Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,559 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
Update 4
“ বাহ্ ভালো খবর। এখন কত বয়স গোধূলির ? „ কম বয়সে ছেলের বিয়ে দেওয়াটা এখনও ঠিক মেনে নিতে পারেননি তিনি। তার উপর একটা সামান্য কুষ্ঠির কথা মেনে এইসব করাটাকে কুসংস্কার বলে। তবুও ভালো যে নাবালকের বিয়ে দিতে হচ্ছে না। এতকিছুর মধ্যে এটাই একটু শান্তি দিচ্ছে। এখন যদি গোধূলি নাবালিকা হয় তাহলে তো তাকে বেঁকে বসতেই হবে।
সঞ্জয় একটু ভেবে নিয়ে বললো , “ এখন একুশ চলছে আর কয়েক মাস পর বাইশে পড়বে। কেন জিজ্ঞাসা করছেন জানতে পারি কি ! „
গোধূলি নাবালিকা নয় শুনে একটা ভার বুক থেকে নেমে গেল । একটা বড়ো নিশ্বাস ফেলে বললেন , “ তুমি জানো আকাশের তেইশ বছর হলেই তোমার বৌদি ওর বিয়ে দেবে। কালকেই ও গোধূলির কথা জিজ্ঞাসা করছিল.....
সঞ্জয় চোখ বড়ো বড়ো করে জিজ্ঞাসা করলো , “ মানে বৌদিও রাজি এই সম্পর্কে ? „
আকাশের মায়ের জিজ্ঞাসাটাই তিনি সঞ্জয়ের কাছে বললেন , “ বিদেশে থেকে বড়ো হয়েছে। কোন বদ অভ্যাস , মানে নেশা পার্টি এমন কিছু .....
মুখের সামনে থেকে মাছি তাড়াচ্ছে এমন ভাবে মুখের সামনে দিয়ে হাত নাড়িয়ে সঞ্জয় বললো , “ আরে না , না , আমার মেয়েকে দেখলেই বুঝবেন। ওর এইসব বদ অভ্যাস নেই । „
সঞ্জয়ের হাবভাব দেখে হেসে নিয়ে আকাশের বাবা জিজ্ঞাসা করলেন, “ তোমার স্ত্রী চারুলতা রাজি ? মেয়ের এত কম বয়সে বিয়ে দেওয়া নিয়ে ? „
আকাশের বাবার হাসিকে পাত্তা না দিয়ে সঞ্জয় বললো , “ না , ওর কোন অসুবিধা নেই। পাত্র ভালো হলেই সাত খুন মাফ ওর কাছে । „
মাথাটা সামনে পিছনে একবার নাড়িয়ে আকাশের বাবা বললেন , “ বুঝেছি । „
দুই দিন পর মাস শেষ হয়ে গেলে সুচির অনেক দিনের একটা স্বপ্ন পূরণ করার সময় হয়ে এল। সুচি বেতন হাতে পেয়েই কৌশিককে নিয়ে গিয়ে শোরুম থেকে হলুদ রঙের Honda activa কিনে নিল।
এক সপ্তাহ পরেই সঞ্জয় তার মেয়েকে নিয়ে অফিসে ঢুকলো। আকাশ প্রথম দেখায় চিনতেই পারলো না গোধূলিকে। সঞ্জয় সবার সাথে তার মেয়ের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় আকাশ চেয়ারে বসে গোধূলিকে দেখতে লাগলো। একটা লাল রঙের ফুল গাউন পড়ে আছে। উচ্চতা 5'3" - 5'4" হবে। ঘন কালো চুল পনিটেল করা। গাল দুটো এখন আগের থেকে বেশিই লাল। চোখ দুটো পাহাড়িদের মত অতোটা সরু নয় তাই এই ফর্সা লাল টমেটোর মতো মুখে ওই চোখ দুটো মুখের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। যৌবনের ছাপ গাউনের উপর ফুটে আছে আর সেটা অফিসের ইয়ং ছেলেদের আড় চোখে তাকানোর কারন হচ্ছে।
অফিসে ঢুকে সঞ্জয়কে দেখে সবাই উঠে দাঁড়ালেও আকাশ উঠে দাড়ায়নি তাই গোধূলির দৃষ্টি মাঝেমাঝেই আকাশের উপর চলে যেতে লাগলো । আকাশকে এক কোনায় একটাচেয়ারে বসে থাকতে দেখে গোধূলি মনে করলো অর্থাভাবে জর্জরিত কোন দুঃখী পরিবারের সন্তান যে এই অফিসের পিওনের কাজ করছে।
অফিসের বাকি সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর যখন সঞ্জয় গোধূলিকে নিয়ে আকাশের কাছে এলো তখন গোধূলি যে অবাক হয়েছে সেটা তার চোখে মুখে ফুটে উঠলো। সঞ্জয় মেয়েকে বললো , “ চিনতে পারছিস ? „
বাবার কথা শুনে গোধূলি বুঝতে পারলো যে সে আকাশকে আগে দেখেছে কিন্তু এখন চিনতে পারছেন না , তাই মাথা দুই দিকে নাড়িয়ে সে বললো , “ না ! „
সঞ্জয় একটু হেসে বললো , “ আকাশ । চিনতে পারলি না ! „
গোধূলি আর সঞ্জয় যখন আকাশের কাছে এগিয়ে এসছিল তখনই আকাশ উঠে দাড়িয়ে ছিল। এখন হাত তুলে মুখে হাসি নিয়ে সে বললো , “ Hi „
আকাশের নাম শোনার পর আকাশকে চিনতে না পারার জন্য গোধূলির মুখে লজ্জা ফুটে উঠলো , “ তুমিই আকাশ ! আমি তো চিনতেই পারি নি । এখানে বসে কেন ? „
আকাশের এখন আর লজ্জা লাগে না বলতে তাই সে অকপটে সত্য কথাটাই বলে দিল , “ আমি এখানে পিওনের কাজ করছি । „
পিওনের কাজ শুনেই গোধূলির ভুরু কুঁচকে গেল , গলায় বিস্ময় ঝড়ে পড়লো , “ মানে ! তুমি পিওনের কাজ ! বুঝতে পারছি না কিছু ! „
সঞ্জয় এদের কথা থামিয়ে বললো , “ তোমাদের কথা পরে অনেক হবে । আয় আগে তোকে আকাশের বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই । „
আকাশ বললো , “ পরে কথা হবে । „
গোধূলিকে নিয়ে সঞ্জয় আকাশের বাবার কেবিনে ঢুকলে গোধূলি আকাশের বাবার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে করতে জিজ্ঞাসা করলো , “ কেমন আছেন আংকেল ? „
“ আরে কি করছো কি তুমি ! পায়ে হাত দেয় নাকি কেউ ! আমি ভালো আছি । তুমি কেমন আছো ? „
“ আমিও ভালো আছি। বাইরে আকাশকে দেখলাম। বললো পিওনের কাজ করছে। বুঝলাম না ঠিক ! „
“ সে তুমি ওকেই জিজ্ঞাসা করো । „ তারপর সঞ্জয়ের দিকে ফিরে বললেন , “ অনেক বড়ো হয়ে গেছে চেনাই যাচ্ছে না। সেই ছোটবেলায় দেখেছিলাম। „
সঞ্জয় একটু হেসে নিয়ে মেয়েকে বললো , “ চল আমার কেবিনে । „
আকাশকে জিজ্ঞাসা করার পর আকাশের কাছ থেকে উত্তর শোনার আগেই বাবা তাকে ওখান থেকে নিয়ে চলে এসছে। এখন আবার আকাশের বাবাকে জিজ্ঞাসা করার পরেও তার বাবা তাকে এখান থেকে নিয়ে চলে যেতে চাইছে। নিশ্চয়ই কোন কারন আছে । না হলে বাবা এরকম করবে না । এটা ভেবেই গোধূলি সঞ্জয়ের পিছন পিছন আসতে আসতে আকাশের বাবার উদ্দেশ্যে বললো , “ আসছি আংকেল । „
আকাশের বাবা চেয়ারে বসতে বসতে বললেন , “ হ্যাঁ এসো । „
গৌধুলি আকাশের বাবার কেবিন থেকে বার হয়ে , বাবার পিছন পিছন গিয়ে বাবার কেবিনে ঢুকলো। চেয়ারে বসে সঞ্জয় জিজ্ঞাসা করলো , “ কেমন লাগলো অফিস ? „
“ এখানে এসে দারুণ লাগছে। কিন্তু আকাশের ব্যাপারটা বুঝলাম না । „
সঞ্জয় বিদ্রুপ করে বললো , “ ওকে এখন ওর বাবা পিওনের কাজে লাগিয়েছে। ভাব একবার ... নিজের ছেলেকে দিয়ে এইসব করাচ্ছে। জিজ্ঞাসা করেছিলাম , তখন বললো নাকি ছেলেকে নিজের হাতে গড়তে চান । „
বাবার কথা শুনে গোধূলির ভুরু আরও কুচকে গেল , “ এতে আকাশের কোন আপত্তি নেই ? মানে এতো বড়ো কোম্পানির ওয়ারিশ । সে নিজের কোম্পানিতে পিওনের কাজ করছে ! „
“ আপত্তি আছে কি না জানি না । হয়তো বাড়িতে কথা হয় এই নিয়ে । তুই ওকেই জিজ্ঞাসা করিস , তবে এখন না। টিফিন আওয়ারে কথা বলিস। এখন কাজ না করে গল্প করলে আকাশের বাবা আবার রেগে যায়। „
