Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
07-01-2022, 04:03 PM
(This post was last modified: 28-01-2022, 02:54 PM by nandanadasnandana. Edited 4 times in total. Edited 4 times in total.)
মন - কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে
( রোম্যান্টিক কাহিনী গুলো, সব মন সিক্যুয়েল এ এখানে দেবো আলাদা আলাদা থ্রেড এ। মন সিক্যুয়েল এর এই গল্প টি প্রথম। নাম টা বদলালাম। পরের গল্প ও এই মন সিরিজেই আসবে। অন্য গল্প আলাদা নাম আলাদা থ্রেড এ)
পর্ব- এক
মানুষের মনের হদিস পাওয়া মুশকিল। কার মনের চিন্তা কোন দিকে যায় , ঘোরে, পাক খায় সেটা কেউ বলতে পারে না। সেই জন্যেই সমাজ। কারন চিন্তার কোন সীমা নেই। সেই চিন্তা এবং চিন্তাসুত্রে তৈরি হওয়া অজস্র কর্ম, অপকর্ম কে লাগাম দিতেই এই সমাজের গঠন হয়েছিল। ভালো মন্দের কোন সংজ্ঞা হয় না। কিন্তু তাও সমাজ ভালো বা মন্দের মধ্যে একটা লাইন টেনে রেখে দিয়েছে। আমরা যারা অবুঝ মানুষ তাদের জন্য এই লাইন। চুরি করা পাপ। কিন্তু এখন শুধু আমি কেন, আপনারাও তাকে পাপ বলতে পারেন না, যখন নাচার মা নিজের অভুক্ত বাচ্চার জন্য খাবার চুরি করে বাচ্চার মুখে তুলে দেয় সেই খাবার। কিন্তু সমাজ বলে এটা পাপ। আর সেটার কারনেই, এমন অজস্র ছোট বড় অপকর্ম আটকে যায়। কিন্তু এই নাচার মায়ের মতন অনেক কিছুই তখন ব্যেতিক্রম হিসাবে গন্য হয়। এই রকম অজস্র ব্যাপার আছে, যেখানে সমাজ অবুজের মতন লাইন টেনে রেখে দিয়েছে। কিন্তু হিসাব করলে দেখা যায় এই লাইন গুলো ও মারাত্মক দামী।
আসল গল্পে আসা যাক। আমি একজন মেয়ে। বছর চল্লিশ বয়েস। নাহ থাক গল্পের মাধম্যেই জেনে নেবেন আমার পরিচয় জীবন সব কিছু। হ্যাঁ যেটা বলছিলাম, সব মেয়েদের একটা ব্যাপার থাকে। যাকে ভালোবাসে তার জন্য শেষ অব্দি যেতে পারে। খুব কম মেয়েই আছে যারা এই ব্যাপার টা ইমোশনলেস ভাবে হ্যান্ডেল করে। বাকি মেয়েরা নিজেদের ইমোশন দিয়েই ব্যাপার টা কে হ্যান্ডেল করে। তা সে বর বা প্রেমিক যেমন ই হোক না কেন। ভালোবাসা আর ভালবাসার সাথে শারীরিক সুখ , এই দুটো একসাথে পেলে, মেয়েরা মারাত্মক দুর্বল থাকে , সে নিয়ে সন্দেহ নেই। খুব কঠিন এবং সঠিক মূল্যবোধের মেয়েরা এই দুটো সুখের থেকে বেড়িয়ে এসে, নিজের ভালোবাসা মানুষ টা কে বদলানোর চেস্টা করে, একটা লেভেল বা উচ্চতা অব্দি। যেমন , পশু নয়, মানুষের মতন বাড়িতে থাকা এই ব্যাপার টা শেখানো। বা ভিজে তোয়ালে বিছানায় না রাখা, নিজের জাঙ্গিয়া নিজে কাচতে পারলেও এটলিস্ট কাচতে দেওয়া, নিজেকে পরিষ্কার রাখা, এই সব ব্যাপার গুলো।
উপরোক্ত ব্যাপার গুলো কোন ছেলে এডপ্ট করে নিলে, সাথে ভালোবাসা আর যৌনতা থাকলে মেয়েরা শেষ দিন অব্দি বরের, সতী হয়েই থাকতে পছন্দ করে। ছেলেরা হয়ত একটু উলটো। যেমন ছেলেরা , বউ ছাড়াও, বাকি মেয়েদের ইম্প্রেস করতে পছন্দ করে। সম্পর্ক করবে কি করবে না সেটা বড় কথা না। অন্যের বউ বা অন্য মেয়েকে ইম্প্রেস করতে পারলেই ওদের ইগো স্যাটিসফাই হয়ে যায়। আমাদের মত বউ দের তখন সমস্যা বাড়ে। চোখে চোখে রাখতে হয় , বাচ্ছাদের মতন। না হলে এর তার বউ কে নিয়ে ঝুলে পড়বে। ওয়েল, ব্যাপার টা এতো টা জেনেরালাইসড নয়, তবুও বা সাধারনত এটা হয়ে থাকে। হয়ত পঞ্চাশ শতাংশ ক্ষেত্রে এটাই হয়। আর নিজের প্রেমিক যদি সেক্স এ বেশ ভাল হয় তবে তো খুব চোখে চোখে রাখা দরকার। না হলে সমাজ সেবা করে বেড়াবেন তিনি।
