পড়ের ঝড় শুরু হলো। দিদি কোথাও বাদ দিলো না আমাকে মারতে। গাল দুটো তো থাপ্পড় মেরে ফুলিয়ে দিল আমার। পিঠে অনবরত মারল। দিদি ভুলে গেল, দিদির জন্যেই আমি এর থেকেও বাজে ভাবে মার খেয়েছিলাম একদিন। সেই দুঃখ আমার নেই। দুঃখ টা হলো, দিদিও শুনল না আমার কথা। বেশ খানিকক্ষণ মারার পরে দিদিও ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ল আমার কাছে। আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করল দিদি। হয়ত মনে হয়েছিল ওর বোনের ভাগ্যে মার খাওয়াই আছে।

মারধোরের পরে চুপ করে বসে ছিলাম আমি আর দিদি। জানিনা কতক্ষন। শুধু শ্বাস প্রশ্বাসের আওয়াজ । নিজেকে খুব অস্থির লাগছে আমার। কেমন একটা ভয় লাগছিল। লোক জানাজানির ভয়। যেটা এতোদিন আমি সবার থেকে আড়ালে লুকিয়ে রেখেছিলাম। মাঝের তিন বছর অসীম কস্ট পেলাম, সেটা বাইরে চলে এলে কার ই বা ভয় না করে? বলেছিলাম না, জ্বলব বলেই হয়ত ওকে ভালবেসেছি। ঝাঁপ দিয়েছি এই আগুনে। মনে হলো দিদি কে না ডাকলেই হতো। ম্যানেজ করে নিতাম আমি হয়ত ব্যাপার টা। দিদি একসময়ে উঠে পড়ল। দেখলাম চলে যাচ্ছে। মনে হলো দিদি কে বলি দিদি আমাকে ছেড়ে যাস না তুই। আজকে আমি বড় একা। আমার আগেই দিদি মুখ খুলল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে,

-     তুই মরতে পারছিস না? কোন নির্লজ্জতায় তুই বেঁচে আছিস? কোন ভালো কাজের জন্য তুই আমার সামনে রয়েছিস। তুই মরে যা। ভাবব আমার কোন বোন ছিল না আর।

দিদি চলে গেল আমাকে মরতে বলে। কাঠ হয়ে গেলাম আমি। কেউ বুঝতে চাইছে না আমার দিক টা। কোনরকমে আমি শুধু বলতে পারলাম দিদিকে,

-     দিদি লোক জানাস না। আমি ওকে কালকে বুঝিয়ে সুজিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেব।
[+] 15 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply
(12-01-2022, 09:50 PM)nandanadasnandana Wrote: শেষ পর্ব লিখতে গিয়ে নিজেই কেঁদে ভাসালাম খানিক।

একটা কথা আর না বলে থাকতে পারলাম না , আপনার এই গল্পটা আমার জীবনের একটা পুরোনো শুকিয়ে যাওয়া ক্ষতকে খুঁচিয়ে আবার রক্তপাত ঘটালো বহুদিন পরে ....
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
(12-01-2022, 09:50 PM)nandanadasnandana Wrote: শেষ পর্ব লিখতে গিয়ে নিজেই কেঁদে ভাসালাম খানিক।

অনেকদিন..... অনেকদিন পরে একটা গল্প পেলাম যেটা..... না থাক.. এই অনুভূতি ব্যাখ্যাহীন..... শুধুই একটা ব্যাথা যেন। সুখের দুঃখের মিশ্রণ, সম্পর্কের মিশ্রণ.... অতীত বর্তমানের অসাধারণ মিশ্রণ....... অনেকেই হয়তো আজ-কাল(অতীত) মুহূর্তের জন্য গুলিয়ে ফেলবে কিন্তু আমি বা আমার মতো অনেকেই চোখের সামনে যেন একটা ছায়াছবি দেখছি..... কখনো আজকের গুন্ডাগুন্ডির মায়ের, আবার কখনো সেই কষ্টকে বন্ধু ভেবে বড়ো হওয়া মেয়েটার।  আজকের এই পর্ব.... না থাক..... বলার ভাষা নেই। ব্যাখ্যাহীন...... Namaskar
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
sudhu apni na tar sathe amar bou kende kete eksa......eta ekta golpo noi.......proti ta sobdo jore jore nijer bhalobasa k bolche......prem r agun ki jinis eta pore sekha uchit sabar.....what a phenomenal description of such pure emotional feelings......superb mam.....hats off to u
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
ভালোবাসার এতো জটিল সমীকরণ গুলো এতো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা চাট্টিখানি কথা না। অভিনন্দন আপনাকে এবং অশেষ ধন্যবাদ এরকম সুন্দর ব্যতিক্রমধর্মী লেখা উপহার দেয়ার জন্য।  Heart Heart Heart
[+] 1 user Likes Siraz's post
Like Reply
Ki Comment kora uchit bhujte perchi na.... 1st day thake e porchi but biswas korun ami sotti bhujte perchi na ki comment korle ei lekhar appropriate hobe....

