30-12-2021, 04:29 PM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
|
31-12-2021, 09:30 AM
Update 7
“ মানে ? „ সুচির হঠাৎ এইসময়ে এইধরনের প্রশ্নের কোন মানে আকাশ বুঝতে পারলো না
“ তখন তুই বললি না নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করবি। সেটাই জিজ্ঞাসা করছি। তোর যোগ্যতা কোনটা ? „
আকাশ বুঝতে পারলো না সুচি কি বলতে চাইছে । একদিকে সারারাত না ঘুমানোর একটা ক্লান্তি আর এই এখনকার প্রশ্নের অর্থ বুঝতে না পেরে আকাশের মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিল। এর ফলে আকাশ বাইক চালানোয় অমনোযোগী হয়ে পড়লো । সুচি দেখলো দুটো গাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বাইকটা গাড়ি দুটোর গা ঘেসে বিপদজ্জনক ভাবে পাশ কাটালো। সেটা দেখে ভয় পেয়ে সুচি বললো , “ সাবধানে , দেখে চালা। অফিসে গিয়ে উত্তর দিস। „
সুচির কথায় আকাশ বেশি না ভেবে বাইক চালানোয় মনোযোগ দিল। অফিসে পৌছে পার্কিংয়ে বাইক পার্ক করতে সুচি বাইক থেকে নেমে , আশেপাশে কেউ নেই দেখে নিয়ে বললো , “ প্রোপজের কথা মনে আছে তো ? „
“ মনে থাকবে না আবার ! „ তারপর রিকোয়েস্ট করার ভঙ্গিতে আকাশ বললো , “ প্লিজ তুই অল্প কথায় রাজি হয়ে যাস। অফিসের সবার সামনে প্রোপজ করতে হবে ভেবে এমনিই লজ্জা পাচ্ছি। বেশিক্ষণ থাকলে কি অবস্থা হবে সেটা ভেবেই ভয় পাচ্ছি । „
কথাটা শুনে সুচির চোখে মুখে হাসি ফুটে উঠলো , “ তুই কি পরিক্ষা দিতে যাচ্ছিস যে ভয় পাচ্ছিস ! „
আকাশ চোখ বড়ো বড়ো করে বললো , “ অবশ্যই পরিক্ষা। এর থেকে বড় পরিক্ষা কখনো দিই নি । তাই ভয় তো হবেই । „
মিচকি হাসি হেসে সুচি বললো , “ ঠিক আছে। ভেবে দেখবো। তবে যা করবি সব লাঞ্চের আগে । „ বলে সুচি লিফ্টের দিকে চলে গেল । লাঞ্চের আগে , কারন লাঞ্চের সময় বাবা আর কাকার পুরানো ঝগড়া শুনবে সে। তাই লাঞ্চের আগেই প্রোপজের শাস্তি সেরে ফেলতে চায়।
আকাশের হঠাৎ মনে পড়লো সেই যোগ্যতা নিয়ে কথাটা , “ তখন কি জিজ্ঞাসা করছিলি যোগ্যতা নিয়ে ? „
“ টিফিন ব্রেকে বলবো । „ বলে লিফ্টে উঠে ঢুকে গেল সুচি ।
স্বামী আর সন্তান অফিস চলে গেলে আকাশের মায়ের এই বড়ো ফ্ল্যাটটা হঠাৎ খালি খালি লাগতে শুরু করলো। আজকে কেন এরকম লাগছে সেটা তিনি বুঝতে পারলেন না। আগেও তো এই ফ্ল্যাটেই ঘন্টার পর ঘন্টা একা কাটিয়েছেন। তাহলে আজকে হঠাৎ এরকম মনে হচ্ছে কেন !
কিছুক্ষণ পর তিনি বুঝতে পারলেন যে এটা মনের ভুল। আসলে তার কারোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছা হচ্ছে। যার সাথে এই দীর্ঘ চার পাঁচ বছর কথা বন্ধ ছিল , তার সাথেই কথা বলতে ইচ্ছা হচ্ছে। কারন আগে তো স্বামী অফিসে আর ছেলে কলেজ কলেজে চলে যাওয়ার পর তার সাথেই ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটতো।
বেশ কিছুক্ষণ ইতস্তত করার পর , দোটানা মন নিয়ে তিনি ঘরের বাইরে এসে পাশের ফ্ল্যাটে তাকিয়ে দেখলেন যে ফ্ল্যাটের দরজা খোলা। আকাশের মায়ের মনে হলো যেন তার জন্যেই দরজাটা খুলে রাখা আছে। তিনি বুকে দ্বিধা নিয়ে ঘরে ঢুকে দেখলেন সুচির মা ফ্লোর পরিষ্কার করছেন। যে জল দিয়ে ফ্লোর মুছছিলেন সেই জলে কিছু একটা মেশানোর জন্য একটা অচেনা ফুলের মিষ্টি গন্ধ নাকে আসছে।
আকাশের মাকে দেখে সুচির মা মৃদু হেসে সোফা দেখিয়ে , “ বসো „ বললেন। তারপর নোংরা জলের বালতিটা বাথরুমে রেখে , সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে এসে বললেন , “ তুমি বসো আমি চা করে আনছি । „
আকাশের মা কি বলে কথা শুরু করবেন সেটা তিনি বুঝতে পারলেন না। অথচ কাল রাতে এই মহিলার সাথেই নিজের ছেলের বিয়ে নিয়ে কথা বলেছিলেন। কিন্তু তখন কথা বলছিলেন ছোটবেলার দুই ভাই রুপি বন্ধু সমু আর শুভো। এই দুই মহিলা মূলত শ্রোতা হিসাবেই ছিলেন। বেশি কথা তারা বলেন নি।
কতদিন পর ! না দিন নয় , বছর , প্রায় চার থেকে পাঁচ বছর পর এই ফ্ল্যাটে তিনি ঢুকলেন। চারিদিকে দেখতে দেখতে ঘরের রঙের উপর খেয়াল হলো । মনে হচ্ছে আগে আলাদা রঙ ছিল। হ্যাঁ আগে ছিল নিল এখন সবুজ হয়েছে। তারপর নিজের মনেই তিনি বললেন , ‘ ও হ্যাঁ , মনে পড়েছে। সুমির বিয়ের সময়েই রঙ করা হয়েছিল। , চার পা হাটলেই এই ফ্ল্যাটে আসা যায়। আগে আসা যাওয়া ছিল। হঠাৎ করে সব সম্পর্ক , যাওয়া আসা , একে অপরের খেয়াল নেওয়া , সব বন্ধ হয়ে গেছিল। কি কারণে বন্ধ হয়েছিল ? হ্যাঁ , সেই অষ্টমীর রাতে সুচি আর আকাশ ....
