18-12-2021, 11:22 AM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
|
18-12-2021, 11:22 AM
18-12-2021, 03:13 PM
tatari mone hoche akash r kopale ek duto thappad lekha ache suchi r hater
18-12-2021, 07:04 PM
18-12-2021, 07:06 PM
dekhi......but seriously besh ekta moner moto ending r scene ready korecho
18-12-2021, 08:34 PM
(This post was last modified: 18-12-2021, 08:34 PM by Bichitro. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
18-12-2021, 08:35 PM
let's wait
18-12-2021, 09:07 PM
ami nijer moto kore besh golpo sajachilam puro week dhore....ebar tumi ja reply dile.....no need for any spoiler alert......abar new kore bhabte hoche amak
19-12-2021, 10:14 AM
(18-12-2021, 09:07 PM)raja05 Wrote: ami nijer moto kore besh golpo sajachilam puro week dhore....ebar tumi ja reply dile.....no need for any spoiler alert......abar new kore bhabte hoche amak আমি এখনই কিছু বলতে পারছি না... হয়তো আপনার সাজানোটা সত্য হয়ে গেল আগামীকাল সকাল
নটা বেজে ত্রিশ মিনিটে
মিষ্টি মূহুর্তের পরবর্তী আপডেট
আসবে
❤❤❤
19-12-2021, 12:11 PM
19-12-2021, 12:23 PM
19-12-2021, 03:01 PM
অপেক্ষায়.....
19-12-2021, 05:30 PM
(19-12-2021, 10:14 AM)Bichitravirya Wrote: আমি এখনই কিছু বলতে পারছি না... হয়তো আপনার সাজানোটা সত্য হয়ে গেল আছি জানার অপেক্ষায় যে আকাশের কি পরবর্তী পদক্ষেপ, এখন আকাশ যদি সামনে না অগ্রসর হয় তাহলে হারিয়ে যেতে পারে তার চোখের তারা
19-12-2021, 07:30 PM
(19-12-2021, 12:11 PM)ddey333 Wrote: (19-12-2021, 12:23 PM)Mark@124 Wrote: Eitoooo (19-12-2021, 03:01 PM)Biddut Roy Wrote: অপেক্ষায়..... রাত পোহালেই দিয়ে দেবো ... অবশ্য আমার ঘুম একটু দেরিতে ভাঙে (19-12-2021, 05:30 PM)a-man Wrote: আছি জানার অপেক্ষায় যে আকাশের কি পরবর্তী পদক্ষেপ, এখন আকাশ যদি সামনে না অগ্রসর হয় তাহলে হারিয়ে যেতে পারে তার চোখের তারা আপনার কাছে একটা প্রশ্ন --- আমি এতগুলো চরিত্র সৃষ্টি করলাম কেন? ❤❤❤
19-12-2021, 07:39 PM
19-12-2021, 07:47 PM
20-12-2021, 09:30 AM
Update 5
খাওয়া শেষ করে , এঁটো হাত ধুয়ে একটা তোয়ালেতে হাত মুছছিলেন আকাশের বাবা। আকাশের মায়ের “ বলছি „ কথাতে তিনি ঘুরে সহধর্মিণীর দিকে তাকালেন। ঠিক সেই সময় ডোরবেল বেজে উঠতে তিনি খুব অবাক হলেন , “ এত রাতে কে এলো ! দেখো তো । „ দরজার ওই পাড়ে দাঁড়িয়ে সুচির মা জিজ্ঞাসা করলেন , “ এত রাতে কি কথা বলবে তুমি ? „ সুচির বাবা গম্ভীর স্বরে বললেন , “ সুচি আর আকাশের বিয়ের কথা বলবো । „ সুচির মাকে যদি হঠাৎ আলাদিনের জিন এসে তিনটে ইচ্ছার কথা জিজ্ঞাসা করতো তাহলেও মনে হয় তিনি এতোটা অবাক হতেন না যতোটা আকাশ আর সুচির বিয়ের কথা শুনে হলেন। কথাটা শুনে এতক্ষণ চোখ দিয়ে নদীর জোয়ারের মতো বেরিয়ে আসা জলে হঠাৎ ভাটা পড়লো। তিনি নিজেকে সামলে যে প্রশ্নটা করা দরকার সেটাই করলেন , “ যদি রাজি না হয় ? „ নিজের স্বরে গম্ভীর ভাবটা বজায় রেখেই সুচির বাবা বললেন , “ তাহলে হাতে পায়ে ধরবো.... সুচির বাবার কথা শেষ হতেই আকাশের মা দরজা খুলে দিলেন । এতো রাতে সুচির মা বাবাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি খুব অবাক হলেন , “ তোমরা ! „ সুচির বাবা বললেন “ আমি.... আকাশের মা সুচির বাবার কথা শেষ হওয়ার আগেই , “ ভেতরে এসো। „ বলে দরজা থেকে সরে গেলেন । সুচির মা বাবা ঘরে ঢুকে এলে আকাশের বাবা তোয়ালেটা আবার যথাস্থানে রেখে জিজ্ঞাসা করলেন , “ কিছু বলবে ? „ সুচির বাবা খুব জরুরি কথা বলতে এসছেন এমন ভাব করে বললেন , “ কিছু কথা ছিল । „ এই রাত দুপুরে কি এমন জরুরি কথা সেটা ভেবেই আকাশের বাবা গম্ভীর হয়ে গেলেন। সোফা দেখিয়ে বললেন , “ বসো । „ আকাশ অন্ধকার ঘরে খাটে শুয়ে অপেক্ষা করছিল কখন তার মা বাবাকে সুচি আর তার সম্পর্কে বলবে। হঠাৎ ডোরবেল বেজে ওঠায় কৌতুহলবশত খাট থেকে উঠে এসে দরজা হাল্কা ফাক করে সে দেখলো যে সুচির মা বাবা এসছে। এখন কেন জেঠু এলো সেটা জানার জন্য সে অন্ধকার ঘরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। সুচির মা বাবা দুজনেই একটা বড়ো সোফা দখল করে পাশাপাশি বসলেন। আকাশের মা পাশেই দাঁড়িয়ে রইলেন কথোপকথন শুনবেন বলে। আকাশের বাবা একটা সোফা দখল করে বসে জিজ্ঞাসা করলেন , “ বলো কি বলবে । „ কিছুক্ষণ ইতস্তত করে একটা বড়ো প্রশ্বাস নিয়ে সুচির বাবা বললেন , “ আমি আমার ছোট মেয়ের ব্যাপারে কথা বলতে এসছি । „ সুচি তারই কোম্পানিতে কাজ করে। সুচির বাবার কথা শুনে আকাশের বাবার মনে হলো হয়তো কোন এমপ্লয়ি সুচির সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে তাই সুচির বাবা অভিযোগ করতে এসছে । তাই একটু ঘাবড়ে গিয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন , “ কোন ব্যাপারে ? মানে অফিসে যদি কেউ ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করে তাহলে বলতে পারো । আমি তাকে পুলিশে দেবো। „ সুচির বাবা বুঝলেন যে আকাশের বাবা ভুল বুঝছেন। তাই তিনি তাকে আশ্বস্ত করার জন্য বললেন , “ না , না , তেমন কিছু না । „ “ তাহলে ? „ বেশি ভনিতা না করেই আসল কথাটা বলে ফেললেন সুচির বাবা , “ আকাশ আর সুচির ব্যপারে কথা বলছি। „ এতোটা শুনেই আকাশের বাবার ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো । এটা যে একদিন হবে সেটা তিনি অষ্টমীর রাতেই হাল্কা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। নিজের দূরদর্শিতার কথা ভেবে এখন নিজের উপর গর্ব হচ্ছে। আর তাই মুখে ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে উঠলো। সুচির বাবা এটাকে ব্যাঙ্গের হাসি ভেবে নিয়ে মুষড়ে পড়লেন। সুচির বাবা এখানে আসার আগে ভেবেছিলেন যে হয়তো তিনি আকাশের বাবাকে বোঝাতে পারবেন। কিন্তু আকাশের বাবার হাসি সেটাকে মিথ্যা প্রমাণ করছে। তাই তার গলায় অনুরোধের সুর দেখা দিল , “ দেখো , এক মূহুর্তের জন্য আমরা কি নিজেদের অতীতের সবকিছু ভুলে আমাদের সন্তানদের কষ্ট ভাবতে পারি না..... সুচির বাবা মিইয়ে যাওয়া গলা দেখে আকাশের বাবার খুব হাসি পেল। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলেন। কিন্তু চোখে মুখে আনন্দ হাসির উচ্ছাস আরও স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠলো। এটা দেখে সুচির বাবা আরও মিইয়ে গেলেন । যে আত্মবিশ্বাসের সাথে তিনি এখানে এসে কথা বলতে শুরু করেছিলেন তা ক্রমশ হ্রাস পেতে লাগলো , “ চার বছর আগে অষ্টমীর রাতে কি হয়েছিল সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু তুমি এটা জানো না যে আমার মেয়ে কতোটা কষ্টে আছে। আমি দেখতে পারছি না ওর কষ্ট ..... সুচির বাবার গলার স্বর শুনে আকাশের বাবার মনে হলো এবার শুধু পায়ে ধরাটাই বাকি । কথাটা মনে আসতেই ফিক করে হেসে ফেললেন তিনি। এই হাসি দেখে সুচির মা মুখে আঁচল চাপা দিয়ে কাঁদতে শুরু করলেন। এতক্ষণ আকাশের মা দুজনেরই কথা শুনছিলেন আর সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখছিলেন। স্বামীর এমন ব্যাঙ্গ তার চোখ এড়ায় নি। এখন আকাশের বাবার হাসি দেখে স্নেহা দেবীর মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছা হলো। মনে হলো যেন মাটি ফেটে যাক আর এই ফ্লাটটা তার ভিতরে প্রবেশ করুক। এই হাসি দেখে সত্যি সত্যি সুচির বাবা হাত জোড় করলেন , “ প্লিজ তোমার পায়ে পড়ি। আমার মেয়েটা খুব কষ্ট পাচ্ছে। আমি তাকাতে পারছি না ওর মুখের দিকে। ওরা একসাথে বড়ো হয়েছে । হঠাৎ করে আলাদা হয়ে যাওয়ায় আমার মেয়ে খুব কষ্ট পেয়েছে। প্লিজ তুমি ভেবে দেখো ...... এতোটা শুনে আকাশের বাবা আর নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলেন না। হো হো হো করে অট্টহাসি হেসে ঘর কাঁপিয়ে দিলেন। হাসতে হাসতে সোফা থেকে উঠে ঘরে পায়চারি করতে লাগলেন। এই অট্টহাস্য শুনে আকাশের মার মাথা কুটে মরতে ইচ্ছা হচ্ছিল। একজন তার মেয়ের কষ্ট দেখতে না পেরে এখানে এসে হাত জোড় করে কিছু অনুরোধ করছে আর তারই স্বামী সেই অনুরোধ দেখে অট্টহাস্য করছে। এরকম অপমান আকাশের মা কখনো হয়েছেন কি না সেটা জানা নেই। সুচির মা আকাশের বাবার অট্টহাস্য দেখে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলেন। চোখের জল বাঁধ মানছে না তার । আকাশ ঘরের মধ্যে থেকেই জেঠুর কথা শুনে আনন্দিত হচ্ছিল। একটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছিল। এখন সেই আলো নিভে গিয়ে সে অন্ধকার দেখতে শুরু করলো। সুচির বাবা ভাবলেন আর কিছু বলার নেই। এতো অপমানে রাতে তার ঘুম হবে না। তাই নিরুপায় হয়ে অপমানিত মন নিয়ে সোফা থেকে উঠে ঘরের বাইরে চলে যেতে লাগলেন। সুচির বাবা উঠে গেলে সুচির মাও স্বামীর পিছন নিলেন। আকাশের মা সুচির বাবার মুখ দেখে থাকতে না পেরে আকাশের বাবাকে বললেন , “ তুমি কি পাগল হয়ে গেলে ? „ সুচির বাবা দরজা দিয়ে প্রায় বেরিয়ে গেছিলেন তখন হঠাৎ আকাশের বাবার অট্টহাস্য বন্ধ হয়ে গেল । গুরুগম্ভীর আওয়াজ হলো ঘরের মধ্যে , “ দাঁড়া । „ সুচির বাবা চৌকাঠের বাইরে পা ফেলতে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ আকাশের বাবার দাঁড়া বলাতে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। ওদিকে আকাশের বাবা বলে চললেন , “ আজ যখন এসছিস তখন সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যা । „ আকাশের মা তার স্বামীর কথা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন। সুচির বাবার সাথে তুই তোকারি করে কথা বলতে তিনি কখনো শোনেননি। আজ হঠাৎ এইসব শুনে তিনি বুঝতে পারলেন না যে কি হচ্ছে ? এদিকে আকাশ আর সুচির মায়েরও একই অবস্থা। তারাও কিছু ভেবে পাচ্ছে না। সুচির বাবা এবার ঘুরে