Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL বন্ধু - একটি ছোট্ট গল্প
#41
(05-02-2021, 08:33 PM)pinuram Wrote: তুমি "ফ্যান্টাস্টিক" এর মতন ছোট গল্পের একটা থ্রেড খোলো, তাতে তোমার সব ছোট গল্প গুলো দাও তাতে অনেক সুবিধে হবে! তাতে সবাই এক সাথে তোমার সব গল্প পড়তে পারবে !!!!!!

হ্যা দাদা আমিও সেটাই ভাবছিলাম... তাই নতুন থ্রেড খুলেছি. এবার পুরোনো গুলো ওখানে পোস্ট করবো আর নতুন কিছু লিখলে সেখানেই দেবো!❤
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#42
এই প্রথম আপনার লেখা পড়লাম। আমি এদের খুব ভালোবাসি। আমি পেয়েছিলাম দুই বন্ধুকে। কিন্তু একজনকে হারিয়ে ফেলেছিলাম। সেদিন ভীষণ ভীষণ কষ্ট হয়েছিল । শুরুতে আপনার গল্প পড়ে কষ্ট পেলেও শেষটায় ভালো লাগাতে মন ভরে গেল। খুব সুন্দর লিখেছেন। আস্তে আস্তে আপনার সব গল্প পড়ে ফেলবো।
[+] 1 user Likes Tiyasha Sen's post
Like Reply
#43
(18-03-2021, 08:00 PM)Tiyasha Sen Wrote: এই প্রথম আপনার লেখা পড়লাম। আমি এদের খুব ভালোবাসি। আমি পেয়েছিলাম দুই বন্ধুকে। কিন্তু একজনকে হারিয়ে ফেলেছিলাম। সেদিন ভীষণ ভীষণ কষ্ট হয়েছিল । শুরুতে আপনার গল্প পড়ে কষ্ট পেলেও শেষটায় ভালো লাগাতে মন ভরে গেল। খুব সুন্দর লিখেছেন। আস্তে আস্তে আপনার সব গল্প পড়ে ফেলবো।

নতুন একজন পাঠিকা বন্ধু পেলাম... ধন্যবাদ ❤জেনে ভালো লাগলো আপনার ভালো লেগেছে এই গল্পটা. সত্যি এই প্রাণীরাই আমাদের আসল বন্ধু.. কারণ এরা বিশ্বাস ভাঙতে জানেনা.. জানে ভালোবাসতে.

জানিনা আপনি অ্যাডাল্ট গল্প সেইভাবে পছন্দ করেন কিনা... তাই আমার অ্যাডাল্ট গল্পগুলি আপনাকে পড়তে জোর করবোনা... কিন্তু আমার ছোট গল্প গুলি সময় পেলে পড়বেন. বন্ধুর মতো সেগুলিও আশা করি ভালো লাগবে আপনার.
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#44
(18-03-2021, 08:18 PM)Baban Wrote: নতুন একজন পাঠিকা বন্ধু পেলাম... ধন্যবাদ ❤জেনে ভালো লাগলো আপনার ভালো লেগেছে এই গল্পটা. সত্যি এই প্রাণীরাই আমাদের আসল বন্ধু.. কারণ এরা বিশ্বাস ভাঙতে জানেনা.. জানে ভালোবাসতে.

জানিনা আপনি অ্যাডাল্ট গল্প সেইভাবে পছন্দ করেন কিনা... তাই আমার অ্যাডাল্ট গল্পগুলি আপনাকে পড়তে জোর করবোনা... কিন্তু আমার ছোট গল্প গুলি সময় পেলে পড়বেন. বন্ধুর মতো সেগুলিও আশা করি ভালো লাগবে আপনার.

এডাল্ট গল্প পড়তে খুুুবই ভালোবাাসি। পড়বো সবই।  Shy
[+] 1 user Likes Tiyasha Sen's post
Like Reply
#45
(18-03-2021, 08:51 PM)Tiyasha Sen Wrote: এডাল্ট গল্প পড়তে খুুুবই ভালোবাাসি। পড়বো সবই।  Shy

ধন্যবাদ... তাহলে নিশ্চই পড়ুন.❤ আপনার মতামতের অপেক্ষা থাকবে ❤
Like Reply
#46
সত্যিই বাবান দা আপনার লেখার হাত অসাধারণ, মূল ধারাতেও আপনি অনন্য. গল্পটা খুবই হৃদয়স্পর্শী.
আপনার এই গল্পটা পড়ে আমার মনে পড়ে গেলো শ্রীলেখা মিত্রের কথা. তিনি যথেষ্ট মানবিক বলেই মনে হয়েছে এসব সংবাদ মারফত, আর এই মানবিকতা দেখতে গিয়ে তিনি যথেষ্ট হেনস্থায় পড়েছেন এবং মানুষ নামক দুপেয়ে প্রাণীগুলোর গালমন্দ শুনেছেন https://www.youtube.com/watch?v=v8IjoiuCHek
তিনি তাদের বন্ধু হয়েই বিপদে পড়েছেন.
যদিও আমি ওপার বাংলার লোক নোই কিন্তু বর্তমান মিডিয়ার যুগে খবরাখবর পেতে তো তেমন অসুবিধে হয়না.
মনে হয়েছে আমি যদি সেখানে থাকতাম তাহলে আমি নিশ্চই এসব ব্যাপারে তার সমর্থনে পাশে দাঁড়াতাম. আর আমি নিজেও যতদূর সম্ভব কিছু করে থাকি রাস্তার অসহায় প্রাণীগুলোর জন্যে আর সেকারণে আমাকেও কখনো না কখনো শুনতে হয় তেমনই নেতিবাচক কথাবার্তা.
Like Reply
#47
পাখি যেমন আকাশের, গান যেমন সকলের তেমনি গল্পও সকলের. হ্যা হয়তো ভাষা আলাদা কিন্তু ভেতরের কথা গুলো সবার জন্য. তাই এই গল্পও সবার জন্য. আমি এমন অনেক মানুষ দেখেছি যারা খাবার জলে ফেলে দেবে কিন্তু ওই ক্ষুদার্থ প্রাণীদের একটুও দেবেনা. আবার এমন মানুষও দেখেছি যারা দূর থেকে এসে নিজে ডেকে ডেকে এদের খাইয়ে যায়. এবারে দু পক্ষই মানুষ নামে পরিচিত. কিন্তু মান আর হুশ কার আছে সেটা নিজেরাই বিচার করুন.