টিফিন আওয়ারে আকাশ বাবার সাথেই খাওয়া দাওয়া করে। আজকে সঞ্জয় সেটা হতে দিল না। আড়াইটে বাজতেই সে আকাশের বাবার কেবিনে ঢুকে আকাশের বাবাকে বললো , “ আজকে ওদের একসাথে খেতে দিন। একসাথে খেলে আলাপ করতে পারবে । এতে আমাদেরই সুবিধা । „
আকাশের বাবা হাসলেন কিন্তু কিছু বললেন না। আকাশ হাত ধুয়ে বাবার কেবিনে ঢুকলে তিনি তার টিফিন কৌটটা ছেলেকে দিয়ে বললেন , “ আজ তুই গোধূলির সাথে খেয়ে নে । আমার খিদে নেই । „
আকাশকে কিছু বলতে দেওয়ার আগেই সঞ্জয় বললো , “ তুমি আমার কেবিনে চলে যাও। ওখানেই গোধূলি আছে । „
আকাশ আর কিছু না বলে টিফিন কৌটটা নিয়ে চুপচাপ চলে এলো । সঞ্জয়ের কেবিনে ঢুকতেই গোধূলি জিজ্ঞাসা করলো , “ তুমি ! „
“ হ্যাঁ আমি। তোমার বাবা এখানে পাঠিয়ে দিলেন। বাবার মনে হয় কাকার সাথে কোন কাজ আছে । তাই এখানে এসে খেতে বললো । „
“ ও বসে পড়ো । „ বলে গোধূলি পাশের চেয়ারটা দেখিয়ে দিল।
আকাশ সেখানে বসলে গোধূলি বললো , “ তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করছি । কিছু মনে করো না । জাস্ট কিউরিওসিটি বলতে পারো । আসলে না জিজ্ঞাসা করেও থাকতে পারছি না। „
আকাশ টিফিন কৌটটা খুলতে খুলতে বললো , “ আগে প্রশ্নটা তো শুনি । তারপর । „
“ তুমি এই কোম্পানির মালিক হয়ে , মানে ভবিষ্যতের মালিক হয়ে এই কাজ করছো ! ......
“ বুঝেছি । আসলে আমি একটু বেশি অহংকারী ছিলাম। টাকার অহংকার ছিল সেটা এখন বুঝতে পারি। মাসের শেষে নিজের হাতে যখন সাত হাজার টাকা পাই তখন বুঝি ....
গোধূলির আরও অবাক হওয়ার বাকি ছিল। এখন আকাশ যে সাত হাজার বেতনে কাজ করে সেটা শুনে চোখ ঠিকরে বেরিয়ে এলো। ভুরু কপালে উঠে এলো , “ তুমি সাত হাজার বেতনে এখানে কাজ করো ! „
“ হ্যাঁ। তাই এখন কষ্টের উপার্জনটা বুঝি । „
গোধূলি আর কিছু বললো না। কিন্তু আকাশের কথা শুনে সে যে খুব ইমপ্রেস হয়েছে সেটা তার চোখে মুখে ফুটে উঠলো।
এতক্ষণে আকাশের টিফিন কৌটটা খুলে গেছে। আর তাতে মাছ ভাত আছে সেটাও গোধূলি দেখে ফেলেছে , “ তুমি এটা টিফিন করবে ? „
“ আমি মাছে ভাতে বাঙালি। দুপুরে ভাত না হলে চলে না। „ তারপর গোধূলির টিফিনে নুডলস দেখে বললো , “ এটা তো একদমই চলবে না । „
অনেক্ষণ ধরে আকাশের মনে একটা প্রশ্ন বিঁধছিল এখন সেটা বলে ফেললো , “ তুমি ইংলিশ মিডিয়ামের মেয়ে । লন্ডনে পড়াশোনা করেছো । কিন্তু তুমি ইংলিশ বলোই না এখন। ছোটবেলায় তো খুব বলতে । „
গোধূলি রুমালে হাসি চেপে বললো , “ ছোটবেলায় ছিলাম ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রী। তখন আলাদা কথা ছিল। লন্ডনে আমার মাসির মেয়ের সাথে একসাথে থাকতাম। ও বাংলা সাহিত্যের খুব বড়ো ভক্ত। বাংলা মিডিয়ামেই পড়তো বলে তখন কথা বলতাম না। ওখানে গিয়ে ওর সাথে থেকে বুঝতে পেরেছি কতো বড়ো ভুল করেছিলাম। এখন আমাকে বাংলা সাহিত্যের পোকা বলতে পারো । „
গোধূলির কথা শেষ হতেই দুজনেই হেসে উঠলো।
দুই দিন পর অফিস আওয়ার শেষে সবাই চলে যেতে লাগলো কিন্তু আকাশের বাবা আর সঞ্জয় গেল না। কিছুক্ষণ পর একটা মিটিং হবে । বাইরের একটা কোম্পানির দুইজন লোক এখন কলকাতা শহরে এসে পৌছেছে। তাই মিটিংটা এখনই করতে হবে।
গোধূলি আর আকাশের অফিসে থেকে কোন কাজ নেই তাই আকাশের বাবা বললেন , “ তোরা চলে যা । আমাদের মিটিং শেষ হতে হয়তো সময় লাগবে । „
গোধূলি বললো , “ আমি কিসে যাবো ? „
সঞ্জয় একটা ভালো সুযোগ পেয়ে গেল। সে বললো , “ আকাশ তোকে ড্রপ করে দেবে । তুই চলে যা । „
গোধূলিকে নিজের বাইকে ছেড়ে দিয়ে আসতে হবে শুনে আকাশ বিরক্ত হলো। সে বাবার দিকে তাকাতে শুভাশীষ বাবু একটা সম্মতি সূচক মাথা নেড়ে আকাশকে ছেড়ে আসতে বললেন।
তারপর দুজনেই নিচে নেমে এলো। পার্কিং থেকে বাইকটা বার করতে গিয়ে আকাশ দেখলো সুচিও তার নতুন স্কুটি বার করছে। দুজনের চোখাচোখি হলো। আকাশ সুচিকে দেখে মাথা নিচু করে বাইকে উঠে স্টার্ট দিয়ে দিল। গোধূলি আকাশের পিছনে বসতেই আকাশ বাইক চালিয়ে দিল।
এতদিনে সুচি গোধূলির পরিচয় পেয়ে গেছে। একসময় যার জন্য সে আকাশকে চড় মেরেছিল , যার উপর রেগে গিয়ে সঞ্জয়ের গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দিয়েছিল , সেই মেয়েই আজ সুচির বস। আকাশের বাইকে গোধূলিকে বসতে দেখে সুচি রাগে ফুসে উঠলো। আকাশের বাইকের ওই জায়গাটা তার যে নিজের। কেউ কিভাবে ওখানে বসতে পারে ! আর আকাশই ওকে বসতে দিচ্ছে এটা ভেবেই আকাশের উপর রাগ আরও বেড়ে গেল।
পরক্ষণেই সুচি ভাবলো , ‘ না , এ আমি কি ভাবছি ! ওর বাইকে যেই বসুক। আমার কিছু যায় আসে না। ,
এদিকে বাইক রাস্তায় নামিয়ে আকাশ ভাবতে লাগলো , ‘ ইসসস , কি ভাবছে ও এখন ! মনে হয় রেগে আছে । ,
পুরো রাস্তা সাবধানে বাইক চালিয়ে গোধূলির দিক নির্দেশ মতো যখন আকাশে সল্টলেকে গোধূলির বাড়ির সামনে এসে থামলো তখন গোধূলি বাইক থেকে নেমে বললো , “ আমি ভেবেছিলাম তুমি সুযোগ বুঝে বারবার ব্রেক মারবে। „ কথাটা বলেই গোধূলি হেসে উঠলো
গোধূলির কথা শুনে আকাশ অপ্রস্তুত হয়ে উঠলো। আকাশের হাবভাব দেখে গোধূলি বললো , “ আরে ! তুমি তো সিরিয়াস হয়ে গেলে । আমি মজা করছিলাম । „
এবার আকাশের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। গোধূলিকে bye বলে আকাশ বাড়ি চলে এলো।
এর কয়েক দিন পর বাড়ি ফেরার সময় আকাশকে বিদায় জানিয়ে গোধূলি বাবার গাড়িতে উঠে বসলো সঞ্জয় গাড়ি চালিয়ে কিছুদূর গিয়ে বললো , “ কেমন লাগলো ওকে ? „
সঞ্জয় তার মেয়ের সাথে খুব ফ্রি। বন্ধু বলা যায়। ছোটবেলা থেকেই একজন বাবার থেকে একজন বন্ধু হিসেবেই মেয়ের সাথে মেশার চেষ্টা করেছে সে। তাই প্রশ্নটা করে সঞ্জয় লাজুক হাসি হাসতে লাগলো।
বাবার দুষ্টুমির হাসি দেখে গোধূলিও হেসে বললো , “ মানে ! „
মুখের হাসিটা বজায় রেখেই সঞ্জয় বললো , “ সত্যিটা বল না । „
কিছু না বোঝার ভান করে গোধূলি জিজ্ঞাসা করলো , “ কি বলবো ? „
“ ওকে কেমন লাগলো ? „
“ কাকে ? „
“ আকাশকে। „
“ ভালোই। হ্যান্ডসাম । ম্যাচিউর। সেন্স অফ হিউমার একটু কম । „
“ তাহলে কিছু খামতি আছে বলছিস ! „
“ তুমি এইসব জিজ্ঞাসা করছো কেন বলোতো বাপি ? „
“ আমার মেয়ের কাকে পছন্দ হলো সেটাই জিজ্ঞাসা করছি । „
“ তুমিও না বাপি ! „
“ ওকে যদি ভালো লাগে তাহলে প্রোপজ করে দে। মেয়ে হয়ে প্রোপজ করবি লজ্জা লাগবে নাকি ! „
“ কি সব বলছো তুমি ! „
“ ওর গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি যে প্রোপজ করা যাবে না ......
দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে গোধূলি বললো , “ না নেই । „
“ তুই কি করে বুঝলি ? „
“ ওকে দেখে এমনিই বোঝা যায়। সারাদিনে আন্টি বার কয়েক ফোন করে আর কেউ ফোন করে না। কেউ মেসেজও করে না । মানে কেউ নেই । „
“ আমার মেয়ে ইন্টেলিজেন্ট বলতে হয় । „
“ এতে মেধাবীর কিছু নেই। মেয়েরা এটা বুঝতে পারে । „
“ তাহলে প্রোপজ করে দে। সামনে তো ভ্যালেন্টাইন ডে। প্রথমেই রোজ ডে। একটা গোলাপ কিনে প্রোপজ কর । কতদিন আর একা থাকবি ? „
“ তুমিও না বাপি। সবসময় ওইসব ! „
“ শোন। তোর বয়সে আমি তোর মায়ের সাথে চুটিয়ে প্রেম করেছি। লজ্জা কিসের ! „
গোধূলি আর কথা বাড়ানো না। দেখতে দেখতে রোজ ডে চলে এলো। গোধূলি বাবার কথা ভুলেই গেছিল। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতে যায়। ঠিক তখন সঞ্জয় একটা গোলাপ ফুলের তোড়া মেয়েকে দিয়ে বললো , “ এনে । „
গোধূলি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো , “ কি এটা ? „
“ গোলাপ। আকাশকে প্রোপজ করার জন্য । „
গলায় বিস্ময় ঝড়িয়ে গোধূলি বললো , “ বাপি তুমি সত্যি চাও আমি ওর সাথে রিলেশনে যাই ? „
“ আমি চাই তুই সুখে থাক । আর আকাশ খুব ভালো ছেলে। এরকম ছেলে আর পাবি না। এনে ধর । „
গোধূলি বাবার কথায় উৎসাহ পেল। এমন নয় যে সে আকাশকে পছন্দ করে না। আকাশের মতো কিউট , হাল্কা ভোলা ছেলে , তার উপর লম্বা চওড়া তার খুব পছন্দ। আর এতদিনে বাবাকে এসিস্ট করতে গিয়ে , একই অফিসে আকাশের সাথে কাজ করে ছেলেটাকে পছন্দও হয়েছে তার। তাই বাবার উৎসাহে আর নিজের মনের গভীরে লুকিয়ে রাখা একটা ভালোলাগাকে বাস্তবায়ীত করতে সে ফুলের তোড়া থেকে একটা বড়ো সুন্দর গোলাপ ফুল তুলে নিল। তারপর অফিস ভর্তি এমপ্লয়ির চোখের সামনে দিয়ে আকাশের দিকে এগিয়ে গেল।
ঠিক সেই সময় একটা ফাইল দিতে সুচিও উপরে উঠে এলো। ফাইলটা দিয়ে কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ দুটোকে জুড়িয়ে চলে যাওয়ার সময় দেখলো গোধূলি আকাশের দিকে এগিয়ে আসছে।
গোধূলি এগিয়ে এসে অফিস ভর্তি কর্মচারীদের মধ্যে আকাশকে গোলাপ ফুল দিয়ে বললো , “ happy rose day । „
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,559 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
কথাটা শুনে সুচির পা থেকে মাটি সরে গেল। একদিন এটা হওয়ারই ছিল। তারজন্য সুচি মানসিকভাবে প্রস্তুতও ছিল। কিন্তু এখন শত প্রস্তুতি সত্ত্বেও সুচির হৃদয়টা টুকরো টুকরো হয়ে গেল। হৃদয় ভাঙার যন্ত্রণা চোখের জল হয়ে দুই গাল ভাসিয়ে দিতে লাগলো।
গোলাপটা নিয়ে আকাশ বললো , “ থ্যাঙ্ক ইউ । „
কথাটা শুনেই সুচির মনে হলো কেউ যেন তার বুকে চাবুক মারলো। হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে চোখের জল মুছে নিয়ে দৌড়ে সিড়ি দিয়ে নিজের ফ্লোরে চলে এলো।
তারপর কোনরকমে কাঁপা হাতে নিজের ব্যাগ আর হেলমেটটা নিয়ে লিফ্টে চলে এলো। এখন সে কি করছে , তার মন কি চাইছে সেটা সুচি বুঝতে পারছে না। লিফ্টে ঢুকে বারবার গ্রাউন্ড ফ্লোরের বোতাম টিপতে লাগলো। লিফ্ট গ্রাউন্ড ফ্লোরে পৌছতেই মাথায় হেলমেটটা গলিয়ে সুচি নিজের স্কুটি চালিয়ে রাস্তায় নেমে এলো । রাস্তায় স্কুটিটা নামতেই সুচির আর কন্ট্রোল রইলো না। চোখের জলে চোখটা মাঝে মাঝেই ঝাপসা হয়ে আসছে। চোখের পাতা বারবার উপর নীচে করে চোখ থেকে জল বার করতে হচ্ছে। দ্রুতগতিতে স্কুটি চালানোর জন্য চোখের জল হাওয়ায় ভেসে চকচক করে উঠছে। কিছুদূর যাওয়ার পর পাশে একটা বাইক এসে এক মধ্য বয়সী ভদ্রলোক বললো , “ ও দিদি ! আস্তে চালান । এক্ষুণি তো আমার সাথে ধাক্কা লাগতো ! „
লোকটার কথায় সুচি স্কুটিটাকে আস্তে চালাতে শুরু করলো । সোসাইটিতে ঢুকে কোনওরকমে স্কুটিটাকে পার্ক করে দৌড়তে দৌড়তে সিড়ি ভেঙে উপরে উঠে এলো। ফ্ল্যাটের দরজা কোনো কারনে ভেজানো ছিল। দরজা ঢেলে ঢুকে নিজের ঘরে ঢুকে গেল। সাইড ব্যাগটাকে খাটের একদিকে ছুড়ে দিয়ে খাটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে কাঁদতে লাগলো।
সুচেতা দেবী মেয়েকে কাঁদতে কাঁদতে ঘরে ঢুকতে দেখেছিলেন। তিনি সুচির ঘরে ঢুকে সুচির পাশে বসে জিজ্ঞাসা করলেন , “ কি হলো ? কাঁদছিস কেন ? আর এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলি ? „
কান্না ভেজা গলায় সুচি বললো , “ তুমি যাও মা । আমাকে একা থাকতে দাও । „
“ আমাকে বল কি হয়েছে । „
সুচি বিরক্ত হয়ে জোড় গলায় বললো , “ বললাম তো একা থাকতে দাও । „
সুচির মার গলায় মমতা ঝড়ে পড়লো , “ মাকে বল কি হয়েছে । „
সুচি বিরক্ত হয়ে উঠে , “ বললাম তো যাও । „ বলে মাকে ঢেলে বাইরে বার করে দিল। দরজায় ছিটকিনি দিয়ে , দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে বসে দুই হাটুর মাঝে মুখ গুজে কাঁদতে লাগলো। যখন চোখে আর জল অবশিষ্ট রইলো না তখন মুখ তুলে এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে হাতের তালুতে দুই গালে লেগে থাকা চোখের জল মুছে নিল।