আমার সে ভয় নেই খুব একটা। কারন আমার তিনি টি, পুলিশ অফিসার। ছোট খাট কিছু নন। তবে বিশাল বড় , রোজ খবরে নাম আসে তেমন ও না। মাঝে মাঝে টিভি তে দেখি তেনাকে। বয়েস অল্প এখন, হয়ত ভবিষ্যতে, রোজ টি ভি তে আসতে পারেন। পুরো দিন ই ব্যস্ত। তবে হ্যাঁ কাজের মাঝেও আমার ফোন গেলে ধরে। কারন ওই কাজ দেখানো আর ফোন না ধরার বিড়াল টা আমি মেরে দিয়েছি শুরুতেই। যেদিন প্রথম ফোন ধরে নি আমার, সেদিনেই। আমি ছিলাম দিল্লী তে একটা সায়েন্স মিট এ। আমার এটা অভ্যেস বলতে পারেন, আমি যতই ব্যস্ত থাকি, ফোন আমার খোলা থাকে। আর বাইচান্স, কোন কল মিস করলে, আমি পরে অবশ্যই কল ব্যাক করি। এটা আমার বরের কোন ভাবেই, অভ্যেসের মধ্যে পরে না। ফোন ধরল তো ধরল না হলে নো কল ব্যাক। আমি যখন ফোন করলাম সকালে, মিট শুরু হবার আগে, ও ফোন টা মিস করেছিল। আগের দিন রাতে কথা হয়েছিল। এটা আমাদের বিয়ের, একমাস পরের ঘটনা। তখন ও সবে জয়েন করেছিল চাকরী তে। ট্রেনিং চলছিল ওর। কাজেই আমি ভাবলাম, ব্যস্ত আছে। তারপরে লাঞ্চ এর সময়ে কল করলাম, তখনো ধরল না। সন্ধ্যে বেলায় , হোটেলে ফিরে এসে করলাম তখনো ধরল না। একবার না প্রায় তিন চার বার করে কল করেছিলাম প্রতিবার। মাথা টা তারপরে গরম হয়েছিল আমার।
আমাকে ও ফোন করল রাতে, প্রায় এগারো টায়। এমন চেঁচামেচি আর কান্না কাটি করেছিলাম বলার নয়। শুধু তাই না, ফেরার পরে সাত দিন কথা বলিনি। আমার সামনে বসে প্রতিজ্ঞা করেছিল এই রকম কোনদিন ও করবে না। সেই হয়েছে আর আজ, এর অন্যথা হয় নি। মেয়েরা এই সব ছোট ছোট ব্যাপার গুলো কে বদলাতে পারলেই খুশী হয়ে যায়। আনন্দ পায়। আর বরেরা সেটা মেনে চললে মেয়েদের ভালোবাসা, লক্ষ গুন বেড়ে যায়।
তারপরে আমার পেটে যখন ওর্শী এলো, ও প্রথম প্রথম খুব উদাসীন থাকত। আমার কস্ট হতো। মনে হতো ও কি খুশী নয়? খুব কস্ট পেতাম। ম্যাটারনিটি লিভ এ থাকতাম বাড়িতে। একা। ও কাজে থাকত। আর সারাদিন আমি মনোকস্টে ভুগতাম। আমাদের তো কেউ ছিল না তখন। আমি আর ও। আমি ভেবেছিলাম, যাক ও ছোট ছেলে, কি করবে? তবে হ্যাঁ আমার খবর নিতো। ব্যাপার টা বদলালো, একদিন ডাক্তার দেখাতে গিয়ে। আমাদের ই মতন একটী কাপল এসেছিল। বসে বসে গল্পই হচ্ছিল। তাদের আর্যাঞ্জড বিয়ে। কিন্তু বর টা মারাত্মক খেয়াল রাখছিল তার বউ এর। আমার আর ওর দুজনের ই সাত মাস ছিল। যদিও বউ টির এটা দ্বিতীয় বাচ্ছা। আর আমার বর হাঁ কর, সেই বরের , তার বউ টা কে কেয়ার করা দেখছিল। সেই বরটি আমার বর কে দেখে বলেছিল
- না না, প্রথম বারেও আমি আপনার মতই এলুফ ছিলাম। মনে শতেক চিন্তা ঘুরত। মনে হতো, সত্যি পারব তো বাচ্চা টা কে মানুষ করতে? কিন্তু বিশ্বাস কর ভাই, বাচ্চা হবার পরে আর আমার বউ এর কস্ট দেখে মনে হলো, আমি সারা জীবন চেস্টা করেও মা হতে পারব না। এতো কস্ট, মা ই করতে পারে শুধু। নিজের মাকে নতুন করে চিনলাম আমি। আর বউ কে আঁকড়ে ধরলাম। কারন আমার বাচ্চার জন্য সে এতো কস্ট করছে। ভালো না বাসলে, এতো কস্ট হাসি মুখে কি কেউ করতে পারে?
আমার বর টা ভোলাভালা। জানিনা কি হয়েছিল সেদিনে ওর। কিন্তু সেই কম্পাউন্ড থেকে, আমাকে ও ওর কাঁধ টা দিয়ে দিয়েছিল। যখন ই ব্যাথা করত, কস্ট পেতাম, ও আমাকে ভরসা দিয়েছে। বাচ্চা ডেলিভারী অব্দি, রোজ এক দেড় ঘন্টা, আমার পেটে হাত বুলিয়ে দেওয়া ছিলো রুটিন। কি যে আরাম হত বলে বোঝাতে পারব না। ঘুমিয়ে যেতাম আমি। আমি কি খেতে ভালবাসি, সেই গুলো নিয়ে আস্ত সন্ধ্যে বেলায়। রাতে আমি রান্না করার সময়ে, আমাকে হেল্প করত। যাই হোক মানে যেটা বলতে চাইছি সেটা হলো, মেয়েদের কাছে এর থেকে বেশী ভালোবাসার কি প্রয়োজন? আমি ওতেই খুশী। বাকি ও ওর মতন থাকে। রাতে বাড়ি ফিরে আসুক। ইচ্ছে হলে আমাকে করুক ইচ্ছে না হলে আমাকে নিয়ে শুয়ে থাকুক। ব্যস।
এটা নিছক আমার গল্প না। বা এটা একটা কাহিনী কিনা আপনারাই বলতে পারবেন, পরার পরে। কিন্তু জানিনা কেন বলতে ইচ্ছে হলো আমার তাই বলতে শুরু করলাম। বাংলাদেশ থেকে আমার দাদু চলে এসেছিলেন আগে। তারপরে, দাদু, ঠাকুমা, বাবা মা ,কাকা কাকি, আমার বাকি তিন দিদি, কাকার দুই মেয়ে বয়সে বড় তারা আমার থেকে, সবাই মিলে অনেক জায়গা ঘুরে, উত্তর বনগাঁ তে একটা বাড়ি কিনে যখন সেটেল হলেন, সেই বছরেই আমার জন্ম। সব থেকে ছোট মেয়ে আমি। আমার পরে একটা ভাই হয়েছিল আমার। তবে বড় বাড়ি কিনেছিলেন, দাদু বাবা কাকা মিলে। অনেক গুলো ঘর ছিল। প্রায় বারো তেরো টা ঘর ছিল। তো ছয় বোন আর এক ভাই আর সবাই মিলে প্রায় ১৪ জনের সংসার। আমার বরদি অপর্না র সাথে আমার বয়সের ফারাক ছিল প্রায় ১০ বছর। মেজদি, চন্দনার সাথে , ৮ বছরের, আর ছোড়দি, সুবর্না র সাথে ৩ বছরের। আর আমি নন্দনা। কাকার বড় মেয়ে , ইন্দ্রানী, আমার থেকে ৬ বছরের বড় আর ছোট মেয়ে চন্দ্রানী আমার বয়সী ছিল। ভাই আমার থেকে বছর পাচেকের ছোট ছিল। হিসাব মতন, আমার ভাই আর বড়দির ছেলে, অর্জুন, এক ই বয়সের প্রায়। ভাই মাস দুয়েকের বড় ছিল।
