22-12-2021, 08:35 PM
(This post was last modified: 23-12-2021, 05:52 PM by Sanjay Sen. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
সান্তা ক্লজের বড়দিনের উপহার সংক্রান্ত কিছু একটা লেখা হবে বলে মনে হচ্ছে, অপেক্ষায় থাকবো ।
WRITER'S SPECIAL সৃষ্টি (সমাপ্ত)
|
22-12-2021, 08:35 PM
(This post was last modified: 23-12-2021, 05:52 PM by Sanjay Sen. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
সান্তা ক্লজের বড়দিনের উপহার সংক্রান্ত কিছু একটা লেখা হবে বলে মনে হচ্ছে, অপেক্ষায় থাকবো ।
23-12-2021, 11:50 PM
24-12-2021, 03:40 PM
(This post was last modified: 24-12-2021, 03:58 PM by Bumba_1. Edited 4 times in total. Edited 4 times in total.)
সান্টাক্লসের উপহার
লেখা এবং প্রচ্ছদ :- বুম্বা
জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বড়দিন এখন সকলের উৎসব। আনন্দের উৎসব .. কেক খাওয়া, বেড়াতে যাওয়া - এগুলো তো আছেই, বাচ্চাদের কাছে সবথেকে মজা আগের দিন রাত্রে 'সান্টাক্লসের' উপহার পাওয়া। অপুর কাছে এটা দারুন আনন্দের দিন। ও জানে বড়দিনের আগের দিন ২৪শে ডিসেম্বর রাত বারোটার পর সান্টাক্লস প্রত্যেকের বাড়িতে যায় আর ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের জন্য উপহার নিয়ে আসে। কখনো ঝোলানো মোজায় ভরে দেয় চকলেট, আবার কখনো বালিশের নিচে রেখে দেয় লজেন্স, ছবির বই। অপু জানে সান্টাক্লস ওদের বাড়িতেও আসবে। ঝোলানো মোজায় চকলেট রাখবে, বালিশের নিচে ছবির বই, ছড়ার বই, গল্পের বই রাখবে, লজেন্স রাখবে। ঘুম থেকে উঠেই বালিশ উল্টে ও সব দেখতে পাবে। বিকেলে খেলার মাঠে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে এগুলো ভাগ করে খাবে .. বইয়ের ছবি দেখাবে। ছোটবেলায় ঘুম থেকে উঠলেই মা বলতেন "অপু .. দ্যাখ তো তোর বালিশটা উল্টে।" ওপু বালিশ উল্টে দেখেই অবাক হয়ে যেত .. এখন আর বলতে হয় না। এখন সে মাস গুনে, দিন গুনে বুঝে নেয় ২৪শে ডিসেম্বর কবে। আগের দিন বিকেলে বন্ধুদের বলে রাখে "আজ রাতে সান্টাক্লস আসবে .. লাল রঙের ডিলেডালা জোব্বা পড়ে, তার জামার অনেক পকেট .. সব পকেট ভর্তি উপহার। তার মাথায় ঢলঢলে লাল পশমের টুপি .. তাতেও থাকে লজেন্স, চকলেট। সে আসে মাঝরাতে .. আমি কতো রাত অব্দি জেগে থাকি .. কিন্তু কোনোদিন তাকে দেখতে পাইনি .. তবে সকালে উঠেই দেখি কখন যেন দিয়ে গেছে উপহার আমার বালিশের নিচে।" বন্ধুরা চোখ বড় বড় করে শোনে তার গল্প। ভাবে - ইশশ, আমাদের বাড়িতেও যদি সান্টাক্লস আসতো তাহলে কেমন মজাই না হতো। বিনু একদিন বাড়ি গিয়ে তার মা-বাবাকে অপুর গল্পটা করলো। বললো "বাবা, যাও না কাকুকে জিজ্ঞেস করে এসো না .. কি করলে সান্টাক্লস আমাদের বাড়িতেও আসবে .. আমি মোজা ঝুলিয়ে রাখবো .. সান্টাক্লস এসে চকলেট রাখবে .. বালিশের নিচে লজেন্স, ছবির বই রেখে দেবে। একবারটি জিজ্ঞেস করে এসো না বাবা.." বিনুর পেড়াপীড়িতে ওর বাবা গেলেন অপুর বাবার কাছে। সব শুনে অপুর বাবা বলেন "ওহ্ , এই কথা, শোনো তাহলে ...." এই বলে অপুর বাবা ফিসফিস করে হাত নেড়ে কি যেন সব বুঝিয়ে দিতে লাগলেন বিনুর বাবাকে। বিনুর বাবা মাঝপথে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন "উঁহু .. এটা তুমি ঠিক করছো না, তোমার ছেলেকে ঠকাচ্ছো, মিথ্যে বোঝাচ্ছো .. আসলটা ও জানতে পারছে না। তাছাড়া লজেন্স, চকলেট - এগুলো দাঁতের ক্ষতি করে বইতো নয়। দেখবে বড় হলে তোমার ছেলের দাঁতও যাবে আর কেমন বোকা বোকা বুদ্ধি হবে।" অপুর বাবা একটু চিন্তা করে বললেন "হয়তো তুমি ঠিকই বলছো .. এরকমভাবে তো আমি ভাবি নি। তবে সান্টাক্লসের গল্প তো মিথ্যে নয় .. পৃথিবীর সব মানুষই প্রায় এই গল্প জানে। সান্টাক্লস বাচ্চাদের অত্যন্ত প্রিয় আর বাচ্চাদের একটা সরল বিশ্বাসের জায়গাও সে অধিকার করে আছে। আমি অপুর মনে কেবলমাত্র সরল বিশ্বাস জন্মানোর জন্যই এই রকম গল্প তৈরি করে রেখেছি। শিশুর প্রথম বিশ্বাসই তো সরলতার মধ্যে দিয়ে আসা উচিত .. আমার অন্তত তাই মনে হয়। বিনুর বাবা গম্ভীর হয়ে চলে গেলেন। মুখে যাই বলুন ব্যাপারটা কিন্তু তার ভালই লেগেছে। তিনি ভাবলেন সকালবেলা উঠে তার ছেলে যদি বালিশের নিচ থেকে হঠাৎ একটা প্রিয় জিনিস উপহার পায় তাহলে ওর যে কত আনন্দ হবে - সেই মুখটার কথা চিন্তা করেই তিনি একটা উপহার কিনে আনলেন। চুপি চুপি বিনুর মা'কে সব কথা জানিয়ে দিয়ে বললেন "খবরদার, ছেলে যেন জানতে না পারে .. ওর বালিশের নিচে রেখে দেবে, সকালে উঠে বলবে সান্তাক্লস রেখে গেছে। হুঁ হুঁ বাওয়া .. এসব লজেন্স ফজেন্সের ব্যাপার নয় .. এ অন্য জিনিস। ছেলেদের সাহসী করতে হবে, যুগটার কথাও তো ভাবতে হবে।" পরেরদিন বিনু ঘুম থেকে ওঠে আর না। মায়েরও যেন ধৈর্য আর থাকছে না, গায়ে ঠ্যালা দিয়ে বললেন "ও বিনু, ওঠ না .. কত বেলা হলো.." বিনু শীতে গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকে। মা আবার ডাকেন "বিনু, ও বিনু .. উঠবি না? দ্যাখ, তোর জন্য বালিশের নিচে সান্টাক্লস কি উপহার রেখে গেছে।" কথাটা শোনামাত্র বিনু শীতঘুম কাটিয়ে এক লহমায় বিছানায় উঠে বসে আর সঙ্গে সঙ্গে বালিশটা উল্টে দ্যাখে "আঃ কি সুন্দর বন্দুক .. মা, এটা সান্টাক্লস উপহার দিয়েছে? তার মানে সান্টাক্লস আমাদের ঘরে রাত্রে এসেছিল .." চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে বিনুর। বন্দুকটা তুলে নিয়ে বুকের কাছে জাপ্টে ধরে। তারপর লক্ষ্য করে বালিশের পাশে আর একটা উপহার রাখা আছে তার জন্য .. এক প্যাকেট ভর্তি ছোট ছোট মটর দানার মতো গুলি। মা বলেন "উপহার তো পেয়েছো .. যাও এবার মুখ চোখ ধোও, দাঁত মাজো।" কে শোনে কার কথা .. বিনু ততক্ষণে ফরফর করে গুলির প্যাকেট ছিঁড়ে ফেলেছে। বন্দুকটা ধরে এপাশ-ওপাশ করতেই বুঝে নেয় কোনখানটায় গুলিটা ভরতে হবে .. মুহুর্তের মধ্যে ভরেও নেয় একটা গুলি। তারপর বন্দুকটা নিয়ে কিসে মারবে ভাবতে ভাবতে হঠাৎই ট্রিগারে চাপ পড়ে গুলিটা সোজা বেরিয়ে গিয়ে খটাস করে গিয়ে লাগলো ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা স্টিলের জগে। শব্দ শুনে রান্নাঘর থেকে মা বললেন "কি রে, বিনু .. কিসের শব্দ হলো?" বিনু বলে "কিছু না .. মা।" মা বলেন "শিগগির আয় .. মুখ ধুয়ে দুধ খেয়ে নে।" কোনরকমে দাঁত মেজে মুখ ধুয়েই ঢকঢক করে খেয়ে নিলো এক গ্লাস দুধ .. তারপর বিস্কুটগুগো মুখে গুঁজে দিয়ে কুরমুর করে চিবোতে চিবোতে দে-ছুট' সোজা বাগানে। বিনুর হাতে বন্দুক আর গুলির প্যাকেট .. বন্দুকে গুলি ভরছে আর ছুঁড়ছে। পাখি, ফুল, প্রজাপতি সবকিছুকে তাক করছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হচ্ছে .. গুলিগুলো খুঁজে খুঁজে কুড়িয়ে নিচ্ছে .. আবার কোনো কোনোটা হারিয়েও যাচ্ছে .. মাঝে মাঝে এলোপাথাড়িও গুলি ছুঁড়ছে। বাগানের কোণে সদ্য সদ্য জন্মানো চারটে বাচ্চা নিয়ে গুটিসুটি মেরে শুয়েছিল লালি .. ওদের পোষা কুকুর। হঠাৎ লালি "ক্যাঁও ক্যাঁও" করে আর্তনাদ করে উঠলো। বাচ্চাগুলোর চোখ ফোটে নি, মায়ের আর্তনাদ শুনে আর পালিয়ে যাওয়া বুঝতে পেরে "কুঁই কুঁই" করতে করতে এ ওর ঘাড়ে পড়তে লাগলো। বিনুর খুব মজা লাগছিলো .. একবার বন্দুকটা তাক করতে ইচ্ছে করলো বাচ্চাগুলোর দিকে। ঠিক সেই সময় মা চিৎকার করে ডাকলেন "কি হলো রে বিনু .. কুকুরটাকে মারলি?" বিনুর উত্তর "না মা মারিনি .. এমনি ডাকছে লালি।" মা বলেন "ভেতরে আয় .. পড়তে বোস . বাবা বাজার থেকে এক্ষুণি এসে পড়বে।" বিনু ঘরে ঢুকে পড়ার টেবিলে বসে। কিন্তু পড়ায় মন একটুও নেই .. বই সামনে খুলে রেখে আবার বন্দুকে গুলি ভরে নেয় একটা। জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছে লাল্টুদের প্রাচীরে বসে আছে হুলো বিড়ালটা। মাথায় চাপলো দুষ্টুমি বুদ্ধি .. বিড়ালটার দিকে তাক করে ছুঁড়লো গুলি। গুলিটা সত্যি সত্যি লাগলে বিড়ালটার পেট ফুটো হয়ে যেতো। কিন্তু গুলিটা লাগলো জানালার গ্রিলে আর সঙ্গে সঙ্গে বুমেরাং হয়ে দ্বিগুন বেগে ফিরে এসে লাগলো কাঠের আলমারির উপরে রাখা অ্যালার্ম ঘড়িটার কাঁচে। 'টুস' করে শব্দ হয়ে চির খেয়ে গেলো ঘড়ির কাঁচ। ভয় ধরে গেল বিনুর .. মা জানতে পারলে রক্ষা নেই .. দীপুমাসির দেওয়া ঘড়ি। মা হাত মুছতে মুছতে ঘরে ঢুকলে। বিনু তাড়াতাড়ি বইয়ের পাতা উল্টে বসে পড়ার ভান করতে লাগলো। মা বললেন "দেখি .. কি বই বের করেছিস .. তখন থেকে বসে আছিস, না? নিজে থেকে কিচ্ছু করতে পারিস না?" বিনু ভয় পেয়েছিল, মা বুঝি সব জানতে পেরে গেলো। আজকে ছুটির দিন, সকালে প্রচুর কাজ। মায়ের ওসব দেখার অবসর নেই। তাড়াতাড়ি বই খাতা বের করে দিয়ে বললেন "দু'পাতা কারসিভ রাইটিং লেখ, আমি আসছি .." ঘড়িটার কাঁচ ফেটে গেছে দেখে বিনুর খুব দুঃখ হলো। হাতটায় যদি একটু প্র্যাকটিস থাকতো, তাহলে বিড়ালটার গায়ে ঠিকই লাগতো আর ঘড়িটাও ভাঙতো না। বিনু উঠে পড়ে সোফার বালিশগুলো ডিভানের উপর রেখে একের পর এক গুলি ছুঁড়ে 'টিপ' প্র্যাকটিস করতে থাকে। ভারি মজা লাগছে তার .. মনে মনে সান্টাক্লসকে থ্যাঙ্কস্ জানাচ্ছে বারবার। মা রান্নাঘর থেকে বলেন "কি রে বিনু লিখছিস তো?" বিনু তাড়াতাড়ি টেবিলে বসে পড়ে - "হ্যাঁ মা .. লিখছি।" "আচ্ছা