30-10-2021, 10:38 AM
Kal asche ki update tahole?
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
|
30-10-2021, 10:47 AM
30-10-2021, 01:16 PM
30-10-2021, 01:36 PM
31-10-2021, 09:24 AM
31-10-2021, 12:00 PM
31-10-2021, 09:02 PM
01-11-2021, 09:03 AM
Update 4
পুরী থেকে আসার দুই দিন পর , সুচি কলেজ থেকে ফিরে এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিয়ে , খাটে শুয়ে ফোন ঘাটতে ঘাটতে বিশ্রাম নিতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর কোচিংয়ের জন্য যেতে হবে । সুচি আর সুমির ঘরটা বেশি বড়ো না। ঘরের একদম মাঝখানে তিন জন পাশাপাশি শুয়ে আরামে ঘুমানো যায় এমন একটা পুরনো আমলের সেগুন কাঠের খাট। খাটের ওই পাশে একটা পুরানো আমলের আলনায় দুই বোনের জামাকাপড় রাখা আছে। আলনার ঠিক পাশেই আছে পড়ার টেবিল। আর খাটের এই পাশে একটা আলমারি। আলমারির দরজায় বড়ো কাঁচ লাগানো আছে। আর আলমারির পাশে ছোট একটা টেবিলে মেকআপের জিনিসপত্র। ওটাই ড্রেসিংটেবিল হিসাবে ব্যাবহার করে দুই বোন। কিছুক্ষণ পর সুমি অফিস থেকে ফিরে এলো। ফ্রেশ হয়ে খাটে বসে বোনকে জিজ্ঞাসা করলো “ দিন কেমন কাটলো ? „ এরকম প্রশ্ন সুমি কখনোই সুচি কে করেনি , তাই সুচি ভুরু কুঁচকে বললো “ তেমন কিছু না। রোজকার মতোই ! „ “ ও । „ বলে ড্রেসিংটেবিলে গিয়ে চুল আঁচড়াতে শুরু করলো । এবার সুচি দিদিকে জিজ্ঞাসা করলো “ হঠাৎ এই প্রশ্ন ! কখনো তো জিজ্ঞাসা করিস না ! „ “ না এমনি ! জানতে ইচ্ছা হলো তাই । কেন ! জিজ্ঞাসা করতে পারি না বুঝি ? „ দিদির কথায় সুচির মনে একটা সন্দেহ দেখা দিল। একমনে দিদিকে দেখতে শুরু করলো সুচি। আজকে যেন একটু বেশিই সময় নিয়ে চুল আঁচড়িয়ে যাচ্ছে “ কি হয়েছে বলতো ? নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে । „ মুখে হাসি নিয়ে সুমি বললো “ কিছু হয়নি। কি আবার হবে ! „ “ না সত্যি বল ! নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে ! কেউ কি তোকে প্রোপজ করেছে ? „ বলে সুচি খাট থেকে উঠে দিদিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো । সুমি হেসে উঠে বললো “ প্রোপজ করে নি , তবে ডিনারের জন্য জিজ্ঞাসা করেছে একজন । „ কথাটা শোনার পরেই সুচির উৎসাহ দেখার মতো হয়ে উঠলো “ তুই কি বললি ? „ “ ডিনার তো করাই যায় । তাই হ্যাঁ বললাম। „ সুচি আরো ভালো করে দিদিকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করলো “ কে ? দেখা একবার জামাইবাবুর ফটো । „ “ এখনই জামাইবাবু বলে দিলি ! আগে ওর চরিত্র দেখবো। ভিতরটা পরিষ্কার কিনা দেখবো , তারপর এগিয়ে যাবো । „ বলে সুমি ফোন থেকে একটা গ্রুপ ফটো বার করে বোনকে দেখিয়ে বললো “ এই যে , এ । আমাদের অফিসেই কাজ করে । কৌশিক হালদার নাম । „ সুচি ঠোট বেকিয়ে বললো “ কালো আর একটু মোটা । „ বোনের কথা শুনে সুমি ঠোটে হাসি নিয়ে বললো “ আমি এমন একজনকে জীবনসঙ্গী বানাতে চাই যে আমাকে সম্মান দিয়ে ভালোবাসবে। ভালোবেসে দয়া করবে না। গায়ের রঙ নিয়ে আমি করবো ? আমিও তো কালো। „ দিদির কথায় সুচি দমে গেল “ ওসব ঠিক আছে । বলছি কালকে একটু সেজেগুজে যাস। এইভাবে যাস না। „ সুমি এবার স্বরটা একটু গম্ভীর করে বললো “ আমার দ্বারা ওটা হবে না। আমি তোর মতো ফর্সা নই , হয়তো তোর মতো সুন্দরও নই । আমি কালো। আর এটাই ওকেও মেনে নিতে হবে , যেমন আমি মেনে নিয়েছি । „ দিদির এই সাহসি চরিত্রটাই তো সুচির ভালো লাগে। সুমি মনে করে ওর সৌন্দর্য হলো ওর ইন্টেলিজেন্স , সৎ নির্ভিক বচনভঙ্গি । এটাই তো সুচির গর্ভ। শুধু সুচির নয় সাথে সুচির মা বাবারও গর্ভ । দিদির মুখে এইসব শুনে সুচি ভালো করে সুমিকে জড়িয়ে ধরে বললো “ আমি সাজিয়ে দেবো তোকে। না করলে আলাদা ঘরে শুবি এবার থেকে । „ বোনের হুমকি শুনে সুমি রাজি না হয়ে পারলো না “ আচ্ছা ঠিক আছে। সাজিয়ে দিস তোর ইচ্ছা মতো। „ এর ঠিক দুই দিন পর সকালে , আকাশের লিভিংরুমে ঢুকে সোফায় বসে থাকা আকাশের চোখের সামনে ড্রাইভিং লাইসেন্সটা নাচিয়ে সুচি বললো “ যাবি ঘুরতে ? „ আকাশ মজা করে বললো “ তোর বিশ্বাস নেই ! ফেলে দিবি । „ “ তোর কি মনে হয় ! আমি এটা ঘুষ দিয়ে বানিয়েছি ? „ “ তোর বিশ্বাস নেই। করতেই পারিস । „ কিছুক্ষণ আকাশের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে সুচি বললো “ একবার চল আমার সাথে ! তাহলেই বুঝতে পারবি আমি ঘুষ দিয়ে পেয়েছি নাকি নিজের যোগ্যতায় । „ তারপর মিচকি হেসে বললো “ সত্যি কথাটা বলা না যে একটা মেয়ের পিছনে বসতে লজ্জা পাচ্ছিস । „ এই শেষ কথাটায় আকাশের ইগোতে লাগলো “ ঠিক আছে দেখবো কেমন ভালো চালাস ! এখন যাবি নাকি ? „ “ এখন কেন হাঁদারাম ! বিকালে যাবো । বিকালে রেডি হয়ে থাকিস। „ কথাটা বলে সুচি নিজের ফ্ল্যাটে চলে গেল। বিকাল হতেই সুচি আকাশের ঘরে হাজির হলো। খোলা চুল , পড়নে আছে তার চিরাচরিত সালোয়ার আর লেগিন্স , কাঁধে লম্বা স্ট্রাপের ছোট একটা হ্যান্ড ব্যাগ আর হাতে একটা হেলমেট। ঘরে ঢুকেই দেখলো আকাশ তার আপেলের ল্যাপটপে কোন একটা সিনেমা দেখছে “ চল । আর দেখতে হবে না । এসে দেখবি। এখন