ব্যাপার টা হলো, দুটো মেয়ে হয়ে যাবার পরে, আমার বাবার মনে হয় আমার আর ছোড়দির জন্ম পছন্দ হয় নি। মনে হতো এটা আমার, কারন বাবা বড়দি আর মেজদি কে যত টা পছন্দ করত, আমাদের করত না। বরং উলটো টাই ছিল। আমরা অপছন্দের তালিকা তেই ছিলাম বাবার। কাজেই, বাড়ির মধ্যেই একটা গ্রুপ হয়ে গেছিল আমাদের। আমি ছোড়দি আর চাঁদ। চাঁদ মানে চন্দ্রানী। কারন আমরা এক বয়সি ছিলাম। মা এর উপরেও কম কথা শোনানো হয় নি, যত দিন না ভাই নামক একটি পদার্থ কে আমার মা জন্ম দিয়েছিল। একি ভাবে কাকীর উপরে এই যন্ত্রণা চলেছে আজীবন, কারন কাকি আমার মেয়ের মতন সৌভাগ্যবতী হতে পারে নি। কাকির আর ছেলে হয় নি। হয়ত কাকা, মানুষ হিসাবে আমার বাবার থেকে অনেক ভাল , তাই নিজের বউ কে চার চারটে বাচ্চা নেবার কস্ট দেন নি। আমার বাবা কিন্তু মায়ের উপরে সামান্য ও দয়া করেন নি। পাঁচ জন কে পেটে ধরতে হয়েছে আমার মা কে। তাও, শেষের জনা কে তো নিজের বড় মেয়ের সাথে একসাথে। ইশ কি লজ্জা। আমি ভাবছি, যদি আমার মেয়ে ওর্শী আর আমি একসাথেই প্রেগ্ন্যান্ট হই । আমি তো বর কে মেরেই ফেলব। তাও মেনে নিলাম, আনন্দের মুহুর্তে ভুল হয়েছে। একটা ক্ষমা করার জায়গা থাকে। কিন্তু ছেলের জন্ম দিতে হবে বলে যদি বর আমাকে প্রেগ্ন্যান্ট করে, সেটা কি ক্ষমা যোগ্য? মায়ের উপরে রাগ ই হয় আমার। একটু প্রতিবাদ করা যেতো না?
আমার এক মেয়ে এক ছেলে। বড় টা মেয়ে, নাম ওর্শী। স্বভাবে, ওর বাপের মতন। ঠাণ্ডা স্বভাব। হম্বি তম্বি নেই। মা যা খেতে দেবে , চুপ করে খেয়ে নেবে। পড়াশোনা তে তো বলতে নেই, বাবা মা দুজনের গুন ই ভরে ভরে পেয়েছে ও। ওর বাপের মতন দেখতে। বড় বড় চোখ। কিন্তু মজার ব্যাপার, মেয়ে আমি ছাড়া কিছু বোঝে না। ও এখন ৮ বছরের। আর ছেলে টা আমার মতন। গুন্ডা। নাম জিষ্ণু। আমাকেও মানে না। এখন তিন বছর বয়েস ওর। কিন্তু না আমাকে মানে না ওর বাপ কে ভয় পায়। একজন কেই পাগলের মতন ভালবাসে , সেটা হলো ওর দিদি। আমি অনেক সময়ে খেই হারিয়ে ফেলি। রান্না বান্না, মেয়েকে পড়ানো, ছেলেকে খাওয়ানো, কাচা কুচি, ওদের বাপ কে সামলানো। তার পরে আমার কলেজ যাওয়া। উফ মনে হয় নরকে আছি। আজ শেষ করে কলেজ পৌছতে , কালকের আগে আর পারব না। তখন আমি কাঁদি নিঃশব্দে আর কাজ করে যাই। সেই সময়ে আমার মেয়ে, ভাই এর দায়িত্ব পুরো নিয়ে নেয়। আর ভাই ও চুপচাপ দিদির সাথে থাকে, খেয়ে নেয়।
সন্ধ্যে বেলায় এসে দেখি, চুপচাপ পড়তে বসেছে দিদির সাথে। আমার বেশী দেরী হয় না। কারন আমার ক্লাস মোটামুটি শেষ হয়ে যায় চারটের আগেই। এখন সিনিয়র রিডার আমি। দিনে একটার বেশী ক্লাস থাকে না। তবে দুজনাই, মা অন্ত প্রান। ছেলে তা সারা দিন আমার খোঁজ নেয় না। রাতে আমার কাছে ছাড়া শোবেও না। কেউ পারলে শুইয়ে দেখাক। ওর বাপের কোলে থাকতে ও ভালোবাসে। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে আমার কাছে চলে আসবে মাঝ রাতে। তাই সন্ধ্যে বেলা টা, আমি নিশ্চিন্তেই কাজ শেষ করে মেয়েকে পড়াতে বসাই। ওর বাপ আসার আগে পড়িয়ে নিতে হয়। কারন ওর বাপ বাড়ি ফেরার পরে, ছেলের সাথে এমন উৎপাত শুরু করে, যে মেয়ের পড়াশোনা টাই বাকি থেকে যায়। বাড়ি তে থাকলে, ওদের বাপ , ওদের কে বিগড়ে দেবে, আর যত শাসন ফোন করে। যাই হোক, আমি সকাল সকাল বাড়ি এসে ওদের পড়াশোনার ব্যাপার টা ম্যানেজ করে নি।
মাঝে তিন দিন ওদের বাপ ছিল না। কলকাতা গেছিল, আই পি এস মিট এ। বাড়ি টা যেন মনে হচ্ছিল, কি শান্ত। এটাই হয়। ও না থাকলে এক লহমাও আমার ভালো লাগে না। আর থাকলে মনে হয় আপদ, আমাকে খেতে এই পৃথিবী তে এসেছে। আর ছেলে মেয়ে তো বাপ কে না পেলে খুব মন মরা হয়ে থাকে। বিশেষ করে ছেলে টা। বললাম না আমার মতন হয়েছে!
যাই হোক যেটা বলছিলাম, তো আমাদের বাড়িতে হয়ে গেছিল দুটো গ্রুপ। আমার ঠাকুমা দাদু বাবা , বড়দি, মেজদি আর ইন্দু দিদি আর ভাই। আর একটা গ্রুপ এ ছিলাম, আমি ছোড়দি আর চাঁদ আর কাকি। আমার কাকি আমাকে মানুষ করেছিল বলে আমার উপরে কাকির ভালবাসা টা অকৃত্রিম ছিল। পরে ভালবাসা টা আমারি দোষে নষ্ট হয়ে গেছিল। সে আমি পরে বলব ক্ষন। আর আমার মা আর কাকা কোন গ্রুপেই ছিল না। দুটো গ্রুপ ই ওদের কাছে প্রাণের থেকে বেশী প্রিয় ছিল। কি আর করা যাবে। আমার বয়েস যখন পাঁচ, তখন আমার ভাই ও জন্মায় আর বড়দির ছেলে অর্জুনের ও জন্ম হয়। বড়দি আমার দু চোখের বিষ ছিল, কিন্তু ওর ছেলে তো না। ভালোবাসতাম যথেষ্ট। সেই নিয়ে অনেক মার ধর খেতে হয়েছে আমাকে। যাই হোক, বড় আমরা সবাই হচ্ছিলাম একসাথে। বাই চান্স, ছোড়দি আর আমার পড়াশোনার ধাত ছিল মারাত্মক রকমের ভাল। আর আমি পরাশোনার সাথে সাথে খেলাধুলা তেও বেশ পারদর্শী ছিলাম। ছোড়দি, এক্সট্রাওর্ডিনারি ছিল। আমাদের কলেজের মাস্টারমশাই দের বলতে শুনেছিলাম, এমন ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র/ছাত্রী এই কলেজ এ আগে আসে নি।
দুর্ভাগ্য দেখুন, বাবা বড়দি, মেজদির , বিয়ে দেবার পরে, মাত্র ১৭ বছরের ছোড়দির বিয়ের ঠিক করল। পাত্র চাকরী করে সরকারী। কিন্তু বউ কে পড়াশোনা করাবে না। আমার ছোড়দি বরাবর ই, লক্ষ্মী ছিল। আমার মতন গুন্ডা ছিল না। শুধু বলেছিল আমার মা কে , মা আমি পড়তে চাই আর কিছু চাই না। যাই হোক সে ঘটনায় পরে আসছি। আমি ছোট বেলায় মা কে কম পেয়েছি খুব। কারন চারটে মেয়ের জন্ম দেবার পরে মায়ের শরীর সাস্থ্য বেশ ভেঙ্গে পড়েছিল। আমার কাকি আমাকে আর চাঁদ কে প্রায় একসাথে মানুষ করেছে। আর আমার ছোড়দি। আমার ছেলে যেমন আমার মেয়েকে জ্ঞান করে, আমিও ছোড়দি কে সেই জ্ঞান করতাম। আমি মেয়েদের জামা কাপড় পড়তে পছন্দ করতাম না। না হলে আমার বাড়িতে দিদিদের কোন কমতি ছিল না। পুরোন জামা কাপড় অঢেল ছিল। আমার ছোড়দি আর কাকি, জানিনা কোথা থেকে ছেলেদের প্যান্ট আর জামা নিয়ে এসে সেলাই করে আমার মাপের বানিয়ে দিত। আর আমি সেই গুলো পরে পরে ঘুরতাম। আর গুন্ডামি করতাম।
আমার বড়দি ছিল দারুন দেখতে। কিন্তু মন টা অতো টাও খারাপ ছিল না। মাঝে মাঝে দয়া মায়া করে আমার দিকে কিছু কিছু ছুড়ে দিত। যতই হোক ছোট বোন আমি। আর আমার মেজদি ছিল মারাত্মক সুন্দরী। যেমন ফর্সা, তেমন লম্বা। মাথার চুল ছিল এক ঢাল। আমাদের বাড়িতে অবশ্য সবার চুল ছিল খুব সুন্দর। কিন্তু মেজদি, একেবারে পরী। কিন্তু মন্ টা ছিলো, তার থেকেও কুৎসিত। ওকে দেখলেই মনে হতো, কোন রাক্ষসী, রূপ বদলে আমাদের বাড়িতে এসেছে। কোন না কোন উপায়ে ও আমাকে মার খাওয়াতো বাবার কাছে। আমার ছোড়দি, সাত চড়ে রা কাড়ত না । আমি সহ্য করতে পারতাম না অন্যায়। প্রতিবাদ করতাম রিতিমতন। তাই রাগ টা আমার উপরেই ঝাড়ত। আর বড়দি কে বুঝিয়ে, দুজনে মিলে, বাবাকে দিয়ে আমাকে মার খাওয়াত। আর ছোড়দি, এক অপরূপ মিশ্রন। যেমন মিস্টি দেখতে ছিল ছোড়দি, তেমন বুদ্ধিমতী। কত বার যে দিদির একটা কথায়, বাবার কাছে মার খাওয়া থেকে বেঁচে গেছি বলার না। বস্তুত এটাই বলার যে, আমরা ছয় বোন, বেশ ভাল দেখতে ছিলাম। যদিও আমি তেমন দেখতে নই। বাবার মতন কাঁচ কাঁচ, গায়ের রঙ ছিল আমার। চোখ নাক বেশ কাটা কাটা ছিল মায়ের মতন। বেশ লম্বা হচ্ছিলাম তখন। মানে সব বোনদের যেমন ধাত , তেমন ই ছিলাম। চুল হয়ত ভালই ছিল, কিন্তু সাত বছর অব্দি ন্যাড়াই থাকতাম। পরে ছেলেদের মতন বয় কাট চুল রাখতাম আমি। মোটের উপরে দেখার দিকে আমার তেমন কোন লক্ষ্য ছিল না।