দাঁড়িয়ে বজ্রকঠিন মুখ করে জিজ্ঞাসু মনে দাঁড়িয়ে রইলেন। আকাশের বাবা সুচির বাবার দিকে দুই পা এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন , “ তুই কি বললি ? তোর মেয়ে কষ্ট পাচ্ছে ! আর আমার ছেলের কষ্টের কথাটা তো একবারও বললি না ! „ সুচির বাবা চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলেন। আকাশের বাবা কোন উত্তর না পেয়ে বললেন , “ চুপ করে আছিস কেন ? বল। উত্তর দে। „ তারপর সুর করে বললেন , “ ওওও , বলবি কি করে ? তুই তো কখনো অপরের কষ্ট দেখতেই পাস না। সবসময় নিজের কষ্টটা বুঝিস। „ আকাশের বাবা আরো দু পা এগিয়ে গিয়ে সুচির বাবার বুকে ডান হাতের তর্জনী দিয়ে বললেন , “ তুই যদি অন্যের কষ্ট বুঝতিস তাহলে মাকে শেষ জীবনে চোখে জল নিয়ে মরতে হতো না । „ এবার আর সুচির বাবা চুপ থাকতে পারলেন না , “ ছোটমা যদি কষ্ট পেয়ে থাকে তাহলে তার কারন শুধুমাত্র তুই আর তোর অহংকারী বাবা । „ “ হ্যাঁ আমি মানছি বাবার অহংকারের জন্য ঘরে অশান্তি হতো। মা অনেক কান্নাকাটি করতো। কিন্তু তুই মাকে যতোটা কাঁদিয়েছিস ততোটা আর কেউ কাঁদায়নি ! „ “ আমি ছোটমাকে কাঁদিয়েছি ? মুখ সামলে কথা বল শুভো । „ “ ওওও , এখন সত্যিটা শুনে গায়ে লাগছে খুব। তাইতো ! আমি দেখেছি মাকে তোর জন্য চোখের জল ফেলতে ....... এই দুজনের এইভাবে কথা বলা শুনে আকাশের মা বুঝতে পারলেন যে কি হচ্ছে। তিনি বুঝতে পেরে সুচির মায়ের পাশে গিয়ে ইশারায় তাকে চুপ থাকতে বললেন এবং যা হচ্ছে তা হোক , এরকম একটা ইশারা করলেন। এদিকে সুচির বাবা জিজ্ঞাসা করলেন , “ আমার জন্য চোখের জল ফেলতো ? „ “ তোর মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় মা চোখের জল ফেলতো। শেষ জীবনে তোর মুখ থেকে একবার ‘ ছোটমা , বলে ডাক শোনার জন্য চোখের জল ফেলতো । তোর.... আকাশের বাবার কথার বা বলা উচিত একের পর এক অভিযোগের মাঝখানে সুচির বাবা বলে উঠলেন , “ এসব হয়েছে তোর অহংকারী বাবার জন্য। তোর বাবা চাইতো না আমি তোদের সাথে । তুই কিছুই জানিস না তোর বাবা আমার সাথে কেমন ব্যবহার করে ছিল । „ আকাশের বাবা কিছু বললেন না। কিন্তু তার মুখ দেখে সুচির বাবা বুঝতে পারলেন যে সে জানতে চায় । তাই সুচির বাবা বললেন , “ আয় তোর বাবার কীর্তি শোন । „ আকাশের ঠাকুর্দার কীর্তি শোনানোর জন্য সুচির বাবার উৎসাহ তার চোখে মুখে ফুটে উঠলো। তিনি যে এখানে সুচির আর আকাশের সম্মন্ধে কথা বলতে এসছিলেন সেটাই তিনি ভুলে গেলেন। তিনি সোফার ঠিক আগের জায়গায় গিয়ে বসে আবার আকাশের বাবাকে ডাকলেন , “ আয় , বোস । শুনে যা সব। শুনবি বলেই তো আমাকে আটকালি। „ আকাশের বাবা কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। সুচির বাবার কথায় তিনি আগের জায়গায় গিয়ে বসলেন । এদিকে সুচির মা আর আকাশের মাও সোফার এসে বসে পড়লেন। আকাশের বাবা সোফায় বসলে সুচির বাবা বলতে শুরু করলেন --- ......... তখন সুচির বাবার বয়স পঁচিশ। সুচি - আকাশ কেউই জন্মায়নি কারন সমরেশ তালুকদার আর শুভাশীষ মিত্রেই বিয়েই হয়নি। সুচির ঠাকুর্দা বিশ্বজিৎ তালুকদার প্রিন্টিং প্রেসে এক দুর্ঘটনায় কোমেরে আঘাত পেয়ে বিছানা নিয়েছেন। বিছানা থেকে ওঠার ক্ষমতা তার নেই। একমাত্র ইনকাম সোর্স বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সুচির বাবা অর্থাৎ সমরেশ তালুকদার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরি খুঁজতে শুরু করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সদ্য ডান দিক থেকে বাম দিকে গেছে। রোজ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এদিক ওদিক ঘুরে রাতে বাড়ি ফেরেন সুচির বাবা। সারাদিন কিছু খেয়েছি কি খায়নি তার খোঁজ নেওয়ার একমাত্র লোক ছিলেন আকাশের ঠাকুমা। যখনই আকাশের ঠাকুমা অর্থাৎ সুনীতা দেবী সুচির বাবাকে জিজ্ঞাসা করতেন সারাদিন কিছু খেয়েছে কি না তখনই সুচির বাবা এড়িয়ে গিয়ে বলতেন , “ হ্যাঁ খেয়েছি হোটেলে গিয়ে। „ কিন্তু সুনীতা দেবী বুঝতে পারতেন যে সে মিথ্যা কথা বলছে। কারন হোটেলে গিয়ে খাবে এরকম টাকাই সুচির বাবার ছিল না । আর এটা তিনি খুব ভালো করে জানতেন। নিজের পালিত বড়ো ছেলের কষ্ট দেখতে পেলেন না তিনি । তাই এক রবিবার সকালে আকাশের ঠাকুমা অর্থাৎ সুনীতা দেবী তার স্বামী দেবাশীষ মিত্র কে বললেন , “ আমাদের অফিসে কোন কাজ থাকলে ওকে দাও না। সারা দিন এদিক ওদিক ঘুরে শুকিয়ে যাচ্ছে ছেলেটা। „ আকাশের ঠাকুর্দা বিরক্ত হয়ে বললেন , “ আমার অফিসে ওকে চাকরি দেবো কেন ? „ স্বামীর বিরক্তি গায়ে মেখে রাগী স্বরে সুনীতা দেবী বললেন , “ কারন ও আমার বড়ো ছেলে । তাই। „ “ হুউ , বড়ো ছেলে ! „ বলে একটা ব্যাঙ্গাত্মক হাসি হেসে আকাশের ঠাকুর্দা অর্থাৎ দেবাশীষ মিত্র ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। সুনীতা দেবী যে তার নিজের সন্তান শুভাশীষ আর পালিত পুত্র সমরেশের মধ্যে কোন পার্থক্য রাখেন না এটা