চোখের জল মুছতে মুছতে দেওয়ালে টাঙানো একটা ফ্রেম করা ফটোর উপর সুচির চোখ পড়লো । ফটোটা দিম্মা আর সুচির। সুচির দশ বছর বয়সে প্রথমবার স্টেজে নাচার পরের মুহুর্ত। ফটোতে সুচি তার সেই নীল শাড়ি পড়ে আছে। হাতে প্রথম পুরস্কারের ট্রফি। আর পাশে দিম্মা একটা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে আছে।
ফটোটা আকাশ তুলে দিয়েছিল। আর এই শাড়িটা আকাশ লুকিয়ে রেখে দিয়েছিল। সেইসব সুচির মনে পড়ে গেলে সে দেওয়াল থেকে ফটোটা নামিয়ে আনলো। হাত দিয়ে ফটোর উপর পড়ে থাকা ধুলো মুছে নিয়ে দিম্মার কথার সূত্র ধরে সুচি বললো , “ তুমি আমাকে ওর দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলে। আমি তোমার দায়িত্ব রাখতে পারলাম না দিম্মা। ও আমার থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। আমাকে দিয়ে যাওয়া তোমার শেষ কাজ আমি রাখতে পারলাম না দিম্মা । আমাকে ক্ষমা করে দাও দিম্মা। আমাকে ক্ষমা করে দাও। „ বলে ফটোটা নিজের বুকে চেপে ধরলো ।
কিছুক্ষণ ফটোটা নিজের বুকে চেপে ধরে থেকে রহমত চাচার বলা কথাটাও সুচির মনে পড়ে গেল। রহমত চাচা তাকে আকাশের খেয়াল রাখতে বলেছিল। দাদুর কথার সূত্র ধরে সুচি বললো , “ তুমি আমাকে আকাশের খেয়াল রাখতে বলেছিলে দাদু । তার বদলে আমি ওকে মেরেছি। গালাগালি দিয়েছি , অত্যাচার করেছি। আমি তোমাদের কারোর কথা রাখতে পারিনি দিম্মা। আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দিও দাদু দিম্মা । „
কথাটা বলে সুচি ফটোটা বুকে চেপে ধরে খাটে চুপচাপ শুয়ে রইলো।
সাতটার কিছু আগে সুচির বাবা অফিস থেকে ফিরলেন। এসে দেখলেন সুচির মা চোখের জল ফেলছেন। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন , “ কাঁদছো কেন ? কি হয়েছে ? „
স্বামীর চিন্তার তোয়াক্কা না করে সুচির মা বললেন , “ কিছু না । „
সুচির বাবার গলায় এবার রাগ দেখা দিল , “ কি হয়েছে বলবে তো ? „
“ বললাম তো কিছু না। „ রাগী স্বরে কথাটা বলে স্বামীকে চুপ করিয়ে দিলেন।
সেই যে সুচি দরজায় ছিটকিনি দিল আর খুললো না। খাওয়ার সময় সুচির মা বেশ কয়েকবার ডাকলেন কিন্তু সুচি ঘর থেকে বার হলো না। সমরেশ বাবু পুরো ব্যাপারটা বুঝতে না পারলেও এটা বুঝলেন যে সুচি কাঁদছে। আর সুচির কান্নার একটাই কারন। সেটা হলো আকাশ। নামটা মাথাতে আসতে তিনিও চুপ করে গেলেন।
রোজ রাতে সুচি দিদিকে ফোন করে ঘুমায়। আজ সুচি ফোন করলো না। সুমি নিজে ফোন করলো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফোনটা ধরলো সুচি। ফোন ধরতেই সুমি বললো , “ কি হয়েছে বলতো ? মা ফোন করে কান্নাকাটি করছে । খাচ্ছিস না কিছু , বলছিস ও না কিছু ! „
এতক্ষণ পর একজনকে মন খুলে কথা বলার সুযোগ পেয়ে সুচি ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে সব বলে দিল। সব শুনে সুমি রাগি গলায় বললো , “ আমার এখন তোর উপর রাগ হচ্ছে । এতো বোঝানোর পরেও তুই এখনও কাঁদছিস। বললাম পলাশের সাথে রিলেশনে যা । আকাশ নিজের ভালোটা বুঝে নিচ্ছে তুইও বুঝতে শেখ , না হলে আরও চোখের জল ফেলতে হবে তোকে । „
দিদির রাগী স্বরে সব শুনে সুচি চোখ মুছে নিল। ওদিকে সুমি বলে চলেছে , “ নিজে তো কষ্ট পাচ্ছিস মাকেও কাঁদাচ্ছিস। এবার যদি তুই কিছু না করিস তাহলে আমি মায়ের সাথে কথা বলে তোর বিয়ের জন্য পাত্র দেখবো। আমিও আর পারছি না রোজ রোজ তোর আর মায়ের চোখের জল দেখতে ! „ বলেই সুমি ফোনটা কেটে দিল ।
দিদির কথা শুনে ভারাক্রান্ত মনে সুচি বিছানায় শুয়ে রইলো। মাথা কাজ করছে না তার। শেষ রাতের দিকে চোখটা ঘুমে বুজে এলো।
এদিকে আকাশ অফিস থেকে বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে ঢুকে চুপচাপ খাটে শুয়ে রইলো। কোনও রকমে ডিনার করে এসে খাটে শুয়ে রইলো। সারা রাত গোধূলির প্রোপজের কথাটা মাথায় ঘোরার ফলে ভালো করে ঘুম হলো না । এখন মাকে রাজি করাতেই হবে এটাই সারারাত ভাবতে লাগলো।
পরের দিন সকালে জানালার লোহার গ্রিলে বসে থাকা জোড়া শালিক পাখির কিচিরমিচির শব্দে সুচির ঘুম ভাঙলো। আধবোজা চোখে কালকের ঘটনা মনে করলো। বুক চাইছে আবার কাঁদতে কিন্তু চোখ নিজের জল বার করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। বুকের ব্যাথাতে চোখ আর জল বার করে বুককে সাহায্য করলো না। ভারী বুক নিয়ে বাথরুমে গিয়ে মুখে জলের ঝাপটা দিলো সুচি। তারপর স্নান করে গতকালের বাসি জামা কাপড় চেঞ্জ করলো।
ঘরে এসে ফোন খুলে দেখলো পলাশের একটা গুড মর্নিং মেসেজ। সুচি দেখলো কিন্তু উত্তর দিল না। কোন কিছু শুভ নেই এই সকালে। সুচি মেসেজ সিন করেছে দেখে পলাশ লিখলো , “ আজকে কি ব্যাস্ত ? অফিস যাবে ? „
সুচি এবার সভ্যতা বজায় রাখতে লিখলো --- আজ অফিস যাবো না। মুড নেই ।
পলাশ --- তাহলে বিকালে একটা জায়গায় চলো। মুড ভালো হয়ে যাবে ।
সুচি --- Date !