আর দ্বিতীয়ত আমাদের বড়ো একটা দোষ আমরা সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীদের অভিনয় থেকে তাদের বিচার করি. মানুষটা কেমন তা নিয়ে কতটা ভাবি? যে কার সাথে ঘুরছে, কার সাথে প্রেম করছে, কার সাথে শুচ্ছে এসব জানার কথা বলছিনা... সে সত্যি কেমন তার কথা বলছি. শ্রীলেখা ম্যাডাম কে দেখলে অনেকে ইয়ার্কি মারে, আবার তার পুরাতন কাজ দেখে তাকে অশ্লীল ভাবেও দেখে কিন্তু আসল শ্রীলেখা কেমন? তার একটা রূপ ওই ভিডিওতে দেখতে পাবো আমরা. নিজে ওই কুকুর গুলোকে খাইয়ে দিচ্ছে আর যারা ভদ্রলোক তারা....... না থাক.. কিছু বলবোনা. এই ঘটনা বোধহয় সব জায়গার..... এপার ওপার সব্বার.
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#48
(19-04-2021, 01:17 PM)Baban Wrote: পাখি যেমন আকাশের, গান যেমন সকলের তেমনি গল্পও সকলের. হ্যা হয়তো ভাষা আলাদা কিন্তু ভেতরের কথা গুলো সবার জন্য. তাই এই গল্পও সবার জন্য. আমি এমন অনেক মানুষ দেখেছি যারা খাবার জলে ফেলে দেবে কিন্তু ওই ক্ষুদার্থ প্রাণীদের একটুও দেবেনা. আবার এমন মানুষও দেখেছি যারা দূর থেকে এসে নিজে ডেকে ডেকে এদের খাইয়ে যায়. এবারে দু পক্ষই মানুষ নামে পরিচিত. কিন্তু মান আর হুশ কার আছে সেটা নিজেরাই বিচার করুন.

আর দ্বিতীয়ত আমাদের বড়ো একটা দোষ আমরা সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীদের অভিনয় থেকে তাদের বিচার করি. মানুষটা কেমন তা নিয়ে কতটা ভাবি? যে কার সাথে ঘুরছে, কার সাথে প্রেম করছে, কার সাথে শুচ্ছে এসব জানার কথা বলছিনা... সে সত্যি কেমন তার কথা বলছি. শ্রীলেখা ম্যাডাম কে দেখলে অনেকে ইয়ার্কি মারে, আবার তার পুরাতন কাজ দেখে তাকে অশ্লীল ভাবেও দেখে কিন্তু আসল শ্রীলেখা কেমন? তার একটা রূপ ওই ভিডিওতে দেখতে পাবো আমরা. নিজে ওই কুকুর গুলোকে খাইয়ে দিচ্ছে আর যারা ভদ্রলোক তারা....... না থাক..   কিছু বলবোনা. এই ঘটনা বোধহয় সব জায়গার..... এপার ওপার সব্বার.

no comments......  Sad
Like Reply
#49
Many many thanks for this story.
[+] 1 user Likes RANA ROY's post
Like Reply
#50
(15-06-2021, 04:59 PM)RANA ROY Wrote: Many many thanks for this story.

Thanks..... Its my best creation  Heart
Like Reply
#51
একটা অভিযোগ আছে --- এটা আপনি কোন পত্রিকায় দিলেন না কেন? Dodgy

প্রথম প্রথম আপনাকে গালাগালি দিতে ইচ্ছা হচ্ছিল devil2 -- যা সব লাইন আছে প্রথমে Angry । তারপর শেষটা অসাধারন। Iex

World class story ( এটা ছাড়া আর কিছু বলার ভাষা পেলাম না) Namaskar

হিংসে আরো বেড়ে গেল --- পিনু দার কমেন্ট তাও প্রথমেই। clps
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
#52
(15-06-2021, 08:38 PM)satyakam Wrote: একটা অভিযোগ আছে --- এটা আপনি কোন পত্রিকায় দিলেন না কেন? Dodgy

প্রথম প্রথম আপনাকে গালাগালি দিতে ইচ্ছা হচ্ছিল devil2  -- যা সব লাইন আছে প্রথমে Angry । তারপর শেষটা অসাধারন। Iex

World class story ( এটা ছাড়া আর কিছু বলার ভাষা পেলাম না) Namaskar

হিংসে আরো বেড়ে গেল --- পিনু দার কমেন্ট তাও প্রথমেই। clps

আপনার রাগকেও সম্মান জানাই আর শেষের হাসিকেও. আসলে কঠোর সত্য ও বাস্তব রূপটা বড়ো ভয়ঙ্কর সেটাই এই কুকুরটার মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছি. আর শেষের নিষ্পাপ বাচ্চাটা হলো আশার প্রতিক. বললাম না এটা আমার শ্রেষ্ট লেখা.