লেখ .. আমি বাথরুমে যাচ্ছি" মা বললেন। এর জন্যই বিনু অপেক্ষা করছিল। সবিতামাসি রান্নাঘরে বাসন মাজছে .. বাইরে ময়লা ফেলতে গেলো .. ফিরে এসে দরজাটা ভেজিয়ে দিলো। এবার ঘর ঝাঁট দিতে এলো .. এখনতো বিনু'কে বাইরে যেতেই হবে, কেননা চেয়ার তুলে দেবে ডিভানে। ঘর থেকে বেরিয়েই বিনু দেখে ভেজানো দরজাটার পিছনে একটা বড়সড় টিকটিকি লেপ্টে আছে .. দেখেই তার মনটা নেচে উঠলো। সঙ্গে সঙ্গে বন্দুকটা হাতে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে টিপ করে দিলো ট্রিগার টিপে। ঠিক সেই মুহূর্তেই দরজা ঠেলে ঢুকলো তার বাবা। "উঃ মা গো .."বলে একটা আর্তনাদ করে কেমন যেন কুঁজো হয়ে গেলো ওর বাবা। দু'হাতে দুই থলি .. বড়দিনের অনেক বাজার। ওখানেই থলি নামিয়ে বসে পড়লেন। চশমার কাঁচ ঝনঝন করে ভেঙে মাটিতে পড়লো। বিনু ততক্ষণে প্রমাদ গুনে পড়ার টেবিলে গিয়ে চুপ করে বসেছে। বিনুর মা বাথরুম থেকে আর্তনাদ শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এলেন। "কি হলো .. কি হলো" বলে তাড়াতাড়ি এসে দেখেন বিনুর বাবা বেসিনের কাছে এসে চোখে জলের ঝাপটা দিচ্ছেন। মা অসহিষ্ণু হয়ে বলেন "চোখে হলোটা কি .. অমন করছো কেনো? তারপর মাটি থেকে চশমাটা কুড়িয়ে নিয়ে বললেন "চশমা ভাঙলো কি করে? সবিতা, তুই কি কিছু জানিস?" সবিতামাসি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে ফুলঝাড়ু হাতে দাঁড়িয়েই আছে মূর্তির মতো .. বললো "না দিদি আমি কিছু দেখিনি।" কয়েক মুহুর্ত কেটে গেলো। এবার বিনুর বাবার চোখ ধোওয়া বন্ধ হলো। চিৎকার করে বললেন "কোথায় গেলো রাস্কেলটা .. হতভাগা দাঁড়া .. বলে যেই না বিনুর দিকে এগিয়ে গেলেন। ওমনি বিনু "ও মা গো" বলে এসে মা'কে জড়িয়ে ধরলো। মা শশব্যস্ত হয়ে বলে উঠলেন "কি হয়েছে .. কি করেছে বিনু?" "করেছে আমার মাথা আর মুন্ডু .. চশমাটা দেখতে পাচ্ছো না! অল্পের জন্য চোখটা বেঁচে গেলো আমার.." বলে বিনুর দিকে চড় বাগিয়ে এগিয়ে গেলেন। বিনু তখন মায়ের কাছ থেকে পালিয়ে সবিতামাসির পেছনে গিয়ে লুকালো। বাবা বললেন "এদিকে আয় বিনু .. না এলে আজকে তোকে মেরেই ফেলবো .." "একদম মারবে না .. তুমিই তো ওকে বন্দুক কিনে দিয়েছো .. ও তো চায়নি।" বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে মা বলেন। "এই হতভাগা .. বন্দুকটা কি তোকে আমাকে মারবার জন্য দেওয়া হয়েছে?" বেদম রেগে গিয়ে বাবা বললেন। বিনু কাঁদো কাঁদো গলায় বলে "আমি তো টিকটিকিটা কে মারতে যাচ্ছিলাম .. তুমিই তো এসে গেলে.." "ও .. টিকটিকি মারছিলে? নচ্ছার ছেলে .. নিরীহ একটা প্রাণীকে হত্যা করা .. এইজন্য তোকে বন্দুকটা দিয়েছি!" বিনু বলে "তুমি তো দাওনি .. দিয়েছে তো সান্টাক্লস .. বালিশের তলা থেকে পেলাম তো সকালে .. কাল রাত্রে দিয়ে গেছে।" বাবা বললো "ঘোড়ার ডিম দিয়েছে .. বোকা ছেলে। ওটা আমি দিয়েছি .." এবার বিনু সত্যি সত্যিই কেঁদে ফেললো। বন্দুকটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিলো ঘরের এক কোণে। তারপর মায়ের কাছে গিয়ে "তবে কেনো আমাকে বললে সান্টাক্লস দিয়েছে .. কেনো মিথ্যা কথা বললে .. আমি কিচ্ছু নেবো না .. কেনো কাকুর কাছে গিয়ে বললে না - সান্টাক্লসকে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে .. আমাকে লজেন্স দিতে, ছড়ার বই দিতে, চকলেট দিতে .. কেনো বাবা বন্দুক দিলো .. কেনো .. কেনো .. কেনো?" এই বলে বিনু সোফায় বসে বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগলো।