পলাশ ---- Kind of
সুচি --- Ok
আগের দিন অফিসে যা হলো তারজন্য আকাশের এখনও মুড খারাপ। তাই সেও সুচির মতো অফিস কামাই করলো। রাতে অনেক ভেবে বার করেছে যে প্রথমে মাকে রাজি করাতে হবে। তারপর মাকে নিজের দলে নিয়ে বাবাকে রাজি করাতে হবে।
তাই বাবা অফিস যাওয়ার সময় যখন জিজ্ঞাসা করলো , “ আজ অফিস যাবি না ? „
তখন আকাশ বললো ,“ না , আজ ভালো লাগছে না। „
“ মাইনে কাটা যাবে কিন্তু । „
এর উত্তরে আকাশ কিছু বললো না। বাবা চলে গেলে সে রান্নাঘরে এঁটো বাসন ধুতে থাকা মায়ের হাত ধরে বললো , “ তোমার সাথে কথা আছে। এসো । „
আকাশের মা খুব অবাক হলেন , “ কি কথা ? „
“ এসো না ! বলছি। „ বলে মায়ের হাত ধরে এনে সোফায় বসালো । স্নেহা দেবী ছেলের কর্মকাণ্ড দেখে এতো অবাক হলেন যে তার মুখ দিয়ে কিছুই বার হলো না।
মাকে সোফায় বসিয়ে নিজে মায়ের পায়ের কাছে মেঝেতে বসে আদরের সুরে বললো , “ তোমার সাথে কিছু কথা ছিল । „
“ বল কি কথা ? „
“ তুমি প্লিজ রেগে যেও না । „
স্নেহা দেবী ভাবলেন ছেলে আবার নতুন কোন বাইক কিনবে হয়তো , “ তুই আবার কোন নতুন বাইক কিনবি ? „
“ বাইক টাইক না । আমি সুচির ব্যাপারে কথা বলছি । „
সুচির নাম শুনেই স্নেহা দেবী থম মেরে গেলেন। ওদিকে আকাশ মায়ের কোলে মাথা রেখে বলে চলেছে , “ প্লিজ মা , তুমি জানো আমি কি বলছি। প্লিজ রাজি হয়ে যাও । „
স্নেহা দেবী ভালো ভাবেই বুঝতে পারছেন তার ছেলে কি বলতে চাইছে কিন্তু তিনি ছেলের মুখ থেকে শুনতে চান , “ আমি কিছু বুঝতে পারছি না । কি বলছিস তুই ? „
“ প্লিজ মা , এমন করো না । তোমার দুটি পায়ে পরি। তুমি জানো ও আমাকে ভালোবাসে , আমিও ওকে ভালোবাসি। প্লিজ তুমি রাজি হয়ে যাও । „
ছেলের এইভাবে নিজের ভালোবাসা ব্যাক্ত করতে দেখে মায়ের মন গলে গেল , “ দিদি তো আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর কথা বলে না আমাদের সাথে। আমি কি করবো বল ! „
মা রাজি হচ্ছে দেখে আকাশের মুখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো , “ তুমি শুধু বাবাকে রাজি করাও । জেঠা জেঠিকে আমরা সবাই মিলে রাজি করাবো । „
ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে একটা চুমু খেয়ে স্নেহা দেবী ভাবলেন , ‘ ছেলেটা এখনও বাচ্চাই রয়ে গেছে। এখনও সেই আগের মতো আবদার করছে। যেটা সম্ভব না সেটা চাইছে । কি সুন্দর অকপটে নিজের ভালোবাসার কথা বলছে । ‚ মনে মনে ছেলেকে আশীর্বাদ করলেন তিনি , ‘ এরকমই সহজ সরল থাক সারাজীবন। , ছেলেকে প্রান ভরে আশীর্বাদ করে বললেন , “ ঠিক আছে । তোর বাবার সাথে রাতে কথা বলবো । „
মা রাজি হয়েছে দেখেই আকাশের চোখে জল চলে এলো। এবার একটা আশার আলো দেখতে পেল সে । মায়ের কথা শেষ হওয়ার আগেই সে মাকে জড়িয়ে ধরলো।
বিকালে হতেই সুচি মেকআপ করতে বসলো। কার জন্য সাজলো সেটা সুচি জানে না। নতুন জীবন শুরু করতে চলেছে সে জন্য ? নাকি আকাশের উপর রাগের জন্য সেটা সুচি জানে না। মেকআপ করে নিজের পছন্দের ড্রেস কোড কুর্তি আর জিন্স পড়ে স্কুটি নিয়ে বার হলো ।
ত্রিশ মিনিট স্কুটি চালিয়ে পলাশের দেওয়া ঠিকানা ধর্মতলার একটা হোটেল কাম রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়ালো। স্কুটিটাকে পার্ক করে ভিতরে ঢুকে দেখলো চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা টেবিলে বেশ কয়েকজন খাচ্ছে। এখন বিকাল তাই টিফিন করছে সবাই । এদের মধ্যে থেকেই একটা চেয়ার থেকে উঠে পলাশ হাত নাড়লো । সুচি মিষ্টি মুখে পলাশের দিকে এগিয়ে গেল। টেবিলটার সামনে যেতেই পলাশ বললো , “ আসতে কোন অসুবিধা হয়নি তো ! „
একটা চেয়ারে বসতে বসতে সুচি বললো , “ না তেমন না। তবে এখন ট্রাফিক বাড়ছে তাই একটু দেরি হলো । „
“ কি খাবে বলো ? „
“ তুমি খাওয়াবে ? „
“ অবশ্যই আমি খাওয়াবো। আজকের ডিনার আমার তরফ থেকে। ডিনার না বলে এটাকে টিফিন বলতে পারো। যদি তুমি চাও তাহলে রাতের ডিনারও করে যেতে পারো । „
“ না , না। রাতের খাবার বাবা মার সাথে না খেলে চিন্তা করবে । „
“ As you wish। কি খাবে বলো ? „
“ এখন হাল্কা কিছু খেলে ভালো । „
“ নুডলস অর্ডার দিই ? „
“ দাও । „
পলাশ একজন ওয়েটার কে ডেকে দুই প্লেট হাক্কা নুডলস অর্ডার দিয়ে দিল। নুডলস এলে দুজনে খাওয়া শুরু করলো। খাওয়ার মাঝে পলাশ না না কথার মাঝে বললো , “ তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে । „
“ Thank you । „
সুচি কথাটা বলতেই পলাশ পকেট থেকে একটা ছোট বাক্স বার করলো। সোনার দোকানে আংটি বিক্রি করার সময় যেমন বাক্স দেওয়া হয় এটা ঠিক তেমন । বাক্সটা বার করেই মেঝেতে একটা হাটু গেড়ে বসে আংটির কৌটোটা খুলে বললো , “ will you be my valentine ? „
পলাশের এইরূপ আচরণ আসে পাশে বসে থাকা সবার দৃষ্টি কাড়লো । সবাই এবার সুচির উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো , “ say yes , say yes । woooow । „
পলাশের এইভাবে প্রোপজ করতে দেখে সুচি ভাবলো , ‘ দিদিতো এটাই চেয়েছিল যে সে এই ছেলেটার সাথে রিলেশনে যাক। , তারপর সুচির কি হলো সুচি নিজেই জানে না। কেন সে উঠে দাড়ালো সেটা সে জানে না। কেন সে হাত বাড়িয়ে দিল সেটাও জানে না। সুচি হাত বাড়িয়ে দিতেই পলাশ তার অনামিকাতে সোনার আংটিটা বসিয়ে দিল। তারপর আশেপাশের সবাই হাততালি দিয়ে শুভেচ্ছা দিল।
হঠাৎ করে কি হলো সেটা সুচি বুঝতে পেরে মাথা নিচু করে টেবিলে বসে পড়লো। যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন সবাই সুখী শুধু সুচি ছাড়া। সুচি কিসে সুখী হবে সেটা কারোর যায় আসে না। বাকি সবাই খুশী হলেই হলো। সুচি টেবিলে বসলে পলাশও টেবিলে বসে পড়লো , “ তুমি জানো না আজ আমি কতো খুশি। ....