দেবাশীষ মিত্র কখনোই মেনে নিতে পারেন নি। তার কাছে রক্তের সম্পর্ক সবসময় আগে প্রাধান্য পাবে। পরের ছেলেকে মানুষ করছো করো কিন্তু নিজের ছেলের জায়গায় বসাবে কেন ? তাকে সমান গুরুত্ব দেবে কেন ? দেবাশীষ মিত্র যে মনে মনে এইধরনের কথা পোষণ করেন এটা সুচির বাবা জানেন না। তিনি ঘরের মেঝেতে খবরের কাগজ বিছিয়ে তাতে বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞাপন খুঁজছিলেন । বিজ্ঞাপন পেলে সেগুলো লাল কালিতে গোল করে দাগ কেটে রাখছিলেন। আর বিজ্ঞাপনে দেওয়া ফোন নাম্বার একটা কাগজে টুকে রাখছিলেন। কয়েকটা নাম্বার লিখে মোড়ের মাথায় টেলিফোনের দোকান গিয়ে সেখান থেকে ফোন করবেন। এটাই তার আজকের প্ল্যান। ঠিক সেই সময় আকাশের ঠাকুর্দা ঘরে ঢুকে এদিক ওদিক খবরের কাগজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেখে বিরক্ত হয়ে বললেন , “ কি করে রেখেছো ঘরটায় ! এখানে মানুষ থাকে নাকি ! „ সুচির বাবা অপ্রস্তুত হয়ে উঠে একটা কাঠের চেয়ার এনে বললেন , “ বসুন । ওই চাকরি খুঁজছিলাম । তাই.... কাঠের চেয়ারে বসতে বসতে আকাশের ঠাকুর্দা বললেন , “ চাকরি , হ্যাঁ ওই নিয়েই তোমার সাথে কথা বলবো বলে এসছি। তোমার ছোটমা তোমাকে আমার কোম্পানিতে একটা কাজ পাইয়ে দিতে বললো। করবে নাকি ? „ প্রায় দেড় দুই সপ্তাহ ধরে খুঁজতে থাকা চাকরি এখন নিজে হেটে এসছে দোড়গোড়ায় । সুচির বাবা খুশি হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন , “ কি কাজ কাকা ? „ সুচির বাবা সুনীতা দেবীকে ‘ মা , বলে ডাকলেও যেহেতু নিজের বাবা বেঁচে আছে তাই দেবাশীষ বাবুকে ‘ কাকা , বলেই ডাকতেন । “ তোমাকে তো হুট করে হিসাবরক্ষকের কাজ দিতে পারি না। তুমি বরং লড়িতে কতো মাল উঠছে সেটার হিসাব রাখার কাজটা করো । পরে যাতে মালের পরিমাণ নিয়ে গোলযোগ না হয় সেটা দেখবে তুমি। „ সুচির বাবা হাতে চাঁদ পেলেন । কাজটা মোটেই ছোট কাজ নয়। মাইনেও অন্তত ভালোই পাওয়া যাবে তাই তিনি বললেন , “ আমি রাজি । „ আকাশের ঠাকুর্দা একটা মিচকি হাসি হেসে বললেন , “ নেহাত তোমার মা তোমাকে আমাদের হাতে দিয়ে গেছেন । তাই এতো আদিখ্যেতা ..... কথাটা শুনে সুচির বাবার কেমন একটা লাগলো। মনে হলো সামনের চেয়ারে বসে থাকা লোকটা নিজের দম্ভ দেখিয়ে তাকে দয়া করছে। এমনিতেও বাবার এক্সিডেন্ট এর পরে এক টাকাও খরচা করতে রাজি হননি এই দাম্ভিক অহংকারী লোকটা। তাই সুচির বাবা বললেন , “ আপনি আমাকে দয়া করছেন ! „ “ দয়া। হ্যাঁ , তা একরকম বলতে পার। সার্টিফিকেট দেখলাম না , ইন্টারভিউ নিলাম না। হুট করে একটা কাজে ঢুকিয়ে দিলাম , তা দয়া তো বটেই ! „ এবার আর সুচির বাবা থাকতে পারলেন না। এমনিতেও বাবার চিকিৎসায় কোন খরচা না করায় লোকটার উপর রেগে আছেন সুচির বাবা । তাই এখন এই দয়াতে খুব রেগে গেলেন তিনি , “ সরি কাকা। আমায় ক্ষমা করবেন । আমি এই কাজ করতে পারবো না। „ মুখের উপর না শুনবেন এটা তিনি আশা করেন নি। তাই কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে বসে থেকে বললেন , “ এই কাজের জন্য বেকার ছেলেরা কাতারে কাতারে আমার অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে । আর তুমি এই কাজ ফিরিয়ে দিচ্ছো ! „ সুচির বাবা গলার স্বর স্বাভাবিক রেখে বললেন , “ ওই কাতারে কাতারে ছেলেদের পিছনে ফেলে , যোগাযোগের মাধ্যমে আমি কাজ করতে পারবো না । আমার ক্ষমা করবেন কাকা । „ এই কথাটা শোনা মাত্রই আকাশের ঠাকুর্দা দেবাশীষ মিত্র রেগে আগুন হয়ে উঠলেন , “ আমার কোম্পানিতে কাজ করতে তোমার এতোই যখন অসুবিধা তখন আমার পরিবারের সাথেও আর মিশো না । „ রেগে অপমানিত হয়ে আকাশের ঠাকুর্দা যখন ঘরে ঢুকলেন তখন সুনীতা দেবী জিজ্ঞাসা করলেন , “ কি বললো ও ? „ গলার সুর উপরে চড়িয়ে আকাশের ঠাকুর্দা বললেন , “ মুখের উপর না বলে দিল তোমার আদরের বড়ো ছেলে । „ সুনীতা দেবী স্বামীর ব্যবহার জানেন। তিনি নিশ্চয়ই উল্টোপাল্টা বলছেন , না হলে সমু এরকম করবে না । তাই তিনিও রেগে গিয়ে সুর উপরে তুলে বললেন , “ তুমিই নিশ্চয়ই কিছু বলেছো ওকে । „ কথাটা বলে ঘর থেকে বেড়িয়ে গিয়ে একেবারে বড়ো ছেলের কাছে পৌঁছে গেলেন তিনি । সুচির বাবা আবার খবরের কাগজ নিয়ে বসে নিজের কাজ করছিলেন। মা ঘরে ঢুকতেই তিনি উঠে দাড়াতেই সুনীতা দেবী জিজ্ঞাসা করলেন , “ তোর কাকা তোকে কি বলেছে ? „ সব বললে হয়তো ঘরে অশান্তি হবে , তাই সুচির বাবা চেপে গিয়ে বললেন , “ তেমন কিছু না মা। ওই যোগ্য ছেলেদের পিছনে ফেলে আমি চাকরি নেবো না । তাই বলেছি। „ সুনীতা দেবী রেগে গিয়ে বললেন , “ তুই কি বলেছিস সেটা আমি জিজ্ঞাসা করিনি। তোর কাকা কি বলেছে সেটা আমি জিজ্ঞাসা করেছি । „ মাথা নিচু করে সুচির বাবা বললেন “ কিছু বলে নি মা । „ আকাশের ঠাকুমা বুঝতে পারলেন যে সুচির বাবা আর কিছু বলবেন না। শুভোর তখন দেড় কি দুই বছর বয়স আর সমুর প্রায় পাঁচ বছর। তখনই এই ছেলেটার মা ড্যাং ড্যাং করে স্বর্গে চলে গেল। আর