এইসব ভাবতে ভাবতেই কখন সুচেতা দেবী চা নিয়ে এসে হাজির হয়েছেন সেটা তিনি খেয়াল করেননি। কিন্তু যেটা খেয়াল করলেন সেটা হলো পেয়ালা ভর্তি আদা চা। যেটা তিনি খেয়ে থাকেন এবং পছন্দ করেন। কিন্তু সুচির মা দুধ চিনি চা ছাড়া খান না সেটা তার তখনই মনে পড়লো। কথাটা মনে পড়তেই তিনি সুচির মায়ের কাপে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলেন সেখানেও আদা চা বা রঙ চা আছে। এতদিন পরেও যে সুচির মা তার এই ছোট্ট পছন্দের কথা মনে রেখেছে সেটা দেখে তার চোখে জল চলে এলো। মুখ থেকে আপনাআপনি একটা কথা বেরিয়ে এলো , “ আমি ভেবেছিলাম সুচি আমার ছেলেকে মেরেছে তাই তুমি কথা বন্ধ করে দিয়েছো । „
ওদিক থেকে যে কথাটা ভেসে এলো সেটা তাকে একেবারে কাঁদিয়ে দিল। সুচির মা বললেন , “ আমি ভেবেছিলাম আমার মেয়ে তোমার ছেলেকে মেরেছে বলে তুমি কথা বন্ধ করে দিয়েছো । „
কথাটা শুনে আকাশের মা মুখে হাত চেপে ফুপিয়ে কেদে উঠলেন। কথা দুটো যে একই। একজনের দৃষ্টিতে এটা রাগের বহিঃপ্রকাশ , আর একজনের দৃষ্টিতে কথাটা অনুশোচনার বহিঃপ্রকাশ। আকাশের মা ভেবেছিলেন সুচির মা সুচির এই ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। আর সুচির মা ভেবেছিলেন আকাশের মা আকাশকে কে মারার জন্য রেগে গিয়ে কথা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে , দুজনেই নিজে থেকে কিছু ভুল ভাবনা ভেবে নিয়ে , নিজে থেকেই কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন।
সুচির মা উঠে আকাশের মাকে সান্ত্বনা দিতে গেলেন। কিন্তু সুচেতা দেবী আকাশের মায়ের পাশে গিয়ে বসতেই আকাশের মা দেখলেন যে সুচির মায়ের চোখেও জল টলটল করছে। আচলে চোখ মুছে নিজেকে শান্ত করে তিনি বললেন , “ আমার কম বয়সী ছেলের সাথে তোমার মেয়ের বিয়েতে কোন আপত্তি নেই তো ? কাল রাতে তো দাদা আর আকাশের বাবাই সিদ্ধান্ত নিল। তোমার কথা তো কেউ শুনলো না। „
সুচির মা গম্ভীর হয়ে বললেন , “ আমার যখন বিয়ে হয়েছিল তখন আমার বয়স ছিল বাইশ আর সুচির বাবার পঁচিশ। না , আমার কোন আপত্তি বা অসুবিধা নেই। আকাশের সাথে বিয়ে না হলে আমার মেয়ে চোখের জল ফেলবে। তাতে আমার আপত্তি আছে বৈকি । „
এরপর আর কোন কথা হয় না। আকাশের মা চায়ের কাপ তুলে নিয়ে তাতে চুমুক দিলেন। এতবছর পর সুচির মায়ের হাতে চা খেয়ে তার প্রাণ জুড়িয়ে এলো। চা খুব ভালো বানান সুচির মা।
অফিস আওয়ার শুরু হয় দশটা থেকে। আকাশ সুচি পোঁছে ছিল সাড়ে এগারোটায়। তারপর দুজনেই দুটো ফ্লোরে নিজের নিজের জায়গায় বসে পড়েছিল। আকাশকে কেউ কিছু না বললেও সুচিকে সুচির বস দুটো কথা শুনিয়েছিল। সুচি কোন অজুহাত না দিয়ে , “ সরি „ বলেছিল।
মনে কোন অহংকার সে রাখে নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই কোম্পানির মালিকের ছেলে এসে তাকে সবার সামনে প্রোপোজ করবে আর তারপরেই সে হয়ে যাবে এই কোম্পানির ভবিষ্যতের মালকিন। এই অহংকার সে পোষণ করে না। আর তাই যখন তার বস তাকে অফিসে দেরি করে আসার জন্য কথা শোনাচ্ছিল তখন , “ সরি স্যার , শরীর খারাপ লাগছিল । „ ছাড়া আর কিছু সে বলেনি।
ঘড়ির কাঁটা বারোটা থেকে একটার ঘরের দিকে যতো এগিয়ে যেতে লাগলো সুচির মন তত বেশি উশখুশ করতে লাগলো। , ‘ কখন আকাশ এসে প্রোপজ করবে ? কখন ! , সময় কাটতে চাইছে না তার , কাজে মন নেই। হঠাৎ সুচি দেখলো যে আকাশ এই ফ্লোরে ঢুকছে। কিন্তু এ কি ! ও তো একটা ফাইল নিয়ে চলে গেলো ! মেসেজ করবে কি ! না করবে না। রাগ হলো সুচির। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এটাও ভাবলো যে , এই রাগের বহিঃপ্রকাশ যেন না হয়। তাই সে শান্ত হয়ে কাজে মন দিল।
ঠিক দেড়টা বাজার সময়েই আকাশ ঢুকলো। সুচি সেটা খেয়াল করলো না। দরজা ঢেলে ভিতরে ঢোকার সময়েই তার মুখ দেখে বোঝা গেল যে সে ভীষণ নার্ভাস। কয়েক জন কম্পিউটার থেকে মুখ তুলে আকাশকে দেখে আবার স্ক্রিনে চোখ দিল। আকাশ এসে সুচির পাশে দাঁড়াতেই সুচির নজর আকাশের উপর পড়লো। সঙ্গে সঙ্গে সুচির মুখে হাসি , চোখে লজ্জা দেখা দিল আর হৃৎপিন্ডের ধুকপুকানি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেল।
সুচির পাশে বসা কাজ করা কয়েকজন এমপ্লয়ি আকাশের হাবভাব দেখে অবাক হলো। আকাশের মুখের নার্ভাসনেস তাদের চোখ এড়ালো না। হঠাৎ আকাশ একটা হুটু ভাজ করে মেঝেতে দাঁড়াতেই আশেপাশের সবার নজর কারলো । সবাই উঠে দাঁড়িয়ে দেখতো লাগলো যে কি হচ্ছে। সবাই আন্দাজ করতে পারলো কি হতে যাচ্ছে। তাই তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
আকাশ একটা হাটু ভাজ করে মেঝেতে রাখতেই সুচি চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়লো । চোখের মনি কাঁপছে তার । মেঝেতে হাটু রাখতেই আকাশ পকেট থেকে অফিসে আসার সময় কেনা সেই আংটিটা বার করে সুচির চোখের সামনে মেলে ধরে মিষ্টি গলায় বললো .....
