09-10-2021, 11:49 AM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
|
09-10-2021, 11:50 AM
(09-10-2021, 08:34 AM)Bichitravirya Wrote: আগে বিয়ের আগে পর্যন্ত শেষ করি.... এখনও অনেক রাস্তা বাকি আছে। তারপর বিয়ের পরের চিন্তা হবে.... তারমানে বেচারা আকাশের লাইফ পুরো চটকে চল্লিশ করেই তবে থামবে Thangai মানে উনি বলতে চেয়েছেন- ঠেঙ্গায়
09-10-2021, 01:20 PM
(09-10-2021, 11:47 AM)raja05 Wrote: Are thangani khao ni....wait ....let me translate it....ঠ্যাঙানি বুঝলাম। আমি ওটা ঠাঙ্গাই উচ্চারণ করছিলাম (09-10-2021, 11:49 AM)raja05 Wrote: Gr8......besh jomjomat ekta lekha aste cholche tobe next part gulo te এতো আশা রাখবেন না। একদম রাখবেন না...... (09-10-2021, 11:50 AM)Baban Wrote: তারমানে বেচারা আকাশের লাইফ পুরো চটকে চল্লিশ করেই তবে থামবে জন্মের দিন থেকে পিছনে পড়ে আছে.... ভাবুন একবার আপনার অবতার টা কিন্তু বেশ সুন্দর ❤❤❤
09-10-2021, 01:36 PM
(This post was last modified: 09-10-2021, 01:38 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
09-10-2021, 01:38 PM
09-10-2021, 01:41 PM
(09-10-2021, 01:20 PM)Bichitravirya Wrote: বুঝলাম। আমি ওটা ঠাঙ্গাই উচ্চারণ করছিলাম (09-10-2021, 01:36 PM)Baban Wrote: ঐটা আমিই..... কার্টুন ভার্সন Ur drwaing is very nice.....btw how r u now ?
09-10-2021, 02:08 PM
(This post was last modified: 09-10-2021, 02:11 PM by Bichitro. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
09-10-2021, 03:04 PM
09-10-2021, 03:57 PM
09-10-2021, 04:30 PM
(03-10-2021, 09:30 AM)Bichitravirya Wrote: (04-10-2021, 11:23 AM)ddey333 Wrote: পড়তে একটু দেরি হয়ে গেলো , নিজেকেই তাই বললাম IDIOT !!! idiot না। হ্যাদারাম------হাহাহা
09-10-2021, 04:35 PM
10-10-2021, 09:00 AM
Update 2
আজ সুচির অন্য কলেজে প্রথম দিন । দিদির পরামর্শে কমার্স স্ট্রিম নিয়ে ভর্তি হয়েছে সে । সোসাইটির গেট পর্যন্ত আকাশ আর সুচি একসাথে গিয়ে , সুচি একটা অটো ধরলো আর আকাশ হেটে কলেজের রাস্তা ধরলো। যাওয়ার আগে অবশ্য সুচি আকাশকে সাবধান করতে ভুলে গেল না “ ওইসব ছেলেদের সাথে মিশবি না কিন্তু ! „ আকাশ একটু হেসে কোন জবাব না দিয়ে ফুটপাত দিয়ে হাটতে শুরু করলো। ওইসব ছেলেদের সাথে মেশার কোন ইচ্ছাই ছিল না আকাশের। কিন্তু সেদিন বিপ্লব বিচ্ছু চোখ দুটো বড়ো বড়ো করে বলেছিলো “ ওদের মোবাইলে অনেক ভিডিও আছে । „ “ কিসের ভিডিও ? „ আকাশ খুব অবাক হয়েছিল বিপ্লবের কথাটা শুনে। “ ওই বড়রা নিজেদের মধ্যে যা করে । „ “ কি করে ? „ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করেছিল আকাশ। “ ও দেখলেই বুঝবি। খুব মজার জিনিস । „ কথাটা বিপ্লব এমনভাবে বলেছিল যে আকাশের ইচ্ছা হয়েছিল সেইসব ভিডিও দেখতে। তাই বিপ্লব নিয়ে গিয়েছিল ক্লাস নাইনের দাদার কাছে। সেই দাদা হেসে বলেছিল “ শনিবার তো হাফডে হয়। কলেজের পর দেখাবো। „ শনিবারে ভিডিও দেখার আগেই সুচি এমন ভাবে বকলো যে আর ওদের আশেপাশে যায়নি আকাশ---- ‘ কিন্তু এখন আবার দেখতে ইচ্ছা করছে কি এমন আছে ওই ভিডিও তে। কিন্তু এতদিন পর হঠাৎ আবার দেখতে চাইলে কি দেখাবে ! ‚ এই সঙ্কোচে আকাশ আর ওই দাদাদের কাছে গেল না । কলেজে গিয়ে , ক্লাসরুমে বসে এই প্রথম মেয়েদের সংখ্যা গুনতে শুরু করলো । মোট বিয়াল্লিশ জন ছাত্রছাত্রী আছে ওর ক্লাসে। আর তার মধ্যে সতেরো জন মেয়ে। একজনকেও তেমন সুন্দর দেখতে লাগলো না আকাশের। মেয়েদের সংখ্যা গুনতে গুনতে কয়েকজনের মুখ প্রথম দেখলো সে ‘ আরে ! একে তো আগে কখনো দেখিনি ! আমাদের সাথেই পড়তো ? ‚ পাশে বসে থাকা বিপ্লব অনেকক্ষণ ধরে আকাশ কে দেখছিল। কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশের কপালের ভ্রুকুটি দেখে প্রশ্নটা করেই ফেললো সে “ কি দেখছিস বলতো তখন থেকে ? „ “ ওই মেয়েটাকে আগে তো কখনো দেখিনি । „ আঙুল তুলে একটা মেয়ের দিকে দেখালো আকাশ। বিপ্লব আকাশের আঙুল সোজা তাকিয়ে মেয়েটাকে দেখে বললো “এরমধ্যে ভুলে গেলি ! ওই মেয়েটাই তো আগের সপ্তাহ বুধবার সিড়িতে তোর সাথে ধাক্কা খেলো। „ কথাটা শুনে আকাশ বিপ্লবের দিকে তাকালো ---‘ সত্যি তো এই মেয়েটাই তো মনে হচ্ছে। এতক্ষণ চিনতে পারছিলাম না কেন ? ‚ কিন্তু আজকেই কেন সে মেয়েদের দিকে তাকাচ্ছে সেটা বুঝলো না। হয়তো সুচির কড়া নজরদারি আর নেই তাই । হঠাৎ মুক্তির হাওয়া গায় লাগলো তাই। কিংবা বিগত কয়েক মাসের ঘটনা তাকে কিশোর থেকে যুবকে পরিনত হতে সাহায্য করছে তাই। কলেজ থেকে ফেরার সময় একা একা ফুটপাত দিয়ে হাটার সময় নিজেকে খুব মুক্ত লাগতে শুরু করলো । আগে এই ধরনের কোন অনুভূতি হয়নি। এখন খাটে শুয়ে সিলিংয়ে ঝুলতে থাকা পাখার দিকে তাকিয়ে নিজের ভূত-ভবিষ্যৎ ভাবতে ইচ্ছা করে। আগে দিদিমাকে জড়িয়ে ধরে খুব শীঘ্র ঘুম চলে আসতো। আর ঘুমটাও হতো খুব সুন্দর আর মিষ্টি । সুচি কলেজ থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে খেয়েদেয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে জয়শ্রীর সাথে সোসাইটির পার্কের বেঞ্চে এসে বসলো । কিছুক্ষণ পর আকাশ এসে যোগ দিলে সুচি বললো “ আজ ক্রিকেট খেলবি না ? „ “ প্লেয়ার কম তাই খেলছে না। সৈকত দা গেছে সৈকত