ভাল ফুটবল খেলতাম। পরাশোনায় ভাল না হলে হয়ত, খেলা কোটা তেও চাকরী পেয়ে যেতাম আমি। ছেলেদের সাথেই ফুটবল খেলতাম আমি। খেলতাম ও দুর্দান্ত। নেহাত মেয়ে বলে আমি বাইরে খেলতে যেতে পারতাম না। না হলে পয়সা নিয়ে খেপ খেলার চল তখন খুব ছিল। আমার ছোড়দি আমাকে মানা করেছিল যেতে। আর ছোড়দি আমার কাছে বাইবেল। নিজের টাকা জমিয়ে আমাকে দিদি, স্পাইক, শু কিনে দিয়েছিল। কাকি ও দিয়েছিল সেখানে কিছু। সে জুতো আজ ও আছে আমার কাছে। সযত্নে তুলে রাখা আছে। ততদিনে দুই দিদি, মানে বড়দি মেজদি , দুজনের ই বিয়ে হয়ে গেছিল। বাবা দুজনের ই বিয়ে অল্প বয়সেই দিয়েছিল। যদিও দুজনে বিয়ে করতেও চেয়েছিল। ওরা চিরকাল, কি করে সুন্দর লাগবে, গয়না কি নেবে, ড্রেস কি নেবে সেই সব নিয়ে ছিল ব্যস্ত। মানে ওদের দুনিয়া টা ওই সবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। বাবা দিতো ও ওদের। আর আমরা যেন ফেলনা ছিলাম। মায়ের জোরাজুরি তে, আমাকে আর ছোড়দি কে, একটা গলার হার আর, দুটো কানের ঠাকুমা গড়িয়ে দিয়েছিল। আমি পড়তাম না । কিন্তু ছোড়দি পরে থাকত। বললাম না ,ছোড়দি ছিল পারফেক্ট। আমাকে পরে ছোড়দি পড়াত ওই গয়না গুল। কিন্তু আমি গয়না পড়া টা খুব নোংরা চোখে দেখতাম। মনে হত মেয়ে হয়ে জন্মানোই ভুল আমার। নিজেকে ছেলেদের মতন ভাবে মানুষ করাতে চেস্টা করতাম। ছেলেদের মতন বড় হয়ে চাকরী করব, সংসার চালাবো এটাই ছিল আমার উদ্দ্যেশ্য। সেই জন্যে খেলা ধুলা করতাম ছেলেদের সাথেই। এইটা প্রমান করানোর জন্য, যে আমি অনেক বেটার।
The following 20 users Like nandanadasnandana's post:20 users Like nandanadasnandana's post
• Abid Ahmed, al0o0z, Atonu Barmon, Baban, Biddut Roy, buddy12, DarkPheonix101, ddey333, dpbwrl, h1996, Kallol, ojjnath, raja05, samael, Siraz, sudipto-ray, suktara, Tiger, Voboghure, WrickSarkar2020
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
সবে শুরু করেছি। আপনারা পড়তে শুরু করলে ভাল লাগবে। আর কমেন্ট করে জানাবেন দয়া করে। নমস্কার।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(07-01-2022, 04:27 PM)nandanadasnandana Wrote: সবে শুরু করেছি। আপনারা পড়তে শুরু করলে ভাল লাগবে। আর কমেন্ট করে জানাবেন দয়া করে। নমস্কার।
গল্পতো সবে শুরু , কমেন্ট আরেকটু পরে করবো ...
কিন্তু আপনার লেখার স্টাইল দেখে মনে হচ্ছে আপনি আর কেউ নন , পুরোনো Xossip এর সেই সবার প্রিয় লেখিকা nandanadas1975
সত্যি কিনা বলুন ?
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
(07-01-2022, 04:41 PM)ddey333 Wrote: গল্পতো সবে শুরু , কমেন্ট আরেকটু পরে করবো ...
কিন্তু আপনার লেখার স্টাইল দেখে মনে হচ্ছে আপনি আর কেউ নন , পুরোনো Xossip এর সেই সবার প্রিয় লেখিকা nandanadas1975
সত্যি কিনা বলুন ?
আমারও তাই মনে হচ্ছে।
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
(07-01-2022, 04:27 PM)nandanadasnandana Wrote: সবে শুরু করেছি। আপনারা পড়তে শুরু করলে ভাল লাগবে। আর কমেন্ট করে জানাবেন দয়া করে। নমস্কার।
ভালো লাগছে। কিন্তু গল্পের টাইটেল কি? মানে রোমান্স নাকি এডাল্টি।
•
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(07-01-2022, 04:41 PM)ddey333 Wrote: গল্পতো সবে শুরু , কমেন্ট আরেকটু পরে করবো ...
কিন্তু আপনার লেখার স্টাইল দেখে মনে হচ্ছে আপনি আর কেউ নন , পুরোনো Xossip এর সেই সবার প্রিয় লেখিকা nandanadas1975
সত্যি কিনা বলুন ?
সত্যি। ব্যস্ত ছিলাম অনেক। আসতে পারিনি বহুদিন। পুরোন xossip টাও হাওয়া হয়ে গেল। তাই খুঁজে পেতে আসতে সময় লাগল
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(07-01-2022, 05:18 PM)Biddut Roy Wrote: ভালো লাগছে। কিন্তু গল্পের টাইটেল কি? মানে রোমান্স নাকি এডাল্টি।
রোম্যান্টিক হবে আর এডাল্টরি থাকবে না , সেটা কেমন কথা। তবে আমি এই গল্প টা সেই অর্থে কোন যৌন গল্প নয়। কিন্তু জীবনে যৌনতা তো থাকেই। আমিও তাই মানি। যৌনতা আসলে আসুক। জোর করে না আনলেই হলো। জোর করে কিছুই হয় না।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,736
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
দয়া করে এই থ্রেডটা এখান থেকে মেইন সেকশন এ নিয়ে যেতে অনুরোধ জানাচ্ছি !!
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(07-01-2022, 05:37 PM)ddey333 Wrote: দয়া করে এই থ্রেডটা এখান থেকে মেইন সেকশন এ নিয়ে যেতে অনুরোধ জানাচ্ছি !!
কি ভাবে নিয়ে যাওয়া যায়?