“ আমি জানতাম না তুই আমার জীবনের কতোটা জুড়ে আছিস। হঠাৎ করে কথা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমি বুঝতে পেরেছি আসলে তুই-ই আমার জীবন ছিলি। গত চার পাঁচ বছর আমি যা কষ্ট পেয়েছি আমার বিশ্বাস তুইও ততোটাই পেয়েছিস। ভবিষ্যতে এরকম অসহ্য কষ্ট আমি কিংবা তুই কেউই আর নিতে পারবো না। যাতে এই ধরনের কষ্ট আমাদের কে আর পেতে না হয় তাই তুই কি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হবি ? তুই কি আমার সাথে সারাজীবন একসাথে থাকবি ? „
আকাশের কথা শেষ হতেই আশেপাশের সব এমপ্লয়ি মুখ দিয়ে এক অদ্ভুত আওয়াজ বার করে সেলিব্রেট করলো। তারা আকাশের বলা কথার মানে একদম বুঝতে পারে নি। কিন্তু তাতে তাদের কিছু যাস আসে না। কোম্পানির মালিকের ছেলে একজন সাধারণ এমপ্লয়ি কে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে এটাই তাদের কাছে মুখ্য বিষয়।
সুচি একসাথে লজ্জা পেল আবার আকাশের উপর রেগেও গেল। সে ভেবেছিল আকাশ হয়তো তাকে ইংলিশে প্রোপজ করবে। যদি বাংলাতে প্রোপজ করে তাহলে অন্তত তুমি বলে তাকে সম্বোধন করবে। কিন্তু সেরকম কিছুই না হওয়ায় সুচি রেগে গেল। এদিকে এটা বিয়ে করার প্রোপজ বলে সে লজ্জাও পেল।
যতোই রাগ হোক ! সুচির জেদের জন্যেই তো আকাশ তাকে প্রোপজ করেছে। তাই সে , “ yes „ বলে মাথা উপর নিচ করে নিজের ডান হাত বাড়িয়ে দিতেই আকাশ তার অনামিকাতে আংটিটা পড়িয়ে দিল। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে আশেপাশের সব এমপ্লয়িদের হাততালি শুনে আস্তে আস্তে ওখান থেকে কেটে পড়লো। এতো লজ্জা কখনো সে পায়নি।
সুচি মুখে হাসি আর লজ্জা নিয়ে আবার চেয়ারে বসে পড়লো। তার মুখ পাকা টমেটোর মত লাল হয়ে উঠেছে । পাশের এক মহিলা এসে পিঠে হাত দিয়ে অভিন্দন জানালো। তারপর পরপর প্রায় সবাই এসে অভিনন্দন জানিয়ে গেল। লজ্জায় কারোর দিকে তাকাতে পারছে না সে। কম্পিউটারে খুটখুট করতে করতে সে ভাবলো , ‘ এই তুই নিয়ে কিছু একটা করতে হবে। তুই-তোকারি বন্ধ করতেই হবে। ,
আকাশ এসে আবার নিজের চেয়ারে বসে পড়লো। আজকে গোধূলি আসেনি কিন্তু সঞ্জয় এসছে । গোধূলি সেই নিজের মাসতুতো দিদির সাথে দেখা করতে গেছে। সুচিকে আকাশ প্রোপজ করেছে এটা সঞ্জয় দেখেনি । কিন্তু কোন খবর এ দেশ থেকে ও দেশে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগে না। তাই সুচির ফ্লোর থেকে আকাশের ফ্লোরের এমপ্লয়িদের কাছে খবরটা পৌঁছাতেও বেশি সময় লাগলো না। তাদের কাছে এটাই এখন সবথেকে জনপ্রিয় মুখরোচক খবর।
তখন টিফিন ব্রেক সবে শুরু হয়েছে। সুচি আকাশকে মেসেজ করে নিচের ধাবাতে আসতে বললো । বাবা আর কাকার কি নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল সেটা শোনার কৌতূহল সে আর চেপে রাখতে পারছে না। সুচির মেসেজ পেয়ে আকাশ বাবাকে “ নিচে যাচ্ছি। „ বলে নিচের রাস্তার পাশে ধাবাতে চলে এলো।
এদিকে এমপ্লয়িদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে হঠাৎ আকাশ সুচিকে কেন প্রোপজ করলো ? সুচি তো আকাশের থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছরের বড়ো। এবং সুচি আর আকাশ একই সোসাইটি তে থাকে । যেভাবে তুই তুই করে কথা বলছিল তার থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে এরা পূর্ব পরিচিত। এই নিয়েই অফিস সরগরম যাকে বলে। আর মেয়েটাও একটা বড়ো দাও মারলো। একেবারে মালিকের ছেলের সাথে।
এই আলোচনা সঞ্জয়ের কানে যেতেই তার ভুরু কুঁচকে গেল। সে জিজ্ঞাসা করলে একজন এমপ্লয়ি বিস্তারিত সব বললো । সব শুনে সে রাগে ফেটে পড়লো । মাথার ঠিক রইলো না আর। সঙ্গে সঙ্গে আকাশের বাবার কেবিনের দরজা ঢেলে ঢুকে জিজ্ঞাসা করলো , “ আপনার ছেলে নিচের ফ্লোরের কি নাম ! সুচিত্রা না কে ! ওকে বিয়ের জন্য প্রোপজ করেছে ? এটা সত্যি ? „
আকাশের বাবা সবে টিফিন কৌটো খুলে তার ভিতরের খাবার দেখছিলেন। হঠাৎ সঞ্জয়ের এইভাবে তেড়েফুড়ে কেবিনে ঢুকতে দেখে তিনি থতমত খেয়ে গেলেন। সঞ্জয়ের চিবিয়ে চিবিয়ে বলা কথা গুলো শোনার পর তিনি মনে মনে বললেন , ‘ এর মধ্যে প্রোপজ ও করা হয়ে গেল ! , নিজের মনে কথা গুলো বলে সঞ্জয়ের উদ্দেশ্যে বললেন , “ এটা আমি শুনিনি। সত্যি কি না জানি না। তবে যদি সত্যি হয়-ও তাহলে অসুবিধা কোথায় ? „
ভুরু কুঁচকে ক্রুদ্ধ স্বরে সঞ্জয় বললো , “ অসুবিধা ! আপনি আমাকে কথা দিয়েছিলেন যে আপনার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দেবেন । সে কথা আপনি ভুলে গেলেন ? „
সঞ্জয়ের রাগকে অগ্রাহ্য করে শান্ত কন্ঠে আকাশের বাবা বললেন , “ না ভুলিনি। আমার এখনও মনে আছে। কিন্তু আমার ছেলে যদি অন্য কাউকে ভালোবেসে বিয়ে করতে চায় তাহলে আমি কি করতে পারি বলো ! „
ততোধিক রাগী স্বরে সঞ্জয় বললো , “ আপনি কি করতে পারেন মানে ! আপনি আমায় কথা দিয়েছিলেন। আপনার কথার কি কোন দাম নেই ? „
ততোধিক শান্ত স্বরে নিজের গাম্ভীর্য বজায় রেখে আকাশের বাবা বললেন , “ আছে সঞ্জয়। আমার কথার দাম আছে। কিন্তু আমার ছেলের সুখ যে আমার কথার থেকে অনেক দামি। আমি কিভাবে একটা প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে আমার ছেলের সুখ কেড়ে নেবো .....
হয়তো আকাশের বাবা আরও কিছু বলতেন। হয়তো বলতেন না। কিন্তু আকাশের বাবার পুরো কথা শেষ হওয়ার আগেই সঞ্জয় কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল। তারপর রেগে অফিস থেকেই চলে গেল। সঞ্জয় রেগে আছে বটে তবে তার মাথা ঠিক কাজ করছে। অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তার মাথায় সেই গোধূলির দেওয়া গোলাপ আর আকাশের বলা ‘ ধন্যবাদ , কথাটা ঘুরছে।
বহুদিন পর সুচি ধাবাতে বসে দুটো মাশালা ধোসা অর্ডার করলো । আকাশ এসে বসলে সুচি জিজ্ঞাসা করলো , “ বল এবার , বাবা আর কাকার মধ্যে কি নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল ? „
আকাশ কাঠের বেঞ্চে বসতে বসতে বললো , “ আগে খাবারটা তো অর্ডার কর ! নাকি...
আকাশের কথার মাঝে সুচি বলে উঠলো , “ আমি অর্ডার করে দিয়েছি। তুই বল । „
আকাশ সবকিছু আগাগোড়া বলতে শুরু করলো। গতকাল রাতে জেঠুর আসা। তারপর তার হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করা। তারপর একে একে বাবা আর জেঠুর ছোটবেলার কথা। ঠাকুর্দার কথা। জেঠাকে করা ঠাকুর্দার অপমান। সেখান থেকে কথা বন্ধ। ঠাকুমার কষ্ট পাওয়া। বাবার রেগে যাওয়া। নিজের ভুল বুঝতে পেরে জেঠুর কেঁদে ফেলা।
আকাশের কথার মাঝে সুচির অর্ডার করা ধোসা চলে এসছিল। কিন্তু কেউই খাওয়া শুরু করে নি। সব শোনার পর সুচির চোখের কোনায় জল দেখা দিল। বিশেষ করে ঠাকুমার কথা শোনার সময়েই চোখে জল এসছিল। চোখ মুছতে মুছতে সে বললো , “ আমি দেখেছি ঠাকুমাকে। তখন আমি খুব ছোট। আড়াই কি তিন বছর হবে আমার। মুখটা মনে নেই। আমাকে সবসময় কোলে নিয়ে আদর করতো। একটা কথা বলতো আমাকে । এখনও মনে আছে। বলতো , ‘ আমার নায়িকা সুচিত্রা সেন। , সেই প্রথম আমি শুনি যে আমার নাম একজন নায়িকার নামে রাখা। „
আকাশ একটু রেগে গিয়েই বললো , “ সবাই দেখেছে আমার ঠাকুমাকে। সবাই । শুধু আমি ছাড়া। „
আকাশের রাগের কারন সুচি বুঝতে পারলো। তাই সে বললো , “ ধোসা ঠান্ডা হয়ে গেছে । খেয়ে নে । „
আকাশ একটাই প্লেট দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো , “ আমার প্লেট কোথায় ? „
সুচি হেসে বললো , “ প্লেট একটাই। ধোসা দুজনের । „ বলে সুচি খেতে শুরু করলো। সুচির দেখাদেখি আকাশও টুকরো টুকরো ছিড়ে সাম্বারে ডুবিয়ে খেতে শুরু করলো।
খাওয়া হয়ে গেলে আকাশ আর সুচি আবার অফিসের দিকে আসতে শুরু করলো। হঠাৎ আকাশের মনে পড়লো সেই ‘ যোগ্যতা , নিয়ে কথাটা। মনে পড়তেই সে সুচিকে জিজ্ঞাসা করলো , “ তখন তুই বাইকে কি বলছিলি ? আমি কোনটাকে যোগ্যতা মনে করি না কি যেন ! ....