যাওয়ার আগে সুনীতা দেবীকে দায়িত্ব দিয়ে গেল। তখন থেকেই দুই ছেলেকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন তিনি । তাই তিনি ভালো করেই জানেন যে এই ছেলে একবার যদি না বলার সিদ্ধান্ত নেয় তখন আর বলবেই না। তাই তিনি রেগে গিয়ে ঘরে চলে এলেন। এতোদূর বলে সুচির বাবা থামলেন। তারপর আবার সুচির বাবা বললেন , “ তুই যখন আমার ছোট মেয়েকে চাকরি দিবি বলেছিলি তখন আমি ভেবেছিলাম তুইও তোর বাবার মতো অহংকারী হয়ে আমাদের দয়া দেখাচ্ছিস। কিন্তু তুই তখন সুচিকে ইন্টারভিউ দিতে বলেছিলি তাই আমি সুচিকে তোর ওখানে ইন্টারভিউ দিতে বলি । না হলে পাঠাতাম না। „ আকাশের বাবা সব শুনে গম্ভীর হয়ে বললেন , “ বাবা যে তোর সাথে এরকম আচরণ করেছিল সেটা তুই মাকে বললি না কেন ? „ সুচির বাবা বিরক্ত হয়ে বললেন , “ কি বলবো ? বলার পর কি হতো ? আমি ছোটমার জীবনের অশান্তির কারন হতাম । „ “ আর কথাটা না বলে যে তুই মাকে কাঁদিয়েছিস তার বেলা ! কথা বলে সব সমস্যার সমাধান করা যায় । এটা তুই-ই আমাকে ছোটবেলায় বলতিস । আর যখন নিজের জীবনে এটা প্রয়োগ করার সময় এলো তখন নিজেই পিছিয়ে গেলি। মানছি বাবার ভুল ছিল। রাগের বশে উল্টোপাল্টা কিছু বলে বসেছিল । কিন্তু তুই সুস্থ মস্তিষ্কে বারবার মাকে কাঁদিয়েছিস। „ রাগে ফেটে পড়লেন সুচির বাবা , “ বারবার আমার উপর দোষ দিস না শুভো । তোদের মতো অহংকারী বাবা-ছেলে যে বাড়িতে থাকবে সেই বাড়ির মেয়েদের কপালে চোখের জল লেখা থাকবেই । „ এতক্ষন আকাশের ঠাকর্দার কথা হচ্ছিল। এখন আকাশের বাবার উপরেও দোষ পড়াতে তিনি বিস্মিত হয়েছেন সেটা তার কোঁচকানো ভুরু দেখে বোঝা গেল , “ আমি ! আমার অহংকারের কি দেখলি তুই ? „ সুচির বাবা ভাবলেন যে আকাশের বাবা সবকিছু অস্বীকার করছে। তাই বিরক্ত এবং রেগে গিয়ে বললেন , “ কেন ! মনে নেই নতুন গাড়ি কেনার পর তুই আমার সাথে কেমন আচরণ করেছিলি ? „ আকাশের বাবা সত্যি বুঝতে পারছেন না যে সুচির বাবা কোন ঘটনার কথা বলছেন , “ কোন আচরণের কথা বলছিস ? „ সুচির বাবা আবার অতীতের কথা বলতে শুরু করলেন..... ........ সবে দুই সপ্তাহ হয়েছে সুচির বাবা অফিসের কেরানীর চাকরিটা পেয়েছেন । রোজ সকালে আধপেটা খেয়ে , স্নান করে , বাবাকে খাইয়ে অফিস চলে যান সুচির বাবা। বাড়িতে বাবাকে একা ফেলে যেতে ইচ্ছা করে না তার , তাই অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন । তেমনই একদিন বিকালে অফিস থেকে ফিরে বিল্ডিংয়ে ঢুকতে গিয়ে পিছন থেকে তিনি গাড়ির হর্নের আওয়াজ শুনতে পেলেন। পিছন ঘুরে দেখলেন একটা নতুন ফোর্ড কোম্পানির কালো গাড়ি। তার থেকে এলেন শুভাশীষ মিত্র । সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে বাচ্চাকাচ্চারা ছেকে ধরলো। সুচির বাবার তখন মাথাতে একটাই কথা ঘুরছে , ‘ আমার বাবার চিকিৎসা না করিয়ে কাকা গাড়ি কিনলো ! , এইসব কথা যখন সুচির বাবার মাথাতে ঘুরছে তখনই আকাশের বাবা গাড়ি থেকে নেমে সুচির বাবার সামনে এসে চোখের সানগ্লাসটা নাকের ডগায় নামিয়ে , “ দেখলি গাড়িটা ! „বলে উপরে নিজেদের ফ্ল্যাটে চলে গেলেন । এতোটা বলার পরেই সুচির বাবা আকাশের বাবাকে প্রশ্ন করলকরলেন , “এটা বলিস নি বল ? „ আকাশের বাবা চোখ মুখ কুঁচকে চরম বিরক্তি ফুটিয়ে বললেন , “ আরে আমি ওটা ইয়ার্কি মেরে বলেছিলাম। আমি তোর সাথে কতো ইয়ার্কি মারতাম ছোটবেলায় । হঠাৎ ওটাই গায়ে মাখলি কেন ? „ তখন পরিস্থিতি এমনই ছিল যে সুচির বাবা ওই চশমা নাকে নামিয়ে বলা কথাটা অহংকারের স্বরূপ হিসাবে ভাবতে বাধ্য ছিলেন। কিন্তু তিনি এখন বুঝতে পারছেন যে ওটা নিজের ভুল ছিল। কিন্তু তিনি এখন স্বীকার করতে রাজি নন তাই বললেন , “ তাহলে তুই আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলি কেন ? „ এবার রেগে গিয়ে আকাশের বাবা ঝাঁঝিয়ে উঠলেন , “ কারন তুই শালা মায়ের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা ধার চেয়ে মাকে কাঁদিয়েছিল তাই। „ এতক্ষন চুপচাপ এই দুজনের কথা শুনতে শুনতে হঠাৎ স্নেহা দেবীর মুখ দিয়ে অজান্তে বেরিয়ে এলো , “ দশ হাজার টাকা ! „ “ হ্যাঁ । দশ হাজার টাকা। তুমি তো কিছুই জানো না। বলছি শোন তাহলে এ কি করেছিল ! „ এখন যেন দুজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে। সুচির বাবা , আকাশের ঠাকুর্দা আর আকাশের বাবার কথা বলে বাজিমাত করতে চেয়েছেন। নিজের সব দোষ অস্বীকার করতে চেয়েছেন। তাই এখন আকাশের বাবা সুচির বাবার অতীতের কথা বলে বাজিমাত করতে চান। এরকমই ভাব করে তিনি বলতে শুরু করলেন । অতীতের কথা বলা শুরু করার আগেই আকাশের বাবা বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলেন। কারন মায়ের চোখের জলের কথা বলতে গিয়ে তিনি চোখের সামনে দেখতে পেলেন যে মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুচছে । কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে তিনি বলতে শুরু করলেন....