না বেরলে ফিরতে দেরি হয়ে যাবে । „ আকাশ ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করলো “ কোথায় যাবি ? „ “ এখনও ঠিক করিনি । আশেপাশেই কোথাও যাই চল । „ আকাশ সঙ্গে সঙ্গে ল্যাপটপ shutdown করে গেঞ্জির উপর একটা কালো শার্ট আর একটা জিন্স পড়ে চুল আঁচড়িয়ে ঘরের বাইরে চলে এলো। এতো সেজেগুজে দুজনকে বার হতে দেখে স্নেহা দেবী জিজ্ঞাসা করলেন “ কোথায় চললি তোরা ? „ আকাশ মায়ের কথায় ইয়ার্কি করে বললো “ আজকে লাইসেন্স পেয়েছে। তাই কেমন চালায় সেটাই দেখাতে চাইছে । „ ছেলের কথায় স্নেহা দেবী হাসতে হাসতে সুচিকে বললেন “ সাবধানে চালাবি আর সন্ধ্যার আগে ফিরবি । „ কাকির কথায় সুচি বললো “ এই আশেপাশেই যাবো । বেশিক্ষণ লাগবে না । „ তারপর দুজনেই ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলো। পিছন থেকে দুজনেই শুনলো স্নেহা দেবী “ দুগ্গা দুগ্গা „ বললেন । নিচে নেমে বিল্ডিংয়ের সামনেই দাড় করিয়ে রাখা স্কুটির উপর উঠে সুচি হেলমেট পড়ে নিল। স্কুটি স্টার্ট দিলে আকাশ পিছনে বসে পড়লো “ কোথায় যাবি ? „ একটু ভেবে নিয়ে সুচি বললো “ গঙ্গায় যাবি ? বিকালে খুব সুন্দর মিষ্টি হাওয়া বয় ওখানে । „ সুচির প্রস্তাবে আকাশ বললো “ গঙ্গার ঘাট ! তাহলে প্রিন্সেপ ঘাট চল । „ গন্তব্য স্থান ঠিক হতেই সুচি স্কুটি চালিয়ে দিল। রাস্তা ফাকা এখন , তাই কুড়ি পচিশ মিনিটেই দুজনে প্রিন্সেপ ঘাপ পৌছে গেল। প্রিন্সেপ ঘাট পৌঁছে একটা ফাকা জায়গা দেখে সুচি স্কুটি স্ট্যান্ড করে দিল “ কেমন চালাই বল ? „ একজন পরিদর্শক এর মতো করে সুচিকে নাম্বার দেওয়ার ভঙ্গি করে আকাশ বললো “ দুটো সিগন্যালে দেরিতে ব্রেক চেপেছিস আর তিনটে গাড্ডায় স্পিডে চালিয়েছিস বাকি ঠিক আছে । „ কি বলবে এই খচ্চরটাকে সেটাই ভেবে পেল না সুচি ! তাই প্রসঙ্গ পাল্টে সুচি জিজ্ঞাসা করলো “ খাবি কিছু ? „ “ হ্যাঁ , তবে আগে একটু বসে হাওয়া খেয়ে নিই তারপর খাবার খাবো । „ তারপর দুজনেই গঙ্গার ঘাটে এসে বসলো। দুপুর পড়ে গিয়ে বিকাল হয়ে এসছে আর গঙ্গার হাওয়া শীতল হয়ে এসছে। শীতল হাওয়া দুজনের মুখের উপর পড়তেই দুজনের মনকে ঠান্ডা করে দিল । তাকিয়ে দেখলো মাঝ গঙ্গায় একটা নৌকায় একটা মেয়ে বসে আছে। আর তার বয়ফ্রেন্ড ডিএসএলআর দিয়ে ফটো তুলে দিচ্ছে। আরও কয়েকটা নৌকা ভেসে যাচ্ছে এদিক ওদিক। আর সেইসব নৌকার মাঝিরা দাড় টেনে যাচ্ছে অক্লান্ত পরিশ্রমে। আর গঙ্গার ওইপাড়ের আকাশটা কমলা রঙ ধরে নিয়েছে। সূর্য ঢলে পড়ছে পশ্চিম আকাশে। এইসব দেখতে দেখতে দুজনের সময় কাটতে লাগলো। প্রায় আধঘন্টা কেটে যাওয়া পর সুচি বললো “ ওঠ এবার । „ আকাশ পকেট থেকে ফোন বার করে দেখলে আধঘন্টা হতে যায় “ চল ঝালমুড়ি খাই । „ দুজনেই ঝালমুড়ির ঠেলা গাড়ির সামনে এলো। সুচি বললো “ দু জায়গায় দাও । ঝাল একটু বেশি করে দেবে । „ ঝালমুড়ি নিয়ে দুজনে প্রিন্সেপ ঘাটের বিখ্যাত স্ট্রাকচারের ভিতর এসে একটা বেঞ্চের কাছে এলো । বেঞ্চের বেশির ভাগ জায়গায় পাখিরা হেগে রেখেছে। একটা ভালো জায়গা দেখে দুজনে গায়গায়ে বসে ঝালমুড়ি খেতে লাগলো। হঠাৎ আকাশ ঝালমুড়ি খাওয়া বন্ধ করে এক দৃষ্টিতে কিছু দূরের একটা বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে রইলো। সুচিও সেদিকে তাকাতে দেখলো একটা বেঞ্চের উপর একটা ছেলে বসে আছে। আর ছেলেটার কোলের উপর একটা মেয়ে বসে আছে। মুখ দেখা যাচ্ছে না দুজনের। কারন মেয়েটার চুলে দুজনের মাথাটা ঢাকা আছে। বোঝাই যাচ্ছে দুজনে কিস করছে। আকাশ সেই দৃশ্য এক দৃষ্টিতে উপভোগ করছে দেখে সুচি রেগে গিয়ে ঝাঝিয়ে উঠে বললো “ অসভ্য। তোর মতো লম্পটের সাথে দেখছি কোথাও যাওয়া যাবে না । „ আকাশ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করলো “ আমি কি করলাম ? ওরা খুল্লাম খুল্লা করছে তাতে দোষ নেই আর আমি দেখলেই দোষ ? আমিই অসভ্য ? „ “ তোকে নিয়ে বার হওয়াই আমার দোষ হয়েছে । „ কথাটা বলে রেগে লম্বা লম্বা পা ফেলে সুচি যেখানে স্কুটি স্ট্যান্ড করে রাখা আছে সেখানে হাটা দিল। আকাশও সঙ্গে সঙ্গে সুচির পিছন নিল। সুচি স্কুটি স্ট্রার্ট করার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ লাফিয়ে পিছনের সিটে বসে পড়লো। সুচি একটা অবজ্ঞার দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে স্কুটি চালিয়ে দিল। আসার সময় যে রাস্তা অতিক্রম করতে কুড়ি পচিশ মিনিট লেগেছিল এখন অফিস আওয়ার শেষ হতে সেই রাস্তা দিয়ে আসতে এক ঘন্টা লেগে গেল। সোসাইটিতে পৌছনোর আগেই দুজনের মুখ গাড়ির নোংরা ধোয়ায় কালো হয়ে চ্যাটচ্যাটে হয়ে উঠলো। সোসাইটি পৌছে বিল্ডিংয়ের নিচে স্কুটি দাড় করাতেই আকাশ নেমে উপরে উঠে গেল। সুচি স্কুটি বন্ধ করে স্ট্যান্ড করতেই দেখলো বাবা অফিস থেকে ফিরে এসছে। সুচি বাবার অফিস ব্যাগটা নিয়ে নিল। দুজনেই উপরে উঠতে উঠতে সিড়িতে সুচির বাবা জিজ্ঞাসা করলেন “ কোথায় গেছিলি দুজনে ? „ “ ওই প্রিন্সেপ ঘাটে গেছিলাম ঘুরতে । „ মেয়ের মুখে সব শুনে সমরেশ বাবু চুপ মেরে গেলেন। ঘরে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে সোফায় বসে