“ তুই সকালে আমাকে বললি না যে , তুই নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করবি । তারপর কাকিকে তোর দলে নিয়ে কাকাকে রাজি করাবি । সেটাই জিজ্ঞাসা করছিলাম। কোন যোগ্যতা প্রমাণ করার কথা বলিছিল ? „
কিছুক্ষণ চুপ থেকে পায়ের নিচের রাস্তার দিকে তাকিয়ে হাটতে হাটতে আকাশ বললো , “ এই যে আমি বড়ো হয়েছি। নিজের পায়ে দাড়াতে শিখে গেছি। একজনের দায়িত্ব নিতে পারবো এইসব । „
“ বড়ো হয়ে গেছিস কি হোসনি সেটা আলাদা প্রশ্ন। নিজের পায়ে কখন দাঁড়ালি তুই !? „
সুচির প্রশ্নে আকাশ অবাক হলো , “ মানে ! এই যে আমি চাকরি করছি। এটা কি ? „ বলে লিফ্টের জন্য বোতাম টিপে দিল।
“ এই চাকরিটা কি নিজের যোগ্যতা দেখিয়ে পেয়েছিস ! আমি যতদূর জানি তুই কাকার ছেলে বলে এই চাকরি পেয়েছিস। নিজের যোগ্যতা কখন প্রমাণ করলি তুই ? এই যে কলেজে পাঁচ বছর পড়ে MBA ডিগ্রি অর্জন করলি। ওটার কি দরকার ছিল ? কাকার ছেলে বলে আগেই তো অফিসে কাজ করতে পারতিস ! „
“ আমাকে কি কলেজের ডিগ্রি দেখিয়ে আমার কোম্পানিতেই ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি করার বলছিস ! „ বলতে বলতে দুজনেই লিফ্টে ঢুকে গেল।
“ এটাকেই যোগ্যতা বলে। কাকা একজন ব্যাবসায়ী মানুষ। সে কেন এমন একজনের হাতে তার কোম্পানি তুলে দেবে যে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেনি । আর তোর কোম্পানি হলে তুই মালিকের আসনে বসে থাকতিস। কিন্তু তুই বসে আছিস পিওনের চেয়ারে। কোম্পানিটা তোর বাবার। তোর না। কাকা চায় তার ছেলে খেটে কোম্পানি কে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে , মালিকের চেয়ারে বসার যোগ্যতা অর্জন করুক। কিন্তু সেরকম কোন চেষ্টা তুই কখনোই করিস নি ....
আকাশ খেয়াল-ও করলো না কখন সুচির ফ্লোর চলে এলো। সুচি নিজের ফ্লোরে ঢুকে গেলে আকাশও উপরে উঠে গেল। কিন্তু তার মাথার মধ্যে সুচির বলা শেষ কথাগুলো ঘুরতে লাগলো ।
সুচি আর আকাশ আধঘন্টা দেরিতে অফিসে ঢুকলো। সকালে দেরি করার জন্য সুচির বস তাকে বকলেও এখন কিছুই বললো না। এটা সুচি লক্ষ্য করলো। অন্যদিন হলে , এইরকম দেরি হলে তো আস্ত রাখতো না।
সঞ্জয় অফিস থেকে চলে যাওয়ার পর আর আসেনি। বাড়ি ফিরে সে এদিক ওদিক পায়চারি করতে লাগলো আর দুই বার গোধূলি কে ফোন করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে বলে রাগে ফুসতে লাগলো। মাথা কাজ করছে না তার। গোধূলি গেছে দিদির বাড়িতে। মেয়ের আসার অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই এখন। তাই সে মেয়ের বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করতে লাগলো । গোধূলির মা একবার জিজ্ঞাসা করেছিল। কিন্তু সঞ্জয়ের রাগ দেখে আর কথা বাড়ায়নি ।
অফিস আওয়ার শেষ হওয়ার প্রায় এক ঘন্টা আগে আকাশ দেখলো যে বাবা বেরিয়ে যাচ্ছে । তাই সে বাবাকে জিজ্ঞাসা করলো , “ এখন চলে যাচ্ছো কেন ? „
ছেলের কেনোর উত্তর না দিয়ে তিনি বললেন , “ হ্যাঁ। তুই বাইকেই আসিস । „ বলে তিনি বেরিয়ে গেলেন।
31-12-2021, 09:35 AM
সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে যাওয়ার পর অফিস আওয়ার শেষ হল । আকাশ একবার পুরো অফিস ঘুরে দেখে নিয়ে নিচে নেমে পার্কিংয়ে সুচির অপেক্ষা করতে লাগলো। বাকি সব এমপ্লয়ি কেউ স্কুটি , কেউ বাইক , কেউ গাড়ি বার করে চলে যেতে লাগলো। সুচি আসার পর আকাশ বাইকের চাবি ঘুরিয়ে স্টার্ট দিয়ে দিলে সুচি আকাশের পিছনে উঠে পড়লো। নিজেদের কোম্পানির এমপ্লয়ি এমনকি অন্য কোম্পানির এমপ্লয়িরাও দেখতে লাগলো এই দৃশ্য।
রাস্তায় নেমে কিছুদূর যাওয়ার পর আকাশ লক্ষ্য করলো সুচি বাইকের পিছনের হাত রেখে বসে আছে। আকাশ রেগে গিয়ে মনে মনে বললো , ‘ কোথায় একটু জড়িয়ে বসবে , তা না ! উনি বসেছেন কাকিমাদের মতো। , তারপরেই মনে পড়লো সকালে অফিস আসার সময়েও সুচি এইভাবেই এসছিল। ওকে একবারও জড়িয়ে ধরেনি। এখন কথাটা মনে পড়তেই আকাশ ইচ্ছা করে ব্রেক চাপলো । হঠাৎ ব্রেক মাথায় সুচি আকাশের পিঠের উপর এসে পড়লো। বিরক্ত হয়ে সুচি বললো , “ দেখে চালা। „ আকাশ মিচকি হেসে কয়েক মিটার যাওয়ার পর আবার ব্রেক মারলো। এবার সুচি রেখে গিয়ে বললো , “ কি অসভ্যতামি হচ্ছে এসব ? আমি বুঝতে পারছি তুই ইচ্ছা করে করছিস এসব । „ “ অসভ্যতামি কোথায় ? আমি তোর হবু বর । কোথায় জড়িয়ে ধরে বসবি । তা না ! উনি বসেছেন কাকিমাদের মতো করে । „ “ আমি পারবো না। „ “ তাহলে আমিও ইচ্ছা করে ব্রেক মারবো । „ বলে একবার ব্রেক মারলো । আবার আকাশের পিঠের উপর পড়ে গিয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে সুচি রাগী স্বরে বললো , “ পড়ে যাবো তো । „ “ আমাকে ধরে বসলে পড়বি না তো ! „ “ কাল থেকে আর তোর বাইকে বসবো না। আমার স্কুটি আছে । ওতেই আসবো । „ “ সে আসিস। কিন্তু আজকে আমাকে ধরেই বসতে হবে । না হলে পুরো রাস্তা আমি এইভাবেই ব্রেক মারবো। „ বলে আরও একবার আকাশ ব্রেক মারলো। “ অসভ্যের ধারী একটা । লজ্জাশরম কিচ্ছু নেই। „ আরও দুই বার ব্রেক চাপার পর একরকম বাধ্য হয়েই সুচি আকাশকে জড়িয়ে ধরলো । লজ্জার কারনে সে চোখ বন্ধ করে ফেললো। আকাশকে জড়িয়ে ধরে বাইকে যেতে মোটেও খারাপ লাগছিল না তার। কিন্তু লজ্জা তো লাগবেই। তাই সে চোখ বন্ধ করে ফেলেছিল। চোখ খোলা থাকলে সে দেখতে পেত যে , সোসাইটির বড়ো লোহার