দেখতে। „ আকাশের কথায় সুচি আর জয়শ্রী দুজনেই হেসে উঠলো। তারপর সুচি বললো “ ওদের সাথে মিশিশ নি তো ! „ মাথা নিচু করে মাটিতে গজিয়ে ওঠা সবুজ ঘাস দেখতে দেখতে বেশ শান্ত স্বরে আকাশ বললো “না । „ আকাশের কথায় সুচির ঠোটের কোনায় একটা বিজয়ের হাসির রেখা দিল। রাতে খাটে শুয়ে স্নেহা দেবী আকাশের বাবাকে বললেন “ মা চলে যাওয়ার পর থেকে ওকে একটু বেশি চুপচাপ দেখছি । আগের থেকে অনেক শান্ত হয়ে গেছে । খুব চিন্তা হচ্ছে আমার....... স্ত্রী কথা শেষ হওয়ার আগে আকাশের বাবা বললেন “ মায়ের মৃত্যু ওকে একা করেছে এটা ঠিক। কিন্তু এই বয়সটাই তো মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার বয়স। চরিত্র গঠন হওয়ার সময়..... এবার আকাশের মা স্বামী কথার মাঝে বলে উঠলেন “ যদি খারাপ কিছু...... “ অযথা চিন্তা করো না। আমাদের ছেলে এরকম কোন কিছু করবে না। এখন ও কোনটা ভুল কোনটা ঠিক সেটা বুঝছে । ভালো খারাপ নিয়েই জীবন। চিন্তা করো না। ওকে একটু সময় দাও। আমি তো সারাদিন বাড়িতে থাকি না। ওর খোঁজ খবরও নিতে পারি না। তুমি ওর একটু আশেপাশে থাকো..... স্বামীর কথায় স্নেহা দেবী তেমন আশ্বস্ত হতে পারলেন না। তাই ছেলেকে একটু বেশি খেয়াল রাখার চিন্তা করতে লাগলেন। মা যে তার জন্য চিন্তিত সেটা আকাশ খুব ভালো ভাবে অনুভব করতে পারলো। কিন্তু প্রথমে সুচি তারপর মায়ের এই হঠাৎ এতো নজরে রাখার কারন সে বুঝতে পারলো না। তাই পরের কয়েকটা মাস আকাশ একা কলেজ , টিউশন গিয়ে আর পড়াশোনার মধ্যে দিয়েই কাটাতে লাগলো। রাতে শুয়ে ভবিষ্যতে কি করবে ভাবতে লাগলো। কয়েকবার ভাবলো ---- ‘ বাবার ব্যাবসাকে আরও বড়ো করে দেশবিদেশে ছড়িয়ে দেবে আর পাশাপাশি সিনেমা বানাবে। তারপর একটা পছন্দ মতো নায়িকাকে বিয়ে করবে। ‚ এই চিন্তা বাদ দিতে হলো কারন ‘ নায়িকাদের অনেক অ্যাফেয়ার্স থাকে আর তাড়াতাড়ি ডিভোর্স ও হয়ে যায়। ‚ কয়েকদিন ভাবলো---- ‘ প্রেম করতে হবে। আমাদের ক্লাসে তো কোন মেয়ে নেই প্রেম করার মতো । কলেজে উঠে প্রেম করতে হবে। প্রেম করা দরকার। কিন্তু কলেজ তো এখনও পাঁচ ছয় বছর পরে। ‚ পরমুহুর্তেই আবার ভাবলো----- ‘ প্রেম আর বিয়ের দেরী আছে। আগে ব্যাবসা করতে হবে। নিজের একটা প্রাইভেট এরোপ্লেন কিংবা জেট থাকলে কেমন হয় ! কি সুন্দর সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়াবো । ‚
10-10-2021, 09:00 AM
এইভাবেই দিবাস্বপ্ন দেখতে দেখতে শারদীয়া চলে এলো। মহালয়া হয়ে গেছে। আজ পঞ্চমী। কলের কলকাতা নববধূ রুপে সেজে উঠেছে। কলেজ টিউশন ছুটি হয়ে গেছে এক সপ্তাহ আগে। সবার নতুন জামা কাপড়ও কেনা হয়ে গেছে। ষষ্ঠীর আর একদিন বাকি। ষষ্ঠীর সকালেই তো মা আসবে সোসাইটিতে । সোসাইটির কমিউনিটি হল , প্যান্ডেল সব প্রায় তৈরি , শুধু মায়ের অপেক্ষা।
বিকাল পাঁচটার দিকে আকাশদের ফ্ল্যাটে কলিংবেল বেজে উঠতে স্নেহা দেবী গিয়ে দরজা খুলে দিলেন। দরজা খুলে তিনি একমুহূর্ত স্থির হয়ে গেলেন। দরজার ওপারে তিলোত্তমা দাঁড়িয়ে আছে দেড় বছরের অজয়কে কোলে নিয়ে। আগের থেকে একটু বেশিই মুটিয়ে গেছে যেন । ননদ কে চুপচাপ থাকতে দেখে আকাশের মামী হেসে বলে উঠলেন “ ভিতরে আসতে বলবে না ! „ স্নেহা দেবীর তখনও কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা কাটেনি। তিনি চুপচাপ চৌকাঠ থেকে সরে দাঁড়ালেন। আকাশের মা দরজা থেকে সরে দাঁড়াতে তিলোত্তমা লিভিংরুমে ঢুকে পড়লো। তারপর লিভিংরুমের চারিদিকে দেখতে দেখতে বললো “ এই প্রথম এলাম তোমাদের বাড়িতে। কলকাতাতে এসেছিলাম প্রায় পনের বছর আগে...... আকাশের মামীর কথা শেষ হওয়ার আগেই আকাশের মামা দুটো সুটকেস হাতে নিয়ে ঘরে ঢুকলেন। মুখে তার সংকোচ এবং কিছুটা অস্বস্তির ছাপ স্পষ্ট। এবার স্নেহা দেবী ভাইকে দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন । প্রায় গর্জিয়ে উঠলেন “ তুই এখানে এসছিস কেন ? তোর কেউ নেই এখানে । „ “ দিদি প্লিজ ওকে ক্ষমা করে দাও । এই নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক অশান্তি হয়েছে । „ স্বামীর হয়ে তিলোত্তমাই ক্ষমা চেয়ে নিল । “ তোমাদের মধ্যে কি হয়েছে তা জানার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই। „ ভাইয়ের বউকে বেশ রাগী স্বরে কথাটা বলে নিজের ভাইয়ের দিকে ফিরে আকাশের মা বললেন “ চলে যা এখান থেকে । আমি তোর মুখ দেখতে চাই না। তোর জন্য মা কতো কষ্ট পেয়েছিল সেটা ভেবেই আমার বুক কেঁপে উঠছে। তোর এখানে কেউ নেই , যে ছিল সে এখন বেঁচে নেই ....... ননদের রাগ কমছে না দেখে তিলোত্তমা একটা ফন্দি বার করলো “ কিন্তু অজয়ের তো আছে । „ বলে অজয়কে ননদের কোলে তুলে দিলেন। নারী হৃদয় এক শিশুকে তার কোলে পেলে তার হৃদয় আরও বেশি কোমল হয়ে ওঠে। তিলোত্তমা অজয়কে ননদের কোলে দিতেই দুটো ঘটনা ঘটলো । এতক্ষণ ধরে অজয় আকাশের মাকে রেগে রেগে কথা বলতে শুনছিল তাই যখনই তিলোত্তমা তাকে আকাশের মায়ের কোলে দিয়ে দিল তখনই সে ভ্যা করে “ মা „ বলে কেঁদে ফেললো । এদিকে নিজের একমাত্র ভাইপোকে কাঁদতে দেখে আকাশের মায়ের রাগ গলে জল হয়ে গেল “ ওলে বাবালে কাঁদে না , কাঁদে না , কিছু হয়নি ! এইতো মা । দেখো দাড়িয়ে আছে । „ বলে অজয়কে তিলোত্তমার কোলে তুলে দিতে গেলেন। অজয় কাঁদলেও এবং স্নেহা দেবী অজয় কে তিলোত্তমার কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও অজয়কে কোলে নেওয়ার বিন্দুমাত্র উৎসাহ তিলোত্তমার মধ্যে দেখা গেল না। সে আকাশের মামার দিকে বড়ো বড়ো চোখ বার করে কিছু একটা ইশারা করলো। স্ত্রীর চোখের ইশারা বুঝতে পেরে আকাশের মামা মাথা নিচু করেই বললো “ আমায় ক্ষমা করে দে দিদি । মা আমায় ডেকে ছিল আমি জানি। আমাদের এখানে আসা নিশ্চিত ছিল। কিন্তু পুজার আগেই দিল্লিতে একটা কাজ পরে গেল তাই বাধ্য হয়েই যেতে হয়েছিল . ....... আকাশের মা ভাইয়ের অজুহাতে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু তার আগেই আকাশ ঘরে ঢুকলো । আকাশ নিচে প্যান্ডেলের সাজগোজ দেখছিল । এখন ঘরে ফিরেই এই নতুন মুখ দেখে দাড়িয়ে পড়লো। এদিকে আকাশের মামা মামিও এই 5'4 ইঞ্চির ছেলেটাকে চিনতে পারলো না। কিন্তু তিলোত্তমা আন্দাজ করে আকাশকে চিনতে পারলো “ এ মা ! কতো বড়ো হয়ে গেছো তুমি । মুম্বাইতে যখন তোমাকে দেখেছিলাম তখন তুমি এইটুকু ছিলে। কেমন আছো ? চিনতে পেরেছো আমাদের ? „ মুম্বাইয়ের কথা আসতে আকাশ আকাশ-পাতাল ভাবতে লাগলো। মামার বিয়ের সময় মুম্বাইতে সে গিয়েছিল । তার মানে এরা দুজন মামা মামি। আর ওই তো মায়ের কোলে অজয়। বাবার ফোনে একবার এর ফটো দেখেছিলাম। দিদিমা একবার এর ফটো দেখিয়ে বলেছিলেন “ তোর মামাতো ভাই । „ আজকে চিনতে পারার পর আকাশ হেসে জবাব দিল “ মামা মামি । আমি ভালো আছি আর তুমি ? „ “ আমিও ভালো আছি। এখন কোন ক্লাসে পড়ো তুমি ? „ “ এখন ক্লাস এইট। „ বলে আরও একটু হেসে ব্যাস্ত হওয়ার ভান করে আকাশ বললো “ তোমরা বসো না ! দাঁড়িয়ে আছো কেন ? „ এই প্রথম কেউ অভ্যর্থনা করলো এবং বসতেও বললো । আকাশের কথায় মামা আর মামি সোফায় বসে পড়লো। এদিকে অজয় পিসির আদরে কান্না থামিয়ে দিয়েছে। স্নেহা দেবী অজয়ের সাথে খেলতে খেলতেই অজয়ের মা বাবার উদ্দেশ্যে বললেন “ তোরা এতদূর থেকে এসছিস আগে ফ্রেশ হয়ে নে। তারপর কথা বলবি। „ কিছুক্ষন পর সন্ধ্যা পড়লেই আকাশের বাবা অফিস থেকে ফিরে এলেন। স্নেহা দেবী আগেই ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিলেন। তাই অতিথিদের জন্য তিনি পাঠার মাংস কিনে নিয়ে এলেন। আকাশের বাবা ফ্ল্যাটে ঢুকে জিজ্ঞাসা করলেন “ কেমন আছো তোমরা ? „ স্নেহাংশু বললো “ আমরা ভালো আছি জামাইবাবু। আপনি কেমন আছেন ? „ “ আমি তো ভালোই আছি। শেষমেশ তোমরা এলে ভালো লাগলো। কিন্তু আসতে একটু বেশি দেরি করে ফেললে। „ বলে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়লেন আকাশের বাবা। কথাটা কি জন্য বলা হয়েছে সেটা আকাশের মামা মামি দুজনেই বুঝতে পারলো। কিন্তু কিছু বলতে পারলো না। কি আর বলবেন ! একজন মৃত্যুর আগে তার নাতি আর ছেলেকে দেখতে চেয়েছিলেন। সেই আশাটা পূরন করতে পারে নি এরা। এরপর আর কি বলার থাকতে পারে। রাতে মাংস ভাত খাওয়ার সময় শুভাশীষ বাবু বললেন “ তা তোমার প্ল্যান কি ? মানে কলকাতায় এসছো ঘুরবে টুরবে তো নাকি ? „ “ অবশ্যই। কলকাতায় এসে ঠাকুর দেখবো না তা কি হয় ! ভাবছি কবে যাবো ! „ মুখের গ্রাসটা শেষ করে বললো তিলোত্তমা “ আজ এসছো। কাল রেস্ট নিয়ে সপ্তমীর দিন যেও । „ “ তোমাদেরকেও যেতে হবে কিন্তু । „ মিষ্টি স্বরে আবদারটা করেই ফেললো তিলোত্তমা “ না , না । আমার এখানে কাজ আছে আর স্নেহাও কাল থেকে পুজার কাজে ব্যাস্ত হয়ে যাবে। তুমি আকাশকে নিয়ে যাও। „ “ আমি । „ অপ্রস্তুত হয়ে উঠলো আকাশ। মামা মামি হলেও এরা অচেনা মানুষ। ঠিক ভাবে কখনো কথাই হয়নি। আর এদের সাথে ঠাকুর দেখতে বার হলে একটা অস্বাচ্ছন্দ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হবে। “ হ্যাঁ তুমি। কেন ? মামা মামির সাথে যেতে অসুবিধা আছে ! „ ঠোঁটে হাসি নিয়ে বললো তিলোত্তমা “ না , তা ঠিক নয়। আমি আসলে সুচি আর সুমিদি দের সাথে পুজায় ঘুরি । „ “ সুচি সুমি ! „ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করলো তিলোত্তমা। “ ওই আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে থাকে । „ “ তাহলে ওদেরকেও নিয়ে নাও । „ পরের দিন সকাল হতেই আকাশ সুচি-সুমির ঘরে উপস্থিত হলো। ঘরে ঢুকেই সে ঘোষণা করলো “ কালকে মামা মামির সাথে ঠাকুর দেখতে যাবো। তোকেও যেতে হবে । „ “ তুই তোর মামা মামির সাথে যাবি। আমি যাবো কেন ? „ “ দেখ , তোর পায় পড়ি। আমাকে বাঁচা। ওদের সাথে গেলে আমার একা একা লাগবে । „ এরপর আর সুচি কিছু বললো না। নিরবতা সম্মতির লক্ষন মেনে নিয়ে আকাশ সুমির দিকে ফিরে বললো “ তোমাকেও যেতে হবে কিন্তু । „ “ আমাকে কেন টানছিস এরমধ্যে ! „ বলে উঠলো সুমি। আকাশ নাক কুঁচকে কোন শব্দ না করে ঠোঁট দুটো নাড়িয়ে বললো প্লিজ প্লিজ প্লিজ। আকাশের এইরকম আচরণ দেখে সুমি হা হা করে হেসে উঠলো। বেলার দিকে সোসাইটিতে মা আসার সময় তিলোত্তমা সুচি আর সুমির সাথে পরিচয় করলো। নানা ধরনের প্রশ্নের উত্তরের আদানপ্রদান চলতে লাগলো। পরিচয় পর্ব শেষ হওয়ার পর তিলোত্তমা বললো “ কালকে আমরা ঠাকুর দেখতে যাচ্ছি। তোমাদেরও যেতে হবে কিন্তু । „ অজয়কে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে সুচি দুই গালে টোল ফেলে একটা মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে হ্যাঁ বলে দিল । সপ্তমীর দিন বিকাল পড়তেই আকাশ আর আকাশের মামা পাঞ্জাবী পড়ে আকাশের বাবার জাগুয়ারের পাশে অপেক্ষা করতে লাগলো। প্রায় আধঘণ্টা পর আকাশের মামি তারপর সুচি আর সুমি নিচে নেমে