খবর দেখতে দেখতে চা খেয়ে নিজের ঘরে ঢুকে গেলেন। ঘরে ঢুকে বিছানায় বসে ডাকলেন “ সুমি । „ নিজের ঘর থেকে সুমি বললো “ হ্যাঁ বাবা আসছি । „ কিছুক্ষণ পর সুমি এসে ঘরের চৌকাঠে দাড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলো “ কিছু বলবে বাবা ? „ সুমির বাবা খাটের খালি অংশ দেখিয়ে বললেন “ বস । „ সুমি গিয়ে বাবার পাশে বসতে সমরেশ বাবু বললেন “ সুচি তো তোর সাথে সব কথা শেয়ার করে । তোর কথা শোনেও। তুই একটু বোঝা ওকে .... এতোটা বলে সুচির বাবা থেমে গেলেন। সুমি বুঝতে পারলো যে বাবা কিছু একটা বলতে গিয়ে সঙ্কোচে আর বলতে পারছে না “ কি বোঝাবো বাবা ? „ কিছুক্ষন পর সমরেশ বাবু আবার বলতে শুরু করলেন “ আমি ওকে সেই ছোট থেকে বোঝাচ্ছি কিন্তু ও বুঝতে চাইছে না ! তোর বোন যে পরিবারের সাথে ঘোরে ! তারা পরিবার , সম্পর্ক , ভালোবাসার থেকে অর্থ , যশ , সম্পত্তিকে এগিয়ে রাখে । ওদের কাছে সম্পর্কের কোন মূল্য নেই । আমরা মধ্যবিত্ত মানুষ আমাদের সাথে ওদের যায় না। কোন ধরনের সম্পর্ক হয় না ওদের সাথে আমাদের...... কথাগুলো বলতে বলতে সুমির বাবা খুব উত্তেজিত হয়ে পড়লেন। এতক্ষণে সুমি বুঝলো বাবা কি বলতে চাইছে। ঠিক এই ভয়টাই তো দুদিন আগে পেয়েছিল সে “ তুমি শান্ত হও বাবা। আমি বোনকে বুঝিয়ে বলবো । ও ঠিক বুঝবে । „ “ বুঝলে ভালো। না হলে ...... আর বলতে পারলেন না সুচির বাবা । বাবাকে শান্ত করে সুমি নিজের ঘরে চলে এলো। ঘরে এসে দেখলো সুচি খাটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে কানে হেডফোন দিয়ে ফোন ঘাটছে। কিছুক্ষণ বোনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সুমি। কিভাবে বলবে ? কিভাবে বোঝাবে ওকে সেটাই ভেবে পেল না সুমি। কিছুক্ষণ বোনের দিকে তাকিয়ে একটা গভীর নিশ্বাস ছেড়ে সুমি বললো “ আকাশ কোন স্ট্রিম নিয়ে ভর্তি হবে কিছু বলেছে তোকে ? „ সুচি অবজ্ঞার সুরে বললো “ না । ওর ওইসবে হুশ নেই । „ সুচির কথা শেষ হতে না হতেই আকাশ ঘরে ঢুকে খাটের উপর বসে পড়লো “ কার হুশ নেই ? „ “ তোর হুশ নেই ! কোন স্ট্রিম নিয়ে ইলেভেনে ভর্তি হবি সেটা ভেবেছিস ? „ সুচির গলার স্বরে আকাশের জন্য ওর চিন্তা স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ পেল। আকাশ ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখিয়ে বললো “ ওটা নিয়ে আর ভাবনার কি আছে ! সাইন্স নিয়ে ভর্তি হবো । „ আকাশের ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখে সুমি আর চুপ থাকতে পারলো না “ এখন যে স্ট্রিম নিয়ে ভর্তি হবি , সেই স্ট্রিমের বিষয় নিয়েই কিন্তু কলেজে পড়তে পারবি । তাই ঠান্ডা মাথায় ভাব কলেজে কি নিয়ে পড়বি । „ আকাশ তার ডোন্ট কেয়ার ভাবটা বজায় রেখে বললো “ আমার তো জন্মের পরেই সব ঠিক করে দেওয়া আছে। কলেজ শেষ করে বাবার ব্যাবসা দেখবো । তাই MBA নিয়েই পড়বো । „ আকাশের কথা শুনে সুমি বুঝলো যে সত্যি আকাশের কাছে আর কোন অপশন নেই “ তাহলে যে কোন স্ট্রিম নিয়েই পড় । কোন অসুবিধা হবে না। „ সুমির কথা শেষ হতেই আকাশ সুচির দিকে ফিরে আফসোস করে বললো “ তোর জন্য আজ ফুচকা খাওয়া হলো না ! „ কয়েক সপ্তাহ পরে আকাশ একটা সরকারি কলেজে ক্লাস ইলেভেনে ভর্তি হয়ে গেল। আকাশকে কোন কলেজে ভর্তি করা যায় সেই প্রসঙ্গ উঠলে আকাশের বাবা বললেন “ এখন আর সরকারি কলেজে তেমন পড়া হয়না। ইংলিশ মিডিয়াম-ই ভালো । „ আকাশের মা ব্যাঙ্গ করে বললেন “ সারাজীবন বাংলা মিডিয়ামে পড়ে এখন শেষ বেলা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়বে ! বুদ্ধি কোথায় রেখে এসছো তুমি ? বোর্ড আলাদা , পড়াশোনার ধরন আলাদা , কিভাবে করবে ও ? „ স্ত্রীর ব্যাঙ্গ গায়ে মেখে আকাশের বাবা বললেন “ এই জন্যেই আমি ক্লাস ফাইভে ওকে ইংলিশ মিডিয়ামে ভর্তি হতে বলেছিলাম । তোমার ছেলেই জেদ ধরেছিল সুচির কলেজে পড়বে । আর মাও ওর জেদে সায় দিয়েছিল । „ মায়ের কথা উঠতে স্নেহা দেবী রেগে গেলেন “ ওওওও । এখন মায়ের দোষ হয়ে গেল ....... ঝগড়া আরও কিছুক্ষণ চললো কিন্তু আকাশ আর শুনলো না । কয়েক দিন পরেই কাধের এক দিকে ব্যাগ ঝুলিয়ে , মাথায় জেল মেখে চুল ব্যাক ব্রাশ করে , পারফিউম মেখে কলেজে চলে গেল। দুই দিন পর সুচি কলেজ যেতে গিয়ে আকাশের সাথে দেখা হলো। আকাশের রুপ লক্ষ্য করে সুচি বললো “ এতো সেজেগুজে কলেজে পড়তে যাচ্ছিস ! নাকি কলেজে আড্ডা দিতে ? „ আকাশ হাটতে হাটতে বললো “ মায়ের মতো কথা বলিস না তো ! এখন সবাই এইভাবেই কলেজে যায় । „ কলেজ যাওয়ার তাড়াহুড়োতে আর কথা এগোলে না , কিন্তু সারাদিন সুচির মনটা খচখচ করতে লাগলো ‘ নিশ্চয়ই মেয়ে বন্ধু বানিয়েছে অনেক । কলেজে যাওয়ার নাম করে নিশ্চয়ই তাদের সাথেই ফূর্তি করছে । ‚ সুচি এইসব ভাবতে লাগলো কলেজে বসে । বিকালে একেবারে কোচিং করে বাড়ি ফিরলো সুচি। এসে দেখলো সুমি চলে এসছে। ফ্রেশ হয়ে খাটে শুয়ে ফেসবুক খুলে আকাশের ফ্রেন্ডলিস্ট দেখতে বসলো। বেশ কয়েকটা মেয়ের প্রোফাইল দেখলো। সদ্য ফ্রেন্ড হয়েছে। আর সবার বায়োতে আকাশের কলেজের নাম লেখা আছে। মানে আকাশের কলেজেই পড়ে এই মেয়েগুলো। আর থাকতে