24-12-2021, 03:49 PM
24-12-2021, 04:05 PM
লেখার সঙ্গে তোমার আঁকা ছবিগুলো দারুন significant এবং অবশ্যই সামঞ্জস্য রেখে হয়। লেখার থেকে ছবির ফ্যান হয়ে পড়েছি বেশি।
আজকের গল্পটা খুব ভালো লাগলো। শিশুমন তোমার থেকে ভালো কেউ বোঝে না। by the way এটা কি তোমার ছোটবেলার স্মৃতি?
24-12-2021, 04:05 PM
কি বলবো সেটাই ভাবছি.....
ভালো হয়েছে সেটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না... বিনুর সহজ সরল বিশ্বাস.... এই ধরনের কতো রকমের বিশ্বাস আমরা করতাম ছোটবেলায়। তারপর পরপর এক এক করে সব বিশ্বাস গুলো ছেলেমানুষি হয়ে গেল। থাক ওইসব কথা.... দারুন হয়েছে গল্পটা ❤❤❤
24-12-2021, 04:19 PM
(This post was last modified: 24-12-2021, 04:22 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(24-12-2021, 04:05 PM)Sanjay Sen Wrote: লেখার সঙ্গে তোমার আঁকা ছবিগুলো দারুন significant এবং অবশ্যই সামঞ্জস্য রেখে হয়। লেখার থেকে ছবির ফ্যান হয়ে পড়েছি বেশি। প্রথমেই জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ আমার লেখা এবং অঙ্কনশৈলীকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য। না গো particular এই গল্পটি একদমই আমার ছোটবেলার স্মৃতি নয়। এটা সম্পূর্ণ আমার মস্তিষ্কপ্রসূত। তবে আমার পিতৃদেব এবং মাতৃদেবীর দৌলতে সান্টাক্লসের প্রচুর উপহার পেয়েছি আমার একদম শিশুকাল থেকে ক্লাস ফাইভে পড়া (কারণ ততদিন অন্ধের মতো সান্টাক্লসের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতাম) পর্যন্ত। কিন্তু সেগুলো বিনুর বাবার কিনে দেওয়া বন্দুক বা ঐ জাতীয় ধ্বংসাত্মক কিছু নয়। ঝোলানো মোজায় চকলেট এবং লজেন্স পেয়েছি একদম ছোটবেলায়। তারপর যখন আস্তে আস্তে বড় হলাম - ছবির বই, ছড়ার বই, ছোটদের গল্পের (কমিকস) বই ইত্যাদি পেয়েছি। আমার জীবনে পাওয়া সবকটা নন্টে-ফন্টে, হাঁদা-ভোঁদা, টিনটিন, বাঁটুল দি গ্রেট সমগ্র, ফেলুদা সিরিজ, এবং সবশেষে সুপারহিরোদের ইন্দ্রজাল কমিকস - এই সবকিছু হয় আমার জন্মদিনে না হয় ২৪শে ডিসেম্বর রাতে পাওয়া।
24-12-2021, 04:20 PM
(24-12-2021, 04:05 PM)Bichitravirya Wrote: কি বলবো সেটাই ভাবছি..... শৈশবের সেই অদ্ভুত রকমের বিশ্বাসগুলোই সব থেকে ভালো ছিলো .. বলো! তোমার ভালো লেগেছে .. অনেক ধন্যবাদ
24-12-2021, 04:52 PM
(This post was last modified: 24-12-2021, 04:55 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
খুব সুন্দর গল্প... বিশ্বাস ও বাস্তবের মাঝের তফাৎ মাঝে মাঝে চেপে রাখায় আলাদাই আনন্দ লুকিয়ে.