আর পিনুদা... যার লেখা একসময় পড়ে অন্য জগতে হারিয়ে যেতাম সেই মানুষটা আমার পাঠক বন্ধু.... এটা যে কত বড়ো পাওনা... তা বলে বোঝানো যাবেনা ❤

আপনি তো আমার আর পিনুদার সব কথাবার্তা সম্পর্কে অবগত নয়.... কত মজা করেছি আমরা এই লেখার মাধ্যমে. ওনার কমিটমেন্ট ছিল সন্ধ্যাবেলায়.... তুমি আমি আসবো এখানে.... উনি পড়বেন আমি লিখবো... উনি পড়বেন  Big Grin
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#53
(15-06-2021, 10:37 PM)Baban Wrote: আপনার রাগকেও সম্মান জানাই আর শেষের হাসিকেও. আসলে কঠোর সত্য ও বাস্তব রূপটা বড়ো ভয়ঙ্কর সেটাই এই কুকুরটার মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছি. আর শেষের নিষ্পাপ বাচ্চাটা হলো আশার প্রতিক. বললাম না এটা আমার শ্রেষ্ট লেখা.

আর পিনুদা... যার লেখা একসময় পড়ে অন্য জগতে হারিয়ে যেতাম সেই মানুষটা আমার পাঠক বন্ধু.... এটা যে কত বড়ো পাওনা... তা বলে বোঝানো যাবেনা ❤

আপনি তো আমার আর পিনুদার সব কথাবার্তা সম্পর্কে অবগত নয়.... কত মজা করেছি আমরা এই লেখার মাধ্যমে. ওনার কমিটমেন্ট ছিল সন্ধ্যাবেলায়.... তুমি আমি আসবো এখানে.... উনি পড়বেন আমি লিখবো... উনি পড়বেন  Big Grin

বাস্তব যে কতোটা ভয়ঙ্কর সেটা আমার এই বাইশ বছরেই আমি অনেক বুঝেছি। অর্থ আর ক্ষমতা কতো ভয়ঙ্কর সেটা আমি অনেক বুঝেছি। হাড়ে হাড়ে বুঝেছি।  Big Grin

পিনুদার সাথে আপনার কমেন্ট পড়েছি। ওই কমেন্ট পড়ে কে বলবে উনি চটি সাহিত্যের এক শ্রেষ্ঠ লেখক।  Iex

আমিও এই আশাতেই আছি একদিন হয়তো পিনু দার সাথে একবার কথা বলবো। আমার লেখা গল্পে একটা কমেন্ট করবেন।  Tongue Blush Heart
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
#54
কান্নাহাসির-দোল-দোলানো অনুভূতি হলো তোমার এই অনবদ্য সৃষ্টি পড়ে।

ভিন্ন জাতি ভিন্ন ধর্ম ভিন্ন দেশের মানুষ তো কিছুই নয় .. প্রকৃতপক্ষে একজন মানুষ এবং একজন পশুর মধ্যে প্রকৃত বন্ধুত্ব সম্ভব .. hats off to you

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
#55
(15-06-2021, 11:04 PM)Bumba_1 Wrote: কান্নাহাসির-দোল-দোলানো অনুভূতি হলো তোমার এই অনবদ্য সৃষ্টি পড়ে।

ভিন্ন জাতি ভিন্ন ধর্ম ভিন্ন দেশের মানুষ তো কিছুই নয় .. প্রকৃতপক্ষে একজন মানুষ এবং একজন পশুর মধ্যে প্রকৃত বন্ধুত্ব সম্ভব .. hats off to you

বাহ্...... সত্যিই... ওই নিষ্পাপ শিশু আর ওই জন্তুটার বন্ধুত্ব অনেক দুপায়ের শ্রেষ্ট জাতির বন্ধুত্বের চেয়ে শক্তিশালী. কারণ তাতে কোনো খাদ নেই, নেই কোনো ষড়যন্ত্র নেই কোনো চালাকি. শুধুই আছে ভালোবাসা.... কারণ শয়তানি কি তা এদের দুজনের কেউ বোঝেইনা
Like Reply
#56
[Image: 20210801-114146.jpg]
[Image: 20240716-212831.jpg]
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#57
(22-01-2021, 07:01 PM)Baban Wrote:
[Image: 20210122-161725.jpg]

বন্ধু - একটি ছোট্ট গল্প
লেখক- বাবান 


উত্তেজক লেখা দিয়ে লেখার যাত্রা শুরু করি আমি. বেশ কয়েকটা এরোটিক গল্প লিখেছি. আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি. তারপরে সেখান থেকে বেরিয়ে রোমান্টিক গল্প - তোমাতে আমাতে দেখা হয়েছিলো লিখলাম. তাতেও আপনাদের ভালোবাসা পেলাম. আর তারপর এরোটিক হরর থেকে ছোটোদের জন্য গল্প সবেতেই পাশে পেয়েছি আপনাদের... তাই জানি এই গল্পেও পাশে পাবো আপনাদের আর আপনাদের মন জয় করবে এই গল্প. তবে এই গল্পটা সবথেকে আলাদা. হয়তো স্পেশাল. 