পলাশের কথা আর সুচির কানে যাচ্ছে না। এখন তার মাথায় চলছে দিদির দেওয়া হুমকির কথা। আকাশকে গোধূলির দেওয়া গোলাপের কথা। আর তারপর আকাশের thank you বলা।
খাওয়া হয়ে গেলে পলাশ বললো , “ গঙ্গা পাড়ে গিয়ে বসবে ? খুব মিঠে হাওয়া দেয় ওখানে। „
সুচি সম্মতি সূচক মাথা নাড়লে পলাশ বললো , “ তার আগে তোমার জন্য আরও একটা সারপ্রাইজ আছে। উপরের ঘরে আছে। চলো । „
সুচি হাত ধুয়ে , মুখে জল ছিটিয়ে এসে সিড়ি দিয়ে পলাশের পাশে পাশে হেটে উপরে উঠে এলো । একটা করিডোর ঘুরে আর একটাতে আসতেই সুচি বুঝতে পারলো পলাশের অভিসন্ধি। বুঝতে পেরেই আকাশের উপর রাগ আরও বেড়ে গেল।
কিছুক্ষণ পরেই একটা ঘরের সামনে এসে পলাশ দরজায় চাবি ঢুকিয়ে দরজা খুলে বললো , “ এসো । „
সুচি ঘরে ঢুকলে পলাশও ঘরে ঢুকে এলো। দরজা না লাগিয়ে ভেজানো অবস্থাতেই পলাশ সুচিকে টেনে তার ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দিল।
কতক্ষণ ওইভাবে ছিল সেটা সুচি জানে না। কিন্তু পলাশের চুলে হাত দিতেই সুচির মনে হলো এ চুল অন্য কারোর। নিজের ঠোঁটের ভিতর পলাশের ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে সুচির মনে হলো , ‘ এ ঠোঁট পরপুরুষের। , সঙ্গে সঙ্গে পলাশকে ঠেলে সরিয়ে সুচি বললো , “ সরি পলাশ । এ আমি পারবো না । „
কথাটা বলে সুচি হাতের আংটিটা খুলতে লাগলো। পলাশ বড়ো বড়ো চোখ বার করে সুচির আংটি খোলা দেখতে লাগলো। আংটি খুলে পলাশের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে সুচি বললো , “ আমায় ক্ষমা করো তুমি । আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি। „
পলাশের মুখে শয়তানের হাসি ফুটে উঠলো , “ সে তুই অন্য কাউকে ভালোবাস । তাতে আমার কোন সমস্যা নেই । শুধু আজ রাতটা আমার বিছানা গরম করে যা । „
পলাশের এ হেন কথা শুনে সুচির চোখ দুটো রাগে জ্বলে উঠলো , “ কি বলছো এসব ! „
“ ঠিক বলছি । তোর জন্য অনেক খরচা করেছি। সব টাকা অসুল করে ছাড়বো । „ বলে সুচির হাতটা ধরে টেনে বিছানায় ফেলতে গেল ।
সুচির চড় খেয়ে শুধু একজনই নিজের হুশ ধরে রাখতে পারে। আর সেই একজনের নাম পলাশ নয়। তাই পলাশও পারলো না সুচির চড় সহ্য করতে। ঠাসসসসস করে একটা চড় পলাশের গালের উপর পড়তেই তার চোখে অন্ধকার হয়ে এলো । কিছু বোঝার আগে সুচি বললো , “ লম্পট , আগে মেয়েদের সম্মান করতে শেখ । „ বলে হাতের আংটিটা একদিকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বেরিয়ে গেল ।
চড়টা সয়ে এলে পলাশ গালে হাত বুলিয়ে দেখলো এখনও গরম আছে । রাগে বিড়বিড় করতে লাগলো সে , “ তোর রুপের এতোই অহংকার ! তুই আমাকে চড় মারলি ! „
সুচি এর কিছুই শুনতে পেলো না কারন সে ততক্ষণে নিচে নেমে এসেছে। নিচে নেমে স্কুটি চালিয়ে রাস্তায় নেমে এলো সে। পলাশের করা অপমানে এখনও মাথা রাগে ফুটছে। কোনও রকমে স্কুটি চালিয়ে সোসাইটিতে ফিরে নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়লো। বাথরুমে এসে চোখে মুখে জল ছিটিয়ে এসে নিজের ঘরে এলো।
নিজের ঘরে এসে বিছানায় শুয়ে মোবাইলে নতুন ফ্ল্যাট দেখতে বসলো। কোন ব্যাঙ্ক কত সুদে হোম লোন দিচ্ছে সেটা দেখতে লাগলো। সবকিছু দেখতে দেখতে কখন খাওয়ার সময় এলো সেটা সুচি বুঝতে পারলো না। টেবিলে এসে চুপচাপ নিজের খাওয়া হয়ে গেলে বাবাকে উদ্দেশ্য করে বললো , “ তুমি বলেছিলে না যে বাড়ি বদলাবে ! আমি একটা 2bhk দেখেছি । আমাদের তিনজনের হয়ে যাবে । হোম লোনের জন্য এপ্লাই করবো কি না বলো ? „
সুচির বাবা মেয়ের কথা শুনে থম মেরে গেলেন। কি বলবেন ভেবে পেলেন না। সুচি বললো , “ কি ভাবছো । „
সুচির বাবা কোন রকমে বললেন , “ হঠাৎ এইসব ! „
“ আমার এখানে থাকতে আর বিন্দুমাত্র ভালো লাগছে না। তুমি ভেবে দেখো । „ বলে সুচি টেবিল থেকে উঠে নিজের ঘরে চলে গেল।
সুচি চলে যেতেই সুচির মায়ের চোখ দুই গালে ভেসে গেল , “ আমি আর পারছি না ওকে এইভাবে দেখতে। „ কথাটা বলতেই একফোটা চোখের জল তার খাবার বাসনে তরকারি মাখা ভাতের উপর পড়লো ।
সমরেশ বাবু আগেই থম মেরে গেছিলেন। এখন বোবা হয়ে গেলেন। এই কয় বছরে তিনিও খুব কষ্ট পেয়েছেন। মেয়ের গালের যে দুটো টোল তার রুপের মাধুর্য ছিল ! সেই দুটো টোল এখন কবরের গর্তের মতো মৃত মনে হয়। এখন তিনি আর মেয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারেন না। বারবার নিজেকে বলেছেন , ‘ এ আমি চাই নি। এরকমটা আমি কখনোই চাই নি । ,
কোনোরকমে খাওয়া শেষ করে হাত ধুয়ে তিনি ফ্ল্যাটের বাইরে যেতে লাগলেন। স্বামীকে দেখে সুচির মা চোখের জল মুছে জিজ্ঞাসা করলেন , “ কোথায় যাচ্ছো এতো রাতে ? „
“ আকাশের বাবার কাছে । „
এদিকে আকাশ তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেয়ে ঘরে এসে শুয়েছে । মা বলেছিল খাবার পরেই কথাটা পাড়বেন। সেই আশাতেই সে অপেক্ষা করছে। ডিনার করার পর সবকিছু গোছাতে গোছাতে ছেলের কথা রাখতে স্নেহা দেবী স্বামীর উদ্দেশ্যে বললেন , “ বলছি.....
আকাশের মায়ের কথা শেষ হওয়ার আগেই ডিং ডং শব্দ করে ঘরের ডোরবেল বেজে উঠলো ।
The following 16 users Like Bichitro's post:16 users Like Bichitro's post
• a-man, Abid Ahmed, Baban, Bumba_1, ddey333, Enora, issan169, Kallol, raja05, Roy234, Sanjay Sen, Siraz, SubtleKN, Tiger, Voboghure, অভিমানী হিংস্র প্রেমিক।
Posts: 18,202
Threads: 471
Likes Received: 65,645 in 27,694 posts
Likes Given: 23,815
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,266
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,349 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
13-12-2021, 10:11 AM
(This post was last modified: 13-12-2021, 10:14 AM by Bumba_1. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
পলাশ আর সূচির আড়ি হয়ে গেলো .. এটা খুব ভালো কথা (যদি না ভবিষ্যতে পলাশ রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য নতুন কোনো ফন্দি আঁটে)। অফিস থেকে ফেরার পথে সুচির মনের মধ্যে চলা দ্বন্দ্ব, দিদির কথায় influenced হয়ে পলাশের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া এবং হোটেলের উপরের ঘরে ওষ্ঠচুম্বনের মুহূর্তে সুচির মানসিক পরিবর্তন .. দারুনভাবে ফুটিয়ে তুলেছো।
রইলো বাকি গোধূলি আর আকাশের সম্পর্ক .. আকাশের দিক থেকে যখন কোনো সাড়া নেই, উপরন্তু গোধূলির কোনো একটা দোষ যদি আকাশের মা-বাবার চোখে পড়ে যায় তাহলেই কেল্লাফতে ..
তবে BBA/MBA পাশ করে নিজের বাবার কোম্পানিতে পিওনের চাকরি করাটা সস্তার ড্রামা ছাড়া আর কিছুই নয়। এক্ষেত্রে আকাশকে আরেকটু উঁচু কোনো কর্মচারীর পদে নিযুক্ত করা হলে বোধহয় ব্যাপারটা বেশি যুক্তিযুক্ত হতো। নিচ থেকে উপরে ওঠা ভালো কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতাটাও তো দেখতে হবে।
এত রাতে বেল টিপে কে এলো কে জানে !! সূচির মা-বাবা নাকি গোধূলি .. খেলা জমে উঠেছে।
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,204 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,738
13-12-2021, 10:28 AM
(This post was last modified: 13-12-2021, 10:35 AM by Baban. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
বেশ ভালো... কয়েকটা জায়গা দুর্দান্ত ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, আবার কয়েকটা সত্যিই নাটকীয়.... মানে ওই সিনেমা মার্কা....... যেন পেছনে sad song বাজছে. তবে মোটের ওপর বেশ ভালো.... কিন্তু কিছু ব্যাপার খুব দ্রুত দ্রুত ঘটে গেল.. এটা যদি শর্ট স্টোরি হতো তাহলে কোনো ব্যাপার নয় কিন্তু উপন্যাস এর আসল ব্যাপারই হলো মুহুর্তকে যথাযোগ্য ভাবে ফুটিয়ে তোলা. লেখকের লোভ লালসা ওই মুহুর্ত গুলো পরিস্থিতি গুলো সৃষ্টি করতেই... সেটা যদি হুড়মুড় করে লিখে দেওয়া হয় তবে কেমন কেমন লাগে....... দ্বিতীয় নায়িকার আবির্ভাব আর প্রপোজ আবার ভিলেনের শয়তানি খুব দ্রুত হয়ে গেলো.
ওই বোকাচো#*! ভিলেন পলাশ এতো ফিল্মি আর জিসম কা ভুখা কে জানতো? আরে খেলিয়ে তুলবে তা না.... প্রথমেই ওসব চাই...  (গল্পের খাতিরে বলছি, ভিলেন জোরদার না হলে জমে  )
তবে ব্যাটার শেষ ওই হুমকি থেকে এবার বুঝছি... তোমার প্রোফাইলে এই গল্পকে রিভেঞ্জ সিরিজ এর মধ্যে কেন ফেলেছো.... এটা কজন লক্ষ করেছে জানিনা.