এলো। আকাশের মামি একটা হলুদ রঙের গাউন পড়েছে , সুমি পড়েছে সবুজ রঙের শাড়ি আর সুচি পড়েছে আকাশি রঙের একটা শাড়ি। সুচির সাজগোজ দেখে তিলোত্তমা বললো “ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে তোমাকে । তোমার ফিগারটাও একদম নায়িকাদের মতো । খুব মানিয়েছে শাড়িটা । „ নায়িকাদের মতো শুনেই আকাশ ফিক করে হেসে গলার স্বর খাদে নামিয়ে বললো “ নায়িকা ! „ আকাশের ব্যাঙ্গাত্মক হাসি দেখে সুচি আকাশের দিকে কটমটিয়ে তাকালো। আকাশ বুঝলো এখন যদি রেগে গিয়ে সুচি যেতে রাজি না হয় তাহলে তো এখন মাঝ গঙ্গায় হাবুডুবু খাবে ! তাই সুচির রাগ কমানোর জন্য বললো “ ও কিন্তু খুব ভালো নাচে। কালকে আমাদের এখানে প্রতিযোগিতায় হবে তখন দেখো ওর নাচ। „ আকাশের মুখে প্রশংসা শুনে সুচি শান্ত হলো। তারপর পাঁচ জন আর পুচকে অজয় মিলে কলকাতা শহরে ঠাকুর দেখতে বার হলো। রাস্তায় যেতে যেতে তিলোত্তমা সুচিকে বললো “ তুমি কোন ডায়েট করো ? „ সুচি মাথা নেড়ে না বলে দিল। ডায়েটের কথা শুনে আকাশ মুচকি হাসি হাসতে হাসতে ভাবলো ---- ‘ ডায়েট ! এর খাওয়া দেখলে কুম্ভকর্ণ ও লজ্জা পেয়ে যাবে ! আর এ করবে ডায়েট। ‚ আকাশের হাসি সুচি দেখতে পেল না। কারন পিছনের সিটে আকাশ আর সুচির মাঝখানে সুমি বসেছে । এদিকে তিলোত্তমা আরও বলে চললো “ আমাদের সোসাইটির বাইরেই একটা Gym আছে। ওখানে প্রোফেসনাল ট্রেনার ট্রেনিং করায়। বিভিন্ন হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকারা আসে। ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রেনিং করে শুধু তোমার মতো ফিগার পাওয়ার জন্য। „ বাচ্চা নিয়ে ঘোরা যায় না। চার পাঁচটা প্যান্ডেলে ঘুরে কিছু খেয়ে অজয়ের কান্নার জন্য তাদের ফিরে আসতে হলো। পরের দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিলোত্তমা সুচির নাচ দেখে খুব প্রশংসা করলো। বিজয়া দশমীতে তিলোত্তমা আকাশের মা আর সুচির মায়ের সাথে সিঁদুর খেলে বিদায় নিল। যাওয়ার আগে সবাইকে বলে গেল “ এবার থেকে নিয়মিত আসবো কিন্তু। „ সুচি - আকাশ, আকাশের মা সোসাইটির গেট পর্যন্ত এসে তাদের ট্যাক্সিতে তুলে বিদায় দিলেন। ট্যাক্সিতে যেতে যেতে এতদিনে মনের ভিতর চেপে রাখা কথাটা বলেই ফেললো তিলোত্তমা “ আকাশের বাবাকে দেখে বোঝাই যায় না উনি কোটি টাকা কামান। দেখে তো মনে হয় কোন বেসরকারি কোম্পানির সামান্য কর্মচারী। সত্যিই কি কোটি টাকা আয় হয় ওনার ! স্ত্রীর কথায় হো হো করে হেসে আকাশের মামা বললো “ ঠিক এই কারনেই বাবা আর মা জামাইবাবুকে এতোটা পছন্দ করতো। শুধু ওই জাগুয়ার গাড়িটা দেখে মনে হয় উনি ধনী। তাছাড়া কোন জাকজমক নেই , শখ আহ্লাদ নেই , আমোদ নেই , বিলাসিতা নেই। একদম সাদামাটা আর খুব সাধারণ জীবনযাপন করেন জামাইবাবু। „ পুজার ছুটি শেষ হওয়ার পর সুচি একটু ভয় ভয়ে কোচিং গেলো কারন সে ছুটির আগে বেশ কিছুদিন টিউশন ছুটি করেছিল। টিউশনে গিয়ে স্যারকে বেশ খোশমেজাজে দেখলো সুচি । স্যার বললেন “ যারা যারা পুজার ছুটির আগে কামাই করেছো তারা গৌরবের কাছ থেকে নোটস নিয়ে নাও। „
10-10-2021, 09:10 AM
ক্লাস টুয়েলভে ওঠার পর সুচির সতেরো বছর বয়স হতেই , সে এতদিনে মনের ভিতর পুষে রাখা ইচ্ছাটাকে বাইরে বার করলো। মাকে কথাটা বলতেই তিনি বললেন “ আমি কিছু জানি না বাপু । আগে তোর বাবা আসুক । তারপর „
সমরেশ বাবু অফিস থেকে ফিরতেই সুচি আবদার করলো “ বাবা আমি স্কুটি চালানো শিখবো । „ “ স্কুটি চালানো শিখবি , সে তো ভালো কথা। কিন্তু তোকে শেখাবে কে ? „ “ কেন ! দিদি শেখাবে ! „ “ ওর কলেজ কোচিং আছে। ও কিভাবে শেখাবে ? „ “ শনি-রবিবার দিদির ছুটি থাকে , তখনই শেখাবে । „ খুব উৎসাহের সাথে কথাটা বললো সুচি। সুচির কথায় সমরেশ শুধু মাথাটা উপর নিচ করলেন । রবিবার সকাল হতেই সুচি দিদিকে নিয়ে বিল্ডিং কম্পাউন্ডে এলো স্কুটি চালানো শেখার জন্য । কিছুক্ষণ পর আকাশ এলো সুচির স্কুটি শেখা দেখতে। স্কুটির খুটিনাটি সুচি আগে থেকেই জানতো। তাই স্কুটি স্টার্ট দিয়ে আসতে আসতে চালাতে শুরু করলো। বলাবাহুল্য যে সুমি স্কুটির পিছনে বসে সুচির সাহায্য করছিল। কিছুক্ষণ পর সুচি বললো “ এবার তুই নাম আমি একা চালাবো । „ “ পারবি তো ? „ “ হ্যাঁ পারবো । „ এতক্ষণ পর সুচির কথায় আকাশ মুখ খুললো “ পারবি না তুই। ফেলে দিবি। মনে আছে ছোটবেলায় সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে কি করেছিলি। কেটে রক্ত বার হচ্ছিল । প্রথম দিন সুমিদি কে সাথে রাখ ........ আকাশের কথায় সুচি রেগে গিলো । সুচির মনে হলো আকাশ তাকে চ্যালেঞ্জ করছে। তাই সুচি রেগে গিয়ে একা চালানোরই জেদ ধরলো। সুমিকে জোর করে স্কুটি থেকে নামিয়ে দিয়ে , স্কুটি স্টার্ট দিয়েই আকাশের উপর রাগের বশে সে পিকআপ বাড়িয়ে দিল। হঠাৎ করে স্কুটির গতি বেড়ে যেতে সুচি স্কুটির স্টিয়ারিং সামলাতে পারলো না। সোজা গিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেল । “ এই ! এই ! সামলে ! „ বলে সুমি আর আকাশ দৌড়ে এলো। মুখে তাদের ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। সুমি এসে স্কুটি তুলে দাঁড় করালো । আর আকাশ সুচিকে তুলে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করলো “ লাগেনি তো কোথাও ? „ “ পায়ে লেগেছে । „ মুখ ব্যাথায় বিকৃত করে ডান পায়ের গোড়ালি দেখিয়ে দিল সুচি । আকাশ আর সুমি সুচির