Posts: 190
Threads: 1
Likes Received: 691 in 144 posts
Likes Given: 297
Joined: Dec 2020
Reputation:
113
অভুতপুর্ব প্রারম্ভ। নতুন ফ্রেশ গল্প পেয়ে মন খুশিতে ভরে গেল। গল্পের আলোচনায় পরে কথা বলা যাবে। এখন আপাতত অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। সঙ্গে থাকবেন। আপডেট দেরিতে হলেও অসুবিধা নেই। কিন্তু কানেক্ট থাকবেন।
Posts: 190
Threads: 1
Likes Received: 691 in 144 posts
Likes Given: 297
Joined: Dec 2020
Reputation:
113
(07-01-2022, 05:37 PM)ddey333 Wrote: দয়া করে এই থ্রেডটা এখান থেকে মেইন সেকশন এ নিয়ে যেতে অনুরোধ জানাচ্ছি !! এখান ওখানে ব্যাপার নেই। বরং এখানকার পাঠকরা অরিজিনাল নির্ভেজাল। এখানে আসতে গেলে কাঠখোড় পোড়াতে হয়। এখানেই দিব্যি রান করবে।
•
Posts: 657
Threads: 0
Likes Received: 699 in 419 posts
Likes Given: 1,144
Joined: Mar 2021
Reputation:
62
নির্ভেজাল খাটি বাস্তব জীবনের দৃশ্যপট তুলে ধরা হয়েছে, শুরু তেই গল্প টা পাঠকদের ভাবিয়ে তুলতে সক্ষম, খুব সুন্দর শুরু।
PROUD TO BE KAAFIR
•
Posts: 15
Threads: 0
Likes Received: 23 in 11 posts
Likes Given: 7
Joined: Feb 2021
Apnar ager tinte golpogulo ses kora uchit, kono story ses na korle seta incomplete hoyei theke jai. Tai request korchi apni age oigulo ses korte paren.
•
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
07-01-2022, 07:55 PM
(This post was last modified: 07-01-2022, 07:55 PM by nandanadasnandana. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(07-01-2022, 07:50 PM)Sde007 Wrote: Apnar ager tinte golpogulo ses kora uchit, kono story ses na korle seta incomplete hoyei theke jai. Tai request korchi apni age oigulo ses korte paren.
দেখুন আমাকে দোষ দিচ্ছেন বটে। কিন্তু সেই গল্প আর তাদের প্লট পুরোন সাইটের সাথেই হারিয়ে গেছে। একটা গল্প শেষ করব যদি পুরো গল্প টা একজন আমাকে দিতে পারেন। মানে যতদুর লেখা হয়েছিল। চেষ্টা করছি। তবে অতো সোজা নয়। দেখা যাক।
•
Posts: 15
Threads: 0
Likes Received: 23 in 11 posts
Likes Given: 7
Joined: Feb 2021
https://xossipy.com/thread-3104.html etate apnar ekta golpo ache dekhlam. Parle eta ses korben
•
Posts: 15
Threads: 0
Likes Received: 23 in 11 posts
Likes Given: 7
Joined: Feb 2021
https://xossipy.com/thread-4382.html eta click korun, apnar arekta incomplete golpo. Apni j golpota aj suru korechen seta haat debar age request korchi ei duto ses korun doya kore, apnar eiduto golpor ses dekhar jonno onekei opekhha korche bahutdin dhore. Tai bolbo joy ma bole eber suru kore din, apnar lekhar onek vokto ache.
•
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
07-01-2022, 08:21 PM
(This post was last modified: 07-01-2022, 08:21 PM by nandanadasnandana. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আরে এই ভাবে না। পুরো গল্প টা দিতে বলুন কাউকে। আমি তো জনে জনে অনুরোধ করছি। এখান থেকে কপি হচ্ছে না। আমি চেস্টা করেছি অনেক। সে আমি জানি। একজন পাঠক আমার সব কটা গল্প নিজের কাছে রেখেছেন। আমি তাকেই অনুরোধ করেছি। দেখা যাক।
•
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,558 in 1,403 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
আপনি কি চান এটা main forum এ যাক? ওখানে কিন্তু guest user রা পড়ে। মানে যারা রেজিস্টার করেনি তারা পড়তে পারে। এই sub forum এ শুধু রেজিস্টার মেম্বাররাই ঢুকতে পারে।
❤❤❤
Posts: 15
Threads: 0
Likes Received: 23 in 11 posts
Likes Given: 7
Joined: Feb 2021
(07-01-2022, 08:21 PM)nandanadasnandana Wrote: আরে এই ভাবে না। পুরো গল্প টা দিতে বলুন কাউকে। আমি তো জনে জনে অনুরোধ করছি। এখান থেকে কপি হচ্ছে না। আমি চেস্টা করেছি অনেক। সে আমি জানি। একজন পাঠক আমার সব কটা গল্প নিজের কাছে রেখেছেন। আমি তাকেই অনুরোধ করেছি। দেখা যাক।
1. https://biddutroy.family.blog/2020/11/28...%e0%a7%a7/
2. https://biddutroy.family.blog/2020/11/28...%e0%a6%b0/
Asa kori eber parben copy korte.
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
দুই
আমি যে যে কারোর থেকে অনেক বেটার এই বিশ্বাস টা আমাকে দিয়েছিল আমার ছোড়দি। মাঝে মাঝে আমাকে সাজিয়েও দিত। বলত কি সুন্দরী আমার বোন টা। আমি রেগে খুলে দিতাম সব কিছু।, আর দিদি হাসত। আমাকে নিয়ে পড়াতে বসত। ওখানে ছাড় দিত না। নিজে ব্রিলিয়ান্ট ছাত্রী ছিল। আর আমাকেও বানিয়েছিল সেই ভাবেই। কিন্তু যেটা ছোড়দি পারত না সেটা আমি খুব ভালো করে পারতাম। সেটা হলো অন্যায় দেখলে ঝাঁপিয়ে পরা। তা সে বাড়িতেই হোক বা বাড়ির বাইরে।
কম ছেলে মার খায় নি ওই সময়ে আমার হাতে। বাড়িতে কমপ্লেন কম আস্ত না। মোটামুটি রোজ সন্ধ্যে বেলায় আমার বাবার হাতে মার খাওয়া বাঁধা ছিল। মার ধর খেয়ে পড়তে বসতাম। আমি যখন ক্লাস সেভেন এ পড়ি, তখন আমার ছোড়দির মাধ্যমিক এর রেজাল্ট বেরোয়। দিদি পুরো জেলায় প্রথম হয়েছিল। পুরো রাজ্যেও একটা র্যাঙ্ক এসেছিল, কিন্তু সেটা আমাদের কাছে তেমন কোন ইম্পর্ট্যান্ট ছিল না। কারন আমার বাবার তেমন উৎসাহ ছিল না। আমাদের বাড়িতে তেমন কেউ কোনদিন পড়াশোনা করে নি। কাজেই কেউ জানত ও না বুঝতো ও না। আমাদের বাড়ির মেয়েদের কাছে ঘরের কাজ শেখা টা বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল, পড়াশোনা শেখার থেকেও। কিন্তু এর মধ্যে একটা ঘটনা ঘটল।
আমি এক সন্ধ্যে বেলায় ফিরছিলাম খেলে ধুলে। বাড়ির পিছন দিকে ঢুকতাম। কারন আমার খেলা টা বাবার পছন্দ ছিল না। বড়দি, মেজদি, বলে দিত বাবাকে। তাই পিছন দিয়ে ঢুকতাম আমি। পিছনে একটা বড় পুকুর ছিল আমাদের। পুকুরের পাশে, দুই দিকে কলাবন আর আম গাছের বড় বাগান ছিল। লোকে ভয় পেত সেখানে। কিন্তু আমার অতো ভয় ডর ছিল না। আমি পিছন দিক থেকেই আসতাম। একদিন সন্ধ্যে বেলায় ফিরছি। অন্ধকার অন্ধকার ভাব হয়ে গেছে। এমন অন্ধকার যে সামনে না এলে কাউকেই চেনা যাবে না। বাড়ি থেকে একটু দূরে মনে হলো কেউ একজন আছে। আমার হাতে আমি একটা ইটের টুকরো তুলে নিয়ে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম।
- কে কে ওখানে।
কথা শেষ না হতেই, হাতের ইট টা বাঁই করে ছুঁড়ে দিয়েছি। উফ একটুর জন্য ফস্কে গেল। সাথে সাথেই আরেক তা ইট তুলে নিয়েছি। আমাকে ইট তুলতে দেখেই সে প্রায় চীৎকার করে উঠল।
- আরে আরে মারিস না। নান্দু, মারিস না রে আমি ললিত দা। কথা ছিল
- অ্যাঁ? ললিত দা? মানে গ্যারেজ এর ললিত দা?