20-12-2021, 09:30 AM
........ পরপর তিন সপ্তাহ অফিস করে সুচির বাবা বুঝলেন যে বাবাকে একা ঘরে ফেলে যাওয়া উচিত হচ্ছে না। সারাদিন রেডিও শুনেই সুচির ঠাকুর্দা দিন কাটিয়ে দেন। ছেলেকে নিজের অসুবিধার কথা কখনোই বলেন না। অসুবিধার কথা না বললেও সুচির বাবা ঠিক বুঝতে পারতেন সবকিছু। ‘ কি করা যায় ! , এটাই সুচির বাবা সারাদিন ভাবতেন। একদিন সুচির বাবার মুখ দেখে প্রভাস জিজ্ঞাসা করলো , “ এরকম মড়া মুখ করে থাকিস কেন ? „
সুচির বাবা বললেন , “ জানিস-ই তো আমি সকালে অফিস চলে যাই। আসি বিকালে। সারাদিন বাবাকে একা ঘরে ফেলে যেতে কেমন একটা লাগে। কি করবো সেটাই ভাবছি। একটা নার্স যে রাখবো তার টাকাও নেই। „ প্রভাস কৌতুক করে বললো , “ তাহলে ফ্রির নার্স রাখ । „ সুচির বাবা বুঝতে না পেরে বললেন , “ ফ্রির নার্স ! „ প্রভাস হেসে বললো , “ বউয়ের কথা বলছি । „ এতো ভালো আইডিয়া তার মাথাতে কেন এলো না সেটা ভেবেই সুচির বাবা অবাক হলেন। আইডিয়া টা যখন কেউ দিয়েই দিয়েছে তখন শুভস্য শীঘ্রম। তারপর এদিক ওদিক পাত্রীর খোঁজ করতে লাগলেন সুচির বাবা। কয়েক দিনের মধ্যে পাত্রী পেয়েও গেলেন। নাম সুচেতা মন্ডল। পাত্রী দেখতে যাওয়ার সময় ছোটমাকে নিয়ে যেতে খুব ইচ্ছা হয়েছিল সুচির বাবার। কিন্তু কাকা খারাপ ভাববে এটা ভেবে ছোটমাকে নিয়ে যেতে পারলেন না। দুই জন বন্ধু আর হুইলচেয়ারে করে বাবাকে নিয়ে পাত্রী দেখতে গেলেন সুচির বাবা। পাকা কথা বলে , দিনখন ঠিক করার পর ফিরলেন সবাই। বিয়ের তারিখ ফাইনাল হয়ে গেলেও পাত্রের পকেটে কানাকড়িও নেই। তাই কারোর কাছে টাকা ধার করার সিদ্ধান্ত নিলেন সুচির বাবা। প্রথমেই মাথাতে এলো ছোটমার কথা। মাথাতে আসতেই ছোটমার কাছে হাজির , “ আমার কিছু টাকা চাই । „ কোন কাজে লাগবে সেটা না জিজ্ঞাসা করে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন , “ কত টাকা ? „ সুচির বাবা বললেন , “ দশ হাজার হলে হয়ে যাবে। আমি মিটিয়ে দেবো অল্প করে অল্প করে । „ কথাটা শুনে সুনীতা দেবীর মাতৃহৃদয় কেঁদে উঠলো। দশ হাজার কেন চাইছে সেটা তিনি জানেন। তার বড়ো ছেলে তাকে কিছু না বলেই পাত্রী দেখতে গেছিল সেটা তার কানেও এসছে। এখন সে বিয়ের জন্য টাকা ধার চাইতে এসছে এটা ভেবেই সুনীতা দেবীর চোখে জল চলে এলো। কোন রকমে চোখের জল আটকে তিনি নিজের ঘরে ঢুকে গেলেন। মা আর সুচির বাবার সব কথা আকাশের বাবা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছিলেন । মা নিজের ঘরে ঢুকে গেলে আকাশের বাবাও মায়ের পিছন পিছন গিয়ে ঘরে ঢুকলেন। আলমারি থেকে টাকা বার করে দেওয়ার সময় আকাশের বাবা স্পষ্ট দেখতে পেলেন যে মা কাঁদছে । ঘরের বাইরে এসে আঁচলে চোখের জল মুছে নিয়ে টাকা গুলো নিজের বড়ো ছেলের হাতে দিয়ে দিলেন। সুচির বাবা ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে আরও একবার বললেন , “ আমি অল্প অল্প করে মিটিয়ে দেবো সব । „ সুচির বাবা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেই সুনীতা দেবীর চোখের জল আর বাঁধ মানলো না। আর এই চোখের জলের একমাত্র সাক্ষী হয়ে রইলেন বাইশ তেইশ বছরের শুভাশীষ মিত্র। মায়ের চোখে জল দেখে যাকে এতদিন দাদা এবং বন্ধু ভেবে এসেছিল সেই সমুর উপর খুব রাগ হতে লাগলো। সুচির বাবা নিজের বিয়েতে ছোটমাকে নেমন্তন্ন করার ইচ্ছা থাকলেও কাকার কারনে করতে পারলেন না। আশেপাশের প্রায় পঞ্চাশ ষাট জন বন্ধুবান্ধব কে নেমন্তন্ন করলেও এতদিন যাকে ভাই হিসাবে ভেবে এসছে সেই শুভাশীষ কেও নেমন্তন্ন করতে পারলেন না সুচির বাবা। দুই দিন পর যখন প্রভাসের মায়ের সাথে সুনীতা দেবী কথা বলছিলেন তখন প্রভাসের মা জিজ্ঞেস করলেন , “ হ্যাঁ বৌমা , তোমরা নেমন্তন্ন পাওনি ? আমার ছেলেটাকে তো সমু বিয়েতে নেমন্তন্ন করলো। „ সুনীতা দেবী বাড়ির কথা বাড়িতেই রাখতে চান। বিয়েতে তার যাওয়ার ইচ্ছা খুব। কিন্তু সেই ইচ্ছা প্রকাশ করলে তার স্বামী দেবাশীষ মিত্র রাগ দেখিয়ে বলেছিলেন , “ নেমন্তন্ন যখন করেনি তখন কোন মুখ নিয়ে যাবে শুনি ! যেতে হবে না কারোর। „ এইসব কথা তিনি বাইরে জানাতে অনিচ্ছুক। তাই তিনি প্রভাসের মাকে বললেন , “ হ্যাঁ করেছে তো। বিয়ের দিন একটা কাজ আছে তাই যেতে পারবো না । „ প্রভাসের মা বুড়ি হয়ে গেছেন। অকপটে সব বলে দেন। এখনও বললেন , “ কেমন মা তুমি ! নিজের ছেলের বিয়েতে যাবে না .... আজ তার মাতৃত্বের উপর কেউ কথা বললো। একটা মায়ের কাছে কথাটা যে কতটা পীড়াদায়ক সেটা সুনীতা দেবী খুব ভালো করে বুঝতে পারলেন । কথাটা শুনে বুকটা ফেটে গেল তার। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হতে লাগলো। চোখের জল বাঁধ ভেঙে বেরিয়ে এলো। ঠিক তখনই আকাশের বাবা এসে মাকে ডেকে নিয়ে গেলেন। কিন্তু সুনীতা দেবী সেই যে চোখের জল ফেলা শুরু করলেন তা আর থামল না। আমৃত্যু তিনি চোখের জল ফেলেছেন। আর এইসব চোখের জলের সাক্ষী হয়েছেন একমাত্র আকাশের বাবা। মায়ের চোখের জল দেখতে দেখতে একসময় সমুর উপর ঘৃণা হতে শুরু করেছিল আকাশের বাবার। এতোটা বলে থামলেন আকাশের বাবা। তার চোখে অশ্রুর ফোটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কথাগুলো শুনতে শুনতে সুচির বাবা সোফায় বসে পড়েছিলেন। এতক্ষণ পর সবাই সুচির বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো তিনি দুই হাতে মুখ চেপে কাঁদছেন। তিনি যে মাকে এতোটা কষ্ট দিয়েছেন সেটা তিনি জানতেন না। টাকা চাওয়ার পর মা কেঁদেছিল এটাও তিনি জানতেন না। এখন যখন জানতে পারলেন তখন বুকের পাঁজর ভেঙে একটা আর্তনাদ বেরিয়ে এলো “ মাগো , এ আমি কি করলাম মা। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও মা। তোমাকে আমি কতো কাঁদিয়েছি । কাকার উপর রাগ করে আমি তোমার সাথেও কথা বন্ধ করে দিয়েছিল মাগো। এ আমি কি করলাম মা। এ আমি কি করলাম। „ অবশ্য এই আর্তনাদ কেউই শুনতে পাল না। কে বলেছে পুরুষ মানুষ কাঁদে না। যখন কোন ছেলে না বুঝে তার মা কে কাঁদায় তখন ছেলেটারও চোখের জল বার হয় বৈকি। এখন যেমন সুচির বাবার চোখের জল বেরিয়ে আসছে। এদিকে সবকিছু শুনতে শুনতে সুচির মাও কাঁদতে লাগলেন। স্বামীর চোখের জল দেখে তার আরও কান্না পেল। কিন্তু তাকে সান্তনা দেওয়ার জন্য আকাশের মা আছেন। আকাশের মা সবকিছু শুনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সবকিছু যে এতো ব্যাথা , যন্ত্রনাদায়ক হবে সেটা তিনি ভাবতে পারেন নি। এই ব্যাথার কথা কখনো তার শাশুড়ি তাকে বলেন নি। এখন যে তারও চোখে জল চলে এসছে। বুকটা হাহাকার করছে। এই ঘটনা এই ফ্ল্যাটে উপস্থিত সকলের চোখ থেকে বেদনার জল বার করে দিল। আকাশের বাবার সাথে পাশের ঘরে শুয়ে থাকা আকাশেরও চোখে জল চলে এসছিল। ঠাকুমাকে কখনো দেখেনি সে। দিদিমাকেই দেখে বড়ো হয়েছে। ঠাকুমার মুখটা কেমন দেখতে ছিল সেটাও সে জানে না। এখন সেই মহিলাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে তার। দিদিমার মতো ঠাকুমাকেও জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে ইচ্ছা করছে তার। মায়ের মুখে সে শুনেছিল যে ঠাকুমার খুব ইচ্ছা ছিল তাকে আদর করার। কিন্তু সে যখন মায়ের পেটে তখন এক্সিডেন্টে ঠাকুমা মারা যায়। তাই আকাশের মুখ ঠাকুমা দেখতে পায় নি। এখন সেই জন্য আকাশের বুকটা কেপে উঠতে লাগলো। যাকে কখনো দেখেনি , তার দুঃখ সে অনুভব করতে পারলো। কিছুক্ষণ ঘর নিস্তব্ধ থাকার পর সুচির বাবা নিস্তব্ধ ভঙ্গ করে বললেন , “ আমি কি করবো তখন ? বাবার ওই দূর্ঘটনার চিকিৎসার জন্য জমানো সব টাকা খরচ হয়ে গেছিল। কাকাও এগিয়ে আসে নি চিকিৎসার জন্য। কাকা চাইলেই আমার বাবাকে বড়ো হসপিটালে চিকিৎসা করিয়ে ঠিক করিয়ে দিতে পারতেন কিন্তু কাকা এটাকে বেকার অর্থ ব্যায় বলেছিল। তারপরেই কাকার আমার উপর দয়া দেখিয়ে চাকরি দেওয়ার ঘটনা ঘটলো। আমি রেগে গিয়ে চাকরি নিই নি। তারপরেই তুইও অহংকার দেখাতে শুরু করলি। চারিদিকে অন্ধকার দেখছিলাম আমি। তখন প্রভাস বললো বিয়ে করে বউ আন। বিয়ে করবো কিন্তু টাকা ছিল না তাই আমি ছোটমার কাছ থেকে টাকা ধার করেছিলাম । „ আকাশের বাবা একটা ব্যাঙ্গ করে বললেন , “ ধার ! নিজের মায়ের কাছ থেকে টাকা ধার করলি আর সেটা মাসে মাসে মিটিয়েও দিলি। মেয়ের সাথে ব্যাবসা শুরু করেছিলি বুঝি ! „ আকাশের বাবার ব্যাঙ্গ গায়ে না মেখে সুচির বাবা বললেন , “ কাকা চাইতো না আমি তোদের সাথে মিশি । „ “ অন্তত বিয়েতে মাকে নিয়ে যেতে পারতিস । „ “ কতোবার বলবো কাকা চাইতো না এসব। আর কাকা চাইতো না বলেই আমি তোর বিয়েতেও আসতে পারিনি। কিন্তু মায়ের মৃত্যুতে তুই ছোট মাকে এখানে আনলি না কেন ? সোজা নিমতলা নিয়ে গেছিলি কেন ? „ আবার আকাশের বাবা ব্যাঙ্গ করে বললেন , “ ও , তখনও বুঝি তোকে নেমন্তন্ন করতে হতো ! এসো দেখে যা মায়ের মড়া মুখ । „ তারপর শান্ত স্বরে বললেন , “ গাড়ি দুর্ঘটনায় আমি নিজেই মায়ের মুখ দেখতে পারছিলাম না । „ হাতের উল্টো পিঠে চোখের জল মুছে নিয়ে সুচির বাবা বললেন “ আমি তো তোকে সুমির বিয়েতে নেমন্তন্ন করেছিলাম তুই আসিস নি কেন ? „ চুরি করার পর চোর ধরা পড়েলে যেমন মুখ করে ঠিক সেইরকম মুখ করে আকাশের বাবা বললেন , “ আমি এসছিলাম । „ সুচির বাবা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন , “ কখন ? আমি তো তোকে একবারও দেখিনি ! „ তিনি যে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে সুমিকে আশীর্বাদ করেছিলেন সেটা তিনি কাউকে জানতে জিতে চান না তাই কথা ঘোরানোর জন্য বললেন , “ তুই আমার ছেলের অন্নপ্রাশনে আসিস নি কেন ? „ এখন এদের কথা শুনে মনে হচ্ছে যেন দুজনেই নিজের শরীরে লেগে থাকা কাদা অপরের গায়ে ছুড়ে পরিষ্কার হওয়ার চেষ্টা করছে । কিন্তু একটা সময়ের পর দেখা গেল যে সুচির বাবার গায়ের কাদার পরিমান অনেক বেশি তাই তিনি চুপ মেরে গেলেন। কে কি করেনি ? কে কার কোন অনুষ্ঠানে আসেনি ? এইসব হিসাব করার পর আকাশের বাবা এতদিন জমে থাকা কথা গুলো বলতে শুরু করলেন। যে ব্যাক্তিকে কথা গুলো বলা দরকার সেই ব্যাক্তিই সামনে চুপচাপ বসে আছে। তাই সুযোগ পেয়ে তিনিও মন হাল্কা করতে লাগলেন। কতো কষ্টের কথা , একাকিত্বের কথা , সব বলে আজ তিনি শান্ত হতে যান। তাই তিনি একের পর এক বলে চললেন , “ একবার তুই যদি বাবার কথা মাকে বলতিস তাহলে মাকে এতো