গোড়ালির দিকে তাকালো। কেটে যায়নি। শুধু ফুলেছে। সুমি একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললো “ আজ আর শিখতে হবে না চল । বাড়ি চল । „ বলে কথাটা সুমি স্কুটিটাকে ঠেলতে শুরু করলো। এদিকে আকাশ সুচিকে ধরে সাবধানে বিল্ডিং এর সামনে আনলো । তারপর সুমি সুচির বাম হাত নিজের কাঁধে নিল আর আকাশ সুচির ডান কাঁধ নিজের কাঁধে নিয়ে সিড়িতে উঠার সময় সুচি ব্যাথায় চিল্লিয়ে উঠলো “ লাগছে খুব। „ “ একটু ব্যাথা সহ্য কর । তিন তলা তো। „ কথাটা বলে আকাশ সুচিকে নিয়ে একটা সিড়ি ভাঙলো। দুটো সিড়ি ভাঙার পরেই সুচি বললো “ না , খুব ব্যাথা । লাগছে খুব...... সুচির কথাটা শেষ হতেই আকাশ সুচিকে দুই হাতে তুলে কোলে নিয়ে নিয়ে সিড়ি ভেঙে উপরে উঠতে শুরু করলো। সুচিকে আকাশ কোলে তুলে নিতেই সুমি মুখ হা করে দাড়িয়ে পড়লো। সুচিকে কোলে নিতেই সুচির গাল , কান লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো। ব্যাথা আর অনুভব করতে পারছে না সুচি । শুধু নিজের হৃৎপিন্ডের হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া ধ্বনি শুনতে লাগলো। আকাশ তখন বলে চলেছে “ বলেছিলাম , প্রথম দিনেই একা চালাস না । এবার ঠেলা বোঝ . ....... আকাশের কথা সুচির কানেই যাচ্ছে না। কি হচ্ছে সেটাই সুচি বুঝতে পারছে না। মনে হচ্ছে যেন বোধ বুদ্ধি লোপ পেয়েছে তার । একভাবে সে আকাশের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশ ক্লান্তিহীনভাবে একের পর এক সিড়ি ভেঙে যাচ্ছে । কিছুক্ষণ পর আকাশের কথায় সুচির হুশ ফিরলো “ নে পৌঁছে গেছি। নাম এবার । „ “ ইসসসস পৌঁছে গেলাম। „ কথাটা নিজের মনে বলে দরজা ঠেলে খুঁড়িয়ে ভিতরে ঢুকে সোফায় বসে পড়লো। সুচেতা দেবী হন্তদন্ত হয়ে বললেন “ কি হয়েছে ? কোথায় লেগেছে ? এইজন্য আমি বারন করছিলাম । „ কিছুক্ষণ পর হতভম্ব অবস্থা কাটলে সুমিও উপরে উঠে এলো । এসে মায়ের কথার জবাব দিল “ ও কিছু না । পড়ে গিয়ে ফুলেছে । শিখতে গেলে এরকম ঘটনা হয় তুমি চিন্তা করো না। কিছু হয়নি ওর । „ কথাটা বলে ফ্রিজ থেকে বরফ বার করে মুচকি হাসতে হাসতে সুচির গোড়ালির ফুলে যাওয়া অংশে লাগাতে শুরু করলো। সুচি একবার দিদির মুখে তাকিয়ে দ্বিতীয় বার আর লজ্জায় তাকাতে পারলো না। রাতে ঘুমের মধ্যে আজকে সিড়িতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটাই সুচি স্বপ্নে দেখলো । স্বপ্ন দেখতে দেখতেই লজ্জায় গাল দুটো লাল হয়ে উঠলো। দুপুরে সিড়ি কখন শেষ হয়ে গেছিল সেটা সুচি বুঝতেই পারেনি কিন্তু স্বপ্নে সিড়ি শেষ হচ্ছে না । আকাশ সুচিকে কোলে নিয়ে সিড়ি ভেঙেই যাচ্ছে আর সুচি একভাবে আকাশের চওড়া মুখের দিকে তাকিয়ে আছে । ঘুমের মধ্যেই স্বপ্নের জন্য ঠোটের কোনায় হাসি দেখা দিল সুচির। কথায় আছে যারা সাইকেল চালাতে পারে তারা খুব সহজেই বাইক কিংবা স্কুটি চালানো শিখে নিতে পারে। দুই দিন পর পায়ের ব্যাথা এবং ফোলা কমে গেলে আবার স্কুটি চালানো শিখতে শুরু করলো সুচি। চার পাঁচ দিন বিকাল বেলা চালিয়ে খুব ভালো স্কুটি চালানো শিখে গেল সে। স্কুটি চালানো শেখার পর যে স্কুটিটা রোদে পুড়ে জলে ভিজে অবহেলায় বিল্ডিং কম্পাউন্ডে দাড়িয়ে থাকতো , যে স্কুটিটার দিকে সুচি ফিরেও কখনো তাকাতো না , সেই স্কুটিটাই এখন সুচির চোখের মণি হয়ে উঠেছে। পাঁচ ছয় বছর বয়স হলেও এখনও ভালো সার্ভিস দিচ্ছে সুমির স্কুটি । সুচি এখন স্কুটিটার উপর একটুও ধুলো পরতে দেয় না। পরম যত্নে রাখে , সন্ধ্যা হলেই বড়ো প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে দেয় সুচি। নিয়মিত জল সাবান দিয়ে ভালো করে স্কুটিটাকে পরিষ্কার করে ধুয়ে দেয় । তেমনই একদিন রবিবার দুপুর বেলা স্নান করার আগে সোসাইটি কম্পাউন্ডে সুচি স্কুটিটাকে ধুয়ে দিচ্ছিল। আর আকাশ একটা ইটের উপর বসে সুচির স্কুটি পরিষ্কার করা দেখছে। কি যত্নে স্কুটিটার প্রতি কোনায় জল দিয়ে ধুয়ে দিচ্ছে সুচি। কিছুক্ষণ সুচির স্কুটি ধোওয়া দেখে সুচির সাথে ইয়ার্কি করার জন্য আকাশ বললো “ স্কুটিটাকে যেভাবে স্নান করাচ্ছিস সেইভাবে একদিন নিজেও স্নান কর। গা থেকে তো শুয়োর মরা গন্ধ বার হয়। গন্ধে তোর আশেপাশে থাকা যায় না। „ সুচি আকাশের কথা শুনলো কিন্তু মুখে কোন অভিব্যক্তি ফুটে উঠলো না। কিছুই হয়নি এমন ভাবে করে যে কাপড়টা দিয়ে স্কুটিটাকে পরিষ্কার করছিল সেটা বালতির জলে একবার ডুবিয়ে স্কুটির হেডলাইট মুছতে শুরু করলো। প্রায় এক দুই মিনিট পর কাপড়টা আবার বালতির জলে ডুবিয়ে দিল। তারপর বালতিটা তুলে বালতির মধ্যে থাকা নোংরা জল আকাশের গায়ে ছুড়ে দিল “ তোর গা থেকে যে ইদুর পঁচা গন্ধ বার হয় সেটা পরিষ্কার করে আয় । আর একটু ভালো পারফিউম মাখ । গন্ধে তো পাড়ার লোকের ঘুম হয় না। „ আকাশ সুচির কাপড় দিয়ে স্কুটিটার হেডলাইট পরিষ্কার করা দেখে ভেবেছিল সুচি কিছু মাইন্ড করে নি। আর তার জন্য সে অন্যমনস্ক হয়ে গেছিল। সুচি এই সুযোগটা নিয়েই আধবালতি নোংরা জল দিয়ে আকাশকে স্নান করিয়ে দিল । আচমকা মুখে গায় নোংরা জল পড়ায় আকাশ খুব রেগে গেল। ইট থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো “ আমার গা থেকে ইদুর পঁচা গন্ধ বার হয় ! „ “ হ্যাঁ বার হয়। কাকা কাকি থাকে কি করে তোর সাথে ! „ “ কি বললি !!! „ ঠিক চার থেকে পাঁচ মিনিট পর জয়শ্রী এসে দুই তিনবার আকাশের ফ্ল্যাটের