রাস্তার ধারে বসে এদিক ওদিক মানুষজনের যাতায়াত দেখছিলো ভোলা. কত লোক এদিক ওদিক হেটে চলেছে. কত লোক আবার কিসব জিনিসে বসে যাচ্ছে. কোনটা ছোট, আবার কোনটা বড়ো. নানারকমের সব অদ্ভুত জিনিস. ছোট থেকে এতো বড়ো হয়ে গেলো ভোলা তাও বোঝেনা এই লোকগুলো আসলে যায় কোথায়? কোথায় পৌঁছতে চায় এরা? হাটছে তো হাঁটছেই, যাচ্ছে তো যাচ্ছেই.

না.... সবাই হাঁটছেনা... ঐতো ওই বয়স্ক লোকটার দোকানে কয়েকজন বসে আড্ডা দিচ্ছে. কাগজে কিসব দেখছে আর আর হাতে চায়ের ভাঁড় নিয়ে বেঞ্চিতে বসে তর্ক বিতর্ক চলছে. কেউ বলছে - ধুর শালা.... আর কিছু হলোনা এই দেশের..... শালা দিনে দিনে বেকারত্ব বেড়েই চলেছে, গরিব আরো গরিব হয়ে চলেছে আর ধোনি আরো ধোনি. আর কতরকমের জালিয়াতির খবর রোজ পড়ি.... না... আর কিসু হলোনা দেশের. কেউ আবার তার কথার বিরোধিতা করে নিজেদের যুক্তি দিচ্ছে.

যদিও এসবের কিছুই বুঝছেনা ভোলা. কানেও নিচ্ছেনা ওসব. ওর নজর একটা লোকের হাতে ধরে থাকা বিস্কুটটার ওপর. সেই লোকটা বেশ বয়স্ক. কিসব যেন বলছে পাশের যুবকটাকে.

কি বলছে লোকটা?

লোকটা বলছে - আরে আসল সময় ছিল আমাদের... আহা কি দিন ছিল তখন.... ফুরফুরে বাতাস, চারিদিকে গাছপালা, শিক্ষা সংস্কৃতি..  সৎ রাজনীতি, সৎ মানুষ.... তখন লোকেরা খাটতে জানতো বুঝলে ভায়া.... এই তোমাদের মতো যুবক আজ দু পা এগিয়েই হাপিয়ে যায়... আর আমরা কত কত রাস্তা হেটে পার করেছি জানো? ভাবতেও পারবেনা.... আর আমাদের মধ্যে ছিল দুটো জিনিস. ধৈর্য আর দয়া মায়া. যে দুটো আজ তোমাদের মধ্যে থেকে কমে যাচ্ছে. বুঝলে? আহা.... কত লোককে কতজনকে আমি নিজের হাতে সাহায্য করেছি কি বলবো..... আহারে.... ওই মুখ গুলো আজও মনে পড়লে বুকের ভেতরটা কেমন করে ওঠে. আর তোমরা..... শুধুই নিজেদের নিয়ে ভাবো... এইজন্যই কিস্সু হলোনা এ সমাজের.

ভোলা আর থাকতে পারলোনা..... সকাল থেকে কিছু পেটে পড়েনি ওর. ওই বয়স্ক লোকটার হাতে বিস্কুট দেখে একটু আশা নিয়ে এগিয়ে গেলো লোকটার কাছে. সামনে গিয়ে লেজ নাড়তে লাগলো ভোলা. নজর সোজা ওই হাতের বিস্কুটের দিকে.

বয়স্ক লোকটা ওই যুবককে আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলো বোধহয় কিন্তু পায়ের কাছে ভোলাকে ওই ভাবে দেখে ক্ষেপে গিয়ে বলে উঠলো - এই.. এই হট... হট... চল হট.. যা এখন থেকে.... আপদ.... যেই দেখেছে হাতে বিস্কুট.. অমনি লেজ নাড়তে নাড়তে এসে উপস্থিত... ফোট...

যুবকটি হেসে বললো - আহা.... ঐভাবে চাইছে যখন দিয়ে দিন না... হাতের বিস্কুটটা.

ওই বয়স্ক মানুষটা যুবকের দিকে তাকিয়ে বললো - আরে না না... একটা দিলে আরো চাইবে.... এদের লায় দিলেই বিপদ..  যা ব্যাটা.. ফোট.... যা ওই আবর্জনায় খাবার খোঁজ.

ভোলা একটু ভয় পেয়ে পিছিয়ে এলো. ও হয়তো মানুষের ভাষা বোঝেনা. বুঝলে হয়তো খিদে পেটেও হাসি পেয়ে যেত বুড়োর মুখের কথা আর ব্যবহার দেখে.

ভোলা আর দাড়ালোনা ওখানে. এগুতে লাগলো. উফফফ... সকাল থেকে কিচ্ছু পেটে পড়েনি. আগেরদিন.. আবর্জনার খাবার খেয়ে কেমন পেট ব্যাথা করছিলো. তারপরে থেকে রাতে কিছুই খাইনি ভোলা. এদিকে রাতে ওই কালু আর ওদের দলটা এমন ভাবে রাস্তা ঘোরাঘুরি করে যেন ওদের বাপের রাস্তা. সারারাত চেঁচিয়ে কান ঝালাপালা করে দেয়. ভোলা ওতো চেঁচাতে পছন্দ করেনা. ও শান্ত চুপচাপ থাকতেই পছন্দ করে. এই ভোলা নামটা কে দিয়েছিলো ওকে মনে পড়েনা ওর... শুধু মনে পড়ে এই নামেই অনেকে আগে ডাকতো ওকে আর ওর সামনে কিছু খাবার ছুড়ে দিতো. সেই থেকেই ওই নাম মনে ঢুকে গেছে ওর.