কষ্ট পেতে হতো না সমু । „ --- তুই জানিস ? তুই যখন অফিস যেতিস তখন মা দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতো শুধু একবার তোর মুখ থেকে ‘ আসছি মা , শুনবে বলে । তারপর সুচির মায়ের দিকে ফিরে আকাশের বাবা বললেন , “ জানো বৌদি ! তোমার বিয়েতে তোমাকে প্রান ভরে আশীর্বাদ করার ইচ্ছা ছিল মায়ের । এ সেটাও হতে দেয়নি। সেই সুখটাও এ মায়ের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল। „ তখনও সুচির মা কেঁদে যাচ্ছে। এ ইতিহাস জানার থেকে অজানাই যে ভালো ছিল। সুনীতা দেবী তাকে স্নেহ করতো খুব। আকাশের বাবা , ঠাকুর্দা আর তার স্বামী সমরেশ তালুকদার অফিস চলে যাওয়ার পর ঘন্টার পর ঘন্টা একে অপরের সাথে কথা বলে কাটিয়ে দিতেন তারা । সুমি জন্মানোর পর কেন সুনীতা দেবী তাকে কোল ছাড়া করতে রাজি ছিলেন না সেটাও এখন জলের মতো স্পষ্ট তার কাছে। ছোট্ট সুমিকে কতোই না আদর করতো সুনীতা দেবী। কিন্তু কখনোই এইসব কথা সুনীতা দেবী সুচির মাকে বলেন নি। কেন বলেননি সেটা আজ সুচির মায়ের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। সুনীতা দেবী তার বড়ো ছেলেকে কষ্ট পেতে দিতে চাননি। যে কষ্ট এখন সোফায় বসে সুচির বাবা পাচ্ছেন সেই কষ্ট সুনীতা দেবী দিতে চান নি। কিন্তু এক না একদিন আসল ঘটনা চোখের সামনে এসে দাঁড়ায়। আজকেও এসে দাঁড়িয়েছে। আর সুচির বাবাকে কাঁদিয়ে চলেছে। এদিকে আকাশের বাবা মন শান্ত করতে ব্যাস্ত , “ তুই অন্তত আমাকে তো বলতে পারতিস বাবার কথা। তুই তারপর মায়ের সাথে কথা বন্ধ করে দেওয়ায় মা কাঁদতো খুব। আর সেটা দেখে তোর উপর আমার রাগ বেড়েই যেত। মাস শেষ হয়ে যাওয়ার পর তুই যখন দশ হাজার টাকার কিস্তি মেটাতে আসতিস সেদিন রাতে মা ঘুমাতে পারতো না। চোখের জল ফেলতো শুধু। মা শুধু একবার তোর কাছ থেকে বাবা কি বলেছিল সেটা শুনতে চেয়েছিল । „ ----- তোর কথা বন্ধ করে দেওয়ায় আমি আমার সবকিছু হারালাম। একসাথে বড়ো হয়েছি আমরা। একসাথে কলেজে গেছি , একসাথে কত খেলাধুলা করেছি। সুচিকে যেমন আমার ছেলে জন্মের দিন থেকে পাশে পেয়েছে তেমন তোকেও আমি জন্মের দিন থেকেই পাশে পেয়েছিলাম। তোকে দাদা মানতাম আমি। বন্ধু হিসাবে চলতাম বলে কখনো তুমি করে কথা বলিনি তোর সাথে। কিন্তু তুই যখন আমার সাথে তুমি করে কথা বলতে শুরু করলি তখন তোকে খুব পর লাগতে শুরু করেছিল। নিজের একমাত্র বন্ধুকে হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছিলাম। তোর বিয়ের পরেই আমি অফিসে কাজ করতে শুরু করি তারপর আর কোন কিছু স্বাভাবিক ছিল না সমু। খুব ইচ্ছা করতো তোর সাথে কথা বলি , আগের মতো দুজনে দাবার বোর্ডের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিই । কিন্তু তখনই মায়ের চোখের জলের কথা মনে পড়তো। „ এটা বলে নিজের চোখের কোনায় লেগে থাকা অশ্রু মুছে নিলেন আকাশের বাবা। --- একবার যদি তুই মাকে কিংবা আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতিস তাহলে আজকে নিজের ভাইয়ের সামনে তোকে হাত জোড় করতে হতো না সমু ...... আরো অনেক কথা হয়তো বলতেন আকাশের বাবা । কিন্তু এ অভিযোগ , এ ব্যাথা অসহ্য হয়ে উঠেছে সুচির বাবার কাছে। তাই তিনি আর থাকতে না পেরে সোফা থেকে উঠে এসে আকাশের বাবাকে আলিঙ্গন করলেন। হঠাৎ করে সুচির বাবা গলা মেলাতে আকাশের বাবা থেমে গেলেন। কিছু বললেন না আর। যদিও সুচির বাবা উচ্চতায় একটু ছোট তবুও আকাশের বাবা একটু ঝুকে যেতে দুজনেই অপরের হৃদস্পন্দন নিজের বুকে অনুভব করতে লাগলেন। কতক্ষণ তারা এইভাবে ছিলেন সেটা জানা নেই । কিছুক্ষণ এইভাবে থাকার পর আকাশের বাবা বললেন , “ একটা সমস্যা আছে । „ ভাইকে বুকে নিয়েই সুচির বাবা জিজ্ঞাসা করলেন , “ কি ? „ “ আমি সঞ্জয় কে কথা দিয়েছি যে ওর মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে দেবো । „ ফিক করে হেসে সুচির বাবা বললেন , “ সে তো তুই হরেন-কেও কথা দিয়েছিলি যে ওকে তুই তোর কোম্পানির ম্যানেজার বানাবি । „ পুরানো কথা মনে পড়তে দুজনেই হেসে উঠলো।
20-12-2021, 09:50 AM
একটু লম্বা হলেও বেশ ভালো করে গুছিয়ে লেখা , প্রচুর সময় আর মগজের দম খরচ হয়েছে বোঝাই যায় ....
খুব ভালো লাগলো , অতীতের অনেক জট / ভুল বোঝাবুঝি সুন্দরভাবে কাটিয়ে দেওয়া হয়েছে ....
20-12-2021, 09:57 AM
(20-12-2021, 09:50 AM)ddey333 Wrote: একটু লম্বা হলেও বেশ ভালো করে গুছিয়ে লেখা , প্রচুর সময় আর মগজের দম খরচ হয়েছে বোঝাই যায় .... এই উপন্যাসের পুরোটাই একটা এক্সপেরিমেন্ট ছিল আমার কাছে... সবকিছুই প্রথম -- তা সে এতগুলো চরিত্র বলুন আর ভালোবাসা বলুন। সবই প্রথম।... যখন অন্যের গল্পে এতো গুলো চরিত্র পড়তাম তখন ভাবতাম লোকটা এত গুলো চরিত্র কিভাবে হ্যান্ডেল করে? সেই থেকেই এটা লেখা .. আমিও পারবো কি না সেটা দেখাই ছিল এই গল্পের লক্ষ্য। এখন আপনাদের ভালোবাসা দেখে মনে হচ্ছে আমি সফল । প্রথম কমেন্টের জন্য চাপে ছিলাম খুব .... ভাবছিলাম আদেও পছন্দ হবে তো আপনাদের! এখন দেখছি পছন্দ হয়েছে ❤❤❤ |
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 176 Guest(s)