কলিংবেল বাজালো । ঘরের ভিতর থেকে স্নেহা দেবী বললেন “ আসছিরে বাবা এতো বার বেল বাজানোর কি আছে ! „ স্নেহা দেবী দরজা খুলতেই জয়শ্রী বলে উঠলো “ শীঘ্রি নিচে চলো মাসি । আকাশ আর সুচি মারপিট করছে । „ কথাটা শুনেই স্নেহা দেবীর মুখ রাগে পাথর হয়ে উঠলো । দরজা খোলা রেখেই তিনি সিড়ি ভেঙে নিচে নামতে শুরু করলেন । আকাশের মাকে বলা হয়ে গেলে জয়শ্রী এবার সুচির ঘরের কলিংবেল বাজালো। সুচেতা দেবী বাইরে এসে বললেন “ কি হয়েছে ? এতো বার বেল বাজাচ্ছিস কেন ? „ “ সুচি আর আকাশ মারপিট করছে । „ “ এই মেয়েটার জ্বালায় একদিনও শান্তিতে কাটলো না আমার। যতো জ্বালা সব আমার । „ বলে তিনি নিজে নামতে শুরু করলেন সুচেতা দেবী নিজে নেমে দেখলেন অনেক লোক জড়ো হয়ে দাড়িয়ে আছে। আর , সাপ-নেউল লড়াই করার সময় যেভাবে নিজেদের জড়িয়ে ধরে সুচি আর আকাশ সেইভাবে জড়িয়ে ধরে সোসাইটি কম্পাউন্ডে গড়াগড়ি খাচ্ছে । জড়িয়ে ধরে আছে বললে ভুল হবে ! সুচি এক হাতে প্লাস্টিক এর বালতি নিয়ে আকাশকে মারছে। আকাশ এক হাত দিয়ে সুচির চুল ধরে টেনে ছিড়ে ফেলার চেষ্টা করছে আর অন্য হাতে বালতিটাকে নিজের শরীরে আঘাত করা থেকে থামাচ্ছে । আর দুজনেই একে অপরকে নানা কথা শোনাচ্ছে। সুচি --- আমার গা থেকে যদি এতোই দুর্গন্ধ বার হয় তাহলে থাকিস কেন আমরা সাথে ? আকাশ--- জন্মের দিন থেকে তুই আমার সাথে আছিস আর আমাকে জ্বালিয়ে মারছিস । সুচি ---- আমি তোকে জ্বালাই ! না তুই আমাকে জ্বালাস ! তোর দোষের জন্য বারবার আমি বাবার কাছে বকা খাই। আর শুনতে পারলেন না সুচেতা দেবী আর স্নেহা দেবী। দুজনেই তাদের সন্তানকে টেনে আলাদা করলেন। তারপর দুজনেই একটা করে চড় বসিয়ে দুজনকে শান্ত করলেন। সুচেতা দেবী বললেন “ বয়স কত হয়েছে তোর ! এইভাবে গায়ে গা জড়িয়ে মারপিট করছিস । „ “ ওই তো প্রথম শুরু করলো। „ বলে রেগে গিয়ে হাতের বালতি ফেলে দিয়ে সুচি উপরে উঠে গেল। এদিকে মায়ের হাতে এতদিন পর চড় খেয়ে আকাশ শান্ত হলো। স্নেহা দেবী বললেন “ তুই কি এখনও বাচ্চা যে ওর সাথে এইভাবে মারপিট করছিস। বোধ বুদ্ধি কবে হবে তোর ? „ মায়ের কথার জবাব না দিয়ে আকাশও উপরে উঠে গেল। এতগুলো লোকের সামনে মায়ের হাতে চড় খাওয়া দুজনেই সহ্য করতে পারে নি। তখনও অন্ধকার হয়নি। সূর্য পশ্চিমে ঢলে পড়তে এখনও দেরি আছে । দুপুরে সুচির হাতে উদোম মার খেয়ে আর মায়ের কাছে বকুনি খেয়ে এখন আর খেলতে যেতে ইচ্ছা করছে না। তাই সোফায় বসে উদাস মনে টিভি দেখছে। আর স্নেহা দেবী ছাদ থেকে শুকিয়ে যাওয়া জামা কাপড় এনে আকাশের পাশে সোফায় রেখে গুটিয়ে রাখছিলেন । ঠিক এমন সময় সুচি একটা ভালো সুন্দর মেরুন রঙের কুর্তি আর একটা জিন্স পড়ে ঘরে উঁকি মেরে দেখলো আকাশ টিভি দেখছে। তারপর ঘরে ঢুকে সোফার পাশে দাঁড়িয়ে বললো “ কি করছিস ? „ “ অন্ধ হয়ে গেছিস নাকি ! দেখতেই পারছিস সিনেমা দেখছি। „ এখনও রাগ কমেনি আকাশের। সুচি একবার টিভির দিকে তাকিয়ে দেখলো অমিতাভ বচ্চনের সুরিয়াবানশি হচ্ছে “ এতো অনেকবার দেখেছিস । এখন আর দেখতে হবে না। চল আমার সাথে। „ “ কোথায় ? „ “ রাসের মেলায় । „ “ আমি যাবো না । „ আকাশের কথা যেন সুচি শুনতেই পায়নি এমন ভাবে সুচি আকাশের হাত ধরে টেনে সোফা থেকে তুলে বললো “ যেতে তো তোকে হবেই । „ “ আরে ! আমি হাফপ্যান্ট আর স্যান্ডোগ্যাঞ্জি পড়ে আছি । এইসব পড়ে কি করে যাবো ! „ “ যা । ভালো জামা কাপড় পড়ে আয় । „ বলে সুচি আকাশের হাত ছেড়ে দিল। সুচি হাত ছেড়ে দিলে আকাশ নিজের ঘরে গেল। কিছুক্ষণ পর একটা সবুজ আর কালো রঙ মেশানো জামা আর একটা জিন্স পড়ে বাইরে এলো । তারপর দুজনেই নিচে নেমে গেল। এতক্ষণ স্নেহা দেবী দেখছিলেন আর অবাক হচ্ছিলেন আর মনে মনে বলছিলেন ---- ‘ কিছুক্ষণ আগেই এরা যেভাবে ধস্তাধস্তি করছিল যেন একে অপরের প্রান না নিয়ে ছাড়বে না। আর এখন এদের ব্যাবহার দেখে মনে হচ্ছে এরা জন্ম জন্মান্তর ধরে একে অপরকে চিমটি পর্যন্ত কাটেনি , কাটতে পারে না। ‚ সোসাইটি থেকে নেমে পনের কুড়ি মিনিট হেটে সুচি আর আকাশ মেলার মাঠে পৌঁছে গেল। খুব বড়ো না হলেও ছোট বলা যায় না। মেলায় যাবতীয় যেসব থাকে তার সবই এখানে আছে । এদিক সেদিক কিছুক্ষণ ঘোরার পর নাগরদোলার সামনে এসে আকাশের মাথায় প্রতিশোধ নেওয়ার ফন্দিটা এলো। ছোটবেলায় একবার সুমির সাথে নাগরদোলায় উঠে ভয় পেয়ে সুচি কেঁদে ফেলেছিল। কথাটা মাথাতে আসতে আকাশ মনে মনে বললো ‘ আজকাল খুব হাত চলছে তোর ! এবার দেখ ‚ তারপর সুচিকে উদ্দেশ্যে করে বললো “ নাগরদোলা চড়বি ? „ “ না । „ সোজা মানা করে দিল সুচি “ আরে আয় না । কিছু হবে না। „ বলে সুচির ডান হাত ধরে টানতে শুরু করলো । “ না , না , প্লিজ আমার ভয় লাগে খুব । „ “ আরে আমি তো আছি। চল না। „ বলে সুচিকে টেনে আনলো টিকিট কাউন্টারে তারপর ত্রিশ টাকা করে দুটো টিকিট কাটলো আকাশ । সুচি প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগলো আকাশের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়ানোর । সুচির হাত ছাড়ানো দেখে আকাশ বললো “ খুব মজা হবে । আমি তো আছি । „ আকাশের কথায় সুচি একটা ঢোক গিলে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো। কয়েক মিনিট পর নাগরদোলা থেমে গেলে সুচি এবার আকাশের হাত ধরলো। আকাশ দেখলো ভয়তে সুচির হাত কাঁপছে “ ভয় পাচ্ছিস কেন ? দেখ কতো লোক চড়ছে । „ চল বলে একটা খালি