পারলো না সুচি। দিদিকে উদ্দেশ্য করে বলতে শুরু করলো “ আকাশের অবস্থা দেখেছিস ! এমন সেজেগুজে কলেজে যায় যেন কলেজ না কোন ম্যাগাজিনের ফটোশুটে যাচ্ছে ! আর তিন দিনেই কতোগুলো বান্ধবী বানিয়েছে দেখ ! „ কয়েকদিন আগে সমরেশ বাবু সুমিকে বোনকে বোঝানোর জন্য যে কথাগুলো বলেছিল , আজ বোনের কথা শুনতে শুনতে ওর উৎসাহ আর হাল্কা ঈর্ষা দেখে সেই কথা গুলোই সুমির মাথাতে বারবার আঘাত করতে শুরু করলো। সেদিন কথাগুলো না বলতে পারলেও আজকে যেন সুচি নিজেই সুমিকে কথাটা বলার সুযোগ করে দিল “ তুই কি ওকে ভালোবাসিস ? „ দিদির প্রশ্ন শুনে প্রথমে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে সুমির দিকে তাকিয়ে থাকার পর হো হো করে সুচির অট্টহাস্যের শব্দে ঘরটা কেঁপে উঠলো “ কি সব উল্টোপাল্টা কথা বলছিস ! „ বোনের অট্টহাসিতে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে গম্ভীর স্বরেই সুমি জিজ্ঞাসা করলো “ তাহলে ওকে স্টক করছিস কেন ? আর ওর সবকিছুতে ওকে এতো কন্ট্রোল করিস কেন ? „ “ আমি কোথায় ওকে স্টক করছি ! আমিতো শুধু...... আর কিছু বলতে পারলো না সুচি । কারন আর কিছু নেই বলার মত । বোনের হঠাৎ চুপ করে যাওয়া দেখে সুমি এবার খাটের উপর এসে সুচির পাশে বসলো “ তিন চারদিন আগে বাবা আমাকে ডেকে তোকে বোঝাতে বলেছিল । কি বোঝাতে বলেছিল জানিস ? „ সুমি নিজেই প্রশ্নটা করে নিজেই উত্তর দিতে শুরু করলো “ বলেছিল তোকে ছোটবেলা থেকে বোঝাচ্ছে যে ওই পরিবারের সাথে বেশি ঘনিষ্ঠ না হতে । কিন্তু তুই শুনিস নি। ওই পরিবারের লোক সম্পর্ক , ভালোবাসা , পরিবারের থেকে টাকা , যশ আর খ্যাতিকে বেশি প্রায়োরিটি দেয়। ওদের সাথে আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের কোন ধরনের সম্পর্ক হয় না। তুই কিন্তু আর বাচ্চা না ! কলেজে পড়িস। ম্যাচিউর হয়ে গেছিস । তাই বলছি তুই কি ওকে ভালোবাসিস ? „ সুচি এবার একটু জোড় করে মুখে হাসি এনে বললো “ বাজে কথা বলিস না। কাকি মোটেও ওরকম না । আর আমি কেন ওই ছ্যাচড়া ছোট লোকটাকে ভালোবাসতে যাবো । ওকে কেউ ভালোবাসতে পারবে না । এক নম্বরের জন্তু । „ বোনের কথা শুনে সুমি বললো “ তুই আমাকে মিথ্যা বলছিস ঠিক আছে কিন্তু নিজেকে তো সত্যিটা বল । „ সুচি এবার রেগে গিয়ে বললো “ সত্যি একটাই , তুই বাজে বকছিস । „ বলে খাট থেকে উঠে ঘরের বাইরে চলে গেল । এইভাবে হঠাৎ এরকম একটা কথা উঠে আসবে সেটা সুচি ভাবেনি। হয়তো জীবনের সবথেকে বড়ো সত্যি কথাটা এইভাবে কেউ জিজ্ঞাসা করবে সেটা সুচির মন ভাবেনি। মনের সবথেকে প্রিয় ও ভালোলাগার বিষয় নিয়ে এই ভাবে মুখোমুখি সম্মুখীন হয়ে সুচি এখন অপ্রস্তুত। তাই অপ্রস্তুত হয়ে একটাই প্রশ্ন বুকের মধ্যে নিয়ে লিভিংরুমের সোফায় গিয়ে বসলো সুচি। বারবার একটা কথা নিজেকে বলতে লাগলো , নিজের মনকে বোঝাতে লাগলো ‘ এরকম কোন ব্যাপার নেই। আকাশ আমার শুধু বন্ধু। ওর সাথে ঘুরতে ভালো লাগে । কথা বলতে ভালো লাগে । একসাথে সময় কাটাতে ভালো লাগে । ব্যাস এর বেশি কিছু না। ‚ কিন্তু সুচির মন বারবার বলতে লাগলো ‘ তুই মিথ্যা বলছিস । ‚ পরবর্তী কয়েকটা দিন মাথার মধ্যে একটাই প্রশ্ন ঘুরতে লাগলো । সুমির করা প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে শুধু । এই মন আর মাথার দ্বন্দ্বে সুচি খিটখেট আর চুপচাপ স্বভাবের হয়ে গেল। গালে গর্ত হয়ে টোল পড়ে সেই হাসিটার জৌলুস কোথাও যেন হারিয়ে গেল। আগের মতো হুটহাট আকাশের ঘরে এমনকি আকাশদের ফ্ল্যাটে যাওয়া বন্ধ করে দিল। বাবা মা মনে করলেন যে এটা হয়তো পড়ার চাপে হচ্ছে। আকাশ সুচির এই পরিবর্তনে খুব খুশি হলো। আর কোন কৈফিয়ত দিতে হয় না , কোনকিছুতে বাঁধা আসে না। আরও কয়েক সপ্তাহ পর পূজা শুরু হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছরের মতো আকাশের সাথে ঘুরতে বেরিয়ে পড়লো সুচি। নিজেকে এতো বোঝানোর পরেও কোথাও একটা বাঁধা অনুভব করলো সুচি। সেই প্রশ্নটা স্বাভাবিক ভাবে আর আকাশের সাথে মিশতে দিচ্ছে না। পূজা শেষ হতেই একদিন রাতে আকাশ এসে হাজির। ঘরে ঢুকেই সুমি কে উদ্দেশ্য করে বললো “ তোমাকে একটা রিকোয়েস্ট রাখতে হবে সুমিদি । „ সুমি আকাশের কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো। ভুরু কুঁচকে বললো “ রিকোয়েস্ট ! „ “ আমাকে পড়াতে হবে । „ সুমি মাথা দুই দিকে নাড়িয়ে বললো “ না ! না ! একদম না । আমার সময় নেই । আমাকে রেহাই দে । „ আকাশ করুন সুরে বললো “ প্লিজ , প্লিজ , এরকম করো না। দেখো ! কোচিংয়ে কোন পড়া হয়না , শুধু নোটস দিয়ে খালাস । এই কয় মাসে একটাও চ্যাপ্টার বুঝতে পারিনি । „ “ তাহলে অন্য টিচার দেখ । „ আকাশ গলায় সেই করুন সুরটা বজায় রেখে বললো “ সব টিচারই এরকম করছে । ফিজিক্স এর টিচার 1200 নিচ্ছে , বাংলা আর ইংলিশের টিচার 900 করে নিচ্ছে , ম্যাথ আর কেমিস্ট্রির টিচার ও 1200 নিচ্ছে । কিন্তু বোঝানোর বেলায় নোটস দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে । প্লিজ তুমি এরকম করো না। প্রতিদিন পড়াতে হবে না । মাঝে মাঝে যে চ্যাপ্টার বুঝতে পারবো না , সেটাই বুঝিয়ে দেবে। একমাত্র তুমিই ভরসা । „ নাছোড়বান্দা আকাশের কথা শুনে সুমি বললো “ ঠিক আছে। তবে কয়েকটা শর্ত আছে ! „ সুমির রাজি হওয়াতে আকাশ খুব খুশি হলো। চোখে মুখে খুশি ফুটিয়ে তুলে, ঠোটে হাসি নিয়ে বললো “ সব শর্তে রাজি । „ আকাশের অবস্থা দেখে সুমি না হেসে পারলো না “ আগে শর্ত গুলো তো শোন । „ “ বলো । „ সুমি কিছুক্ষণ ভেবে নিজের শর্ত গুলো বলতে শুরু করলো “ আমি কোন ফিজ নেবো না । মাঝে মাঝেই রাজ্যের নানা প্রান্তে যেতে হয় তাই কোন রুটিন মেনে পড়াতে পারবো না। আর কাউকে বলতে পারবিনা যে আমি তোকে পড়াচ্ছি । „ আকাশ সম্মতিসূচক একটা মাথা নেড়ে বললো “ ok. „