- হ্যাঁ রে। মারিস না বোন আমার।
- না না মারছি না
আমি ভেবে পেলাম না ললিত দা, কেন দাঁড়িয়ে আছে এখানে। আর আমার সাথেই বা কি দরকার? যতদুর জানি, ললিত দা ভালো ছেলে। নিজের কাজ করে। বাবা নেই। মা আছে বাড়িতে। সবাইকে সম্মান করে। অনেক ছেলেই আমার হাতে মার খেয়েছে। কিন্তু ললিত দা কে আমার পছন্দই হয়। এক দুবার তো ললিতদার সামনেই ললিত দার কাকার ছেলে কে মার ধোর করেছিলাম। আমি এগিয়ে যেতেই বলল ললিত দা
- আমি এখানে তোর দিদির জন্য দাঁড়িয়ে আছি?
- মানে?
- মানে হলো, দ্যাখ তোর ছোড়দি মানে সুবর্না কে আমি পছন্দ করি। শুনলাম ওর জন্য ছেলে দেখছে। ওকে নাকি পড়াবে না তারা আর।
- হুম। ঠিক ই শুনেছ। কিন্তু তোমাকে কে বলল? দিদি?
- হ্যাঁ রে।
মনে মনে ভাবলাম দিদি ললিত দা কে বলেছে, এই কথা গুলো? মানে দিদিও পছন্দ করে ললিত দা কে? সত্যি তো।দিদির মতন ভাল মেয়ে এই তল্লাটে আসে নি। এদিকে ললিত দা বলে চলেছে
- বল, ওর এতো ভাল কেরিয়ার। আমি ওকে পড়াব। যত দিন ও পড়তে চায়। ওকে বল আমাকে বিয়ে করতে।
- কি? তুমি বিয়ে করবে? তুমি ও তো খুব একটা তেমন কিছু নউ যে ওকে দেখতে পারবে।
- হয়ে যাবে রে। দিন রাত আমি খাটব। ওকে আর মা কে নিয়ে চলে যাব কলকাতায়। ও জীবনে প্রতিষ্ঠা পাবে না? এতো ভালো পড়াশোনায়? দ্যাখ তোর বাবা বিয়ের ঠিক না করলে ওকে আমি বলতাম ও না কথা গুল।
আমি ভাবতেও পারছি না। ভালোবাসা কি বুঝিনি তখনো। কিন্তু ললিতদার চোখে আমি জানিনা কি দেখেছিলাম সেদিন। কিন্তু একেবারে ফিদা হয়ে গেছিলাম। ললিত দা বলেই চলেছে। আমি এতো কথা জীবনে ললিত দা কে বলতে শুনিনি।
- ও বলছে, ওর যা হয় হোক। আমাকে নাকি ভাবতে হবে না। দ্যাখ আমি লেখা পড়া শিখিনি। আমি হয়ত তোর দিদির যোগ্য ও নই। কিন্তু এটা না করলে ওর জীবন টা যে নষ্ট হয়ে যাবে।
বাড়ি ঢুকলাম যখন তখন আমার মাথা ভোঁ ভোঁ করছে। যাই হোক আজকে বাবা আর মারে নি। হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বসেছি দিদির কাছে। দিদি কুল। নিজের বই টা পড়ছে। চোখে চশমা টাও নেই। হাসি পেল আমার। আমি বাবা দিদি কেউ ই চশমা ছাড়া বিশেষ দেখতে পেতাম না। দিদি যে পড়ছে না, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত ছিলাম। আমি জোরে জোরে পড়তে শুরু করলাম। দিদি অবাক হয়ে তাকালো। কারন আমি জীবনে জোরে জোরে পড়িনি। আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল
- ক্ষেপলি নাকি? – পরা থামিয়ে দিলাম। আমি চাইছিলাম দিদি আমার দিকে তাকাক।
- আচ্ছা দি,
- হুম কি?
- বলছি ললিত দা ছেলে টা ভাল বল?
দিদি চমকে উঠল। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। মনে হচ্ছিল যেন ভিতর টা শুদ্দু পড়ছে দিদি আমার। আমার দিদি মারাত্মক বুদ্ধিমতী। মনে মনে ভাবছি ইশ, কিছু একটা বলে ফেললাম, যেটা বলার দরকার ছিল না। দিদি কি রেগে গেল? দি কোন দিন ও আমার উপরে রাগে নি। কিন্তু রাগলেও, এটা দিদির জীবনের ব্যাপার। বলতে আমাকে হবেই। একটু কঠিন হয়েই বলল আমাকে
- কেন? ললিত দা র কথা কীসের পড়াশোনার সময়ে?