তাইতো.....বাবারে ভয় করছে...!!
Posts: 1,256
Threads: 2
Likes Received: 2,239 in 1,023 posts
Likes Given: 1,629
Joined: Jul 2021
Reputation:
659
গোধূলির আগমন • • পলাশের গমন • • সুচির মনোকষ্ট • • আকাশের সাহস সঞ্চার • •
অনেক কিছু ছিল এই পর্বে, তবে গোধূলির entry আরেকটু ধামাকেদার হলে ভালো লাগতো। অপ্রয়োজনীয় পারস্পরিক কথোপকথনে কাটছাঁট করে main protagonists দের body language বাড়াতে হবে। তাহলে গল্প দীর্ঘায়িত হবে না আবার পড়তেও খুব ভালো লাগবে।
আকাশ আর গোধূলির বিবাহের এই সিদ্ধান্তে বাকিদের অর্থাৎ আকাশ-সুচিত্রার শুভাকাঙ্খীদের আপত্তি তো আছেই, তবে কথাবার্তা শুনে যা মনে হলো এই বিয়ে নিয়ে সবথেকে বেশি আপত্তি এবং সংশয় আছে আকাশের বাবার মনে।
keep going
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,559 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(13-12-2021, 10:05 AM)ddey333 Wrote: অনেক কিছু ঘটে গেলো ....
চারটে শব্দের কমেন্ট হলেও মানেটা গভীর... মানেটা বুঝতে পেরেছি এই আমার ভাগ্য...
এতো কিছু একসাথে ঘটিয়ে দিয়েছি এটা ইচ্ছাকৃত ভুল বলতে পারেন... তবে এরকম ভুল আর কখনো করবো না
❤❤❤
•
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,559 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(13-12-2021, 10:11 AM)Bumba_1 Wrote: পলাশ আর সূচির আড়ি হয়ে গেলো .. এটা খুব ভালো কথা (যদি না ভবিষ্যতে পলাশ রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য নতুন কোনো ফন্দি আঁটে)। অফিস থেকে ফেরার পথে সুচির মনের মধ্যে চলা দ্বন্দ্ব, দিদির কথায় influenced হয়ে পলাশের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া এবং হোটেলের উপরের ঘরে ওষ্ঠচুম্বনের মুহূর্তে সুচির মানসিক পরিবর্তন .. দারুনভাবে ফুটিয়ে তুলেছো।
রইলো বাকি গোধূলি আর আকাশের সম্পর্ক .. আকাশের দিক থেকে যখন কোনো সাড়া নেই, উপরন্তু গোধূলির কোনো একটা দোষ যদি আকাশের মা-বাবার চোখে পড়ে যায় তাহলেই কেল্লাফতে ..
তবে BBA/MBA পাশ করে নিজের বাবার কোম্পানিতে পিওনের চাকরি করাটা সস্তার ড্রামা ছাড়া আর কিছুই নয়। এক্ষেত্রে আকাশকে আরেকটু উঁচু কোনো কর্মচারীর পদে নিযুক্ত করা হলে বোধহয় ব্যাপারটা বেশি যুক্তিযুক্ত হতো। নিচ থেকে উপরে ওঠা ভালো কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতাটাও তো দেখতে হবে।
এত রাতে বেল টিপে কে এলো কে জানে !! সূচির মা-বাবা নাকি গোধূলি .. খেলা জমে উঠেছে।
ওটা আমারও সস্তার ড্রামা মনে হয়েছিল... কিন্তু বর্তমান সমাজ এর থেকেও খারাপ ... তাই ওটা দিয়েছি
কে বেল বাজালো সেটা পরের আপডেটে বিস্তারিত বর্ণনা পাবেন
(13-12-2021, 10:28 AM)Baban Wrote: বেশ ভালো... কয়েকটা জায়গা দুর্দান্ত ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, আবার কয়েকটা সত্যিই নাটকীয়.... মানে ওই সিনেমা মার্কা....... যেন পেছনে sad song বাজছে. তবে মোটের ওপর বেশ ভালো.... কিন্তু কিছু ব্যাপার খুব দ্রুত দ্রুত ঘটে গেল.. এটা যদি শর্ট স্টোরি হতো তাহলে কোনো ব্যাপার নয় কিন্তু উপন্যাস এর আসল ব্যাপারই হলো মুহুর্তকে যথাযোগ্য ভাবে ফুটিয়ে তোলা. লেখকের লোভ লালসা ওই মুহুর্ত গুলো পরিস্থিতি গুলো সৃষ্টি করতেই... সেটা যদি হুড়মুড় করে লিখে দেওয়া হয় তবে কেমন কেমন লাগে....... দ্বিতীয় নায়িকার আবির্ভাব আর প্রপোজ আবার ভিলেনের শয়তানি খুব দ্রুত হয়ে গেলো.
ওই বোকাচো#*! ভিলেন পলাশ এতো ফিল্মি আর জিসম কা ভুখা কে জানতো? আরে খেলিয়ে তুলবে তা না.... প্রথমেই ওসব চাই... (গল্পের খাতিরে বলছি, ভিলেন জোরদার না হলে জমে )
তবে ব্যাটার শেষ ওই হুমকি থেকে এবার বুঝছি... তোমার প্রোফাইলে এই গল্পকে রিভেঞ্জ সিরিজ এর মধ্যে কেন ফেলেছো.... এটা কজন লক্ষ করেছে জানিনা.
তাইতো.....বাবারে ভয় করছে...!!
রিভেঞ্জ সিরিজ
(13-12-2021, 10:56 AM)Sanjay Sen Wrote: গোধূলির আগমন • • পলাশের গমন • • সুচির মনোকষ্ট • • আকাশের সাহস সঞ্চার • •
অনেক কিছু ছিল এই পর্বে, তবে গোধূলির entry আরেকটু ধামাকেদার হলে ভালো লাগতো। অপ্রয়োজনীয় পারস্পরিক কথোপকথনে কাটছাঁট করে main protagonists দের body language বাড়াতে হবে। তাহলে গল্প দীর্ঘায়িত হবে না আবার পড়তেও খুব ভালো লাগবে।
আকাশ আর গোধূলির বিবাহের এই সিদ্ধান্তে বাকিদের অর্থাৎ আকাশ-সুচিত্রার শুভাকাঙ্খীদের আপত্তি তো আছেই, তবে কথাবার্তা শুনে যা মনে হলো এই বিয়ে নিয়ে সবথেকে বেশি আপত্তি এবং সংশয় আছে আকাশের বাবার মনে।
keep going
আপনাদের তিনজনের কমেন্টের রিপ্লাই একসাথে দিচ্ছি কারণ উত্তর একই....
এতো হুটোপুটি করে এতো কিছু ঘটিয়ে দেওয়ার পিছনের অনেক গুলো কারনের মধ্যে একটা কারণ বাবান দা আর বুম্বাদা জানেন। আরও অনেক অজুহাত দেওয়া যেত কিন্তু দেবো না... এই আপডেট টাই এডিট করে আরও ভালো করে এখনও লেখা যেত কিন্তু লিখবো না।
একজনের কথায় ভেঙে পড়ে হুটোপুটি করে লিখে ফেলাটা কতো বড়ো ভুল সেটা মনে রাখতে হবে আজীবন । পরবর্তী আপডেট থেকে কোনও রকম হুটোপুটি করে লিখবো না। আর এই আপডেটটা এইরকমই থাকুক নিজের বেড়ে চলার পথে এক অসফলতা হিসাবে.. এটা সারাজীবন এক শিক্ষা হিসাবে থাকুক
❤❤❤
•
Posts: 666
Threads: 0
Likes Received: 733 in 436 posts
Likes Given: 1,167
Joined: Mar 2021
Reputation:
65
টান টান উত্তেজনা পড়তে পড়তে কখন যে শেষ হয়ে গেলো বুঝতেই পারিনি। আকাশ যখন গোধূলি কে ভালোবাসে না, তখন গোলাপ ফুল টা নিতে গেলো কেন? সুচি যে শিক্ষা পেলো মনে হয়না এরপর আর অন্য কারোর সাথে রিলেশনে যাওয়ার ভুল করবে। এবার আকাশের বাবা আর সুচির বাবা দুজনে মিলে ওদের বিয়ের শানাই টা বাজিয়ে দিলে বাচা যায়। নেমন্তন্ন করতে ভুলোনা যেন ।    লাাাাইক রেেেেপু রইল।
PROUD TO BE KAAFIR
Posts: 1,227
Threads: 0
Likes Received: 976 in 706 posts
Likes Given: 1,681
Joined: Jul 2020
Reputation:
66
anek kichu hoie galo eksathe
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,559 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(13-12-2021, 12:03 PM)Kallol Wrote: টান টান উত্তেজনা পড়তে পড়তে কখন যে শেষ হয়ে গেলো বুঝতেই পারিনি। আকাশ যখন গোধূলি কে ভালোবাসে না, তখন গোলাপ ফুল টা নিতে গেলো কেন? সুচি যে শিক্ষা পেলো মনে হয়না এরপর আর অন্য কারোর সাথে রিলেশনে যাওয়ার ভুল করবে। এবার আকাশের বাবা আর সুচির বাবা দুজনে মিলে ওদের বিয়ের শানাই টা বাজিয়ে দিলে বাচা যায়। নেমন্তন্ন করতে ভুলোনা যেন ।   লাাাাইক রেেেেপু রইল।
আকাশ গোলাপ ফুলটা নিতে গেল কেন?.... ভালো প্রশ্ন  ... মনে হয় পরবর্তী আপডেট গুলোতে এর উত্তর দিতে পারবো
❤❤❤
•
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,559 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(13-12-2021, 12:44 PM)raja05 Wrote: anek kichu hoie galo eksathe
এটা নিজ গুনে ক্ষমা করে দেবেন  ... পরবর্তী আপডেট গুলতে এরকম আর কখনো হবে না
❤❤❤
•
Posts: 18,202
Threads: 471
Likes Received: 65,645 in 27,694 posts
Likes Given: 23,815
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,266
(13-12-2021, 11:17 AM)Bichitravirya Wrote: চারটে শব্দের কমেন্ট হলেও মানেটা গভীর... মানেটা বুঝতে পেরেছি এই আমার ভাগ্য...