ভোলার মা নেই. বোনও অনেক আগেই কোথায় যেন হারিয়ে গেছে সে. তবে ছোটবেলায় অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়েছিলো ওর মা. কিভাবে রাস্তা পার করতে হয়, কিভাবে খাবার জোগাড় করতে হয়, কিভাবে নিজের ভাগ বুঝে নিতে হয়.

সামান্য একটা রুটির জন্য ভোলা ওর মাকে দুটো কুকুরের সাথে মারামারি করতেও দেখেছে. মায়ের পায়ে কামড়ে দিচ্ছে একটা, আরেকটা মায়ের ঘাড়ে... তাও মা দাঁত খিচিয়ে সজোরে ধাক্কা মেরে অন্যটার ঘাড়ে কামড়ে সরিয়ে দিয়েছে তাকে. শেষে ওরা হার মেনে দূরে সরে গেছে. আর ভোলার মা রুটি মুখে করে নিয়ে এসেছে জয়ের সাথে. তবে তার একটুও নিজে খায়নি সে. পুরোটাই ভোলার আর ওর বোনের জন্য. ভোলা আর ওর বোন খেয়েছে ওই রুটি আর ওদের মা একদৃষ্টিতে সন্তানদের খেতে দেখেছে. ওদের খেতে দেখেই মনে হয় ওর মায়ের পেট ভোরে গেছিলো. পা থেকে রক্ত বেরোচ্ছিল ওর মায়ের. তাও সেদিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ না করে ভোলা আর ওর বোনের সামনে বসে চুপচাপ দেখেছিলো ওদের খেতে আর লক্ষ রাখছিলো ওই দুটো কুকুরের দিকে.

ভোলা ওর বাবাকে কোনোদিন দেখেনি. মাকে জিজ্ঞেস করেছিল. কোনো উত্তর পায়নি. হয়তো মায়ের কাছে কোনো উত্তর ছিলোনা. ভোলার বোন খুব ছটফটে ছিল. সারাদিন দাদার কান কামড়ে বিরক্ত করা, দাদার গায়ে লাফানো, এসব ছিল তার কাজ. বোনের গায়ের রং ছিল হলদে সাদা আর ভোলা নিজে কালো. যাকে বলে কুচকুচে কালো. আর ওর মা...... না.... মায়ের রং ওর মনে নেই. শুধু মনে আছে লাল রং. মায়ের শরীরের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিল.

সেদিন দুই ভাই বোন রাস্তার বস্তিটার পাশের নোংরা জায়গাটায় খেলছিল. হটাৎ কেমন একটা তীব্র যান্ত্রিক শব্দ আর তারপরেই একটা আর্তনাদ. না.... ওই আর্তনাদ কোনো মানবের ছিলোনা. তবে ওই ছোট্ট বাচ্চা দুটো বুঝেছিলো ওই ডাক ওদের মায়ের. ছুট্টে গেছিলো ওই আওয়াজ শুনে.

কিছু লোক ভিড় করে কিসব আলোচনা করছে. আর একটা বিশাল যান্ত্রিক জিনিস.... বোধহয় লরি বলে এগুলোকে. দাঁড়িয়ে আছে. কেউ কেউ উত্তেজিত হয়ে চেঁচিয়ে বলছে - আরে ভাই দেখে চলতে পারোনা নাকি.... ইশ... আহারে. কেউ বলছে আরে আমরা দেখলাম হটাৎ করে চাকার সামনে চলে এলো. ইশ..... খাবার নিয়ে আসছিলো. আহারে....

ভোলা আর ওর বোন কিছুই বোঝেনি. শুধু ওই মানুষদের পায়ের ফাঁক দিয়ে দেখতে পাচ্ছিলো ওদের মায়ের শরীরের কিছু অংশ. মা ঘুমিয়ে আছে. আর চার পাশে লাল রঙের জল পড়ে.

এরপর থেকে আর ওরা মাকে দেখেনি. ততদিনে ওরা একটু বড়ো হয়েছে আর নিজেরা খেতে শিখেছে. তাই হয়তো বেঁচে গেছিলো. নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে খাওয়ার খোঁজে ঘুরে বেড়াতো. কেউ খেতে দিতো.... কেউ আবার ওই আজকের লোকটার মতোই দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতো. এই ধাক্কা খেতে খেতেই বড়ো হয়েছে ওরা. তারপরে একদিন বোনও কোথায় হারিয়ে গেলো. রোজ কোথায় গায়েব হয়ে যেত আবার অনেক পরে ফিরত...  আবার কখনো দুই তিন দিন ফিরতনা. এরপর পুরোপুরি কোথায় চলে গেলো সে.

ভোলা একা. তবে ভোলা দুঃখ পায়না. ছোটবেলা থেকে এতো কিছু সহ্য করে বড়ো হয়েছে যে আর এসব ব্যাপার গায়ে লাগেনা. প্রতিদিন ও দেখে রাস্তায় লোকদের চলাচল. কিন্তু আজও উত্তর পায়নি এদের চলার শেষ কোথায়?