01-11-2021, 09:07 AM
এখন সুচি সবকিছু ভুলে আবার আকাশের সাথে মিশতে শুরু করেছে । নিজেকে বুঝিয়েছে বেস্টফ্রেন্ড ছাড়া কিছু না । পরের বছরের শুরুতেই কলেজের ফাংশনের জন্য সুচি পার্লারে যাবে ঠিক করলো। দুপুরের দিকে পার্লার একটু ফাঁকা থাকে তাই দুপুরে আকাশের ঘরে এসে খাটের উপর উল্টে পড়ে থাকা আকাশকে টেনে তুলে বললো “ চল আমার সাথে পার্লারে । „
দুপুরবেলা একি হাঙ্গামা আবার “ আমি পার্লারে যাবো কেন ? „ সুচি ভুরু নাচিয়ে বললো “ আমি একা একা যাবো না তাই । „ সুচির আবার আগের স্বভাব ফিরে পেতে বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু এই সময়টা আকাশের জীবনে ছিল স্বাধীনতা। মুক্তো সে। কিন্তু হঠাৎ আবার পুরানো সুচিকে ফিরে পেয়ে আকাশ কোথাও যেন খুশি হলো। স্বাভাবিক জীবনের মজাই আলাদা। তাই সুচি যখন টেনে খাট থেকে তাকে নামালো তখন আবার সেই আগের মতো বিরক্তি মিশিয়ে আকাশ বললো “ প্যান্টটা তো পড়তে দে । নাকি হাফ প্যান্টে যাবো ? „ “ পড়ে নে । „ বলে সুচি খাটের উপরেই বসে পড়লো। আকাশ দিদিমার ব্যাবহার করা পুরানো আমলের আলনা থেকে একটা ফুল প্যান্ট পড়ে , বেল্ট পড়ে নিতেই সুচি আকাশকে নিয়ে বেরিয়ে গেল। পনেরো মিনিট মতো স্কুটি চালিয়ে একটা ভালো ইউনিসেক্স পার্লারের সামনে স্কুটিটাকে দাড় করালো সুচি। এখানে ছেলেদের জন্য ওয়েটিং রুমে বসার বন্দোবস্ত করা আছে। ভিতরে ঢুকে ওয়েটিং রুমে বসে পড়লো দুজনে । আকাশ সুচির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো “ কতক্ষণ লাগবে ? „ “ আধঘন্টা মতো । বেশি না । „ দুই মিনিট পরেই সুচি উঠে চলে গেল। এতক্ষণ পর আকাশ খেয়াল করলো ছোট্ট ওয়েটিং রুমে আরও একজন ছেলে বসে আছে । বয়স তেইশ চব্বিশ হবে। একদৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে ছেলেটা কৌতুকের সুরে জিজ্ঞাসা করলো “ এই প্রথম ? „ আকাশ প্রশ্নটা বুঝতে না পেরে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। আকাশের মুখের ভাব বুঝতে পেরে ছেলেটা একটু হেসে জিজ্ঞাসা করলো “ গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে এই প্রথম পার্লারে এলে ? „ আকাশ বুঝলো যে ছেলেটা তাকে আর সুচিকে গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড ভাবছে । আর এমনিতেও আকাশের উচ্চতা আর মুখের কঠিনতা দেখে অনেকেই তার বয়স বুঝতে পারে না। ক্লাসের বন্ধুরা এমনকি টিচাররাও কয়েকবার বুঝতে পারে নি আকাশের বয়স। আকাশ এই ব্যাপারটা খুব উপভোগ করে “ হ্যাঁ এই প্রথম। জোর করে ধরে এনেছে । „ ছেলেটা মুখের হাসি বজায় রেখে বললো “ দেখে বোঝা যাচ্ছে । এখন বসে থাকো কয়েক ঘন্টা । „ আকাশ ছেলেটার মুখে সময় শুনে আকাশ থেকে পড়লো “ কয়েক ঘন্টা ! „ “ আমি তো দেড় ঘন্টা হলো বসে আছি । তুমি চাইলে ম্যাগাজিন পড়তে পারো। সময় কাটবে । „ আকাশ উঠে ছেলেটার পাশ থেকে একটা ম্যাগাজিন তুলে নিল । ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন চুলের স্টাইল দেখতে লাগলো। বিভিন্ন পোজে মডেলদের ফটো আছে। তারপর ফোন বার করে গেম খেলতে শুরু করলো। গড়ানোর ব্যাবস্থা থাকলে একটু গড়িয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু সেই ব্যাবস্থা নেই দেখে আকাশ আবার ম্যাগাজিন তুলে ফটো গুলো দেখতে লাগলো । ঠিক তখনই সুচি সামনে এসে বললো “ তোকে চাপদাড়িতে ভালো মানাবে । „ আকাশ মাথা তুলে দেখলো সুচি দাড়িয়ে আছে। সুচির কথাটা শুনে আকাশ ম্যাগাজিনে দেখলো একটা মডেলের চাপ দাড়ির দিকেই ইঙ্গিত করছে সুচি। ফটোটা দেখে , ম্যাগাজিন টা রেখে , পার্লারের বাইরে চলে এলো। সুচিত্রা বাইরে এসে স্কুটিটাকে ঠেলে রাস্তায় আনতে লাগলো। তখন আকাশ মজা করে বললো “ ভিতরে যে দাদাটা বসে আছে , সে কি ভাবছিল জানিস ! আমাদের বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড ভাবছিল। „ কথাটা শুনেই সুচির বুকটা ধড়াস করে উঠলো। সুচির মনে হতে লাগলো যতো দ্রুত সম্ভব এখান থেকে যাওয়া দরকার । সঙ্গে সঙ্গে স্কুটিতে বসে পড়লো সুচি । আকাশ হাসতে হাসতে সুচির পিছনে বসে পড়লো “ কি করালি ? „ নিচু স্বরে সুচি বললো “ বেশি কিছু না । শুধু ফেসিয়াল আর ভুরু ফিলাপ করালাম । „ “ এদিকে ঘোর । „ সুচি পিছন দিকে মুখটা ঘোরাতেই আকাশ সুচির মুখের উপর মুখটা এনে সুচির ভুরু দেখতে শুরু করলো। আকাশের নাকের গরম নিশ্বাস সুচি নিজের মুখের উপর অনুভব করতে শুরু করলো। আকাশের ঠোটটা আর একটু দুরে আছে। সুচির হৃদপিণ্ড দ্রুত চলতে শুরু