গেটের পাশের ফুটপাতে , লেম্পপোস্টের নিচে দাড়িয়ে , এক জোড়া ভুরুর শয়তান , তার দিকেই অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাগে ফুসতে ফুসতে যে গালে সুচি চড় মেরেছিল সেই গালে একবার হাত বুলিয়ে নিল। আর প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলতে লাগলো তার মনে । মনে মনে সেই জোড়া ভুরুর শয়তান বললো , ‘ আমার গালে চড় মেরেছিলি তুই। , বিল্ডিংয়ের নিচে এসে আকাশ বাইক থামাতেই সুচি বাইক থেক নেমে উপরে উঠে গেল। আকাশও বাইকে থেকে চাবি খুলে নিয়ে উপরে এসে নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকতে গিয়ে দেখলো সুচি আগে থেকেই তাদের ফ্ল্যাটের ভিতর ঢুকে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। আকাশ সুচিকে ওইভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হলো। সে তড়িঘড়ি নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে দেখলো সুচি একভাবে সোফার দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশ সেখানে তাকিয়ে দেখলো জেঠু আর বাবা সামনাসামনি বসে আছে। আর তাদের মাঝের টেবিলে আছে একটা পুরানো আমলের কাঠের কারুকার্য করা সুন্দর দাবার বোর্ড। তাতে গুটি সাজানো। অর্থাৎ দুজনেই দাবা খেলছে। এতক্ষণ পর আকাশ বুজতে পারলো কেন বাবা অফিস থেকে এক ঘন্টা আগে চলে এসছিল । আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো সুচির মতো মা আর জেঠিমা-ও ওই দুজন দাবাড়ুর দিকেই তাকিয়ে আছে। সুচি আর আকাশকে দেখতে পেয়ে সুচেতা দেবী সুচির উদ্দেশ্যে বললেন , “ আজ তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফিরেছিল। আমি বুঝতে পারি নি। হাত মুখ ধুয়ে চা খেয়ে এখানে এসে সেই যে বসলো , আধ ঘন্টা হয়ে গেছে কেউ কথা বলছে না । আমরা কথা বললে বিরক্ত হচ্ছে। সসসস বলে থামিয়ে দিচ্ছে। „ আরও কিছুক্ষণ থাকার পর সুচেতা দেবী সুচিকে নিয়ে চলে গেলেন। আকাশও হাত মুখ ধুতে চলে গেল। সুচি ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ভাবলো বাবা আর কাকার দাবা খেলা দেখবে । এই সুযোগে দাবা খেলাটাও সে শিখে নিতে পারবে । বাবা যে দাবা খেলতে পারে এটা তো এতদিন জানতোই না সে। তাই সিড়ি দিয়ে উঠে আকাশদের ফ্ল্যাটের ভিতর মাকে দেখে কৌতূহলবশত সে ফ্ল্যাটের ভিতর ঢুকেছিল। তারপর বাবা আর কাকাকে ওইভাবে মগ্ন থাকতে দেখে খুব অবাক হয়েছিল। মুখ থেকে কথা সরছিল না তার। ফ্রেশ হয়ে , নিজের খাটের উপর শুয়ে , ফোন ঘাটতেই তার দিদিকে ফোন করার ইচ্ছা হলো । দিদিকে ফোন করার পর বাবা কাকার দাবা খেলা দেখা যাবে ভেবে সে দিদিকে ফোন করলো। ফোন করার পর ওইপার থেকেই প্রথম গলার আওয়াজ এলো , “ হ্যাঁ বল । „ সুচি --- কি করছিস ? সুমি --- আমি এই চা বানাচ্ছি। তোর জামাইবাবু এই এলো। তা হঠাৎ আমার কথা মনে পড়লো । কি ব্যাপার ! সুচি --- মানে সুমি --- টানা দুদিন ফোন করিস নি। তাই জিজ্ঞাসা করছি । সুচি --- ওই সময় হয়নি। সুমি --- সময় হয়নি নাকি আকাশের সাথে গল্প করছিলি। সুচি --- ওর সাথে আবার কি গল্প করবো ! সুমি --- ন্যাকামি মারিস না। মা আমাকে সব বলেছে। আমি জানি সব। এমনকি আজকে রাতে পুরোহিত এসে তোদের বিয়ের তারিখ ঠিক করবে , সেটাও আমি জানি। সুচি --- এতোই যখন জানিস সবকিছু ! তখন এলি না কেন আজ । সুমি --- যাওয়ার ইচ্ছা ছিল খুব। কিন্তু সময় পাচ্ছি না। এই রবিবার যাবো সবাই। সুচির হঠাৎ প্রজ্ঞার কথা মনে পড়তে সে বললো , “ প্রজ্ঞা কোথায় রে ? „ “ এই নে । „ বলে সুমি একবার ‘ প্রজ্ঞা , বলে ডাকলো। সুচি সেটা ফোন কানে রেখেই শুনতে পেল। সুমি বললো , “ প্রজ্ঞা তোর মাসি ফোন করেছে। এই নে কথা বল। „ কিছুক্ষণ পরেই একটা মিষ্টি বাচ্চা মেয়ের গলা ভেসে এলো , “ মাসি ! তুমি কেমন আছো ? „ সুচি --- আমি ভালোই ! তুই কেমন আছিস ? প্রজ্ঞা -- আমিও ভালো আছি। আমি কিন্তু লাগ করেছি তোমার উপর । কথা বলবো না তোমার সাথে। প্রজ্ঞার বয়স তিন হতে যায়। এখনও তোতলায় । তবে খুব কম। প্রজ্ঞার মিষ্টি রাগ দেখে সুচি মজা পেল , “ কেন ! আমি কি করলাম ? „ প্রজ্ঞা --- তুমি এই রবিবার আসো নি কেন ? সুচি --- আমার কাজ ছিল রে। সামনের রবিবার তো দিদি তোকে এখানে আনছে আমার কাছে। এবার রাগ কমলো তো ! প্রজ্ঞা --- সত্যি ! সুচি --- হ্যাঁ সত্যি। মাকে জিজ্ঞাসা কর না ! আরও প্রায় এক ঘন্টা পর দুজনের খেলা শেষ হলো। জিতলেন সুচির বাবা। চেক মেট বলার পরে তিনি বললেন , “ এখনও বাচ্চাদের মতো ভুল করলি তুই। আমি যখন মন্ত্রীকে স্যাক্রিফাইস করলাম তখনই তোর বোঝা উচিত ছিল। „ বলে হাসতে লাগলেন আকাশের বাবা অজুহাত দেওয়ার জন্য বললেন , “ এত বছর পর খেলছি। এটা ফ্রি প্রাকটিস ম্যাচ ছিল । এখন আর একটা খেল । দেখবি তখন ! „ “ আমি চললুম খবর দেখতে। „বলে সুচির বাবা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে লাগলেন। ঠিক তখনই রাধানাথ ঠাকুর এসে ঘরে ঢুকলেন আর সুচির বাবার মুখোমুখি হয়ে গেলেন। পুরোহিত কে দেখে খুশী হয়ে সুচির বাবা বললেন , “ আসুন আসুন। „ বলে ভিতরে নিয়ে এলেন। আকাশের বাবা পুরোহিতকে দেখেই উঠে দাড়িয়ে পড়েছিলেন। এখন তার জন্য সোফাটা ছেড়ে দিয়ে বললেন , “ আপনি বসুন । „ তারপর আকাশের মায়ের উদ্দেশ্যে বললেন , “ স্নেহা চা নিয়ে এসো। „ আকাশের বাবার কথায় পুরোহিত সোফায় বসলে সুচির বাবা বললেন , “ আপনি বসুন আমি সবাইকে ডাকছি। „ আকাশের মা ঘরেই ছিলেন। বেরিয়ে এসে দেখলেন পুরোহিত এসছে। তাই তিনি চা বানাতে চলে গেলেন। সুচির বাবাও তার স্ত্রী আর মেয়েকে ডাকতে চলে গেলেন । সোফায় বসে একটু জিরিয়ে নিয়ে রাধানাথ ঠাকুর বললেন , “ অনেক দিন পর এখানে এলাম । „ সত্যি বলতে কি আকাশের বাবাও অনেক দিন পর এই লোকটাকে দেখছেন। গায়ের রঙ আগের থেকে ফ্যাকাশে হয়েছে। ধবধবে সাদা চুল। মুখের চামড়া কোঁচকানো । চোখে একটা হাই পাওয়ারের চশমা। পরনে আছে একটা ধুতি আর গায়ে একটা হরে কৃষ্ণ নাম লেখা গেরুয়া চাদর জড়ানো। নয় নয় করেও ষাট সত্তর বছরের বেশি বয়স হয়ে গেল লোকটার। স্নেহা দেবী চা করে নিয়ে এসে রাখলেন। রাধানাথ ঠাকুর আকাশের মাকে জিজ্ঞাসা করলেন , “ তোমার মেয়ের-ই তো বিয়ে ! „ স্নেহা দেবী হেসে বললেন , “ মেয়ের না। ছেলের । আমার ছেলের বিয়ে। „ পুরোহিত অবাক হয়ে বললেন , “ কিন্তু আমাকে তো মেয়ের কুষ্ঠি দেখতে ডাকলো। আমি কি ভুল বাড়ি ঢুকে পড়লাম। „ আকাশের বাবা হেসে বললেন , “ না আপনি ঠিক বাড়িতেই এসছেন । যার কুষ্ঠি দেখতে এসছেন। তার সাথেই আমার ছেলের বিয়ে । „ রাধানাথ ঠাকুর এখনও বুঝতে পারেননি। কিন্তু তিনি বিচক্ষণ লোক। তাই বুঝতে পারলেন যে ধীরে ধীরে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং সব বুঝতেও পারবেন। এইসব ভেবেই তিনি আকাশের মায়ের হাতের বানানো চায়ে চুমুক দিলেন। সুচির বাবা সুচির মাকে নিয়ে এলেন। হাতে তার সুচির কুষ্ঠি আর একটা পঞ্জিকা আছে। সুচিকে একবার তিনি ডেকেছিলেন । তার উত্তরে সুচি লজ্জা পেয়ে বলেছে , “ তোমরা যাও আমার ভালো লাগছে না। „ সুচির বাবা ঘরে এসে রাধানাথ ঠাকুরের সামনে কুষ্ঠি আর পঞ্জিকা ধরে বললেন , “ এই নিন । „ রাধানাথ ঠাকুর পঞ্জিকা নিয়ে দিন দেখতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পর জিজ্ঞাসা করলেন , “ তোমরা কোন মাসে তারিখ চাইছো ? „ আকাশের মা বললেন , “ দুই তিন মাস পর হলে আমাদের সুবিধা। সবকিছু আয়োজন করতে একটু সুবিধা হবে। „ আর একবার পঞ্জিকা দেখে পুরোহিত বললেন তাহলে মে মাসের নয় থেকে বারো সবকটা দিন ভালো আছে। সেই দিন গুলোর মধ্যে একটা বেছে নাও বলে সুচির কুষ্ঠি তুলে নিলেন আর বললেন , “ পাত্রের কুষ্ঠি কোথায় ? „ আকাশের মা , “ আনছি। „ বলে সঙ্গে সঙ্গে নিজের ঘরে ঢুকে গেলেন । আলমারি খুলে ছেলের কুষ্ঠি বার করে এনে দিলেন। রাধানাথ ঠাকুর দুটো কুষ্ঠি মিলিয়ে বললেন , “ পাত্রীর রাশি সিংহ আর পাত্রের মেষ। সব ঠিক আছে। কিন্তু মেয়ের বয়স বেশি , আর ছেলের কম দেখাচ্ছে তো ! „ আকাশের মা বললেন , “ হ্যাঁ আমার ছেলের বয়স তেইশ। আপনি ওর অন্নপ্রাশনের দিন কুষ্ঠি দেখে বলেছিলেন ওকে তেইশ বছরে বিয়ে দিতে। তাই । „ “ ও .. কি বলেছিলাম তা মনে নেই। তবে এখন কুষ্ঠি দেখেও সেটাই বলছি। এ ছেলের বিয়ে এই তেইশেই দিলে ভালো। সারাজীবন সুখে ঘর করতে পারবে। „ তারপর একটু ইতস্তত করে বললেন , “ পাত্রীর কুষ্ঠীতে একটা বিপদ দেখতে পাচ্ছি। মোটেও ভালো লাগছে না । „ সুচেতা দেবীর বুক কেঁপে উঠলো , মুখটা নিমেষের মধ্যে রক্তশূন্য হয়ে উঠলো , “ কি বিপদ দাদা ? „ “ পাত্রীর বিয়ের আগে একটা ফাঁড়া আছে । „ “ কিরকম ফাঁড়া ? „ “ একটা ক্ষতি। কিরকম ক্ষতি সেটা বুঝতে পারছি না। সব যদি এইভাবে বোঝা যেত তাহলে তো ... „ বলে চুপ করে গেলেন । ঘরের মধ্যে সবারই এখন বুক শুকিয়ে গেছে। সুচেতা দেবী কাঁপা গলায় বললেন , “ কিছু তো বলুন । এর থেকে কিভাবে আমার মেয়েকে বাঁচাবো সেটা বলুন । „ “ আমি বুঝতে পারছি না । ও নিজেই উপায় বার করবে। আর কিছু বলতে পারছি না । „ আরও কিছুক্ষণ থেকে সুচির বাবার কাছ থেকে প্রণামী নিয়ে রাধানাথ ঠাকুর চলে গেলেন। তেইশ বছর আগে তিনি একটা বোম মেরে চলে গেছিলেন। এখন তার থেকেও বড়ো বোম মেরে চলে গেলেন। ঘরে শ্মশানের নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে , কারোর মুখে আর একটাও কথা নেই। সবাই থম মেরে গেছে। কি বিপদ ? সেটাই সবার মাথায় ঘুরছে। আকাশের বাবা এটাকে অবিশ্বাস করার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন, কিন্তু বিপদ শব্দটাই বুক কাঁপিয়ে দিচ্ছে। সুচেতা দেবী সেই যে চুপচাপ হয়ে গেলেন আর কথা বললেন না । রাত প্রায় আটটার সময়ে গোধূলি বাড়ি ফিরলো। বাড়ি ঢুকতেই গোধূলির মা এসে বললো , “ দেখ না কি হয়েছে ! সেই যে অফিস থেকে ফিরলো , তখন থেকেই এরকম আচরণ করছে তোর বাবা । „ ফোনেই বাবার গলা শুনি গোধূলি বুঝতে পেরেছিল যে কিছু একটা হয়েছে। এখন মায়ের মুখে বাবার আচরণ শুনে সে গম্ভীর হয়ে গেল , “ দাড়াও , আমি জিজ্ঞাসা করছি। „ তারপর বাবার ঘরে গিয়ে দেখলো তার বাবা এক জায়গায় স্থির নেই। সারাঘর পায়চারি করছে। ওইভাবে পায়চারি করতে দেখে গোধূলি জিজ্ঞাসা করলো , “ কি হয়েছে বাপি ? এরকম করছো কেন ? „ গোধূলি কে দেখেই সঞ্জয় ফেটে পড়লো , “ কি হয়েছে ! আকাশ আর একটা মেয়েকে প্রোপজ করেছে। আর তুই জিজ্ঞাসা করছিস কি হয়েছে ! „ গোধূলি বাবার কথা শুনে বুঝতে পারলো যে আকাশ নিশ্চয়ই সুচিত্রা কে প্রোপজ করেছে। তাই সে বললো , “ হ্যাঁ প্রোপজ করেছে। তাতে অসুবিধা কোথায় ? „ সঞ্জয়ের মাথা ঠিক নেই। চোখ লাল হয়ে উঠেছে , “ অসুবিধা ! আমার এতদিনের অপেক্ষা , এতদিনের প্ল্যান সব জলে ডুবে গেল আর তুই .... বাবার কথার কোন মানেই গোধূলি বুঝতে