একবার মনে আছে ভোলার ও পুকুরের ধারে বসে জিভ দিয়ে গা চাটছিল. ও দেখলো ওর মতোই একজন..... না.... ওর মতো নয়. তার গলায় চেন... সেই চেন ধরে পেছনে হাটছে একটি মহিলা. ভোলা সেই মহিলার থেকে চোখ সরিয়ে ওই চার পায়ের প্রাণীকে দেখলো. সেও ভোলাকে দেখলো. বাহ্...  কি সুন্দর দেখতে. গায়ে সোনালী রং, সারা শরীরে কি ঘন লোম, কান দুটো ঝোলা... আর চোখে মুখে একটা সারল্য. সেও বোধহয় ভোলাকে এইভাবেই নজর করছিলো.

ভোলার ইচ্ছে হচ্ছিলো ওর কাছে যেতে... বন্ধুত্ব করতে. হয়তো সেই চেন বাঁধা কুকুরটিরও একি ইচ্ছে হচ্ছিলো. তাইতো সেই এগিয়ে আসছিলো ভোলার দিকে. কিন্তু একটু এগোতেই গলায় টান পড়লো তার. মালকিন তাকে টেনে ভোলার থেকে সরিয়ে বললো - no candy..... ওদিকে একদম নয়... ওটা Dirty dog.. ওদিক একদম যাবেনা.... চলো বাবু....

আর এগোনো হয়নি তার. ভোলারও নয়. ভোলা শুধু দেখেছিলো সেই কুকুরটি তাকেই দেখতে দেখতে চলে যাচ্ছে সামনে. ভোলা তো লেজ ওয়ালা প্রাণী তাই বোঝেনি বন্ধুত্ব সমানে সমানে হয়. উঁচু নিচুতে নয়.... অন্তত দু পায়ে হাঁটা মানুষদের মতে. তবে দুঃখের সাথে এটা ভেবেও শান্তি পেয়েছিলো সে মুক্ত. তার গলায় কোনো চেন নেই.

ভোলা লড়াই ঝগড়া পছন্দ করেনা. রোজ দেখে ওর বন্ধু গুলো আবর্জনায় মুখ ডুবিয়ে খাবার খোঁজে. কিছু পেলেই কাড়াকাড়ি করে নিজেদের মধ্যে. ভোলা এসব পছন্দ করেনা. তাই তো ও রোগা লিকলিকে. কিন্তু তাই বলে ও কমজোর নয়. কারণ ওই লিকলিকে অবস্থাতেই একটা শয়তান দামড়া কুত্তার কান প্রায় ছিঁড়ে নিয়েছিল সে. বিনা কারণে ওর পেছনে লাগছিলো সেই শয়তান. বার বার গোপন জায়গায় কামড়ানোর চেষ্টা করছিলো. ভোলাও জবাব দিয়েছিলো. ব্যাস.... দে দৌড়. মায়ের শেখানো শিক্ষা সে ভোলেনি আর ভুলবেও না..  কিন্তু বিনা কারণে ঝগড়া লড়াইয়ের সর্বদা বিপক্ষে ভোলা. তাই যতটুকু পায় তাই খায়. আগে খুব কষ্ট হতো এখন অভ্যেস হয়েগেছে.

ভোলা প্রয়োজন না পড়লে মানুষের কাছেও যেতে পছন্দ করেনা. ওর ভালো লাগেনা ওই দুই পায়ের প্রাণী গুলোকে. আগে একটা সময় যখন ভট্টাচার্য পাড়ার দিকটায় থাকতো তখন প্রায় রোজ কিছু ছেলে ওর পেছনে লাগলো. ওর গায়ে ঢিল ছুরত, কাঠি দিয়ে কানে খোঁচাতো. একবার ও চুপচাপ শুয়ে ছিল. একটা ছেলে বার বার ওর পেছনে লাঠি মারছিলো আর বন্ধুদের সাথে হাসাহাসি করছিলো. শেষে সহ্য করতে না পেরে শুধু ভয় দেখাতেই ভোলা দাঁত খিচিয়ে তেড়ে গেলো ছেলেটার দিকে. ছেলেটা দূরে পালিয়ে গেলেও ওর এক বন্ধু একটা বড়ো ইঁট ছুড়ে এতজোর পেছনের পায়ে মেরেছিলো যে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি ভোলা. লুটিয়ে পড়েছিল মাটিতে. সেইদিন ও বুঝেছিলো ব্যাথা কি জিনিস.

খুব মনে পড়েছিল সেদিন মায়ের কথা. বার বার মাকে মনে করে মাকে ডেকেছিল সেদিন. যদিও অন্যান্য লোকেরা শুধুই একটা কালো কুকুরের আউউউ আউউউ ডাকই শুনতে পারছিলো.

তিনদিন ওই পায়ে হাঁটতে পারেনি ভোলা. তারপরে ধীরে ধীরে ওই পায়ে ভর দিয়ে হাঁটার চেষ্টা করতো. বেশ অনেকদিন লেগেছিলো পুরোপুরি ঠিক হতে. সেই তখন থেকে ও ঘেন্না করে দু পায়ের প্রাণীদের. শুধু পেটের জ্বালা জড়ানোর জন্য ছাড়া ওই মানুষদের কাছেও যেতে চায়না ও.