তবে বিনুবাবুর ওপর আমার রাগ হচ্ছিলো খুব..... ওই বাচ্চাগুলোর মা, তারপরে বাচ্চাগুলোর দিকে তাক করতে যাওয়া, বা বেড়ালের দিকে, টিকটিকি..... অবশ্য এতে পুরোপুরি তাকে দোষ দেওয়াও যায়না... ওই উপহারের মান রক্ষা করছিলো সে..... যদিও সেটা প্রাণ রক্ষা করতে ব্যবহার করা উচিত..... তবু ছোট মানুষের মাথায় ওতো কিছু ঢোকেনা. তবু আমার এসব দেখলে মাথা গরম হয়ে যায়... এটা আমার ছোটবেলা থেকেই... জন্তু জানোয়ারের ওপর এমনি এমনি ইয়ার্কি মারার জন্য ব্যাথা দেওয়া দেওয়া, মেরে মজা পাওয়া দেখলে অসহ্য লাগে........ তবু.. স্বয়ং ফেলুদা পর্যন্ত তার ছোটবেলায় এই ভুল করেছে.. তাই বিনুবাবুকে ক্ষমা করাই যায়
24-12-2021, 05:26 PM
(24-12-2021, 04:52 PM)Baban Wrote: খুব সুন্দর গল্প... বিশ্বাস ও বাস্তবের মাঝের তফাৎ মাঝে মাঝে চেপে রাখায় আলাদাই আনন্দ লুকিয়ে. প্রথমেই জানাই অনেক ধন্যবাদ আসলে সবকিছুর মতো উপহার প্রদান করারও একটা উপযুক্ত সময় বা বয়স থাকে। বন্দুক ব্যবহার করার উপযুক্ত বয়স হওয়ার আগেই বিনুর বাবা তাকে এই ধ্বংসাত্মক উপহারটি প্রদান করেছে। এর ফলে অপাত্রে কোনো কিছু প্রদান করলে যা হয় তাই হয়েছে .. উপহারটির ভুল ব্যবহার হয়েছে। যাতে পাঠকদের রাগ হয় সেজন্যই তো বিনুর দুষ্কর্মগুলি লিখেছি। অপাত্রে উপহার প্রদানের ফল অবশ্য বিনুর পিতৃদেব হাতেনাতে পেয়ে গিয়েছে।
24-12-2021, 09:03 PM
(24-12-2021, 03:40 PM)Bumba_1 Wrote: Particular এই কথাটার মানে কি !... মানে সাহসী করার জন্য বন্দুক দিতে হবে ! আর যুগের কোন কথাটা ভাবার কথা বলছে বিনুর বাবা ? ❤❤❤
24-12-2021, 09:49 PM
(This post was last modified: 24-12-2021, 09:50 PM by Bumba_1. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(24-12-2021, 09:03 PM)Bichitravirya Wrote: Particular এই কথাটার মানে কি !... মানে সাহসী করার জন্য বন্দুক দিতে হবে ! আর যুগের কোন কথাটা ভাবার কথা বলছে বিনুর বাবা ? এখানে বিনুর বাবাকে basically একজন ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার মানুষ হিসেবে দেখিয়েছি বা দেখানোর চেষ্টা করেছি। ভদ্রলোকের ধারণা আগের থেকে সমাজ এখন অনেক কঠিন এবং লড়াকু (এটা যদিও বেশিরভাগ মানুষের প্রাক্তন আর বর্তমান সমাজ সম্পর্কে ধারণা - আগে সবকিছু সোজা ছিলো, এখন সবকিছু কঠিন হয়েছে) রূপ ধারণ করেছে। তাই survival of the fittest হওয়ার জন্য লড়তে হবে .. আর লড়তে গেলে ছোটবেলা থেকেই স্বাবলম্বী এবং সাহসী হতে হবে। তাই সান্টাক্লসের উপহারে লজেন্স, গল্পের বই, ছড়ার বই - এইসব বাদ পড়েছে। ভদ্রলোকের ধারণা এগুলোর সান্নিধ্যে এলে তার ছেলে হয়তো আতুপুতু হয়ে থাকবে চিরকাল .. সেইজন্যই যুগ পরিবর্তনের অজুহাত দিয়ে বন্দুক উপহার।