পারলো না। তাই তার ভুরু কুঁচকে গেল , “ কিসের অপেক্ষা ? কিসের প্ল্যান ? বাপি আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ! „ “ তোর সাথে আকাশের বিয়ের প্ল্যান। এটার জন্যেই তো আমি এত বছর অপেক্ষা করেছি ... গোধূলি অবাক হয়ে বললো , “ বাপি তুমি , আমার আর আকাশের বিয়ের জন্যে এতদিন অপেক্ষা করেছিলে ! „ “ তুই তো ওকে গোলাপ দিয়েছিলি। ও সেটা নিয়ে thank you ও বলেছিল। তাহলে হঠাৎ ও সুচিত্রা কে কেন প্রোপজ করলো ? তুই জানিস কিছু ? „ “ হ্যাঁ ও সুচিত্রাকে ভালোবাসে। তাই প্রোপজ করেছে। আকাশ আমাকে বলেছিল ও সুচিত্রা কে ভালোবাসে। „ সঞ্জয় প্রায় পাগল হয়ে গেল , “ না , না , না , আমার স্বপ্ন ! আমার এতদিনের সবকিছু এইভাবে তছনছ হতে পারে না ! „ গোধূলি বাবার কথায় আরও অবাক হলো , “ কি বলছো কি তুমি বাপি ? কি তছনছ হয়েছে ? কোন স্বপ্নের কথা বলছো ? „ নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না সে। বদ্ধ উন্মাদের মত সব সত্যি বলে দিল সঞ্জয় , “ আমি চেয়েছিলাম তোর সাথে আকাশের বিয়ে হবে। তারপর ওই সম্পত্তি সব শুধু আমি ভোগ করবো। শুধু আমি । „ বাবা যে পাগল হয়ে গেছে সেটা বুঝতে পেরে এবং বাবার কথার মানে বুঝতে পেরে গোধূলি কেঁদে ফেললো। দুই গালে চোখের জলের রেখা দেখা দিল । কাঁদতে কাঁদতে সে বললো “ তুমি আমাকে একটা পন্য হিসাবে ব্যবহার করতে চেয়েছো বাপি ! আমি শুধু তোমার কাছে সম্পত্তি পাওয়ার চাবিকাঠি ছিলাম এতদিন ! তুমি আমাকে ভালোবাসোনি কখনো। আমি ভেবেছিলাম তুমি আমার সুখের জন্য আমাকে আকাশের সাথে সম্পর্কে যেতে বলছো। এখন দেখছি সেটাও তোমার এক জঘন্য প্ল্যান ছিল। i hate you বাপি। i hate you... বলে দৌড়ে উপরের তলায় নিজের ঘরে গিয়ে দরজা দিয়ে দিল। বিছানায় এসে উপুড় হয়ে শুয়ে চোখের জলে বালিশ ভেজাতে লাগলো। এদিকে সঞ্জয় মেয়ের কথায় এতক্ষণ পর নিজের হুশ ফিরে এলো। গোধূলির বলা কথা গুলো তার মাথায় ঘুরতে লাগলো। “ পণ্য , হ্যাঁ , পণ্য হিসাবেই তো ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম নিজের মেয়েকে । „ বিড়বিড় করে কথা গুলো বলে , ঘরের মধ্যে রাখা সোফার উপর ধপ করে বসে পড়লো ।
31-12-2021, 10:24 AM
(This post was last modified: 31-12-2021, 10:27 AM by Bumba_1. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
এই পর্বে অনেক কিছুই ছিলো .. বেশ ভালো ..
সঞ্জয়বাবুর কথা শুনে মনে হচ্ছে তিনি এরপর আর বিশেষ কিছু করবেন না। তবে জোড়া-ভ্রুর শয়তান পলাশ কিছু একটা করবে বলে মনে হচ্ছে .. সেদিকেই মনে হয় রাধানাথ ঠাকুরের ইঙ্গিত। কিন্তু মাঝে মাঝে bold letter দিচ্ছো কেন ভাইটু বুঝতে পারছিনা। কাহিনীর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কথা বোঝানোর জন্য মোটা হরফ ব্যবহার করা আবশ্যক নয়। by the way, সুচিত্রাদের বাড়িতে এবার একটা কাজের লোকের ব্যবস্থা করে দিও। সুচিত্রার বয়স্ক মা'কে তাহলে এই বয়সে ঘরদোর মুছতে হয় না .. বাবা-মেয়ে দুজনেই চাকরি করছে, এতটা খারাপ অবস্থা বোধহয় ওদের নয়। আর নিজের অফিসে নিজের এম.বি.এ ডিগ্রিধারী ছেলেকে পিওনের চাকরি দিয়ে আকাশের বাবা মূর্খামি করেছে, এতে আকাশের কোনো দোষ নেই। একটা এত বড় কোম্পানির মালিকের ছেলে হয়ে নিজের নিজের বায়োডাটা নিয়ে অন্য অফিসে কাজ খুঁজতে যাবে এটা ভাবাটাই হাস্যস্পদ।
31-12-2021, 10:47 AM
(31-12-2021, 10:24 AM)Bumba_1 Wrote: এই পর্বে অনেক কিছুই ছিলো .. বেশ ভালো .. আমি সত্যিই ভাবিনি আজকে কেউ পড়বে ... ভেবেছিলাম হয়তো দুই তারিখের পর কমেন্ট পাবো । কমেন্ট পেয়ে অবাক হলাম তাই ওই বাচ্চার অবাক হওয়ার ফটো দিলাম । সাথে খুশি হয়ে রেপুও Bold করে দেওয়ার ব্যাপারে বলি... এরকম কোন ব্যাপার নয় , আপনি দেখবেন যে আমি সব আপডেটে এটা করিনি বা করিনা। যে আপডেটে এরকম করি সেই আপডেট দেওয়ার দিন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়ি। আজকেও উঠেছিলাম। এতো ঠান্ডা হওয়া দিচ্ছিল কি বলবো। তাই সকালে উঠে ওই কারিগরী করছিলাম আর কি, এবার থেকে আর করবো না কাজের জন্য একজন মহিলা পরের আপডেটেই দিয়ে দেবো ... ওটা মাথাতে আসেনি এতদিন । আর ওই পিওনের কাজটাও পরের আপডেটে খুব সুন্দর ভাবে মেকআপ করে দেবো ... এবার ওটা আদেও সুন্দর হয়েছে কি না সেটা আপনি বলবেন .... ❤❤❤
31-12-2021, 11:56 AM
কোন জানি মন বোলছিলো আপনি এরোকম কিছু একটা করবেন। খুব ভালো লাগলো আই এম সারপ্রাইজড। আকাশের সাথে ওই লম্পটার জম্পেশ একটা একশন সিন হলে মজা এসে যাবে।
31-12-2021, 12:09 PM
ager comment ei sab ans leye gelam motamuti jegulo jiges korte jachilam.......dekhi kake chod mare ebar suchi
31-12-2021, 12:37 PM
আজকের পর্বের শেষের পর্যায়টা যে আসবে সেটা জানতামই, কিন্তু কিভাবে আর কতটা বিপদজনক হয়ে আসবে সেটা তুমি ঠিক করবে. তাই আমি আলাদা করে ভাবিনি আর ভাবতেও চাইনা. তবে একটাই কথা বলবো - এই সম্পূর্ণ উপন্যাসের কয়েকটা এমন পর্ব ছিল যেগুলো সোজা দিল পে চাক্কু!! পাঠকদের বুকে এসে বিঁধেছে, আবার কয়েকটা অতি ড্রামাটিক... আমি মোটেও সেগুলো ছোট করছিনা কারণ কিছু ক্ষেত্রে ফিল্মি ড্রামা আনতেই হয় গল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে. ওই যেমন বলেছিলাম প্রয়োজনে গল্পের গরু গাছেও চড়তে পারে.