Ami Sotti ei rokhom lekha khub e kom porechi...
[+] 1 user Likes raja2090's post
Like Reply
আগেও বলেছি, আবার বলছি। আপনি একজন অনন্যসাধারণ লেখিকা। যে মুন্সিয়ানায় আপনি চরিত্রগুলোর আবেগ, তাদের অনুভূতিকে ফুটিয়ে তুলেছেন তা এই সাইটে বিরল তো বটেই, বরং তা একমাত্র mainstream সাহিত্যের কোনো বড়ো লেখক বা লেখিকার সাথেই তুলনীয়।
অভিনন্দন জানাই আপনার মুন্সিয়ানাকে এবং আরো একবার ধন্যবাদ এই সুন্দর উপহারের জন্য।
এই গল্পটা আমি বারবার পড়বো।
[+] 1 user Likes Kaushik Sen's post
Like Reply
(12-01-2022, 10:46 PM)raja05 Wrote: sudhu apni na tar sathe amar bou kende kete eksa......eta ekta golpo noi.......proti ta sobdo jore jore nijer bhalobasa k bolche......prem r agun ki jinis eta pore sekha uchit sabar.....what a phenomenal description of such pure emotional feelings......superb mam.....hats off to u

ধন্যবাদ অনেক। একজন লেখকের এর থেকে বড় পারিতোষিক কিছু হয় না
[+] 1 user Likes nandanadasnandana's post
Like Reply
(13-01-2022, 10:11 AM)Kaushik Sen Wrote: আগেও বলেছি, আবার বলছি। আপনি একজন অনন্যসাধারণ লেখিকা। যে মুন্সিয়ানায় আপনি চরিত্রগুলোর আবেগ, তাদের অনুভূতিকে ফুটিয়ে তুলেছেন তা এই সাইটে বিরল তো বটেই, বরং তা একমাত্র mainstream সাহিত্যের কোনো বড়ো লেখক বা লেখিকার সাথেই তুলনীয়।
অভিনন্দন জানাই আপনার মুন্সিয়ানাকে এবং আরো একবার ধন্যবাদ এই সুন্দর উপহারের জন্য।
এই গল্পটা আমি বারবার পড়বো।

লাভড।  এখানে লাভ রিয়াকশন নেই তাই লিখে দিলাম
[+] 1 user Likes nandanadasnandana's post
Like Reply
(13-01-2022, 12:50 AM)raja2090 Wrote: Ki Comment kora uchit bhujte perchi na.... 1st day thake e porchi but biswas korun ami sotti bhujte perchi na ki comment korle ei lekhar appropriate hobe....

Ami Sotti ei rokhom lekha khub e kom porechi...

এই ছোট ছোট লিখে দেন তাতেই খুশী হই তো
Like Reply
(12-01-2022, 10:18 PM)Baban Wrote: অনেকদিন..... অনেকদিন পরে একটা গল্প পেলাম যেটা..... না থাক.. এই অনুভূতি ব্যাখ্যাহীন..... শুধুই একটা ব্যাথা যেন। সুখের দুঃখের মিশ্রণ, সম্পর্কের মিশ্রণ.... অতীত বর্তমানের অসাধারণ মিশ্রণ....... অনেকেই হয়তো আজ-কাল(অতীত) মুহূর্তের জন্য গুলিয়ে ফেলবে কিন্তু আমি বা আমার মতো অনেকেই চোখের সামনে যেন একটা ছায়াছবি দেখছি..... কখনো আজকের গুন্ডাগুন্ডির মায়ের, আবার কখনো সেই কষ্টকে বন্ধু ভেবে বড়ো হওয়া মেয়েটার।  আজকের এই পর্ব.... না থাক..... বলার ভাষা নেই। ব্যাখ্যাহীন...... Namaskar

লাভড
Like Reply
(12-01-2022, 10:00 PM)ddey333 Wrote: একটা কথা আর না বলে থাকতে পারলাম না , আপনার এই গল্পটা আমার জীবনের একটা পুরোনো শুকিয়ে যাওয়া ক্ষতকে খুঁচিয়ে আবার রক্তপাত ঘটালো বহুদিন পরে ....

কি বলি।সব গল্পই তো বাস্তব থেকেই নেওয়া
[+] 1 user Likes nandanadasnandana's post
Like Reply
খুব সর্দী, কাশী হয়েছে। কিন্তু এই গল্প টা লেখা শেষ। রোজ ই আপডেট দেব।
Like Reply
(13-01-2022, 10:15 AM):heart:nandanadasnandana Wrote: লাভড।  এখানে লাভ রিয়াকশন নেই তাই লিখে দিলাম

Heart Smile Smile
Like Reply




Users browsing this thread: 17 Guest(s)