ভোলা হাঁটতে হাঁটতে এদিক ওদিক দেখছিলো.  না..... কোথাও কিছু খাবার মতো নেই. আজও হয়তো খালি পেতেই সকালটা কাটবে... বা হয়তো পুরো দিনই.

হাঁটতে হাঁটতে ও মাহিষ্য পাড়ার ভেতরে ঢুকে এদিক ওদিক দেখতে দেখতে হাঁটতে লাগল. নানারকম লোক এখানেও চলাচল করছে. কোনো বাড়ির বৌ বাইরে দাঁড়িয়ে পাশের বাড়ির বৌয়ের সাথে গল্প করছে. রাস্তার ধারে ওর মতোই কিছু চার পায়ের প্রাণী ঘুমিয়ে.

ভোলা হাঁটতে হাঁটতে ভেতরে একটা ফাঁকা জায়গা দেখে শুয়ে পড়লো. আর হাঁটতে ইচ্ছে করছেনা ওর. হেটেও লাভ নেই. এইভাবেই থাকতে হবে. এটা ওর জীবন. চোখ বুজে হাত পা ভাঁজ করে শুয়ে রইলো ভোলা.

পাশের বাড়ি থেকে একটা বাচ্চা মেয়ে নিজের ছোট্ট সাইকেল নিয়ে গেট থেকে বেরোলো. গেট ভিজিয়ে সাইকেলে চেপে বসে প্যাডেলে চাপ দিয়ে এগিয়ে আসছে সে. এখনো ঠিকমতো চালানো শেখেনি. তবে এই রাস্তায় কোনো ভয় নেই বলেও ওর মা ওকে এই গলি টুকু চালাতে দেয়.

হাত পাকা নয়. তাই বার বার হ্যান্ডেল এদিক ঘুরে যাচ্ছে সাইকেলের. কোনোরকমে সামলে এগিয়ে আসছে বাচ্চা মেয়েটা. কিন্তু কে জানতো হটাৎ ওর সাইকেলের চাকার নিচে একটা বড়ো ইঁটের শেষভাগটা এসে যাবে আর সাইকেল নিজের রাস্তা ছেড়ে বাঁ দিকে বেঁকে যাবে.

তাই হল. সাইকেল বাঁ দিকে সরে এসে সোজা এগিয়ে গেলো ভোলার দিকে. বাচ্চা মেয়েটার কিছু বোঝার আগেই ওর সাইকেলের সামনের চাকা উঠে গেলো সামনের শুয়ে থাকা কুকুরটার লেজের ওপর.

কেউ...!!! করে চেঁচিয়ে উঠলো কুকুরটা. বাচ্চা মেয়েটাও ভয় পেয়ে সাইকেল থেকে নেমে ছুট্টে কিছুটা দূরে চলে গেলো. তারপরে ফিরে তাকিয়ে দেখলো কালো কুকুরটা উঠে দাঁড়িয়েছে আর ওকেই দেখছে... কিন্তু কামড়াতে আসছেনা. কুকুরটা আবার ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে.

কেমন যেন হোলো ওই ছোট্ট মেয়েটার বুকের ভেতর. একটু এগিয়ে এলো সে সামনে. কুকুরটা কিছুটা গিয়ে আবার শুয়ে পড়লো মুখ গুঁজে. মেয়েটা আরেকটু এলো সামনে. কুকুরটা কি অসুস্থ? আহারে..... নিশ্চই খুব লেগেছে ওর. সাইকেলটা খুব বাজে... শুধু শুধু কষ্ট দিলো কুকুরটাকে.

মেয়েটার কি মনে হতে সাইকেল ওখানেই রেখে দৌড়ে বাড়ির গেট খুলে ভেতরে ঢুকে গেলো. কিছুক্ষন পরে বেরিয়ে এলো আবার. এবারে হাতে তিনটে বিস্কুট ওর. দৌড়ে এলো কুকুরটার সামনে. একটা ভয়ও হচ্ছে. তাও সাহস করে ডাকলো এই.... এই.... চু.. চু... চু

কুকুরটা মুখ তুলে তাকালো.

সামনে দাঁড়িয়ে একটু আগে ওকে কষ্ট দেওয়া দুই পায়ের প্রাণী. রাগ হচ্ছে ভোলার. কিন্তু কোনো আক্রমণ করলোনা সে. কি হবে করে? শুধুই কিছুক্ষন তাকিয়ে দেখে আবার মুখ গুঁজে শুয়ে পড়লো.

আবার এই.. এই.. চু.. চু... চু.... বিস্কুট খাবি?

ভোলা আবার তাকালো সামনে. ওই বাচ্চাটা হাত বাড়িয়ে কি দেখাচ্ছে. ভোলা গন্ধে বুঝলো খাবার জিনিস ওটা . একটু লেজ নাড়ালো ভোলা. মেয়েটা ওই দেখে কি বুঝলো কে জানে.   আরো কিছুটা সামনে এসে দুটো বিস্কুট ছুড়ে দিলো ওর সামনে. প্রচন্ড খিদে ছিল ভোলার পেটে. তাই সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে খেতে লাগলো বিস্কুট দুটো.

বাচ্চা মেয়েটা দেখছে কুকুরটা চেটেপুটে খেয়ে নিয়েছে বিস্কুট দুটো. নিশ্চই খুব খিদে ছিল. খেয়ে নিয়ে শান্ত দৃষ্টিতে কুকুরটা তাকিয়ে আছে ওর দিকে. বাচ্চা মেয়েটা আরেকটু এগিয়ে এলো কালো কুকুরটার দিকে. কেন জানে আর ভয় করছেনা ওর ওই কুকুরটাকে.