করলো । কয়েক সেকেন্ড ভুরু দেখে আকাশ বললো “ হ্যাঁ আগের থেকে একটু বেশি কালো দেখাচ্ছে । „ সুচি সঙ্গে সঙ্গে সামনে মুখ ঘুরিয়ে আনলো। কেউ একজন সুচির ভিতর থেকে বলতে শুরু করলো “ তুই এই ছেলেটাকে ভালোবাসিস। „ আবার সেই মনের দ্বন্দ্ব শুরু হতেই সুচি স্কুটিটাকে স্পিডে চালিয়ে দিল। এতদিনে অনেক কষ্টে সুচি নিজেকে বুঝিয়েছে । কিন্তু এখন নিজেকে যতো বোঝাচ্ছে ততো যেন কষ্ট বাড়ছে । ওই প্রশ্নটা আর নিজের ভেতর থেকে আসা উত্তরটা তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাকে। বিকালে কলেজ ফাংশনে গিয়ে বান্ধবীদের সাথে আড্ডা নাচ গান করে নটার আগে বাড়ি ফিরলো সুচি। এখন অনেকটা হাল্কা লাগছে। পরবর্তী কয়েক মাস মাঝেমাঝে বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে ওই প্রশ্নটা ফিরে আসছে । আগের থেকে সুচি অনেক শান্ত হয়ে এসছে। একটা প্রশ্ন যে তাকে এইভাবে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারবে সেটা কখনোই ভাবে নি সুচি। কিন্তু আবার নিজেকে বোঝাচ্ছে এরকম কিছুই না , আকাশ শুধু বন্ধু। নিজেকে বারবার মিথ্যা বলার পর একটা কষ্ট হতে শুরু করলো সুচির। স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছে। ভিতরে যাই হোক বাইরে সেটা কাউকে লক্ষ্য করতে দিচ্ছে না সুচি। আকাশ ক্লাস ইলেভেনে খুব ভালো নাম্বারে পাস করে ক্লাস টুয়েলভে উঠলো । আগের মতোই সপ্তাহে এক দুবার সুমির কাছে পড়তে আসতে লাগলো আকাশ। একদিন ঘরে ঢুকে বই খাতা বার করার পর সুচি আর সুমি দুজনেই আকাশের ডান কাঁধের অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করলো । মনে হলো যেন ডান কাঁধে ব্যাথার কারনে ডান হাতটা আসতে আসতে নাড়াচাড়া করছে সে । “ কি হয়েছে কাঁধে ? „ প্রশ্নটা না করে থাকতে পারলো না সুচি। আকাশ স্বর নামিয়ে বললো “ চুপপপ আস্তে । „ “ কি হয়েছে কাঁধে সেটা বলবি তো । „ খুব রাগী আর গম্ভীর স্বরে সুচি জিজ্ঞাসা করলো । আকাশ নিরুপায় হয়ে বললো “ মাকে বলবি না বল । „ “ না , বলবো না । তুই বল কাঁধে কি হয়েছে । কেউ মেরছে ? „ আকাশ হেসে বললো “ আমাকে মারবে এমন সাহস কারোর নেই। বাইক থেকে পড়ে গিয়েছিলাম । „ ভুরু কুঁচকে মুখে হাজার প্রশ্নের চিহ্ন ফুটিয়ে সুচি জিজ্ঞাসা করলো “ বাইক থেকে ! কার বাইক ? কখন ? কিভাবে পড়লি ? „ আকাশ বলতে শুরু করলো------- আজকে আমাদের এক বন্ধুর জন্মদিন ছিল । তাই ঠিক করেছিলাম কলেজ থেকে ফেরার পর রেস্টুরেন্টে গিয়ে সেলিব্রেট করবো। সেই মতো কলেজ থেকে ফিরে বাড়ি এসে চলে গেছিলাম বন্ধুর বাড়ি। ওর বাইক আছে কিন্তু লাইসেন্স হয়নি। তাই ওর বাইকেই চড়ে অলিগলি দিয়ে যাচ্ছিলাম রেস্টুরেন্টে। মাঝপথে একটা বেশ পাঁচ ছয় ফুট সরু গলির মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে একটা বিড়াল সামনে চলে এলো। আমার বন্ধু স্পিডে চালাচ্ছিল। হঠাৎ ব্রেক চাপতে বাইকটা তো পড়লোই তার সাথে আমিও রাস্তায় ডান কাঁধের উপর ভর করে পড়লাম । রাস্তায় পড়ে ছয় সাত দূরে গড়িয়ে গেলাম । এতক্ষণ শুনেই সুচি প্রায় চিল্লিয়ে উঠলো “ আর যাবি না ওর বাইকে । ঠিক মতো চালাতে পারে না ! উঠিস কেন ওদের বাইকে ? „ কথাটা বলেই সুচি সুমির দিকে তাকালো। সুচি দিদির দিকে তাকিয়েই চোখ নিচে নামিয়ে নিল। সুমি এক দৃষ্টিতে তারই দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশ সুচির রাগকে তেমন পাত্তা না দিয়ে বললো “ ও ভালোই চালাতে পারে। দূর্ঘটনা তো যে কারোর সাথেই ঘটতে পারে। ওই বিড়ালটা হঠাৎ লাফিয়ে সামনে চলে এসছিল তাই। মাকে বলবি না কিন্তু। „ তারপর প্রায় আধঘন্টা পড়ে আকাশ চলে গেল । আকাশ চলে যেতেই সুমি বললো “ এখনও সময় আছে সুচি ! স্বীকার করে নে। ও যখন ওই দূর্ঘটনার কথা বলছিল তখন আমি তোর চোখে ভয় দেখেছি। স্বীকার করে নে বোন আমার । „ সুচি শান্ত স্বরে বললো “ স্বীকার করার কিছু নেই দি। ওর এক্সিডেন্ট হয়েছে তাই ভয় পেয়েছিলাম। „ সুমি সুচিকে আরও চেপে ধরলো “ নিজেকে মিথ্যা বলিস না। শোন আমার কথা। স্বীকার করে নে । হয়তো কষ্ট পাবি কিন্তু একটু কম কষ্ট হবে , চোখের জল একটু কম পড়বে, দুঃখ একটু কম পাবি। স্বীকার করে নে। „ সুচি এবার রাগি আর বিরক্তি মিশিয়ে বললো “ তোর মাথাটাই খারাপ হয়ে গেছে। বাবা তোকে ভাংচুং বুঝিয়েছে । আর তুইও বাবার কথায় নাঁচছিস । „ কথাটা বলে সুচি মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে ফোন ঘাটতে শুরু করলো । এতো লুকোচুরি খেলার পরেও শেষ রেহাই হলো না আকাশের। ডানহাতি হওয়ার জন্য রাতে ডিনার খাওয়ার সময় ডান হাত দিয়ে খেতে গিয়ে ধরা পড়ে গেল। বাবা মা দুজনেই লক্ষ্য করে বললেন “ কি হয়েছে কাঁধে ? „ আকাশ একটু ভয় পেয়ে বললো “ ও কিছু না । একটু লেগেছে। „ আকাশের মা সঙ্গে সঙ্গে চেয়ার থেকে উঠে আকাশের জামা খুলে দেখলেন কাঁধে বেশ কিছুটা ছড়ে গেছে “ এটাকে একটু লেগেছে বলে ! „ তারপর আকাশের বাবাকে উদ্দেশ্য করে বললেন “ দেখো তুমি কতোটা ছড়ে গেছে । „ তারপর আবার আকাশের দিকে ফিরে জিজ্ঞাসা করলেন “ সত্যি বল কার সাথে মারপিট করে এসছিস ? „ আকাশ জামাটা ঠিক করতে করতে