কিন্তু এই চরম পর্যায়ে এসে গল্পটার মধ্যে আবার বাস্তবিক পটভূমি আর দৃষ্টিভঙ্গি ফিরিয়ে আনো মানে বলতে চাইছি এই আসন্ন পর্ব গুলিতে এমন কিছু দেখিও না যেটা ওভার ড্রামাটিক, বা সেরম কোনো মুহুর্ত আসলেও তার বাস্তবিক ভাবে লেখার চেষ্টা কোরো.. ওই ফিল্মি ব্যাপারটা যেন কম থাকে. বাকি তুমি কি লিখবে আর কেমন ভাবে লিখবে সেটা সম্পূর্ণ তোমার নিজস্ব ভাবনা আর কল্পনা. বছরের শেষ দিনের তোমার এই প্রয়াস সত্যিই সুন্দর ছিল ❤
31-12-2021, 12:40 PM
এই সাইটে আমরা প্রধানত ইরোটিক গল্প পড়তে আসি।আপনার এই উপন্যাস আগে দেখলেও পড়িনি, কিন্তু দু-তিনদিন আগে রাত্রে হঠাৎ কি মনে করে পড়তে শুরু করলাম আর সত্যিই প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়এর প্রেমের গল্পগুলোর কথা মনে পড়ে গেলো।এতো সুন্দর বিশ্লেষণ করেছেন এবং ঘটনাগুলোকে সাজিয়েছেন যা এককথায় অনবদ্য।শুধু একটাই অনুরোধ সুচির ক্ষতিকর বিষয়টা যেন কোনো এদিড সংক্রান্ত নাহয়। ধন্যবাদ।
31-12-2021, 01:26 PM
তাহলে তাদের এক রুপালি পর্দার প্রিয় অভিনেত্রীর নামেই সুচির নামকরণটা করেছিল তখন! আসলে কি বাঙালির মন থেকে ওই চেহারা ভুলানো সম্ভব নয় কখনোই। তবে এখানে গল্পের সূচি একটা tomboy জাতিও যা কিনা পর্দার সুচিত্রা থেকে অনেকটাই ভিন্য, কিন্তু সুচিত্রা সেনেরই একটা চলচিত্র নাম "সপ্তপদী" যেখানে সে উত্তম কুমারের বিপরীতে তার মূল অভিনয় ধারার চেয়ে অনেকটাই ব্যাতিক্রমী অভিনয় করে বখে যাওয়া একজন উশৃঙ্খল মেয়ের চরিত্রে।
আমি তো মনে মনে ভাবছিলাম যে আকাশ সূচি কে বাইকে নিয়ে গানটা গাইতে গাইতে গেলে ভালো হত। https://www.youtube.com/watch?v=kCB90Rsxn4s তো নতুন বছরে সুচির কিছু বিপদের আভাস পাওয়া যাচ্ছে পুরোহিতের কথা মত। হতে পারে বিপদটা ওই শয়তান চোখওয়ালা যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল তার নিকট হতে অথবা গোধূলির বাবার নিকট হতে, কিংবা দুইজনের মিলিত চক্রান্ত ষড়যন্ত্রেই। সুচিকে অবশ্যই এদিকটাও ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে, সেইসাথে প্রয়োজন আছে আকাশ কে সাবধানী হওয়ার কারণ সুচির দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে.
31-12-2021, 01:44 PM
ওদের দুষ্ট মিষ্টি প্রেমের মহূর্তগুলো মিস করছি। অনেক তো বিরহ বেদনা হলো।
31-12-2021, 03:11 PM
সুন্দর একটা আপডেট। বছরের শেষটা বেশ ভালোই হলো। আপনি ভাবলেন বছরের শেষে কেউ পড়বে না আর আমরা ভাবছিলাম বছরের শেষে কি আর একটা আপডেট পাব না।
31-12-2021, 03:45 PM
ভালো লাগলো পর্বটি। জীবনে তো চড়াই-উৎরাই, ঘাত-প্রতিঘাত আসেই - এই গল্পের ঘটনাবলীর ক্ষেত্রেও আসবে, সেটাই স্বাভাবিক।
তবে গল্পের নাম অনুসারে মিষ্টি মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে যেন গল্পটি শেষ হয় - এটাই কাম্য।
31-12-2021, 04:35 PM
চমত্কার আপডেট , আজ কেউ আশা করেনি ...
কিছু কিছু ছোটোখাটো বিস্ময় ছাড়া গল্পে আর বিশেষ কিছু ঘটবে কি !! যথযোগিত সমাপ্তির অপেক্ষায় এবারে ... অবশ্যই সব চেয়ে মিষ্টি মুহূর্তটার স্বাদ আস্বাদনের পরে .....
01-01-2022, 12:02 AM
01-01-2022, 12:02 AM
01-01-2022, 12:03 AM
(31-12-2021, 11:56 AM)Siraz Wrote: কোন জানি মন বোলছিলো আপনি এরোকম কিছু একটা করবেন। খুব ভালো লাগলো আই এম সারপ্রাইজড। আকাশের সাথে ওই লম্পটার জম্পেশ একটা একশন সিন হলে মজা এসে যাবে। সবাইকে এতো দেরিতে রিপ্লাই দেওয়ার কারন হলো happy new year wish করা একশন সিন রাখা যাবে কি না ভাবতে হবে (31-12-2021, 01:44 PM)Siraz Wrote: ওদের দুষ্ট মিষ্টি প্রেমের মহূর্তগুলো মিস করছি। অনেক তো বিরহ বেদনা হলো। দুষ্টু মিষ্টি প্রেম এখন আর নাই দাদা... এখন সব বৈবাহিক সম্পর্ক Happy new year সিরাজ দা এই বছরটা আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য আনুক অনেক খুশি এবং শান্তি
01-01-2022, 12:04 AM
01-01-2022, 12:04 AM
01-01-2022, 12:06 AM
(01-01-2022, 12:03 AM)Bichitravirya Wrote: সবাইকে এতো দেরিতে রিপ্লাই দেওয়ার কারন হলো happy new year wish করা নতুন বছরের শুভেচ্ছা। নতুন বছরে আকাশ আর সুচিত্রার নতুন জীবনে পদার্পন দেখার জন্যে মুখিয়ে আছে সব, সেইসাথে আমিও। আকাশ আর সুচিকে বিবাহের আগাম শুভেচ্ছা টা জানাতে পারলে হতো................ |
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 128 Guest(s)