দোলনায় উঠে পড়লো। সুচি আরও একটা ঢোক গিলে আকাশের সামনে না বসে আকাশের পাশেই বসলো। নাগরদোলা আস্তে করে চলতে শুরু করলেই সুচি ভয়তে চোখ বন্ধ করে আকাশের ডান হাতটা দুই হাতে ধরে ফেললো “ আমার খুব ভয় করছে । „ ‘ বেশ হয়েছে। আমাকে মারা ! এখন বোঝ ঠেলা। এখন হিসাব কর কত ধানে কত চাল হচ্ছে ? ‚ মনে মনে সুচিকে চাল আর ধানের হিসাব করতে বলে মুখে বললো “ কিছু হবে না , আমি তো আছি। দেখ ! ওই দুজন কে দেখ ! কিভাবে পায়ের উপর পা দিয়ে বসে আছে। „ “ আমি দেখতে চাই না। আমার ভীষন ভয় করছে। ওবাবাগো...... সুচির কথা শেষ হওয়ার আগেই নাগর দোলা একটু স্পিড বাড়িয়ে ঘুরতে শুরু করলো । আর সেই সাথে সুচি আকাশকে জড়িয়ে ধরলো । তারপর নাগরদোলা একটু স্পিড বাড়াতেই সুচি আরও জোড়ে আষ্টেপৃষ্ঠে আকাশকে জড়িয়ে ধরে কাঁপা এবং ভীত গলায় বলতে শুরু করলো “ এ এরকম কাঁপছে কেন? পড়ে যাবো আমি ! শেষ হবে কখন ? কত পাক হয়েছে ? „ আকাশ এটা ভাবেনি। একদম ভাবিনি যে সুচি এইভাবে তাকে জড়িয়ে ধরবে। সুচি আকাশকে জড়িয়ে ধরায় সুচির চুলের মিষ্টি গন্ধ আকাশকে একটা ঘোরের মধ্যে পাঠিয়ে দিল। সুচির ভয়কে আরও বাড়ানোর জন্য খুব উৎসাহে আকাশ বললো “ তিন পাক হয়েছে। এখনও সাত পাক বাকি ? „ সাত পাক শুনেই সুচি আকাশকে আরো জোরে কষে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। এতক্ষণ আকাশ সুচির চুলের মিষ্টি ঘ্রাণ নিচ্ছিল। এবার সুচির জন্য তার দমবন্ধ হতে শুরু করলো। “ ছাড় তুই আমায় । আমার কষ্ট হচ্ছে , দম নিতে পারছি না আমি....ছাআআআআআআড় আমায় ....... আকাশ যতো সুচিকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো সুচি আরও জোড়ে চেপে ধরে লাগলো । সুচি গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে আকাশকে চেপে ধরে কাঁপা গলায় বললো “ আমি পড়ে যাবো। আমার ভয় হচ্ছে। মা বাচাও আমায় । আমার মাথা ঘুরতে শুরু করেছে। বমি হবে ..... আকাশ ভাবতেই পারেনি যে নিজের ছোড়া তীর ঘুরে এসে নিজের পিছনেই লাগবে “ না , একদম না। বমি না । আমার উপর না। আরে আর কতো ঘুরবে থামাও ! মা গো সবে পাঁচ পাক হয়েছে ..... “ এখনও পাচ পাক বাকি ! বমি বমি পাচ্ছে । „ “ নাআআআআআ । এ আমি কোথায় ফেঁসে গেলাম । „ আকাশের পুরো কেঁদে ফেলার মতো অবস্থা হয়ে গেল পরবর্তী পাঁচ পাক আকাশ কিভাবে মুখ দিয়ে বড়ো বড়ো নিশ্বাস নিয়ে বেঁচে ছিল সেটা শুধু আকাশ জানে। সুচি কিভাবে বমি না করেও আকাশকে দমবন্ধ করিয়ে তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ছিল সেটা শুধু সুচি জানে । নাগরদোলা থামার পর আকাশ সুচিকে ছাড়িয়ে দোলনা থেকে নেমে ঘাসের উপর বসে পড়লো আর বড়ো বড়ো নিশ্বাস নিতে শুরু করলো। সুচিও আকাশের পাশে বসে কয়েকবার ওয়্যাক ওয়্যাক করে বমি করার চেষ্টা করলো কিন্তু হলো না। আকাশ উঠে পাশের দোকান থেকে একটা এক লিটারের জল কিনে ঢকঢক করে খেয়ে সুচির দিকে বাড়িয়ে দিল। সুচি প্রথমে ভালো করে মুখে ঘাড়ে জল দিল। তারপর কয়েক ঢোক জল খেয়ে নিল “ আর একবারও যদি আমায় নাগরদোলায় চাপতে বলেছিস ! তবে তোর একদিন কি আমার একদিন ! „ “ কেউ যদি আমায় দশ কোটি টাকা দিয়ে বলে তোকে নিয়ে নাগরদোলা উঠতে , তাহলেও না। আর একটু হলে আমি মরে যেতাম। দমবন্ধ হয়ে এসছিল আমায়। আমি তো একটা মানুষ। কেউ কাউকে এইভাবে মারার চিন্তা করে ! „ রাগী মুখ করে রাগী স্বরে বললো আকাশ। “ বাজে বকবি না একদম । তুই আমায় নিয়ে গেছিলি । আমি যেতে চাই নি। আমি বলেছিলাম আমর ভয় করে । তুই তো শুনিস নি , এখন সব দোষ আমার ? „ সুচি ও রেগে আকাশের কথার জবাব দিল। আকাশ সুচির কথার জবাব দিল না। সত্যি ওকে শায়েস্তা করতে গিয়ে যে নিজে এইভাবে ফেঁসে যাবে ভাবিনি । কিছুক্ষণ এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে আকাশ বললো “ ফুচকা খাবি ? „ “ চল । „ বলে দুজন ফুচকা খেলো। তারপর পাপড়ি চাট খেলো। বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য জিলিপি , বাদাম , গজা, কটকটি কিনলো। তারপর বিভিন্ন দোকানের কানের দুল, নাকের নথ , আংটি দেখতে লাগলো। একটা বড়ো দোকানে থেমে একটা আংটি পছন্দ করে সুচি বললো “ এটা কতো ? „ দোকানদার বললো “ 85 । „ “ দুটো নেবো । একশো পঞ্চাশ দেবো । „ দোকানদার তার আংটির বাক্স এগিয়ে দিতে সুচি আকাশকে একটা A লেখা আংটি পছন্দ করে দিলে আকাশ বললো “ আমি পড়িনা এসব। „ “ এখন থেকে পড়বি। „ কথাটা বলে সুচি নিজের জন্য S লেখা আংটি পছন্দ করতে লাগলো। অনেক গুলো দেখার পর তিনটে আংটি ফাইনাল করে সে আকাশকে জিজ্ঞাসা করলো “ কোনটা ভালো দেখাবে বলতো ? „ “ এটা নে তোর আঙুলে এটা মানাবে। বেশি মোটা মানাবে না। এটা শেপ ও ভালো। „ কথাটা বলে একটা ডিম্বাকৃতি আংটি দেখিয়ে দিল। “ দিন এই দুটো । „ দোকানদার দুটো আংটি একটা প্যাকেটে দিলে দুজনে দুটো আংটি নিয়ে আঙুলে পড়ে বাড়ির রাস্তা ধরলো। কিছুদূর যাওয়ার পর আকাশ রাতের অন্ধকার আকাশে তারা দেখতে দেখতে দেখতে বললো “ শোন । দুপুরে যা বলেছি ওসব রাগের বশে ........ “ ছাড় ওসব। আমিও রাগে অনেক খারাপ কথা বলেছি। „ পরের বছর আকাশ ক্লাস টেনে ওঠার কয়েক মাস পর সুচি মাধ্যমিক এর থেকেও বেশি পরিশ্রম করে, মন দিয়ে পড়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিল। ঠিক সেই সময় সুমিও একটা সরকারি ব্যাঙ্কের উচ্চপদের চাকরির জন্য পরীক্ষা দিল। সুচির উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট আসার আগে সুমির রেজাল্ট চলে এলো। টপ টেনে নাম উঠেছে তার। ইন্টারভিউ দেওয়ার পর এই রাজ্যের IBS ব্যাঙ্কের হেড অফিসের ম্যানেজারের সেক্রেটারি পদের চাকরিটা খুব সহজেই পেয়ে গেল সুমি । কিছুদিন পরে সুচির উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট বার হলো। সবাই যতোটা আশা করেছিল তার থেকেও ভালো হলো সুচির রেজাল্ট । সবাই বলাবলি করতে লাগলো ------ ‘ বাড়িতে যদি সুমির মতো দিদি থাকে তাহলে এতো ভালো রেজাল্ট যে কেউ করতে পারবে । ‚ রেজাল্ট বার হওয়ার পর সুচি কোন কলেজে ভর্তি হবে সেটা নিয়েই খাওয়ার টেবিলে আলোচনা হচ্ছে। সুমি বললো “ কিংটন কিংবা টেগনো তে ভর্তি হয়ে যা। B. Com খুব ভালো পড়ায় ওখানে। „ কলেজের নাম শুনেই সমরেশ বাবু চিন্তায় পড়ে গেলেন। এখন বয়স হয়েছে তার। মাথায় টাক পড়তে শুরু করেছে। চোখের দুই কোনায় মুরগির পায়ের ছাপের মতো চামড়ার ভাজ পড়ে বয়স হওয়ার চিহ্ন এঁকে দিয়েছে । তিনি মনে মনে ভাবতে লাগলেন ---- ‘ সুমি না হয় উচ্চমাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করে সরকারি বেসরকারি নানা ধরনের স্কলারশিপ পেয়েছিল , তাই ওর উচ্চশিক্ষার পড়াশোনার জন্য তেমন অর্থকষ্ট পোহাতে হয়নি। কিন্তু সুচির কলেজের জন্য এতো টাকা কোথা থেকে পাবো। ‚ বাবার মুখ দেখেই সুমি বুঝতে পারলো তার বাবা কি ভাবছে। তাই সে বললো “ বোনের পড়াশোনার সব খরচ আমি নেবো „ বড়ো মেয়ের কথা শুনে সমরেশ বাবুর মনটা হালকা হয়ে উঠলো ---- ‘ কখন যে মেয়ে দুটো বড়ো হয়ে গেল বুঝলাম না। এই তো সেদিন হাত ধরে হাটতো । ‚ মুখে কিছু না বললেও মেয়েকে মন থেকে শত সহস্র আশীর্বাদ করতে করতে রাতের খাবার খেতে লাগলেন। রাতে খাটে শুয়ে সুচির মাকে সমরেশ বাবু বললেন “ কে বলেছে মেয়েরা পরের ঘরের ধন হয় ? ছেলেরাই একমাত্র বুড়ো বয়সে বাপ মায়ের খেয়াল রাখে ? „ কথাটা বলতে গিয়ে সুচির বাবার চোখে এক ফোটা জল দেখা দিল ।
10-10-2021, 09:22 AM
(This post was last modified: 10-10-2021, 09:26 AM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
প্রচুর ঘটনাবলীর সমষ্টি নিয়ে উপস্থাপন করেছো আজকের পর্বটি। তবে পুজোর কয়েকদিন আকাশ আর সুচির কিছু দুষ্টু-মিষ্টি interaction এর দৃশ্যাবলী রাখলে আরো ভালো লাগতো। এই যেমন ধরো মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার সময় কিংবা পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে কিছু বিশেষ ঘটনা .. ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমার কেনো জানি না মনে হচ্ছে স্নেহাংশু আর তিলোত্তমা নিশ্চয়ই কিছু ধান্দায় এসেছে এই বাড়িতে .. আবার উল্টোটাও হতে পারে। মোটকথা ওদের অন্তর্ভুক্তি কোনো ঘটনাকে ত্বরান্বিত করবে বা মন্থর করে দেবে .. দেখা যাক কি হয়।
10-10-2021, 09:39 AM
(10-10-2021, 09:22 AM)Bumba_1 Wrote: প্রচুর ঘটনাবলীর সমষ্টি নিয়ে উপস্থাপন করেছো আজকের পর্বটি। তবে পুজোর কয়েকদিন আকাশ আর সুচির কিছু দুষ্টু-মিষ্টি interaction এর দৃশ্যাবলী রাখলে আরো ভালো লাগতো। এই যেমন ধরো মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার সময় কিংবা পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে কিছু বিশেষ ঘটনা .. ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলে দাদা আমি অনেক ভেবেও তেমন কিছু বার করতে পারিনি। মানে এই পুজার সময় কিছু একটা দিতে হবে এমন ভাব ছিলাম কিন্তু তেমন কিছু পেলাম না..... দেখা যাক তিলোত্তমা কি করে। কিছু করতেও পারে আবার নাও করতে পারে secret ❤❤❤
10-10-2021, 10:14 AM
Khub sundor hoyeche
Evabei chaliye jao. Suvo sarodiya.
10-10-2021, 10:55 AM
10-10-2021, 11:40 AM
এই গল্পটি প্রতি পর্বের সাথে আরও সুন্দর হয়ে উঠছে. রোমান্টিক গল্পগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হয়ে উঠছে. সহজ সরল ভাষাতেও এতো সুন্দর একটা গল্প লেখা যায় সেটা তুমি প্রমান করছো.
সেই সেদিনের সদ্যোজাত শিশু আজ কেমন করে যেন বড়ো হয়ে গেলো আর খেলার সাথীকে কোলে করে তুলে ঘরে নিয়ে গেলো. এই প্রথম আকাশের প্রতি সুচির অন্য অনুভূতির জাগরণ, আবার মেলাতে গিয়ে বিপরীত ঘটনাটিও আর সাথে ওই মজার মারপিট, ঝগড়া ইয়ার্কি ঠাট্টা আবার বন্ধুত্ব. একেই তো বন্ধুত্ব বলে. প্রেমের থেকেও এই বন্ধুত্ব আমার কাছে অসাধারণ লাগছে. এটাই যে আসল...... ওই প্রেম সেই বন্ধুত্বকে আরও গভীর করবে শুধু. সত্যিই পঞ্চমীর দিন পঞ্চমীর ঘটনা পড়ে দিল খুস হয়ে গেলো ❤❤
10-10-2021, 12:42 PM
(10-10-2021, 11:40 AM)Baban Wrote: এই গল্পটি প্রতি পর্বের সাথে আরও সুন্দর হয়ে উঠছে. রোমান্টিক গল্পগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হয়ে উঠছে. সহজ সরল ভাষাতেও এতো সুন্দর একটা গল্প লেখা যায় সেটা তুমি প্রমান করছো. সবই আপনাদের ভালোবাসা আর উৎসাহ। তা ছাড়া আর কিছুই না..... আপনারাই ভালোবেসে গল্পটা কে এতোটা সাফল্য প্রদান করছেন আজকে দেবো বলেই পঞ্চমীর ঘটনা লিখেছি..... এরকম বন্ধুত্ব যদি আমি পেতাম তাহলে আর গল্প লিখতে হতো না। কিন্তু আমার ভাগ্য পোড়া। তাই গল্প লিখে একটা কাল্পনিক চরিত্র সৃষ্টি করে তাকে ভালোবাসতে হচ্ছে ❤❤❤ |
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 183 Guest(s)