বললো “ মারপিট করতে যাবো কেন ? ওই বিকালে খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম । তখন লেগেছে। ও তুমি বেশি চিন্ত করো না তো । „ স্নেহা দেবী আরও রেগে গিয়ে বললেন “ চিন্তা করো না ! খুব বড়ো হয়ে গেছিস , তাইতো ! „ এখন আর আগের মতো বকাঝকা করাও যায় না , আর মারাও যায় না। সত্যি আকাশ বড়ো হয়ে গেছে। দেখতে দেখতে ষোল সতেরো বয়স তো হয়ে গেল। পরম যত্নে ঘায়ে মলম লাগিয়ে তারপর খেতে বসলেন স্নেহা দেবী । সবকিছু আগের মতো চললেও সুচির ভিতরটা আর আগের মতো নেই। সুচি নিজের জন্মদিনে কলেজ গেল না। বাড়িতেই কাটালো দিনটা। সুমি গতকাল অফিসের কাজে দুদিনের জন্য নদীয়া গেছে। জন্মদিনে দিদি অনুপস্থিত তাই সুচির একদম ভালো লাগছিল না। বিকাল বেলা কলেজ থেকে ফিরে ভালো জামা কাপড় পড়ে আকাশ সুচির ফ্ল্যাটে হাজির হলো । সুচিকে উদাস মনে টিভি দেখতে দেখে আকাশ বললো “ তুই এখনও তৈরি হোস নি ! „ “ আমার আজ ভালো লাগছে না। দিদি নেই। „ “ ওইসব বললে তো চলবে না। বিপ্লব আর জয়শ্রী দি অপেক্ষা করছে। তৈরি হয়ে নে । আমি অপেক্ষা করছি। „ নাছোড়বান্দা আকাশের হাবভাব দেখে সুচি ঘরে গিয়ে একটা জিন্স আর টপ পড়ে ঘরের বাইরে এলো। তারপর আকাশ কে নিয়ে নির্দিষ্ট রেস্টুরেন্টে পৌছল। প্রতিবছর আলাদা আলাদা রেস্টুরেন্ট সুচির জন্মদিন সেলিব্রেট করা হয়। কিন্তু লোক সংখ্যা পাঁচ জনের বেশি কখনোই হয় না। সুচি, সুমি, বিপ্লব, জয়শ্রী আর আকাশ। এই সেলিব্রেট মূলত আকাশের উৎসাহেই করা হয়। রেস্টুরেন্টে ঢুকে দেখলো একটা ছোট গোল টেবিলে জয়শ্রী আর বিপ্লব বিচ্ছু একটা 2 pound এর কেক সাজিয়ে বসে আছে। আলো পাশে আরও অনেকে বসে আছে। কিন্তু তারা সবাই নিজেদের মধ্যেই ব্যাস্ত । সুচি চেয়ারে বসতেই বিপ্লব বিচ্ছু একটা ব্লাস্টার ফাটিয়ে বললো “ happy birthday সুচিদি। „ সুচি “ থ্যাঙ্ক ইউ „ বলে কেক কাটতে শুরু করলো। সবাই happy birthday গানটা গেয়ে সুচিকে উইশ করলো। কেক কাটার পরেই প্রথম টুকরোটা অটোমেটিক বাঁদিকে বসে থাকা আকাশের মুখের দিকে বাড়িয়ে দিল সুচি। তারপর গিফ্ট দেওয়ার পালা এলো। জয়শ্রী একটা বই উপহার দিল। বিপ্লব বিচ্ছু একটা দামী পেন উপহার দিল। আর আকাশ দিল কয়েক হাজারের একটা দামী বিদেশী কোম্পানির mackup kit । উপহারটা দেখে সুচির ডান দিকে বসে থাকা জয়শ্রী সুচির কানে কানে বললো “ খুব ভাগ্য করে এমন একটা বন্ধু পেয়েছিস। আমি কিংবা বিপ্লবও ওর বন্ধু। কিন্তু আমাদের জন্য কখনো ও এতো খরচ করে না। খুব lucky তুই । „ জয়শ্রীর কথাটা যে সুচি আগে কখনো শোনে নি এমন নয়। কিন্তু তখন পরিস্থিতি আলাদা ছিল আর এখন আলাদা। সর্বপরি তখন সুমির করা প্রশ্নটা ছিল না। এখন আছে। সুমি প্রশ্নটা করার পর থেকে সুচির মনে হতে শুরু করেছিল যেন আশেপাশের সবাই তাকে এটাই বোঝাতে চাইছে যে তুই ওই 5'9 ইঞ্চির আকাশ নামের ছেলেটাকে ভালোবাসিস। যাকে তুই মাঝেমাঝেই অসভ্য , লম্পট , চিড়িয়াখানার জন্তু বলে সম্বোধন করিস তাকে তুই ভালোবাসিস। সুচির কলেজ কোচিং , আকাশের কলেজ আর কোচিংয়ের মধ্যে দিয়ে বছর পার হয়ে গেল। সুচি নিজেকে বুঝিয়ে রেখেছে যে বাবা দিদি ভুল ভাবছে। পরের বছর আকাশের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হলে সুমির দৌলতে কলেজে দশের মধ্যে দ্বিতীয় হয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাস করলো আকাশ। আর এদিকে সুচিও খুব ভালো গ্রেড পেয়ে B.Com পাস করলো। পরিক্ষায় এতো ভালো নাম্বার পেয়ে আকাশ বায়না করলো যে একটা বাইক কিনে দিতে। ছেলের আবদার শুনেই স্নেহা দেবী রেগে গিয়ে বললেন “ না , ওই দু চাকা চালাতে হবে না। খুব দূর্ঘটনা ঘটে ওতে। „ মায়ের রাগী স্বর শুনে আকাশ আর আকাশের আবদার মিইয়ে গেল। কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা উঠলে সবাই ভাবতে শুরু করলো কোথায় ভর্তি করা যায়। অফিসে শুভাশীষ বাবুর চিন্তিত মুখ দেখে সঞ্জয় জিজ্ঞাসা করলো “ কি এতো ভাবছেন বলুন তো সকাল থেকে? „ “ ওই আকাশকে কোন কলেজে ভর্তি করাবো সেটাই ভাবছি। „ “ তা বেশ তো লন্ডনে পাঠিয়ে দিন। আমিও তো আমার মেয়েকে ওখান থেকেই পড়াচ্ছি । এই পোড়া দেশের সার্টিফিকেটের দাম নেই। „ কথাটা ভালো লাগলো আকাশের বাবার। বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে কথাটা বললেন। আকাশের মা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন “ তুমি তো সারাদিন অফিসে কাজ করে দূরে থাকো। বাড়িতে আমি আর আমার ছেলে থাকি। ছেলেটাকেও আমার কাছ থেকে দূর পাঠিয়ে দেবে । „ কথাটা এমন ভাবে আকাশের মা বললেন যেন তার কাছ থেকে সবকিছু কেড়ে নেওয়া হচ্ছে । তাই আকাশের বাবা আর কিছু বললেন না। আঠারো উনিশ বছর সাংসারিক জীবন করেও আকাশের বাবা এখনও এই মহিলাকে বুঝতে পারেন নি। আকাশের মা কখন কোন কথায় কিভাবে রিয়েক্ট করবে সেটা একটা বড়ো ধাঁধা আকাশের বাবার কাছে। কয়েক দিন পর সকালে আকাশ সুচির ঘরে ঢুকে ঘাটের উপর গড়িয়ে বললো “ তোর কলেজে ভর্তি নিয়েছি । আজকে বাবা গেছে ডোনেশন আর ভর্তির ব্যাপারে কথা বলতে । BBA নিয়ে ভর্তি হচ্ছি। তোর স্কুটিতে যাবো একসাথে আগের মতো । „