এতো কিছু একসাথে ঘটিয়ে দিয়েছি এটা ইচ্ছাকৃত ভুল বলতে পারেন... তবে এরকম ভুল আর কখনো করবো না
❤❤❤
সব মিলিয়ে আমার কিন্তু দারুন লেগেছে , কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল জানিনা।
জীবনের সবকিছুই আপেক্ষিক ....
Posts: 1,227
Threads: 0
Likes Received: 976 in 706 posts
Likes Given: 1,681
Joined: Jul 2020
Reputation:
66
(13-12-2021, 12:53 PM)Bichitravirya Wrote: এটা নিজ গুনে ক্ষমা করে দেবেন ... পরবর্তী আপডেট গুলতে এরকম আর কখনো হবে না
❤❤❤
are pagla khama r kichu nei.......ato kichu eksathe holo......kheye nilam akhon jabor katchi.....but oi byata polash k ektu dekho.....ekta thappad e kichu hobe na
•
Posts: 1,227
Threads: 0
Likes Received: 976 in 706 posts
Likes Given: 1,681
Joined: Jul 2020
Reputation:
66
akash r baba ebar full form e asbe mone hoche.....r oi chess board r byapar tao samne asbe
•
Posts: 163
Threads: 0
Likes Received: 190 in 128 posts
Likes Given: 10
Joined: Sep 2021
Reputation:
5
আপনার সৃষ্ট ভোজনে,
বড়ই তৃপ্তি পাইলাম ।
তোমারেই চেয়েছি,
শতরূপে শতবার ,
নিয়মে অনিয়মে ।
Posts: 780
Threads: 0
Likes Received: 1,594 in 922 posts
Likes Given: 1,444
Joined: Jan 2021
Reputation:
188
সময় বড় প্রতিকূল আকাশের জন্যে। তার নিজেকেই শক্ত মন নিয়ে অগ্রসর হতে হবে তার চোখের তারা সুচির জন্যে, গোধূলি বেলা যে বয়ে আসছে তার সামনে দ্রুত পায়ে।
সুচির দিক থেকে আর কোনো সমস্যা নেই কিন্তু সামনে আকাশকে বিস্তর পথ পাড়ি দিতে হবে.....
বাউল হইয়া একতারা লইয়া
সাঁঝের আঁধারে আমি খুঁজিয়া বেড়াবো
আমি তোমারে বন্ধু ভালো যে বাসিবো
বন্ধুরে এ এ এ এ এ .........
Posts: 780
Threads: 0
Likes Received: 1,594 in 922 posts
Likes Given: 1,444
Joined: Jan 2021
Reputation:
188
(13-12-2021, 10:11 AM)Bumba_1 Wrote: পলাশ আর সূচির আড়ি হয়ে গেলো .. এটা খুব ভালো কথা (যদি না ভবিষ্যতে পলাশ রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য নতুন কোনো ফন্দি আঁটে)। অফিস থেকে ফেরার পথে সুচির মনের মধ্যে চলা দ্বন্দ্ব, দিদির কথায় influenced হয়ে পলাশের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া এবং হোটেলের উপরের ঘরে ওষ্ঠচুম্বনের মুহূর্তে সুচির মানসিক পরিবর্তন .. দারুনভাবে ফুটিয়ে তুলেছো।
রইলো বাকি গোধূলি আর আকাশের সম্পর্ক .. আকাশের দিক থেকে যখন কোনো সাড়া নেই, উপরন্তু গোধূলির কোনো একটা দোষ যদি আকাশের মা-বাবার চোখে পড়ে যায় তাহলেই কেল্লাফতে ..
তবে BBA/MBA পাশ করে নিজের বাবার কোম্পানিতে পিওনের চাকরি করাটা সস্তার ড্রামা ছাড়া আর কিছুই নয়। এক্ষেত্রে আকাশকে আরেকটু উঁচু কোনো কর্মচারীর পদে নিযুক্ত করা হলে বোধহয় ব্যাপারটা বেশি যুক্তিযুক্ত হতো। নিচ থেকে উপরে ওঠা ভালো কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতাটাও তো দেখতে হবে।
এত রাতে বেল টিপে কে এলো কে জানে !! সূচির মা-বাবা নাকি গোধূলি .. খেলা জমে উঠেছে।
পলাশ ছাড় দেবেনা সহজে মনে হয়, তাই আকাশকে তার মোকাবেলার জন্যে প্রস্তুত থাকতে হবে.........
•
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,349 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
13-12-2021, 02:14 PM
(This post was last modified: 13-12-2021, 02:21 PM by Bumba_1. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(13-12-2021, 11:29 AM)Bichitravirya Wrote: ওটা আমারও সস্তার ড্রামা মনে হয়েছিল... কিন্তু বর্তমান সমাজ এর থেকেও খারাপ ... তাই ওটা দিয়েছি
কে বেল বাজালো সেটা পরের আপডেটে বিস্তারিত বর্ণনা পাবেন
আপনাদের তিনজনের কমেন্টের রিপ্লাই একসাথে দিচ্ছি কারণ উত্তর একই....
এতো হুটোপুটি করে এতো কিছু ঘটিয়ে দেওয়ার পিছনের অনেক গুলো কারনের মধ্যে একটা কারণ বাবান দা আর বুম্বাদা জানেন। আরও অনেক অজুহাত দেওয়া যেত কিন্তু দেবো না... এই আপডেট টাই এডিট করে আরও ভালো করে এখনও লেখা যেত কিন্তু লিখবো না।
একজনের কথায় ভেঙে পড়ে হুটোপুটি করে লিখে ফেলাটা কতো বড়ো ভুল সেটা মনে রাখতে হবে আজীবন । পরবর্তী আপডেট থেকে কোনও রকম হুটোপুটি করে লিখবো না। আর এই আপডেটটা এইরকমই থাকুক নিজের বেড়ে চলার পথে এক অসফলতা হিসাবে.. এটা সারাজীবন এক শিক্ষা হিসাবে থাকুক
❤❤❤
গুলিয়ে ফেললে চলবে না .. আমি কিন্তু একবারও বলিনি তাড়াহুড়ো করে ফেলেছো এই পর্বে .. বরং আমার তো বেশ ভালই লেগেছে সমগ্র পর্বটি .. তবে ওই যে বাবান বললো পলাশ আর সূচির সিকোয়েন্সের কথা .. ওই ব্যাপারে আরেকটু যত্নশীল হতে পারতে। আর আমি তো তোমাকে তখনই বলেছিলাম একজনের কথায় ভেঙে না পড়ে সবাই যেটা খাচ্ছে সেভাবেই এগোনো ভালো।
by the way তোমার কথা মতো সমাজে এখনো এতো অবক্ষয় হয়নি যে MBA pass out পিওনের চাকরি করবে। আমাদের অফিসে যে ক'জন ব্যক্তি পিওনের কাজ করেন তারা সবাই নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সেই কাজ পেয়েছেন। দু'একটা জায়গায় ব্যতিক্রম থাকতেই পারে।
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,559 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(13-12-2021, 12:57 PM)ddey333 Wrote: সব মিলিয়ে আমার কিন্তু দারুন লেগেছে , কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল জানিনা।
জীবনের সবকিছুই আপেক্ষিক ....
তাহলে এবার থেকে আপনি একটু বড়ো কমেন্ট করবেন বুম্বাদা, বাবানদা দের মতো  .... আমার অতো ছোট কমেন্ট বুঝতে অসুবিধা হয়
❤❤❤
•
|