- না বলছিলাম।
- কেন বলবি কেন?
- এমনি।
- হুম ভালো ছেলে।
দিদির কথা উত্তরে মনে হলো দিদিও চাইছে ব্যাপার টা বলতে আমাকে। মানুষ কত অসহায় হলে এই সব কথা ছোট বোনের সাথে আলোচনা করে। আমি বলেই দিলাম
- জানিস দি, আমার মনে হয়, ললিত দা মিথ্যে বলছে না। বিয়ে হলে তোর এটা তো নিশ্চিত, তোর জীবন টা আমার মায়ের মতন হয়ে যাবে। ছেলে না হলে বার বার তোকে বাচ্চা নিতে হবে। ততদিন অব্দি তোকে বাচ্চা নিতে হবে যতদিন না তুই বংশের প্রদীপ আনতে পারছিস। আর ওই লোক টা কে দেখেছি। অনেক বড় তোর থেকে। আর খুব অহংকার। নেহাত তুই সুন্দরী তাই। না হলে কি আর বিয়ে করত? আর ললিত দা কে দেখ, কি সুন্দর মার্জিত।
দিদি হাঁ হয়ে তাকিয়ে রইল আমার দিকে। এই বয়সে আমার মধ্যে এতো খানি বিষ? দিদি কিছু বলতে যাচ্ছিল আমাকে রেগে মেগে। কিন্তু চুপ করে গেল। খুব মিনমিন করে বলল,
- তাতে কি? বাবা দেখেছে পাত্র, মানে তোর দিদির খাওয়া পড়ার কোন ভাবনা থাকবে না তাই না?
ততক্ষনে কাকি আসাতে, আমরা আলোচনা বন্ধ রাখলাম। ওদিকে বড়দি এসেছে। বড়দির পাশে মেজদিও এসেছে। বড়দির প্রায় নয় বছর তখন বিয়ে হয়ে গেছিল। অর্জুন তখন আট বছরের ছেলে। মেজদির ও বিয়ে হয়েছে গেছিল তিন বছর মতন। বাবার দুই প্রিয় মেয়ে আসার কারনে, বাড়িতে ভালো মন্দ রান্না ও হয়েছে। সে হোক আমাদের ডাক সেই শেষ কালে আসবে। ওরা আসলে আমাদের সাথে বিশেষ কথা বার্তা বলে না। আমিও পছন্দ করি না ওই দুটো রাক্ষসীর সাথে কথা বলতে। ছোড়দি কথা বলে, কারন ছোড়দির স্বভাব টাই মিস্টি।
আরেক জন কথা বলে ওই গ্রুপে আমার সাথে, সে হলো অর্জুন। এখন আট বছর। কিন্তু শুনেছি, ওর বুদ্ধি মামার বাড়ির মাসীদের মতন। পড়াশোনায় মারাত্মক তুখোর। কলকাতায় ইংরাজী কলেজ এ পরে এখন ক্লাস টু তে। রোজ ভোর বেলায় আমি জগিং এ বেরোই, আর দেখি ভদ্রলোক উঠে লাট্টু খেলছেন উঠোনে। আমাদের বাড়ী টা বিশাল। চারদিকে ঘর। তিনতলা বড় বাড়ী, আর মাঝে বিশাল উঠোন। কাজেই যে ঘর থেকেই বেরোন হয় , উঠোণ টা চোখে পরে।
কথা হয় রোজ ই। কিন্তু সেকথা থাক এখন। আসলে এতো স্মৃতি ভিড় করছে, কোন টা বলব আর কোণ টা বলব না বুঝতে পারছি না। সব একটার উপর একটা চেপে যাচ্ছে ঘাড়ে। যাই হোক রাতে খাসীর মাংশ হয়েছিল, দুই মেয়ের জন্য। আমরাও ভাগ পেলাম আরকি।
আমি মা কাকি আর দিদি মিলে যখন খেয়ে উঠলাম, তখন বেশ রাত। দিদি মা আর কাকি বাসন মাজছিল, আর আমি দাঁড়িয়েছিলাম। আমাকে কাকি আর দিদি কিছুতেই ওদের সাথে বাসন মাজতে দেয় না। তাই আমি পাশে দাঁড়িয়ে, কল টিপে দিতাম ওদের জলের জন্য। অনেক ছোট থেকেই এটা আমি করে আসছি। আগে থেকে গিয়ে বালতি তে জল ভরে রাখব বলে আজকে গিয়ে দেখছি, অর্জুন বাবু ওখানে দাঁড়িয়ে জল টিপছে। আমি দৌড়ে গেলাম। ওকে তুলে পাশে দাড় করিয়ে দিলাম। আর নিজে কল টিপতে শুরু করলাম
- কি অর্জুন বাবু? এতো রাত হলো ঘুমোন নি।
- হিহি আমাকে আপনি বলছ কেন মিমি।
- আমাকে মিমি বলতে তোকে কে শিখিয়েছে।
- মনি
- মনি টা আবার কে?
ততক্ষনে দেখলাম, মা কাকি আর ছোড়দি বাসন পত্র নিয়ে এদিকেই আসছে। অর্জুন ছোড়দির দিকে আঙ্গুল তুলতেই বুঝলাম, ছোড়দি শিখিয়েছে।
- ও তা ঘুমোন নি যে?
- ঘুম আসছিল না।
- ও , কেন
উত্তর দিচ্ছে অর্জুন একেবারে বড়দের মতন
- এমনি, মা কে বলেই এসেছি, দিদুন, কাম্মা আর তোমাদের কাছে থাকব বলে
- বাবা, তোর মা আমাদের সাথে থাকতে তোকে ছেড়ে দিল?
ছোড়দি আমার মাথায় একটা টোকা দিল। আমি ঘুরে গেলাম ছোড়দির দিকে। বলল
- ওর কি দোষ। ওকে বলছিস কেন? দেখছিস না এমন নিষ্পাপ মুখ ক জনের হয় বলত?
আমার মা ততক্ষণে, একটা কাপড় কোথা থেকে এনে অর্জুনের মাথায় চাপিয়ে দিল। হিম পরছে নাকি। মা পারেও। পুজো গেল না হিম পড়ছে?
The following 13 users Like nandanadasnandana's post:13 users Like nandanadasnandana's post
• al0o0z, Atonu Barmon, Baban, Biddut Roy, ddey333, dpbwrl, MNHabib, Pranto Manash, raja05, samael, Siraz, Tiger, WrickSarkar2020
|