24-12-2021, 10:22 PM
(24-12-2021, 09:49 PM)Bumba_1 Wrote: এখানে বিনুর বাবাকে basically একজন ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার মানুষ হিসেবে দেখিয়েছি বা দেখানোর চেষ্টা করেছি। বেনুর বাবাকে স্যালুট... হয়তো সত্যি এরকম চিন্তাধারার লোক আছে... না থাকলে বরং অবাক হবো ❤❤❤
24-12-2021, 10:41 PM
(24-12-2021, 10:22 PM)Bichitravirya Wrote: বেনুর বাবাকে স্যালুট... হয়তো সত্যি এরকম চিন্তাধারার লোক আছে... না থাকলে বরং অবাক হবো এইরূপ চিন্তাধারার মানুষ অতীতে ছিলো, বর্তমানে আছে আর ভবিষ্যতেও থাকবে। এইধরনের চিন্তাধারাকে আমি ছোট করছি না বা ব্যঙ্গ করছি না। তবে সব কিছুরই একটা সময় বা বয়স থাকে। যেটা নির্ধারণ করতে অপুর বাবা ভুল করেনি, কিন্তু বিনুর বাবা অবশ্যই ভুল করেছে।
28-12-2021, 11:39 AM
(This post was last modified: 28-12-2021, 11:39 AM by Sanjay Sen. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
28-12-2021, 12:01 PM
28-12-2021, 02:23 PM
(This post was last modified: 28-12-2021, 02:23 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(28-12-2021, 11:39 AM)Sanjay Sen Wrote: আজ্ঞে, গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র একজন ছোট্ট ছেলে হলেও আমার ধারণা গল্পটা শিশুদের জন্য নয়। (28-12-2021, 12:01 PM)Bichitravirya Wrote: কোন আবিষ্কার এর গল্প মনে হচ্ছে... বাচ্চারা এরকম অনেক করে... আমিও মাঝেসাঝে করি, বাচ্চা বলে কথা আজ্ঞে, আমার মনে হয় এটা কোনো আবিষ্কারের গল্প নয়।
28-12-2021, 05:31 PM
(This post was last modified: 06-01-2022, 08:38 PM by Bumba_1. Edited 5 times in total. Edited 5 times in total.)
বিল্টুর কেরামতি
লেখা এবং প্রচ্ছদ :- বুম্বা
বহুদিন আগের কথা। আমাদের ক্যাম্পাসের পিছনে একটি বস্তি ছিলো (আছে হয়তো এখনও)। সেখানে ছিলো সমাজের নিম্নবিত্ত বিভিন্ন শ্রেণীর খেটে খাওয়া মানুষের বাস। সবাই সকালবেলা যে যার কাজে বেরিয়ে যেত .. সন্ধেবেলা অথবা কেউ কেউ রাত্রিবেলা ফিরে এসে গান-বাজনা হই হট্টগোল সহযোগে মিলেমিশে আনন্দ করে দিন কাটাতো। বিল্টু ছিলো ওদের সকলের নয়নের মণি। ওহো, বিল্টুর পরিচয়টাই তো দেওয়া হয়নি। বিল্টু হলো মুচির ছেলে। বয়স তার বেশি নয় .. এই দশ কি এগারো হবে। জুতো মেরামত করতে পারে না, কিন্তু কালি লাগিয়ে বুরুশ করতে ওস্তাদ। সকাল না হতেই কালি আর বুরুশের ছোট্ট ঝোলাটা নিয়ে সে বেরিয়ে গান করতে শুরু করে দেয় .. "একটি টাকা দাও গো বাবু
একটি টাকা দাও -
ময়লা জুতো সয় না পায়ে
পালিশ করে নাও .."