01-11-2021, 09:51 AM
(This post was last modified: 01-11-2021, 10:46 AM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আকাশ আর সুচিত্রার মিষ্টি মুহূর্তগুলো বেশ উপভোগ করলাম।
আকাশের প্রতি তার feelings নিয়ে সুচিত্রার মনে এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও আকাশের attitude বেশ সাবলীল লাগলো। প্রিন্সেপ ঘাটের বেঞ্চিতে বসে ভাইটুর মনে হয় গঙ্গার তাজা বাতাস সেবন করার অভিজ্ঞতা বেশ কয়েকবার হয়েছে। না হলে এইরূপ বর্ণনা এলো কোথা থেকে! এর বেশি কিছু আর বললাম না, তাহলে বাকিরা কি বলবে! by the way বেশ কিছু জায়গায় spelling mistake আছে। বরাবরের মতোই যেখানে ৺ দেওয়ার কথা সেখানে দিচ্ছো না আর যেখানে ৺ না দেওয়ার কথা সেখানে দিয়ে দিচ্ছো।
01-11-2021, 09:51 AM
একটা ব্যাপার বলি, এই গল্পটা পড়তে পড়তে খুব মনে হত আমারও যদি সুচির মত বন্ধু থাকত, তারপরেই মনে পড়ল ছোটবেলায় বাবার কাজের সূত্রে বর্ধমান থাকতাম, সেখানেই একদিন দেখেছিলাম আমার বয়সী একটি মেয়ে মা বাবার সাথে এসেছে ভাড়া থাকবে। সেই মেয়েটিও সুচির মতন ছিল, সহ্য করতে পারতাম না দুজনকে, ? আবার খেলার জন্য একজনই সাথী ছিল। সুচির মতোই মারত, আবার না দেখলে শান্ত হত না, তো যাই হোক জীবন টা বাস্তব। কলকাতার বাড়িতে থেকে কলেজে পড়ব বলে বাবা নিয়ে চলে আসে, পাকাপাকিভাবে কলকাতাতেই রয়ে যাই, বড় হয়ে একবার গেছিলাম বর্ধমান, তাকে দেখেছিলাম, অত্যন্ত সুন্দরী মাথা ঘুরিয়ে দেবার মত। দুঃখজনক ভাবে তার আমার কথা কিছু মনে ছিল না (কি একটা অসুখ হয়েছিল তার জন্য নাকি) ? আজ লেখাগুলো পড়ে আবার তার কথা মনে পড়ল, কে জানে কোথায় আছে সে। ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট ছিল শুনেছি, লন্ডন বা আমেরিকায় হয়তো বিয়েও হয়ে গেছে! সোশ্যাল সাইটে যে খুঁজব তারও উপায় নেই, ওর ভালো নামটাই জানার চেষ্টা করিনি, দরকার হয় নি, রিম্পি নামেই চিনতাম। যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক সে। ? লেখককে আবার ধন্যবাদ জানাই একটুকরো ছোটবেলা ফিরিয়ে দেবার জন্য ❤️
01-11-2021, 09:57 AM
সুচি আর আকাশের নতুন শুরু,
কলেজে বাড়বে প্রেমের উড়ু। তোমারেই চেয়েছি,
শতরূপে শতবার , নিয়মে অনিয়মে ।
01-11-2021, 10:02 AM
কুটাকুটি , হাতাহাতি , ঠাসঠাস ইত্যাদি থেকে আচমকা নতুন দিকে বাঁক নিয়েছে কাহিনী অবশেষে ...
ঠিক এই জিনিসটার অপেক্ষায় ছিলাম ... কিছু ছোটোখাটো বানান ভুল বাদ দিলে আমার মতে এই গল্পের শ্রেষ্ঠ পর্ব এখন অবধি !!!
01-11-2021, 10:41 AM
গল্প এবার মূল পর্বের দিকে এগোচ্ছে। আকাশ-সুচির কৈশোর প্রেমের উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে।
বেশ ভালো লাগলো পর্বটি।
01-11-2021, 10:48 AM
(01-11-2021, 09:33 AM)The Boy Wrote: প্রতিবারের মতো এবারও অসাধারণ লাগলো! ❤️ অসাধারণ লাগলো জেনে খুশি হলাম.... (01-11-2021, 09:51 AM)The Boy Wrote: একটা ব্যাপার বলি, এই গল্পটা পড়তে পড়তে খুব মনে হত আমারও যদি সুচির মত বন্ধু থাকত, তারপরেই মনে পড়ল ছোটবেলায় বাবার কাজের সূত্রে বর্ধমান থাকতাম, সেখানেই একদিন দেখেছিলাম আমার বয়সী একটি মেয়ে মা বাবার সাথে এসেছে ভাড়া থাকবে। সেই মেয়েটিও সুচির মতন ছিল, সহ্য করতে পারতাম না দুজনকে, ? আবার খেলার জন্য একজনই সাথী ছিল। সুচির মতোই মারত, আবার না দেখলে শান্ত হত না, তো যাই হোক জীবন টা বাস্তব। কলকাতার বাড়িতে থেকে কলেজে পড়ব বলে বাবা নিয়ে চলে আসে, পাকাপাকিভাবে কলকাতাতেই রয়ে যাই, বড় হয়ে একবার গেছিলাম বর্ধমান, তাকে দেখেছিলাম, অত্যন্ত সুন্দরী মাথা ঘুরিয়ে দেবার মত। দুঃখজনক ভাবে তার আমার কথা কিছু মনে ছিল না (কি একটা অসুখ হয়েছিল তার জন্য নাকি) ? আজ লেখাগুলো পড়ে আবার তার কথা মনে পড়ল, কে জানে কোথায় আছে সে। ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট ছিল শুনেছি, লন্ডন বা আমেরিকায় হয়তো বিয়েও হয়ে গেছে! সোশ্যাল সাইটে যে খুঁজব তারও উপায় নেই, ওর ভালো নামটাই জানার চেষ্টা করিনি, দরকার হয় নি, রিম্পি নামেই চিনতাম। যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক সে। ? লেখককে আবার ধন্যবাদ জানাই একটুকরো ছোটবেলা ফিরিয়ে দেবার জন্য ❤️ এরকম স্মৃতি সবার জীবনেই একটু আধটু থাকে . ... আর যার থাকে না তার থেকে বড়ো অভাগা এই পৃথিবীতে বিরল.... আমারও একটা স্মৃতি আছে... স্মৃতি হয়েই আছে.... হয়তো এই সুচিত্রাই সেই মন খুলে কমেন্ট করলেন দেখে রেপু দিলাম ❤❤❤
01-11-2021, 10:52 AM
(01-11-2021, 09:51 AM)Bumba_1 Wrote: আকাশ আর সুচিত্রার মিষ্টি মুহূর্তগুলো বেশ উপভোগ করলাম। একবার না দুবার না তিনবার প্রিন্সেপ ঘাটে... একবার ব্যারাকপুর এর মঙ্গলপান্ডে পার্কের গঙ্গার ঘাটে.... বাতাস সেবন-ই করেছি আর বলবেন না... কাল থেকে তিনবার প্রুফ সংশোধন করেছি.... তবুও অটোকারেক্ট আমার পিছন মারলো... না, না, আপনিও লিখবেন, বাকি সবাই ও লিখবে.... ভিতরের জিনিস এক হলেও বলার ভঙ্গি আলাদা হবে... পড়তে তো ভালোই লাগে ❤❤❤ |
« Next Oldest | Next Newest »
|