বাচ্চা মেয়েটা এগিয়ে এসে কুকুরটার মাথায় হাত রেখে কাঁদো কাঁদো মুখে বললো - সরি..... তোর লেগেছে?

ভোলা তাকিয়ে আছে সামনের মানুষটার দিকে. মানুষের এই দৃষ্টি সে চেনেনা. কোনোদিন কোনো দুই পায়ের প্রাণীর এইরকম দৃষ্টি ও দেখেনি. এই জল ভরা চোখ ভোলার কাছে নতুন. ভোলার একটু  এগিয়ে এসে বাচ্চাটার জামা শুকলো.

হ্যা.... এও তো মানব. কিন্তু কিছু যেন আলাদা এই মেয়েটা আর অন্য মানুষ গুলোর মধ্যে.

বাচ্চাটা আরেকটা বিস্কুট হাতে নিয়ে  বললো - নে... এটা খা.... আরো আনবো তোর জন্য.. খা এটা. এখনো ব্যাথা হচ্ছে তোর? এই তো আমি হাত বুলিয়ে দিচ্ছি... দেখ ঠিক হয়েযাবে. আমি একবার মাটিতে পরে গেছিলাম. পায়ে খুব লাগছিলো. ঠাম্মি আমার পায়ে হাত বুলিয়ে দিয়েছিলো. একটু পরেই ব্যাথা চলে গেছিলো.... তোর ব্যাথাও কমে যাবে. এই আমি হাত বুলিয়ে দিচ্ছি.

ভোলা মেয়েটার কথা কিচ্ছু বুঝলোনা. কিন্তু বুঝলো এই প্রথম বার..  সামনের মানুষটা ওকে আদর করছে, ওর গায়ে হাত দিচ্ছে, ওই দুই চোখে ভোলার জন্য কষ্ট........ না ওই চোখে দয়া নয়.... ভালোবাসা রয়েছে. চার পায়ের প্রাণী হয়েও ভোলা পড়ে ফেললো ওই ছোট্ট দুপায়ের মানুষটার চোখ.

মেয়েটার হাত থেকে বিস্কুট নিয়ে খেতে লাগলো ও. আর বাচ্চা মেয়েটা ওর মাথায় গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো. বিস্কুট খেয়ে নিয়ে ভোলা তাকালো বাচ্চাটার দিকে. এই প্রথম জিভ দিয়ে চেটে দিতে লাগলো সে বাচ্চাটার গোল ফর্সা গাল.

খিল খিল করে হেসে ফেললো মেয়েটা. তারপরে আদর করে জড়িয়ে ধরলো ভোলাকে. ভোলার গায়ের গায়ের ধুলো বলো নোংরা তোয়াক্কা না করেই বাচ্চাটা জড়িয়ে ধরলো ওকে. ভোলা বাচ্চাটার বুকে মুখ গুঁজে বসে রইলো.

খুব ভালো লাগছে আজ ভোলার . পেটের খিদে একটুও মেটেনি. তিনটে বিস্কুটে কি খিদে মেটে? কিন্তু তাও খিদে ছাপিয়ে ভেতর থেকে একটা আনন্দর অনুভূতি বেরিয়ে আসছে ওর. আজ ও ভুলে গেছে দুই পা, চার পায়ের তফাৎ. আজ ভোলা জানে ওকে যে জড়িয়ে আদর করছে সে ওর বন্ধু. শুধুই বন্ধু.

এতদিন হয়তো ভোলা ভুল জানতো. এতদিন যে দুপায়ের প্রাণী গুলো সে দেখেছে তাদের হয়তো অন্য নাম আছে. আজ এখন এইমুহূর্তে ওকে যে জড়িয়ে বসে আছে হয়তো তাকেই বলে- মানুষ.


Heart সমাপ্ত  Heart

Absolutely brilliant Namaskar
[+] 1 user Likes vichitra_1's post
Like Reply
#58
(12-12-2021, 10:10 PM)vichitra_1 Wrote: Absolutely brilliant Namaskar

অনেক ধন্যবাদ ❤
Like Reply
#59
[Image: 20211228-190021.jpg]

[Image: VZvx.gif]
Happy New Year!!
#ভোলা আর বন্ধুরা ❤
Like Reply
#60
আমাদের বাড়িতে বলতে আমার বাবার পোষা কুকুর ছিল। রাতে আমাদের বিছানার নিচেই থাকতো। মুখে হয়তো কিছু বলতে পারতো না কিন্তু রাগ অভিমান ভালবাসার কোন কমতি ছিল না।

আমারও এখন আছে দুটো পোষা কুকুর। মা আর সন্তান।
সারাদিন আমাকে চোখে চোখে রাখে। আমার ব্যবস্তার কারণে খুনসুটি কম হয় অভিমান বেশি। কোন দিন হয়তো খাবার দিতে ভুলে গেছি,(আমি না দিলেও ছোট ভাই দেয়) পরদিন তাকে বারবার বলে অনুনয় না করলে সে খাবে না। আর একটু গা বুলিয়ে দিলেই তার সব অভিমান শেষ।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 2 users Like nextpage's post
Like Reply




Users browsing this thread: 29 Guest(s)