খদ্দের জুটতে দেরি হয় না। সে চটপট জুতোয় কালি লাগায়, বুরুশ করে আর গান গায়। খদ্দের খুশি হয়ে ওর প্রাপ্য একটি টাকার সঙ্গে আরেকটি টাকা বকশিশ দিয়ে যায়। কিন্তু এই শহরে দুষ্টু লোকেরও তো অভাব নেই! এই তো দিন কয়েক আগে, চশমা পরা একটি বাবু ওকে দিয়ে জুতো পালিশ করিয়ে নিয়ে সরে পড়েন, আর ফেরেন না। বিল্টু মনে মনে সেদিন বুঝে উঠতে পারেনি যে ভদ্রলোকেরও কেন এমন মনোবৃত্তি হয়! তাও সামান্য একটা টাকার জন্য। এই ঘটনার দিন কয়েক পরের কথা। সেদিন খদ্দেরের অন্ত নেই .. বিল্টু জুতো পালিশ করে যাচ্ছে .. আর গান গেয়ে চলেছে ওর মিষ্টি মধুর গলায়। একজন বাবু তো ওর গান শুনেই একটি টাকা দিতে যাচ্ছিলেন .. কিন্তু বিল্টু তাকে থামিয়ে বললো "কই .. আপনার জুতো তো পালিশ করিনি বাবু! জুতো পালিশ করিয়ে নিন, তারপর না হয় মনে হলে আরও একটা টাকা বকশিশ দেবেন।" ওর কথায় খুশি হয়ে ভদ্রলোক জুতো পালিশ করিয়ে নেন, আর যাওয়ার সময় দুটো টাকা বকশিস্ দিয়ে যান। বিল্টু ভাবে এমন লোকও তবে আছে .. বিল্টুর খদ্দের প্রায় কমে এসেছে .. এমন সময় সে দেখতে পেলো, টাকা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়া সেই বাবুটি আসছেন ওদিক থেকে। দেখামাত্রই বিল্টুর মাথায় এক ফন্দি খেলে গেলো। সে গলা উঁচু করে বললো "বাবু, একবারটি পালিশ করিয়ে নিন .. দেখবেন জুতো কেমন ঝকঝক করছে .. টাকা আজ না থাকে আরেকদিন দেবেন .. আসুন।" বাবুটি ভাবলেন - মন্দ কি! আগে পালিশটা তো করিয়ে নিই তারপর না হয় টাকা .. একবার সরে পড়লে, কে আর ধরে! ছোট্ট বাক্সটার উপর বাবু নিজের ডান পা'টা রাখেন .. বিল্টুও শুরু করে দেয় পালিশ করা। দক্ষিণ দিকের পর্ব সমাপ্ত হলে পরে বাবু তার জুতোসুদ্ধ বাঁ পা'টা বাক্সের উপরে তুলে ধরেন .. "নে, এবার এটা পালিশ কর" বিল্টুর দিকে চেয়ে বলেন বাবু। ঘাড় নেড়ে বিল্টু জবাব দেয় "না বাবু .. একটাই থাক। আগে সেদিনকার টাকা'টা ফেলুন.. তারপর না হয় ওটা হবে।" বিল্টুর কথা শুনে বাবু তো অবাক - ছোঁড়া'টা বলে কি .. আচ্ছা চালাক তো! আরেক পাটি জুতো পালিশ না করালে যে ব্যাপারটা খুব বিচ্ছিরি দেখাবে তা বলাই বাহুল্য। মহা মুস্কিলে পড়ে গেলো .. বেশি দেরি করলে ছোঁড়া'টা হয়তো লোক জড়ো করতে পারে .. কাজ নেই বাপু অত হাঙ্গামা করে .. তার চেয়ে আগের দিনের বকেয়া মিটিয়ে দু'টো টাকা দিয়ে দেওয়াই ভালো - এই ভেবে বাবুটি তখন বিল্টুকে দু'টো টাকা দিয়ে বললেন "নে বাপু .. খুব আক্কেল হয়েছে, তাড়াতাড়ি এখন এটা পালিশ করে দে।" পয়সা পেয়ে বিল্টু তখন বাকি জুতোটা পালিশ করে দেয়। আর যাওয়ার সময় বাবুর দিকে চেয়ে বলে ওঠে "মনে রাখবেন বাবু, কাউকে ঠকালে নিজেকেই শেষটায় ঠকতে হয়।" ছোট্ট ছেলে বিল্টুর মুখে এইরূপ কথা শুনে বাবুটি তখন পালাবার পথ পায় না। |
« Next Oldest | Next Newest »
|